Monday, June 16, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2392



ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩৭

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩৭

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আসিফের বিয়ের সব কিছু মিটে গেছে।আকাশ সুমিকে ডেকে বলছে সব কিছু গুছিয়ে নিতে আজ তারা বাড়ি চলে যাবে।আকাশে কথা শুনে নিহাদও একি কথা বলছে।নিলিমা বেগম তাদের চলে যাওয়ার কথা শুনে মন খারাপ করে, বাবা আকাশ! তোমরা সত্যিই আজ চলে যাবে? আরো দুই দিন থেকে যাও।বিয়ের ঝামেলাতে তোমাদের তেমন আদর যত্নআত্তি করতে পারিনি।নিহাদ! বাবা তুমিও অমত করোনা।

নিহাম -আন্টি আমি সব কাজ পেলে এখানে ছুটে এসেছি শুধু আপনাদের সাথে আনন্দটা ভাগাভাগি করবো বলে।আমার অফিসে কাল গিয়ে জয়েন হতে হবে।

নিলিমা -আকাশ তুমি আর সুমি না হয় আরো দুটো দিন থাকো।

আয়ান আর প্রাপ্তি এসে, কি হয়েছে মা?

নিলিমা বেগম -আকাশ আর নিহাদ বলছে চলে যাবে। তাই ওদের বলছি আরো দুই দিন থেকে যেতে।নিহাদ বলছে কাল ওর অফিসে জয়েন করতে হবে।এইজন্য আকাশকে বললাম থেকে যেতে।

আয়ান -হে রে ভাইয়া! তুই আরো দুই দিন থেকে যা পরে আমরা সহ এক সাথে চলে যাবো।
আকাশ -না আয়ান তুই তো আব্বুকে চিনিস।সত্যি কথা বলতে আমি আব্বুকে এখানে আসবো এইটা বলিনি।আমি শুধু বলেছি সুমিকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। আব্বু আর কিছু জিজ্ঞাস করেনি কোথায় যাবো বা অন্য কিছু। আমি শুধু তোদের কথা রাখার জন্যই এসেছি।(প্রাপ্তির কাছে এগিয়ে এসে তার মাথায় হাত রেখে)আমার এই ছোট্র বোনটার আবদার টা রাখার জন্যই আসলাম।

আয়ান -ঠিক আছে তাহলে তোদের আর আটকাবো না।তবে আবার কখন দেখা হয় কি জানে।

ঝিনুক -শীঘ্রই দেখা হবে।কারণ অভ্রর বিয়েতে আমরা বর পক্ষ হয়ে আসতে হবে না?
ঝিনুকের কথায় সবাই অট্র হাঁসি দিয়ে,
প্রাপ্তি -রাইট আপু!তবে এর আগেই হয়তো দেখা হবে তবে সেটা সারপ্রাইজ হিসেবে থাক।
নিহাদ -ওকে প্রাপ্তি! তোমার সারপ্রাইজের অপেক্ষায় রইলাম।
সন্ধ্যার আগেই আকাশ আর নিহাদরা বেরিয়ে পড়লো।আকাশ বাসায় আসতে আসতে রাত হয়ে গেছে।রফিক মেইন দরজা খুলে দিয়ে, ভাইয়া আপনারা চলে আসছেন? ভালোই করছেন বাড়িটা আপনাগোরে ছাড়া ভালো লাগেনা।আকাশ আর সুমি ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে,
আকাশ -রফিক চাচা আব্বু কোথায়? আম্মুকেও তো দেখছিনা।
আয়েশা বেগম এসে, এইতো আকাশ তোরা চলে এলি? তবে ভালো হয়েছে।বাহিরের থেকে এসেছিস উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
সুমি আয়েশা বেগমের দিকে এগিয়ে এসে মা শরীরের কি অবস্থা? এই কয়দিন আমার এই মা কে কতো মিস করেছি তা বলে বুজাতে পারবোনা।

আয়েশা বেগম- হে আর পাম দিতে হবে না।আমার মেয়েটা যে আমায় কতো মিস করেছে সেটা আমি বুজেছি।এখন যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।

প্রাপ্তিদের বাড়ির সবাই রাতে খেতে বসেছে,আজাদ সাহেব নীরাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেনো?

অরণী -আব্বু ওনি আগের দাদীদের নিয়ম পালন করছেন।কতো বার করে আমি বললাম খেতে বসো, না ওনি মায়ের সাথে এক সঙ্গে খাবেন।প্রাপ্তি এসে বসতে বসতে কি হয়ে চেঁচাচ্ছিস কেনো? আস্তে করে বললেই তো হয়।
অরণী -হুম আরেক জন এসে জুটেছে।ইনি আর কম কিসের। একি দাঁড়িপাল্লার লোক।
কথাটা শুনে রেশী ফিক করে হেঁসে দিতেই। আয়ান অরণীর দিকে তাকিয়ে,এতোদিন পর একটা কাজের কাজ করছো।

অরণী -কি বলতে চাইছো এতো দিন আমি অকাজ কুকাজ করে বেড়াতাম নাকি?
আপু তোর এই আয়ানকে সামলা বলে দিলাম পরে কিন্তু ঠেলা বুজবে এই অরণীর পিছনে লাগলে কি হয়।

আয়ান -আচ্ছা সিয়াম! তুমি এই দজ্জালটাকে সামলাও কি করে। রেশী ওর কথা শুনে হাঁসলো বলেই কথাটা বললাম।আর ও কি উল্টাপাল্টা বকবক করেই যাচ্ছে।
সিয়াম -একমাত্র আপনিই আমার কষ্টটা বুজেছেন।

অরণী -কিহ আমি দজ্জাল?ঠিক আছে দজ্জাল কাকে বলে আমি বুজিয়ে দিবো।

আসিফ -আয়ান এর সাথে আর কথা বলার দরকার নেই। না হলে সত্যি কি করে না করে এর কোনো বিশ্বাস নেই।

প্রাপ্তি -নীরা তুমি বসো। আব্বু! কাল আমরা চলে যাবো সকাল বেলা।

আজাদ সাহেব -কি বলিস তোরাও চলে যাবি?

প্রাপ্তি -তোমার দুই মেয়ে গেলে কি হয়েছে তোমার আরেক মেয়ে আসছে।এখন তার একটু আদর যত্ন খাও।কি বলিস অরণী?

অরণী -হুম আপু ঠিকি বলেছে।ভাবী তুমি আমাদের আদরে ভাগ বসিয়ে দিলে?যাক ভালোই।
সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে চলে গেলো।সকালে উঠে প্রাপ্তিরা নাস্তা করে রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো।অভ্র আর রেশীর বিয়েটা ঠিক হলেও রেশী আর অভ্রর তেমন কথা হয়না।
প্রাপ্তি রান্না করতে ব্যস্ত, রেশী কলেজ থেকে এসে দেখে প্রাপ্তি রান্না করা নিয়ে খুব ব্যস্ত।রেশী চেঞ্জ করে এসে ভাবী তুমি এখনো রান্না করছো।দেখি আর কি লাগবে আমাকে বলো আমি তোমাকে হেল্প করছি।

প্রাপ্তি -আর বলিস না, তোর ভাইয়া হঠাৎ ফোন করে বললো অভ্র আর নিশান ভাইয়া আসবে তাই একটু ব্যস্ত হয়ে পরলাম।
কথাটা বলতে না বলতেই কলিংবেলের শব্দ শুনে ওই যে ওরা মনে হয় এসে গেছে তুই গিয়ে দরজাটা খুলে দে আমি আসছি।

রেশী কথাটা শুনেই গলাটা যেনো শুকিয়ে আসছে।ভাবী আমি যাবো?

প্রাপ্তি -হ্যাঁ যাও। দরজাটা খুলে দিয়ে আসো।রেশী আর কিছু না বলে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।আয়ান মুচকি হেঁসে কিরে দরজা খুলতে এতো দেরি কেনো তোর?

প্রাপ্তি এসে আরে সে অভ্রর কথা শুনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেবেছে সে দরজা খুলবে কি না তারপর আমি বলাতে এসে দরজা খুলে দিলো।

অভ্র রেশীর দিকে তাকিয়ে,আমার মনে হয় এইখানে আসাটা রেশীর কাছে ভালো লাগেনি তাই হয়তো দরজা খুলতে চায়নি।

রেশী প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে ভাবী ওনি কিন্তু আমায় মিথ্যা অপবাদ দিতেছে।আমি এইরকম কোনো কিছুই মনে আনি নি।

আয়ান -অভ্র তুই আমার বোনটা কে কেনো এই অপবাদটা দিচ্ছিস? তোর কিন্তু একদম উচিত হয়নি।বলে হাঁসতে শুরু করলো।

প্রাপ্তি -আচ্ছা তোমাদের দুজনকে দেখছি, নিশান ভাইয়া এখনো আসিনি কেনো?

আয়ান -আর বলো না।ও আসতে ছেয়েছিল নীরা ফোন করেছিলো তোমাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য তাই ও এইখানে না এসে তোমাদের বাড়িতে গেছে।অভ্র তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।প্রাপ্তিকে রুমে যাওয়ার জন্য ইশারা করে রুমে চলে গেলো।
প্রাপ্তি-আচ্ছা তোমরা বসে কথা বলো আমি আসছি।
প্রাপ্তি কথাটা বলে আয়ানের পিছুপিছু চলে গেলো।রেশীও চলে যাবে এমন সময় অভ্র বলেতে লাগলো,চলে যাচ্ছো কেনো? তুমি আমাকে দেখে এমন ভাব করো যে আমার সাথে তোমার কোনো সম্পর্কই নেই।রেশী! কয়েকদিন পর আমাদের বিয়ে। এখনো তুমি দূরে সরে থাকবে?

রেশী -(নিজের নিরবাতা ভেঙে) সেইদিনের ঘটনার জন্য সরি।আমার জন্য আপনাকে কতো অপমান সহ্য করতে হয়েছে। আসলে আপনিই বলুন আমার জায়গা থাকলে আপনি কি করতেন?

অভ্র মুচকি হেঁসে বসা থেকে উঠে রেশীর কাছে এসে সামনে দাঁড়িয়ে, তোমার জায়গায় থাকলে আমি কি করতাম জানো? যে ছেলের সাথে আমার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার সাথে দেখা করতে চাইতাম।তাকে জানতে চাইতাম।সে কি আমার ভালোবাসার যোগ্য কিনা পরিক্ষা করার চেষ্টা করতাম।

রেশী অভ্রর কথা গুলো শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে,বুজেছি আমার ভুল ছিলো।আচ্ছা আপনি আমার সাথে তাহলে দেখা করেননি কেনো? আমি না হয় দেখা করতে বলিনি কিন্তু আপনি কেনো করেননি?

অভ্র -আমি দেখা করতে অনেক বারই বলেছিলাম।কিন্তু তোমার সৎ মা বলেছিলো তুমি নাকি দেখা করতে চাওনা।তাই আমিও আর জোর করেনি।

রেশী -আচ্ছা পরে যখন এই বাসায় আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো তখন বলেননি কেনো?

অভ্র- বন্ধুত্ব হারানোর ভয়ে।হয়তো তখন বললে আয়ান আমায় ভুল বুজতো এই ভয়ে বলিনি।সব কিছুরই একটা সময়ের প্রয়োজন হয় রেশী।

রেশী -হুম। আপনি বসুন এখুনি ভাইয়া এসে যাবে।আপনার আর একা লাগবেনা।

অভ্র -কে বলেছে আমি এইখানে একা আছি।আমার সাথে এমন একজন আছে যাকে আমি পৃথিবীর সবছেয়ে কাছের
মানুষটাই ভাবি।আচ্ছা সেই কি সারাজীবন আমার পাশে থাকবে? নাকি মাঝ পথে আবার আমাকে ছেড়ে পালাবে?তবে এইবার সে পালাতে চাইলেও পালাতে দিবোনা বলে দিলাম।কথাটা শুনে রেশী লজ্জা পেয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।

প্রাপ্তি অনেকক্ষণ আয়ানের জন্য অপেক্ষা করে, কই গো তোমার হলো?কখন সে ফ্রেশ হতে ঢুকলে এখনো বের হয়ে আসছো না কেনো?

আয়ান ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে, কথাটা আবার বলো তো।

প্রাপ্তি -কোন কথা?

আয়ান -ওইযে একটু আগে বললা না,কই গো তোমার হলো।তোমার কথাটা একদম বুকের বাম পাশে লাগছে।এখন যে আবার শুনতে ইচ্ছে করছে।

প্রাপ্তি -ফাজিল একটা। অভ্র ভাইয়া কখন থেকে একা একা বসে আছে, খাবেটা কখন?

আয়ান -(দুষ্টু একটা হাঁসি দিয়ে)কোথায় একা রেখে এলাম। সাথে তার প্রেমিকা দিয়ে আসলাম কথা বলার জন্য আর তুমি বলছো একা একা।

প্রাপ্তি-(ভ্রু গুলোকে কুঁচকে) কিহ্ তুমি না ওর ভাই। নিজের বোনকে,,,ছিঃ ছিঃ

আয়ান-এই তুমি ছিঃ ছিঃ করছো কেনো? আমি ভাই ঠিক আছে,কিন্তু আমি বন্ধুও।আর অভ্রর প্রতি আমার সেই বিশ্বাস আছে, সে এমন কোনো কাজ করবেনা যেটা আমার খারাপ লাগবে। এখন চলো অনেক ক্ষুধা লাগছে বউয়ের হাতের রান্না খাবো বলে বাহিরের থেকে খেয়ে আসিনি।

প্রাপ্তি -আচ্ছা চলো।
দুজনে গিয়ে দেখে অভ্র একা বসে বসে বই পড়ছে,
আয়ান এসে কিরে অভ্র রেশী কোথায় ওকে দেখছিনা।

অভ্র -আয়ান! ও মনে হয় ওর রুমে চলে গেছে।

আয়ান-তুই এতো আনরোমান্টিক কেনো?

অভ্র-মানে?

আয়ান -(বিরক্তিকর ভাব নিয়ে)কিছুনা এখন খেতে আয়।

কিছুদিন পর,,,,,,,,,,,,,,,,

আয়ান অফিস থেকে বাসায় এসে দেখে প্রাপ্তি রুমে নেই। ওয়াশ রুমে আছে ভেবে নিজের জামা কাপড় চেঞ্জ করে রেশীকে ডেকে চা দিতে বলে বারান্দায় গিয়ে বসলো।প্রাপ্তি তো ওয়াশ রুমেই আছে আমার কাছে এতোটা খারাপ লাগছে কেনো।মনে হচ্ছে প্রাপ্তি বাসায় নেই।নাহ আগে গিয়ে দেখে আসি বলে উঠতে যাবে তখনি রেশী এসে চায়ের কাপ টা হাতে দিয়ে চলে গেলো।আয়ানের কেমন জানি খটকা লাগছে, রেশী এতো গম্ভীর হয়ে আছে কেনো।অবশ্য ও তো এমনিতেই আমার সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না।অনেক মেয়ে আছে অনেক চটপটে কিন্তু রেশী শান্ত প্রকৃতির মেয়ে,চা টা খেতে খেতেই কথা গুলো ভাবছে আয়ান।কিন্তু প্রাপ্তি এতক্ষণ ওয়াশ রুমে কি করছে। আমি বাসায় এসেছি এতক্ষণ হয়ে গেলো,,, না না আমি নিজেই দেখে আসি বলেই উঠে চায়ের কাপ টা রেখে ওয়াশ রুমে গিয়ে দেখে দরজা খোলা কিন্তু ভিতরে কেউই নেই।প্রাপ্তিকে না দেখে আয়ানের বুকের ভেতর টা জেনো ধুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।কোথায় গেলো প্রাপ্তি? ও তো আমাকে না বলে কোথাও যাবেনা।
নাহ্ রেশীকে জিজ্ঞাস করে দেখি। কোথায় গেছে ও।
রেশী! রেশী! ডাকতে ডাকতে ড্রইংরুমে এসে দেখে রেশী বসে চোখেরজল পেলছে।
রেশী তুই কান্না করছিস কেনো? তোর ভাবী কোথায়?

রেশী- ভাইয়া আমিও কলেজ থেকে এসে দেখি ভাবী বাসায় নেই। কোথায় গেছে আমি কিছুই জানিনা।আমি ভেবেছিলাম তোমার সাথে আছে কিন্তু তুমি যখন অফিস থেকে একা বাসায় এলে তখন বুজলাম তোমার সাথে নেই।ভাইয়া ভাবী কোথায় গেছে তুমিও জানো না?আমার খুব খারাপ লাগছে ভাবীর জন্য।
রেশীর কথা শুনে আয়ানের ধম বন্ধ হয়ে আসছে।ঘরের চারদিকটা যেনো ঘুরছে।প্রাপ্তির কোনো বিপদ হলো নাতো?

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩৬

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩৬

#Rabeya Sultana Nipa

 

__নিহাদের কথা শুনে আয়ান অবাক হয়ে নিহাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে রেশীর দিকে তাকালো।

রেশী কিছু বলছেনা চুপ হয়ে নিছের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,আয়ান ভাইয়া কি আমায় ভুল বুজে দূরে ঠেলে দিবে? আমার সাথেই কেনো বার বার এইরকম হয়।নিহাদ ভাইয়ার সাথে আমাকে এইখানেই দেখা হতে হলো।এই পরিস্থিতি আমি কি ভাবে সামলিয়ে উঠবো?
আয়ান অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর,রেশী নিহাদ ভাইয়া কি বলছে? তোমরা কি আগে থেকেই দুজন দুজনকে চিনো?

রেশী কোনো কথা বলছে না।সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ঝিনুক নিহাদের দিকে তাকিয়ে, তুমি সরাসরি কথাটা কেনো বলছোনা?আচ্ছা অভ্রকে দেখছিনা ও কোথায়?
প্রাপ্তি এসে সবাইকে থমথমে থাকতে দেখে,কি হয়েছে সবাই এইভাবে আছো কেনো?
আয়ান -প্রাপ্তি! নিহাদ ভাইয়া রেশীর ব্যাপারে কিছু বলতে চাইছে।
অভ্র ফোনে কথা বলতে বলতে ড্রইংরুমে এসে সবাইকে দেখে, কি ব্যাপার সবাইকে কেমন যেনো দেখাচ্ছে। কি হয়েছে সবার?
ঝিনুক অভ্রর কথা শুনে,অভ্র তুমি যে তোমার ভাইয়া আর আমাকে না চিনার ভাণ করে থাকো সেই নিয়ে কথা বলছি।

আয়ান -কি বলছো এইসব আমি তো কিছুই বুজতেছিনা।প্লিজ তোমরা একটু বুজিয়ে বলবে সমস্যা টা কোন জায়গায়?

নিহাদ -অভ্র! সরি আমি আর চুপ থাকতে পারলাম না।আসলে আয়ান! অভ্র হচ্ছে আমার কাজিন।আমার ছোটো কাকার ছেলে।আমার কাকা চাকরীর সূত্রে ঢাকায় থাকতো।আমাদের বাড়িতেও বেশী আসা যাওয়া করতো না।ইনফেক্ট আমার বিয়ের সময় কাকা আসতে পারিনি।পরে যখন কাকা আর কাকী আসার পর তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন অভ্র তাদের সাথে আসেনি।তাই তোমাদের সাথে অভ্র আর দেখা হয়নি।কিন্তু ঝিনুকের সাথে অভ্রর ভালো একটা রিলেশন।সেই অভ্র এইখানে আসার পর থেকে আমাদের না চিনার ভাণ করে আছে।
নিহাদের কথা গুলো জেনো সবার কাছে ঘোরের মতো লাগছে। সবাই শুধু নিহাদের কথা গুলোই শুনছে।
আয়ান নিরবতা ভেঙে নিহাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে অভ্রর দিকে তাকিয়ে, অভ্র! নিহাদ ভাইয়া কি বলছে?তুই কি সত্যি নিহাদ ভাইয়ার কাজিন? কিন্তু তুই তো কখনোই বলিসনি।

অভ্র-আয়ান আমি নিজেই জানতাম না নিহাদ ভাইয়া তোর বোনের জামাই।যেদিন আমি নিহাদ ভাইকে এই বাড়িতে দেখলাম সেই দিন তুই আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলি।আমি নিজেই অবাক হয়েছি নিহাদ ভাইয়াকে এইখানে দেখে।
কিন্তু আমি ভয়ে তোকে কিছু বলিনি।যদি তুই আমাকে ভুল বুজিস।

নিহাদ -হুম আমি তোর ব্যাপারটা বুজেছি।তাই আমিও তোকে কিছু বলিনি।

অভ্র নিহাদের কাজিন শুনে রেশী নিহাদের দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই কি সেই ছেলে যার সাথে আমার বিয়ের হওয়ার কথা ছিলো।

আয়ান -আচ্ছা অভ্রর ব্যাপার টা না হয় বুজলাম কিন্তু রেশী কে কিভাবে চিনো? রেশী ও কি তোমার কাজিন হয় নাকি?

নিহাদ -(অট্র হাঁসি দিয়ে)আরে নাহ্। অভ্র এই কথাটা তুই বলবি না আমি বলবো।

অভ্র -ভাইয়া এইটা না হয় পরা বলা যাবে।থাকনা এখন এইসব কথা।

প্রাপ্তি -না! আমি এইটাও শুনতে চাই।নিহাদ ভাইয়া প্লিজ আপনি বলুন।

নিহাদ-রেশীর সাথে অভ্রর বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু রেশী বিয়ের দিন পালিয়ে যায়।কিন্তু কেনো সেইদিন রেশী পালিয়েছে এইটা সবার অজানা হয়ে রয়ে গেলো।
রেশী অভ্রর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।অভ্র রেশীর দিকে চোখ পড়তেই, সরি রেশী আসলে আমি এতো দিন চাইনি কথা গুলো কেউ জানুক।আর আমি এটাও জানি তুমি আমাকে চিনতে না।

আয়ান কিছু বলতে যাবে তখন আয়ানকে থামিয়ে আকাশ বললো,রেশী তুমি অভ্রকে বিয়েটা কেনো করলে না?
রেশী চুপ হয়ে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।প্রাপ্তি -(কড়া গলায়) রেশী! তুমি কথা বলছো না কেনো?প্লিজ তুমি আনসার দাও।

রেশী -(কাঁদোকাঁদো হয়ে) ভাবী! বিশ্বাস করো ওনি যে সেই ছেলে আমি জানতামই না।বিয়ের দিন সকালে আমার সৎ মা আর তার ভাই মিলে আমাকে ধমকিয়ে ছিলো, যে ছেলের সাথে আমাকে তারা বিয়ে দিচ্ছে ওই ছেলে নাকি ভালো না।আমার কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতেই নাকি ওই ছেলের কাছে আমাকে বিয়ে দিচ্ছে।
তখন আমাকে যখন সাজিয়ে রুমে নিয়ে আসলো তখন আমার কাজিন আমাকে বললো, রেশী তুই পালিয়ে যা, এই বিয়ে করলে তোর জীবন শেষ হয়ে যাবে।তোর এই মা তোর কখনোই ভালো চায়না।তুই যদি পালাতে চাস আমি তোকে হেল্প করবো।তাই সেইদিন ওর কথাতেই আমি পালিয়ে এসেছিলাম।প্রাপ্তি উঠে এসে রেশীকে জড়িয়ে ধরে প্লিজ তুই কান্না করিস না।নিহাদ ভাইয়া! এতে রেশীর ও কোনো দোষ দেখছিনা।
সুমি -আচ্ছা বুজলাম। তো নিহাদ ভাইয়া আপনি রেশীকে কোথায় দেখেছেন?

নিহাদ -রেশীকে যেদিন অভ্রর বাবা মা দেখতে গিয়েছিলো কাকা আমাকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে ছিলো।আর সে দিন অনেক প্রশ্ন আমি রেশীকে করেছিলাম।

আয়ান-ওকে! ওকে! এইবার সব বুজলাম।আমরা সবাই মিলে এখন আরেকটা বিয়েতে ইনজয় করতে পারি যদি সেটা অভ্র আর রেশী চায়।কি বলো সবাই।
কথাটা শুনে অভ্র অবাক হয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে, আয়ান তুই কি বলছিস?
বিয়ে!

আয়ান-হুম আমি ঠিকি বলছি।যদি তোরা চাস।

প্রাপ্তি -তুই কি বলিস রেশী? তুই রাজি তো?

রেশী -ভাবী তোমরা যা চাও এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।
সবাই খুশি হয়ে আলহামদুলিল্লাহ্‌ তাহলে তো আর কথায় নেই।

সিয়াম -যদি কথা গুলো আরো আগে হতো তাহলে তো দুটো বিয়ে একসাথেই দেওয়া যেতো।

আকাশ -কথাটা কিন্তু ঠিক বলছো।

আয়ান -এইদিকের সব কিছু মিটমাট হয়ে যাক।পরে এদের বিয়েটার আয়োজন শুরু করবো।

নিহাদ -যাক অভ্র সব কিছু তাহলে মিটমাট হয়ে গেছে।

আয়ানের ফোন আসতেই আয়ান উঠে চলে গেলো।
প্রাপ্তি রেশীকে ডেকে বললো, রেশী রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।ভাবী, আপু তোমরাও যাও।নীরাদের বাড়ি থেকে একটুপর মেহমান আসতে শুরু করবে।

সবাই রেডি হচ্ছে,আয়ান রুমে এসে প্রাপ্তিকে বসে থাকতে দেখে,কি হলো প্রাপ্তি তুমি বসে আছো কেনো?রেডি হবে না? ওইদিকের মেহমান আসতে শুরু করেছে।

প্রাপ্তি -(আস্তে করে)এইতো যাচ্ছি।তুমি রেডি হয়ে নাও।
আয়ান রেডি হয়ে ড্রেসিংটেবিলের সমনে চুল ঠিক করতে করতে প্রাপ্তি কেমন লাগছে আমায়?
প্রাপ্তি নিছের দিক থেকে মুখ উঠিয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।সেইদিন আয়ানের জন্য প্রাপ্তি এই শার্টটা নিয়েছিলো আয়ানকে সারপ্রাইজ দিবে বলে।কিন্তু আয়ানের গায়ে শার্টটা দেখে সে নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে গেলো। আয়ানকে অনেক সুন্দর লাগছে।প্রাপ্তি আস্তে আস্তে আয়ানের দিকে এগিয়ে গিয়ে তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।

আয়ান-হ্যাঁ সুন্দর তো লাগতেই হবে শার্টটা যে আমার বউ পছন্দ করে আমার জন্য এনেছে।অবশ্য আজ নীরাদের বাড়ি থেকে অনেক মেয়ে আসতেছে তাদেরও তো পছন্দ হতে হবে তাই না?
কথাটা বলতেই প্রাপ্তি আয়ানকে নিজের কাছে টেনে এনে, যে মেয়ে তাকাবে না সে মেয়ে আগে জানতে হবে আয়ান চৌধুরী কার হ্যাজবেন্ড।আয়ান ও সুযোগ পেয়ে প্রাপ্তিকে কোমর ধরে আরো কাছে টেনে এনে, তাই! কিন্তু আমার বউকে ছাড়া যে আমি কাউকেই ভাবতেই পারবোনা।
সুমি এসে দরজায় দাঁড়িয়ে, এতো রোমান্টিকতা দেখে আমি ইমপ্রেস হয়ে গেছি।যদি আমার হাতে নোবেল প্রাইজ দেওয়ার দায়িত্ব থাকতো আমি তোমাদের নামটাই নিতাম।

আয়ান প্রাপ্তিকে ছেড়ে দিয়ে, এই জন্যই তুমি সে দায়িত্বে নেই।তারাও বুজে কাকে কি দায়িত্ব দিবে।
প্রাপ্তি তাদের কথা শুনে মুখ টিপেটিপে হাঁসছে।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩৫

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

__আয়ান প্রাপ্তির দিকে ফিরে নিজের থুতনিটা প্রাপ্তির মাথার উপর রেখে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে, কখনো নিজেকে অবহেলা করবেনা।নিজের মাথা উঁচু করে বাঁছতে শিখো।নিজের পায়ের তলার মাটিকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরো।নিজেকে স্ট্রং ভাবে গড়ে তোলো প্রাপ্তি।তোমাকে এইটা ভুলে গেলে চলবেনা তুমি আয়ান চৌধুরীর ওয়াইফ। আয়ান এতো সহজে ভেঙে পড়েনা।তেমনি তুমিও ভেঙে পড়বেনা।আমি সারা জীবন তোমার পাশে ছায়ার মতো থাকবো না তোমাকে সামলানোর জন্য।তোমাকে পরিস্থিতির সাথে সামলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।কথা গুলো বলে প্রাপ্তিকে ছেড়ে দিয়ে চলো ফ্রেশ হবে।কোনো ভুলভ্রান্তি মনে রাখবেনা।সারা দিনে চেহারাটার কি অবস্থা করেছো আয়নাটা একবার দেখো।কথা গুলো বলতে বলতে প্রাপ্তিকে ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও আমি দেখে আসছি বাহিরের কি অবস্থা। বিকাল থেকে সবাই তোমাকে নিয়ে অনেক চিন্তায় আছে।
আয়ান রুম থেকে বাহিরে গিয়ে দেখে সবাই এখনো ড্রইংরুমেই বসে আছে।আয়ান মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে কি ব্যাপার সবাই এইভাবে বসে আছো।অরণী! নীরাকে এখনো বসিয়ে রেখেছো কেনো?নীরা আর ভাইয়াকে ওদের রুমে দিয়ে আসো সবাই।আয়ান এমন ভাবে কথা বলছে জেনো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

অরণী -ভাইয়া আমি অনেক আগেই বলেছি।কিন্তু সবাই বলছে আপু আসুক তারপর।নীরা ভাবী ও তাই বলছে।আপুকে না দেখে রুমে যাবেনা। প্রাপ্তি অনেকক্ষণ পরে গোসল করে ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে খাটের উপর এসে বসলো।আয়ানের কথা গুলো তার কানে বাজছে, আজ নিজেকে খুব ভাগ্যে বাণ মনে হচ্ছে আয়ানকে জীবনে পেয়ে।আয়ানের এই ভালোবাসা, বিশ্বাস আমার প্রতি সারাজীবন থাকবে তো? নাহ্ এইটা আমি কি ভাবছি ও আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারেনা। কথা গুলো ভাবতেই নীরা দরজায় এসে দাঁড়িয়ে, আপু আসবো?
প্রাপ্তি দরজায় নীরাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, নীরা পারমিশন নেওয়ার কি আছে? ভিতরে আসো।এই বাড়িটা এখন থেকে তোমারও আমারা শুধু দুই দিনের অতিথি। তাই পারমিশন নিতে হবেনা।
নীরা রুমের ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে, আপু তুমি তো দেখছি আমাকে এখনি পর করে দিতেছো।যাইহোক আগে এইটা বলো তোমার শরীর এখন কেমন আছে?

প্রাপ্তি -নিছের দিকে তাকিয়ে, হুম আমি ঠিক আছি।তোমাকে এখনো এতো রাত পর্যন্ত বসিয়ে কে রেখেছে?

নীরা -আপু আমি আপনাকে দেখবো বলেই রুমে যাইনি।
আয়ান এসে রুমে ঢুকেই কি ব্যাপার নীরা আপুকে দেখতে চেয়েছিলে এখন দেখে তাড়াতাড়ি রুমে যাও বলেই আয়ান তোয়ালেটা নিয়ে ওয়াশ রুমে যাবে এমন সময় নীরা প্রাপ্তির পাশে গিয়ে বসে আচ্ছা আপু তুমি জয় কে দেখে এইভাবে চিৎকার দিলে কেনো? তুমি কি ওকে আগে থেকে চিনতে? কথাটা শুনেই আয়ান থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো।প্রাপ্তি আয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।আয়ান নীরার কাছে এগিয়ে এসে নীরা ওই ছেলেটা তোমার কি হয়?
নীরা উঠে দাঁড়িয়ে ভাইয়া ও তো আমার কাজিন হয়।
আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রাপ্তি অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে।প্রাপ্তির কাছে এগিয়ে গিয়ে বালিশটা ঠিক করে দিয়ে প্রাপ্তিকে শুয়ে কাঁথাটা গায়ের উপর দিতে দিতে নীরা তুমি এখন যাও।তোমার সাথে আমি সকালে কথা বলবো।

নীরা -ভাইয়া আমি কি কোনো অন্যায় করে ফেলছি?
আয়ান -নীরা! তোমার আপু একটু অসুস্থ এখন তোমার সাথে ও কোনো কথাই বলবে না।সকালে দেখবে ও তোমার সাথে ঠিক কথা বলবে।অরণী! অরণী! কোথায় তুমি?

আয়ানের ডাকে অরণী এসে ভাইয়া কিছু বলবে?
আয়ান -নীরাকে নিয়ে ওর রুমে দিয়ে আসো।যাও নীরা অরণীর সাথে যাও।
নীরাকে সুমি আর অরণী রুমে দিয়ে গেলো।
আসিফ অভ্র আর আকাশের সাথেই বসে কথা বলছে।সুমি এসে আসিফকে বললো,নীরাকে রুমে দিয়ে আসছি তুমি রুমে যাও।

আকাশ -আসিফ তাহলে শুভ কাজে আর দেরি করা ঠিক হবেনা।তুমি রুমে যাও ভাই।বলেই হাঁসতে শুরু করলো।আকাশের কথা শুনে আসিফ লাজ্জা পেয়েছে দেখে, অভ্র আসিফকে জোর করে উঠিয়ে রুমের দরজার সামনে এনে ভাই বাকী টা আপনার জন্য রেখে গেলাম।অভ্র আসিফকে দিয়েই হাঁসতে হাঁসতে এসে আকাশের পাশে বসলো।অভ্র ফোনের এসএমএস এর শব্দ শুনে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে আয়ান তাকে এসএমএস করেছে ছাদে যাওয়ার জন্য, সেইখানে অভ্রর জন্য অপেক্ষা করছে।অভ্র সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ছাদে গিয়ে দেখে আয়ান ছাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে।অভ্র এসে
পিছনে দাঁড়িয়ে,আয়ান হঠাৎ এই সময় ছাদে? অভ্রর কথা শুনে আয়ান পিছনের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো।

অভ্র -প্রাপ্তির কি অবস্থা এখন? বিকেলবেলা আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ওর অবস্থা দেখে।তুই ওকে একা রেখে ছাদে আসা এখন একদম ঠিক হয়নি।তোর যদি কিছু বলার থাকে সেটা কালকেও তো বলতে পারতি।

আয়ান -আমার হাতে এতো সময় নেই।তোকে যেই কাজের জন্য ডেকেছি সেটা মন দিয়ে শুন,আজ যেই ছেলেকে দেখে প্রাপ্তি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো তার নাম জয়।

অভ্র ভ্রু কুঁচকে আয়ানের দিকে তাকিয়ে, তুই কি করে জানলি?

আয়ান -নীরা বলেছে।ওই ছেলেটা নীরার কাজিন হয়।তুই এক কাজ কর ওই ছেলের বাড়িতে খবর নে কে কে আছে।ছেলেটা কোথায় কি করে।সব ডিটেল আমার চাই আর সেটা অল্প সময়ের মধ্যেই।

অভ্র -হুম।সময় মতো পেয়ে যাবি।আগে এই বাড়ির ভেজাল মিটে যাক।

আয়ান -ওকে।আর এই কথা গুলো শুধু তোর আর আমার ভিতরে থাকবে।চল এইবার নিছে যাই।
আয়ান এসে দেখে প্রাপ্তি ঘুমাচ্ছে।প্রাপ্তির মাথার উপরে হাত রেখে, বিড়বিড় করে বলছে,আল্লা যা করে ভালোর জন্যই করে প্রাপ্তি! ওই ছেলের তোমার সাথে দেখা হয়ে ভালোই হয়েছে।কারণ ওদের শাস্তিটা যে পাওনা রয়ে গেছে।আর সে শাস্তি দিবে তোমার আয়ান।যে তোমাকে তার ছেয়ে বেশি তোমায় ভালোবাসে,বিশ্বাস করে।ওদের সবাইকে আমি এমন শাস্তি দিবো যে কোনো মেয়ের দিকে তাকালে আগে আয়ান চৌধুরীর কথা মনে করবে।আয়ান লাইট অফ করে দিয়ে প্রাপ্তিকে নিজের কাছে টেনে বুকের উপরে রেখে শুয়ে পড়লো।
প্রাপ্তির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে কখন যে নিজেও ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নেই।

সকাল বেলা সুমি আর ঝিনুক ফ্রেশ হয়ে এসে ড্রইংরুমে বসেছে।রুমকি এসে সুমির কোলে উঠে বসেছে দেখে ঝিনুক কড়া গলায় রুমকিকে বললো, রুমকি তোমার মা মনি মাত্র এসে বসলো আর তুমি আসতে না আসতেই কোলে উঠে গেলে? তুমি এখন বড় হয়েছো, নামো কি হলো নামো বলছি!

সুমি -আপু থাকনা! কে বলেছে রুমকি বড় হয়েছে আমার কাছেতো আমার ছোটো আম্মুটাকে এখনো ছোটোই আছে।(রুমকির গালে একটা চুমু দিয়ে)

ঝিনুক -ভাবী তুমি ওকে আশকারা দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছো।আর তুলো না পরে নামাতে পারবেনা।

নিলিমা বেগম আর অরণী রান্নাঘরে সবার জন্য নাস্তা রেডি করছে।নীরা উঠে এসে ড্রইংরুমে সুমি আর ঝিনুককে দেখে মুচকি হাঁসি দিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেলো।
নীরাকে দেখে অরণী বললো কি ব্যাপার ভাবী এতো তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেলো?
নীরা এই কথার আনসার না দিয়ে আপু আমি তোমাদের সাথে হেল্প করি?
নিলিমা বেগম নীরা কথায় মুচকি হেঁসে একটু এগিয়ে এসে, একদম না! তুমি মাত্র কাল এই বাড়িতে এসেছো কয়েক দিন যাক তারপর না হয় আস্তে আস্তে সব শিখিয়ে দিবো।অরণী এসে চায়ের ট্রে টা হাতে দিয়ে তোমাকে আর কোনো কাজ করতে হবেনা শুধু চা টা সবাইকে দিয়ে আসো।
নীরা হাতে চায়ের ট্রে টা নিয়ে, আপু এইখানে চায়ের সাথে যে কফি ওইটা কাকে দিবো?

অরণী -ওহ তোমাকে তো বলতে ভুলে গেছি, ওই কফিটা আয়ান ভাইয়াকে দিও।
নীরা সবাইকে চা দিয়ে নিজের রুমে আসিফের জন্য চা নিয়ে আসলো।
আসিফ ফ্রেশ হয়ে এসে নীরার থেকে চা নিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চা কি তুমি বানিয়েছ?

নীরা -না! শুধু হাতে করে আপনার জন্য নিয়ে আসলাম।চা মা বানিয়েছে।

আসিফ -সেটা আমি ভালো করেই জানি চা আমার মা বানিয়েছে,দেখলাম আর কি তুমি কি বলো।

নীরা -ওওও আচ্ছা।তোহঃ আপনার ঘুম কেমন হলো?এতো ঘুম কাতুরী মানুষ আমি জন্মেও দেখিনি।

আসিফ -হুম বেশ ভালো।কিন্তু এই প্রশ্নটা কেনো?

নীরা -কেনো সকাল হতেই ভুলে গেলেন? মানুষ বাসর রাত নিয়ে নাকি অনেক সপ্ন দেখে, কিন্তু আপনি,,,,,,,আচ্ছা আপনি সারাজীবন ঘুম সপ্ন দেখে আসছিলেন নাকি?তাই মনে হয় কাল রাতে কুমড়ো পটাশের মতো পড়ে ঘুমিয়েছেন।
নীরা কথা শুনে আসিফ অট্র হাঁসিতে গড়াগড়ি পড়তে লাগল।নিজের হাঁসিকে একটু কন্ট্রোল করে,আছা কুমড়োপটাশ টা কে? তোমার নানা না দাদা?
আসিফের কথা শুনে নীরা এক গাল অভিমান নিয়ে, আপনি হাঁসছেন?আপনি জানেন? আপনার সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে আমি আপনাকে নিয়ে কতো ভেবেছি।ভেবেছিলাম সারারাত বসে আপনার সাথে গল্প করবো।কিন্তু আপনি পড়ে পড়ে ঘুমালেন।

আসিফ -সরি নীরা! ওকে তোমার সাথে আজ সারারাত বসে গল্প করবো।এইবার তো একটু হাঁসো।

আয়ান কফি হাতে করে রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে সবাই ড্রইংরুমে বসে চা খাচ্ছে।নিহাদ আয়ানকে দেখে, কি শালা বাবু তোমার বউয়ের কি অবস্থা?

আয়ান বসতে বসতে একদম পারফেক্ট।

আজাদ সাহেব এসে সিয়ামকে বললো, সিয়াম! নতুন বউদের বাড়ি থেকে লোক জন কয়টার সময় আসবে খবর নিয়ে দেখো।অবশ্য যাদের আয়ান রান্নার জন্য এনেছে তাদের রান্না ঘনিয়ে আসছে।

আয়ান এদিক সেদিক তাকিয়ে রেশী কোথায়? এই বাড়িতে আশার পর দেখছি দূরে দূরে সরে থাকে। ওর কি মন খারাপ নাকি অন্য কিছু তাও তো বলছে না।রেশী! রেশী! বলে ডাকতেই রেশী ড্রইংরুমে এসে ভাইয়া আমাকে ডেকেছেন?
এইদিকে নিহাদের চোখে চোখ পড়তেই রেশী নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।

আয়ান -রেশী! কি হয়েছে তোর? এইরকম দূরে দূরে সরে থাকিস কেনো?

নিহাদ আয়ানের কথা শেষ হতেই, আয়ান! যদি বলি আমার জন্য মনে হয় ও দূরে দূরে থাকে।হয়তো আমার থেকে আড়াল হওয়ার জন্য।
নিহাদের কথা শুনে আয়ান অবাক হয়ে নিহাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে রেশীর দিকে তাকালো।

চলবে,,,,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩৪

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩৪

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তিদের সবাই নীরাদের বাড়িতে পৌঁছালো।গাড়ি থেকে নেমে মেয়েরা সবাই বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো।নীরাকে আগেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে।নীরার মা আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে।প্রাপ্তি নীরার রুমে আসতেই নীরা সালাম দিয়ে জড়িয়ে ধরে, আপু কেমন আছেন?

প্রাপ্তি -আমি তো ভালো।তোমার অবস্থা কী?
অরণী এসে, বাহ্ বড় ননদ কে পেয়ে আমার একটু খবরও নিলো না।আমি কিন্তু রাগ করতেছি।নীরা মুচকি হেঁসে না আপু আমি তো জিজ্ঞাস করতে ছিলাম বড় আপুকে এর আগেই তো আপনি চলে আসলেন।

অরণী -হুম আমাকে আর বুজাতে হবে না।তবে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।আর ক্রেডিট টা কিন্তু আয়ান ভাইয়ার।

প্রাপ্তি-চুপ করতো।নীরা! আসো তোমাকে সুমির সামনে এনে ইনি হচ্ছে তোমার আয়ান ভাইয়ার বড় ভাবী, ইনি বড় আপু ঝিনুক।এই হচ্ছে রেশী তোমার আরেকটা ছোটো বোন।প্রাপ্তি নীরাকে অনেকের সাথেই পরিচয় করিয়ে দিলো।
আয়ান ভিতরে এসে রেশীকে দেখতে পেয়ে, রেশী তোর ভাবী কোথায়?

রেশী -ভাইয়া ভাবীতো নীরা আপুর রুমে আছে।
আয়ান নীরার দরজার সামনে গিয়ে দেখে প্রাপ্তি সবার সাথেই কথা বলছে।আমি কি ভিতরে আসতে পারি?
অরণী দরজার দিকে তাকিয়ে কেনো আসতে চাইছো তা তো বুজি।নীরাকে দেখতে এসে নিজের মানুষকে দেখে যাওয়ার আরকি।
আয়ান ভিতরে ঢুকে অরণী তুমি বলো নিজের মানুষকে না দেখলে কাকে দেখবো।তবে আমি সত্যিই নীরাকে দেখতে আসছি।নীরাদের ফ্যামিলির অনেকেই এবং তার কাজিনরা জিজ্ঞাস করতে লাগলো ইনি কে?নীরা তার কাজিনদের বিড়বিড় করে বললো,ওই যে বড় আপু দাঁড়িয়ে আছে ওনার হ্যাজবেন্ড।
নীরার কাজিন অবাক হয়ে কি বলিস দেখে তো মনে হচ্ছে এখনো বিয়েই করেনি।দেখলে তো যে কোনো মেয়েই ক্রাশ খাবে।

নীরা -তুই একটু চুপ কর।আপু শুনলে না তোর বারো টা বাজাবে।

আয়ান -নীরাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে কি বলো প্রাপ্তি।আসিফ ভাইয়া তো আজ চোখ ফিরাতেই পারবে না।কথাটা বলে শেষ করতেই আকাশ, নিহাদ আরো কয়েক জন মুরব্বি নীরার রুমে এসেছে বিয়ে পড়ানোর জন্য।
বিয়ে পড়িয়ে শেষ করে সবাই বাহিরে চলে গেলো।নিহাদ আয়ানকে প্রাপ্তির সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, ভাই! তুই একটা জিনিশ। বউকে তোর চোখের আড়াল হতেই দিবিনা।বউয়ের গন্ধ শুঁকে ঠিকি জায়গা মতো চলে এসেছিস।যাই আমার বউটা কোথায় একটু খুঁজে দেখি।বলেই নিহাদ রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
বিয়ের সব আয়োজন শেষ করে আসিফদের বাড়িতে ফিরার ফালা।নীরাকে বাসা থেকে বের হতেই প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে গেলো।
আসিফ প্রাপ্তিকে দাঁড়াতে দেখে, প্রাপ্তি! দাঁড়িয়ে পড়লি কেনো? আয়ানের জন্য নাকি? আয়ান তো একটু আগেই বাহিরে গেলো।

প্রাপ্তি- ভাইয়া! আমার ফোনটা মনে হয় নীরার রুমে রেখে আসছি। তোমরা এগিয়ে যাও আমি আসছি।

প্রাপ্তি নীরার রুমে গিয়ে ফোনটা নিয়ে আসতেই একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে ফোনটা নিচে পড়ে গেলো।ছেলেটার মুখ দেখার আগেই ছেলেটা সরি বলে নিচের দিক থেকে ফোনটা নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রাপ্তির হাতে দিতেই প্রাপ্তি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে একটা চিৎকার দিয়ে হাঁপাতে শুরু করলো।আসিফ এগিয়ে এসে প্রাপ্তিকে ধরে, প্রাপ্তি! কি হয়েছে তোর? এই রকম চিৎকার দিয়েছিস কেনো। কেউ আয়ান কে ডাকো তো।
ছেলেটা ভয়ে পেয়ে কিছু না বলেই এইখান থেকে সরে গেলো।আসিফ প্রাপ্তির অবস্থা দেখে ছেলেটার দিকে খেয়াল করেনি।আয়ান এসে প্রাপ্তিকে নিজের কাছে নিয়ে ভাইয়া প্রাপ্তির কি হয়েছে?

আসিফ -আয়ান আমিও তো বুজতে পারছিনা।একটা ছেলেকে দেখেই এইরকম করছে (ছেলেটা কে দেখতে না পেয়ে)আরে এই ছেলেটা কোথায় গেলো? এখানেই তো ছিলো।

আয়ান -ভাইয়া আপনার বাড়িতে যান।আমি ওকে নিয়ে হাসপাতাল যাচ্ছি।বলেই প্রাপ্তিকে কোলে তুলে নিলো।

আসিফ -চলো আমিও যাচ্ছি।

আয়ান -না ভাইয়া আপনারা যান আমি ওকে ডাক্তার দেখিয়েই চলে আসছি।বেশীকিছু হলে আপনাদের জানাবো।

অভ্র এসে, আয়ান! চল আমি ও তোদের সাথে যাচ্ছি। সাবাই বাড়ির দিকে রওনা হলো।আয়ান প্রাপ্তি আর অভ্র হাসপাতালের দিকে গেলো।
প্রাপ্তি কোনো কথা বলছেনা চোখ দিয়ে গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে।তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো কথা বলতে পারছেনা।
ডাক্তার প্রাপ্তিকে ভালো করে দেখে একটা ইনজেকশন দিয়ে আয়ানকে বললো,আপাদত ওনাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছি।এখন ঘুমিয়ে পড়লে ছয় ঘন্টা পর ঘুম ভাঙবে। এর মাঝে আপনারা বসে অপেক্ষা করুন।

আয়ান -কিন্তু আপনি বললেন না তো ওর কি থেকে এই প্রবলেম টা হয়েছে।

ডাক্তার বসতে বসতে আয়ান কে বললো,আপনার কথা শুনে যতোটুকু বুজলাম,ওনি এমন কিছু দেখেছে যা দেখে ওনি সহ্য করতে পারেননি।আর আপনি বলেছেন একটা ছেলেকে দেখার পর এই অবস্থা,এর থেকে আমার যতোটুকু ধারনা ওই ছেলের সাথে ওনার এমন কোনো কানেক্ট আছে তাই ওই ছেলেকে দেখে ওনার পুরোনো কিছু মনে পড়ে গেছে।তাই ওই আঘাতটা সহ্য করতে না পেরেই এই অবস্থা হয়েছে।
ডাক্তারের কথা শুনেই আয়ান চুপ করে আছে।হয়তো বুজার চেষ্টা করছে ওই ছেলেটা কে হতে পারে।
আয়ান অভ্রকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে নিজে হাসপাতালে বসে অপেক্ষা করছে আর ভাবছে ছেলেটা কে? এই ছেলের সাথে প্রাপ্তির কি এমন সম্পর্ক হতে পারে?নাকি এই ছেলে প্রাপ্তির সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে কোনো যোগ আছে?
আমার কোনো কিছুই মাথায় ধরছেনা।প্রাপ্তি ঘুম থেকে উঠুক তার পর না হয় দেখা যাবে।
ছয় ঘন্টা পর প্রাপ্তির ঘুম ভাঙল কিন্তু কোনো কথা বলছেনা।আয়ানও কিছু জিজ্ঞাস করেনি।হাসপাতাল থেকে প্রাপ্তিকে বাড়ি নিয়ে আসল আয়ান, কাউকে কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো প্রাপ্তি।সারাটা পথ আসতে আসতে চুপ হয়ে ছিলো।শুধু চোখের পানি গুলোই ঝরেছে।আয়ানও একটা কথাও জিজ্ঞাস করেনি।আয়ান ড্রইংরুমে সোফায় এসে বসলো।নীরাকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত।আয়ানকে এসে বসতে দেখে আসিফ এসে, আয়ান! ডাক্তার কি বলেছে? প্রাপ্তির হঠাৎ করে কি হয়েছে?আয়ান কপালে হাত দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে আছে।

আস্তে আস্তে সবাই এসে আয়ানের চারপাশে জড়ো হলো কিন্তু আয়ান খেয়াল করিনি।সুমি আয়ানের কাঁধে হাত দিতেই আয়ান চমকে উঠে সুমির দিকে তাকালো।

সুমি-প্রাপ্তি দেখেছি কাউকে কিছু না বলেই রুমে চলে গেলো।কি হয়েছে ওর? আসিফও তোমায় জিজ্ঞাস করছে কোনো আনসার দিচ্ছো না।
আয়ান সুমির থেকে চোখ ফিরিয়ে দেখে সবাই জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আসিফ -কি হলো আয়ান,কথা বলছো না কেনো?
আয়ান ভাবছে এইখানে কিছু বলা যাবেনা।সবার সামনে এইভাবে কিছু বললে আমার প্রাপ্তিকেই ছোটো করা হবে।(আসিফের দিকে তাকিয়ে)ভাইয়া!মায়ের রুমে চলুন। আপনার সাথে আমি আলাদা ভাবে কথা বলতে চাই।

আসিফ -ঠিক আছে চলো।
আসিফ আর আয়ান নিলিমা বেগমের রুমে এসে বসলো।

আয়ান অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে, ভাইয়া! আজ প্রাপ্তি যে ছেলেকে দেখে চিৎকার দিয়েছিলো আপনি ছেলেটাকে দেখেছেন?

আসিফ -প্রাপ্তির অবস্থা দেখে তখন তো খেয়াল করিনি।কিন্তু পরে দেখি ছেলেটা ওইখানে নেই।কিন্ত আয়ান! কেনো ওই ছেলেকে খুঁজতেছো?

আয়ান- ওই ছেলেকে প্রাপ্তি মনে হয় ছিনে।ওই ছেলের সাথে প্রাপ্তির এমন কোনো যোগ আছে যা দেখে প্রাপ্তির সহ্য হয়নি। আমার মনে হয় প্রাপ্তির সাথে যে ঘটনা ঘটেছিলো ওই ছেলের ওই ঘনার সাথে কোনো না কোনো যোগ আছে।আপনি এখন এই ব্যাপারে কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।আমি খবর নিয়ে দেখছি।
বলেই আয়ান রুম থেকে বেরিয়ে এলো প্রাপ্তির কাছে যাবে বলে।প্রাপ্তি রুমে গিয়ে দেখে পুরোটা রুম অন্ধকার হয়ে আছে।আয়ান লাইট ধরিয়ে দেখে প্রাপ্তি এক কোনায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে।
আয়ানকে লাইট ধরাতে দেখে প্রাপ্তি চোখমুখ কুঁচকে আয়ানের দিকে তাকালো।
আয়ান এসে প্রাপ্তির পাশে বসলো।প্রাপ্তির এক হাতকে নিজের হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে শক্ত করে ধরে,আমি তোমাকে জিজ্ঞাস করবো না ছেলেটা কে? বলবোনা ছেলেটাকে দেখে তুমি কেনো চিৎকার দিয়েছো।শুধু এইটুকু বলবো ছেলেটাকে কি শাস্তি হলে তুমি খুশি হবে?কথাটা শুনে প্রাপ্তি নিজের টলমল করা দুটো চোখ নিয়ে আয়ানের চোখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
সারাটা পৃথিবী এক দিকে আর আমার কাছে তুমি আরেক দিকে।প্রাপ্তি তোমার অতীত তোমার সামনে আসবেই তাই বলে তুমি ভেঙে পড়বে? তুমি যতো ভেঙে পড়বে এই সমজের লোক গুলো তোমাকে দেখে মজা নিবে।কেউ তোমার ভালো চাইতে আসবে না। তারা চাইবে না তুমি এই সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁছো ।এই সমাজের সব লোক তোমাকে এক চোখে দেখবেনা।নিজের মনকে শক্ত করে এই সমাজে বাঁছতে শিখো।আমি তোমার পাশে আছি আর সারাজীবন থাকবোও। তোমার প্রতি আমার কখনো কোনো ভালবাসার কমতি হবেনা।কথা গুলো বলেই আয়ানের চোখে পানি টলমল করছে।কিন্তু প্রাপ্তির সামনে এই চোখের পানি গুলো আমায় যে লুকাতে হবে,তাই উঠে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। প্রাপ্তি হঠাৎ করে এসে আয়ানকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো তুমিই আমার জীবনের একমাত্র মানুষ যে আমাকে নিস্বার্থ ভাবে ভালোবাসে।

চলবে,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩৩

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

অভ্র -ঠিক আছে চলো আমি সহ যাচ্ছি।
রেশী আর কথা বাড়ালো না।নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে শুরু করলো।

_দুজনে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে অভ্র বার বার রেশীর দিকে তাকাচ্ছে।রেশীও আড় চোখে তাকিয়ে অভ্রকে দেখছে।

অভ্র-রেশী! তুমি কি কাউকে কখনো ভালোবেসেছো?মানে তোমার কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে?
রেশী নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে না বুজালো।

অভ্র -কি বলো তোমার মতো এতো সুন্দরী একটা মেয়ের বয়ফ্রেন্ড নেই এইটা তো আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।
কথা বলতে বলতে আবার দুজনে হাঁটতে লাগলো।

আয়ান -কি হলো এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেনো যেতে বলছিতো।
প্রাপ্তি আয়ানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দরজার দিকে একটু এগিয়ে আবার থমকে দাঁড়ালো। পিছনে ফিরে দেখে আয়ান মন খারাপ করে অন্য দিকে ফিরে আছে।প্রাপ্তি মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে আবার দৌড়ে এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।আয়ান চমকে উঠে তাকিয়ে দেখে প্রাপ্তি চোখ দুটো বন্ধ করে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।চোখ বন্ধ করা ওই মায়াবী মুখটা দেখলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।ইচ্ছে করবে তাকে শত জন্মে ভালোবাসতে।ইচ্ছে করবে ওর মতো মানুষটাকেই সারাজীবন পাশে পেতে।ওকে দেখে নিজের চোখের পলক ফেলতে ইচ্ছে করেনা।একটা পলক ফেললেই মনে হবে শত যুগ এই মায়াবী মুখটা দেখা হবে না।

আয়ান -(আস্তে আস্তে নরম স্বরে)প্রাপ্তি! এই প্রাপ্তি! কি হয়েছে তোমার?

প্রাপ্তি আয়ানের বুক থেকে মাথাটা উঠিয়ে আয়ানের মুখে আঙুল দিয়ে চুপ তাকতে ইশারা করলো।
আয়ান প্রাপ্তির হাতটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে নিচে নামালো।আস্তে আস্তে নিজের ঠোঁট দুটো প্রাপ্তির দিকে এগিয়ে আনতে প্রাপ্তি চোখ বন্ধ করে ফেললো।আয়ান ঠোঁট প্রাপ্তির ঠোঁটের সাথে ছোঁয়া লাগাতেই
অভ্র এসে আয়ান তুই,,,,,,,,,
কথাটা বলতেই আয়ান চমকে উঠে প্রাপ্তিকে ছেড়ে দিয়ে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে, অভ্র!তুই এইসময়?
অভ্র-সরি সরি আমি কিছু দেখিনি।
আয়ান রেশীর দিকে তাকাতেই রেশী রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
প্রাপ্তিও লজ্জা পেয়ে কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ছাদে চলে গেলো।
অভ্রর প্রতি আয়ানের খুব রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছু বলতেও পাচ্ছেনা।অনেক ধৈর্যের পরিক্ষা দিয়ে প্রাপ্তির এতো কাছে গেলাম আর অভ্র এসে সব ভেস্তে দিলো।

অভ্র -সরি রে,,,আমি সত্যি তোদের এইভাবে ডিস্টার্ব করতে চাইনি।উপরের সবাই তোদেরকে না দেখতে পেয়ে ডাকছে।সরি বন্ধু এইরকম সময়ে ডিস্টার্ব করার জন্য।

আয়ান-(নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করে)নো প্রবলেম! রেশীকে দেখে একটু খারাপ লাগছে।

অভ্র -আরে রেশীকি এখনো ছোটো নাকি? ও সব বুজে।হয়তো শান্ত ভাবখানি নিয়ে থাকে।
আয়ান -তুই বুজচ্ছিস না কেনো।ও আমার ছোটো বোনের মতোই । কখনো এইটা ভাবিনি ওকে আমি রাস্তার পাশে পেয়েছি।তাই একটু খারাপ লাগছে।

অভ্র -আচ্ছা আয়ান তুই যখন ওকে পেয়েছিস ও কি তখন বিয়ের পোষাকে ছিলো তাইনা?

আয়ান -হুম। চল ছাদে যাই।

অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই নিচে নেমে এলো।নিলিমা বেগম সবাইকে ঘুমানো ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এই বাড়িতে এতো গেস্ট সবাইকে তো আর আলাদা আলাদা রুম দেওয়া যায় না।প্রাপ্তি নিচে এসে নিলিমা বেগমকে নিজের রুমটা আকাশদের আর অরণীর রুম টা ঝিকুকদের দিতে বললো।সুমি এসে প্রাপ্তির কথা শুনে প্রাপ্তি! এক দিন না ঘুমালে কিচ্ছু হবে না এককাজ করো যে যে আড্ডা দিতে চায় তাদের সবাইকে নিয়ে ছাদে চলো আমরা সবাই আড্ডা দিবো।

অরণী -ভাবী তুমি ঠিকি বলছো।

ঠিক আছে তোমরা সবাই যাও আমি তোমাদের সবাইকে কফি বানিয়ে দিয়ে আসবো।

প্রাপ্তি-আম্মু তুমি ঘুমাতে যাও! আমি সবার জন্য কফি বানিয়ে নিবো।

সুমি -হ্যাঁ আন্টি আমিও প্রাপ্তিকে হেল্প করবো।
নিলিমা বেগম মুচকি হেঁসে আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
সবাই উপরে চলে গেলো, রেশীকে সোফায় বসে থাকতে দেখে প্রাপ্তি এসে, রেশী! তুই যাবি না।প্রাপ্তির কথাটা শুনে রেশী তখনকার ঘটনার জন্য নিজেকে খুব ছোটো মনে হচ্ছে।চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রাপ্তি রেশীর সাথে বসে নিচের দিক থেকে নিজের দিকে রেশীর মুখটা ফিরিয়ে, তুই তখনকার ঘটনার জন্য লজ্জা পাচ্ছিস? আমি খেয়াল করলাম এর পর থেকে তুই আমার আর তোর ভাইয়ার থেকে দূরে দূরে থাকছিস।রেশী এইখানে তো তোর কোনো দোষ নেই।মাঝে মাঝে আমরা না চাইতেও এমন ঘটনা ঘটে আমাদের সাথে।এখন চল আমাদের সাথে আড্ডা দিবি।

রেশী -ভাবী তুমি যাও আমি আসছি।

প্রাপ্তি -ওকে আমি যাচ্ছি।তুই তাড়াতাড়ি আয়।কথাটা বলেই প্রাপ্তি উঠে চলে গেলো।
রেশী বসে বসে নিহাদের কথা ভাবছে।সেইদিন ওনি আমাকে দেখতে এসেছিলেন। অনেক কথাও বলেছিলেন আমার সাথে।কিন্তু যদি সব আয়ান ভাইয়াকে বলে ভাইয়া আমায় কি ভাববে।অবশ্য ভাইয়াকে তো আমি সবি বলেছিলাম।আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।তারপরও কি আমায় ভুল বুজবে।আমার কি তাহলে এখন এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমি কোথায় যাবো?আমার তো কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
অভ্র চেঞ্জ করে ছাদে যাবে তখনি দেখে রেশী বসে আছে।রেশীর কাছে একটু এগিয়ে এসে, রেশী তুমি উপরে যাবেনা?বসে বসে কি ভাবছো?
অভ্রর কথা শুন রেশী চমকে উঠে, হ্যাঁ!

অভ্র -তুমি কি কিছু ভাবছো নাকি?
কথাটা শুনে রেশী অভ্রর দিকে তাকালো।

অভ্র-না! তুমি চুপচাপ বসে আছো দেখেই কথাটা বললাম।আচ্ছা চলো ছাদে যাই।
রেশী অভ্রর পিছন পিছন ছাদে গেলো।
আয়ান রেশীকে দেখে অন্য দিকে ফিরে আছে।প্রাপ্তি আয়ানকে ইশারা করলো রেশীর সাথে কথা বলার জন্য।সুমি অভ্র আর রেশীকে একসাথে দেখে, আয়ান! একটা জিনিস খেয়াল করেছিস রেশী আর অভ্রকে কিন্তু খারাপ লাগছেনা।দেখ দুজনকে কি সুন্দর মানিয়েছে।কথাটা শুনেই রেশী অবাক হয়ে অভ্রর দিকে তাকালো।

সুমি -রেশী তুমি কি আমার কথায় রাগ করেছো?
রেশী কিছু বলছেনা অভ্রর দিকেই একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।অভ্রও রেশীর দিকে অসহায় মতো তাকিয়ে আছে আর ভাবছে আমি তো ছেয়েই ছিলাম তোমাকে আমার সারা জীবনের সাথী করে রাখতে।কিন্তু সেইদিন কি এমন হলো তুমি আমাকে অসহায়ের মতো ছেড়ে দিয়ে আসলে।যেইদিন আয়ানের বাসায় আমি তোমাকে দেখলাম সেইদিন আমার মতো অবাক কেউ হয়েছে কিনা কখনো আমি জানিনা।
আয়ান দুজনের দিকে তাকিয়ে, অভ্র তুই যে ভাবে তাকিয়ে আছিস মনে হচ্ছে ভাবী তোর সাথে সত্যিই রেশীকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।

আয়ানের কথা শুনে রেশীর থেকে চোখ ফিরিয়ে অভ্র কিছু না বলেই আকাশের সাথে গিয়ে বসলো।
সবাই মিলে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে সকাল হয়ে গেলো কেউ টেরি পেলোনা।সকাল বেলা সবাই নিচে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে বসলো।আসিফ রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই নিহাদ বললো আসিফ! আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকী এর মধ্যে যা খুশি করতে পারো,পরে আর পারবেনা।তখন মৃতদের মতোই থাকতে হবে চাইলেই নিজের ইচ্ছায় কিছু করতে পারবেনা।

ঝিনুক -(ঝাড়ি দিয়ে)এই তুমি কি বলতে চাইছো বলোতো? বিয়ের পর সবাই মৃত হয়ে যায়?

আকাশ -ঝিনুক! নিহাদ কিন্তু কথাটা খারাপ বলেনি।বিয়ের পর ছেলেদে সব কিছুই চেঞ্জ হয়ে যায়।নিজের ইচ্ছা মতো কিছু করা যায়না।

সুমি -আমি কিন্তু এইখানেই বসে আছি।আমি কি তোমাকে কোনো কিছু নিয়ে বারণ করেছি?এই প্রাপ্তি তুই করেছিস আয়ানকে কখনো?

আয়ান -সুইট হার্ট! প্রাপ্তি কিন্তু আমায় কোনো দিন কিছু বলেনি।আমি যেই ভাবে ইচ্ছে হয়েছে সেইভাবেই চলেছি।

প্রাপ্তি -ভাবী! আমি কি বারণ করবো বলো? নিজের ইচ্ছে মতো চললেও খারাপ কিছুতো করেনা।তাই আমার কখনো বারণ করতে হয়নি।শুধু চুপচাপ দেখেই যেতাম।

সবার কথা শুনে আসিফ বললো,এইতো দেখছি পুরোই ঝামেলা। প্রাপ্তি! তোরা কি জেনে শুনে আমাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছিস নাকি?

প্রাপ্তি -ভাইয়া তুই কি এখনো ছোটো বাচ্ছা? আজ তোর বিয়ে এখন তো একটু সিরিয়াস হও।

সিয়াম ফোনে কথা বলতে বলতে এসে এইযে সবাই নাস্তা করতে এসেতো ভালোই আড্ডা দিচ্ছেন! মেয়ের বাড়ি থেকে নিশান ফোন করেছে আমরা কখন রওনা দিবো?
কিন্তু আপনারা সবাই যে ভাবে আড্ডা দিচ্ছেন আজকে তো রওনা দিতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে।

আয়ান -সিয়াম কিন্তু ঠিক কথায় বলেছে।মেয়েদের তো আবার সাজতে সাজতে একদিন কাটিয়ে দেয়।

অরণী -ভাইয়া নিজের বউ সাজেনা বলে আমাদেরকে কথা গুলো বলছো তাইতো?

আকাশ -আচ্ছা সবাই যাও রেডি হয়ে নাও।সিয়াম কিন্তু সত্যি বলছে মেয়েদের বাড়িতে যেতে অনেক লেট হয়ে যাবে।

আকাশের কথা শুনে সবাই উঠে গেলো রেডি হওয়ার জন্য।

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩২

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩২

#Rabeya Sultana Nipa

 

__গাঁয়ে হলুদের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে।অভ্র আর আকাশ আসিফকে রেডি করিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে আসলো।সবাই রেডি হয়ে বেরিয়ে এলো। রেশীকে দেখে অভ্র হা করে তাকিয়ে আছে।আয়ান সবাইকে ড্রইংরুমে দেখতে পেয়ে প্রাপ্তিকে না দেখে, অরণী! তোমার আপু কই তাকে তো দেখছিনা? নিলিমা বেগম এসে এই মেয়েটা যে কি করছে আল্লাই ভালো জানে।

আয়ান- তোমরা সবাই ছাদে যাও আমি প্রাপ্তিকে নিয়ে আসছি বলেই আয়ান প্রাপ্তির রুমের দিকে এগুতেই প্রাপ্তি রুম থেকে বেরিয়ে এলো।প্রাপ্তিকে দেখে আয়ান হা করে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।তার মনের অপ্সরী তার চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।সবাইও কম অবাক হয়নি প্রাপ্তিকে দেখে।সুমি আয়ানকে এইভাবে থাকতে দেখে আয়ানের কাছে এসে, হা বন্ধ করো, না হলে মশা ঢুকে যাবে।
আয়ান লজ্জা পেয়ে মন না চাইলেও প্রাপ্তির দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলো।

নিলিমা বেগম -কিরে,,, প্রাপ্তি! এতো দেরী হলো কেন?

প্রাপ্তি -রেডি হতেও তো সময় লাগে তাইনা।তোমরা সবাই দাঁড়িয়ে আছো কেনো? চলো!

সবাই ছাদে চলে গেলো। নিহাদ বার বার অভ্র আর রেশীর দিকে তাকাচ্ছে।রেশী চুপচাপ হয়ে অরণীর সাথে বসে আছে।অভ্র আয়ানের সাথে বিভিন্ন কাজে হেল্প করছে।সবাই একে একে আসিফকে হলুদ লাগাচ্ছে আর মিষ্টি খাওয়াচ্ছে।আজাদ সাহেব আয়ান আর অভ্রকে ডেকে নিয়ে যা যা নিয়মনীতি আছে সব কিছু তাড়াতাড়ি শেষ করবে।রাত যেনো বেশি না হয়।

অভ্র -আংকেল আপনি চিন্তা করবেন না। আমরাতো আছিই।

ঝিনুক নিহাদের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে,ঝিনুক চুপ করে না থেকে,এই তোমার সমস্যা কোন জায়গায় বলোতো? আসার পর দেখছি গোয়েন্দাগিরি তে নাম লিখিয়েছো।তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি এইখানে আসিফের বিয়ের ইনজয় করতে আসোনি।এসেছো গোয়েন্দাগিরি করতে। চোখ গুলোকে একবার এই দিকে আরেকবার ওই দিকে করছো। সবাই কি ভাববে বলোতো?

নিহাদ -চুপ করবে? চোখ গুলো কোথায় নিয়ে থাকো সেটা বলো? ওইযে আয়ানের পাশের ছেলেটার দিকে তাকাও! ওকে চিনতে পারো কিনা দেখো?

ঝিনুক বিরক্তিকর ভাব নিয়ে তাকাতেই আশ্চর্য হয়ে, অভ্র!

নিহাদ -হুম অভ্র!

ঝিনুক – ও এইখানে কিভাবে? আমিতো কিছুই বুজতেছিনা।ওর সাথে তুমি কথা বলনি।দাঁড়াও আমি গিয়েই ওর সাথে কথা বলছি।কথাটা বলেই ঝিনুক উঠতেই নিহাদ হাত ধরে, বসো এই খানে।ওর সাথে আমার দেখা হয়েছে কিন্তু ও আয়ানের সামনে আমাকে না চিনার ভাব করছে।কিন্তু কেনো সেটাই বুজতে পারছিনা।

ঝিনুক -কিন্তু অভ্র এইখানে কার রিলেটিভ হয়? প্রাপ্তিদের?

নিহাদ -না! তোমার ছোটো ভাইয়ের।মানে আয়ানের বেষ্ট ফ্রেন্ড। আয়ানের হয়েই সে এই বাড়িতে।

ঝিনুক -তাহলে সমস্যা নেই! একজন আরেক জনের ফ্রেন্ড হতেই পারে।জীবনে চলার পথে কত মানুষ আসে আর যায়।তবে অভ্রকে অনেক দিন পরে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।ছেলেটার সহ্য শক্তি অনেক।ওর জায়গা অন্য কেউ থাকলে সেইদিনের অপমানে ভেঙে পড়তো। কিন্তু অভ্র নিজের জীবনকে নতুন ভাবে সাজিয়ে নিয়েছিলো। তবে মেয়েটা জানতেই পারলোনা মেয়েটা অভ্রকে বিয়ে না করে কত বড় ভুল করেছে।অভ্রর মতো এইরকম ছেলে কয়জনের ভাগ্যে জুটে।

নিহাদ -(একটু চুপ করে থেকে)আচ্ছা ঝিনুক আমি যদি বলি সেইদিনের মেয়েটা আজ এইখানেও আছে তুমি কি অবাক হবে?

ঝিনুক-(একটু জোর গলায়)কিহ্! অবাক হবোনা মানে?ওই মেয়েকে পেলে আমি আগে এইটা জিজ্ঞাস করতাম অভ্রর কোন দিকে কম আছে ? অভ্রকে কেনো সেইদিন সবার সামনে অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে?মানুষে সামনে হাঁসির পাত্র বানিয়েছে কেনো?সেইদিন অভ্রর মা বাবাকে কতোটা হেনস্থা হতে হয়েছে।কই মেয়েটা! আমাকে একবার দেখিয়ে দাওতো।আজকে মেয়েটা আমার সব প্রশ্নের আনসার দিতেই হবে।

নিহাদ-ঝিনুক! প্লিজ এখন চুপ করো।তুমি এখন কোনো ঝামেলা করোনা প্লিজ।ওদের বিয়েটা মিটে যাক তারপর না হয় এইসব নিয়ে কথা বলা যাবে।

ঝিনুক -তুমি আগে এইটা বলো মেয়েটা কে? আমি মেয়েটা কে দেখতে চাই।

নিহাদ -রেশী! আয়ানদের সাথে যে মেয়েটা থাকে সেই মেয়েটা।

ঝিনুক নিহাদের কথা শুনে অবাক হয়ে, কি বলো রেশী?আচ্ছা আয়ান কি এই মেয়ের ব্যাপারে সব জানে?

নিহাদ -সেটা তো জানি না।

আয়ান প্রাপ্তিকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো নিচে যাওয়ার জন্য।ইশারা করে আয়ান নিচে চলে গেলো।প্রাপ্তিও নিচে নিজের রুমে আসতেই দেখে আয়ান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোন টিপতেছে।আয়ানকে দেখে নিজের কোমরে হাত দিয়ে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে এখন তোমার ডাকার সময়? সবাই কি ভাববে বলো তো? সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে আমাকে এইখানে আসতে হয়েছে।
আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাঁসছে।প্রাপ্তির কথা শেষ হতেই আয়ান প্রাপ্তিকে হেছকা টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে এসে প্রাপ্তি কোমর জড়িয়ে ধরে মহারানী তুমি আমার জন্য সেজেছো কিন্তু আমার সামনেই আসছোনা।লজ্জা পাচ্ছো?

প্রাপ্তি -মোটেও না।লজ্জা পাওয়ার কি আছে?

আয়ান সেটাই তো। তাহলে দূরে দূরে থাকছো কেনো?

প্রাপ্তি কিছু না বলে চুপ করে আছে আর মনে মনে ভাবছে আয়ানকে কি করে যে বুজাই।

প্রাপ্তি -চলো না উপরে যাই। সবাই হয়তো আমাদের খুঁজছে।

আয়ান -পালাতে চাইছো তাই তো। ওকে যাও।

আকাশ এইপাশ ওপাশ তাকিয়ে, সুমি! আয়ান কোথায়?

সুমি-প্রাপ্তি ও তো দেখছি এইখানে নাই।হয়তো দেখো দুই জনে লুকিয়ে প্রেম করছে।রেশী! যাওতো ওদের কে ডেকে নিয়ে আসো।

রেশী মুচকি হাঁসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজিয়ে উঠে সিঁড়ির দিকে এগুতেই, অভ্র ও আসিফের কাছে যাচ্ছিলো এমন সময় রেশী অভ্রর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতেই অভ্র ধরে ফেললো।রেশী লজ্জা পেয়ে নিজেকে অভ্রর কাছ থেকে ছাড়িয়ে সরি ভাইয়া আমি দেখতে পাইনি।

অভ্র -আমার মনে হয় তুমি ইচ্ছে করেই আমার সাথে ধাক্কাটা খেয়েছো(হাঁসি চেপে রেখে)কি! ঠিক বলছিতো?

রেশী -(ভয়ে ভয়ে,) না না ভাইয়া বিশ্বাস করুন আমি আপনাকে একদম দেখতে পাইনি।আমি তো ভাইয়া আর ভাবীকে ডাকতে যাচ্ছিলাম।

অভ্র-তাই! তার মানে তুমি ভালোবাসার মাঝ খানে ডিস্টার্ব করতে যাচ্ছিলে?

রেশী -না ভাইয়া সত্যি বলছি আমি ইচ্ছে করে যাচ্ছি না।সুমি ভাবী আমাকে বললো তাদের ডেকে আনতে।

অভ্র -না তুমি মিথ্যা বলছো। ছিঃ রেশী এইটা কি তুমি ঠিক করছিলে।দুজন মানুষ একান্তে সময় কাটাচ্ছে আর তুমি,,,,,,, আমি ভাতেই পাচ্ছি না।(রেশীকে খেপানোর জন্য কথা গুলো বলেই অভ্র মিটমিট করে হাঁসতে থাকলো)

রেশী অভ্রর কথা শুনে নিজেকে খুব ছোটো মনে হচ্ছে।ওনি কেনো আমায় এইগুলো বলছে? আমি কি ইচ্ছে করে যাচ্ছিলাম নাকি।ওরাই তো আমাকে যেতে বললো।কেন ওনি বিশ্বাস করছেন না।কথা গুলো ভাবতেই রেশীর চোখের কোনে পানি এসে গেছে।
অভ্র -সেই দিন আমিও কান্না করেছিলাম।হয়তো এইকান্না আমি কাউকে দেখাতে পারিনি।তোমরা মেয়েরা যখন যেভাবে খুশি কাঁদতে পারে।কিন্তু আমরা ছেলেরা কখনোই কাঁদতে পারিনা।নিজেদের যন্ত্রণা গুলো নিজেদের মনের কঠোরেই রাখতে হয়। রেশী! কেনো সেইদিন আমাকে এতো কষ্ট দিলে?(সব কথা মাঝে এই কথা একটু জোরে মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো)

রেশি কথাটা শুনেই মুখটা উঠিয়ে অভ্রর দিকে তাকিয়ে, ভাইয়া আপনি কিছু বলছিলেন?

অভ্র (বিব্রতভাব নিয়ে)না তোমাকে না!কোথায় যাচ্ছিলে যাও।

রেশী -না আমি যাবো না।

অভ্র -ঠিক আছে চলো আমি সহ যাচ্ছি।
রেশী আর কথা বাড়ালো না।নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে শুরু করলো।

চলবে,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩১

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩১

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তির কথা শুনে অভ্র মুচকি হেঁসে আচ্ছা আমি কোন রুমে থাকবো সেটা দেখিয়ে দাও।

আসিফ -তুমি আমার সাথে আসো আমার পাশের রুমটাই তোমার।প্রাপ্তি আগেই ঠিক করে রেখেছে।
সিয়াম বাহিরে থেকে এসে অরণীকে ডাকছে। অরণী এসে, এতক্ষণ লাগে আসতে? বাহিরে বের হলে কি তোমার বাসায় আসার কথা মনে থাকেনা তাইনা?তোমার সাথে তো আয়ান ভাইয়াও থাকে কই ওনি তো বাহিরে গিয়ে ফালতু সময় কাটায় না।

সিয়াম -আস্তে কথা বলোনা, সবাই শুনলে কি ভাববে?

অরণী -শুনুক না।সবাই শুনলে যদি তোমার একটু উন্নতি হয় আরকি।

প্রাপ্তি আর নিলিমা বেগম এসে,

নিলিমা বেগম -কিরে, তুই সিয়ামের সাথে এইরকম চিল্লাচিল্লি করছিস কেনো? বাসায় অনকে গেস্ট তারা কি ভাববে?

অরণী -আম্মু তুমি এর মাঝে কথা বলোনা।

প্রাপ্তি -ঠিক আছে আমরা কথা বলবোনা।তোরা রুমে গিয়ে ঝগড়া কর মারামারি কর আমাদের কিছু যায় আসেনা।আর সিয়াম ভাইয়া! বউয়ে প্রতি একটু কেয়ার করতে শিখুন।

সিয়াম-আপু আপনি বলেন আমার কাজ থাকলে তো আমায় বাহিরে যেতেই হবে।কিন্তু অরণী শুধু শুধু আমায় বকা দিচ্ছে।

আয়ান এসে এই তোমরা সবাই পরে কথা বলো সিয়াম তুমি আমার সাথে আসো প্রাপ্তি তুমি যাবে? চল! মজার জিনিশ দেখাবো।

সবাই গিয়ে আসিফের রুমের দরজার সামনে গিয়ে,

আয়ান -চুপ করে সবাই শুনো।ভাইয়া নীরার সাথে কথা বলছে। আমরা সবাই গিয়ে একটু ডিস্টার্ব করে আসি।

সবাই রুমে ঢুকে,
আয়ান -ভাইয়া আপনি কি করছেন?
আসিফ সবাইকে দেখে, (তাড়াতাড়ি করে ফোন টা কান থেকে নামিয়ে) কই কিছু করছি না তো।

সিয়াম-ভাইয়া মনে হচ্ছে কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলেন?

আয়ান সিয়ামের দিকে তাকিয়ে, আরে সিয়াম! তুমি কি বলছো ভাইয়া তো কিছু করছিলোনা।সমস্যা নেই ভাইয়া আমরা এখন বসে আপনার সাথে আড্ডা দিবো।
আয়ানের কথা গুলো শুনে সবাই মিটমিট করে হাঁসছে।

আসিফ -হ্যাঁ সমস্যা নেই।

অভ্র ফ্রেশ হয়ে এসে আমিও কিন্তু আড্ডা দিতে চলে এলাম তোমাদের সাথে।

অভ্র -ভাইয়া আমাদের নীরা ভাবীর সাথে ঠিকঠাক ভাবে কথা হয়তো? নাকি এখানেও আপনার লজ্জার ব্যাপার স্যাপার আছে?

আসিফ -(আমতা আমতা করে) অভ্র তুমি কিযে বলনা?

অভ্র -ভাইয়া আমি কি খারাপ কিছু বলে ফেললাম?আচ্ছা ভাবীর খবর আমরা না নিলে কে নিবে?

আসিফ -আমার কথা বাদ দাও, নিজে বিয়ে করছো না কেন? সব কিছু তো ঠিক আছে বিয়েটা করে ফেলো।

সবাই বসে আসিফের রুমে আড্ডা দিচ্ছে।নিলিমা বেগম রেশীকে বললো, রেশী! আসিফের রুমে সবাই আড্ডা দিচ্ছে, একটু ডেকে আনোতো। সবাই খাবে কখন? আমি খাবার দিয়ে দিচ্ছি কষ্ট করে সবাইকে ডাকো।

রেশী -জ্বী আন্টি! আপনি খাবার রেডি করেন আমি সবাইকে ডেকে আনছি।

রেশী আসিফের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে, ভাবী! খাবার খেতে সবাইকে ডাকছে।

প্রাপ্তি-রেশী ভিতরে আসো।কিভাবে যে একা একা পড়ে থাকো বুজিনা।কোথাও যেতে বললে ও যায় না।আসো ভিতরে আসো।

অভ্র রেশীর দিকে তাকিয়ে, কেমন আছো রেশী? বিকালবেলা একঝলক দেখা দিয়ে কোথায় যে হারিয়ে গেলে?

রেশী -ভাইয়া আন্টি ডাকছে খাবার খাওয়ার জন্য।পরে কথা বলি।

সবাই উঠে গেলো খাবার খেতে,আজাদ সাহেব এসে বসলেন খাওয়ার জন্য,আয়ান কালকের আয়োজন কেমন চলছে? কোনো সমস্যা হবে নাতো?

আয়ান -বাবা আপনি একদম চিন্তা করবেন না?আমরা সবাই তো আছি।সিয়াম! তোমার অফিস থেকে ছুটি নিয়েছো?

সিয়াম -হ্যাঁ আজকেই ছুটি নিলাম।৩ দিনের জন্য।

সকাল থেকেই সবাই অনেক ব্যস্ত। প্রাপ্তির সকাল থেকে একবারো আয়ানের সাথে দেখা হয়নি।ডেকোরেটরের লোকের সাথে আঠার মতো লেগে থাকতে হচ্ছে। আজাদ সাহেব অনেক আশা নিয়ে সব দায়িত্ব আয়ানের উপর দিয়েছে।ঠিকঠাক ভাবে পালন করতেই হবে।
অভ্রকে আয়ান স্টেজ সাজানোর জন্য ফুল আনতে পাঠিয়েছে।সিয়াম আর অরণী গাঁয়ে হলুদের তত্ত্ব নিয়ে নীরাদের বাড়ি গেলো।

আয়ান এসে ড্রইংরুমে বসতে বসতে রেশীকে ডেকে বললো, রেশী এক কাপ চা দাও তো।প্রাপ্তি চা হাতে করে এসে রেশী তুমি বসো আমি নিয়ে এসেছি। আমি জানতাম স্যার এখন এসে চা চাইবে।
তাই সাথে করে নিয়ে এসেছি।

আয়ান মুচকি হেঁসে কিভাবে তুমি আমার মনে কথা গুলো বুজো বলো তো?
এমন সময় দরজায় দাঁড়িয়ে সুমি বললো, আয়ান এইকথাটা আগে আমাকেও বলতে তাইনা? এখন বউ পেয়ে তো সব ভুলে গেলে।সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।প্রাপ্তি তো বিশ্বাস করতেই পারছেনা।সে সুমিকে দেখছে।একবার আয়ানের দিকে তাকাচ্ছে, আরেকবার সুমির দিকে।
আয়ান প্রাপ্তিকে চোখ দিয়ে ইশারায় সুমিকে দেখিয়ে মিটমিট করে হাঁসতে লাগলো।

সুমি -প্রাপ্তি! আমি কি দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবো ভিতরে আসতে বলবে না?
প্রাপ্তি -(এগিয়ে গিয়ে) আরে না না! ভাবী আমি কি সত্যি দেখছি নাকি সপ্ন বুজতে পারছিনা তাই থমকে গেছিলাম।(জড়িয়ে ধরে) কতো দিন পর তোমাকে দেখলাম।কিন্তু ভাইয়া কোথায়? ভাইয়াকে তো দেখছিনা।
তোমার ভাইয়া গাড়ি থেকে ব্যাগ গুলো নামিয়ে আসছে।তোমাদের জন্য আরেকটা সারপ্রাইজ আছে।
রুমকি দৌড়ে এসে মা মনি!
প্রাপ্তি মা মনি কথাটা শুনেই পাশের দিকে তাকিয়ে দেখে রুমকি।রুমকিকে দেখে দৌড়ে গিয়ে কোলে তুলে নিয়ে (কান্না জুড়িত কন্ঠে) আম্মু তুমি কেমন আছো? কতো দিন পর তোমায় দেখেছি।

রুমকি -মা মনি আমি একা আসিনি আম্মু আব্বুও আসছে।

প্রাপ্তি -তাই! কোথায় ওরা? পিছনে আসছে।
আকাশ আর নিহাদ কে সালাম দিয়ে ঝিনুক কে জড়িয়ে ধরে বাসার ভিতরে ঢুকলো।

ঝিনুক কে দেখে আয়ানও অবাক হয়ে আছে।ঝিনুক এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো।(সবাই এসে ড্রইংরুমে ঝোড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আয়ানদের দেখছে।)আয়ানও নিজের চোখের পানি গুলো লুকোতে পারলোনা।আকাশ ও এসে ভাইবোনকে জড়িয়ে ধরে নিজেও কাঁদতে লাগলো।

ঝিনুক -কতো দিন পর তোকে দেখেছি।কতোটা বদলে গেছিস তুই।তোর কি আমাদের কথা একবারো মনে পড়েনা।

আয়ান -তুইও তো আমাকে ফোন দিসনি।তাই আমার ও একটু অভিমান হয়েছিলো তোর উপর।ভাইয়া! তুই বাচ্চাদের মতো কেনো কান্না করছিস? দুইটা বছর পর তোদের দেখা পেয়েছি।তাই আজকের দিনে আমি কাঁদতে চাইনা আর।
রুমকি আয়ানের কাছে এসে, মামা! তুমি তোমার ছোটো আম্মুকে ভুলে গেছো?

আয়ান নিজের চোখের পানি মুছে রুমকিকে কোলে নিয়ে না আম্মু তোমায় একটুও ভুলিনি।আমার আম্মু দেখছি কতো বড় হয়ে গেছে।(নিহাদের দিকে চোখ পড়তেই)আরে ভাইয়া তুমি কেমন আছো? তুমি দেখছি কোনো কথাই বলছোনা।

নিহাদ -কি করে বলবো? তোমাদের ভাইবোনদের দেখে আমি নিজেই ইমোশনাল হয়ে গেছি।নিলিমা বেগম কাছে আসতেই সুমি জড়িয়ে ধরে আন্টি কেমন আছেন?

নিলিমা বেগম -তোমাদের দেখে এখন অনেক ভালো আছি।

প্রাপ্তি ঝিনুক, নিহাদ,আকাশকে সবার সাথে পরিচর করিয়ে দিচ্ছে।নিহাদ রেশীকে দেখে, আয়ান! এ তোমাদের কি হয়?

রেশী নিহাদকে দেখে ভয় পেয়ে আছে। নিহাদ ভাইয়া কি সব বলে দিবে? আয়ান ভাইয়া আর ভাবী যদি আমায় ভুল বুজে।

আয়ান -ভাইয়া তুমি কি ওকে চিনো নাকি?

নিহাদ -হ্যাঁ! ওকে আমি অনেক আগে থেকেই চিনি,,,এমনকি ও তো,,,,,,,,

নিলিমা বেগম -আচ্ছা বাবা তোমরা পরে কথা বলো।আগে ফ্রেশ হয়ে নাও।প্রাপ্তি তুই ওদেরকে রুম দেখিয়ে দে সবাই ফ্রেশ হয়ে নেক।(অরণী আর সিয়াম আসতেই) ওইতো অরণী আর সিয়াম এসে গেছে।অরণীকে দেখে সবাই ওদের সাথে কথা বলেছে।কথা শেষ করেই প্রাপ্তি সবাইকে রুমে নিয়ে গেলো।
ঝিনুক নিহাদকে চুপচাপ থাকতে দেখে, নিহাদ তখন থেকে দেখছি ওই মেয়েটাকে দেখে চুপ করে আছো। কিন্তু কেনো? মেয়েটাকে তুমি কিভাবে চিনো

নিহাদ -ঝিনুক আমি ফ্রেশ হয়ে আসি পরে তোমায় বলবো।
প্রাপ্তি নিহাদের কথা গুলো কেমন জেনো মাথায় গেঁথে গেছে।রেশীকে ভাইয়া কিভাবে চিনে? আয়ান কে একবার বলে দেখি,আয়ান ফোনে কথা বলছে, প্রাপ্তিকে দেখে কিছু বলবে?
প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।
আয়ান কল কেটে দিয়ে, হুম বলো? কি হয়েছে মন খারাপ? আমার লক্ষ্মী বউটার তো মন খারাপ হওয়ার কথা না।সবাইকে পেয়ে তো খুশি থাকার কথা।

প্রাপ্তি- নিহাদ ভাইয়ার কথাটা তোমার মনে আছে রেশীকে নাকি ওনি চিনে!ওনি যখন কথাটা বলছিলো রেশীর মুখের দিকে একবার দেখেছো? কেমন যেনো ভয়ে ভয়ে ছিলো।

আয়ান -(কাছে এসে প্রাপ্তির গাল দুটোকে দুই হাত দিয়ে ধরে)ঠিক আছে আমার বউটার চিন্তা করার দরকার নেই। আমি পরে নিহাদ ভাইয়ার কাছ থেকে সব কিছু জেনে নিবো।এইবার একটু হাঁসো? আমার বউয়ে হাঁসি মুখটাই যে আমার কাছে সব।

প্রাপ্তি মুচকি হেঁসে আয়ানের বুকে মাথা রেখে তোমাকে অনেক অনেক thanks!
আয়ানও প্রাপ্তিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,
thanks কিসের জন্য মহারাণী?

প্রাপ্তি-আমার আবদার টা রাখার জন্য।

আয়ান- এর জন্য শুধুই মাত্র thanks? আর কিছু না?

প্রাপ্তি -তাহলে আরকি?

আয়ান -আর হচ্ছে,,,, আর তোমার ওই দুটো ঠোঁট আমার দুটো ঠোঁটের সাথে এক করতে চাই।

প্রাপ্তি লজ্জা পেয়ে, তোমাকে কাল কি বলেছি ভুলে গেছো?

আয়ান -আয়ান প্রাপ্তিকে সরিয়ে দিয়ে না ভুলিনি।কিন্তু আমার যে ইচ্ছে করে আমার বউকে একটু কাছে পেতে।প্রাপ্তি আমি মানুষ, পাথর নয়।

প্রাপ্তি -আমি জানি। এতোদিন যখন সহ্য করেছো তাহলে আরেকটু করো প্লিজ।

আয়ান- ওকে।আমার একটা কথা রাখবে?

প্রাপ্তি -বলনা কি কথা?

আয়ান -তুমি কখনো সাজো না।আজ হলুদের অনুষ্ঠানে একটু সাজবে? প্লিজ আমার জন্য না হয় এইটুকু কষ্ট করো।
কথা টা বলে আলমারি থেকে একটা প্যাকেট বের করে এনে আয়ান প্রাপ্তির হাতে দিয়ে এইগুলো তোমার জন্য।এইখানে সব কিছু আছে তুমি সেজে নিও।আয়ান বাহিরে চলে গেলো।প্রাপ্তি প্যাকেট টা হাতে নিয়ে সেইখানেই দাঁড়িয়ে আছে।
অরণী প্রাপ্তিকে ডাকতে এসে দেখে প্রাপ্তি প্যাকেট হাতে নিয়ে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

অরণী -আপু তোর কি হয়েছে এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?গেস্টরা অকেই এসে গেছে আম্মু তোকে ডাকছে।আচ্ছা আপু আজকেও তুই সাজগোজ কিছুই করবিনা? আয়ান ভাইয়াও যে কি কিভাবে তোর এইসব পাগলামো সহ্য করে বুজিনা।

প্রাপ্তি প্যাকেট টা খাটের উপর রেখে দিয়ে, তোর ভাইয়ার ধৈর্য শক্তি হয়তো একটু বেশি তাই আমার মতো মেয়েকে তার কপালে জুটেছে।আচ্ছা চল আম্মু কেনো ডাকছে দেখি।

অভ্র এসে নিলিমা বেগমকে আন্টি আমার জন্য এক কাপ চা দিয়েন আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।নিহাদ ও নিজের রুম থেকে ফোনে কথা বলতে বলতে আসছিলো।অভ্র নিলিমা বেগমকে কথা টা বলেই নিজের রুমে যেতে নিহাদের সাথে ধাক্কা খেতেই নিহাদের হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো। নিহাদের মুখের দিকে না তাকিয়ে অভ্র নিচু হয়ে ফোনটা নিচ থেকে নিয়ে নিহাদের হাতে দিতেই চমকে গেলো।নিহাদ ও অভ্রকে দেখে কম অবাক হলোনা।অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে,
নিহাদ-তুমি এইখানে?

অভ্র -ভাইয়া আপনি এইখানে?

আয়ান রেডি হয়ে এসে, কিরে অভ্র তুই এখনো রেডি হয়ে আসিসনি।তোকে বলছিনা তুই রেডি হয়ে এসে আসিফ ভাইয়াকে রেডি করাতে হবে।অভ্রকে নিহাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আয়ান বললো, অভ্র তোকে তো পরিচয় করাতে তো ভুলেই গেছি, ইনি হচ্ছে আমার দুলাভাই। আমার বড় আপুর হ্যাজবেন্ড।
আর ভাইয়া এ হচ্ছে,,,,,,,,,,

আয়ান বলার আগেই নিহাদ মুচকি হেঁসে বললো মাহবুবুল রাহমান অভ্র।
আয়ান আশ্চর্য হয়ে ভাইয়া তুমি ওকে চিনো?
নিহাদ -অভ্র আমি কি তোমাকে সত্যিই চিনি?

অভ্র কিছু না বলে, আয়ান আমি রেডি হয়ে আসছি।বলেই অভ্র নিজে রুমে চলে গেলো।

চলবে,,,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৩০

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৩০

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আকাশের ফোন টা অনেকক্ষণ থেকে বেজে যাচ্ছে, আকাশ ওয়াশরুমে থাকায় ফোনটা ধরতে পারছেনা।সুমি এসে দেখে বার বার আকাশের ফোনে কল আসছে,,

সুমি -আকাশ তোমার ফোনটা অনেকক্ষণ থেকে বেজে যাচ্ছে।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বের হও।

আকাশ তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে, রিসিভ করোনি কেনো?

সুমি -তোমার অফিসের কলও তো হতে পারে, তাই করিনি।

আকাশ ফোন নিয়ে দেখে আয়ানের নাম্বার থেকে ফোন।
আকাশ -আয়ান ফোন করছে।

সুমি -নাম্বার ওর নাম দিয়ে সেভ করোনি কেনো?আমি ভাবলাম অন্য কেউ।

আকাশ -আব্বুর চোখের সামনে কখন পড়ে যায় ঠিক আছে?দেখি কেনো ফোন করছে।
(ফোন রিসিভ করে)কেমন আছিস?

আয়ান -এইতো ভালো।কি করছিস সবাই? আমার সুইট হার্ট কোথায়?

আকাশ -সবাই ভালো।তোর ভাবী ও আছে ভালো।আমার সামনেই আছে।

আয়ান -কাল আব্বু কিছু বলেছে?

আকাশ -নাতো কেনো কি হয়েছে? তবে কাল অনেক গম্ভীর ছিলো।কারো সাথে কথা বলেনি।রাতে খাওয়া খায়নি।

আয়ান -কাল আমার সাথে দেখা হয়েছে আব্বুর। তাও এমন ভাবে দেখা হবে যা আমি কখনোই কল্পনা করিনি।যাই হোক তোকে একটা কারণে ফোন দিয়েছি ভাইয়া।

আকাশ -কি কারণ বল।

আয়ান-প্রাপ্তি একটা আবদার করেছে।ও কখনোই আমার কাছে কিছু চায়নি।এখন এমন একটা জিনিস ছেয়ে বসলো যা তুই ছাড়া মিটানো সম্ভব না।

আকাশ -তুই শুধু একবার বল প্রাপ্তি কি চায়? সাথে সাথেই দেখবি প্রাপ্তির সামনে পৌঁছে গেছে।

আয়ান -আসলে আসিফ ভাইয়ার বিয়ে সামনের মাসে ৩ তারিখ। এখন প্রাপ্তির ইচ্ছা তুই আর ভাবী এই বিয়েতে আসবি।আমি জানি বাড়িতে বললে আব্বু তোকে আসতে দিবে না তাই তোকে আলাদা ভাবে বললাম।
প্রাপ্তির এই আবদারটা তোকে পূরণ করতেই হবে ভাইয়া।তুই ছাড়া যে এইটা কেউ পারবেনা।

আকাশ -কি বলবো তোকে বুজতে পারছিনা। আচ্ছা আমি তোকে পরে জানাবো।।
আয়ান -ঠিক আছে তুই আমাকে জানাশ। তাহলে এখন রাখি।
ফোন টা রেখে আয়ান সুস্থির নিশ্বাস ফেলে ভাইয়া যখন বলেছে তাহলে ঠিকি চেষ্টা করবে।

বিয়ের দিন ঘনিয়ে এসেছে, তাই প্রাপ্তি আর আয়ান এইদিকটার সব কিছু সামলিয়ে প্রাপ্তিদের বাড়ি গেলো।বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে সবাই অনেক ব্যস্ত।আসিফ আর নীরার মাঝেমাঝে ফোনে কথা চলতে থাকে।নীরা চৌঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে আর আসিফ সবসময় গম্ভীর থাকতেই পছন্দ করে।মেয়েদের সাথে তেমন বেশি কথা বলেনা।নিজের বোনদের নিয়েই তার ভাবনার জগত। সেই জগতে কোনো মেয়েই জায়গা করে নিতে পারিনি।এখন নীরাই হবে সেই জায়গার মালিক।

সকাল বেলা কলিংবেলের শব্দ শুনে রফিক গিয়ে দরজা খুললো।আবিদ চৌধুরী পেপার পড়তে পড়তে নিজের রুম থেকে ড্রইংরুমে বসলো।আকাশ ও নাস্তা করার জন্য নিছে নিমে এলো।কিন্তু আবিদ চৌধুরীকে পেপার পড়তে দেখে নিজেও বসে পড়লো।

রফিক -(দরজার সামনে দুইজন লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে)কাকে চাই?

একজন বললো,আবিদ চৌধুরী আছে?

রফিক -জ্বী! স্যার ভিতরেই আছে কিন্তু আপনারা কারা?

দ্বিতীয় লোক -আমরা কুরিয়ার থেকে এসেছি।আসলে কয়দিন আগে আবিদ চৌধুরীর নামে কয়েকটা পার্সেল এসেছে।সমস্যা থাকার কারনে দিয়ে যেতে পারিনি।

আবিদ চৌধুরী রফিক কে দরজায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে রফিক কোনো সমস্যা?

রফিক পার্সেল গুলো নিয়ে লোক গুলোকে বিদায় দিয়ে,আবিদ চৌধুরীর কাছে আসলো।

আবিদ চৌধুরী -তোমার হাতে এইগুলো কি?

রফিক -জানি না স্যার। কুরিয়ার থেকে আসছে আপনার নামে।

আবিদ চৌধুরী -আকাশ! খুলে দেখো তো এই গুলোতে কি আছে।
সুমি আর আয়েশা বেগমও রান্নাঘর থেকে এগিয়ে এলেন।

আকাশ পার্সেল গুলো খুলতেই সবাই অবাক হয়ে আছে।সবার জন্য জামা কাপড়। কে পাঠিয়েছে এইগুলো?

সুমি আবিদ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে,বাবা আপনি সবার জন্য শপিং করে তো সবাইকে সারপ্রাইজ করে দিলেন।

আবিদ চৌধুরী -সুমি আমি কোনো শপিং করিনি।কিন্তু এই গুলো কে পাঠিয়েছে।

আকাশ -আব্বু দেখো? মনে হচ্ছে এইখানে দেখছি সবার থেকে রুমকির জন্যই বেশি।

আবিদ চৌধুরী -কিন্তু এই গুলো পাঠালো কে?

সুমি -মনে হচ্ছে যে শপিং করেছে সে জেনে বুজেই করেছে।

সবাই চিন্তায় পড়ে গেলো কে পাঠিয়েছে এইসব?
আয়েশা বেগম আকাশের দিকে তাকিয়ে, আমার মনে হয় এইগুলো আয়ানই পাঠিয়েছে।আয়ান ছাড়া কে আর পাঠাবে বল?

সুমি -মা আপনি ঠিকি বলেছেন।এইগুলো আয়ানই পাঠিয়েছে হয়তো।
আবিদ চৌধুরী কিছু না বলেই নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন।রুমে গিয়ে ভাবছে আমি যদি এখন ওদের কিছু বলি হয়তো এতে বিপরীত হতে পারে।সবকিছুতেই বাড়াবাড়ি করে করা ঠিক হবেনা।আমাকে এখন বুজে শুনে কাজ করতে হবে।

সুমি আয়েশা বেগমের দিকে এগিয়ে গিয়ে, মা! বাবা কিছুই না বলে চলে গেলো? আমার কাছে কেমন গোলমাল লাগছে।আয়ান এইগুলো পাঠিয়েছে শুনেও বাবা কোনো রিয়েক্ট করলেন না।আপনি কি কিছু বুজতে পেরেছেন?নাকি বড় কোনো ঝড় আসতে চলেছে?

আকাশ -সুমি তুমি একটু বেশিই ভাবছ। বাবা হয়তো আয়ান কে আস্তে আস্তে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে।আমরা একা আয়ান কে ভালোবাসি তা কিন্তু না বাবাও আয়ানকে অনেক ভালোবাসে।ভুল বুজাবুজি সবার মাঝেই থাকে। হয়তো বাবার অভিমান টা একটু বেশিই করেছে।

আয়েশা বেগমের চোখ গুলো ছলছল করছে। কিছু না বলেই রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো।

প্রাপ্তিদের বাড়ি সাজানো শুরু হয়েছে।তার মামা, মামী, চাচা, চাচী অনেকেই চলে এসেছে। শপিং নিয়ে আয়ান প্রাপ্তি অরণী অনেক ব্যস্ততার মধ্যে কাটাচ্ছে। আজাদ সাহেবের একটাই কথা সবকিছু জেনো ঠিকঠাক ভাবেই হয়।তার একটা মাত্র ছেলে কোনো কিছুতে জেনো কমতি না থাকে।আজাদ সাহেব বেশিরভাগ দায়িত্ব আয়ানের কাঁধে দিয়েছে।আয়ান ছাড়া তিনি কাউকে ভরসা করতে পারেননা। সিয়াম সবসময় নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।আয়ান অভ্রকে ফোন দিয়েছে আসার জন্য। সন্ধ্যায় বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছে নিলিমা বেগমের রুমে,কি কি কেনাকাটা করেছে সবাইকে দেখাছে প্রাপ্তি।আয়ান দরজায় দাঁড়িয়ে অনেক বার ইশারা করছে তার কথা শুনার জন্য।সবার সেই দিকে নজর না পড়লেও প্রাপ্তি দেখছে।প্রাপ্তি ভাবছে হাতের কাজ শেষ করে করেই তারপর যাবে।কিন্তু আয়ানকে আবার ইশারা করতে দেখে অরণী, আপু! তুই যা আমি সবাইকে দেখাচ্ছি। তুই না গেলে ভাইয়া হয়তো এইখানেই জ্ঞান হারাবে।কথাটা শুনে সবাই হাঁসতে শুরু করলো।আয়ান লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো আসলে প্রাপ্তি তোমার সাথে আমার জরুরী কথা আছে প্লিজ শুনে যাও।

প্রাপ্তি রাগি ভাব নিয়ে আয়ানের কাছে গিয়ে, চলো জানি আমি কি কথা আছে।

প্রাপ্তি আর আয়ান চলে যেতেই,
প্রাপ্তির চাচী -মেয়েটার কপাল অনেক ভালো। না হলে এমন বর কেউ পায়? কাল আসার পর থেকে দেখছি মেয়েটাকে অনেক যত্ন করে,অনেক খেয়াল রেখে,এইটাই হচ্ছে প্রকৃত ভালোবাসা। অরণী! তোর বর তোকে এইরকম খেয়াল রাখে?

অরণী -রাখবে না কেন? হয়তো ভাইয়ার ছেয়ে কম।চাচী! এইগুলো নিয়ে পরেও কথা বলা যাবে। আগে কাজ গুলো সেরে ফেলা যাক।
প্রাপ্তি আয়ানের সাথে রুমে আসতেই আয়ান দরজা বন্ধ করে দিলো,

প্রাপ্তি-কি ব্যাপার এই সময় দরজা বন্ধ করলে কেনো?

আয়ান -তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো, তাই তোমাকে ডেকেছি কিন্তু তুমি সবার সামনে এমন ভাব করছিলে মনে হচ্ছে আমায় দেখোইনি।

প্রাপ্তি -তুমি তো দেখছিলে আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম তারপর ও কেনো তুমি আমায় ডাকছিলে?

আয়ান -প্রাপ্তি! তোমাকে না দেখলে আমার ভালো লাগেনা।(বলেই আস্তে আস্তে প্রাপ্তির কাছে আসতে থাকলো)

প্রাপ্তি আয়ানকে কাছে আসতে দেখে,(রাগিভাব দেখিয়ে) দাঁড়াও ওইখানে। একদম কাছে আসবেনা বলে দিলাম।

আয়ান সত্যিই দাঁড়িয়ে গেলো প্রাপ্তির কথা শুনে,কি ব্যাপার প্রাপ্তি তোমার কি মন খারাপ?এইভাবে কথা বলছো কেনো?

প্রাপ্তি- আমি ঠিক আছি। আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলেছিলাম সেটার কি করেছো? ভাইয়ারা কি আসবে?

আয়ান -প্রাপ্তি! তুমি কিন্তু কথা কাটানোর চেষ্টা করছো।

প্রাপ্তি এইবার নিজেই আয়ানের কাছে এসে, তুমি রাগ করেছো? দেখছিলাম কি করো বউয়ের মুখে এইরকম কথা শুনে।

আয়ান -তোমার উপর আমার কখনোই রাগ হয়না এইটা তুমি ভালো করেই জানো।আচ্ছা প্রাপ্তি তোমাকে কি আমি কখনোই নিজের করে পাবোনা?

প্রাপ্তি- পাবে না কেনো? পাবে! যেইদিন তোমার বাবা আমাকে মেনে নিবে। যেইদিন সব কিছু ভুলে আমরা আবার এক হবো সেইদিনই তুমি আমাকে তোমার করে পাবে।

আয়ান -যদি আব্বু কখনোই মেনে না নেয়?

প্রাপ্তি -তোমার চিন্তা করতে হবে না শুধু বিয়ে টা মিটে যেতে দাও তোমার আব্বুর অহংকার কি করে ভাঙতে হবে সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে।আমার জন্য যখন তুমি পরিবার থেকে আলাদা হয়েছো তখন আমিই জোড়া লাগাবো।
আমি আর তোমাদের মা ছেলেকে কষ্ট পেতে দিবোনা।

আয়ান প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে,তোমার মতো বউ যার আছে তার আর কিছুর প্র‍য়োজন নেই।সারাটা জীবন সুখের অভাব হবেনা।
প্রাপ্তি আয়ানের নাক টেনে দিয়ে আমাকে পাম দেওয়া হচ্ছে? এইযে মিস্টার আয়ান চৌধুরী আমি কিন্তু বেলুন না আপনার কথায় আমি ফুলে যাবো বলেই হাঁসতে শুরু করলো দুজনেই।রেশী এসে দরজার ওপাশ থেকে বলে গেলো,ভাইয়া! অভ্র ভাইয়া আসছে! তোমাকে ডাকছে।
প্রাপ্তি আর আয়ান ড্রইংরুমে এসে অভ্রকে দেখে,
আয়ান- কিরে তোর আসতে এতো দেরি হলো কেনো?কাল গাঁয়ে হলুদ আর তুই আজ আসছিস।

অভ্র -কি করবো বল? অফিস শেষ করেই বাসায় গিয়ে জামা কাপড় গুছিয়েই তো রওনা দিলাম।তাই আসতে আসতে রাত হয়ে গেলো।নীশান ও সকাল থেকে ফোন দিচ্ছে ওদের বাড়ি যাওয়ার জন্য। আমি বলেছি আসিফ ভাইয়া সহ আমাকে ছাড়বেনা।যদি ওদের ম্যানেজ করতে পারি তাহলে পরে দেখা যাবে।
আসিফ নিজের রুম থেকে বেরিয়ে এসে, সেই কথা ভুলে যাও এই বাড়ি ছেড়ে তোমার কোথাও যাওয়া হচ্ছেনা।

অভ্রও আসিফের কথা শুনে মুচকি হাঁসি দিয়ে মনে মনে ভাবছে, এই বাড়ি থেকে আমার এমনিতেই যেতে ইচ্ছে করবে না।কারন এই বাড়িতে আমার এমন একটা জিনিস আছে যেটা না দেখে আমি থাকতে পারিনা।কিন্তু যার কথা ভাবছি সে কোথায় গেলো? আসার পর এক পলক দেখা দিয়ে যে কোথায় গেলো বুজতেই তো পারছিনা।
কথাটা আয়ান কে বার বার বলতে গিয়েও আমি বলতে পারলাম না। কারণ আয়ানের সাথে আমি আমার বন্ধুত্ব কখনোই নষ্ট করতে চাইনা।

প্রাপ্তি অভ্রর চোখের সামনে তুড়ি মেরে এইযে ভাইয়া আপনি কোথায় হারিয়ে গেলেন।আমরা কিন্তু সবাই এইখানেই আছি তাহলে আপনি এইদিক ওদিক ফিরে কাকে খুঁজছেন?

অভ্র চমকে উঠে, কিছু বললে?

প্রাপ্তি -আমি কিন্তু কিছু কি বুজতে পারছি আপনি কি খুঁজছেন!

চলবে,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৯

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৯

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আয়ান দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই সবাই দাঁড়িয়ে পড়লো।আবিদ চৌধুরী আয়ান কে দেখেই চোখ বড় বড় করে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে ও এই খানে কি করছে ওকে দেখে সবাই এই ভাবে দাঁড়িয়ে গেলো কেনো?

আয়ান সবাইকে বসতে বলে নিজের চেয়ারের পাশে দাঁড়ালো।কিভাবে বসবে সে এই চেয়ারে? যেইখানে পাশের চেয়ারটায় তার বাবা বসে আছে।

আয়ান -আপনারা সবাই কেমন আছেন?

পাশের একজন বললো, স্যার আমরা তো ভালোই আছি।কিন্তু আপনাকে দেখে অবাক হয়েছি।

অভ্র এসে, স্যার আসবো?
আয়ান -ইয়েস! অভ্রর কাছ থেকে ফাইল নিয়ে বললো, আপনি কেনো অবাক হলেন বললেন না তো?

লোকটা -আপনাকে দেখেই!এতো অল্প বয়সে এতো দূর এইটা কি ভাবা যায়?

আয়ান -(মুচকি হেঁসে) আসলে আমার আব্বু বিখ্যাত বিজনেসম্যান! আমি যদি ওনার ছেলে হয়ে পিছিয়ে থাকি তাহলে তো আমার আব্বু কে অসম্মান করা হলো।এইবার আমরা কাজের কথায় আসি?

কথাটা শুনে অভ্র অবাক হয়ে আয়ানকে দেখছে, সে এতো দিন যা অনুমান করেছে তা দেখছি সত্যিই হলো।

আবিদ চৌধুরীর রাগে চোখ গুলো লাল হয়ে আছে।গম্ভীর হয়ে টেবিলের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। আজ নিজের ছেলের জ্ঞান মুলুক কথা শুনতে হচ্ছে।কেনো জানি খারাপও লাগছে না। আমার ছেলেটা হয়তো আমাকে দেখানোর জন্যই এতো দূর পাড়ি দিয়েছে।

আয়ানকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে,
অভ্র-স্যার আপনি বসছেন না কেনো? বসে কথা বলুন।

আয়ান -অভ্র তুমি ভালো করেই জানো আমি সব জায়গায় বসিনা।এইখানে সবাই আমার মুরুব্বী আমি ওনাদের ছেলের মতো আমি এইখানে বসলে ওনাদের অসম্মান করা হবে।

আবিদ চৌধুরী বুজে গেছে আয়ান যে তাকেই শুনানোর জন্য কথা গুলো বলেছে।
আয়ান প্রেজেন্টেশন দেখে আবিদ চৌধুরী মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে ছেলের দিকে।
এমন সময় আয়ানের ফোন বাজতেই আয়ান বিব্রতবোধ নিয়ে সরি বলে ফোনটা পকেট থেকে বের করে দেখে প্রাপ্তির নাম্বার।প্রাপ্তি আমাকে কখনোই আর ফোন দেয়নি আজ এমন সময় দিলো কল টা রিসিভ না করলে হয়তো ওর মন খারাপ হয়ে যাবে, তাই একটু সরে গিয়ে কলটা রিসিভ করে, বাবু আমি মিটিং এ আছি,আর মিটিং শেষ করেই তোমাকে ফোন দিচ্ছি,প্লিজ রাগ করোনা।

প্রাপ্তি -ওকে!
কথা শেষ করে আয়ান তার কাজে মন দিলো,নাহ্ আব্বুকে দেখে এইভাবে দুর্বল হলে আমায় চলবেনা।আমাকে শক্ত হতে হবে।সবকিছু শেষ করে আয়ান আবিদ চৌধুরীর সাথে ডিল টা ফাইনাল করে নিলো।এমন ভাবে তাদের মধ্যে কথা চলতে থাকে মনে হচ্ছে আজই তাদের বিজনেসের কাজে প্রথম দেখা। আয়ান কাজ শেষ করে রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে এলো।

অভ্র এসে আমি বললাম না তুই ছাড়া এইরকম প্রেজেন্টেশন কেউ দিতে পারেনা।আবিদ চৌধুরী খুশি হয়েই ডিলটা করে নিলো।
আয়ান চুপচাপ বসেই আছে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না। মাথায় একটা কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আজ আমার নিজের বাবার সাথেই বিজনেসের সম্পর্ক।

অভ্র আয়ানকে চুপ থাকতে দেখে কিরে আমি একাই বকবক করে যাচ্ছি আর তুই চুপ করে এতো কিভাবছিস? তুই তখন মিটিং এ একটা কথা বললি,তোর বাবা নাকি বিজনেসম্যান। অবশ্য আমি আগেই বুজেছিলাম তুই আমার কাছে অনেক কিছু লুকাচ্ছিস।

আয়ান -অভ্র তুই ঠিকি বলেছিস! সত্যি কখনো লুকানো যায়না,সেটা যে কোনো সময় সামনে চলে আসে।জানিস অভ্র আজ আমি কার সাথে প্রজেক্ট এর ডিল করেছি?

অভ্র -(হাঁসি দিয়ে) কেনো জানবো না, আবিদ চৌধুরীর সাথে।

আয়ান -এর বাহিরেও ওনার সাথে আমার একটা পরিচয় আছে আর সেটা হলো ওনিই আমার বাবা!

অভ্র বিস্মিত কন্ঠে, মানে?তোর বাবা!
আমি তো কিছুই বুজতে পারছিনা।তোদের দুজনকে দেখে তো তা মনে হলো না।এমন ভাবে ছিলি মনে হলো তোদের আজকেই প্রথম দেখা।

আয়ান -সে অনেক কথা সময় করে তোকে একদিন বলবো।আচ্ছা আমি তাহলে এখন আসি, তুই রাতে কিন্তু বাসায় আসবি।

সে কখন আমি ফোন দিলাম মিটিং এ আছে বলে যে রেখে দিলো তার কোনো খবর নেই।বাসায় যে দিয়ে গেলো একটা বার ফোন দিয়ে খবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলোনা।আগেই ভালো ছিলো কথা বলতাম না,ফোনও দেওয়া লাগতো না।জামা কাপড় গুছাইতে গুছাইতে বিড়বিড় করছে প্রাপ্তি।
আয়ান এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কি হয়েছে আমার লক্ষ্মী বউয়ের।আমার উপর কি তার রাগ হয়েছে।

প্রাপ্তি -(আয়ানকে দেখে অবাক হয়ে,)তুমি এই সময় বাসায় চলে এলে? শরীর খারাপ নাকি? দেখি সামনে আসো।

আয়ান -(প্রাপ্তিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)এতক্ষণ আমাকে বকা দেওয়া হচ্ছে, এখন আবার ভালোবাসাও দেখানো হচ্ছে।

প্রাপ্তি -আমার যা খুশি তাই করবো তাতে তোমার কি।আমার হ্যাজবেন্ডকে আমি মারবো, আদর করবো, (হাতে একটা চিমটি কেটে)চিমটি কাটবো তাতে আয়ান চৌধুরী কি?
আয়ান- ওহ্ ব্যথা পেলাম তো,(প্রাপ্তিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে)আচ্ছা তুমি সত্যি আমাকে মারবে? ওকে তাহলে শুরু করো।

প্রাপ্তি আয়ানকে ছাড়িয়ে ফাজলামো করা হচ্ছে আমার সাথে? এখন যাও তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো।আয়ানের হাতে তোয়ালে টা ধরিয়ে দিয়ে প্রাপ্তি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসতে বসতে রেশী কোথায়?

প্রাপ্তি -ওর শরীরটা ভালো লাগছে না।তাই আগেই খাইয়ে মেডিসিন দিয়ে দিলাম।হয়তো শুয়ে আছে।ভাবছি ভাইয়ার বিয়েটা শেষ হলে রেশীর বিয়ের জন্য ছেলে দেখবো।

আয়ান -(খেতে খেতে)রেশী যদি বলে ও বিয়ে করবেনা। ও ওর পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায় তখন?
কথাটা শুনে প্রাপ্তি মন খারাপ করে হুম সেটাই, তবে একবার বলতে অসুবিধা কোথায়?

আয়ান -হুম!তোমাকে তো বলতে ভুলে গেছি।রাতে অভ্র আসবে।আমাদের সাথে খাওয়াদাওয়া করবে।

প্রাপ্তি -সমস্যা নেই।

আয়ান -রান্না করতে তোমার কষ্ট হবেনা? এক কাজ করলে কেমন হয় সব রান্না বাহিরের থেকে নিয়ে আসি?

প্রাপ্তি -কোনো দরকার নেই।আমিই পারবো।অভ্র আমার ভাইয়া মতো ভাইকে রান্না করে খাওয়াবো এতে কষ্ট কিসের?তুমি কোনো চিন্তা করো না আমি পারবো।

আয়ান -আমি জানি তুমি পারবে।কিন্তু তোমার তো কষ্ট হবে।

প্রাপ্তি -বললাম তো তুমি চিন্তা করোনা।আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বললে রাগ করবা?

আয়ান -রাগ করবো কেন? কি বলবে বলো?

প্রাপ্তি -ভাইয়ার বিয়েতে তোমাদের বাড়ির সবাইকে ইনভাইট করলে কেমন হয়?

আয়ান -তুমি ভালো করেই জানো ওরা আসবেনা।

প্রাপ্তি -আকাশ ভাইয়া আর ভাবী তো আসতে পারে।প্লিজ বলোনা!
আয়ান -কি বলি বলো তো? তুমি আমার কাছে কোনো দিন কিছু চাওনি। এখন এমন একটা কথা বললে,,,, তবে চেষ্টা করে দেখতে পারি।

আবিদ চৌধুরী নিজের রুম অন্ধকার করে ইজিচেয়ারটায় বসে দুলছে।কেমন জানি নিজেকে আজ একা লাগছে।সবার মাঝে থেকেও চারপাশ টা কেমন খাঁ খাঁ করছে।আয়ান যখন এই বাড়িতে ছিলো যখনি বাসায় থাকতো হৈচৈ করে বাড়িটা মাতিয়ে রাখতো।অফিসে থাকলেও নিজের কাজ গুলো মন দিয়ে করতো।কখনো কোনো কিছু বলে দিতে হয়নি।আজ একটা মেয়ের জন্য আমার ছেলে আমাকে পর্যন্ত ত্যাগ করে দিলো।আমার সম্মানের কথা একটাবার চিন্তা করলো না।এইদুইটা বছর আমি হয়তো একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিলাম সবাইকে ওর সাথে যোগাযোগ করতে না দিয়ে।সবাই হয়তো ভাবে আমার মনে কোনো মায়া নেই কারো প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই।আমার মন পাথরের মতো। সত্যিই কি তাই?কথা গুলো ভাবতেই গলাটা কেমন জানি ভারী হয়ে আসছে।
আয়েশা বেগম রুমে ঢুকে অন্ধকার দেখে লাইটটা জ্বালিয়ে আবিদ চৌধুরীকে দেখে কি হয়েছে বাহিরের থেকে আসার পর থেকেই দেখছি মন খারাপ।কিছু হয়েছে?

আবিদ চৌধুরী চশমা টা মুছে পরতে পরতে দীর্ঘশ্বাস পেলে বললো নাহ কিছু না!

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৮

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

_বাড়ি ফিরে এসে সবাই তো নীরার প্রশংসা করছে।আজাদ সাহেব সবার কথা শুনে বললেন তোমাদের পছন্দ হয়েছে এইটাতেই আমি খুশি।আমার পরিবার খুশি মানে আমি খুশি।তবে তোমরা আসতে এতো দেরি করলে কেনো?

অরণী -আব্বু নীরার মা তো না খাইয়ে আসতেই দিলোনা।আমি কিন্তু আজ একটা জিনিশ বুজেছি।নীরার মা ও আপুকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।হয়তো ছেলের বন্ধুর বউ বলে কথা আদর তো একটু বেশি করবেই।

আয়ান -অরণী! তোমার কি হিংসে হচ্ছে?(অরণী কে খেপানোর জন্য)এই জন্যই তো বলি কেমন পোঁড়া পোঁড়া গন্ধ আসতেছে।

অরণী -আমার আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই।

সিয়াম -অরণী! তোমরা গল্প করো আমার আবার সকালে অফিস আছে।

আয়ান -বাবা আপনি বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে আমাদের জানিয়েন।আমরা কাল সকালে চলে যাবো।আমার অফিসে কাল যেতেই হবে।

আজাদ সাহেব -আমার মনে হয় সামনের মাসের ৩ তারিখের দিকে বিয়েটা হলে ভালো হবে।আমাদের জন্যও সুবিধা হবে।

অরণী -আব্বু এই মাসেরই তো আজ ১৯ তারিখ বেশি দিন আর সময় কই।

আয়ান -আমার মনে হয় এটাই ঠিক আছে।কি বলো প্রাপ্তি?

প্রাপ্তি -আমি কি বলবো তোমরা যা ভালো মনে করো।

নিলিমা বেগম -প্রাপ্তি আর অরণী তোরা সব কিছু গুছিয়ে এই বাড়িতে চলে আয়।তারপর সব কিছু ভাবা যাবে।

আয়ান -(আয়ান হাই তুলে)প্রাপ্তি উঠো আমার ঘুম আসছে।কাল অনেক সকাল সকাল উঠতে হবে।

কথা শেষ করে সবাই সবার রুমে ঘুমাতে চলে গেলো।

প্রাপ্তি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে এলো,আয়ান বসে বসে অভ্রর সাথে ফোনে কথা বলছে।প্রাপ্তিকে এসে শুইতে দেখে আয়ান ফোন রেখে দিয়ে, বিকেলবেলা যেই কথাটা বলেছি মনে আছে?

প্রাপ্তি -অনেক কথাই তো বললে। কোনটা মনে রাখবো?

আয়ান -বাবু! আমি জানি তোমার মনে আছে, কারণ আমার বউ তো আমি ভালো করেই চিনি।

প্রাপ্তি -তোমার এই সব কথা বাদ দিয়ে ঘুমাও সকালে আবার বাসায় যেতে হবে।

আয়ান -না আমি ঘুমাবো না,আগে তুমি বলো তুমি আমার কথায় রাজি?প্রাপ্তি আমি তোমাকে জোর করবো না তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমি কিছুই করবোনা।কথা টা বলেই আয়ান অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়লো।
প্রাপ্তি চুপ করে বসেই আছে,কি বলবে আয়ানের কথায়। অনেক তো কষ্ট দিয়েছি আয়ান কে। আর কতো কষ্ট দিবো!আয়ানের মতো ছেলে আমার থেকে আরো ভালো মেয়ে বিয়ে করতে পারতো। আমি তার যোগ্য না তবুও আমায় কতো ভালোবাসে, কতো কেয়ার করে।আমাকে বিয়ে না করলে এতো কষ্ট সহ্য করতে হতো না।ওকে ওর পরিবার থেকে আলাদা থাকতে হতোনা।কথা গুলো ভাবতেই প্রাপ্তির চোখে পানি টলমল করছে।আস্তে করে পিছনদিক থেকে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে আয়ানের পিঠে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়লো।আয়ান প্রাপ্তির ছোঁয়ার অনুভূতি পেয়ে, প্রাপ্তিকে ছাড়িয়ে প্রাপ্তির দিকে ফিরে ওকে জড়িয়ে ধরে,কি ব্যাপার মহারাণী নিজের ইচ্ছায় জড়িয়ে ধরেছে আমি তো বিশ্বাস করতে পারছিনা।তবে এই জড়িয়ে ধরার মাঝে একটা মায়া লুকিয়ে আছে।দুইটা বছর এতো টা কাছে থেকেও এই মায়াটা বিষণ মিস করেছি।প্রতিটা রাতে তোমার ঘুমের পরে যখন তোমার দিকে তাকাতাম ইচ্ছে করতো তোমাকে একবার ছুঁয়ে দেখি। কিন্তু সাহস হতো না।

প্রাপ্তি -আমি ও মাঝে মাঝে তোমায় দেখেতাম।আমারো ইচ্ছে করতো তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে। কিন্তু কেনো জানি পুরোনো সেই দিন গুলোর কথা মনে হলেই আমার কাছে সব অসহ্য লাগতো।তখন মনে হতো আমি মরে যাওয়াটাই ভালো ছিলো।
প্রাপ্তি কথাটা বলতেই আয়ান প্রাপ্তির ঠোঁটের উপর আঙুল দিয়ে, আর কখনো এই কথা বলবেনা,আজকের জন্য ক্ষমা করে দিলাম।যদি এই কথা তোমার মুখ থেকে দ্বিতীয় বার শুনেছি আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবেনা।
এইভাবে কথা বলতে বলতে কখন দুজনে ঘুমিয়ে পড়লো মনে নেই।

সকালে প্রাপ্তি উঠেই ফ্রেশ হয়ে এসে আয়ানের পাশে বসে একটা শোলা নিয়ে কানে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো। আয়ানকে সুড়সুড়ি দিতেই লাফ দিয়ে উঠে বসে দেখে প্রাপ্তি একিবারে গোসল করেই ফ্রেশ হয়ে বসে আছে।

আয়ান -(দুষ্টামি করে)কি ব্যাপার মহারাণী একদম সকাল সকাল গোসল সেরে নিয়েছো।আমার জানা মতে রাতে তো আমি তোমার সাথে কিছু করেনি।

আয়ান -বাসায় যাবা না?আমাদেরকে তো বাসায় নামিয়ে দিয়ে তোমার আবার অফিসে যেতে হবে।তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও।বলে প্রাপ্তি উঠতে যাবে তখনি আয়ান হাত টেনে নিজের কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে নাকের সাথে নাক লাগিয়ে এইটা কিন্তু আমার আনসার নয়।
প্রাপ্তি নিজেকে ছাড়িয়ে, এইটাই আনসার বলে উঠে রুম থেকে চলে গেলো।ড্রইংরুমে গিয়ে দেখে রেশী রেডি হয়ে বসে আছে।
নিলিমা বেগম টেবিলে নাস্তা দিতে দিতে প্রাপ্তিকে আসতে দেখে, দেখনা প্রাপ্তি! রেশী সে সকাল থেকে রেডি হয়ে বসে আছে।কিছু খাচ্ছেও না।তোরা সত্যিই আজ চলে যাবি?

প্রাপ্তি -আম্মু এখন যেতেই হবে। দুইদিন পর তো চলেই আসবো। অরণী তো আছে এখন তোমার কাছে।আমিও থেকে যেতে পারতাম যদি তোমাদের জামাইয়ের অফিসে যেতে অসুবিধা না হতো।(রেশীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে)রেশী নাস্তা করছো না কেনো?

রেশী -তোমাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
সকালে নাস্তা করে আয়ানরা বেরিয়ে পড়িলো, রেশী আর প্রাপ্তিকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আয়ান অফিসে চলে গেলো।

আয়ানকে দেখেই অভ্র এগিয়ে এসে স্যার আপনি মিষ্টি খাওয়াবেন কখন?
আয়ান নিজের রুমে যেতে যেতে তোকে কতো বার বলেছি আমাকে স্যার বলে ডাকবিনা।তারপরেও তুই স্যার বলছিস কেনো?

অভ্র -এইটা তো অফিস। ফর্মালিটি মেনে তো চলতেই হয়। তুই অফিসের এমডি মানে আমাদের স্যার তোকে যদি সাবার সামনে আমি আয়ান বলে ডাকি তাহলে আমারও খারাপ লাগবে।সবাই বলবে আমি তোকে বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে ব্যাবহার করছি।

আয়ান -(অভ্রর কাছ থেকে ফাইল গুলো নিয়ে বসতে বসতে)বুজলাম! এখন বল কিসের মিষ্টি তোকে খাওয়াবো?

অভ্র -ভাবীকে কাছে পেয়ে সব ভুলে গেলি?
মিষ্টি দুইটা কারণে খাওয়াবি,
১/ভাবী তোর সাথে এখন ঠিক মতো কথা বলছে।
২/ আসিফ ভাইয়ার বিয়ে।
এখন বল কখন খাওয়াবি?

আয়ান -ওকে আজ রাতেই,তুই আমার বাসায় ডিনার করবি,আর এক সাথে মিষ্টিও খাওয়া হয়ে যাবে।

অভ্র -ওহ্ঃ তোকে তো একটা কথা বলা হয়নি।১২.০০টার সময় আমাদের নতুন ক্লাইন্ট আসবে আর বস বলছে মিটিং টা তুই সামলে নিতে।বস এটাও বলছে তুই ছাড়া ভালো প্রেজেন্টেশন কেউ দিতে পারেনা।
আচ্ছা আয়ান একটা সত্যি কথা বলবি?

আয়ান -তোর সাথে কখনো মিথ্যা বলেছি?

অভ্র-মিথ্যা বলিসনি ঠিকি অনেক কিছু লুকিয়েছিস।আমার মনে হয় এইখানে আসার আগে তুই বড় কোনো কোম্পানিতে চাকরী করেছিস।আমি কি ঠিক বলেছি আয়ান?
আয়ান -তোর হঠাৎ করে এইগুলো মনে হলো কেনো?

অভ্র- হঠাৎ নয় আমার সবসময় তোর কাজ দেখে, তোর লাইফ স্টেইল দেখে মনে হয়।

আয়ান অভ্রর কথা কিছু না বলে চুপচাপ ফাইল গুলো দেখছে আর ভাবছে কি বলবো অভ্রকে? আব্বুর নাম বললে অভ্র হয়তো চিনে যাবে।এতে আমার প্রাপ্তিকেও ছোটো করা হবে।

অভ্র -কিরে কিছু বলছিস না কেনো?

আয়ান -পরে একসময় বলবো।আচ্ছা যে ক্লেইন্ট আসছে ওদের কোম্পানির নাম কি?

অভ্র -চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি! আবিদ চৌধুরীকে ছিনিস ওনি নিজেই নাকি আজ আসবে।
আমাদের কোম্পানির কাজ নাকি ওনার খুব ভালো লেগেছে।সব তো তোর জন্যই বল?

আবিদ চৌধুরী! নিজের বাবার নামটা শুনেই আয়ানের সব কিছু যেন ঘুরপাক খাচ্ছে।অভ্রর দিকে আশ্চর্য ভরা দুটো চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আয়ান।নিজের হাত থেকে ফাইল গুলো রেখে ঘড়ির দিকে তাকালো আয়ান!সময় আর বেশি নেই হয়তো একটু পর চলে আসবে আবিদ চৌধুরী। কারণ সময়ের ব্যাপারে খুব সতর্ক তিনি।

অভ্র আয়ানের চোখমুখের অবস্থা দেখে কিরে কি হয়েছে তোর? ওনাকে ছিনিস নাকি আগে থেকে?নাম টা শুনে কেমন জানি মনে হচ্ছে তোকে।
আয়ান- অভ্র মিটিং টা তুই সামলে নিতে পারবিনা? প্রাপ্তিকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।ওই বাড়ি থেকে এসেছে,হয়তো মন খারাপ করে আছে ওকে এখন একটু সময় দেওয়া উচিত।

অভ্র -(অট্ট হাঁসি দিয়ে) তুই এতো বউ পাগল কেন বলতো? মিটিং শেষ করেই বাসায় চলে যাস কেউ তোকে আটকাতে যাবেনা।

এমন সময় অফিসের স্টাফ সাইদ এসে, স্যার আবিদ চৌধুরী এসে মিটিং এ যোগ দিয়েছেন বস আপনাকে ডাকছেন।

সাইদের কথা শুনে অভ্রর দিকে তাকালো আয়ান,
অভ্র -স্যার তাহলে আপনি যান আমি ফাইল গুলো গুছিয়ে আসছি।

আয়ান -সাইদ চলো!
আব্বুর কোম্পানি হয়তো এই কোম্পানি থেকে ছোটো হতে পারে কিন্তু আমার আব্বুতো আমার কাছে ছোটো নয়।অভ্র সবসময় বলে এই কোম্পানিটা আমার জন্যই আজ এতো দূর পর্যন্ত এসেছে।কিন্তু এইভাবে আব্বুর সামনাসামনি হতে হবে আমাকে আমি কখনোই ভাবিনি।

চলবে,,,,,,,,,,