Wednesday, July 9, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1886



বজ্জাত বর পর্বঃ ৫+৬

0

বজ্জাত_বর
পর্বঃ ৫+৬
লেখক বিলকিস

.
সকালে মিষ্টি নিচে নামতেই অবাক।দেখে সোফায়
পরশ আর পরশের বাবা মিষ্টির বাবার সাথে কথা বলছে।
মিষ্টিকে দেখে ওর বাবা বলল,
মিষ্টির বাবা: ও মিষ্টি মা এসেছিস। পরশ বলছে কি নাকি
জরুরি কথা বলবে আর সেটা তোর সামনেই বলবে।
তাই তোর জন্য অপেক্ষা করছি।তো বাবা পরশ এখন
বলতে পরো কি বলবে।
পরশ: আসলে অঙ্কেল এমন একটা কথা যা বলতে
আমারও লজ্জা করছে। কিন্তু বলতে তো হবেই।
( মিষ্টির দিকে তাকিয়ে)
মিষ্টি’ : এই অাস্তো শয়তান টা এমন কি বলতে চায় যে
এতো ভনিতা করছে, বিরক্ত ( মনে মনে বলল)
পরশ: অঙ্কেল কালকে মিষ্টি আমাকে দেখা
করতে বলে।ওর নাকি কি জরুরি কথা আছে সেটা বলার
জন্য। আমি সেখানে যাই।তারপর মিষ্টি বলল,
মিষ্টি’ : স্যার,আপনাকে আমি একটা অনুরোধ করতে
চাই। যদি রাখেন?
পরশ: কি অনুরোধ বলো।
মিষ্টি: আসলে আমি চাই আমাদের বিয়ে টা খুব তারাতারি
হয়ে যাক।আমার বাবা আর আপনার বাবা দুজনেই যখন
চাইছেন।তাহলে তারাতারি হলে দোষ কি। আর আমি
আমার বাবা কে আর কষ্ট দিতে চাই না।
পরশ: কিন্তু মিষ্টি
মিষ্টি’: স্যার, কোন কিন্তু নয়।আপনি কাল সকালে বাবার
সাথে কথা বলে এক সপ্তাহের মধ্য বিয়ের তারিখ ঠিক
করুন।
পরশ: ঠিক আছে,তুমি যখন বলছো তাই হবে। ( সব
মিথ্যা কথা)
পরশ’ : তাইতো সকাল সকাল আমি আর বাবা এখানে
চলে আসলাম।
এদিকে মিষ্টিতো পরশের কথা শুনে অজ্ঞান হওয়ার
পথে।
পরশ মিষ্টির মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি
হাসছিলো।হঠ্যৎ করে মিষ্টি বলল,
মিষ্টি: কিন্তু বাবা
পরশ বুঝতে পারলো মিষ্টি বেঘরা দিতে চাইছে তার
আগের সামলাতে হবে।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*

পরশ: অঙ্কেল,মিষ্টি নিজের বিয়ের কথা বলতে
লজ্জা পারচ্ছে।
মিষ্টির বাবা: এটাতো ভালো কথা। এতে লজ্জা পাওয়ার
কি আছে।ঠিক আছে তোমরা উপরে গিয়ে কথা
বলো আমি আর আফজাল( পরশের বাবা) তোমাদের
বিয়ে তারিখ ঠিক করছি।
এদিকে মিষ্টি রাগে ফোস ফোস করছে।আর
পরশকে মনে মনে আস্তো শয়তান, ইদুর,
ডাইনাসোর, এনাকুন্ডা বলে গালি দিচ্ছে।উপরে গিয়ে
মিষ্টি পরশকে বলল,
মিষ্টি: আপনি এট কি করলেন।
পরশ: কেন,কি করেছি?
মিষ্টি: মিথ্যা বললেন কেন?
পরশ’: আমি কোন মিথ্যা বলিনি,তুমি তো আমাকে
বললেই পারতে যে তুমি আমাকে তারাতারি বিয়ে
করতে চাও।কাল ওই কাহিনী না করলেও পারতে।
আর হ্যা একটা কথা মনে রেখো তুমি যদি বুনো ওল
হও আমি তাহলে বাঘা তেতুল।
তারপর মিষ্টিকে একটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে চলে
আসলো।
এদিকে মিষ্টিতো চিন্তায় পরে গেল।নাহ কিছু একটা
তো করতেই হবে।যে ভাবেই হক বিয়েটা
আটকাতেই হবে……( চলবে)
বজ্জাত বর
লেখক বিলকিস
র্পব ৬
বিছানা থেকে ফোন তুলে মিষ্টি বন্ধুদের কাছে কল দিলো।মিষ্টি বন্ধুদের কে বিকালো ওর বাড়িতে আসতে বললো।বিকালে মিষ্টির বাড়ির কলিং বেল বাজতে মিষ্টির বাবা দরজা খুলে দিলো।
মিষ্টির বাবা: ও তোমরা, ভিতরে এসো।
মিষ্টির বন্ধুরা: আঙ্কেল, মিষ্টি কোথায়?
মিষ্টির বাবা: মিষ্টি ওর ঘরেই আছে।তোমরা উপরে যাও।
বন্ধুরা মিষ্টির ঘরে গিয়ে বলল,
মিষ্টির বন্ধুরা: কি রে তুই, বিকালে তোর বাড়িতে আমাদের আসতে বললি কেন।
মিষ্টি: বলছি, তোরা আগে ভিতরে আয়।
মিষ্টির বন্ধুরা ঘরে ভিতরে ঢুকার পর।মিষ্টি ওর ঘরে দরজা বন্ধ করে দিলো।
মিষ্টির বন্ধুরা: ঘরের দরজা বন্ধ করছিস কেন?
রুমি( মিষ্টির বন্ধু): কি হয়েছে তোর
মিষ্টি: সর্বনাশ, হয়েছে।
রুমি( মিষ্টির বন্ধু): কি সর্বনাশ?
মিষ্টি: ওই( পরশ) শয়তান, এনাকুন্ডা, ডাইনাসোর টা সকালে বাড়িতে এসে বাবাকে মিথ্যা বলে এক সপ্তহের মধ্যে বিয়ে ঠিক করেছে।
মিষ্টির বন্ধুরা: এ্যা
মিষ্টি: হ্যা এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। এর জন্য তোদেরকে বড়িতে আসতে বলেছি।এখন তোরা একটা উপায় বের কর যাতে ওই এনাকুন্ডাটা নিজের থেকে বিয়েটা ভেঙ্গে দেয়।
মিষ্টির বন্ধুরা: তুই বড় চিন্তায় ফেলে দিলি।
মিষ্টি: তোরা আমার বন্ধু। আর বন্ধুর জন্য একটা উপায় বের করতে পারবি না।
আকাশ( মিষ্টির বন্ধু): আমাকে একটু ভাবতে দে।
মিষ্টি: পেয়েছিস
আকাশ( মিষ্টির বন্ধু): পেয়েছি
মিষ্টি: কি পেয়েছিস
আকাশ( মিষ্টির বন্ধু): স্যারকে ভুতের ভয় দেখা তে হবে।
মিষ্টি: মাথা মোটা গন্ডার তোর এই বুদ্ধি কোনো কাজে আসবে না। অন্য কিছু ভাবতে হবে।আমি একটা উপায় ভেবেছি।
মিষ্টির বন্ধুরা: কি উপায়?
মিষ্টি: তাহলে, শোন
সকালে মিষ্টি ঘুম থেকে ওঠে নিচে নামতে মাথা ঘুরে পরে যায়।মাথা ঘুরে পরে যাওয়াতে মিষ্টির বাবা মিষ্টিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।ডাক্তার মিষ্টিকে ইনজেরশন দিবে তখন মিষ্টি চোখ খুলে ডাক্তারকে বলে,আমার কিছু হয়নি।
ডাক্তার: তুমিতো মাথা ঘুরে পরে গিয়েছিলে তাই ইনজেরশন টা দেওয়া টা খুব দরকার।
মিষ্টি: ডাক্তার আঙ্কেল, আসলে বাবা আমাকে একটা মদ, গাজা, ইয়াবা খায় এমন ছেলে সাথে বিয়ে দিচ্ছে। আমি যদি এমন ছেলেকে বিয়ে করি তাহলে আমাকে মেরে ফেলবে।আপনি বলুন এমন ছেলেকে বিয়ে করা উচিত।তাই আমি মাথা ঘুরা নাটক করেছি। আপনি এখন শেষে ভরসা বিয়ে টা ভাঙ্গতে। please আঙ্কেল আপনি আমাকে সাহায্য করুন।
ডাক্তার: কি করতে হবে আমাকে?
মিষ্টি: তেমন কিছু করতে হবে না।শুধু বাহরে যেয়ে বলবেন আমার বড় রোগ হয়েছে।
ওদিকে মিষ্টির বাবা পরশকে ফোন দিলো।
পরশ: হ্যালো, আঙ্কেল, কেমন আছেন।
মিষ্টির বাবা: বাবা তুমি এই মুহূতে হাসপাতালে আসতে পারবে।
পরশ: কেন,আঙ্কেল কি হয়েছে।
মিষ্টির বাবা: মিষ্টি সকালে মাথা ঘুরে পরে যাওয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তুমি তারাতারি এসো।
পরশ দেরি না করে গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে চলে আসলে।
মিষ্টির বাবা: এসেছো বাবা
পরশ: ডাক্তার কি বলেছে আঙ্কেল?
মিষ্টির বাবা,: কিছু বলেনি
পরশ : ওইতো ডাক্তার, ডাক্তার কি হয়েছে মিষ্টির?
ডাক্তার: মিষ্টির অনেক বড় রোগ হয়েছে ক্যান্সার
ক্যান্সারে কথা শুনে পরশের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পরলো।পরশ ডাক্তার কথা না বলে মিষ্টির কাছে ছুটে গেলো।পরশ গিয়ে দেখতে পাই মিষ্টি মন খারাপ করে শুয়ে আছে।পরশ মিষ্টির কাছে গিয়ে মিষ্টির হাতটা ধরলো।পরশ কি বলবে ভেবে পারছিনা।
মিষ্টি: I am sorry sir
পরশ: sorry কেন?
মিষ্টি: স্যার আমি আপনাকে অনেক জ্বালিয়েছি তাই ক্ষমা চাইছি।আমি আর কয়দিন বাঁচবো জানি না বলে মিষ্টি কেদে ফেললো।স্যার আমার একটা শেষে কথা রাখবেন।
পরশ: কি কথা
মিষ্টি: স্যার আপনি একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিবেন।
পরশ কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে আসলে।পরশ রুম বের হওয়া ওর মিষ্টির বন্ধুরা বললো
মিষ্টির বন্ধুরা: তুই যা অভিনয় করতে পারিস।স্যার কিছু বুঝতেই পরলো না। তোকে সেরা অভিনেএী পুরষ্কার দেওয়া উচিত।
মিষ্টি: আজ আমার খুর আনন্দ হচ্ছে। আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছে।ভাবছি একটা র্পাটি দেবো বলেই দরজার দিকে তাকাতেই…………
( চলবে)

বজ্জাত বর পর্ব: ৩+৪

0

বজ্জাত_বর
পর্ব: ৩+৪
লেখক: বিলকিস

পরশ: yes, come in ( মিষ্টির দিকে তাকিয়ে, ও তুমি কি ব্যাপার আমাকে না দেখে থাকতে পারছোনা)
মিষ্টি: মোটেও না।
পরশ: হুম বুঝতে পেরেছি।
মিষ্টি: কি বুঝতে পেরেছেন।
পরশ: তোমাই বলবো কেনো।
মিষ্টি: স্যার আপনও গতদিনে বাবাকে মিথ্যা বললেন কেনো।
পরশ: কোন মিথ্যা।
মিষ্টি: ওই যে আপনি বাবাকে, বললেন আমি বিয়েতে রাজি।
পরশ: কেনো তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না।
মিষ্টি : না স্যার, আমি যদি আপনাকে বিয়ে করি, তাহলে ওদের কি হবে।
পরশ: ওদের মানে
মিষ্টি: মানে আমার বয়ফেন্ড স্যার। পরশ: ও
মিষ্টি: স্যার আপনাকে একটা সত্যো কথা বলি
পরশ: কেনো, তুমি মিথ্যা কথা বলো।
মিষ্টি: না,মানে স্যার
পরশ: কি যেনো বলবে
মিষ্টি : আসলে স্যার আপনে কাউকে বলবেন না।
পরশ: ok বলবো, না
মিষ্টি: দরজার চারপাশে তাকিয়ে,ফিস ফিস করে স্যার আমার না একশত টা বয়ফেন্ড আছে।
পরশ: তাই
মিষ্টি: হ্যা, স্যার এখন যদি আমি আপনাকে বিয়ে করি। তাহলে ওরা খুব কষ্ট পাবে।আপনি বলুন স্যার ওদের কষ্ট দেয়া কি ঠিক
পরশ: মোটেই ঠিক না। আচ্ছা তুমি একটা তোমার একশতো বয়ফেন্ডের নাম লিখো।
মিষ্টি: মনে মনে বললো, ঔষুধে কাজ হয়েছে।স্যার লেখছি।
পরশ: তোমার একশতো বয়ফেন্ডের নাম কি।
মিষ্টি: আকাশ, স্যার
পরশ: ও,তুমি একটা কাজ করো, একশতো এক নাম্বার বয়ফেন্ডের নাম টা লিখো।
মিষ্টি: এ্যা
পরশ: এ্যা না হ্যা
বলে পরশ মিষ্টি দিকে এক পা এগুচ্ছে আর মিষ্টি এক পা করে পিছাচ্ছে।এক সময় মিষ্টি দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলো।পরশ মিষ্টির খুব কাছে এসে বললো,
পরশ: একশতো এক নাম্বার বয়ফেন্ডের নাম জানবে না।
মিষ্টি: কি.. কি নাম স্যার, ( কাপো কাপো গলায়)
পরশ: আরফিন পরশ
মিষ্টি: এ্যা মা..মা… মানে
পরশ: মানে কিছুই না। তুমি তোমার একশোটা বয়ফেন্ড কে ছাড়তে পারবেনা আর আমি তোমার ছাড়তে পারবো না।
তুমি ওদের সাথে প্রেম করবে আর আমি তোমার সাথে প্রেম করবো।পরে বিয়ে
বলে,মিষ্টি ঠোঁটের আলতো করে চুমু খেলো।
মিষ্টি: এটা ঠিক হচ্ছেনা স্যার।
পরশ: কোন টা ঠিক হচ্ছে না
মিষ্টি: স্যার আপনি খুব খারাপ। ( আস্তো একটা শয়তান,ইদুর,এনাকুন্ডা) বলে রুম থেকে বের হতেই পরশ পেছন থেকে ডাক দিলোবললো
পরশ: এভাবে রাগ করতে হয় না। আর তোমাকে এই বিদেশি পোশাকে মানায় না। একটু ভালো পোশাক পরে আসবে।বলে হাসতে লাগলো
এদিকে মিষ্টি রাগে রাগে ক্লাস রুমে এসে বললো আস্তো শয়তান এনাকুন্ডা,ইদুর । না এই শয়তানটাকে অন্যভাবে শাস্তি দিতে হবে।পেছন থেকে রুমি এসে বললো,
রুমি: কি রে এতো রাগ করছিস কেনো।আর কাকে শয়তান বলছিস।
মিষ্টি: কে আবার স্যার। আমাকে বলে তোমাকে এই বিদেশি পোশাকে একটু মানায় না। একটু ভালো পোশাক পড়তে পারো না।
রুমি: এজন্য তুই রাগ করছিস। আমার মনে হয় স্যার ঠিক বলছে।
বলতে পরশ ক্লাস রুমে ঢুকে সবাই যার যার জায়গার চলে যাই।পরশ মিষ্টি দিকে তাকাতে দেখতে পাই মিষ্টি রাগে ফুলছে।
পরশ: তোমরা ২০০ পৃষ্টা এক নাম্বার অংকটা করো।সবাই অংক করছে।হঠাৎ করে পরশ খেয়াল করেতে মিষ্টি দিকে যাই।
পরশ: কি করচ্ছো এটা।
মিষ্টি: ছবি আকছি
পরশ: আমি তো ছবি আকতে বলি নাই অংক করতে বলছি।( রাগী গলায়)
মিষ্টি কিছু না বলে দাড়িয়ে রাইলো
পরশ: হাত পাতো।
মিষ্টি হাত পাততে পরশ মিষ্টির হাতে বেতের বারি দিলো। মিষ্টি চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলে।ক্লাস শেষ করে মিষ্টি বন্ধুদের কথা না বলে চলে গেলো।রাতে পরশ মিষ্টির বাবাকে ফোন দিলো।
পরশ: আসসালামু আলাইকুমআঙ্কেল।কেমন আছেন।
মিষ্টি বাবা:সালামের উওর দিয়ে আমি ভালো আছি বাবা। তুমি কেমন আছো।
পরশ: আমি ভালে আছি আঙ্কেল। আঙ্কেল মিষ্টি আছে।
মিষ্টির বাবা: ওতো এখানে নেই বাবা। আজ কলেজ থেকে ফিরে এসে কেনো কথা না বলে ঘরে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছে। কেনো দরকার বাবা। দরকার হলে বলো আমি মিষ্টিকে ডেকে দেই।
পরশ: না আঙ্কেল ডাকার দরকার নেই বলে ফোন কেটে দিলো।
পরেদিন পরশ মিষ্টির বন্ধুদের কাছ থেকে মিষ্টির কথা জানতে চাইলো। মিষ্টির বন্ধুরা বললো, কাল ক্লাস বের হওয়া পর আমাদের সাথে আর কথা হয় নি। পরশ আর কিছু না বলে আফিস রুমের দিকে যেতেই মিষ্টি কে দেখতে আবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো( চলবে)……….
বজ্জাত বর
লেখক: বিলকিস
পর্ব ৪
মিষ্টির দিকে তাকিয়ে যেনো চোখ ফেরাতে পারছে না পরশ।নীল রঙের থি- প্রিচ, খোলা চুল,কপালে ছোটো নীল রঙের টিপ,হাতের নীল চুড়ি,ঠোঁটে হালকা লিপিষ্টক সব মিলিয়ে যেনো মনে হচ্ছে আসমান থেকে এক নীল পরি নেমে এসেছে।মিষ্টি পরশের সামনে দিয়ে বন্ধুদের কাছে চলে গেলো।পরশ কিছু না বলে এপ পলকে তাকিয়ে আছে মিষ্টির দিকে।
মিষ্টির বন্ধুরা: তুই দেখছি কলেজে সবাই কে তাক লাগিয়ে দিয়েছিস।
মিষ্ট: সত্যি বলছিস।
মিষ্টর বন্ধুরা: হ্যাঁ, তিন সত্যি। আমরা তো কখনো এই পোশাকে দেখিনি।আজ হঠ্যৎ করে এই পোশাক কি ব্যপার।
মিষ্টি’ পরশের দিকে তাকিয়ে, কেউ আমাকে বলেছিলো যে, আমাকে নাকি বিদেশি পোশাকে মানায় না। তাই আমি ঠিক করলাম, আজ থেকে আর বিদেশি পোশাক পরবো না।
মিষ্ট বন্ধুদের কথা বলছিলো আর পরশের দিকে খেয়াল করছিলো যে পরশ তাকিয়ে আছে কি না। পরশ কিছু কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ওখন থেকে চলে গেলো।
রুমি: তুই এই দিকে আয়।
মিষ্ট: কেনো?
রুমি: তোকে স্যার একবার বললো, আর অঙ্কেল তোকে কতোদিন বলেছে, এসব পোশাক পড়তে তুই কখনো পরিছিস নি। আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। কি চলছে তোর মাথায়
মিষ্টি: বাংলাতে এক প্রবাদ বাক্য আছে, সোজা আাঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুলে টা কে বাকা করতে হয়।আর তুই বাদ দে এসব কথে, চল ক্লাসে যাই।
ক্লাস রুমে যেতেই, পরশ ক্লাসের ঢুকলো।
পরশ: তোমরা,এই অংকের solution বের করো। পরশ এক পলকে মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষন পর মিষ্টি।
মিষ্টি: স্যার, স্যার কি দেখছেস এই ভাবে।
পরশ: কিছু না।
মিষ্টি: স্যার আমার solution হয়ে গেছে।
বলতে পরশ যেনো, আর একটু বেশিই আবাক হলো। যে মেয়ে কখনো solution তো দুরে থাক। অংকো কখনো তাকিয়ে দেখেনা। সে আজ সবার আগে solution বের করে ফেললো।
মিষ্টি’ স্যার
পরশ: হুম
মিষ্টি: স্যার, খাতা। ও দাও।
ক্লাস শেষ করে পরশ তার আফিস রুমে বসে আছে। এমন সময়
মিষ্টি: MAY I COME IN SIR
পরশ: COME IN
মিষ্টি রুমের ঢুকে পরশের সামনে গিয়ে দাড়ালো।
মিষ্টি : আমাকপ কেমন লাগছে স্যার।
পরশ: ভালো
মিষ্টি’ শুধু ভালো।
পরশ: চেয়ার থেকে মিষ্টির খুব কাছে গিয়ে। আমার মিষ্টি হবু বউটাকে সত্য আজ খুব মিষ্টি লাগছে।বলে চুমু দেতে যাবে তখন
মিষ্টি: স্যার, কি করছেস?
পরশ: কি আর করছি। আমার বউকে আদর করছি।
আর আমার হবু বউটা এতো লক্ষী হবে বুঝতেই পারি নি। যে কখনে থি-প্রিচ পরেনি সে আমার এক কথা তে রাজি হয়ে গেলো। এর মধ্যকেনো রহস্য গন্ধ নেই তো।
মিষ্টি: স্যার, কেনো রহস্য গন্ধ নেই। আসলে আমি সারারাত ভেবে দেখেছি স্যার। আপনার মতো এতো ভালো বর আর পাবো না। এছাড়া বাবার চাই আমি আপনানে বিয়ে করি। তাই আজ থেকে আপনি যা বলবেন আমি তাই শুনবো।
পরশ: সত্যি।
মিষ্টি: তিন সত্যি। স্যার একটা অনুরোধ ছিলো।
পরশ: কি অনুরোধ।
মিষ্টি: স্যার, আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে একটা র্পাটির আয়োজন করেছি।
পরশ: কিসের র্পাটি
মিষ্টি : তেমন কিছু না স্যার। সবাই মিলে একটু মজা,গান বাজনা, খাইদাই হবে আর কি।
পরশ: ও
মিষ্টি : স্যার আপনে যদি র্পাটিতে যান। তাহলে আমার খুব ভালো লাগবে। যাবেন তো স্যার।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*

পরশ: আমার হবু বউ যখন invite করছে। আমাকে তো
সেখানে যেতেই হবে।
মিষ্টি: সত্যি, যাবেন তো।
পরম: সত্যি যাবে। কোথায় হবে তোমাদের র্পাটি।
মিষ্টি : ( জাহান্নামে,মনে মনে বললো) স্যার আপনাকে sms মধ্য দিয়ে জানিয়ে দেবো।
পরশ: ok
মিষ্টি: তাহলে এখন আসি। সন্ধ্যায় দেখ হচ্ছে।
বলে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে দরজায় সামনে দিকে চলে যেতেই পরশকে ডাকলো
মিষ্টি: সন্ধ্যার কিন্তু স্যার। বলে হাসি দিলো। আর মনে মনে বললো আসুন না স্যার আপনার একটা surprise রয়েছে।
মিষ্টি চলে যেতেই পরশ ভাবছে,এই মেয়ে এতো তাড়াতাড়ি সুধরাবার না। কিছু একটা চলছে মাথায় মধ্য। যাই হক, যা হবে তা পরে দেখা যাবে।
সন্ধ্যায় পরশ রেডি হচ্ছে, এমন সময় পরশে ফোনের একটা sms আসলো। sms লেখা ছিলো ( স্যার আপনি রেডি হয়ে পাঁচ মাথাশ চলে আসুন) পরশ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে গাড়ি নিয়ে পাঁচ মাথায় মোড়ে আসতেই পরশের ফোনের আর একটা sms আসলো( স্যার আপনি ওখন থেকে এক কিলোমিটার এগিয়ে বা দিকে একটা চায়ে দোকান আছে সেখানে আসুন) পর শ গাড়ি নিয়েচায়ের দোকানে সামনে আসতেই। আর একটা sms আসলো ( স্যার আপনি ডান দিকে একটু এগিয়ে বা দিকে একটা শিমুল গাছ আসে সেখানে আসুন) পরশ গাছের নিচে আসতেই আর একটা sms আসলো( স্যার আপনি গাড়ি নেমে চল্লিশ সামনে আসলে একটা সাদা রঙের বাড়ি দেখতে পাবেন। বাড়িতে আমাদের র্পাটি হচ্ছে।
পরশ চল্লিশ এগিয়ে বাড়ির সামনে আসলো। বাড়ির কলিং বেল বাজালো কিন্তু দরজা খুলছে না। কয়েকবার বাজালো কিন্তু কেউ দরজা খুললো না। পরশ নিজের দরজার ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো।পরশ বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পাই। পুড়া বাড়ি অন্ধকার। অন্ধকারের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। পরশ বাড়ির ভিতরে ঢুকে ই
পরশ : মিষ্টি মিষ্টি কোথায় তুমি
বলতে একটা ধাক্কা খেলো। তখন পুরা বাড়ির লাইট জ্বলে ওঠতে পরশ দেখতে পাই সে পুরা সাদা হয়েছে। হঠ্যৎ উপর থেকে হাসির শব্দ শুনতে পরশ উপর দিকে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি।
পরশ: কি করলে এটা।
মিষ্টি: বেশ করেছি। আমাকে বিয়ে করার শখ তাই না। আজকে শখ মিটিয়ে দিলাম বলে চলে যেতেই পরশ পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো
পরশ: Thanks, আর বিয়ে শখ টা মিটিয়ে দিলে না বরং বাড়িয়ে দিলে।
মিষ্টি কিছু না বলে চলে গেলো।এদিকে পরশ বাড়িতে ফেরতে পরশের বাবা বললো।
পরশের বাবা: কি রে তোর এই অবস্থা কে করলো।
পরশ: কে আবার, তোমার বউমা। বলে উপরে চলে গেলো।
কিছুক্ষন পর পরশ নিচে নেমে বাবাকে বললো,
পরশ: বাবা, কাল সকাল সকাল রেডি হয়ে থেকো তো এক জায়গাই যাবো।
পরশের বাবা: কোথায় যাবি?
পরশ: এতো প্রশ্ন করো না তো। তোমাকে রেডি হয়ে থাকতে বলেছি তুমি রেডি হয়ে থাকে।
বলে পরশ নিজের রুমে চলে গেলো।
পরদিন সকালে মিষ্টি ঘুম থেকে ওঠে নি

বজ্জাত বর পর্ব ১+২

0

বজ্জাত_বর
পর্ব ১+২
লেখক: বিলকিস

কি রে মা কোথায় তুই। এই তো বাবা আসছি। ডাকছিলে কেনো। তুই করিম চাচার বউকে কি বলেছিস। কেনো করিম চাচা কেকি বলেছি। বলেছি তোমার বর আর একটা মেয়ে সাথে প্রেম করেছে তাই। কেনো এতো মিথ্যা বলিস মা। তোর নামে দিন গেলে হাজারটা নালিশ আছে। রেডি হয়ে এসেছিস। কোথায় যাচ্ছিস। কলেজে বাবা। আজ তোর কোথায়ও যাওয়া হবে না। কেনো বাবা। আমার বন্ধু ও তার ছেলে আসবে তোকে দেখতে। বাবা আমার কলেজ যাওয়াটা খুব দরকার।বলে চলে গেলে পিছন থেকে যাচনা মা মিষ্টি।এই মেয়ে নিয়ে আর পারি না। এরার ভালোভালো বিয়ে দিলেই আমি বাচি
এদিকে মিষ্টি রাস্তাট মোড়ে দাড়িয়ে আছে। পিছন থেকে এই য়ে শুনছেন।এই কলেজটা কোন দিকে। মিষ্টি তাকিয়ে দেখে মনে মনে বলে( এতো আমার কলেজে নাম মেয়ে পটাতে যাচ্ছে দ্বারা যাওয়াছি)
আপনি তো ভুল রাস্তার এসেছেন। কলেজটা এদিকে নয়। আপনি সামনে যেয়ে বা দিক থেকে একটু দুরে ডান দিকে একটা নদী আছে। নদী পরে কলেজ। oh tkanks
মিষ্টি: ঠিক আছে বলে চলে গেলো। কিছু দূর যাওয়া পর। এইয়ে কলেজটা কোন দিকে। আরে ভাই আপনেতো ভুল রাস্তা এসেছন। কি কিন্তু একটা মেয়ে বললো কলেজটা এই দিকে। আপনি মিষ্টি সাথে দেখা হয়েছিলো। মিষ্টি কে। আপনে এই এলাকার নতুন। হ্যা তাহলে কিছুদিন থাকুন বুঝতে পারবেন মিষ্টি কে ( এই মেয়ে যদি একশতটা কথা বলে তার মধ্য নিরানব্বইটা মিথ্যা থাকে) আপনি বরং রিক্সা ধরে ওই রাস্তা দিয়ে চলে যান। এই দিকে মিষ্টি কলেজে যেয়ে বন্ধদের বলছে
মিষ্টি: এই তোরা জানিস আজ কি হয়েছে
বন্ধরা: কি হয়েছে বলবি তো
মিষ্টি: আমি রাস্তার দারিয়ে আছি এক ভদ্রা লোক এসে বললো। এয়ে শুশন এই ঠিকানাটা কোথায় বলবেন। ঠিকানায় দেখি য়ে আমাদের কলেজে নাম। আমি মিথ্যা বলে নদীর ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছি। লোকটার সাহস কতো মেয়ে পটাতে আসবে। আমি এই কলেজে থাকতে আমি যতদিন প্রেম না করবো কোউকে প্রেম করতে দিবো না। বলতে প্রিন্সিপল স্যার ঘরে ঢুকলো।
স্যার : good morning
তোমরা হয়তো জানো তোমাদের নতুন স্যার আসার কথা। তোমরা আজ নতুন স্যারকে দেখতে পাবে বলেতে স্যার: পরশ ভিতরে এসো।
ভিতরে ঢুকতে মিষ্টির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো
মিষ্টি: এ কি এতো রাস্তা মোড়ে দেখা ভদ্র লোকটা। এখন কি হবে
প্রিন্সিপল: তুমি ছাএছএী সাথে পরিচয় হও আমি আসছি
পরশ: ok স্যার
সবাই দাড়িয়ে কেনো বসো। আমি আমার পরিচয় দেই। আমি আরফিন পরশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে accounting নিয়ে পড়াশুনা করেছি। আর তোমাদের accounting পড়াবো। এখন তোমরা তোমাদের পরিচয় দাও। প্রথমে তুমি, আমি সাগর,আকাশ, রানা, বৃষ্টি, কনা,রুমি………… সবোশেষ এইয়ে তুমি বলতে মিষ্টি।আমার নাম মিষ্টি
পরশ: তুমি সেই মেয়ে টা না, যে আমাকে মিথ্যা বলে নদী ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছিলে।
মিষ্টি: আমি কেউ না তো আপনার সাথে আমার দেখা হয়নি স্যার।আপনার হয়তো ভুল হচ্ছে। আমি খুব ভদ্রা মেয়ে স্যার।
পরশ: এতো বড় ভুল হবে আমার সেই জামা সেই কন্ঠো
মিষ্টি: স্যার
পরশ: তোমরা এখন বইয়ে পড়া বের করো।
ক্লাস শেষ করে পরশ চলেগেলো। পরশ যেতেই মিষ্টি জোরে জোরে হাসছে
রুমি: এতো জোরে হাসছিস কেনো
মিষ্টি: তোদের কে বলছিলাম আজ আমি মিথ্যা বলে একজনকে নদীর ওপারে পাঠিয়েছি। সে আর কেউনা এই নতুন স্যার
আকাশ: কি বলছিস
মিষ্টি : সত্যি বলছি
রুমি: মিষ্টি পিছনে তাকিয়ে ভয় পেয়ে স্যার আপনি কিছু বলবেন
পরশ: না আমার কলমটা ফেলে রেখেগিয়েছিলাম সেটা নিতে আসছি
মিষ্টি: ও এই নিন স্যার আপনার কলম।
রুমি: স্যার সব শুনে ফেলেছেরে
মিষ্টি: শুনলে শুনেছে।
বিকেলে মিষ্টির বাড়ি কলিং বেল বাজতেই মিষ্টি বাবা দরজার খুলতে ( তোমরা এসেছো আসতে কেনো কষ্ট হয়নি তো)
পরশ: সালাম করে। না আক্কেল আমদের আসতে কষ্ট হয়নি
বাবা,: এসো ভিতরে এসো। বসো এখানে বাবা।
রহিমা চা মিষ্টি নিয়ে আয়। আর উপর থেকে মিষ্টিকে ডেকে নিয়ে আয়।
পরশ: মিষ্টি
বাবা: হ্যা বাবা আমার মেয়ে যার কথা তোমার বলেছিলাম। আমার মেয়ে টাকে তুমি পারো মানুষ করতে। আমি আর পারছিনা প্রতিদিন ওর সম্পরকে নালিশ শুনতে শুনতে আমি হয়রান। এবার তোমার হতে দিতে পারলে আমি বাচি।
পরশ: আক্কেল আমি কি আপনার বাড়িটা ঘুরে দেখতে পারি।
বাবা: পারে তুমি ঘুরে দেখো।
পরশ: বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে এক সময় পরশ মিষ্টি ঘরে সামনে এসে দেখতে পায় য়ে মিষ্টি গানের সাথে ড্যান্স করছে।
মিষ্টি ড্যান্স করতে করতে স্যার দেখতে পায় কিন্তু সেটা কল্পনা মনে করে ছেরে দেই। আবার ড্যান্স করতে করতে আবার দেখতে পায়
মিষ্টি: এবার ড্যান্স থামিয়ে ভালো করে দেখে না এতো কল্পনা না সত্যি সত্যি স্যার এসেছে বলে এক চিৎকার দিতে পরশ মিষ্টি মুখ চেপে ধরতে দুজনে বিছানাতে পরে যাই।
( চলবে)…………
বজ্জাত বর
লেখক বিলকিস
পর্ব ২
দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মিনিট দশ পর মিষ্টি পরশের হাতের কামুর দিতে
পরশ: এ্যা করে মুখ থেকে হাতটা সরিয়ে নিলো।আর বললো কি করলে এটা
মিষ্টি: বেশ করেছি কামুর দিয়েছি। যে ভাবে মুখটা চেপে ধরেছেন। আর কিছুক্ষন হলে মরের যেতাম আমি।
পরশ: তাই বলে হাতে কামুর দিবে।
মিষ্টি: বেশ করেছি।
এক মিনিট স্যার, আপনি কেনো এসেছেন আমার বাড়িতে।ও বুঝতে পেরেছি বাবার কাছে নালিশ দিতে তাই না। ঠিক আছে আপনি নালিশ দিন বাবার কাছে।কারন আমি মোটেই ভয় পাই না বাবা কে।
পরশ: আমি এখানে নালিশ দিতে আছিনি।
মিষ্টি: তাহলে কেনো এসেছেন স্যার
পরশ: যদি বলি তোমায় দেখতে বলায় আগে রহিমা এসে ডাক দিলো।
রহিমা: আপা, তোমাকে খালু নিচে ডাকছে
মিষ্টি: তুই গিয়ে বল আমি আসছি।
স্যার আপনি কি যেনো বলতে চাইছিলেন।
পরশ: যা বলতে চাইছিলাম তা নিচের গেলে বুঝতে পারবে।
মিষ্টি আর কিছু না বলে নিচে চলে আসলো
মিষ্টির বাবা: আয় মা এদিকে আয়। এই আমার মেয়ে মিষ্টি।মিষ্টি তোমার আঙ্কেলকে সালাম দাও।
মিষ্টি: আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। কেমন আছেন। ভালো তো।
পরশের বাবা: আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো মা।
মিষ্টি: আমি সবসময় ভালো থাকি আঙ্কেল।
পরশের বাবা: বন্ধু তোর মেয়েটাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।এখন শুধু ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করলে বিয়ে তারিখ টা ঠিক করে ফেলবো।
মিষ্টি: কার বিয়ে বাবা, আর কার সাথে?
পরশ: পিছন থেকে বলে ওঠলো,তোমার আর আমার বিয়ে।
মিষ্টি: মানে
পরশ: বাবা আমার মিষ্টিকে পছন্দ হয়েছে।তুমি বিয়ের তারিখ ঠিক করো।
মিষ্টির বাবা: কি রে মা তোর পরশকে পছন্দ হয়েছে।
মিষ্টি বলার আগে পরশ বলে ওঠলো
পরশ: আঙ্কেল মিষ্টিরই আমাকে খুব পছন্দ হয়েছে।আমাদের দুজনের কেনো আপক্তি নেই।
মিষ্টি: কিন্তু
পরশ: কোনো কিন্তু না মিষ্টি। ( পরশ মনে মনে বললো এবার বুঝতে পারবে, পরশ কি জিনিস, পরশকে মিথ্যা কথা বলার জ্বালা)
মিষ্টি: মনে মনে বললো,আমি জানতাম আমি শুধু মিথ্যা কথা বলি। স্যার দেখছি আমার থেকেই বড় মিথ্যাবাদী।
( খাওয়া দাওয়া শেষ করে পরশ আর পরশের বাবা চলে যাওয়ার জন্য গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। পিছন পিছন মিষ্টি আর মিষ্টির বাবা আসলো।গাড়িতে ওঠার আগে পরশ মিষ্টি কানে কানে বললো
পরশ: তৈরি হও, আমি আসছি বলেই মুচকি হাসি দিয়ে গাড়িতে ওঠলো।
পরশ আর পরশের বাবা চলে যেতেই মিষ্টি বাড়ির ভিতরে এসে বললো।
মিষ্টি: বাবা আমি বিয়ে করবো না। ( রাগী গলায়)
মিষ্টির বাবা: তোমাকে এই বিয়ে করতেই হবে। আর বিয়েটা যদি না করো তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে। বলেই চলে গেলো।
মিষ্টি: বা. বাবা বাবা
এদিকে মিষ্টি রাগে ফোস ফোস করছে।কি করবে সে ভেবে পারছেনা।
মিষ্টি: না কিছু একটা করতে হবে। যে ভাবেই হক বিয়েটা ভাঙ্গতে হবে।
পিছন থেকে রহিমা এসে মিষ্টি কে বললো
রহিমা: আপা,একটা কথা বলি
মিষ্টি : কি বলবি
রহিমা: আপা, আপনাদের দুজনকে খুব মানাবে।
মিষ্টি: মার খাবি এবার ( রাগি গলায়) খুব মানাবে না মানাচ্ছি
দেখছি এই বজ্জাত স্যারের আমাকে বিয়ে করার শখ না। বিয়ের শখ একবারে মিটিয়ে দেবো। জীবনে আর বিয়ে করতে চাইবে না। আস্তো শয়তান, এনাকুন্ডা, চামচিকা,বানোর,ডাইনাসোর)
সকালে মিষ্টি ঘুম থেকে ওঠে রেডি হয়ে কলেজে চলে গেলো।বন্ধুদের সাথে কথা না বলেই সরাসরি পরশের আফিস রুমে যেতেই
মিষ্টি: MAY I COME IN SIR
( চলবে)….

কাছে_পাশে অন্তিম_পর্ব

0

কাছে_পাশে
অন্তিম_পর্ব
#Hiya_Chowdhury

রোদ জুহি কে রেকর্ড টা চালিয়ে দিয়ে জিঙ্গেস করে এটা কি? জুহি অবাক হয়ে যায়। এটা রোদ পেলো কিভাবে? জুহি খুব ভয় পেয়ে যায়। জুহি দেখতে পায় রোদ খুব রেগে গেছে।

-কি হলো কথা বলছো না কেন জুহি? আমি তোমাকে কিছু জিঙ্গেস করছি? কি এটা?

-আ… আসলে….

-তোতলাচ্ছো কেন? যা বলার সোজাসুজি ভাবে বলো।

-আসলে…..

-জুহি আসলে আসলে না করে সোজা ভাবে বলো কে এরা? তোমার কথায় এরা আমাদের কোম্পানির লস করে যাচ্ছে?

-নাআআআ কি বলছেন আপনি!

-তাহলে কার কথায় করছে? আর জুহি তুমি সব টা জেনে ও আমাকে জানালে না যে আমাদের কোম্পানিতে এতো বড় বিপদ আসছে? কেন জুহি কেন?

-বলছি আমি সব টাই বলছি। কিন্তুু আমি যা বলবো আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা সেই জন্যই আমি বলি নি আগে! আর তখন আমার ও জানা ছিলো না যে এসবের পিছনে আসল মানুষটি কে!

-বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন কেন তুলছো জুহি? তুমি যা জানো সব টা বলো। না হয় পরে আমাদের কোম্পানির আরো ক্ষতি হতে পারে!

-আসলে এসবের পিছনে শুভ্র ভাইয়া রয়েছেন!

-হোয়াট! আর ইউ ম্যাড জুহি? তুমি জানো তুমি কি বলছো?

-হ্যাঁ জানি! আর আমি এই জন্যই বলছিলাম আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা!

-শুভ্র এসব! শুভ্র এসব কেন করতে যাবে? জুহি তুমি ঠিক করে বলো!

-আমি ঠিক করেই বলছি!

তারপর জুহি রোদ কে গতকালের সেই রেকর্ড আর ফটো গুলো ও দেখায়। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এটা শুভ্র ই। রোদ ধপাস করে বেডে বসে পড়ে। তার জেনো বিশ্বাস ই হচ্ছে না। শুভ্র এসব করছে…!

যাকে নিজের আপন ভাই ভেবে আসছে সে কিভাবে পারলো এতো বড় শত্রুতা করতে! তাদের কোম্পানি তো শুভ্রদের ও! সবার সামনে এতো ভালো হয়ে শুভ্র এটা কিভাবে করতে পারলো! রোদের চোখ লাল হয়ে আছে রাগে!

রোদের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওদের সব কথা রিমি ও শুনে নেয়। রোদ রেগে নিচে চলে যায়।

-ছিঃ ভাবী শুভ্র ভাইয়া কিনা শেষে এটা করলো! ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছে!

জুহি কিছু বললো না। রোদের পিছন পিছন নিচে গেলো। রোদ জোড়ে জোড়ে শুভ্র কে ডাকার ফলে কি হয়েছে দেখার জন্য সবাই ড্রয়িংরুমে চলে আসে। সবার বুঝতে বাকি রইল না রোদ কোনো কারণে খুব রেগে আছে!

-কি হয়েছে রোদ তোর?

-নো রেসপন্স

-কিরে রোদ বলবি তো কি হয়েছে তোর?

রোদ কে সবাই জিঙ্গেস করছে কি হয়েছে! কিন্তুু রোদ কারো কথায় উওর দিচ্ছে না। জুহি আর রিমি নিচে আসে।

-ভাইয়ের কি হয়েছে জানতে চাইছো না তবে শোনো…..

অতঃপর রিমি সবাইকে বলে কি হয়েছে। শুভ্রর বাবা খুব রেগে গেছে। ছেলের এসব বাজে কাজের কথা জানতে পেরে। উনি ততক্ষনাৎ শুভ্র ফোন দিয়ে বলেন তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে। শুভ্র কে কিছু বলতে না দিয়েই ফোন কেটে দেন।

সবাই ভাবতেই পারে নি শুভ্র এমন কিছু করবে! শুভ্রর আম্মু ছেলের কু-কর্মের কথা শুনে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলেছেন।

শুভ্র বাসায় এসে দেখে সবাই ড্রয়িংরুমে বসা….

-কি ব্যাপার তোমরা সবাই এখানে? কিছু কি হয়েছে?

শুভ্রর আব্বু এসে সোজা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় শুভ্রর গাকে। শুভ্র হয়তো এটা আশা করে নি। গালে হাত দিয়ে ওর আব্বুর দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,,

-এখন বলছিস কি হয়েছে ছিহ…. তুই কিনা শেষে এতো নিচে নেমে গেলি!

-মমমমানে কককি কি বলছো আব্বু তুমি?

-তুই আমাকে আব্বু ডাকবি না। তোর মতো ছেলের আমার দরকার নাই।

শুভ্রর সামনে সবকিছু বলে ঝিমি।

-ছিহ ভাইয়া তুই এটা করতে পারলি!

শুভ্র মাথা নিচু করে আছে। শুভ্রর বাবা বলে উঠেন!

-আমি জানতাম তোর লক্ষ্য খারাপ। এই জন্যই বলিনি এই চৌধুরী কোম্পানি আমার নামে ও আছে। ভাইয়া আর আমি দুইজনের ই সমান ভাগ এই কোম্পানির। আমি জানতাম তোর খারাপ উদ্দেশ্য আছেই। সন্দেহ ছিলো আমার কিন্তুু সেটা যে সত্যি হয়ে যাবে আমি ভাবি নি। শুভ্রর আম্মু চলো এই কুলাঙ্গার ছেলের দরকার নেই আমাদের।

শুভ্র মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে আছে। রোদ একবার শুভ্রর মুখের দিকে চাওয়ার ও প্রয়োজন বোধ করলো না। অফিস থেকে জরুরি ফোন আসায়। রোদ সোজা অফিসে চলে যায়।

একে একে সবাই চলে যায়। বাকি আছে শান্ত। শুভ্রর পাশে শান্ত এসে দাঁড়ায়।

-ভাইয়া তুমি এটা না করলে ও পারতে। বড় আম্মু রা আমাদের পর ভাবেন না। রে। রোদ ভাইয়া তো তোমাকে নিজের ভাই মনে করতো। সেই উনার সাথেই বিশ্বাসঘাতকতা করলে। কিছু বলার নাই তোমাকে ভাইয়া….

শান্ত ও চলে যায়। শুভ্র কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। নিজের করা কু কাজের জন্য লজ্জায় পড়ে গেছে। বড্ড অনুতপ্ত বোধ করছে শুভ্র। রোদের বিশ্বাস নষ্ট করা তার উচিৎ হয় নি। বুঝতে পারলো সে।

রোদ তাড়াতাড়ি অফিসে চলে যায়। ম্যানেজার সাহেব বললো কেউ তার জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তুু কে সেটা তো বললো না। রোদ অফিসে ঢুকে অবাক।

-আরে জিসান তুই! (অবাক হয়ে)

-তুইইই ই রোদ চৌধুরী! ও মাই গড।

রোদ আর জিসান ছোট বেলার বন্ধু। কোনো এক কারণে জিসান দেশের বাইরে চলে গিয়েছিল। আর আজকে অনেক দিন পর দেখা। জিসান এটা ভাবতেই পারে নি যে রোদ ই তার ছোট বেলার বন্ধু। ভেবেছিলো হয়তো অন্য কেউ। মুহুর্তের মধ্যে জুহি কে নিয়ে সব অনুভূতি কবর দিয়ে দেয় জিসান। সামান্য ভালোবাসার থেকে বন্ধুত্ব অনেক বেশি।

রোদ আর জিসান দুইজন দুইজন কে জড়িয়ে ধরে। আজকে প্রায় অনেক বছর পর দেখা। খুব খুশি দুইজনে।

-আমি তো ভেবেছিলাম জিসান তুই আর কখনো ফিরে আসবি না! আর কখনো তোর দেখা পাবো না।

-আমি ও কি ভেবেছিলাম যে তুই রোদ চৌধুরী! কি ভাগ্য দেখ দুইজনের ই দেখা হয়ে গেলো।

-আচ্ছা কি খাবি বল। চা না কফি!

-আরে রাখ তোর খাওয়া। চা কফির থেকে তোর সাথে কথা বলা টা আগে।

-চুপ হারামি। কতো বছর পর দেখা তাও আবার কিছু না খেয়ে চলে যাবি? তা কি করে হয়।

রোদ ২ কাপ কফি নিয়ে আসতে বলে।

-তো জিসান তুই হঠাৎ এখানে কি মনে করে?

-দেশের টপ বিজনেস ম্যান কে দেখার শখ কার না থাকে বল?(মিথ্যা বললো)

-হাহাহা। চাপা কম মারিস। বিয়ে টিয়ে করেছিস তো নাকি? তোর বাচ্চা রা কেমন আছে?

জিসান রোদের কথা শুনে বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকায়!

-কিরে ভাই এখানে কেন তাকিয়ে আছিস?

-এখনো বিয়েই করলাম না আর তুই জিঙ্গেস করছিস বাচ্চার খবর! তুই বিয়ে করে নিয়েছিস বাচ্চা ও আছে তাই আমাকে ও বললি! তাই না?

-আরে না। মাএ তো বিয়ে করলাম!

-সে কি রে হারামী তুই আমায় ইনভাইট ও করলি না!

-আমি কি জানতাম যে তুই এই দেশে আছিস!

-হাহাহা সেটাও ঠিক!

প্রায় অনেকক্ষণ দুই বন্ধু আড্ডা দেয়। কিছু মুহুর্ত আনন্দে কেটে যায়।তারপর জিসান চলে যায়। সব কিছুর ভিড়ে রোদ ভুলেনি শুভ্রর বিষয় টা। এখনো রেগে আছে রোদ।

বাসায় যেতে ও তার ইচ্ছা করছে না। কারণ শুভ্রর মুখ ও‌ দেখার ইচ্ছা নাই। অফিসেই পুরো দিন কেটে যায়। রোদ সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে। ফ্রেশ হয়ে বেলকনিতে বসে আছে রোদ।

-এতো ফোন দিলাম তুললেন না কেন?

-খেয়াল করিনি।

-রেগে আছেন?

-নাহ।

-রেগে আর কি হবে। যা হয়ে গেছে তা নিয়ে আর রেগে থাকলে কি হবে?

-ও কিভাবে পারলো জুঝি এটা করতে। কতো বিশ্বাস করতাম ওকে। কিন্তুু সেই শুভ্র।

-প্লিজ মন খারাপ করে থাকবেন না।

রোদ কিছু না বলে নিজের রুম থেকে ছাঁদে চলে যায়। একদমি ভালো লাগছে না তার। শুভ্র ও রোদের পিছন পিছন ছাঁদে আসে।কারো হাটার শব্দ পেয়ে পিছনে তাকিয়ে রোদ দেখতে পায় শুভ্র এসেছে।

-তুই এখানে কেন এসেছিস।

শুভ্র কিছু না বলে রোদের পা ধরে ক্ষমা চাইতে যাবে রোদ দূরে সরে যায়।

-সরি রে রোদ। আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি অন্যায় করে ফেলেছি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে। প্লিজ। মাফ করে দেন আমাকে।

শুভ্র মাথা নত করে রোদের কাছে ক্ষমা চায়। শুভ্র এতো অসহায় ভাবে ক্ষমা চাইছে দেখে রোদ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। শুভ্র কে জড়িয়ে ধরে। শুভ্র ও রোদ কে।

সব রাগ জেনো পানিতে পরিনত হতে গেছে।শুভ্র তার কাজের জন্য অনুতপ বোধ করছে দেখে রোদ ক্ষমা করে দেয় শুভ্র কে।

-আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি রে রোদ। আমি আসলেই খুব বাজে কাজ করছিলাম। লোভ জন্ম নিয়েছিলো আমার মধ্যে তাই লোভের বসে আমি ভুল করে ফেলেছি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে।

শুভ্র আর রোদ নিচে যায়। শুভ্র সবার থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়। রোদ আর শুভ্র দুইজনেই মিলে গেছে সেই আগের মতো এটা দেখে জুহি ও খুশি হয়। তার চেয়ে বেশি খুশি হয় এইজন্যই যে শুভ্র নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে।

ডিনার শেষে রোদ রুমে এসে জুহির জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তুু জুহি তো আসছেই না। প্রায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর জুহি আসে।

-ম্যাম আপনি আসছে তাহলে। আপনার কি খেয়াল নেই যে কেউ আপনার জন্য ওয়েট করছে?

-সরি স্যার। আসলে একটু কাজ ছিলো তো।

-হুম হয়েছে। চলো।

-কোথায়?

রোদ জুহির চোখে হাত দিয়ে ধরে ওকে বেলকনিতে নিয়ে যায়। বেলকনিটা রোদ আগেই সাজিয়ে রেখেছে। খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে সে। রোদ জুহি কে বেলকনিতে নিয়ে এসে জুহির চোখ ছেড়ে দেয়।

জুহি তো তার সামনে এসব দেখে চোখ ছানাবড়া। অবাক হয়ে সে রোদের দিকে তাকিয়ে আছে।

-কখন করলেন এসব?

-তুমি যখন নিচে ছিলে তখন। হুশ এখন কোনো কথা না। এখন আমরা দুইজন জোৎস্না বিলাস করবো।

রোদ জুহি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে জুহির ঘাড়ে একটা ছোট করে কিস করে। জুহি কেঁপে উঠে। চোখ বন্ধ করে আছে।

-জুহি তুমি জানো আমার না খুব শখ ছিলো কোনো এক রাতে তুমি আর আমি জোৎস্না বিলাস করবো। আর আজকে সেই শখ টা পূরন হতে চলছে। আই লাভ ইউ জুহি। আই লাভ ইউ‌ সো মাচ্

-আই লাভ ইউ টু….

-সারাজীবন আমার কাছে-পাশে থাকবে তো?

-হুম…

রোদ কথা গুলো চুপিচুপি জুহির কানে কানে বললো। জুহির অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। রোদের প্রত্যেক টা কথায় তার হৃদয় স্পর্শ করছে। স্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে ক্রমশ। রোদের ও সেইম অবস্থা।

আজ তারা দুজনই দুইজনের কাছে পাশে আছে। আর সারাজীবন একসাথে একে অপরের সঙ্গী হয়ে কাছে পাশে থাকবে ও।

তাদের দুটি মন তো এক হয়েছিলো অনেক আগে। আজ দুটি আত্মা মিশে একাকার হয়ে যাবে। আজ আবার নতুন করে পূর্ণতা পাবে তাদের ভালোবাসা। তারা ডুব দিবে ভালোবাসার গহীন অরণ্যে। এভাবেই বেঁচে থাকুক ভালোবাসা গুলো।

(ওরা ওদের কাজ করুক। এবার আপনারা বিদায় হোন। কি দরকার অযথা ওদের ডিস্টার্ব করার। ওদের মাঝখানে কাবাবে হাড্ডি হওয়ার বলুন!)

#সমাপ্ত

অনেকের হয়তো ভালো লাগবে না। সেজন্য আমি দুঃখিত। আসলে অনেকে আছেন বেশি বড় গল্প পড়তে পছন্দ করেন না। আমি ও সেইম। আর তাছাড়া এই গল্পটা বেশি বড় করার কোনো প্ল্যান ও নাই আমার। ব্যাচ এতোটুকুই ছিলো লেখার প্ল্যানিং। তাও কেমন লেগেছে জানাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।❤

কাছে_পাশে পর্ব_১৪

0

কাছে_পাশে
পর্ব_১৪
#Hiya_Chowdhury

মুখ টা ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। তাই উঠে দাঁড়ায় জুহি। এখন ভালোভাবে দেখতে পাবে সে। তারপর জুহি লোকটিকে দেখে নিজের চোখ কেই বিশ্বাস করতে পারছে না।

জুহি ভাবছে এটা কি করে সম্ভব! যে মানুষটা রোদের এতো আপন জন এতো ভালো বন্ধু। আপন ভাইয়ের মতো। সে কিভাবে পারলো রোদ কে এভাবে ঠকাতে?

জুহি আর কিছুই ভাবতে পারছে না। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। জুহি তার ফোনে ওদের সব কথা রেকর্ড করে নেয়। আর কয়েক টা ফটো ও তুলে নেয়। তারপর তাড়াতাড়ি করে জুহি রেস্টুরেন্টে থেকে বেরিয়ে বাসায় চলে আসে। বাসায় ঢুকতেই কাব্য আর জুহি দুইজনেই ধাক্কা খায়।

-ওপপপস সরি ভাবী! আমি আসলে খেয়াল করিনি।

-ইট’স ওকে।

-আচ্ছা ভাবী তুমি কোথাও গিয়েছিলে নাকি?

-হ্যাঁ আসলে একটি কাজ ছিলো তো তাই….

-ওও আচ্ছা….

-বাই দ্যা ওয়ে তুমি কোথায় যাচ্ছ?

-কোথাও না। জাস্ট এমনি একটু হাটাহাটি করতে যাচ্ছি।

-ওহ…

তারপর জুহি ভেতরে চলে যায়। আর কাব্য বাহিরে চলে যায়। জুহি রুমে গিয়ে জামা চেঞ্জ করে বেলকনিতে দাঁড়াতেই দেখে শুভ্র ফোনে কথা বলে হেসে হেসে বাসায় ঢুকছে। বেশ খুশিতেই আছে মনে হচ্ছে।

অন্যদিকে জিসানের পিএ সাদ জিসানের কথা মতো ঐ মেয়েটার খবর জানাতে জিসানের কাছে আসে।

-কি হলো সাদ কোনো ডিটেইল জানতে পারলে?

-জ্বী স্যার।

-হ্যাঁ তো বলো কে কে সেই মেয়েটি? কি তার পরিচয়? থাকে কোথায়?

-স্যার মেয়েটি মিস্টার রোদ চৌধুরীর স্ত্রী মিসেস জুহি চৌধুরী!

-হোয়াট……….!

জুহি আর কিছু না ভেবে নিচে চলে যায়। আর কিচেনে রোদের আম্মু আর চাচি কে সাহায্য করে। জুহির মাথায় এখন একটাই চিন্তা রোদ কে কি সব টা বলে দেওয়া উচিত হবে?

আর যদি রোদ সব টা জেনে যায়। নিশ্চিত গন্ডগোল হবেই। পরে সেই লোকটা সতর্ক হয়ে যাবে আর গোপনে ক্ষতি করবে। জুহি বুঝতেই পারছে না আসলে সে এখন ঠিক কি করবে?

রোদ যদি সবটা জেনে ও যায় তার রিয়েকশন কেমন হবে? ওদের খেয়ে ওদের পড়ে আবার ওদের ঐ ক্ষতি করার চিন্তা! ছিহ কেমন মন মানসিকতা ওর। মনুষ্যত্ব হীন পশুর মতো!

জুহি এই ভাবনায় ডুবে যাওয়ার ফলে খেয়াল ই নেই যে ওকে কেউ ডাকছে।

-জুহি… জুহি.. এই জুহি…(সামান্য ধাক্কা দিয়ে)

-হ্যাঁ হ্যাঁ মামনি বলো…

-কি এতো ভাবছিস বল তো।

-না মানে কিছু না।

-এখানে কি তোর থাকতে অসুবিধা হচ্ছে?

-না মামনি সেরকম কিছু না।

-তাহলে কি হয়েছে বল আমাকে!

-কিছু হয় নি তো।

-বলতে চাস না যখন তখন আর জোড় করবো না।

-সত্যি বলছি মামনি। কিছুই হয় নি। জাস্ট এমনি…

-হয়েছে আর বলতে হবে না। রান্না কমপ্লিট। এখন তুই ফ্রেশ হয়ে নে।

-আচ্ছা মামনি।

জুহি ওর রুমে যাওয়ার সময় দেখে শুভ্র এখনো হেসে হেসে ফোনে কারো সাথে কথা বলছে। জুহি শুভ্রর কাছে আসে। শুভ্র জুহি কে দেখে ফোন কেটে দেয়।

-কার ফোন ছিলো ঐ টা?

-ওওই… মানে আমার ক্লাইন্টের…

-ওহ তা শুভ্র ভাইয়া তোমাকে আজকাল একটু বেশি ই খুশি খুশি দেখাচ্ছে কারণ কি বলোতো।

-না কই তেমন কিছু না তো।

-তাহলে কেমন কিছু?

-জুহি তুমি এভাবে কেন কথা বলছো? মনে হচ্ছে কোনো বিষয় নিয়ে আমাকে সন্দেহ করছো? হুম কি ব্যাপার?

-আরে ধুর তোমাকে কি নিয়ে সন্দেহ করবো। আমি তো জাস্ট এমনি ভাবলাম প্রেমে টেমে পড়লে নাকি আবার।

-কি যে বলো না হাহাহা…

-পড়লে ও পড়তে পারো বলা যায় না। আচ্ছা শোনো আমার কাজ আছে গেলাম।

জুহি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই রোদের ফোন….

-কি ব্যাপার সাহেব এখন হঠাৎ ফোন।

-তোমার কথা মনে পড়লে তো তাই ফোন দিলাম।

-মন খারাপ?

-না…

-না না বলে হ্যাঁ বলেন। আমি ভালো বুঝেছি আপনি এখনো মন খারাপ করে আছেন… দেখুন যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে আর মন খারাপ করে কি হবে? প্লিজ মন খারাপ করে থাকবেন না।

-আরে না। সেসব কথা বাদ দাও লাঞ্চ করছো কিনা বলো?

-না এখনো করি নি আপনি করেছেন?

-হুম। ওকে এবার যাও তাড়াতাড়ি লাঞ্চ করে নাও। অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।

-আপনি মন খারাপ করে থাকলে আমি খাবো কি করে।

-ওহহো দেখো আমি মন খারাপ করে নেই। এই দেখো হাসছি এবার হ্যাপি? সো এখন যাও‌ আমি রাখলাম বায়!

-আর…আরে… যা বাবা কেটেই দিলো। এই সবের জন্য দায়ী ও। মানুষ রূপের পশু টার জন্য এসব হয়েছে। (মনে মনে)

জুহি খেতে বসেছে ঠিক। কিন্তুু ঠিকমতো খেতেই পারছে না। মাথায় নানা রকম চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। রোদের আম্মু খেয়াল করেন জুহি খাচ্ছে কম ভাবছে বেশি।

-কি হলো জুহি? খাচ্ছিস না কেন? কি এতো ভাবিস?

-না মামনি ওওই মানে কিছু না। এই তো খাচ্ছি….

-এটা কে খাওয়া বলে?

-আসলে…

-হয়েছে আর বলতে হবে না। এবার চুপচাপ খেয়ে নাও সবাই।

-হুম…

অতঃপর সবাই লাঞ্চ শেষ করে যে যার রুমে চলে যায়। সন্ধ্যায় রোদ বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়। জুহি হাতে গরম গরম দুই কাপ কফি নিয়ে রুমে আসে। রুমের কোথাও রোদ কে দেখতে না পেয়ে বেলকনিতে যায়। জুহি দেখে রোদ বেলকনিতে মন খারাপ করে বসে আছে। জুহির ও মন টা খারাপ হয়ে যায়।

জুহি বেলকনির ছোট্ট টেবিল টায় কফি টা রাখে। তারপর নিজে ও রোদের পাশে বসে।

-আপনি এখনো মন খারাপ করে আছে?

-নাহ…

-আমি অন্ধ নই বুঝলেন। আমি দেখতেছি আপনি মন মরা হয়ে বসে আছেন আর বলছেন মন খারাপ না। (জুহি প্রায় কান্না করে দিবে এমন। প্রিয়জনের মন খারাপ দেখলে নিজে ভালো থাকবে কিভাবে)

-জুহি আগে কখনো আমাদের বিজনেস এ এমন হয় নি। কিন্তুু কাল হঠাৎ কি করে…এসব.. মানে আমি না মানতেই পারছি না….

রোদ ও কান্না করে দেবে এরকম অবস্থা। জুহি তো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করা শুরু করে দিয়েছে প্রায়। রোদ আকস্মিক কান্ডে থ। মন খারাপ ওর আর কান্না করছে জুহি!

রোদ জুহি কে জড়িয়ে ধরে। জুহির মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে।

-আরে পাগলী এই দেখো কান্না করা শুরু করে দিয়েছে।

-আপনি মন খারাপ করে থাকবেন! এটা আমার ভালো লাগে না। কষ্ট লাগে আমার….!

রোদ বুঝতে পারে ওর কষ্টে জুঝির ও কষ্ট হচ্ছে। এভাবে মন খারাপ করে থাকলে মেয়েটা আরো বেশি কষ্ট পাবে রোদ জুহির চোখের পানি মুছে দেয়।

-এই দেখো এখন আমি একদম মন খারাপ করে থাকবপ না। ৩ সত্যি। এখন রুমি ও কান্না বন্ধ করো! একটু হাসো তো।

-না…

-হাসো বলছি!

-না…

-ওকে যাও ঠিক আছে আমি ও মন খারাপ করে থাকবো।

-উহু…

জুহি মুচকি হাসে। রোদ কে ছেড়ে দিয়ে নিজের জন্য এক কাপ কফি নেয় আর বাকি এক কাপ রোদের দিকে এগিয়ে দেয়।
রোদ কফি তে এক চুমুক দেয়। জুহি ও তার কফিতে এক চুমুক দেয়।

-এই রাখো রাখো।

-কি?

-তোমার কফি টা আমাকে দাও।

-কেন আপনার টা ভালো হয় নি?

-হুম হয়েছে। কিন্তুু আমি তোমার টা খাবো আর তুমি আমার টা।

-কিহ!

-কি না জ্বী….

রোদ জুহির থেকে ওর কফি টা নিয়ে নিজের টা জুহির হাতে ধরিয়ে দেয়। জুহি রোদের কান্ড বুঝতে পেরে লজ্জা পেয়ে যায়। আর রোদ ট্যাড়ি স্মাইল দেয়।

রাতে সবাই ডিনার করে যে যার রুমে চলে আসে। রোদ লক্ষ্য করে জুহি কিছু একটা ভাবছে।

-কি?

-কি মানে?

-কি ভাবছো সেটা জিঙ্গেস করছি!

-কই কিছু ভাবছি না তো।

-হুম সেটা দেখলেই বুঝা যায়!

-আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলি?

-হুম বলো!

-আচ্ছা সাপোস আপনার খুব কাছের কেউ যদি আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আপনি জানতে পারেন তাহলে কি করবেন?

-মানে? কি বললে?

-ধুর কিছু না। আমি ঘুমালাম খুব ঘুম পাচ্ছে।

-অর্ধেক কথা বলা আমার মোটেও পছন্দ নয়। কি বলতে চেয়েছিলেন সোজাসুজি বলো।

-কিছু না তো। আচ্ছা সকালে বলবো। এখন আমার কওো ঘুম আসছে । গুড নাইট….

জুহি রোদ কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে। আর রোদ ভাবছে হঠা জুহি তাকে এমন কথা কেন বললো? কি হতে পারে এই কথার মানে?

রোদ ভাবলো সকালে জুহি কে জিঙ্গেস করবে আসলে সে কি বলতে চেয়েছিলো। তারপর রোদ ও ঘুমিয়ে পড়ে।

পরেরদিন সকালে………..

রোদ নাস্তা সেরে উপরে নিজের রুমে যায় রেডি হওয়ার জন্য। অন্যদিকে জুহি নিচে কাজ করছে।

রোদ ওর রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রিমি কে দেখতে পায়।

-রিমি শোন…

-হ্যাঁ ভাই কিছু বলবি?

-তুই কি নিচে যাচ্ছিস?

-হুম।

-জুহি কে আসতে বলিস তো! কাজ আছে।

-আচ্ছা ঠিক আছে।

রিমি নিচে গিয়ে দেখে জুহি কিচেনে।

-ভাবী…

-হ্যাঁ রিমি বলো।

-তোমার ভাই উপরে যেতে বলেছে। কি জেনো কাজ আছে।

-ওহ আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।

জুহি তাড়াহুড়ো করে রুমে যায়। আর রোদ কে বলে!

-আপনি আমাকে ডেকেছেন?

-হ্যাঁ।

-কেন কি হলো আপনার?

-এটা কি জুহি?

রোদ জুহি কে রেকর্ড টা চালিয়ে দিয়ে জিঙ্গেস করে এটা কি? জুহি অবাক হয়ে যায়। এটা রোদ পেলো কিভাবে? জুহি খুব ভয় পেয়ে যায়। জুহি দেখতে পায় রোদ খুব রেগে গেছে…………….!

চলবে—————-

কাছে_পাশে পর্ব_১৩

0

কাছে_পাশে
পর্ব_১৩
#Hiya_Chowdhury

সকাল টা শুভ্র কে দিয়েই হাসি তামাশায় শুরু করা হয়। কাব্য আর রিমি শুভ্র রোদের কথার সাথে তাল মিলিয়ে শুভ্র কে আরো উষ্কে দিচ্ছে। সবাই হাসতে হাসতে শেষ।

সকাল ১১ টার দিকে রোদের ফ্রেন্ডরা আসে। সবাই মিলে আড্ডায় মেতে উঠেছে। কলেজ লাইফের ফ্রেন্ড ওরা। সবার সাথে আড্ডা দিতে দিতে পুরো দিন কেটে রাত হয়ে যায়।

সবাই মিলে ডিনার শেষ করে নেয়। অতঃপর তাদের যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে।

-চলি রে দোস্ত। ভাবী আমাদের ফ্রেন্ড টা কে ভালো মতো টাইট দিয়ে দিবেন।

সবাই খিলখিল করে হেসে উঠে। জুহি ও হাসছে!

-সালা হারামীর দল তোরা আমার বন্ধু হয়ে শত্রুর মতো কথা বলছিস।

-এখন আর আমরা তোর দলে নাই। এখন আমরা সবাই ভাবীর দলে কি বলিস তোরা?

-হ্যাঁ ঠিক বলেছিস।

-দেখিস তোদের একটার ও বিয়ে হবে না।

-বিয়ে না হলে জুহি ভাবী কেই তুলে নিয়ে যাবো।(চোখ টিপ মেরে)

-এই তোরা আমার বউয়ের দিকে একদম চোখ দিবি না বলে দিচ্ছি হু।

-বউ পাগলা।

-বিয়ে হলে তারপর আমার দুঃখ বুঝবি এর আগে না।

-এই রে হারামী তুই ই তো অভিশাপ দিলি বিয়ে হবে না। তাহলে আর তোর দুঃখ আর বুঝা হলো না। হাহাহা…..

-হাহা…..

সবাই কথা বলে বিদায় নিয়ে চলে যায়। ভালোই কেটেছে পুরো টা দিন। সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ার ফলে।

জুহির ওর আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতে চলে গেছে। প্রায় অনেকক্ষণ হলো এখনো জুহি আসছে না। রোদ অপেক্ষা করছে জুহির জন্য। কিন্তুু জুহির তো কোনো পাওা ই নেই। রোদ রুম থেকে বেরিয়ে জুহির কাছে যায়।

রোদ দেখতে পায় জুহি কান্না করছে। কারণ সকালে ওর আব্বু আম্মু চলে যাবে। জুহির কান্না দেখে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলো রোদ।রোদ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লো।

-কি হয়েছে জুহি কান্না করছো কেন?

জুহি কোনো রেসপন্স করছে না। সে কান্না করেই যাচ্ছে। তাই জুহির আব্বু বলে উঠলো।

-আমরা কাল চলে যাবো সেই জন্য জুহি কান্না করছে। দেখো না রোদ আমরা তো আবার আসবো নাকি!

-আরে জুহি এই জন্য কান্না করা লাগে। আব্বু আম্মু তো আবার আসবে এই দেখো একদম কান্না করবে না।

রোদ জুহি কে শান্তনা দিচ্ছে দেখে জুহির আব্বু আম্মু খুব খুশি হয়। কারণ ওরা দুইজন দুইজনের কে ভালোবেসে সুখি হতে পারবে। ভালোবাসলেই তো সুখ আসে। আর দুইজন দুইজনের সুখে দুঃখে পাশে থাকবে এটাই তো ভালোবাসা।

রোদ জুহি কে কোনো ভাবে শান্তনা দিয়ে তার আব্বু আম্মুর রুম থেকে নিজের রুমে নিয়ে চলে আসে। জুহি রোদ কে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করা শুরু কে।

-এই পাগলী কেউ এভাবে কান্না করে?

– (নো রেসপন্স)

-দেখো জুহি তুমি যদি এভাবে কান্না করতেই থাকো তবে আমি ই চলে যাবো এখান থেকে।

জুহি তবুও কান্না করেই চলছে রোদ চলে যেতে নেয় জুহি রোদের হাত ধরে ফেলে।

-কি হলো?

-যাবেন না!

-কেন তুমি তো কান্না করছো! করো কান্নাই করো আমি চলে গেলে কার কি?(অভিমানী সুরে)

-আর কান্না করবো না।

-তাহলে হাসো। স্মাইল প্লিজ….

জুহি কিছু বললো না। মুখ ফুলিয়ে আছে।

-তুমি যখন আমার কথা শুনবে না হাসবে না! তাহলে আমি চললাম।

-উহু….

জুহি মুচকি হাসে।

-এই তো লক্ষী বউ। একদম কান্না করবা না। বলে দিলাম।

-হু….

রোদ জুহি কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আছে। আর জুহি ও রোদের বুকের সাথে লেপ্টে আছে। জুহি আর রোদ দুইজনে অনেক কিছু ভেবে একটা সময় দুইজনেই ঘুমিয়ে পড়ে।

পরের দিন……….

আজ জুহির আগে রোদের ঘুম ভেঙ্গে গেছে। রোদ আলতো করে জুহির কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে। জুহি কে বালিশে শুইয়ে দেয়। তারপর সে ফ্রেশ হতে চলে যায়।

ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে নেয় রোদ। তারপর এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কফি নিয়ে বেডের পাশে টেবিলে রাখেন রোদ। নিজে ও এক কাপ নিয়েছে নিজের জন্য। জুহির ঘুম ভেঙ্গে যায়।

-গুড মর্নিং মিসেস চৌধুরী।

-গুড….

-গুড কি?

-মর্নিং….

-হুম অনেক ঘুমানো হয়েছে এবার ফ্রেশ হয়ে আসো। এই দেখো তোমার জন্য নিজের হাতে কফি বানিয়ে নিয়ে এসেছি।

-কিহ আপনি?

-এমন রিয়েকশন করছো জেনো আমি কফি বানাতেই পারি না!

-না তা না।

-হুম বুঝেছি এখন ফ্রেশ হয়ে আসেন আপনি ম্যাম।

রোদ জুহি কে ঢেলে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দেয়। জুহি হাসলো। ফ্রেশ হয়ে বের হয় জুহি। রোদ ওর হাতে কফি ধরিয়ে দেয়। জুহি ভালো ভাবে রোদের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলো রোদ রেডি হয়ে আছে।

-আপনি কি কোথাও যাচ্ছেন?

-কোথাও না অফিসে। অনেক কাজ জমা হয়ে আছে তো নাকি! আজ তো যেতেই হবে।

-ও আচ্ছা।

-হুম এবার তাড়াতাড়ি চলো আব্বু আম্মুর সাথে ও কথা বলে নেবে। উনাদের কে বিমান বন্দরে নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে যাবো। আর একটা কথা একদম কান্না করবে না বলে দিলাম। মনে থাকে জেনো।

-হু…..

তারপর জুহি ওর আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে নেয়। সবাই নাস্তা শেষ করে জুহির আব্বু আম্মু কে বিদায় দেয়। জুহি কে রোদ একদম কান্না করতে নিষেধ করায় জুহি কান্না করে নি ঠিক কিন্তুু মন টা খারাপ হয়ে আছে।

রোদ চলে যায়। জুহির আব্বু আম্মু জুহি কে শান্তনা দেয় আর সাবধানে ভালো ভাবে থাকতে বলেন। আর বলেন উনারা কয়েক মাস পর আবার আসবেন।

রোদ জুহির আব্বু আম্মু কে বিমান বন্দরে নামিয়ে দিয়ে সে তার অফিসে চলে যায়। রোদের কেবিনে ম্যানেজার সাহেব আসে।

-স্যার আপনাকে এতো বার ফোন দিলাম আপনি তো ফোন তুললেন ই না।

-ও সিট। আমি তো ফোন টাই নিয়ে আসি নি। তা কেন?

-স্যার আজকে একটা মিটিংয়ের ব্যাপারে। ডিল টা ফাইনাল করতে স্যার মিটিং টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। আজকে ডিল টা ফাইনাল না হলে অনেক লস হয়ে যাবে। আর এখন তো সময় ও নেই।

-কিহ…!

অনেক চেষ্টা করেও আর ডিল টা ফাইনাল করা যায় নি। ফলে অনেক লস হয়ে যায়। জুহির ঐ দিনের লোক গুলোর ফোন আায়। আর জানতে পারে তাদের প্রথম প্ল্যান সাকসেসফুল। সেটা কি জুহি পুরো টা জানে না। শুধু তাদের সাথে একমত হয়ে জুহি ফোন রেখে দেয়।

জুহি জাস্ট অভিনয় করে চলেছে। শুধু এটা জানার জন্য যে রোদের শত্রু টা আসলে কে! মূলত জুহিদের কোনো সম্পর্ক ই নেই রোদ দের বিজনেস এর সাথে। সব টাই ফেইক‌ ছিলো।

রোদ বাসায় চলে আসে। রোদের পাশে রোদের আব্বু আর ওর চাচ্চু বসে আছে। রোদ প্রচন্ড রেগে পছে। এতো বছরে ও বিজনেস এ কোনো লস হয় নি আর আজকে হুট করে এতো বড় ক্ষতি…? রোদ জেনো মানতেই পারছে না।

রোদের আব্বু আর চাচ্চু ওকে শান্তনা দিচ্ছে। জুহি উপরে রুম থেকে নিচে আসে। আর সব টা না জানার ভান করে।

-কি হয়েছে আপনার? আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? আব্বু কি হয়েছে উনার? কথা বলছেন না কেন?

-জুহি মামনি আমাদের কোম্পানি তে লস হয়ে গেছে। সেইজন্য রোদ……

সব টা বুঝে এসেছে জুহির। জুহি কোনো ভাবে রোদ কে শান্তনা দিচ্ছে।আর রোদ কে বুঝায় যে বিজনেস এ এমন হয় ই। রোদ আর কিছু বললো না। তবুও মনে তো থেকেই যায় ক্ষোভ টা।

অন্য দিকে লোক গুলোর জুহির কথাই জানায় নি তাদের স্যার কে। কারণ তারা মনে করেছে জানিয়ে আর লাভ কি! এমনি তেই দুইজনের ই লক্ষ্য চৌধুরী কোম্পানি কে শেষ করা নিয়ে! তাই ভাবলো জানিয়ে অযথা কাজ নেই।

এভাবে ২ দিন কেটে গেছে। এখন রোদ খুব ভালো ভাবে মন দিয়ে নিজের বিজনেস টা কে দেখছে। কারণ তার একটু গা ফেলানির কারণে লস হয়ে গিয়েছিলো। আর কোনো ক্ষতি হোক বিজনেস সেটা চায় না রোদ। রোদ সকালে নাস্তা সেরে অফিসে চলে গেছে।

সকাল ১০:৩০ এর দিকে জুহি আবার সেই লোক গুলোর ফোন পায়। তাদের প্রথম কাজ সাকসেসফুল হওয়ার ফলে তাদের বস তাদের সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন।

লোকগুলো জুহি কে ও আসতে বলে দেখা করার জন্য। লোকগুলো ভাবে আজই তাদের বস কে জুহির কথা জানাবে। কিন্তু জুহি ওদের জানিয়ে দেয় যে সে আসতে পারবে না। গুরুতর ভাবে অসুস্থ সে।

লোকগুলো আর জোড় করে নি। জুহির কথা টাই মেনে নিয়েছিলো তারা। সাড়ে ১১ টার সময়ে লোকগুলোর বসের সাথে দেখা করার কথা।

সেই অনুযায়ী জুহি ও রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। জাস্ট লোকগুলো কে বুঝানোর জন্য মিথ্যা বলেছিলো যে জুহি আসবে না সে অসুস্থ।

জুহি রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যায়। লোকগুলোর ঠিক পিছনের দিকে বসে জুহি। যাতে তারা জুঝি কে না দেখতে পায়। একটা পেপার দিয়ে জুহি তার মুখ ঢেকে রেখেছে।

ঠিক সাড়ে ১১ টার সময় একটা লোক আসে। কোট আর ব্লেজার পড়া। লম্বা দেখতে। জুহি পেপার টা হালকা সরিয়ে দেখার চেষ্টা করছে আসলে তিনি কে? চৌধুরী পরিবারের কোন সদস্য তিনি?

মুখ টা ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। তাই উঠে দাঁড়ায় জুহি। এখন ভালোভাবে দেখতে পাবে সে। তারপর জুহি লোকটিকে দেখে নিজের চোখ কেই বিশ্বাস করতে পারছে না।

জুহি ভাবছে এটা কি করে সম্ভব……?…….

চলবে—————-

কাছে_পাশে পর্ব_১২

0

কাছে_পাশে
পর্ব_১২
#Hiya_Chowdhury

কিছুটা খুশি হয় রোদ।মুখে হাসি নিয়ে দরজা খুলতেই‌ চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা রোদের।

-আব্বু তোমরা!

-তুই কেমন ছেলে রে হ্যাঁ! বড় করলাম আমরা আর বিয়েই আমাদের ছাড়া করে নিবি!

-রোদ ভাইয়া দেখো তুমি শুভ্র ভাইয়া কে বলেছিলে কাজি সাহেব কে নিয়ে আসতে আর শুভ্র ভাইয়া গুষ্টি শুদ্ধ নিয়ে এসেছে হিহিহি।

-সরি রে আমার কোনো দোষ নাই। আমি কেটে পড়ি!

শুভ্র মানে মানে কেটে পড়ে। রোদ পাড়ছে না শুভ্র কে গিলে খাবে। বাকি সবাই এখনো রোদের সামনে দাঁড়িয়ে।

-কিরে ভাই আর কতোক্ষণ এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকবি?

-না মানে….. বলছিলাম যে….. (মাথা চুলকিয়ে)

সবাই হেসে দেয়। বিয়ের সব কিছু আগে থেকেই সাজানো ছিলো। সেই অনুযায়ী রোদ আর জুহির বিয়ে হয়ে যায়। হালকা পাতলা ভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠান টা হয়। কারণ জুহির আব্বু আম্মু পরশু আবার চলে যাবেন। তাদের বিজনেস এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ পড়ে যায় সেজন্য।

তাই পরে বড় করে অনুষ্ঠান করে হবে! এখন জাস্ট নরমাল ভাবে সব কিছু হয়। যাই হোক রোদ জানতে পেরে যায় আসলে জুহির বিয়ে তার সাথেই হতে যাচ্ছিলো। রোদ কে একটু টাইট দেওয়ার জন্য জুহি সবাইকে নিষেধ করে দেয়+রোদের আম্মু কে বলে মিথ্যা বলতে। ব্যচ হয়ে গেলো।

খুব সুন্দর ভাবে রোদের বাসর ঘর সাজানো হয়েছে। জুহি সেখানেই বসে আছে। আর রোদ! রোদ গেছে ওর আম্মুর সাথে কথা বলতে!

-আম্মু….!

-কিরে….!

-তুমি আমাকে মিথ্যে বললে কেন যে জুহির বিয়ে অন্য কারো সাথে হবে?

-জুহি বলেছিলো।

-ও বলবে বলে তুমি ও তাই করবে!

-বেশ করেছি। তুই মেয়েটা কে কষ্ট দিয়েছিলি কেন!

-আরে আমি তো….!

-চুপ আর একটা ও কথা বলবি না। যদি আর কখনো শুনেছি তুই ওকে কষ্ট দিয়েছিস তোর একদিন কি আমার একদিন!

রোদ ওর আম্মুর সাথে কথা শেষ করে রুমে আসে। অতঃপর ফ্রেশ হয়ে একটা টিশার্ট পড়ে নেয় রোদ। হাতা ফোল্ড করতে করতে জুহির দিকে এগিয়ে আসে। এমন একটা ভাব জেনো সে জুহি কে মারবে!

-এএএএএই আপনার কি আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যান আছে?

-না থাকলে ও এখন তোকে মেরে প্ল্যান করবো!

-মানে(কাঁদো কাঁদো হয়ে)

-মানে হচ্ছে…!

রোদ জুহি কে ধরতে যাবে জুহি এক লাফে উঠে দৌড় মারে। পিছন পিছন রোদ ও। পুরো রুম জুড়ে দৌড়াদৌড়ি চলছে। রুমের দরজা তো বন্ধ। দরজা খুলতে যে সময় লাগবে এই সময়ে রোদ জুহি কে ধরে ফেলবে সো নো চান্স।

-এই দাঁড়া বলছি!

-জ্বী না।

দৌড়াতে দৌড়াতে দুই জন ই ক্লান্ত। জুহির সব শক্তি শেষ। রোদ জুহি কে প্রায় ধরে ফেলেছে। এমন দুইজনে ঠাস করে নিচে পড়ে যায়। জুহি নিচে পড়ে আছে আর জুহির উপর রোদ। অবস্থা বেগতিক।

-মাম্মি আমি শেষ।

-এই চুপপপপ….!

-এ্যাঁ এ্যাঁ এ কেমন জামাই বিয়ের প্রথম রাতেই বউ কে ধমক দেয়। এ্যা এ্যাঁ…… মাম্মি!

-বেশ করেছি। তোকে ইচ্ছে মতো বকবো। মেরে হাড্ডি গুড্ডি ভেঙ্গে দিবো।

-তাহলে আপনি তো বিধবা হয়ে যাবেন!

-ছেলে রা কখনো বিধবা হয় নাকি (হো হো করে হেসে উঠে রোদ)

-সরুন বলছি ও মাম্মি কতো বড় একটা হাতি পড়ে আছে আমার উপর।

-আমি হাতি?

-হু!

-চুপ বজ্জাত মেয়ে। আমি হাতি হলে হাতি। তুই আমাকে এটা বল!

-কোনটা?

-তুই সবাইকে বলতে নিষেধ করলি কেন যে তোর সাথেই আমার বিয়ে?

-বেশ করেছি! আরো করবো!

-তাই নাকি?

রোদ জুহির ঠোঁটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেখে জুহি ভয় পেয়ে যায়।

-না না না আর করবো না! কখনো করবো না! জীবনে ও করবো না।

জুহি ওর ঠোঁটে হাত দিকে চোখ বন্ধ করে আছে। রোদের কি যে হাসি পাচ্ছে বলার মতো না। রোদ জুহি কে কোলে তুলে নেয়।

জুহি আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে রোদ ওকে কোলে নিয়ে আছে। রোদ সব কিছু ভুলে এটাই ভেবেই খুশি যে জুহি কে সে সারাজীবনের জন্য পেয়ে গেছে। সারাজীবন সে জুহি কে তার #কাছে_পাশে আগলে রাখবে। আর কখনো হারাতে দেবে না সে তার জুহি কে।

জুহি বুঝতে চেষ্টা করছে রোদ তার সাথে কি করতে চাচ্ছে। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জুহির দিকে রোদ। জুহি মনে লাড্ডু পুড়ছে। জুহি কে অবাক করে দিয়ে রোদ ওকে শুইয়ে দেয়।

তারপর রোদ জুহির পাশে শুয়ে জুহির কপালে আলতো করে চুমু একেঁ দিয়ে। ওকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। জুহির ও খুব ভালো লাগছে। কেমন জেনো প্রশান্তি অনুভব হচ্ছে জুহির।

অতঃপর দুই জনে ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়। হারিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে।

পরের দিন সকালে………….

নীল রঙের একটা শাড়ি পড়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে জুহি। চুল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে। সেই পানি গিয়ে পড়লো রোদের উপর।

ফলে রোদের ঘুম ভেঙ্গে যায়।

-সকাল সকাল দিলে তো আমার ঘুমের ১২ টা বাজিয়ে।

-আমি আবার কি করলাম!

-কি করো নি সেটা বলো। যাই হোক ঘুম যখন ভেঙ্গে দিলে তার শাস্তি তো পেতেই হবে।

-মমমমমানে! কিসের শাস্তি….

রোদ জুহি কে ড্রেসিং টেবিলের সাথে চেপে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। জুহির চোখ বড় বড় হয়ে গেছে।কিছুক্ষন পর রোদ জুহি কে ছেড়ে দেয়।

-শাস্তি এটা…….(চোখ টিপ মেরে রোদ ওয়াশরুমে চলে যায়)

জুহি হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে। রাগে মুখ ফুলিয়ে জুহি নিচে চলে যায়। ডাইনিং টেবিলে সবাই উপস্থিত রোদ ছাড়া।কিছু সময় পর রোদ ও নিচে আসে। রোদ শুভ্রর পাশে বসে।

-কেমন কাটলো ভাই বিয়ের প্রথম রাত!(চুপিচুপি)

-দাড়া তোর মজা দেখাচ্ছি!(মনে মনে)

রোদ শুভ্র কে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য বলে উঠে।

-আব্বু চাচ্চু শুভ্র বললো ও নাকি বিয়ে করবে! লজ্জার কারণে তোমাদের কে বলতে পারছে না।

-কিহ আমি! এই রোদ আমি তোকে এই কথা কখন বললাম?

-দেখ ভাই লজ্জা পাস না। এসবে লজ্জা পেতে নেই।

-শুভ্র ভাইয়া তুমি বিয়ে করবে আমাকে বলতে পারতে! আমি আছি না!

সকাল টা শুভ্র কে দিয়েই হাসি তামাশায় শুরু করা হয়। কাব্য আর রিমি শুভ্র রোদের কথার সাথে তাল মিলিয়ে শুভ্র কে আরো উষ্কে দিচ্ছে। সবাই হাসতে হাসতে শেষ……!

চলবে—————-
(ছোট হওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে দুঃখিত। প্লিজ কেউ মনে কষ্ট নিবেন না। একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকার কারণে গল্প মাথায় ই আসছে না।তাও যতটুকু সম্ভব লিখেছি।)

কাছে_পাশে পর্ব_১০_১১

0

কাছে_পাশে
পর্ব_১০_১১
#Hiya_Chowdhury

খুব আকর্ষণ করছে রোদ কে। রোদ জেনো কোনো এক ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। জুহি চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। যা রোদ কে আরো পাগল করে দিচ্ছে। রোদ আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে জুহির ঠোঁট জোড়া নিজের করে নেয়।

জুহি রোদকে হালকা একটা ধাক্কা দেয়। যার ফলে রোদ জুহির থেকে একটু দূরে সরে যায়। আর জুহি দৌড়ে নিচে চলে যাওয়া ধরে…

রোদ জুহির যাওয়ার দিকে চেয়ে মাথা চুলকিয়ে একটা সয়তানি হাসি দেয়। রোদ কি করতে যাচ্ছিলো ভেবেই কেমন জেনো লাগছে।

জুহি দৌড়ে ছাঁদ থেকে নেমে আসতেই রিমির সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনেই ঠাস করে নিচে পড়ে যায়। আর সাথে সাথেই চিৎকার। রোদ নিচ থেকে কারো চিৎকার শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি নিচে আসে। আর নিচে আসতেই জুহি আর রিমিকে এই অবস্থায় দেখে হাসতে হাসতে শেষ।

-রিমি তুমি দেখে শুনে হাঁটবে তো নাকি!

-আরে এখানে আমার কি দোষ তুমি ই তো দৌড়ে আসছিলে….

-আমি দৌড়ে আসছিলাম তো কি হয়েছে তুমি সরে যেতে পারতে।

-আরে……..এই কথাটি বলে রিমি বড় বড় চোখ করে একবার রোদের দিকে তাকায় তো আরেক বার জুহির দিকে। এমন একটা ভাব হচ্ছে জেনো সে খুব গভীর ভাবে কিছু বোঝার চেষ্টা করছে।

-কি হলো রিমি এভাবে বড় বড় চোখ করে কি দেখছো?

-ওয়েট ওয়েট তোমরা দুজন একসাথে….!

-মানে?

-তুমি ছাঁদ থেকে দৌড়ে নিচে আসছিলে রাইট?

-হ্যাঁ তো এখানে এভাবে বড় বড় চোখ করে দেখার কি আছে?

-ভাই ও ছাঁদ থেকেই আসলো। কাহিনী কি বলো তো। তোমরা দুইজন কি সামথিং সামথিং….(চোখ টিপ মেরে)

জুহি রিমির কথায় চমকে উঠে।

-কিসের সামথিং সামথিং! আমি ওসব সামথিং হোক আর নাথিং কোনো কিছুতেই নাই।

জুহি তাড়াতাড়ি কেটে পড়ে। না হলে রিমি যা ইঙ্গিত করছে। আর কিছুক্ষণ থাকলে মান সম্মান সব হারাতে হবে।

-আমি ও গেলাম!

-হ্যাঁ ভাই তুই আর থেকে কি করবি।(হো হো করে হেসে)

-এতো হাসিস না পরে কাঁদতে হবে।

কথাটি বলেই রোদ চলে যায়।

বিকেলে………

জুহি ঘুমিয়ে আছে। রিমি ঝিমি জুহি কে ডাকতে ওর রুমে আসে।

-আপু ও আপু উঠো।

-(চুপ)

-আপুউউউ….

অনেক বার ডাকার পর ও জুহি কোনো সাড়া শব্দ নেই। রিমি আর ঝিমি কোনো উপায় না দেখে জুহি কে টেনে ঘুম থেকে তুলে।

-কি হয়েছে তোমাদের।

-আমাদের তো কিছু হয় নি। হয়েছে তো তোমার।

-কই আমার আবার কি হয়েছে?

-কতো বার ডাকলাম উঠছোই না। নিচে চলো তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।

-কিসের সারপ্রাইজ?

-নিচে গেলেই দেখতে পাবে। এখন আমরা গেলাম। এই ঝিমি চল।

-হু।

রিমি ঝিমি চলে যায়। জুহি হাই তুলতে তুলতে ভাবছে -কিসের সারপ্রাইজের কথা বললো রিমি। কি হতে পারে সেই সারপ্রাইজ। আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসে জুহি। আর নিচে নামতেই ওর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।

জুহি হালকা দৌড়ে ওর আব্বু আম্মু কে জড়িয়ে ধরে।

-মাম্মি বাপি তোমরা কখন আসলে।

-আরো একটু আগে। কেমন আছো জুহি।

-ভালো তোমরা?

-আমরা তো এখন আরো ভালো আছি।

-তোমরা আসবে আমাকে বললে না কেন?

-তোমার মামনি বলতে নিষেধ করেছে। তোমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে।

-সারপ্রাইজ টা কেমন হয়েছে জুহি?(রোদের আম্মু)

-অনেক ভালো। ইশ আমার যে কি খুশি লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না।

সবাই জুহি কথা শুনে হেসে উঠে। জুহির চোখ রোদের দিকে যেতেই দেখে রোদ ও মুখ টিপে টিপে হাসছে। জুহি ভেঙ্গচি কেটে অন্যদিকে তাকায়।

এভাবে হাসি খুশি তে কেটে যায় ঐ দিন টাও। জুহির আব্বু আম্মু আসার একটা কারণ তো অবশ্যই আছে আর সেটা হলো জুহি আর রোদের বিয়ে। যেটা জুহি পরে জানতে পারে। রোদ কে বিয়ের কথা জানতে সবাই কে নিষেধ করে দেয় রোদের আব্বু। কথা মতোই কেউ ই রোদ কে জানায় নি। রোদ বেচারা জানেই না তার বিয়ে।
রোদ তো মনের সুখে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।

কোলাহলের কারণে রোদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। রোদ বুঝতে পারছে না এতো কোলাহল কিসের।নিচে এসে দেখে সবাই মিলে কি জেনো করছে। রোদ ফ্রেশ হয়ে নেয়।

-আম্মু তোমরা যাচ্ছো টা কোথায়?

রোদ ওর আম্মুর পিছন পিছন হাটছে আর জিঙ্গেস করছে কি হচ্ছে এসব কিন্তুু অবাক করা বিষয় কেউ ই ওকে পাওা দিচ্ছে না। রোদের অবস্থা নাজেহাল। রিমি ঝিমি শান্ত আর কাব্য এক পাশে বসে কিছু নিয়ে সমালোচনা করছে। রোদ ওদের কাছে যায়।

-কি হলো তোমার রোদ ভাইয়া মুখ এমন বাংলা পাঁচের এতো করে রেখেছো কেন? (শান্ত)

-কিছু না। আচ্ছা এটলিস্ট তোরা তো বলবি আমাকে কি হচ্ছে এসব?

-ওসব তুমি বুঝবে না।

-মানে?

-এই এখন আর কোনো কথা না। চলো সবাই নাস্তা করতে ডাকছে আমাদের। (ঝিমি)

এরাও রোদ কে পাওা দিলো না। রোদ জেনো বোকা বনে গেলো। সবাই নাস্তা করতে চলে যায়। শুভ্র আসে।

-চল ভাই‌ রোদ নাস্তা করে নে। একটু পর বেরোতে হবে আমাদের।

-আরে আজব ব্যাপার। তোদের কিছুই তো আমি বুঝতে পারলাম না।

-কি বুঝতে পারিস নি?

-এসব কি হচ্ছে?

-আরে বলবো পরে সব। এখন চল আগে নাস্তা করে নিই।

-তারপর বেরোতে হবে কেন?

-শপিং করতে যাবো আরো অনেক কাজ আছে। চল তো নাস্তা করবো।

-কিন্তু….

-এখন আর কোনো কথা নয়….

রোদ কে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে শুভ্র ওকে জোড় করে নিয়ে এসে নাস্তা করতে বসিয়ে দেয়। সবাই নাস্তা করতে এসেছে কিন্তুু জুহি নেই। রোদ কয়েক বার এদিক সেদিক দেখার চেষ্টা করে কোথাও জুহি আছে কিনা।

শুভ্র বুঝতে পেরে রোদ কে চুপিচুপি বলে।

-তুই যাকে খুঁজছিস সে তার কাজে গেছে!

-মানে?

-মানে তোর মাথা। আগে তাড়াতাড়ি নাস্তা কর তো। যা খোঁজার পরে খুঁজিস।

অতঃপর সবাই নাস্তা করে নেয়। সবাই মিলে শপিংমলের উদ্দেশ্য বেরোয়।রোদ তো বারবার শুভ্র কে জিঙ্গেস করছে কিসের জন্য এসব করছে। কিন্তুু কোনোই উওর পাচ্ছে না সে।

দুপুর ২ টার দিকে সব কাজ শেষ হয়। তারপর সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে লাঞ্চ করে নেয়। জুহি কে নিয়ে গেছে অন্য কাজে। রোদ সকাল থেকে এখনো ওবধি জুহির দেখাই পায় নি।

যাই হোক সব কাজ শেষে বাসায় ফিরে সবাই। রোদ ওর রুমে চলে যায়। ভীষণ টায়ার্ড সবাই। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় রোদ। তারপর উঠে রুমের মধ্যে পায়চারী করছে।

-নাহ এভাবে আর হবে না। এক দিকে কেউ তো আমায় বলছেই না এসব কি হচ্ছে? আবার অন্যদিকে জুহি কে একেবারের জন্য চোখের দেখাই দেখলাম না। গেলো কোথায় মেয়েটা।(মনে মনে)

রোদ জুহি কে ডাকতে ডাকতে ওর রুমের দিকে যেতেই রিমি এসে রোদের পথ আটকায়।

-জুহি এই জুহি…..

-আরে ভাই তুই?

-হ্যাঁ আমি। তোরা জুহির রুমে কি করছিস?

-অনেক কিছু। তোকে কেন বলবো?

-না বললে নাই। আমার সাথে জুহির কথা আছে ওকে ডেকে দে তো।

-সরি ভাই জুহি আপু তোর সাথে কথা বলবে না।

-কেন আমি আবার কি করলাম?

-সেটা তো তুই ভালো জানিস।

-দেখ রিমি ফাজলামি করিস না। জুহি কে ডেকে দে।

-বলছি তো জুহি আপু তোর সাথে কথা বলবে না। তুই যা তো এখন।

এই কথাটি বলে রিমি রোদের মুখের উপর ঠাস করে দরজা টা বন্ধ করে দেয়। হাবলার মতো অবস্থা রোদের।

ভীষণ রাগ হচ্ছে রোদের। শুভ্রর থেকে জানা দরকার এসবের মানে কি।

-কিরে তোদের মাঝে কি এমন কথা হচ্ছিলো শুনি? যা আমি আসার পর বন্ধ হয়ে গেছে?

-কককই কিছু না তো ভাইয়া। (কাব্য)

-সেসব ছাড়। শুভ্র এখন তো বল কি হচ্ছে টা কি? কেন হচ্ছে?

-সেটা তুই বড় আম্মু আর বড় আব্বু কে জিঙ্গেস কর।

রোদ কে পাস কাটিয়ে চলে যায় সবাই। রোদ কিছু একটা ভেবে নিজের রুমে চলে যায়। বেলকনিতে গিয়ে দেখে তাদের বাসা টা সাজানো হচ্ছে। রোদ রীতিমত বিস্মিত।

কারো বিয়ে হলে মেবি এমন সাজানো হয়। কিন্তুু কার বিয়ে হচ্ছে? কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না রোদ। সব কিছু মাথায় ঘুরতে ঘুরতে তাল গোল পাকিয়ে ফেলছে। রোদ আর কোনো উপায় না পেয়ে ওর আম্মুর কাছে যায়।

-আম্মু তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

-কি কথা বল।(কাজ করতে করতে)

-আম্মু বলো না এসব কি হচ্ছে কেন হচ্ছে?

-কোন সব?

-শপিং করলে এখন দেখি আমাদের বাসা টা সাজানো হচ্ছে? কেন করা হচ্ছে এসব আম্মু? কারো বিয়ে নাকি?

-হ্যাঁ তুই এখনো জানিস না এটা?

-কি জানবো?

-জুহির বিয়ে যে।

-হোয়াট? কার সাথে জুহির বিয়ে?

-সেসব জেনে তুই কি করবি? তুই তো জুহি কে ভালোবাসিস না।

-মানেহ……..

রোদের আম্মু রোদ কে আর কিছু না বলে চলে যায়। মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা রোদের। জুহির বিয়ে…! আর কিছুই ভাবতে পারছে না রোদ। রোদ শুভ্র কে ওর রুমে নিয়ে আসে।

-শুভ্র তুই আমাকে বলিস নি কেন যে জুহির বিয়ে?

-দেখ ভাই আমাদের দোষ দিস না। বড় আব্বু নিষেধ করেছিল।

-কেন নিষেধ করেছে?

-সেটা তো আমি ও জানিনা।

-জুহির বিয়ে অন্য কারো সাথে হবে এসবের মানে কি?

-তুই তো জুহি কে ভালোবাসিস না। মেয়েটা তোকে সেই ছোট বেলা থেকে ভালোবেসে আসছে। কিন্তুু তুই বরাবরের মতো অবহেলা করে গেছিস। তাই জুহি…..

-শুভ্র বিশ্বাস কর আমি ওকে খুব ভালোবাসি। ছোট বেলায় তো আমি না বুঝে ওকে অবহেলা করতাম কিন্তুু এখন তো ভালিবাসি।
খুব ভালোবাসি ওকে আমি খুব।

-তাহলে গতকাল কেন ওকে বলেছিস? ওর মুখ ও আর দেখতে চাস না?

-সেটা তো আমি রাগ করে বলেছিলাম!

-তুই ভালো জানিস। আমি কিছু বলবো না।

-প্লিজ শুভ্র কিছু একটা কর আমি জুহি কে ছাড়া বাঁচবো না। খুব ভালোবাসি। নিজের চাইতে ও বেশি ভালোবাসি। সেখানে ওকে অন্য কেউ বিয়ে করবে!?

-এতোই যখন ভালোবাসিস আবার রাগারাগি করতে গেলি কেন?

-সরি রে ভুল হয়ে গেছে।

-সেটা আমাকে বলে লাভ নেই। বিয়ে তো ঠিক ই হয়ে গেছে নাকি। জুহি ও রাজি।

-কোনো ভাবে কি বিয়ে টা আটকানো যায় না?

-তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? সব কিছু রেডি এখন কিভাবে বিয়ে আটকাবি?

-আমার জুহি কে অন্য কারো হতে দেবো না। দরকার হলে ওকে কিডন্যাপ করবো।

-কি বলছিস তুই রোদ? মাথা ঠিক আছে তোর?

-হ্যাঁ একদম ঠিক আছে।

-কি ভাবে কি করবি?

তারপর রোদ শুভ্র কে সব বুঝিয়ে দেয় কিভাবে কি করবে!

পরের দিন সকালে……

যথারীতি ফ্রেশ হয়ে পরিপাটি ভাবে রেডি রোদ। এখন শুধু আসল কাজ টাই হলে হলো। জুহি ছাঁদে সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছে। রোদ একবার গিয়ে দেখে আসে। রোদ জুহি কে আসতে বললে সে কিছুতেই আসবে না। তা রোদ ভালোই জানে।তাই রোদ শুভ্র কে পাঠায়।

শুভ্র ছাঁদে যায়। তারপর জুহি কে বলে…

-জুহি যাও তো আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আসো।

-ভাইয়া আমি!(মন খারাপ করে)

-হ্যাঁ তুমি! তোমার হাতের বানানো কফি খাবো আজকে। প্লিজ।

-আচ্ছা ঠিক আছে।

ঐ দিকে রোদ ফাঁদ পেতে বসে অপেক্ষা করছে কখন জুহি আসবে। শুভ্রর কথা শুনে জুহি ছাঁদ থেকে নিচে নামে। নিচে আসতেই পেছন থেকে রোদ জুহির মুখের উপর কিছু একটা চেপে ধরে। আর সাথে সাথেই জুহি সেন্সলেচ হয়ে যায়।
,
,
,
,
,
,
,
সেন্স ফিরলে চোখের সামনে রোদ কে দেখে অবাক হয়ে যায় জুহি। কোনো ভাবে উঠে দাঁড়ায় সে।

-আপনি! আপনি এখানে? (রেগে)

-হ্যাঁ আমি।

জুহি চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে এটা কোন জায়গা। পুরো রুমে ধুলাবালি ভর্তি।

-এটা আমি কোথায়? আপনি আমায় কোথায় নিয়ে এলেন?

-যেখানে নিয়ে এসেছি বেশ করেছি। তোর কও বড় সাহস তুই আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবি।

-হ্যাঁ করবো। তাতে আপনার সমস্যা টা কোথায়? আপনি তো আমাকে ভালোবাসেন না।

-তোকে বলছি আমি তোকে ভালোবাসি না?

-বলেছেন ই তো। আপনি বলেছেন আমার মুখ ও দেখতে চান না সো….

-চুপ আর একটাও যদি কথা বলেছিস তো তোর মুখে আমি সুপারগ্লু লাগিয়ে দেবো।

-আমি বাসায় যাবো এ্যাঁ এ্যাঁ……

রোদ শুভ্র কে ফোন দেয়।

-কই তুই?

-এই তো আর ২ মিনিট আসছি!

-যাকে নিয়ে আসতে বলেছিলাম নিয়ে আসছিস তো?

-হ্যাঁ একদম। ফোন রাখ তুই।

-আচ্ছা।

জুহি একপাশে বসে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছে। আর রোদের কান্ড দেখছে।প্রচন্ড রকমের হাসি পেলে ও তা জোরপূর্বক চেপে রেখেছে জুহি। রোদ পায়চারী করছে। কিছুক্ষণ পর দরজায় কেউ নক করে। রোদ ভাবে হয়তো শুভ্র এসেছে।

কিছু টা খুশি হয় রোদ। মুখে হাসি নিয়ে দরজা খুলতেই‌ চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা রোদের!…….

চলবে—————-

#পর

কাছে_পাশে পর্ব_৯

0

কাছে_পাশে
পর্ব_৯
#Hiya_Chowdhury

কিন্তুু এবার ঠিক তার উল্টো। জুহির মাথাটা কেমন ঝিম ধরে এসেছে। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নেয় জুহি কিন্তুু তার সামনে থাকা লোকটি তাকে ধরে নেয়। এরপর আর কিছু মনে নেই জুহির। কারণ সে সেন্সলেচ হয়ে যায়।

অন্যদিকে রোদ অফিসে চলে তো যায় ঠিক কিন্তুু নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছে না। বারবার জুহির সেই অসহায় মুখ টি চোখের সামনে ভেসে উঠছে। নাহ তার হয়তো জুহি কে এভাবে ইগনোর করা ঠিক হয়নি।

হাজার হোক সে জুহি কে ভালোবাসে। জুহির তো কোনো দোষ নেই। হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে সে নাহয় উল্টা পাল্টা বলে ফেলেছে তাই বলে রোদের এমন বিহেভ করা ঠিক হয়নি। বুঝতে পেরে রোদ দ্রুত গাড়ির নিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা দেয়।

বাসায় পৌঁছে যায় রোদ। নিজের রুমে গিয়ে বেডের পাশে একটা কাগজ পড়ে থাকতে দেখে সে। রোদ কাগজ টা হাতে নেয়।

-আমি না হয় ভুল করে উল্টোপাল্টা বলে ফেলেছি তাই বলে আপনি ও আমার সাথে এমন বিহেভ করবেন? আমি আপনাকে সেই ছোট বেলা থেকে ভালোবাসতাম। ছোট বেলায় আপনি যখন আমাকে অবহেলা করতে শুরু করেছিলেন একদিন আপনার উপর রাগ করেই দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। ইচ্ছে ছিলো আর কখনোই আপনার সাথে দেখা করবো না। রাগ করে মামনি কে নিষেধ করেছিলাম যাতে আমার কোনো কিছুই আপনাকে না দেয়। আপনি জেনো কোনো ভাবেই আমার সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন। কিন্তুু নিজের এই জেদ রাগ সব হার মেনে যায় আপনার ভালোবাসার কাছে। যখন মামনি বললো আমি আপনাদের ঐ খান থেকে চলে আসার পর আপনি ও পাগলামি শুরু করে দিয়েছিলেন। আমি চলে আসার পর থেকে এখন ওবধি আমার জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছেন আমার জন্য বিয়ে পর্যন্ত করছেন না। আপনি যখন আমার ছবি বুকে নিয়ে কান্না করছিলেন তখন মামনি আপনাকে দেখে ফেলে। সব কিছু জানার পর আর থাকতে পারি নি।

চলে আসি এখানে। তারপর আপনাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য শুভ ভাইয়ার সাথে অভিনয় করছিলাম। এটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম আপনাকে যে আগে আমার কেমন লাগতো যখন আপনি অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলতেন। আজকে আপনার কথায় বুঝলাম হয়তো আপনার সাথে একটু বেশী ওভার রিয়েক্ট করে ফেলেছি। পারলে ক্ষমা করে দিবেন। আপনি যখন আর আমার মুখ ও দেখতে চান না চলে যাচ্ছি আমি। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

“ইতি জুহি”

রোদ পুরো লিখা টা পড়ে থ হয়ে যায়। কোথায় চলে যাচ্ছে জুহি..??রোদ নিচে নেমে ওর আম্মু কে ডাকে।

-আম্মু জুহি কোথায়?

-ও তো বললো ওর ফুফুর বাসায় যাবে।

-তুমি যেতে দিলে কেন?

-আরে ও জোড় করছিলো। কিন্তুু কি হলো টা কি?

-আচ্ছা আমি যাচ্ছি।

-কোথায় যাচ্ছিস?

-পরে বলবো।

রোদ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। যে করেই হোক জুহি কে আটকাতেই হবে। না হলে কখন আবার রাগ করে দেশের বাহিরে চলে যায় বলা যাবে না। দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে রোদ।

জুহির যখন সেন্স ফিরে তখন নিজেকে জুহি হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করে। মাথায় হালকা ব্যাথা অনুভব করে জুহি। আশে পাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। আস্তে আস্তে বেড ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় জুহি। এমন সময় একটি নার্স আসে।

-ম্যাম আপনার জ্ঞান ফিরেছে…

-হুম কিন্তুু কি হয়েছিলো আমার। আর আমি হসপিটালে কিভাবে এলাম?

-জ্বী ম্যাম আপনি সেন্সলেচ হয়ে গিয়েছিলেন। একজন ভদ্রলোক আপনাকে হসপিটালে নিয়ে এসেছে।

-কে উনি।

-আমি ডেকে দিচ্ছি উনাকে।

নার্স টি বাহিরে গিয়ে জিসান কে জানায় যে জুহির জ্ঞান ফিরেছে। জিসান জুহির কাছে আসে। জুহি জিসান কে দেখেই রেগে যায়।

-আপনি! আপনি এখানে কি করছেন? (রেগে)

-শান্ত হোন। এতো রেগে যাচ্ছেন কেন। আর আজকের ঐ এক্সিডেন্টের জন্য আই এম এক্সট্রিমলি সরি।

-সরি আমাকে নয় উনাকে বললে ভালো হতো।

-হুম সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেন বলুনতো।

-আমাকে হসপিটালে নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ। আপনার নিশ্চয়ই এখন টাকা চাই! বলুন কতো টাকা চাই?

-টাকা নয় আমার তোমাকেই চাই। (বিড়বিড় করে)

-কিছু কি বললেন?

-না তো।

-কিছু জিঙ্গেস করেছি আমি আপনাকে?

-হেল্প করে আবার টাকা নিবো সরি এমন মানুষ আমি নই।

-কেমন মানুষ আপনি তাতো আমি নিজের চোখেই দেখলাম। এখন আসি আমি।

-এইইইই ওয়েট ওয়েট

-কি?

-আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

-কেন আমি আমার যেখানে যাওয়ার কথা সেখানেই যাচ্ছি।

-ডাক্তার বলেছে আপনার শরীর দুর্বল এখন আপনার বেড রেস্ট দরকার।

-তা নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না।

জুহি দ্রুত পায়ে হেঁটে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে একটা রিকশা নিয়ে ওর ফুফুর বাসার দিকে রওয়ানা দেয়। আর হঠাৎ করেই রোদ এসে জুহির সামনে দাঁড়ায়।

-কোথায় যাচ্ছিস তুই?

জুহি তার সামনে রোদ কে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে যায়। আবার সকালে রোদের বলা কথা গুলো মনে পড়ে।

-আমি আমার যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবো। আপনার কি দরকার?

-জুহি আ’ম সরি আমার ও ভুল হয়ে গেছে রে মাফ করে দে।

-মানে কি? আপনি কেন ক্ষমা চাচ্ছেন। ক্ষমা তো আমি চাইবো আপনার কাছে। আর আপনি তো আমার মুখ ও দেখতে চান না সো পথ ছাড়ুন আমাকে যেতে দিন।

-চুপ একদম চুপ কোনো কথা বলবি না। কোথাও যেতে পারবি না তুই। নেমে আয়।

-না।

-আসবি না তো?

-না।

-ওকে। আমি আমার কাজ করছি।

-মানে?

রোদ জুহি কে কিছু বলতে না দিয়ে ওকে কোলে নিয়ে গাড়ি তে বসিয়ে ডোর লক করে দেয়। তারপর নিজে ও গাড়ি তে বসে।

-মানে হচ্ছে এটা। কেউ যদি স্বইচ্ছায় না আসে তো তাকে আমি জোড় করে নিয়ে আসি।

-হুহ।(রাগি লুক নিয়ে)

জুহি রোদের কথায় ভেঙ্গচি কেটে রাগ করে অন্যদিকে ফিরে যায়। রোদ হোহো করে হেসে উঠে। রোদ যে জুহি কে পেয়েছে এতেই ওর খুঁশি লাগছে। পুরো টা সময় জুহি রোদের সাথে একটা কথা ও বললো না। রোদ তাকে এটা সেটা বলেই যাচ্ছে কিন্তু জুহি কোনো উওর দিচ্ছে না। সে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।

অন্যদিকে জিসান হসপিটালের বিল চুকিয়ে হসপিটাল থেকে বের হতেই দেখে কোথা ও জুহির চিহৃ ও নেই।

-মিনিটের মধ্যে কোথায় উধাও হয়ে গেলো মেয়েটা? (মনে মনে)

এমন সময় জিসানের পিএ সাদ আসে।

-স্যার আপনি যাকে খুঁজছেন সে তো চলে গেছে।

-কোথায় গেছে?

-তাতো জানিনা। শুধু দেখেছি একটা ছেলে ঐ মেয়েটিকে জোড় করে গাড়ি তে বসিয়ে নিয়ে চলে গেছে।

-সিট তুমি ওদের আটকাও নি কেন?

-কেন স্যার উনি কে?

-কিছু না। ঐ মেয়েটির অল ডিটেইল চাই আমার।

-ওকে স্যার।

রোদ তাদের বাসায় এসে পৌঁছায়।

-এবার নামেন ম্যাম সাহেব!,

-উহু। (মাথা নাড়িয়ে না জানায়)

-নামবেন না? নাকি আবার কোলে……..

-এইতো নামছি।

তাড়াতাড়ি নেমে যায় জুহি। না হলে আবার যদি রোদ তাকে কোলে নিয়ে নেয় তাহলে মান সম্মান সব শেষ। বাসায় ঢুকতেই রোদের আম্মু সামনে পড়ে।

-কিরে জুহি রোদ তোদের হয়েছে টা কি বল তো? কিছুই তো বুঝলাম না।

-মামনি তোমার ছেলে আমাকে বলেছে আমার মুখ দেখতে চায় না তাই আমি চলে গেছি কিন্তুু আবার মাঝ রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে এসেছে কেন জিঙ্গেস করো।

-কিরে রোদ কি শুনছি!

-ঐ আম্মু হয়েছে কি…..(মাথা চুলকিয়ে)

-এ্যাঁ এ্যাঁ……..

-জুহি কি হলো আবার তোর?(রোদের আম্মু)

-কি হয়েছে জুহি? (রোদ)

-আমার ক্ষুধা পেয়েছে।

-দেখছিস রোদ তোর জন্য মেয়ে টা এখনো ওবধি না খেয়ে আছে। জুহি তোকে বলছি রোদ রাগারাগি করবে তাই বলে তুই খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিবি এসব কি রে?

-সরি মামনি।

-আমি কি ওকে বলেছিলাম না খেয়ে থাকতে?

-বলতে হয় নারে বান্দর। (রোদের কান টেনে)

-আহ আম্মু লাগছে তো।

-তুই ওকে ভালোবাসিস কিন্তুু ওকে বুঝিস না হ্যাঁ?

-বুঝি তো।

-হয়েছে আর বলতে হবে না। জুহি তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি টেবিলে খাবার সার্ভ করছি।

-আচ্ছা মামনি।

জুহি রোদের দিকে তাকিয়ে ভেঙ্গচি কেটে উপরে চলে যায়। রোদ হেসে দেয়। বড্ড খুশি লাগছে তার। যখন জানতে পেরেছে জুহি তাকে এখনো ভালোবাসে। আর শুধু তার জন্যই এখানে এসেছে। অন্যদিকে জুহি ভাবতেই পারেনি রোদ তাকে এভাবে নিয়ে আসবে।

সব প্ল্যান ভেজতে গেলো। রোদ ও জেনে গেছে সে তাকে ভালোবাসে। নয়তো রোদ কে আরো কয়েকদিন জ্বালানো যেতো।

-ইশ কি ভুল টাই না করলাম আমি। (মনে মনে)

সবাই মিলে একসাথে লাঞ্চ করে নেয়। তারপর থেকেই জুহি রোদের সামনে নিজেকে কোনো ভাবেই ধরা দিচ্ছে না। পালিয়ে বেড়াচ্ছে। রোদ চারদিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে জুহি কে কিন্তুু কোথায় জুহি?

পুরো বাড়ি খুঁজে ও জুহি না পেয়ে হতাশ হয়ে যায় রোদ।অবশেষে রোদ ছাঁদে গিয়ে দেখে জুহি সেখানে লুকিয়ে বসে আছে। রোদ কে দেখেই জুহি চোখ বড় বড় করে নেয়।

-কি আর একটু হলেই তো মনে হয় চোখ দুটো বেরিয়ে আসবে!

-মমমমানে।

-মানে তোর মাথা। তুই আমার থেকে পালাচ্ছিস?

-ককককই নাতো। কেন পালাবো আপনি বাঘ না ভাল্লুক?

-সেটাই তো।

রোদ আস্তে আস্তে জুহির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

-ককককি হলো ভাইয়া আপনি আমার দিকে এগোচ্ছেন কেন?

-আমি তোর ভাইয়া তাই না।

-ননননা মমমানে…..!

রোদ জুহির খুব কাছে চলে আসে। এতো টাই কাছে যে রোদের নিশ্বাস জুহির মুখের উপর এসে পড়ছে। জুহির হার্টবিট বেড়ে গেছে। ঠোঁট প্রচন্ড রকমের কাঁপছে জুহির। যা রোদ কে আরো বেশী কাছে টানছে।

খুব আকর্ষণ করছে রোদ কে। রোদ জেনো কোনো এক ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। জুহি চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। যা রোদ কে আরো পাগল করে দিচ্ছে। রোদ আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে জুহির ঠোঁট জোড়া নিজের করে নেয়………

চলবে————

#পর্ব

কাছে_পাশে পর্ব_৮

0

কাছে_পাশে
পর্ব_৮
#Hiya_Chowdhury

রোদ আস্তে আস্তে জুহির পাশে গিয়ে বসে। কেমন জেনো ঘোর লেগে গেছে তার। ইচ্ছে করছে জুহির কপালে তার ঠোঁট ছুঁয়ে দিতে। যেই ভাবা সেই রোদ আস্তে করে জুহির কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। কিছু টা কেঁপে উঠলো জুহি।

হঠাৎ করে জুহির ঘুম ভেঙ্গে যায়। আর দেখতে পায় রোদ তার খুব কাছে। খুব রেগে যায় জুহি। রোদ কে একটা ধাক্কা মেরে সরিয়ে উঠে বসে জুহি। রোদ তাল সামলাতে না পড়ে যেতেই যেতেই উঠে দাঁড়ায়।

-ছিঃ ভাইয়া আপনি কি করতে যাচ্ছিলেন? এতো টা নিচে নেমে যাবেন আমি ভাবতে ও পারি নি। ঘৃণা হচ্ছে আমার। এতো টা জঘন্য আপনি। ছিঃ….

-জুহি আমার কথা টা তো শোন…..

-আমার রুম থেকে চলে যান এক্ষুনি।

-জুহি…..

-যদি আমার খারাপ দেখতে না চান তো চলে যান…. যেতে বলছি না আপনাকে শুনতে পারছেন না আপনি? (চেঁচিয়ে)

রোদ ও রেগে যায়। জুহির হাত বেডের সাথে চেপে ধরে।

-তোর সাথে আমি খারাপ কিছুই করতে আসি নি। জাস্ট তোকে একটু দেখতে এসেছি। তাই বলে তুই আমাকে এগুলো বললি? খারাপ কিছু করার থাকলে তোকে এসব বলার সুযোগ ই দিতাম না।

রোদ কিছু না বলে জুহির হাত ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।জুহি তার সাথে এতোটা মিসবিহেভ করবে সে ভাবতে ও পারে নি। রোদ বুঝতে পারলো তার হয়তো এই কাজ টা ঠিক হয় নি…. কিন্তুু জুহি কিভাবে তাকে এতো বাজে ভাবতে পারলো…?

জুহি বুঝতে চেষ্টা করলো কি ছিলো এটা? রোদ কি করতে যাচ্ছিলো তার সাথে? হঠাৎ করে ঘুম ভাঙ্গার ফলে জুহির সেন্স ঠিক ছিলো না। জুহি নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। রোদ কি ভাবলো তাকে..?

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে জুহি আবার ঘুমিয়ে পড়লো সে নিজে ও জানে না। অন্যদিকে রোদ তার রুমে গিয়ে দেওয়ালে একটা ঘুষি মারে।

-এতো টা বাজে চিন্তা ভাবনা আমাকে নিয়ে জুহির ছিঃ…….

সকালে জুহি ঘুম থেকে উঠে। রাতের বিষয় টা মনে পড়ে যায়। যেভাবেই‌ হোক রোদ কে সরি বলা প্রয়োজন। জুহি নিচে এসে জানতে পারে রোদ অনেক আগেই অফিসে চলে গেছে।এতো তাড়াতাড়ি তো রোদ অফিসে যায় না। তাহলে আজকে…? হয়তো রাগ করেই এমন করছে রোদ। বুঝতে পারে জুহি। মন টা খারাপ ই হয়ে গেছে জুহির।
,
,
,
,
,
,
জুহি পুরো দিন অপেক্ষা করে রোদের জন্য। কখন রোদ আসবে আর কখন সে সরি বলবে এই ভেবে। কিন্তুু রোদের আসার নাম গন্ধ ও নেই। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে রোদ।

জুহি ভাবলো এখন বলা ঠিক হবে না আগে কিছু টা রেস্ট নিক। রোদ ফ্রেশ হয়ে নেয়। সন্ধ্যায় সবাই মিলে বসে আড্ডা দিচ্ছে। জুহি শুধু উপরে তার ঘরে ছিলো। কিছুক্ষণ পর জুহি ড্রয়িংরুমে ওদের সাথে আড্ডা দিতে আসলেই রোদ উঠে চলে যায়।

জুহি কে কোনো পাওাই দিচ্ছে না। জুহির থেকে দূরে দূরে থাকছে রোদ। যেখানে জুহি আছে সেখান থেকে সে চলে আসে। জুহি রোদ কে তার কথা টা বলতেই পারছে না। কোনো চান্স ই দিচ্ছে না রোদ তাকে। রোদ জুহি কে বার বার ইগনোর করছে যেটা জুহির বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে।

আর সহ্য করতে পারলো না জুহি‌…..

জুহি রোদ কে কোথাও না দেখে ওর রুমে যায়। রোদ জুহি কে দেখতে পেয়ে……

-তুই কেন এসেছিস আমার রুমে?

-আসলে আমার ভুল হয়ে গেছে ভাইয়া…. আমি আসলে বুঝতে পারি নি…. তাই…

-তুই আমার রুম থেকে চলে যা নয়তো আমি ই চলে যাবো!

-আমি তো বলছি আমার ভুল হয়েছে।

রোদ রাগ করে নিজের রুম থেকে হনহন করে বেরিয়ে চলে যায়। জুহির এবার খুব খারাপ লাগলো। সে নাহয় রাতে ঘুমের ঘোরে উল্টা পাল্টা বলে ফেলেছে তাই বলে এমন করতে হবে…?

জুহি ডিনার না করেই শুয়ে পড়ে। রোদের আম্মু জুহি কে ডাকতে আসলে বলে সে খাবে ক্ষুধা নেই। রোদের আম্মু জোড় করে ও কোনো লাভ হলো না। জুহির এক কথা সে খাবে না।

রোদ ভালোই বুঝতে পারছে জিত করে জুহি ডিনার করছে না। না করুক তাতে রোদের কি হুহ….

পরের দিন ও যথারীতি নাস্তা সেরে নেয় রোদ। গায়ে ব্লেজার টা জড়িয়ে নেয় সে। এমন সময় জুহির আগমন।

-আবার কেন এসেছিস তুই?

-এতো রাগ করছেন কেন আপনি? আমি বললাম তো সরি। ঘুমের ঘোরে আমি কি উল্টাপাল্টা বলে ফেলেছি।

চোখ মুখ লাল হয়ে আছে রোদের। রোদ জুহির কথা শুনে আরো রেগে গিয়ে জুহি কে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে।

-শোন তোর এসব শুনার মতো আমার টাইম নাই। তুই আমাকে কিভাবে এতো টা নিচু স্থানে বসিয়ে দিতে পারলি। ছিঃ তোর মুখ ও দেখার ইচ্ছা নাই আমার। আর কখনো আমার সামনে ও আসবি না।

রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায় জুহি। খুব কান্না পাচ্ছে তার। নিজেকে সামলাতে না পেরে ফুঁপিয়ে কান্না করে দেয় সে।
,
,
,
,
,
,
প্রায় অনেক্ষন কান্না করে জুহি। ফলে চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে। রোদ যখন আর তার মুখ ও দেখতে চাচ্ছে না তাহলে সে ওই বাড়িতে থেকে লাভ কি? জুহি ঠিক করে সে তার ফুফির বাসায় চলে যাবে।

জুহি ওয়াশরুমে গিয়ে ভালোভাবে মুখ টা ধুয়ে নেয়। যাতে কেউ বুঝতে না পারে সে কান্না করেছে। তারপর সব কিছু গুছিয়ে রেডি হয়ে নেয় সে।

-কিরে জুহি এই সকাল বেলায় কোথায় যাচ্ছিস তুই? তাও আবার নাস্তা না করেই? কি হয়েছে তোর জুহি? কোনো সমস্যা।

-না মামনি কোনো সমস্যা না। আমার এমনি ভালো লাগছে না। ফুফুনি ফোন দিয়েছিলো তোমাকে তো কয়দিন আগেই বললাম। আজ আবার বললো তাই ভাবলাম গিয়ে ঘুরে আসি।

-তাই বলে নাস্তা না করে কোথায় যাচ্ছিস?

-না মামনি আমি নাস্তা পরে করে নিবো। এক্ষুনি বের হতে হবে আমাকে প্লিজ।

-রাতে ও না খেয়ে ঘুনিয়েছিস আবার এখনো নাস্তা করছিস না। মানে কি এসবের জুহি? এভাবে না খেয়ে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবো তুই এটা বুঝিস না!

-ওহহো মামনি বললাম তো আমি যাওয়া আগে রেস্টুরেন্টে গিয়ে নাস্তা করে নিবো এখন আসি কেমন। টাটা।

-তোকে আর কি বলবো। সত্যি করে বল নাস্তা করে নিবি তো?

-হু একদম সত্যি। এখন যাই।

-সাবধানে যাস।

-ওকে।

বেশ হাসিখুশি ভাবেই রোদের আম্মুর থেকে বিদায় নেয়ার জুহি। উনাকে বুঝতেই দিলো না আসলে ঠিক কি হয়েছে? জুহি গাড়ি ড্রাইভার কে কিছু টা পথ যাওয়ার পর বললো।

-ড্রাইভার আংকেল থামুন আমি এখানেই‌ নামবো।

-আরো তো অনেক টা পথ বাকি।

-থাক আমি যেতে পারবো।

-কি বলছেন আপনি ম্যাম সাহেব যদি জানতে পারে আমি আপনাকে মাঝরাস্তায় নামিয়ে দিয়েছি তাহলে আমাকে জব থেকেই বের করে দেবেন।

-আরে না কিছু করবেন না। আমি বলছি তো।

-কিন্তুু…….

-কোনো কিন্তুু নয়।

এভাবে অনেকক্ষণ পর ড্রাইভার টাকে কোনো ভাবে বুঝ দিয়ে পাঠিয়ে দেয় জুহি। গাড়ি তে তার ভালোই লাগছে না। হেটে হেটে বেশ লাগছে।

রোদের সেই কথা গুলো ভাবছে জুহি। কিছুই জেনো ভালো লাগছে না। রোদের কথা মতো তো তার মুখ আর রোদ দেখতে পাবে না তবে কি রোদ খুশি হবে? এসব ভাবতে ভাবতে সামনে তাকায় জুহি।

একটা গাড়ি এসে সজোরে রাস্তার পাশে থাকা ফুচকা বিক্রেতার ঠেলা গাড়ি কে ধাক্কা দেয়। ফলে সব জিনিস মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গাড়ি থেকে একজন লোক নেমে আসে।

লোকটার দোষেই এমন হয়েছে। সে ফুচকা ওয়ালা কে সরি না বলে উল্টো মারতে আসছে। ততক্ষণে রাস্তায় অনেক লোক জমা হয়ে গেছে।

-ছোট লোকের বাচ্চা তোর জন্য আজকে আমার গাড়ির কতো টা ক্ষতি হয়েছে তুই জানিস??……

এ কথাটি বলে গাড়ি থেকে নেমে আসা লোকটি ফুচকা ওয়ালা কে মারতে রেগে তেড়ে আসে। ফুচকা ওয়ালার গায়ে হাত দিতে যাবে জুহি লোকটার হাত ধরে ছিটকে ফেলেন দেয়।

লোকটার ই দোষ। সে উল্টা বিনা দোষে ফুচকা ওয়ালার গায়ে হাত দিবে। এটা দেখে জুহি রেগে গিয়েছে।

-দোষ টা উনার নয় আপনার। গাড়ি চালাতে না পারলে রাস্তায় নামেন কেন? নাকি চোখ হাতে নিয়ে গাড়ি চালান। কতো টাকার মালিক আপনি যার জন্য লোকটা কে ছোট লোক বলছেন? কিসের এতো অহংকার? সামান্য আল্লাহর সৃষ্টি জীব হয়ে উনাকে আপনি ছোট লোক বলছেন তাহলে আপনি কি?।। আপনার গাড়ির ধাক্কায় ক্ষতি আপনার নয় উনার হয়েছে। আপনি ধন সম্পদের মালিক তাই আপনার কাছে হয়তো দু চার টাকার কোনো মূল্য নেই কিন্তুু এই মানুষটা যে সারাদিন এই কড়া রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ফুচকা বিক্রি করে যাচ্ছে! তার কাছে এই দু চার টাকার মূল্য দু চার লক্ষ কোটি টাকার থেকে ও বেশি মূল্যবান। দিন উনার ক্ষতিপূরণ দিন।

গাড়ি তে থাকা লোকটির নাম জিসান। সে ও একজন বিজনেসম্যান। জিসান হা করে জুহির দিকে তাকিয়ে আছে। জুহির কোনো কথাই জেনো তার কান ওবধি পৌঁছাচ্ছে না।

সে তো জুহির রাগি লুক কাঁপা কাঁপা ঠোঁট রেগে লাল হয়ে কথা বলা এসব দেখে পাগল হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের জন্য জিসান অন্য কোনো এক রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে। যেই রাজ্য জুড়ে শুধু জুহির প্রতিচ্ছবি বিদ্যমান।

-ও হ্যালো আপনাকে কিছু বলছি আমি এভাবে হা করে আছেন কেন?

-হ্যাঁ কিকিকি হয়েছে।

-আপনি উনার অনেক ক্ষতি করেছেন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এখন আপনাকে।

জিসান অনেক গুলা টাকা বের করে লোকটির হাতে ধরিয়ে দেয়। কিন্তুু লোকটি তার উপযুক্ত টাকা নিয়ে বললো…

-দেখো বাবা আমরা গরীব কিন্তুু লোভী নই।

জুহি ফুচকা ওয়ালা কে জিঙ্গেস করে…

-মামা আপনার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তো?

-হ্যাঁ মা।

জুহি বাকি টাকা গুলো জিসানের হাতে ধরিয়ে দেয়।

-আশা করি নেক্সট টাইম আর এমন কিছু করবেন না।

-হুম।

আস্তে আস্তে সবাই চলে যায়। জিসান এখনো অবাক দৃষ্টিতে জুহি কে দেখছে। মুগ্ধ হয়ে গেছে জিসান। অন্য সময় হলে জিসান বুঝিয়ে দিতো তাকে অপমান করার মানে কি।

কিন্তুু এবার ঠিক তার উল্টো। জুহির মাথাটা কেমন ঝিম ধরে এসেছে। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নেয় জুহি কিন্তুু তার সামনে থাকা লোকটি তাকে ধরে নেয়। এরপর আর কিছু মনে নেই জুহির। কারণ সে সেন্সলেচ হয়ে গেছে………

চলবে————

#পর্ব