Friday, August 15, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2444



বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)

3

বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসা রাত পর্যন্ত অনেক কাদে ?সৌরভের এমন ব্যবহার এ।
রাত্রে খাবার সময় আম্মা সবাই কে নিচে ডাকে, রুমেসাও গেলো।

…. কি ব্যাপার রঙিন শাড়ি পড়েছো কেনো।
এখুনি গিয়ে চেঞ্জ করে আসো।

…. বাচ্চা মেয়ে থাক না আম্মা ( নিরা)

…. না থাকবে না, এই কুলক্ষী মেয়ে আবার কাকে খাবে।
ওর কি রঙ লেগেছে, রঙিন পোশাকে যেন আর না দেখি।

…. রুমেসা কাঁদছে, কিছুই বলার নাই তার।

…. আম্মা এসব বাদ দাও ভালো লাগেনা, ও যেমন ইচ্ছা থাকুক ( সৌরভ)

…. যা ভালো লাগে কর তোরা।

এভাবে দিন যাচ্ছে পার হয়ে, রুমেসা শুধু রান্না করে আর সবাই কে সার্ভ করে।
অন্যরা নিজেদের মতো চলছে।
সৌরভ মাঝে মাঝে রুমেসার কাছে যায়, কিন্তু রুমেসা আর সৌরভের সাথে কথা বলে না।
সৌরভ কে এটা খুব কাদায়।

কিছুদিন পর দুপুরে খাবার পরিবেশন করার সময় খাবারের পাত্র সহই রুমেসা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।

সৌরভ দৌড়ে এসে তোলে কিন্তু জ্ঞান ফিরে আসেনা।

ওকে নিজ ঘরে শুইয়ে ডাঃ ডাকে সৌরভ।

বাসার সবাই পেরেশান হয়ে যায়, কি হলো সেটা নিয়ে।

রুমেসা কে এক্সাম করে ডাঃ বলে রুমেসা প্রেগন্যান্ট।

এতে সৌরভ মনে মনে খুশি হলেও আম্মা চটে যায় ।

…. আমার ছেলে মরার এতো পরে কার পাপ মাথায় নিছে বলে কপাল চাপড়াতে থাকে আম্মা।

…. আম্মা এসব বলছেন কেনো, পাপ কেনো হবে।

…. ছেলে মরার দুই মাস পর বউ এক মাসের প্রেগন্যান্ট।
ওর উপর গজব পড়ুক।

…. আম্মা আপনাকে অনেক কিছু বলা লাগবে, কিছুই জানেন না।

…. কি জানিনা, আর কি দেখবো আমি। এর চেয়ে আল্লাহ তুলে নাও।
আর সহ্য করতে পারছিনা আমি এইসব।

…. আম্মা, রুমেসার সাথে আসিফ ভাইয়ের কখনো বিয়ে হয়নি।

…. কি যা তা বলছিস এইসব, তাহলে আমার মরা ছেলে এই মেয়ের সাথে এক ঘরে পাপ করেছে।

…. না রুমেসা ওমন মেয়ে না।

…. আজ মুখে চুনকালি মাখিয়ে বলিস রুমেসা ওমন না।
লোক সমাজে মুখ দেখাবো কেমন করে।

…. রুমেসা কে ভাই বিয়ে করেনি, কখনো স্পর্শ ও করেনি।

…. তাহলে বাচ্চা?

…. বলতে দাও, অনেক কথা বলার আছে।

সবাই শুনছে সব কথা, রুমেসাও মাথা নিচু করে বসে আছে।

আসলে ও আমার স্ত্রী , ওকে আমি বিয়ে করেছিলাম ১ মাস আগে, ভাই মরার পর।

আমি ওকে প্রথম দেখা থেকেই ভালোবাসি।

এরপর ওর রোজ রাতে কান্না আমাকে পেরেশান করতো।

তখন খোজ নিয়ে জানি সে ভাইয়ের বউ না।

ভাই ওকে কন্টাক্ট এ নিয়ে এসেছিলো এই বাসায়।

আলাদা থাকতো ওরা, সেটাও লক্ষ করেছিলাম অনেকবার।

ওর বাবা মা ওকে ভুল বুঝে বের করে দিছে বাসা থেকে সব ভাইয়ের মিথ্যা নাটকের জন্য।

ওর এই দুনিয়ায় আমি ছাড়া কেউ নাই।

ও আমাকে ভালোবাসতো কিনা জানিনা।

কিন্তু ওকে আমার কাছে আমি সব সময় চাইতাম।

সেদিন ও আমার সাথে হোটেলে ছিলো গাড়ি খারাপ হয়েছিলো তাই। ওর কোন দোষ ছিলোনা, আমি ওকে কাছে পাবার জন্য এমন করেছিলাম ইচ্ছা করেই।

ওকে কাছে পেলেও ওর সাথে মিলামিশা করিনি।

সেদিনের এই কথা ভাই জেনে গেছিলো, তাই রুমেসা কে আঘাত করে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে।

হয়ত পছন্দ করতে শুরু করেছিলো রুমেসা কে।

কিন্তু এই ভাবে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যাবে সেটা বুঝিনি।

ভাইয়ের মৃত্যুর এক মাস পর ওর কাছে কিছু পেপারে সাইন নিই।

সেখানে বিয়ের কাগজ ও ছিলো।

ওকে আমি অনেক ভালোবাসি, ওকে ছাড়া আমি বাচতে পারবোনা।

গতকাল অর বাসায় গেছিলাম আমি, ওর বাবা মা কে বুঝিয়ে সব বলেছি।

ওরা ভুল বুঝে কান্নায় ভেঙে পড়েছে।

আমি রুমেসা কে আবার বিয়ে করতে চাই।

এতো ঘটনা কেউ জানবে না, শুধু পরিবারের সবাই জানবে রুমেসা পবিত্র মেয়ে।

আর সবাই জানবে ভাইয়ের বিধবা বউ কে বিয়ে করেছি।

এতে পরিবার এর সম্মান বাচবে, সবাই ভালো থাকবে।

সবাই এইসব শুনে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মেনে নিতেই হলো সবাই কে।

পরের দিন রুমেসার বাবা মা আসে, বিয়ের সব ঠিক করতে।

রুমেসাও বাবা মা কে পেয়ে যেন সৌরভের উপর ভালোবাসা আবার জন্ম নিলো।

অনেক আয়োজন করে দুইজনের বিয়ে হয়।

বাসর রাত থেকে রুমেসা সৌরভ কে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করে সব রাগ অভিমান ভুলে।

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৯

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৯
#জামিয়া_পারভীন

কয়েক দিন কেটে গেলো এভাবে, রুমেসাও সাদা শাড়ি ছাড়েনি।
আর সৌরভ ও খুব রেগে আছে।

শুক্রবার এ বাসার সবার দাওয়াত তাই সৌরভ সবাইকে পাঠিয়ে দেয় রুমেসা ছাড়া। সৌরভ পরে যাবে বলে আর যায় নি, সে রুমেসার উপর রাগ তুলার জন্যই বাসা ইচ্ছা করে ফাকা করেছে।
বন্ধুকে মেনেজ করিয়ে সবাই কে নিয়ে গেছে বন্ধুর বাসায়।

এরপর রুমেসার ঘরে যায় সৌরভ, দেখে রুমেসা শুয়ে আছে।
কোন কথা না বলেই রুমেসার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে।
রুমেসা ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠে, পরে দেখে সৌরভ।

…. আপনি এখানে কেনো এসেছেন, চলে যান বলছি।

…. আমি আমার বউ এর কাছে আসবো, কেউ বাধা দিতে পারবেনা।

…. বউ মানে, কি যা তা বলছেন।

…. সেদিন কিছু পেপারে সাইন করেছিলা মনে আছে?

…. হ্যা, কি ছিলো ওতে।

…. সেখানে বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার ছিলো।
এখন থেকে তুমি আমার বউ তাই সাদা শাড়ি আর পড়বেনা।

…. কি বলছেন এইসব, আপনিও আমার সাথে বেইমানী করলেন।

…. এছাড়া আর কি করতাম আমি তোমাকে পাবার জন্য।

…. বেরিয়ে যান, আর আসবেন না আমার কাছে।

…. বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তো আসিনি, কাছে পাবার জন্য এসেছি, সাদা শাড়ি খুলে রঙিন পোশাক পড়িয়ে দিতে এসেছি।

…. এসব পাপ, চলে যান বলছি।

…. বুঝেছি তুমি স্বেচ্ছায় কাছে আসবে না।

জোর খাটাতে শুরু করে সৌরভ, কিন্তু কতোক্ষণ আর পারবে একটা ছেলের কাছে। এতো অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রুমেসা অজ্ঞান হয়ে যায়।
এরপর সৌরভ রুমেসা কে নিজে গোসল করিয়ে নিজ পছন্দ করা শাড়ি পড়িয়ে দেয়।

এরপর রুম থেকে বের হয়ে যায়।
বিকালের দিকে সবাই বাসায় ফিরে আসে, কিন্তু রুমেসা নিচে নামেনি দেখে নিরা উপরে গিয়ে ডাক দেয়।

রুমেসা কথা বলছেনা দেখে ধাক্কা দেয়, দেখে জ্ঞান নাই।
নিরা শন্ধ্যা পর্যন্ত সেবা করায় জ্ঞান ফিরে আসে রুমেসার।

…. কি রে কি হয়েছে, এতো ক্ষণ অজ্ঞান ছিলিস কেণো।

…. জানিনা ভাবি ( জেনেও মিথ্যা বললো ভয়ে)

…. আচ্ছা দেখে শুনে থাক, কিন্তু ভালো থাকিস ( রঙিন শাড়ি দেখেও কিছু বলতে গয়েও বললোনা)

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৮

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৮
#জামিয়া_পারভীন

সবাই গোরস্থান থেকে ফিরে আসে, সৌরভ এসে দেখে রুমেসা আগের মতো ই মেঝেতে পাথর হয়ে বসে আছে, চোখে পানি নাই আর।??
সে তার আম্মাকে ডাকে, আম্মা আসার পর বলে

…. তুমি তো কাজের লোক পাওনা রান্না করার জন্য, অন্য কারো হাতে খাও ও না, নিজেও পারোনা। ও এই বাসাতেই থাকুক।??

…. কিন্তু বাবা,,,,?

…. কোন কিন্তু নাই ও এখানেই থাকবে,
কারণ সৌরভ জানে ওর যাওয়ার যায়গা নাই। ??

এরপর রুমেসাকে ঘরে যেতে বলে, কিন্তু রুমেসার কোনই জ্ঞান নাই??, ধাক্কা দিতেই পড়ে যায় ।
বেশী শোকে পাথর হয়ে গেছে ??

এতে সৌরভ কারো দিকে খেয়াল না করেই কোলে তুলে নিয়ে দোতালায় ওর ঘরে শুইয়ে দিয়ে আসে। ??

সে জানে বুঝে কিন্তু তাও তখন অপমান করেছে ??

রুমেসা কিছুটা সুস্থ হয় কিছুদিন এ, সে সব কাজ করেনা, শুধু তিন বেলা রান্না করাই ওর কাজ।??
আম্মা ওকে সাদা শাড়ি এনে দিয়েছে, রুমেসা এখন পুরোই বিধবা সেজে থাকে।

সৌরভ ও তেমন রুমেসার সাথে কথা বলেনা?, রুমেসাও কারো সাথে তেমন কথা বলে না?। কাজ যত টুকু করার করে দেয়, আর আবির ও নাই কাছে। বড় একা হয়ে গেছে সে, এভাবে ই মাস পার হয়ে যায় । ??

সৌরভ এখন বাইরে গিয়ে বিজনেস দেখাশুনো করে, অনেক কাজ তেমন সময় ই পায় না সে। কিছুদিন পর
সৌরভ রুমেসার ঘরে যায় ,

…. কি করছো ?
…. বলেন ?
…. ভাই এর মৃত্যুর পর আমার রাগ হয়ে তোমায় অনেক অপমান করেছি,?? মাফ করে দিও?

…. না ঠিক আছে, কি বলবেন সেটা বলেন।

…. আসলে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়, তুমি কিছু বুঝবে না।??

ভাইয়ের অংশ তোমার নামে হয়ে গেছে, এখানে কিছু কাগজ আছে তোমার সাইন লাগবে। ??

…. আচ্ছা দেন করে দিচ্ছি। ??

রুমেসা পড়েও দেখেনি সে কিসে সাইন করেছে ??
আবারো সেইম ভুল করে বসে বিশ্বাস করে।

রুমেসা বলে….
…. একটা কথা বলি??

…. কি বলো ( মনে মনে খুব খুশি) ??

…. আবির কে এনে দেয়া যায় না, খুব একা লাগে।??

…. আজ থেকে আর একা লাগবেনা ডার্লিং।??

…. কি যা তা বলছেন এইসব। ??

…. যা তা নয় বোকা, পরে বুঝবে।

তখন রুম থেকে বের হয়ে যায় সৌরভ।

রাত্রে রুমেসা দরজা অফ করে শুয়ে আছে ?
সৌরভ নক করে, খুলতেই সৌরভ ভিতর থেকে লাগিয়ে দেয়।

…. কি করছেন কি আপনি। ?

…. বেশী কথা বলো না, তোমার সাথে থাকবো।?

…. আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন??, এখুনি বের হয়ে যান ??

…. আপনি করে কথা বলছো কেনো ??

…. আপনি বের হয়ে যান নইলে চিৎকার দিবো ??

…. কি বললে তুমি, আমাকে রাগিও না বলে দিলাম। ??

…. আমি সত্যিই এবার চিতকার দিবো। ??

…. আমি তোমায় এখনো ভালোবাসি আর তুমি এমন করছো কেনো???

…. আমি আপনাকে ভালোবাসি না, আমি বিধবা, ভুলে যাবেন না।??

…. ওহহ তাই নাকি, সত্যিই তুমি বিধবা নাকি।
কাল থেকে যেন আর সাদা শাড়ি না দেখি??, আর
চেহারার যত্ন নিবে?
, নইলে তোমাকে দেখে নিবো। ?

এখন চলে যাচ্ছি, পরে যখন আসবো ফেরত পাঠাতে পারবেনা।

কারণ তুমি শুধুই আমার

…. মানে কি? ?

…. বুঝতে হবেনা বুদ্ধু

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৭

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৭
#জামিয়া_পারভীন

আসিফের মৃত্যু সংবাদ আসে, সবার মাঝে কষ্ট ছেয়ে পড়ে।??
যত ই হোক, যত অন্যায় ই করুক আসিফ ছিলো সৌরভ এর ভাই।
ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা থাকা টাই স্বাভাবিক।?

তাই সৌরভ সবার সামনেই রুমেসা কে বলে..

…. তুমিই সেই অলক্ষ্মী, যার জন্য আমার ভাই মরেছে।?

…. বিশ্বাস করো আমি এমন কিছু করিনি। ?

…. চুপ যা তুই, সব দোষ তোর নইলে আজ এতো কিছু হতোনা।??

এই কথা গুলি আম্মা শুনে সেও রুমেসা কে দায়ী করে বসে।?
রুমেসা হয়ে যায় সবার চোখের কাটা, একটা মুহুর্তে সব শেষ হয়ে যায়। ??

এতে রুমেসা ও কষ্ট পেয়ে বলে বসে
…. তাহলে আম্মা আমার জন্য আপনার ছেলে মরেছে তাই না।।

…. হ্যা তাই, সব দোষ তোর, তোর পাপে আজ আমার সন্তান হারিয়েছি।?

…. তাহলে তো বলতে হয় আপনার ছেলের জন্য আবিরের আম্মা মারা গেছে।?

…. কি বললি তুই, তোর এতো সাহস, বের হয়ে যা বাড়ি থেকে।?
আবিরের মা মরেছে ভুল সিজারে আর তুই আমার ছেলেকে খেয়েছিস।

…. হ্যা, আপনার ছেলে যদি বাচ্চা না নিতো তাহলে সিজার করতে হতো না ভুলে যাবেন না।

আবিরের নানীও এসেছে জামাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সে বলে বসে রুমেসা ঠিকই বলেছে।
এরপর আবার বলে আমার নাতি এতিম হয়ে গেলো।

আমি আবির কে নিজের কাছে রাখতে চাই,
এই বাড়িতে রাখবো না,
এখানে মেয়ে গেলো, জামাই গেলো, নাতিকেও হারাতে চাইনা।

এই কথাতে সৌরভের আম্মাও সায় দিলো।

রুমেসা বলে
…. আবির কে নিয়ে গেলে আমি কি নিয়ে থাকবো।?

…. তুই বেরিয়ে যাবি এই বাসা থেকে ( আম্মা)?

…. আমার যাওয়ার যায়গা নাই।?

এইভাবে রুমেসা পাথরের মতো পড়ে থাকে নিচতলায় ডাইনিং এর মেঝেতে।

আজ ওর কেউ নাই, একমাত্র ভালোবাসা সৌরভ ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

লাশ নিয়ে বের হয়েছে বাসা থেকে, কিন্তু কেউউই রুমেসা কে বাসায় রাখতে চায় না।

মেঝেতে বসে রুমেসা কেঁদে ই চলেছে।

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৬

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৬
জামিয়া_পারভীন

একে তো বৃষ্টি, তার উপর গাড়ি নষ্ট, দুজনেই ভিজে গেছে।
সৌরভ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো যে একটা বাসা আছে।
গাড়ি টা কোনরকম ঠেলে নিয়ে গেলো আর সেখানে আশ্রয় চাইলো।

সৌরভ নিজ পরিচয় দেয়, বলে আমরা হাজবেন্ড ওয়াইফ।
ঘুরতে এসে আটকিয়ে গেছি, তার উপর গাড়ি টা নষ্ট হয়ে গেছে।

সৌরভ দের নাম আছে শহরে তাই তারাও রাজি হয়ে যায়।
সৌরভ বাসায় কল দিয়ে আম্মাকে জানায়, তারা রুমেসার বাবার বাসায় আছে বৃষ্টি আর বজ্রপাত এ বের হতে পারছেনা।

এদিকে রুমেসা একটু রাগ করেছে, স্বামীস্ত্রী বলায়।
ওই বাসা থেকে দুইজনে কাপড় নেয় আর চেঞ্জ করে নেয়।
দুইজনের ই ঠাণ্ডা লেগে গেছে অনেক ক্ষণ ভিজাতে।

রাত হয়ে এসেছে সৌরভ রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে রুমেসার কাছে যেতে ই বলে…

…. মিথ্যা কেনো বললে, ?

…. তো কি বলতাম মহারাণী, সত্য বললে থাকতে পেতাম একসাথে।?

…. কিহহ! আমার সাথে থাকার জন্য এতো কিছু তাইনা।

…. হুম,
এরই মাঝে বাজ পড়ে, আর রুমেসা ভয়ে সৌরভ কে জড়ায় ধরে।
সৌরভ ও রুমেসাকে জড়িয়ে রাখে, কিছুক্ষণ পরে কানের কাছে আস্তে করে বলে

…. তোমাকে এই ভাবে এতো কাছে পাবো ভাবিনি।

…. রুমেসা সরে গিয়ে বলে সরি।

…. সরি বললে হবেনা, আদর করতে হবে।

…. হুহ, মরে গেলেও করবো না।

…. তুমি কি জানো সেই প্রথম দেখাতেই তোমাকে ভালোবেসেছি।

…. আমিও ভালোবাসি তোমাকে, প্রথম দেখা থেকেই।
কিন্তু তুমি কোথায় আর আমি, ভুলে যেও না সমাজ জানে আমি তোমার ভাইয়ের বউ।

…. সমাজ দিয়ে কি হবে আমি তো জানি তোমরা বিয়ে করোনি। অথচ একসাথে থেকেছো এতো দিন।

…. এক সাথে মানে, একই রুমে কিন্তু আলাদা থাকতাম।

…. আমি জানি দেখেছি তোমাকে, প্রায়ই তোমার কান্না শুনতাম।
কষ্ট পেতাম খুব, তাই তোমাকে দিনের বেলায় হাসানোর চেষ্টা করতাম।

…. তাই বলে আমি কিন্তু তোমার সাথে থাকতে পারবোনা আজ।

…. থাকবেনা মানে কি? থাকতে হবে বলেই কোলে তুলে নিয়ে বিছানে শুইয়ে দেয়।

…. কি করছো এইগুলা পাপ, ছেড়ে দাও।

…. কে বলেছে পাপ করছি, তুমি বিয়ে ছাড়া পরপুরুষ এর সাথে একই ঘরে থেকেছো আর আমি থাকলেই দোষ।

…. অন্যায় করিও না প্লিজ।

…. আমি শুধু তোমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো, আর কিছুই চাইনা।

রুমেসা কিছু বলছেনা, অন্যদিকে ঘুরে শুয়ে আছে।

…. কি ব্যাপার কিছুই বলছোনা যে, একটা বার তোমার সাথে কথা বলার জন্য কতো ছটফট করেছি আর আজ এতো কাছে থেকেও চুপ করে থাকবে।

…. কি বলবো, আমার খারাপ লাগছে খুব।
কেউ আমার বেডে আমাকে জড়িয়ে আছে এই প্রথম।
কিছু বুঝছিনা কি করবো আমি।

…. কিছুই করতে হবেনা, শুধু ভালোবেসো।
তোমার জন্য আমি সব কিছু করতে পারবো।
বাসায় সব কিছু বলে দিয়ে তোমাকে মুক্ত করে আমি বিয়ে করবো।
প্রয়োজন এ আলাদা থাকবো।
বিয়ের আগে তোমাকে কখনো ইউজ করবোনা নিশ্চিন্ত থাকো।
শুধু পাশে থেকো আমার।

…. রুমেসা সৌরভ কে ধরে খুব কাঁদছে, কি আর করবে, সুখের জীবনে আজ এতো কষ্ট এর পর একটু সুখ পেয়েছে সে।

পরদিন সকালে ওই বাসাতে বলে গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।
নাস্তা করে দুজনেই বের হয়, বাসায় ফিরে আসে।
রুমেসা যেমন খুশি, সৌরভ ও।

বাসায় গিয়ে যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সন্ধ্যায় আফিস ফিরে আসে।
আর এসেই রুমেসা কে ডাক দেয়, রুমেসা যেতে ই

…. লজ্জা করে না দেওরের সাথে রাত কাটিয়ে ঘরে ফিরতে।

…. মুখ সামলে কথা বলেন আমি এতো খারাপ না।

…. চুপ কর তুই, তোর মতো বেহায়া মেয়ে সব পারে, তুই তোর বাপের বাড়িতে গিয়েছিলিস নাকি অন্য কোথাও গিয়েছিস সব জানি।

…. রুমেসা ভয় পেয়ে যায়।
বলে কি যা তা বলছেন এই গুলি।

…. যা তা, তাই না, বলেই চুল ধরে অনেক মারে।
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, রুমেসা চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে।

সবাই বুঝতে পারায় সবাই এগিয়ে আসে।

কি হয়েছে বললে আসিফ ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
রুমেসার মাথায় খুব জোরে লেগেছে, রক্ত বের হয়ে গেছে।

সৌরভ ড্রেসিং করিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে বলে কি হইছে।
সবাই জানতে চাচ্ছে,

রুমেসা বলে কিছুনা আম্মা
আমি সৌরভের সাথে গিয়েছিলাম তাই রাগ করেছে।

সৌরভ বুঝতে পারে না কি বলবে।

আম্মা বলে গেছে তো কি হইছে।
তাই বলে এভাবে মারবে সে।

আসিফ রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে বারে গিয়ে মদ খায় আর
রাত্রে বাসায় ফিরার সময় এক্সিডেন্ট করে তখনি মারা যায়।

চলবে….

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৫

0

বেইমানীvsলাভ
পার্ট_৫
#জামিয়া_পারভীন

আসিফ সৌরভের ঘরে গেলো, সৌরভ আসিফ কে বুঝায় কক্সবাজার শাখায় বিজনেস নিয়ে প্রব্লেম চলছিলো সেখান এ যেতে ই হবে যত দ্রুত সম্ভব। আসিফ সেদিন রাতের ফ্লাইট এই চলে যায়।

পরে সৌরভ আর রুমেসার সাথে কথা বলেনি, এক টা পাপবোধ হচ্ছে ওর জন্য মেয়েটা আজ আরোও কষ্ট পেলো।

রুমেসার মন খারাপ, কিন্তু এই সংসার, বাচ্চা সব ছেড়ে সে যেতে পারছেনা, যাবে ই বা কোথায়। ?

বাচ্চার বাবা নাই তার উপর সব দায়িত্ব, আর সৌরভ ও আবির কে নিচ্ছে না। ?

পরদিন দুপুরে আম্মা বলে রুমেসা রান্না করে রাখিও, নিরা তো ওর মেয়েকে নিয়েই ব্যস্ত, আমি একটু বাইরে যাব। সৌরভ থাকলো বাসায় ভয় পেয়ো না কেমন, আবির কাঁদলে ওকে দিও।

রুমেসা বলে জ্বী করে রাখবো।

আবির কে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রান্না ঘরে আসে। মন খুব খারাপ তাও রান্না করছিলো।

কিছুক্ষণ পর রুমেসার শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায় এটা সে খেয়াল ই করেনি। যখন বুঝতে পারে তখন পাগলের মতো চিৎকার দেয় ভয়ে আর আঁচল নাড়াতে থাকে পানি না দিয়ে।
???

চিৎকার শুনে সৌরভ দৌড়ে নিচে আসে আর অবস্থা দেখে এক টান দিয়ে শাড়ি খুলে ফেলে দেয়। শাড়িটা পুরাই পুড়ে যায় মুহুর্তেই।

রুমেসা লজ্জায় উলটা দিক ঘুরে কাঁদতে থাকে। ?

সৌরভ রুমেসাকে বলে পাগল মেয়ে দেখেশুনে কাজ করতে পারোনা।
দিয়ে নিজের শার্ট খুলে রুমেসার গায়ে দিয়ে দেয় আর উলটা দিক হয়ে রুমেসাকে বসে ঘরে যাও আমি দেখছি না তোমাকে।?

রুমেসা দৌড়ে ঘরে চলে যায়।

সৌরভ নিচে সব ঠিক করে দেয়, রান্নার বাকি কাজ শেষ করে।
কেউ যেন পেরেশান না হয় তাই সব কিছু ম্যানেজ করে। ?

পরে নিচের কাজ শেষ করে ঘরে গিয়ে রুমেসা কে ডাকে। দরজা না খুলেই রুমেসা বলে

…. কি বলবে? ?

…. তোমাকে বাঁচালাম একটা ধন্যবাদ ও দিলা না।?

…. মরে গেলেই ভালো হত, কেনো বাঁচালে??

…. কি যে বলো এসব ভেবে টেনশন করিও না, আর কাউকে বলিও না কারোর টেনশন বাড়িও না, খেতে এসো নিচে।

…. আপনি খেয়ে নিন, আমি খাবো না।?

…. রুমেসা এমন করিও না।?

…. আমি তোমার ভাবি হই, নাম ধরে ডাকো কোন সাহসে।?

…. সরি ভাবি, নিচে এসো।

…. যাও তো।

সৌরভ আর কিছু বলেনা, দুপুরের পর মা আসলেই তাকে বলে আম্মা

…. আপনার বৌমা রান্না করেই ঘরে ঢুকে কাঁদছে, কিচ্ছু খায়নি।?

…. কেনো কি বলেছিস??

…. কি আবার বলবো বলো, বাচ্চা মেয়ে তার উপর বর কাছে নাই, বাবা মার জন্য কাঁদছে হয়ত।

…. রুমেসা নিচে নেমে এসে কথা গুলি শুনছে আর অবাক হয়ে বলে না আম্মা আমি ঠিক আছি।

…. আম্মা বলে, বুঝি মা মাস পার হয়ে গেলো বাবার বাসায় যাও নি। দিয়ে সৌরভ কে বলে : ওর বাবার বাসা কাছেই ঘুমিয়ে নিয়ে আই তো।

রুমেসা বলে আম্মা, আমার ছেলের কথা তারা জানেনা।
জানলে রাগ করবে তাই যাব না।?

আবির প্রব্লেম না কয়েক ঘন্টাই তো যাও আমি আর নিরা সামলে নিবো কয়েক ঘন্টা, যাও রেডি হয়ে এসো।☺

সৌরভ মনে মনে খুব খুশি কিছু সময় তো ওকে একা পাবে। ?

বিকালে দুইজন বের হলো, রুমেসা পিছনে বসতে যাচ্ছে গাড়ির।

…. আমি কি তোমার গাড়ির ড্রাইভার নাকি??

…. নাহ তা কেনো হবেন।

…. সামনে এসে বসো।

…. আচ্ছা,

বলে সামনে এসে বসে দুইজন এ।
সৌরভ গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু ঠিকানা জানেনা।
রুমেসা কে জিজ্ঞেস করছে ডান বাম এগুলা বলেই চলেছে রুমেসা। এবার সৌরভ ক্ষেপে গিয়ে গাড়ি ব্রেক কষে থামায় দেয়।বলে….

…. আর কতো দূর যেতে হবে, তোমার বাপের বাসা আর কত দূর।

…. রুমেসা কথা বলেনা।

…. কি ব্যাপার চুপ কেনো কিছু বলো ( ধমক দিয়ে)

…. এবার রুমেসা গাড়ি থেকে বের হয়ে কান্না করে দেয়, বলে
কি বলবো আমি আমার কোন বাসা নেই।

…. বাসা নেই মানে, তুমি কি রাস্তায় জন্মেছো।

…. মুখ সামলে কথা বলো, তুমি কি জানো আমি কে?

…. হ্যা জানি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না।তাই তোমাকে এতো ভালোবাসি??

…. তুমি জানো কিভাবে??

…. তুমি তো বোকা।
তোমার থেকে বয়সে, বুদ্ধিতে সব দিক দিয়েই বড় আমি ভুলে যেও না।
তাছাড়া তোমাকে প্রথম দিন দেখেই প্রেমে পড়েছি, যখন জেনেছি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না তখন ভালোবেসেছি।

…. আমি তোমায় ভালোবাসি না।

…. মিথ্যা বলিও না, তোমার মাঝে আমার জন্য দুর্বলতা আমি খুঁজে পেয়েছি।

…. ভুল ভেবেছেন, আমি আপনাদের মতো না। আপনার ভাই বেইমান, আপনিও। বেইমান।

…. রাগ করে আপনি বলছো কেনো?
সে কি করেছে অনেক টাই জানি, বাকি টা তোমার কাছে শুনবো।

রুমেসা বলতে শুরু করে সব কিছু খুলে বলে ভাইয়ের বেইমানি এর কথা।

এরই মাঝে বৃষ্টি এসে দুজন কেই ভিজিয়ে দেয়।
দুইজন ই ভিজে যায় একজন নিজ কষ্ট তে কাঁদছে অন্য জন প্রেমিকার ভালোবাসায় কষ্ট পাচ্ছে।

সন্ধ্যা নেমে আসে, সৌরভ বলে বাসায় ফিরতে হবে।
হুম চলো

সৌরভ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গিয়ে দেখে আর হয়না।
জোরে ব্রেক কষা তে গাড়িতে প্রব্লেম হয়ে গেছে।

চলবে….

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৪

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৪
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসা নিজের ঘরে চলে গিয়ে অস্থির হয়ে গেছে। এই প্রথম কোন ছেলে তার সাথে এমন ফাজলামো করছে। কিন্তু একটা খারাপ ধারণা মনে আছেই। ভাই যেমন, ছোট ভাই তেমন হতেই পারে। এসব মনে করে আবারো উদাসীন হয়ে যায় রুমেসা।?

রুমেসা প্রায়ই দিন রাত্রে সবাই ঘুমালে বারান্দায় গিয়ে কাদে। আর এটা পাশের রুম থেকে সৌরভ শুধু খেয়াল করে।
সৌরভ মনে মনে প্লান করে এই কান্নার রহস্য উদ্ধা করেই ছাড়বে। ??

তাই কয়েক দিন পর দুপুরে আবির তার দাদীর সাথে খেলছে, রুমেসা রান্নাঘর এ । ?
এই ফাঁকে সৌরভ রুমেসার ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে তল্লাশি চালায় কিছু পাবে কিনা সেই আশায়। ??

পেয়েও যায় আলমারি তে রাখা কিছু কাগজ যাতে স্পষ্ট লিখা রুমেসা টাকার বিনিময় এ এই বাসায় আছে। প্রথমে রুমেসা কে ভুল বুঝলেও পরে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা আসলে কি হয়েছে ??.

এরই ফাঁকে রুমেসা ঘরেএসে দেখে দরজা ভিতর থেকে অফ।
কনফিউজড হয়ে নক দেয়, আর সৌরভ ভয়ে কাগজ গুলি লুকায় নিয়ে দরজা খুলে দেয়।

…. কি ব্যাপার আমার ঘরে কি করো???

…. তোমার ঘর নাকি???

…. তো কার ঘর মনে হয় ? দেখতে পাচ্ছেন না বাবুর কাপড়, খেলনা।?

…. ও, সরি বেবি, আমি ভেবেছি আমার ঘর। তাই রেস্ট নিচ্ছিলাম।?

…. আবার ফাজলামো করছেন। ?

…. উম্ম, আমার তোমাকে খুব ভালো লাগে। ??

…. ভুলে গেছেন আমি আপনার ভাইয়ের বউ।?

…. তা কি ভুলা যায় বলো, তুমি এক টা বাচ্চার ও মা।??

…. যান এখান থেকে নইলে চিৎকার দিবো???

…. এতো চেতছো কেন সোনা একটু মজা করলাম। ???

সৌরভ এবার পালায় রুম থেকে কিন্তু রুমেসা চিন্তায় পড়ে যায় সব জেনে গেলো না তো এই ভয় এ।

আর সৌরভ ও নিজ ঘরে গিয়ে কিছুই বুঝতে পারছেনা।
টেনশনে দুপুরে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো রুমেসা কে আম্মা বলে কি ব্যাপার দেখো তো সৌরভ কি করছে খেতে আসছে না কেনো।

আচ্ছা আম্মা দেখছি বলে রুমেসা দোতালায় গিয়ে সৌরভের ঘরের দরজা নক করে।
দরজা না খুলায় ভিতরে ঢুকে, আর কাছে যেয়েই ধাক্কা দেয়।
কি ব্যাপার উঠছো না কেনো বলে আর সৌরভ ঘুমের ঘোরেই রুমেসা কে জড়াই ধরে। ? আর রুমেসা এক চিৎকার দেয় ভয় এ অসভ্য বলে।?

সৌরভের ঘুম ভাংতেই সরি বলে রুমেসা কে ছেড়ে দেয়।?

…. সরি বুঝতে পারিনি, ঘুমিয়ে ছিলাম।?

…. মিথ্যা বলতে হবেনা, আম্মা ডাকে। ?

বলেই কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বের হয়ে যায় আর চোখ মুছে নিচে যায়।?

…. কি হইছে, চিৎকার দিলে যে। ( আম্মা বললো)?

…. আপনের ছেলে খুব ফাজিল জানেন আম্মা।?
ঘরে ঢুকলাম ডাকতে ইচ্ছা করেই গায়ে টিকটিকি দিয়ে দিয়েছে।??

…. আসলেই ও একটা ফাজিল। ছোট থেকেই এমন, কিছু মনে করোনা।??

…. না আম্মা কিছু মনে করিনি।??

…. ও এসেছে ওকে খেতে দাও। ??

বলেই ঘরে গেলো, পিচ্চি একা মনেই খেলছে।

ফাকা বুঝেই সৌরভ বলে মিথ্যে বললে যে।?

…. তো কি করবো, বলতাম তুমি আমায় ঘুমের ঘোরে জড়ায় ধরেছো।??

…. আসলে কি হইছে জানো, আমি তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলাম। আর ওই মূহুর্তে তুমি গেছো তাই ভুলে ধরে ফেলেছি। ?? সরি বেবি

…. চুপ, সব সময় ফাজলামো ভালো লাগেনা। নিজে খুলে খাও, হুহ, বায়। ??

ওই মহারাণী, তুমি না পাশে থাকলে খেতে ইচ্ছা করেনা যে।??

এতো দিন খাইছেন কিভাবে।??

পানসে লাগতো, এখন মিষ্টি লাগে।??

সেদিন ওই মুহুর্তে আসিফ এসে দেখে দুইজন কে এভাবে।
একটু রাগ হয় তার জোর গলায় বলে রুমেসা ঘরে এসো কথা আছে।

ঘরে গেলো রুমেসা আর সৌরভ ভাবে কথা শুনতেই হবে তাই পিছু নেয়।

…. কি ব্যাপার রুমেসা ওর সাথে তোমার এতো কি? ??

…. আমার কি মানে, সে আমার দেওর হয় কথা তো বলতেই পারি।আম্মা খেতে দিতে বললো তাই দিছিলাম।?

…. আমিও তো তোমার স্বামী আমাকে তো এতো যত্ন করোনা।??

…. আপনি আমার স্বামী, ধোঁকাবাজ, আমাকে ধোঁকা দিয়ে এই বাড়িতে রেখেছেন আপনি ভুলে গেলেও আমি ভুলবো না।??

…. খবরদার আমার ভাইয়ের সাথে যেন আর না দেখি।?

…. ১০০ বার থাকবো। কি করবেন আপনি???

…. তখনি রুমেসা কে চড় মারে।??

আর বাইরে থেকে সৌরভের এর ভুল ভাঙে আর রুমেসা কে বাঁচাতে ভাই বলে নক করে দরজায়।

কি ব্যাপার আসিফ রাগ করে সৌরভ কে বলে।?

…. আমি একটা জিনিষ বুঝছি না, বিজনেস নিয়ে, কক্সবাজার শাখায় একটা প্রব্লেম হইছে আপনি একটু আমার ঘরে আসেন প্লিজ।

…. ওকে আসছি যা ঘরে।

রুমেসা কে বলে ওর জন্য তোমায় আজ ছেড়ে দিলাম নইলে দেখে নিতাম।

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৩

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৩
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসাও চিৎকার দিয়ে বললো

…. কে ভুত, আপনি নিজে ভুত ??
…. সত্যিই তুমি মরো নাই, তুমি তো কিছুদিন আগে মরে গেছো শুনেছি ??
…. আমি মরবো কিসের জন্য, মরলে বেচেই আছি কিভাবে।
…. ভাবলাম ভুত হয়ে নেমে এসেছো ভাবি। ?
…. ভাবি মানে কোন দিক দিয়ে আমি আপনার ভাবি, আমি তো আপনাকে চিনিই না। আপনি এই বাসাতে কেন এসেছেন?

…. চিনো না মানে, আচ্ছা তুমি এতো বাচ্চা হয়ে গেলে কিভাবে ।
…. আমি বাচ্চা হবো মানে আমি তো ছোটই, এক্ষুনি বের হয়ে যান বাসা থেকে না হলে আম্মা কে ডাকবো।?

…. আমার বাসা থেকে আমিই বের হয়ে যাব নাকি। ?

…. আপনার বাসা মানে, কে আপনি? ?

এতো ক্ষণ নিরা দুইজনের ঝগড়া উপভোগ করছিলো। এখন বলে উঠে দুইজন কেই

…. আরে থামো থামো আমি দুই জনের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
ও হচ্ছে সৌরভ, আমার ছোট দেওর, আজই লন্ডন থেকে ফিরেছে। (রুমেসাকে বলে নিরা) ??

আর সৌরভ কে বলে রুমেসা তোমার মেজ ভাবি, আবিরের নতুন মা।?
সৌরভ চমকে গিয়ে বলে নতুন মা মানে, আর একই রকম কিভাবে হয় দুই টা মানুষ দেখতে অথচ বয়সের কমপক্ষে পাচ বছরের ছোট।

…. তুমি খেয়াল করে দেখো পুরোপুরি এক না দেখতে, অনেক টা একই রকম। ??
…. অনেক দিন পর দেখে আজ আমার এই অবস্থা। আচ্ছা খুব টায়ার্ড আমি ঘরে গেলাম।?

বাসা টা ঠিক এমন নিচে বড় ডাইনিং মিডিলে সিঁড়ি।
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ই তিন ভাইয়ের তিন ঘর পাশাপাশি।

তিন টা ঘরই অবশ্য খুব বড়, প্রতিটা ঘরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র আছে।

নিচে রান্নাঘর, যে কোন কাজে নিচে আসা লাগে। রান্নাঘর এর অপজিট এ থাকে আসিফের আম্মা। আর রান্না ঘরের পাশে কাজের মেয়ের ঘর।

সব কাজ শেষ হলে যে যার মতো ঘরে যায়। কিন্তু আসিফের সাথে রুমেসার তেমন কথা হয় না বললেই চলে। এটা প্রথম দিনই খেয়াল করে সৌরভ।

আসিফ এখন ঠিক মতো বাসায় থাকে না ব্যবসার কাজে বাইরে যায় প্রায়ই, ফিরলেও রাত করে ফিরে, পাশাপাশি ঘর হওয়া তে আর আবির কে আদর করার উদ্দেশ্য তে এই সব কর্মকাণ্ড খেয়াল করেছে সৌরভ।

এ বাসায় যে যার মতো ব্যস্ত, আম্মা নিজে ব্যস্ত কোরআন পড়া আর নামাজ নিয়ে।
শাকিল, আসিফ বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত।
নিরা ব্যস্ত নাইমার প্রাইভেট, কোচিং এসব নিয়ে।
আর রুমেসা ব্যস্ত আবিরের দেখাশুনা করা নিয়ে, কেননা সে ব্যস্ত।
ফ্রি বলতে সৌরভ ই আছে যে কেবল দেশে এসে রেস্ট নিচ্ছে।
যা কাজ করার বাসায় থেকেই করে ল্যাপটপ এ।
আর ভাতিজা কেও সৌরভ খুব পছন্দ করে। বংশের প্রথম ছেলে বলে কথা।

একদিন দুপুরে রুমেসা কিছুতেই আবিরের কান্না থামাতে পারেনা ঠিক তখন ই সৌরভ রুমে ঢুকে। রুমেসার শাড়ি ঠিক ছিলো না।
তাই বলে
…. এ কেমন অভদ্রতা, নক না করেই ঘরে ঢুকেছো কেনো।??

…. সৌরভ নিজেও লজ্জা পায়, বলে সরি আসলে আবির খুব কান্না করছিলো তাই নিতে এসেছিলাম। ??
এ কথা বলেই লজ্জায় আবির কে কোলে নিয়েই রুম থেকে বের হয়ে যায়।

এদিকে রুমেসাও রাগ করে ঘরে বসে থাকে। কিন্তু রুমেসা নিজেও সৌরভের উপর ক্রাশ খাইছে।
সৌরভ এতো সুন্দর যে যে কেউ তাকে পছন্দ করবে। কিন্তু রুমেসা জানে এটা অন্যায় তাই সে নিজের ভালো লাগা নিজের ভিতর রাখে।
কিন্তু আজকের ব্যবহার রুমেসা কে ভাবাচ্ছে, দুই ভাই ই কি তাহলে একই চরিত্রের নাকি।

এক ভাই তার সাথে বেইমানী করেছে, তাকে ফাঁসিয়েছে।
ভাই ভাই একই রকম এটা ভেবেই রাগ রুমেসার।

কিন্তু সবার সামনে কখনো রাগ প্রকাশ করেনা রুমেসা। প্রায়ই আবির যখন ঘুমাই তখন কাদে।

আর এসব দেখেই সৌরভের কৌতূহল বাড়তে থাকে রুমেসার উপর। ☺☺

পরদিন দুপুরবেলা রুমেসা দুধ গরম করতে দিয়ে ভুলে গেছে। হঠাত মনে পড়তেই দৌড়িয়ে নিচে নামার সময় লাগে সৌরভের সাথে ধাক্কা।

…. কি ব্যাপার, এতো তাড়া কিসের দেখে চলতে পারো না। ?

…. সরি, চুলায় বাবুর খাবার আছে, তাই।

বলেই দৌড়ে রান্নাঘর এ যায় রুমেসা, গিয়ে দেখে চুলা বন্ধ। পরে শুনে

…. কি ভেবেছিলে, তুমি ভুলে গেলে আমিও ভুলে যাব।?

…. অনেক ধন্যবাদ , উপকার করার জন্য।?

…. ইটস ওকে, বেবি।??

…. কি যা তা বলছেন, পাগল নাকি।??

…. নাহ, মজা করছিলাম??।

…. খবরদার আর মজা করবেন না আমার সাথে, ভুলে যাবেন না আমি আপনার ভাইয়ের বউ।

…. ওহহ তাই তো, সবি বেবি, থুক্কু ভাবি ভুল হয়ে গেছে। ????

…. আপনি আস্ত একটা বদমাশ।??

…. এতো দিনে বুঝলে, তাহলে দুষ্টামি তো করাই যাবে তাইনা।??

…. এরপর এমন করলে আম্মাকে বলে দিবো বলেই রুমেসা চলে যায়।

চলবে……

বেইমানীvsলাভ পার্ট_২

0

বেইমানীvsলাভ  পার্ট_২
জামিয়া_পারভীন
আসিফের এই আচরণ এ রুমেসা খুব ক্ষেপে যায় আর আসিফ কে চড় মেরে বসে??। তখন ই আসিফ রুমেসা কে বলে…

….. আসলে আমার ভুল হয়ে গেছে, আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই??। নিজের জন্য না, শুধুমাত্র আমার ছোট্ট সন্তান আবিরের জন্য। তুমি না চাইলেও তোমাকে বিয়ে করতেই হবে।?

…. দেখুন আপনার মতো অভদ্র কে বিয়ে করা সম্ভব না।?

…. তোমার মতামত জানতে চাইনি, তুমি বাধ্য।?

এরপর আসিফ তার বন্ধুদের ডাক দেয় আর এক বন্ধুর কোলে ছোট্ট আবির কে দিয়ে রুমেসা কে জোর করে কাজি অফিস নিয়ে যায়। ???

একপ্রকার রুমেসা বাধ্য হয়েই কবুল বলে কেননা এতো পাওয়ারফুল লোকের সামনে বাচার উপায় ছিলো না।

আসলে আসিফের বাসা রুমেসার বাসা থেকে কিছু কিলোমিটার দূরে কিন্তু আজই একে অপরকে দেখে। ☺

আর রুমেসা আসিফের নাম ও শুনেছে সবচেয়ে শহরের ধনী ব্যক্তি হিসেবে। ??

এরপর আসিফ রুমেসা কে নিয়ে রুমেসার মা বাবার সাথে দেখা করে? । কিন্তু রুমেসার বাবা মা ভাবে রুমেসা প্রেম করে বিয়ে করেছে তাই রুমেসা কে দরজা থেকে বের করে দেয় আর আসিফ কে বলে লাগবে না এমন মেয়ে?। তোমাদের অনেক টাকা আছে তোমাদের কাছে নিয়েই রাখো।?

একে রুমেসার জোর করে বিয়ে হয়েছে, অন্যদিকে বাবা মা ভুল বুঝেছে। যেন তার উপর আকাশ ভেঙে পড়েছে।???

আসিফ আগেই বাসায় জানিয়ে রাখে যেন নতুন পুত্রবধূ কে বরণ করে নেয়া হয়। আর রুমেসাও কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চা কোলেই নতুন বাসায় প্রবেশ করে। ??

বিয়ের আগেই বাচ্চার মা হয়েছে রুমেসা এতো কষ্ট সে কোথায় লুকাবে। তার স্বপ্ন, আশা সব শেষ হয়ে গেছে আজ। ?

আসিফের বন্ধুরা মিলে আসিফের বাসর ঘর ও সাজাই রাখে।
ধনী হলে যা হয় এতো বড় বাগান বাড়ি ঢাকা শহরে রুমেসা আগে দেখেনি। যেন সে দিবা স্বপ্ন দেখছে। ??

বধু সেজেই অপেক্ষারত রুমেসা বুঝতে পারলো আসিফ আসছে।
কিছুক্ষণ আগেই আবির কে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে রুমেসা। আর আসিফের বড় ভাই এর বউ নিরা নিয়ে গেছে।

রুমেসা সত্যিই অবাক হয় দেয়ালের সব দিকে ই যেন তারই ছবি।
বুঝতে বাকি নেই এটা আবিরের মায়ের ছবি। ?

আসিফ কে দেখে রুমেসা ভয় পেয়ে যায়। ?

আসিফ রুমেসা কে বলে

…. ভয় পাওয়ার কিছুই নাই, আমি তোমাকে বিয়ে করিনি।

…. এসব কি বলছেন, তাহলে এইসব কি ছিলো। আপনি নিজেও কবুল বলেছেন।

…. হা হা হা, এই যুগ এ কবুলের দাম আছে কি? লাগে তো কোর্ট পেপার। তুমি যদি প্রথমেই আমার দেয়া দায়িত্ব মেনে নিয়ে আবিরের দেখাশুনা করতে তা হলে এই বিয়ের নাটক করতে হত না।

…. আপনি নাটক করেছেন আমার সাথে আমি ভাবতেও পারছি না। কাঁদছে…. ?????

…. শুনো, যেই পেপারে তুমি সাইন করেছো সেটা আসলে একটা ডিল। তুমি ১০ কোটি টাকার বিনিময় এ আমার সন্তান আবির কে দেখাশুনা এর দায়িত্ব নিয়েছো এটাই লিখা ছিলো ওই পেপারে।

….. কান্না আর থামে না ????, আমি আপনার কাছে কোন টাকা নেয় নি।

…. সেটা আমিও জানি, তোমরা মধ্যবিত্ত, জানি এটা শোধ করতে পারবেনা তাই মুক্তি ও পাবেনা আমার হাত থেকে।

…. কি ক্ষতি করেছি আপনার যে আমার এতো ক্ষতি করতে চাচ্ছেন।

…. আমি আমার স্ত্রী কে ভালোবাসি, কি ভেবেছিলে তুমি তোমার মতো ফকিরের মেয়ে কে বউ বলে আমি মেনে নিবো।

…. তাহলে এতো আয়োজন কিসের জন্য, বলে দিলেই পারতেন আমাকে আপনি ব্যবহার করতে তুলে এনেছেন।???

…. আমার মা খুবিই ধার্মিক, সেটা বলা যাবেনা, তাই বাধ্য হয়েছি। বেশী দিন না তোমাকে মাত্র কয়টা বছর আমার সাথে থাকতে হবে একই ঘরে।

…. লজ্জা করে না, আমি কি আপনার রক্ষিতা যে এভাবে একই রুমে এই বেডে থাকবো। ছিঃ ???

…. আমি এতো খারাপ না রুমেসা, প্রয়োজন এ আমি সোফায় থাকবো তুমি বেডে তাও ভালো আমার সন্তানের যেন কোন ক্ষতি না হয়। নইলে তোমার জীবন আমি তচনচ করে দিবো। ??

…. আপনি একটা বেইমান । ???

আসিফ গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ে আর এদিকে সারাটা রাত রুমেসা কেঁদে কাটায়। ????

বলাই হয়নি
বাসায় তিন ভাই, আর আসিফের মা।
★ বড় ভাই শাকিল আর ওর বউ নিরা আর ৫ বছরের নাইমা পিচ্চি।
★ আসিফ মেজো, রুমেসা এখন বউ সেটা বাসার সবাই জানে। আর পিচ্চি আবির।
★ ছোট ছেলের নাম সৌরভ, লন্ডন থেকে খুব শীঘ্রই দেশে ফিরার কথা। সে কেবল পড়াশুনো শেষ করে বাবার বিজনেস এ জয়েন করার জন্য দেশে রওনা দেবার কথা। এরই মাঝে মেজো ভাবির মৃত্যুর কথা শুনে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরছে।

আসিফের মা বাসায় কাজের লোকের হাতে রান্না পছন্দ করেন না। তাই সব দায়িত্ব এখন বড় দুই ছেলের বউ এর ঘাড়ে।

রুমেসা না পারতে সব মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলো। আর দুই জা মিলে শাশুড়ি কে হ্যাপি রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

আর আবির তো আছেই সব সময় আম্মু আম্মু করে রুমেসাকে জড়িয়ে রাখে। ☺☺☺

রুমেসাও মায়ের আদরে আবির কে আগলে রাখে। একজন আদর্শবান মা হয়ে উঠে রুমেসা মাত্র তিন দিনে।
এই তিন দিন রুমেসা আসিফের সাথে কথাও বলেনি আর আসিফ ও ছেলের যত্নে অবহেলা না পেয়ে নিজ থেকেও হ্যাপি।

তিন দিন পর আবিরের মায়ের জন্য দোয়া অনুষ্ঠান করার কথা ছিলো তাই বাসার সবাই খুব বিজি।

এই সময় কলিংবেল বেজে উঠে…
নিরা রুমেসা কে বলে দরজা টা যেন খুলে দেয়।

রুমেসাও তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে কিন্তু অচেনা ছেলে কে দেখে ভয় পেয়ে যায় আর ছেলেটি ও রুমেসা কে দেখে ভুত বলে চিৎকার করে উঠে।

বেইমানীvsলাভ পার্ট_১

0

বেইমানীvsলাভ
জামিয়া_পারভীন
#পার্ট_১
মেয়েটার নাম রুমেসা, ইন্টার প্রথম বর্ষ তে পড়ে।
চোখ দুটি টানা টানা, সুন্দর ঠোট আর গলাতে ছোট্ট একটা তিল। গায়ের রঙ দুধে আলতা বরণ ।
এক কথায় রুমেসার মতো সুন্দরী মেয়ে হয় না। ♥

রুমেসা প্রাইভেট এ যাচ্ছে, অনেক পড়াশুনো করা লাগে।
ইচ্ছা আছে ভালো চাকুরী করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে।
প্রতিদিন এর মতো আজও যাচ্ছে প্রাইভেট, বিকেল বেলা কেবল সূর্য টা নেমেছে।

এক বাচ্চা ছেলে রুমেসার ওড়না ধরে বলে আম্মু আমাকে ছেড়ে যেও না। রুমেসা যেন আকাশ থেকে পড়লো, বিয়েই হলো না বলে কার না কার আম্মু হয়ে গেলো। ?

রুমেসা বাচ্চা টাকে কোলে তুলে নিলেও ভয় পাচ্ছে আশেপাশে কেউ নাই তাই।?
কিছুক্ষণ পর রুমেসা দেখলো একজন লোক তার দিকে এগিয়ে আসছে, লোকটাও যেন কিছুটা অবাক। ??
লোকটা অনেক টা স্মার্ট ও ছিলো।

লোকটা আসার সাথে সাথেই বাচ্চা টা বলে উঠে আব্বু আমার আম্মুকে খুঁজে পেয়েছি। আম্মু পচা, আমাকে একা রেখে কোথায় চলে গেছিলে ?? আধোআধো উচ্চারণ এ বলে। বাচ্চাটার বয়স মাত্র দেড় বছর, কতো ই বা বুদ্ধি।

এরপর লোকটা বলে র রুমেসা আপনি কে? কারণ দুজনেই অবাক ??

…. আমি রুমেসা, আপনি ঠিক কে? আর এই বাচ্চা কি আপনার? ?

…. আমি আসিফ আহমেদ, আমি বিজনেসম্যান, ও আমার ই একমাত্র ছেলে আবির। ওর মা দেখতে প্রায়ই আপনার মতো, এতো টা চেহেরার মিল হয় কিভাবে বুঝছি না।?

…. এসব কি বলছেন আমার মতো দেখতে, আমার বিশ্বাস হয় না, আমি ওর মা কে দেখতে চাই।?

…. দেখা সম্ভব না, বাচ্চা জন্মের পর থেকে আমার স্ত্রী এর সিজার এ প্রব্লেম হয়। এরপর সাময়িক ভালো থাকলেও গত তিন দিন আগে সামিয়া সাডেন ইন্তেকাল করেছেন। এরপর থেকে আবিরের কান্না কেউ থামাতে পারেনি। তাই আজ এখানে ওকে ঘুরতে নিয়ে এসেছি ঢাকার বাইরে।

…. আচ্ছা ওকে ধরুন, আমার প্রাইভেট আছে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

…. না যাবেন না প্লিজ, রিকুয়েস্ট আছে প্লিজ রাখবেন।

…. বলুন তাড়াতাড়ি, আমার সত্যিই খুব তাড়া আছে।

…. আমি অনেক ধনী, অনেক টাকা আছে, আপনি যা চান তাই হবে, কিন্তু বাচ্চার দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে। আবির যত দিন না বুঝে।

…. আপনি পাগল হয়ে গেছেন, আমি পারবোনা এটা করতে।
আমার পড়াশুনো আছে তাছাড়া আমি নিজে কিছু করতে চাই বড় হয়ে।

…. প্লিজ, এই মা মরা বাচ্চাটার দিকে চেয়ে রাজি হয়ে যান ।

…. না সম্ভব না, আমি গেলাম।

বলে আসিফের কোলে আবির কে দিয়ে চলে যেতে লাগলো রুমেসা। তখন ই আসিফ রুমেসার হাত ধরে।

চলবে…….