Monday, August 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1961



দি , Aloka Nanda – মোহন লাল

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

দি , Aloka Nanda
জানি তুমি ভালো আছো , তাই আর নতুন করে জিজ্ঞেস করলাম না । হয়তো তুমি ভাবছো ” এ আবার কেমন চিঠি ” ? কোনো সম্মোধন নেই ! কিন্তু আমার কথা হলো , চিঠির ওপরে ” ভালোবাসার , সম্মানীয় ” এইসব লোকদেখানো কথা লিখলেই কি মন থেকে এগুলো চলে আসে ? কখনোই নয় । তুমি ভালোকরেই জানো তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি আর কতোটা শ্রদ্ধা করি । তাই আমার মনে হয় , চিঠির ওপরে ওইসব কথা না লিখলেও কোনো সমস্যা নেই । কারণ ওই কথাগুলো লিখলেও আমি তোমাকে যতোটা ভালোবাসবো , যতোটা শ্রদ্ধা করবো , না লিখলেও ঠিক ততটাই ভালোবাসবো ততটাই শ্রদ্ধা করবো । শুধু শুধু শব্দ বোঝাই করে মাথা ধরিয়ে লাভ নেই । যাঁর কাছে লেখা চিঠি , তিঁনি বুঝলেই যথেষ্ট ।

এখন আসল কথায় আসি । আমার কি মনে হয় জানো দি ? আমি হয়তো কোনো জন্মে কোনো খারাপ কাজ করেছিলাম । যে কারণে তোমার সাথে পরিচিত হতে আমার এতো বছর লেগে গেলো । যদিও ভালো কাজ অবশ্যই কখনো করেছি , যার ফলে এ জীবনে তোমাকে পেয়েছি । কেনো এতো ভালোবাসলে আমায় ? কেনো এতো বিশ্বাস করলে ? কতোটুকু ভালোবাসলে , কতোটুকু বিশ্বাস করলে পরিচয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই তাকে জীবনের প্রথম বেতনের টাকার উপহারের অংশীদার করা যায় , তা হয়তো আমার কল্পনার বাইরে । কিন্তু এটা আমার জন্য চরম সৌভাগ্যের যে , আমি পরিচয়ের মাত্র নয়দিনের মাথায় রাখি বন্ধনের উপহার পেয়ে গেছি , যেটা কিনা সেই শ্রদ্ধেয় মানুষের প্রথম বেতনের টাকা থেকে কেনা । জানি না এই ভালোবাসা , বিশ্বাস , স্নেহ সবকিছুর মর্যাদা আমি রাখতে পারবো কিনা । জানি না এর ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারবো কিনা ! কিন্তু তুমি বিশ্বাস করো , এই ঋণ আমি কখনো শোধ করতে চাই না । কারণ ভালোবাসার মানুষদের কাছে ঋণী হয়ে থাকাটাই ভালো । তাতে ভালোবাসাটা আরও বৃদ্ধি পায় । ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি , আমি যেনো আমৃত্যু তোমার এই ভালোবাসা , বিশ্বাস , স্নেহের মর্যাদা রক্ষা করতে পারি !
তুমি তো জানোই , আমি কখন কি বলি আর কখন কি করি তা নিজেও জানি না । ওপরে দেখো , মাত্র একটা শব্দ না লিখে , বকবক করে তোমার মাথা ধরিয়ে দিয়েছি । তাই আর বেশি বকবক করতে চাইছি না । শুধু এটুকুই বলবো , আর কতো বকবো তোমায় ? তুমি তো ছোট নও যে , তিন বেলা তোমাকে বকে বকে খাওয়াতে হবে ! রাগ করে তোমাকে ঘুমাতে পাঠাতে হবে ! তাই বলছি , আর যেনো আমাকে এতো বকরবকর না করতে হয় । ঠিক সময় মতো ঘুমাবা । আর সময়মতো খাওয়া দাওয়া করবা । নইলে কিন্তু আমি খুব রেগে যাবো । আর আমি রেগে গেলে যে কি হবে সেটা তুমি খুব ভালো করেই জানো । আর খবরদার , খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজে ছাড়া একটুও বাইরে বরোবানা । বাড়িতে সকলের খেয়াল রাখবা । সাথে নিজেরও ।

আজ আর কিছু লিখলাম না । আবার অন্য কোনদিন লিখবো । ভালো থেকো , সাবধানে থেকো ।
ইতি তোমার
আদরের
লকাই / লাল ।।

আমার প্রিয় আল্লাহ্ – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: আট

আমার প্রিয় আল্লাহ্,

তুমি তো সবই জানো, কিছুই তোমার অজানা নয়। আমি কতগুলো প্রশ্ন নিয়ে ঘুরেঘুরে মরছি। আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কেবল তোমারই কাছে আছে। ইয়া রব্বুল আলামিন তুমিই বলো তোমার প্রতি একটা মুসলমানের ঈমান, ভক্তি আর শ্রদ্ধা কি অন্য একটা মুসলমানকে যাচাই করার অনুমতি তুমি দিয়েছো?
যেই জবাবদিহি তোমার কাছে করার কথা ছিল, সেই জবাবদিহি টা কেন মানুষ হয়ে অন্য একজন মানুষের কাছে করতে হয়? প্রতিটি পদে পদে কেন নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, কেন? কেন এতো প্রশ্ন আসে, এতো বাঁধা আসে?
তবে কি এগুলোও তোমার পক্ষ থেকে আমার জন্য পরীক্ষাস্বরূপ কিছু…

আমি যখন তোমার প্রদর্শিত পথে চলার জন্য চেষ্টা শুরু করলাম তখন চারপাশ থেকে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া আসা শুরু হলো…

“এই বয়সে আবার নতুন কইরা আরবি শিখতে মাদ্রাসায় ভর্তি হইসো”

“তুমি যে পর্দা মেইনটেইন করো তোমার পর্দা তো হয়না। তোমার হিজাবে সমস্যা আছে।”

“আগে কি করছে জানি না নাকি! সারাজীবন স্কুলে গান গাইছে এখন পর্দাশীল নারী হইছে। ঢং!”

“পর্দা মেনে চলে, নতুন নাটক!”

এরকম অনেক কথা আমাকে শুনতে হয়েছে। এখন ওদের কিভাবে বোঝাবো,
“শিখতে গেলে শিখে শেষ করা যাবে না।কারণ যেকোনো বিষয়ের ই শিখার ক্ষেত্রে কোন শেষ নেই।”

আমার পরিবারের কেউ পর্দা মেইনটেইন করে চলেনা সেজন্য। আমার পর্দা সম্পর্কে ধারণা খুবই স্বল্প। আমার জন্য ব্যাপারগুলো খুবই জটিল, তাই আমার সময় লাগবে, ধিরে ধিরে সব শিখতে হবে আমাকে। আমি তো শুরুতেই সব পারবোনা। কিন্তু ওদের এটা কে বোঝাবে! শুধু মুখের উপর এসব কটু কথা বলে দিয়েই সবাই নিজেকে বড় মনে করে।
ওরা কিভাবে বুঝবে একটা মেয়ে যে বড় হয়েছে বেপরোয়া ভাবে। চুল ছেড়ে বাইরে যাওয়া, কপালে টিপ দেওয়া, বেপর্দা অবস্থায় বাইরে যাওয়া একটা মেয়েকে এসবকিছু বাদ দিয়ে, ত্যাগ দিয়ে দীনের পথে প্রবেশ করতে কতটুকু সাহস দেখাতে হয়েছে এইটা এই সমাজের মানুষ কিভাবে বুঝবে!
কিন্তু তুমি মন পড়তে পারো ইয়া রব্বুল আলামিন। তুমি তো সবই দেখতে পাচ্ছ। তোমার কাছে জবাবদিহি না করে সমাজের মানুষের কাছে কেন জবাবদিহি করতে হয়? এই সমাজ টা এমন কেন? প্রত্যেকেই শুধু অপরের দোষ খুঁজে বেড়ায় কেনো…

সবশেষে বলবো, আমার প্রিয় আল্লাহ আমাকে তুমি ধৈর্য্য দাও। আমি যেন এইসব কিছু সহ্য করতে পারি এবং নিজেকে একজন প্রকৃত মুসলিমা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।

ইতি
তোমার পাপী বান্দা

(বিঃদ্রঃ এই চিঠি মাধ্যমে সবার কাছে একটাই অনুরোধ করতে চাই, যদি আশেপাশের কাউকে হঠাৎ করে ইসলামের দিকে অগ্রসর হতে দেখেন তাহলে নেগেটিভ কিছু না বলে তাকে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।)

প্রিয় – Mãîshå Zāfrêëñ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০ (চিঠি নং ০৫)
(বঙ্গবাণী~দেশ মাতৃকার নিরব কথন)

প্রিয়,
হতাশার হুতাশনে যবে আমি দগ্ধ হইয়াছি মর্মজ্বালায়, সবে কিছু নবীন প্রত্যুষে প্রত্যুদ্গত হইয়া দূর করিয়াছে মোর বক্ষের নির্মম শূলগুলিকে। শিরবিদ্ধ হরিণীর মত চকিতে চাহিয়া আমি তাদের আপন আলয়ে স্থান দিয়াছি, একটু শান্তি খুঁজিয়া নিতে তাহাদের আমি গভীর মমতায় আগলে রাখিয়াছি। তবু আশায় নৈরাশ্য করিল তারা আমায় কোন মহিতে? আমার রমনীকূলের সম্ভ্রম নিয়া ছিনিমিনি খেলিয়া বর্বরোচিত কাণ্ডের কর্তা হইলো তাহারাই। আমার নিরপরাধ সন্তানদিগকে খুন করিতে তাহাদের বিন্দুমাত্রও কুণ্ঠাবোধ হইলো না। বিবর্জিত ইতিহাসের ব্যবচ্ছেদ করিতে যাহারা আগাইয়াছে, তাহারাই আজ কলুষিত করিল, কলঙ্কিত করিল আমার গর্বিত ইতিহাসকে। কিসের দ্বারা চুনকাম হইবে এ পঙ্কিলতার?
আমি ভালবাসিয়াছি আমার সকল সন্তানদিগকে, সেহেতু তাহাদের কারো নিন্দা করিবার বোধ আমার নাই। তবু আজ আক্ষেপের সহিত বলিতে হইতেছে যে, আমি তাহাদের কাছে জীবন্মৃত। আমাকে জয় করিয়াছে, কিন্তু আমার অন্তর্নিবিষ্ট সুখ/দুঃখকে তাহারা জয় করিতে পারে নাই। স্বাধীন বলিয়া আখ্যা দিইয়াছে, কিন্তু আমার সন্তানগুলিকে স্বাধীন করিতে পারে নাই। আমার সন্তানেরা বাড়িয়া উঠিয়াছে আমারই বুকে, বোবা বাদী হইয়া। তাহারা কাপুরুষোচিত আচরণে আজ লজ্জিত নহে, তাহারা আজ কুকর্ম সম্পাদনে বীরত্ব প্রদর্শন করিয়া থাকে। আমার বক্ষ হইতে স্বেচ্ছাচারী, ধোকাবাজ শ্বেত ভালুক (ইংরেজ)-দের তারাই ঠিকই উৎখাত করিয়াছে, কিন্তু তাহাদের মতাদর্শ মানিয়া আজও নিরব গোলামী করিতেছে। তাহারা ভুলিয়াছে স্বসংস্কৃতি, তাহারা আজ মায়ের বুলি আওড়ালে অভদ্রোচিত মুর্খতা বলে। তাহারা বিদেশি ভাষায় বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হইয়া তৃপ্ত হয়। দেশমাতৃকার ঋণ তাহারা শোধ করুক এ আমার কাম্য নহে, আমি কেবলই তাহাদের ঘুমন্ত বিবেকের উদ্দেশ্যে বলিতে চাই – “হে আমার বৃক্ষচারীরা! তোমরা তোমাদিগের পরষ্পরের সহিত সুশৃঙ্খলা বজাইয়া রাখিবে। তোমরা আমায় নিয়ে আলগা পিরিতে সগর্বিত হইয়া না ফুলিয়া, নিজেদের ভ্রাতাগণের জন্য কিছু করিবে। ক্ষুদার্থের মুখে অন্ন জোগাইবে, দাঙ্গা হাঙ্গামায় জড়াইও না নিজেদের। আমার পৃষ্ঠে বিচরিত দুষ্কৃতকারীদের শায়েস্তা করার ক্ষমতা থাকিলে শায়েস্তা করিবে, অন্যথা তাহাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিও। অবনীর শান্তিশৃঙ্খলই আমার শান্তি, তাহাতেই আমার বেদনার উপশম হইবে।”

ইতি,
বঙ্গভূমি

[আমরা দেশের কথা বলি, দেশের জন্য কত দরদই না দেখাই। কিন্তু এই মুখের ফাঁকা বুলি আওড়িয়ে আমরা কি করতে পারি?
আমাদের পৃথিবীতে কেন আল্লাহ পাঠালেন?
আমরা স্বাধীনতা দিবস মানি, বিজয় দিবস জানি… কিন্তু জানি না দেশপ্রেমের মূল্যবোধের প্রকৃত মর্ম। আমরা জানি না যে, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখলে, ইসলামী চিন্তাধারায় সমাজ গড়লে, অন্যায় অপরাধ মুক্ত করলেই আমরা মূলত প্রকৃত দেশসেবক, আদর্শ নাগরিক এবং আল্লাহর কাছে যাবার প্রেরণায় অনুপ্রাণিত।
কাল্পনিক চিত্রটি এই আদর্শেরই প্রতিফলন, এখানে কল্পিতরূপে দেশ তার সন্তানতুল্য নাগরিকদের কিছু বলতে চায়… ]

____মারইয়াম জামীলা (মাইশা জাফরীন)

প্রিয় মায়াবিনী – Shakila Nur Sriti

0

#গল্পপোকা_উড়োচিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
লেখা:শাকিলা নূর স্মৃতি
চিঠি নং:২

প্রিয় মায়াবিনী,

প্রথমে অন্তরের অন্তঃস্থলের এক পৃথিবী ভালবাসা নিও। তুমি ভালো আছো এ ছারা আর কিছু ভাবতে পারিনা।কারণ তোমার খারাপ থাকা আমার কল্পনার বাইরে।

সৌরজগতে একটা গ্রহ আছে যার নাম পৃথিবী,পৃথিবীতে একটা ছোট্ট দেশ আছে,আর সে দেশে একটা মায়াবতী রয়েছে,যার নাম তুমি,হ্যঁা তোমায় অনেক বেশি মনে পরে।

বর্ষার আকাশে টুকরো টুকরো মেঘ জমেছে।সাথে আমার মনের মাঝেও মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে।খুব করে দুচোখ ভরে তোমায় দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।তোমার ভালবাসার পরশ পেতে মনটা খাচাবন্দি পাখির মতো কাতরাচ্ছে।

জানো মা!
এই শহরে যানজট,হৈ হুল্লোড় আমার খুব ক্লান্ত লাগে।কোন কিছু মনে ভাললাগার আবেশ আনতে পারে না।

তুমি বলতে ভালোকরে পরাশোনা কর,একজন ভালো ডক্টর হবি।এই স্বপ্ন তোমার থেকে আমায় আলাদা করেছে।

যখন রাগ করে ভাত খেতাম না।তুমি জোর করে টেনে তুলে খাওয়াই দিতে।পরে বলতে ভাতগুলো কার পেটে গেল?
এখানে না খেয়ে থাকলে কেউ অমনি থাকতে হয়।

পৃথিবীতে তুমি একমাত্র ধৈর্যশীল,যে কিনা আমার সব যন্ত্রণা নিরবে সহ্য করো,

পৃথিবীতে তুমিই একমাত্র ভালো বিচারক,কোন অপরাধ করার আগের সব মাফ হয়ে যায়,

পৃথিবীতে তুমিই একমাত্র বিশ্বাসিত ব্যক্তি, আমি নির্দিধায় থাকতে পারি,

তোমার আচঁল ই একমাত্র শান্তির জায়গা,যেখানে আমার সমস্ত সুখ পরিপূর্ণ হয়ে থাকে।

তোমার সাথে তুলনা করবার মতো কোন উপমা আমি পাই না।সব উপমা তোমার কাছে হার মানে।
আমার সব ব্যস্ততা তোমাকে ঘিরে।

মাঝে মাঝে ভাবি সংসারের এই বেরাজালে আটকে থাকা তুমি কতটা ধৈর্য্যবান।তোমারতো সব দায়িত্বে ফেলে একটু শান্তিতে থাকতে ইচ্ছা করে তাইনা?
কিন্তু তুমি যেন যন্তমানব,বিরামহীন মাবে তুমি তোমার ভালবাসা দিয়ে সুন্দরর্যে পরিপূর্ণ করেই যাচ্ছো।

তোমার ছোয়া পাইনা কবে থেকে।ইচ্ছে করে সব পরাশোনা ব্যস্ততা ফেলে তোমার কাছে ছুটে যাই।

তুমি মমতাময়ী,তুমি মায়াবতী
তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে গুণবতী,
তোমার ছোয়ায় আছে সমস্ত সুখ
মনের আধার কাটে দেখলে তোমার মায়ামুখ।

তোমার পানে যেতে এমন বড্ড ব্যকুল
আমার সব শান্তি ঙিরে তোমার আচলঁ।

তুমি আমার চোখে দেখা সেরা মানুষ।
খুব করে,খুব বেশিই তোমার কাছে যেতে ইচ্ছে হয়।

তোমার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।সোনালি রৌদ্র মাখা এক চিলতে হাসি লেগে থাকুক আজীবন তোমার ঠোটকর্নারে

এখানেই শেষ করছি।

ইতি
তোমার রাজকন্যা

বাবলু – মোঃ জামাল উদ্দিন

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

বাবলু,

তুই কি জানিস, কী করলে মানুষ প্রাণ খুলে হাসতে পারে? কতদিন প্রাণ খুলে হাসি না রে! মানুষকে ধোঁকা দেই। সামনের কয়েকপাটি দাঁত বের করে হি হি শব্দ করি। সবাই ভাবে হাসছি। কিন্তু আমি তো জানি রে, এই হাসির আড়ালে কী জমাট বাঁধা কষ্টটাই না আছে!

হয়তো বলবি, আমি একটা পাগল। মাথা খারাপ হয়েছে তাই আবোল-তাবোল বকছি। কত বড় শহর ঢাকা! এখানে কি আর কোনোকিছুর অভাব আছে?

কিন্তু তুই জানিস না, কত আজব এই শহর! এখানে সব আছে তবু কী যেন নেই, কীসের যেন অভাব। সবসময় বুকের মধ্যে একটা শূন্যতা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়।

এখানে মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে কিন্তু তাতে প্রাণ ভরে না। মনে হয়, এ যেন কোনো মুনি ঋষির অভিশাপ প্রাপ্ত বৃষ্টি। তার আসার কোনো ইচ্ছেই ছিল না, জোর করে পাঠানো হয়েছে। হৃদয়টা ব্যাকুল হয়ে থাকে বৃষ্টির একটুখানি ঝুম ঝুম শব্দ শোনার জন্য।
কিন্তু হায়! কোথায় সেই চিত্তহারী শব্দ?

এখানে সন্ধ্যা নামে। কিন্তু ঠিক কখন যে নামে তা আমি টের পাই না। কল্পনার ক্যানভাসে তুলির আঁচড় দিতেই চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ওঠে সেই সোনাঝরা স্মৃতিগুলো।

বসে আছি শান্ত নদীর তীরে। এক অপূর্ব রক্তিম আভায় রঞ্জিত পশ্চিমের আকাশ। চারপাশ উদ্ভাসিত করা এক নজরকাড়া স্নিগ্ধ জ্যোতি। সূর্যি মামা তার পূর্বের প্রখর দীপ্তি কমিয়ে এখন টকটকে লাল। কেমন নরম সুবোধ বালকের মতো লুকিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমের দিগন্ত রেখার নিচে। ওখান থেকেই যেন বলছে, “বিদায় খরতপ্ত পৃথিবী, আজকের মতো চললুম।”
অদূরের বিল থেকে কতগুলো পাখি মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল উত্তরের দিকে। নীড়ে ফেরার সে কী তাড়া তাদের!
এক মায়াবী আঁধার ধীরে ধীরে ঘিরে ধরতে লাগল পৃথিবীকে।
বহুদূরে কার ছাগলটা যেন তখনো একটানা ডেকে যাচ্ছে। কার একটা হাঁস তখনো নদীতে। সঙ্গীদের হারিয়ে সে একা হয়ে পড়েছে। এখন নিজের বাড়ির রাস্তাটাও চিনতে পারছে না। এক অজানা আতঙ্ক তাকে ঘিরে ধরেছে। সেটি একটানা প্যাঁক প্যাঁক করে ডেকেই যাচ্ছে।

আহ! নদীর ধারে মহাকাব্যিক কী অপূর্ব সন্ধ্যাগুলোই না নামত!

ঝাঁকে ঝাঁকে মশা এসে কানের কাছে ভনভন শুরু করতেই সৎবিত ফিরে পাই। খেয়াল হয়, বসে আছি আজব শহরের একটা ব্যালকনিতে। এতগুলো মন ভোলানো জিনিস থেকে আমাকে বঞ্চিত করে সূর্যি মামা ডুবে গেছে সেই কখন! বুকের ভেতরটা হু হু করে ওঠে।

জানিস, এখানে হেমন্ত শেষ হলেও শীত আসে না। অনাবৃত দিগন্ত বিস্তৃত প্রকৃতির মাঝখানে শীতের সকালগুলো যে সৌন্দর্য মহিমায় সেজে উঠত তা এখানে নেই।
কোনো কোনো দিন মনে হয়, এই বুঝি শীত এল ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে। উত্তুরে হিমেল হাওয়া এসে এই বুঝি হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দিল। কিন্তু ইট পাথরে ঘেরা এই কৃত্রিম পরিবেশে সবই যেন মায়া।

হঠাৎ কোনোদিন পানি আনতে ছাদে যাই। দেখি, মাথার উপর থালার মতো পূর্ণিমার চাঁদ। কিন্তু তার আলো কোথায়?
মনে হয়, সে দুঃখ ভারাক্রান্ত। নীরবে কাঁদছে। চারপাশের বাহারি আলোর মাঝে পড়ে বেচারা যেন নিজের অস্তিত্বটাই হারিয়ে ফেলেছে।

দিন আসে দিন যায়। কত স্মৃতি এসে জীবনের পাতায় জমা হয়। কিন্তু জীবন থেকে খসে যাওয়া সেই দিনগুলোর কথা মন থেকে মুছে না।

যেদিন একা থাকি সেদিন খুব মন খারাপ হয়। বিস্মৃতপ্রায় অতীতের ঝকঝকে চিত্রগুলো ফুটে ওঠে মানসপটে। অন্যমনস্কভাবে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে থাকি।
ওই মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারটির মাথায় যে আকাশটা ওরই ওপারে বহুদূরে আমার প্রাণের গ্রামটি। যেন এখনও আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সেই ডাকে আমি সাড়া দিতে পারি না।
কিন্তু কেন?
কার এতবড় সাহস?
কীসের শক্তিবলে সে আমাকে আমার স্নিগ্ধ সুন্দর জন্মালয় থেকে, আমার প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে?

হারিয়ে যাই ভাবনার অতল গহ্বরে। সময় গড়িয়ে যায় তবু আমার ভাবনার শেষ হয় না। দিন-রাত পার হয়ে মাস, বছর চলে যায়। আমি ভাবতেই থাকি।

জীবিকা নামক এক ভয়ংকর দৈত্যের বাঁধানো ছকে আটকা পড়েছে জীবন। চাইলেও আর ছুটতে পারছি না। খাঁচায় বন্ধি সেই পাখিটার মতো খাচ্ছি, দুঃখ চেপে রেখে সুখের গান গাইছি। আর স্বপ্ন দেখছি, কোনো একদিন তো মুক্তি মিলবে!

আজকাল নিজেকে মাছের মতো মনে হয়। কোনো চতুর শিকারি যেন ছলে বলে কৌশলে আমাকে বড়শির টোপ গিলিয়েছে। এখন আর পরিত্রাণের উপায় নেই। যেকোনো সময় টান মেরে আমার চিরচেনা এই জলাশয় থেকে তুলে নিয়ে যাবে।

আর কোনোদিন উঠানে মাদুর পেতে রূপকথার গল্প শোনা হবে না। বাদুড়ে খেয়ে ফেলা অর্ধেকটা আমের জন্য আর দৌড়ানো হবে না। মনোহরের জনহীন ভিটায় ভাঁটফুলের ফাঁকে ফাঁকে জোনাকি পোকা ডাকবে, রাত গভীর হলে উত্তরের ঘন বনে ছাতিম কিংবা শ্যাওড়ার ডালে বসে লক্ষ্মীপেঁচা ডাকবে, কিন্তু তা আর আমি শুনতে পাব না।

আষাঢ়ে বাদল নামবে। অবিশ্রান্ত বর্ষণে মুখরিত হবে চারপাশ। এরই মধ্যে নেমে আসবে সন্ধ্যা। পশ্চিম আকাশের সূর্যাস্তের বর্ণবাহার ছাড়াই সেদিন সন্ধ্যাটা নামবে। দূরের কদম গাছটা শ্যামল সৌন্দর্যে মেঘের সাথী হবে। তারই ডালে বসে ভিজে কাক অসহায় আর্তনাদে প্রকৃতিতে কারুণ্য ফুটিয়ে তুলবে। ধীরে ধীরে অন্ধকার গাঢ় হবে। যুগ যুগ ধরে অপরাজেয় সৈনিকের মতো দাঁড়িয়ে থাকা মাঠের পাশের বটগাছটা অদৃশ্য হবে। ব্যাঙের একটানা সুর বাশির মতো বাজবে। মসজিদ থেকে ভেসে আসবে আযানের সুমধুর ধ্বনি।

কিন্তু আফসোস, এসব কিছুই আর আমার দেখা হবে না, শোনা হবে না।

আমি জানি না মরলে মানুষ কোথায় যায়! সেখান থেকে এই মায়ার পৃথিবীতে আর ফিরে আসে কী না! তবু মহান প্রভুর কাছে একটা ফরিয়াদ জানাই, তিনি যদি আমাকে আবার এই পৃথিবীতে পাঠান তবে যেন আমার ওই গ্রামটিতেই পাঠান। এর ব্যত্যয় করলে আমি সুখী হব না।
আমি আরেকবার প্রাণভরে সেই নৈসর্গিক দৃশ্যগুলো দেখতে চাই।

আজ তবে রাখছি। ভালো থাকিস তোরা।

ইতি
জামাল

প্রিয় তুমি – Lubnam Fariha

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-১

প্রিয় তুমি,
আমাদের স্বপ্নগুলা বৈধ হলেও প্রেমটা অবৈধ ছিলো।তোমাকে দোষ দেওয়া কি আমার ঠিক হবে বলো? আমি তো নিজেই তোমার শহরে দুঃখ কিনতে যাই।সম্পর্কে ফাটল ধরে, দূরত্ব বেড়ে যায় তারপর একটা সময় বিচ্ছেদ হয়।
কি সকরুণ একটা শব্দ বিচ্ছেদ।
হয়ত দুজনের মধ্যে একজন চাইনা বিচ্ছেদ হোক।অপরজন যতটা দ্রুততাই সরে যায় আরেকজন হয়ত ততটাই মরিয়া হয়ে বিচ্ছেদ ঠেকাই।
অথবা,হয়তো দুজনেই উপলব্ধি করে ভালোবাসা ফুরিয়েছে এবার বিচ্ছেদ দরকার।তীব্র ভালোবাসাও একটা সময় বদলাতে শুরু করে।
এই যে এত্তো অবহেলা, অপমান, রাগারাগি এতকিছুর পরও কি ভালোবাসা হারিয়ে যায় বলো?
নাহ….
ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না। হয়তো আগের নিয়মের পুরানো সব অভ্যাসগুলা বদলে যায়। কিন্তু,স্মৃতিগুলো ঠিক থেকেই যায়।
যাকে কোন প্রয়োজন হয় না সেই নিখোঁজ হয়।আর এই নিখোঁজ মানুষকে কেউই খোঁজে না।
জগতের নিয়মগুলো বড় অদ্ভুত!
বর্তমানে দাড়িয়ে সঠিক পথে এগিয়েও মনে হয় ভুল পথে আছি। আবার ভুল পথে এগিয়েও মনে হয় সঠিক পথেই আছি। মনের ভিতর একটা কনফিউশান তৈরি করে দেয়।সত্যি বলতে, আমরা নিজেরাও জানি না আসলেই সঠিক কোনটা। দেখ,ভাবলে কত্ত কিছু, আর না ভাবলে….
থাক না বাকি কিছুটা।
সব ভাবনাকে উপেক্ষা করে কোন এক গোধূলিতে বসে তোমার পাশে বসে তোমার কাঁধে মাথা রেখে তোমার হয়ে যেতে চাই।
ইতি
তোমারই
না হওয়া প্রিয় মানুষটা

শোনো হে প্রিয়া – Mãîshå Zāfrêëñ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০ (চিঠি নং ০৪)

শোনো হে প্রিয়া,
(“বিবেকের তরে মন”)

যুক্তির কষ্টিপাথরে তুমি স্বাধীন ইচ্ছেগুলোর পায়ে শেকল বেঁধো না। আষ্টেপৃষ্টে সমুদয় আশাগুলোকে আনকোরা আতংক গ্রাস করে ফেলেছে প্রায়। আর তুমি বারংবার আমার ইচ্ছেঘুড়ির নাটাই টেনে ধরছো। বিশ্বাস করো, আস্বাদিত বেদনার বিঘ্নিত ইচ্ছেগুলো সজাগ হয়ে উঠছে। মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে পরিনত শখ। তবু তুমি লাগাম টেনে ধরবে ওদের? ওদের বাঁচার প্রত্যাশা প্রত্যাখ্যাত হলে কোন যুক্তিতে তুমি আমার হতাশায় ঢলে পড়া ঠেঁকাবে?

হকের মানদণ্ডে তুমি ভালবাসা আর স্বপ্নকে মাপতে পারো না। হয়ত তোমার যুক্তিবলে দাবী দাঁড় করাতে পারো, উদোরের সঙ্গে বিবাদ বাঁধতে নেই বলে আমাকে বোঝাও; কিন্তু তুমি নিজেও জানো না আমার মর্ম। আমি রূঢ়ভাষিণী হতে পারি নি বলে, তোমার মত শিক্ষিতা নই বলে, পটু বাগ্মিতা না হবার কারণে আজ যে বিধির আগাম নোটিশ পড়াচ্ছো আমায়; স্বঘোষিত সেচ্ছাচারীর মত বিচরণ করতে চাইছো আমার একলা রাজ্যে…।

অতিশয়োক্তির দরুন আবারো কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে জেনেও আমি তোমায় বলবো, চিঠি লিখবো…।
শত অভিমান তো আমার, যাচিত সুখের উদযাপন তোমার। হতাশার গ্লানিবোধে গ্রাসিত আমার পৃথিবী, উপদেশদাতা হয়ে মাঝেমাঝে শোনাও কটুবাক্য। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিনতির দায় চাপে সবাই আমাকে, তোমায় কেবলই অপরিক্কতার অজুহাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধী বলে না।

রিক্ত যাতনার অসমাদৃত বয়নে আমি কেবলই পাই লাঞ্চনার শক্ত আঘাত। তুমি অসম্পৃক্ত অদেখা কোনো মোহজালে আমায় কারো বাহুডোরে বাঁধতে দেখবে একদিন। আবার দেখবে আমার ব্যাথিত প্রতারিত অম্লান মুখ। আবেগ তাড়নায় তাড়িত, মোহে প্রভাবিত সেই আমি – ক্ষীয়মান আশার আলোতে তাও আমি আঁকড়ে ধরি, পুনরায় সূচিত হয় প্রতীক্ষার প্রহর। তোমার ভাষায় আমি অসংজ্ঞায়িত, নিশ্চেষ্ট নিশ্চেতন কোনো অনূদিত আশায় চেয়ে থাকি…।
কিন্তু তুমি অনুধাবন করো কিংবা না করো, আমিহীনার নিস্পৃহতায় তুমি সংজ্ঞাহীন। আমাতেই তোমার শুন্যতার পূর্ণতা।

[ ভাবার্থ- আমরা কিছু কিছু সময় বিবেকের চিন্তা এতই প্রাধান্য দেই যে নিজেদের ভুলে যাই। কিন্তু আমাদের জানা উচিৎ, আমাদের সুখী করতে মনের গুরুত্বও কম নয়। মন ও বিবেকের সমন্বয়েই আমরা সুখী। আর যখন বিবেকের সাথে মনের দূরত্ব হয়, তখন গুরুত্ব পায় অবহেলিত হতাশা আর কষ্টগুলো।
কিন্তু মনমতো চলাতেও কল্যান নেই। আবেগেই সর্বদা প্রভাবিত হয়ে থাকে সে।
তাই আমাদের মন ও বিবেক দু’টোই প্রাধান্য পাবে কর্মক্ষেত্রে। ]

~ মারইয়াম জামীলা (Maisha Zafreen)

প্রিয় মদনটাক – Shakila Nur Sriti

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
লেখা:শাকিলা নূর স্মৃতি
চিঠি নং:০১

প্রিয় মদনটাক,
কেমন আছিস?নিশ্চই ভালো আছিস।কারণ তোর দুষ্টুমি মাখানো চেহারায় আমি কখনো আধার নামতে দেখিনি।দাতঁ কেলিয়ে হাসতে দেখেছি শুধু।যাইহোক আমি কিন্তু তোকে ছাড়া বসন্তবিহীন কোকিলের মতো আছি।

আজ তোকে চিঠি লিখব ভেবেই মনের ভেতর বঙ্গপসাগরের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে।
তোকে একটা পুরোপুরি চিঠি লিখতে গেলে বাড়িতে কালি ছারা কলমের পাহাড় হয়ে যাবে।অন্যদিকে কাগজ কোম্পানির লোকদের মাথায় হাত পরবে,তবুও লেখা শেষ হবেনা।
তুই তো আগে থেকেই জানিস,আমি শৃঙ্খল ভাবে কিছু করতে পারি না।
হাঁটতে গিয়ে উষ্টা খাওয়া যেমন আমার রুটিনে ছিলো তেমনি তোর রুটিনে আমাকে সাবধান করার রচনা ছিলো।তাই এলোমেলো লেখাগুলো গুছিয়ে পরে নিস।

তোর মনে আছে তুই আমায় নাম দিয়েছিলি”পেত্নি”।আমি রেগে হাতের কাছে যা পেতাম তাই ছুরে দিতাম তোর দিকে।

তবে এই নামটা আজও ভাবায় আমায়।তোর সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো ভীষণ যন্ত্রণা দেয় আমায়।

মনে আছে প্রাইভেট পরতে গিয়ে রাস্তার পাশের আম চুড়ির কথা।তুই শুধু টক আমগুলো আমায় দিতি।
সাথে একদল টকখোর থাকতো।কাড়াকাড়ি করে আম খেত।মনে হলে এখনো জিভে জল আসে।

তোর সাথে কাটানো প্রত্যেকটা সময় ছিলো আনন্দের।
জেলখানার আসামী গুলো যেমন অসহায় বোধ করে,সমুদ্রের মাঝে দ্বীপটা যেমন নির্জনতা বোধ করে।জোস্নাহীন হাসনাহেনা যেমন একাকিত্ব মনে করে,মরুভুমিতে পথহারা পথিক যেমন দিশেহারা হয়,তুইবিহীন আমারো একই পরণতি হয়।

তোর মতো একজন কে সবার জিবনে প্রয়োজন।নয়তোণ অসম্পূর্ণ গল্পের মতো সবার জিবন অপূর্ণতায় পরিপূর্ণই থাকবে

তোর জিবনের সমস্ত আধার ধংস হোক,আলোয় আলোয় মোরানো থাকুক।

সব দোয়া ও ভালবাসা চারপাশে বেষ্টনি হয়ে থাকুক।

সবাইকে নিয়ে ভাল কাটুক তোর প্রতিক্ষণ।
এখানেই সমাপ্তি টানছি।

ইতি,
তোর পেত্নি

প্রিয় সমুদ্র – Orshiya Shohid Anu

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
~চিঠি: ০৯

প্রিয় সমুদ্র,

এ নামটি আমারই দেওয়া, তোমাকে আমার সমুদ্রের মতোই বিশাল মনে হতো। যার বিশালতায় ডুবে থাকতে চেয়েছি প্রতিটি মুহুর্তে। অনেক বছর পর আজ চিঠি লিখছি তোমায়, একসময়কার নিত্য অভ্যেস আজ হারিয়েই গেছে বলতে পারো।

সেই প্রথম প্রেমের দিনগুলো বেশ রঙিন ছিল আমাদের। তুমি বলেছিলে ভালোবাসো আর আমি দিয়েছিলাম শর্ত! “রোজ আমাকে নতুন নতুন এক একটা কবিতা লিখে দিতে হবে। ” তুমিও খুব সহজ ভাবেই মেনে নিয়েছিলে সে কথাখানি, কাব্যিক মানুষ ছিলে, না মেনে কি আর উপায় ছিল! তোমার দেওয়া সেই সকল কবিতাগুলি আমার ঝুলিতে আজও তেমন ভাবেই সংগ্রহীত রয়েছে। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছি তা নিজের সাথে, একদম ধুঁলো জমতে দেয়নি।

যখন অধিকারবোধ তীব্র হতে শুরু করলো তুমিও আমার কাছে দাবি জানলে চিঠি লিখতে হবে তোমার ঠিকানায়। আমি যদিও সাহিত্যের কিছুই বুঝতাম না, তবুও কেন জানি তোমার কবিতার পাগলী ছিলাম। আমিও রাজি হয়ে গেলাম, সেই থেকেই শুরু হলো তোমার আমার “চিঠি-কাব্যের” প্রেম। তুমি আমাকে প্রথম যে কবিতাটি লিখেছিলে মনে আছে কি তোমার? আমার কিন্তু একেবারে মুখস্ত, কি বিশ্বাস হলোনা বুঝি! প্রমাণ দিচ্ছি তবে –

“প্রেয়সী তোমার নয়নে চেয়ে
হারিয়েছি আমি শব্দ,
প্রেয়সী তোমার ও এলোকেশে
হৃদয় হয়েছে স্তব্ধ!
তোমার ও দৃষ্টের সমুখে মত্ত আমার পঙক্তি
অনল পোড়া দগ্ধ এ মনের তুমি যে শুধু প্রশান্তি।
আলতা রাঙা চরণ তোমার
শাড়ির ভাঁজেতে মোড়া অঙ্গ,
টিপ আকা ঐ কপাল মাঝে
ওষ্ঠ আমার দিতে চায় তোমা সঙ্গ,
বুক মাঝারে রাখবো বেঁধে
দেবনা কভু হারিয়ে যেতে!
আমার এ জীবনসুতো বাঁধবো প্রেয়সী
শুধুই তোমার জীবন সাথে!”

কি অবাক হচ্ছো! এতো বছর ধরে কত শত বার পড়েছি এ কবিতাখানি, মুখস্থ তো হওয়ারই ছিল। সংসার সাজাতে গিয়ে, একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে গেছি, তোমার সাথে একলা সময় পার করা যেন হয়েই ওঠেনা আর। তবুও আমি জানি ভালোবাসা, বিশ্বাস, আস্থা, কোনোটাই আজো কমেনি তোমার আমার মাঝে।

দিনশেষে এখনো আমার তিনবেলার খাওয়ার খোঁজ তুমি আগের মতোই নাও। মাঝে মাঝে নাতি নাতনিরা কতো হাসি ঠাট্টা করে বলে “দাদু দেখি এখনো খুব রোমান্টিক। ” তোমাকে কতো বারণ করেছি বাচ্চাগুলোর সামনে এসব না বলতে, তুমি তো শোনার মানুষ নও উল্টো তুমি বলবে “ভালোবাসি যখন প্রকাশ করতে বয়সের কি বাঁধা আছে? কথা দিয়েছিলাম একসাথে বুড়ো-বুড়ি হবো, বয়স বেড়েছে বলে কি ভালোবাসার প্রকাশ কমে যাবে নাকি আমার। ” তখনই বুঝতে পারি তুমি আজো সেই বাচ্চাটি রয়ে গেছো।

এখনো তুমি নিয়ম করে বাজার থেকে আমার জন্য হলুদ গোলাপ নিয়ে আসো, মাঝে মাঝে তো তা দেখে বৌমারা ছেলেদের সাথে ঝগড়াঝাটি শুরু করে দেয়, তাদের কথা ” বাবা এখনো মায়ের জন্য গোলাপ আনে, আর তোমরা সারাদিন কাজ নিয়ে পড়ে থাকো। ভালোবাসার বালাই নেই একেবারে। ” আমার কিন্তু সেসব ভালোই লাগে। আমার জীবনের রঙধনু ছিলে তুমি, সবসময় রঙের মেলায় সাজিয়েছো আমাকে, সারাজীবন আমি তোমার সে রঙেই সেজে থাকতে চায়।

এখন চুলে পাক ধরেছে তবুও আমি রঙিন স্বপ্ন বুণি। সে স্বপ্ন যে তুমিই আমায় দেখতে শিখিয়েছো। আজ তুমি যতই আমাকে একা রেখে ঘুমিয়ে থাকোনা কেন, আমি যে চোখ বুজে, চোখ খুলে সবসময়ই তোমাকে সমুখে দেখতে পাই।

হয়তো আর কিছুমাত্র অপেক্ষা, তারপরই তো আবারও আমি তোমার বুকে মাথা রেখে শান্তির ছোঁয়াতে রাঙাবো নিজেকে।

ইতি
“তোমার ভালোবাসার নীড়”

প্রিয়…আকাশ – Tamanna Akter

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা-২০২০
চিঠি নং-৩

প্রিয়………আকাশ,
তুমিতো সেই আকাশ যাকে শত সহস্র প্রেমিক/প্রেমিকা ঠিকানাহীন প্রিয়কে উদ্দেশ্য করে তোমায় চিঠি লিখে।যার শ্রুভ্রত ধোঁয়াটে মেঘের আড়ম্বরে
নিলক ছটায় নিলাদ্র খামে দেখা মেলে।যাতে লেখা থাকে ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ।সেই শহস্র প্রেয়সীর ক্ষুদ্রমনা এক প্রেয়সী মন আমি তোমায় চিঠি লিখছি।

জানো আকাশ তোমার অই বিশালতার পালঙ্কে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়। ইচ্ছে হয় বরিষের ঘন দেয়া ফটিকজলের রিমিঝিমি শব্দতে অনামিক অনূভুতি এর পরপরই, হারিয়ে যাই মুক্ত হাওয়ায় শান্তির সমীরন,পুলকিত চিত্তে সুখ আবেশে, যার মাঝে কলসিত কালিমার অশান্তিক পৈচাশিকতার রেশ মাএও নেই।
তোমার এক এক ঋতুতে এক এক রং নতুন নতুন প্রাণের হিল্লোল বয়ে যায়। তোমার অই রঙের বাহারেই আর বিশালতা মানব/ মানবীদের মনেও অনামিক অনূভুতির সৃষ্টি হয়।তোমার অই মন খারাপে ঘনঘটা শব্দও এক প্রকার প্রান্তকতা আছে।

গল্প, কবিতা,উপন্যাসে অন্যের বিষয়ে লেখা যত সহজ। তোমার ওই বিশালতা নিয়ে লিখা ততই কঠিন। তোমার অই বিশালতা নিয়ে লিখতে বসলে কবি তার কথা ফুরিয়ে ফেলে, লেখক তার কালি ফুরিয়ে ফেলে , আমি আর কি বা লিখবো আমিতো মহাশূন্যের নির্বাক প্রহরী তাইতো আজ এখানেই শেষ করছি।

ইতি
তোমার বিশালতায় হারিয়ে যাওয়া নির্বাক প্রহরী।
_________________________
তুলে রাখা স্বপ্ন, পাঠাই মেঘের খামে।
খুজে নিয়ো তারে,বৃষ্টি যখন নামে।
তুমি ভিজে যেয়েও সেই গল্পে,উত্তর জানিয়ো খুব অল্পে।
(সমাপ্ত)