Thursday, June 19, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2442



ছায়া_পার্ট_৪

0

ছায়া_পার্ট_৪

জামিয়া_পারভীন

মাসুদ নিজের কথা বলতে শুরু করে…
মাসুদের জন্ম কোথায় তা সে জানে না। ছোট বেলা থেকেই এতিমখানা তে বড় হয়। ব্রিলিয়ান্ট হওয়াতে এতিমখানা এর মালিক তাকে নিজ দায়িত্ব তে নিয়ে নেয় আর হাফিজিয়া মাদ্রাসা তে ভর্তি করে। সে সেখানে ই হাফেজ হয় পরে তাকে আর পড়াশোনা না করিয়ে হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে রেখে দেয় মালিক আলতাফ হোসেন।

মানে কোন আলতাফ হোসেন, আমার শ্বশুর মশাই। ঠিক বলেছো তুমি, আমিই সেই ছেলে যাকে তোমার শ্বশুর মশাই নিজ ছেলের মতো করে বড় করেছেন।

এরপর কি হলো, আমি কিছুই ভাবতে পারছিনা। মাসুদ সব দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিতে বলে আমাকে আর বলতে শুরু করে যে মালিক অনেক ভালোবাসতেন তাকে, একেবারে নিজ সন্তানের চেয়েও বেশি যত্ন করতেন। নিজ সন্তান দের থেকে কখনো আলাদা চোখে দেখেন নি তিনি। যেদিন মেজো ভাই, মানে উনার সব সন্তাদের ছোট ছিলাম আমি তাই তাদের ভাই বলেই ডাকতাম, মেজো ভাইয়ের বিয়ের দিন আমি ছিলাম না। খুব কাজ এর জন্য আসতে পারিনি তাই তোমায় আর দেখা হয়নি আসলে। তুমিইই সেই ভাগ্যবতী মেয়ে যাকে ভাবি হিসেবে পাই। কিন্তু মেজো ভাই এর চরিত্র খারাপ ছিলো ছোট থেকেই। আসগর ভাই ছোট থেকেই নারীর নেশা ছিলো। সে কথা আমি জেনেও কাউকে বলিনি কখনো, ভাই বলে সম্মান করে গিয়েছি সব সময়।
ছিঃ মানুষ না আসলেই জানোয়ার এর পর্যায়ে তোমার ভাই। হুম হয়তোবা ঠিকই বলেছো, সেই জন্যই হয়ত বিয়ের দিন আমায় ডাকেনি বা আমাকে ব্যস্ত করে রাখা হয়েছিলো। জানলে হয়তো একটা মেয়ের জীবন নস্ট হতে দিতাম না।

হয়তো আল্লাহ আমার বড় পরীক্ষা নিচ্ছেন তাই আমি এই বিয়েতে বাধ্য হই। নইলে হয়তো অন্য রকম হতে পারতো আমার জীবন টা। হুম তোমায় প্রথম দেখি তোমার বিয়ের ৩ দিন পর। কি অত্যাচার টাই না করছিলো তোমার উপর, কিন্তু সেদিন কিছুই বলার সাহস হয়নি। তুমি আসলেই অনেক সাহসি তাই সংসার ত্যাগ করতে পেরেছো।

সাহসী কিনা জানিনা, তবে অন্যায় কখনো মেনে নিতে পারিনি আর কখনো মেনে নিবোও না। তার মুখোশ আমি খুলেই ছাড়বো, প্রয়োজন এ তাকে খুন করে নিজে জেলে যাবো।

না তার প্রয়োজন হবেনা, কবিরাজ যা বলেছে তাই করো তাহলেই হবে। কিন্তু তোমাকে হত্যা করলো কেনো সেটা না শুনে আমি তোমার আত্মা কে মুক্ত করতে পারিনা। আমার আত্মা কে একটা জ্বীনের শরীর এ প্রবেশ করানো হয়েছে আর সেই জ্বীন তোমার যেকোনো মুহুর্তে ক্ষতি করতে পারে। এবার মিরা খুব ভয় পেয়ে যায়। আমার নাম মিরা, বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে ছিলাম, ভাইয়ের আদরের বোন। কিন্তু আজ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।
চলবে……

 

ছায়া_পার্ট_৩

0

ছায়া_পার্ট_৩

জামিয়া_পারভীন

ডাঃ তখন আমাকে মানসিক চিকিৎসা নিতে বলে আর ইলেক্ট্রিক শক দিতে বলে। কিন্তু আমি জানি আমার এসব কিছুই লাগবেনা। আমাকে ফাসানো হচ্ছে , সুযোগ বুঝে মা কে ব্যাপার টা খুলে বলি। আমার সাথে যা যা হয়েছে সব টাই জানাই মা কে। মা বলে ঠিক আছে বলে ডাঃ কে বলে শক বা ট্রিটমেন্ট নিবোনা বলে আমাকে বাচিয়ে নিয়ে আনে। শক দিয়ে আমাকে পাগল করার চেস্টা করা হয় তা জানতে পারি সেদিন রাত্রে মাসুদ আবার এসে বলে গেছে আর আমাকে সাবধান করে গেছে। পরের দিন আমি কলেজ গিয়ে আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড কে বলি এই সব কথা। সে আমাকে হেল্প করবে বলে।

আমার ফ্রেন্ড এক কবিরাজের সাথে কথা বলে। আমাকে নিয়ে যায় উনার কাছে, উনি আমাকে অনেক্ষণ দেখে বলে আমি অনেক বিপদে আছি। যে ভাবেই হোক আমাকে রক্ষা পেতেই হবে। মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি সব কিছু করতে রাজি হই।

কবিরাজ আমার ফ্রেন্ড সাগর কে বলে আমার নামে কিছু তাবিজ পুতে রেখেছে গোরস্তানের পাশেই। সেখানে কিছুদিন আগে প্রায়ই মাস খানেক আগে মাসুদ নামের এক ছেলে মারা গেছে। তারই লাশের গলাতে আমার ক্ষতি করার তাবিজ দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি আরোও অবাক হলাম এই সেই ছেলে মাসুদ যে আমাকে দেখা দেয়, সাবধানে থাকতে বলে, কিন্তু বুঝতে পারছিনা কি বলবো, কি হচ্ছে আমার সাথে। আমি কবিরাজ কে সব বলি, তখন কবিরাজ আমাকে আর সাগরকে বলে গোরস্তানে গিয়ে মাসুদের গলা থেকে তাবিজ টা খুলতে হবে তাহলেই আমি সব অশরীরী ছায়া থেকে মুক্ত হতে পারবো। আর এই তাবিজ খুলতে পারলেই আমার সেই কাল্পিট স্বামীর মৃত্যু ঘটবে আর তাবিজ খুলার পরপরই আমাকে নতুন করে বিয়ে করতে হবে। এই কথা শুনে সাগর বিয়েতে রাজি হয়ে যায়, কেননা সে আমাকে সব সময় হ্যাপি দেখতে চায়। খুব ভালোবাসতো ছেলেটা আমায় কিন্তু আমি নিজের সুখ ত্যাগ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে আজ নিজেই বিপদে আছি।

এখন আমাদের দুইজনকেই সেই তাবিজ উদ্ধারের কাজে যেতে হবে এতে আমাদের দুইজনের ও ক্ষতি হতে পারে। আর এইসব কথা যেন কেউইই না যানতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে বলে।

আমরা বাসায় চলে আসি, সেদিন রাত্রে মাসুদ এসে বলে তুমি আর যাই করোনা কেনো আমাকে তোমার থেকে আলাদা করিও না প্লিজ। আমি বলি তুমি কিভাবে জানলে, সে বলে আমি সব সময় তোমার আশেপাশে থাকি। হ্যাঁ আমি মৃত কিন্তু তোমার ক্ষতি হতে দিবোনা। আমার ছায়া সব সময় তোমাকে সাহায্য করতে পারবে। আমাকে সরিয়ে দিওনা, আর যদি সরিয়েই দাও তাহলে আমার খুনীর শাস্তি দিতে হবে এই ওয়াদা করো।

কে তোমাকে খুন করেছে মাসুদ, তুমিই বা কে সব খুলে বলো আমাকে আমি যতটুকু পারি সব করবো তোমার জন্য।
চলবে…………

 

ছায়া পার্ট2

0

ছায়া পার্ট2

#জামিয়া_পারভীন
রাতে বাসায় আসলাম, খাওয়া দাওয়া করে আবারো গল্প পড়ার নেশা থেকে গল্প পড়া শুরু করি। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ি আমি। হটাৎ সামনে খেয়াল করি মাসুদ দাঁড়িয়ে আছে। আমি চিৎকার করার আগেই মাসুদ আমার মুখ চেপে ধরে আর বলে চুপ ভয় পেয়ো না, আমি তোমার ক্ষতি করবোনা। একটু সাহস নিয়ে বলি কে আপনি, সে বলে আমি মানুষ না জ্বীন। আমাকে প্রথমে পাঠানো হয়েছে তোমাকে হত্যা করতে কিন্তু তোমার এতো সুন্দর নিষ্পাপ চেহেরা দেখার পর আমি আর তা পারিনি। আমাকে হত্যা করতে চান কেনো? কে ই বা আপনাকে পাঠালো আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা একটু বুঝিয়ে বলবেন কি? এতো ভয় পাচ্ছো কেনো? বলে মাসুদ, সে পরে হবে আগে বলো তো তুমি কি কারোও ক্ষতি করেছো কখনো।

নিজ স্মৃতি মনে করতে থাকি কি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে আমার জীবনে। মাসুদ আমাকে চুপ থাকতে দেখে বলে কি হলো সাড়া দাও আমি তোমার কথা শুনতে চাই। আমি বলতে শুরু করি….

আমি স্বেচ্ছায় কারোও কোন ক্ষতি করিনি করলেও সেটা নিজ অজান্তে হয়ে গেছে তাই হয়তো বিপদ আমার পিছু ছাড়ছে না।
হুম তুমি ভুল করেছো বিয়ে করে, যদি বিয়ে টা না করতে তাহলে কেউউইই তোমার ক্ষতি করতো না। কিভাবে আটকাটাম বিয়েটা, আমি তো মেয়ে, সবার কথা শুনতেই বাধ্য, আমার নাই কোন স্বাধীনতা, নাই বা আছে কোন ডিসিশন নেয়ার অধিকার, সবাই যে যার মতো আমার উপর বোঝা চাপিয়ে দেয় সেটা মানতে পারলে আমি ভালো নইলেই আমি যে খুব খারাপ।
আমি সেদিন ই তোমার সামনে আসিনি জানো, আমি তোমার পাশে আছি প্রায়ই এক মাস থেকে, বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখিয়ে তোমাকে বশে আনার কথা ছিলো আমার, এরপর তোমাকে হত্যা করার কথা ছিলো কিন্তু পারিনি কেনো জানো। তোমার কষ্ট আমাকে খুব ব্যথিত করেছে। তুমি প্রথম থেকেই সব কিছুই বলো আমি তোমাকে সাহায্য করতেও পারি।

আমি আবার ও বলা শুরু করি…
আমি একজন কে খুব ভালোবাসতাম, নিজের চেয়েও বেশি কিন্তু সব ভালোবাসা বুঝি কপালে থাকে না। হটাৎ বিয়েটা ঠিক হয় এক দিনের মাঝেই, আমি বাসা থেকে পালাতে চেয়েও পালাইনি শুধু মা বাবার সম্মানের কথা ভেবে কিন্তু এ বিয়ের পরিণাম যে এতো খারাপ হবে তা জানলে বিয়ে করতাম না। বিয়ে টা হয়েই যায়, এক বুক কষ্ট বুকে পাথর চাপা দিয়ে স্বামীর সংসার এ যায়। সেখানে স্বামীর ভালোবাসা না পেয়ে পাই অপমান আমি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়ে বলে।

এরপর শুরু হয় শারীরিক, মানসিক নির্যাতন। সবটা সহ্য করতে না পেরে কিছুদিন সংসার করে চলে আসি বাসায়।
কিন্তু আমি গরীব ঘরের তো কি হয়েছে আমি শিক্ষিত সেই জন্য বলে আসি নিজের পেটের খাবার নিজেই করে নিতে পারবো আমি কারো অপমান নিতে পারবোনা। এই কথা টাই হয়ে যায় কাল, এরপর থেকেই একের পর এক প্রব্লেম এ পড়েছি আমি আর সব শেষ এ আপনি এলেন সামনাসামনি আমাকে হত্যা করতে কি দোষ আমার, আমি মেয়ে বলে আজ আমাকে হত্যা করবে শুধু তারা ধনী বলে। টাকা আছে বলে টাকা দিয়ে কবিরাজ পুষে সেই কবিরাজ থেকে জ্বীন দিয়ে আমায় মেরে তাদের কি লাভ। আমি তো আর আমার আগের ভালোবাসার কাছে ফিরে যায় নি, শুধু শান্তি মতো বাচতেই চেয়েছিলাম।

এবার মাসুদ বলে হয়েছে থাক আর আজ কথা বলা সম্ভব না। আমাকে আজ যেতেই হবে, আর তুমি সাবধান এ থাকবে দুই টা দিন। এই দুইদিনের মাঝে বড় কিছু ঘটে যেতে পারে।

এতোক্ষণ বাসার সবাই আমাকে একা একা কথা বলতে দেখে আর মাসুদ কে তারা দেখতে না পেয়ে ভাবে আমি পাগল হয়ে গেছি। পরদিন আমাকে আমার পরিবার এর লোক জোর করে সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি তো জানি আমার কিছু হয়নি আর সেখানে গিয়েই ঘটে গেলো আরোও বিপদ।

চলবে…..

ছায়া_পার্ট_১

0

ছায়া_পার্ট_১
জামিয়া_পারভীন

আমি বরাবর ই ভুতের গল্প এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি, কিন্তু গল্প পড়তে খুব পছন্দ করি। সেই সুবাদে গল্প পড়া শুরু করলে একের পর এক গল্প পড়তেই থাকি। কিন্তু কখন নিজেই অজান্তেই ভুতের গল্প পড়া শুরু করে দিই বুঝতেই পারিনি। কিন্তু গল্প পড়া শুরু হয়ে গেলে তার শেষ কি হবে সেটা না জানা পর্যন্ত থামি না। এমনি একদিন রাত ১:৩০ মিনিটে একটা গল্প খুব আগ্রহ নিয়ে পড়া শুরু করি। কিন্তু অর্ধেক পড়ার পরই বুঝতে পারি ভুল করে ভুতের গল্পে হাত দিয়ে ফেলেছে। একে তো রাত এর উপর আবার ভুতের গল্প কিন্তু নেশার জন্য শেষ জানতে গিয়ে পুরো গল্প পড়ে শেষ করতে বাজে রাত ২ :৩০। একে তো রাত গোটা বাড়ি আধার শুধু আমি জেগে ছিলাম ভুতের গল্পের জন্য। এমনি আমি প্রচুর ভয় পাই, গল্প পড়ে ভয় টা যেন বেড়েই চলেছে। এরপরই মনে হতে শুরু করলো আমার পিছে কি যেন হাটছে বারবার মাথা ঘুরিয়ে দেখতে লাগলাম কিছুই বুঝলাম না।

এরমাঝে টয়লেট যাবার প্রয়োজন হলো আমার আর পা নড়ে না যদি কিছু থাকে সেইই ভয়ে। এরই মাঝে মনে হলো রান্নাঘর ঘর থেকে কোন শব্দ আসছে। ভাবলাম কেউ জেগে আছে অন্তত কাজ টা সেরেই আসি। কিন্তু রান্নাঘর এর পাশ দিয়ে যেতে হয় টয়লেটে। যেতে গিয়ে হটাৎ রান্নাঘর এ চোখ পড়ে একটা কালো ছায়া আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। ছায়া টা দেখেই খুব জোরে চিৎকার দিয়ে রুমে যায় কিন্তু কি আজব আমার চিৎকার নাকি বাসার কেউইই শুনতে পেলোনা।

খুব ভয় পেতে শুরু করলাম এবার আর মা মা বলে চিৎকার করি কিন্তু একিই গলা দিয়ে আমার ভয়েস বের হয় না। তারপর দেখি আবার সেই কালো ছায়া টা স্পষ্ট হতে থাকে আর তার ভয়ংকর রূপ প্রকাশ পেতে থাকে। কোন মানুষ এর অবয়ব নয় সেটা কেমন যেন বিদঘুটে দেখতে, ধোঁয়া এর মতো শরীর আর চোখ গুলি আগুনের ফু ল্ কি এর মতো। আগুনের চোখের মনি আবার মাঝে মাঝে লাল হয়ে যাচ্ছে আবার রক্তের মতো দাগ ও দেখা যাচ্ছে। অবয়ব টা আমার দিকে আসতে থাকে আর আমি চিৎকার করার চেষ্টা করেও পারিনা। অবয়ব টা খুব কাছে চলে আসলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

জ্ঞান ফিরে দেখি অনেকেই আমার সামনে বসা, নিজেকে আবিষ্কার করি হাসপাতালে, আমার চোখ খোলা তে অনেকেই খুব খুশি। পরে জানতে পারি মায়ের মুখে আমার তিন দিন জ্ঞান ছিলো না, আমি কিছু না বলেই চুপ ছিলাম কেননা তখনও অনেক জ্বর ছিলো আমার গায়ে। সেই ভয়ংকর মুহুর্তের কথা হটাৎ মনে পড়ে গেলো আর ভয়ে কাপতে থাকি।

আমাকে মা জিজ্ঞেস করে এখন এমন করছি কেনো কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারিনা। ভয়ের জন্যই কাউকে কিছু না বলে চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। পরে বলবো এমন টা ই ঠিক মনে করলাম। দুইদিন পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাসায় আসলাম। কিন্তু আমি আর আমার ঘরে যেতে চাচ্ছিনা। মা কে বললাম তোমার সাথে থাকবো, সেই রাতে মায়ের সাথেই ঘুমাতে গেলাম কিন্তু মাঝরাতে স্বপ্নে আবার সেইই ছায়া টা সামনে আসে।

ঘুমাতে পারছিলাম না তবে বুঝলাম আমার সাথে কোন খারাপ কিছু হতে চলেছে। পরদিন কলেজ এ গিয়ে আমার সব চেয়ে কাছের বন্ধুকে সব খুলে বললাম সেও কিছুটা অবাক হয়ে যায়।
পরে সে বন্ধু বলে নামাজ পড়তে, দোয়া পড়ে ফু দিতে আর সব সময় দোয়ার সাথেই থাকতে। আমি তার কথা শুনে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ি। বাসায় এসে নিজেকে নামাজ আর দোয়ার মাঝেই রাখলাম সারাদিন।

সেদিন আর কোন প্রব্লেম হয়নি কিন্তু বিপত্তি দেখা দিলো পরের দিন কলেজে গিয়ে। কলেজ থেকে কাজ শেষ এ ফিরতে একটু রাত হয়ে গেলো তখন মনে হলো আমার সাথে কিছু একটা আসছে সেটার একটু শব্দ হচ্ছে। পিছনে ঘুরলাম না দোয়া পড়া শুরু করলাম কিন্তু এবার সেই ছায়া আর পিছু ছাড়ে না। ভয় পেয়ে গেলাম কি করবো আর রাস্তাটাও বেশ নিরিবিলি মানুষ তো নাই যে কেউ হেল্প করবে।

এবার পিছনে ঘুরে দেখি একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, কিছু না বলতেই এগিয়ে এসে বলে কোন হেল্প লাগবে নাকি। আমি তার দিকে তাকিয়ে অবাক হই একে তো আমি চিনিনা কে সে, আর দেখতেও অনেক সুন্দর যেন রাজকুমার। আর সে জানলোই বা কিভাবে যে আমি ভয় পাচ্ছি। আমার ঘোর কাটিয়ে সে বলে আমি মাসুদ, এই এলাকা তে নতুন আপনার ভয় লাগছে মনে হয় একা যেতে আমি কি আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসবো। আমি মনে সাহস নিয়ে বলি ওকে চলুন সে হাটতে লাগলো আমার সাথে। কিছুক্ষণ ভালোই কথা বললাম এরপর খেয়াল করি আমার ছায়া আছে রাস্তায় কিন্তু মাসুদের ছায়া নাই। এটা দেখে যেই পাশে ঘুরি কাউকেই আর দেখতে পাইনা। আমার ভয় আরোও বেড়ে গেলো, কোন রকম দোয়া পড়ে বাসায় আসি।

চলবে………

বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)

3

বেইমানীvsলাভ♥ পার্ট_১০ ( শেষ)
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসা রাত পর্যন্ত অনেক কাদে ?সৌরভের এমন ব্যবহার এ।
রাত্রে খাবার সময় আম্মা সবাই কে নিচে ডাকে, রুমেসাও গেলো।

…. কি ব্যাপার রঙিন শাড়ি পড়েছো কেনো।
এখুনি গিয়ে চেঞ্জ করে আসো।

…. বাচ্চা মেয়ে থাক না আম্মা ( নিরা)

…. না থাকবে না, এই কুলক্ষী মেয়ে আবার কাকে খাবে।
ওর কি রঙ লেগেছে, রঙিন পোশাকে যেন আর না দেখি।

…. রুমেসা কাঁদছে, কিছুই বলার নাই তার।

…. আম্মা এসব বাদ দাও ভালো লাগেনা, ও যেমন ইচ্ছা থাকুক ( সৌরভ)

…. যা ভালো লাগে কর তোরা।

এভাবে দিন যাচ্ছে পার হয়ে, রুমেসা শুধু রান্না করে আর সবাই কে সার্ভ করে।
অন্যরা নিজেদের মতো চলছে।
সৌরভ মাঝে মাঝে রুমেসার কাছে যায়, কিন্তু রুমেসা আর সৌরভের সাথে কথা বলে না।
সৌরভ কে এটা খুব কাদায়।

কিছুদিন পর দুপুরে খাবার পরিবেশন করার সময় খাবারের পাত্র সহই রুমেসা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।

সৌরভ দৌড়ে এসে তোলে কিন্তু জ্ঞান ফিরে আসেনা।

ওকে নিজ ঘরে শুইয়ে ডাঃ ডাকে সৌরভ।

বাসার সবাই পেরেশান হয়ে যায়, কি হলো সেটা নিয়ে।

রুমেসা কে এক্সাম করে ডাঃ বলে রুমেসা প্রেগন্যান্ট।

এতে সৌরভ মনে মনে খুশি হলেও আম্মা চটে যায় ।

…. আমার ছেলে মরার এতো পরে কার পাপ মাথায় নিছে বলে কপাল চাপড়াতে থাকে আম্মা।

…. আম্মা এসব বলছেন কেনো, পাপ কেনো হবে।

…. ছেলে মরার দুই মাস পর বউ এক মাসের প্রেগন্যান্ট।
ওর উপর গজব পড়ুক।

…. আম্মা আপনাকে অনেক কিছু বলা লাগবে, কিছুই জানেন না।

…. কি জানিনা, আর কি দেখবো আমি। এর চেয়ে আল্লাহ তুলে নাও।
আর সহ্য করতে পারছিনা আমি এইসব।

…. আম্মা, রুমেসার সাথে আসিফ ভাইয়ের কখনো বিয়ে হয়নি।

…. কি যা তা বলছিস এইসব, তাহলে আমার মরা ছেলে এই মেয়ের সাথে এক ঘরে পাপ করেছে।

…. না রুমেসা ওমন মেয়ে না।

…. আজ মুখে চুনকালি মাখিয়ে বলিস রুমেসা ওমন না।
লোক সমাজে মুখ দেখাবো কেমন করে।

…. রুমেসা কে ভাই বিয়ে করেনি, কখনো স্পর্শ ও করেনি।

…. তাহলে বাচ্চা?

…. বলতে দাও, অনেক কথা বলার আছে।

সবাই শুনছে সব কথা, রুমেসাও মাথা নিচু করে বসে আছে।

আসলে ও আমার স্ত্রী , ওকে আমি বিয়ে করেছিলাম ১ মাস আগে, ভাই মরার পর।

আমি ওকে প্রথম দেখা থেকেই ভালোবাসি।

এরপর ওর রোজ রাতে কান্না আমাকে পেরেশান করতো।

তখন খোজ নিয়ে জানি সে ভাইয়ের বউ না।

ভাই ওকে কন্টাক্ট এ নিয়ে এসেছিলো এই বাসায়।

আলাদা থাকতো ওরা, সেটাও লক্ষ করেছিলাম অনেকবার।

ওর বাবা মা ওকে ভুল বুঝে বের করে দিছে বাসা থেকে সব ভাইয়ের মিথ্যা নাটকের জন্য।

ওর এই দুনিয়ায় আমি ছাড়া কেউ নাই।

ও আমাকে ভালোবাসতো কিনা জানিনা।

কিন্তু ওকে আমার কাছে আমি সব সময় চাইতাম।

সেদিন ও আমার সাথে হোটেলে ছিলো গাড়ি খারাপ হয়েছিলো তাই। ওর কোন দোষ ছিলোনা, আমি ওকে কাছে পাবার জন্য এমন করেছিলাম ইচ্ছা করেই।

ওকে কাছে পেলেও ওর সাথে মিলামিশা করিনি।

সেদিনের এই কথা ভাই জেনে গেছিলো, তাই রুমেসা কে আঘাত করে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে।

হয়ত পছন্দ করতে শুরু করেছিলো রুমেসা কে।

কিন্তু এই ভাবে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যাবে সেটা বুঝিনি।

ভাইয়ের মৃত্যুর এক মাস পর ওর কাছে কিছু পেপারে সাইন নিই।

সেখানে বিয়ের কাগজ ও ছিলো।

ওকে আমি অনেক ভালোবাসি, ওকে ছাড়া আমি বাচতে পারবোনা।

গতকাল অর বাসায় গেছিলাম আমি, ওর বাবা মা কে বুঝিয়ে সব বলেছি।

ওরা ভুল বুঝে কান্নায় ভেঙে পড়েছে।

আমি রুমেসা কে আবার বিয়ে করতে চাই।

এতো ঘটনা কেউ জানবে না, শুধু পরিবারের সবাই জানবে রুমেসা পবিত্র মেয়ে।

আর সবাই জানবে ভাইয়ের বিধবা বউ কে বিয়ে করেছি।

এতে পরিবার এর সম্মান বাচবে, সবাই ভালো থাকবে।

সবাই এইসব শুনে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মেনে নিতেই হলো সবাই কে।

পরের দিন রুমেসার বাবা মা আসে, বিয়ের সব ঠিক করতে।

রুমেসাও বাবা মা কে পেয়ে যেন সৌরভের উপর ভালোবাসা আবার জন্ম নিলো।

অনেক আয়োজন করে দুইজনের বিয়ে হয়।

বাসর রাত থেকে রুমেসা সৌরভ কে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করে সব রাগ অভিমান ভুলে।

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৯

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৯
#জামিয়া_পারভীন

কয়েক দিন কেটে গেলো এভাবে, রুমেসাও সাদা শাড়ি ছাড়েনি।
আর সৌরভ ও খুব রেগে আছে।

শুক্রবার এ বাসার সবার দাওয়াত তাই সৌরভ সবাইকে পাঠিয়ে দেয় রুমেসা ছাড়া। সৌরভ পরে যাবে বলে আর যায় নি, সে রুমেসার উপর রাগ তুলার জন্যই বাসা ইচ্ছা করে ফাকা করেছে।
বন্ধুকে মেনেজ করিয়ে সবাই কে নিয়ে গেছে বন্ধুর বাসায়।

এরপর রুমেসার ঘরে যায় সৌরভ, দেখে রুমেসা শুয়ে আছে।
কোন কথা না বলেই রুমেসার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে।
রুমেসা ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠে, পরে দেখে সৌরভ।

…. আপনি এখানে কেনো এসেছেন, চলে যান বলছি।

…. আমি আমার বউ এর কাছে আসবো, কেউ বাধা দিতে পারবেনা।

…. বউ মানে, কি যা তা বলছেন।

…. সেদিন কিছু পেপারে সাইন করেছিলা মনে আছে?

…. হ্যা, কি ছিলো ওতে।

…. সেখানে বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার ছিলো।
এখন থেকে তুমি আমার বউ তাই সাদা শাড়ি আর পড়বেনা।

…. কি বলছেন এইসব, আপনিও আমার সাথে বেইমানী করলেন।

…. এছাড়া আর কি করতাম আমি তোমাকে পাবার জন্য।

…. বেরিয়ে যান, আর আসবেন না আমার কাছে।

…. বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তো আসিনি, কাছে পাবার জন্য এসেছি, সাদা শাড়ি খুলে রঙিন পোশাক পড়িয়ে দিতে এসেছি।

…. এসব পাপ, চলে যান বলছি।

…. বুঝেছি তুমি স্বেচ্ছায় কাছে আসবে না।

জোর খাটাতে শুরু করে সৌরভ, কিন্তু কতোক্ষণ আর পারবে একটা ছেলের কাছে। এতো অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রুমেসা অজ্ঞান হয়ে যায়।
এরপর সৌরভ রুমেসা কে নিজে গোসল করিয়ে নিজ পছন্দ করা শাড়ি পড়িয়ে দেয়।

এরপর রুম থেকে বের হয়ে যায়।
বিকালের দিকে সবাই বাসায় ফিরে আসে, কিন্তু রুমেসা নিচে নামেনি দেখে নিরা উপরে গিয়ে ডাক দেয়।

রুমেসা কথা বলছেনা দেখে ধাক্কা দেয়, দেখে জ্ঞান নাই।
নিরা শন্ধ্যা পর্যন্ত সেবা করায় জ্ঞান ফিরে আসে রুমেসার।

…. কি রে কি হয়েছে, এতো ক্ষণ অজ্ঞান ছিলিস কেণো।

…. জানিনা ভাবি ( জেনেও মিথ্যা বললো ভয়ে)

…. আচ্ছা দেখে শুনে থাক, কিন্তু ভালো থাকিস ( রঙিন শাড়ি দেখেও কিছু বলতে গয়েও বললোনা)

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৮

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৮
#জামিয়া_পারভীন

সবাই গোরস্থান থেকে ফিরে আসে, সৌরভ এসে দেখে রুমেসা আগের মতো ই মেঝেতে পাথর হয়ে বসে আছে, চোখে পানি নাই আর।??
সে তার আম্মাকে ডাকে, আম্মা আসার পর বলে

…. তুমি তো কাজের লোক পাওনা রান্না করার জন্য, অন্য কারো হাতে খাও ও না, নিজেও পারোনা। ও এই বাসাতেই থাকুক।??

…. কিন্তু বাবা,,,,?

…. কোন কিন্তু নাই ও এখানেই থাকবে,
কারণ সৌরভ জানে ওর যাওয়ার যায়গা নাই। ??

এরপর রুমেসাকে ঘরে যেতে বলে, কিন্তু রুমেসার কোনই জ্ঞান নাই??, ধাক্কা দিতেই পড়ে যায় ।
বেশী শোকে পাথর হয়ে গেছে ??

এতে সৌরভ কারো দিকে খেয়াল না করেই কোলে তুলে নিয়ে দোতালায় ওর ঘরে শুইয়ে দিয়ে আসে। ??

সে জানে বুঝে কিন্তু তাও তখন অপমান করেছে ??

রুমেসা কিছুটা সুস্থ হয় কিছুদিন এ, সে সব কাজ করেনা, শুধু তিন বেলা রান্না করাই ওর কাজ।??
আম্মা ওকে সাদা শাড়ি এনে দিয়েছে, রুমেসা এখন পুরোই বিধবা সেজে থাকে।

সৌরভ ও তেমন রুমেসার সাথে কথা বলেনা?, রুমেসাও কারো সাথে তেমন কথা বলে না?। কাজ যত টুকু করার করে দেয়, আর আবির ও নাই কাছে। বড় একা হয়ে গেছে সে, এভাবে ই মাস পার হয়ে যায় । ??

সৌরভ এখন বাইরে গিয়ে বিজনেস দেখাশুনো করে, অনেক কাজ তেমন সময় ই পায় না সে। কিছুদিন পর
সৌরভ রুমেসার ঘরে যায় ,

…. কি করছো ?
…. বলেন ?
…. ভাই এর মৃত্যুর পর আমার রাগ হয়ে তোমায় অনেক অপমান করেছি,?? মাফ করে দিও?

…. না ঠিক আছে, কি বলবেন সেটা বলেন।

…. আসলে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়, তুমি কিছু বুঝবে না।??

ভাইয়ের অংশ তোমার নামে হয়ে গেছে, এখানে কিছু কাগজ আছে তোমার সাইন লাগবে। ??

…. আচ্ছা দেন করে দিচ্ছি। ??

রুমেসা পড়েও দেখেনি সে কিসে সাইন করেছে ??
আবারো সেইম ভুল করে বসে বিশ্বাস করে।

রুমেসা বলে….
…. একটা কথা বলি??

…. কি বলো ( মনে মনে খুব খুশি) ??

…. আবির কে এনে দেয়া যায় না, খুব একা লাগে।??

…. আজ থেকে আর একা লাগবেনা ডার্লিং।??

…. কি যা তা বলছেন এইসব। ??

…. যা তা নয় বোকা, পরে বুঝবে।

তখন রুম থেকে বের হয়ে যায় সৌরভ।

রাত্রে রুমেসা দরজা অফ করে শুয়ে আছে ?
সৌরভ নক করে, খুলতেই সৌরভ ভিতর থেকে লাগিয়ে দেয়।

…. কি করছেন কি আপনি। ?

…. বেশী কথা বলো না, তোমার সাথে থাকবো।?

…. আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন??, এখুনি বের হয়ে যান ??

…. আপনি করে কথা বলছো কেনো ??

…. আপনি বের হয়ে যান নইলে চিৎকার দিবো ??

…. কি বললে তুমি, আমাকে রাগিও না বলে দিলাম। ??

…. আমি সত্যিই এবার চিতকার দিবো। ??

…. আমি তোমায় এখনো ভালোবাসি আর তুমি এমন করছো কেনো???

…. আমি আপনাকে ভালোবাসি না, আমি বিধবা, ভুলে যাবেন না।??

…. ওহহ তাই নাকি, সত্যিই তুমি বিধবা নাকি।
কাল থেকে যেন আর সাদা শাড়ি না দেখি??, আর
চেহারার যত্ন নিবে?
, নইলে তোমাকে দেখে নিবো। ?

এখন চলে যাচ্ছি, পরে যখন আসবো ফেরত পাঠাতে পারবেনা।

কারণ তুমি শুধুই আমার

…. মানে কি? ?

…. বুঝতে হবেনা বুদ্ধু

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৭

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৭
#জামিয়া_পারভীন

আসিফের মৃত্যু সংবাদ আসে, সবার মাঝে কষ্ট ছেয়ে পড়ে।??
যত ই হোক, যত অন্যায় ই করুক আসিফ ছিলো সৌরভ এর ভাই।
ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা থাকা টাই স্বাভাবিক।?

তাই সৌরভ সবার সামনেই রুমেসা কে বলে..

…. তুমিই সেই অলক্ষ্মী, যার জন্য আমার ভাই মরেছে।?

…. বিশ্বাস করো আমি এমন কিছু করিনি। ?

…. চুপ যা তুই, সব দোষ তোর নইলে আজ এতো কিছু হতোনা।??

এই কথা গুলি আম্মা শুনে সেও রুমেসা কে দায়ী করে বসে।?
রুমেসা হয়ে যায় সবার চোখের কাটা, একটা মুহুর্তে সব শেষ হয়ে যায়। ??

এতে রুমেসা ও কষ্ট পেয়ে বলে বসে
…. তাহলে আম্মা আমার জন্য আপনার ছেলে মরেছে তাই না।।

…. হ্যা তাই, সব দোষ তোর, তোর পাপে আজ আমার সন্তান হারিয়েছি।?

…. তাহলে তো বলতে হয় আপনার ছেলের জন্য আবিরের আম্মা মারা গেছে।?

…. কি বললি তুই, তোর এতো সাহস, বের হয়ে যা বাড়ি থেকে।?
আবিরের মা মরেছে ভুল সিজারে আর তুই আমার ছেলেকে খেয়েছিস।

…. হ্যা, আপনার ছেলে যদি বাচ্চা না নিতো তাহলে সিজার করতে হতো না ভুলে যাবেন না।

আবিরের নানীও এসেছে জামাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সে বলে বসে রুমেসা ঠিকই বলেছে।
এরপর আবার বলে আমার নাতি এতিম হয়ে গেলো।

আমি আবির কে নিজের কাছে রাখতে চাই,
এই বাড়িতে রাখবো না,
এখানে মেয়ে গেলো, জামাই গেলো, নাতিকেও হারাতে চাইনা।

এই কথাতে সৌরভের আম্মাও সায় দিলো।

রুমেসা বলে
…. আবির কে নিয়ে গেলে আমি কি নিয়ে থাকবো।?

…. তুই বেরিয়ে যাবি এই বাসা থেকে ( আম্মা)?

…. আমার যাওয়ার যায়গা নাই।?

এইভাবে রুমেসা পাথরের মতো পড়ে থাকে নিচতলায় ডাইনিং এর মেঝেতে।

আজ ওর কেউ নাই, একমাত্র ভালোবাসা সৌরভ ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

লাশ নিয়ে বের হয়েছে বাসা থেকে, কিন্তু কেউউই রুমেসা কে বাসায় রাখতে চায় না।

মেঝেতে বসে রুমেসা কেঁদে ই চলেছে।

চলবে…..

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৬

0

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৬
জামিয়া_পারভীন

একে তো বৃষ্টি, তার উপর গাড়ি নষ্ট, দুজনেই ভিজে গেছে।
সৌরভ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো যে একটা বাসা আছে।
গাড়ি টা কোনরকম ঠেলে নিয়ে গেলো আর সেখানে আশ্রয় চাইলো।

সৌরভ নিজ পরিচয় দেয়, বলে আমরা হাজবেন্ড ওয়াইফ।
ঘুরতে এসে আটকিয়ে গেছি, তার উপর গাড়ি টা নষ্ট হয়ে গেছে।

সৌরভ দের নাম আছে শহরে তাই তারাও রাজি হয়ে যায়।
সৌরভ বাসায় কল দিয়ে আম্মাকে জানায়, তারা রুমেসার বাবার বাসায় আছে বৃষ্টি আর বজ্রপাত এ বের হতে পারছেনা।

এদিকে রুমেসা একটু রাগ করেছে, স্বামীস্ত্রী বলায়।
ওই বাসা থেকে দুইজনে কাপড় নেয় আর চেঞ্জ করে নেয়।
দুইজনের ই ঠাণ্ডা লেগে গেছে অনেক ক্ষণ ভিজাতে।

রাত হয়ে এসেছে সৌরভ রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে রুমেসার কাছে যেতে ই বলে…

…. মিথ্যা কেনো বললে, ?

…. তো কি বলতাম মহারাণী, সত্য বললে থাকতে পেতাম একসাথে।?

…. কিহহ! আমার সাথে থাকার জন্য এতো কিছু তাইনা।

…. হুম,
এরই মাঝে বাজ পড়ে, আর রুমেসা ভয়ে সৌরভ কে জড়ায় ধরে।
সৌরভ ও রুমেসাকে জড়িয়ে রাখে, কিছুক্ষণ পরে কানের কাছে আস্তে করে বলে

…. তোমাকে এই ভাবে এতো কাছে পাবো ভাবিনি।

…. রুমেসা সরে গিয়ে বলে সরি।

…. সরি বললে হবেনা, আদর করতে হবে।

…. হুহ, মরে গেলেও করবো না।

…. তুমি কি জানো সেই প্রথম দেখাতেই তোমাকে ভালোবেসেছি।

…. আমিও ভালোবাসি তোমাকে, প্রথম দেখা থেকেই।
কিন্তু তুমি কোথায় আর আমি, ভুলে যেও না সমাজ জানে আমি তোমার ভাইয়ের বউ।

…. সমাজ দিয়ে কি হবে আমি তো জানি তোমরা বিয়ে করোনি। অথচ একসাথে থেকেছো এতো দিন।

…. এক সাথে মানে, একই রুমে কিন্তু আলাদা থাকতাম।

…. আমি জানি দেখেছি তোমাকে, প্রায়ই তোমার কান্না শুনতাম।
কষ্ট পেতাম খুব, তাই তোমাকে দিনের বেলায় হাসানোর চেষ্টা করতাম।

…. তাই বলে আমি কিন্তু তোমার সাথে থাকতে পারবোনা আজ।

…. থাকবেনা মানে কি? থাকতে হবে বলেই কোলে তুলে নিয়ে বিছানে শুইয়ে দেয়।

…. কি করছো এইগুলা পাপ, ছেড়ে দাও।

…. কে বলেছে পাপ করছি, তুমি বিয়ে ছাড়া পরপুরুষ এর সাথে একই ঘরে থেকেছো আর আমি থাকলেই দোষ।

…. অন্যায় করিও না প্লিজ।

…. আমি শুধু তোমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো, আর কিছুই চাইনা।

রুমেসা কিছু বলছেনা, অন্যদিকে ঘুরে শুয়ে আছে।

…. কি ব্যাপার কিছুই বলছোনা যে, একটা বার তোমার সাথে কথা বলার জন্য কতো ছটফট করেছি আর আজ এতো কাছে থেকেও চুপ করে থাকবে।

…. কি বলবো, আমার খারাপ লাগছে খুব।
কেউ আমার বেডে আমাকে জড়িয়ে আছে এই প্রথম।
কিছু বুঝছিনা কি করবো আমি।

…. কিছুই করতে হবেনা, শুধু ভালোবেসো।
তোমার জন্য আমি সব কিছু করতে পারবো।
বাসায় সব কিছু বলে দিয়ে তোমাকে মুক্ত করে আমি বিয়ে করবো।
প্রয়োজন এ আলাদা থাকবো।
বিয়ের আগে তোমাকে কখনো ইউজ করবোনা নিশ্চিন্ত থাকো।
শুধু পাশে থেকো আমার।

…. রুমেসা সৌরভ কে ধরে খুব কাঁদছে, কি আর করবে, সুখের জীবনে আজ এতো কষ্ট এর পর একটু সুখ পেয়েছে সে।

পরদিন সকালে ওই বাসাতে বলে গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।
নাস্তা করে দুজনেই বের হয়, বাসায় ফিরে আসে।
রুমেসা যেমন খুশি, সৌরভ ও।

বাসায় গিয়ে যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সন্ধ্যায় আফিস ফিরে আসে।
আর এসেই রুমেসা কে ডাক দেয়, রুমেসা যেতে ই

…. লজ্জা করে না দেওরের সাথে রাত কাটিয়ে ঘরে ফিরতে।

…. মুখ সামলে কথা বলেন আমি এতো খারাপ না।

…. চুপ কর তুই, তোর মতো বেহায়া মেয়ে সব পারে, তুই তোর বাপের বাড়িতে গিয়েছিলিস নাকি অন্য কোথাও গিয়েছিস সব জানি।

…. রুমেসা ভয় পেয়ে যায়।
বলে কি যা তা বলছেন এই গুলি।

…. যা তা, তাই না, বলেই চুল ধরে অনেক মারে।
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, রুমেসা চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে।

সবাই বুঝতে পারায় সবাই এগিয়ে আসে।

কি হয়েছে বললে আসিফ ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
রুমেসার মাথায় খুব জোরে লেগেছে, রক্ত বের হয়ে গেছে।

সৌরভ ড্রেসিং করিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে বলে কি হইছে।
সবাই জানতে চাচ্ছে,

রুমেসা বলে কিছুনা আম্মা
আমি সৌরভের সাথে গিয়েছিলাম তাই রাগ করেছে।

সৌরভ বুঝতে পারে না কি বলবে।

আম্মা বলে গেছে তো কি হইছে।
তাই বলে এভাবে মারবে সে।

আসিফ রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে বারে গিয়ে মদ খায় আর
রাত্রে বাসায় ফিরার সময় এক্সিডেন্ট করে তখনি মারা যায়।

চলবে….

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৫

0

বেইমানীvsলাভ
পার্ট_৫
#জামিয়া_পারভীন

আসিফ সৌরভের ঘরে গেলো, সৌরভ আসিফ কে বুঝায় কক্সবাজার শাখায় বিজনেস নিয়ে প্রব্লেম চলছিলো সেখান এ যেতে ই হবে যত দ্রুত সম্ভব। আসিফ সেদিন রাতের ফ্লাইট এই চলে যায়।

পরে সৌরভ আর রুমেসার সাথে কথা বলেনি, এক টা পাপবোধ হচ্ছে ওর জন্য মেয়েটা আজ আরোও কষ্ট পেলো।

রুমেসার মন খারাপ, কিন্তু এই সংসার, বাচ্চা সব ছেড়ে সে যেতে পারছেনা, যাবে ই বা কোথায়। ?

বাচ্চার বাবা নাই তার উপর সব দায়িত্ব, আর সৌরভ ও আবির কে নিচ্ছে না। ?

পরদিন দুপুরে আম্মা বলে রুমেসা রান্না করে রাখিও, নিরা তো ওর মেয়েকে নিয়েই ব্যস্ত, আমি একটু বাইরে যাব। সৌরভ থাকলো বাসায় ভয় পেয়ো না কেমন, আবির কাঁদলে ওকে দিও।

রুমেসা বলে জ্বী করে রাখবো।

আবির কে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রান্না ঘরে আসে। মন খুব খারাপ তাও রান্না করছিলো।

কিছুক্ষণ পর রুমেসার শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায় এটা সে খেয়াল ই করেনি। যখন বুঝতে পারে তখন পাগলের মতো চিৎকার দেয় ভয়ে আর আঁচল নাড়াতে থাকে পানি না দিয়ে।
???

চিৎকার শুনে সৌরভ দৌড়ে নিচে আসে আর অবস্থা দেখে এক টান দিয়ে শাড়ি খুলে ফেলে দেয়। শাড়িটা পুরাই পুড়ে যায় মুহুর্তেই।

রুমেসা লজ্জায় উলটা দিক ঘুরে কাঁদতে থাকে। ?

সৌরভ রুমেসাকে বলে পাগল মেয়ে দেখেশুনে কাজ করতে পারোনা।
দিয়ে নিজের শার্ট খুলে রুমেসার গায়ে দিয়ে দেয় আর উলটা দিক হয়ে রুমেসাকে বসে ঘরে যাও আমি দেখছি না তোমাকে।?

রুমেসা দৌড়ে ঘরে চলে যায়।

সৌরভ নিচে সব ঠিক করে দেয়, রান্নার বাকি কাজ শেষ করে।
কেউ যেন পেরেশান না হয় তাই সব কিছু ম্যানেজ করে। ?

পরে নিচের কাজ শেষ করে ঘরে গিয়ে রুমেসা কে ডাকে। দরজা না খুলেই রুমেসা বলে

…. কি বলবে? ?

…. তোমাকে বাঁচালাম একটা ধন্যবাদ ও দিলা না।?

…. মরে গেলেই ভালো হত, কেনো বাঁচালে??

…. কি যে বলো এসব ভেবে টেনশন করিও না, আর কাউকে বলিও না কারোর টেনশন বাড়িও না, খেতে এসো নিচে।

…. আপনি খেয়ে নিন, আমি খাবো না।?

…. রুমেসা এমন করিও না।?

…. আমি তোমার ভাবি হই, নাম ধরে ডাকো কোন সাহসে।?

…. সরি ভাবি, নিচে এসো।

…. যাও তো।

সৌরভ আর কিছু বলেনা, দুপুরের পর মা আসলেই তাকে বলে আম্মা

…. আপনার বৌমা রান্না করেই ঘরে ঢুকে কাঁদছে, কিচ্ছু খায়নি।?

…. কেনো কি বলেছিস??

…. কি আবার বলবো বলো, বাচ্চা মেয়ে তার উপর বর কাছে নাই, বাবা মার জন্য কাঁদছে হয়ত।

…. রুমেসা নিচে নেমে এসে কথা গুলি শুনছে আর অবাক হয়ে বলে না আম্মা আমি ঠিক আছি।

…. আম্মা বলে, বুঝি মা মাস পার হয়ে গেলো বাবার বাসায় যাও নি। দিয়ে সৌরভ কে বলে : ওর বাবার বাসা কাছেই ঘুমিয়ে নিয়ে আই তো।

রুমেসা বলে আম্মা, আমার ছেলের কথা তারা জানেনা।
জানলে রাগ করবে তাই যাব না।?

আবির প্রব্লেম না কয়েক ঘন্টাই তো যাও আমি আর নিরা সামলে নিবো কয়েক ঘন্টা, যাও রেডি হয়ে এসো।☺

সৌরভ মনে মনে খুব খুশি কিছু সময় তো ওকে একা পাবে। ?

বিকালে দুইজন বের হলো, রুমেসা পিছনে বসতে যাচ্ছে গাড়ির।

…. আমি কি তোমার গাড়ির ড্রাইভার নাকি??

…. নাহ তা কেনো হবেন।

…. সামনে এসে বসো।

…. আচ্ছা,

বলে সামনে এসে বসে দুইজন এ।
সৌরভ গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু ঠিকানা জানেনা।
রুমেসা কে জিজ্ঞেস করছে ডান বাম এগুলা বলেই চলেছে রুমেসা। এবার সৌরভ ক্ষেপে গিয়ে গাড়ি ব্রেক কষে থামায় দেয়।বলে….

…. আর কতো দূর যেতে হবে, তোমার বাপের বাসা আর কত দূর।

…. রুমেসা কথা বলেনা।

…. কি ব্যাপার চুপ কেনো কিছু বলো ( ধমক দিয়ে)

…. এবার রুমেসা গাড়ি থেকে বের হয়ে কান্না করে দেয়, বলে
কি বলবো আমি আমার কোন বাসা নেই।

…. বাসা নেই মানে, তুমি কি রাস্তায় জন্মেছো।

…. মুখ সামলে কথা বলো, তুমি কি জানো আমি কে?

…. হ্যা জানি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না।তাই তোমাকে এতো ভালোবাসি??

…. তুমি জানো কিভাবে??

…. তুমি তো বোকা।
তোমার থেকে বয়সে, বুদ্ধিতে সব দিক দিয়েই বড় আমি ভুলে যেও না।
তাছাড়া তোমাকে প্রথম দিন দেখেই প্রেমে পড়েছি, যখন জেনেছি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না তখন ভালোবেসেছি।

…. আমি তোমায় ভালোবাসি না।

…. মিথ্যা বলিও না, তোমার মাঝে আমার জন্য দুর্বলতা আমি খুঁজে পেয়েছি।

…. ভুল ভেবেছেন, আমি আপনাদের মতো না। আপনার ভাই বেইমান, আপনিও। বেইমান।

…. রাগ করে আপনি বলছো কেনো?
সে কি করেছে অনেক টাই জানি, বাকি টা তোমার কাছে শুনবো।

রুমেসা বলতে শুরু করে সব কিছু খুলে বলে ভাইয়ের বেইমানি এর কথা।

এরই মাঝে বৃষ্টি এসে দুজন কেই ভিজিয়ে দেয়।
দুইজন ই ভিজে যায় একজন নিজ কষ্ট তে কাঁদছে অন্য জন প্রেমিকার ভালোবাসায় কষ্ট পাচ্ছে।

সন্ধ্যা নেমে আসে, সৌরভ বলে বাসায় ফিরতে হবে।
হুম চলো

সৌরভ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গিয়ে দেখে আর হয়না।
জোরে ব্রেক কষা তে গাড়িতে প্রব্লেম হয়ে গেছে।

চলবে….