Monday, June 30, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2377



Love At 1st Sight Season3 Part – 65

0

Love At 1st Sight
~~~ Season 3~~~

Part – 65

writer-Jubaida Sobti

পাগলী একটা মেয়ে এইটুকুতেই এই হাল করে ফেলেছে নিজের, মুখটাও সুখিয়ে আছে নিশ্চয়ই ব্রেকফাস্ট করেনি টেনশন করতে করতে,

স্নেহা : আ..আপনি যে বললেন আরেকটা সারপ্রাইজ আছে?

রাহুল : হুমম আছে! এক সেকেন্ড [ বলেই রিদোয়ানের দিক তাকালে সে রাহুলকে একটা তাদের মতোই ব্লাক রাউন্ড কেপ হাতে ধরিয়ে দেই, রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে মুচকি হেসে কেপটা মাথায় পড়ে নেয়, স্নেহাও মৃদু হাসলো রাহুল, রিদোয়ান, এবং আসিফ তিনজনের দিকই তাকিয়ে, কারণ তাদের তিনজনেরই সেইম ড্রেস, মাথায় সেইম স্টাইলের কেপ, মুখে পিচ্ছি করে একটা একটা মুছ রাখলে না তিনজনকেই চার্লি চাপকিন মনে হতো ]

রাহুল : কাম! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে মিডলের একসাইড করে দাড় করায় ]

এবং রাহুল গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় একদম মিডলে,সবদিকের লাইটগুলো সব আবারো বন্ধ হয়ে যায়, শুধুমাত্র দুটো সাদা লাইট জ্বলে রয়েছে, একটা স্নেহার মাথার উপরের দিক আরেকটি রাহুলের মাথার উপরের দিক, রাহুলের পেছনে একটি সাদা পর্দা এসে ঝড়ে পড়েছে, স্নেহার সাথে সাথে বাকিরাও সকলে অধিক আগ্রহীত চোখে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক,

রাহুল : সো্ মেনি মেমোরিস্! সো্ মেনি স্টুপিড ফাইটস্! সো্ মেনি ইনসা্ইডস্ জোকস্! সো্ মেনি ক্রেজিয়েষ্ট নাইটস! এভ্রিথিং ক্রেজি দ্যাট ইউ ডু অলোয়েজ সি্মস্ টু হ্যাপেন হোয়েন ইউ উইথ দেম স্নেহা!

[ বলেই মৃদু হেসে রাহুল তার হাত দিয়ে পেছনের পর্দার দিক ইশারা করলো, সাথে সাথেই পর্দা দু-ভাগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ,এবং পর্দার মাঝ থেকে একদম স্নেহার মতোই একটা লাইট পিংক কালারের বারবী গাউন পড়ে জারিফা বেড়িয়ে আসে, মাথা ঝুকে রাহুল তার এক হাত জারিফার সামনে এগিয়ে দিলে,জারিফাও মুচকি হেসে রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো, তালি দিলো সকলেই এক্সাইটেড হয়ে ]

জারিফা : ইয়র ফেভারিট কাইন্ড অফ পেইন, ইজ ইন ইয়র স্টোমাচ, হোয়েন আই মেক ইউ লাফ টু হার্ড!

– ইজ ইট ট্রু স্নেহা? [ চোখ দিয়ে জল যেনো এক্ষুণিই গড়িয়ে পড়বে, তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো স্নেহা, জারিফাও হাসলো স্নেহার চেহেরার অবস্থা দেখে, রাহুল তার আরেকহাত জারিফার কোমোড়ে রেখে একদম কাছাকাছিই এগিয়ে নিলো তারদিক, সফট ব্যাকগ্রাউন্ড টোন বাজছে, সাথে তাল মিলিয়ে নাচছে রাহুল এবং জারিফা ]

রাহুল : [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] স্টুপিড, আমার পুরো রাতের মেহনতে পানি ঢেলে দিবা নাকি! স্টার্ট করো সিংগিং!

জারিফা : [ চমকে উঠে ] ও হ্যাঁ! [ বলেই তাড়াতাড়ি গলা ঝেড়ে গেয়ে উঠলো ]

♪ মেরে দিলকি ইয়ে দুয়াহে ♪
♪ কাভি দূর তু না যায়ে ♪
♪ তেরে বিনা হো জিনা ♪
♪ বো দিন কাভি না আয়েএএ ♪

♪ তেরে সা্ংগে জিনা ইয়াহা আ~
♪ তেরে সা্ংগে মারজানা আ ~
♪ ইয়াদে কারেগি দুনিয়া আ ~
♪ তেরা মেরা আফসা্না আ ~

♪ তেরে জেসা্ ইয়ারে কাহা আ ~
♪ কাহা এসা্ ইয়ারানা আ ~
♪ ইয়াদে কারেগি দুনিয়া ~
♪ তেরা মেরা আফসা্না ~

[ এতোটুকু নেচেই জারিফা ঘুরে অন্যপাশে চলে যায় ]

রাহুল : ইউ! ইয়েস্ ইউ!

– দ্যা ওয়ান রিডিং দিজ, ইউ আর বিউটিফুল, ট্যালেন্টটেড,আমাইযিং এন্ড সিম্পলি দ্যা বেষ্ট এট বিয়িং ইউ! নেভার ফরগেট দ্যাট স্নেহা!

– উমহুম! আম নট টেলিং দিজ, শি টোল্ড মি!

[ বলেই পর্দার দিক হাত বাড়াতেই এগিয়ে এসে রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো শায়লা, লাইট স্কাই কালার বারবী গাউন পড়েছে সেও, মুচকি হাসলো স্নেহা, শায়লার ও তার মতো একই ড্রেস শুধু কালার ডিফারেন্ট দেখে, আর কার আইডিয়া হতে পারে এসব, রাহুলের আইডিয়া ছাড়া, অজানা কিছু নয় স্নেহার জন্য,

বেকগ্রাউন্ড টোন বাজছে, সিম্পলি ভাবেই নেচে তাল মেলাচ্ছিল শায়লা এবং রাহুল, হঠাৎ রাহুল শায়লার হাতে একটি চিমটি কাটলো, সাথেসাথেই শায়লার মাথায় এলো তার তো এখন গান করার কথা ছিলো, আশেপাশেই একবার তাকিয়ে মৃদু হেসে গলা ঝেড়ে গেয়ে উঠলো ]

♪ লোগো কো আতে হে ♪
♪ দো নাজার হাম মাগার ♪
♪ দেখো দো নেহি ই ~~

♪ ও জুদা ইয়াখাফা এ খোদা হে দুয়া ♪
♪ এসা্ হো নেহি ই~~

♪ খানা পিনা সা্থ হে ~
♪ মারনা জিনা সা্থ হে ~
♪ খানা পিনা সা্থ হে মারনা জিনা সা্থে হে ♪
♪ সা্রিইই জিন্দেগী ইইই~~

[ শায়লাও এতোটুকু নেচে তার বারবী গাউনটা ধরে ঘুড়ে অন্যপাশ চলে গেলো ]

রাহুল : স্নেহা! শি সে্ইড দ্যাট! ইফ ইউ আর এলোন, শি উইল বি ইয়র শেডোও! ইফ ইউ ওয়ান্ট টু ক্রাই, শি উইল বি ইয়র শোল্ডার, ইফ ইয় আর নট হ্যাপি, শি উইল বি ইয়র স্মাইল! এন্ড ইফ ইউ নিড হার, দেন শি উইল বি আলোয়েজ বি দেয়ার!

[ চোখ মুছছে স্নেহা হেসে হেসে, খুশি, আবেগ, ভালোবাসা সবই যেন একত্রে ঘিরে রেখেছে আজ স্নেহাকে, রাহুল পর্দার দিক হাত বাড়ালো, লাইট পার্পেল কালারের বারবী গাউন পড়েই এগিয়ে এসে রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো মার্জান, রাহুল ও হেসে মার্জানের পেছন হয়ে দাঁড়িয়ে কোমোড়ে হাত রাখে, আরেকহাতে মুঠি বেধে ধরে বেকগ্রাউন্ড টোনের সাথে তাল মিলিয়ে নাচাচ্ছে ]

মার্জান : [ স্নেহাকে চোখ টিপ মেরে ]

♪ মেরি জিত তেরি জিত ♪
♪ তেরি হার মেরি হার ♪
♪ সুনলে মেরে ইয়ার ♪

♪ তেরা গাম মেরা গাম ♪
♪ মেরি জান তেরি জান♪
♪ এসা্ আপনা পিয়ার ♪

♪ জানপে ভি খেলেংগে ♪
♪ তেরে লিয়ে লেলেংগে ♪
♪ জানপে ভি খেলেংগে তেরেলিয়ে লেলেংগে ♪

♪ সাবসে্এএ দুশমানি~~

[ ধীরেধীরে সরে গেলো রাহুল, সাথেসাথেই জারিফা আর শায়লা দৌড়ে এগিয়ে এসে মার্জানের সাথেই তাল মিলিয়ে নেচে একত্রে গেয়ে উঠলো ]

♪ ইয়েএএ দোসে্তি ই~~
♪ হাম নেহিই~ তোডেংগে এ~
♪ তোডেংগেএএ দাম মাগার ♪
♪ তেরা সা্থ না ছোডেংগে ♪

♪ ইয়েএএ দোসে্তি ই~~
♪ হাম নেহিই~ তোডেংগে এ~
♪ তোডেংগেএএ দাম মাগার ♪
♪ তেরা সা্থ না ছোডেংগে ♪

[ চারদিকের বাতি সব জ্বলে উঠলো, স্নেহাও দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো, তার আদুরে তিনোটা ফ্রেন্ডসকে,কড়া তালি দিচ্ছে বাকিরাও ]

নাফিসা ফুফি : [ দাদীর দিক তাকিয়ে ] ব্রাইড বলে একটা চিহ্ন আছে মা, ওদের ও এইভাবে সেইম ড্রেস দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো?

দাদী : সুন্দরই তো লাগছে, সবকটাকেই পরী মনে হচ্ছে আজ!

নাফিসা ফুফি : শুধু কালারগুলোই ডিফারেন্ট! আচ্ছা ওটাও ডিফারেন্ট রাখার কি দরকার ছিলো? সবই সেইম দিয়ে দিতে পারতে?

দাদী : দেখ! রিসিপশান রাহুলের, হয়তো সেই করেছে এসব! আর যাই করেছে এতে আমি খারাপ কিছুই তো দেখছি না, সুতরাং এতে আর মাথা না ঘামিয়ে ওদের খুশির সাথেই খুশি থাকলে তোর আমার সবার জন্যই বেটার হবে! [ বলেই দাদী অন্যদিক গেষ্টদের আপ্যায়ন করতে চলে গেলো ]

এইদিকে, রাহুল দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক, স্নেহাকে কতো খুশি দেখাচ্ছে তার পরিবারকে পেয়ে, এইভাবেই তো হাসিখুশিতে দেখতে চাই রাহুল তার স্নেহাকে, হঠাৎ নেহাল এগিয়ে এসে পাশে দাড়ালো রাহুলের,

রাহুল : হেইইই! ইউ লুক ডেসিং ব্রো!

নেহাল : নট রিয়েলি! বাট, থেংক্স ফর ইয়র কমপ্লিমেন্ট! [ হাসলো রাহুল নেহালের কথা শুনে ]

নেহাল : [ কাদো কাদো কন্ঠে ] ব্রো! ওর চেহেরাটা দেখ, একদম ফুটোন্ত ফুলের মতো হয়ে আছে, কিন্তু আমায় যদি এখন সামনে দেখে না?এমন বানাবে চেহেরাটাকে যেনো আমি সাত খুন একত্রে করেই ওর সামনে দাড়িয়েছি, [ আবারো হেসে উঠলো রাহুল ]

নেহাল : আচ্ছা! দেখ এসব মোটেও ভালো হচ্ছে না কিন্তু! আমি তোকে আমার সেড ফিলিং এক্সপ্লেইন করছি আর তুই কিনা হাসছিস!

রাহুল : তো কি করবো কাদবো?

– আরে বোকা এসব এক্সপ্লেইন আমাকে না করে ডিরেক্ট ওকে গিয়ে করনা? তারপরই তো কাজে আসবে! ইডিয়ট

নেহাল : ডিরেক্ট করবো? পা..পাগল হয়ে যাসনি তো তুই? সবার সামনে আমাকে ওর থাপ্পড় খাওয়ানোর ইচ্ছে আছে তাই না?

রাহুল : লিসেন্ট! না বলে এভাবে দেবদাস হয়ে বসে থাকার চেয়ে একটা থাপ্পড় না হয় খেয়েই নিবি! সো্ হোয়াট?দেন সুযোগ পেলেই লংগেষ্ট একটা কিস্ করে থাপ্পড়ের রিভেঞ্জ ও নিয়ে নিবি!

– [ ফিসফিসিয়ে ] কিসটা উইদাউট পার্মিশনে করবি, জোড় করে, তাহলে স্পেশাল টেষ্ট পাবি!

নেহাল : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] ওহোহো ব্রো স্পেশাল টেষ্ট এর তোমার এতো এক্সপেরিয়েন্স!

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কাধ থেকে নেহালের হাতটা সরিয়ে দিয়ে ] তুই না আস্ত একটা গাধা আসলেই! বউ আছে আমার ভুলে গিয়েছিস?

নেহাল : হোয়াট হোয়াট হোয়াট? বউকেও জোড় করে কিস্ করতে হয় নাকি? তাহলে বিয়ে করে কি লাভ, যদি নিজের অধিকারটাই জোড় করে নিতে হয়?

রাহুল : স্টুপিড! আওর লাভ ম্যারেজ,ইউ ফরগেট ইট!

নেহাল : [ জিহবায় কামড় খেয়ে ] ওওওহ! শিটটট মেন! আই মিন! ইউ ইটেড স্পেশাল টেষ্ট বিফর ইয়র ওয়েডিং রাইট? [ রাহুল আর কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে একবার তাকিয়ে স্নেহাদের দিক এগিয়ে গেলো, ছবি তুলছিলো সবাই একত্রে ]

জারিফা : কাম কাম জিজু! [ বলেই রাহুলের হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে ] স্নেহা! এই সবকিছু সারপ্রাইজের প্লান কিন্তু আমাদের জিজুরই ছিলো,তাই সব ক্রেডিট ওনাকেই দিতে হবে! কি বলেন জিজাজি?

রাহুল : নো এক্সুলি! মিউজিসিয়ানরা ব্যাকগ্রাউন্ড ইন্সট্রামেন্টালিস্ট করেছে, পুরো হলের ডেকোর ইভেন্টাররা করেছে, ড্রেস-কাস্টম গুলো সব ডিজাইনাররা রেডি করেছে, ফ্রেন্ডস ডাইলগ গুলো তোমাদের মন থেকে রেডি করে দিয়েছো, ডান্সার ডান্স শিখিয়েছে, আর আমি শুধু গানগুলো সিলেক্ট করে শিখালাম, সো্ সব ক্রেডিট আমি কি করে পাই বলো?

শায়লা : বাট জিজু! যে যাই কিছুই করুকনা কেনো এইসবকিছুর প্লান তো আপনারই ছিলো তাই না?

স্নেহা : আ..আপনি এতো রাতে,মিউজিসিয়ান, ডান্সার এদের সবাইকে কোথায় পেয়েছিলেন?

মার্জান : আই থিংক আমাদের যেভাবে রাতে ঘুম থেকে টেনে তুলে তুলে সং আর ডান্স শিখিয়েছে, ওদের ও ঐভাবে ঘর থেকে টেনেটুনে তুলে নিয়ে এসেছিলো! [ হেসে উঠলো সবাই একত্রে, হঠাৎ ]

আসিফ : [ এগিয়ে এসে ] হাসিটা তো দারুণই! বাট অলোয়েজ এভাবে এংড়ি মুডে থাকার কি দরকার! [ সবাই বুঝতে পেরে মার্জানের দিক তাকালো, মার্জান ও একদম নাকফুলিয়ে আড়চোখে তাকালো আসিফের দিক ]

শায়লা : [ হেসে ] এক্সুলি আপনার এংড়ি বার্ড বলে কথা!

আসিফ : ইয়েস্ আমার!

মার্জান : [ শায়লার দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি?

শায়লা : [ এদিকওদিক তাকিয়ে ] চ্যা..চ্যামেলি আন্টি! উফফ কিনা লাগছে আজ আন্টিকে,আরে হ্যা! আমরা এভাবে দাঁড়িয়ে আছি কেনো বলেন তো জিজু! চলেন চলেন ফটো তুলবো [ বলেই শায়লা, রাহুল এবং স্নেহা দুজনেরই হাত ধরে ডেকোর চেয়ারের দিক এগিয়ে নিয়ে চলে গেলো, জারিফা ও মুচকি হেসে তাদের পিছুপিছু চলে গেলো, মার্জান আসিফকে মুখটা ভেংগিয়ে চলে যাচ্ছিলো, ঠিক তখনিই আসিফ মার্জানের হাতটা চেপে ধরে টেনে শিরি দিয়ে উপরের দিক নিয়ে চলে যায়, আশেপাশে তাকিয়ে হাত ছুটিয়ে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলো মার্জান, কিন্তু কোনো লাভ হলো না, রুফ টপে এসেই হাতটা ছাড়লো আসিফ ]

মার্জান : আপনার সাহস তো কম দেখছিনা! সবার সামনে এইভাবে হাত ধরে টেনে আনার মানে কি? কি ভাববে সবাই?

আসিফ : টেনে না এনে যদি নরমালি ডেকে বলতাম আমার সাথে রুফটপে চলো, তাহলে কি তুমি আসতে? বলো? [ কিছু বললো না আর মার্জান চলে যাওয়ার জন্য পাশফিরবে, তখনিই, আসিফ বাহুর দু-দিক ধরে পেছনে ঠেলে দেওয়ালে লাগিয়ে দাড় করাই, অবাক চোখে তাকালো মার্জান, মুড রাখার জন্য চলে যাওয়াটা বেটার হবে ভাবলো, কিন্তু আবার কেনো যেনো কিসের টানে যেতেও মন চাইছিলো না ]

আসিফ : আচ্ছা এমনটা কি আসলেই হয়না? যেটা আমি ফিল করি সেটা কি তুমি একটু ও ফিল করোনা?

মার্জান : কিক..কিসের ফিল? হ্যা? কিসব আজেবাজে বকছেন? হাটেন তো, আমার গরম লাগছে, দ..দম আটকে যাচ্ছে, [ মুচকি হাসলো আসিফ, মার্জানের অবস্থা দেখে,পলক ঝুকিয়ে নিলো মার্জান ]

আসিফ : দমটা কি সবার সামনে গেলেও এইভাবে আটকে যেতে থাকে?

মার্জান : দে..দেখেন! আমার না আপনার সাথে এইখানে বাকোয়াস্ করার টাইম নেই, আমি [ বলেই থেমে গেলো, পারলো না আর কিছু বলতে, শিউরে উঠলো, আসিফ তার হাতদিয়ে মুখ থেকে গলা পর্যন্ত স্লাইড করে ছুয়ে দিচ্ছে মার্জানের, ঢোগ গিলছে মার্জান ও, এই অদ্ভুত অনুভুতি আর কখনোই হয়নি তার,নিশ্চুপ হয়ে গেলো একদম ]

আসিফ : [ ধীরেধীরে মার্জানের কানের দিক মুখ এগিয়ে ] একটা কথা বলি? [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মাথা নাড়ালো মার্জান ]

আসিফ : আমি আজ তোমাকে দেখেছিলাম!

মার্জান : [ কনফিউজড হয়ে ] ত..তো?

আসিফ : আমার বাসায় ডান্স প্রেক্টিসে্র পর যখন, তুমি রুমে কাপড় চেঞ্জ করছিলে!

মার্জান : হোয়াট? [ বলেই আসিফকে ধাক্ষে সরিয়ে ] কিক..কি বলছেন এসব?

আসিফ : [ হেসে ] ইয়েস্! বাট মিষ্টেক আমার ছিলো না, তোমারই ছিলো!

মার্জান : মানে কি?

আসিফ : মানে হচ্ছে তুমি যে রুমে কাপড় চেঞ্জ করছিলে, ঐরুমের ওয়াসরুমেই ছিলাম আমি,হঠাৎ ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখি তুমি.. [ হা করে চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে তাকিয়ে আছে মার্জান আসিফের দিক ]

আসিফ : [ হেসে মার্জানের থুতনিতে ধরে মুখটা বন্ধ করে দিয়ে ] রিলেক্স! বেশিকিছু দেখিনি, তুমি অলরেডি তখন কাপড় পড়েই ফেলেছিলে,জাষ্ট উপরের টপসটা পড়োনি!

মার্জান : উপরের টপসটা পড়িনি মানে এটা কি বেশিকিছু না?

আসিফ : বে..বেশিকিছু হতে যাবে কেনো? ইটস্ অ্যা সিম্পল!

মার্জান : ছি! এসবকে আপনি সিম্পল বলছেন? আপনি জানেন আপনি কি দেখেছন?

আসিফ : কি দেখেছি এটা এক্সপ্লেইন করে বলতে হবে নাকি?

মার্জান : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি? আসলেই একটা,

আসিফ : [ মার্জানের মুখে হাত দিয়ে ] আমি আসলেই একটা লাকি পার্সন! আর সাথে তুমি ও!

– শুকোর করো আমিই দেখেছি, আর কেউ না!

মার্জান : [ মুখ থেকে আসিফের হাতটা সরিয়ে ] আপনিই বা ঐরুমে কি করছিলেন বলেন তো?

আসিফ : [ হেসে পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে ] রুমটা আমার ছিলো! [ কথাটি শুনতেই অবাক হয়ে দু-হাত দিয়ে নিজের মুখ নিজে চেপে ধরলো মার্জান, মনে মনে ভাবতেও লাগলো এতোগুলো রুম থাকতে কেনো যে ঐ রুমটাতেই গিয়ে কাপড় চেঞ্জ করেছিলো সে! এই মুখ মানুষকে দেখাবে কি করে আজ, ভেবেই চেহেরাটাকে কাদো কাদো করে ফেললো ]

এইদিকে নিচে, জারিফা চারদিক খুজে বেড়াচ্ছিলো রিদোয়ানকে,হঠাৎ রাশুকে নাগাল পেলে তার থেকে জিজ্ঞেস করাই সে বললো গেষ্ট হাউজের দিকই যেতে দেখেছে সে রিদোয়ানকে, মনে মনে ভাবতে লাগলো জারিফাও,

– সবাই এইখানে আর এই মহানব্যক্তি কোনো গেষ্ট হাউজে বসে বসে ঘুমুচ্ছে কিনা কে জানে!

আর দেরী করলো না সে ও মুচকি হেসে রওনা দিলো, গার্ডেন পেড়িয়ে গেষ্ট হাউজের দিকই উঠে, দরজার লক চাপ দিতেই দরজা ওপেন থাকায় খুলে যায়, দরজা খুলে জারিফা ভেতরে এক কদম পা বাড়াতেই হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে যায়,

রিদোয়ান দাড়িয়ে আছে এবং তার বরাবরই, লম্বাচওড়া, সুন্দরই দেখতে এমন একটি মেয়েও দাঁড়িয়ে আছে,

জারিফাকে দেখে মেয়েটি তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে তার ঠোটের আশেপাশে ছড়িয়ে যাওয়া লিপ্সটিক গুলো মুছে নিচ্ছে, হতভম্বের ছাপ রিদোয়ানের চেহেরায় ও! কোনো ভুল সময়ে এন্ট্রি নিয়ে নিলো নাতো জারিফা, সবাই একজায়গায় আর রিদোয়ান আলাদা একজায়গায় তাও বা এই মেয়েটির সাথে,

চক্কর দিচ্ছিলো জারিফার মাথা, পলক ঝুকিয়ে নিয়ে গেষ্ট-হাউজের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো হুট করে, সাথেসাথেই পেছন থেকে দরজা খুলে রিদোয়ান,

– জারিফা ওয়েট!

বলেই চেচিয়ে ডেকে উঠলো, থামতে মন চাইছিলো না জারিফার, মাথায় অজস্র প্রশ্ন ঘুরঘুর করছে, এমন ও কোনো সিচুয়েশান চোখের সামনে এসে পড়বে কল্পনাও করতে পারেনি সে,তাই যত তাড়াতাড়িই পারছে হেটে গার্ডেনটাও ক্রস করলো, কিন্তু বাড়ির শিরির মুখোমুখি আসতেই হঠাৎ পেছন থেকে রিদোয়ান হাত টেনে ধরে ফেললো!

রিদোয়ান : [ হাপিয়ে উঠে ] কি হলো?

জারিফা : আ..আপনাকে খুজছিলাম রা..রাশু বললো এইদিকেই যেতে দেখেছে তাই..গিয়েছিলাম!

রিদোয়ান : ওকেই বাট! এইভাবে চলে এলে যে?

জারিফা : হয়তো ভুল সময়েই এন্ট্রি নিয়েই ফেলেছিলাম আমি, সরি আপনাদের ডিস্টার্ব করার জন্যে!

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] কি বলছো কি এসব? [ বলতেই হঠাৎ আশেপাশে তাকিয়ে দেখে লোকজন চেয়ে আছে, আর কিছু বললো না রিদোয়ান জারিফাকে সহ টেনে নিয়ে একপাশে গিয়ে দাঁড়ায় ]

রিদোয়ান : দেখো জারিফা! তুমি যেমনটা ভাবছো তেমন কিছুই না! [ জারিফা আর কোনো জবাব দিলো না, দু-হাত দিয়ে রিদোয়ানের হাত তুলে ধরে আংগুল দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে দিলো সাদা শার্টের উপর লেগে থাকা মেজেন্ডা লিপস্টিক গুলো, রিদোয়ান ও অবাক হয়ে তাকালো লিপস্টিক গুলোর দিক ]

জারিফা : কিছু মানুষ তার পুরোনো ন্যাচার ভুলতে পারে না রিদ!

রিদোয়ান : জারিফা এগুলো..

জারিফা : ব্যাস! আমার এক্সপ্লেইন চাই না!

রিদোয়ান : ইম্পসিবল জারিফা! আমি জানি তুমি কি ভাবছো, বাট যেটাই ভাবছো তেমন কিছুই হয়নি আমাদের মাঝে,

জারিফা : আমি ভাবছি? হ্যা? এসব আমি ভাবছি তাই না?

– আর নিজের চোখে যা দেখে আসলাম আপনার এক্স-গার্লফ্রেন্ড এর সাথে একা একটা ঘরে একত্রে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেটা?

– দাঁড়িয়ে ছিলেন নাকি কি করছিলেন সব এই লিপস্টিকের দাগই ক্লিয়ার করে দিচ্ছে মিষ্টার রিদোয়ান!

– ওহ সরি! ভুলে এক্স বলে ফেলেছি! আই থিংক প্রেজেন্ট গার্লফ্রেন্ডই হবে!

– [ মৃদু হেসে ] আচ্ছা প্রেজেন্ট এর মধ্যে আমি কয় নাম্বার গার্লফ্রেন্ড আপনার?

রিদোয়ান : দেখো জারিফা উল্টোপালটা কথা বলো না, তুমি এক কাজ করো, এইদিকে এসো ওর থেকেই জিজ্ঞেস করো.. [ বলেই জারিফার হাত ধরতেই ]

জারিফা : [ হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে ] আমার না ওর চেহেরা দু-বারে দেখার কোনো শখ নেই! আর আপনার কি মনে হচ্ছে আমি ওর কাছে যাবো এক্সপ্লেইন চাইতে?

– আমার ভালোবাসা শরীফ কেনো হলো, আপনি তো আপনার পুরোনো রুপই দেখিয়ে দিলেন!

রিদোয়ান : [ দাতকিলিয়ে ] দেখো! অহেতুক কথা বলে মাথা খারাপ করিও না!

জারিফা : ও ইয়াহ! অহেতুক কথা!

– [ নাকফুলিয়ে ] থেংক ইউ! [ বলেই হনহন করে ভেতরে ঢুকে পড়লো, রাগে ঘামছে রিদোয়ান,মুখটাও লালছে হয়ে গেছে, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে পার্কিং এর গাড়ির দিক চলে গেলো সে ও ]

এইদিকে,

রাহুল : [ স্নেহার কানে ] স্নেহা! তোমার গরম লাগছে?

স্নেহা : না তো!

রাহুল : বাট আই ফিল বেরী হট! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালেই দেখে রাহুল তার দুষ্টুমির ভংগিতে তাকিয়ে আছে তারদিক, স্নেহা চোখ সরিয়ে নিলো তাড়াতাড়ি ]

রাহুল : এক্সুলি এইদিকে মানুষ বেশি তা..তাই হয়তো, চলো না আমরা ঐ দিকটা কোথাও ঘুরে আসি! [ স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুলের মাথায় কি ঘুরঘুর করছে,তাই শুনেও না শুনার ভান করে রইলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] স্নেহাআআআ!

স্নেহা : [ চমকে উঠে তাকিয়ে ] আ..আপনার মাথা ঠিকাছে? আমরা এদিকওদিক ঘুরাঘুরি করলে মানুষ কি বলবে বলেন তো?

রাহুল : উফফ! অলোয়েজ মানুষের চিন্তা করো কেনো বলো তো?

স্নেহা : আপনি না আমার সাথে কথাই বলবেন না! [ মুখ গোমড়া করে ] এমনিতেই পুরো রাতভর টেনশনে রেখে গিয়েছিলেন! তারউপর এখন উল্টো-পাল্টা কথা বলে আমার মাথা আরো খারাপ করে দিচ্ছেন!

রাহুল : হুমমম! তোমার মাথা কোনদিন ঠিক ছিলো বলো তো? ম্যাথমেটিকস পড়তে পড়তে তো পুরো মাথার ঘিলু সহ নড়িয়ে ফেলেছো, আবার আসছে বলতে মাথা নাকি আমি খারাপ করে দিচ্ছি!

স্নেহা : আমার সাব্জেক্ট নিয়ে উল্টো-পাল্টা কথা বলা ছাড়া আপনার আর কোনো কাজ নেই?

– আপনি একদম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কি করে তড়িয়ে ফেলেছেন? ঘোড়ার ডিম?

রাহুল : [ হেসে ] ভাবছি তোমার একটা নিউটনের মতো হাজবেন্ড হলে কেমন হতো?

– হিহি দুজনে মিলেই সারাদিন সূত্র বের করতে থাকতে, আর রোমান্সের কথা তো তুমি ভুলেই যাও!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতে জোড়ে একটি চিমটি দিয়ে ] আই থিংক সেটাই বেটার হতো!

রাহুল : অহ রিয়েলি?

স্নেহা : জ্বি!

রাহুল : অনেক বড় কথা বলে ফেলেছো তুমি স্নেহা! [ বুকে হাত রেখে ] এইদিকে ভীষণ ব্যথা পাচ্ছি কথাটা শুনে! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : ঐ! কি হয়েগেছে তোমার বলো তো? কাল রাত থেকেই দেখছি মুখ ভেংগাতে আছো!

স্নেহা : সো্!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওয়েএএএট স্নেহা!

– বের করছি তোমার মুখ ভেংগানো! [ বলেই রাহুল স্নেহার হাত ধরে চেয়ার থেকে টেনে তুলে তার মায়ের দিক এগিয়ে যায়, স্নেহা কিছু বলবে তার সময় ও পেলো না আর, তখনিই রাহুলের মা তাকিয়ে ফেললো তাদের দিক ]

রাহুল : মা! আমরা একটু আসছি!

রাহুলের মা : কিন্তু কোথায় যাচ্ছিস রাহুল?

রাহুল : এ..এক্সুলি স্নেহার! ড্রেসে একটু প্রবলেম হয়েছে সেটা ঠিক করতে, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলেরদিক, মুহুর্তেই কতোবড় মিথ্যে বানিয়ে বলে দিলো মা কে ]

রাহুলের মা : ও! যা তাহলে! ঠিক করে আয়! আর হ্যা, তাড়াতাড়ি আসিস ওকে? কজ গেষ্টরা তোদের না দেখলে আবার কি ভাববে তাই না?

রাহুল : ওহো মা! ডোন্ট ওয়ারি! এই যাবো আর আসবো জাষ্ট! [ মাথা নাড়ালো রাহুলের মা, রাহুল চোখ টিপ মেরে স্নেহার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, পথে পথে আবার আটকাও পড়ছে বিভিন্ন রিলেটিভসরা সামনে পড়ায়, হ্যান্ডশেক ও করতে হচ্ছে সবার সাথে,

উপরে উঠবে ভাবলো, কিন্তু শিরি দিয়ে আরো একটা টাল রিলেটিভস, সবাইকে আবার জবাব দাও কোথায় যাচ্ছে, এই ভেবেই রাহুল আর উপরে উঠলো না স্নেহাকে নিয়ে,

দূর থেকে গীতালিকে দেখে ইশারা করলো কাছে আসতে, গীতালি কাছে আসতেই রাহুল স্টোর রুমের চাবিটা খুজে নিলো গীতালি থেকে, এর মধ্যেই আরেক মসিবত গীতালি একটা না দুটো না পাচ-দশটা চাবি ওয়ালা একটা গুচ্ছা ধরিয়ে দিলো! কি আর করার ওটা নিয়েই হাটা ধরলো রাহুল, পর্দা সরিয়ে ভেতরের দিক ঢুকে কর্নারের স্টোর রুমের দিক এগিয়ে গেলো,

স্নেহা : করছেনটা কি আপনি?

রাহুল : দেখে থাকো কি করছি!

স্নেহা : মোটেও ভালো হচ্ছে না রাহুল এসব! আমাদের জন্যই এতোবড় আয়োজন করা হলো, আর আমরাই কিনা ওসব ছেড়ে,

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা!

স্নেহা : গতরাত দেখেছেনই তো ফুফিও রেগে আছে আমাদের উপর! আর এইসময় ও যদি আমাদের ঐদিক না দেখে হয়তো আরোই রেগে যাবে!

রাহুল : আই ডোন্ট কেয়ার! ওনি রাগ করুক আর নাই করুক!

স্নেহা : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] আমি যাচ্ছি রাহুল! [ বলেই পাশ মুড়তে যাবে তখনি ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে আটকে ] এক সেকেন্ড! এইদিকে দাঁড়াও [ বলেই রাহুল পর্দা সরিয়ে বেড়িয়ে, সাজানো চেয়ার থেকে দুটো ফিতা খুলে নিয়ে আবারো ভেতরে এগিয়ে আসে, স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের হাতের ফিতাগুলোর দিক, রাহুল কিছু বললো না ডিরেক্ট স্নেহার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহার হাত দুটোও জোড়া করে পেছনে টেনে নিয়ে একটি ফিতা দিয়ে বেধে দেই ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরেহহ! কি করছেন আপনি?

রাহুল : তোমাকে আটকানোর এটাই একটা রাস্তা খুজে পেয়েছি স্নেহা!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] কিন্তু রাহুল!

রাহুল : শিসসস! ডোন্ট শাউট! [ বলেই বাকি ফিতাটা দিয়ে স্নেহার চোখের উপর বেধে দিলো ]

স্নেহা : আরেহ রাহুল! চোখ বাধার কি প্রয়োজন?

রাহুল : [ দরজায় চাবি ট্রায়াল দিতে দিতে ] চোখ না বাধলে তো চোখে রাস্তা দেখে চলে যাবা!

স্নেহা : আ..আর হাত?

রাহুল : হাত না বাধলে, হাত দিয়ে চোখেরটা খুলে ফেলবা তাই!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে ] তাহলে পা,টাও বাকি রাখলেন কেনো ওটাও বেধে দিন? [ হাসলো রাহুল স্নেহার কথা শুনে, আর দু-একবার ট্রাই করতেই দরজা খুলে যায়, স্নেহার বাহুতে ধরে ধীরেধীরে এগিয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকালো রাহুল, ভেতর থেকে দরজাটাও লাগিয়ে দিলো, স্নেহা কিছুই দেখতে পারছে না নিস্থব্দ হয়ে আছে, না কোনো রাহুলের স্পর্শ আছে শরীরে, না কোনো সারাশব্দ আছে তার ]

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] রাহুল! [ বলতেই পেছন থেকে দুহাত দিয়ে আগলে জড়িয়ে ধরে নিলো রাহুল, শান্তিতে শ্বাস নিলো এবার স্নেহা ]

রাহুল : বলো?

স্নেহা : খু..খুলুন এইবার?

রাহুল : আই থিংক! আমার যেটা চাই স্নেহা! সেটা তোমাকে এভাবে বন্ধিতে রাখলে আরো সুবিধা হবে মনে হচ্ছে!

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] আপনি!

রাহুল : [ হেসে ] রিলেএএক্স

[ বলেই হেসে স্নেহাকে তারদিক ফিরিয়ে, পেছনে ঠেলে একটি টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে দাড় করায় ]

স্নেহা : লেইট হচ্ছে রাহুল! সবাই আমাদের খুজছে হয়তো!

রাহুল : অনেক সেক্সি লাগছো আজ বুঝেছো?

স্নেহা : আ..আপনি কোথায় তাকাচ্ছেন বলেন তো?

রাহুল : শাট-আপ! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড! তাকাতেই পারি যেকোনো দিকে! [ স্নেহা কিছু বললো না আর ধীরেধীরে পাশমুড়ে যাচ্ছিলো, তখনিই রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার কোমোড়ে ধরে আলগে পেছনের টেবিলটিতে বসিয়ে দিলো ]

স্নেহা : রাহুল! এবার তো অন্তত খুলুন! [ বলতেই রাহুল চোখের ফিতাটা আলতো করে টান দিয়ে খুলে নিলো, স্নেহা তাকাতেই দেখে হাসছে রাহুল ]

স্নেহা : রা..রাহুল! মা হয়তো অপেক্ষা করছে..

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ] শিসসসস! স্নেহা! যেটা করতে এসেছি সেটা করেই তারপর যাবো!

বলেই নেশাগ্রস্থ চোখে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, স্নেহার চোখেও যেনো ছড়িয়ে দিচ্ছে এই নেশাগুলো! দুজনের নিশ্বাস ছুড়ে পড়ছে দুজনের মুখের উপর! পলক ঝুকিয়ে তাকিয়ে আছে রাহুল স্নেহার গোলাপী ঠোটগুলোর দিক, মুহূর্তেই কেপে উঠা স্নেহার ঠোটজোড়া গুলো মারাত্মক নেশা ছড়াচ্ছে রাহুলের মাথায়, আংগুল দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দিলো রাহুল স্নেহার ঠোটগুলোর উপর! চোখ বন্ধ করে কেপে উঠলো স্নেহাও, নাকের সাথে নাক চেপে লাগিয়ে রেখেছে দুজনই, রাহুল তার দুহাত স্নেহার পেছনে দিয়ে, স্নেহার হাতের বাধনটি খুলে দিলো, ছুটিয়ে দেওয়া হাতগুলো ধীরেধীরে রাহুলের কাধের উপরই এনে রাখলো স্নেহা!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : পেইন আছে ঠোটে এখনো?

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] ইয়েসস্ [ বলতেই রাহুল সরে যাচ্ছিলো তখনি স্নেহা রাহুলের কাধে জড়িয়ে রাখা হাত গুলো দিয়ে আটকে ফেললো, অবাক হয়ে তাকালো রাহুল ও]

স্নেহা : কিছু বলেছিলাম আপনাকে? [ বলতেই হঠাৎ রাহুলের মনে পড়লো ঐদিন স্নেহা বলে ছিলো,

– হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ পেইন ইন ইয়র লাভ, হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ স্মাইল ইন ইয়র পেইন! সো্ ইটস্ হার্ড টু লিভ ইন লাভ!

মুচকি হাসলো রাহুল, স্নেহাও ব্লাশিং হয়ে হেসে রাহুলের কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : ঐদিনের কামড়ের রিভেঞ্জ নিবে নাতো কোনো!

স্নেহা : অফকোর্স! [ বলতেই হঠাৎ রাহুলও হেসে তার ঠোট দিয়ে স্নেহার ঠোট জোড়া দখল করে নিলো,রাহুলের পেছনের চুল গুলো মুছড়ে ধরে রাখলো স্নেহা, সুখের অনুভুতিতে ডুব দিচ্ছিলো দুজনই ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 64

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 64

writer-Jubaida Sobti

– উফফফফ! স্নেহা! তুই রাহুলকে সন্দেহ করছিস! স্টুপিড! [ বলেই খাট থেকে দাঁড়িয়ে পড়লো, টাইম দেখলো ঘড়িতে ৩টা বেজে ২৫ মিনিট, ধীরেধীরে হেটে জানালার দিক এগিয়ে গেলো,নিস্তব্ধ চারদিক কুয়াশায় ভরা, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জানালার চৌকাটে হেলান দিয়ে বসলো ]

একা একা ফিল করছে স্নেহা, রাহুলকে ছাড়া কেমন যেনো নিস্বংগ লাগছে নিজেকে, হয়তো রাহুল কিছু মুহুর্ত পর চলেই আসবে কিন্তু যে কয়েক মুহুর্তই তাকে ছাড়া কাটাতে হচ্ছে সেগুলোই তো বড্ড কষ্টকর হয়ে পড়ছে, জল জমে এলো স্নেহার চোখে,অভিমান হচ্ছে রাহুলের উপর, খুব! না খুবই বেশী!

ঠান্ডায় পা টা ও জানালার চৌকাটের উপর কুড়িয়ে নিলো, বারবার ঘড়ির দিক তাকাচ্ছে আর চোখের জল মুছছে, মনে মনে ভেবেও নিয়েছে আসুক আজ রাহুল, এতোটাই না অভিমান করে থাকবে সারাদিন, এরপর আর কখনো তাকে এভাবে একা রেখে যাওয়ার কথা মাথায় আনবে না,

কেটে গেলো রাতটা,ভোরের আলো ফুটলো! চোখে সূর্যের হালকা কিরণ এসে পড়ছে স্নেহার, দরজায় কড়া নেড়ে চলছে এমন আওয়াজই ভেসে যাচ্ছে কানের ধারে,

হুট করে চোখ খুলে চমকে উঠে বসলো, হ্যা সত্যিই দরজায় কড়া নাড়ছে, নিজেকে এখনো সেই জানালার চৌকাটের উপর দেখে অবাক হলো স্নেহা, মাথা ঘুড়িয়ে বাহিরের দিক তাকিয়ে দেখলো, নিচে গার্ডেনের সব জায়গায়, সাদা এবং গোলাপী কম্বিনেশনের ফুল, সাদা কাপড়, হরেকরকমের সাদা জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে, পাশ ফিরে আবার বিছানার দিক তাকালো, রাতে যেমনটাই ছিলো বিছানা এখনও ঠিক তেমনটাই রয়েগেছে,

– তারমানে কি রাহুল এখনো বাসায় আসেনি? কোথায় গিয়েছে সে?

এসব ভাবতেই দরজায় কড়া নাড়ালো আবারো, তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে শাড়ী ঠিক করে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললো,

দাদী : গুড মর্নিং স্নেহা! মাফ করবে তোমার ঘুম ভেংগে দিয়েছি বলে,

স্নেহা : গুড মর্নিং দাদী! ইটস্ ওকে মাফ করার কি আছে, সকাল তো হয়েই গিয়েছে! আ..আসুন ভিতরে,

দাদী : না.. নাহ আমি আসবো না, তোমাদের জাগিয়ে দিতে এসেছি যেহেতু প্রোগ্রাম আজ সকালেই হচ্ছে তাই সবাইকে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে না?

– আর তোমরা দুজন তো ব্রাইড-গ্রুম তোমাদের তৈরী হতে তো আরো বেশীই সময় লাগবে!

স্নেহা : জ্বি!

দাদী : [ হেসে ] আচ্ছা ঐ শয়তানটা কোথায়? ঘুমিয়ে আছে এখনো নিশ্চয়ই, তাই না? ঠান্ডা পানি ঢেলে উঠিয়ে দাও ওকে!

– নাহলে ও তৈরী হতে হতে গেষ্ট সব বিদায় হয়ে যাবে! [ হাসলো স্নেহা দাদীর কথা শুনে ]

দাদী : আচ্ছা আমি যায়,তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি গীতালির দিয়ে তোমাদের দুজনের জন্য উপরেই ব্রেক ফাষ্ট পাঠিয়ে দিচ্ছি, খেয়ে তৈরী হয়ে নিও দুজন! ওকে ?

স্নেহা : জ্বি!

চলে গেলো দাদী, স্নেহা দরজা লাগিয়ে এগিয়ে এলো ভেতরে,সবই যেনো তার মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে, কি হচ্ছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না, গেলো কই রাহুল? রাত পেড়িয়ে সকাল হয়ে গেছে আর এখনো রাহুলের কোনো দেখা নেই!

মোবাইলটা এগিয়ে নিয়ে আসিফকে ফোন দিলো কয়েকবার, রিং যাচ্ছে কিন্তু রিসিবই করছে না,রিদোয়ানকে ও ট্রাই করলো কিছুক্ষণ, সে ও রিসিভ করছে না,আশ্চর্যের বিষয় হলো মার্জান, জারিফা, শায়লা তাদের তিনজনের কেউই ও ফোন রিসিভ করছে না,

রেগে মোবাইলটা খাটে ছুড়ে রেখে ওয়াসরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে, ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে বেরুলো মনে একটা আশা নিয়ে, রুমে ঢুকতেই যেনো রাহুলকে দেখতে পাই,কিন্তু সেটাও আর হলো না, টেনশন তো হচ্ছেই হচ্ছে সাথে রাগও উঠছে প্রচুর, রাহুলের উপর! কোথায় গেছে অন্তত সেটা বলে যেতে পারতো, এইভাবে না বলে কেউ যায়? ফোনটাও বাসায় রেখে গেছে, কারো কাছ থেকেও ইনফর্ম পাচ্ছে না! মুখ গোমড়া করে খাটে বসে পড়লো স্নেহা! হঠাৎ ঐ সময়,

গীতালি : [ দরজায় নক করে ] ভাবীই আসমু?

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] হ্যাঁ আসো!

গীতালি হেসে হেসে খাবার নিয়ে ঢুকে টেবিলে সাজিয়ে রাখছে সব, স্নেহা চেয়ে আছে!

গীতালি : [ ফিসফিসিয়ে ] ভাবী, ভাইয়া কই গেলো?

স্নেহা : ও..ওয়া..ওয়াসরুমে!

গীতালি : আইচ্ছা! হুনেন,একদম গরম গরম বানাইছি ভাবী! ভাইয়ারে লইয়া খাইয়া লন, তারফরেই ফাটাফাট রেডী হইয়া যান!

স্নেহা : গীতালি নেহাল কি বাসায় আছে?

গীতালি : হো বাসাই দো আছে কেন? কিছু কোওন লাগবো?

স্নেহা : না নাহ! কিছু বলতে হবে না!

গীতালি : [ মুখে হাত দিয়ে চিন্তা করতে করতে স্নেহার কাছাকাছি এসে ] হো ভাবী! আপনারে টেনশনে মনে অইতাছে! কিছু কি অইছে?

স্নেহা : না! কিক..কিছুই তো হয়নি! [ মুচকি হেসে ] স্লিপিং ফেইস্ হয়তো তাই লাগছে তোমার!

গীতালি : হুমমমম! কেরেক্ট!

স্নেহা : আ..আচ্ছা আমায় একটু নেহালকে ডেকে দিতে পারবে? কথা ছিলো ওর সাথে! এ..এক্সুলি ওর নাম্বার নেই আমার মোবাইলে তাই ফোন করতে পারছিনা!

গীতালি : পারবে মানেডা কি ভাবী? অবশ্যই পারবো, ব্যাস গীতালিরে শুধু অর্ডার করবেন দুই মিনিটে কাজ শেষ! [ হাসলো স্নেহা ]

গীতালি : আইচ্ছা ভাবী আমি যায়,বলতাছি নেহাল ভাইয়ারে [ বলেই বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

স্নেহা হাটাহাটি করছে রুমের এদিকওদিক,ছটফট করছে মনটাও, ব্রেকফাস্টগুলো ঐভাবেই পড়ে আছে একা একা আর খাওয়া হলো না, কিছুক্ষণ পরেই রুমের দরজা বারি দিতেই স্নেহা দৌড়ে গিয়ে দরজা খুললো,

নেহাল : গুড মর্নিং ভাবী!

স্নেহা : গুড মর্নিং! আ..আসেন!

নেহাল : থেংক ইউউ! [ বলেই ভেতরে ঢুকে উকি দিচ্ছিলো আশেপাশে, স্নেহা বুঝতে পারলো নিশ্চয় রাহুলকেই খুজছে ]

স্নেহা : এক্সুলি আমি রাহুলের ইনফর্ম নেওয়ার জন্য ডেকেছি!

নেহাল : [ অবাক হয়ে ] রাহুলের ইনফর্ম?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] হ্যা! আসলে ও বা..বাসায় নেই! রাতে হঠাৎ ঘুম ভাংগলে তখন বারান্দা দিয়ে একটু করে ওর গাড়ী বেড়িয়ে যেতে দেখেছিলাম, এরপর..আর…

নেহাল : রিলেক্স রিলেক্স ভাবী! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?

স্নেহা : এরপর আর বাসায় আসেইনি, আ..আপনি কিছু জানেন, কোথায় গেছে?

নেহাল : আমাকে ও তো কিছু জানায়নি! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে ফেললো ]

নেহাল : ওকে ভাবী ডোন্ট ওয়ারি ওকে? এক মিনিট আমি ফোন দিয়ে দেখছি! [ বলেই পকেট থেকে মোবাইল বের করছে, তখনি ]

স্নেহা : মো..মোবাইল বাসায় রেখে গিয়েছে!

নেহাল : বা..বাসায়?

স্নেহা : হুমম!

নেহাল : আচ্ছা ওয়েট! [ বলেই রিদোয়ান আর আসিফ দুজনকেই কল দিয়ে দেখলো কেউই রিসিভ করছে না ]

নেহাল : আজিব! রিদ আর আসিফ ও ফোন রিসিভ করছে না ঘুমাচ্ছে মে বি! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে আছে কিছু বললো না ]

নেহাল : আরে ভাবী! টেনশন করছো কেনো, হয়তো কোনো জরুরি কাজে গিয়েছে চলেই আসবে,

– না এসে যাবে কই?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আমাকে একবার বলে যেতেই তো পারতো!

নেহাল : আচ্ছা রিলেক্স ওকে? আমি যাচ্ছি খুজে দেখছি! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা, নেহাল তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে গেলো ]

ঘড়িতে সময় দেখছে স্নেহা! ১০টা বেজে চলছে, তৈরী হতে মন টানছে না,অস্থিরতা কাজ করছে মনে, কিন্তু দাদী আবার এসে যদি দেখে এখনো তৈরী হয়নি তখন ওনি কি ভাববে? এটা চিন্তা করেই আলমীরা খুলে কাপড়টা এগিয়ে নিলো,দরজা বন্ধ করতে যাবে আলমীরার হঠাৎ তখনি খেয়াল করলো রাহুলের কাপড়ের প্যাকেটটা নেই, পুরো আলমীরা তন্ন তন্ন করে খুজে দেখলো স্নেহা কোথাও নেই রাহুলের কাপড়টা,

– রাহুলের সাথে সাথে কাপড়টাও গাইয়েব হয়ে গেলো, এটা কেমনি সম্ভব, হয়তো রাহুল সাথে করে নিয়ে গেছে!

– না নাহ! তা কেনো হবে!

বুঝতে পারছে না স্নেহা কিছুই! মাথায় গুলিয়ে যাচ্ছে সব, আর সজ্য হচ্ছে না মাথার মধ্যে এসব,করবেনা আর রাহুলকে নিয়ে চিন্তা,

– [ কাদো ভাবে ] ও কি করেছে আমার চিন্তা? বলে যেতে পারতো আমাকে! কিন্তু সেটাও তো করেনি,জানে না আমি টেনশন করবো?

– হুহ! যাক গিয়ে যেখানে যাওয়ার! আমার কি! আমাকে বলে যাওয়া যেহেতু ইম্পর্টেন্ট মনে করলো না, তাহলে আমি ও কেনো এতো ইম্পর্টেন্স দিয়ে ভাববো? ভাববো না আর আমিও!

[ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কাপড়টা কুড়িয়ে নিয়ে পড়ে নিলো, চুল গুলো সব কাধের একপাশ এনে রাখলো, কাপড়ের পেছনের চেইনটা লাগাতে পারছে না,তাও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ালো, বুকটা ধরেই উঠলো স্নেহার, রাহুল এসেছে ভেবে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললো ]

আলিসা : হ্যালোও ভাবী! [ বলেই অবাক হয়ে, হা করে স্নেহাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকাতে লাগলো ]

স্নেহা : ভালোই হয়েছে এসেছো! এসো ভেতরে এসো! [ বলেই স্নেহা ভেতরে ঢুকে পিঠের দিক ইশারা করে দেখিয়ে দিলো যাতে চেইনটা লাগিয়ে দেই ]

আলিসা : মাশাল্লাহ! ভাবীইই ইউ লুক লাইক প্রিন্সেস সিন্ড্রেলা!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] চেইনটা লাগিয়ে দাও!

আলিসা : আহা! এতোক্ষণ এটা নিয়ে ফাইট করছিলে বুঝি!

স্নেহা : হু!

আলিসা : [ চেইন লাগিয়ে দিতে দিতে ] ভাইয়া কোথায়?ওকে বললেও তো লাগিয়ে দিতো! হুম? [ মুচকি হেসে ] আরে একটু চান্স নিতো আরকি!

স্নেহা : থাকলেই তো বলবো!

আলিসা : মা..মানে? [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে খাটে গিয়ে বসে পড়লো ]

আলিসা : [ অবাক হয়ে স্নেহার পাশে গিয়ে বসে ] ভাবী হোয়াট হ্যাপেন!

– টেল মি? [ স্নেহা কেদে কেদে সব খুলে বললো আলিসাকে, টেনশনে পড়ে গেলো এখন আলিসা ও, মাথায় আসছে না কিছু ]

আলিসা : আচ্ছা ভাবী ডোন্ট ওয়ারি এন্ড ডোন্ট ক্রাই ওকে? আমি যাচ্ছি নেহাল ভাইয়ার কাছে, কোনো ইনফর্ম পেয়েছে কিনা জেনে তোমাকে জানাচ্ছি! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা, আলিসা বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা উঠে গিয়ে দরজা বন্ধ করতে না করতেই হঠাৎ আবার বারি দিলো দরজায়, আজ বোধ হয় দরজা খুলতে খুলতেই মরে যাবে স্নেহা, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে দরজাটা আবার খুলতেই হুট করে দৌড়ে রুমে ঢুকলো রাশু ]

স্নেহা : রাশু তুই?

রাশু : হ্যাঁ আমিই!

স্নেহা : কবে এলি? আর বাকিরা ও এসেছে? মা,বাবা, জারিফা, শায়..

রাশু : মা আর বাবা এসেছে, বাকিরা আসেনি!

স্নেহা : কেনো আসেনি?

রাশু : আরে আমি কি করে বলবো বলো তো? নাটকবাজ ফ্রেন্ড কতোগুলো বানিয়েছো,নাটক করতে করতে শেষ ওরা! রাতে ভালো করে আমায় ঘুমুতেও দেই না,

– কাল রাতে কি করেছি জানো তিনোটাকে নিচে রেখে আমি একাই রাজার মতো খাটে ঘুমিয়েছি!

স্নেহা : কিক..কিভাবে?

রাশু : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আরে শুশু করে দিয়েছিলাম খাটে! তাই ওরা কেউই খাটে ঘুমুতে চাইনি!

স্নেহা : [ চুল আছড়াতে আছড়াতে ] বড় হচ্ছিস রাশু, তাও এখনো বিছানায় ছিঃ

রাশু : আরে আমার কি দোষ? একটাই ওয়াসরুম মাত্র ,এর মধ্যেই এরা কেউ না কেউ ওটাই ফিট হয়ে থাকে, তাই আমিও কন্ট্রোল করতে পারিনি! এমনিতে ভালোই করেছি, এবার থেকে ওয়াসরুম সবার আগে আমাকেই ফ্রি করে দিবে,

– আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তো চোখের সামনেও দেখিনি তিনোটাকে, দিনটা ভালো ভালোই যাবে মনে হচ্ছে! [ বলেই খাটে আধবসা হয়ে গা হেলিয়ে শুয়ে পড়ে ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] আমার ফোনটাও তো রিসিভ করেনি, কোনো কালকের ব্যাপার গুলো নিয়ে রেগে আছে নাকি আমার উপর?

রাশু : এইইই স্নেহা! ওদের চিন্তা বাদ দাও! রিমোটটা কোথায় লুকিয়ে রেখেছো বলো তো?

স্নেহা : আজিব! রিমোট কেনো লুকিয়ে রাখবো? টেবিলেই আছে!

রাশু : অও সরি! হ্যা হ্যা! [ বলেই রাশু রিমোট এগিয়ে নিয়ে টিভি অন করে দেখতে লাগলো ]

কিছুসময় পেড়িয়ে যাওয়ার পরই! রাহুলের কাজিন রোহানী আর জাফসিন ও তৈরী হয়ে এসে রুমে ঢুকলো, স্নেহা ড্রেসিং এর চেয়ারে বসে আছে আনমনা হয়ে,

রোহানী : গুড মর্নিং ভাবীইইই! [ চমকে উঠলো স্নেহা ]

জাফসিন : ওয়াও ভাবী! ফেরী লাগছে আজ ড্রেসটাই!

রোহানী : উমম! মাশাল্লাহ বল মাশাল্লাহ!

জাফসিন : [ হেসে ] হ্যাঁ হ্যাঁ! মাশাল্লাহ! [ মৃদু হাসলো স্নেহা ]

জাফসিন : [ হঠাৎ রাশুর দিক চোখ পড়াই ] হেইইই বেবী! হাও আর ইয়?

রাশু : গুড! [ বলেই আবার টিভির ধ্যানে চলে গেলো, হেসে উঠলো রোহানী আর জাফসিন রাশুর কান্ড দেখে ]

রোহানী : বাই দ্যা ওয়ে ভাবী! আমাদের কেমন লাগছে বলো তো?

স্নেহা : অনেক সুন্দর!

জাফসিন : সো্ ভাবী তোমার হেল্প করতে চলে এসেছি! আমরা,

স্নেহা : ভালোই করেছো, আমার তো মাথায়ই আসছে না কি সাজবো!

রোহানী : ডোন্ট ওয়ারী ভাবী,আমরা আছিনা, এমন ভাবে সাজাবো, রাহুল ভাইয়ার তো হুশই উড়ে যাবে তোমায় দেখে [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে রইলো ]

জাফসিন : কি হয়েছে ভাবী?

স্নেহা : [ মৃদু হেসে ] কিছু না!

জাফসিন : আচ্ছা! [ বলেই সাজাতে শুরু করে দিলো, রোহানী চুল কার্ল করে দিতে লাগলো স্নেহার ]

আধ ঘন্টা হতেই, হঠাৎ ঢোল বাজনার আওয়াজ এলো,

রাশু : আরে ডান্স শুরু হয়ে গেছে! [ বলেই একলাফে খাট থেকে উঠে জানালার দিক এগিয়ে গিয়ে চেচিয়ে উঠলো ]

– ওয়াওও পপকর্ন ও আছে! [ বলেই রিমোট দিয়ে টিভিটা অফ করে দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, রোহানী আর জাফসিন হাসতে লাগলো রাশুর কান্ড দেখে ]

১১টা ৩০ বাজছে, সাজ শেষ স্নেহার! বসে আছে রুমে,

রোহানী : ভাবী! এখন শুধু রাহুল ভাইয়ারই অপেক্ষা, ও আসলেই দুজন একসাথে ওয়াক দিয়ে নামবে, ওয়াওওও! কি দারুণ লাগবে তোমাদের!

জাফসিন : কিন্তু রাহুল ভাইয়াকে তো দেখলামই না! ও কোথায়?

স্নেহা : জানিনা! [ জাফসিন অবাক হয়ে একবার স্নেহা আরেকবার রোহানীর দিক তাকালো ]

রোহানী : ভাবী! আর ইউ ওকে?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] নেহাল ও গিয়েছে আলিসা ও গিয়েছে রাহুল কোথায় এটার ইনফর্ম আনতে, কিন্তু কেউই কোনো ইনফর্ম নিয়ে এলো না এখনো, দাদী এসে জিজ্ঞেস করলে আমি কি জবাবটাই দিবো?

জাফসিন : বাট ভাবী! আই কান্ট আন্ডার্ষ্ট্যান্ড এনিথিং! একটু ক্লিয়ার করে বলো! [ স্নেহা কাদো কন্ঠে খুলে বললো সব তাদের ]

রোহানী : ওকে ওকে ভাবী! কেদোনা প্লিজ নয়তো তোমার সাজ নষ্ট হয়ে যাবে!

স্নেহা : যার জন্য সাজলাম সেই তো নেই! তাহলে আর সাজ রেখে কি করবো?

জাফসিন : আরে ভাবী চিন্তা করছো কেনো? চলে আসবে ভাইয়া, হয়তো কোনো কাজে আটকে পড়েছে!

[ স্নেহা ও মন বেধে বুঝ দিচ্ছিলো নিজেকে,এক একটা মুহুর্ত কতো কষ্টের হয়ে কাটছে সে কাউকেই বুঝাতে পারছে না, বুঝবেও না আর কেউ, যার বুঝার সেই ও তো বুঝলো না, আলিসা এলো কিন্তু রাহুলের কোনো ইনফর্ম আনলো না সাথে,কিভাবে আনবে সেও? পেলেই তো আনবে,এরইমধ্যে দাদী তিনবার এলো গেষ্ট সব এসে গেছে বলার জন্যে, রাহুলকে খুজলে রোহানী আর জাফসিন বারবার ওসাশরুমে গিয়েছে রাহুল, এই বলেই ম্যানেজ করে নিলো দাদীকে, কিন্তু আর কতোক্ষণ বানাবে এসব বাহানা? ]

আলিসা : এই নেহাল ভাইয়াটাও না ফোন ধরছে না,এমন করে নাকি কেউ?

রোহানী : সব গেষ্টই চলে এসেছে,আর কতোক্ষণ এভাবে বাহানা বানাতে থাকবো আমরা?

হঠাৎ দরজায় নক পড়লে, জাফসিন গিয়ে দরজা খুললো,

রাহুলের মা : হোয়ার ইজ ব্রাইড এন্ড গ্রুম? [ বলেই ভেতরে ঢুকে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ওয়াওও মাই প্রিন্সেস মাশাল্লাহ! [ স্নেহা উঠে সালাম করবে পা ধরে,তখনিই রাহুলের মা স্নেহাকে আটকে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুলের মা : রাহুল কোথায়? [ চুপ করে আছে সবাই, একে অপরের দিক তাকাতে লাগলো ]

দাদী : [ রুমে ঢুকে ] হয়েছে এবার? সবাই অপেক্ষা করছে তোমাদের! ১২টা বেজে ওভার হয়ে যাচ্ছে!

– আর রাহুল কোথায়? ও এখনো রেডি হয়নি? [ সবাই চুপ করে থাকায় দাদীর কেনো যেনো সন্দেহ হলো,কিছু একটা লুকাচ্ছে তারা ]

দাদী : [ স্নেহার কাছে গিয়ে ] স্নেহা! কি হয়েছে বলো তো? সব ঠিকাছে?

– রা..রাহুল কোথায়?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] দাদী! জানিনা রাহুল কোথায়!

– রাতে ঘুম ভাংগতেই উঠে দেখি রুমে নেই! বারান্দার দিক লাইটের আলো আসায় এগিয়ে গেলে দেখি, গেইট দিয়ে ওর গাড়ী বেড়িয়ে যাচ্ছে, জাষ্ট এইটুকুই আর কিছুই জানিনা,কোথায় গিয়েছে সেটা আমাকেও বলে যায়নি!

রাহুলের মা : বলে যায়নি মানে আজিব? ফোন করেছো ওকে?

স্নেহা : ফোন বাসায় রেখে গিয়েছে!

রাহুলের মা : এসব কান্ড করার সময় এখন? সব গেষ্ট ও চলে এসেছে,ওকে খুজলে কি জবাব দেবো?

দাদী : জ্বালিয়েই ছাড়ছে ছেলেটা আমায়! ভেবেছি বিয়ের পর অন্তত সব ঠিক হয়ে যাবে!

– [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] তুমি আবার কাদছো কেনো? স্ট্রং থাকো, আসলে একদম পানিশমেন্ট দিবে, কাল তো অনেক ভালোবাসা দেখিয়েছে!

রাহুলের মা : আচ্ছা টেনশন করোনা কেউ! এক কাজ করো তোমরা স্নেহাকে নিয়েই নিচে চলে আসো!

– আমি দেখছি ও কোথায়! [ বলেই বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

দাদী : তুমিই এসো স্নেহা! ও তো আর ভাবলো না আমার কথা, ওর যা ইচ্ছে হয় তাই করে শুধু! [ বলেই মুখটা কালো করে বেড়িয়ে গেলো দাদী ও ]

[ মাথা ঘুরছে স্নেহার টেনশনে, হাত-পা কিছুই চলছিলো না সবই যেনো অবোশ হয়ে গেছে ]

আলিসা : চলেন ভাবী! নিচে! এরমধ্যেই হয়তো চলে আসতে পারে ভাইয়া!

[ কিছু বললো না আর স্নেহা ও,হাটা ধরলো, ধীরেধীরে নামছে শিরি দিয়ে, পুরো ড্রইং রুমটাই হলরুমের মতো সাজিয়ে নিয়েছে গেষ্টদের জন্যে, মুগ্ধকর সাজের মতোই হয়েছে সবকটা, তবে এসব দেখেও মনে আনন্দ ফুটছে না স্নেহার, কারো একজনের শূন্যতায় ভুগছে সে, তাকিয়ে আছে চারদিক থেকে সবাই, অপরুপ লাগছে স্নেহাকে, চোখ সরছিলো না কারোরই, শিরির লাষ্ট স্টেপ আসতেই হঠাৎ উপর থেকে ফিতা দিয়ে ছোট কার্ডের মতো কিছু একটা ঝুলে পড়লো স্নেহার সামনে, চমকে উঠলো হঠাৎ স্নেহা! বাকিরা ও ভয় পেয়ে গেলো হঠাৎ ছিটকে এসে পড়াই!

কি জিনিস দেখার জন্য ধীরেধীরে হাত দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দেখলো স্নেহা, হাতের স্পর্শ লাগতেই হঠাৎ চারদিকের বাতি সব বন্ধ হয়ে যায়, শুধু স্নেহার মাথার উপরই একটা সাদা বাতি জ্বলে উঠেছে,অবাক হয়ে উপরের দিক তাকালো স্নেহা, কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না, সামনের দিক থেকে ও আরও দুটো নীল রঙের বড় বড় বাতি জ্বলে উঠলো হঠাৎ, ভালো করে খেয়াল করে তাকালেই দেখে ব্লাক কোর্ট, ব্লাক শু,হোয়াইট শার্ট, মাথায় ব্লাক কেপ পড়ে দুজন একই পোজ দিয়ে মাথা বাকা করে দাঁড়িয়ে আছে, দু-দিক থেকে হাতে দুটো শানাই এগিয়ে নিলো, সাথে সাথে সাদা বাতির ফোকাস্ পড়লো তাদের উপর, এইবার আর তাদের চিনতে কারোই অসুবিধা হলো না, রিদোয়ান আর আসিফই ছিলো,

স্নেহা তাদের দেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পা দিয়ে দু-কদম বাড়াতেই,

আসিফ : [ মাউথ স্পিকারটা কানে তাড়াতাড়ি ঠিক করে ] নো, নো নো স্নেহা! স্টেই হেয়ার!

[ থেমে গেলো স্নেহা, বাকিরাও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

রিদোয়ান : স্নেহা! দিজ ওয়ান ফর ইউ! ফাষ্ট টাইম স্পিকারে সিংগিং করবো, আওয়াজ বেসূরা হলেও একটু তারিফ টারিফ করে দিও কেমন, [ কাদো কন্ঠে ] পুরো রাতের মেহনত আমাদের! [ হেসে উঠলো সবাই, স্নেহা তো অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে, শানাই বাজিয়ে উঠলো রিদোয়ান এবং আসিফ দুজনেই, সাথে তাল মিলিয়ে ডান্স ও করছে, কান বোধহয় ফেটেই যাবে ব্যাকগ্রাউন্ড টোনে ]

হঠাৎ হার্ট বিট করতে লাগলো স্নেহার,কানে খুব চেনা একজনের আওয়াজ ভেসে আসলো,কিন্তু দেখা যাচ্ছিলো না তাকে,

– ♪ ইয়াহ বেবী হোয়েন ইউ সি্ মি কামিং ♪
♪ ইয়াহ ইউ বেটার রান ফর কাভার ♪

♪ ইয়াহ কজ ইউ নোও হোয়েন আই ফাইন্ড ইউ নোও ♪
♪ ইয়াহ আই এম গোন্না বি ইউর লাভার♪

আসিফ : ♪ তুঝসে্ লোগ কাহেংগেএএ ♪

রিদোয়ান : ♪ না কার পিয়ার মুঝেএএএ ♪

আসিফ : ♪ মে তো লাখ বুরা হু ~ নিন্দ ছুড়া লু ~ হোশ উড়া দু ♪

রিদোয়ান : ♪ মে তো বাহোমে লে কে ~ রাহ ভুলা দু ~ বাত বানা দু ♪

আসিফ, রিদোয়ান – ♪ চাহে জাহান ♪ দিল কো ছুপা~আআ ♪

♪ বাতোহি বাতোমে ♪
♪ দো মুলাকাতো মে, লে লু ♪

রাহুল – ♪ বাচনা এই হাসি্নো ♪

♪ লো মে আগাইয়া ♪

[ তালি দিয়ে উঠলো সবাই, স্নেহার জানে পানি এলো এইবার তার রাহুলকে দেখে ]

রাহুল – ♪ এই বাচনা এই হাসি্নো ♪
♪ লো মে আগাইয়া ♪

♪ হুসো্নে কা আশিক ♪
♪ হুসো্নে কা দুশমান ♪

♪ আপনি আধাহে ইয়ারো সে্ জুধা হে হো ♪

♪ বাচনা এই হাসি্নো ♪

♪ লো মে আগাইয়াআআ ♪

[ ঘুড়ে এসে সামনে, স্নেহার কাছাকাছি দাড়ালো রাহুল, স্নেহা ভালো করেই উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখছে রাহুলকে,রাহুল মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,

আগেই তো বলেছিলো স্নেহা, রাহুলকে জেক এর চেয়েও হ্যান্ডসাম লাগবে ড্রেসটাই! এতোটা কিউট লাগছে আজ স্নেহার রাহুলকে ইচ্ছে করছে এক্ষুণি গিয়ে জড়িয়ে ইচ্ছে মতো চুমু দিবে, এরই মধ্যে হঠাৎ আবেগে চোখের জল জমে এলো, আশেপাশের সবাইও তাকিয়ে আছে তাদের দুজনের দিক,গড়িয়েই পড়বে এক্ষুনি স্নেহার চোখের জল, তাই তাড়াতাড়ি পেছন মুড়ে চলে যাচ্ছিলো, তখনি রাহুল স্নেহার অভিমান বুঝতে পেরে হাত ধরে কাছে টেনে বুকে জড়িয়ে নিলো হুট করে, স্নেহা ও ফুফিয়ে কেদে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে ]

গর্জনের মতো তালির আওয়াজ আসছে, ফটোগ্রাপার কেনো শুধু আশেপাশের অনেকেই তাদের এই আবেগময়ী ভালোবাসার মুহুর্তটা ক্যামেরাবন্ধী করতে ভুলছে না,

রাহুল : স্নেহা! স্টপ ইট! কাদছো কেনো?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] কথা বলবেন না আপনি আমার সাথে!

রাহুল : [ হেসে ] বাট স্নেহা!

– গতরাত তোমার মন খারাপ ছিলো বলেই আমি তোমার জন্য সারপ্রাইজটা প্লান করেছি!

স্নেহা : এজনই তো আগেই বলেছি আই ডোন্ট লাইক সারপ্রাইজ!

রাহুল : ওখে ওখে রিলেক্স! [ বলেই দু-হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে চোখের পানি মুছে দিলো ]

স্নেহা : [ কেদে কেদে ] আপনি আ..আমাকে এভাবে একা রেখে..

রাহুল : [ কান ধরে ] সরিইই! সরি!

স্নেহা : ই..ইডিয়ট!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ আই এম! [ হেসে দিলো স্নেহা ও ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : আরেকটা সারপ্রাইজ আছে দেখবা? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা কেদে কেদে ]

রাহুল : শিসস! স্নেহা প্লিজ! স্টপ দ্যি ক্রায়িং! [ বলেই পকেট থেকে টিস্যু নিয়ে আলতো আলতো করে স্নেহার চোখের নিচের পানি গুলো মুছে দিলো, চুপ করে চেয়ে আছে স্নেহা রাহুলের বুকের ধারে, রাহুল ও স্নেহার মায়াবী এই চেহেরার লোভ সামলাতে না পেরে, গালে আলতো একটি চুমু খেলো, আশেপাশের সবাইও রাহুলের রোমাঞ্চকর এই মুহুর্ত দেখে এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে উঠলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] আই লাভ ইউ!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] লায়ার! ইউ ডোন্ট লাভ মি!

– নয়তো আপনি আমায় রাতে, এভাবে একা রেখে যেতেন না, আমার কতো টেনশন হচ্ছিলো! আপনি অনেক খারাপ! অনেক অনেক খারাপ!

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! ওকে আম সরি! আর কক্ষনো হবে না এমন!

– [ স্নেহার দু-হাত নিজের হাতের মুঠোয় ধরে ] ইয়র প্রমিস! [ কন্ট্রোল করলো স্নেহা এবার নিজেকে ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] আই লাভ ইউ হুমম?

স্নেহা : [ রাহুলের কোর্ট মুছড়ে ধরে একদম নিঃশব্দেই আলতো সূরে বলে উঠলো রাহুলকে ] আই লাভ ইউ টু!

এতেই ছুয়ে গেছে রাহুলের মনটা,কানের ধারে স্নেহার চুল গুজে দিয়ে ব্লাশিং হয়ে হাসলো রাহুল, মনে মনে ভাবতে লাগলো পুরোরাত যেটা ভেবেছিলো সেটাই হয়েছে,

পাগলী একটা মেয়ে এইটুকুতেই এই হাল করে ফেলেছে নিজের, আর একটা দিন দূরে থাকলে কি হতো আল্লাহয় ভালো জানে , মুখটাও সুখিয়ে আছে নিশ্চয়ই ব্রেকফাস্ট করেনি টেনশন করতে করতে,

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 63

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 63

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে ] প..প্রমিস?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] ইউর প্রমিস! [ স্নেহা মুচকি হেসে খাবার ঠিক করে প্লেট এগিয়ে নিলো, আর রাহুল সেই মুগ্ধকর দৃষ্টিতে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে তার স্নেহাকে, স্নেহা হাত এগিয়ে খাবার মুখে তুলে দিলো রাহুলের, রাহুল হেসে হেসে স্নেহার দিক তাকিয়েই চিবাচ্ছে ]

রাহুল : ঐ!

স্নেহা : হু!

রাহুল : তুমি খাচ্ছো না যে?

স্নেহা : আপনি খেলেই আমার পেট ভরে যাবে!

রাহুল : ও রিয়েলিই!

স্নেহা : হুমম! কিছুটা এমনই, দুটো হার্টের একই স্পন্দন! [ তেডি স্মাইল দিলো রাহুল,স্নেহা তার ডায়লগ তাকেই ইউজ করছে, ঐদিনের সেই মুহুর্তটির কথাও মনে পড়ে গেছে রাহুলের ]

স্নেহা : [ খাবার এগিয়ে দিয়ে ] কি হলো? নিন!

রাহুল : এসব ডায়লগ দিয়ে আমার কাছ থেকে, রেহাই পাবা না স্নেহা! বুঝেছো! চুপচাপ খাবার মুখে তুলো!

স্নেহা : আচ্ছা আপনি এমন কেনো বলেন তো?

রাহুল : কেমন?

স্নেহা : আপনি আমাকে খাওয়ানোর সময় যখন এসব রোমান্টিক ডায়লগ ইউজ করেন,তখন কি আমি রিপিট অ্যান্সার করি? [ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার মুখের কাছে মুখ এনে তাকালো ]

স্নেহা : কিক..কি হলো?

রাহুল : তুমি! আমাকে রিপিট অ্যান্সার এই কারণে দাওনা, কারণ যখনি আমি তোমার চোখের দিক তাকিয়ে কথা বলি,তখনি তুমি তোমার সেন্স হারিয়ে ফেলো স্নেহা! [ হার্টবিট বাড়ছে স্নেহার রাহুলের এতোটা কাছাকাছির চাহনিতে,চোখ সরিয়ে নিয়ে নিচের দিক ঝুকে খাবার ঠিক করতে লাগলো তাড়াতাড়ি ]

রাহুল : [ হেসে ] তখন তুমি আমাকে কিনা ভয় পেতা স্নেহা!

স্নেহা : আর আপনি কি কান্ডগুলোই না করতেন মিষ্টার, ছিলেনই এমন ভয়ানক! তাই ভয় পেতাম!

রাহুল : [ স্নেহার মুখ ধরে তার দিক ফিরিয়ে ] আর এখন? [ তাকিয়ে রইলো স্নেহা ভীতু হয়ে রাহুলের দিক, তেডি স্মাইল দিয়ে উত্তরের অপেক্ষায় ভ্রু নাচাতে লাগলো রাহুল ও ]

স্নেহা : পাইনা এখন ভয়! [ বলেই মুচকি হেসে খাবারের হাতে রাহুলের গালটা টেনে দিলো ]

রাহুল : হোয়াট আর ইউ ডুয়িং স্নেহা! আম নট অ্যা লিটল বেবী!

স্নেহা : হোহ! তাই? [ বলেই রাহুলের অন্যপাশের গালটাও টেনে দিয়ে কিটকিটিয়ে হাসতে লাগলো, বললো না রাহুল ও আর কিছু, তাকিয়ে রইলো সেও মুচকি হেসে স্নেহার দিক, এই দামী হাসির কারণটুকুই তো সে হতে চেয়েছিলো ]

স্নেহা : [ হাসি চেপে ] সরি রাহুল! সরিই!

রাহুল : নোহ! নো নিড সরি! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকাতেই হঠাৎ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গালের সাথে গাল ঘষে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : আহহ! রাহুললল!

রাহুল : কেমন লাগছে এখন?

স্নেহা : আ..আপনার দা..দাড়ি!

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] সো্!

স্নেহা : আ..আই ফিল শি..শিভার! [ মুচকি হাসলো রাহুল স্নেহার কথা শুনে, নাক দিয়ে মুখ ছুয়ে গলার দিক আলতো একটি ফু দিলো, সাথেসাথেই স্নেহা শিহরিত হয়ে চোখ কুচকে বটে ফেললো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : ডিনার ফিনিশ করো!

স্নেহা : বাট! আ..আপনি..

রাহুল : আগে তুমি মুখে দাও! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : কি হলো? খাওও! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে সোজা ফিরে, মুখে তুলে নিলো খাবার ]

রাহুল : এখন আমায় খাওয়াও! [ তাকানো দূরের কথা, স্নেহা তো শুনে ও শুনলো না, রাহুল ও বুঝতে পেরে হাসলো, জোড় করেই স্নেহার হাতটা টেনে এগিয়ে নিয়ে আঙুলে একটা কামড় বসালো ]

স্নেহা : আরেহহ!

রাহুল : মুহূর্তেই এতো অভিমান করো কেনো বলো তো? [ স্নেহা রাহুলের মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিয়ে চুপ করে থাকে, রাহুল ও তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক, ইচ্ছে তো করছিলো যেনো খাবারের বদলে স্নেহাকেই কামড়াবে, বাট কি করার স্নেহা এতোটাই সফট যে আলতো কামড়েই ব্যথা পেয়ে যায়, অলরেডি ঠোটের ব্যথায় ভুগছে বেচারি, ধীরেধীরে আড়চোখে তাকালো স্নেহাও রাহুলের দিক ]

রাহুল : উফফফ! স্নেহা! এই লুকটা যখন তুমি দাও না! [ বলেই চোখ বন্ধ করে সোফায় মাথা হেলিয়ে দেই ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কি হলো?

রাহুল : কিছুই তো করিনি স্নেহা কেমনি হবে? [ স্নেহার মুখের কাছে মুখ এনে ]

– তবে তুমি চাইলে, শীঘ্রই হয়ে যাবে স্নেহা, ব্যাস একবার তোমার এই মুখে বলো, আমি মা হতে চাই রাহুললল!

স্নেহা : হোয়াটট! ক..কথা কোথায় ছিলো, আর আপনি কোথায় নিয়ে এলেন বলেন তো?

রাহুল : উমমম! এটাও ঠিক!

স্নেহা : পাগল একটা!

রাহুল : হুমম! এটাও ক্যারেক্ট!

স্নেহা : আজিব?

রাহুল : সবই ঠিক বলছো স্নেহা তুমি! আমার সাথে সব আজিবই হচ্ছে!

স্নেহা : রাহুললল!

রাহুল : আচ্ছা আচ্ছা! খাওয়াও না বসে আছো কেনো? খিধে লাগছে দেখছো না? [ পারলো না আর স্নেহা রাহুলের সাথে অভিমান করে থাকতে হেসেই দিলো, দুজন মিলে ডিনার শেষ করলো, স্নেহা রাহুলের গাল টেনে দেওয়ার সময় হাত থেকে লেগে যাওয়া খাবারের দাগ গুলো ও টিস্যু দিয়ে মুছে দিলো, অগোছালো রুমটাকে দুজন মিলেই গোছালো,বাট এরমধ্যে ও রাহুল তো আছেই স্নেহাকে ডিস্টার্ব করার জন্য, কখনো স্নেহার চুল ধরে খুশবো নিচ্ছে,কখনো স্নেহাকে কোমোড়ে হাত বুলিয়ে শিহরিত করছে, কখনো স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে আটকে রাখছে এমনই!

তবে এসবে স্নেহা বিরক্তিবোধ দেখালেও,মনেমনে রাহুলের এসব কান্ডগুলো তার ভীষণ ভালোই লাগছিলো ]

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জ্যাকেটটা খুলে রেখে সোফায় বসে ] বাহহ! কতোগুলো কাজই না করলাম আজ!

– এক্সুলি তুমি আরকি স্নেহা! এতো রাতে আবার রুম ক্লিন করার কি দরকার ছিলো বলো তো? সারভেন্টরা মর্নিং এ ক্লিন করতে আসতোই তো তাই না?

স্নেহা : অগোছালো রুম আমার পছন্দ না তাই! [ কোমোড়ে হাত দিয়ে ] আর আপনার ও বা পুরো রুমটা অগোছালো করার কি দরকার ছিলো বলেন তো?

রাহুল : নাইস্! [ With tedi smile ]

স্নেহা : হোয়াট? [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুলের নজরটা তার পেটের দিকেই চুপকে আছে, কুচকে বটে রাখা শাড়ীর আচলটা কোমোড় থেকে খুলে তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে দিলো স্নেহা, সাথেসাথেই রাহুল বিরক্তিবোধ একটা লুক দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : গুড নাইট! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে আংগুল দিয়ে ইশারা করে মুখের হাসিটি দেখিয়ে ] হ্যাপি তেডি স্মাইল! মিষ্টার রাহুল! [ রাহুল ও হেসে উঠলো স্নেহার কান্ড দেখে, পাশফিরে আর যেতে দিলো না স্নেহাকে, সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে হুট করেই কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : এখনিই তো ফুফিয়ে উঠলেন রুম গুছিয়ে, এখন আবার এনার্জি চলে এলো?

রাহুল : এনার্জি না স্নেহা! তোমাকে দেখলেই তো মনের মধ্যে রোমান্টিক একটা জোশ কাজ করে!

– [ চোখ টিপ মেরে ] বুঝলে?

স্নেহা : হহ..হে! [ বলেই হাত দিয়ে কপাল টিপে টিপে ] আ..আমিও তো রুম গুছিয়ে টায়ার্ড হয়ে গেছি হা..হাত পা..সবই ব্যথা করছে এখন!

রাহুল : [ স্নেহাকে খাটের মাঝে বসিয়ে দিয়ে ] ওহহ তাইই? এইদিকে দাও আমি ম্যাসেজ করে দিচ্ছি সব!

স্নেহা : না..নাহ! আ..আমি..আমিতো..

রাহুল : তুমিতো বাহানা বানাচ্ছিলে! তাই না? [ স্নেহা লজ্জা পেয়ে এদিকওদিক চোখকে মিটমিট করতে লাগলো ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] শুয়ে পড়ো!

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক, রাহুলকি সত্যিই শুয়ে পড়তে বলছে ]

রাহুল : কি হলো?

স্নেহা : নাহ! কিক..কিছুনা! [ বলেই আস্তে করে শুয়ে পড়লো, রাহুল ও টেবিল ল্যাম্পটা বন্ধ করে দিয়ে, কম্বল টেনে একই বালিশে স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে শুয়ে পড়লো, দুজনেরই তীব্র নিশ্বাসগুলো দুজনের মুখে এসে পড়ছে ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি এতো কিউট কেনো বলো তো?

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে ] আপনি এতো হ্যান্ডসাম কেনো বলেন তো?

রাহুল : [ হেসে ] ইডিয়ট! তুমি আজ শুধু আমার কথায় আমাকে বেক করছো, মাথায় কি ঢুকেছে কে জানে!

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] আপনি!

রাহুল : তাই? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা,রাহুল মৃদু হেসে স্নেহার নাকের উপর একটি চুমু খেয়ে, মাথার চুলে আংগুল দিয়ে বিলি কাটতে লাগলো, স্নেহার ও ভালোই লাগছিলো রাহুলের হাতের আলতো আলতো স্পর্শে, জাদু আছে মানতে হবে রাহুলের হাতের ছোয়াই! এতো শীঘ্রই স্নেহার চোখ বটে আসছিলো, এরই মধ্যে কবে যে স্নেহা ঘুমের জগতে পারি দিয়ে দিলো সে নিজেই ঠের পেলো না ]

রাত ২ টা বেজে ১০ মিনিট, ঘুম নেই রাহুলের চোখে, স্পোর্ট লাইটের হলদে আলোটুকুতে, মিটমিট করে স্নেহার চেহেরার দিক তাকিয়ে রয়েছে রাহুল! ভ্রু কুচকে রেখে ঘুমুচ্ছে স্নেহা! তারমানে স্নেহার মনের মধ্যে টেনশন জমে আছে এখনো! কিসের টেনশন করছে স্নেহা এই বিষয়টিও রাহুলের অজানা নয়!

টেনশন কেনো স্নেহার মনের মধ্যে, কোনো আতংকেরই বসবাস হতে দেবে না সে!এখন শুধু এই ইন্টেশনটাই মাথায় ঘুরঘুর করছে রাহুলের!

রাহুল : [ স্নেহার কপালের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে ] তোমাকে এতোটা ভালোবাসি যে, স্নেহা! তুমি চাইলে হয়তো পৃথিবীটাকে এনে দিতে পারবো না,তবে ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীটাকে ভুলিয়ে দিতে পারবো,

– তোমার দুঃখ গুলোকে হয়তো মুছে দিতে পারবো না,তবে দুঃখ্যের কারণ গুলোকে ভুলিয়ে দিতে পারবো,

– পৃথিবীর সব সুখ হয়তো এনে দিতে পারবো না,কিন্তু তোমায় সুখী রাখতে পারবো, তোমার চোখের অশ্রুকে হয়তো আটকে রাখতে পারবো না,তবে আদর করে সেই অশ্রু মুছে দিতে পারবো!

– তোমার ভালোবাসা আজ আমার কাছে এমন এক জিনিষ হয়ে গেছে, সেটা থেকেই আমি ভয় পাই, এই ভয় শুধু তোমাকেই ঘিরে স্নেহা!

[ ঘুমিয়েই আছে স্নেহা নিষ্পাপ হয়ে, আলতো করে ঠোটেও একটি চুমু খেলো রাহুল, কম্বলটা স্নেহার গায়ে ভালো করে টেনে দিয়ে ধীরেধীরে খাট থেকে উঠে দাড়ালো! রুমের এদিক-ওদিক হাটাহাটি করলো কিছুক্ষণ! দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহার দিক একপলক তাকিয়ে, সোফার উপর থেকে জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে পায়ে কের্চ লাগিয়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে!

আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই! সবাই এতোক্ষণে ঘুমিয়েই পড়েছে নিশ্চয়ই! বেলকনির দিক তাকাতেই দেখে নেহাল রেষ্টিং চেয়ারে বসে আছে একা! এগিয়ে গেলো রাহুল ও! টেবিলের উপর দু-তিনটে বেয়ারের বোতোল সাথে কয়েকটা সিগারেটের প্যাকেট ও ছিটিয়ে রেখেছে, বুঝতে পারলো রাহুল নেহাল ও টেনশন করছে,

রাহুল : [ নেহালের পাশে বসে ] একা একা বসে আছিস যে?

– আরে বেয়ার? আমি তো ভেবেছিলাম ডিরেক্ট এলকোহল খাবি! অওও সাথে স্মোকিং ও চলছে, বাহহহ! তোদের সময় এখন, খেয়ে যা খেয়ে যা!

নেহাল : ফূর্তিতে খাচ্ছি আমি! তাই না?

রাহুল : আরে তাহলে তোর টেনশন কিসের বলতো?

নেহাল : তুই জিজ্ঞেস করছিস?

রাহুল : [ হেসে ] এতো তাড়াতাড়ি দূর্বল হয়ে গেছিস?

নেহাল : মানুষ তখনই দূর্বল হয়,যখন সে নিজের কাছেই হেরে যায় রাহুল!

রাহুল : ভালো!

– ভদ্র!

– চাইল্ডিস!

– মেচর ও আছে!

নেহাল : কে?

রাহুল : কে আবার? শায়লা! [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবারো স্মোক করতে লাগলো নেহাল ]

রাহুল : এখন বলিস না যে তুই ওকে নিয়ে কিছু ভাবছিস না!

নেহাল : হুমম! ভাবছিলাম, ওকে নিয়েই ভাবছিলাম! কিন্তু কি হবে ভেবে বল?

রাহুল : জানিস, পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজ হলো কাউকে প্রথম দেখেই প্রেমে পড়া,আর পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো কাউকে লাভ এট ফার্ষ্ট সাইটে বিশ্বাস করা!

– সো্ টাইম তো লাগবেই?

নেহাল : আচ্ছা! রাহুল তো..তোর কি বিশ্বাস আছে লাভ এট ফাষ্ট সাইডে?

রাহুল : হেইইইই! মাই লাভ ইজ অলরেডি সাক্সেস মেন!

নেহাল : মা..মানে তোর লাভ এট ফার্ষ্ট সাইড ছিলো!

রাহুল : ইয়েস্!

নেহাল : ওয়াও মেন! ইউ আর সো্ লাকি!

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি ইডিয়ট! তোরটাও ঠিক হয়ে যাবে,

নেহাল : হাও মেন! কেমনি হবে, একে তো মমের রোং বিহেইভিয়ার! তারমাঝে ঐও আমায় ভুল বুঝতে লাগলো! কাল ইভিনিং এ ফ্লাইট! তারপর আমাদের মাঝে আর কিছুই থাকবে না, ভেবেছিলাম ভালোবাসার বদলে ভালোবাসা না পেলেও অন্তত ওর হাসিমাখা মুখের মেমোরিটা সাথে করে নিয়ে যাবো!

– এক্সুলি এভ্রিথিং ওয়াজ ফেট! আমার ভাগ্যে নেই এসব! [ বলেই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে উঠে দাড়ালো ]

রাহুল : রিয়েলি! আর ইউ গোয়িং টু অষ্ট্রেলিয়া টুমরো?

নেহাল : ইয়েস্ আই উইল লিভ! নয়তো আর কিসের আশায় থাকবো বল? [ হাসি দিলো রাহুল নেহালের কথা শুনে ]

নেহাল : তুই হাসতে থাক! তোরই হাসার সময় এখন! গুড নাইটটট! [ বলেই বেয়ারের একটি বোতোল হাতে নিয়ে চলে গেলো ]

রাহুল পা ছড়িয়ে বসে আছে ঐ দিকটাই, ঠান্ডা শীতল বাতাস আসছে বাহির থেকে, জ্যাকেটটাও গায়ে দেওয়া হলো না আর! আকাশের দিক তাকিয়ে দেখলো, চারদিক কুয়াশায় ঢেকে রেখেছে আকাশকে,
মনে মনে ভাবছে স্নেহাকেও আকাশের মতো কষ্ট থেকে এইভাবে ঢেকে রাখবে সে কুয়াশা হয়ে, মধুর সপ্ন মেখে ঘুমুতে দিবে, একবুক কষ্ট নিয়ে নয়,তখন আর স্নেহার ভোর কুচকে রবে না, ঘুমের মাঝে একটু একটু মিষ্টি হাসি ফুটবে,

হঠাৎ কাধে কেউ হাত রাখলো,পাশফিরে তাকাতেই,

বাবা : হোয়াট হ্যাপেন? এইখানে একা বসে আছিস যে? স্নেহা কোথায়?

রাহুল : রুমে আছে! ঘুমুচ্ছে!

বাবা : [ রাহুলের পাশে বসে ] তুই ঘুমাচ্ছিস না যে?

রাহুল : আসছে না ঘুম!

বাবা : হুমম! বুঝেছি কেনো আসছে না ঘুম! [ রাহুল অবাক হয়ে তাকালো তার বাবার দিক ]

বাবা : তোর দাদী সব বলেছে আমায়!

রাহুল : সো্ এখন কি তোমার সিস্টারকে সরি বলতে বলার জন্য এসেছো?

বাবা : নেভার! তুই কেনো সরি বলবি? সরি তো ও বলবে স্নেহাকে!

রাহুল : বাবা তোমার এই পজিটিভ থিংকিং গুলো মায়ের সময় ইঁদুরের গর্তে লুকিয়ে রেখেছিলে বুঝি?

– তখন ও না, এই ভালোবাসা গুলো দেখালে হয়তো আজ এতোকিছুই হতো না!

বাবা : [ হেসে ] ভুল! ছিলো আমার! আর ভুল কিন্তু মানুষকে হারায় না রাহুল! ভুল মানুষকে শুধরাতে শেখায়!

– তুই এইভাবেই থাকিস সবসময় স্নেহার পাশে,খুব মিষ্টি একটা মেয়ে,একদম ভোলি! ও শুধু তোর জীবন না আমার জীবনটাও বদলে দিয়েছে! নিজের খুশির আগে মানুষের খুশির চিন্তাটাই আগে করে মেয়েটা!

– তোদের দুজনকেও দারুণ মানিয়েছে একে অপরের সাথে,

রাহুল : হুমম! বাবা, আল্লাহ গিফটেড মি!

– শি ইজ ভেরী ইন্নোসেন্ট গার্ল, এক্সুলি হার আইস্ আর ভেরী ইন্নোসেন্ট!

– হেয়ার! একদম সিল্কি সিল্কি, হাসিটা তো হুশ উড়িয়ে দেওয়ার মতো, আর শাড়ীতে কি না লাগে পুরোই… [ বলেই হঠাৎ থেমে গেলো, আড়চোখে বাবার দিক তাকালে দেখে, হাসছে তার বাবা,লজ্জা পেয়ে গেলো রাহুল ও, কিসব বলে ফেলছিলো এতোক্ষণ বাবাকে ]

বাবা : [ হেসে ] ইন ওয়ান ওয়ার্ড, শি লুক লাইক অ্যা ফেরী! রাইট?

রাহুল : নো বাবা! ওর সৌন্দর্যের সাথে কিছুর কমপেয়ার হবে না! ও তো আনোখি!

বাবা : অনেক ভালোবাসিস তাই না?

রাহুল : ডোন্ট নোও!

– অনেক বললেও লাগছে সীমানা থেকে যাবে, আমি তো ভালোবাসি সীমানা ছাড়া, ইউ নোও বাবা!

– আমার চেয়ে না ওই আমাকে আরো বেশি ভালোবাসে! একদিন কি বলেছিলো জানো?

– শি কেন লিভ এ ফিউ মোমেন্ট উইদাউট ব্রেথিং,বাট নট উইদাউট মি!

– অদ্ভুত এক ভালোবাসা জানো? আমরা দূরে থাকলেও একে অপরকে ফিল করতে পারি! কাছে থাকলে বিনা কথায় মনের শব্দ শুনতে পারি, চোখ দেখে সুখের, কষ্টের সবকিছু পড়ে নিতে পারি!

[ বাবা চুপ করে শুনে আছে রাহুলের কথা সব, ভাবছে মনে মনে এমনই তো চেয়েছিলেন তিনি,যেনো কেউ একজন এসে রাহুলের লাইফটা এইভাবে মধুময় করে সাজিয়ে দিক, যে ভালোবাসা গুলো থেকে সে বঞ্চিত হয়ে ছিলো তার চেয়ে শতগুণ ভালো যেনো তার জীবনে ফিরে আসুক ]

রাহুল : হোয়াট বাবা! কোথায় হারিয়ে গেছো বলো তো? উমমম! মা কে ভাবছিলে নাকি কোনো!

– বাই দ্যা ওয়ে! এই দু-দিন ধরে আমি তোমায় দেখেছি কিন্তু, মায়ের সাথে চান্স নিতে একটা মুহুর্ত ও মিস্ করোনি! [ হাসছে রাহুলের বাবা রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : বাবা!

বাবা : হ্যা! বল,

রাহুল : এখনো ভালোবাসো মা কে?

বাবা : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] বাসি বলেই তো এইভাবে রয়েগেছি এখনো! তার জায়গা অন্যকাউকে দিতে পারিনি!

রাহুল : তা..তাহলে! ফিরিয়ে আনছো না যে,

বাবা : ভাবছি ও যেভাবে আছে ঐভাবেই খুশি থাকুক! ফিরিয়ে আনতে ভয় হয়! যদি আবারো কষ্ট দিই!

– [ টেবিলের দিক তাকিয়ে ] অওও! বেয়ার! এতোক্ষণ বললি না যে, [ বলেই দুটো হাতে নিয়ে একটা রাহুলের দিক এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : খাবো না!

বাবা : আরে নে! চিয়ার্স কর!

রাহুল : আম নট অ্যা সিংগেল লাইক ইউ! মাই ডিয়ার ফাদার!

বাবা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] ও আচ্ছা! বারণ আছে বউ এর? তাই তো বলছি এতোক্ষণ ধরে এগুলো সামনে থাকা শর্তে ও তুই কিভাবে ফেলে রাখলি!

– এমনিতে আজ দেখেছি তোকে তোর এটিটিউডের কাছে ও কিভাবে হারিয়েছে,

রাহুল : হেইইই মিষ্টার হার্শ! এটিটিউড কেনো আমার বউ এর জন্যে জানটা হারাতেও রাজি আমি!

– বাট অনলি ফর মাই ওয়াইফ! গেট ইট?

বাবা : ইয়েস্ স্যার! [ বলেই এক চুমক বেয়ার খেলো, সাথেসাথেই রাহুলের দিক তাকিয়ে আবারো কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

রাহুল : আচ্ছা বাবা! এতে এভাবে হাসার কি আছে! বলো তো?

বাবা : সরিই আম নট লাফিং রিয়েলি!

রাহুল : আজিব! হেসে হেসে আবার বলছো আম নট লাফিং!

বাবা : চিয়ার্স! মাই চাইল্ড চিয়ার্স!

রাহুল : দুশমনি করো না বাবা! ভুলে যাচ্ছো কাল রিসিপশানে কিন্তু মা ও আসছে, আমায় হাতে রাখলে স্পেশাল চান্সের অফার আছে!

বাবা : [ বেয়ারের বোতোলটা টেবিলে রেখে দিয়ে ] আরে আই জাস্ট কিডিং! এসব বেয়ার টেয়ার ও এক্সুলি আমি খায় না! তোর খাওয়া যেহেতু বারণ আছে তাহলে তো তোর সামনে মোটেও খাবো না!

রাহুল : [ হেসে ] তাই?

বাবা : দেখ! স্পেশাল চান্সের অফার আছে বলেছিস, মনে রাখবি কিন্তু!

রাহুল : [ হেসে দাঁড়িয়ে গিয়ে, জ্যাকেটটা গায়ে পড়তে পড়তে ] বাবা! ভালোবাসাটা একদম প্রজাপতির মতোই, বুঝেছো?

– শক্ত করে ধরলে মরে যাবে আর হালকা করে ধরলে উড়ে যাবে!

– তাই সেটাকে ধীরেধীরে যত্ন করে ধরো, চিরজীবনের জন্যই থেকে যাবে,

– [ চোখ টিপ মেরে ] গুড নাইট! এন্ড চিয়ার্স [ বলেই বেয়ারের একটা বোতোল হাতে ধরিয়ে দিয়ে, হাটা ধরলো রাহুল, রুম ক্রস করতেই হঠাৎ ভাবলো, বেরুনোর আগে স্নেহাকে আরেবার আদর করে দিয়ে যায়, দরজাটা ধীরেধীরে খুলে রুমে ঢুকে খাটের দিক এগিয়ে গেলো, ঘুমিয়ে আছে স্নেহা, মৃদু হেসে রাহুল হাত দিয়ে স্নেহার গালে স্লাইড করলো, নড়ে উঠলো স্নেহা! রাহুলের হাতটা টেনে নিজের কাছে আগলে রাখলো ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] কামঅন স্নেহা! এসময় এভাবে মায়া বাড়িও না! এমনিতে তোমায় এভাবে একা রেখে যেতে মন মানছে না! [ বলেই কপালে আলতো একটি চুমু খেয়ে, ধীরেধীরে স্নেহার কাছ থেকে হাতটা ছুটিয়ে নিলো, কম্বলটা স্নেহার গায়ে ভালো করে টেনে মাথায় আরেকবার হাত বুলিয়ে দিয়ে,আস্তে আস্তে করে দরজা লাগিয়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

নড়ে উঠলো স্নেহা, কম্বলের ভেতর পা টা কুড়িয়ে নিলো, আবছা আবছা চোখটা খুলে যাচ্ছে,পাশে রাহুল নেই এমনটাই অনুভব হচ্ছিলো, হঠাৎ মিটমিটিয়েই চোখটা একদম খুলে ফেললো স্নেহা, রাহুল তো সত্যিই নেই পাশে,

ওয়াসরুমে গিয়েছে হয়তো এইভেবে ওয়াসরুমের দরজার দিক তাকালো, দরজা বাহির থেকে লক করা, তা দেখেই স্নেহা উঠে বসলো, রুমের চারদিক তাকাতেই সোফার দিক নজর পড়লো, রাহুল তার জ্যাকেটটা তো সোফায় খুলে রেখেছিলো, জ্যাকেটটা সোফার উপর নেই! কম্বল সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গেলো সোফার দিক, সোফার পাশে খুলে রাখা রাহুলের কের্চ গুলো ও নেই! তারমানে রাহুল কি বেড়িয়েছে?

এই ভেবে রুমের দরজাটা খুলতে যাবে তখনি হঠাৎ বুকটা ধরে উঠলো, তাড়াতাড়ি দৌড়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলে দেখে গেইট দিয়ে রাহুলের গাড়ী বেড়িয়ে যাচ্ছে, অবাক হলো স্নেহা! এতোরাতে রাহুল কোথায় যাচ্ছে? তাকে ও তো কিছু বললো না, ভেতরে ঢুকে তাড়াতাড়ি খাটের পাশের ল্যাম্প টেবিলের উপর থেকে মোবাইলটা এগিয়ে নিলো, কল দিলো রাহুলকে, রাহুলের ফোনটা বালিশের পাশ থেকেই বেজে উঠলো, এগিয়ে নিলো স্নেহা রাহুলের মোবাইলটা, মনে মনে ভাবতে লাগলো

– কি অদ্ভুত ব্যাপার রাহুল মোবাইলটা ও ফেলে গিয়েছে! কিন্তু গেলো কোথায়?

রুমের এদিক-ওদিক হাটাহাটি করলো কিছুক্ষণ অস্থিরতা কাজ করছে স্নেহার, আর না পেরে খাটের এক কোণে বসে রইলো, রাহুল তাকে একা রেখে কোথায় গিয়েছে? তাও বা এতোরাতে কোথায় যাওয়া এতো জরুরী ছিলো! একবার তো অন্তত তাকে বলে যেতে পারতো,

অনেক্ষণ ঘনিয়ে গেলো,

স্নেহা ওভাবেই বসে আছে, ঘুম ও আর আসছে না তার চোখ জুড়ে, হঠাৎ চোখ পড়লো রাহুলের মোবাইলটার উপর, এগিয়ে নিয়ে মোবাইলের গ্যালারিতে ঢুকে ফটো দেখতে লাগলো রাহুলের!

এতোক্ষণেই রাহুলের ছবি দেখে দেখে মিটিমিটি হাসছে স্নেহা! রাহুল কতোটা নটি পোজে পিকচার তুলতে পারে আজই দেখলো স্নেহা! একে একে সব ছবি দেখতে দেখতে হঠাৎ নেহার সাথে ও রাহুলের কয়েকটা ফটো সামনে এসে পড়লো, মুহুর্তেই হাসিটা উদাও হয়ে গেছে স্নেহার মুখ থেকে, আর দেখলো না কোনো ছবিই, অতোটুকুতেই বন্ধ করে রেখে দিলো মোবাইলটা!

মনে মনে রাহুলকেও এতোগুলো গালি দিতে মন চাইছিলো স্নেহার!

– কি দরকার এখনো নেহার সাথে লাগিয়ে তোলা ফটো গুলো গ্যালারীতে সাজিয়ে রেখে দেওয়ার!

– ওর সাথেই চুপিচুপি দেখা করতে গিয়েছে নিশ্চয়! আমার সামনে একরুপ, আর চুপিচুপি আরেকরুপ! মার্জান ঠিকই বলে সব ছেলেরাই মুখোশধারী হয়!

– ছি! স্নেহা কিসব ভাবছিস! রাহুল এমন করবে নাকি কখনো! ধ্যাত!

– কি..কিন্তু যদিও বা এ..এমন হয়ে থাকে?

– উফফফফ! স্নেহা! তুই রাহুলকে সন্দেহ করছিস! স্টুপিড! [ বলেই খাট থেকে দাঁড়িয়ে পড়লো, টাইম দেখলো ঘড়িতে ৩টা বেজে ২৫ মিনিট, ধীরেধীরে হেটে জানালার দিক এগিয়ে গেলো,নিস্তব্ধ চারদিক কুয়াশায় ভরা, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জানালার চৌকাটে হেলান দিয়ে বসলো ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 62

0

Love At 1st Sight
~~~ Season 3 ~~~

Part – 62

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : ইডিয়ট [ বলেই রেগে স্নেহার কাছাকাছি আসতেই স্নেহা ভয়ে পিছিয়ে যায় ] তোমাকে কিছু বলেছে কি বলেনি তা আমি ভালোকরেই বুঝতে পারছি,

– তোমার মুখ ছিলো না জবাব দাওনি কেনো?

– ওর বাপের খাচ্ছো? হ্যা? ওর বাপের জবানা শেষ, আমার বাপের খাচ্ছো! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে বেরুতেই যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুল থেকে হাত ছুটিয়ে ] পাগল হয়েগেছেন আপনি? কি এসব বলছেন?

[ রাহুল অবাক হয়ে ফিরে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা পলক ঝুকিয়ে নিলো রাহুলের এই চাহনিতে, চোখ মেলাতে পারছিলো না সে,কেনো যেনো রাহুলের চোখের দিক তাকিয়ে মিথ্যে বলাটা তার দমচাপিয়ে রাখার মতোই হয়, এক পা এগিয়ে রাহুলের বরাবরই দাঁড়িয়েছে, জ্যাকেট ধরে ঠিক করে দিতে দিতেই বললো ]

স্নেহা : জা..জানেন! কাল রিসিপশানে আপনাকে ব্লাক কোর্টটাই প্রিন্সের মতোই লাগবে, টাট..টাইটানিক মুভিতে জেক পড়ে না, ঐরকমই!

– নাহ, আ..আপনাকে না জেক এর চেয়ে আরেকটু বেশিই হ্যান্ডসাম লাগবে! কা..কারণ জেকের হেয়ার স্টাইলটা না কেমন যেনো, আমার মোটেও পছন্দ না, [ মাথা তুলে তাকিয়ে রাহুলের কপালে বিছিয়ে থাকা চুল গুলোর উপর হাত বুলাতে বুলাতে ] আপনার হেয়ার স্টাইলটা আমার খুব পছন্দ, কিছু উঠানো কিছু বসানো, আর কপালে ছিটিয়ে থাকা এই চুল গুলো ও!

– ও হ্যা! আমার গাউনটাও না একদম প্রিন্সেস স্টাইলের, কালারটা আপনার হোয়াইট শার্টের সাথেই ম্যাচ করা, [ মৃদু হেসে ] অবশ্য আমার স্টাইলিশ মাদার-ইন-লো এর পছন্দ বলে কথা!

– আ..আচ্ছা! আপনার তো কাপড় গুলো দেখাই হলো না, চলেন আমি দেখাচ্ছি! [ বলেই পাশফিরে এগিয়ে গেলো আলমিরার দিক, আলমিরার দরজা খুলতেই, হঠাৎ পেছন থেকে রাহুল হনহনিয়ে এগিয়ে এসে ধুম করেই লাগিয়ে দিলো দরজাটা, চোখ দুটো বড় করে চমকে কেপে উঠলো স্নেহা,দরজার উপর রাহুলের রাগান্বিত ভাবে চেপে রাখা হাতটির দিক তাকিয়ে আছে নিস্থব্দতা নিয়ে ]

রাহুল : [ দাতে দাত ঘেষে ] স্টপ ইট! স্নেহা! টপিক চেঞ্জ করার কোনো দরকার মনে করছি না, গীতালি আমাকে সব বলেছে, [ স্নেহা ধীরেধীরে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক, চোখে যেনো আগুন জ্বলছে রাহুলের, কি ভয়ংকর চাহনি ]

রাহুল : রাগ তুলোনা স্নেহা! আমার, [ স্নেহা ঢোগ গিলে অবাক হয়েই তাকিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলো, আরে বাপরে! রাগ নাকি উঠেনি এখনো আর এই অবস্থায় এমন বিহেভ করছে, তাহলে না জানি রাগ উঠলে কেমন করে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার ফ্রেন্ডসরা নিজ ইচ্ছায় এইখানে আসেনি, ওদের আমি এনেছিলাম,দ্যাট মিনস্ ওদের টেক কেয়ার করার রেস্পন্সিবিলিটি আমার ছিলো, আর আমার রেস্পন্সিবিলিটি মানে তোমারই, সো্ তুমি ওদের এইভাবে কেমনি যেতে দিলা?

– [ বিরক্তিবোধ হয়ে ] আর ওদের আমি আনি বা নাই আনি, ওরা নিজ ইচ্ছায় আসলেও ওনার কোনো অধিকার নেই ওদের ইন্সাল্ট করার!

– [ স্নেহার মুখের সামনে আংগুল তুলে ] আর তুমি!

– মিসেস রাহুল! বেয়ার ইন মাইন্ড, ওকে? [ স্নেহা ঢোগ গিললো ]

– সো্ লেটস্ কাম উইথ মি! [ বলেই রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে বেরুতে যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : রাহুল! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

রাহুল : এক্ষুণিই তো বললাম! ভুলে গেছো? তুমি মিসেস রাহুল! আর মিসেস রাহুল জবাব শুনবে না জবাব দেবে! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি বাধাগ্রস্থ করে রাহুলের সামনে এসে দু’হাত ছড়িয়ে দাঁড়ায় ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হোয়াট আর ইউ ডুয়িং স্নেহা?

স্নেহা : দেদ..দেখেন রাহুল! কাল রিসিপশানের আয়োজন নিয়ে সবাই কতো খুশি, আর আজ আপনার আর আপনার বাবার এক হোওয়া নিয়ে দাদী যেনো হাজার বছরের সুখ ফিরে পেয়েছে, প্লিজ এমন কিছুই করবেন না, আ..আজ রাত আর কালকের দিনটাই তো! এরপর ওরা চলে যাবে, হাসিমুখে এসেছে ওনিও, এইসময় এমন কিছু বললে মনে কষ্ট নিয়েই যাবে তখন..

রাহুল : জাষ্ট শাট-আপ স্নেহা! কার মনে কি কষ্ট নিবে আই ডোন্ট কেয়ার!

স্নেহা : বাট! রাহুল আপনি..

রাহুল : তুমিও তো কষ্ট পেয়েছো স্নেহা! তোমাকে বলার সময় ভেবে দেখেছেন ওনি?

স্নেহা : আমি কষ্ট পাইনি রাহুল! কারণ ওনি সব ঠিকই তো বলেছে, আমি আসলেই লাকি আপনাকে পেয়ে! আর আপনি আনলাকি কাক..কারণ আপনি আরো রিচ ফ্যামিলির মেয়ে ডিজার্ব করেন!

– আ..আসলেই আপনার ফ্যামিলি,আপনি, আপনাদের যা কিছুই আছে এই অনুযায়ী আমি কিছুই না রাহুল! [ বলতেই রাহুল রাগান্বিত ভাবে নাক-ফুলিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে আলমিরার সাথে লাগিয়ে দাড় করাই ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরেহ!..

রাহুল : [ চেচিয়ে ] আমাকে এক্সপ্লেইন করার দরকার নেই তোমার স্নেহা! এন্ড নেক্সট টাইম এইধরনের কথা গুলো বলা তো দূরের কথা তোমার এই [ স্নেহার মাথায় ঠোকা মেরে ] ফুলিশ-থিংকিং এ ও আনবা না! গেট ইট?

– আর হ্যাঁ! তোমার যাওয়া লাগবে না, ওনাকে তো জবাব এখন আমিই দিবো!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] ডোন্ট গো রাহুল, প্লিজ! [ থামলো না রাহুল স্নেহার হাত সরিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, মনটা ছটফট করছে স্নেহার, রাহুল ফুফিকে গিয়ে নাজানি কি না কি বলে, দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দাড়ালো সে ও, ততোক্ষণে রাহুল শিরি দিয়ে নেমে পড়ছে ]

গীতালি : [ চেচিয়ে ] ও! দাদী রাহুল ভাইয়া আইয়া পড়ছে আর ডাকতে অইবো না! [ দাদী শিরির দিক তাকাতেই দেখে রাহুল নেমে এগিয়ে আসছে, ডাইনিং টেবিলে বসে আছে বাকিরাও, না পারতে দাদীর জোড়ে খেতে বসেছে নেহাল ও ]

গীতালি : ভাইয়া! ভা..ভাবী করবো না..ডিনার? [ রাহুল চেয়ার টেনে বসলো টেবিলে ]

দাদী : রাহুল! স্নেহা কোথায়?

রাহুল : করবেনা এইখানে ডিনার, ভালো লাগছে না তাই, বেড রুমেই পাঠিয়ে দিতে বলেছে! ভালো লাগলে খাবে,

নাফিসা ফুফি : [ মুচকি হেসে ] প্রথম দিনেই অর্ডার প্রেস! গ্রেট, বাট রাহুল নতুন বউ হিসেবে ওর উচিৎ আজ আমাদের সাথে এইখানে বসে ডিনার করা, আর না করলেও অন্তত আমাদের সার্ব করতে আসতে পারতো!

রাহুল : সার্ব করবে? কেনো এইখানে সবাই কি প্যারালাইসে এফেক্টেড? যে নিজ হাতে সার্ব করে নিয়ে খেতে পারবে না?

নাফিসা ফুফি : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] কেউই প্যারালাইসিস এফেক্টেট না রাহুল! এটা একটা অবজারভেন্স!

রাহুল : ও সিরিয়াসলি? এতো বছর অষ্ট্রেলিয়া থেকেও এই অবজারভেন্স নিয়ে পড়ে আছো? ফুফি আই থট তোমার মাইন্ড তোমার মতোই স্মার্টলি থিংকিং হবে!

– হাহ! বাট আই ওয়াজ রোং! আসলে বাংগালীর ব্লাড বলে কথা, তাই যতোই আপডেট হোকনা কেনো এসব অবজারভেন্স গুলো কখনোই ভুলবে না!

লিনিসা ফুফি : রাহুল! লিভ ইট! ওকে? দ্যাটস ওকে নো প্রবলেম! এন্ড লিসেন্ট,এ দু-দিনে অনেক জার্নি গেছে ওর উপর হয়তো তাই খারাপ-টারাপ লাগছে! তুই উপরে গেলে ডিনার করানোর পর মেডিসিন খাইয়ে দিস!

দাদী : হ্যা! তাই হবে! আচ্ছা গীতালি শোন স্নেহার ডিনার গুলো তুই উপরে দিয়ে আয়!

রাহুল : কোনো দরকার নেই দাদী! আমি নিয়ে যেতে যেতে মরে যাবে না!

দাদী : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি হয়েছে তোর! এইভাবে রেগে আছিস কেনো?

রাহুল : দাদী! মনে আছে তোমার, আমাকে সব সময় একটা কথা শিখিয়ে দিতে, কখনো টাকা নিয়ে অহংকার করবিনা!

– সো্ এই লাইনটা কি শুধু আমায় শিখিয়েছো? আর কাউকে শেখাওনি?

দাদী : হ্যাঁ শিখিয়েছি! তোকে, তোর বাবাকে,তোর ফুফিদের! সবাইকেই শিখিয়েছি, কেনো কি হয়েছে?

রাহুল : হয়তো কারো একজনের কানে ভালো করে ঢুকেনি, আরেকটু ভালো করে ঢুকিয়ে দিও!

দাদী : [ হেসে ] পাগল হয়েগেছিস? কি এসব বলছিস, চল ডিনার শুরু কর!

রাহুল : আর হ্যা! দাদী, আমি স্নেহাকে ভালোবাসি, তাই ওকে বিয়ে করেছি, ওর ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নয়! এন্ড এটা নিয়ে যদি কারো প্রবলেম হয় না? তাহলে মেইন ডোর ওদিকে দেখিয়ে দিও! [ দাদী এইবার শকিং এক্সপ্রেশন দিয়েই তাকালো রাহুলের দিক,কারণ বুঝার বাকি ছিলো না রাহুল কাকে ডেডিকেট করেই কথা গুলো বলছে, হাত দিয়ে রাহুলের হাতে গুতাতে গুতাতেই ইশারা করছে দাদী, আর কিছু না বলার জন্যে ]

রাহুল : কি হলো দাদী! গুতাও কেনো? কিছু বলবা? বললে ডিরেক্টলি বলো?এসব সাইলেন্ট গেইম আমি খেলিনা! [ দাদী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো, কিছু বললো না, আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে, গ্লাসে পানি ঢালতে লাগলো ]

রাহুল : ও ইয়াহ! দাদী, তুমি তো আবার কাউকে না খাইয়ে যেতে দাও না, কিন্তু আজ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের খালিমুখে বিদায় করে দিলে যে?

দাদী : রাহুল! আমি ওদের অনেক রিকোয়েষ্ট করেছি, ওরা আমায় প্রমিস করলো নেক্সট টাইম খাবে,কিন্তু আজ যেনো ওদের আর কোনোভাবেই রিকোয়েষ্ট না করি, তাই আমি বাধ্য হয়েই যেতে দিই, [ তাকিয়ে রইলো রাহুল কিছু বললো না ]

দাদী : তোত..তোর আমাকে বিশ্বাস না হলে নেহাল থেকেই জিজ্ঞেস কর,ওর সামনেই তো জোড় করেছিলাম ওদের,

নাফিসা ফুফি : তো কি হয়ে গেছে ডিনার করে যায়নি? সারাদিনই তো ছিলো!

নেহাল : স্টপ ইট মম! সব সময় ওদের পেছন লেগে থাকছো কেনো বুঝতে পারছি না!

নাফিসা ফুফি : কারণ ওরা তোর পেছন লেগে আছে বলে,

নেহাল : আর ইউ ক্রেজি, ওরা আমার পেছনে লেগে ছিলো? ইউ আর রোং মম, ইনফ্যাক্ট আমিই ওদের মাঝে ছিলাম!

নাফিসা ফুফি : থাকবিই তো, পটিয়ে যে নিয়েছে তোকে!

রাহুল : ওহ রিয়েলি? তাহলে এইভাবেই প্রিপেয়ার করেছো তুমি ওকে? মেয়েরা যা বলবে তাদের আচলের স্মেল নিতে নিতেই যেনো পটে যায়!

– হাহা, নেহাল নট অ্যা নিউ ব্রন বেবী রাইট, হি ইজ অ্যা মেচর বয়,

– এন্ড ফুফি রিমেম্বার, দেই আর নট অনলি স্নেহা’স্ ফ্রেন্ড, দেই আর স্নেহা’স্ সিস্টার অলসো্! [ স্নেহা নিচে নেমে এলো ধীরেধীরে, কিভাবে আটকাবে রাহুলকে মাথায়ও আসছে না ]

নাফিসা ফুফি : সিরিয়াসলি রাহুল! তুই ওদের কারণে আমার সাথেই ঝগড়া করছিস?

নেহাল : [ চেচিয়ে ] তো করবেনা তো কি করবে মম? সেই কখন থেকেই দেখছি ওদের অপোজিটে বলেই যাচ্ছো বলেই যাচ্ছো!

নাফিসা ফুফি : বাট আমি তো..

নেহাল : স্টপ ইট মম! প্লিইজ স্টপ ইট! [ বলেই রেগে প্লেটটা ঠেলে দিয়ে উঠে চলে যায় হনহন করে ]

দাদী : [ চেচিয়ে ] আরে নেহাল! ডিনারটা তো ফিনিশ করে যা,

লিনিসা ফুফি : কিছুই বুঝতে পারছি না, কে কি বুঝাতে চাচ্ছে! ক্লিয়ারলি বলো কেউ কি হয়েছে? আর রাহুল তুই হঠাৎ এভাবে রেগে আছিস কেনো?

রাহুল : ফুফি! জানিয়ে দিও তাদেরকে যারা মানুষকে মন থেকে নয় ফ্যামিলি স্ট্যাটাস দিয়ে জাজ করে,

– ফাষ্ট অফ অল আমি মিষ্টার হার্শ না, যে বাকিদের কথায় কান দিয়ে নিজের বউ এর উপর হোওয়া টর্চার কমপ্লাইজ করে যাবো,

– আমি রাহুল! মাইন্ড ইট!

নাফিসা ফুফি : বাহ! প্রথম দিনেই কান ভর্তি করে দিলো? এমন লোও ক্লাস মেয়েদের থেকে এমনিতেও আর কি আশা করা যায়, [ বলতেই রাহুল দাঁড়িয়ে গিয়ে সামনে থাকা প্লেটটা ছুড়ে মারলো মাটিতে, চমকে গিয়ে তাকালো সবাই রাহুলের দিক, পা দিয়ে পেছনে লাত্তি মেরে বসার চেয়ারটাও ফেলে দিলো,ফুফাচ্ছে রাহুল মাথাটা দু-দিক নেড়ে, ঝেড়ে নিলো, যেনো রাগ কন্ট্রোল করছে, মুখের ভেতর দাতে দাত চেপে ঘেষে রেখেছে, কপালের রগ গুলো ও ভেসে উঠছে লাল হয়ে হয়ে ]

দাদী : রা..রাহুল!

রাহুল : [ দাঁত কিলিয়ে ] দাদী স্নেহা লোও ক্লাস মেয়ে না!

দাদী : হ্যাঁ.. রাহুল তুই শা..শান্ত হয়ে বয়..

রাহুল : ফাইনেন্সিয়াল সিচুয়েশান লোও হতে পারে বাট মাইন্ড অন্তত ওনার চেয়ে বেটার হাই ক্লাসের আছে! জানিয়ে দাও!

– আর এটাও বলে দাও যে ওনার এসব লোও ক্লাস এটিটিউড থিংকিং গুলো যেনো অষ্ট্রেলিয়ায় দেখায় আমার সামনে না, [ দৌড়ে এগিয়ে এসে রাহুলের হাত চেপে ধরে দাড়ালো স্নেহা, রাহুল ও অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] ব্যাস রাহুল! আর না,

রাহুল : [ চেচিয়ে ] ব্যাস? হোয়াই স্নেহা? তোমার ক্লাস দেখাচ্ছে ওনি আমাকে! যাদের মুখে তোমার নাম নিলে ঐনামের ইন্সাল্ট করা হবে, সেই আবার ঐ মুখে তোমার ক্লাস ভেরিফাই করছে! বাহ!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] প্লিইইজ রাহুল! স্টপ দ্যা ম্যাটার! [ রাহুল কিছু বলতে যাবে তখনিই ]

স্নেহা : আমার কসম আছে রাহুল! ব্যাস! আর না! [ রাহুল রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক, রাগ যেনো স্নেহার উপরও বেড়ে চলছে, কি দরকার ছিলো কসম দেওয়ার? হাত ছুটিয়ে নিলো স্নেহার কাছ থেকে, দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে পড়ে থাকা চেয়ারটাকে আরো জোড়ে একটি লাতি মেরে, শিরি দিয়ে উঠে হনহন করে চলে গেলো রুমে, স্নেহা ঐদিকটাই দাঁড়িয়ে আছে নিস্তব্ধতা নিয়ে, নাফিসা ফুফিও সামনে থাকা প্লেটটা জোড়ে ঠেলে দিয়ে উঠে চলে যায়, লিনিসা ফুফি উঠে এসে দাড়ালো স্নেহার বরাবরই, স্নেহা পলক ঝুকিয়ে আছে ভয়ে ]

লিনিসা ফুফি : চিন্তা করোনা স্নেহা! রাহুলের মতো এমন প্রটেক্টিভ হাজবেন্ড ও বা কজনের মিলে, বলো? আম প্রাউড অফ হিম!

– আর হ্যা! এসব যাই হয়েছে এগুলো নিয়ে মোটেও টেনশন করো না ওকে? সবই মাথা থেকে ফেলে দাও, [ হেসে ] জাষ্ট এখন রুমে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় তোমার মাথা থেকেও কিছু ঠান্ডা ওর মাথায় ঢেলে দাও! [ হেসে উঠলো রাহুলের কাজিনরা ]

– তুমি যাও রুমে, আমি গীতালির দিয়েই ডিনার পাঠিয়ে দিচ্ছি, ওকেও করিয়ে নিও আর সাথে তুমিও করে নিবা! ওকে? [ দাদীর দিক তাকালো স্নেহা, দাদী ও মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো ]

স্নেহা : জ্বি! [ বলেই ধীরেধীরে হেটে উপরে উঠে এলো, রুমের দিক এসে দরজা খুলতেই চমকে উঠলো স্নেহা, ফুলের টপ গুলো ভেঙে চুরমার হয়ে আছে, বিছানার চাদর, কম্বল,বালিশ,কশুন, সবই মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে, গিটার গুলো ও ছিটিয়ে রয়েছে, অলরেডি দুটো গিটারের তার সহ ছিড়ে ফেলেছে, আরেকটির ছেড়ার জন্য হাতে নিচ্ছিলো, ঐটাইমেই স্নেহা, রাহুল! বলে চেচিয়ে দৌড়ে গিয়ে রাহুলের হাত থেকে কেড়ে নিলো গিটারটি, ফুফাচ্ছে রাহুল জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, তাকালো না স্নেহার দিক, হাত মুঠি করে জানালার দিকই এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো, স্নেহা ও গিটারটা খাটের উপর রেখে ধীরেধীরে এগিয়ে দাড়ালো রাহুলের পাশে, রাহুলের চোখের দিক তাকাতেই শকড হলো স্নেহা, পানি জমে আছে চোখে, কিন্তু কেনো? রাগে? অপমানে? নাকি অভিমানে? কাধে হাত রাখলো স্নেহা রাহুলের, চুপ করে রইলো রাহুল ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ রাগি চোখে স্নেহার দিক ফিরে ] কি দরকার ছিলো, স্নেহা! তোমার কসম দেওয়ার?

স্নেহা : তাহলে কি করবো রাহুল? থামছিলেনই না আপনি! আর কোনো রাস্তা ছিলো না আমার কাছে,

রাহুল : থামবো মানে? [ বলেই রাগান্বিত ভাবে স্নেহার কাছাকাছি এগিয়ে এসে ] কেনো থামবো? কি বলেছিলো ওনি শুনতে পাওনি?

স্নেহা : [ পা পিছিয়ে নিয়ে ] রাহুল! কেউই ডি..ডিনার করতে পারছিলো না…,

রাহুল : [ আবারো স্নেহার কাছাকাছি এগিয়ে এসে ] না পারুক! [ চেচিয়ে ] আই ডোন্ট কেয়ার!

স্নেহা : [ পিছিয়ে গিয়ে ] রাহুল! কক..কতোদিন পরই আপনার পরিবার এক হলো,

রাহুল : [ পা এগিয়ে ] চাইনা আমার এমন পরিবার!

স্নেহা : বাট রাহুল! [ বলেই আবার পেছাতে নিচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] কেয়ারফুল ডেম ইট! [ বলেই হাত ধরে নিজের কাছেই টেনেনিলো স্নেহাকে, চোখ বড় করে চমকে উঠলো স্নেহা, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, কি হয়ে গেলো মুহুর্তেই, কিছু বুঝে উঠলো না, শুধু রাহুলের বিকট শব্দটাই কানে বাড়ি খাচ্ছিলো বারবার,ধীরেধীরে পেছন ফিরে নিচের দিক তাকাতেই দেখে টপের ভাংগা কাচের টুকরো গুলো ছিটে আছে, বুঝতে পারলো স্নেহা এখনি রাহুলের এই বিকটভাবে চেচিয়ে উঠার কারণ, তাই মাথা তুলে ধীরেধীরে তাকালো রাহুলের দিক, চোখাচোখি হতেই রাহুল মুখ ওপাশ ফিরিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের মুখ ধরে তার দিক ফিরিয়ে ] রাহুল!

– আ..আপনার ফুফি যাই কিছু বলেছে সস..সবই আপনাকে ভালোবেসেই বলেছে, ভেবে দেখুন আপনি,

– আপনার জন্য রিচ ফ্যামিলির মেয়ে চাওয়া তো আর অন্যায়ের কিছুনা!

রাহুল : [ ধমক দিয়ে ] জাষ্ট শাট-আপ স্নেহা!আমার চাইনা ওনার এমন ভালোবাসা, যে ভালোবাসাকে পুর-রিচ দিয়ে জাজ করে, আর তোমাকে!

– [ বিরক্তিবোধ হয়ে ] ফরগেট ইট! তোমাকে এসব বুঝানোই বেকার! [ বলেই রাগান্বিত ভাবে নাক ফুলিয়ে জানালার পাশ গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, কিছু বললো না আর স্নেহা ও, ধীরেধীরে এগিয়ে গিয়ে গিটার গুলো আগের জায়গায় দাড় করিয়ে সাজিয়ে রাখছে, ছিটিয়ে থাকা কশুন আর বালিশগুলো তুলে খাটের উপর সাজিয়ে দিলো, এগিয়ে এসে হাটু গেড়ে বসে মাটিতে পড়ে থাকা কম্বলটা কুড়িয়ে নিচ্ছিলো তখনিই, সামনে সাদা কের্চ পড়া রাহুলের পা-দুটি দেখতে পেলো, ধীরেধীরে চোখ বুলিয়ে নিচ থেকে উপরের দিক তাকাতেই দেখে জলভরা চোখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাহুল, লালছে হয়ে আছে নাকটা,চোখাচোখি হতেই রাহুলও হাটু গেড়ে বসলো স্নেহার বরাবরই, তাকিয়ে আছে স্নেহাও তার আহ্লাদি চাহনিতে ]

রাহুল : [ কাদো সূরে ] সরি স্নেহা!

স্নেহা : কেনো?

রাহুল : রা..রাগ দেখিয়েছি তোমার উপর! তা..তাই! [ গড়িয়ে পড়লো জল স্নেহার চোখ থেকেও, তাও মৃদু হেসে উঠলো ]

রাহুল : আ..আই লাভ ইউ স্নেহা!

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেদে মাথা নিচু করে ] আই লাভ ইউ টু রাহুল! [ মৃদু হাসলো রাহুল ও স্নেহার কান্ড দেখে, হাতে ভর করে, হাটু পিছলিয়ে স্নেহার একদম কাছাকাছিই এসে বসলো ]

রাহুল : কা..কাদছো কেনো?

স্নেহা : আ..আপনি এতো ভা..ভালোবাসেন তাই! [ বলেই সাথেসাথে আবারো ফুফিয়ে কেদে উঠলো ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] পাগলী! ভা..ভালোবাসলে কাদে নাকি? [ ঠোট কাপছে স্নেহার, মুখ লাল হয়ে গেছে, চোখ থেকে গড়িয়ে জল পড়ছেই তো পড়ছে ]

রাহুল : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] শিসসস! স্টপ ক্রায়িং! ননসেন্স!

স্নেহা : আ..আপনিও তো কাদছেন!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : [ স্নেহার দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় ধরে ] আ..আমার তোমার কাছ থেকে,তিনটি প্রমিস চাই! [ স্নেহা মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : ফাষ্ট অফ অল! তু..তুমি কখনোই নিজেকে আমার চেয়ে ছোট মনে করবেনা! কখনোই না, প্রমিস মি! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : আ..আমি তোমার,মানে আমার সবই তোমার, তাই কখনোই পার্মিশন জিনিষটা আনবে না আমাদের মাঝে, তোমার মনে যা চাই তাই করবা! বাট স্নেহা! একা কোথাও বেরুবা না, আমাকে বলবা তোমার যতোবার ইচ্ছা বেরুতে আমি ততোবারই ড্রাইভ করতে রাজি তোমার জন্যে,বাট প্লিজ একা বেরুবা না!

– [ কাদো কন্ঠে ] ভ..ভয় হয়! তোমাকে হারানোর! [ কথাটি শুনতেই বুক ধরে উঠলো স্নেহার, শুনেছিলো অধিক চাওয়া জিনিষটাকেই নাকি সবসময় হারানোর ভয় থাকে, আজ তার প্রমাণও পেয়েছে তারই অধিক চাওয়া ভালোবাসার ব্যাক্তিটির কাছ থেকে ]

রাহুল : প্রমিস মি স্নেহা! [ ভালোবাসার মমতায় অশ্রুজলে ভাসিয়ে ঠোট-নাক সবই কাপছে স্নেহার, ঢোগ গিলে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো রাহুলের কথায় ]

রাহুল : এন্ড লাষ্টলি! [ দুহাত তুলে স্নেহার চোখের নিচের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] আমাকে এ..এতোগুলো ভালোবাসবা! আ..আনলিমিটেড! [ হেসে উঠলো স্নেহা,রাহুল ও মুচকি হাসি দিয়ে স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগালো ]

রাহুল : প্রমিস মি না ইডিয়ট!

স্নেহা : [ হেসে ] ইয়াহ! প্রমিস! [ হেসে উঠলো রাহুল আবারো ]

স্নেহা : হাসছেন কেনো?

রাহুল : তুমি পাগলী বলে! [ স্নেহা রাহুলের চোখের দিক তাকালো ]

রাহুল : আর তুমি হাসছো যে?

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] কারণ আপনি একটু বেশীই পাগল বলে! [ বলতেই দুজনে আবারো একত্রে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

রাহুল : [ চোখ বটে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে, স্নেহার নাকে নাক চেপে রেখে ] হ্যা! এই পাগলীরই পাগল আমি! [ স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে হেসে চোখ বটে নিলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু?

রাহুল : একটা টাইইইটট করে হাগ করো আমায়![ স্নেহা চোখ খুলে তাকিয়ে রইলো রাহুলের চোখের দিক ]

রাহুল : [ বুঝতে পেরে স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে ] কামঅন!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আই..লাভ ইউ রাহুল!

রাহুল : [ হেসে স্নেহাকে টেনে জড়িয়ে ধরে ] আই লাভ ইউ টু! [ স্নেহা ও টাইট করে জড়িয়ে ধরে রাখলো রাহুলকে, সুখ! অজানা একসুখ অনুভব করছে স্নেহা, রাহুলকে জড়িয়ে রেখে, শান্তি! অজানা এক শান্তিবোধ হচ্ছে রাহুলের মনে, স্নেহাকে নিজের বুকের সাথে আগলে রাখতে ]

খানিক্ষণ পড়েই, কড়া নাড়ালো দরজায়,স্নেহা রাহুলকে সরিয়ে,এগিয়ে গেলো দরজার দিক,

গীতালি : [ ফিসফিসিয়ে ] ওও.. ভাবী! ভালা অইছে আপনেই আইছেন, রাহুল ভাইয়ার মাথা ঠান্ডা হইছে? [ স্নেহা মৃদু হেসে মাথা নাড়ালো ]

গীতলি : উমমম! আমি তো জানতামই আপনার মতো মিষ্টি একটা বউ সামনে থাকলে ভাইয়া তো হুশই হারাইয়া ফেলবো,মাথা গরম রাখা তো বহুদ দূর! হিহি,

– আইচ্ছা আইচ্ছা নেন, ডিনার ফর ইউ এন্ড ভাইয়া! [ স্নেহা মুচকি হেসে গীতালির হাত থেকে এগিয়ে নিলো ডিনার গুলো ]

গীতালি : আনজয় ভাবী! [ বলেই হেসে হেসে চলে গেলো, স্নেহা ও ডিনার হাতে নিয়ে এগিয়ে এসে বসলো রাহুলের সামনে, রাহুল তাকিয়ে আছে, স্নেহা ডিনার রেডি করে সামনে এগিয়ে দিলো রাহুলের ]

রাহুল : স্নেহা আমার খিধে নেই! তুমি করে নাও! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে আটকিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : স্নেহা প্লিজ! আমার সত্যিই খিধে নেই! [ বলেই স্নেহার হাত ছুটিয়ে ওয়াসরুমে এগিয়ে চলে যায়, স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুলের রাগ এখনো কমেনি, তাই এমন বিহেভ করছে, আর কিছু বললো না সে ও,ডিনার গুলো টেবিলের উপর ঢেকে রেখে দিলো ]

কিছুক্ষণ পর টাওয়েল হাতে ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে এলো রাহুল, চোখ পড়লো স্নেহার দিক,টপের ভাংগা কাচের টুকরো গুলো এক এক করে উঠাচ্ছিলো স্নেহা!

রাহুল : [ স্নেহার দিক এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! আর ইউ মেড? হোয়াট আর ইউ ডুয়িং স্টুপিড? [ স্নেহা শকড হলো হঠাৎ রাহুলের চেচানিতে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত থেকে কাচের টুকরো গুলো ফেলে দিয়ে ] পাগল হয়ে গেছো তুমি? তোমার হাত কেটে গেলে? তোমাকে এসব করতে কে বলেছে? [ বলেই টেনে এনে খাটে বসিয়ে দিলো ]

স্নেহা : বাট রাহুল..

রাহুল : চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো! তোমার এগুলোর চিন্তা করতে হবে না! [ বলেই পাশ ফিরে সোফায় টাওয়েলটা রাখতে যাবে তখনিই চোখে পড়লো ডিনারগুলোর উপর ]

স্নেহা : [ গোমড়া মুখে বিরবির করে ] আমি করলে হাত কেটে যাবে ,নিজে করলে কাটবে না,এতো ভয় পাওয়ার কি আছে! আমি যেনো কোনো কাজই করতে পারিনা,

রাহুল : ডিনার করেছো? [ স্নেহা কিছু বললো না,মুখটা ভেংগিয়ে গায়ে কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ভোর কুচকে ] এক্সকিউজ মি! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি? [ তাতেও কোনো জবাব এলো না স্নেহার, মুখের উপর ও টেনে দিলো কম্বলটা ]

রাহুল : [ স্নেহার মুখ থেকে কম্বল টেনে সরিয়ে ] ঐ! কি হলো? [ পাশ মুড়ে শুয়ে গেলো স্নেহা ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আজিব!

– স্নেহা!

স্নেহা : কি হয়েছে?

রাহুল : আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি,

স্নেহা : তো?

রাহুল : তো মানে?

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] হোহ! মিষ্টার রাহুল! আপনি, তো! মানেও জানেন না? [ রাহুল নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে রইলো, স্নেহা আবারো মুখ ভেংগিয়ে দিয়ে,গায়ে কম্বল টেনে ওপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : ইডিয়ট! [ বলেই স্নেহার গায়ের থেকে কম্বলটা সরিয়ে দিয়ে,নিজের দিক টেনে ফিরিয়ে হুট করেই কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে চেচিয়ে ] আরেহ! কি করছেন আপনি?

রাহুল : তোমাকে বলা ইম্পর্টেন্ট মনে করছিনা!

স্নেহা : রা..রাখেন আমাকে!

রাহুল : স্টুপিড! মুখ ও ভেংগায় আবার! [ বলেই হেটে এগিয়ে নিয়ে গেলো সোফার দিক ]

স্নেহা : কি হয়েছে ভেংগিয়েছি তো? আ..আপনি আমার দিক তাকিয়ে থাকেননি হিংস্র পশুর মতো!

রাহুল : হোয়াট?

স্নেহা : আর নয়তো কি? [ গোমড়া মুখে ] জারিফা ঐদিন ঠিকই বলছিলো!

রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে সে ও পাশে বসে ] এক্সকিউজ মি! জারিফা যে হিংস্র পশুর কথা বলেছিলো না, ঐ রুপ আমি এখনো দেখায়নি ঐ রুপ দেখালে না তুমি এতোক্ষণে..[ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : থেমে গেছেন কেনো বলেন বলেন আমি এতোক্ষণে?

রাহুল : ফরগেট ইট! ভয় পেয়ে যাবা তুমি!

স্নেহা : [ বিরবির করে ] হ্যাঁ আমি তো ভয় পেয়ে যাবো! আপনিই দুনিয়ার একমাত্র সাহসী ব্যাক্তি!

রাহুল : কি বললে?

স্নেহা : কিক..কিছুনা!

রাহুল : [ হেসে, স্নেহার সামনে প্লেট এগিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা! নাও ডিনার করে নাও!

স্নেহা : করবো না!

রাহুল : ওহ রিয়েলি?

– আমি বললে না, তোমার বাপের.. [ বলতেই স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

রাহুল : [ হেসে ] মানে! আমার ফাদার-ইন-লো! ওনার থেকেও করতে হবে! বুঝেছো! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে ওপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : আরে কি হলো স্নেহা! হঠাৎ এমন বিহেভ করছো কেনো?

স্নেহা : আমি যখন বলেছিলাম করতে তখন আপনি করেছিলেন ডিনার?

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] আচ্ছা তো এই ব্যাপার!

– [ মুচকি হেসে ] বাট! স্নেহা! আমার সত্যিই খিধে নেই!

স্নেহা : হুমম! আমার ও খিধে নেই! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে আবারো বসিয়ে দেই ]

স্নেহা : কি হলো! বললাম তো! খিধে নেই!

রাহুল : [ চোখ বটে নাক দিয়ে স্নেহার ঘাড়ে স্লাইড করে করে ] তোমার হাতে খাইয়ে দিলে, খিধে চলে আসবে কিন্তু!

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে ] প..প্রমিস?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] ইউর প্রমিস!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 61

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 61

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : মা..মানে? [ বলতেই স্নেহা পা আলগে তুলে রাহুলের দু-গালে হাত রেখে ঠোটে চুমু বসালো, রাহুল ও বুঝতে পেরে হেসে স্নেহাকে পিছে ঠেলে দেওয়ালে লাগিয়ে স্নেহার ঠোটের সাথে তাল মেলাতে লাগলো ]

কিছুক্ষণ পর,

[ স্নেহা রাহুলকে থামিয়ে সরিয়ে দিয়ে, আবারো ঠোটের উপর হাত রেখে চেপে, ভ্রু কুচকে এক নজরে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, রাহুল ও ভ্র-কুচকে তাকালো, কারণ সে বুঝতে পেরেছে স্নেহা কেনো এইভাবে হয়ে তাকিয়ে আছে! একই রিয়েকশন কিছুক্ষণ আগেই তো দিয়েছিলো ]

রাহুল : [ হেসে দিয়ে ] শিটট! ব্যথা? [ স্নেহা কিছু বললো না, জখমি ঠোটে চেপে ধরে রাখা হাতটা দিয়ে মুখ মুছে তাকালো, মৃদু হেসে রাহুল স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে খুব যত্নে ঠোটে আংগুল বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলো ]

রাহুল : আই হেভ মেমোরাইজড ইউ আওয়ারলি, আই থট!

– আই উইল বি মেনশনড ইউ লাইক অ্যা প্রেয়ার, বাট! আম সরি ওকে? কজ আই হার্ট ইউ! [ অবাক হলো স্নেহা রাহুলের কান্ড দেখে, একটা মানুষ ভালোবাসায় এতোটা পাগল হতে এই প্রথমই রাহুলকে দেখছে সে, ঠোটের সাথেও কি কথা বলে নাকি মানুষ, হেসেই দিলো ]

রাহুল : ডু ইউ নো,হাও ডেঞ্জারাস্ ইয়র স্মাইল ইজ?

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের কাধের দু-দিক হাত রেখে ] ইয়াআহ! আই নোও! বিকজ স্নেহা’স্ স্মাইল পাসওয়ার্ড ইজ রাহুল!

রাহুল : রিয়েলি?

স্নেহা : হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ পেইন ইন ইয়র লাভ, হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ স্মাইল ইন ইয়র পেইন! সো্ ইটস্ হার্ড টু লিভ ইন লাভ!

– রাহুল!

রাহুল : হু!

স্নেহা : [ রাহুলের ঠোটের নিচে আলতোভাবে চুমু দিয়ে ] ডু ইউ নো! ইউ আর মাই পেইন![ আবারো চুমু খেয়ে ] ইউ আর মাই লাভ!

রাহুল : ইয়াহ!

স্নেহা : [ চোখ বন্ধে হেসে ] ইউ আর মাই এভ্রিথিং!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়া আই নোও! [ বলেই আপ্রাণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্নেহার মায়াবী চেহেরাটির দিক, অদ্ভুত এক ভালোবাসা জেগে উঠে স্নেহার, তা অবশ্য সবসময় নয় মাঝেমাঝেই দেখা দেই, ঠিক তখনিই মুখ দিয়ে তার ভালোবাসার প্রতিশব্দ গুলো বাহারি ফুলের মতোই ঝড়ে পড়ে, যেটা এখন আবারো পড়ছে, তবে এই ভালোবাসার প্রতিশব্দ গুলো স্নেহার মুখ দিয়ে ঝড়ে পড়ার ও কি দরকার সে তো স্নেহার চোখ দেখেই সব পড়ে নিতে পারে, অবিশ্বাস্য কিছুই নয়, ভালোবাসা বিস্তর হলে বোধহয় এমনই হয় ]

স্নেহা : [ চোখ খুলে ] কি দেখছেন এভাবে?

রাহুল : তোমাকে!

স্নেহা : আর কতো দেখবেন?

রাহুল : যতোক্ষণ না এই শ্বাসটা থেমে যায়!

স্নেহা : এতো ভালোবাসেন কেনো?

রাহুল : তুমি এতো ভালো তাই!

স্নেহা : যদি কষ্ট দেই?

রাহুল : লড়াই করে যাবো ঐ সব কষ্ট গুলোর সাথে!

স্নেহা : জানেন!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে আসা চুলগুলো কানে গুজে দিয়ে ] বললে জানবো!

স্নেহা : শুনেছি! এতো বেশী ভালোবাসা নাকি ঠিকনা! অধিক চাওয়া অধিক ভালোবাসা জিনিষটাই নাকি সবার আগে হারাতে হয়

রাহুল : [ মৃদু সূরে ] খোদা ছাড়া আর কারো ঐ সর্বশক্তি নেই যে তোমাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিবে!

– দুনিয়ার সব অশুভ শক্তির সাথে লড়ে যাবো! জান নিয়ে খেলবো, মরতে হলে একসাথেই মরবো,তাও তোমাকে হারাতে দেবো না আমার কাছ থেকে! [ বলেই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহার নাকে নাক ঘষলো ]

– আসল কথা জানো কি স্নেহা? [ স্নেহা আহ্লাদি চোখে তাকালো রাহুলের চোখের দিক, রাহুল স্নেহার মাথাটা কাছে টেনে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে ধরলো, অজানা কোনো শব্দই নয় সেই চিরচেনা রাহুলের হৃদস্পন্দনের ধুপধুপ আওয়াজটায় স্নেহার কানের কাছে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে, তবে এই ধুপধুপ শব্দটি কি ভালোবাসার কোনো কথা বলে যাচ্ছে? হ্যাঁ তাই তো, এতো তীব্র কেনো হচ্ছে শব্দটি ]

রাহুল : শুনতে পাচ্ছো স্নেহা? এই হৃদয়ের স্পন্দন গুলো বলছে! তুমি আছো বলেই এরা চলছে, তুমি না থাকলে এরা থেমে যাবে! [ স্নেহা রাহুলের বুকে একটি চুমু খেয়ে মাথা উঠিয়ে তাকালো রাহুলের দিক, দু-হাতে রাহুলের কলার ধরে নাকে নাক চেপে দীর্ঘশ্বাস নিচ্ছে, রাহুলের শ্বাসগুলো ও স্নেহার মুখের উপর এসে পড়ছে, এক অদ্ভুত অনুভূতি এসে ভীর জমিয়ে দিচ্ছে দুজনের মনে, তীব্র হতে চলছে ভালোবাসা গুলো, আড়াআড়ি অনুভব করছে স্নেহার মুখে রাহুলের খোঁচা-খোঁচা দাড়ি গুলোর স্পর্শে, আলাদা এক স্মেল আছে রাহুলের এই দাড়ি গুলোর, যে স্মেলটায় স্নেহার মনটাকে পাগল করতে বাধ্য হয়, তবে এই অনুভবটায় স্নেহার সবচেয়ে প্রিয় অনুভব, আলতো করে রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে স্নেহা, নিজের ঠোট দিয়েই গভীর চুমু বর্ষন করলো রাহুলের ঠোটে, রাহুল ও বাধা দিচ্ছিলো না স্নেহাকে, যেহেতু স্নেহা নিজ ইচ্ছায় আদর করছিলো, কোমোড়ের শাড়ীর নিচে হাত দিয়ে স্লাইড করে ধরে সেও তালমিলিয়ে নিলো,

হঠাৎ, স্নেহা রাহুলকে ঠেলে দিয়ে আবারো তাড়াতাড়ি ঠোটে হাত দিয়ে চেপে ধরলো,ব্যপারটা কোনোভাবেই অবাক করলো না রাহুলকে, বরং কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো রাহুল, মলিন চোখে তাকিয়ে থেকে জখমি ঠোটটা ঘষতে লাগলো স্নেহা ]

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! ইটস্ নট অ্যা প্রেশার! আমরা পরে ও করতে পারবো! [ কিছু বললো না স্নেহা, নিস্তব্ধই রয়ে গেলো, তবে রাহুল ও স্নেহার মজা উড়াতে ছাড়লো কই! ]

রাহুল : [ স্নেহার ঘাড়ের পাশে দেওয়ালে হাত রেখে ] বিটউইন! স্নেহা,আজ ফিল একটু বেশি এসে গেলো বোধ হয়!

– বাট! বেড লাক! আমার কামড়টা জোড়ে পড়ে সব ডিস্ট্রাকশন করে দিলো!

– বাই দ্যা ওয়ে! চিন্তা করোনা, তুমি চাইলে কিন্তু এটা ছাড়া আমরা অন্যকিছুও করতে পারি! [ With tedi smile ]

স্নেহা : অ..অন্যকিছু মানে? [ রাহুল দীর্ঘশ্বাস নিয়ে পাশফিরে তাকিয়ে একটু হেসে, আবারো স্নেহার দিক তাকিয়ে চোখ দুটো ত্যাড়া করে ধীরেধীরে একবার স্নেহার চেহেরার দিক আরেকবার স্নেহার পুরো বডিতে চোখ বুলাতে লাগলো, স্নেহা ও রাহুলের এভাবে তাকানোর দৃষ্টির নজরদারিতে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ]

রাহুল : অন্যকিছু মানে হচ্ছে..উমম! [ বলেই আংগুল দিয়ে স্নেহার ঠোট থেকে গলায় স্লাইড করে, বুকের দিক এনে শাড়ীর আচলটা সরাতেই যাবে তখনি ]

স্নেহা : [ রাহুলের আংগুল ধরে ফেলে ] আই গট ইট মিষ্টার তেডি স্মাইল!

রাহুল : স্নেহা! তোমার শাড়ীর লেংথ একটু বেশি হয়ে গেছে, চলো আমি শর্ট করেদি, [ বলেই আংগুল দিয়ে স্নেহার পেটের দিক স্লাইড করে শাড়ী তুলে কুচিগুলো ধরতেই ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত সরিয়ে দিয়ে ] ছিইইই রাহুল!

রাহুল : হোয়াট ছি? ছিইই মানে কি? হ্যা?

– নাও আম ইয়র হাজবেন্ড স্নেহা, এখনো যদি ছি বলো [ স্নেহা লজ্জিত একটি হাসি দিয়ে রাহুলকে ঠেলে সরিয়ে চলে যায় ]

রাহুল : ওয়েট স্নেহা! [ বলেই দৌড়ে গিয়ে স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ফেললো ]

স্নেহা : রাহুল! কি করছেন পাগল নাকি?

রাহুল : হ্যা! পাগল তো করেই দিয়েছো আমাকে! এখন পাগলামিটা শেষ করতে দাও!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আচ্ছা ছাড়ুন!

রাহুল : [ আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] আরেহ! ছাড়বো কেনো?

স্নেহা : [ হেসে দিয়ে ] পা..পানি খাবো তৃষ্ণা পেয়েছে!

রাহুল : বাহানা কম বানাও স্নেহা! [ বলেই চোখ বন্ধে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহার ঘাড়ে মাথা হেলিয়ে রাখলো ]

স্নেহা : সত্যি রাহুল! বাহানা না

রাহুল : এমনিতে তৃষ্ণা তো আমার ও অনেক পেয়েছে বাট পানির না আমার তো তোমার তৃষ্ণা.. [ বলেই স্নেহার পেটে হাত বুলিয়ে নাক দিয়ে ঘাড়ে স্লাইড করতেই, স্নেহা রাহুলের হাতটা ছুটিয়ে ডাইনিং টেবিলের দিক চলে যায়, জাগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে,গ্লাসটা এগিয়ে নিতেই পেছনে রাহুলের উপস্থিত অনুভব করলো, কোমোড়ে রাহুলের হাতের স্পর্শ, জুড়ান এক অনুভুতি কাজ করছে, বুকের সাথে হাতটাও কেপে চলছে, কিছু না বলেই গ্লাসটা শক্ত করে ধরে নিয়ে পানি খেতে লাগলো, রাহুল তার মুখ এগিয়ে স্নেহার ঘাড়ের কাছে এনে গলার দিক তাকালো, ঢোগ গিলছে স্নেহা যেনো তৃষ্ণা মেটাচ্ছে রাহুল, পানি গুলো ও রাহুলের লোভনীয় দৃষ্টির মতো ছুয়ে ছুয়েই নামছে স্নেহার গলা দিয়ে, আলতো করে একটি চুমু দিয়েই দিলো রাহুল সেই গলায়, পানি খাওয়া থামিয়ে দিয়ে স্থীর হয়ে দাড়িয়ে গেলো স্নেহা, গ্লাস হাতে নিয়ে ধীরেধীরে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার কপালে কপাল লাগিয়ে ] স্নেহা! পানিটাও এতো সুন্দর করে কেমনি খাও?

স্নেহা : [ হেসে ] রার..রাহুল! আপনার মনে আছে ভার্সেটিতে একদিন গার্ডেনের ঐদিক আপনাকে পানি দিয়েছিলাম, আ..আপনি খাচ্ছিলেন না, যতোক্ষণ না পর্যন্ত আমি মুখ লাগিয়ে খায়নি!

রাহুল : [ চোখ খুলে হেসে দিয়ে ] ইয়া..ইয়াহ আই রিমেম্বার!

স্নেহা : [ হেসে ] কিনা পাগল ছিলেন আপনি!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! এটা পাগলামি না ভালোবাসা স্নেহা ভালোবাসা! [ স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের গালটা টেনে দেই ]

রাহুল : চলো আজ আবার নতুন ভালোবাসা দেখায়!

স্নেহা : মা..মানে? [ রাহুল কিছু বললো না এক হাতে টেবিলে ভর করে হাত রেখে অন্য হাতে স্নেহার থেকে পানির গ্লাসটা নিজ হাতে এগিয়ে নিলো, স্নেহা ও তাকিয়ে আছে অবাক চোখে কি করতে যাচ্ছে রাহুল কিছুই বুঝে উঠছিলো না, হঠাৎ রাহুল নিজের ঠোট স্নেহার কাছাকাছি এনে গ্লাসটা কাত করে কিছু পানি স্নেহার ঠোটে ঢাললো, স্নেহা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো তাড়াতাড়ি, দু-হাত পেছনে থাকা টেবিলের উপর ভর দিয়ে রেখে শক্ত করে টেবিল চেপে ধরলো, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, ঠোটে পানির ঠান্ডা অনুভব সাথে রাহুলের গরম নিশ্বাসটাও অনুভব করছে, রাহুল ও কাতর দৃষ্টিতে স্নেহার কাপা-কাপা জলসানো ঠোটের দিক পলক ঝুকিয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : [ মৃদু সূরে ] পানি গড়িয়ে যেদিক যেদিকই গিয়েছে ওদিক থেকেই পান করবো! [ নিস্থব্দে ঢোগ গিললো স্নেহা, রাহুল স্নেহার জলসানো ঠোটের জলগুলো জিহবা দিয়ে আলতো করে স্লাইড করে মুখে নিলো, থুতনিতে বিন্দু হয়ে জমে থাকা পানির ফোটাটি ও নিজের ঠোট দিয়ে স্লাইড করে নিলো, মাথা ঝুকিয়ে গলায় গড়িয়ে পড়া পানি গুলো নিজ ঠোটের গভীর চুমুর স্পর্শে পান করে করে চলছে, বুকের ধারে আসতেই স্নেহা যেনো চমকে কেপে উঠলো, রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরে ঠেলে সরিয়ে দিলো, রাহুল মাথা তুলে স্নেহার চোখের দিক তাকালো, স্নেহা ও চোখাচোখি হতেই লজ্জিত এক অনুভবে পাশ ফিরে সরে যাচ্ছিলো, হঠাৎ তখনিই হাতটা রাহুলের হাতে বন্ধি হয়ে আটকা পড়লো ]

রাহুল : [ টান দিয়ে স্নেহাকে একই জায়গায় দাড় করিয়ে ] বললাম তো স্নেহা! তুমি লজ্জা পেতে থাকো আমি ভাংগতে থাকবো!

[ চুপ করে চোখ নামিয়ে ফেললো স্নেহা, রাহুল স্নেহার সামনে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে, ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে স্নেহার কানের ঝুমকাটা কামড়ে ধরলো, স্নেহা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে কানের পেছনে হাত দিয়ে ঝুমকার পুষটা খুলে নিলো, রাহুল দাত দিয়ে স্নেহার কান থেকে ঝুমকাটা টেনে নিলো, স্নেহা হাত তুলে এগিয়ে দিলে, মুখ থেকে ঝুমকাটা স্নেহার হাতে ছুড়ে ফেললো রাহুল! একইভাবে অপর কানের ঝুমকাটাও রাহুল দাত দিয়ে কামড়ে টেনেখুলে স্নেহার হাতে ফেললো,

লাল হয়ে আছে স্নেহার কান দুটো, মুখ এগিয়ে রাহুল আলতো করে চুমু খেলো কানে, শিউরে উঠলো স্নেহা, রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরতেই হাত থেকে ছুটে কানের ঝুমকো গুলো মাটিতে পড়ে যায়, গালে দাড়ি ঘষে চোখের দিক একনজর তাকিয়ে একটু পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো, স্নেহাও তাকিয়ে আছে, হাতটা এগিয়ে কাছে টেনে হুট করেই কোলে তুলে নিলো রাহুল, নির্বাধায় স্নেহাকে নিয়ে বেড রুমের দিকই এগিয়ে গেলো, খাটের ধারে এসে শুয়ে দিলো স্নেহাকে,

অবিকল এক অনুভুতি, মাথা নুয়ে দাঁড়িয়ে তাই ভাবছে রাহুল, জ্যাকেটটা খুলে বিছানার কোণে রাখতেই স্নেহার পায়ের দিক নজর পড়লো, ধবধবে মলিন হয়ে আছে স্নেহার পা-জোড়া, এতোদিনে এসেই বুঝি রাহুল স্নেহার পা গুলো এতো গভীরভাবে লক্ষ্য করছে, হাটু গেরে বসে, হাত দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দিলো পা দুটো, মুখ এগিয়ে চুমু দিতেই যাবে তখনিই স্নেহা পা বটে ফেললো, রাহুল মৃদু হেসে হামাগুড়ি দিয়ে খাটে এগিয়ে উঠলো, স্নেহার পা টেনে সোজা করে নিয়ে, চুমু দিয়েই মাথা তুলে তাকালো,পেটের দিক শাড়ীটা সরে আছে স্নেহার, পানি পড়ে হালকা একটু ভিজে ভিজে ও আছে, যা রাহুলকে তৃষ্ণার্থ করে কাছে টানতে বাধ্য করেই চলছে, ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে ঠোট দিয়ে পেটে স্লাইড করে চুমু খেলো রাহুল, তার সাথে স্নেহার জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নেওয়াটা যেনো আরো পাগলই করে দিচ্ছে রাহুলকে, চুল মুঠি বেধে ধরে রাহুলকে সরিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা স্নেহার, কিন্তু এই তীব্র ভালোবাসায় হার মেনেই চলছে দুজন, পেটের দিক থেকে নাক দিয়ে এক শ্বাসে স্নেহার খুশবো নিয়েই মুখের ধারে আসলো রাহুল, ঠোট জোড়া কাপছে স্নেহার, আলতো করেই সেই ঠোটে চুমু খেলো রাহুল,গলার চুল গুলো সরাতেই স্নেহা চোখ বন্ধে শিউরে উঠে বিছানার চাদর মুচড়ে ধরে ফেললো, রাহুল চাদর থেকে স্নেহার হাত ছুটিয়ে নিজের হাতে মুঠি করে ধরে ধীরেধীরে গলাই চুমু বর্ষন করলো, চোখ বন্ধ করে ফেললো রাহুল ও,

ঠিক সেই মুহূর্তেই, হঠাৎ ফোনের রিংটোনটা বেজে উঠলো রাহুলের,

চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো স্নেহা, রাহুল ও স্নেহার গলার ধারে মাথা ঠেকিয়ে রেখে স্থির হয়ে গেছে, মাথা মুড়িয়ে রাহুলের দিক ফিরে তাকালো স্নেহা, চোখাচোখি হতেই দেখে রাহুলের চোখে যেনো রাগ ভাসছে, হাসি আসছিলো স্নেহার অনেক, রাহুলের বেচারা বেচারা চেহেরার ছাপ দেখে, তাই তাড়াতাড়ি মুখ সোজা করে ফিরিয়ে নিলো স্নেহা,

রাহুল : হাসো, হাসো স্নেহা! চেপে রেখেছো কেনো হাসি?

স্নেহা : ফো..ফোন বাজছে!

রাহুল : কান আছে আমার, শুনেছি! [ হাসি লুকাতে মুখের উপর হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো স্নেহা ]

রাহুল : ইডিয়ট! [ বলেই বালিশে স্নেহার মাথার পাশাপাশিই মাথা রেখে শুইলো, পা সোজা করে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কানে ধরলো ]

রাহুল : হ্যা! দাদীজান বলেন! [ স্নেহা ও হেসে রাহুলের ফোনের সাথে কান লাগিয়ে রাখলো ]

দাদী : আরেহ! রাহুল কোথায় গায়েব হয়ে গেলি বলতো?

রাহুল : হানিমুনে এসেছি দাদী ডিষ্টার্ব করোনাতো! [ চিমটি দিলো স্নেহা রাহুলের পেটে ]

দাদী : বদমাশ! হানিমুনে তো তুই ইটালি যাবি বলেছিলি, আমি কি ভুলে গেছি মনে করেছিস নাকি!

রাহুল : [ কান থেকে ফোন সরিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] লুক স্নেহা! দাদী আমাকে নিজের দেশের হানিমুন এখনো কমপ্লিট করতে দিচ্ছে না আবার বলে ইটালির কথা, কতোবড় সেল্ফিশ দেখেছো!

স্নেহা : [ হেসে ] শিসস! রাহুল! [ বলেই হাত টেনে আবারো ফোনটা কানের দিক ধরিয়ে দিলো ]

রাহুল : আচ্ছা দাদী! কি কারণে খুজছো বলোতো ?

দাদী : আরে তোদের রিসিপশানের ড্রেস এসে গেছে, তাই দেখার জন্যই..

রাহুল : উফফ! দাদী ড্রেসগুলো কি ভেগে যাবে নাকি? যে এক্ষুণি ডাকা ইমর্টেন্ট হয়ে গিয়েছিলো!

দাদী : ঢং কম কর! আর এক্ষুণি আয়!

রাহুল : আসবো না!

দাদী : আরে রাহুল এমন কেনো করছিস! সবাই অপেক্ষা করছে, তাড়াতাড়ি আয়!

স্নেহা : [ মাথা তুলে ফিসফিসিয়ে ] রাহুল নাহ কেনো বলছেন?

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে আবার শুয়ে দিয়ে ] দাদী! বললাম তো আসবো না!

দাদী : ঠিকাছে তোর যা ইচ্ছে তাই কর! কিন্তু স্নেহাকে পাঠা!

রাহুল : পাঠাবো না আমার বউ!

দাদী : হ্যা! তোর বউ তাতো জানিই আমরা! অন্ততপক্ষে ওর ড্রেসটা তো দেখতে পাঠা!

রাহুল : দাদীইইই জান! স্নেহা বিজি আছে আমার সাথে…

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] আজিব! রাহুল পাগল নাকি আপনি? বলেন আসছে,

রাহুল : নাহ!

স্নেহা : [ চিমটি দিয়ে ] বলেন!

রাহুল : আহহহ! স্নেহা ব্যথা পাচ্ছি! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি রাহুলের মুখ চেপে ধরে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, রাহুল ও কিটকিটিয়ে হেসে উঠে স্নেহার চেহেরার অবস্থা দেখে ]

স্নেহা : আপনি আসলেই..

– উফফ… [ বলেই খাট থেকে নামতেই যাচ্ছিলো, তখনি ]

রাহুল : [ হেসে স্নেহার হাত টেনে ধরে নিজের কাছে শুয়ে রেখে ] দাদী! উই আর কামিং!

দাদী : আচ্ছা ঠিকাছে আয়! [ রাহুল ফোন কেটে খাটে ছুড়ে রেখে, স্নেহাকে চেপে ধরে শুইয়ে সে ও স্নেহার উপর হয়ে শুয়ে পড়লো ]

স্নেহা : রাহুল ছাড়েন! দাদী অপেক্ষা করছে,

রাহুল : আহা! দাদী সামান্য একটু অপেক্ষা করছে এতে কতো মায়া, আর জামাইর দু-ভাংগা হয়ে যাওয়া মনটার জন্য একটুও মায়া হচ্ছে না,

স্নেহা : [ রাহুলকে ঠেলে সরানোর চেষ্টা করতে করতে ] ভালোই হয়েছে একদম! এইবার সরেন!

রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত টেনে নিয়ে দু-দিক চেপে ধরে ] কি বললে! আবার বলোতো!

স্নেহা : ছাড়েন রাহুল! প্লিইজ লেইট হচ্ছে তো!

রাহুল : উহু! আমারও ছাড়তে মন চাইছে না তো! [ স্নেহা হাপিয়ে উঠলো রাহুলের সাথে ছুড়াছুঁড়ি করতে করতে ]

রাহুল : [ হেসে ] শেষ শক্তি? এইটুকুতেই? [ স্নেহা কিছু বললো না, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই ধীরেধীরে মাথাটা আলগে তুলে রাহুলের ঠোটে ঠোট মেশালো, রাহুল হালকা একটু অবাক হলেও আবার স্নেহার ঠোটের সাথে তাল মিলিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো, হঠাৎ কিছুক্ষণ পরই রাহুল স্নেহার হাতের ধাক্ষা অনুভব করলো,

ফুফিয়ে উঠে সোজা হয়ে শুয়ে আছে রাহুল! দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে মুচকি হাসলো, স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা বসে শাড়ী ঠিক করছে উঠে দাড়ানোর জন্য ]

রাহুল : কি রোমান্টিক তারিকায় চিটিং করেছো স্নেহা!

স্নেহা : [ উঠে দাঁড়িয়ে রাহুলের দিক ফিরে ] আপনি যদি রোমান্স কিং হন! তাহলে রোমান্স কিং এর ওয়াইফ রোমান্স কুইন তো হবেই!

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] তাই?

স্নেহা : বাই! [ বলেই মুখ ভেংগিয়ে হেসে বেড়িয়ে যায়, রাহুলের ও কি আর করার হাসতে হাসতেই গাঁ হেলিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে খাটে শুয়ে পড়লো ]

আর এইদিকে, স্নেহা গেষ্ট হাউজ থেকে বেড়িয়ে দাদীর কাছেই রওনা দিলো, ড্রইং রুমে ঢুকতেই দেখে, দাদী মাত্রই সোফা থেকে উঠে চলে যাচ্ছিলো! তখনি আবার স্নেহাকে দেখে থেমে দাঁড়িয়ে যায়!

দাদী : [ স্নেহা কাছে আসতেই ] আরে স্নেহা! এসেছো! আমি ভাবলাম রাহুল মিথ্যে বলছে, কারণ ও আমাকে সবসময়ই এমন বোকা বানিয়ে থাকে! [ হাসলো স্নেহা দাদীর কথা শুনে ]

দাদী : আচ্ছা বাদ দাও শুনো! তোমাদের রিসিপশানের কাপড় গুলো আমি উপরে তোমাদের রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি! তুমি গিয়ে দেখে নাও! আর শয়তানটা আসলে ওকে ও দেখিয়ে নিও!

স্নেহা : আচ্ছা! [ দাদী হেসে চলে গেলো, স্নেহা ও রুমের দিক যাওয়ার জন্য শিরিতে পা দিবে তখনিই, গীতালি ডাইনিং টেবিলের পাশ থেকে ভাবীইইই বলে ডাক দেই, স্নেহা ফিরে তাকালে গীতালি হাত দিয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, স্নেহা হেসে এগিয়ে গেলো গীতালির দিক ]

গীতালি : ভাবী আমার না আপনের লগে কিছু ইমপর্টেন্ট কথা আছিলো!

স্নেহা : হ্যা! বলো!

গীতালি : [ ফিসফিসিয়ে ] ভাবী আপনের ফেন্সরা আছে না? ওনারারে নেহাল ভাইয়ার মা, মানে রাহুল ভাইয়ার বড় ফুফিডা বহুত কথা কইছে একটু আগে,

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] বু..বুঝলাম না আমি!

গীতালি : [ আশেপাশে একবার উকি দিয়ে আবারো স্নেহার দিক তাকিয়ে ] মানে ইনশাল্ট! ইনশাল্ট করছে! ভাবী, আমি তো ওনারার চেহেরা দেইখাই বুঝছি ওনারা বুহুদ কষ্ট পাইছে, ভাগ্যিস হঠাৎ নেহাল ভাইয়া আইয়া শুইনা গেছিলো তারপর উনার ঝাড়িতেই থাইমা গেছে [ বুকটা ধরে উঠলো স্নেহার গীতালির কথা শুনে ]

গীতালি : পেরেশান হইবেননা ভাবী! বড় ফুফিডা অনেক আগে থেইকাই এমন কুটনী মার্কা! রাহুল ভাইয়া যে আপনারে বিয়া করছে? এইডা নিয়াও খুশি না ওনি! ওনার তো বড় বড় খানদান থেইকা বউ চাই তাই! বিয়াতে ও আইতে চাইছিলো না, দাদী জোড় করছিলো, আর ঐখান থেইকা নেহাল ভাইয়ার ঠেলায় পইরা আইছে!

– আরে হার্শ স্যাররেও অনেক উল্ডাপাল্ডা বুঝাইতো! রাহুল ভাইয়ার মায়ের ব্যাপারে! এইজন্যই তো মেডাম আয়ে না!

হঠাৎ দূর থেকে গীতালি বলে ডাক আসে,

গীতালি : ঐ দেহেন শয়তানের নাম লইতেই শয়তান হাজির!

[ গীতালি মুখ ভেংগিয়ে তাড়াতাড়ি টেবিল পরিস্কার করতে ব্যস্ত হয়ে যায়, ফুফি কাছে এগিয়ে এসে গীতালি বলে আবার ডাক দিতেই স্নেহাকে দেখে থেমে যায় ]

গীতালি : জি কিছু কইবেন?

নাফিসা ফুফি : টেবিলে ডিনার লাগিয়ে দাও!

গীতালি : জি! [ বলেই কিচেনের দিক এগিয়ে গিয়ে আবার পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে ফুফি স্নেহার কাছাকাছি গিয়েই দাড়ালো, তাই গীতালি ও কাজের বাহানা করে তাদের কাছাকাছি এসে টেবিলে প্লেট বিলি করতে লাগলো ]

নাফিসা ফুফি : দেখা যাচ্ছিলো না তোমায় স্নেহা! কোথায় ছিলে? [ ঢোগ গিলছে স্নেহা একেতো গীতালির কথা শুনে হাত-পা অবোশ হয়ে গেছে, তারমধ্যে ফুফির এই প্রশ্নের কি জবাব দিবে সেটাও মাথায় আসছে না ]

– এনিওয়েস্ আই থিংক তোমার ক্লেভার ফ্রেন্ডসদের সাথেই ছিলে রাইট?

– আচ্ছা ওরা কোথায়? চলে গিয়েছে নাকি কোনো? ডিনারটাও করে যাবে না?

– [ হেসে ] যাবেই তো! মেই বি আশেপাশে কোথাও আছে খুজে দেখো! আর হ্যা! যদি চাই রাতটাও এইখানে স্টে করতে পারবে, এমনিতেও কোনদিকটা ছেড়েই বা রেখেছে!

– তবে হ্যা! যদি মনে একটু শেম থাকে না? তাহলে এটা জানিয়ে দিও যে, ক্লাস ছাড়া মেয়েদের আমি আমার ছেলের বউ বানাবো না,

– এই ক্ষেত্রে রাহুল আনলাকি হলেও তুমি আবার অনেক লাকি, [ বিরবির করে অন্যপাশ তাকিয়ে ] নাজানি ছেলেটা তোমার কাছে এমন কি দেখেছে!

– আচ্ছা আমি যায় এখন! [ চেচিয়ে ] গীতালি! কি বলেছি মনে আছে তো?

গীতালি : [ হাতের প্লেটটা টেবিলে জোড়ে ছুড়ে রেখে ] সা্রি সা্রি! হো মনে আছে! [ চলে গেলো ফুফি স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে ]

[ হাত-পা কাপছিলো স্নেহার ফুফির এমন কথা শুনে, এখন তো শুধু তার মাথায় একটাই টেনশন ঘুরছে, তার সাথে এইভাবে কথা বলতে পারলে না জানি তার ফ্রেন্ডসদের সাথে কেমন কথা বলেছে ]

গীতালি : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ভাবী! [ বলতেই স্নেহা চমকে উঠে তাকালো ]

– টেনশন কইরেন না! আনজয়! আনজয়! আরে কালকা সন্ধ্যায় ফ্লাইড ওনারার আপনেরার অনুষ্ঠান বিকালে শেষ অইলেই তারপর চইলা যাইবো! [ স্নেহা একবুক কষ্ট চাপা একটি হাসি দিয়ে মাথা নাড়ালো ]

গীতালি : আমি যায় ভাবী ডিনার রেডি করোন লাগবো নাইলে আবার মাথা হড হইয়া যাইবো![ বলেই কিচেনের দিক চলে গেলো, স্নেহা আশেপাশে একবার তাকিয়ে, পা বাড়াতেই যাবে হঠাৎ তখনিই শিরির দিক চোখ পড়লো, জারিফা মার্জান এবং শায়লা নামছে শিরি দিয়ে, জারিফা হাত নাড়ালো স্নেহাকে দেখে ]

শায়লা : [ এগিয়ে এসে ] কোথায় ছিলি স্নেহা! আমরা তোর রুম থেকেই খুজে আসছি, ভেবেছি তোরা রুমেই আছিস!

স্নেহা : গে..গেষ্ট হাউজে ছিলাম!

জারিফা : আচ্ছা! শোন স্নেহা! আমরা যাচ্ছি এইবার! ওকে? আর হ্যা! জিজুকে আমাদের পক্ষ থেকে বাই বলেদিস

স্নেহা : ডি..ডিনার..

জারিফা : আরে বাবা! এতোগুলোই খাবার না খেয়েছি, এরমধ্যে আবার ডিনার?

শায়লা : [ হেসে ] ডিনার করার মতো পেটে একদমই জায়গা নেই আমাদের! [ স্নেহা ও তাদের জোড় করার মতো সাহস পাচ্ছিলো না, মার্জানের দিক তাকালো, মাথায় একচটা রাগ নিয়ে ফুসলে আছে সে, চেহেরা দেখেই বুঝা যাচ্ছে ]

জারিফা : [ মার্জানকে ধাক্ষে ফিসফিসিয়ে ] কি হলো মার্জান! বাই বল স্নেহাকে!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] স্নেহা! এইখানে কেউ যদি তোকে উল্টো-পাল্টা কিছু বলে না? একদমই চুপ করে থাকবি না! মুখের উপর জবাব দিয়ে দিবি, আর না পারলে কল করে আমাকে ডেকে নিস!

শায়লা : আ..আরে কি বলছিস এসব? স্নেহা ওর মাথা আওট হয়ে গেছে, তুই তো জানিসই মাঝে মাঝে ও এমনিই হয়ে যায়! [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] আচ্ছা চল বাই ওকে?

জারিফা : [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] বাইই স্নেহা! [ স্নেহা মার্জানের দিক তাকিয়ে রইলো, ছটফট করছে মার্জান এদিকওদিক তাকিয়ে, বুঝতে পারছে স্নেহা এই ছটফটের কারণ ]

স্নেহা : বাই! [ জারিফা আর শায়লা ছুটে এসে দাঁড়ায় ]

মার্জান : [ স্নেহার কাছে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ] বাই স্নেহা! [ চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে স্নেহার, দূর থেকে গীতালি তাকিয়ে রইলো তাদেরদিক ]

শায়লা : আরে স্নেহা! কাদছিস কেনো আবার! এই সময় আমদের ও ইমোশনাল করে দিবি নাকি? [ স্নেহা চোখ মুছে হেসে উঠে ]

শায়লা : গুড গার্ল! আসি তাহলে

জারিফা : [ হাত নাড়িয়ে চেচিয়ে ] বাইই গীতালি [ গীতালিও হাত নাড়ালো, মার্জান আর শায়লা ও হাত নাড়িয়ে দিয়ে হাটা ধরলো, স্নেহা জলভরা চোখে তাকিয়ে আছে পেছন থেকে তাদের চলে যাওয়া ]

মেইন ডোর পার হতেই,

মার্জান : কি বলে আমাদের ঐ বজ্জাত মহিলা? আমরা গ্রীডি গার্ল? স্নেহার ফুফি শ্বাশুড়ী না হলে তো আজ একে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতেই পারতো না

– আমার তো স্নেহার জন্যই টেনশন হচ্ছে! নাজানি ওকেও কি কি বলে আমাদের জন্য! এক্সুলি আমাদের না আজ এইখানে আসায় উচিৎ ছিলো না!

জারিফা : আরে টেনশন করছিস কেনো স্নেহার সাথে রাহুল তো আছেই! রাহুল কিছু হতে দেবে না স্নেহার!

মার্জান : কিছু জানলেই তো হতে দেবে না! তোর কি মনে হয়? স্নেহাকে কিছু বললে সেটা স্নেহা রাহুলকে গিয়ে বলবে?

জারিফা : উমম তাও ঠিক!

হঠাৎ পেছন থেকে,

নেহাল : গাইস্!

শায়লা : [ বিরবির করে ] এসেছে! এর জন্যই এসব হয়েছে, আজ যদি ও আমাদের পেছন পেছন না ঘুরতো, তাহলে ওনার রিচ মমের ও কোনো এলার্জি উঠতো না!

জারিফা : শিসস! শায়লা! আস্তে বল শুনলে কষ্ট পাবে!

শায়লা : [ চেচিয়ে ] তাতে কি হয়েছে শুনুক! শুনলে আর আমাদের সাথে কথা বলবে না এটাই ভালো হবে!

নেহাল : লিসেন্ট! মম যা বলেছে..

শায়লা : হ্যা! তা কম পড়েছে নাকি এইবার আপনিও কিছু বলবেন? [ নেহাল আর কোনো জবাব দিলো না শায়লার কথার, শুধু আবেগী চোখ দুটো দিয়ে তাকিয়ে রইলো ]

জারিফা : বা..বাই! নেহাল! [ শায়লার দিক দেখিয়ে ] এ..এক্সুলি ও..

নেহাল : ইটস্ ওকে! তোমরা কি চলে যাচ্ছো?

শায়লা : তা কি আরো ইন্সাল্ট হোওয়ার জন্য থেকে যাবো নাকি?

জারিফা : [ শায়লাকে চিমটিয়ে ফিসফিসিয়ে ] স্টপ ইট শায়লা!

নেহাল : আ..আমি ড্রপ করেদিচ্ছি!

শায়লা : এতো দয়া দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই! গাড়ী ভাড়া আছে আমাদের, আর না থাকলে না, হেটেই চলে যাবো!

হঠাৎ পাশ থেকে রিদোয়ান আর আসিফ এগিয়ে আসে,

আসিফ : আরে তোমাদের ছাদ থেকে নামার পর আর দেখা গেলো না যে?

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে ] জারিফা ওনাকে বল আমার সিগারেটের স্মেল মোটেও পছন্দ না! তাই একটু দূর হয়ে দাড়াতে,

আসিফ : আচ্ছা! তাহলে কি সিগারেট খাওয়াও ছেড়ে দিতে হবে নাকি এখন?

মার্জান : জাহান্নামে যাক তাতে আমার কি! [ আসিফ অবাক হয়ে, মনে মনে ভাবতে লাগলো, এই মেয়ে পুরোদিন তো ঠিকই ছিলো হঠাৎ আবার এখন ঘাড় ত্যাড়া হয়ে গেলো কেনো, পুরোনো রক্তটা বোধহয় মাথায় আবার চেটে গেছে! ]

রিদোয়ান : [ জারিফার কাছে এসে ] আচ্ছা শুনো! আলিসা থেকে শুনলাম চলে যাচ্ছো নাকি?

জারিফা : হ্যাঁ!

রিদোয়ান : আমাকে না বলেই! আর তোমরা তিনজন এইভাবে একা?

জারিফা : ভাবলাম আ..আপনি আরো লেইটে যাবেন হয়তো, তাই আর..

রিদোয়ান : হ্যাঁ! আমিও ভাবলাম একসাথেই বের হবো, তবে তোমরা এক্ষুণিই কেনো যাচ্ছো!

শায়লা : এক্সুলি আমরা খুব টায়ার্ড, গতকালই তো বিয়েটা শেষ হলো, মানে বুঝতে পারছেন কতোটা লেভার গেছে আমাদের উপর! সো্ আই থিংক আমাদের এখন বের হওয়া উচিৎ!

রিদোয়ান : আচ্ছা চলো আমি ড্রপ করে দিচ্ছি!

জারিফা : নাহ আমরা তো..

রিদোয়ান : কথা বেশী বলোনা! [ জারিফা ও আর কিছু বললো না, এগিয়ে গেলো গাড়ীর দিক, মার্জান আসিফের দিক আড়চোখে তাকিয়ে মুখ ভেংগিয়ে দিয়ে চলে গেলো জারিফার পিছু পিছু, শায়লা নেহালের দিক নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে গাড়ির দিক হাটা ধরলো ]

রিদোয়ান : বাই নেহাল! আর হ্যা! রাহুলকে বলেদিস, ইভেন্টাররা সকাল সকাল এসেই সাজিয়ে দিবে,

– আচ্ছা! বাদ দে আমিই ফোন করে বলে দিবো! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

আসিফ : [ রিদোয়ানকে আটকিয়ে,পকেট থেকে তার গাড়ীর চাবিটা বের করে দিয়ে ] ধর এটা নে! তোরটা দে!

রিদোয়ান : [ কনফিউজড হয়ে ] বুঝলাম না!

আসিফ : মানে হচ্ছে আমার গাড়ীতে জারিফাকে নিয়ে তুই উঠ! আর ওদের দুজনকে নিয়ে আমি উঠছি!

রিদোয়ান : [ হেসে ] উমমম! বুঝেছি দোস্ত চান্স মারছিস হুমম?

আসিফ : আরে আমার গাড়ী হলে উঠবেনা তাই করতে হচ্ছে! [ বলেই হেসে চাবিটা কেড়ে নিয়ে চলে যায়, গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিতেই শায়লা, মার্জান দুজনই উঠে বসলো গাড়ীতে, আসিফকে ড্রাইভিং সিটে বসতে দেখেই ]

মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরেহ! আপনি?

আসিফ : জ্বি আমি!

মার্জান : কিন্তু..

আসিফ : আরে ওরা দুজন কাপল! আলাদা যাচ্ছে আরকি! আর আমরা কাপল আলাদা যাচ্ছি! [ বলেই গাড়ী স্টার্ট দিলো ]

মার্জান : এক্সকিউজ মি?

আসিফ : [ জিহবায় কামড় খেয়ে ] মানে হচ্ছে! ওদের একটু আলাদা টাইম স্পেন্ড করতে দিলাম! সিম্পল! [ শায়লা হেসে উঠলো, মার্জান নাক ফুলিয়ে জানালার পাশ তাকিয়ে ফেললো ]

___ এইদিকে রাহুল গেষ্ট হাউজ থেকে মেইন ডোরের সামনে আসতেই দেখে,নেহাল পকেটে হাত রেখে একা দাঁড়িয়ে আছে, আর গেইট দিয়ে আসিফ আর রিদোয়ানের গাড়ী দুটোই বেড়িয়ে যাচ্ছে,

রাহুল : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] আরে!স্টুপিড গুলো আমাকে না বলেই চলে গেলো! আর তুই এইখানে একা দাঁড়িয়ে কি করছিস?

নেহাল : নাথিং! [ বলেই মৃদু হেসে রাহুলের দিক একটু তাকিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো ]

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] নাথিং মানে? এর আবার কি হলো? [ বলেই সে ও ভেতরে ঢুকে পড়লো, ডাইনিং টেবিলের দিক গীতালিকে দেখতেই ]

রাহুল : হেইই গীতালি! স্নেহাকে দেখেছিস?

গীতালি : অওও! রাহুল ভাইয়া আপনারেই খুজতাছি!

রাহুল : আমাকে? কেনো?

গীতালি : [ রাহুলের কাছে এসে ] ভাইয়া! ভাবীর থেইকাই শুইনেন! আমি এতোসব এহন কইতে গেলে আবার ফুফি আইয়া দেইখা ফেলবো! তহন ভাববো আমি আবার প্যাচাল লাগাইতেছি, ব্যাস আমি তো অনলি এইজন্যই কইতাছি, ভাবীরে আমার খুব ভাল্লাগছে একদম সিধাসাধা, আর ভাইয়া আফনের সাথে তো একদম পার্ফিক্ট মেছ অইছে!

রাহুল : ওয়েট! আই কান্ট আন্ডারষ্ট্যান্ড এনিথিংক!

গীতালি : ইউ নট আন্ডাষ্টান! ওকে, [ বলেই আশেপাশে উকি দিয়ে ] আসলে ভাইয়া! ভাবীর ফেন্সরা আছে না? ওনারারে নাফিসা ফুফি বহুদ ইনশাল্ট করছে, নেহাল ভাইয়া আইবার পরই ফুফি থামছিলো নাইলে তো এক একডা কথা কইয়ায় যাচ্ছিলো কইয়ায় যাচ্ছিলো, তারা ডিনার না কইরাই চইলা গেছে, আমার মনে অয় দেয়ার ফিলিং ইনশাল্ট!

– আর তো কি অয়ছে জানেন! ভাবী আসার ফরে ভাবীরেও অনেক কিছু কইছে, ভাবী একদম চুপ কইরাই হুইনা আছিলো কিছুই জবাব দেইনাই!

– আচ্ছা ভাইয়া! আপনি এহন যান ভাবীরে একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা কইয়া মন ভালা কইরা ডিনার করানোর লাইগা লইয়া আয়েন! আমি যায় বাকিদের ও ডিনার করানোর লাইগা ডাহোন লাগবো [ বলেই চলে গেলো গীতালি, রাহুল হাত মুঠি করে ঐদিকটাই থমকে দাঁড়িয়ে আছে, মাথায় যেনো আগুন জ্বলছে রাহুলের, এমন কিছুও হবে সে কখনো কল্পনা করতে পারেনি, মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে রিদোয়ানকে কল দিলো ]

রিদোয়ান : [ রিসিভ করে ] সরি! দোস্ত তোকে বলে আসতে পারলাম না!

রাহুল : কোথায় এখন?

রিদোয়ান : ড্রপ করে দিচ্ছি জারিফাদের!

[ রাহুল আর কিছু বললো না ফোন কেটে পকেটে ঢুকিয়ে, তাড়াহুড়ো করে দু-তিন লাফে শিরি বেয়ে উঠে রুমে গিয়ে ঢুকলো, স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে জানালার ধারে বাহিরের দিক তাকিয়ে, চোখ থেকে ঝড়ে যাচ্ছিলো বেদনার অশ্রু, রাহুল এসেছে বুঝতে পেরে স্নেহা চোখ মুখ ভালো করে মুছে পেছন ফিরে তাকিয়ে মুচকি হাসলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে ] কাদছিলে?

স্নেহা : [ হেসে ] আরে নাহ! কাদবো কেনো?

– [ রাহুলের জ্যাকেটের কলার ঠিক করে দিয়ে ] আচ্ছা শুনেন! আপনার কাপড় আলমিরা তে রেখেছি! দাদী বলেছে দেখেনিতে!

রাহুল : কি বলেছে ফুফি? [ চমকে উঠলো স্নেহা রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হা করে তাকিয়ে আছো কেনো? বলো আমায় কি বলেছে? [ স্নেহা দরজার দিক একবার তাকিয়ে আবার রাহুলের দিক তাকালো তাড়াতাড়ি ]

রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি!

স্নেহা : রাহুল! ধীরে বলুন কেউ শুনবে!

রাহুল : [ দাতে দাত ঘেষে ] শুনুক! আই ডোন্ট কেয়ার!

স্নেহা : কেক..কে বলেছে আপনাকে এসব? আমাকে ফুফি কিছুই বলেনি!

রাহুল : ইডিয়ট [ বলেই রেগে স্নেহার কাছাকাছি আসতেই স্নেহা ভয়ে পিছিয়ে যায় ] তোমাকে কিছু বলেছে কি বলেনি তা আমি ভালোকরেই বুঝতে পারছি,

– তোমার মুখ ছিলো না জবাব দাওনি কেনো?

– ওর বাপের খাচ্ছো? হ্যা? ওর বাপের জবানা শেষ, আমার বাপের খাচ্ছো! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে বেরুতেই যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুল থেকে হাত ছুটিয়ে ] পাগল হয়েগেছেন আপনি? কি এসব বলছেন?

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 60

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 60

writer-Jubaida Sobti

কিছুক্ষণ পরই নেহাল ভেজা ভেজা কাপা শরীর নিয়ে উঠে এলো, পুল থেকে,

রাহুল : [ হেসে ] ইউ ওকে নেহাল?

নেহাল : [ চেয়ারের উপর থেকে টাওয়েলটা এগিয়ে নিয়ে ] ইয়াআআহ লুক এট মি! আম অলরাইট!

রিদোয়ান : ♪ টিপ টিপ ঠান্ডা পানি ♪ পানিমে আগে লাগাইয়ে ♪

– ওহোহো নেহাল! ইউ, লুকিং হট ব্রো!

নেহাল : [ টাওয়েলটা রিদোয়ানের গায়ে ছুড়ে মেরে ] জমে ফ্রিজ হয়েগেছি! আর তুই আছিস… [ হাসতে লাগলো সবাই নেহালের কান্ড দেখে ]

নেহাল : স্টুপিড! [ বলেই কাপড় চোপোড় পড়তে লাগলো ]

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] মোটেও ঠিক করেননি রাহুল! নরমাল কোনো কাজ দিলেই পারতেন!

রাহুল : আম নট অ্যা নরমাল পার্সন!

স্নেহা : ঠিকই বলেছেন আপনি নরমাল পার্সন না আপনি না একটা হার্ড পার্সন,আপনার মনটা তো স্টোন দিয়ে তৈরী!

রাহুল : অহ রিয়েলি?

স্নেহা : হুম! অবশ্যই!

রাহুল : যদি এমন হয়! তাহলে এই হার্ড পার্সনের স্টোন দিয়ে তৈরী মনটা গলানোর শক্তি শুধু তোমার কাছেই আছে স্নেহা! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে মুচকি হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]
________ এইদিকে,

নেহাল জ্যাকেটের হাত বটতে বটতে এগিয়ে এসে দেখে, তার জায়গা ফিল-আপ! অবাক হয়ে রিদোয়ানের দিক তাকালে, রিদোয়ান চোখটিপ মেরে বুঝিয়ে দেই যে, শায়লার পাশে সিট খালি করে রেখেছে! নেহাল ও ভোর কুচকে উত্তেজিত একটি হাসি দিয়ে শায়লার পাশে গিয়ে বসলো!

শায়লা : সো্ সেড মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া!

নেহাল : [ মুচকি হেসে ] ইয়াহ! আই নেও দ্যাট! কেউ আমার জন্য সেড ফিল করুক আর নাই করুক! তুমি অন্তত করবা!

শায়লা : বাব্বাহ! এত্তো কনফিডেন্স?

নেহাল : এক্সুলি! কিছু মানুষের ফেইস দেখে বোঝা যায় যে ওর হার্ট অনেক সফট হবে!

শায়লা : অও সবই বোঝেন! তো এটা বোঝেন না, যে মাথায় পানি জমে থাকলে ফেভার হবে?

নেহাল : ইয়াহ! টাওয়েলটা কোনদিক যেনো ছুড়ে মারলাম মনে পড়ছে না! এনিওয়ে লিভ ইট! আজ একটা পার্টনার থাকলে হয়তো তার ওড়না-টোড়না দিয়ে মুছে দিতো আরকি!

রাহুল : সো্ হোয়াট এতো আফসোস করছিস কেনো নেহাল! পাশে যেহেতু শায়লা আছে, ও না হয় মুছে দিবে! [ শায়লা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : আ..আই মিন! মানবতার খাতিরে!

আসিফ : ইয়াহ! শায়লা ইউ কেন ডু ইট! এজ অ্যা হেল্পিং হিউম্যানিটি

শায়লা : [ হেসে সবকিছু নরমালি নিয়ে ] শিয়র [ বলেই ওড়না দিয়ে নেহালের মাথা মুছে দিতে লাগলো ]

নেহাল : বাই দ্যা ওয়ে! মিস্ শায়লা, যদি তুমি চাও এজ অ্যা অন্য কিছু ও ভেবে করতে পারো! এতে, আই ডোন্ট মাইন্ড! [ শায়লা নেহালের ঘাড়ে একটি চাপ মেরে বসে পড়লো ]

নেহাল : আরেহ! এইটুকুতেই শেষ!

শায়লা : আপনি এইটুকুই ডিজার্ব করেন তাই!

নেহাল : আচ্ছা! মুখটা তো অন্তত মুছতে দাও [ বলেই শায়লার ওড়নার আচল টেনে নিয়ে মুখ মুছতে লাগলো ]

শায়লা : আরেহ! [ বলেই কেড়ে নিলো ওড়না ]

নেহাল : বাহহ! কি খুশবো!

শায়লা : তাইই?

নেহাল : আচ্ছা তুমি পার্ফিউম ইউজ করো? নাকি এটা তোমার ওড়নারই বারী খুশবো?

আসিফ : [ হেসে ] বারী খুশবো না নেহাল বাহারী খুশবো!

নেহাল : ওহ ইয়াহ! বারী খুশ..সরি বাহারী খুশবো! [ শায়লা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

রোহানী : গাইস্ এইবার গেইমে বেক করা যাক?

নেহাল : শিয়ররর! বেবী!

রোহানী : [ হেসে ] ওকে প্লিজ! এটেনশন! [ বলেই বোতোল ঘুরালো, হেসে উঠলো সবাই কারণ বোতোলের হেড গিয়ে থামলো জারিফার দিক ]

নেহাল : এইবার বলবে [ মুখ ভংগি করে ] আমি ট্রুথ আমি ট্রুথ!

জারিফা : আজিব এখনো কিছু বললামই না আমি!

নেহাল : কজ উই নো এটাই বলবা!

শায়লা : কি মনে করেছেন নিজেকে একটা ডের ডান করে? মেয়েরা অতোটাও লুজার না মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া ওকে? কামঅন জারিফা প্রুফ করেদে! উই আর নট লুজার!

জারিফা : [ কনফিউজড হয়ে ] ইয়াহ! বাট..

শায়লা : আরে এতো কনফিউজড হোওয়ার কি আছে! জাষ্ট কিছু করতে হলে করে দেখাবি এইটুকুই তো!

জারিফা : ও..ওকে ডের!

নেহাল : ও ইয়ে! ইয়ে!

জাফসিন : [ হাত তুলে ] আমি বলি আমিইই আমি?

নেহাল : ওকে বল!

জাফসিন : তুমি না একটিং করবা! তোমার যেকোনো একজন ফ্রেন্ড এর!

রিদোয়ান : [ বিরবির করে ] বরাবরই দিয়েছে একট্রেসকে একটিং করতে!

জারিফা : আই! কি বললেন আপনি?

রিদোয়ান : [ হেসে ] নাহ! বলছি একটিং তো তুমি ভালোই পারো! সো্ ইমিডিয়েটলি ডের ডান করতে পারবা!

– আ..আরে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো খা..খারাপ কিছু বলেছি নাকি?

জারিফা : [ গাল টেনে দিয়ে ] নাহ! কিউট কথা বলেছেন! [ বলতেই রিদোয়ান দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মুচকি একটি হাসি দিলো, আর জারিফা কার একটিং করবে চিন্তা করতে করতে স্নেহা, শায়লা, মার্জান সবার দিক একবার একবার তাকাতেই হঠাৎ,আসিফ চোখ দিয়ে মার্জানের দিক ইশারা করে দেখিয়ে দিলো, জারিফা ও হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো ]

আসিফ : সো্ শুরু করা যাক?

জারিফা : [ দাঁড়িয়ে ] ওকে! আম রেডি!

আলিসা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইইই! বাট কার একটিং নামটা তো মেনশন করে দাও!

জারিফা : মার্জান! [ সবাই হেসে মার্জানের দিক তাকালে সে ও হাসে ]

জারিফা : গাইস্! আমার না ওর মতো একশ্বাসে কথা বলা আসে না তাও ট্রাই করবো ওকে!

আসিফ : ওকে ওকে! স্টার্ট!

জারিফা : হুম! সকালে যখন সবার আগে ওর ঘুম ভাংগবে! তখন..

– [ নাক ফুলিয়ে ] আহাহা! নবাবজাদিরা নাক ডেকে ডেকে ঘুমুচ্ছে! আর এইদিকে আমার ঘুমটা কই গেলো কে জানে? এতো তাড়াতাড়ি ঘুম ভাংগার কি প্রয়োজন ছিলো! উফফ আমি একা একা বসে কি করবো এখন! [ সবার গায়ের থেকে কাথা কম্বল যেটাই থাকুক ওটা টেনে নিয়ে ] এইইই ওঠ সবগুলো সকাল হয়ে গেছে তো ওঠ ওঠ, [ আর যদি না উঠি তাহলে ওয়াসরুম থেকে জাগ ভরে পানি এনে সর্বনাশ ]

– [ রাস্তায় কোনো ছেলে যখন আমাদের দিক তাকায় তখন ] আচ্ছা এর কি মা বোন নেই? এইভাবে তাকিয়ে থাকার মানেটা কি? সুন্দর কি আমাদের গা ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে? [ দাতে দাত ঘেষে ] হনুমান কোথাকার দাড়া লাষ্ট বার দেখবো যদি চোখ না সরাস না আজ তোর একদিন কি আমার একদিন!

– [ কোনো ছেলের সাথে ধাক্ষা লাগলে ] আচ্ছা চোখের এন্টেণা কি হাতে নিয়ে হাটেন? নাকি, অমনি মেয়ে দেখলেই গা ঘেষতে মন চাই?

– [ ছেলেটা যদি সরি বলে ] আরেহ! সরি ও বলে আবার! মানে কি? কথা বলার চান্স নাও তাই না? আমি বুঝি না এসব? ক্লাস টু এর বাচ্চা মনে হয় আমাকে দেখে? হ্যা?

– [ যখন আমরা সবাই রোমান্টিক মুডে তখন সে যুক্তিবাদী ] দেখ! এসব ক্রাশ-ব্রাশ খাওয়ার চেয়ে না ভাত খা পেট টা অন্তত ভরবে, আর যে ছেলেগুলোর উপর ক্রাশ খাচ্ছিস না,সবগুলোই এক নাম্বারের লুচ্চা! এক কথায় এদের সাথে প্রেম করা মানে লাইফটা নিজ ইচ্ছায় হেল করে দেওয়া, আর তোরা যা ভাবছিস প্রেম করলে সব ফ্লিমি স্টাইলের হবে হাহাহা এসব ফ্লিমে হয় বাস্তবে নয়, বাস্তবে তো আজ ওকে ভালো লাগলো তো কাল এর চেয়ে সুন্দর আরেকটি দেখলে আবার ওকে ভালো লাগবে মানে সবই টাইম ওয়েষ্ট!

– [ যখন আমরা সবাই সিরিয়াল দেখি আর ঐদিন ওর কুকিং এর পালা থাকে, তখন রান্নাঘর থেকে ] আল্লাহ! তোদের মতো ফ্রেন্ড আমার শত্রুদের ও না দিক, মানে কি? আজ আমার কুকিং এর পালা বলে কি কেউ একটু আমায় হেল্প ও করবি না? আমি কুক করলে কেউ তো অন্তত কাট করে দিতে পারিস! এমনিতেই আমি পেয়াজ কাটতে গেলে অন্ধ হয়ে যায়, তখন দুনিয়ার সব ইমোশনালই যেনো আমার চোখে এসে পড়ে, ঠাডা পড়ুক তার উপর যে এখনো পেয়াজের ঝাজ দূরীকরণ আবিস্কার করতে পারেনি!

– আচ্ছা টিভির ভলিউম এতো হাই করে রাখতে হয় নাকি? এই আকসারা সিরিয়াল দেখতে দেখতে না তোরা এবং তোদের নাতী-নাতনী ও মরে কবরে কংকাল হয়ে যাবে তাও এই সিরিয়ালের ইন্ডিং হবে না!

– [ যখন আমাদের সাথে অন্যকারো ঝগড়া লাগে ] কি কিহ..কি হয়েছে? কি হচ্ছে এসব? হ্যাংলা-পাতলা দেখে কি গায়ে জোড় নেই ভেবেছিস নাকি? এগুলো আমার ফ্রেন্ডস মানে আল্লাহর দেওয়া তিন-তিনটা এক্সট্রা জান আমার! গায়ে টুকা লাগিয়ে দেখ! দেখনা, হাত কেটে কিমা বানিয়ে না কুত্তা-বিলাইকে ইনভাইট করে খাওয়াবো! ইয়াক ছ্যাঁ! কুত্তা বিলাই ও খাবে না তোর মাংস!

– [ এক্সামে যখন ওর সিট সবার পেছনে হয় ] মানে কি আমি সবার থেকে টাকা কমদেই নাকি, যে আমার সিটই সবার লাষ্টে দিতে হলো, এই টাকলা প্রফেসর নিশ্চিত সামনের সিট ওয়ালাদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে! আরে নে নে কদিনই আর বাচবি? এমনিতেই তুই শিঘ্রীই আমার অভিসাপে মরবি! টাকলু কোথাকার! মনটা চাচ্ছে তোর মাথায় শিল-পাথর মারি! [ জারিফার অভিনয় দেখে বাকিরা কিটকিটিয়ে হাসতে হাসতে পেঠ ধরে কাৎচিত হয়ে গেছে ]

আসিফ : [ হেসে হেসে ] স্টপ স্টপ! আর পারছিনা!

নেহাল : [ হেসে হেসে ] হোহো মার্জান ইউ আর অ্যা সুপার ওমেন! টু মাচ এংগ্রি গার্ল! এন্ড জারিফা ইউ আর সাচ অ্যা গ্রেট একট্রেস্ আই রিয়েলি এঞ্জয় ইয়র একটিং! [ সবাই তালি দিয়ে উঠলো ]

জারিফা : [ দুবার মাথা নুয়ে ] থেংক ইউ থেংক ইউ! [ বলেই হেসে বসে যায় ]

মার্জান : [ তালি দিয়ে ] গুড ছিলো! [ বলতেই জারিফা চোখ টিপ মারলো ]

– সো্ গাইস্! আমি ও না তোমাদের জারিফারটা ফ্রিতে দেখিয়ে দিচ্ছি! ও কেমন এটাও তো জেনে নাও তোমরা!

রিদোয়ান : ইয়াহ! আম ইন্ট্রেষ্টেড!

আলিসা : ওয়াও আম অলসো্ এক্সাইটেড! প্লিজ হারিয়াপ!

মার্জান : শিয়র! [ বলেই দাঁড়িয়ে যায় ]

– [ যখন কোনো প্রোগ্রাম থাকে, প্রোগ্রামের এক সপ্তাহ আগে থেকে মিস্ জারিফা ] ইয়ার! আমার কাছে না ভালো কোনো ড্রেসই নেই! যা আছে সব গুলো দিয়েই পিক তুলা হয়ে গেছে! আচ্ছা ঐদিন না অরেঞ্জ একটা ড্রেস কিনলাম? ঐটা পড়বো নাহয়? উমহুম! অরেঞ্জ পড়লে তখন যদি আমায় কালচে লাগে! আচ্ছা গ্রীন কালার গাউনটা পড়বো? উফফ বাট ঐটা তো আবার আয়রন করতে হবে! হোয়াইট গাউনটা পড়ি নাহয়? নানাহ ওটা বেশী গড়জিয়াস হয়ে যাবে, এককাজ করবো মেজেন্ডা থ্রী-পিসটাই পড়ে ফেলবো, আরে ইয়ার এখন তো ডার্ক লিপিস্টিক চলছে আর আমার তো ডার্ক মেজেন্ডা লিপস্টিকটাই কেনা হয়নি! তাহলে কি পড়বোওওওওও?

রাহুল : [ অবাক হয়ে জারিফার দিক তাকিয়ে ] হোয়াট দ্যা ফাক! এত্তগুলা কনফিউজড!

জারিফা : [ মুখ গোমড়া করে ] হুমম!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে মার্জান! ইউ কান্টিনিউ!

মার্জান : [ হেসে ] ওকে!

– [ যখন দূর থেকে কোনো হ্যান্ডসাম ছেলে দেখবে ] ওয়াওওওও গাইস্ লুক এট হিম! হোয়াট অ্যা কুল বয়! লাইফ পার্টনার বানাও তো এমনিই কোনো ছেলেকে বানাও!

– [ যখন ছেলেটিকে কাছ থেকে দেখে ] পুরাই পটোলের মতো দেখতে, দূর থেকে তো পুরো শাহ-রুখ-খান লাগছিলো! দাত গুলো দেখ কি কালো, যতো রকমের হিরোইন আছে বোধহয় সবই খায়,

নেহাল : হাহাহাহাহ! স্টপ ইট! গাইস্ আই কান্ট স্টপ মাই লাফিং!

মার্জান : [ যখন ও মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াবে! এবং আয়নার দিক তাকিয়ে নিজের সাথে নিজে যেভাবে কথা বলে ]

– ওয়াও জারিফা! আচ্ছা এতো সুন্দর কেনো তুমি? আরেকটু কম হতে পারো না? ইশশিরে! লজ্জা লাগছে তো, তোমার এই হাসি, তোমার ঠোট, তোমার চোখ,ওহ কামঅন আমি তো মাশাল্লাহ বলতেই ভুলে গিয়েছি! মাশাল্লাহ মাশাল্লাহ কারো নজর যেনো না লাগে!

– [ আর এসব দেখে যদি আমরা হাসি ] হাসার কি আছে? যা সত্যি তাই তো বললাম? কি স্নেহা আমি সত্যি বলিনি? [ আমি আর শায়লা যদিও বলি তুই দেখতে হনুমান, বিড়ালের মতো কিন্তু মহানদয়াশীল ব্যাক্তি স্নেহা তার তারিফ করেই ছাড়বে ]

[ হেসে উঠলো স্নেহা, জারিফাও ফ্লায়িং কিস্ ছুড়ে দিতে লাগলো স্নেহাকে ]

মার্জান : [ এক্সামের আগের দিন রাতে বই খুলে ] আস্তাগফিরুল্লা এত্তগুলা পড়া কেমনি শেষ করবো? আমি তো নিশ্চিত ফেইল! ইয়া আল্লাহ! আর জীবনেও কোনো গুনাহ করবো না, কোনো ছেলের দিক তাকাবো ও না ক্রাশ ও খাবো না! শুধু লাষ্ট বারের মতো অন্তত পাশ মার্কসটা পাইয়ে দিও! ইয়ার স্নেহাআআআ কাল না তুই আমার পাশেই বসবি! ওকে? আমি কিন্তু তোর পেপার কপি করবো, আচ্ছা স্নেহা! এতো পড়া পড়িস কিভাবে? আল্লাহ যদি তোর থেকে কিছু ব্রেইন আমায়ও দান করতো! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরা ]

মার্জান : হাহা! এইটুকুই জেনে রাখো গাইস্! ওরনা আরো হাজার হাজার আছে, তা সবার সামনে শো করতে চাচ্ছিনা! [ সবাই তালি দিয়ে উঠলো ]

জারিফা : [ হেসে ] যা বললি এসবও কি কম ছিলো নাকি?

মার্জান : তোর অপেক্ষায় এসব অনেক কমই ছিলো! [ হাসতে লাগলো সবাই ]

রিদোয়ান : সিরিয়াসলি এত্তো চোর তুমি পড়াই?

জারিফা : হুমমম! পড়তে আমার মোটেও ভালো লাগেনা! আফসোস! যদি এমন হতো যে প্রত্যেকদিন শুধু ক্লাস হবে কিন্তু কোনো এক্সামই হবে না! ইশশ! কি ভালো হতো তাই না?

রাহুল : ইয়াহ ইউ আর রাইট জারিফা! এই এক্সাম দেওয়াটা যে বের করেছে না ওকে যদি আমি একদিন পাই! তান্দুরী বানিয়ে ছাড়বো!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়াহ জিজু! বাট নট তান্দুরী আপনি না ওকে ব্রোষ্ট টাইপ্সের বানিয়েন! কজ ওটা একটু ক্রাঞ্চি হয়!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ ডেফেনেটলি আই উইল!

নেহাল : স্টপ গাইস্ থামো কিছুক্ষণ! আমার পেট পেইন করছে!

আলিসা : সো্ মাচ ফান্নি গাইস্! তোমরা সবাই অনেক মজার!

রোহানী : বাট আই এঞ্জয় ইট! প্লিজ থেমো না মজা হচ্ছে! কন্টিনিউ কন্টিনিউ [ বলেই বোতোল ঘুড়িয়ে দিলো ]

[ আর এইদিকে রাহুল তার নটি মাইন্ডেড নিয়ে স্নেহার পেটে হালকা একটি চিমটি দিলো সাথে সাথেই স্নেহা শকড হয়ে ফিরে তাকায় রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! আমরা লাষ্ট কবে কিস্ করেছিলাম?

স্নেহা : সবার ধ্যান গেইমে আর আপনি আছেন!

রাহুল : শিসসস! স্নেহা! লাস্ট আমাদের হলুদের দিন গাড়ীতে করেছিলাম! কতো লেইট হয়েগেছে!

স্নেহা : কতো লেইট মানে? গতপরশু দিনই তো হলুদ শেষ হয়েছে! [ বলেই সোজা চোখ পড়তে দেখে নেহাল হাত দিয়ে বোতোলটা রাহুলের দিক ঘুরিয়ে দিয়েছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ] তাও স্নেহা! দুই দুইটা দিন হয়েগেছে! [ নেহাল স্নেহার দিক চোখ মেরে ইশারা করে যাতে রাহুলকে না বলে, হাসতে লাগলো স্নেহা ]

রাহুল : কি হলো হাসছো কেনো?

স্নেহা : ইয়র ট্রান! [ বলতেই রাহুল সোজা ফিরে তাকিয়ে দেখে বোতোলের হেড তারদিকই পড়েছে ]

রাহুল : আরে গাইস্ আমার ট্রান তো গান গেয়ে ফিনিশ করলাম মাত্র!

নেহাল : নো নো আবার যখন পড়েছে তাহলে আবার ফিনিশ করতে হবে! সো্ বল ট্রুথ নাকি ডের? আই নোও এখন ভয়ে ট্রুথই নিবি!

রাহুল : [ হেসে ] রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য চিটিং করেছিস নাকি?

নেহাল : কথা না ঘুরিয়ে বল ভয় লাগছে ডের নিবো না ট্রুথই নিবো!

রাহুল : ওকে যা! ডের নিলাম! বল কি করতে হবে?

নেহাল : [ হেসে এক্সাইটেড হয়ে লাফিয়ে দাঁড়িয়ে ] ইয়াহহহু এখন হবে আসল মজা! জাষ্ট গিভ মি ফাইভ মিনিটস্ গাইস আম কামিং! [ বলেই দৌড় দিয়ে কই যেনো চলে গেলো, হাসতে লাগলো সবাই, কিছুক্ষণ পরই দেখে নেহাল একটা বড় বাটিতে ফ্রিজ থেকে মাঝারি আকারের দুটি বরফ ভরে এনেছে ]

রোহানী : অহ মাই গড! আইস্ দিয়ে কি করবা?

নেহাল : আইস্ না এগুলো রাহুলের জন্য সো্প হবে! কুল কুল আইস্ যখন বডিতে লাগাবে না তখন বুঝবে আমার ডেরটা কতো ডেঞ্জার ছিলো [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] সো্ রাহুল এটার জন্য না আপনার থেকে জ্যাকেট এন্ড শার্ট ওপেন করে ফেলতে হবে!

রাহুল : ওপেন করে কি হবে?

নেহাল : ওপেন করার পর তোর খালি গায়ে এই আইস্ গুলো আমি সো্প এর মতো রাব করবো যতোক্ষণ না পর্যন্ত আইস মেল্টিং না হয়!

রাহুল : [ হেসে ] ফানি! [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে ধীরেধীরে জ্যাকেট এবং শার্ট খুলে ফেললো ]

আলিসা : নেহাল ভাইয়া! আর ইউ গেই?

নেহাল : হোয়াট ননসেন্স!

আসিফ : [ হেসে ] আই থিংক নেহাল আলিসা ইজ রাইট!

নেহাল : স্টপ ইট গাইস্ ওকে নিজে লাগাতে দিলে যদি চিটিং করে তাই বললাম আরকি আমি লাগিয়ে দিবো! ইয়াহহহ! আইডিয়া! ভাবি স্ট্যান্ড আপ স্ট্যান্ড আপ! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে বাটিটা ধরিয়ে দেই ]

নেহাল : ভাবী আমার বদলে না আপনিই লাগাবেন ওকে? একদমই যাতে চিটিং করতে না পারে ও!

স্নেহা : বাট..আ..আমি!

নেহাল : হ্যা! ভাবী আপনিই! সিম্পলই তো জাষ্ট ওর বডিতে আইস্ গুলো মাঝতে থাকবেন যতোক্ষণ না পর্যন্ত বরফ পানিতে পরিনত না হয়!

স্নেহা : [ হেসে ] ওখে! [ বলেই রাহুলের দিক ফিরে তাকালো, রাহুল পকেটে হাত রেখে হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

নেহাল : ওকে ওকে ভাবী স্টার্ট! [ বলেই শিস বাজিয়ে দিলো, স্নেহা বরফের টুকরো উঠিয়ে নিয়ে রাহুলের বুকের মাঝে ধরতেই ]

রাহুল : [ হেসে ] আহহহ [ বলেই চোখ কুচকে বটে ফেললো ]

জারিফা : উহুহুহু! ঠান্ডা জিজু তাই না?

রাহুল : [ চোখ খুলে ] ইয়াহহ!

নেহাল : কন্টিনিউ ভাবী কন্টিনিউ! [ স্নেহা হেসে রাহুলের বুক থেকে পেট এবং পেট থেকে বুক পর্যন্ত আইস্ স্লাইডিং করতে লাগলো ]

নেহাল : আহাহা! ইহিহিহিহি! উহুহুহু! [ বাকিরা ও হাসতে লাগলো নেহালের সাথে সাথে ] হাউ ইজ ইয়র ফিলিং রাহুল?

রাহুল : [ চোখ টিপ মেরে ] মাচ বেটার!

নেহাল : ইয়াহ আই নো আই নো! হিহি লুক গাইস্ আইস্ মেল্টিং হয়ে সিক্স প্যাক দিয়ে ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে! [ হাসতে লাগলো রাহুল! বাকিরা ও মজা নিতে ব্যস্ত এক একজন একেক রকমের কথা বলে ]

____ আর এইদিকে স্নেহা আত্নহারা হয়ে ধীরেধীরে রাহুলের বুকে আইস্ স্লাইড করতে ব্যস্ত! স্নেহার নজর যেনো সরছেই না রাহুলের বুকের মাঝ থেকে, বরফ গলে পানি হয়ে পড়ার প্রতিটি মুহুর্ত, ঠান্ডায় মাঝেমাঝে রাহুলের কেপে উঠা, নিশ্বাস পরিত্যাগে রাহুলের পেটের দিক আপ-ডাউন করা! এসব দেখে যেনো স্নেহার হাত-পা সবই অবোশ হয়ে যাচ্ছে!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] কি দেখছো স্নেহা?

স্নেহা : [ চমকে উঠে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হ্যাঁ?

রাহুল : বাহ স্নেহা! তুমি তো দেখছি হারিয়েই গেছো!

স্নেহা : [ আড়চোখে সবার দিক একবার তাকিয়ে ] কক..কই নাতো! [ বলেই তাড়াতাড়ি স্লাইড করতে লাগলো ]

রাহুল : [ হেসে অন্যপাশ ফিরে দাতে দাত ঘেষে ] কামঅন স্নেহা! স্লোলি করো আমার এমনিতে কন্ট্রোল হচ্ছে না তোমার হাতের টাচে! [ স্নেহা লজ্জিত একটি হাসি দিয়ে ধীরেধীরে স্লাইড করতে লাগলো হঠাৎ তখনিই রাহুল তার বুকের থেকে আংগুল দিয়ে স্লাইড করে কিছু পানি নিয়ে স্নেহার কোমোড়ে ধরলো, মুহুর্তেই স্নেহা চোখ বড় করে কেপে উঠে, এবং সাথেসাথেই হাত থেকে বরফের বাটিটা ছেড়ে দিলো ]

রোহানী : [ হেসে ] ওহ শিট!

স্নেহা : সরি সরি!

নেহাল : ইটস্ ওকে ভাবী! এমনিতেও এটা রিভেঞ্জ হয়নি! ওতো উল্টো ওর সিক্সপ্যাক দেখিয়ে আপনার সাথে রোমান্স শুরু করে দিয়েছে!

রাহুল : [ হেসে ] বাট মাই ডের ইজ ডান!

নেহাল : ইয়া! ইয়াহহ! ইউ ডান ইট! এবার এসে বসে যান! [ রাহুল হেসে শার্ট এবং জ্যাকেটটা পড়ে স্নেহার পাশে বসে পড়লো ]

রিদোয়ান : দোস্ত! কেমন ফিল হচ্ছিলো আইসে্!

রাহুল : আই ফিল লাইক হট! [ হেসে উঠলো সবাই ]

রোহানী : ওকে গাইস্ এইবার না গেইম রুলসটা একটু চেঞ্জ করা যাক আই মিন! গেইমটা শুধু কাপলদের জন্য হবে ওকে? ফর এক্সাম্পল যারদিক গিয়ে বোতোলের হেড থামবে সে এবং তার পার্টনারকে কি করতে অর কি বলতে হবে সেটা আমরা সিংগেলরা বলবো! দেন কম্পিটিশনটা ওদের মধ্যেই হবে লাইক গার্ল বয়কে হারাবে! বয় গার্লকে হারাবে!

আলিসা : বাট কাপল তো অনলি দুটো! রাহুল ভাইয়া, ভাবী! রিদ ভাইয়া আর জারিফা!

আসিফ : আ..আই ডোন্ট মাইন্ড! মার্জান! [ বাকিরা অবাক হয়ে হেসে তাকালো মার্জানের দিক, আর মার্জান তো শকড হয়ে চোখ তুললো কপালে ]

আসিফ : আহা! যদি কাপল বাড়াতে পার্টনার হতে চাই তো!

মার্জান : [ রোহানীর দিক তাকিয়ে ] আ..আমি খেলবো না! আই হেভ নো..নট ইন্ট্রেষ্ট! [ আসিফ চোখ টিপ মেরে ইশারা করলো রোহানীকে ]

রোহানী : কামঅন ইয়ার! হয়ে যাও না, জাষ্ট গেইমের জন্যই তো!

মার্জান : তোমাদের কারো থেকেই হয়ে যাও!

আলিসা : বাট! তোমরা সেইম ভার্সেটিতে পড়ো, এতোদিনে দুজন দুজনের এবাউটে যা কিছু জেনেছো তা কি আমাদের মধ্যে থেকে কেউ জানবে নাকি! সো্ প্লিজজজ!

আসিফ : লিভ ইট! গাইস্ আই থিংক ভয় পাচ্ছে! [ মার্জান নাক ফুলিয়ে ভোর কুচকে তাকালো ]

রোহানী : আরে ভয় কেনো পাবে? জারিফা ওর যা অভিনয় দেখালো না, তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে শি ইজ অ্যা ব্রেভ গার্ল!

আসিফ : [ মুখ মুচড়ে ] আচ্ছা? প্রুভ ইট!

রোহানী : কামঅন মার্জান! প্রুভ করে দাও!

মার্জান : [ আড়চোখে আসিফের দিক তাকিয়ে বিরবির করে ] মানে কোনো দিক দিয়েই ছাড়ছে না ইডিয়ট! আজকাল ওর জ্বালেই ফেসে যাচ্ছি কি অদ্ভুত!

আলিসা : আরে বেবি হোয়াই আর ইউ থিংকিং? সে্ ওকে!

মার্জান : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মাথা নাড়িয়ে ] ও..ওখে!

রোহানী : [ হাততালি দিয়ে ] ইয়েএএএ! আরেকটা কাপল হয়ে গেছে?

আসিফ : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে, মুচকি হেসে মনে মনে] ওয়াওও! তারমানে ইন্ট্রেষ্ট আছে! তবে মনের কথা এইভাবে লুকিয়ে রাখলে বুঝবো কি করে মিস্ এংগড়ি বার্ড!

নেহাল : বাট আমি কি করলাম গাইস্? আমার দিকওতো একটু তাকাও!

জাফসিন : এখন আবার তোমার জন্য পার্টনার ক্রেট করতে যাবো কোথার থেকে?

নেহাল : [ হেসে মাথা চুলিয়ে ] এ..এক্সুলি আ..আম অলসো্ ডোন্ট মাইন্ড শায়লা!

শায়লা : [ শকড হয়ে তাকিয়ে ] হোয়াটট?

আলিসা : অওওওওও!

জাফসিন : [ হেসে ] সো্ সুইট!

নেহাল : [ শায়লার দিক তাকিয়ে হেসে ] কুল কুল! ডিয়ার! দেখো দুজনেই তো সিংগেল আছি তাতে প্রবলেম কি? ডার্কলি থিংক! এই চান্সে আমাদের কিছুক্ষণের জন্য মিংগেল হোওয়ার চান্স ও মিলবে!

শায়লা : [ দাত দেখানো একটি হাসি দিয়ে ] তাইই? তবে আপনি ও চান্সটা একটু বেশি নিচ্ছেন না?

নেহাল : [ শায়লার চোখের দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] নট চান্স! ইটস্ ট্রু!

শায়লা : হোয়াট?

নেহাল : আব..আ..আই মিন! ট্রু বলছি! অনেক এঞ্জয় হবে! খেলেই তো দেখো!

শায়লা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! নট ইন্ট্রেষ্ট!

নেহাল : [ কাদো কন্ঠে ] ভেবেছিলাম তোমার হার্টটা তোমার ভয়েসের মতোই সফট হবে!

শায়লা : [ হেসে ] আপনি আমার ভয়েস্ কবে ধরে দেখলেন?

নেহাল : ধরতে হয় নাকি? কিছু জিনিষ ফিল করে বুঝা যায়!

শায়লা : অও! আচ্ছা এক কাজ করেন আপনি রোহানী, আলিসা..

নেহাল : স্টপ স্টপ! দেয়ার মাই সিস্টার ওকে? ওদের সাথে কাপল গেইমস কিভাবে খেলবো?

শায়লা : বাট কাজিন সিস্টারই তো!

নেহাল : ওহহহ! নোওও!

আলিসা : কামঅন শায়লা! কিছু সময়ের জন্যই তো!

রোহানী : কাপল বাড়লে গেইম ও মজা হবে! প্লিজ প্লিজ!

জারিফা : হোয়াট শায়লা? সবাই এতো করে বলছে রাজি হয়ে যা না! গেইমই তো!

শায়লা : ও….. ওখে!

আলিসা : [ চেচিয়ে ] ইয়েসস্ উই মেক,ফোর কাপল! কামঅন লেটস স্টার্ট দ্যা গেইম গাইস! আম এক্সাইটেড!

রোহানী : ওখে ওখে! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো এবং বোতোলের হেড গিয়ে থামলো রিদোয়ানের দিক ]

আলিসা : অও! রিদ এন্ড জারিফা!

রোহানী : ইয়েস্ লেডিস থেকে ফাষ্ট! ওকে! সো্ জারিফা! তুমি না এখন একটা একটিং করবে! সা্পোস তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, এন্ড তুমি প্রেগন্যান্ট! হিহি! সো্ এই গুড নিউজটা রিদোয়ানকে কিভাবে দিবে ওটা শো করে দেখাও!

– আর হ্যা! মিস্টার রিদোয়ান! ওনার একটিং এর সাথে কিন্তু আপনার ও তাল মেলাতে হবে! নাহলে আপনি হেরে যাবেন আর ওনি উইন হয়ে যাবে বুঝলেন তো?

রিদোয়ান : ওখেই!

রোহানী : ওকে! ওয়ান, টু, থ্রী স্ট্রার্ট!

জারিফা : [ লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে ওড়নার আচল আংগুলে পেচাতে পেচাতে ] শুনছেন!

রিদোয়ান : হ্যা! বেবী কিছু বলবে?

জারিফা : হ্যা!

রিদোয়ান : [ জারিফার কাছে মুখ এনে ] বলো বেবী!

জারিফা : [ অন্যপাশ মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ] হি-হি নাহ! লজ্জা করে!

রিদোয়ান : [ জারিফার মুখ ধরে তার দিক ফিরিয়ে ] আরেহ কিছু করছিই তো না লজ্জা কেনো লাগছে?

জারিফা : আগে যে করেছেন!

রিদোয়ান : আগে তো অনেকবার করলাম কোনটার কথা বলছো!

জারিফা : লাষ্টবার!

রিদোয়ান : ওহ আচ্ছা বুঝেছি! তো ওয়ান্স মোর হবে নাকি?

জারিফা : আরে আরে তা নাহ! [ বলেই রিদোয়ানের হাত এগিয়ে নিয়ে নিজের পেটে রাখলো ]

রিদোয়ান : [ উজ্জলা এক আবেগী হাসি দিয়ে ] রিয়েলি?

জারিফা : [ লজ্জীত হাসি দিয়ে ] হুমম!

রিদোয়ান : অহ মাই গড! জারিফা! ইউ ডোন্ট নোও তুমি আমায় কতো বড় গুড নিউজ দিয়েছো! আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না [ জারিফার কাধ জড়িয়ে আগলে নিয়ে ] আমি বাবা হয়েছি! [ কাদো কন্ঠে ] কনগ্রেচুলেশন জারিফা! আমায় ও কনগ্রেচুলেশন দাও আমার ও কিন্তু হার্ড ওয়ার্ক ছিলো!

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রিদোয়ানকে পেছিয়ে জড়িয়ে ] আম ডান গাইস্ আম ডান! [ বাকিরাও হাসতে হাসতে মাঠিতে লুঠালুঠির অবস্থা ]

রিদোয়ান : দ্যাট মিনস্ আম উইন! [ চেচিয়ে ] ইয়েসস্!

আসিফ : [ হাসতে হাসতে ] সব ছাড় দোস্ত! এইবার ট্রিট দে বাবা হোওয়ার খুশিতে!

রিদোয়ান : এই নে ট্রিট! আমরা যেহেতু একটিং করেছি তুই ও একটিং করে মুখ চিবাতে থাক!

আসিফ : আরে! কিপ্টামি করছিস কেনো! রিয়েলিটিতে দেনা!

রিদোয়ান : বাবাটাও আগে রিয়েলিটিতে হতে দে দোস্ত!

রাহুল : ইয়াহ! তখন ট্রিট কেনো? পার্টি চলবে বস্!

শায়লা : ইয়ার! আমার তো ভাবতেই খুশি লাগছে গাইস্! লিটল বেবী, লিটল হ্যান্ড, লিটল লেগস্, যদি সত্যিই এমন হতো তাহলে আমি খাম্মী হয়ে যেতাম!

রিদোয়ান : লেটস্ জারিফা! ওর আশাটা বাকি রাখবো কেনো! চলো পূরণ করিয়েদি! [ জারিফা লজ্জা পেয়ে রিদোয়ানের মুখ চেপে ধরে, বাকিরাও একত্রে হেসে উঠে ]

জারিফা : গাইস্! গেইমে ফিরে যাওয়া যাক!

রোহানী : ইয়া! ওকে! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো, চিৎকার করে উঠলো সবাই ]

আলিসা : ইয়েএএএ! নাও! ভাবীর ট্রান!

স্নেহা : আ..আমি কিছুই পারিনা..রার রাহুলকে দাও!

রোহানী : ভাবী! ভাইয়া তো করবেই তবে আপনার ও কিন্তু করতে হবে যেহেতু কাপল গেইম!

জাফসিন : কামঅন ভাবী! ভাইয়াকে হারানোর এটাই চান্স!

রোহানী : বাট ডোন্ট ওয়ারী গাইস্ তোমাদের সেইম জিনিষ দেবো না এক এক জনকে এক একটা! ওকে? ভাবী যেহেতু একটু লজ্জাবতী সো্ ওনার থেকে কিছু আস্ক করা যাক এবাউট রাহুল ভাইয়া! [ বলেই চিন্তা করতে লাগলো ] উমম! কি আস্ক করা যায়!

আলিসা : আমি করি?

রোহানী : ওকে! ইন্ট্রেষ্টিং কিছু করবি!

আলিসা : ওকে! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ভাবী আপনি না আমাদের এটা শেয়ার করেন যে আপনি ভাইয়াকে কেনো ভালোবাসেন? এন্ড কতোটুকু আই মিন কতো পার্সেন্ট ভালোবাসেন? আর হ্যা! ভাইয়ার এমন একটা অভ্যাসের কথা বলবেন যেটা আপনার খুবই পছন্দ!

রাহুল : [ মুচকি হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] উমম! বলো এখন!

স্নেহা : [ মাথা নুয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] কে..কেনো ভালোবাসি বব..বলতে গেলে আন্সার হবে নো রিজ্ন! আই লাভ হিম উইদাউট এনি রিজ্ন!

নেহাল : [ তালি দিয়ে ] সুপার্ভ ভাবীই!

স্নেহা : কতোটুকু কক..কতো পার্সেন্ট ভালোবাসি? এক্সুলি আই লাভ হিম অ্যা লট! সো্ আই থিংক ভালোবাসা পার্সেন্ট দিয়ে কাউন্ট করা যায় না! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] যদিও বলো কতো পার্সেন্ট লাভ করি তা..তাহলে বলবো অতো পার্সেন্ট লাভ করি, যে সংখ্যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ও কখনো কাউন্ট করে শেষ করা যাবেনা!

আলিসা : ওয়াওও ভাইয়া! লুক ভাবী তোমাকে কত্তো লাভ করে! এন্ড অলসো্ ইউ আর সো্ লাকি বয়! হিহি!

রিদোয়ান : গ্রেট স্নেহা! এক্সুলি উই নোও দ্যাট! ইউ বোথ মেড ফর ইচ আদার! সো্ আন্সার এমনিই হবে জানতাম! বাট আম ওয়েটিং ফর ইয়র লাষ্ট কুয়েশ্চন!

শায়লা : ইন্ট্রেষ্টিং ইয়াহ আম অলসো্!

স্নেহা : [ হেসে ] এক্সুলি আমার না রাহুলের সব বেড হ্যাবিটস্ গুলোই পছন্দ! [ সবাই শকড হয়ে তাকালো স্নেহার আন্সারে ]

রাহুল : আর ইউ ক্রেজি স্নেহা? ইফ ইউ লাইক মাই অল বেড হ্যাবিটস্ সো তুত..তুমি আমায় এসবে বারণ করো কেনো?

স্নেহা : বিকজ অল আর বেড হ্যাবিটস! থিংক রাহুল! আমার আপনার বেড হ্যাবিটস গুলো পছন্দ বাট আমি আপনাকে এসবে বারণ করি কারণ এসব আপনার জন্য হার্মফুল!

আসিফ : [ হেসে ] ইন্ট্রেষ্টিং! বাট বেড লাক ফর রাহুল! স্নেহার পছন্দ হলেও তোর কোনো লাভ নেই দোস্ত!

আলিসা : বাট ভাবী! কয়েকটা বেড হ্যাবিটস্ এর নাম বলে দাওনা আমরাও একটু শুনি!

স্নেহা : এলকোহল! ইটস্ ইঞ্জুরিস্ টু লিভার! বাট যখন ও এটা খায় তখন ও অনেক কিউট করে কথা বলে! [ হেসে উঠলো রাহুল ]

আলিসা : হাও কিউট!

স্নেহা : ড্রাইভিং উইদ সানগ্লাস, ইটস্ অ্যা ভেরী ডেঞ্জার ফর অল ড্রাইভারস্! যেটা ও সচরাচরই করে থাকে! বাট যখন ও সানগ্লাস পড়ে তখন ওকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগে!

– আরেকটা যেটা আছে মানে রাতেও সানগ্লাস পড়ে থাকে মাঝেমাঝে! এটা কোনো হার্মফুল না বাট তাও এটা ওর বেড হ্যাবিটস্ এ পড়ে কজ যেহেতু ও বেশিরভাগই ব্লাক ড্রেস পড়ে, সো্ তাতে অনেকে মবস্টার ও ভেবে নিতে পারে অর ব্লাইন্ড ও! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো সবাই ]

রাহুল : এক্সকিউজ মি! মবস্টার অর ব্লাইন্ড ভাববে আমাকে তাই না?

আলিসা : [ হেসে ] বাট ভাইয়া ঠিকই তো বলেছে ভাবী! যেদিন আপনাদের ফাষ্ট মিট হয়েছে, ঐদিনই ভাবী আপনাকে মবস্টার ভেবেফেলেছিলো [ হেসে উঠলো সবাই ]

রাহুল : [ হেসে ] লল!

রোহানী : [ হাসি থামিয়ে ] ও..ওকে রাহুল ভাইয়া নাও ইয়র ট্রান!

– সো্ তুমি না আমাদের একটিং করে দেখাও যে যখন তোমরা রোমেন্স করো তখন ও কি ভাবীর এক্সপ্রেশন লজ্জাবতী থাকে? নাকি অন্যরকম? আই মিন কেমনটা থাকে ওটাই শো করো প্লিজ!

নেহাল : গাইস্ জাষ্ট লাইক এমনটা হয়, যখন রাহুল রোমান্সের জন্য ঝাপিয়ে পড়ে আর ভাবী বলে কাম বেবী কাম!

রাহুল : নোওওও! শি নেভার টোল্ড মি কাম বেবী কাম! এক্সুলি ও কেমন বিহেভ করে আমি দেখাচ্ছি, [ বলেই স্নেহার কাধে হাত রেখে জড়িয়ে কাছে টেনে নিলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে আড়চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে ] রার..রাহুলল!

রাহুল : সি্ গাইস্! এমনটাই করে, রার..রাহুল কি করেছেন আপনি, রার..রাহুল কেক..কেউ দেখবে, পি..প্লিজ রাহুল ছাড়ুন, আরে..রার..রাহুল কেউ আসবে, রার..রাহুললল দরজা খোলা,আ..আরে রাহুল কোলে কেনো নিলেন কেউ দেখবে তো না..নামান প্লিজ!

– যদি কারো সামনে ওকে হাত ধরে আটকায়, তখন,

– ল..লজ্জা করে না আপনার সবার সামনেই এসব!

– হোয়েন উই আর ইন কার! এন্ড আই ট্রাই টু কিস হার!

– রার..রাহুল আশেপাশের কেউ দেখবে তো! [ বাকিরা হাসতে হাসতে লুঠিয়ে পড়লো রাহুলের কথা শুনে ]

শায়লা : [ হেসে হেসে ] বাট জিজু! ঠিকই তো গাড়ীতে কিস্ করলে আশেপাশের সবাই দেখবে না বুঝি!

রাহুল : ইয়ার! মাই কারস্ বেক সাইড গ্লাসেস্ আর ব্লাক!

স্নেহা : [ লজ্জায় হেসে রাহুলের মুখ চেপে ধরে ] ওকে স্টপপপ! এখন ওদের ট্রান! [ হাসতে লাগলো সবাই ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] আমার কিসে্র ট্রান কবে দিবে সেটা বলো?

স্নেহা : ছিইই রাহুল! শুনবে ওরা!

রাহুল : ছিঃ তাই না? [ বলেই হঠাৎ ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে টেনে উঠিয়ে ] গাইস্ তোমরা গেইম কন্টিনিউ করো আমরা আসছি! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে হাটা ধরলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে রাহুল কোথায় নিচ্ছেন?

আলিসা : [ চেচিয়ে ] ওকেইইই! অল দ্যা বেষ্ট গাইস্!

স্নেহা : আরে কিছু বলছেন না কেনো?

রাহুল : চুপচাপ দেখে থাকো কোথায় নিচ্ছি!

স্নেহা : কিন্তু ও..ওরা.. [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না,শিরি দিয়ে নেমে ডিরেক্ট গেষ্ট হাউজের দিক নিয়ে চলে যায়, গেষ্ট হাউজের দরজা খুলেই ভেতরে ঢুকিয়ে লাইট অন করলো ]

রাহুল : নাও আমাদের কেউ ডিষ্টার্ব করবে না!

স্নেহা : মা..মানে?

রাহুল : [ দরজা লক করে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] মানে হচ্ছে! নাও আই উইল কিস্ ইউ!

স্নেহা : কিক..কিস্

রাহুল : ইয়াহ! কিস্ [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই রাহুল স্নেহাকে পিছে ঠেলে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দাড় করাই ]

স্নেহা : রাহুল..

রাহুল : শিসসসস! [ বলেই স্নেহার পেটের দিক শাড়ী উঠিয়ে হাতে মুঠি বেধে আলতো করে পেটে চেপে ধরে, সাথে সাথেই স্নেহাও কেপে উঠে রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরলো ]

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে স্নেহার গালের সাথে গাল লাগিয়ে দাড়ি ঘষে ] এসেছি শুধু কিস্ করতে স্নেহা! কিন্তু তুমি তো মাথায় নেশা ছড়িয়ে দিচ্ছো! তোমার এই খুশবো… [ বলেই স্নেহার পেট থেকে স্লাইড করে হাত উপরের দিক উঠাচ্ছিলো তখনিই স্নেহা রাহুলের হাত সরিয়ে দিয়ে পাশ মুড়ে চলে যাচ্ছিলো রাহুল আবারো হেসে দেওয়ালে হাত রেখে আটকিয়ে ফেলে স্নেহাকে, স্নেহা লজ্জা পেয়ে পেছন মুড়ে যায় তাড়াতাড়ি ]

রাহুল : [ স্নেহার চুল সরিয়ে পিঠে আলতো একটি চুমু খেয়ে ] তুমি ভাগতে থাকো স্নেহা! আমি আটকাতে থাকবো! তুমি লজ্জা পেতে থাকো আর আমি ভাংগতে থাকবো! [ বলেই স্নেহার শোল্ডারে ব্লাউজের হাত নামিয়ে দাত দিয়ে আলতো করে কামড়ে ধরলো, শিহরে উঠছে স্নেহা বারবারই ]

রাহুল : স্নেহা! [ বলতেই স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের দিক ফিরে তাকালো, ঢোগ গিলছে স্নেহা, জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে, গলার চুল গুলো সরিয়ে নিলো রাহুল! চোখ কুচকে বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! তা দেখে রাহুল এক-হাতে স্নেহার হাত মুঠি বেধে ধরে অন্যহাতে কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে,গলায় গভীরভাবে চুমু বর্ষণ করতে লাগলো, অন্যএক অনুভুতির সীমানা পাড়ী দিচ্ছিলো স্নেহা! মুঠি বেধে রাহুলের চুল শক্ত করে ধরে রইলো, আর রাহুল তার স্নেহাকে আদর করতেই ব্যস্ত! কিছু সময় পরই রাহুল মুখ তুলে স্নেহার নাকে নাক ঘষে চোখের দিক তাকালো, স্নেহা পা আলগে করে দাড়াতেই রাহুল স্নেহার ঠোট জোড়া নিজের ঠোটের দখলে নিয়ে নিলো, রাহুলের জ্যাকেট খামছে ধরেছে স্নেহা, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে সেও তালমেলাতে লাগলো,

হঠাৎ কিছুসময় পেড়িয়ে যাওয়ার পরই স্নেহা উমম! বলে চেচিয়ে শব্দ করে উঠায় রাহুল ছুটে এসে তাকালো!

স্নেহা : [ ঠোট চেপে ধরে ] আহহ!

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি স্নেহার হাত সরিয়ে দেখে কামড় পড়ে স্নেহার ঠোট লাল হয়ে গেছে ] অহ শিট! সরি সরি স্নেহা! আম সরি

স্নেহা : [ হেসে ] ইটস্ ওকে রাহুল!

রাহুল : হোয়াই আর ইউ লাফিং ইডিয়ট!

স্নেহা : আপনার চেহেরা দেখে!

রাহুল : ওহ তাই?

স্নেহা : আম ওকে রাহুল!

রাহুল : শাট-আপ! চলো মেডিসিন লাগিয়েদি! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে পাশ মুড়তেই ]

স্নেহা : [ রাহুলের জ্যাকেটের কলার ধরে কাছে টেনে ] আদর দিয়ে ব্যথা দিয়েছেন! সো্ আদর দিয়েই মেডিসিন দিননা!

রাহুল : মা..মানে? [ বলতেই স্নেহা পা আলগে তুলে রাহুলের দু-গালে হাত রেখে ঠোটে চুমু বসালো, রাহুল ও বুঝতে পেরে হেসে স্নেহাকে পিছে ঠেলে দেওয়ালে লাগিয়ে স্নেহার ঠোটের সাথে তাল মেলাতে লাগলো ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 59

1

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 59

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : এমনিতে ও ভীতু! তারমধ্যে ওকে আরো ভয়…

– দাঁড়াও দেখাচ্ছি তোমায় ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : নোওও স্নেহাআআআআ! প্লিজ সেভ মি! আমি তো মজা করছিলাম জিজু!
[ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল এগিয়ে আসলে জারিফা খাট থেকে একলাফে নেমে পড়ে ]

রাহুল : আরেহ ওয়েট! পালাচ্ছো কই!

নেহাল, আসিফ এবং রিদোয়ান, রুমে ঢুকতেই দেখে রাহুল আর জারিফা কাবাডি খেলার মতো এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে

জারিফা : জোকিং জিজু জোকিং!

রাহুল : বাট! আম নট জোকিং! চলো দেখায় তোমাকে ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : ইয়া আল্লাহ! এমন ভাবে বলছেন যেনো আপনার কতো আগের এক্সপেরিয়েন্স আছে!

রাহুল : হাহা! নাইস্ জোকস্! ইউ নোও মাই আধী-ঘারওয়ালী, কোনো কাজ করার পূর্বে রাহুলের এক্সপেরিয়েন্স এর দরকার পরে না, কজ,

শায়লা : কজ রাহুল নিজেই তো একটা এক্সপেরিয়েন্স তাই না জিজু [ বলতেই বাকিরাও হেসে উঠলো ]

জারিফা : [ কান ধরে ] সরিইইইইই জিজু!

নেহাল : হেইইই হোয়াট হ্যাপেন গাইস্?

রাহুল : [ জারিফার কান্ড দেখে হেসে ] চলো, যাও মাফ করলাম! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে বসলো ]

জারিফা : হিহি নাথিং! মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া!

নেহাল : [ কনফিউজড হয়ে মাথা চুলকিয়ে ] নাথিং?

রিদোয়ান : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] গাইস্ তোমাদের জন্য না, নেহাল একটি গেইম প্লান করেছে রুফ-টপে!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াওও গেইমমম!

রিদোয়ান : মানে নাটকীয় সব কাজে তোমার এক্সাইটমেন্ট ফাষ্টে থাকবে,জানতাম!

জারিফা : [ মুখ গোমড়া করে ] আচ্ছা? হুহ! ঠিকাছে ঠিকাছে যান আমি খেলবোই না!

রিদোয়ান : আরেহ! বেবী আই জাষ্ট কিডিং![ জারিফা মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো, রিদোয়ান জারিফার দিক এগুতে যাচ্ছিলো তখনিই ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] স্টপ! স্টপ! খবরদার আমার কাছে ও আসবেন না!

রিদোয়ান : [ আহ্লাদি কন্ঠে ] সরি তো বেবী!

নেহাল : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] মানে তুই না আসলেই একটা ডিষ্টার্ব! কি দরকার ছিলো ওটা বলার? ইন্নোসেন্ট, কিট্টি, প্রিটি, সুইটি মেয়েটার মনটা খারাপ করে দিলি!

– মাই ডিয়ার ভাবীর শালী! উপস্ সরি! মাই ডিয়ার জারিফা! প্লিজ ডোন্ট বি আপসে্ট!

জারিফা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ!

নেহাল : [ জারিফার দিক এগিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে ] লিসেন্ট! গেইমে না তুমি আর আমি একই টিমে থাকবো! তারপর ওখানেই রিভেঞ্জ নিয়ে নেবো ওর, ডান?

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে হেসে ] ডান মানে! আফকোর্স ডান!

রিদোয়ান : কিসের ডান?

জারিফা : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] আওর বিজনেস ইজ আওর বিজনেস! নান অফ ইয়র বিজনেস! [ রিদোয়ান শকড হয়ে তাকালো, জারিফা হেসে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়, নেহাল ও রিদোয়ানকে চোখ টিপ মেরে হাসতে থাকে ]

আসিফ : [ হেসে ] রিদ! কিছু মনে পড়ছে? ভার্সেটির র্যাগিং? আগে তুই থ্রেট দিতি এখন তোকে দেওয়ার জন্য একজন তৈরী হয়েছে! বাট আই লাইক ইট বস্!

রিদোয়ান : ইয়াহ! এঞ্জয় এঞ্জয়! টু সুন তোরটাও তৈরী হতে যাচ্ছে! এম আই রাইট?[ রাহুল, আসিফ এবং নেহাল তিনজনই হেসে উঠলো রিদোয়ানের কথায় ]

রাহুল : আরে রিদ! নেইম মেনশন করে বল?

রিদোয়ান : আরে ঠিক বলেছিস তো!

আসিফ : [ রিদোয়ানের মুখ চেপে ধরে,চেচিয়ে ] হ্যা! হ্যা! চলো চলো সবাই, গেইম খেলবো, লেইট হয়ে যাচ্ছে! কাম কাম হারি-আপ!

আলিসা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ইয়েস আম কামিং!

জাফসিন : আম অলসো্ গাইস! [ সবাই এক এক করে উঠে দাড়াতে লাগলো ]

শায়লা : [ মার্জানকে টেনে তুলে ] চল মার্জান! [ মার্জান পেছন মুড়ে খাট থেকে উঠে দাড়াতেই, চোখ পড়লো আসিফের দিক ]

আসিফ : লেটস্ গো গাইস্! আম ওয়েটিং [ বলেই মার্জানকে চোখ টিপ মেরে হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, বাকিরাও বেরুতে লাগলো এক এক করে ]

নেহাল : [ স্নেহার হাত ধরে ] আরে ভাবী বসে আছেন কেনো? গেইম খেলবেন না?

স্নেহা : হ্যা! খেলবো! কিন্তু…

নেহাল : তাহলে চলেন কাম কাম! [ বলেই হাত টেনে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার টান খাওয়ায় পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল খাটে আধবসা হয়ে শুয়ে, তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার আরেক হাত আটকে ধরে আছে, স্নেহা ও নেহালকে চোখ দিয়ে ইশারা করে রাহুলের ধরে রাখা হাতটি দেখালো ]

নেহাল : হেইই ব্রো! হোয়াট হ্যাপেন?

রাহুল : নেহাল! আমার না তোর ভাবীর সাথে কিছু কথা বলার ছিলো! তোরা যা আমরা একটু পর আসছি!

নেহাল : তোকে না সারাবছর দিলেও কথা শেষ হবে না আমি ভালো করে জানি!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হোয়াট আই ডু,ও যে এমনি!

নেহাল : লিসেন্ট! ব্রো পুরো রাত পরে আছে রোমান্স এর জন্য তখন করিস, নাও উই শুড বি গো!

রাহুল : আহা! বললাম তো! বেশিক্ষণ লাগবে না!

নেহাল : অনলি টু-মিনিটস্! ওকে?

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে! [ নেহাল ও হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল একটানে স্নেহাকে তার বুকের উপর শুয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরেহ! রাহুল…

রাহুল : শিসসস! [ বলেই স্নেহার সামনে চলে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিলো ]

স্নেহা : কোথায় ছিলেন এতোক্ষণ?

রাহুল : মিস্ করছিলে আমায়? [ বলেই স্নেহাকে পাশ মুড়িয়ে শুয়ে দিয়ে রাহুল স্নেহার উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] না..নাতো!

রাহুল : অহ! রিয়েলি?

স্নেহা : [ চোখ সরিয়ে ] হু..হুম!

রাহুল : তাহলে জিজ্ঞেস করছো যে কোথায় ছিলাম?

স্নেহা : কে..কেনো আমি জিজ্ঞেস করতে পারিনা?

রাহুল : হ্যা! তাতো অবশ্যই! বউ হোও আমার হক আছে জিজ্ঞেস করার!

স্নেহা : মানে সোজা জবাব দিলে হয় না?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার বুকে হাত রেখে ] এইখানে ছিলাম আমি! তোমার হার্টের প্রতিটা বিটে! [ স্নেহা লজ্জা পেয়ে হেসে চোখ নামিয়ে ফেললো, রাহুল ও হেসে আংগুল দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে চুল গুলো সরিয়ে নিলো, শিহরে উঠছে স্নেহা, তা দেখে রাহুল আলতো করে একটি চুমু খেলো স্নেহার গলায়,নিমিষেই চোখ বন্ধে কেপে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে,আংগুল দিয়ে ঠোটে স্লাইড করে ] নেশা লাগে চোখে, নিশানা থাকে ঠোটে, হোয়াই স্নেহা হোয়াইইই!

স্নেহা : রার..রাহুল! দরজা খোলা!

রাহুল : তাহলে দরজা বন্ধ করে আসি?

স্নেহা : নাহ! [ বলেই হাত দিয়ে রাহুলকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসে, টেনেটুনে শাড়ী ঠিক করতে করতে ] আ..আপনি কি যেনো বলবেন বললেন?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার কানের দিক ফু দিয়ে ] এতো টেনেটুনে ঢেকে রাখার কি আছে স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড! বি কমফোর্টেবল!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ও..ওরা ওয়েট করছে,আমাদের যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ] আরে!ওয়েট, কথা ছিলো তো সত্যি! [ স্নেহা মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : স্নেহা! রোডে তোমার বাবার সাথে দেখা হলো! উনি পরশুর ট্রেনের টিকিট কাটতে যাচ্ছিলো!

– আ..আই মিন, এখন তো সব ঠিকঠাক সো্ এগেইন গ্রামে যাওয়ার কি দরকার? এইখানেই তো আবার নতুন করে স্টে করতে পারে!

স্নেহা : রাহুল! রাশু গ্রামের স্কুলে এডমিটেড!

রাহুল : সো্ হোয়াট? ওকে শহরের ভালো কোনো একটি স্কুলে এডমিট করিয়ে দিবে! ছেলেই তো ওয়ান ইয়ার গ্যাপ গেলে প্রবলেম কি?

স্নেহা : এ..এক্সুলি রাহুল! আপনি যে টাকাগুলো সামিরকে দিয়েছেন ঐগুলো আমি এখনো বাবাকে বলিনি,

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াইই?

স্নেহা : কারণ আমি চাচ্ছিলাম যে বাবা! গ্রামে গিয়ে তাড়াতাড়ি করেই টাকার ব্যবস্থা করুক!

রাহুল : ওয়াও রিয়েলি? টাকাগুলো আমাকে রিটার্ন করার জন্য বুঝি? [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি আন্সার দাও!

স্নেহা : রাহুল! প্রবলেম আমার ফ্যামিলির ছিলো, এর ভোজা আপনি কেনো তুলবেন? আর এমনিতেও বাবা নিজ মুখেই বলেছিলো, গ্রামের বাড়ীটা বিক্রি করে হলেও সামিরের টাকা শোধ করে দিবে, তাই ভাবলাম টাকা গুলো রিটার্ন করিয়ে দেওয়ায় ভালো হবে,

রাহুল : আচ্ছা! ফ্যামিলি কার?

স্নেহা : আ..আমার!

রাহুল : বাবা কার?

স্নেহা : আমার!

রাহুল : তুমি এখন কার?

স্নেহা : আ..আপ..আপনার!

রাহুল : তাহলে যেটা আমার সেটা তোমার ও! সো্ আমাকে টাকা রিটার্ন করার কথা ভাবলে কেনো?

– [ দু-হাতে স্নেহার মুখ তুলে ] স্নেহা! তোমার ফ্যামিলির প্রবলেম মানে তোমার প্রবলেম, আর তোমার প্রবলেম মানে আমার প্রবলেম! সো্ ইটস্ সিম্পল!

– তুমি আমার ফ্যামিলিকে নিজের ফ্যামিলি মনে করতে পারলে আমি কেনো তোমার ফ্যামিলিকে নিজের মনে করতে পারবো না? বলো?

– পারবো না? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত শক্ত করে ধরে ] ঠিকাছে! তাহলে আজ থেকে আমি তাদের জন্য যা কিছুই না করবো এতে তুমি বাধা দিতে পারবে না! প্রমিস করো?

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] প্রমিস!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] ওকে চলো এবার! ওরা ওয়েট করছে! [ বলেই হুট করে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : আরেহ! রাহুল! কি করছেন আপনি নামান প্লিজ! [ রাহুল হেসে হেসে স্নেহাকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে, আর স্নেহা ছুটাছুটি করে নেমে যেতে ব্যস্ত ]

রাহুল : [ স্নেহাকে আরো শক্ত করে ধরে ] শক্তি কি আমার থেকে বেশি হ্যা? ছুটাছুটি করছো কেনো বলো তো?

স্নেহা : রাহুল! দাদী,ফুফিরা কেউ দেখবে!

রাহুল : তো দেখুক! আমি তো আমার ঘরে আমার বউকেই উঠিয়েছি! আর তুমি তোমার হাজবেন্ডের কোলে উঠেছো, সো্ হোয়াট?

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি না একদম..

রাহুল : [ হেসে ] একদম বেশী আমি তাই না? [ স্নেহা আশেপাশে তাকাতে লাগলো বারবার ]

রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! তুমি এতো লজ্জা পাও কেনো বলো তো? বাই দ্যা ওয়ে আই লাভ দিজ মোমেন্ট! যখন তুমি লজ্জায় স্ট্রোভেরী হয়ে যাও! [ স্নেহা রাহুলের কথায় ধ্যান না দিয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলো কেউ দেখছে কিনা, রাহুল বুঝতে পেরে আরো চেচিয়ে বলে উঠলো ] স্নেহাআআআআ লাভ ইউউউউউ

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি রাহুলের মুখ চেপে ধরে ] আরে আরেহ! স্টপ ইট! রাহুল, [ রাহুলের হাসি থামছে না স্নেহা মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখা শর্তেও হেসে যাচ্ছে ]

স্নেহা : ইডিয়ট! [ বলতেই রাহুল মুখের উপর স্নেহার দিয়ে রাখা হাতে একটি কামড় দিতেই স্নেহা আহহ বলেই হাত সরিয়ে নিলো ]

রাহুল : [ হেসে ] তোমারিই তো ইডিয়ট!

স্নেহা : নামান এবার এসেই তো পড়েছি!

রাহুল : আমার যখন ইচ্ছে তখন নামাবো তুমি কে?

স্নেহা : আমি কে মানে? আমি আপনার বউ না?

রাহুল : [ থেমে গিয়ে ] আবার বলো? [ স্নেহা লজ্জা পেয়ে হেসে মুখে হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো ]

রাহুল : ইশশশ! কি লজ্জা! [ রাহুল স্নেহাকে নিয়ে ছাদে উঠতেই বাকিরা চেচিয়ে উঠলো ]

শায়লা : এসো এসো তোমাদের সিটটাই খালি ছিলো শুধু!

স্নেহা : এইবার তো অন্তত নামান! এসেই তো পড়েছি!

রাহুল : তখন যেটা বলেছিলে সেটা আরেকবার বলো! নামিয়ে দিচ্ছি

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : না বললে নামাচ্ছিনা! [ বলেই আরো শক্ত করে ধরে নিলো ]

স্নেহা : আচ্ছা বব..বলছি!

রাহুল : হুম! বলো!

স্নেহা : আ..আ..আম..আমি

রাহুল : হোয়াট! আ আ আ?

স্নেহা : আ..আমি আপ আপনার বউ না?

রাহুল : [ হেসে ] হ্যা! তুমি আমার বউ, জান,আমার নিশ্বাস, বেচে থাকা আশ্বাস সবই তো তুমি!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] হয়েছে এবার নামান! [ রাহুল হেসে নামিয়ে দিলো স্নেহাকে, স্নেহা হেটে গিয়ে বিছিয়ে রাখা বেডের উপর পা গুটিয়ে বসে পড়লো ]

নেহাল : কাম কাম ব্রো! শেষ হয়েছে রোমেন্স?

রাহুল : [ এগিয়ে গিয়ে স্নেহার পাশে বসে ] নো হয়নি!

নেহাল : তোকে সারাদিন দিলেও রোমেন্স শেষ হবে না! [ সবাই হেসে উঠে ]

রোহানী : ওকে গাইস লেটস্ স্টার্ট দ্যা গেইমস!

রাহুল : [ হঠাৎ শেম্পিং এর বোতোল দেখে ] ওয়াওও! শেম্পিং..

রিদোয়ান : [ বোতোল হাতে তুলে ধরে ] এতো খুশি হোওয়ার দরকার নেই দোস্ত এটা খালি বোতোল!

রাহুল : তাহলে এটা কেনো?

রোহানী : আমি বলছি! আমি হলাম আওট অফ গেইমস্! কজ আমার ভয় লাগে এসবে আমি কিছু বলতেও পারবো না করতেও পারবো না! তাই বোতোলটা আমিই ঘুরাবো! দেন বোতোলের হেডটা যারদিক ঘুরে পড়বে তাকে ট্রুথ এন্ড ডের এই দুটি অপশন থেকে যে কোনো একটি নিতে হবে!

– তারপর ট্রুথ হলে ট্রুথ বলবে ডের নিলে ডের দেখাবে!

রাহুল : ওয়াও লাভ ইট!

রোহানী : ওকে লেটস্ প্লে!

জাফসিন : [ এক্সাইটেড হয়ে ] শিয়র শিয়র! [ বলতেই রোহানী বোতোল ঘুরিয়ে দিলো, নিস্তব্ধ চারদিক, রাতের অন্ধকার রুফটপের কালারফুল স্পোর্ট লাইটগুলো জ্বলছে, কুয়াশা ভরা শীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে, সবাই এক্সাইটমেন্ট নিয়ে তাকিয়ে আছে বোতোলের দিক,বোতোলের হেড গিয়ে থামলো আসিফের দিক, হাত তালি দিয়ে চেচিয়ে উঠলো সবাই ]

আসিফ : ওহ নো এট ফাষ্ট আমিই!

জারিফা : বলেন বলেন ট্রুথ অর ডের?

আসিফ : টু…ট্রুথ!

রাহুল : স্কিটিশ!

নেহাল : [ হেসে ] ইয়াহ! রাহুল রাইট!

আসিফ : আচ্ছা তোদের সময় আসুক দেখবো!

শায়লা : ওকে ওকে! ট্রুথ হলে আমি বলছি আপনাকে কি বলতে হবে! [ সবাই তাকালো শায়লার দিক ]

শায়লা : আপনি বলুন! আপনি যাকে সত্যিকারের ভালোবাসেন যার জন্য আপনি সব কিছুই করতে রাজি, তার নামের ফাষ্ট লেটারটা কি?

রিদোয়ান : ইয়েস্! ইন্টেলিজেন্ট শায়লা! নাইস কুয়েশ্চন! বল বল আসিফ?

জারিফা : [ শায়লার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] আরে শুধু লেটার কেনো? পুরো নাম বলতে বললে কি হতো?

আসিফ : নো রুলস্ ইজ রুলস্! কুয়েশ্চন চেঞ্জ করা যাবে না!

জারিফা : আচ্ছা যান যান! ওকে!

আসিফ : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] যাকে আমি সত্যিকারের ভালোবাসতে শুরু করেছি, যার জন্য আমি জান দিতেও দ্বিধা বোধ করবো না, যার বিনা কারণে রেগে যাওয়া, বাচ্চামী এবং বদমাইশি কান্ডনামাগুলো আমি আজীবন ভালোবেসে যেতে রাজি! তার নামের ফাষ্ট লেটার হলো,

– এম! [ বলতেই সবাই মিটিমিটি হেসে মার্জানের দিক তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : ওয়াহ! দোস্ত এতো ভালোবাসিস! গেইমটা না খেললে হয়তো আমরা জানতামই না!

মার্জান : আজীব সবাই আমার দিক কেনো এভাবে তাকিয়ে আছো! এম দিয়ে কি শুধু আমার নাম হয় নাকি? দুনিয়ায় আর কারো নাম নেই বুঝি!

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! [ হেসে উঠলো সবাই, মার্জান ও আসিফের চোখাচোখি হতেই হঠাৎ লজ্জা লেগে উঠায় হেসে দিলো ]

শায়লা : সি্ গাইস্ শি ইজ ব্লাশিং!

মার্জান : ধুর! [ বলেই উঠে চলে যাচ্ছিলো, তখনিই ]

রাহুল : [ আবার হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিয়ে ] আরে এটা ভালোবাসা নয় তো কি ডার্লিং! যখন ও তাকাবে আর তুমি ব্লাশিং হয়ে হাসবে!

মার্জান : দেখেন সবাই উল্টোপাল্টা কিসব বলছেন আমি.. কক..কবে ব্লাশিং হলাম!

রাহুল : আচ্ছা ওকে! নরমাল নরমাল! [ চোখ টিপ মেরে ] বাট উই আর আন্ডারস্ট্যান্ড হিহি! ওকে ওকে সরি! [ হেসে উঠলো সবাই ]

রোহানী : ওকে গাইস্! এটেনশন! [ বলেই আবারো ঘুরিয়ে দিলো বোতোল, উত্তেজিত সকলেই, কারদিক গিয়ে বোতোলের হেড থামবে এই আশায়, হঠাৎ বোতোলের হেড গিয়ে থামলো রাহুলের কাজিন আলিসার দিক ]

আলিসা : [ চেচিয়ে ] আমিও ট্রুথ ট্রুথ! ডের না বাবা!

নেহাল : হাহা! তুই তো দেখি বিগ স্কিটিশ! আগে থেকেই স্যালেন্ডার!

আলিসা : এক্সকিউজ মি! ডের আমার সত্যিই অনেক ভয় লাগে!

___এইদিকে, রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে, স্নেহা ঠান্ডায় হাত পা বটে কুড়িয়ে গেছে,

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?

রাহুল : ঠান্ডা লাগছে তোমার?

স্নেহা : মো..মোটেও না! আচ্ছা গেইম দেখেন!

রিদোয়ান : [ আলিসার দিক তাকিয়ে ] ওকে ওকে! আমি বলছি! তুই তোর একটা ডার্ক সিক্রেট বল!

আলিসা : আই হেভ নো ডার্ক সিক্রেট গাইস্!

আসিফ : কামঅন গুড ডার্ক সিক্রেট ওতো থাকতে পারে মানুষের!

আলিসা : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] ওকে! আমি না কখনো পর্ণ ভিডিও দেখিনি!

রাহুল : [শকড হয়ে ] হোয়াট? লায়ার!

রিদোয়ান : রিয়েলি?

নেহাল : ইজ ইট পসিবল?

আসিফ : আই থিংক শি ইজ কিডিং!

আলিসা : গাইস্ আম নট কিডিং! ইটস্ ট্রু! আই নেভার ওয়াচড!

রাহুল : হাও ইটস্ পসিবল?

জারিফা : এক সেকেন্ড স্টপ ইট! অল বয়স্!

– এটা আনবিলিভেবল কিছুইনা! কজ মেয়েদের ডার্ক সিক্রেটগুলো এমনিই হয়!
আপনারা ছেলেরা মেয়েদের ও কি আপনাদের মতোই মনে করেন নাকি? এখন আপনাদের ডার্ক সিক্রেটগুলো বলতে বলিনা! বের হবে এক এক নবাবের কুন্ডলী!

রিদোয়ান : নো নো! আই বিলিভ ইট! হতেই পারে এমন! চলো বাদ দাও নেক্সট স্টার্ট করো!

জারিফা : হ্যা! এখন তো বাদ দিতে বলবেনই!আপনার আগের কুন্ডলী গুলো যে ফাঁস হবে! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরা ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ফিসফিসিয়ে ] আই কান্ট বিলিভ দিজ! এটা সম্ভব নাকি? আচ্ছা স্নেহা তুমি দেখেছো নাকি কখনো?

স্নেহা : ছিইইইই! নেভার!

রাহুল : রিয়েলি? [ হেসে ] এমনিতে তুমি দেখেছো বললেও আমি কখনো বিলিভ করতাম না!

– আচ্ছা ডোন্ট ওয়ারী আমার সাথে দেখিও আজ!

স্নেহা : [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] ছিই রাহুল স্টপ ইট! তারমানে আপনি দেখেছেন?

রাহুল : নাহ! হ্যা কই না! হ্যা! না নাহ!

স্নেহা : [ রাহুলের কান টেনে দিয়ে ] দেখবেন আর?

রাহুল : আহহ! কখনো না!

স্নেহা : প্রমিস?

রাহুল : তোমাদের বাসার নিচে যে দারোয়ানটা ছিলো না? ওর প্রমিস!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে হেসে ] হোয়াট? [ বলেই কান আরো মুচড়ে দিতেই ]

রাহুল : ওকে ওকে ইয়র প্রমিস! স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের কান ছেড়ে দিয়ে ] আপনি শুধুশুধু দারোয়ানের প্রমিস খাচ্ছিলেন কেনো বলেন তো?

রাহুল : কারণ যাতে আমি ইচ্ছে করেই প্রমিস ভাংগতে পারি! আর প্রমিস ভাংগলে ও মরে যেতো!

স্নেহা : বেচারা দারোয়াণকে মেরে আপনার কি হবে বলেন তো?

রাহুল : বেচারা! তাই না? ইডিয়ট ও তোমায় ওর কূনজরে দেখেছিলো! [ স্নেহার মনে পড়তেই মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে, বাকিদের দিক তাকালো ]

রোহানী : শেষ? আপনাদের ফিসফিস করা?

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ ডান! [ বাকিরাও হেসে উঠলো ]

রোহানী : ওকে গাইস্ লেটস্ প্লে এগেইন! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো আবারো সবাই উত্তেজিত হয়ে তাকিয়ে আছে বোতোলটির দিক, এইবার গিয়ে বোতোলের হেড থামলো রাহুলের দিক, চেচিয়ে উঠলো সবাই ]

জাফসিন : ভাইয়া এইবার দেখবো তুমিও স্কিটিশ নাকি ব্রেভ?

রাহুল : আম অ্যা ব্রেভ বয়! ওকে সো্ আম ডের!

জারিফা : আমি দিবো আমি আমি!

রাহুল : ওখেই!

জারিফা : যেহেতু নিউলি ম্যারেড! তাই রোমান্টিক কিছুই দি! এমনিতে তো রোমান্সে আপনি ওস্তাদ! [ হেসে উঠলো সবাই ]

– স্নেহাকে যেভাবে পেয়েছেন এটা এক্সপ্লেইন করেন! স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে এক পলকে! এজ অ্যা সিংগার! সো্ গানের মাধ্যমেই করতে হবে!

রাহুল : [ হেসে ] ওখে!

রোহানী : বাট উইদাউট গিটার? এক মিনিট আমি নিয়ে আনছি গিটার! [ বলেই গিটার আনতে দৌড় দিলো রোহানী ]

শায়লা : বাহ! শীতল বাতাসে, কুয়াশা ভরা রাতে এই সময় রোমান্টিক একটা সং ও হবে! ওয়াওও ভাবতেই ভালো লাগছে!

নেহাল : পাশে একটি পার্টনার হলে বোধহয় আরো বেশী ভালো লাগতো?

শায়লা : আজকালকার পার্টনারদের ভরসা করা যায় না! তাই আই থিংক পার্টনার না থাকাটাই বেটার হবে! [ হেসে উঠলো বাকিরা ]

নেহাল : একবার ভরসা করেই তো দেখো!

শায়লা : তাই?

জাফসিন : [ হেসে ] নেহাল ভাইয়া স্টপ ফ্লার্টিং উইথ ভাবীর শালী ওকে? [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরাও ]

নেহাল : তোকে তো পড়ে দেখে নেবো! [ বলেই আবার শায়লার দিক তাকিয়ে রইলো, কিছুক্ষণ পরেই রোহানী গিটার নিয়ে এগিয়ে এসে রাহুলের হাতে ধরিয়ে দিলো ]

জারিফা : ওকে স্টার্ট স্টার্ট জিজু! [ আসিফ এক পলকে তাকিয়ে আছে মার্জানের দিক, মার্জান কিছুক্ষণ পর পর আড়চোখে তাকালেও আবার সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিচ্ছে ]

রাহুল : [ গিটার ঠিক করে হাতে নিয়ে স্নেহার দিক ফিরে বসে, চোখের দিক তাকিয়ে গিটার বাজাতে লাগলো, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে মুচকি মুচকি হাসছে ]

♪ নাহ রাস্তা মালুম ♪
♪ নাহ তে্রা নাম পাতা মালুম ♪
♪ কেসে্ মেরে পিয়ারেমে তুঝকো ♪
♪ ঢুন্ডা কিয়া মালুম ♪

♪ নাহ রাস্তা মালুম ♪
♪ নাহ তে্রা নাম পাতা মালুম ♪
♪ কেসে্ মেরে পিয়ারেমে তুঝকো ♪
♪ ঢুন্ডা কিয়া মালুম ♪

♪ সি্ধা তে্~রে পা~স্ ♪

♪ সি্ধা তে্রে পাস্ মে আপনি ♪
♪ জানে ভি লেকে আগাইয়া ♪

♪ সা্থ সা্মান্দার পার মে তে্রে ♪
♪ পিছে পিছে আগাইয়া ♪
♪ মে তে্রে পিছে পিছে আগাইয়া ♪
♪ জুলমি তে্রি জা~~ন ♪
♪ ও জুলমি তে্রি জান ♪
♪ তে্রে কাধমোকি নিচে আগাইয়া আ~~♪

♪ সা্থ সা্মান্দার পার মে তে্রে ♪
♪ পিছে পিছে আগাইয়া♪
♪ মে তে্রে পিছে পিছে আগাইয়া ♪

[ গান শেষে এক্সাইটেড হয়ে তালি দিয়ে উঠলো সবাই, কিন্তু রাহুলের চোখ এখনো সরলো না স্নেহার চোখের দিক থেকে ]

রিদোয়ান : উহহহ! এক্সিলেন্ট দোস্ত!

আসিফ : ♪ জুলমি তে্রি জান তে্রে কাধমোকি নিচে আগাইয়া~আ~আ ♪

নেহাল : ♪ সা্থ সামুন্দার পার মে তে্রে, পিছে পিছে আগাইয়া ♪

শায়লা : হোয়াট অ্যা বেসূরা ভয়েস্!

নেহাল : হিহি, জানতাম! কপালে এই প্রশংসাটাই থাকবে [ আবারো কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরা ]

আলিসা : [ রাহুল এখনো স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকায় ] রাহুল ভাইয়া! গান তো শেষ! এইবার গেইমে জয়েন করতে পারবে আবার! নয়তো ভাবীকে এইভাবে দেখতে থাকলে চোখে ক্যাটেরেক্ট পড়ে যাবে [ হাসতে লাগলো বাকিরা, স্নেহা ও হেসে লজ্জা পেয়ে রাহুলের মুখ ধরে সোজা ফিরিয়ে দিলো ]

রোহানী : ওকে ওকে! গাইস লেটস্ প্লে এগেইন! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো ]

____আর এইদিকে,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার পেছনে হাত দিয়ে পিঠে স্লাইড করে চুলের ভেতর হাত রাখলো, ঠান্ডা ঠান্ডা রাহুলের হাতের স্পর্শে শিহরে উঠলো স্নেহা! না পারছে চেচাতে, না পারছে উঠে দাড়িয়ে যেতে, কারণ বাকি আরেকটি হাত ও রাহুল তার হাতের মুঠোয় বন্ধি করে ধরে রেখেছে,

মাথা মুড়িয়ে স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল হাসছে আর মুঠি বেধে ধরে রাখা স্নেহার হাতটি তার ঠোটের কাছে এনে একটি চুমু খেয়ে আবার নিজের দাড়িতে স্লাইড করছে, মুচকি হাসলো স্নেহা রাহুলের কান্ডে,

রাহুল ও স্নেহা তাকিয়ে আছে বুঝতে পেরে বাকি হাতটি স্নেহার পিঠের উপর থেকে স্লাইড করে শোল্ডার পর্যন্ত নিয়ে নিজের অনেকটা কাছাকাছি টেনে নিলো স্নেহাকে, যা দ্বারা রাহুলের আগলে ধরে রাখার আবরণে স্নেহার শীত ও কম লাগতে লাগলো, তাও ইচ্ছে করছিলো স্নেহার যেনো একদম গুটিশুটি হয়ে রাহুলের বুকের মাঝেই ঢুকে পড়বে, কিন্তু সবার মাঝে লজ্জা লাগছে, তাই আপতত এইটুকুতেই ইনাফ তার জন্য,

হঠাৎ বাকিদের চেচিয়ে উঠার শব্দে স্নেহা সোজা ফিরে তাকাতেই দেখে বোতোলের হেড নেহালের দিকই থেমেছে,

আসিফ : স্কিটিশ! তাই না? এইবার দেখি কি নিবি!

নেহাল : একটাই অপশন নেহালের জন্যে! ওয়ান এন্ড অনলি ডের ফর মি!

জারিফা : বাহ! এতো সাহস?

রাহুল : [ হেসে ] সুপার্ভ! আমি বলছি তোর কি করতে হবে!

নেহাল : [ দাঁড়িয়ে জ্যাকেটের কলার ঠিক করে ] বল বল!

রাহুল : প্যান্টের ভেতর আন্ডারওয়েল নাকি থ্রি কুয়াটার প্যান্ট! [ বাকিরা মুখ চেপে হেসে উঠলো ]

নেহাল : ছি! ব্রো এতোগুলো লেডিসের সামনে এসব জিজ্ঞেস করতে লজ্জা করেনা? শেইম অন ইউ! কমপক্ষে ভাবীকে তো খেয়াল কর!

রাহুল : [ হেসে ] আরে বলনা?

নেহাল : ও হ্যালো! আমি ট্রুথ নেইনি, সো্! কিছু বলতে পারবো না ডের নিয়েছি কি করতে হবে বল?

রাহুল : ডেরটা কমপ্লিট করার জন্য এটার আন্সার দেওয়া ইম্পরট্যান্ট নেহাল! [ নেহাল অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

রিদোয়ান : আরে নেহাল ভয় পেয়ে গেলি? একটু আগেই তো বললি! একটাই অপশন তোর জন্য ওয়ান এন্ড অনলি ডের ফর ইউ!

নেহাল : না নাহ! ভয় পাবো কেনো! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] দুটোই আছে আন্ডারওয়েল ও তি…থ্রি কুয়াটার প্যান্ট ও!

রাহুল : গ্রেট! তাহলে তুই এখন পুলে সুইমিং করে টু-রাউন্ডস দিবি! উইদাউট ক্লথস্! বাট থ্রি কুয়াটার প্যান্টটা রাখতে পারিস যেহেতু এইখানে লেডিসরা আছে! সো্ অতোটা সলিড কাজ দেবো না তোকে! জাষ্ট এটাই কর!

নেহাল : হোয়াটট হোয়াটট? তোকে কি রোমেন্টিক ডের দিয়েছে আর তুই আমাকে এটা দিবি? তারমধ্যে এই নিপিং উইন্টারে!

রাহুল : ডের নিয়েছিস নেহাল! সো্ ইউ আর অ্যা ব্রেভ বয় প্রুফ কর!

স্নেহা : রাহুল! এতো রাতে ঠান্ডায় সুইমিং করবে? পাগল হয়ে গেছেন আপনি? পানি কতো ঠান্ডা হবে ভেবে দেখেছেন?

রাহুল : ডের স্নেহা! ডের! সো্ হোয়াট?

স্নেহা : বাট রাহুল…

রাহুল : ওহো! ডোন্ট ওয়ারি না স্নেহা! [ বাকিরা ও হাসতে লাগলো নেহালের অবস্থা দেখে ]

জাফসিন : নেহাল ভাইয়া! তুমি সত্যিই ভয় পেয়ে গেছো! আমি তো ভেবেছিলাম তুমি দু-তিন মিনিটেই ডের ডান করবা!

আসিফ : [ হেসে ] ফেসে গেলো নেহাল! নিজের গেইমে নিজেই!

নেহাল : নো ফেসে যায়নি! আই উইল! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ওয়েট ব্রো নেক্সট তোর আবার আসুক! তারপর তোকে কি ডের দেই দেখিস! [ হেসে উঠলো সবাই, নেহাল সুইমিং এর দিক এগিয়ে গিয়ে জ্যাকেট, টি-শার্ট, জিন্স সবই খুলে রাখলো শুধু থ্রি কুয়াটার প্যান্টটি ছাড়া, ধীরেধীরে এক-পা এগিয়ে পানিতে পা রাখতেই ঠান্ডায় আবার তাড়াতাড়ি পা উঠিয়ে নিলো ]

স্নেহা : রাহুল! স্টপ ইট! একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না? ফেভার হয়ে যাবে তখন!

রাহুল : [ হেসে ] এতো টেনশন করো কেনো বলো তো? কিছু হবে না ডোন্ট ওয়ারি! [ বলতেই পানিতে ঝাপিয়ে পড়ার শব্দ এলো, রাহুল-স্নেহা দুজনেই পুলের দিক তাকাতেই দেখে নেহাল সুইমিং করছে, বাকিরা কেউ হাসছে আবার কেউ শিস বাজাচ্ছে ]

কিছুক্ষণ পরই নেহাল ভেজে ভেজা কাপা শরীর নিয়ে উঠে এলো, পুল থেকে,

রাহুল : [ হেসে ] ইউ ওকে নেহাল?

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part : 58

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part : 58

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ হুট করে চেচিয়ে বলে উঠলো ] বাবা!

[ হতভম্ব সবাই,পথচলা থেমে গিয়ে চমকে উঠলো রাহুলের বাবা, আজ কতটা বছর পর এই কন্ঠের বাবা ডাকটি শুনতে পেলো, তাড়াতাড়ি মাথা মুড়িয়ে পেছন ফিরে তাকালো, রাহুল স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে আবার ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো তার বাবারদিক, এতোটা বছর পর আজ চোখাচোখি ও মুখোমুখি হচ্ছে, নির্দিধায় কি বলবে তার বাবাকে, কতো কিছুতে বাবাকে ইগনোর করে চলে গিয়েছিলো, কতোবার দাদীকে এইধরনের কথা গুলো বলতে শুনে ফেলেছিলো,

– হি ইজ অ্যা ইররেসপন্সিবল পার্সন, ফেইক ফাদার, দাদী! হি নেভার ডিজার্বড মি এন্ড মাই মাদার!

– অলসো্ হি নেভার ডিজার্ব অ্যা ফ্যামিলি!

পুরনো এসব কথাগুলিই এই মুহূর্তে রাহুলের মাথায় ঘুরঘুর করে বেড়াচ্ছে, চোখ বাবার সাথে মেলালেও আবার নার্ভাস বোধ হোওয়ায় কিছু কিছু মুহুর্তের জন্য সরিয়ে নিচ্ছে, বাবার সামনে নিজেকে খুবই ছোট মনে হচ্ছে আজ, নিস্থব্দতায় কাটছে চারদিক, এইভাবে চুপ হয়ে দাড় করিয়েও তো রাখতে পারবে না, নিজেকে কন্ট্রোল করে নিস্থব্দতা ভেংগেই আমতা আমতা করে বলে উঠলো ]

রাহুল : জ্বি, এ..একচুলি! আ… [ বলেই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার স্নেহা, এবং দাদীর দিক তাকালো, গুলিয়ে যাচ্ছে রাহুলের সবকিছু, কি বলবে? কি বলাটা দরকার? এটাও মাথায় আসছে না, তাই আবার মাথায় হাত দিয়ে চুলকাতে চুলকাতে ভেবে নিলো সরি বলবে,তার মিসবিহেভিয়ারের জন্য ]

রাহুল : আ..আম, কল্ড ইউ কক..কজ!

– এ..এক একচুলি! আম সরি! [ জলচোখে মুচকি একটি হাসি দিয়ে কাছে টেনে জড়িয়ে নিলো তার বাবা, মুহূর্তেই রাহুলের চোখ দুটিও ঝলমল হয়ে উঠলো,আবেগ গুলোও বোধহয় বাবার বুকে ঠাই পেয়ে বিলিয়ে পড়লো, তাই বাবার পিঠে হাত মেলে শক্ত করে আগলে জড়িয়ে ধরে ফুফিয়ে কেদে উঠলো রাহুল ও ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আম সরি! বাবা! আই হার্ট ইউ!

বাবা : ডোন্ট সে্ সরি মাই চাইল্ড! আই ডিজার্বড ইট! [ দূর থেকে চেয়ে আছে বাকিরা, দাদীর চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে বাবা-পূত্রের মিলনে,স্নেহার চোখটাও ঝলমল করছে খুশিতে, পুরনো ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার আনন্দটা বুঝি এমনই, যা আবেগ দিয়ে প্রকাশ করা যায়, মুখের ভাষা দিয়ে নয়,

রাহুলের বাবা দুহাতে রাহুলের মুখ তুলে গাল বেয়ে পড়া পানিগুলো মুছে দিলো ]

বাবা : কিপ স্মাইল অলোয়েজ! ওকে? [ মাথা নাড়ালো রাহুল ]

বাবা : [ হেসে ] এতো বছরের এটিটিউড আজ হঠাৎ কেটে গেলো!

– বুঝার আর বাকি নেই হ্যান্ডসাম! বিয়ের পরেই যখন কেটেছে বউ এর চাপ পড়েছে জড়োসড়ো!

রাহুল : [ চোখ নামিয়ে হেসে ] ইয়াহ! বাবা শি প্রেশারাইজড টু মি!

– এক্সুলি! ও আমার লাইফে না আসলে হয়তো! লাইফ কিভাবে ফিল করে বাচতে হয় সেটাই জানতাম না! আমার মিষ্টেক গুলো রিয়েলাইজ করতে পারতাম না কখনো!

বাবা : শি ইজ এঞ্জেল ফর ইয়র লাইফ!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে হেসে ] ইয়াহ! রাইট! [ রাহুলের বাবা ও হেসে রাহুলের কাধে হাত রেখে হেটে নিয়ে গেলো স্নেহার দিক, এইবার তো স্নেহা নিজেই নার্ভাস ফিল করছে, তারদিকই কেনো আসলো ]

বাবা : স্নেহা! ইউ বোথ মেড ফর ইচ আদার! এন্ড ইউ এঞ্জেল নট অনলি ফর রাহুল! ইউ এঞ্জেল ফর মাই হাউজ! ফর মাই ফ্যামিলি! [ বলেই স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] নাও আই শুড বি গো! ফর মিটিং, সি্ ইউ লেটার! ওকে? [ স্নেহা মাথা নাড়ালো, রাহুলের বাবা রাহুলের মাথায় ও হাত বুলিয়ে দিয়ে আনন্দিত মনটা নিয়ে অফিসের পথে রওনা দিলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, রাহুল তাকালো না কারোর দিক, সোজা উপরের রুমের দিক চলে গেলো ]

দাদী : এতো বছরের খুশি সব! যেনো আজই চারদিক বিলিয়ে পড়ছে!

লিনিসা ফুফি : আমাদের স্নেহা অনেক ভাগ্যশালী! আমার তো মনে হচ্ছে ও একটা খুশির ভান্ডার!

– যদি আমারও একটা ছেলে থাকতো না! তাহলে আমিও আজ স্নেহার মতোই মিষ্টি একটা বউ আনতে পারতাম!

নাফিসা ফুফি : মিষ্টি বউ হলেও কিন্তু শুধু চলে না,আই মিন ফ্যামিলি ক্লাস ও থাকতে হয়!

লিনিসা ফুফি : আরে! ফ্যামিলি ক্লাস দিয়ে কি করবো? বউটা মিষ্টি হলেই তো হলো! বিয়ে কি ফ্যামিলির সাথে করাতাম নাকি?

– রুপ নয় গুণ দেখে করাতাম! আর আমাদের স্নেহার তো রুপ,গুণ দুটোই আছে! তাই সে একটু বেশিই মিষ্টি!

নেহাল : [ চেচিয়ে ] খাম্মী!

লিনিসা ফুফি : হ্যা বল?

নেহাল : ডোন্ট ওয়ারি না! জাষ্ট ইন কেজ্ সাপোস্ আম ইয়র সন! সো আমার জন্যই ভাবীর মতো সুইট’স একটি উমমম হুমমম!

গীতালি : নেহাল ভাইয়া! আপনে না, বিয়ার চিন্তা এহন বাদ দিয়া, আগে শালী ভাবীর না ভাইয়ের অয় এইডা শিইখা নেন! তারপরে স্নেহাভাবীর মতো বউয়ের চিন্তা কইরেন!

– নাইলে আবার যদি বউরে শ্বাশুড়ী আর শ্বাশুড়ীরে বউ ডাইকা বসেন! হায় আল্লাহ! আল্লাহয় না করুক! [ বলেই গালে তওবা খেতে লাগলো, বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

নেহাল : ওহহহ নো গীতালি! সব সময় আমার ডিফেক্ট খুজে বেড়াও কেনো?

গীতালি : পাফিক্ট কথা কইলে কয় ডিফিট করি! আই এম আন্ডাসট্যান ইউ মাইক মি ক্রাজি! বাই [ বলেই কিচেনের দিক চলে যায় ]

নেহাল : [ চেচিয়ে ] গীতালিইইই মাইক মি ক্রাজি না, মেক মি ক্রেজিইইইই!

গীতালি : [ চেচিয়ে ] অয় অয়! এতো ইংলিশ শিখান লাগদো না! [ সবাই হেসে উঠলো আবারো, হঠাৎ তখনিই ]

নেহাল : [ হাত নাড়িয়ে চেচিয়ে ] হেইইইই! ব্রোস্! [ বলতে সবাই মেইন ডোরের দিক তাকাতেই দেখে আসিফ আর রিদোয়ান এসেছে ]

মার্জান : [ আসিফের চোখাচোখি হতেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিয়ে মনে মনে ] নরমাল মার্জান নরমাল! এমন রিয়েক্ট কর যাতে ও বুঝতে না পারে যে, ওকে দেখলেই তোর কিছু আসে যায় না,

– আচ্ছা আমি তো ওকে ভয় পায় না! তাহলে ওকে দেখলেই ইদানিং বুকটা কাপে কেনো? [ এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ফিল করলো পাশে কেউ এসে বসেছে, মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখে আসিফ! চোখাচোখি হতেই মুচকি একটি হেসে চোখ টিপ মারলো আসিফ ]

মার্জান : [ মনে মনে ] আজিব তো এতো গুলো সিট থাকতে এইদিকেই এসে বসতে হলো নাকি!

আসিফ : [ মনে মনে হেসে ] মিস্ এংড়ি বার্ড আপনার মনে এখন কি ভাবছেন তা আমি ভালো করেই জানি, তবে আদারসাইড বসলে আপনাকে কাছ থেকে দেখতাম কিভাবে!

রোহানী : [ আসিফ এবং রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা! রিসি্পসনের সবকিছুর দায়িত্ব না গতকাল রাতে পন্ডিতি করে তোমরা নিয়েছিলে? কোথায় গেলো তোমাদের দায়িত্ব?

রিদোয়ান : তোদের না,এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না বুঝেছিস? দায়িত্ব যখন আমরা নিয়েছি, পার্টি হবে এন্ড আমাদের মতোই হবে ধামাকা!

– [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] গুড মর্নিং স্নেহাআআআ! ওপস! সরি এখন তো ভাবী! হিহি! বাই দ্যা ওয়ে ভাবী! আপনার ওনাকে দেখতে পাচ্ছিনা যে, [ চোখ টিপ মেরে ] একরাতেই টায়ার্ড হয়ে গেছে নাকি!

জারিফা : [ রিদোয়ানকে চিমটিয়ে ] শিসসস! ধীরে বলেন না! দাদী আর ফুফিরা আছে ঐদিক দেখছেন না?

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে জারিফা! ধীরে বলার কি আছে, ওরাও যেমনকি করেনি? এসব না করলে তুমি, আমি কি দুনিয়ায় আসতে পারতাম নাকি? ডোন্ট ওয়ারি সামনে আমরাও করবো আমাদের ও বাচ্চা-কাচ্চা…

জারিফা : [ রিদোয়ানের মুখ চেপে ধরে ] ছিইইই! স্টপ ইটটটট! [ বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো রিদোয়ান আর জারিফার কান্ড দেখে স্নেহা ও হেসে আবার উপরের দিক তাকাতে লাগলো ]

আলিসা : ভাবীইইই! এইভাবে বারবার উপরের দিক লুক না দিয়ে,মন যেদিকে যেতে চাচ্ছে ঐদিকেই চলে যানননন!

আসিফ : বাই দ্যা! ওয়ে রাহুল কোথায়?

নেহাল : ব্রোস্! তোদের ফোন দিয়েছিলাম কবে! আর তোরা এসেছিস এখন! কি গ্রেট এন্ড লাভিং মোমেন্ট দেখা মিস্ করে দিলি!

রিদোয়ান : কিরকম গ্রেট লাভিং? [ নেহাল এক্সাইটেড হয়ে বলতে লাগলো কিছুক্ষণ আগেই ঘটে যাওয়া রাহুল আর তার বাবার কথা গুলো ]

মার্জান : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা! রাহুল কিছু না বলেই চলে গেছে, আই থিংক নাও হি ইজ ইন ইমোশন! ইউ শুড বি গো দেয়ার! ওর পাশে এখন কাউকে প্রয়োজন! তুই যা আমরা ওদের সাথেই আছি!

স্নেহা : আচ্ছা! [ বলেই মাথা নাড়িয়ে উপরের দিক চলে গেলো, রুমের কাছাকাছি আসতেই এক্সাইটমেন্টে তাড়াতাড়ি হেটে গিয়ে দরজা খুললো স্নেহা,রাহুল পকেটে হাত রেখে জানালার দিক দাঁড়িয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে, স্নেহা মুচকি একটি হাসি দিয়ে দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে রাহুলের বাহুর দু-দিক হাত রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, রাহুল পকেট থেকে হাত উঠিয়ে, স্নেহার মুঠি বেধে জ্যাকেট ধরে রাখা হাতগুলোর উপর হাত রাখলো ]

স্নেহা : আপনি জানেন না রাহুল! আমার কতোটা খুশি লাগছে!

– আপনি আমার লাইফে আসার পর থেকে সবই স্বর্গীয় মনে হচ্ছে আমার, জানেন! মাঝে মাঝে রাতে ঘুমানোর আগে এমন মনে হতো, যেনো! এইসবটায় সপ্ন! আপনাকে পাওয়াটাও সপ্ন!

– [ কাদো কন্ঠে ] এতোটা ভালোবাসেন কেনো আমায়? [ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত ছুটিয়ে পেছন ফিরে তাকালো,দু-হাতে স্নেহার মুখ উঠিয়ে ধরলে দেখে স্নেহার চোখে জলে টলমল করছে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমাকে ছাড়া আমার জীবন আদুড়ে ছিলো! মন খুলে হাসা তো আমি ভুলেই গিয়েছিলাম, নিঃস্বংগ ছিলাম আমি! তুমি আমার লাইফে আসার পরই আমার একাতীত্ব জীবনটি খুশিতে ভরে দিয়েছো! তাই তোমাকে আমি যতোই ভালোবাসবো আমার জন্য ততোই কম পড়বে! [ বলেই স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে কপালে একটি চুমু খেয়ে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরলো, স্নেহাও রাহুলের বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে চুলে বিলি কাটতে কাটতে ] কামঅন স্নেহা! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আ..আপনি এতোগুলো ভালোবাসেন তাই!

রাহুল : এতো বোকা কেনো তুমি হ্যা? [ মৃদু হেসে ] বিটউইন আই লাইক ইট! [ বলেই আবার দু-হাতে স্নেহার মুখ তুলে ধরে ] আচ্ছা আর কাদতে হবে না! তোমার সাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তো! [ চোখের পানি মুছে দিয়ে ] অলরেডি কাজল লেপ্টে ফেলেছো ইডিয়ট! [ হঠাৎ দেখে স্নেহা রাহুলের বুকের দিক টি-শার্টে হাত দিয়ে ঘষে কি যেনো মুছতে লাগলো, রাহুল অবাক হয়ে তাকালে দেখে টি-শার্টে স্নেহার লিপস্টিক লেগে গেছে ]

স্নেহা : স..সরি! আ..আমি..

রাহুল : [ হেসে ] দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! এটা নিয়েও চেহারায় টেনশন ছাপ নিয়ে আসতে হয়?

– আচ্ছা চলো আমি আবার সাজিয়ে দি [ বলেই স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে ড্রেসিং এর সামনে দাড় করালো ]

রাহুল : এক সেকেন্ড! [ বলেই ড্রেসিং এর উপর থেকে স্নেহার কসমেটিকস গুলো ঘাটতে লাগলো ]

স্নেহা : কিক..কি খুজছেন?

রাহুল : খুজছি ওয়েট!

– হ্যাঁ পেয়েছি! [ বলেই কাজলটা হাতে নিয়ে স্নেহার চোখের নিচে লাগিয়ে দিতে লাগলো,হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার দু-চোখে কাজল লাগিয়ে দিয়ে ] এক সেকেন্ড স্নেহা! আরেকটা জিনিষ বাকি আছে! [ স্নেহা মাথা নাড়ালো, রাহুল লিপস্টিকটা এগিয়ে নিয়ে স্নেহার ঠোটে লাগিয়ে দিতে লাগলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের চোখের দিক, আর রাহুল তাকিয়ে ভাবছে স্নেহার কাপা কাপা গোলাপী ঠোটের দিক, একটা ঠোট এতোটা আকর্ষীত কিভাবে হতে পারে? কিভাবে হতে পারে এতোটা মলিন, কিভাবে পারে তাকে বারবার তৃষ্ণার্থ করে দিতে এই ঠোট!
ধীরেধীরে লিপস্টিকটা স্নেহার ঠোট থেকে সরিয়ে নিলো রাহুল! হার্টবিট বাড়ছে স্নেহার কারণ রাহুলের ঠোট এগুচ্ছিলো তার ঠোটের দিক, পরক্ষণে রাহুলের ঠোটের আলতো স্পর্শ পেতেই ]

স্নেহা : [ চোখ কুচকে বন্ধ করে ] রার..রাহুল! দর..দরজা খোলা!

রাহুল : হোয়াট? [ বলেই অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার চোখের দিক ]

স্নেহা : দদ..দরজা খোলা! যয..যদি কেউ আসে.. [ কোমোড়ে হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে হেসে উঠলো রাহুল,স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : জানো স্নেহা! তোমাকে না বড় একটি নোবেল দেওয়া দরকার! রোমান্টিক মোমেন্ট বিগড়ে দেওয়ার প্রধান শিফটেন হিসেবে! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে মন খারাপ করে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো ]

রাহুল : আরে রাগছো কেনো? আমি তো..

স্নেহা : মজা করছিলেন?

রাহুল : [ হেসে ] হ্যা!

স্নেহা : মোটেও না মিথ্যে বলছেন আপনি! সিরিয়াসলিই বলেছেন! আ..আমি আমি কি ইচ্ছে করেই এমন করি নাকি? ওটা তো হঠাৎ, মানে! কেমন জানি! আ..আপনি কাছে আসলেই লাগে নিশ্বাসটা এক্ষুণি বন্ধ হয়ে যাবে, তখন মনে হয় যেনো… [ বলেই রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : যেনো…?

স্নেহা : যেনো কিছু না! আপনি আবারো মজা নিচ্ছেন আমার কথায়!

রাহুল : আরেহ! মোটেও না স্নেহা! [ পাশ থেকে গিটারটা উঠিয়ে নিয়ে ] আচ্ছা চলো তোমাকে আজ গিটার বাজানো শিখাবো!

স্নেহা : লাগবে না! আমি জানি গিটার বাজাতে! ঐদিন বাজিয়েছিলাম না ভার্সেটিতে!

রাহুল : হ্যা! বাজিয়েছো, তাই তো বলছি চলো আজ একদম ফুলফিল বাজানো শিখিয়ে দেবো,

স্নেহা : ফুলফিল? তারমানে ঐদিন আমি যা বাজিয়েছি তা ঠিক হয়নি?

রাহুল : হ্যা! হয়েছিলো তবে টার্নিং পয়েন্ট গুলোতে টোন হাইলাইট করতে জানোনি! সো্ ইটস্ সিম্পল এসো শিখিয়েদি!

স্নেহা : না লা..লাগবে না আমার শিখতে হবে না [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ পেছন থেকে হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ] আরেহ! কই যাও! আমি যেতে দিলেই তো যেতে পারবা!

স্নেহা : ছাড়ুন রাহুল! প্লিজ! নিচে ওরা ওয়েট করছে!

রাহুল : করুক! [ হেসে স্নেহার পেটে শুরশুরি দিয়ে ] আচ্ছা! আজ একটু অভিমান বেশী হচ্ছে না! হুমম উমম?

স্নেহা : আরেহহ! রাহুল প্লিজ!

রাহুল : কিভাবে অভিমান ভাংগতে হয় স্নেহা! আমার জানা আছে কিন্তু! [ বলেই হাত দিয়ে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করতেই ]

স্নেহা : রাহুল! পাগল নাকি কি করছেন আপনি? বব..বললাম না দরজা খোলা!

রাহুল : সো্ হোয়াট?

স্নেহা : উফফ! [ বলেই রাহুলের হাত ছুটিয়ে চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ আবারো স্নেহাকে একটানে কাছে এগিয়ে নিয়ে ] ভাগছো কেনো স্নেহা! লেটস্ স্টার্ট আমরা কিন্তু আবারো টাইটানিক পোজে আছি! [ স্নেহা দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : [ হেসে ] হাপিয়ে গেলে এইটুকুতেই! এখনো তো কিছু করলামই না ভালো করে [ স্নেহা হাত পেছন করে রাহুলের পেটে একটি চিমটি দিলো, রাহুল ও হেসে একহাতে স্নেহাকে ধরে রেখে আরেকহাতে গিটার বেল্টটা লুজ করে স্নেহাকে সহ ঢুকিয়ে নিলো গিটার বেল্টে, গিটারটা স্নেহার সামনে রেখে স্নেহাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ড্রেসিং এর পাশের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : কিক..কি করছেন আপনি এসব? এভাবে কেউ গিটার বাজায় নাকি?

রাহুল : হ্যা! আমি বাজাবো এখন থেকে! [ বলেই নিজ হাতে স্নেহার হাত দিয়ে গিটারের তারে বীট করাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ গিটার থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে ] রাহুল! আপনিই বাজান! আমি অন্যকোনো সময় শিখে নেবো!

রাহুল : যতো বাহানা দাও স্নেহা! আমি কিন্তু তোমাকে যেতে দিচ্ছিনা!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] আমি কোথাও যাচ্ছিওনা!

রাহুল : আওও! স্নেহা! [ বলেই গিটার সরিয়ে নিচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত থামিয়ে দিয়ে ] আরেহ! সরিয়ে নিচ্ছেন কেনো? আপনি বাজাবেন না ?

– আপনি বাজান প্লিজ! গান সহ হুমম?

রাহুল : সত্যি?

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম সত্যি!

রাহুল : সত্যি তো?

স্নেহা : হ্যা! বাবা সত্যি!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! আই টোল্ড ইউ না? আম নট ইয়র বাবা! ইয় কেন কল মি, বেইবি, জান, সুইটহার্ট..

স্নেহা : [ হাতের কুনি দিয়ে রাহুলের পেটে ঘুষি দিয়ে ] রাহুললল! আপনি গাইবেন? নাকি আমি যাবো?

রাহুল : আচ্ছা ওকে ওখেই! [ বলেই রাহুল গিটার? বাজাতে লাগলো, স্নেহা ও মনে মনে হাসলো রাহুলের কান্ডে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ]

♪ কা্জরা মুহাব্বাত ওয়ালা ♪
♪ আখি্ওমে এসা্ ডালা ♪
♪ কা্জরা মুহাব্বাত ওয়ালা ♪
♪ আখি্ওমে এসা্ ডালা ♪
♪ কা্জরেনে লেলি্ মেরী জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

♪ দুনিয়া হে্ মেরে পিছে ♪
♪ লেকি্ন মে তে্রে পিছে ♪
♪ দুনিয়া হে্ মেরে পিছে ♪
♪ লেকিন মে তে্রে পিছে ♪
♪ আপনা বানা্লে মেরি জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

রাহুল : [ নাক দিয়ে স্নেহার ঘাড়ে স্লাইড করে ] স্নেহা তোমার ঘাড়ে এতো খুশবো কেনো?

স্নেহা : এটা গানের লিরিক্স ছিলো? [ রাহুল হেসে দিলো স্নেহার দিক তাকিয়ে, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে মুচকি হাসলো ]

স্নেহা : [ রাহুল তাকিয়ে আছে বুঝতে পেরে ] কান্টিনিউ দ্যা সং!

রাহুল : [ হেসে ]

♪ আয়ে হো কাহাসে্ গড়ি ♪
♪ আখো্মে পিয়ার লেকে্ ♪
♪ চা্রতি জাওয়ানিকি ইয়ে্ ♪
♪ বেলি্ বাহার লেকে্ ♪
♪ দিল্লি শেহে্র কা সা্রা ♪
♪ মীনা বাজা্র লেকে্ ♪
♪ দিল্লি শেহে্র কা সা্রা ♪
♪ মীনা বাজা্র লেকে্ ♪

♪ জুমকা বাড়েলী ওয়া্লা ♪
♪ কানোমে এসা্ ডালা ♪
♪ জুমকা বাড়েলী ওয়া্লা ♪
♪ কানোমে এসা্ ডালা ♪

♪ জুমকে নে লেলি্ মেরী জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

[ গান শেষ করেই রাহুল গিটার সরিয়ে ড্রেসিং এর উপরে রাখলো, আর স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে ব্লাশিং হয়ে হেসে বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে আগলে নিলো ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম?

স্নেহা : আমাকে প্রতিদিন এভাবে গান শোনাবেন আপনি!

রাহুল : উমম! আর আমায় প্রতিদিন এভাবে টাইট করে হাগ দিবে তুমি!

– আর সাথে একটা করে কিসসস! উমহুম! একটা না আনলিমিটেড ওকে?

স্নেহা : [ হেসে ] হুমম!

হঠাৎ,

জারিফা : [ দরজায় কড়া নেড়ে ] হ্যালো গাইস্ আর ইউ দেয়ার? [ বলেই ভেতরে ঢুকতেই রাহুল আর স্নেহার জড়িয়ে ধরে রাখা দেখে ] ইইইইই! রোমান্স চলছে বুঝি! তাই তো বলি দুজন উপরে এতো লেইট করছেন কেনো! [ জারিফার পেছন পেছন মার্জান,শায়লা এবং রাহুলের কাজিন গুলো ও ঢুকলো ]

_____এইদিকে স্নেহার আপ্রাণ চেষ্টা রাহুল থেকে সরিয়ে দাড়াতে, কিন্তু এতে রাহুল এক কদম ও পিছিয়ে নেই! সে জারিফার দিক তাকিয়ে হেসে হেসে আরো টাইট করে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে রাখলো,

স্নেহা : কি করছেন রাহুল! ছাড়েন প্লিইইজ!

রাহুল : নেভার!

রোহানী : অওওও! হাও রোমান্টিক গাইস্!

হঠাৎ,

গীতালি : [ রুমে ঢুকে ] রাহুল ভাইয়া আপনারে… [ বলেই ঢোগ গিলে হা করে তাকিয়ে রইলো ]

স্নেহা : রাহুল প্লিজ! ছাড়ুন! দেখেন এসব ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু! [ বলেই রাহুলকে জোড়ে একটি চিমটি দিলে, রাহুল হেসে ছেড়ে দিলো ]

রাহুল : গীতালিইই তুই কি যেনো বলছিলি!

গীতালি : হো কিক..কি যেনো বলতে আ..আইসি্লাম! [ সবাই হেসে উঠলো গীতালির অবস্থা দেখে ]

গীতালি : স..সবাই রুমে আছে দেইখা আর নাক আর দেইনাই! ভাবছি সবার সামনে কি আর লঞ্চ…

রাহুল : [ হেসে ] দ্যাটস ওকে! গীতালি ইটস্ অ্যা কমোন ম্যাটার! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হ্যা! না স্নেহা? [ স্নেহা আড়চোখে তাকিয়ে আবার অন্যপাশ ফিরে গেলো, হাসতে লাগলো রাহুল ]

গীতালি : ও হ্যা! মনে পড়ছে! আপনারে নিচে ডাকতাসে্ রিদোয়ান ভাইয়া আর আসিফ ভাইয়া!

– টুমারো আপনের রাসি্পসন যে অইবো এসবের সাজানি নিয়া ডিজ… [ কনফিউজড হয়ে ] ডিজ.. কি যেনো..

রাহুল : [ হেসে ] ডিজকাস্!

গীতালি : [ চেচিয়ে ] হো! ডিজকাস্ করোন লাইগা!

রাহুল : ওকে! গাইস্, তোমরা কথা বলো! আই শুড বি গো!

– আর হ্যা! আমার বউয়ের খেয়াল রেখো কিন্তু! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো, স্নেহা আড় চোখ তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নিলো, রাহুল ও হাসতে হাসতে রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে চলে গেলো ]

আলিসা : ভাবীইইইই আমাদের আপনার লাভ স্টোরীর বাকি কাহাণীটুকু কিন্তু বলেন নি!

– [ স্নেহাকে টেনে নিয়ে খাটে বসিয়ে ] চলেন চলেন এইবার শুরু করেন! পুরো না শোনা পর্যন্ত কিন্তু আপনাকে ছাড়ছি না!

সন্ধ্যা, ৬ টা বেজে ২০ মিনিট,

জাফসিন : [ পেটে হাত বুলিয়ে ] গাইস্! আজ না লাঞ্চ একটু বেশি করে ফেলেছি! ছয়-টা ওভার হয়ে যাচ্ছে বাট আমার খাবার গুলো এখনো হজমই হয়নি!

আলিসা : জাফসিন! তুই না একটু বেশি কথা বলিস! এভাবে বসে থাকলে কি হজম হবে নাকি? এদিক ওদিক হাটতে থাক হজম হয়ে যাবে, তাও বকবক কম কর, দেখছিস না ইম্পর্টেন্ট কথা শুনছি!

– [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] হ্যা! তারপর তারপর বলো!

জারিফা : তারপর মেয়েটির চাওয়া না চাওয়াতেও তার হাজবেন্ড! ঝাপিয়ে পড়বে তারউপর! [ সবাই অবাক হয়ে তাকালো জারিফার দিক ]

মার্জান : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] জারিফা! তোকে না এখন এক থাপ্পড়ে দাত সব ফেলে দিবো! তুই এতোকিছু কিভাবে জানিস বলতো?

জারিফা : [ মাথা স্নেহার পেছন নিয়ে মার্জানকে চোখ মেরে ] আরেহ! কিক..কিভাবে জানি মানে? শুনেছি! শুনেছি আরকি!

– [ মাথায় হাত রেখে আফসোস বোধ করে ] এমন দুঃখ ভরা কতো জনের কাহাণীই না শুনলাম, [ বলেই আবার আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে স্নেহার চেহেরায় ভয়ের ছাপ ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! তুই ভয় পাস না! নরমাল নরমাল! ওকে? [ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

___ এইদিকে,

নেহাল,রাহুল,আসিফ,রিদোয়ান তিনজনই উপরে উঠে রাহুলের রুমের দিক এগুচ্ছে,

নেহাল : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] ব্রো! আমার না একটা জোস্ গেইম মাথায় আসছে,রুফ-টপে চল! গেইমটা খেলে দেখ আই সয়ার! অনেক এঞ্জয় হবে!

– দেন তুই আর ভাবী পাশাপাশি বসবি! আর আমাকে শুধু একটু শায়লার পাশে বসতে দিবি হিহি চলনা চলনা!

রাহুল : হুমম!

নেহাল : আরে হুম হুম মানে কি হ্যা বলনা!

রিদোয়ান : আচ্ছা তোর মাথা আওট হয়ে গেছে? বাচ্চাদের মতো গেইম গেইম করছিস কেনো বলতো? ডিরেক্ট লাইন মার! এতো গেইম টেইম খেলার মানে আছে নাকি?

নেহাল : ব্রো ইটস্ অ্যা কাপল গেইমস কাপল!

– অল লেডিস্ আর নট ইজি! ব্রো!

আসিফ : ইয়াহ! দ্যাটস রাইট! চল খেলবো! বাট ওয়ান কন্ডিশন!

নেহাল : ইয়েস্! ইয়েস্!

রিদোয়ান : [ হেসে ] আমি বলি! গেইমে মার্জানকে ওর পাশে চাই! রাইট দোস্ত ?

আসিফ : ইয়াহ দ্যাটস রাইট!

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! ডান ডান ব্রো ডান! লেটস্ গোওওও!

– আচ্ছা ওয়েট, লেডিসদের ও বলতে হবে তো রুফটপে আসতে! [ বলেই রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হেইই রাহুল ওয়েটট, রাহুল রুমের দরজার সামনে আসতেই শুনতে পেলো ]

জারিফা : এসব হাজবেন্ডরা না হিংস্র পশুর মতোই হয়, হিংস্র পশুদের যখন ক্ষিধে লাগে এরা ছোট প্রাণীদের উপর অত্যাচার করে, আর হাজবেন্ডরা বেচারি বউদের উপর, স্নেহা! তুই আবার ভয় পাস না!

– এমনিতেও আর কদিনই বা এভাবে ভাগতে থাকবি? কোনো না কোনো সময় তো এমন হিংস্র পশুর হাতের শিকার হতেই হবে, [ আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] সেটা আজ রাত ও হতে পারে!

আলিসা : ওহ নো! ম্যারেড লাইফ ইজ সো্ ডেঞ্জারর!

জারিফা : ইয়াহহ! ভেরী ডেঞ্জার!

রাহুল : [ রুমে ঢুকে ] ডেঞ্জার! তাই না? [ সবাই শকড হয়ে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : এমনিতে ও ভীতু! তারমধ্যে ওকে আরো ভয়…

– দাঁড়াও দেখাচ্ছি তোমায় ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : নোওও স্নেহাআআআআ! প্লিজ সেভ মি! আমি তো মজা করছিলাম জিজু!
[ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল এগিয়ে আসলে জারিফা খাট থেকে একলাফে নেমে পড়ে ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 57

0

Love At 1st Sight
~~~ Season 3~~~

Part – 57

writer-Jubaida Sobti

নেহাল : লেডিস্ আমি ও আসছি ওকে? [ বলেই সে ও রাহুলের দিক দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো ]

– [ চেচিয়ে ] হেইই ব্রো ওয়েট!

রাহুল : [ গাড়ীর দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসে ] রাহুল কারো জন্য ওয়েট করে না!

নেহাল : [ পাশের সিটে বসে হাপিয়ে উঠে ] হোয়াই ম্যান হোয়াইইইই? এখনো আগের মতোই থেকে যাবি! বিয়ে হয়েগেছে নাওলেজেবল হো!

রাহুল : [ সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে ] ডোর বন্ধ হয়নি! [ নেহাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজাটা ভালো করে বন্ধ করে দেই, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী টান দেই ]

নেহাল : বাট ব্রো! ইয়র এটিটিউড! [ হেসে ] আই লাইক ইট, ডেম! আই লাইক ইট,

___এইদিকে,স্নেহা রাহুলের কাজিনদের সাথেই বসে আছে, আর রাহুলের দাদী আর ফুফিরা মিলে একপাশে কথা বলছে!

রোহানী : [ স্নেহার হাত ধরে ] ভাবীইই আপনার হাতে কি হয়েছে?

স্নেহা : ও..ওটা তেত..তেমন কিছু না! জাষ্ট একটু কেটে গেছে?

রোহানী : বাট! হাওওও?

স্নেহা : চুচ..চুড়িতে!

রোহানী : অও! কেয়ারফুল ওকে? [ স্নেহা হেসে মাথা নাড়ালো ]

আলিসা : ভাবী! আমাদের, আপনার আর ভাইয়ার লাভস্টোরীটা শোনান না!

জাফসিন : হ্যা! ঠিক বলেছিস, ভাবী শোনান না! রাহুল ভাইয়া আর আপনার বন্ডিংটা দেখে মনে হচ্ছে আপনাদের লাভস্টোরিটা ও ভেরী ইন্ট্রেষ্টিং হবে!

স্নেহা : আ..আমাদের লাভস্টোরী?

আলিসা : হ্যা! ভাবী আপনাদের লাভস্টোরী! লাইক আপনার আর রাহুল ভাইয়ার ফাষ্ট মিট কোথায় হয়েছে,কিভাবে হয়েছে,দেন ভাইয়া আপনাকে প্রোপোজ কিভাবে করেছে!

– বলেননা বলেননা ভাবী প্লিইইইইইজজজ!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা! ওকে! [ বলতেই বাকিরাও এক্সাইটেড হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে কান পেতে রইলো ]

স্নেহা : বাবা-মা এবং রাশু গ্রামে চলে যাচ্ছিলো, তাদের বিদায় দিয়ে স্টেশনে আমার ফ্রেন্ডসদের অপেক্ষা করছিলাম, এক্সামের পর তাদের সাথে ও অনেকদিন পর দেখা হচ্ছিলো, তাই আর তর সইছিলো না, তাদের তিনজনকে স্টেশনে দেখার সাথে সাথেই দৌড়ে ছুটে যাচ্ছিলাম, এবং ঐসময়ই হঠাৎ রাহুলের সাথে ধাক্ষা লাগে,

– এবং ঐটাই আমাদের ফাষ্ট মিট ছিলো!

জাফসিন : বাট ভাবী এটা তো বলেন, যখন আপনাদের ধাক্ষা লেগেছিলো তখন কি হয়েছে?

স্নেহা : ধা..ধাক্ষা লাগাতে আমি আন-ব্যালেন্স হয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম,কিন্তু…

আলিসা : কিন্তু কিন্তু ভাইয়া ধরে ফেলেছিলো এম আই রাইটটট?

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] হুম!

আলিসা : আচ্ছা দেন দেন?

স্নেহা : ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই অবাক লাগলো, হুট করে পড়ে যাওয়া আবার হুট করেই কেউ এসে ধরে ফেলা, [ মুচকি হেসে ] পরে রাহুল থেকেই জানতে পারলাম ঐদিন, ও ইচ্ছে করেই আমাকে ফেলে দিয়েছিলো!

আলিসা : ইইইই! নটি বয়!

রোহানী : আচ্ছা ভাবী! ফাষ্টে তো আপনি জানতেন না যে ভাইয়া ইচ্ছে করেই ফেলেছিলো সো্ যখনি মোমেন্টটা হয়েছে তখন আপনার কিছু স্পেশাল ফিল হয়নি?

– লাইক সামথিং এমনটাই যে হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, অর রোমান্টিং ফিলিং!

স্নেহা : হোহ! হার্টবিট তো বেড়েছিলো ওর স্পর্শে কিন্তু তা রোমান্টিক ফিলে নয় ভয়ে,

– কালো টি-শার্ট, কালো জ্যাকেট, কালো প্যান্ট, যে হাতে ধরে রেখেছিলো ঐহাতে কালো একটি ওয়াচ! সবচেয়ে ইন্ট্রেষ্টিং যে জিনিসটা খেয়াল করেছিলাম অতোরাতে চোখে কালো সানগ্লাস ও লাগিয়ে রেখেছিলো,

জাফসিন : ওয়াও ম্যান ইন ব্লাক!

স্নেহা : আমি ভেবেছিলাম ডাকাত-টাকাত হবে, [ বলতেই বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

– পরে ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম পেছনে একটি গিটার ব্যাগ ও আছে, তারপর ভাবলাম হয়তো সিংগার-টিংগারই হবে!

আলিসা : আচ্ছা ভাবী! আপনি যখন এসব খেয়াল করছিলেন তখন ভাইয়া কি করছিলো?

স্নেহা : ওর আর কি! সেই তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়েই ছিলো!

আলিসা : আই থিংক তখন ভাইয়ার আপনাকে দেখে লাভ এট ফাষ্ট সাইট হয়েগিয়েছিল! তাই শুধু তাকিয়েই ছিলো! হি-হি! আচ্ছা তারপর বলেন!

স্নেহা : তা..তারপর আমি ছুটে আমার ফ্রেন্ডস্ দের দিক চলে আসি, দেন সবাই মিলে বাসায় চলে যায়!

জাফসিন : ওহ নো! কেউ কিছু বললোই না? আম এক্সাইটেড দেন কি হয়েছে?

স্নেহা : পরদিন মর্নিং এ ভার্সেটি যায়, মার্জান বললো ফর্ম এনেছি কিনা ভালো করে চেক করে দেখতে, ব্যাগ থেকে ফর্মের কাগজটা বের করতেই হঠাৎ বাতাসে ফর্মটা উড়ে পার্কিং এড়িয়ার দিক চলে যায়, আমি দৌড়ে নিতেই যাচ্ছিলাম ঠিক ঐ টাইমেই ফর্মের উপর গাড়ীর চাকা এসে পড়ে,

– কলিজাটা আমার ছিড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিলো যখন গাড়ীর চাকাটা আমার ফর্মের উপরই এসে পড়ে,

রোহানী : ওহ নো! কে ছিলো ঐ ড্রাইভার? গাড়ী থেকে বের করে বিট করেননি?

স্নেহা : বিট করবো? আমিতো ওনাকে দেখে পালানোর চেষ্টা করি! আই মিন গাড়ীতে তোমার ভাইয়াই ছিলো!

জাফসিন : [ এক্সাইটেড হয়ে ] রিয়েলি?

আলিসা : জুটি যখন উপরওয়ালাই সে্ট করে রেখেছে আবার দেখা হোওয়ার তো ছিলোই!

জাফসিন : যতোই ভাগো না কেনো ভাবীইই! ঘুরেফিরে ভাইয়ার সামনেই হাজির হয়েছো! [ হাসতে লাগলো স্নেহা,এবং এরপরের বাকি কাহানীটুকু ও কন্টিনিউ বলতে লাগলো ]

একঘণ্টা হয়ে গেলো,

রোহানী : হোয়াট দ্যা হেল! এই সামিরের এত্তবড় সাহস! অলোয়েজ ব্রেক করে দিচ্ছে!

স্নেহা : বাট! আমার মন তখন কেনো জানি বলছিলো, রাহুল ওখানে আসবেই!

জাফসিন : উমমম! ভাবী ওখানে এসেছিলো কিনা তো জানিনা, বাট ভাইয়া এইখানে অবশ্যই চলে এসেছে! হি-হি! সি্ গাইস্ আজ ও সে্ইম পোজ ম্যান ইন ব্লাক! [ বলতেই সবাই একসাথে মেইন ডোরের দিক তাকালো, স্নেহা ও তাকাতেই দেখে রাহুল ঢুকছে ]

– উপস্! আজকে সব ব্লাক হলে ও কের্চ হোয়াইট হয়ে গেছে!

রাহুল : কি কথা হচ্ছে আমার বউ এর সাথে! [ বলেই সোফায় গা হেলিয়ে বসে পড়ে ]

আলিসা : ভাইয়া! আমরা না ভাবীর কাছ থেকে তোমাদের লাভ-ষ্টোরী শুনছিলাম!

রাহুল : আরে স্নেহা! যাকে তাকে আমাদের লাভ-স্টোরি জানিয়ে দিচ্ছো কেনো? স্পেশাল লাভ-স্টোরি বলে একটা কথা আছে না, যা শুধু স্পেশাল মানুষদের বলা যায়,এগুলো তো সব অষ্ট্রেলিয়ান খামারের গরু!

আলিসা : [ সোফার কশুন নিয়ে রাহুলের গায়ে ছুড়ে মেরে ] কি বললে? আমরা অষ্ট্রেলিয়ান গরু? [ বলেই আরো কয়েকটা ছুড়ে ছুড়ে মারতে লাগলো, রাহুল কশুন কেচ নিয়ে নিয়ে হাসছে আর আবার উল্টো ছুড়ে মারছে,স্নেহা ও হাসতে লাগলো তাদের কান্ড দেখে, হঠাৎ ]

নেহাল : [ দৌড়ে এসে ] ভাবীইইই! কাম, কাম, [ বলেই স্নেহার হাত ধরে বসা থেকে উঠিয়ে চোখে হাত দিয়ে রাখে ]

স্নেহা : কিন্তু কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

নেহাল : সারপ্রাইজ ভাবী সারপ্রাইজ!

রোহানী : ওয়াওওও! আম অলসো্ সারপ্রাইজড গাইস্!

নেহাল : [ রোহানীর দিক তাকিয়ে ] শিসসসস! [ বলেই স্নেহাকে কিছুটা সামনের দিক এগিয়ে নিয়ে ধীরেধীরে চোখ থেকে হাত সরিয়ে নেই, আর স্নেহা চোখ খুলে সামনের দিক তাকাতেই জারিফা মার্জান আর শায়লাকে দেখে শকড হয়ে যায়, চোখে পানি চলে এসেছে স্নেহার, দৌড়ে গিয়ে তিনজনকেই একসাথে জড়িয়ে ধরলো, তারাও হেসে আগলে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে ]

মার্জান : অওও স্নেহা! আই মিসড ইউ সো মাচ!

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] আই মিসড ইউ টু!

নেহাল : ভাবী! ভাবী! কেমন লেগেছে সারপ্রাইজ? আই মিন আপনার শালীদের দেখে কেমন ফিল হচ্ছে আপনার হুম উম? [ হেসে উঠলো সবাই নেহালের কথা শুনে]

গীতালি : [ মুখে হাত দিয়ে কনফিউজড হয়ে এগিয়ে এসে ] নেহাল ভাইয়া? এরা ভাবীর শালী অয় কেমনে? এরা তো রাহুল ভাইয়ার শালী অইবো তাই না?

জারিফা : [ হেসে ] মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া! আমরা ভাবীর শালী নয়য়য়য়য়! রাহুলের শালীইইইই!

নেহাল : আরে আগেও তো বলেছি একই তো! ভাবী মানে রাহুল! রাহুল মানে ভাবী সো্ হলো না ভাবীর শালী?

গীতালি : খাইছে! এতো উবার ইস্মাট ভাষা আমার বুঝন আসে না, ভাবীর ও বলে আবার শালী অয়!

নেহাল : ওহো গীতালি! উবার ইস্মাট না, ইটস্ কল ওভার স্মার্ট!

গীতালি : আপনের ভাবীর শালী কওনের থেইকা,আমার উবার ইস্মার্ট কওনডা বহুদ পার্ফিক্ট আছিলো!

নেহাল : হোয়াট হোয়াট পার্ফিক্ট?

গীতালি : হো পার্ফিক্ট! [ বলেই চলে গেলো ]

আলিসা : নেহাল ভাইয়া! তোমার এখন বেশি টেনশন না করে এইদিকে এসে বসে যাওয়াটা আরো পার্ফিক্ট হবে! [ সবাই আরো কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

নেহাল : [ কনফিউজড হয়ে একটু হেসে ] পার্ফিক্ট! ওখেই! আই থিংক শি ইজ রাইট! [ বলেই সোফায় গিয়ে বসে পড়লো ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে স্নেহার কাছে এসে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! লাষ্ট নাইটের কাহাণী বল! কি কি হয়েছে,

স্নেহা : পাগল হয়েগেছিস নাকি?

শায়লা : আমার ও তাই মনে হচ্ছে! কমোনসেন্স নেই তোর?

– এইদিকে দাড়িয়েই সব জেনে নিবি নাকি! বাকিদের সাথে ও আগে দেখা করেনে তারপর নাহয় শুনবি!

জারিফা : নেভার নেভার! আমি এক্ষুনি শুনবো! বলনা স্নেহা কি কি হয়েছে, আচ্ছা চল ঐদিকে ফাকা আছে ঐ দিকে গিয়ে বল! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়েই যাচ্ছিলো তখনি ]

রাহুল : লাভ নেই! [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আধি ঘারওয়ালি, আমার পুরো ঘারওয়ালিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? লাষ্ট নাইটের কাহাণী শুনতে? [ জারিফা জিহবায় কামড় দিয়ে হাসতে থাকে ]

রাহুল : হি-হি কোনো লাভ নেই! কজ লাষ্ট নাইট কিছুই হয়নি! ইউ নো আমার না, ফুটিকিস্মত!

শায়লা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আহা! বেচারা!

মার্জান : এক্সুলি ভালোই হয়েছে, এতোদিন হুটহাট যেখানে সেখানে রোমান্স শুরু করে দিতেন না? তাই এখন আপনার বিয়ের পরের রোমান্সে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে!

রাহুল : হ্যা তাই ভাবছি, স্নেহা যেহেতু অপেক্ষার প্রহর গুনাচ্ছে তোমাদের থেকে কারো একজনের সাথে সেই প্রহর শেষ করে নিবো!

– [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] কি বলো স্নেহা? [ স্নেহা হেসে রাহুলের পেটে দিলো একটি চিমটি ]

মার্জান : [ গলা ঝেড়ে ] এহেম এহেম! আমি আসি! [ বলেই হুড়হুড় করে সোফার দিক চলে গেলো ]

রাহুল : আরে এইতো পালালো! [ মুচকি হেসে ] এনিওয়েস্ তাহলে তোমরা দুজনের মধ্যে থেকে ডিসাইড করে নাও আমার সাথে বেড শেয়ার কে করছো!

জারিফা : শাশ..শায়লা সিংগেল আছে জিজু! আ..আমি ঐদিকটা যাচ্ছি রোহানী ডাকছে! [ বলেই দৌড় দিলো ]

রাহুল : [ হাত উঠিয়ে আলসে কেটে ] উমমমম! তাহলে আমার অপেক্ষার প্রহর এবার শেষ হতে যাচ্ছে, সো্ ভাবছি কোনদিক থেকে শুরু করবো! [ বলেই শায়লার কাছাকাছি এসে দাড়াতেই ]

শায়লা : ছিইইই জিজু! [ বলেই রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে চলে যায় ]

রাহুল : [ হেসে হেসে ] আরেহ! পালাচ্ছো কেনো তোমরা? [ স্নেহা ও রাহুলের কান্ড দেখে হেসে বাকিদের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে ] তুমি আবার কই পালাও! সবাইকে পালাতে দিলেও তোমাকে পালাতে দিচ্ছিনা!

স্নেহা : [ হাত ছুটানোর চেষ্টা করতে করতে ] কি করছেন রাহুল! ছাড়েন কেউ দেখবে!

রাহুল : দেখুক! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আরেহ পাগল নাকি? দাদী,ফুফী সবাই আছে, আর আপনার লজ্জা বলতে কিছু নেই?

রাহুল : [ হেসে ] একদমই নেই স্নেহা! কিভাবে পাই লজ্জা দেখি? [ বলেই স্নেহার পেটের শাড়ীর নিচে হাত দিতেই ]

স্নেহা : রাহুল! আপনার বাবা! [ বলেই রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে এগিয়ে যায় সোফার দিক, রাহুল ও হেসে পেছন পেছন এগিয়ে এসে স্নেহার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায় ]

দাদী : ভালোই করেছো তোমরা এসে, আমি তো ফোন করতেই ছিলাম নাফিসা আবার নিষেধ করে বললো তোমরা হয়তো টায়ার্ড থাকবে তাই আর ফোন করলাম না,

নেহাল : আরে মম! নিষেধ করেছো কেনো! ফোন করতে?

নেহালের মা : নেহাল! ওরা টায়ার্ড থাকবে ভেবে নিষেধ করেছিলাম!

জারিফা : হাইই! আংকেল গুড মর্নিং!

রাহুলের বাবা : গুড মর্নিং! ডিয়ার!

____এইদিকে,

নেহালের মা : [ নেহালের দিক ফিসফিসিয়ে ] নেহাল! ঐ মেয়েটার থেকে দূরে দূরেই থাকবি!

নেহাল : হোয়াই মম? দূরে দূরে কেনো থাকবো? ওর কাছে খারাপের কি আছে?

নেহালের মা : কারণ এসব মেয়েগুলোর উপর আমার মোটেও বিশ্বাস নেই! তোদের মতো ছেলেদের দেখলে এরা…

নেহাল : [ বিরক্তি হয়ে ] স্টপ ইট মম! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো, নেহালের মা ও নাক ফুলিয়ে রাগান্বিত ভাবে লিভিং সাইডে গিয়ে বসে পড়লো ]

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! ব্রেকফাস্ট করেছো?

স্নেহা : জি! করেছি!

দাদী : সবাই করেছে শুধু রাহুল! [ বলেই থেমে যায়, রাহুল ও অন্যপাশ ফিরে গিয়ে স্নেহার শাড়ীর আচল নিয়ে আংগুলে পেচাতে থাকে ]

রাহুলের বাবা : আমি অফিস যাচ্ছি মা! লাঞ্চে আসবো!

দাদী : কিন্তু তুই যে বললি যতোদিন না রাহুলের সব প্রোগ্রাম শেষ না হয়, ততোদিন কোনো অফিসে যাবি না!

রাহুলের বাবা : হ্যা! বলেছিলাম এক্সুলি, ইতালির একটা নিউ প্রজেক্ট এসেছে, মুরাদ ও না বলে মিটিং রেখে দিয়েছে তাই যেতে হচ্ছে!

দাদী : আচ্ছা ঠিকাছে যা! কিন্তু এর আগে ব্রেকফাস্ট করেনে!

রাহুলের বাবা : ব্রেকফাস্ট আমি অফিসে করে নিবো! [ বাকিদের দিক তাকিয়ে ] এঞ্জয় গাইস্ [ বলেই মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ পাশ মুড়ে দাঁড়িয়ে ] ব্রেকফাস্ট করে না গেলে আপনার মেডিসিন টাইমলি নিতে পারবেন না! [ রাহুলের বাবা থেমে গিয়ে অবাক হয়ে তাকায় স্নেহার দিক ]

স্নেহা : জি! হাহ..হার্টের মেডিসিন! টাইমলি নেওয়া ভালো, তাই! [ রাহুলের বাবা স্নেহার কথা শুনে, মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে ডাইনিং টেবিলের দিক চলে যায় ব্রেকফাস্ট করতে ]

দাদী : [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক তাকিয়ে ] তোমরা আবার দাঁড়িয়ে আছো কেনো চলো এসো ব্রেকফাস্ট করতে!

জারিফা : নাহ দাদী আমরা তো আজ এতোগুলো ব্রেকফাস্ট করেছি যে আজ সারাদিনে আর খেতে পারবো কিনা ও কে জানে!

লিনিসা ফুফি : কিন্তু তোমরা এইখানে যখন আসছো তাহলে বাসা থেকে কেনো ব্রেকফাস্ট করে আসলে,

জারিফা : না,নাহ বাসায় ব্রেকফাস্ট করার সময়টুকু ও কই দিলো, রাহুল গিয়ে আমাদের এমন তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতে বলেছে যে, [ হেসে ] পরে গাড়ীতে উঠে দেখি এতোগুলো খাবার! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হাউ সুইট জিজু! আমাদের কত্তো কেয়ার করে, [ রাহুল ও হেসে চোখ টিপ মারে ]

দাদী : আচ্ছা তাহলে তোমরা গল্প করো আমরা ঐদিকটা আছি! [ বলেই দাদী,এবং লিনিসা ফুফিও লিভিং সাইড চলে গেলো ]

আলিসা : কাম ভাবী! দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?

[ স্নেহা সোফায় বসতে যাওয়ার জন্য পা এগুচ্ছিলো তখনিই শাড়ীর আচলে টান খাওয়াই পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে,রাহুল আচল দাত দিয়ে কামড়ে ধরে এক ধ্যানে কি যেনো চিন্তা করছে ]

স্নেহা : আরেহহ! [ বলেই আচল ঝাড়ি মেরে টেনে নেই ]

রাহুল : [ দাতে ব্যথা পাওয়ায় মুখ চেপে ] আআহ! স্নেহা![ স্নেহা হেসে সোফায় গিয়ে আলিসার পাশে বসে পড়ে ]

রাহুল : আরে দাঁড়াও না কথা ছিলো তো! [ বলেই স্নেহা আর আলিসার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে ]

– এইই হাট, হাট সাইড দে!

আলিসা : [ স্নেহার পাশে আরো লেগে বসে ] নেভার! কখনোই দিবো না সুন্দর করে বলো!

রাহুল : আমার পিচ্চি আলিসা, আমার বোন! প্লিজ দয়া করে সাইড দে!

আলিসা : হিহি! সো্ সুইট! [ বলেই রাহুলকে স্নেহার পাশে বসার জায়গা দিয়ে সে সাইড হয়ে বসে ]

রাহুল : [ সোফায় বসে ] মুটি! অষ্ট্রেলিয়ান খামারের গরু!

আলিসা : [ চেচিয়ে ] আআআআ! [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] মাই ওয়েট ফরটি সেভেন কিলো অনলি! ওকে?

রাহুল : ওও! তাই তো বলছি আমি ফুটা খাচ্ছিলাম কেনো! হাড্ডির দোকান!

আলিসা : [ কাদো ভাবে ] ওওহ! নোওও [ বলেই কশুন দিয়ে রাহুলকে বারি মেরে উঠে অন্য জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে, রাহুল হাসতে থাকে,বাকিরাও সবাইমিলে হেসে আড্ডা দিতে লাগলো ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম?

রাহুল : তুত..তুমি কিভাবে জানো, যে বাবার হার্টের প্রবলেম?

স্নেহা : আজ সকালে! আপনার ড্রেসিং এর ড্রয়ারে একটা ফাইল ছিলো ওটাই দেখেছি!

রাহুল : ওহ!

স্নেহা : সরি রাহুল! আপনার পার্মিশন ছাড়া আপনার জিনিষে হাত দিয়েছি বলে, এক্সুলি আমি চুড়ি নিতে গিয়ে তখন হঠাৎ…

রাহুল : ওহো শাট-আপ স্নেহা! সরি কেনো বলছো! আমার জিনিষ মানে তোমারই তো! এতে পার্মিশন কেনো লাগবে!

– বাব..বাট স্নেহা! তুমি যা দেখেছো ফাইলে! তা আর কাউকে বলার দরকার নেই! ওকে?

স্নেহা : কেনো? আপনার বাবার হার্টে আরো তিনটে ব্লগ আছে এটা তিনি জানলে কষ্ট পাবে তাই?

– রাহুল!

রাহুল : হুমম?

স্নেহা : আপনি চাইছেন না যে আপনার বাবা কষ্ট পাক! তাই তো? [ চুপ করে থাকে রাহুল কোনো জবাবই দেইনা স্নেহাকে ]

স্নেহা : আ..আপনিও তো ব্রেকফাস্ট করেননি! আপনার বাবা একা বসে ব্রেকফাস্ট করছে, আ..আই মিন আপনি ও সাথে করেনিন!

রাহুল : শাট-আপ!

স্নেহা : শাট-আপ বলে বলেই সব সময় চুপ করিয়ে দেন! একই ছাদের নিচেই আছেন দুজন, অথচ একজন একজনের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা, চোখাচোখা হতেও চান না,

– কেনো রাহুল? ভুল তো মানুষ করেই থাকে, তাই বলেকি ক্ষমা পাওয়ার অধিকারটাও হারিয়ে ফেলে?

রাহুল : স্নেহা! কি হয়েগেছে তোমার? হঠাৎ এসব আবার কেনো বলছো?

নেহাল : গাইস্ তোমরা কি ঝগড়া করছো?

রাহুল : না! কক..কথা বলছি জাষ্ট! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে কাধে হাত রেখে ফিসফিসিয়ে ] অন্য টপিকে কথা বলি স্নেহা! ওকে?

স্নেহা : কতোদিন টপিক চেঞ্জ করতে থাকবেন রাহুল? [ রাহুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাক ফুলিয়ে স্নেহার কাধ থেকে হাত সরিয়ে দুহাত একত্রে মুঠি বেধে মুচড়া মুচড়ি করতে থাকে ]

স্নেহা : নিজেও কষ্ট পাচ্ছেন, ওনাকে ও কষ্ট দিচ্ছেন! আপনি চাইলে আবারো…

রাহুল : প্লিজ স্নেহা প্লিজজ! চেঞ্জ দ্যা টপিক!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের মুঠি ছুটিয়ে, নিজের হাতের মুঠিতে ভরে ] রাগ উঠছে? হুমম?

– হারিয়ে দিন এই রাগকে! আপনার বাবার ভালোবাসার থেকে তো আর বড় নয়!

– আপনার খুশির জন্য! মিথ্যে অভিনয় করে আমার ফ্যামিলির কাছে পর্যন্ত নতো হয়েছে!তারমানে তিনি ও চাইছেন তার পরিবারকে আগের মতো ফিরে পেতে!

রাহুল : স্নেহা! এতোটা বছর যা হয়েছে [ মুচকি হেসে ] তুমি সাথে আছো এখন!

– সো্ আর কিছু চাই না,নাও আই হ্যান্ডেল ইট!

স্নেহা : এতোটা বছর কি হয়েছে এটা ভাবা জরুরী নয় রাহুল! এতোটা বছর কিভাবে কেটেছে এটা ভেবে দেখুন!

– রাগের মাথায় নয় একবার ভালোবেসে ভেবে দেখুন! চাইলে তিনিও আপনাদের সবাইকে ত্যাগ দিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করতে পারতো, কিন্তু তিনি তা করেনি কারণ তিনি আপনাদেরকেই চাই!

– নিজে কি ইনকাম করছেন একটাকা? আর খরচ করছেন লাখ লাখ টাকা! এতোটাকা কই যাচ্ছে, কি করা হচ্ছে এই টাকায়? কখনো হিসাব চেয়েছে আপনার কাছ থেকে?

– ঐদিন পুলিশ স্টেশনে আপনাকে অ্যারেষ্ট করেছে শুনতেই দৌড়ে এগিয়ে গেলো, দোষ আপনার ছিলো নাকি ছিলো না এটাও যাচাই করেনি!

– তারমানে রাহুল! আপনার জন্য তার ভালোবাসা একবিন্দু ও কমেনি!

রাহুল : শেষ হয়েছে এবার? তোমার ওরেষণ দেওয়া?

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমার কথা গুলো আপনার ওরেষণ মনে হচ্ছিলো!

রাহুল : নাহ স্নেহা আমি ওটা…

স্নেহা : আমি ভাষণ দিচ্ছিলাম এতোক্ষণ?

রাহুল : লিসেন্ট..

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] কথার মাঝে কথা বলবেন না বলেদিলাম!

রাহুল : [ শকড হয়ে ] ও..ওখে!

স্নেহা : আপনার এটিটিউড সবার আগে! এই এটিটিউডের পেছনে কার মনে কি চলছে এতে আপনার কোনো কেয়ারই নেই!

– আপনাকে এবং আপনার এটিটিউডকে আমার তরফ থেকে মোবারক!

রাহুল : ঈ..ঈদ মোবারক?

স্নেহা : নাহ! এটিটিউড মোবারক! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো, তখনিই ]

রাহুল : [ হাত টেনে বসিয়ে দিয়ে ] কোথায় যাচ্ছো? আচ্ছা ওকে সরি!

স্নেহা : সরি চাই না রাহুল! ডিজপোস্ চাই! আপনার আর আপনার বাবার মাঝে!

– পারবেন? দিতে? [ রাহুল হতভম্ব হয়ে চুপ করে তাকিয়ে আছে স্নেহার চোখের দিক ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] পারবেন না!

– কারণ আপনার কাছে আপনার এটিটিউডই সবার আগে! এর আগে কিছুই না!

– আমি ও না! [ বলেই স্নেহা উঠে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! ওয়েট, রাগছো কেনো? [ সবাই অবাক হয়ে একবার রাহুল আরেকবার স্নেহার দিক তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা! এটিটিউড আগে না তুমিই আগে!

– কামঅন স্নেহা প্লিজ! [ থামলো না স্নেহা চলেই যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার এভাবে কষ্ট পেয়ে চলে যাওয়া সজ্য আর করতে না পেরে, চোখ কুচকে চেচিয়ে বলে উঠলো ]

– ও..ওকে স্নেহা! আমি যাচ্ছি,

– ডিড..ডিজপোস্ করবো! [ থেমে গেলো স্নেহা, পেছন ফিরে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ কাদো ভাবে ] এ..এটিটিউড আগে না তুমিই আগে! [ চেয়ে রইলো স্নেহা কিছু বললো না, রাহুল ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো ডাইনিং টেবিলের দিক, বাকিরা ও হা করেই তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, গীতালি ও রান্নাঘরের চুলার সুইচড অফ করে দিয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : [ তার বাবার চেয়ারের পেছনে দাঁড়িয়ে থেকে, মনে মনে ] কামঅন রাহুল! কিছু তো বল!

– কি বলবি? [ আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখলো, স্নেহা দাঁড়িয়ে চেয়ে আছে তার দিক ]

রাহুল : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] যদি জানটাই না চেয়ে নিতা স্নেহা! খুশি খুশিতে দিয়ে দিতাম!

– জান দেওয়ার চেয়েও বাবার সাথে ডিজপোস্ করাটাই ভয়ংকর কাজ মনে হচ্ছে আমার! [ বাবার প্লেটের দিক তাকিয়ে ] মাই ডিয়ার ফাদার এতো তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করছো কেনো! আরো কিছু তো খাও এক্সুলি সবই খেয়ে নাও!

– তাও এখন এইদিকে ফিরো না!

– যদি এইদিক ফিরে আমি ফেইস করবো কিভাবে? এখনো সময় আছে রাহুল! কেটে পর! [ বলেই চলে আসার জন্য পাশ ফিরছিলো তখনিই আবার স্নেহার দিক চোখ পরাই তাড়াতাড়ি আবারো ফিরে যায় ]

– শিট! শিট! রাহুল, কেটে পড়লে আবার স্নেহা ভাববে,এটিটিউড আগে তারপর ও!

– আই লাভ ইউ স্নেহা! বুঝো না কেনো কতো ভালোবাসি! এসবের সাথে এটিটিউড, ডিজপোস্ এসব কেনো মেলাতে যাচ্ছো কে জানে! [ হঠাৎ খেয়াল করলো চেয়ার সরিয়ে তার বাবা দাড়াচ্ছে, রাহুল নিজের কপালে হাত দিয়ে ঘাম মুচতে লাগলো, তার বাবা ফিরে তাকাতেই রাহুলকে দেখে চমকে উঠে, রাহুল ও কি আর করবে, নার্ভাসনেস্ কাজ করছে তাই তাড়াতাড়ি টেবিলের কাছে গিয়ে জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালতে লাগলো,

রাহুলের বাবা ও কিছু বললো না ভাবলো পানি খেতেই এসেছে, তাই বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য হাটা ধরলো, রাহুল তাড়াতাড়ি পাশমুড়ে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা ও তারদিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে উপরের দিক চলে যাচ্ছে, এইদিকে তার বাবার দিক তাকিয়ে দেখে তিনিও চলে যাচ্ছেন, কোনদিক যাবে সে, আর না পেরে ]

রাহুল : [ হুট করে চেচিয়ে বলে উঠলো ] বাবা!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 56

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 56

writer-Jubaida Sobtii

রাহুল : [ স্নেহার নাকে নাক ঘষে ] নট এডভান্টেজ স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড ছুতেই তো পারি! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে মুখ এগুচ্ছিলো, তখনিই ]

স্নেহা : [ চোখ কুচকে বন্ধ করে ] রা..রাহুল! বাট লে..লেইট..

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা! মাই মর্নিং কিস্! [ বলেই স্নেহার ঠোটে আলতো করে নিজের ঠোট লাগাতেই হঠাৎ দরজায় নক পড়লো, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকালো রাহুলের দিক আর রাহুল আড়চোখে দরজার দিক একবার তাকিয়ে আবারো স্নেহার ঠোটে ঠোট মেশাতেই ব্যস্ত ]

স্নেহা : [ রাহুলের বুকে হাত রেখে ঠেলে দিয়ে ] রাহুলল! দরজায় নক করছে!

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ] হ্যা! আমিও শুনেছি!

– আচ্ছা স্নেহা! ওদের কমোন সেন্স বলতে কিছু নেই! এই টাইমেই মানে এই টাইমটাতেই দরজা নক করতে হলো?

– আরে বাবা অন্তত আর দুটা মিনিট পর করলে ও তো…

– এনিওয়ে! লিভ ইট! [ বলেই এগিয়ে গেলো দরজা খুলতে, দরজা খুলতেই রাহুলের কাজিন রোহানী,সাইফা আর জাফসিন,তিনজনই একত্রে বলে উঠলো ]

– গুড মর্নিংং! রাহুল ভাইয়া! [ স্নেহা দূর থেকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে ]

রাহুল : গুড মর্নিং তাই না? ইউউ, বোথ হেল মাই মর্নিং!

রোহানী : কামঅন ভাই! ফুলনাইট তো ভাবীর সাথেই ছিলে, [ চোখ টিপ মেরে ] এবার একটু আমাদের সাথে ও থাকতে দাও! [ বলেই তিনজনই একত্রে হেসে হুড়হুড় করে রুমের ভেতর ঢুকে পড়লো, রাহুলের ও কি আর করার দীর্ঘশ্বাস ফেলে লিভিং সোফার নিচ থেকে সাদা কের্চ গুলো পড়ে সোফার উপর থেকে কালো জ্যাকেটটা গায়ে দিয়ে স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে নিচে নেমে গেছে ]

ড্রইং রুমের সোফায় রাহুলের ফুফিরা সাথে বাকী কাজিনগুলো আর দাদী বসে কথা বলছে,নেহাল সোফায় হেলান দিয়ে শুয়ে শুয়ে টেব হাতে নিয়ে গেইমস খেলছিলো, রাহুল গিয়ে নেহালের পাশে বসে টেবটা কেড়ে নিয়ে গেইম খেলা শুরু করে দেই,

নেহাল : [ চমকে উঠে, আবার রাহুলকে দেখে হেসে ] হেইই! ব্রো! গুডড মর্নিংংনিংনিংনিংনিং!

রাহুল : হোয়াট? কি! নিংনিংনিং লাগিয়ে রেখেছিস?

নেহাল : হোহোহো ব্রো! [ রাহুলের পেটে শুরশুরি দিয়ে ] হাউ ওয়াজ দ্যা লাষ্ট নাইট? হুমম..উমম..হুমম!

রাহুল : তোর মাথায় সমস্যা নেই তো? ইডিয়ট! লাষ্ট নাইট কেমন ছিলো তুই দেখিসনি?

নেহাল : উপস্! সরি! সরি! আচ্ছা ভাবী ঠিকাছে এখন?

রাহুল : হুম!

নেহাল : হুমম! বাট আই ফিল রিগ্রেটিং ফর ইউ ব্রো!

রাহুল : হোয়াই?

নেহাল : হিহি! ফর লাষ্ট নাইট!

রাহুল : [ আড়চোখে নেহালের দিক তাকিয়ে ] মজা নিচ্ছিস্ তুই, হ্যাঁ?

নেহাল : [ হেসে রাহুলের কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ] কিডিং ব্রো কিডিং!

দাদী : [ মুচকি হেসে ] কি এমন বলছিস রাহুল! আমাদের ও তো শুনিয়ে বল!

নেহাল : [ চোখ টিপ মেরে ] লাষ্ট নাইট গ্রেন্নী লাষ্ট নাইট! [ বলতেই রাহুলের বাকী কাজিন গুলো ও এক্সাইটেড হয়ে লাফিয়ে রাহুলের পাশে এসে বসে ঘুরঘুর করে তাকিয়ে থাকে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] এক্সকিউজ মি!

আলিসা : ভাই আমাদের ও বলো না এবাউট লাষ্ট নাইট!

সুজানা : ডিটেইলসে না বললেও চলবে! সামথিং সামথিং শেয়ার তো করতেই পারো হুমম উমম!

রাহুল : লিসেন্ট! তোরা আমায় বারবার এটা মনে করিয়ে দিসনা যে লাষ্ট নাইটে কিছুই…

সুজানা : কিছুই?

রাহুল : ফরগেট ইট! আম হাংড়ি! [ বলেই রাহুল উঠে ডাইনিং টেবলে গিয়ে বসে পড়লো ]

আলিসা : [ কনফিউজড হয়ে ] সুজানা! ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড?

সুজানা : নো!

নেহাল : আম অলসো্! হিহি! [ বলেই দু-তিন লাফে সোফা থেকে পেড়িয়ে ডাইনিং টেবলের দিক চলে যায় ব্রেক ফাষ্ট করতে, চেয়ার টেনে বসে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল মুখে হাত দিয়ে কি যেনো চিন্তা করছে ]

নেহাল : [ রাহুলের মুখের সামনে হাত নাড়িয়ে ] হেই ব্রো ইউ ওকে?

রাহুল : [ মনে মনে কাদো ভাবে ] নো আম নট ওকে! আমার মর্নিং কিস্ মিলেনি আমার কাছে!

নেহাল : ইয়াহ! ইউ থিংকিং এবাউট ভাবীইইই [ চেচিয়ে ] ভাবী..ইয়েস্ ভাবী…

রাহুল : আরে এভাবে চেচাচ্ছিস কেনো!

নেহাল : আরে ঐদিক দেখ ভাবী [ বলেই হাত দিয়ে রাহুলের মাথা ঘুড়িয়ে দেই শিরির দিক, রাহুল ও নেহালের কাধে হাত রেখে হা করে তাকিয়ে থাকে শিরির দিক, স্নেহা রাহুলের কাজিনদের সাথে নামছে শিরি দিয়ে,ঠোটের কোণে মিষ্টি একটি হাসি ঝুলানো ]

রাহুল : [ মুগ্ধকর অবস্থায় ] শাড়ীর কুচি গুলো কি যত্ন করে ধরেছে দেখ! তারাও এই সফট সফট হাতের প্রেমে পড়ে যাবে, আর শাড়ীর আচলটা শিরি দিয়ে কিভাবে বেয়ে আসছে দেখ সমুদ্রের ঢেউ ও মনেহয় এভাবে বয়ে আসে না, সিল্কি সিল্কি চুল, মিল্কি মিল্কি গাল,পিংকি পিংকি ঠোট, হেলিয়ে-দুলিয়ে গ্লামারাস ওয়েষ্ট..

নেহাল : স্টপ! স্টপ ব্রাদার স্টপ! [ রাহুল চমকে উঠে তাকালো নেহালের দিক ]
– আর ডিটেলে যেতে হবে না ব্রো! আই আন্ডারস্ট্যান্ড!

রাহুল : আমি এসব তোকে বলছিলাম কেনো?
– আচ্ছা তুই অন্তত কান চেপে রাখতে পারতি!

নেহাল : হোয়াট! [ কনফিউজড হয়ে ] ওহহ নো! ব্রো আমি পাগল হয়ে যাবো তোর কথা শুনে! [ বলেই গ্লাসে জুস ঢেলে খেতে লাগলো ]

রাহুল : তুই ঠিক ছিলি কবে যে পাগল আজ হবি! [ নেহাল কিছু বলতে যাবে তখনি ]

রাহুল : [ নেহালের কাধে হাত রেখে হেসে হেসে ] আচ্ছা শোন না শোন শোন!

নেহাল : একে তো কনফিউজড করে দিচ্ছিস! তারউপর উল্টো আমাকেই পাগল বলছিস! দিস ইজ নট ফেয়ার ব্রো ওকে!

রাহুল : আচ্ছা! আচ্ছা! শোন ওদিকে তাকিয়ে দেখ স্নেহা কি করছে?

নেহাল : মাথাটা পাশ ফেরালে তো তুই ও দেখতে পাচ্ছিস! আমার থেকে জিজ্ঞেস করার কি আছে?

রাহুল : এক্সুলি আম এংগার উইদ স্নেহা!

নেহাল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াটটট? কাল বিয়ে হতে না হতে আজই?

রাহুল : আরে সিরিয়াসলি না আই মিন ওকে আমার বোঝাতে হবে যে আমি ওর উপর নারাজ! তাই তাকাতে চাচ্ছিনা যদি চোখাচোখি হয়ে যায়, [ বিরবির করে ] এমনিতে আজ শাড়ী পড়াতে, চোখ সরিয়ে রাখাটা তো আরো মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে

নেহাল : হোয়াট?

রাহুল : আরে ওসব তুই বুঝবি না! একবার বিয়ে কর তারপর আপনা-আপনি বুঝে যাবি, এখন আপাতত তোকে যা বলছি তাই শোন! ঐদিকে তাকিয়ে বল,কি করছে স্নেহা? [ বলেই নেহালের মাথা ধরে পাশ মুড়িয়ে দিলো ]

নেহাল : কথা বলছে,গ্রেন্নীর সাথে!

রাহুল : [ জুস খেতে খেতে ] কি কথা হতে পারে!

নেহাল : আই থিংক! গ্রেন্নী ভাবীকে গীতালির সাথে ইন্ট্রোডাক্ট করে দিচ্ছে, ফর এক্সাম্পল, স্নেহা তোমার কিচেনে কিছু দরকার হলে গীতালির কাছ থেকেই চেয়ে নিবা! ও হচ্ছে কিচেন কুইন! হিহি এমনই বলছে হবে,

– আচ্ছা ব্রো গীতালিকে কিচেন কুইন এর ডিগ্নীফাইস্ না দিয়ে, শাউট কুইন এর ডিগ্নীফাইস্ দিলে পার্ফেক্ট ম্যাচ হয় তাই না! ওকে আমি গতকাল বললাম মিট লেমন জুসটা দারুণ বানিয়েছিস! ব্রো ও এমন শাউট করে থেংক ইউ বললো না আরেকটুর জন্যই আমার ইয়ার ড্রাম ফেটে যায়নি!

রাহুল : শাট-আপ ইডিয়ট! তোকে গীতালির ডিগ্নীফাইস এক্সপ্লেইন করতে বলিনি! বললাম ঐ দিক তাকিয়ে বল স্নেহা কি করছে,

নেহাল : ওহ ইয়াহ! ভাবী এখন হাসছে রোহানী কি যেনো বলায়! এইদিক ও একটু তাকিয়ে ছিলো!

রাহুল : আমার দিকে?

নেহাল : হেইইই ব্রো আম নট আ নিউজ চ্যানেল ওকে?

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা আচ্ছা! থামলি কেনো বলতে থাক! তারপর, তারপর..

নেহাল : তারপর তুই নিজেই দেখতে পারবি! কজ্ সবাই এখন এইদিকটাই আসছে![ এইদিকে আসছে শুনে রাহুল আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো হ্যা! সত্যি সত্যিই সবাই এইদিকটাই আসছে, মোটামোটি সবাই টেবিলের কাছাকাছি আসতেই ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] আরে নেহাল! প্লিজ! বললাম তো খাবো না তুই খা! আমার খিধে নেই, এক্সুলি আমার মুডই নেই খাওয়ার! [ নেহাল হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

দাদী : মুড নেই মানে? সকাল সকাল তোর মুডের আবার কি হলো?

রোহানী : ভাই! তোমার মুড চলে এসেছে! এবার ব্রেকফাস্ট স্টার্ট করে দাও! [ বলেই রাহুলের পাশের চেয়ার টেনে দিয়ে স্নেহাকে বসার জন্য ইশারা করলো, স্নেহা ও মুচকি একটু হেসে চেয়ারে বসে পড়লো ]

রাহুল : এক্সুলি আমার ক্ষিধে নেই গাইস্! দাদী আমি আসি তোমরা ব্রেকফাস্ট করে নাও!

দাদী : আরে রাহুল! সকালে কিভাবে মানুষের ক্ষিধে থাকেনা? কিছু অন্তত খেয়ে যা! [ রাহুল শুনলো না উঠে চলে গেলো উপরে, স্নেহা ও মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে ছিলো রাহুলের চলে যাওয়া, কিছুই বুঝতে পারছিলো না,হঠাৎ কি হয়ে গেছে রাহুলের,খাবার টেবিলে বসার পরও আবার না খেয়ে চলে যাওয়া,

মাথায় নানানরকম চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো স্নেহার, সে কি কোনো ভুল করেছে নাকি অন্যকারণে, কিছুই তো বলে গেলো না, কি হয়েছে, তবে কিছু একটা হয়েছে এটাই স্নেহা নিশ্চিত, কিন্তু কি হয়েছে রাহুলের এটা না জানা পর্যন্ত তো স্নেহার নিজের পেঠেও কিছু ঢুকবে না ]

দাদী : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তুমি চিন্তা করোনা তুমি খেয়ে নাও! ও তো সবসময়ই এমন ব্রেকফাস্ট না করে ভার্সেটি চলে যায়, ভেবেছিলাম বিয়ের পর অন্তত রুটিন মেইনটেইন করে চলবে!

আলিসা : ডোন্ট ওয়ারি গ্রেন্ড মা! ভাবী যখন এসে গেছে ভাইয়াকে এখন থেকে ভাবীই রুলস্ মেইনটেইন করে চলাবে! আর ভাবীর কথা তো ভাইয়া ইগনোরই করতে পারে না, হিহি তাই না ভাবী? [ মুচকি হাসলো স্নেহা ]

লিনিসা ফুফি : আরে সে তো বড়ই বৌ পাগলা তার কান্ড দেখেই বুঝা যায়, [ স্নেহার পিঠে হাত বুলিয়ে ] তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও স্নেহা,ওর ক্ষিধে লাগলে ও নিজে নিজেই এসে খেয়ে যাবে! ওকে… [ স্নেহা মাথা নাড়ালো ] গুড গার্ল!

[ সবাই হাসিখুশী ভাবেই ব্রেকফাস্ট করছিলো,স্নেহা ও করছে তবে মনটা উপরে রাহুলের দিকই পড়ে আছে,গলা দিয়ে একটা খাবার ও নামছিলো না,সবই নিজ জোড়ে জোড় করে করে মুখে ঢুকাচ্ছিলো নাহলে বাকিরা কি মনে করবে মনে করে, অল্প একটু খেয়েই স্নেহা পানি খেয়ে নিলো ]

গীতালি : [ চেচিয়ে ] ভাবী আরেকটা পরোটা দেই?

স্নেহা : না নাহ! আমার শেষ আর খাবো না!

গীতালি : আরে ভাবী খাবার মজা হয়নাই নাকি? এত্তো একটু কইরায় খাইলেন?
– আমি তো আজকে রাহুল ভাইয়ার ফেভারিট লুচি-ভাজী,আর আলু পরটাও বানাইছি,ভাইয়া তো খাইয়ি নাই আর আপনে তো কবুতরের মতো টুকটুক মুখ লাগাইয়া বলেন খাওয়া শেষ!

স্নেহা : না নাহ! খাবার অনেক মজা হয়েছে, এক্সুলি আমার পেট ভরে গেছে তাই এইটুকুই খেয়েছি!

গীতালি : আইচ্ছা! দুপুরে কিন্তু বেশী কইরা খাইতে হইবে বইলা দিলাম! [ স্নেহা হালকা একটু হেসে মাথা নাড়ালো ]

নেহাল : [ গ্লাসে জুস ঢেলে স্নেহার দিক এগিয়ে দিয়ে ] ভাবী অরেঞ্জ জুস! এটা তো খেতেই হবে!

স্নেহা : থেংক ইউ বাট…

রোহানী : টেক ইট ভাবী! মর্নিং ফ্রেশ জুস! ইটস গুড ফর হেলথ! [ স্নেহার ও কি আর করার জুসের গ্লাস এগিয়ে নিয়ে সামনে রাখলো, গলা দিয়ে পানি নামছে না জুস খেতে তো আরো মুশকিল হয়ে দাড়াচ্ছে ]

দাদী : স্নেহা! তুমি ঠিকাছো তো? রিলেক্স হয়ে খাও! চিন্তিত মনে হচ্ছে!

স্নেহা : নাহ! এ..এক্সুলি আ..আমার ফোনটা উপরে ফেলে এসেছি, মা হ..হয়তো ফোন দিতে পারে!

আলিসা : ডোন্ট ওয়ারি ভাবী তুমি রিলেক্স হয়ে খাও! আমি তোমার ফোন নিয়ে আসছি!

স্নেহা : নানাহ! তুত..তুমি কষ্ট করতে যাবে কেনো, তুমি ব্রেকফাস্ট ফিনিশ করে নাও!আমার তো অলরেডি শেষ,আ..আমি যাচ্ছি, ফোফ..ফোন নিয়ে আসি!

দাদী বুঝতে পেরে মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো, স্নেহা ও খুশি হয়ে উপরের দিক চলে গেলো, রুমের দরজার ধারে আসতেই কানে গিটারের টোন ভেসে আসছে, সাথে রাহুলের গান করা মিষ্টি ভয়েসটুকু, বুকটা স্নেহার কাপতে লাগলো গানটা শুনে, যেদিন প্রথম রাহুল তার গেষ্ট হাউজে গানটা গেয়েছিলো, সেইদিনটির কতো সৃতি স্নেহার চোখে ভেসে যাচ্ছে, আর এক্ষুণি তো রাহুলের কাছে দৌড়ে ছুটে যেতে মন চাচ্ছে,কিন্তু স্নেহা তা করলো না কারণ সে চাই না রাহুল তার গান গাওয়াটা পুরো শেষ না করেই বন্ধ করে দিক, তাই ধীরেধীরেই দরজাটা খুললো,রুমের দু-পাশের জানালা খুলে রেখেছে যেকারণে শীতল হাওয়া অনুভব করছে স্নেহা, বারান্দার দিক তাকাতেই দেখে রাহুল বারান্দার স্লাইডিং গ্লাসটা ও খুলে রেখে দেওয়ালে এক পা বটে রেখে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে, কপালে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুল গুলোও এলোমেলো ভাবে উড়ছে, হাতে গিটার নিয়ে বাজাচ্ছে আর বাইরের দৃশ্য দেখে দেখেই গান করে যাচ্ছে..

♪♪ আখে্ মুন্দে তো জা্নে কিসে্ ঢুন্ডে
কে সো্য়া জায়ে না কে সো্য়া জায়ে না
কিসে্ ঢুন্ডে ইয়ে খাহিশোকে্ বুন্দে
কে সো্য়া জায়ে না কে সো্য়া জায়ে না ♪♪
♪♪ মানো্ নিন্দিয়াপি রো্য়া জা্য়ে না
মানো্ নিন্দিয়াপি রো্য়া~~জায়ে না ♪♪

আল্লাহ মুঝে্ দারদে্ কে কাবি্ল বানা্দিয়া,
থুফা্ন কই কাশথি্ কা সা্হিল বানা্দিয়া,
বেচে্নিয়াসা্ মেটে্কে সা্রে জাহান্ কি
যাব্ কুচনা্ বান্ সা্কা তো মেরা দিল্ বানা্দিয়া

ও সা্থিইইইই তে্রে বিনা্ আ~~
রাহি~~কা্ রা~~ দিখে না~~
ও সা্থিইইইই তে্রে বিনা্ আ~~
সা্হিল~~ ধুয়া ধুয়া আ~~

[ গান শেষ করে রাহুল গিটারটা দেওয়ালে ঠেকিয়ে দিয়ে, হাত দুটো পকেটে রেখে ঐ অবস্থায়ই দাঁড়িয়ে আছে, রাহুলের এটাও বুঝার বাকি ছিলো না যে স্নেহা অনেক্ষণ ধরেই ঐদিকে দাঁড়িয়ে তার গান গাওয়া শুনছিলো,

রাহুল জানতো স্নেহা তার কাছে ছুটে আসবে, না বলে মনের প্রতিটা শব্দ জেনে যাওয়াটাই তো রাহুল-স্নেহার ভালোবাসার চিহ্ন!

অবশ্য রাহুল আজকের এই গানটাও স্নেহাকে শোনানোর জন্য গেয়েছে, কারণ রাহুল স্নেহাকে এটাই মনে করিয়ে দিতে চাই, যে তার কাছে স্নেহার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের চেয়ে দামী! যা সে কখনোই ভুলতে পারবে না, মুচকি একটু হাসলো রাহুল, কারণ স্নেহা তার পাশে এসেই দাঁড়িয়েছে, তাকালো না রাহুল বাহিরে শীতল বাতাসে সবুজ গাছপালা গুলোর হেলিয়ে যাওয়া দৃশ্যটুকুই দেখে দেখে বলে উঠলো! ]

রাহুল : এভাবে চুপিচুপি দাঁড়িয়ে থাকবা নাকি কিছু বলবা!

স্নেহা : আপ…আপনি ব্রেকফাস্ট করলেন না কেনো?

রাহুল : বলেই তো এলাম! ক্ষিধে নেই!

স্নেহা : মিথ্যে বলছেন আপনি,সকালবেলা কি কারো ক্ষিধে থাকে না নাকি?

রাহুল : ওহ কামঅম স্নেহা কারো সাথে আমার কমপের করো না! রাহুল ইজ রাহুল! আন্ডারস্ট্যান্ড?

স্নেহা : [ রাহুলের মুখ ধরে তারদিক ফিরিয়ে ] কি হলো আপনার? আমার দিক তাকাচ্ছেনই না! ওদিক তাকিয়ে কথা বলছেন কেনো?

রাহুল : [ স্নেহার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে ] হট পিংকিস লাগছো এই শাড়ীতে, আমি উইক হয়ে যাচ্ছি! মানে এক কথায় আউট অফ কন্ট্রোল! ওয়েষ্ট দেখো তোমার, হাটার সময় হালকা একটু পেটও দেখা যাচ্ছে! তখন আমি নিজেকে কতো কষ্টে কন্ট্রোল করেছি জানো?

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] আপনার কি,শাড়ীতে স..সব মেয়েদের দেখলেও এমন হয়?

রাহুল : শাট-আপ! ইডিয়ট! সব মেয়েদের সাথে তোমার কমপের করছো কেনো! তুমি তো তুমিই! তুমি তো স্নেহা! স্নেহা তো স্নেহাই! স্নেহা তো রাহুলের! রাহুল তো স্নেহার! [ হেসে উঠলো স্নেহা রাহুলের কথা শুনে, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ]

– সব মেয়েদের শাড়ীতে দেখলে ঐ ফিলটা আসে না স্নেহা যেটা তোমায় দেখলে আসে!

স্নেহা : আচ্ছা! কিন্তু আপনি তো এর আগেও একবার আমাকে শাড়ীতে দেখেছিলেন!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তখন তুমি গার্লফ্রেন্ড ছিলে, তাই ফিল আসলে ও মাইন্ডে বাধা দিতো! [ বলেই স্নেহাকে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দাড় করিয়ে ] আর এখন তো বউ হয়ে গেছো! হুমম? কি বুঝলে?

– আচ্ছা! এতো গ্লসি লিপস্টিক লাগিয়েছো কেনো স্নেহা! এমনিতে মাইন্ড কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না! আমাকে আরো থার্সতি বানিয়ে দিচ্ছো!

স্নেহা : হুমম! থার্সতি হলে পানি খান,পিপাসা মিটে যাবে, কিন্তু এখন চলুন ব্রেকফাস্ট করবেন! [ বলেই রাহুলের হাত ধরে এগুতে যাচ্ছিলো তখনিই রাহুল স্নেহার ধরে রাখা হাতদিয়ে স্নেহাকে সহ টেনে এনে আবার একই জায়গায় দাড় করিয়ে নেই ]

স্নেহা : রার..রাহুল! ব্রে…ব্রেকফাস্ট…

রাহুল : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে করে ] শিসসসসস! বললাম তো ক্ষিধে নেই!

– বাট! পিপাসা পেয়েছে অনেক! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক ঠোট এগুচ্ছিলো, আর এই দিকে স্নেহার বুক কাপতে লাগলো, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে রাহুলের ঠোট তার ঠোটের দিক যতো এগুচ্ছে ]

রাহুল : [ স্নেহার ঠোটে আলতো করে একটি চুমু খেয়ে ] ইউ নো স্নেহা! আমার ছোয়ায় যখন তুমি জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলো! তখন আমার চোখের ইন্টেনশন কিন্তু ঠিক থাকে না, অনেক জায়গায় চলে যায়! [ কথাটি বলতেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে পেছন ফিরে যায়, তা দেখে রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার পিঠ থেকে চুলগুলো সরিয়ে কাধে রেখে, ধীরেধীরে আংগুলের স্পর্শ দিয়ে স্নেহার পিঠ থেকে কোমোড়, আবার কোমোড় থেকে পিঠ পর্যন্ত স্লাইড করতে থাকে, এর মাঝে রাহুল মুচকি মুচকি ও হাসছে স্নেহার হঠাৎ হঠাৎ কেপে উঠে জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলা দেখে,

কিছুসময় পর রাহুল তার মুখ এগিয়ে স্নেহার পিঠে তার ঠোট দিয়ে স্লাইড করে আলতো একটি চুমু খেলো! আর স্নেহা সাথে সাথেই কেপে উঠে চোখ কুচকে বন্ধ করে তার শাড়ীর আচল শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো,

রাহুল : [ স্নেহার কাধে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে ] কাপছো কেনো স্নেহা?

স্নেহা : ঠা..ঠান্ডা বাতাস আ..আসছে তাত..তাই!

রাহুল : তাহলে আমাকেই তোমার সুয়েটার বানিয়ে নাও! [ বলেই স্নেহার পেটেরদিক শাড়ীর নিচে আলতো করে হাত রেখে স্লাইড করে ধরে ]

স্নেহা : রার..রাহুল! আমায়..নিন..নিচে যেতে হবে!

রাহুল : [ স্নেহার ঘাড়ের চুল সরিয়ে গভীর একটি চুমু খেয়ে ] তো যাও! আমি কবে না বললাম! [ বলেই স্নেহাকে তারদিকে ফিরিয়ে দেওয়ালে ধাক্ষে লাগিয়ে গলায় এবং ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো, এক পায়ের কের্চ খুলে ধীরেধীরে স্নেহার পায়ে স্লাইড করতে লাগলো,

স্নেহার দম আটকে আসছিলো রাহুলের প্রতিটি চুমুতে,হঠাৎ করেই রাহুলের এমন আদর পাওয়া, যেনো সুখের সাগরে ডুব দিচ্ছে তাকে নিয়ে, শাড়ীর আচল থেকে স্নেহার হাতের মুঠি ছুটিয়ে নিজ হাতে মুঠি বেধে ধরে দেওয়ালে হাত রাখতেই ধাক্ষা লেগে গিটারটাও মাটিতে পড়ে গেলো, এসবে তো রাহুলের খবরই নেই, সে তো স্নেহাকে আদর দিতেই ব্যস্ত! ]

স্নেহা : রার..রাহুল গিগ..গিটার!

রাহুল : [ নাক দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে স্নেহার ঠোটের কাছে নিজের ঠোট এনে ] স্নেহা একটা গান মনে পড়ছে তোমার চোখ আর ঠোট দেখে!

– বলবো? [ স্নেহা মাথা নাড়াতেই রাহুল নটি মাইন্ডেড একটা স্মাইল দিয়েই গান গেয়ে উঠলো ]

♪ পিলু তে্রে নিলে নিলে নেনোসে্ শাবনাম ♪
♪ পিলু তে্রে গীলে গীলে হোঠো্সে্ সা্রগাম ♪
♪ পিলু হে পিনে্ কা মোসা্মম উমমমম….

বলেই হেসে স্নেহার ঠোটে ঠোট মেশাতেই, হঠাৎ দরজার পাশ থেকে..

গীতালি : ভাবী আপনার ফোন তো…

রাহুল : শীটট! [ বলেই তাড়াতাড়ি কের্চে পা ঢুকিয়ে বারান্দায় হেটে চলে যায়! ]

গীতালি নিচের দিক তাকিয়ে,রোবোট হয়ে মোবাইল হাতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে থেমে আছে, না তার মুখ দিয়ে কোনো সাউন্ড বেরুচ্ছিলো, না পাশ মুড়ে চলে যাওয়ার শক্তিটুকু আসছিলো,

স্নেহা তাড়াতাড়ি শাড়ীর কুচি ঝেড়ে ঠিক করে, চুল গুলো হাত দিয়ে সমান করে কাধে ঠিক করে এনে গিতালীর দিক এগিয়ে এসে দাড়ালো..

স্নেহা : [ ফোন এগিয়ে নিয়ে ] থেংক ইউ! আ..আমার মনে হয়েছিলো ফোফ..ফোন রুমে রেখে গিয়েছিলাম!

গীতালি : সারি! ভাবী, আমি কিন্তু আপনাদের লঞ্চ দেখিনাই, চোখ নিচে নামাই ফেলছিলাম! আমি তো আপনার ফোন…

– কিন্তু ভাবী আপনেরা দরজা বন্ধ কইরা লঞ্চ করবেননা এইভাবে দরজা খোলা রাইখা কেউ লঞ্চ করে নাকি?

স্নেহা : লল..লঞ্চ মানে?

গীতালি : লঞ্চ মানে বুঝেননা? আপনারা এখন যেটা… বুঝছেন তো?

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে মাথা নাড়িয়ে ] হুমম!

গীতালি : আইচ্ছা ভাবী আমি নিচে যায়! আমার আবার দুপুরের লেঞ্চ ও বানাইতে হইবো!

স্নেহা : লাঞ্চ?

গীতালি : হো এইডা এইডা! লেঞ্চ, আমার ইংলিশ এতো ভালা না তাই একটু ভুল অয় আরকি! কিন্তু নেহাল ভাইয়ার বাংলার চাইতে বহুদ ভালা আমার ইংলিশ! হি-হি [ বলেই হেসে বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা ও হাসতে লাগলো গীতালির কথা শুনে, পেছন ফিরতেই দেখে রাহুল বারান্দার পর্দা সরিয়ে রুমে ঢুকছে ]

স্নেহা : এই গীতালি অনেক মজার তাই না?

রাহুল : হ্যা! মজার তো বেশ! সাথে ওর চিৎকার গুলো ও বিশেষ,পেটে একদমই কথা থাকে না মেয়েটার!

– [ হেসে ] নাজানি নিচে গিয়ে এখন কি কি বলবে ওদের!

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] হোহ! মানে কি?

রাহুল : হোহ! মানে হচ্ছে তোমার বোকামিতেই তুমি ফেসে গেছো! নিচে গেলে এখন রোহানীদের কাহানী শোনাতে হবে তোমার উপরে কি কি করেছো!

স্নেহা : আ..আমার বোকামী কেনো হবে? আপনার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো দরজা বন্ধ ছিলো নাকি খোলা!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমি ভেবেছি তুমি দরজা বন্ধ করেই এসেছো! আমি কি জানি? যে তুমি দরজা ওপেন রেখে এসেছো!

স্নেহা : হ্যা! ওপেন রেখে এসেছি কারণ আমি ও কি জানি যে আপনি…

রাহুল : থামলে কেনো? বলো আমি [ with tedi smile ]

[ স্নেহা আর কিছু বললো না লজ্জা পেয়ে দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

___________ এইদিকে,

গীতালি : [ নিচে গিয়ে ] আমি ভাবছি ভাবী সত্যি সত্যিই মোবাইল আনতে গেছে,তাই টেবিলে মোবাইলডা দেইখা দিতে গেছিলাম!

দাদী : গীতালি তোর বোঝা উচিৎ ছিলো স্নেহা টেনশন করছিলো রাহুল ব্রেকফাস্ট না করায়!
– তাই! আমরা মোবাইলটা দেখার পরেও স্নেহার কাছে পাঠায়নি!

গিতালী : সা্রি সা্রি!

নেহাল : ওহো গিতালী নট সা্রি ইটস্ সরি্!

গিতালী : হা ঐডাই সরি,সারি! একই, আমার মনে ছিলো না,যে রাহুল ভাইয়ার তো এহন বিয়ে হইয়া গেছে,রুমের দরজা নাক দিয়া ঢুকা উচিৎ আছিলো!

নেহাল : গীতালি নাক না ইটস নক! নক দিয়ে ঢুকা উচিৎ ছিলো!

গিতালী : দেহেন আমি কি ইচ্ছা কইরাই তাদের লঞ্চ দেখতে ঢুকছি নাকি? বলছি তো এরপর থেইকা নাক দিয়াই ঢুকমু!

নেহাল : হোয়াট হোয়াট হোয়াট? এগেইন লঞ্চ? ইটস্ কল রোমেন্স! গীতালি রোমেন্স! [ নেহাল আর গীতালির কান্ড দেখে বাকিরা হাসতে লাগলো ]

গীতালি : অইসে সব একই লাগে আমার, এতো বেশি ইংলিশ শিখন লাগবো না আমার! আমি যায় রান্না করতে! [ বলেই চলে গেলো কিচেনের দিক ]

শিরির দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা নেমে আসছে, রাহুল ও পেছন পেছন আসছে!

আলিসা : [ চেচিয়ে ] ভাবীইইইই! কাম কাম সি্ট সি্ট! [ স্নেহা হালকা একটু হেসে আলিসার পাশে গিয়ে বসলো ]

নেহাল : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হোয়াটস্ আপ ব্রাদার!

রাহুল : [ নেহালের পাশে বসে ] ডিরেক্ট কথা বল! কথা পেচাবি না!

রোহানী : ভাই! গীতালি বললো ও নাকি উমম হুমমম দেখেছে!

আলিসা : [ হেসে ] লঞ্চ লঞ্চ দেখেছে! [ বলতেই বাকিরা ও কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো,রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা লজ্জা পেয়ে হালকা একটু হেসে মাথা নুয়ে আছে ]

রোহানী : ভাবী! আপনার ফ্রেন্ডসগুলো ও এখন আমাদের সাথে হলে অনেক এঞ্জয় হতো তাই না? ওরা অনেক ফানি! আই রিয়েলি লাভ দেম! [ কথাটি বলতেই স্নেহা মুখ গোমড়া করে ফেললো,রাহুল ও স্নেহার চেহেরা দেখে বুঝতে পারছে স্নেহা ঐ নটি কোম্পানির দলদের খুব মিস করছে, নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে স্নেহা রোহানীর কথায় সম্মতি জানিয়ে মুচকি হাসলো, যে হাসির পেছনে লুকিয়ে থাকা স্নেহার কষ্ট শুধু রাহুলের চোখেই পড়ছে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাহুল উঠে দাঁড়ালো ]

নেহাল : হেই ব্রো হোয়ার আর ইউ গোয়িং নাও?

রাহুল : আসছি আমি! [ বলেই স্নেহার সাথে চোখাচোখি হোওয়ায় স্নেহাকে একটি চোখ টিপ মেরে হেটে বেড়িয়ে গেলো ]

নেহাল : লেডিস্ আমি ও আসছি ওকে? [ বলেই সে ও রাহুলের দিক দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো ]

চলবে…