Sunday, July 6, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1866



বালির সংসার পর্ব-০৩

0

#বালির_সংসার
পর্ব-০৩
.
.
অর্থি যেদিন বাড়ি ছেড়েছিলো সেদিন মা তাকে অভিশাপ করে বলেছিলো
– মেয়ে হয়ে তুই যে কষ্ট গুলো দিয়ে গেলি এর জন্য তুই সারাজীবন সুখী হতে পারবি না। আজ থেকে তুই মরে গেলি। আমার থেকে আমার মেয়েকে কেড়ে নিলি, আল্লাহ তায়ালার কাছে আচল ফেলে চাইলাম তোর বুকে থেকেও আল্লাহ যেনো তোর সন্তান কে কেড়ে নেয়।
তখন তুই বুঝবি। কষ্ট কাকে বলে।
.
ফোন কানে নিয়েই কথাগুলো মনে পড়ে গেলো অর্থির মায়ের। বুকের ভিতর টা হুহু করে উঠলো।
.
.
– মা! জানো মা! আমার দুইদিনের মেয়েটা আর বাঁঁচবে না মা! জন্মের পর থেকে মা ওকে তো বুকেই নিতে পারিনি।
মা! আমি তোমার পায়ে ধরি, অভিশাপ টা ফিরিয়ে নাও।
মা!
.
কল কেটে গেলো। অর্থির মা চুপচাপ আছে। ওর বাবা জিজ্ঞেস করছিলো কি হয়েছে।।
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সবটা জেনে ঝড় মাথায় নিয়েই বেড়িয়ে পড়লো।
মেয়ে তার খুব আদরের। সেদিন বাধ্য হয়েছিলো বাড়ি ছাড়তে।
কিছু বলতে পারেনি। চুপচাপ ওর বাসার সামনে মসজিদে নামাজ আদায় করে একটু দেখার আশায়।
.
.
বাবা মা কে দেখে অর্থি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। মা স্বান্তনার বাণী দিলেও কি কান্না থামে?
বাবা যেনো মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদি কিছু করেই হোক নাতনী কে বাঁচাতে।
যদি আল্লাহ একটু রহমত করে।
মেয়ের উপর অভিমান তাই বলে মন থেকে বলেনি কথা গুলো।
আল্লাহ তুমি মাফ করো গো। আল্লাহ গো। রহমত করো।
মেয়ের মুখের দিকে তাকাও।
.
রুপ ফিরে এসে দেখে নিশি বিছানায় শুয়ে আছে। হাতে রুপের ফোন।
স্ক্রীনে ভেসে আসে অর্থির হাসি মুখ।
অর্থির মুখ টা দেখে বিবেক যে বাধছে। মেয়েটা যে ক্লিনিকে।
কিন্তু নিশি কে ছেড়ে যাওয়াটা যে সম্ভব না।
মেয়েটার খুব জ্বর।
– খাবার খেয়ে নে।
– ওকে ছেড়ে দে।
– মানে?
– বুঝিস না তুই? এই মেয়েকে ছেড়ে দে। চল অন্য কোথাও যাবো।
ছোট্ট সংসার বানাবো। চল না।।
– কি বলছিস এসব। খেয়ে মেডিসিন নিবি আয়।
– আগে বল তুই ওকে ছাড়বি! না হলে খাবো না।
– একটা থাপ্পড় মারবো। আয় এদিকে খেয়েনে।
– আমি তোর এই শাসন খুব মিস করি। তোকে খুব ভালোবাসি সেই প্রথম থেকে।
.
নিশি এসে চুপচাপ বিড়ালছানার মতো রুপের বুকে মাথা রাখে। জ্বর টা মনে হয় ক্রমশ বাড়ছে।
.
.
দূর থেকে আজানের শব্দ আসছে। ঝড় থেমে গেছে।
কিছুক্ষণ আগে ডক্টর আদিত্য আহমেদ বললেন মেয়েটা কে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাঁচানো গেলো না।
অর্থি চুপচাপ বসে আছে।
আজকে তার চোখ আর রুপ কে খুজছে না।
আজ তার হাত স্পর্শ করতে চাচ্ছে তার অরুনীমা কে।
হ্যাঁ! অরুণীমা।
রুপ আর অর্থির মেয়ে অরুনীমা।
কিন্তু এখন আর নাম রেখে কি লাভ?
সবাই তো বলছে লাশ।
সব ফরমালিটিস পুরো করলো অর্থির বাবা।
পশ্চিমাকাশে সূর্য উঠছে। সেদিকে এম্বুলেন্স এর সায়রন বাজিয়ে নিয়ে চলেছে ছোট্ট অরুনীমা কে। অর্থির মা রুপ কে খুজলেও আজ অর্থি খুজছে না।
মা! মেয়ে! কেউ কারো স্পর্শ পেলো না। আগেই সব শেষ।
মেয়ের লাশ কোলে নিতেই গগনবিদারী চিৎকারে ভেসে উঠলো পুরো চারপাশ।
ক্লিনার খালাগুলো যেনো কাদছে।
প্রকৃতি অর্থির সাথে মিলিয়ে কাদছে।
আহারে মা! আহারে মাতৃত্ব।
.
.
চলবে
.
– Sabiya moon

বালির সংসার পর্ব-০২

0

#বালির_সংসার
পর্ব-০২
.
অর্থি জমজ সন্তান জন্ম দিয়েছে। এক ছেলে এক মেয়ে।
কিন্তু এখনো ওদের কে স্পর্শ করতে পারেনি। ডক্টর আদিত্য আহমদ বললেন বাচ্চাদের জন্য স্পেস খুব একটা ছিলো না। ছেলেটা মোটামুটি সুস্থ আছে কিন্তু মেয়েটা কে অবজারভেশনে রাখতে হচ্ছে।
.
ভোরের দিকে অর্থির মনে হলো কেউ একজন শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। তার মাথাটা ঠিক অর্থির বুকে।
চোখ না খুলেই বুঝতে পারলো এটা আর কেউ নয় রুপ।
যখন যখন দোষ করে ফেলে ঠিক তখন চুপচাপ এসে অর্থির বুকে মাথা রেখে চুপচাপ থাকবে, একসময় ঘুমিয়ে যাবে। নিজেও উঠবে না ওকেও উঠতে দিবে না। ঘুম থেকে উঠে
দেখবে অর্থির সব রাগ গলে পানি।
আচ্ছা রুপ কি জানে? ওদের দুজন বেবি হয়েছে?
.
নার্স এসে এভাবে দেখে রুপ কে ডাক দিতে চাইলে অর্থি ঈশারা করে কিছু না বলতে।
– আপনার কস্ট হচ্ছে না?
নার্সের প্রশ্নে অর্থি শুধু মাথা নেড়ে না বলে।
.
.
ঘুম থেকে উঠে রুপ দেখে অর্থি জেগে আছে।
রুপের অপমানবোধ কাজ করছিলো।
এই মেয়েটাকে এই সময় একা ফেলে যাওয়া ঠিক হয়নি।
আগে থেকে সে জানতো যে কিছু কমপ্লিকেশন আছে তারপরেও!
নিজের দুহাত দিয়ে অর্থি কে স্পর্শ করতে বিবেকে বাধছে।
সব থেকে কঠিন সময় এই সময়।
ভরসার হাত চেয়েছিলো মেয়েটা।
একটা সময় মেয়েটা রুপের জন্য সব ছেড়েছিলো।
কিন্তু আজ?
.
.
– আমাকে একটু পানি দিবা? গলা শুকিয়ে গেছে।
– মোটেই না! স্যালাইন চলছে।
– একটু। প্লিজ। না হলে মরে যাবো।
– না! একটুও না।
– আমি মরে গেলেতো তুমি খুশি হও। কালকেই বিয়ে করতে পারবা। কিন্তু আমার সন্তান দুইটা তো এতিম হবো।
.
কথাটা রুপের বুকে গিয়ে কাটার মতো বিধেছে। আচ্ছা ও কি কিছু বুঝতে পেরেছে? না হলে এসব কেনো বলছে?
.
কেবিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ম্যাসেজের শব্দ হলো
Nishi- tnkkkk u solo much.. Kal rate etttttto gula valobashar jnno.. Love u
.
রুপ রিপ্লে দিলো না। মোহে পড়ে হয়তো সে ভুল করেছে কিন্তু এক ভুল বারবার করলে সেটা পাপ হয়। ম্যাসেজ মিউট করে রেখে দিলো সে।
.
.
দেখতে দেখতে কেটে গেলো আরো কয়েকটা দিন।
ছেলেকে কোলে পেয়েছে। কাল মেয়েকে দিবে। দিলেই ওরা বাসায় চলে যেতে পারবে।
এই কয়েকদিন রুপ অফিস,সাইট কোথাও যায়নি। শুধুই অর্থির কাছে ছিলো।
পুরো দুনিয়া যখন এখানে তাহলে ফোন দিয়ে কি হবে আর অর্থির খেয়াল রাখতেই সময় পার। ফোন চার্জে দেওয়ার সময় সে পায়নি।
.
দুই দিন পর ফোন অন করে দেখে নিশিতার অনেক ম্যাসেজ।
শেষ ম্যাসেজ টা এমন ছিলো
Nishi- tui jdi ekhn na asish! miliye nish ami suicide korbo…..
.
সাথে হাত কাটার একটা ছবি।এমন দেখে রুপ আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না।
আসছি বলেই বেজমেন্ট থেকে গাড়ি নিয়ে দ্রুত ছুটলো বনানীর ফ্ল্যাটে।
নিশি কিছু করে বসবে না তো? খুব জেদি মেয়ে। আট বছর ধরে চেনে ওকে। যা চাই না পেলে নিজের ক্ষতি করবে।
ওর কিছু হলে ও কিছুতেই মেনে নিতে পারবে না।
অনেক ক্ষণ বেল বাজানোর পর দরজা খুলছে না নিশি।
ভয়ে হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
ঠিক আছে তো ও?
ঠিক সে সময় দরজা খুলে দিলো নিশি।
কোন কথা না বলেই খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নিশিকে।
ঠিক এমন ভাবে ধরেছিলো কলেজ থেকে টুরে গিয়ে যখন নিশি রাতের বেলা কক্সবাজারে লুকিয়ে ওকে ভয় দেখিয়েছিলো সেদিন।
.
– একটা চড় মেরে তোর সব দাত ফেলে দেবো ( রুপ)
– এই বাহানায় তো স্পর্শ পাবো। (নিশি)
– মাথা ঠিক আছে তোর? কি সব ম্যাসেজ দিয়েছিস?
– আমি মরলে কার কি?
– আমার সবই।।
– তাহলে কই ছিলি এই কয়দিন? অর্থির কাছে তো? কি আছে ওর মাঝে যা আমার মাঝে নেই?
.
রুপ নিজের মাঝে নিশি কে মিলিয়ে নেয়।
বুঝতে পারে মেয়েটার জ্বর।
কিছু হয়তো খায় নি।
বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলে
– আমি খাবার নিয়ে আসছি! তুই উঠবি না।
– তুই চলে যাবি….
– আমি যাবো না পাগলী।
– চলে গেলে সত্যি মরে যাবো কিন্তু
.
রুপ কিছু না বলে নিশির কপালে চুমু দেয়।
– ঠোঁটে দিলে কি ফুরিয়ে যেতো?
.
অভ্যেস হয়েগেছে রুপের। কোথাও বের হওয়ার আগে অর্থি কে সবসময় কপালে চুমু দিয়ে বের হয়। ঠোঁটে দিলে বলতো
ভালোবাসার বিশুদ্ধ, পবিত্র বহিঃপ্রকাশ কিন্তু কপালে চুমু দেওয়া তেই।
.
সেদিন বৈশাখের প্রথম কালবৈশাখী ছিলো যা অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে গেলো।
.
.
রাত প্রায় ১০ টা। রাতের খাবার খেয়ে কেবল শুতে যাচ্ছিলেন অর্থির মা বাবা। ঠিক সে সময় অর্থির মায়ের ফোনে কল এলো। স্ক্রীণে নাম্বার দেখে আতকে উঠিলেন তিনি। এত দিন পর? কেনো অর্থি কল দিয়েছে? মেয়েটা ঠিক আছে তো? কাপা কাপা হাতে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কেউ কাদছে আর বলছে..
.

– মা! মা গো? তুমি কেনো আমাকে অভিশাপ দিছিলা? মা আমি তোমার সন্তান বেঁচে রইলাম কিন্তু তোমার কথা মতো আমি সন্তান হারা মা।
মা! তুমি অভিশাপ টা ফিরিয়ে নেও না গো মা।
আমার দুধের সন্তান টা বেঁচে যাক।
মা! মা তুমি শুনছো?
.
.
(চলবে)
.
Sabiya moon

বালির সংসার পর্ব-০১

0

বালির সংসার
পর্ব-০১
Sabiya moon

ক্লিনিকের আউটডোরে বসে অর্থি যখন বাইরের দিকে তাকিয়ে রুপকের জন্য অপেক্ষা করছিলো তখন রুপক অফিসের চেম্বারে
বসে নিশিতার মাঝে ডুবে যাচ্ছিলো।
হালকা ব্যথায় যখন অর্থি দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরেছিলো তখন রুপক নিশিতার ঠোঁটে ঠোঁট নাড়তে ব্যস্ত।
হালকা ব্যথা যখন মারাত্নক হয়ে উঠলো হাত পা কাপছিলো অর্থির, তখন রুপক উত্তেজনা নিয়ে আরো কাছে টেনে নেওয়ায় ব্যস্ত নিশি কে।
নিশির নাকের ডগায় জমা হালকা ঘাম যেনো মুক্তোকণা ঠিক সে সময় অর্থির শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে।
.
যখন রুপক ভাবছে তার বেস্ট ফ্রেন্ড এত সুন্দরী হওয়া স্বত্বেও এতদিন কেনো অর্থির কাছে ছিলো?
তখন অর্থি ভাবছে হয়তো কাজ পড়ে গেছে না হলে রাস্তায় জ্যামে আটকে গেছে।
না হলে রুপক আসতে দেরী করার ছেলে না! তাও আবার আজকের দিনে?
রুপক যখন আবার নিশিতা কে কাছে টেনে দুই বছরের কন্ট্রাকে সিগনেচার করাচ্ছিলো, অর্থি তখন নিজের ডেলিভারি পেপারে নিজেই বন সই দিচ্ছিলো।
.
কি অদ্ভুত তাই না? একটা মেয়ে কতটা একা হলে, কতটা নিরুপায় হয়ে এই কাজ টা করে।
.
শুনেছি ২০ টা হাড় ভাংগার সমান হয় এই লেবার পেইন।
তারপরেও মেয়েটা বার বার রুপক কে কল দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।
শুধু একটা ইচ্ছে যদি একবার দেখতে পেতো!
ঠিক সতেরো মিনিট পর যখন অর্থি ছেলে জন্ম দিলো, রুপক আবিস্কার করলো এক নতুন নিশিতা কে।
মেদহীন পেটে যে এত মাদকতা আছে জানা ছিলো না। কিন্তু তখন তার স্ত্রীর পেট থেকে জন্ম নেওয়া সদ্য শিশুর নাভীর নাড় কাটা হচ্ছে।
নাড় জন্যেই তো নারী জন্মের আগেই সন্তানের সাথে আজন্ম বাধা পড়ে।
.
অর্থি সব শুনতে পারছিলো কিন্তু কিছু বলার শক্তি নেই। অবচেতন মনে শুধুই রুপ কে খুজতে লাগলো।
রুপ তো এমন করে না! আজকের দিনেই ব্যস্ততা? না কি কোন বিপদ হলো।
পুরোপুরি অজ্ঞান না হলেও নিজের উঠে গিয়ে কিছু করার শক্তি আর আজ অর্থির নেই।
কিন্তু আজ যে বড্ড প্রয়োজন তোমায় রুপ! কই তুমি?
.
.
ঠিক রাত তিনটের দিকে ঘুম ভাংলো রুপের।পাশে শুয়ে আছে নিশিতা।
এই মেয়ের মাঝে এত জাদু আছে জানা ছিলো না রুপের।
ফোন অন করতেই ম্যাসেজ এলো
You missed 419 calls from Mayaboti…
.
তারপর শুরু হলো ম্যাসেজের টুংটাং
.
– তুমি কি বিজি?
.
– আমার ভালো লাগছে না। অস্বস্তি হচ্ছে খুব
.
– কই তুমি? খুব ব্যস্ত?
.
– রুপ আমার ওয়াটার ব্রোক করছে! তুমি প্লিজ আসো।
.
– আমি আর খালা ক্লিনিকে যাচ্ছি।
.
.
আমরা এসেছি! ডক্টর, অপারেশন করতে চাচ্ছে। তুমি আসো না।
.
.
এই তুমি ঠিক আছো তো?
.
অটি তে ঢুকছি। জানি না আর দেখা হবে কি না। পারলে একবার এসো।
অভিমান না! আমি বুঝি কাজের চাপ তোমার ইদানীং বেশি। ভালো থেকো।
.
এর পর আর কোন ম্যাসেজ নেই।
বুকের ভিতর টা ধক করে উঠলো রুপের।
অর্থি! অর্থি ঠিক আছে তো?
রুপ যখন উঠতে যাবে তখন অনুভব করলো নিশিতা উঠে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে।
.
– রুপ! আমি তোর কাছে কোনদিন কিছু চাইনি। শুধু একটা রাত চেয়েছি। তুই আমার কাছে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আজ তুই কোথাও গেলে আমি সত্যি মরে যাবো।
.
নিশিতার ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে রুপ মন থেকে চলে যেতে চাইলেও শরীর সায় দিলো না।
পরম আবেশে যখন নিশি দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছে তখন মিটিমিটি চোখে তাকাচ্ছে অর্থি।
এখনো যে তার দুচোখ রুপকেই খুজছে।
.
.
(চলবে)

অন্ধকার পল্লী Part:২২ এবং অন্তিম পর্ব

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:২২ এবং অন্তিম পর্ব
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
অনেকদিন চলে গেলো আফিন আর অবনীর জীবন থেকে।আফিন প্রতিনিয়ত অবনীকে মানানোর চেষ্টা করতো কিন্তু অবনী নাছোড়বান্দা। কোনমতেই বাগে আনতে পারছিলোনা অাফিন ওকে।আফিন কথা বলতে গেলেই অবনী ওকে দূরে সরিয়ে দিতো।আফিন বুঝতে পারছিলো যে কিছু তো।একটা হয়েছে ওর অবনীর।কারন অবনী কখনোই এমন করার মতো মেয়ে না।
অন্যদিকে অবনী একটা জিনিস খেয়াল করতো প্রত্যেক রাতেই আফিন যেন কই চলে যায়।প্রথম দিকে পাত্তা না দিলে ও পরে আর চুপ থাকতে পারলোনা।একদিন রাতে আফিনের পিছু পিছু চলে আসে নিচ তলার বন্ধ একটি রুমে।আফিন তালা খুলে রুমে ঢুকে গেছে।অবনী কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।সিড়ির ওপর বসে পড়লো অবনী।সেই রুমটির দিকে তাকিয়ে আছে।কি হচ্ছে ভিতরে কে জানে।এভাবে বসে অপেক্ষা করতে করতে দুঘন্টা পেরিয়ে গেলো।হঠাৎ দরজা খুলার শব্দে অবনী দাঁড়িয়ে গেলো।ভিতর থেকে আফিন চোখ মুছতে মুছতে বের হচ্ছে।অবনী জলদি রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।ওনি কাঁদছিলেন কেন?ভিতরে কি ছিলো?কি হচ্ছিলো? জানতে হবে আমার।যে করেই হোক রুমটায় যেতে হবে।কিছুক্ষন পর অবনী খেয়াল করলো কেউ ওর গায়ের ওপর চাদরটি উঠিয়ে পাশে শুয়ে পড়লো।পরদিন অবনী আফিনকে সকাল থেকেই খেয়াল করছিলো চাবিটা কই রাখে আফিন।নাস্তা সেড়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো আফিন।অবনী তৎখনাৎ আফিনের কালো কোটের পকেট থেকো চাবিটি নিয়ে সেই রুমে ঢুকে গেলো।
,
,
,
,
পুরো রুম যেন ছবির প্লাটফর্ম। আফিনের বাবা মা অবনীর বাবা মা আফসানা সবার ছবি আছে।আফিনের কিছু সিঙ্গেল ছবি অবনীর কিছু সিঙ্গেল ছবি।যে দুইদিন আফিনের সাথে ফার্ম হাউজে ছিলো তখন কার কিছু সুন্দর মুহূর্ত গুলো ফুঁটে উঠেছে ফ্রেম গুলোয়।ওদের একসাথে কাঁটানো সুন্দর মুুহূর্ত গুলো সবই যেন স্মৃতি আজ।তবে একটা জিনিস যেটা অবনীকে কিছুটা অবাক করে তুলেছে সেটা হলো কিছু খালি ফ্রেম।ছোট্ট কিছু ফ্রেম অবনীর বাবা মা আফিনের বাবা মা আর কিছু আফিন আর অবনীর সাথে লাগানো আর অনেক বড় খালি একটা ফ্রেম পুরো দেয়াল জুড়ে আছে।অবনী বুঝতে পারছেনা এই খালি ফ্রেম গুলোর মানে কি?এতো সুন্দর করে সাজানো রুমটা কিন্তু খালি ফ্রেম!!!!!ফ্রেম গুলো দেখতে দেখতে পিছনে আসতে থাকে অবনী।হঠাৎ এক উষ্ণ নিশ্বাস অবনীর ভিতর শিহরিত করে উঠে।কিছুটা কেঁপে উঠে অবনী।দুটি হাত ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে আছে।বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে অবনী।পাশ থেকে ও কারোর গরম নিশ্বাস উপভোগ করছে অবনী।দুটি নিশ্বাস একে অপরের সাথে বাড়ি খাচ্ছে।আফ!!কিছু একটা বলতে গেলে থামিয়ে দেয় মানুষটা।এখানে আসতে হলে আমাকে বলতে আমি নিয়ে আসতাম।এভাবে লুকিয়ে আসলে? নেশা ধরানো কন্ঠ অবনীর কানে যেন বার বার বেজে উঠছে।অনেক দিন কন্ঠটাকে মন ভরে শোনা হয়নি।নিজেকে চেয়ে ও ছাড়াতে পারলোনা অবনী আফিনের বাহুডোর থেকে।
,,,,,,,,,,,,,,এগুলো কখন তুললেন?প্রশ্ন করে উঠলো অবনী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,যখনই সময় পেয়েছি তোমার আমার ছবিগুলো ফ্রেমবন্দী করে রেখেছি।পিছন থেকে বলল আফিন।ভাবছিলাম আমাদের বিয়ের পর প্রত্যেক রাতে তোমাকে এখানে নিয়ে আসবো।গল্প করবো দুজন মিলে আর পুরোনো স্মৃতি গুলোকে রাঙ্গিয়ে দিবো নতুন রং এ।কিন্তু তুমি তো আমাকে এখন ভালবাসোনা স্বামী হিসেবে আমাকে মানোনা।কিছুই মনে করোনা আমাকে তোমার।তাই আমি একাই এরুমে আসি একাই পুরোমো স্মৃতি গুলো স্মরন করি আর একাই চলে যাই।
,,,,,,,,,,,,,,,,অবনী মাথা ঘুরিয়ে নিলো।কথা গুলো ওর বুককে ক্ষত বিক্ষত করছে।চোখ জোড়া ভিজে আসতে চাইছে।নিজেকে সামলে নিয়ে বলল আর খালি ফ্রেম গুলো?
,
,
,
,
এই ফ্রেম গুলোর মানুষটা এখনো আসেনি।বলে উঠলো আফিন।
নেই তাহলে ফ্রেম রাখলেন যে?এ খালি ফ্রেম গুলো আমাদের ছোট্ট বাবুটার জন্য।প্রতিদিন রাতে ওকে ঘুম পাড়িয়ে এখানে এসে ওর একটু একটু করে বেড়ে উঠার প্রত্যেকটা মুহূর্তের ছবি গুলো সাজাবো।রুমগুলো কে খুব সুন্দর করে সাজাবো।ফ্রেম আছে প্ল্যান আছে সব আছে শুধু তুমি হারিয়ে গেছো কই জানি?কথা গুলোয় নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলোনা অবনী।কেঁদে দিলো।পিছনে ঘুরে আফিনকে জড়িয়ে ধরলো অবনী।আফিন আপনাকে ভালোবাসি সত্যি খুব ভালোবাসি।ভুলিন
ি আপনাকে।কিন্তু সবাই বলছিলো আমি নোংরা হয়ে গেছি অপবিত্র হয়ে গেছি।আমার সাথে যে থাকবে সে ও নোংরা অপবিত্র হয়ে যাবে।তাই বাসায় যাওয়ার পর ইসলাম সাহেব আমাকে কল করেছিলো।সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো। বলছিলো রাজি না হলে ওরা আফসানাকে তুলে নিয়ে যাবে মা বাবাকে নিয়ে যাবে আর আপনাকে মেরে ফেলবে।কিন্তু আমি তো হারাতে পারবোনা আপনাদের।বলতে পারছিলামনা আপনাকে যদি ওরা কিছু করে ফেলে?তাই রাজি হয়ে গেছিলাম ভয়ে।তাই
আমি আমার জীবনের সাথে আপনাকে জড়াতে চাইনি।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো এঅবনী।না তুমি মোটে ও নোংরা না অপবিত্র না।আমার জন্য সবসময়ই পবিত্র তুমি।যারাএগুলো বলেছে তারা নোংরা তারা অপবিত্র।
,
,
,
,
অবনীর মুখ দুহাতে ধরে সামনে এনে ওর কপালে চুৃমো খায় আফিন।অবনী শক্ত করে আফিনকে জড়িয়ে ধরলো।অবনীর কাঁধের চুলগুলো আলতো হাতে সরিয়ে সেখানে ঠোঁট বুলায় আফিন।অবনী আফিনের শার্ট খামচে নিজেকে অাফিনের হারাতে চাইছে।আফিন আরো কিছুক্ষন অবনীর কাঁধে উষ্ণ পরশ বুলিয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে সিড়ির দিকে পা বাড়ালো। অবনী দুহাতে আফিনের গলা জড়িয়ে আছে।রুমে এসে অবনীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে নিজের ভর টুকু ওর ওপর ছেড়ে দিলো আফিন।অবনীর রসালো ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো আফিন।বেশ কিছুক্ষন পর সরে এলো আফিন।নিজের শার্ট খুলে নিয়ে অবনীর শাড়ীর আঁচলের দিকে হাত বাঁড়ালো।অবনীর ওপর শুয়ে ওর ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিলো আফিন।অবনীর সারামুখে ঠোঁট বুলিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো আফিন।এভাবে ভালোবাসা দিয়ে নিজের করে নিতে থাকলো আফিন ওর অবনীকে।
পরদিন অবনীকে নিয়ে কোটে উপস্থিত হলো আফিন।অবনী সকল প্রমান দিলো মামুনেের বিরুদ্ধে।ইসলাম সাহেব অবনীকে জোর করে বিয়েতে রাজী করানোর অপরাধে ৬বছর জেল হলো।পতিতা পল্লীর রুপা খালার ৫বছর জেল হলো মিথ্যা বলার অপরাধে আর মামুনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড হলো অবনীকে হ্যারেসমেন্ট করার অপরাধে।সামনের সপ্তাহে আফিন বড় গ্রান্ড রিসিপশন পার্ট রাখলো ওর আর অবনীর জন্য।সবাই মজা করছে ভীষন। আফিন তো আজ ওর জল পরীকে দেখে যাচ্ছে।কলাপাতা বর্নের সিল্কের গাউন আর সেই সাথে হালকা গহনা।সব মিলিয়ে অপ্সরী লাগছে অবনীকে।
,
,
,
,
অবনী বর আফিন দুজনেই গেস্টদের সাথে কথা বলার ফাঁকে একে অপরকে দেখে যাচ্ছে।এ দেখার যে কোন শেষ নেই।এভাবে শেষ হয়ে গেলো রিসিপশন পার্টি।সবাই ভীষন এঞ্জয় করেছে সময়টাকে।গেস্টরা চলে যেতেই অবনীকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে এলো আফিন।অবনীর দুগাল হাত রেখে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে পরম আবেশে চুমো খাচ্ছে আফিন।অবনী ও সমান তালে ভালোবেসে যাচ্ছে ওর আফিনকে।ঠোঁট সরিয়ে অবনীর কাঁধে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো আফিন।অবনী পরম মায়ায় আফিনের কাঁধে মাথা রাখলো।আফিন অবনীকে খাটে শুইয়ে ওর গলায় মুখ ডুবালো।আজ ওদের এই ভালোবাসার সাক্ষী দেবে স্নিগ্ধ মাতাল করা এই সময়টা।
একবছর পর
আফিন আর অবনী সেই ছবির রুমটিতে এসেছে।ওদের মুখে পূর্নতার হাসি।সেই খালি ফ্রেম গুলোর দিকে এক পলক তাকিয়ে দুজনে এগিয়ে গেলো সেদিকে।খালি ফ্রেম গুলো কে ভরতে লাগলো ওদের ভালবাসার প্রতীক ছোট্ট আদরের ছবি গুলো দিয়ে।বাচ্চাটার জন্ম থেকে সকল ছবি গুলো ফ্রেমবন্দী করে রাখা।আফিন আর অবনীর ছবির মাঝে বাবুর ছবিটি লাগিয়ে নামার সময় অবনীকে কোলে তুলে নিলো আফিন।থ্যাংকস আমার স্বপ্ন পূরনে আমার সাথে থাকার জন্য।বলে অবনীর কপালে চুমো এঁকে দিলো আফিন।এভাবে পরিপূর্নতায় ভরে যেতে লাগলো আফিন আর অবনীর ভালোবাসার সংসারটা।
সমাপ্তি

অন্ধকার পল্লী Part:২১

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:২১
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
কাজী সাহেবকে মিষ্টি আর টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলো ওরা।রাস্তার মাঝে বন্ধুরা ও বিদায় নিয়ে চলে গেলো।অবনীকে নিয়ে রহমত সাহেবের বাসায় পৌছে গেলো আফিন।
বাবা আফিন তুমি?ওকে কোথায় পেলে?কই ছিলো ও?অবনীর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করছিলো রহমত সাহেব।এতক্ষন চুপ করে রহমত সাহেবের কথা গুলো শুনছিলো আফিন।এতক্ষনে মুখ খুলল ও।আঙ্কেল আমি জানিনা অবনীর মনে কি চলছে?তবে এটা সত্য আমি ওকে খুব খুব ভালোবাসি।এজন্যই ওকে কিডন্যাপ করে বিয়ে করতে হয়েছে আমার।কথা গুলো বলে রহমত সাহেব থেকে চোখ সরিয়ে আফসানার দিকে তাকালো আফিন।আফসানা থ্যাংকস তোমার জন্যই অবনীকে নিজের করে পেলাম।
কয়েকদিন আগে
,,,,,,,,,,,,, হ্যালো আফসানা বলো।সব ঠিক আছে তো?(অপর পাশ থেকে বলে উঠলো আফিন)
,,,,,,,,,,,,,,,ভাইয়া সব ঠিক আছে কিন্তু,,,,,থেমে গেলো আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,, কিন্তু কি আফসানা?জিজ্ঞেস করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,আপনি চলে যাওয়ার পর আপি বের হয়ে বলছিলো বিয়ে এ সপ্তাহের মাঝেই হবে।বলে উঠলো আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,, কিছুক্ষনের জন্য থমকে গেলো আফিন।বুকটা যেন আগের চেয়ে আর ও বেশি ধুকপুক করছে।আফসানা শুনো টেনসন করোনা।আমি আছি।বিয়ের সাজটা যেন পার্লারে সাজে সেটার দায়িত্ব তোমার।আমি ঠিক করবো কোন পার্লারে সাজবে।পার্লারের ঠিকানা পাঠিয়ে দেবো।
,,,,,,,,,,,,,,,, ওকে ভাইয়া।আল্লাহ হাফেজ।
,,,,,,,,,,,,,,,, আল্লাহ হাফেজ।
,
,
,
,
বড় একটি চকোলেট বক্স আফসানার হাতে তুলে দিলো আফিন।আফসানার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে অবনী।নিজের বোন হয়ে এতো বড় ধোঁকা!!!!!ভেবেই অবাক হচ্ছিলো অবনী।
,
,
,
,
আপি তোর বিয়ে হয়ে গেছে চলে যাবি। এভাবে আমার দিকে চোখ বড় করে তাকাবিনা।এখন আফিন ভাইয়ার বাসায় জোর খাটাবি।আর আমার সাথে রাগা রাগী করলে আমার জিজু আছে তোকে টাইট বানানোর জন্য।কথা গুলো বলে চকলোট হাতে রুমে চলে গেলো আফসানা।বোনের কথায় মাথা নিচু করে রাগে ফুঁসছিলো অবনী।আফিন এতক্ষন অবনীর কথা শুনে হেসে দিয়েছিলো।হাসি থামিয়ে রহমত সাহেবের দিকে তাকালো আফিন।আঙ্কেল আমাদের মেনে নিয়ে দোয়া দিন।বলে অবনীকে নিয়ে রহমত সাহেব আর আমেনা বেগমের পা স্পর্শ করলো ওরা।রহমত সাহেব আর আমেনা বেগম আফিনকে মেয়ের জামাই হিসেবে পেয়ে ভীষন খুশি।বাবা তোমরা যেয়ে রুমে রেস্ট করো।রান্নার ব্যাবস্থা করছি আমি।বলে আমেনা বেগম পাকঘরের দিকে পা বাঁড়ালেন।আফিন অবনীকে নিয়ে অবনীর রুমে এলো।রুমে এসে খাটে ধপ করে বসে পড়লো অবনী।আফিন অবনীর পাশে বসে অবনীর অল্প কিছু চুল নিয়ে ওর ঠোঁটের ওপর রাখলো মোচের মতো করে।ওয়াও বৌটাকে বেশ লাগছে মোচে।বলেই হেসে উঠলো আফিন।চুল দিয়ে অবনীর কানে নাকে খোঁচাতে লাগলো।এতক্ষন এসব চুপচাপ সহ্য করছিলো অবনী।আর চুপ থাকতে পারলোনা।প্লিজ এসব বন্ধ করুন।ভালো লাগছেনা আমার।কাছে আসবেননা আমার।বিরক্ত লাগে আপনাকে দেখলে।দম বন্ধ হয়ে আসে।চিৎকার করে কথা গুলো বলে খাট ছেড়ে উঠে আলমারির দিকে এগুলো অবনী।
,
,
,
,
আলমারি থেকে স্যালোয়ার কামিজ বের করতেই সেটা অবনীর হাত থেকে ফেলে দিলো আফিন।হোয়াট কি চান আপনি?চিৎকার করে বলল অবনী?কি চান আপনি?অবনীকে ভেংচিয়ে বলল আফিন।অবনী আলমারি থেকে সব কাপড় ফেলে দিলো।
হা হা হা হেসে উঠলো আফিন।
আফিনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে একটা জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
বাহির থেকে অাফিন জোরে জোরে গান গাইছে
“অভদ্র হয়েছি আমি তোমারই প্রেমে তাই”
কাছে আসোনা, আরো কাছে আসো না, হিসসস কথা বলোনা,কোন কথ,,,,,,,প্লিজ চুপ থাকুন একটু ও ভালো লাগছেনা এসব ফালতু গান শোনতে।চুপ থাকুন প্লিজ চিৎকার করে বলতে লাগলো অবনী ওয়াশরুম থেকে।
আফিন চুপ করে খাটে বসে হাসতে লাগলো।
অবনী ফ্রেশ হয়ে এলে আফিন ফ্রেশ হয়ে নিলো।রাতের খাবার সেড়ে আফিন অবনীকে নিয়ে বাসায় চলে এলো।সারা গাড়িতে নীরবে কাঁদছিলো অবনী।পুরো এক বক্স টিস্যু শেষ আমার পুরো এক বক্স!!!! মজা করেই বলছিলো আফিন।আর সহ্য করতে না পেরে অবনী কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে উপরে চলে গেলো।আফিন মলিন হেসে অবনীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।ভালবাসি জলপরী বড্ড ভালোবাসি বলেই হাসলো আফিন।রাতে অবনী দুজনের মাঝে কোলবালিশ টাকে দিয়ে রেখেছিলো যেন আফিন ওর গাঁ ঘেষতে না পারে।আফিন মাঝ রাতে বালিশ টাকে সরিয়ে অবনীর কিছুটা কাছে এসে খাটের ওপর রাখা অবনীর হাতের আঙ্গুল গুলো নিজের আঙ্গুলের ভাজে ঢুকিয়ে নিলো।
,
,
,
,
খুব সকাল আফিন উঠে পড়লো।অবনীর ঘুম ভেঙ্গেছে একটু সময় করেই।উঠে বসে হাই তুলে বারান্দার দিকো তাকালো অবনী।
,,,,,,,,,,,,,,,, মামুন হঠাৎ অবনীর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলো কেন?জানেন কিছু?প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,মামুনের কারনে ওর বার বাবার মন্ত্রীত্ব চলে গেছে।ওরা অবনীকে মামুনের সাথে বিয়ে দিয়ে বলতো অবনী আর মামুনের রিলেশন ছিলো।অবনী বিয়েতে রাজী না হওয়ায় মামুন এমন করেছে। এখানে মামুনের কোন দোষ নেই।এসব স্বীকার করাতো অবনীকে।এতে করে ইসলাম সাহেব ওনার মন্ত্রীত্ব ফিরে পেতো।অপর পাশ থেকে বললেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,,,,,হুম।আস্তে করে শব্দ করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,, আফিন কি করবে?মামুন কে কিভাবে শাস্তি দেবে?এতো সহজে ধরা পড়বেনা ও।অপর পাশ থেকে বলছিলেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,, শাস্তি ওরা পাবেই।সত্যেরই জয় হবে।অবনী প্রমান দিবে। বলে উঠলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,এক সপ্তাহ পর কোটে হিয়ারিং।ওকে নিয়ে এসো।বলে উঠলেন ডিআইজি।
,,,,,,,,,,,,,,,, ওকে।বায়।ফোন কেঁটে পিছনে ফিরে অবনীকে দেখতে পেলো আফিন।
কেন আমার জীবনে আসলেন?কেন এতো সমস্যার সৃষ্টি করছেন?কোন প্রমান দিবোনা আমি।কোথাও যাবোনা আমি।আমাকে আমার অবস্থায় ছেড়ে দিন।চিৎকার করে বলছিলো অবনী।
অবনী নরপশুরা স্বাধীন ভাবে ঘুরছে।তুমি কি চাওনা ওরা শাস্তি পাক?প্রশ্ন করলো আফিন।
চাইনা কিছু চাইনা জোরে চিল্লিয়ে কথাগুলো বলে বেরিয়ে গেলো অবনী।
চলবে

অন্ধকার পল্লী Part:২০

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:২০
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
এভাবে আরো কয়েকটা দিন চলে গেলো।আফিন অবনীর সাথে কথা বলার অনেক চেষ্টা করতে থাকে।কিন্তু অবনীর থেকে তেমন পাত্তা পায়নি।এদিকে অবনী আর মামুনের বিয়ের সময় ও এগিয়ে আসছে।রহমত সাহেব আমেনা বেগম মিলে মেয়েকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছে মামুনের সাথে বিয়েতে না করার জন্য।কিন্তু অবনী নিজের সিদ্ধান্তেই অটল।আজ অবনী আর মামুনের বিয়ে।দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে আফসানার ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হয়ে গেছে।খাবার সেড়ে অবনীকে পার্লারে যাওয়ার জন্য পাগল করছে।আপি প্লিজ চল না!!মানুষের জীবনে বিয়ে একবারই হয়।প্লিজ অন্তত বিয়ের সাজটা পার্লার থেকে সেজে আয় না আপি?অন্তত আমার জন্য প্লিজ।কথা গুলো বলে ও বোনের মন গলাতে পারলোনা আফসানা।তারপর ও হাল ছাড়েনি ও।আপি তুই আমার বড় বোন একটা মাত্র বোন আমার।খুব স্বপ্ন ছিলো তোর বিয়েতে পার্লার থেকে সাজবো অনেক মজা করবো নাচবো সিলেক্ট করা কোন গানে।কিন্তু তুই তো সাধারন ভাবে বিয়ে করছিস।গান হচ্ছে না কোন নাচ।আমার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো।কোন স্বপ্নই পূরন হবার নয় মন বলেই খারাপ করে নিলো আফসানা।ধ্যাত তোকে এসব বলে কি লাভ।আমি যাই আম্মার কাছে অন্তত আম্মা কিছু হলে ও আমার কষ্টটা বুঝবে।কথাটা বলে খাট থেকে নেমে দরজার দিকে এগোলো আফসানা।
,
,
,
,
যা রেডি হয়ে নে।বলে উঠলো অবনী।বোনের কথায় থমকে গেলো আফসানা।পিছনে ফিরে অবনীর দিকে তাকালো ও।জি?কি বললি?অবাক চোখে অবনীকে জিজ্ঞেস করে উঠলো আফসানা।বললাম রেডি হয়ে নে।বলে আর দেরি করলোনা অবনী খাট থেকে নেমে ওয়াশরুমের দিকে পা বাঁড়ালো। অবনী ঝটপট রেডি হয়ে নিলো।বিয়েতে যে লেহেঙ্গাটা পরবে সেটা আর অবনীর বিয়ের শাড়ীটা শপিং ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলো আফসানা।মেয়েটাকে আবার বুঝাও।আমার মন একেবারেই টানছেনা এই বিয়েতে।মেয়েটা এমন জেদ্ ধরে বসে আছে।কিছু বলতে ও পারছিনা।স্বামীর পাশে বসে বলতে লাগলেন আমেনা বেগম।তোমার কি মনে হয় আমি কি বিয়েতে খুব খুশি? মামুনের কারনে কতো বাজে কথা শুনতে হয়েছে আমাদের অবনীকে।আর সেই মামুনকেই ও বিয়ে করার জন্য জেদ ধরেছে।বুঝতে পারছিনা মেয়েটার মনে কি চলছে?ওকে কি জোর করে বিয়ের জন্য রাজি করানো হয়েছে নাকি,,,,,,,,,,,,,বাবা!!!!!দরজার অপরপাশ থেকে ডেকে উঠলো অবনী।মেয়ের ডাকে থেমে গেলেন রহমত সাহেব।জি মা!!এদিকে আয়,,কিছু বলবি?বলে উঠলেন রহমত সাহেব।না মানে বলছিলাম আফসানা জোর করছে পার্লারে সাজবে। তাই ওকে নিয়ে যাচ্ছিলাম।
,
,
,
,
ওহ হ্যা ভালো তো।যা মা সেজে আয়।বলে আলামারি খুলে মেয়ের হাতে কিছু টাকা তুলে দিলেন রহমত সাহেব।অবনী টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।আমেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন রহমত সাহেব।চোখের কোনা জ্বলজ্বল করে উঠলো।পার্লারে দুবোন সাজলো।অবনীর সৌন্দর্য আজ চাঁদকে ও হার মানাবে।আজ এত বড় একটা দিনে অবনীর মুখে কোন হাসি নেই।(পরীর মতো লাগছে আপনাকে।সেটাকি জানেন আপনি?)আফিনের কথাটা মনে আসতেই দাঁড়ানো থেকে ধপ করে বসে পড়লো অবনী।বুকে হাত চেপে বসে আছে।আপি আর ইউ ওকে?বোনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো আফসানা।হুম,,,,, চল বের হই।বলেই আফসানাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো পার্লার থেকে।রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছে আফসানা আর অবনী।হঠাৎ চোখের পলক ফেলার আগেই কালো একটা মাইক্রো এসে অবনীকে তুলে নিয়ে গেলো।আপি!!!আপি!!!!!চিৎকার করতে লাগলো আফসানা।কিন্তু অবনী আর ফিরে এলোনা।আফসানা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
চোখ খুলল অবনী।বড় জ্বালা করছে চোখ জোড়া।পুরো অন্ধকার একটা রুমে আছে ও।নড়তেই খেয়াল করলো ওর হাত বাঁধা চেয়ারের সাথে।কেউ আছে এখানে?আমি কই?প্লিজ কেউ তো কথা বলুন।কে আমাকে এনেছেন? প্লিজ সাড়া দিন।চিৎকার করে ডাকতে লাগলো অবনী।
,
,
,
,
রহমত সাহেবের বাসায় মামুন আর ওর বাবা মা বসে আছে।আশেপাশের প্রতিবেশীদের ফিসফিসানি আওয়াজ।বিয়ের দিন মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে।আফসানা মাথা নিচু করে সবার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।কখন হলো এসব?চিৎকার করে প্রশ্ন করলো মামুন।পার্লার থেকে বের হতেই কে জানি আপুকে নিয়ে গেলো।মাথা নিচু করে বলছিলো আফসানা।মামুন আর ইসলাম সাহেব রহমত সাহেবকে ইচ্ছে মতো শাঁসিয়ে বেরিয়ে গেলো।
হঠাৎ একছটাক আলো অবনীর চোখে এসে লাগলো।আলোটা ক্রমশ বড় হচ্ছে।অবনী দেখার চেষ্টা করছে।কি হচ্ছে আসলে।হঠাৎ কে যেন লাইট জ্বালালো।অবনী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ছায়া মুর্তির দিকে।আফিন অবনীর সামনে এসে বসলো।আফিন আপনি কেন এখানে এনেছেন আমাকে?দিয়ে আসুন।আজ আমার বিয়ে।আমাকে ঐখানে যেতে হবে।প্লিজ যেতে দিন।লিসেন বিয়ে তোমার হবে তবে আমার সাথে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,আমি আপনাকে বিয়ে করবোনা।মামিনকেই বিয়ে করবো আমি।বলে উঠলো অবনী।
অবনীর কথায় ভীষন রাগ হয় অাফিনের।জোরে চড় বসিয়ে দিলো আফিন অবনীর গালে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,এতো মাস ধরে আমি তোমাকে ভালোবাসছি,এতোমাস ধরে আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি।আর এখন হুট করে তুমি মামুনকে বিয়ে করার জন্য নাচবা এমনটাতো হবেনা।গালে হাত দিয়ে আফিনের দিকে তাকিয়েছিলো এতোক্ষন অবনী।আফিনের কথা শেষ হতেই অবনী বলল আমাকে বিয়ে করবেন ভালো কথা কিন্তু জেনে রাখুন কখনো আপনাকে স্বামী মানতে পারবোনা, কাছে আসতে দিবোনা আপনাকে,স্বামীর কোন অধিকার ও পাবেননা আপনি।
,,,,,,,,,,,,,,,দেখো তোমার শরীরের প্রতি লোভ নেই আমার।যদি থাকতো ঐ দুটো দিন যখন আমার বাংলোতে আমার সাথে তুমি ছিলা।তখনই এসব করতে পারতাম।এমন অনেক সুযোগ ছিলো আমার হাতে।দুবার তোমার অনেক কাছে চলে গিয়েছিলাম কিন্তু ভালোবাসাকে সম্মান করি বলে সেদিন কিছু করিনি তোমার সাথে।কারন তোমাকে বিয়ে করেই আপন করেনেয়ার ইচ্ছা আমার।বিয়ের পর শরীয়ত মোতাবেক আমার বৌ হবা তুমি।এটাআমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।আমার আশেপাশে তুমি থাকলেই চলবে।যদি চাও সারাজীবন এভাবেই থাকবো আমরা।
,
,
,
,
অবনীকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওকে কোলে তুলে নিলো আফিন।অবনীকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে নিজ হাতে ওর মুখ হাত ধুইয়ে দিলো আফিন।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে অবনীকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে এলো আফিন।কাজী সাহেব বসে আছে।সেখানে অন্তরা আর আফিনের দুজন ফ্রেন্ড বসে আছে।অবনী অবাক হয়ে অন্তরা কে দেখছে।অবনীকে জোর করে সোফায় বসিয়ে ওর পাশে বসলো আফিন।
,,,,,,,,, বিয়ে করবোনা আপনাকে। বলে উঠলো অবনী।
,,,,,,,,,,,,ওকে।তুমি জানো পুলিশদের সাথে আমার সম্পর্ক কেমন।তোমার বাবা একজন রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার।তার পেনশনের টাকা দিয়ে তোমাদের সংসার আর আফসানার পড়াশুনার খরচ চলে।আমি চাইলে পেনশনের টাকা বন্ধ করাতে পারি।তখন দেখবো তোমার বোনের পড়াশুমা কেমন করে চলে আমার তোমার বাবা মা বুড়ো বয়সে রাস্তায় রাস্তায় হাঁটবে।এখন ডিসিশন তোমার হাতে বিয়ে করবে নাকি আফসানার পড়াশুনা অফ করবে?তোমার বাবা মার এমন দুরবস্থা নিশ্চিত সহ্য হবে না তোমার।এক নাগাড়ে কথা গুলো বলল আফিন।আফিনের কথা শুনে ওর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে অবনী।আফিন থেকে চোখ সরিয়ে মাথা নিচু করলো অবনী।বিয়ে করবো বলে উঠলো অবনী।আফিনের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো।অতঃপর আফিন অবনীকে নিজের করে নিলো।বিয়ে হয়ে গেলো ওদের।
চলবে

অন্ধকার পল্লী Part:১৯

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:১৯
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
অফিস থেকে বেরিয়ে রহমত সাহেবের বাসার রাস্তা ধরে আফিন।এতো দিন অবনীর বাসায় গিয়ে ও ওর সাথে কথা বলতে পারেনি আফিন।অবনী কি বোঝে না আফিন কতো কষ্ট পাচ্ছে অবনীকে ছাড়া?ওর হৃদয়ের হাহাকার গুলো কি অবনীর কান পর্যন্ত পৌছায় না?ও অবনীকে খুব বেশি চায় আকাশ যেমন বৃষ্টিকে চায়,রোয়েন যেমন রুহীকে চায়,জয় যেমন সানা কে চায়,আরিয়ান যেমন প্রীতি কে চায় ঠিক তেমনি আফিন ও অবনীকে খুব বেশি চায়।অবনীর বাসার সামনে গাড়ি পৌছাতেই আফিন কিছুটা অবাক হলো।কালো একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে ওদের বাসার সামনে।আফিন গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো।আর কখনো দেখেনি গাড়িটাকে?কার এটা?কথা গুলি ভাবতে ভাবতে অবনীদের বাসার গেইটে ঢুকে পড়ে আফিন।কলিংবেল দিতেই আফসানা এসে দরজা খুলে কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ে।আফসানার এমন দুঃশ্চিন্তার কারন কিছুই বুঝতে পারছেনা আফিন।কি হলো আফসানা? ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো আফিন।
না মানে ভাইয়া আসুন।কিছুটা ভয়ে ভয়ে বলল আফসানা।ঘরে ঢুকেই বিস্ময়ের চরম সীমানায় চলে যায় আফিন।ইসলাম সাহেব বসে আছেন সোফায় আর তার সামনে রহমত সাহেব মাথা নিচু করে বসে আছেন।দরজায় শব্দ হতেই রহমত সাহেব মাথা উঁচু করলো।আফিন বাবা তুমি?
,
,
,
,
এই লোক টা এখানে কেন আঙ্কেল?ইসলাম সাহেবের দিকে দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন করলো আফিন।আফিন বাবা ওনার ছেলে মামুনের সাথে অবনীর বিয়ে ঠিক হয়েছে।অবনী ও রাজী।বিয়ের কথায় আফিনের ভিতরের সব কিছু যেন ভেঙ্গে চুড়ে যাচ্ছে।অবনীর রাজী হওয়ায় ওর কপালের রগ খাড়া হয়ে গেলো।হাত জোড়া শক্ত করে মুঠ করে নিলো আফিন।চোখ দুটো লাল হয়ে এসেছে ওর।আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই গম্ভীর গলায় বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,কথা বলো ঠিক আছে।তার আগে তোমার সাথে কিছু কথা আছে আফিন।সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,ঠিক আছে চলুন।বলে রহমত সাহেবের পিছু নিলো আফিন।যাওয়ার সময় পিছনে ফিরে ইসলাম সাহেবের দিকে রাগী চোখে তাকালো আফিন।
ইসলাম সাহেব আফিনের দিকে শয়তানি হাসি দিয়ে রইলো।আফিনকে নিয়ে একটা খালি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলেন রহমত সাহেব।আফিন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মাথা জ্বলছে ওর।অবনী কি করে গুন্ডাটার সাথে বিয়েতে রাজি হতে পারে? Oboni is only mine!!!!! only mine!!!!only mineকথা গুলো ভাবতে থাকে আফিন।
,,,,,,,,,,,,বাবা জানিনা অবনী কেন এই বিয়েতে রাজি হচ্ছে?কিছুই বুঝতে পারছিনা।ওদের প্রস্তাবটা ও ভালো ঠেকছেনা।আমি ও একজন পুলিশ অফিসার ছিলাম আমার ও অনেক এক্সপেরিয়েন্স আছে।অবনীর মনে কি চলছে বুঝতে পারছিনা।এই দুই সপ্তাহ মেয়েটা কারোর সাথে কথা বলেনি ঠিকমতো।রুম থেকে ও বের হয়নি।বুঝতে পারছিনা ও কি নিজের ইচ্ছায় রাজি হলো নাকি কারোর প্রেসারে এসে।কথা গুলো বলেই খাটের ওপর ধপ করে বসে পড়লেন রহমত সাহেব।
,
,
,
,
আফিন কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে এসে অবনীর রুমের সামনে এসে দাঁড়িয়ে দরজা নক করতে থাকে জোরে জোরে।অবনী!!!অবনী প্লিজ দরজা খুলো। অবনী!!!! প্লিজ ওপেন দা ডোর ড্যাম ইট!!!!!!অবনী দরজা যদি না খুলেছো খুব খারাপ হয়ে যাবে I swear!!! চিৎকার করে বলতে থাকে আফিন।আফিন প্লিজ গেট আউট!!আপনার সাথে কোন কথা বলতে চাইনা।প্লিজ চলে যান,,,অপর পাশ থেকে চিৎকার করে বলছিল অবনী।না আমি যাবো না।কি পেয়েছো টা কি তুমি?জানোনা ভালোবাসি তোমায়?অবনী এই বিয়ে করতে পারোনা তুমি।চিৎকার করে বলছিলো আর দরজা ধাক্কাচ্ছিলো আফিন।আফিন আপনার সাথে আমার যাই ছিলো সব শেষ।এখন আমি আপনার কেউ না আপনি ও আমার কেউ না।বের হয়ে যান!!!আপনার চেহারা দেখতে চাইনা আমি!!!বলেই চুপ হয়ে গেলো অবনী।থমকে গেলো আফিন।এই কি শুনছে সে?অবনী ওর চেহারা দেখতে চায় না?ভাবতেই মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আফিনের।সোফার ওপর বসে থাকা ইসলাম সাহেব শয়তানি হাসি দিয়ে আফিনকে চলে যেতে ইশারা করলো।আফিন ইসলাম সাহেবের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
আফিন চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর অবনী বেরিয়ে এলো রুম থেকে।ওর চোখ জোড়া লাল হয়ে আছে।রহমত সাহেব আমেনা বেগম আর আফসানা ওর দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে।আমার আর মামুনের বিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই হবে।বলেই ভিতরে ঢুকে গেলো অবনী।
,
,
,
,
ইসলাম সাহেব খুশি মনে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে।সেদিন রাতে আর ঘুমোতে পারেনি আফিন।সারাটা রাত একটা অজানা অস্থিরতার মাঝেই কেঁটে গেলো।অফিস থেকে বেরিয়ে অবনীর কলেজের গেটের সামনে গাড়ি নিয়ে বসে আফিন। কিছুক্ষন পর অবনীকে গেট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেলো।অবনীর চেহারার মাধুর্যতা হারিয়ে গেছে।বাসে উঠতে নিবে ঠিক তখনই কে যেন হাত টেনে ধরলো অবনীর।গাড়ির সামনে এনে জোর করে গাড়িতে বসিয়ে দিলো আফিন অবনীকে।রাগী চোখে আফিনকে দেখছে অবনী।আফিন গাড়ীতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।গাড়ি থামান!!!আমি নামবো!!!চিৎকার করে বলল অবনী।
আফিন চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। আরে থামান বলছি স্টিয়ারিং ধরে টানা টানি করতে লাগলো অবনী।অবনীকে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরালো আফিন।তোমার সাথে কথা আছে আমার।বলে উঠলো আফিন।আপনার সাথে কোন কথা নেই আমার। চিৎকার করে বলল অবনী।আফিন অবনীর কোন কথায় কান দিলোনা।শেষমেষ গাড়ি থামলো একটা লেকের সামনে।আফিন গাড়ি থেকে নেমে অবনীর হাত জোরে ধরে নামিয়ে লেকের কাছে আনলো।কেন এমন করছো?অবনীর হাত জোরে ধরে বলল আফিন।কি করছি আমি?হাত ছাড়াতে চেষ্টা করতে করতে বলল অবনী।মামুনকে কেন বিয়ে করছো?এতো দিন তোমার সাথে যা হয়েছিলো সে সব মামুন করিয়ে ছিলো।তারপর ও কেন বিয়ে করছো ওকে?চিৎকার করে বলল আফিন।আমার ইচ্ছা যাকে বিয়ে করবো আমি।আর কখনো আমার সামনে আসবেননা।আই হেট ইউ।বলে বেরিয়ে গেলো অবনী।
চলবে

অন্ধকার পল্লী Part:18

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:18
#Tabassum_Riana

,
,
,
বাবার সাথে কথা বলার সময় অবনীর চোখ জোড়া আফিনকে খুঁজছিলো।আফিনক
ে খুঁজতে খুঁজতে কিছুক্ষনের মাঝে ঘুমিয়ে পড়ে অবনী।চোখের সামনে নির্যাতনের দৃশ্য গুলো ভেসে বেড়াচ্ছে।খুব ভয় হচ্ছে অবনীর।ওদের অট্টহাসি ওর বুকের ভেতর সব যেন ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে।পুরো শরীর ঘেমে ভিজে যাচ্ছে অবনীর।চিৎকার করতে নিবে ঠিক তখনই কেউ খুব শক্ত করে জাপটে ধরলো অবনীকে।সেই মাতাল করা ঘ্রান,সে পরিচিত মাতাল করা নিশ্বাস যা অবনীর শিউরে উঠার জন্য যথেষ্ট, সেই পরিচিত বুক যেখানে অবনী শান্তি খুঁজে পায়। এতো গুলো পরিচিত অনুভূতি পাওয়ার পর চোখ বুজে রাখতে পারেনি অবনী।চোখ খুললে মনে হচ্ছিলো সেই নরপশুদের মুখ দেখতে পাবে কিন্তু স্পর্শগুলো অবনীকে চোখ খুলতে বাধ্য করলো।পিটপিট করে আধো চোখ খুলে অবনী।ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি ফুঁটে উঠে অবনীর।আফিন ততক্ষনে ওর ঠোঁটজোড়া অবনীর গালে কপালে ঠোঁটে বুলাতে লাগলো।অবনী ঘনঘন নিশ্বাস নিয়ে আফিনের উষ্ণ স্পর্শগুলোকে উপভোগ করছিলো।অাফিন শব্দ করে অবনীর ঠোঁটে দুতিনটে চুমু দিয়ে একটু সরে এলো।অবনী এখনো আফিনের গলা জড়িয়ে আছে দুহাতে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,জলপরী!!!চোখ খুলো। মায়াভরা কন্ঠে ডাকলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,খুব কষ্টে চোখ খুলল অবনী।আফিন হালকা হেসে ওর দিকে চেয়ে আছে।অবনী ও একটু হাসলো স্বাধীনতার হাসি দিলো।
,
,
,
,
স্যুপ নিয়ে এলাম।বলেই থেমে গেলেন রহমত সাহেব।অবনীর থেকে সরে এসে সোজা হয়ে দাঁড়ালো আফিন।রহমত সাহেব স্যুপের বাটিটাকে টেবিলের ওপর রেখে মেয়ের কাছে এসে দাঁড়ালো।মামনি এখন কেমন লাগছে?মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন রহমত সাহেব।জি বাবা একটু ভালো একটু অসুস্থ গলায় বলল অবনী।আফসানা কল দিয়েছিলো।তোর মা কথা বলবে তোর সাথে।বলে উঠলেন রহমত সাহেব।কল দাও ওকে।বলে উঠলো অবনী।রহমত সাহেব আফসানার নম্বরে কল দিলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,, হ্যালো বাবা আপি কই?মা কথা বলবে।অপর পাশ থেকে বলল আফসানা।
,,,,,,,,,, হুম ধর।কথাটা বলে অবনীর কানে ফোন রাখলেন রহমত সাহেব।মা আর বোনের সাথে বেশ অনেকক্ষণ কেঁদে কেঁদে কথা বলল অবনী।
আঙ্কেল রাত তো অনেক হচ্ছে।আপনি বাসায় যান।আফসানা আর আন্টি একা বাসায়।ইসলাম সাহেব ছেলের প্রতিশোধ নিতে আন্টি আর আফসানাকে ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।একনাগাড়ে কথা গুলো বলে থামলো আফিন।হ্যা বাবা ঠিক বলেছো।অবনীর সাথে কে থাকবে?মেয়ের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত কন্ঠে বললেন রহমত সাহেব।
আঙ্কেল ডোন্ট ওয়ারি।আমি আছি।রহমত সাহেবের হাতে হাত রেখে বলল আফিন।
আচ্ছা বাবা তুমি যেহেতু আছো তাহলে আর চিন্তা নাই আমার।কাল আমি আফসানা আর ওর মাকে আনার চেষ্টা করবো।মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলল রহমত সাহেব।
,
,
,
,
মাথা ঝাঁকালো অবনী।আসি!!বলে বেরিয়ে গেলেন রহমত সাহেব।আফিন বাথরুম থেকে পানি এনে রুমাল ভিজিয়ে অবনীর মুখটা মুছে দিলো।পুড়া জায়গা গুলোয় চেপে চেপে মুছে দিয়েছে আফিন।অবনীকে স্যুপ টুকু খাইয়ে দিয়ে নিজেও একটু খেয়ে নিলো আফিন।অবনীর বেডের পাশের টুলে বসে বেশ কিছুক্ষন গল্প করলো আফিন আর অবনী।পুরোটা সময় অবনীর হাত আফিনের দুুইহাতের ভাজে ছিলো।
গল্প শেষে আফিন বলে উঠলো অবনী অনেক রাত হলো ঘুমাও।একা একা ঘুম হবেনা।প্লিজ আপনি ও এখানে এসে শুয়ে পড়ুন।বলে একটু সরে গেলো অবনী।আফিন অবনীর পাশে শুয়ে ওর মাথা টা নিজের বুকে নিয়ে নিলো।পরদিন দুপুরে রহমত সাহেব আমেনা বেগম আফসানা কে নিয়ে এলো হাসপাতালে।মায়ের সাথে বেশকিছুক্ষন আবেগঘন মুহূর্ত কাঁটলো অবনীর।আফসানাও বোনকে ধরে খুব কেঁদেছে।এভাবে ৭দিন চলে গেলো।অবনীকে রিলিজ দেয়া হলো আজ।আফিন থেকে বিদায় নিয়ে ঘরে যাবার জন্য রওনা হলো অবনী আর রহমত সাহেব।বাসার কাছে আসতেই আশেপাশের সবাই অবনীকে ভ্রু কুঁচকে দেখতে লাগলো।
আরে আরে দেখ এ অবনী না?
হ এটাই তো অবনী।হুনছিলাম পতিতা পল্লীত নিয়া গেছিলো।কে জানি কয়জনের লগে রাত কাডাইছে।ছিঃ ছিঃ কতো বেশরম মাইয়া আবার ফিরা আইছে।এই এলাকায় এই অবনী বেশি দিন থাকলে আমগোর মাইয়ারা নষ্ট অইয়া যাইবো।
ছিঃ ছিঃ আশপাশ থেকে এই কথা গুলো অবনীর কান ঝালাপালা করে দিচ্ছিলো।চোখ জোড়া ভিজে আসছে অবনীর।রহমত সাহেব দ্রুত মেয়েকে নিয়ে ভিতরে চলে গেলেন।
,
,
,
,
বাসায় আসার পর থেকে কোন কিছুই ভালো লাগছেনা আফিনের।বুকখানা ভীষন খালি খালি লাগছে।কি যেন চলে গেছে খুব দূরে।ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো আফিন।ফোন হাতে নিয়ে অবনীর নম্বরে কল দিলো।
ঘরে এসে দৌড়ে রুমে চলে গেলো অবনী।জন্ম থেকে এই এলাকায় একটু একটু করে বড় হয়েছে ওরা দুবোন।সবার ভালাবাসার মাঝেই থেকেছে ওরা।আর আজ খারাপ হয়ে গেলো সবার চোখে।ও কি সত্যি নোংরা হয়ে গেছে?আফিন তো বলছিলো ও এখনো আফিনের জলপরী তাহলে ওরা লেন এমন বলছে?কিছু ভাবতে পারছেনা অবনী।চোখ ফেঁটে কান্না আসতে চাইছে।বারান্দার রেলিং ধরে কাঁদতে লাগলো অবনী।ফোনে কল আসছে সেই কতক্ষন ধরে।চোখ মুছে কানে ফোন রাখলো অবনী।
উফ কি হলো মেয়েটার?ফোন ধরে না কেন?বলে উঠলো আফিন।আবার কল দিতেই ফোন ওয়েটিং অবনীর।পরে আবার কল করতেই অবনীর নম্বর বন্ধ পেলে আফিন।কি হলো ফোন বন্ধ করলো কেন?কিছুটা বিরক্ত হলো আফিন।রহমত সাহেবের নম্বরে কল দিলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,, হ্যালো আঙ্কেল বলে উঠলো আফিন
,,,,,,,,,,,,,,,, জি বাবা বলো।অপরপাশ থেকে বললেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,,,,,,,, অবনী কই?ওকে কল দিচ্ছি। ফোন অফ আসছে।বলে উঠলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,ও ঘরে আসার পর রুম থেকে আর বের হয়নি।ঘুমোচ্ছে মনে হয়।বলে উঠলেন রহমত সাহেব
,,,,,,,,,,,,,,,, ওহ।আচ্ছা ঠিক আছে আঙ্কেল রাখি তাহলে।আল্লাহ হাফেজ।বলে উঠলো অাফিন।ফোন কেঁটে বিছানার ওপর রেখে দিলো।সেদিন আর কল দিয়ে অবনীকে পেলো না আফিন।
,
,
,
,
সেদিন সারারাত আর ঘুমোতে পারলোনা আফিন।পরদিন অফিস থেকে ছুটে গেলো অবনীর কাছে।কাল থেকে এখন ও পর্যন্ত রুম থেকে বের হয়নি অবনী।খালি খাবারের সময় রুমে বসে খেয়েছে।আফিন অবনীর দরজা অনেক নক করলো।ভিতর থেকে অবনী বলছিলো প্লিজ আফিন চলে যান একটু একা থাকতে দিন।আফিন আর কিছু বলতে পারলোনা।রহমত সাহেবকে বলে চলে গেলো।এভাবে অনেক দিন এসেছে কিন্তু অবনীর সাথে কথা হয়নি ওর।

অন্ধকার পল্লী Part:১৭

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:১৭
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
অন্ধকার পল্লীতে বেশ কিছু বখাটে যুবকের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।নতুন কিছু যোগ হয়েছে মামুন ও তার সঙ্গীদের সাথে।ওরা এই এলাকারই অধিবাসী।মামুন মাতাল অবস্থায় ওদের সাথে গল্প করছে।মামুনের বাকি লোকেরা ঘড়ি দেখছে আর আফিনের আসার অপেক্ষায় আছে।তো মামুন ভাই আপনি তো ঢাকায় থাকেন তো এখানে কেন আইলেন?নতুন বখাটেদের একজন মামুনকে জিজ্ঞেস করলো।এখানে অনেক জোস একটা মাল নিয়া আসছি।অবনী নাম মাইয়াডার।অবনীর সম্পর্কে সব কিছু নতুন বখাটেদের বলল মামুন নেশার ঘোরে।নতুন মাইয়া আনার প্ল্যান আছে নি?প্রশ্ন করে উঠলো নতুন বখাটেদের একজন।হ তিনজন আনছি।তাগোরে পতিতা পল্লীত বেঁইচা দিছি। ম্যালা ইনকাম হইতেছে।ঐ অবনীরে কিছু করিনাই অখনো।হের আশিক যদি আহে তাইলে টাকা লইয়া আশিকরে মারুম আর অবনীরে বেঁইচা দিমু।বলেই নেশারঘোরে হেসে উঠলো মামুন।ঠিক তখনই অন্য অফিসাররা এসে মামুন আর ওর লোকদের ধরে ফেললো।নতুন বখাটে গুলো তাদের নকল বেশ বদলে নিলো।এতক্ষন যা বলেছিস সব রেকর্ড করে নিলাম।দেখিস কি হাল হয় দাঁতে দাঁত চেপে কমিশনার বলল।এত্তবড় ধোঁকা!!!এত্তবড় ধোঁকা আর কিছু বলতে পারলোনা মামুন।চুপ হয়ে গেলো।মাতালতায় ডুবে গিয়েছে মামুন।আরো কিছু অফিসার গিয়ে রুপা কে ধরে আনলো।আমারে ধরলেন কেন?চেঁচিয়ে উঠলো রুপা।অবনী তোর কাছে থাকার পর ও মিথ্যে বলেছিস।অফিসার নিয়ে যাও এই মহিলাকে।রাগী গলায় বললেন ডিআইজি।কমিশনার ওদের সাথে চলে গেলেন।ডিআইজি অবনী আর কাছে এলেন ওদের নিরাপত্তার সাথে বাহিরে বের করে আনার জন্য।
,
,
,
আফিন চলো।বলে উঠলেন ডিআইজি।কারোর কন্ঠ শুনে অবনীর থেকে সরে এসে পিছনে তাকালো আফিন।আফিন অবনীকে নিয়ে বেরিয়ে আসো।সবাইকে ধরে নিয়েছি আমরা।
,
,
,
,
আফিন হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে অবনীকে কোলে তুলে নিলো।আমি হাঁটতে পারবো।বলে উঠলো অবনী।হুম পারবেতো।তোমার কথা শুনেই বুঝতে পারছি তোমার মধ্যে কতোটুকু শক্তি আছে।বলে অবনীকে নিয়ে হাঁটতে লাগলো আফিন।মুচকি অবনী নিচে তাকালো।দুহাতে আফিনের গলা জড়িয়ে আছে অবনী।অাফিনকে একনজরে দেখে যাচ্ছে অবনী।এই দেখার যেন কোন শেষ নেই।অবনীর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করলো আফিন এভাবে কি দেখা হচ্ছে?
অবনী মাথা নেড়ে মুচকি হেসে নিচে তাকালো।আবার ও আফিনের দিকে তাকালো অবনী।কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া আফিনের ঘাম গুলোকে উঁড়না দিয়ে মুছে দিলো অবনী।অবনীর দিকে না তাকিয়ে আফিন একটু হাসলো।অবনী আফিনের গলা জড়িয়ে ওর কাঁধে মাথা এলিয়ে দিলো।অন্ধকার পল্লী থেকে বেরিয়ে এলো আফিন ওর জলপরীকে নিয়ে।অবনীকে গাড়িতে বসিয়ে রহমত সাহেবকে কল দিলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,হ্যালো আফিন বাবা আমার মেয়েকে পেয়েছো?ওপাশ থেকে কেঁদে বললেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,,,জি আঙ্কেল ও আমার সাথে আছে।বলে অবনীর মাথায় হাত রাখলো আফিন।অবনী ও সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে।একয়দিন ওর ওপর কম ধকল যায়নি।
,,,,,,,,,,, আমার মেয়ে কেমন আছে?প্রশ্ন করে উঠলেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,মোটামুটি সুস্থ আছে।তাও এখানকার আমার পরিচিত হাসপাতালে ওকে এডমিট করবো।আপনরা আসেন।ওকে বাবা আসছি আমি ওর মা অসুস্থ।ফোন রেখে ডিআইজি আর অবনীকে নিয়ে গাজীপুরের একটা পরিচিত হাসপাতালে পৌছে গেলো ওরা।অবনীকে ভর্তি করে দেয়া হয়েছে।
,
,
,
আফিম ওদের এগেইন্স্টে আমি কেস ফাইল করবো।বলে উঠলেন ডিআইজি। আপনি কেস ফাইল করে আর যা ইচ্ছা করেন আমার আগে ওদের গায়ে কেউ টাচ পর্যন্ত করবেনা।ওদের স্পেশালি মামুনকে কিছু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দিতে চাই।এতো দিন ওরা আমার অবনীর সাথে যা করেছে সব গুনে গুনে শোধ করে দিবো।
,
,
,
,
তিনঘন্টার ঘন্টার মধ্যে রহমত সাহেব চলে এলেন।ডিআইজি আর রহমত সাহেবকে অবনীর কাছে রেখে বেরিয়ে গেলো আফিন ঢাকার উদ্দেশ্যে।
ওটি থেকে বের হলেন ডাক্তার রেবেকা জামান।মিঃআফিন খান!!!!!বলে উঠলেন ডাক্তার।রহমত খান দাঁড়ালেন।
ওনি চলে গেছেন।আমি অবনীর বাবা বলে উঠলেন রহমত খান।ওহ।ওনার সাথে চাইলে দেখা করতে পারেন।বেশি কথা বলবেননা।ওনাকে একটু ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে হবে।বলেই রহমত সাহেবকে অবনীর কাছে যাওয়ার জন্য।রহমত সাহেব মেয়ের কাছে এসে দাঁড়ালেন।ওনার চোখ জোড়া ভিজে আছে।অবনী শরীরের জায়গায় জায়গায় ব্যান্ডেজ করা।বাপ মেয়ের আবেগঘন সময় কাঁটলো বেশ কিছুক্ষন ধরে।
আআহ আর মাইরেননা স্যার মইরা যামু।চেঁচিয়ে উঠলো মামুনের দলের একজন।আফিন চাবুক দিয়ে ওদের বেধড়ম পিটাচ্ছে।একেকজনের চিৎকার হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে।ওদের শরীরের চামড়া ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে আফিন সেই ঘায়ে লবন মরিচ ডলে দিলো।ওদের চিৎকার আরো বেড়ে গেলো।পানি দেন পানি দেন সবগুলা চিৎকার করতে লাগলো।আফিন গরমপানিতে লবন মরিচ মিশিয়ে ওদের গায়ে ঢেলে দিলো।সবাই চিৎকার করছে।বেশকিছুক্ষন পর আবার ও পানি খুঁজছে ওরা।আফিন গরম পানি এনে ফ্লোরে ঢেলে দিলো খা পানি।ভালো করে খা।চারজনে ফ্লোরে পড়ে চাটতে লাগলো।আফিন তখনই মারতে লাগলো ওদের।
,
,
,
মামুন গর্জে উঠলো।জানিস আমি কে?একবার ছুটতে পারি তারপর দেখ তোর কি হাল করি।আমার বাবা যোগাযোগ মন্ত্রী।ছিলো বাট এখন নেই।পুলিশের সামনে যা যা বলেছিলি সব রেকর্ড করে রাষ্ট্রপতিকে পাঠিয়েছি।তোর বাবার মন্ত্রীত্ব খেয়ে দিয়েছি।এখন না সে মন্ত্রী না তুই মন্ত্রীর ছেলে।কথা গুলো বলে আফিন আবার ও ওদের মারতে লাগলো।
আফিন তুমি চলে যাও।অবনীর এখন তোমাকে বেশি দরকার।ওদের ব্যাবস্থা তো আমি করবো।বলে উঠলেন কমিশনার।আফিন ওদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে টিস্যুতে হাত মুছে বেরিয়ে গেলো।
চলবে

অন্ধকার পল্লী Part:১৬

0

#অন্ধকার_পল্লী
Part:১৬
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
পুলিশ কমিশনার ডিজিআই আরো কিছু পুলিশ কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে মিটিং চলছে আফিনের।বিষয় হলো অবনীকে ফিরিয়ে আনা।আফিন দুহাত মুঠ করে সেটার ওপর থুতনি রেখে বসে আছে।চোখজোড়া বড্ড লাল হয়ে আছে ওর।সবাই কথা বলছে ও চুপচাপ শুনছে।হঠাৎ কমিশনারের কথায় চোখ তুলে তাকালো আফিন।দেখো আফিন অবনীকে মন্ত্রীর ছেলে মামুন কিডন্যাপ করেছে।ঐখানে অবনীকে আনতে গেলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। বলেই থেমে গেলেন কমিশনার।আফিন রাগী চোখে তাকালো কমিশনারের দিকে।কি বলতে চান?আপনারা কি চান না আমার অবনী ফিরে আসুক?কি আপনারা চান না অবনীর মতো আর ও হাজার মেয়ের জীবন ধ্বংস হওয়া থেকে বেঁচে যাক?আপনাদের কোন কথাই মানবোনা আমি।আমার অবনীকে আমি চাই এক্ষুনি চাই এন্ড দ্যাটস ফাইনাল।চিৎকার করে কথা গুলো বলছিলো আফিন।
আফিন তোমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি।জানি তুমি কেমন বোধ করছো?কিন্তু কমিশনার স্যার ঠিক বলেছেন।ঐখানে এভাবে গেলে অনেক প্রবলেম হবে।বুঝার চেষ্টা করো।বলে উঠলেন ডিজিআই।আফিন ওনাদের দিকে তাকালো।ওরা যদি আমাদের না চিনে তাহলে তো কোন সমস্যা নেই।গম্ভীর গলায় বলল আফিন।নেই তবে কি করতে চাইছো?টেবিলের সাথে ভুড়িটাকে ঠেঁকিয়ে টেবিলের ওপর হাত রেখে বলে উঠলেন কমিশনার।আফিনের ঠোঁটের কোনায় শয়তানি হাসি ফুঁটে উঠলো।
,
,
,
ঐ রুপা খালা!! রুপা খালা!!!চেঁচাতে চেঁচাতে জামিলা রুপা খালার রুমে এলো।রুপা এ পল্লীর সর্দারনী।ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে গালে হালকা পাউডার বুলিয়ে নিলো রুপা।আজ একজন মালদার পার্টিকে আনন্দ দিতে হবে তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে।শাড়ীর আঁচল টাকে কাঁধের ওপর ফেলতেই জামিলার চিৎকার
শুনতে পেল রুপা।
,
,
,
,
কি হইছে এতো চিল্লাছ ক্যা?পান মুখে পুখে পুরে দিয়ে বলল রুপা খালা।এক ব্যাডা আইছে ব্রিফকেজ লইয়া। মালদার পার্টি মনে অইলো।আপনেরে বুলাইতেছে।বলেই দম নিলো জামিলা।রুপার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে উঠলো।আইতেছি বলেই চুলটাকে আবার আঁছড়ে নিয়ে ঠোঁটে আরেকটু লাল লিপস্টিকের পরশ বুলিয়ে নিলো রুপা।জামিলার দিকে একটু হেসে বেরিয়ে গেলো রুপা।তার কক্ষে একজন কালো কোট ধারী লোক বসে আছে।গালে ঘন কালো চাপ দাড়ি,চোখে সানগ্লাস।ভীষন হ্যান্ডসাম লোকটা।রুপা যেন একদফায় তার প্রেমেই পড়ে গেলো।শাড়ীর আচল একটু সরিয়ে লোকটার সামনে বসলো।হাতের একটা আঙ্গুল দিয়ে কিছু চুল প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে কথা বলল রুপা।কি চৌধুরী সাহেব কইছিলেন না রাতে আইবেন।অহন আইলেন যে?ঠোঁটে হাসি ফুটালো রুপা।আ’ম সরি আমি চৌধুরী সাহেব নই।আমি আফিন খান।বলে উঠলো রুপার সামনে বসা আফিন।রুপা কেমন যেন অবাক হয়ে আফিনকে দেখছে।আপনের লগে তো আমার কতা অয় নাই।বলে উঠলো রুপা।আমি জানি কিন্তু একটা কাজে এসেছি।বলে উঠলো আফিন।কি কামে আইছেন? মুখে খানিকটা বিরক্তির ছাপ ফুঁটিয়ে বলল রুপা।আমি একটা নতুন মেয়ে চাই একবারেই ফ্রেশ।বুঝছেন তো?একবারেই ফ্রেশ যাকে এখনো।কেউ স্পর্শ করে নি।বলে উঠলো আফিন।রুপা জামিলার দিকে একবার তাকিয়ে আফিনের দিকে তাকালো।নেই বলে উঠলো রুপা।আফিনের ভীষন রাগ হলে ও কিছুটা সামলে নিলো নিজেকে।২লাখ টাকা দিবো বলে উঠলো আফিন।
,
,
,
আরে কইলাম তো নাই।টাহার কতা কইলে কি ফেরেশ মাইয়া জন্মাইবো?যান আপনি যান।এহানে আপনের লাইগা ফেরেশ মাইয়া নাই।চল জামিলা চল।জামিলার দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল রুপা।
,
,
,
,
৬লাখ টাকা দিবো।বলে উঠলো আফিন।৬লাখ টাকার কথা শুনে আর নিজেকে আটকাতে পারলোনা রুপা।জামিলা কে পাঠিয়ে দিলো অবনীকে সাজিয়ে দিতে।আফিমের সামনে রুপা বসে পড়লো।আসলে একজন আছে। একদম নতুন।যা করবেন একটু ধীরে সুস্থে।বলে উঠলো রুপা।মাথা ঝাঁকালো আফিন।কিছুক্ষন পর জামিলা এলো।এনারে লইয়া আহেন খালা।বলে উঠলো জামিলা।রুপা জামিলার দিকে গেল আহেন!!!!! আফিনের দিকে না তাকিয়ে বলল রুপা।জি!!আমাকে বলছেন?বলে উঠলো আফিন।জে আপনেরেই কইছি আহেন।বলেই দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো রুপা।জানালা দিয়ে তাকালো আফিন। বখাটের সাজে আইজি কমিশমার আর অন্যান্য পুলিশ কর্মচারীরা হাত দুলিয়ে ইশারা করে জানালো যে মামুনরা এখনো আসেনি সব ঠিক আছে।
আফিন হালকা হেসে রুপার পিছু যেতে লাগলো।আশেপাশে বেশ কিছু রুম পড়লো।কিছু মেয়ে আফিনের হাত ধরে টানলো।আয় তোকে খুব আনন্দ দেবো এসব বলে।আবার কিছু রুমের দরজা বন্ধ।ভিতর থেকে শব্দ আসছে।আফিনকে নিয়ে একটা রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো রুপা।দরজাটা একটু চাপানো।যান ভিতরে।বলে উঠলো রুপা।আফিন চোখ দিয়ে ইশারা করলো রুপাকে চলে যেতে।রুপা বুঝতে পারলো এখন প্রাইভেসি দরকার।তাই হালকা হেসে বেরিয়ে গেলো রুপা।
,
,
,
আফিন ভিতরে ঢুকলো। অবনী লাল একটা লেহেঙ্গা পরে বসে আছে।সারা শরীরে দাগ হয়ে আছে আর ফোসকা পড়ে গেছে।হালকা সাজ দেয়া হয়েছে অবনীকে।অবনী বুঝতে পারলো একজন পুরুষের উপস্থিতি তবুও তাকালোনা সে দিকে।চোখ বুজে আছে অবনী।
,
,
,
,
অবনীর পাশে এসে দাঁড়ালো আফিন।নাম কি তোমার? বলে উঠলো আফিন।আমাকে প্লিজ ছেড়ে দিন।বলে উঠলো অবনী।নাম জিজ্ঞেস করলাম এখানে ছাড়াছাড়ির কথা কেন আসছে?আর তাছাড়া তোমার জন্য ঐ রুপাকে আমি ৬লাখ টাকা দিয়েছি।সো আজ যা বলবো তোমাকে তা করতে হবে।বলে উঠলো আফিন।না না প্লিজ এমন করবেন না।আফিন আফিন প্লিজ বাঁচাও আমাকে।এই নরপশুদের থেকে বাঁচাও আমাকে।চেঁচাতে লাগলো অবনী।আফিন অবনীর মুখ চেপে ধরলো।শশশ এতো চিল্লাও কেন? কি মনে করবে সবাই?এতোক্ষন হাতপা ঝাপ্টাচ্ছিলো অবনী।এখন থেমে গেলো।আফিন অবনীর মুখ থেকে হাত সরালো।আফিন কে?প্রশ্ন করলো আফিন।আফিনের নামে অবনী চোখ জোড়া ভিজে গেলো।এটা আমার হৃদকম্পনের নাম।আমার বাঁচার কারনের নাম আফিন।তাকে ভালবাসি আমি।ঐ নরপশুদের কারনে আমি তার থেকে দূরে। প্লিজ আমাকে নষ্ট করবেননা।কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো অবনী।অবনী ভালবাসে আফিনকে?ভাবতেই মন প্রান জুড়িয়ে গেলো আফিনের।নিজের চাপ দাড়ি আর সানগ্লাস খুলে নিলো আফিন।নিচে তাকিয়ে আছে অবনী।একটু তাকাও আমার দিকে।বলে উঠলো আফিন।না পারবোনা।আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ।বলে উঠলো অবনী।না তাকালে কেমন করে ছাড়বো?বলে উঠলো আফিন।অবনী ওপরে তাকিয়ে টাস্কি খেলো।এ সে কাকে দেখছে?এ যে ওরই আফিন।
,
,
,
আ আপনি?বলে উঠল অবনী।আফিন মাথা ঝাঁকিয়ে অবনীকে জড়িয়ে ধরতে গেলে সরে গেলো অবনী।নাহ প্লিজ ছুঁবেননা আমাকে।বলে উঠলো অবনী।
,
,
,
,
কেন অবনী?এমন কেন করছো?আমি আফিন।তোমার আফিন।আমার ওপর এতোদিন অনেক অত্যাচার হয়েছে।আমি নোংরা হয়ে গেছি।প্লিজ ছোঁবেননা।কাঁদতে কাঁদতে বলল অবনী।আফিনের আর সহ্য হলোনা।জোরে চড় বসিয়ে দিলো অবনীর গালে।কে বলল তুমি নোংরা হয়ে গেছো?আমি প্রথম যেদিন আমার জলপরীকে যেমন দেখেছিলাম ঠিক তেমন আছো তুমি।আমার জীবন আলো তুমি,আমার গন্তব্য তুমি।ভালোবাসি তোমায়,অনেক ভালোবাসি।তোমাকে চাই আমি।বলতে লাগলো আফিন।আফিনের কথা শুনে অবনী নিজেকে ঠিক রাখতে পারলোনা।কাঁদতে লাগলো।অাফিন বুকে জড়িয়ে নিলো তার জলপরীকে।
চলবে