Tuesday, June 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2393



ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৭

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৭

#Rabeya Sultana Nipa

 

_বিকেলবেলা প্রাপ্তি অরণী,আয়ান,সিয়াম,আসিফ রেডি হয়ে পাঁচ জনে মিলে আয়ানের বন্ধুর বোনকে দেখতে বের হয়েছে। আসিফ গাড়ী নিতে চেয়েছিলো কিন্তু আয়ান নিতে দেয়নি।

আয়ান -আমার গাড়ী থাকতে আপনারা অন্য গাড়ী নিবেন কেনো? আমরা সবাই একসাথেই যাবো।

আসিফ কাল রাতের কথা মনে করে আর কিছু বললোনা।রাতে একবার রাগ করেছে এখন আর রাগাতে চাই না।
সবাই মিলে মেয়েদের বাড়ীর সামনে নামলো।আয়ানের বন্ধু নিশান (মেয়ের ভাই)এসে তাদের কে এগিয়ে নিলো।
নিশানদের পরিবারে তার মা আর বোন নীরা (যাকে দেখতে আসছে)থাকে।নীরাকে দেখতে আসাতে তার কাকা আর কাকী শহরের থেকে এসেছে।নিশান আর নীরার কয়েকজন ফ্রেন্ড ও এসেছে।নিশান সবাইকে এনে ড্রইংরুমে বসিয়েছে।নিশানের মা তাদের সামনে এসে দাঁড়াতেই নিশান বললো,মা! এই হচ্ছে আয়ান আমার ফ্রেন্ড। প্রাপ্তি ওর ওয়াইফ, (অরণী কে দেখিয়ে)এই হচ্ছে আয়ানের শালি অরণী, অরণীর হ্যাজবেন্ড,আর নীরা জন্য যেই পাত্র এই হলো আসিফ।কথাটা বলতেই আসিফ সালাম দিলো।নিশানের মা সালাম টা নিয়ে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে, তোমার কথা অনেক শুনেছি নিশানের কাছ থেকে,নিশান তো দেখছি কম বলে ফেলছে তোমার ব্যাপারে।তুমি তো দেখতে এর ছেয়ে বেশি সুন্দর।

আয়ান বসে ফোন টিপতেছে আর বউয়ের প্রশংসা শুনে মুছকি মুছকি হাঁসছে।

অরণী আয়ানকে একটা চিমটি কেটে বউয়ের প্রশংসা শুনে খুব খুশি তাইনা?

আয়ান -কি করবো বলো আমার বউটা এতো বেশি সুন্দর যে কেউ প্রশংসা না করেই পারে না।
একটু পর নীরাকে তার কাজিন বিথী নিয়ে এসে সবাইকে সালাম দিয়ে ড্রইংরুমে আসলো।
প্রাপ্তি আর অরণী এগিয়ে গিয়ে নীরাকে নিয়ে এসে নিজেদের পাশে বসালো।

সিয়াম সবার দিকে তাকিয়ে বললো আমি আগে আমাদের ভবিষ্যৎ ভাবীকে একটা প্রশ্ন করি।
আয়ান -হুম করতেই পারো।

সিয়াম-(নীরার দিকে মুখ ফিরিয়ে) আমরা কিন্তু সবাই আপনাকে অনেক জ্বালাতন করবো আপনার কি এইগুলো সহ্য হবে?
(কথাটা শুনে নীরা হেঁসে দিলো।) আসিফ ভাইয়া! হাঁসি দেখে মনে হচ্ছে সহ্য হবে।

প্রাপ্তি -কিসে পড়ো?

নীরা -অনার্স ফাস্ট ইয়ার।

আয়ান -নিশান! এক কাজ কর ভাইয়া আর নীরা আলাদা ভাবে কথা বলুক। সেই ব্যবস্থাই কর।

নিশান -নীরা যাও আসিফ ভাইকে নিয়ে যা আয়ান ঠিকে বলেছে তোমেদের আলাদা ভাবে কথা বলা প্রয়োজন।
নীরা আর আসিফ ছাদে চলে গেলো কথা বলার জন্য।
অরণীকে চুপ থাকতে দেখে,

প্রাপ্তি-কিরে,,, পছন্দ হয়নি? এইভাবে আছিস কেনো?

অরণী -না,,,,হয়েছে।কিন্তু ভাইয়াকে কেমন চুপচাপ লাগলো না?

আয়ান -এখন দেখবা ঠিকি কথা বলবে।হয়তো আমাদের সামনে লজ্জাবোধ করছে।

প্রাপ্তি -হুম ঠিকি বলেছো।

চুপচাপ হয়ে দুজনেই দাঁড়িয়ে আছে।নীরাতো নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছে কেমন লোক একটা কথাও বলছেনা।ইচ্ছে করছে একটা তেলাপোকা ছেড়ে দিতে।কেনো যে কয়েকটা তেলাপোকা ধরে রাখলাম না!

নীরাই আগে কাশি দিয়ে গলাটা ঝেড়ে নিয়ে এহেম,,,আপনি কি রোবটের ছোটো ভাই?

আসিফ -মানে?

নীরা -আপনি কি কানেও কম শুনেন?

আসিফ-কি বলছেন এইসব?

নীরা -ঠিকি বলছি।একটা মেয়ে মানুষ আপনার সামনে একা দাঁড়িয়ে আছে আপনি কোনো কথাই বলছেন না।নাকি আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি?

আসিফ -আরে না কি বলেন।আপনাকে পছন্দ না করার উপায় আছে?অবশ্যই পছন্দ হয়েছে।

নীরা একটু রাগি ভাব নিয়ে, উপায় নাই মানে? আমার কি নাক একটা বেশি নাকি তাই আমাকে তোর পছন্দ হয়েছে।

আসিফ -আপনি আমাকে তুইতোকারি করছেন কেনো।সোজা বললেই তো হয় আপনি এই বিয়েতে রাজি না।

নীরা -তুই বলবো নাতো কি বলবো।আমিতো তোর ৬০ বছরের বড় তাই তুই আমাকে আপনি করে বলছিস। যতক্ষণ না আমাকে তুমি করে ডাকবি ততক্ষণ আমি তুই ডাকবো।

আসিফ ঘাবড়ে গিয়ে ওকে ওকে আমি তুমি করেই ডাকছি।আচ্ছা তুমি কি সবসময় এইভাবেই কথা বলো।

নীরা -না মাঝে মাঝে।তবে সবার সাথে করিনা শুধু আপনার সাথেই করবো।(কথাটা বলেই নীরা ফিক করে হেঁসে দিলো)

আসিফ -তার মানে এই বিয়েতে তুমি রাজি। তাহলে সোজাসুজি ভাবে তোমাকে কয়েকটা কথা বলি।তুমি কি পারবে আমার পরিবারের সবাইকে নিজের পরিবার বলে ভাবতে?পারবে আমার দুই বোনকে নিজের বোন ভাবতে? আমার পৃথিবী একদিকে আর আমার বোনরা আরেক দিকে।যদি তুমি এইসব সহ্য করতে পারো তাহলে বিয়েতে আমার কোনো অমত নেই।ও হ্যাঁ তুমি এই কথা ভেবো না তোমার কোনো অযত্ন হবে, বা তোমাকে আমি ভালোবাসবো না, এইসব কখনো ভেবো না।তোমার সবকিছুই আমার দায়িত্ব। আর আমার পরিবারের দায়িত্ব তোমার।এইবার তুমি ভাবো আমাকে কি তুমি বিয়ে করবে নাকি করবেনা।যদি তোমার সময় লাগে তাও দিলাম।
কথা গুলো বলেই আসিফ হাঁটতে শুরু করলো নিচে আসবে বলে।
নীরা আসিফ একটু হাঁটতেই বললো, দাঁড়ান!
আসিফ দাঁড়িয়ে পিছনে ফিরে তাকালো।

নীরা -আপনি আমাকে সময় দিয়েছিলেন না? কোনো সময়ের দরকার নেই আমি এখনি আনসারটা দিয়ে দিচ্ছি।

আসিফ -(নীরার দিকে এগিয়ে গিয়ে)জানি তুমি কি বলবে! তুমি এই বিয়েতে রাজিনা তাই তো? ওকে আমি নিচে গিয়ে বলে দিচ্ছি।সমস্যা নেই তোমার কোনো দোষ দিবোনা। আমি নিচে গিয়ে সব কিছু ম্যানেজ করে নিবো।

নীরা -রাখেন তো আপনার বকবক। আমি আপনাকে বিয়ে করছি বুজছেন?আমি আমার লাইফে এমন একজনকেই ছেয়েছি।যার মনে শুধু ভালোবাসা থাকবে। থাকবেনা কোনো অহংকার।আমি আপনাকে দেখে বুজেছি, যে মানুষটা পরিবারকে এতো ভালোবাসতে পারে সে মানুষের কখনোই মনে কোনো হিংসা থাকতে পারেনা।আমার আপনার মতো এইরকম একজন মানুষের দরকার।যে আমাকে অনেক ভালোবাসবে।

নীরার কথা গুলো শুনে আসিফ মুছকি হেঁসে মাথা নাড়িয়ে নিচে নেমে এলো।

আসিফকে আসতে দেখে আয়ান দাঁড়িয়ে,ভাইয়া আপনার কি পছন্দ হয়েছে?আমরা কি সামনে এগিয়ে যাবো?

আসিফ – সমস্যা নেই এগুতে পারো।
কথাটা শুনে সবাই আলহামদুলিল্লাহ্‌ বলে একজন আরেকজন মিষ্টি খাওয়াতে লাগলো।আয়ান এসে প্রাপ্তির কানের কাছে মুখ নিয়ে মহারাণী বিয়ে হবে একটা বাসরঘর হবে দুইটা।কথাটা শুনে প্রাপ্তি ভ্রু কুঁচকে আয়ানের দিকে তাকিয়ে, দেখা যাবে।
আয়ান -আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা।আমি যেটা বলবো সেটাই।

অরণী -এই তোমরা আবার কি ফিসফিস করছো? দুজনে মিষ্টি খাও।

আয়ান -আচ্ছা তাহলে আমরা কাজের কথায় আসি।আমাদের সবার মেয়ে পছন্দ হয়েছে।এখন বিয়ের ডেট তো ফাইনাল করতে হবে।আমরা তো দেখেই গেলাম।বাবা এবং মুরুব্বিরা এসে বিয়ের ডেট ফাইনাল করে যাবে।কি বলেন সবাই(নীরাদের সবার দিকে তাকিয়ে)

নীরার মা- আলহামদুলিল্লাহ্‌! তোমরা যা ভালো মনে করো।

নিশান -আয়ান আমি কিন্তু একা সব সামলেতে পারবোনা।তুই ওই দিকের কাজ সেরে সময় পেলে আমাকেও একটু সময় দিস।

আয়ান -চিন্তা করিস না।বিয়ে ফাইনাল হলেই অভ্রকে তোর জন্য পাঠিয়ে দিবো।

চলবে,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৬

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৬

#Rabeya Sultana Nipa

 

__প্রাপ্তি আয়ানের দিকে অবাক চোখে নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।,,,,,,
মনে মনে ভাবছে আচ্ছা এইটা কি পাগল নাকি অন্য কিছু।কেউ এইভাবে কারো,, ওয়াক থুঃ,,

আয়ান -এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছো? আর অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই।ভালোবাসার মানুষের সবকিছু ভালো লাগা উচিত হকনা ঘাম তাতে কি?( কথার ফাঁকে আয়ান খাবার অর্ডার দিয়ে দিলো)

অরণী কথা শেষ করে এসে বসতে বসতে কি ব্যাপার দুজনে কথা শেষ হয়েছে? হলে খাবার তাড়াতাড়ি দিতে বলো।

প্রাপ্তি আবারো আড় চোখে পাশের টেবিলের দিকে তাকাচ্ছে।কেনো আমার এই ভদ্র লোককে এতো চেনা মনে হচ্ছে।ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে ওনি আমাদের দিকে রাগীভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে।কিন্তু কেন?

ওয়েটার এসে অনেক রকমের খাবার এনে দিয়ে গেলো।
আয়ান -প্রাপ্তি এইরকম ভাবে না থেকে খাওয়া শুরু করো।
প্রাপ্তির সেইদিকে কোনো মন নেই।আয়ান প্রাপ্তির অন্যমনস্ক দেখে, এই তুমি আমার দিকে তাকাওতো আমি তোমায় খাইয়ে দিচ্ছি।
কথাটা শুনে প্রাপ্তি বললো আচ্ছা ঠিক আছে আমি খেয়ে নিচ্ছি।
আয়ান -একদম চুপ! হা করো আমি খাইয়ে দিচ্ছি।কথাটা বলেই প্রাপ্তিকে জোর করে খাইয়ে দিলো।

প্রাপ্তি -এইবার আপনি খান।

আয়ান -অরণী! প্রাপ্তি আজ আমাকে একবার তুমি বলে ডেকেছে।এখন আবার আপনিতে চলে গেলো।

অরণী – কিরে? সকালে তোকে বলছিনা ভাইয়াকে তুমি বলে ডাকতে?

প্রাপ্তি -অভ্যাস হয়ে গেছে পাল্টাতে তো সময় লাগবে তাই না?

আয়ান – নো প্রবলেম।তোমার যেমনটা ভালো লাগে।
প্রাপ্তিকে পাশের টেবিলে আবার তাকাতে দেখে, কখন থেকে ওই দিকে তাকিয়ে কি দেখছো?দেখিতো! কথাটা বলেই আয়ান ফিরে তাকাতেই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।আয়ানের হাঁসি মুখটা নিমিষেই মলিন হয়ে গেলো।প্রাপ্তি আর অরণী আয়ানের অবস্থা দেখে,
অরণী _ভাইয়া কি হয়েছে? তুমি মুহূর্তের মধ্যেই চেঞ্জ হয়ে গেলা?

প্রাপ্তি -আমার থেকে লোকটাকে কেমন চেনা চেনা লাগছে কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিনা কোথায় দেখেছি ওনাকে।।

আয়ান গম্ভীর গলায় নিচের দিকে তাকিয়ে বললো, ওনি আমার আব্বু!
প্রাপ্তি -(বিস্মিত হয়ে) কিহ্।

আয়ান -হুম প্রাপ্তি!

প্রাপ্তি -এই জন্যইতো অনেকক্ষণ থেকে আমার চেনা চেনা লাগছে।কিন্তু ওনি এইখানে কি করছেন?

আয়ান -হয়তো বিজনেসের কোনো কাজে আসছে।

প্রাপ্তি -ওনার সাথে গিয়ে কথা বলবানা?
তুমি এখনো বসে আছো।যাও ওনার সাথে গিয়ে কথা বলো।

আয়ান উঠে দাঁড়াতেই আবিদ চৌধুরী উঠে চলে গেলো। আয়ান তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে, প্রাপ্তি! ওনি হচ্ছেন বিখ্যাত বিজনেস ম্যান আবিদ চৌধুরী। ওনার সাথে আমাদের যায়না।

প্রাপ্তি -আমার হ্যাজবেন্ডও কোনো অংশে কম নয়। সেটা ওনাকে বুজতে হবে।আর সেটা আমি ওনাকে বুজাবো।শুধু ভাইয়ার বিয়েটা মিটে যেতে দাও।

অরণী আচ্ছা এখন খাওয়া শেষ করো বাসায় যেতে হবে।বিকালে আবার নাকি মেয়েও দেখতে যাবা।ভাইয়া তোমার বন্ধুকে ফোন করেছো ওদের বাসায় যে যাবা।

আয়ান বসতে বসতে, ওইটা নিয়ে তোমাদের চিন্তা করতে হবেনা।

প্রাপ্তি -এককাজ করো ভাইয়াকে একটা ফোন দিয়ে দেখো রেশী কে নিয়ে কলেজ থেকে আসছে কিনা।

আয়ান -ভাইয়া আমাকে এসএমএস অনেক আগেই দিয়েছে ওরা বাসায়।

অরণী খাওয়া শেষ করে পানি ঢালতে ঢালতে, তবে যাই বলিস রেশীকে আমার খুব ভালো লাগে।অনেক সহজ সরল একটা মেয়ে।বুজা যাচ্ছে মেয়েটা তোদের অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।আর ভালোবাসবে না কেনো বল তোরা তো ওকে কাজের মেয়ের মতো করে রাখিসনা।

প্রাপ্তি -অরণী! ও অনেক বড় ঘরের মেয়ে হয়তো ভাগ্যে তাকে আমাদের কাছে টেনে এনেছে।শুনেছি ওর বাবা নাকি মেয়েকে অনেক খুঁজেছে।কিন্তু পায়নি।পাবেই বা কি করে ও তো আমাদের কাছেই।জানিস ও বিয়ে থেকে পালিয়ে আসছিলো। ওর সৎ মা নাকি কোনো এক বাজে ছেলের সাথে ওকে বিয়ে দিতে ছেয়েছিলো।কোনোরকম ভাবে সেইখান থেকে পালিয়ে এসে রাস্তার পাশেই বসে ছিলো।তোর ভাইয়া সেই দিন রাতে কোনো একটা কাজে বাহিরে গিয়েছিলো। একা একটা মেয়ে আশেপাশে ছেলেরাও অন্য রকম ভাবে দেখছে। তোর ভাইয়া তো ওকে দেখেই বুজে ফেলেছিলো ও হয়তো পালিয়ে টালিয়ে আসছে।আর ওকে যখন তোর ভাইয়া একবার জিজ্ঞাস করলো যে ও একা কেনো বসে আছে ও সবকিছু গড়গড় করে বলে দিলো।তখন তো তোর ভাইয়া ওকে একা রেখে আসতে পারেনি। তাই সাথে করে নিয়ে এসেছে।আয়ান প্রাপ্তির কথা গুলো শুনছে আর মুখে হাত দিয়ে মিটমিট করে হাঁসছে।অরণী প্রাপ্তি কথা গুলো শুনছে আর বারবার আয়ানের দিকে তাকাচ্ছে।
অরণী -ভাইয়া কথা জিজ্ঞাস করি?

আয়ান -হুম করো না!

অরণী -আপনি হাঁসছেন কেনো?
অরণীর কথা শুনে প্রাপ্তি রাগি ভাব নিয়ে আয়ানের দিকে তাকালো।

আয়ান -(প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে)সত্যি বলছি আমি অন্য কিছু ভেবে হাঁসিনি। একটা কথা ভেবেই আমি হাঁসছি, আর সেটা হলো। তুমি যখন আমার সাথে কথা বলতেনা তখন তো আমি নিজেই বকবক করতাম।আর আমি তখন ভাবতাম আচ্ছা আমি যে এতো বকবক করছি ও কি আমার কথা গুলো শুনে নাকি শুনে না, সেটাও তো বুজতে পারিনা।তবে আজ বুজলাম তুমি আমার সব কথায় শুনতে।

প্রাপ্তি- (একটু ভেংচিয়ে) শু,,,,,,ধু শুনতাম না! ম,,,,,,ন দিয়ে শুনতাম।

আয়ান -জানো অরণী! তবে আমার একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে তোমার আপুর,সেটা হলো ও আমাকে কখনো সন্দেহ করেনি।কারন যেদিন রাতে আমি রেশীকে নিয়ে এসেছিলাম কিছু না বলে, সেইদিন রেশীকে নিয়ে আমি খুব ভয়ে ভয়ে কলিংবেল চাপলাম। যদি তোমার আপু আমাকে ভুল বুজে কিছু করে বসে।কিন্তু তোমার আপু দরজা খুলে আমাকেই অবাক করে দিয়েছে।কারণ রেশীকে দেখে তার চোখেমুখে বিষণ্ণতার কোনো চাপ নেই।উল্টো মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে রেশীকে বাসায় নিয়ে বসালো।আর রেশীর কি যে যত্ন করেছে তোমাকে বলে শেষ করা যাবেনা।আমি সেইদিন বুজলাম তোমার আপু আমাকে অনেক বিশ্বাস করে।আর আমার প্রতি ওর বিশ্বাস দেখে আমি নতুন ভাবে আবার ওর প্রেমে পড়লাম।

অরণী -আপু দেখেছিস ভাইয়া তোকে কতো ভালোবাসে।আর তুই ভাইয়াকে অনেক কষ্ট দিস।

প্রাপ্তি -অনেক কথা বলা হয়েছে এইবার বাসায় চলো।

আবিদ চৌধুরী বাসায় এসেই চিৎকার দিয়ে, আয়েশা! আয়েশা! কোথায় তুমি?

আয়েশা বেগম নিজের রুম থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসে, এইরকম বাহিরে থেকে এসে চেঁচাচ্ছ কেনো?
সুমিও উপরের থেকে দৌড়ে নিচে নেমে এলো।

আবিদ চৌধুরী -তোমাদের কি মনে হয় আমি এতোই পাষাণ? আমার মনে কোনো দয়ামায়া নেই।আমি দয়ামায়াহীন?

আয়েশা বেগম -তোমার মনে অনেক দয়ামায়া তাই আমার কলিজা টুকরো টা বউ নিয়ে বাহিরে থাকতে হয়।অবশ্য ভালোই হয়েছে ছেলেটা নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে।এইবার কি হয়েছে সেটা বলো।

আবিদ চৌধুরী আয়েশা বেগমের কথা শুনে নিমিষেই যেনো রাগ টা কমে গেলো।চুপচাপ সোফায় বসে পড়লো।

সুমি -বাবা কি হয়েছে আপনার? আপনি যে কাজে গেছেন সেটা হয়নি?

সোফায় মাথাটা হেলান দিয়ে কান্না জড়িতো কন্ঠে, আবিদ চৌধুরী কোনো কাজে হারতে শিখেনি। কিন্তু তার ছেলের কাছেই হেরে বসে আছে।(ঠাট্টা করে)জানো আয়েশা আমার ছেলে বউয়ের প্রতি কি অবিরাম ভালোবাসা দেখে আমি নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেছি।বউয়ের ঘাম খাওয়া হচ্ছে।পাবলিক প্লেসে বউকে খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কথা গুলো শুনে আয়েশা বেগম আর সুমি দুজন দুজানার দিকে তাকিয়ে আছে।

আয়েশা বেগম -কার কথা বলছো তুমি?

আবিদ চৌধুরী -কেনো বুজতে পারোনি? তোমার গুণোধর ছোটো ছেলের কথা বলছি।কথাটা বলেই আবিদ চৌধুরী উঠে নিজের রুমে চলে গেলেন।
সুমি আর আয়েশা বেগম দুজনে কাছাকাছি এগিয়ে এসে হাঁসতে শুরু করলো।

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৫

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

_অরণী অট্ট হাঁসি দিয়ে আমার জন্য কোনো মানা নাই ভাইয়া।যেতেই পারি।

অরণীর কথা শুনে আয়ান নিজেও হাঁসতে শুরু করলো।
অরণী- আচ্ছা তাহলে তোমরা কথা বলো আমি আসছি।সিয়াম আবার একা রুমে বসে আছে।কাল কিন্তু আমরা বিকেলবেলা মেয়ে দেখতে যাচ্ছি এটাই ফাইনাল।
কথাটা বলেই অরণী চলে গেলো।

আয়ান -প্রাপ্তি! তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে গিয়ে শুয়ে পড়লো।আয়ান মনে মনে ভাবছে সবেমাত্র কথা বলা শুরু করেছে কোনো কিছু নিয়ে বেশি চাপাচাপি করা যাবেনা।না হলে আবার আগের মতোই হয়ে যাবে।
সকাল বেলা অরণীর ডাকে ঘুম ভাঙলো প্রাপ্তি আর আয়ানের। আয়ান ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে অরণীকে দেখে কি ব্যাপার অরণী কিছু বলবে?অরণী রুমে ঢুকে কয়টা বাজে দেখেছো? (প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে)বাহ্ মহারাণী ও তো দেখছি এখনি আড়মোড়া ভাঙতেছে।
আয়ান হাতের ঘড়ি টার দিকে তাকিয়ে দেখে ৯.২০ বেজে গেছে।ও মাই গড! তুমি এতোক্ষণ ডাকনি কেনো?

অরণী -আচ্ছা সারারাত কি দুজন ঘুমাওনি?
অবশ্য জেগে থেকেই বা কি করবে ঘুমানো ছাড়া।

প্রাপ্তি -তুই একটু চুপ করবি?কখন থেকেই বকবক করে যাচ্ছিস।
(আয়ান তয়ালেটা হাতে নিয়ে হাঁসতে হাঁসতে ওয়াশ রুমের দিকে যাচ্ছে)

অরণী -চুপ থাকতে বলছিস কেন? আপু আমি কিন্তু ছোটো নয় সবকিছুই বুজার বয়স আমার হয়েছে।

প্রাপ্তি -কি বলতে চাইছিস তুই?

অরণী -কথা টা শুনে তুই রাগ করিস না। তবে আমার যা মনে হচ্ছে তাই বলছি।
আমার মনে হয় তোদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে সেটাই তোদের মাঝে নাই।
অরণীর কথা শুনেই আয়ান ওয়াশ রুমের দরজাই দাঁড়িয়ে পড়লো।
আর প্রাপ্তি অবাক হয়ে অরণীর দিকে তাকিয়ে কি বলছিস তুই এই সব?
আয়ান আবার অরণীর আর প্রাপ্তির কাছে এগিয়ে এসে অরণী তোমার এমন কেনো মনে হলো?

অরণী -আগে মনে হয়নি, কাল তোমার কথা শুনেই মনে হলো,আচ্ছা তুমিই বলো কেউ কারো বউয়ের জামা কাপড় চেঞ্জ করতে লজ্জা পায়?
(অরণীর কথা শুনেই প্রাপ্তি আর আয়ান দুইজন দুজনার দিকে তাকিয়ে আছে।)

কথাটা মনে হয় ঠিকি বলছি না হলে দুজন এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?

আয়ান অরণীকে আর কিছু না বলেই ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলো।

প্রাপ্তি -তুই আসলে কি বলতো কথা টা আমাকে আলাদা ভাবেও তো বলতে পারতি।এইভাবে ওনার সামনে না বললেও পারতি।

অরণী -তুই চুপ করতো।দোষ তো তোরই তুই ভাইয়াকে কষ্ট দিচ্ছিস কেনো?একটা মানুষের সাথে দুইটা বছরের বেশি সংসার করছিস এখনো তুমি কথাটা বলতে শিখিসনি।তোর এইসব পাগলামো কিভাবে যে ভাইয়া সহ্য করে আল্লাহ ভালো জানে।সিয়ামের সাথে তোর বিয়েটা হয়নি ভালোই হয়েছে।না হলে আরো আগে তোকে এই বাড়িতে আসা লাগতো।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আমি যেনো তোকে আর না দেখি ভাইয়াকে আপনি করে ডাকছিস।তুমি করে বলবি।এখন ফ্রেশ হয়ে দুইজনে নাস্তা করতে আয়।

প্রাপ্তি বোকার মতো দাঁড়িয়ে কথা গুলো শুনেই যাচ্ছিলো।অরণী চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে অরণী সত্যিই বলছে অন্য কোনো ছেলে হলে আমাকে আরো আগেই ডিভোর্স দিয়ে চলে যেতো।কিন্তু আয়ান আমার জন্য নিজের সব কিছু ছেড়ে আমার কাছে পড়ে আছে। শুধু আমাকে ভালোবাসে।এখনকার ছেলেরা শুধু মেয়েদের দেহ টাই বুজে কিন্তু আয়ান কখনো আমাকে কোনো কিছু নিয়ে জোর করেনি।আয়ানের মতো যদি ছেলেরা হতো তাহলে কখনো মেয়েদের এতো অপমান,অপদস্থ, লাঞ্ছিত হতে হতো না।মেয়েরা নিজেদের সম্মান নিয়েই বেঁচে থাকতে পারতো।আয়ান এসে প্রাপ্তির কাঁধে হাত দিতেই প্রাপ্তি চমকে গিয়ে আয়ানের দিকে তাকালো,

আয়ান -কি হলো এইভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।

প্রাপ্তি হুম বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

নিলিমা বেগম টেবিলে নাস্তা দিয়েছে, আয়ান, প্রাপ্তি, অরণী আর আজাদ সাহেব বসেছে নাস্তা করার জন্য।

আয়ান -মা রেশী কোথায়?ভাইয়া আর সিয়াম কেও তো দেখছি না।ওরা নাস্তা করবেনা?
নিলিমা বেগম -আসিফ নাস্তা করেই রেশীকে নিয়ে ওর কলেজে গেছে,বলেছে রেশীকে নামিয়ে দিয়ে অফিসে যাবে।

অরণী -সিয়াম ও খেয়ে অফিসে চলে গেলো।আব্বু তোমার সাথে নাস্তা করবে বলেই সকাল থেকে নাস্তা করেনি।
কথা শুনেই আয়ান লজ্জা পেয়ে গেলো।তার কখনোই ঘুম থেকে উঠতে এতো দেরী হয়না।আজ যে কি হলো বুজলাম না।

আয়ান-সরি আসলে আমি আজ বলতেই পারবো না।

আজাদ সাহেব -আরে কোনো প্রবলেম নাই।আমি এমনিতেই নাস্তা একটু দেরিতেই করি।

কথাটা শুনে আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে, প্রাপ্তি তুমি না আজ শপিং করতে যাও? নাস্তা করে রেডি হয়ে নাও।অরণী তাহলে তুমিও রেডি হয়ে নাও।

প্রাপ্তি -আজকেই যেতে হবে?

আয়ান -হুম আজকেই।(মনে মনে)আজ যখন তোমাকে নিয়ে ঘুরার সুযোগ পেয়েছি এইটা হাত ছাড়া করি কিভাবে?

অরণী -আপু তুই না করিস না।চলনা একসাথে ঘুরে আসি।

প্রাপ্তি -আচ্ছা ঠিক আছে।

সবাই নাস্তা শেষ করে তিন জনই শপিং করার উদ্দেশ্য বের হলো।
প্রাপ্তি এই প্রথম আয়ানের সাথে শপিং করতে আসলো। এতো দিন প্রাপ্তির যা কিছু লেগেছে আয়ানই সব কিছু প্রাপ্তি না চাইতেই এনে দিতো।আয়ান কেমন করে সব বুজে যায়। প্রাপ্তির মনে কখন কি চায়।সবকিছু বুজার চেষ্টা করে।হয়তো প্রাপ্তির চোখে চোখ রেখে প্রাপ্তির মনকে পড়তে আপ্রাণ চেষ্টা করে।
আজ অনেক শপিং করলো প্রাপ্তি কিন্তু নিজের জন্য কিছুই নিলো না সব কিছু আয়ান আর নিজের পরিবারের জন্য।রুমকির জন্য তো ড্রেস খেলনা সব কিছুই নিয়েছে।

আয়ান প্রাপ্তির কান্ড গুলো দেখেই যাচ্ছে কিছু বলছেনা প্রাপ্তির মনে কষ্ট পাবে তাই।কিন্তু একটা কথা না বলে পারছেনা। তাই প্রাপ্তির কানের কাছে গিয়ে, আচ্ছা প্রাপ্তি সবার জন্য এতো কিছু নিলে নিজের জন্য কিছু নিচ্ছো না যে।

প্রাপ্তি মুছকি হেঁসে আমার নিজের জন্য নিজে কিনার প্রয়োজন নেই।তুমিই আমার জন্য যে শপিং করো সেই গুলোই শেষ করতে পারিনা।এখন যদি আমিও আমার জন্য নিতে থাকি তাহলে মানুষে কি নিবে।
কথাটা শুনে আয়ানের খুব ভালো লেগেছে,কিন্তু না হেঁসে পারলোনা।

আয়ান -আচ্ছা তাই নাকি?কিন্তু প্রাপ্তি আমাদের বাড়ির সবার জন্য যে নিলে এইগুলো দিবে কি করে?

প্রাপ্তি -ওইটা নিয়ে তোমায় এখন ভাবতে হবে না। বাসায় গিয়ে দেখা যাবে কি করা যায়।
এইদিকে আয়ানও প্রাপ্তিকে না জানিয়ে নিজের পছন্দের দুইটা শাড়ি নিয়ে নিলো।
শপিং শেষ করে তিন জনে একটা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্য রওনা হলো।আয়ান প্রাপ্তি আর অরণীকে রেস্টুরেন্টের সামনে নামিয়ে দিয়ে,তোমরা গিয়ে বসো আমি গাড়িটা রেখে আসছি।প্রাপ্তি আর অরণী কথা বলতে বলতে দুইজনে গিয়ে বসলো।অরণী বসতেই ফোনটা বেজে উঠলো।

অরণী ফোনটা পার্স থেকে বের করতে করতে সিয়াম মনে হয় ফোন করেছে, তুই এইখানে বস আমি কথা বলেই আসছি।

পাশের টেবিলের একটা লোক বার বার প্রাপ্তিকে দেখছে।প্রাপ্তির নজর পড়তেই অস অসস্থি বোধ হচ্ছে।কিন্তু লোকটাকে কোথায় যেনো দেখেছি।মনে হচ্ছে ওনার সাথে আমার আগেও দেখা হয়েছে।ওনাকে দেখে বাজে লোক মনে হচ্ছে না।মনে হচ্ছে ওনিও আমাকে চিনার চেষ্টা করছে।এমন সময় আয়ান এসে প্রাপ্তির পাশে বসতে বসতে কি ব্যাপার অরণী কই? এখনো খাবার অর্ডার করোনি?
কথা গুলো বলতে বলতে আয়ান খাবারে মেনু গুলো দেখছে।কি হলো কিছু বলছনাযে,প্রাপ্তি চুপ হয়ে থাকতে দেখে দুই হাত দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে সে পাশের টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে।নিজের হাত দিয়ে প্রাপ্তির মাথাটা ঘুরিয়ে, আমার দিকে তাকাও এতোক্ষণ কি জিজ্ঞেস করছি তোমায়?
আর এইভাবে ঘামাচ্ছো কেনো কি হয়েছে তোমার?

প্রাপ্তি নিজের ঘাম গুলো মুছতে যাবে তখনি আয়ান হাতটা ধরে ফেললো।আয়ানের হাত ধরতে দেখে প্রাপ্তি আস্তে করে বললো কিছু হয়নি।এমনি হয়তো ঘামাচ্ছি।

আয়ান অনেকক্ষণ প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে থেকে তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।ঘামালেও মানুষকে সুন্দর দেখায় এইটা তোমাকে দেখে বুজলাম।এখন আমি তোমার ঘাম খাবো।

প্রাপ্তি -(চোখ মুখ কুঁচকে) কিহ্। আপনার মাথা খারাপ হলো নাকি? কি উল্টা পাল্টা বকছেন? (প্রাপ্তি ভেবেছে আয়ান হয়তো তাকে কিস করা কথা বলছে। এইখানে পাবলিক প্লেসে যে ওনার মাথায় কি ভূত চাপছে বুজতেই তো পারছিনা।)আমি বুজেছি কি বলতে চাচ্ছেন আমরা বাসায় যাই তারপর না হয়,,,,,,

আয়ান -না এইখানেই,,,কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ছেড়ে দিয়ে প্রাপ্তির কপাল থেকে একটু খানি ঘাম আয়ান মুখে দিয়ে হুম্মম্মম্মম অনেক টেস্ট।
প্রাপ্তি আয়ানের দিকে অবাক চোখে নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।,,,,,,

চলবে,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৪

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৪

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আয়ান বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো এক অজানার পথে। কোথায় যাবে কি করবে কিছুই মাথায় আসছে না আয়ানের। বাড়ি থেকে না এসেও উপায় কি? ওই বাড়িতে থাকলে প্রাপ্তিকে বার বার আব্বুর কাছে অপমান আর অপদস্থ হতে হতো।নিজের স্ত্রী কে নিজের চোখের সামনে এইভাবে দেখা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব না।কথা গুলো ভাবতেই প্রাপ্তির দিকে নজর পড়লো আয়ানের। সকাল থেকে তো মেয়েটা কিছু খায়নি।আমি অফিসে যাবো বলে সবকিছু রেডি করতেই তো সময় চলে গেলো তারপর তো আব্বু আসার পর আর খাওয়াই হয়নি।
একটা রিকশা দাঁড় করিয়ে, মামা রেস্টুরেন্ট এর দিকে চলেন।কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে এমন একটা অবস্থায় রেস্টুরেন্টে যাবার কথা মাথায় আসে কি করে। এখন কি রেস্টুরেন্টে যাবার সময়?

আয়ান-হা করে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? রিকশায় উঠো।

প্রাপ্তি চুপচাপ রিকশায় উঠে বসলো।দুজনে রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো। আয়ান অনেক গুলা খাবার অর্ডার করলো। প্রাপ্তি শুধু দেখেই যাচ্ছে।

আয়ান প্রাপ্তির তাকানো দেখে, চিন্তা হচ্ছে?
চিন্তা করোনা! দেখবে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।ওয়েট! আসিফ ভাইয়াকে একটা ফোন দিয়ে এইখানে আসতে বলি।
ফোনটা পকেট থেকে বের করে আসিফকে ফোন দিয়ে বললো রেস্টুরেন্টে আসার জন্য।
আসিফ আর কোনো প্রশ্ন করলো না আয়ান কে।
আয়ান আসিফের সাথে কথা শেষ করে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।সকাল থেকেতো কিছুই খাওনি।
এখন খেয়ে নাও।ভাইয়া আসলে তুমি ভাইয়ার সাথে চলে যাবে।এইদিকে আমি বাসা ঠিক করে একটা চাকরি পেয়ে গেলেই তোমাকে নিয়ে আসবো।

প্রাপ্তির হাজার টা প্রশ্ন নিয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।আমাকে ওই বাড়িতে দিয়ে ওনি কোথায় থাকবে? চাকরি বা পাবে কোথায় এখন?এই কয়েকটা দিন ওনাকে দেখেই কেমন জানি মায়া কাজ করে।

আয়ান প্রাপ্তির চোখের দিকে তাকিয়ে মুছকি হেঁসে,শুধু তাকিয়েই থাকতে পারো মুখে তো আর কিছু বলতে পারো না।মনে যে প্রশ্ন গুলো দানা বেধেছে সেই প্রশ্ন গুলো আনসার পরে দিবো। আগে খেয়ে নাও।

অনেকক্ষণ পরে আসিফ চলে আসলো।আসিফকে দেখে আয়ান উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে ভাইয়া বসুন।

আসিফ -হুম তুমিও বসো।

আসিফ বসতে বসতে তোমরা কোথাও যাচ্ছো নাকি?

প্রাপ্তি -তুই কি করে বুজলি আমরা কোথাও যচ্ছি?
আসিফ -ব্যাগ দেখে।তো হঠাৎ আমাকে ডাকা?
আয়ান -আসলে ভাইয়া,,, আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি। আমার আব্বু হঠাৎ করে আজ সকালেই দেশে চলে আসে তারপর কি আর বলবো আপনাকে!

আসিফ -আর কিছু বলতে হবেনা আমি বুজেছি।এখন কি! আমার বোন কে আমি নিয়ে যাবো তাই তো? আয়ান আমি তোমাকে বিয়ের দিনে বলেছিলাম এই বিয়েটা করোনা। (প্রাপ্তি আসিফকে আকটাতে চেষ্টা করছে,সেই দিকে আসিফের কোনো খেয়ালি নেই,)কিন্তু তুমি আমার কথা শুনো নাই।আমার বোন আমাদের কাছে এতোটা ফেলনা নয় যে তাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিবো।

আয়ান -ভাইয়া আপনি আমার কথা টা একবার শুনুন?

আসিফ -কি শুনবো তুমি আমার কাছে এখন ক্ষমা চাইবে তাই তো? কোনো প্রয়োজন নেই, আমি আমার বোন কে নিয়ে যাচ্ছি।কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ধরে টেনে উঠাতে যাবে তখনি প্রাপ্তি আসিফের হাত ঝেড়ে ফেলে দিয়ে তুই একটু চুপ করবি? অনেকক্ষণ থেকে একটা মানুষের নামে যা নয় তাই বলে যাচ্ছিস।

আসিফ -কি শুনাবি? দেখি শুনা। আবার বসে পড়ে)

প্রাপ্তি -(কমল স্বরে)ওনিও সব কিছু ছেড়ে আমার সাথে চলে এসেছে।প্রাপ্তি সব কিছুই আসিফকে বললো।আসিফ সব শুনে লজ্জা পেয়ে আয়ানের হাত দুটো ছেপে ধরে সরি আয়ান! আসলে আমি বুজতে পারিনি।

আয়ান -কোনো সমস্যা না।আপনাকে শুধু এই জন্যই ডেকেছি প্রাপ্তিকে কয়েক দিনের জন্য আপনাদের বাড়িতে নিয়ে যান আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করেই নিয়ে আসবো।

আসিফ প্রাপ্তিকে নিয়ে আসার দুইদিন পরেই আয়ান অভ্রকে নিয়ে প্রাপ্তিদের বাড়ি আসে প্রাপ্তিকে নিতে। এই দুই দিন প্রাপ্তির কিভাবে যে কেটেছিলো প্রাপ্তি কাউকে বুজাতে পারবেনা।রুমে বসে আয়ানের কথার শব্দ শুনে যেনো সুস্থির নিশ্বাস ফিরে এলো প্রাপ্তির।

আসিফ আর আজাদ সাহেব এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে,,
আজাদ সাহেব -কেমন আছো বাবা?

আয়ান -জ্বী বাবা ভালো।অভ্রর দিকে তাকিয়ে ওহ্ বাবা আপনাদের তো পরিচয় করানো হলোনা।ও হচ্ছে অভ্র আমি যে অফিসে এমডি হিসেবে জয়েন করেছি। ও সেই অফিসে চাকরি করে।

আসিফ -হাই অভ্র কেমন আছো?

অভ্র -জ্বী ভালো।

আয়ান -ভাইয়া অভ্র আমাকে আর ও একটা হেল্প করেছে।নতুন যে বাসাটা নিয়েছি সেটা অভ্রর জন্যই।

নিলিমা বেগম নাস্তা নিয়ে আসতে আসতে আয়ান তুমি দেখছি একদম সব ঠিক করেই আসছো?

আয়ান -আসসালামু আলাইকুম মা! আপনি কেমন আছেন?

নিলিমা বেগম -আমি একদম ঠিক আছি।
এতো তাড়াতাড়ি সব কিছু ঠিক করে ফেললে?

আয়ান -মা! আমার পক্ষে একা সম্ভব ছিলোনা।পাশে অভ্র ছিলো বলেই এতো তাড়াতাড়ি সব সম্ভব হয়েছে।আচ্ছা মা! প্রাপ্তি কোথায় ওকে দেখছিনা তো।

আজাদ সাহেব -আয়ান! ও এই বাড়িতে আসার পর থেকেই তো কারো সাথে কথা বলে না।সবসময় কেমন যেনো চিন্তার ভাব নিয়ে থাকে।ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া ও করেনা।

আসিফ -তুমি বসো আমি ডেকে নিয়ে আসছি।

আয়ান -ভাইয়া! আমিই যাচ্ছি আপনি বসেন।
আয়ান প্রাপ্তির রুমে গিয়ে দেখে,প্রাপ্তি মুখে হাঁসির ঝলক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আয়ান গিয়ে খাটের উপর বসে পায়ের উপর পা দিয়ে নাড়াতে নাড়াতে বললো মহারাণী! নতুন বাসা ঠিক করে আসলাম।বলেছিলাম না বেশি সময় লাগবেনা।
সব কিছু গুছিয়ে নাও নতুন বাসায় নতুন করে প্রাপ্তিকে পেতে চাই। (কথাটা শুনে প্রাপ্তি হাঁসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো) কি! ভয়ে পেয়ে গেলে?আমি সেই পাবার কথা বলিনি।ওই বাসাতে তো সব কিছু তোমার ছোঁয়াই থাকবে।তোমার হাতের রান্না খাবো।কি! খাওয়াবে তো।আমিও কিন্তু মোটামোটি রান্না পারি তুমি না পারলেও আমি যা পারি ওতেই চলে যাবে আমাদের, কি বলো?ও তুমি তো আবার কথা বলনা আমার সাথে কাকে যে কি বলি।
বিকাল বেলা সব কিছু গুছিয়ে প্রাপ্তি আর আয়ান নতুন এক সংসারে পা বাড়ালো।সেই সংসারে কয়েক দিন পর এলো রেশী। তিন জন মিলেই চলতে থাকলো তাদের নতুন জীবন।

_আপু! আপু! কই তোরা? অরণী বারান্দার দরজায় দাঁড়িয়ে বাহ্ দুজনে এইখানে প্রেম করা হচ্ছে?অরণীর ডাক শুনে আয়ান আর প্রাপ্তি ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলো।
(পাঠক আপনারাও ফিরে আসুন ভাবনার জগত থেকে।)

প্রাপ্তি -হুম কিরে,,, কিছু বলবি?
অরণীকে দেখে আয়ান আবার অন্য দিকে ফিরে আছে।

অরণী আয়ানের মুখ ফিরেতে দেখে ভাইয়া আপনি কেনো যে আমার সাথে এই রকম করেন আমি জানি না।যদিও আমার কোনো অন্যায় থাকে তাহলে কি ক্ষমা করা যায়না?

প্রাপ্তি আয়ান কিছু বলার আশায় তাকিয়ে দুজনকেই দেখছে।আয়ান কিছু বলছেনা দেখে প্রাপ্তি বললো,আপনি কিন্তু অরণীকে আজ ক্ষমা করা উচিত। আপনি তো ভাবতেন সেইদিনের ঘটনার জন্যই আমি আপনার সাথে কথা বলিনা।আজ তো আমি আপনার সাথে কথা বলছি তাহলে আপনার ও উচিত ওর সাথে কথা বলার।
প্রাপ্তির কথা শুনে আয়ান অরণীর দিকে ফিরে তাকিয়ে, বলতে পারি যদি তুমি কাল প্রাপ্তির সাথে শপিং এ যাও।

অরণী অট্ট হাঁসি দিয়ে আমার জন্য কোনো মানা নাই ভাইয়া।যেতেই পারি।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৩

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তি আর আয়ান রুমে গিয়ে নিজেদের জামা কাপড় গুলো গুছিয়ে নিচ্ছে।আয়েশা বেগম এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে আয়ান তুই আমাদের ছেড়ে যাসনা।আমি আমার ছেলেকে ছাড়া থাকবো কি করে? তোর আব্বুর রাগটা কমে যাক দেখবি তোকে আবার বুকে টেনে নিবে।এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলতে লাগলেন আয়েশা বেগম।আয়ান আয়েশা বেগম কে ছাড়িয়ে গাল দুটো হাত দিয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায়,আম্মু তোমাদের ছেড়ে থাকতে আমারো অনেক কষ্ট হবে,কিন্তু আমি জানি আব্বু কখনোই আমাকে আর এই বাড়িতে থাকতে বলবেনা।আর কখনোই বলবেনা আয়ান অফিসে যাবিনা,বলবেনা লেট আমার একদম পছন্দ না।,তোর কোনো সময়ের জ্ঞান নেই বলে কি আমারও নেই।আকাশ ভাইয়া এসে আব্বুর বুকনি থেকে আমাকে বাঁচাতে হবেনা।এই সব কিছু আমি অনেক মিস করবো আম্মু।মিস করবো তোমার ভালোবাসা।কথাগুলো বলতে বলতে আয়ানের গাল বেয়ে বেয়ে চোখের পানি পড়ে শার্ট ভিজে যাচ্ছে।কথা গুলো বলতে মনে হচ্ছে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।প্রাপ্তিও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মা ছেলের দৃশ দেখে সেও কান্না করে যাচ্ছে।

আয়েশা বেগম -(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে) তুই এখন হঠাৎ এইভাবে মেয়েটাকে নিয়ে গিয়ে কোথায় থাকবি? তোর কাছে তো এখন কোনো টাকাও নেই। এইভাবে রাগ করে গিয়ে থাকা যায়না আয়ন।

আয়ান আয়েশা বেগমের কাছ থেকে সরে গিয়ে চোখ মুছে ব্যাগ টা আটকাতে আটকাতে স্বাভাবিক গলায় বললো চিন্তা করো না মা আমার কাছে কিছু টাকা আছে সেটা দিয়ে কয়েক দিন কেটে যাবে।তারপর একটা চাকরি ব্যবস্থা ঠিক করে ফেলবো।

আয়েশা বেগম বুজে গেছে ছেলেকে বুজিয়ে কোনো লাভ হবে না।আয়ানের রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে, আকাশ! আকাশ!

আকাশ কাছে গিয়ে আম্মু তুমি পড়বে তো তুমি এইরকম করোনা।এইরকম করলে তো অসুস্থ হয়ে যাবে।

আয়েশা বেগম আকাশের হাত ধরে তুই আমার কথা চিন্তা করিস না।তুই পারবি আয়ানকে আটকাতে। ওকে এইভাবে কোথাও যেতে দিস না।

আকাশ -আম্মু তুমি শান্ত হও আমি দেখছি বলে উপরে যাবার জন্য সিঁড়িতে পা দিতেই দেখে আয়ান আর প্রাপ্তি নেমে আসছে।

আয়ান নেমে এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে, ভাইয়া আম্মুর দিকে খেয়াল রাখিস,

আকাশ-(অসহায় ভাবে) আয়ান! আর একটা বার ভেবে দেখ।আব্বু রাগের মাথায় কি বলতে কি বলেছে তার জন্য তুই বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবি?

আয়ান-(আকাশ কে ছেড়ে দিয়ে) ভাইয়া প্লিজ আবিদ চৌধুরী অহংকার নিয়ে ওনি থাকুক।আর যে বাড়িতে আমার স্ত্রী থাকতে পারবে না।সে বাড়িতে আমিও থাকতে পারবোনা।সবাইকে নিয়ে ভালো থাকিস।সবার খেয়াল রাখিস।
রুমকি দৌড়ে এসে কোলে উঠে মামা তুমি আর আসবে না? তুমি মামনিকে নিয়ে চলে যাবে?তুমি মামনিকে নিয়ে যেও না।

রুমকির কথা শুনে আয়ানের চোখের পানি টলমল করছে,রুমকির মন খারাপ হবে দেখে অন্য দিকে ফিয়ে চোখ মুছে মামাই আবার চলে আসবো। এই কয়দিন আম্মুর সব কথা শুনে লক্ষী মেয়ের মতো থাকবা।আমি আর তোমার মামনি এসেই যেনো শুনি রুমকি সবার সব কথা শুনে।প্রাপ্তি এগিয়ে এসে রুমকিকে কোলে নিলো। আয়ান ঝিনুক আর মিনুর কাছে যেতেই দুই বোন আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো,আয়ানও কাঁদোকাঁদো গলায় কান্না করছিস কেনো? আমিতো আর মরে যাইনি।ঝিনুক কথাটা শুনেই আয়ানের গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে মুখে যাই আসে তাই বলে যাচ্ছিস।তুই এতোই পর ভাবিস আমাদের?ঠিক আছে তোকে আজ আটকাবো না।আমি চাই তুইও আব্বুকে দেখিয়ে দিবি আব্বুকে ছাড়া তুই ও চলতে পারিস।আর কোনো সমস্যা হলে নিহাদ কে জানাস।

মিনু -নিজের দিকে খেয়াল রাখিস।যেখাই যাবি ফোন দিয়ে জানাস।যে মেয়ের জন্য এই বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিস ওর খেয়াল রাখিস।

আয়ানও ঝিনুকের চোখের পানি মুছে দিয়ে রুমকির দিকে খেয়াল রাখিস।
মিনু! রাহাতের সাথে তুই একদম রাগারাগি করবিনা।

সুমির কাছে এগিয়ে গিয়ে, সুইট হার্ট তোমাকে আর জ্বালানো সহ্য করতে হবেনা।তোমাকে সকাল বেলা আর আমাকে জাগিয়ে তুলতে হবেনা।আর কেউ তোমাকে এই কথা বলে জ্বালাবে না সুইট হার্ট তোমার হাতে কফি না হলে ভালো লাগে না।

সুমি নিজের চোখের পানি মুছে, তুমি এইগুলে জ্বালানি বলছো কেনো? এই গুলো করতে আমার খুব ভালো লাগে আয়ান।সুমি প্রাপ্তিকে আয়ানের কাছে টেনে এনে,প্রাপ্তি এই ছেলেটার সব দায়িত্ব এখন থেকে তোমার। আমার দেখা এই প্রথম কোনো ছেলে একটা মেয়েকে কতোটা ভালোবাসতে পারলে একটা ছেলে এতো অর্থ প্রাচুর্য ছেড়ে অজানা পথে হাঁটতে পারে।প্রাপ্তি! তুমি অনেক ভাগ্যেবান। কারণ ভাগ্যে করেই এইরম স্বামী পাওয়া যায়।
তাই আবারো বলছি নিজের মতো করে ওর একটু যত্ন নিও।

সুমির সব কথা শুনেই প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।

আয়েশা বেগমের মুখে কোনো কথা নেই নিস্তব্ধ হয়ে সোফায় বসে আয়ানে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে।

প্রাপ্তি এসে আয়েশা বেগমকে সালাম করে,(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে) মা, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আজ আমার জন্যই আপনার ছেলেকে আপনার কাছ থেকে আলাদা হতে হচ্ছে।মা! আমি কখনো চাইনি এই রকম কিছু হোক।
আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে উঠিয়ে, আমার ছেলেটার দিকে খেয়াল রেখো। আজ নিজেকে খুব ভাগ্যেবান মনে হচ্ছে।অনেক গর্বও হচ্ছে কেনো যানো? আমার ছেলেকে আমি ঠিক মতোই মানুষ করতে পেরেছি।সে মেয়েদের সম্মান দিতে জানে।কোনো মা জাতি কে অসম্মান করতে দেয়নি।তোমরা যেইখানেই থাকো ভালো থাকো।

আয়ান গিয়ে আবিদ চৌধুরীর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে,আব্বু আমি চলে যাচ্ছি।আমাকে নিয়ে তোমার আর কোনো অম্মান হবেনা।নিজের দিকে খেয়াল রেখো।আব্বু তুমি কি আমার কথা শুনছো? তোমাকে আর তোমার ছোটো ছেলেকে নিয়ে কোথাও অপদস্থ হতে হবেনা।আম্মুর দিকে খেয়াল রেখো।
আবিদ চৌধুরীর কোনো সাড়া না পেয়ে আয়ান ড্রইংরুম এসে, প্রাপ্তি! চলো।কথাটা বলেই আয়ান আর পিছু ফিরে তাকালোনা। তাড়াতাড়ি করে পা গুলো এগুতে লাগলো এক অজানার পথে। প্রাপ্তিও আয়ানের পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলো।কেউই জানেনা কথায় যাবে কি করবে। আয়ান শুধু এইটা ভেবেই নিজেকে বুজ দিয়েছে ভালোবাসার মানুষের অসম্মান সে হতে দেয়নি।যদি কোনো একদিন আবিদ চৌধুরী সম্মানের সাথেই তার ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে আনবে সেই দিনই আবার এই বাড়ি ফিরে আসবে।

চলবে,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২২

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২২

#Rabeya Sultana Nipa

 

__আয়ানের বউ কথাটা শুনেই আবিদ চৌধুরী আয়নের দিকে তাকালো। আয়ান মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আয়েশা বেগমের দিকে তাকালো সেও নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আকাশের দিকে তাকাতেই সে অন্য দিকে ফিরে গেলো। একেক করে সবার দিকে তাকাতে থাকলো একেক জন একেক রকম দেখাচ্ছে।সবার মুখে ভয়েরচিহ্ন। সবার কাছে এমন মনে হচ্ছে যে কোনো এক বাঘের সামনে সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
আবিদ চৌধুরী -সবাই এইভাবে আছো কেনো?সুমি! এই মেয়েটাকে তো সেদিন দেখলাম না।যার সাথে বিয়ে ঠিক করে এসেছি সে কই?

সুমি কিছু বলার আগেই আয়ান মুখ থেকে হাত সরিয়ে আব্বু আসলে,,,,,,,,

আবিদ চৌধুরী হাত দিয়ে ইশারা করে আয়ানকে চুপ থাকতে বললো।সুমি! তুমি কথা বলছো না কেনো?আমি কি প্রশ্ন করছি তার আনসার দাও?

সুমি -বাবা আসলে সেই দিন আমরা যেই মেয়েকে দেখেছিলাম আয়ান সে মেয়ের কথা বলেনি বলেছে এই প্রাপ্তির কথা।ওই মেয়েটার একটা রিলেশন ছিলো যার সাথে প্রাপ্তির বিয়ে ঠিক হয়েছিলো।বিয়ের দিন প্রাপ্তি জানতে পেরে ওর বোন কে ওই ছেলের হাতে তুলে দেয়।আর আয়ান নিজের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করে।

আবিদ চৌধুরী -এতো কিছু হয়ে গেলো আর আমাকে কিছুই জানালে না? (আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে)তুমিও তো আমাকে একবারের জন্য কথা গুলো বলোনি।
যাইহোক তবে বউ আমার পছন্দ হয়েছে।

কথাটা শুনেই সবার মুখে যেনো হাঁসির ঝলক ফুটে উঠলো।

সুমি-বাবা তাহলে আপনি বসুন আমি এখনি মিষ্টি নিয়ে আসছি।আজকে এই খুশির দিনে মিষ্টি না হলে হয়।সুমি গিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসলো।প্রাপ্তির হাতে মিষ্টির প্লেট দিয়ে, প্রাপ্তি তুমি বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে দাও।
প্রাপ্তি মিষ্টির প্লেট হাতে নিতেই অধরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে, ভাবী! তোমাদের নাটকের কাহিনী আরো কিছু বাকী রয়ে গেলো।সেই গুলো বলো জেঠুকে।
ঝিনুক বিড়বিড় করে, এসে গেছে আর দেরী করলো না।কাকা কাকী চলে গেছে এইটাকে যে কেনো রেখে গেলো! সুমি ঝিনুকে চোখ দিয়ে ইশারায় করে বললো এইবার কি হবে?
ঝিনুকও সুমিকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো চিন্তা করো না।আয়ান আছে তো।

আবিদ চৌধুরী অধরা কাছে আসতেই জড়িয়ে ধরে কেমন আছো মা!

অধরা -খুব ভালো। জেঠু তোমাকে অনেক মিস করেছি আমি।

আবিদ চৌধুরী -আমি ও। কিন্তু তুমি তখন কিসের নাটকের কথা বলছো?

অধরা -জেঠু! এই মেয়েটা মানে আয়ানের বউ রূপে গুণে সব ঠিক আছে কিন্তু তবে আরেকটা প্রবলেম ও আছে।

আবিদ চৌধুরী আয়ানের দিকে তাকিয়ে, সে প্রবলেম কি অধরা?

অধরা -আয়ান তোমার বউয়ের কথা তুমিই বলো। আমি বললে তো পরে বলবে অধরা সব বলে দিয়েছে।অবশ্য তুমি হয়তো ভাববে আমি এতো কিছু কি করে জানলাম।আয়ান! আমি অধরা চৌধুরী। যে মেয়ের কারনে তুমি আমাকে Avoid করবে তার হাঁড়ির সব খবর না জানলে তো আমার মরেও শান্তি হবে না।সেইদিন সুমি ভাবীকে জিজ্ঞাস করেছিলাম ভাবী অজুহাত দেখিয়ে চলে গেলো তারপর মিনু আপুকে জোর করতেই তারপর সব আমাকে বললো।এতো দিন আমি চুপ করেছিলাম কারণ আমি জেঠু আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

আবিদ চৌধুরী -(ধমক দিয়ে)প্লিজ কেউ কি আমাকে বলবে সমস্যা টা কি?

কেউ কিছু বলছেনা সবাই চুপ হয়ে নিচে দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়েশা বেগম নিরবতা ভেঙে, তুমি রুমে চলো ফ্রেশ হয়ে নাও আমরা এইসব নিয়ে পরেও কথা বলতে পারবো।

আয়ান বাবার দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই ঘটনার জন্য নিজেকে আমি আগেই প্রস্তুত করে রেখেছি কিন্তু সময়টা যে এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবে এইটা ভাবিনি।

আয়ান -প্রাপ্তি! মিষ্টির প্লেটটা রেখে দাও।(অফিসের ফাইল গুলো এগিয়ে দিয়ে)তুমি এই গুলো নিয়ে রুমে যাও আমি আব্বুর সাথে কথা বলছি।

প্রাপ্তি প্লেট টা সুমির হাতে দিয়ে ফাইল গুলো নিয়ে উপরে যাবার জন্য পা বাড়াতেই

আবিদ চৌধুরী -দাঁড়াও এখন কেউ কোথাও যাবে না।আগে আমি সব শুনবো তারপর যে যেখানে যাবার যাবে।(আয়েশা বেগমের দিকে এগিয়ে গিয়ে)তুমি এখন সব বলবে। বলো কি হয়েছে?

আয়েশা বেগম – আসলে ছোটো বউয়ের এইখানে কোনো দোষ নেই।মেয়েটা খুব ভালো, অনেক লক্ষী একটা মেয়ে।এই কয়েদিনে সবাইকে এক বাঁধনে বেধে ফেলেছে।

আবিদ চৌধুরী বিরক্তিকর ভাব নিয়ে আয়েশাাাাাাাাাাাাাা আমি এতো গুনো গান শুনতে চাইনি।সমস্যা কি সেটা বলো।

আয়েশা বেগম -(ভয়ে ভয়ে)বলছিতো! সময়তো দিবে নাকি?মানে প্রাপ্তিকে কয়েকটা ছেলে উঠিয়ে নিয়ে Rape করেছে।

আয়েশা বেগম কথা টা বলতেই প্রাপ্তি কান্না ভরা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। আল্লা তুমি আমাকে এই দিন দেখার জন্য বাঁচিয়ে রাখলে?এইগুলো দেখার আগে মরণ ও ভালো ছিলো।আর কতো সহ্য করবো আমি?

আবিদ চৌধুরী -(চেঁচিয়ে) কিহ্! আর সেই মেয়ে আমার ঘরের বউ।আকাশ! তোমাকে আমি সব দায়িত্ব দিয়ে গেলাম এই দৃশ্য দেখার জন্য?তোমাদের কি করে সাহস হয় এই মেয়েকে বউ হিসেবে ঘরে উটানোর?

আয়েশা বেগম-তুমি একটু শান্ত হও। তুমি এইরকম করলে তোমার প্রেশার টা বেড়ে যাবে।

আবিদ চৌধুরী -আমার জন্য যখন এতোই চিন্তা তাহলে এইটা চিন্তা হয়নি এই মেয়েকে কখনোই এই বাড়ী বউ হিসেবে আমি মেনে নিবো না?এই সমাজে আমার একটা সম্মান আছে সেই সম্মান নিয়ে ছিলিমিলি খেলার অধিকার তোমারদের কে দিয়েছে?আজ আমি এই জায়গা এমনি এসে পৌঁছায়নি।অনেক কষ্ট করেই আজ আমি বিখ্যাত ব্যবসায়ী আবিদ চৌধুরী ।

আয়ান- আব্বু আমার লাইফটাকে তোমার বিজনেসের সাথে যদি তুলনা করো তাহলে ভুল করছো।আমি ওকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছি।

আবিদ চৌধুরী -(তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে)ভালোবাসা! এই মেয়েকে? এইসব মেয়েকে ভালোবাসা যায়না।শুধু দয়া করা যায়।যদি তোমার এই মেয়ের প্রতি এতোই দয়া হয়েছে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করে আসতে।

আয়ান-আমি তো ওকে কোনো দয়া করে বিয়ে করিনি।ওকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি।আর আমার ওয়াইফ কে অপমান করার অধিকার তোমার নেই।

আকাশ আয়ানের কথা শুনে, আয়ান!অফিসে যা। আব্বু তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমরা এইসব নিয়ে পরে কথা বলবো।
সুমি তুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে রুমে যাও।আমি আয়ানকে নিয়ে যাচ্ছি।

আবিদ চৌধুরী -আকাশ! ওকে আমার সাথে কথা বলেতে দাও। ও কি বলেছে আমার নাকি ওর ওয়াইফকে অপমান করার কোনো অধিকার নেই।তাই নাকি মিস্টার আয়ান! যখন অধিকারের কথায় উঠাইছেন তাহলে শুনেন। আপনি যে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উড়াচ্ছেন,দামী গাড়ী ব্যবহার করছেন,এ সি রুমে ঘুমাচ্ছেন। সব টাকাই আমার।যে জব টা করছেন সেটাও আমার দেওয়া।এখন আপনিই বলুন আমার কি কোনো অধিকার নেই?

আয়েশা বেগম -কি বলছো তুমি এইসব। নিজের ছেলেকে এইভাবে বলতে পারলে?

আবিদ চৌধুরী -আয়েশা! এর মাঝে তুমি এসো না।আমার ছেলে আমাকেই অধিকারের কথা বলছে।কার জন্য করলাম এতো কিছু?যাইহোক আমার এটাই শেষ কথা এই মেয়ে এই বাড়ীতে থাকতে পারবেনা।আমি ফ্রেশ হতে রুমে যাচ্ছি এসেই যেন দেখি এই মেয়ে চলে গেছে।
কথাটা বলেই আবিদ চৌধুরী রুমের দিকে পা বাড়াতেই আয়ান বলে উঠলো, দাঁড়াও আব্বু ও যদি যেতেই হয় তাহলে আমাকেই তো যেতে হবে।কারণ বিয়েতো ওকে জোর করে করেছি আমি।ও তো ইচ্ছে করে এই বাড়ীতে আসিনি।তুমি যখন ওকে মেনে নিতে পারবে না তাহলে আমার ও এই বাড়ীতে থাকা হবে না।

ছেলের কথা শুনে অনেকক্ষণ চুপ করে আয়ানের দিকে তাকিয়ে থেকে আকাশ কে বললো (গম্ভীর ভাবে)আকাশ, ওর থেকে গাড়ীর চাবি টা নিয়ে নাও।ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করে দাও,অসিফের কাজ গুলো বুজে নাও।বাহিরের মানুষকে তো আর এইগুলো দেওয়া যায়না।কথাটা বলে আবিদ চৌধুরী চলে যেতে লাগলেন।
আয়েশা বেগম কাঁদতে কাঁদতে পিছনে যেতে যেতে, কি বলছো তুমি এই সব।তুমি তোমার কথা ফিয়ে নাও।আমি আমার ছেলেকে ছাড়া থেকতে পারবো না।প্লিজ কথা বলো।ও এইভাবে কোথায় গিয়ে থাকবে।হঠাৎ করে এইভাবে বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে বললেই কি চলে যাওয়া যায়? তুমি ওকে কয়েকটা দিন সময় দাও তারপর না হয়,,,,,,
আবিদ চৌধুরী রুমে ঢুকে আয়েশা বেগমকে বাহিরে রেখে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
আয়েশা বেগম কান্ন জড়িতো কন্ঠে, হাত দিয়ে দরজায় থাপ্পড়াতে থাপ্পড়াতে তুমি শুনে রাখো আমি আমার ছেলেকে কখনোই বাড়ী ছাড়া হতে দিবোনা।(চেঁচিয়ে) শুনেছো তুমি!

প্রাপ্তি এখনো সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কান্না করছে।আমার জন্য আজ একটা ফ্যামিলি আলাদা হচ্ছে।আমি কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা। ওনাদের ছেলে বাড়ীতেই থাকুক আমি বরং এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাই।সত্যিই তো আমার মতো মেয়েদের ভালো ঘরের কেউ বউ হিসেবে মেনে নিবে না।আমার মতো মেয়েদের কপালে সংসার নামক শব্দটা থাকতে নেই।ঝিনুক,মিনু,আকাশ এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে,আয়ান পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। চোখে বিষণ্ণতার কোনো চাপ নেই।সবাইকে সরিয়ে দিয়ে প্রাপ্তি! উপরে যাও সব কিছু গুছিয়ে নাও।অবশ্য এই বাড়ীতে আমার তেমন কিছুই নেই। তবে তোমার যা কিছু আছে আমার রোজগারের টাকারই কিনা।ওইখানে আবিদ চৌধুরীর কোনো ভাগ বসাতে পারবেনা।আচ্ছা চলো আমি তোমায় হেল্প করছি গুছিয়ে নেওয়ার জন্য।

প্রাপ্তি চোখ মুছে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আপনি যাওয়ার দরকার নেই আমি ভাইয়াকে ফোন দিচ্ছি ও এসে আমাকে নিয়ে যাবে।

আয়ান রাগী ভাব নিয়ে ধমক দিয়ে, সেট আপ,,,এতো দিন যেহেতু আমার সাথে তুমি কোনো কথা বলোনি আজ বলবানা।আমি যা বলছি তাড়াতাড়ি গিয়ে সেই কাজটা করো।

সুমি অধরার কাছে এগিয়ে গিয়ে, শান্তি হয়েছে তোমার? এটাই তো ছেয়েছিলে তাইনা? তোমার মতো মেয়েরা কখনো কারো ভালো দেখতে পারেনা।কি ক্ষতি করেছিলাম আমরা তোমার? বলো!এখন আনসার দিচ্ছো না কেন?

অধরাকিছু না বলে মুখটাকে বাঁকা করে উপরে উঠে গেলো।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২১

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২১

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তির কান্না ভালো লাগছে না আয়ানের কিন্তু কিছু কারার নেই তার দেখে যাওয়া ছাড়া। চুপকরেই প্রাপ্তি এক পাশে বসে আছে।খুব অসহায় লাগছে নিজেকে।ওই বাড়ীতেই ভালো ছিলো কেন যে আসতে গেলাম।

নিলিমা বেগম এসে, বাবা তুমি কিছু মনে করো না এদের কথায়।

আয়ান -উঠে দাঁড়িয়ে না মা আমি কিছু মনে করিনি।মা আপনি যদি কিছু মনে না করেন আমি একটা কথা বলবো?

নিলিমা বেগম -বলনা কোনো সমস্যা নেই। বলো আমার কাছে তোমার সংকোচ করার কিছু নেই বাবা।

আয়ান-(আমতা আমতা করে প্রাপ্তির দিকে আড় চোখে তাকিয়ে)আমি,, আমি,,,চাচ্ছি মানে আমি চাচ্ছি এইখান থেকে বিকালবেলা চলে যেতে।
আয়ানের কথা শুনে নিলিমা বেগম কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে গেলেন।

আসিফ নিলিমা বেগমকে চুপ হয়ে এসে সোপায় বসতে দেখে,আম্মু কি হয়েছে? আয়ান কি কিছু বলছে?

নিলিমা বেগম -তেমন কিছু না। ও চাচ্ছে বিকেলে চলে যেতে।এইটা কি ভালো দেখাবে তুই বল?ওই বাড়ীর সবাই কি বলবে?

আসিফ কিছু বলার আগেই আয়ান এসে,মা আমাদের বাড়ী কেউ কিচ্ছু মনে করবে না।আমি সব বুজিয়ে নিবো।ভাইয়া আপনি তো ব্যাপার টা বুজবেন,আমার মনে হয় প্রাপ্তিকে এইখানে রাখাটা ঠিক হবেনা।

আসিফ -আচ্ছা ঠিক আছে তোমরা আগে খাওয়াদাওয়া করে নাও তারপর না হয় দেখা যাবে।
দুপুয়ের খাওয়াদাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে সবার সাথে কথাবার্তা বলে সন্ধ্যায় আয়ান আর প্রাপ্তি আয়ানদের বাড়ী উদ্দেশ্য রওনা হলো।আয়ানের সাথে মোটরবাইকে করে যেতে খারাপ লাগছেনা প্রাপ্তির, অনেক খানি পথ যেতেই জোনাকি পোকার আলোতে ভালোই লাগছে,কয়েকটাকে হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করছে।গ্লাসের মধ্যে প্রাপ্তির এইভাবে হাত বাড়িয়ে পোকা গুলোকে ছুতে দেখে মোটরবাইক কে রাস্তার এক পাশে দাঁড় করালো।মোটরবাইক দাঁড় করাতে দেখে প্রাপ্তি পেয়ে ভাবলো, আমাকে বকাঝকা করবে নাকি? চুপচাপ কিছু না বলে মাঝ রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমার ও এইভাবে হাত বাড়ানো উচিত হয়নি।

আয়ান -বসে আছো যে? আমি বুজতে পেরেছি জায়গা টা তোমার ভালো লেগেছে। জোনাকি পোকার আলোয় চারপাশ ঝিকমিক করছে।এইখানে কিছু সময় কাটিয়ে তারপর না হয় বাড়ী যাবো।

আয়ানের কথা শুনে এক নিমিষেই মনটা ভালো হয়ে গেলো প্রাপ্তির।ও কি করে বুজলো জোনাকি পোকা আমার ভালো লাগার মধ্যে একটা।হয়তো হাত বাড়ানো দেখেই বুজে নিয়েছে।বাহিরে কিছুটা সময় পার করে বাসায় এলো দুজন। তাদের দেখে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।

আকাশ -কিরে তোরা? তোদের না আজ ওই বাড়ীতে থাকার কথা?

আয়ান -(কথা ঘুরিয়ে)আর বলিস না ওই খানে আমার একদম ভালো লাগছেনা।তোদের সবার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। তাই চলে এলাম।রুমকিকে কোলে নিয়ে কি ছোটো আম্মু ঠিক করিনি?

রুমকি -একদম ঠিক করেছো আমারো ভালো লাগছিলো না নতুন মামনিকে না দেখে।সুমি প্রাপ্তির কাছে এসে, তুমি চলে যাওয়াতে আমার ও ভালো লাগছিলো না।
যাও আয়ান আর তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।আমি চা দিচ্ছি।
আয়ান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাবে তখনি অধরা নেমে আসতে আসতে (ন্যাকামি করে)আয়ান তুমি এসেছো । তুমি চলে যাওয়ার পর আমার খুব খারাপ লাগছিলো।প্রাপ্তি তাদের দিকে একবার তাকিয়ে তাদের পাশ দিয়ে উপরে উঠে চলে গেলো।
অধরা -(হাত ধরে)আয়ান তুমি এখন কোথায় যাচ্চো? চলো আমার রুমে আমি আর তুমি বসে আড্ডা দিবো। তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে।

আয়ান-অধরা হাত টা ছাড়ো।আমি রুমে যাবো। ফ্রেশ হতে হবে।

অধরা -আয়ান বিয়ে করে তুমি এতোটা পাল্টে গেলে? তুমি দেখছি পুরোই বউ পাগল হয়ে গেছো।

আয়ান -প্লিজ অধরা উল্টা পাল্টা কথা বলবে না।আমাকে যেতে দাও প্রাপ্তি রুমে একা আছে।

অধরা ও আর কথা বাড়ালো না।হাত টা ছেড়ে দিয়ে এসে ভাবি (সুমিকে)সত্যি করে বলো তো প্রাপ্তির সাথে আয়ানের কি আগে কোনো রিলেশন ছিলো?

সুমি ভাবছে অধরা কে কি থেকে কি বলবে বুজতে পারছেনা।মিনু এসে সুমি আমতা আমতা করছে দেখে ভাবী ভাইয়া তোমাকে ডাকছে আগে গিয়ে কথা শুনে আসো। পরে এসে না হয় অধরাকে সব বলবে।

মিনুর কথা শুনে সুমি যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো।
প্রাপ্তির বিয়ের এক সাপ্তাহ কেটে গেলো। এই বাড়ী সবাই প্রাপ্তিকে ভালোবেসে ফেলেছে।প্রাপ্তিও সবাইকে ভালোবাসে।শুধু আয়ানে সাথে কথা হয়না প্রাপ্তির। আয়ান সবসময় নিজেই বকবক করে যায় আর প্রাপ্তি শুধু শুনেই যায়।সকালে নাস্তা করে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো আয়ান আর আকাশ।
সুমি রান্নাঘর থেকে দৌঁড়ে এসে আকাশ অফিস থেকে আজ বিকালে চলে এসো, মা ফোন করেছে একবার গিয়ে দেখা করে আসতে।

আকাশ -আচ্ছা রেডি হয়ে নিও আমি এসে তোমাকে নিয়ে যাবো।
কথাটা বলতে বলতে বাসা থেকে বের হবে এমন সময় দেখে আবিদ চৌধুরী দরজায় দাঁড়িয়ে।

আকাশ -(অবাক হয়ে)আব্বু! তুমি?

আবিদ চৌধুরী -হুম আমি! (বাসার ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে)কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বল?রফিক গাড়ী থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে আসো।

আয়ান এসে, আব্বু! সত্যিই অনেক বড় সারপ্রাইজ । তুমি না একমাসে জন্য গেছো।

আবিদ চৌধুরী -বাড়ীর ছোটো লক্ষী কে দেখার জন্য কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করলাম।

আকাশ -আব্বু তুমি একবার বলে আসতে। আমি না হয় এয়ারপোর্ট গিয়ে তোমাকে নিয়ে আসতাম।

আবিদ চৌধুরী -এতো চিন্তা করতে হবে না।আমার কোনো প্রবলেম হয়নি।
সুমি গিয়ে আয়েশা বেগমকে ডেকে আনলেন।
আয়েশা বেগম -সবাইকে কি সারপ্রাইজ দিলে নাকি?
আবিদ চৌধুরী -হুম ঠিক বলছো।কই সবাইকে ডাকো। সুমি ছোটো বউ, ঝিনুক মিনু এরা কোথায়?
আয়ান বার বার উপরের দিকে তাকাচ্ছে। সুমির দিকে তাকিয়ে ইশারা দিয়ে প্রাপ্তিকে নিয়ে আসতে বললো।
রুমকি দৌঁড়ে এসে নানা ভাইয়া এসেছে নানা ভাইয়া এসেছে বলে কোলে উঠলো।

আবিদ চৌধুরী -আমার রুমকি মনি দেখছি আমাকে ভুলেই গেছে।আমি যাওয়ার পর আমাকে একবারো ফোন দেয়নি।
কথা গুলো বলতে বলতে সিঁড়ি দিকে নজর পড়তেই দেখে সুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে নামছে।সবাই চুপ হয়ে আছে। আয়ান মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়েশা বেগম চুপচাপ গিয়ে সোফায় বসে পড়লো।
প্রাপ্তি কাছে এসে আবিদ চৌধুরীকে পা ছুঁয়ে সালাম করে উঠে দাঁড়াতেই, সুমি কে ও?

সুমি -বাবা ও,, ও,, আয়ানের বউ!

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২০

1

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২০

#Rabeya Sultana Nipa

 

_ আসিফের ফোন শুনে আয়ানের হাত থেকে ফোন নিয়ে আয়ানের রুমে চলে গেলো। প্রাপ্তি ফোন রিসিভ করে,চুপ করে আছে।

আসিফ -হ্যালো! প্রাপ্তি কেমন আছিস তুই?

প্রাপ্তি-ভালো। তুই কেমন আছিস? অরণী কেমন আছে?আব্বু আম্মু কেমন আছে?

আসিফ -আস্তে আস্তে এতো প্রশ্ন একসাথে করলে আনসার দিবো কি করে? সবাই ভালো আছে।তুই ঠিক আছিস তো?

প্রাপ্তি-জানিস ভাইয়া এই বাড়ীরর সবাই অনেক অনেক ভালো।বড় আপু কাল একটু রাগ ছিলো সকালে দেখি সবার থেকে ওনি আমার হয়ে কথা বলছে?

আসিফ -তাই বেশ ভালো। আমিও চাই আমার বোনটা অনেক সুখে থাকুক।আচ্ছা তোরা কখন আসছিস?

প্রাপ্তি-আমি তো জানিনা।ভাইয়া অরণী আসবে না?

আসিফ -না! সিয়ামের মাকে বলেছি ওনি বলেছে দুইদিন পর।শুন ফোন টা আয়ানের কাছে দে!

প্রাপ্তি -একটু ওয়েট কর দিচ্ছি।প্রাপ্তি ফোন নিয়ে দরজার কাছে আসতেই দেখে আয়ান দাঁড়িয়ে আছে। ফোনটা এগিয়ে দিয়ে প্রাপ্তি নিছে নেমে চলে এলো।

আয়ান -(প্রাপ্তির চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে থেকে)জ্বী বলুন?

আসিফ -আয়ান! তোমরা আসবে কখন?

আয়ান -আপনাকে একটু পর জানাবো।আম্মুকে আগে বলি তার পর।

আসিফ -আচ্ছা ওনাকে বলে আমাকে জানিও।

অধরা প্রাপ্তিকে আসতে দেখে, এই মেয়ে শুনো।

প্রাপ্তি -আমাকে বলছেন?

অধরা -হুম, তোমাকেই।

প্রাপ্তি অধরার কাছে আসতেই,অধরা বললো পড়াশুনা কতো দূর?
প্রাপ্তি-জ্বী অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।

অধরা -ভালোই! আর পড়ার ইচ্ছা নেই?

প্রাপ্তি কিছু বলছেনা কি বলেতে কি বলে পেলে পরে আবার ঝামেলা হবে।সুমি প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখে অধরা আয়ান যদি চায় তাহলে তো পড়বেই।তোমার ওকে নিয়ে না ভাবলেও চলবে। প্রাপ্তি তুমি রেডি হয়ে নাও। মা বলেছে আয়ান আর তুমি তোমাদের বাড়ীতে যাবে।
প্রাপ্তি সুমির দিকে এগিয়ে এসে, মা বলেছে?

সুমি -হুম মাই তো বললো।যাও রেডি হয়ে নাও।কথাটা শুনে রুমকি এসে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে মামনি চলে যাবে?
রুমকিকে কোলে তুলে নিয়ে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে আপু আপনিও চলেন না!

ঝিনুক -না প্রাপ্তি তুমি গিয়ে ঘুরে আসো আমরা অন্য একসময় যাবো।

প্রাপ্তিও কথা বাড়ালো না,কারণ ওই বাড়ীতে গেলে কে কি বলবে তার কোনো ঠিক নেই। আয়ান এসে তুমি গিয়ে রেডি হয়ে নাও আমি আসছি।কথাটা বলেই মায়ের কাছে রান্না ঘরে চলে গেলো।
পিছন দিক থেকে মাকে জড়িয়ে ধরে আম্মু আব্বু ফোন দিয়েছে?

আয়েশা বেগম -রাতে কথা হয়েছে, আর তো ফোন দেয়নি।কেন কিছু হয়েছে?

আয়ান -না এমনি।আচ্ছা আম্মু প্রাপ্তিকে তোমার কাছে কেমন লেগেছে?

আয়েশা বেগম -ওনি এখন এইখানে আসছেন মায়ের কাছ থেকে বউয়ের গুনো গান শুনার জন্য।এখন আমাকে ছাড় শ্বশুর বাড়ী থেকে আগে ঘুরে আয় তারপর দেখা যাবে।তবে এইটুকু বলতে পারি লক্ষ্মী একটা মেয়ে।এখন যা তো, তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে।

আয়ান -thank you আম্মু!

আয়ান রুমে গিয়ে দেখে প্রাপ্তি রেডি হয়ে বসে আছে। আয়ান কে দেখেই দাঁড়িয়ে পড়লো।

আয়ান -তোমাকে যতো দেখি ততো অবাক লাগে একটা মানুষকে এতো সুন্দর কী ভেবে লাগতে পারে?তবে এটাও ভালো লাগছে তোমার অন্য মেয়েদের মতো রেডি হতে এতো সময় লাগেনা।
(প্রাপ্তি অন্য দিকে তাকিয়ে কথা গুলো শুনছে।)
তুমি একটু ওয়েট করো আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি।
একটু পর দুজনেই রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।
ঝিনুক মুছকি হেঁসে, একদম পরীর মতো লাগছে।(সুমির দিকে তাকিয়ে)কি বলো সুমি?
সুমিও হাঁসি দিয়ে এগিয়ে এসে, ঠিক বলেছো আপু আমাদের বাড়ীর ছোটো পরী।
অধরা বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে আছে সবার দিকে, এই মেয়ের মাঝে কি এমন আছে সবাই ওকে নিয়ে এতো তামাসা করছে।মনে হচ্ছে এই বাড়ীয়ে শুধু ও একাই আছে। আমি যে এতো দিন পরে এলাম তার দিকে কারো কোনো খেয়ালি নেই।
প্রাপ্তি আয়ানের মাকে আর কাকা কাকী কে সালাম করে নিলো। রুমকিকে কোলে নিয়ে আম্মু সব কথা শুনবে ঠিক আছে।আমি ফিরে এসে তোমাকে অনেক গল্প শুনাবো।বুজেছোতো,,,,,বলেই হাঁসি দিয়ে রুমকির কপালে একটা চুমু দিলো।
রুমকিকে নামিয়ে দিয়ে, মা! আপনার শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন।আয়ান চুপচাপ প্রাপ্তিকে দেখেই যাচ্ছে, প্রাপ্তিকে সে যতো দেখছে ততো সে মুগ্ধ হচ্ছে সবার সাথে কি সহজ ভাবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কে বলবে কালকেও এই মেয়ে মাঝে অনেক রাগ ছিলো। যার রাগে পুরো বিয়ে বাড়ী কেপেছে,আর সেই মেয়ে আজ কতো ঠাণ্ডা।
সুমি আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই, পাশে এসে আস্তে করে বললো,কিইইইইইই,,,,যতো দেখি মন ভরে না তাই না? এইবার কিন্তু চোখ নষ্ট হয়ে যাবে।

আয়ান নিজের চুল গুলো ঠিক করতে করতে সুইট হার্ট বেশী বেশী বলেই হাঁসতে শুরু করলো।

আয়েশা বেগম -বাড়ী এসে অনেক হাঁসতে পারবে এখন যাও। এমনিতেই অনেক বেলা হয়ে গেছে।আর বাসার গাড়ীটা নিয়ে যা।আকাশ ড্রাইভার কে বলে দিয়েছিস তো?

আকাশ আমি আগেই বলে রেখেছি ড্রাইভার কে।

আয়ান -ড্রাইভার কে বলে রেখেছো মানে?
আমি গাড়ী নিয়ে যাবো না।আমার মোটরবাইকে করেই যাবো।

আকাশ -ফাজিল কথাকার! তুই নতুন বউকে নিয়ে মোটরবাইকে যাবি?

আয়ান -হুম যাবো। আর তোমাদেরও চিন্তা করতে হবে না।

কথাটা বলেই আয়ান বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো।
আকাশ -দেখেছো আম্মু! তোমার এই ছেলের কখনোই কি বুদ্ধি হবে না?

সুমি -তুমি এই রকম করছো কেনো।ওর তো একটা স্বাদ আহ্লাদ থাকতে পারে।নিজের সেটা নাই বলে অন্য কাউর থাকবেনা তাতো না?

আকাশ সুমির কথা শুনে কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।
আয়ান প্রাপ্তিকে নিয়েই মোটরবাইক প্রাপ্তিদের বাড়ী সামনে এসে থামতেই আসিফ এগিয়ে এসে তাদেরকে বাসার ভিতরে নিয়ে গেলো।প্রাপ্তি এসেছে শুনে আশে পাশের মানুষ আসতে শুরু করলো আয়নকে দেখার জন্য।আয়ান এসে আজাদ সাহেব আর নিলিমা বেগমকে সালাম করলো। নিলিমা বেগম আয়ান কে প্রাপ্তির মামা মামী, কাকা,কাকী, কাজিনদের সবার সাথে পরিচয় করাতে লাগলো।প্রাপ্তি এসে কাউকে কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।পাশের বাড়ীর রানু কাকী এসেছে, সাথে করে আরো ৭/৮ জন মহিলাকেও নিয়ে এসে কই আসিফের মা তোমাদের নাকি নতুন জামাই আসছে?
আয়ান তাদের দেখে সালাম দিলো।

রানু কাকী -ওয়ালাইকুম সালাম! তো বাবা কেমন আছো? সব ঠিকঠাক তো?

আয়ান -জ্বী, আপনার কথা বুজলাম না।

রানু কাকী -কি আর বুজবা,তোমরা ছেলেরা মেয়ে একটা দেখলে তো পাগল হয়ে যাও।
খুঁজ খবর নিয়ে বিয়ে করেছো নাকি এমনিতেই গলায় ঝুলিয়ে নিয়েছো।

আয়ান -গলায় ঝুলাতে যাবো কেনো। সম্মানের সাথেই আমি ওকে বিয়ে করেছি।আর আপনি কি বলছেন এই সব?

আসিফ -কাকী আপনি এইখান থেকে এখন যান। আমদের টা আমাদের বুজতে দিন।

রানু কাকী -আরে বাবা! আমরা এইখানে থাকতে আসিনি।তোমাদের অপকর্ম তোমরা ডেকে রাখো তাতে আমাদের কী। নিজেদের মেয়েকে তো অসহায় একটা ছেলেকে পেয়ে তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছো এখন আমাদের বললেই দোষ। তোমাদের মেয়েকে যে তিন দিন দরে আটকে রেখে কি করেছে না করেছে আমরা তো সবি জানি।কি বাবা তুমি সব জেনে বিয়ে করেছো তো?

আয়ান -আপনারা আর একটাও বাজে কথা বলবেন না।আমি ওর সব জেনেই বিয়ে করেছি।আপনাদের এইটা নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।আপনাদের এতোক্ষণ সম্মান দিয়েই কথা বলছি।যদি আমার বউয়ের নামে আর একটাও বাজে কথা বলেন তখন আমি ভুলে যাবো আপনারা আমার শ্বশুরের এলাকার লোক।

রানু কাকী -এই তোরা চল।আজকাল ভালো কথা বলতে নাই।
সবাই চলে যাওয়ার পরে আয়ান দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে আছে আর গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে।
আয়ান -প্রাপ্তিইইইইইই,,,,
আয়ান প্রাপ্তি বলতেই প্রাপ্তি চোখের পানি মুছে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।
পিছন পিছন আয়ান ও তার রুমে গেলো।

আয়ান -প্লিজ এইভাবে কান্না করোনা।মানুষ তো বলবেই। তাই বলে কান্না করবে।আমি জানি তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।কিন্তু আমার দোষ কি বলো?আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি কোনো অসম্মান বা করুণা নয়।লোকে কথা শুনে যদি কান্নাকাটি করো তাহলে এইটা কি ঠিক হবে।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৯

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৯

#Rabeya Sultana Nipa

 

__প্রাপ্তির গম্ভীর চোখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।(মনে মনে ভাবছে)তাহলে কি তার ধারণায় ঠিক সব ছেলেই একরকম? ওনার নাকি ১০.০০ ছাড়া ঘুম ভাঙে না এখন ৭.০০ না বাজতেই অন্য মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছে।আমিও না কি বুজে এইসব ন্যাকামি দেখছি।

প্রাপ্তি আয়ানের থেকে মুখ ফিরিয়ে আয়েশা বেগমমের দিকে তাকিয়ে মা চলুন আপনি না কোথাও যাবেন?

আয়েশা বেগম -ওহ্ আমি তো ভুলেই গেছি।অধরা তুমি আয়ান কে নিয়ে নাস্তা করতে আসো আমরা বরং আসি।

আয়ান অধরাকে সরিয়ে, আম্মু দাঁড়াও!
তুমি যাও আমি প্রাপ্তিকে নিয়ে আসছি।

আয়েশা বেগম -আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আয়।কথাটা বলেই চলে গেলেন আয়েশা বেগম।

প্রাপ্তি অন্য দিকে ফিরে আছে দেখে আয়ান অধরাকে প্রাপ্তির সামনে নিয়ে এসে, আমার মনে হয় তোমাদের পরিচয় হয়নি এখনো, প্রাপ্তি! ও আমার কাজিন, এবং ফ্রেন্ড। আমি যখন পড়া লেখার জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলাম তখন আমি ওদের বাসায় থাকতাম।কথাটা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের দিকে ফিরে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ভাবছে এখনি এই অবস্থা আর বাসায় থাকাকালীন কি করছে আল্লাই ভালো জানে।প্রাপ্তিকে এইভাবে তাকাতে দেখে,
অধরা! ও হচ্ছে আমার ওয়াইফ প্রাপ্তি।

অধরা -(হাত বাড়িয়ে দিয়ে)হাই!

প্রাপ্তি -হ্যালো!নাইছ টু মিট ইউ।

আয়ান প্রাপ্তি মুখে কথা শুনে, আচ্ছা তোমরা কথা বলো,আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

অধরা -পরে এসে কথা বলবো। এখনো কারো সাথে দেখা হয়নি আগে তাদের সাথে দেখা করে আসি।

আয়ান -আচ্ছা! তুমি যাও, প্রাপ্তি! তুমি বসো আমি আসা ছাড়া এক পা ও এগুবে না।আয়ানের কথা শুনে প্রাপ্তি এসে খাটের উপর বসলো।
আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে প্রাপ্তি সত্যিই বসে আছে, ফোন হাতে নিয়ে সুমিকে ফোন দিয়ে সুইট হার্ট তুমি কোথায়?একটু আমার রুমে আসো।
সুমি এসে কি ব্যাপার আয়ান আজ এতো তাড়াতাড়ি তাও আবার ফোন করে ডাকা হচ্ছে কেনো।কোনো সমস্যা?
প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে সে চুপচাপ হয়ে বসে আছে।সুমি আয়ানের দিকে তাকিয়ে প্রাপ্তিকে দেখিয়ে, আয়ান! ওর মন খারাপ কেনো?

আয়ান -ও তো এই বাড়ীতে আসার পর থেকে তো এইভাবেই আছে।

সুমি -রাতে এতো ভালোবাসা দিয়েও ঠিক করতে পারলানা? যাইহোক ডেকেছো কেনো?

আয়ান -ছোটো কাকারা আসছে, ওকে একটু রেডি করিয়ে নিছে নিয়ে আসো আমি গিয়ে দেখা করে আসি।

সুমি -সরি আসলে আমি একদম ভুলে গিয়েছিলাম এই কথা। তুমি যাও আমি এখনি রেডি করে নিয়ে যাচ্ছি।

রফিক সবাইকে নাস্তা দিচ্ছে টেবিলে,বাড়ীর সবাই ড্রইংরুমেই আছে।আয়ান এসে কাকা কাকী কে সালাম করে, কেমন আছেন কাকাই?

কাকা-এই ভালো। তোর কি খবর বল? শেষমেশ তাহলে বিয়েটা করেই ফেললি? (কথাটা বলেই হা হা করে হাঁসতে শুরু করলেন আয়ানের কাকা)

আয়ান একটু লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

আকাশ -কিরে,,, তুমি মেয়ে মানুষের মতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো? বস এইখানে।

রুমকি এসে আকাশের কোলে বসতে বসতে মামা দেখো ছোটো মামনি আসছে।
কথাটা শুনেই আয়ান সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে হা করে আছে,আয়ানের দিকে তাকিয়ে সবাই মিটমিট করে হাঁসছে সেইদিকে তার কোনো খেয়ালি নেই।প্রাপ্তিও আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই, ভাবছে হনুমানের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেনো মনে হচ্ছে এইখানে শুধু আমিই আছি।
রাহাত -এহেমমম,,,,,আয়ান ভাইয়া সারা রাত দেখেও মন ভরেনি?
রাহাতের কথা শুনে আয়ান মুছকি হেঁসে, রফিক চাচা কফি টা দিয়ে যান।
আয়েশা বেগম রান্নাঘর থেকে হাত টা আঁচলে মুছতে মুছতে তুই এখন কিসের কফি খাবি আগে নাস্তা করে নে।আর সবাই আসো নাস্তাটা করে নাও এখনো অনেক কাজ পড়ে আছে।সুমি প্রাপ্তিকে কাকা কাকীর সামনে এনে,এই হচ্ছে তোমাদের আদরের আয়ানের বউ।

কাকী -মাসাল্লাহ্! আয়ানের বউ দেখতে তো অনেক মিষ্ট। (আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে)ভাবী সত্যিই বলছি আয়ানের পছন্দ আছে বটে।লক্ষ্মী একটা মেয়ে।

কাকা -নতুন বউয়ের মুখ দেখে কিছু তো একটা দিতে হয়।(গহনার বাক্স টা বের করে প্রাপ্তির হাতে দিয়ে)সামনের বছর যেন নাতী নাতনীর মুখ দেখতে পাই।
কথাটা শুনে সুমি হাঁসি মুখটা মলিন করে প্রাপ্তির হাত ছেড়ে দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো।আকাশ সুমিকে চলে যেতে দেখে সুমি শুনো! কোথায় যাচ্ছো বলেতে বলতে সুমির পিছন পিছন রান্নাঘরে চলে গেলো।

কাকা -আমি কি কিছু ভুল বলে পেললাম?

আয়েশা বেগম কথা ঘুরিয়ে কিছু ভুল হয়নি।এখন সবাই চলো নাস্তা করে নাও।

অধরা মিনুর সাথে কথা বলতে বলতে নিচে নেমে এসে, আয়ানের হাত ধরে টেনে আয়ান চলো তোমার সাথে নাস্তা করবো।
ঝিনুক নিহাদের কানের কাছে, এইমেয়েকে বেশী সুবিধার লাগছেনা। একটা ঝামেলা পাকানোর জন্য বসে আছে।কথাটা বলে ঝিনুক উঠে গিয়ে অধরা আমার ইচ্ছে করছে কি জানো আমি তোমার সাথে বসে নাস্তা করবো।আয়ান আজ ওর বউয়ের সাথে বসে নাস্তা করুক। তুমি আমার সাথে বসো।কতো দিন পর তোমার সাথে দেখা।

অধরা -না আপু তোমার সাথে অন্য একদিন আজ আমি আয়ানের সাথেই বসি।আয়ান তাড়াতাড়ি নাস্তা করে নাও তুমি আর আমি বাহিরে ঘুরতে যাবো।আয়ান কথাটা শুনে বার বার প্রাপ্তির দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্তি এইদিকে কান না দিয়ে আয়েশা বেগমকে সবাইকে নাস্তা দিতে হেল্প করার জন্য এগিয়ে গেলো।
ঝিনুক আবারো অধরাকে বলতে লাগলো, ওমা,,,,, তোমাকে বলা হয়নি তুমি আয়ানকে নিয়ে ঘুরতে যাবে কি করে আয়ান তো একটু পর প্রাপ্তির সাথে প্রাপ্তিদের বাড়ী যাবে।তাদের তো আজ রিসেপশন পার্টি হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সেটা হচ্ছে না, আব্বু আসার পর হবে।ঝিনুকের কথা শুনে আয়েশা বেগম মুখে হাত দিয়ে মুখ ছেপে হাঁসছে।আকাশ ও সুমিকে বুজিয়ে রান্নাঘর থেকে নিয়ে এসেছে।
অধরা -আপু কি বলেছে আয়ান? তুমি সত্যি আমাকে রেখে ওইমেয়েটার বাড়ীতে যাবে?
আয়ান অধরার কথা শুনে, কি ওই মেয়েটা ওই মেয়েটা করছো অধরা? ওর একটা নাম আছে ওকে নাম ধরেই ডাকবে।
ঝিনুক এসে প্রাপ্তির পাশে দাঁড়িয়ে,ওই মেয়ে বেশী সুবিধার নয় সময় থাকতে নিজের হ্যাজবেন্ডকে নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করো।না হলে পরে প্রস্তাতে হবে।ঝিনুকের কথা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ভাবী কাল সত্যিই বলে ছিলো আপু সবার থেকে আলাদা এই গরম তো এই নরম।একটা মানুষের হাজারো ভাবে ভালোবাসতে পারে এইটা ওনাকে না দেখলে বুজতামই না।

ঝিনুক প্রাপ্তিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে, এইভাবে হা করে তাকিয়ে কি দেখছো যাও নিজের বরকে ওই মেয়েত হাত থেকে সামলাও।

প্রাপ্তি ঝিনুকের কথা শুনে, (কমল স্বরে) আপু যে থাকার সে এমনিতেই থাকবে।তাকে নিয়ে আমি কোনো জোর করতে চাইনা।ওনি নিজেই সবার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে এই বাড়ীতে এনেছেন তিনি যদি বলেন আমাকে চলে আমি চলে যাবো।

ঝিনুক -তোমরা যা ভালো মনে করো।

সুমি -বলেছিলম না দেখবে আপু তোমাকে ঠিক ভালোবেসে পেলবে।

সবাই নাস্তা শেষ করে ড্রইংরুমে আড্ডা দিচ্ছে।আয়ান সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছে ঠিকে মন পড়ে আছে প্রাপ্তির দিকে,প্রাপ্তি সবার সাথে টুকটাক কথা যাই বলে আয়ানের সাথে তার এখনো কোনো কথা হয়নি।আচ্ছা ও কি আমার সাথে কোনো কথায় বলবে না?আমার কি অন্যায়, নাকি আমাকে ওর পছন্দ হয়নি? আয়েশা বেগম রান্না করছে রফিক আর সুমি হেল্প করছে।প্রাপ্তি উঠে রান্নাঘরে গিয়ে দাঁড়াতেই,

সুমি -তুমি আবার উঠে এলে কেনো প্রাপ্তি?

প্রাপ্তি -আপনাদের একটু হেল্প করি?

সুমি -এখন কিচ্ছু করতে হবে না।আমি আর মা তো আছি কয়েকদিন যাক তারপর মায়ের ছুটি। তুমি আর আমি মিলে সব সামলে নিবো।
সুমির কথা শেষ হতেই আয়েশা বেগম বললো, প্রাপ্তি! তুমি রান্না করতে পারো?
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি কি বলবে বুজতে পারছেনা।কারণ সে কখনো রান্না করেনি মাঝেমাঝে দুই এক বার করেছে তাও আবার ডিম ভাজা।প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখে আয়েশা বেগম বললো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, বেশী ভাগ মেয়েই রান্না শিখে শ্বশুর বাড়ীতে যায় না।আমি তোমাকে সব শিখিয়ে দিবো।প্রাপ্তি আয়ানের মায়ের কথা শুনে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে,

সুমি -আরে,,, তুমি কান্না করছো কেনো?
মা এই রকমই,আমাকেও সব কিছু নিজের হাতে শিখিয়েছিলো।

প্রাপ্তি সবার কথা শুনে ভাবছে এই বাড়ী মানুষ গুলো এতো ভালো, কেউ আমাকে একবারো অন্য চোখে দেখেনি।আমি কি সবার এতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য? কথা গুলো ভাবতেই পিছন থেকে আয়ান এসে ফোনটা প্রাপ্তির সামনে ধরে তোমার ভাইয়া ফোন করেছে কথা বলো!

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৮

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে, বুজা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক লজ্জা পেয়েছে।আসলে আপনি কিছু মনে করবেন না।আপনি শাড়ী চেঞ্জ করেছেন বলে ভাবী এই কথা বলেছে।

প্রাপ্তি কিছু না বলেই খাটে একপাশে গিয়ে বসলো।
আয়ান-আপনি খাননি কেনো? চলেন এখন খাবেন।
প্রাপ্তি কোনো কথা বলছে না দেখে আয়ান বললো, কি হলো খাবেন না? আর হে আমি কিন্তু এতো আপনি আপনি করতে পারবোনা। আমি তুমি করেই বলবো।
প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখেই আয়ান বললো হুম বুজেছি চুপ থাকা মানে সম্মতির লক্ষণ।
তাহলে এইবার খেয়ে নাও।খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। সারাদিন তোমার উপর অনেক ধকল গেছে।

প্রাপ্তি আয়ানের কথা যতো শুনছে ততো অবাক হচ্ছে।আয়ান বার বার তার ধারণা গুলো ভুল প্রমাণ করছে।এই ছেলেকি সবার থেকে আলাদা নাকি? ছেলেদের প্রতি আমার যা ধারণা এই দেখছি পুরোই উল্টো।
মনে ভিতর তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে নাকি আমায় দেখাছে?সে সবার থেকে আলাদা।

আয়ান খাবারের প্লেট প্রাপ্তির সামনে ধরতেই প্রাপ্তি চমকে উঠে প্লেটের দিকে তাকালো।এই দেখছি মহা মুশকিল পড়া গেলো।না খাইয়ে দেখছি ছাড়বেনা।পেটেও তো অনেক ক্ষুধা সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। এর ছেয়ে বরং খেয়েই নি।প্রাপ্তি খাবার প্লেট টা হাতে নিয়েই আয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে খেতে শুরু করলো।আয়ান প্রাপ্তির খাওয়া দেখে নিজের খাওয়া বন্ধ করে মুখে হাত দিয়ে মুছকি মুছকি হাঁসছে।
প্রাপ্তি খাওয়া শেষ করে আয়ানের দিকে নজর পড়তেই (মনে মনে) এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছে। মার্বেলের মতো চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে মেয়ে মানুষ এই জন্মই দেখে নাই।

আয়ান হালকা একটু কেশে এইযে, মিসেস আয়ান, তুমি আমার সাথে কথা না বলে এইভাবেই থাকবে?
প্রাপ্তি কোনো কথার আনসার না দিয়ে বার বার খাটের দিকে তাকাচ্চিলো,
প্রাপ্তির তাকানো দেখে আয়ান বুজতে পেরে, তুমি কি ভেবেছো তোমার সাথে শুইলে আমি আমার অধিকার ফলাবো তোমার উপর? (তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে) কখনোই না।আয়ানের মন যদি চায় তোমাকে ছুঁয়েও দেখবে না তাহলে সে সত্যিই তোমাকে ছুঁয়ে দেখবেনা।তুমি নিচিন্তায় ঘুমাতে পারো।
প্রাপ্তি সত্যি সত্যি একপাশ হয়ে শুয়ে পড়লো।
আয়ান উঠে হাতটা ধুয়ে এসে খাটের আরেক পাশে ফোন নিয়ে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লো।ফোন নিয়ে বন্ধুদের এসএমএস এর আনসার দিতে দিতেই রাতের অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলো।হঠাৎ প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই হালকা মৃদু আলোতে প্রাপ্তিকে পুরো অপ্সরী মতো লাগছে।ঘুমন্ত মানুষকে এতো সুন্দর দেখায় আয়ান তা আজ প্রথম প্রাপ্তিকে দেখে বুজলো।নিষ্পাপ শিশুদের মতো কি সুন্দর করে ঘুমাছে।হয়তো প্রাপ্তি আমায় বিশ্বাস করেছে না হলে এতো নিচিন্তে একটা মেয়ে কখনোই ঘুমাতো না।বিশ্বাস কথাটা মনে আসতে আয়ানের মনে শান্তির রেখা ফুটে উঠলো।ফোনটা পাশে রেখে ঠিক করে শুয়ে প্রাপ্তির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আয়ানের এইভেবে ভালোলাগছে যাকে সে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ছিলো তাকেই সে তার জীবনের সাথী হিসেবে পেয়েছে।থাকুক না প্রাপ্তির হাজারটা সমস্যা। সব সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে সে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নেই।
প্রাপ্তি ফজরের আজানের শব্দ শুনেই উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে নিলো। জায়নামাজ টা উঠিয়ে রাখতে গিয়ে আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি।একটা ছেলেকে ঘুমালে এতো মায়া লাগে সে কখনো দেখেনি।প্রাপ্তির আয়ানের থেকে চোখ ফিরাইতে ইচ্ছে করছেনা।আচ্ছা এই মানুষটা কি আমায় সত্যি ভালোবেসে বিয়ে করেছে নাকি সবার সামনে মহৎ সাজার চেষ্টা করছে? দেখতে তো এতোটা খারাপ বুজা যায় না।অবশ্য দেখা না দেখায় কি যায় আসে।আয়ান এই পাশ থেকে ওপাশ ফিরতেই প্রাপ্তি তাড়াতাড়ি এসে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লো। একটু পর দরজা নক করা শব্দ পেয়ে উঠে বসে ভাবছে এতো সকাল বেলা কে আসলো আবার।ভাবী নয়তো? ও আল্লা এইবার এসে আবার কি বলে তুমিই ভালো জানো। প্রাপ্তি খাট থেকে নেমে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা খুলে দিয়ে দেখে আয়ানের মা।প্রাপ্তি সুস্থির নিশ্বাস পেলে মুছকি হাঁসি দিয়ে মনে মনে ভাবছে আল্লা এইযাত্রায় বেঁচে গেলাম।

আয়েশা বেগম প্রাপ্তির হাঁসি দেখে নিজেও হেঁসে তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না এখন ঘুম থেকে উঠেছো?

প্রাপ্তি -জ্বী মা! উঠে ফজরের নামাজ আদায় করলাম।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে লক্ষ্মী মেয়ে, আমি জানতাম আমার আয়ান কখনো কোনো ভুল করতে পারেনা।আমার আয়ান তার যোগ্য বউকেই ঘরে এনেছে।
যাইহোক কাজের কথাটা বলি, আমি এইখানে এসেছি আয়ানের ছোটো কাকা কাকী এসেছে।ওরা তো আমেরিকায় থাকে তাই আসতে দেরী হয়ে গেলো। আয়ান উঠতে অনেক দেরী আছে মহারাজের ১০.০০টা ছাড়া ঘুম ভাঙবে না।চলো তোমাকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়েদি। প্রাপ্তি পা বাড়াতে যাবে তখনি আয়ান! আয়ান! বলে একটা মেয়ে রুমে ঢুকলো। প্রাপ্তিকে কিছু না বলেই আয়ানের কাছে চলে গেলো, এমন ভাব করছে মনে হচ্ছে প্রাপ্তিকে সে দেখেইনি।কি সব ছেলেদের মতো পোশাক পরে আছে।যাকে এককথায় মডার্ন মেয়ে বলে।

আয়েশা বেগম -(প্রাপ্তি মেয়েটার দিকে বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে) ওহ্ প্রাপ্তি ওর কথা তোমাকে বলায় হয়নি।ও হচ্ছে আয়ানের ছোটো কাকার একমাত্র মেয়ে,আমেরিকা থাকে।নাম অধরা,আয়ানের খুব ভালো বন্ধু।

অধরা -আয়ান!! তুমাকে আমি এইভাবে ডাকার পরেও তুমি ঘুমাবা?

আয়ান ঘুম ঘুম চোখে অধরা দিকে তাকাতে চমকে উঠে তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে অধরা তুমি!কখন এলে?

আয়ান দাঁড়াতেই অধরা আয়ানকে জড়িয়ে ধরে তোমাকে অনেক মিস করছি আমি।
আয়ানের খেয়ালি নেই তারা ছাড়াও এই রুমে কেউ আছে আয়ানে প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই,,,,,

চলবে,,,,,,,,