Thursday, July 10, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1848



পতিতা মেয়ে part_11

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_11

–এই আবিদ,আমাকে কাল বাহিরে একটু ঘুরতে নিয়ে যাবে?জানো তোমার সাথে ঘূরতে আমার খুব ইচ্ছা করে
–হুম নিয়ে যাবো,তবে আমি নিজেই তো এখনও ভালো করে চলতে পারিনা,ভালো করে দেখতে পারিনা,হাটতে পারিনা,তো তোমাকে নিয়ে ঘুরতে গেলে,লোকে দেখলে তোমাকে কি বলবে?
–কি বলবে?
–বলবে একটা অচলের পিছনে কত সুন্দরী একটা মেয়ে,অযথাই জীবনটা শেষ করছে
–তোমারে কিন্তু……(ধমকের সুরে)
–আমারে কি?
–আমার সাথে তুমি ঘূরতে যাবে,এটাই ফাইনাল
–ঠিক আছে
বিকেলবেলা আনিকাকে নিয়ে বাহিরে বের হয়ে গেলাম৷আফসোস কতগুলো মাস কেটে গেল,এখনও আমার পা আর চোখের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি৷উচু নিচু জায়গায় চলতে গেলে অনেক প্রবলেম হয়৷হয়ত আনিকা আমার পাশে না থাকলে এতদিনে কবরেই চলে যেতাম৷আমি অচল জেনেও ও আমার পাশে আছে৷হয়ত এটাই ভালোবাসা৷আর বর্তমানে এমন কোথাও দেখা যায়না,আর দেখলেও খুব কম৷খুব কম সংখ্যক ছেলে মেয়েই তাদের সঙ্গী এমন অচল থাকলে মেনে নিবে৷
আনিকাকে নিয়ে শিশু পার্কে গেলাম৷সমানন্তরাল রাস্তা দিয়ে আনিকার হাতে হাত রেখে হাটতেছি৷হাটতে হাটতে দুজনেই একটা বেঞ্চের উপর বসলাম৷আর বসার পরই আনিকা আমার সাথে গল্প করতে লাগল৷
আর হঠাৎ করেই ওর মাথাটা আমার ডানপাশের কাধের ওপর রাখল৷আর ডান হাতটা আমার হাতের সাথে শক্ত করে আকড়ে ধরল৷আর হঠাৎই বলে উঠল
.
–আচ্ছা আবিদ,তূমি আমাকে অনেক ভালোবাসো তাই না?
–হুম খূব ভালোবাসি,তবে সেটা তোমার থেকেও অনেক কম
–আমার থেকে কম ভুলেও না,কারন তোমার ভালোবাসা পেয়েই আজ তোমাকে ভালোবাসতে শিখেছি
–কিভাবে ভালোবাসতে শিখেছো,সেটা আমি জানিনা তবে তুমি আমার থেকেও আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসো
–আরে না,
–হুম,সেটাই
–আচ্ছা সব সময় তোমার বুকে,তোমার কাধে মাথা রাখার অধিকার দিবে তো?আর আমাকে অনেক ভালবাসবে তো
–কতটা ভালবাসতে পারব সেটা জানিনা,তবে আমি আমার এই পাগলি বউটাকে নিজের জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অব্দি ভালোবেসে যাবো
–জানো আবিদ,তুমি হয়ত বিশ্বাস করবে না,তোমার ওই বুকে আমি স্বর্গসুখ খুজে পাই৷তোমার বুকে মাথা রাখতে পারলে,আমার মনের সব দূঃখ ভুলে গিয়ে নতুন একটা সুখ খুজে পাই,সেটা আর কোথাও খুজে পাই না৷আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি,আমার শেষ নিঃশ্বাসটাও যেন ওখানেই ত্যাগ করতে পারি
–তোমারে কিন্তু এখন মারব!কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছো?আমাকে ছেড়ে যাবার কথা বলছো কেন?ছেড়ে গেলে এখনই চলে যাও,আমি একাই থাকব(ওর প্রতি কিছুটা রাগ করে)
–ওপপপস আমার পাগলটা দেখি রাগও করতে পারে?যাও আর বলব না
–(চূপ করেই আছি)
-কি হলো,বললাম তো আর বলবনা
–হুম
–এবার তাহলে হাসো
–হুম
–কি হলো?হাসো বলছী
–হি হি হি,এবার তুমিও হাসো
–হি হিহি
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে আসছিল৷তাই আনিকাকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে হাটতে লাগলাম৷হঠাৎই একটু উচূ জায়গায় হাটতে গিয়ে পড়ে গেলাম৷আর আনিকা আমাকে সাথে সাথেই তোলার চেষ্টা করছিল৷আশেপাশে সন্ধ্যার সময়ও অনেক মানুষ আমার দিকে তখন কেমন করে যেন তাকিয়ে রইল৷আর অনেকেই হো হো হো করে হেসে উঠল,আর বলতে থাকল,কি কানা কোনা মানুষ রে!সন্ধ্যা না হতেই কেমন শুকনোর ভিতর আছাড় খাওয়া শুরু করছে
এগুলো বলছে আর হাসাহাসি করছিল৷আনিকা তখন অনেক রেগে যায়,আর ওদেরকে কিছু বলার জন্য যেতে চাইলে আমি তার হাতটা ধরে ফেলি,আর তখন আনিকা বলে উঠল
–আবিদ,ছাড়ো বলছি,ওই অসভ্য লোকটার দাতগুলো ভেঙে ফেলব
–আনিকা,বাদ দাও,আর ওরা তো কিছু মিথ্যে বলেনি৷চলো আমরা চলে যাই
–না ওদেরকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া দরকার
–না আনিকা,কিছুই বলার দরকার নেই৷
তোমাকে এখান থেকে যেথে বলছি,তো চলো এখান থেকে,আর একটা কথাও বলোনা৷আর যদি আমার কথা না শুনো,তাহলে আমি খুব কষ্ট পাবো৷এখন তুমি যদি আমাকে কষ্ট দিতে চাও,তাহলে যাও
–না আবিদ,আমি তোমাকে কখনই কষ্ট দিবো না৷কিন্তু ওদের….
–কোনো কিন্তু নেই,চলো বলছি
–হুম
তারপরই আনিকা নিয়ে হাটতে লাগলাম৷আনিকা রাস্তা দিয়ে আমাকে নিয়ে আসছে৷কোনো রিক্সা পাচ্ছিলাম না৷দুজনেই রিক্সার জন্য রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম৷কেননা তখন রাত হয়ে যাচ্ছিল,আর আমার এই অবস্থায় আনিকা কে নিয়ে বাইরে থাকা একদমই ঠিক না৷
আনিকা হাটছে আর আমাকে বলছে
–সামনে ইট আছে আবিদ!ওখানে একটূ উচু,সাবধানে হাটো,
আরেকটু যেতেই
–সামনে গর্ত বামে হাটো,নয়ত কাদায় পড়ে যাবে
আরেকটু যেতেই
-ডানে হাটো ,বামে গর্ত,
এভাবেই আনিকা আমাকে পথ চলাতো৷কখনও ডানে হাটতে বলতো,কখনও বা বামে হাটতে বলতো৷
সত্যি বলতে যদিও আমার অবস্থা খারাপ ছিল,তবুও আমি অনেক সুখিই ছিলাম৷ওর মত একটা মেয়ে যে আমার পাশে আছে,ভাবতেই আমি অবাক হয়ে যাই৷
অনেকক্ষন পর রিক্সা পাওয়া গেল৷আর দুজনেই রিক্সা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷বাসায় আসার কিছুক্ষন পরই বুঝতে পারলাম আনিকা কেমন পাগলের মত করছে৷আর বার বার মাথায় হাত দিচ্ছে ৷মনে হচ্ছে ওর মাথায় অনেক প্রবলেম হচ্ছে৷তাই আনিকাকে জিজ্ঞাসা করলাম কিন্তু সে কোনো কথাই বলল না৷শুধু বলল কিছু না৷পরে রাগ নিয়ে,একটু ধমক দিয়ে যখন জিজ্ঞাসা করলাম৷তখনই আনিকা বলে উঠল
–আসলে আবিদ,আমার মাথাটা একটু ব্যাথা করছে৷আমি এখন একটু শুয়ে থাকব,তাই তুমি যদি এখনি খেয়ে নিতে,তাহলে খুব হতো ভালো
–কখন থেকে ব্যাথা করছে
–এইত
–এইত কি?
–একটু আগে থেকেই
–তোমার মাথা ব্যাথা করছে,আমাকে একবার বলছো?
–না
–কেন বলোনি?বলার প্রয়োজন বোধ করো না,তাই বুঝি(ওর প্রতি রাগ হচ্ছিল,ওর মাথা ব্যাথা করছে কিন্তু আমাকে একবারও বলল না)
–এই আবিদ কি বলছো তুমি হ্যা?তোমাকে বলার প্রয়োজন বোধ করি না মানে?তুমি আমার সব,বুঝেছো
–হুম সেটা তো বুঝতেই পারছি
–কি বুঝতে পারছো ?
–কীছুনা৷এখন চূপ চাপ খাটোর ওপর আসো
–কেন?

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–যেটা বলছি সেটা করো
তারপর আমি খাটে গিয়ে বসলাম৷আর আনিকাও বসল৷আর তখন ওকে আমার কোলে শুয়ে থাকতে বললাম৷আর ও আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে রইল৷
আমি তখন মাথা ব্যাথার মলম ওর মাথায় লাগিয়ে দিচ্ছি৷আর ওর মাথায় মালিশ করে দিচ্ছিলাম৷আর আরেক হাতে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম৷
ও তখন এক দৃষ্টিতে আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে৷আর ওর চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছিল৷
–আনিকা,খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে তোমার?দেখবে মাথা ব্যাথা কমে যাবে,তুমিএকদমই কান্না করো না
–মাথা ব্যাথার কারনে আমি কান্না করছি না,তুমি হাত বুলাতেই মাথা ব্যাথা সব শেষ
–তাহলে কেন কান্না করছো?
–জানো আবিদ,আমি না খুবই ভাগ্যবতী একটা মেয়ে,যার কারনে তোমার মত একজনকে আমার জীবনে পেয়েছি৷যার কাছে আমার সমস্ত সুখ খুজে পাই৷আর কোথাও এত সুখ আমি পাই না৷যতটা তোমার বুকে মাথা রেখে পাই৷আমাকে না সব সময় তোমার ওই বুকে রাখবা
বলেই আরও জোড়ে কান্না করে দিল৷আর আমাকে খূব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল৷অনেক শক্ত করেই জড়িয়ে আছে,যেন আর একটূ হলে আমার সাথে ও নিজেকে মিশিয়ে ফেলবে৷
পাগলিটার আচরন গূলো খুবই অদ্ভুদ৷আর ওর চাওয়া গূলোও খুব সামান্য তবে খুব অদ্ভুদ লাগে৷কারন ও কিছু হলেই বলে,আমার বুকে যেন তাকে সব সময় জড়িয়ে রাখি,কখনই যেন এ বুক থেকে ওকে আলাদা না করি৷পাগলিটা যখনই ঘুমাবে আমার এই বুকের মধ্যে ঘুমাবে৷বালিশের কথা বললে তো হেব্বি কান্না করে দেয়৷কারন ওর একটাই কথা ,আমার বুকেই নাকি তার সব সুখ৷আর ওকে যখন আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে রাখি৷তখন ও খরগোশের মত একদম কাচুমাচু করতে থাকে৷মনে হয় একটা খরগোশের বাচ্ছা,আমার বুকে কেমন কাচুমাচূ করছে৷
ইদানীং প্রায়ই আনিকার মাথা ব্যাথা করে৷জ্বর আসে৷
বমি করে৷যেগূলো আমাকে খূব ভাবনার ভিতর রাখছে৷
খূব ভয়ে পেয়ে যেতাম৷ওকে ডক্টরের কথা বললে ডক্টরের কাছে যেতে চাইত না৷
কিছু বললেই বলত ওর কিছুই হয়নি৷
কিন্তু ওর এমন অবস্থা আমাকে সত্যিই খুব বেশিই ভাবায়৷
কারন পাগলিটার কষ্ট একদমই যে সহ্য করতে পারিনা৷নিজের হাজারও কষ্ট হলে কোনো সমস্যা হয়না৷কিন্তু ওর কিছু হলেই বুক ফেটে যায়,অসহ্য যন্ত্রনায়৷হয়ত একটু বেশিই ভালোবাসি তাই৷
সেদিন রাতেও হঠাৎ ওর মাথা ব্যাথা হচ্ছিল৷আর ব্যাথাটা হয়ত অনেক বেশিই হচ্ছিল৷
যার কারনে ও কান্না পর্যন্ত করছিল৷যদিও কান্নাটা আমার অগোচরে৷
আনিকাকে হঠাৎ খুজতে লাগলাম কিন্তু কোথাও পাচ্ছিলাম না৷আর আনিকাকে একটা ডাকও দিচ্ছিলাম না৷কারন সকাল থেকেই ওর আচরন একদমই ভিন্ন ছিল৷আস্তে আস্তে খূজতে খূজতে যখন ছাদে গেলাম৷দেখলাম ছাদের একটা কর্নারে বসে বসে মাথায় হাত দিচ্ছে আর কান্না করছে৷আর আমাকে দেখেই চোখ মুছে ফেলল৷
–আনিকা,তোমার কি হইছে বলো
–কই কিছুনা তো
–সত্যি করে বলো বলছি
–কই কীছু না তো৷আর তুমি এই অবস্থায় একা একা ছাদে আসছো কেন?
–তোমাকে যেটা বলছি বলো,কি হইছে তোমার?
–আসলে মাথা ব্যাথা করছে
–আমাকে বলোনি কেন?
–আসলে তুমি নিজেই তো অসূস্থ,তাই….
–তাই বলে আমাকে বলবেনা?চলো এখনি ডাক্তারের কাছে যাবো
–না,এখন যাবো না,পরে যাই
–না এখনি যাবো
–না আবিদ,এখন মাথা ব্যাথা করছে,এখন গেলে,রাস্থায় আমারই যদি কীছু হয়ে যায়,তখন তোমাকে কে দেখবে?
–তাই বলে এখন কষ্ট ভোগ করবে?
–না,কষ্ট ভোগ করব কেন?
–ওই চূপ৷এখনি নিচে চলো৷তোমার মাথায় আমি মলম মালিশ করে দিচ্ছি
তারপর আনিকাকে নিয়ে গিয়ে মাথায় মলম মালিশ করতে লাগলাম৷আর আস্তে আস্তে সময়টা কাটিয়ে দিলাম৷বিকেল বেলা ওর মাথা ব্যাথা ঠিক হলে ওকে নিয়ে আমার চেনা জানা,বাংলাদেশের সব চাইতে বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম৷
আর ওখানে ওর অনেকগলো টেষ্ট করাচ্ছিল৷আর ডাক্তার আমার চেনা৷আমি ওনাকে চাচা বলে ডাকি৷কিন্তু যতই আনিকার মাথা ব্যাথাসহ সবকিছুরাজন্য টেষ্ট করছিল৷ডাক্তার চাচা ততই ঘাবরে যাচাছিল৷ওনাকে এমন ঘাবরে যেতে দেখে আমি খূব ভয় পেয়ে গেলাম৷চেষ্ট শেষে ডাক্তার চাচার সাথে আমি একা একটূ কথা বললাম
–চাচা,ওর টেষ্ট গূলো করতে গিয়ে এমন ঘাবরে যাচ্ছিলেন কেন?(আমি)
–আরে তেমন কীছুই না,চিন্তা করো না,আল্লাহকে ডাকো,যেন কাল রিপোর্টগূলো ভালো আসে(ডাক্তার চাচা)
–হুম,তবে ওকে কেমন দেখলেন?
–দেখো বাবা,রিপোর্ট ছাড়া কিছুই বলতে পারছিনা৷তোমরা কষ্ট করে একটূ কালকে আসো
–হুম
তারপর টেষ্ট গুলো করে আমরা বাসায় চলে আসলাম৷বাসায় এসে বার বার আল্লাহর কাছে পার্থনা করছিলাম৷যেন রিপোর্টগুলো ভালো আসে৷
চিন্তায় একদমই খেতে পারছিলাম না৷তবে আনিকাকে তেমন কিছুই বুঝতে দিলাম না৷
রাতে একদমই ঘূম হচ্ছিল না৷খূব টেনশন হচ্ছিলো৷
আর কেন জানি বুকের ভিতর অসহ্য যন্ত্রনা অনূভূত হতে লাগল৷আনিকা তখন আমার বুকের উপর ঘূমিয়ে আছে৷ঘূমের ভিতরই আনিকাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম৷আর মনে মনে বলতে লাগলাম
.
“””””””খূব ভালোবাসি রে পাগলি,তোকে খুব ভালোবাসি,তোকে কোথাও, কখনও এই বুক থেকে হারাতে দিব না””””””

পতিতা মেয়ে part_10

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_10

রাতের বেলা খাবারের সময় আনিকা নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিতে লাগল৷আমি খাচ্ছি আর অপলক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,যদিও চোখদুটো তখনও ঝাপসা৷তারপরও আনিকাকে কেন জানি সেই ঝাপসা চোখেই অনেক মায়াবতি লাগছিল৷
.
–এই এভাবে কি দেখছো?
,
–আমার মায়াবতীকে
.
–সেটা আবার কে?
.
–আমার বউ,আনিকা
.
বলতেই আনিকা কেমন লজ্জা পেয়ে গেল৷
,
–যাও দুষ্টু,এখন চুপচাপ খেয়ে নাও
.
–হুম
.
খাওয়া শেষ করার পর আনিকার আম্মু আসল
.
–আনিকা,তুই ঘুমাবিনা?
.
–হুম মা,তুমি গিয়ে ঘূমিয়ে পড়
,
–তুই কোথায় ঘুমাবি?
.
–আমি আবিদের সাথেই ঘূমাবো,তুমি যাও
.
তারপরই আনিকার আম্মু চলে গেল৷
তখন আনিকা বলে উঠল
.
–এই তুমি এখনি ঘূমিয়ে পড়ো,এমনিতেই অনেক রাত হয়ে গেছে
.
–হুম৷কিন্তু তুমি কি করবা?
.
–আমি আমার পাগলটাকে পাহারা দিব
,
–পাহারা দিতে হবে না,তুমিও ঘূমাও

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

.
–না,তুমি কি জানো না নাকি?আমি তো প্রতিদিনই তোমাকে পাহারা দেই
.
–হুম,এখন তুমিও ঘূমাও
,
তারপর দূজনেই ঘূমিয়ে পড়লাম৷কিন্তু পাগলিটা একদমই ঘুমালো না৷সে তার মায়াভরা হাতে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল৷ওর প্রতিটা স্পর্শে আমার মনে নতুন করে আলোড়ন তৈরি করছে৷
কখন যে ঘূমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারলাম না৷
খূব ভালভাবেই আমাদের দিনগুলি কাটতে লাগল৷আর আমার অবস্থাও দিন দিন ভালো হতে লাগল৷আর ভালই হবে না কেন?যার এমন একজন আছে!তার কাছে কি আর কোনো অসুস্থতা থাকতে পারে নাকি?
,
দুমাস পর
,
এখন আমার পায়ের অবস্থা মোটামুটি ভালো৷ব্যান্ডেজ খুলে ফেলা হইছে৷কিন্তু এখনও আমি হাটতে পারিনা”
আসলে দীর্ঘ সময় ধরে না হাটার কারনে পা কেমন অচলের মত হয়ে গেছে৷ডাক্তার বলছে আমাকে নিয়মিত এখন হাটার চেষ্টা করতে হবে৷নয়ত হাটার ক্ষমতা আমি হারিয়ে ফেলব৷কিন্তু আমি হাটতেই পারিনা৷মাটিতে পা রাখলেই প্রচন্ড ব্যাথা করে৷তাই হাটতেই মন চায় না৷সারাদিন শুয়েই থাকি৷
.
–এই আবিদ্দা……
.
–কে গো?
.
–তোমার…..
.
–আমার কি?নানি নাকি?(মজা করে)
.
–ওই মেরে হাত পা ভেঙ্গে দিব কিন্তু!
.
–পা তো ভাঙাই আছে,হাত দুটো ভেঙে ফেলো শুধু
.
–দেখছো?সাহস কত বেশি হইছে?ওই চুপ করে উঠো,তোমাকে এখন হাটতে হবে
.
–না গো ,ব্যাথা করে
.
–তোমার ব্যাথার গুষ্টি কিলাই৷উঠো বলছি
.
কি আর করার,উঠার চেষ্টা করছী কিন্তু পারছিলাম না৷
ঠিক তখনই আনিকা আমার হাত তার কাধে ভর করালো৷আর আমাকে খাট থেকে নামালো৷খুব ভয় লাগছিল৷কারন অনেকদিন পর মাটিতে পা ফেলাচ্ছি৷
মাটিতে পা ফালাতেই
,
—আহহঃ(পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব)
,
–কি হইছে আবিদ?খুব ব্যাথা লাগছে?
.
–হুম
.
–একটূ কষ্ট করো,দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে৷
.
বলেই আমার কপালে একটা চুমু দিল৷
জানিনা কেন জানি তখন নিজের সব কষ্ট আর ব্যাথা ভুলে গেলাম৷আমি হাটার চেষ্টা করতে লাগলাম৷কিন্তু পারছিলাম না৷তবুও চেষ্টা করতেই লাগলাম৷
.
সেদিন আর আমার তেমন হাটা হলো না৷তবে হঠাৎ পা নাড়ানোর জন্য রাতের বেলা দুপায়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করতে লাগলাম৷অনেকবার বৃথা চেষ্টা করলাম মূখ দিয়ে যেন ব্যাথার কারনে কোনো আওয়াজ বের না হয় ৷আমি জানি আমার কষ্ট দেখলেই আনিকা কেমন করে ফুপিয়ে কান্না করে দেয়৷
কিন্তু শেষমেষ আর পারলাম না৷এর আগেই আনিকা সব বুঝে গেল৷আর আমাকে বলে উঠল
.
–খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার তাই না?
,
–কই না তো?
.
–আমার কাছে লুকাতে চাইলেও পারবে না৷কারন আমি তোমার মুখ দেখেই সব বলে দিতে পারি৷৷
,
–হুম৷
.
এরপর থেকে আনিকা প্রতিদিনই আমাকে হাটানোর চেষ্টা করাতো৷আমিও আনিকার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে হাটার চেষ্টা করতাম৷তবে তখনও আমার চোখ ততটা ভালো হয়নি,তাই দেখতেও প্রবলেম হত৷চোখে গ্লাস ৷পরা থাকলে কিছুটা দেখতে পেতাম৷
যাই হোক,আনিকা আমাকে প্রতিদিনই হাটানোর চেষ্টা করতো৷
.
একটা ছোট বাচ্ছাকে মানুষ যেভাবে ধরে ধরে হাটা শিখায়,ঠিক আমার পাগলি আনিকাও তাই৷
আমাকে ধরে ধরে বাচ্ছাদের মত হাটা শিখানোর চেষ্টা করতো৷
.
বিষয়টা যদিও অদ্ভুদ তবুও সত্যি,মানুষ জন্মের পর হয়ত একবারই হাটা শিখে,আর আমার শিখতে হচ্ছে দুবার৷একবার ছোটকালে বাবা মায়ের হাত ধরে,আর এখন আমার এই পাগলিটার হাত ধরে৷
.
এভাবেই অনেকগুলি দিন কেটে গেল৷
এখন আমি একাই হাটতে পারি৷তবে বেশিক্ষন দাড়িয়ে বা হাটতে পারিনা৷বাচ্ছাদের মত একটু হেটেই পরে যাই৷
আমি যখনই পরে যেতাম ঠিক তখনই আনিকা দৌড়ে গিয়ে আমার হাতটা ধরে ফেলত৷
.
কিছুদিন পর
.
–আবিদ,চলো আজকে বাইরে যাবো
,
–কিন্তু আমি যে এখনও ভালো করে হাটতেই পারিনা
,
–তাতে কী?আজকে বাইরে গিয়ে হাটবে
.
–বাইরে গিয়ে তো পরে যাবো৷আর তুমি তো জানো,আমি ভালো করে চোখেও দেখতে পারিনা৷আর সূর্যের আলোর কারনে আরও দেখতে পারব না
.
–হুম,তবে প্রবলেম নাই৷তোমার এই পাগলিটা যতদিন আছে,ততদিন তুমি তার চোখ দিয়েই দেখবা
এখন চলো তো
,
–হুম৷
.
কি আর করার?আনিকার সাথে বাহিরে গেলাম৷বাহিরে মাঠে যেতেই কেমন অন্ধকার দেখা শুরু করলাম৷
চোখের পাওয়ার যেন একদমই জিরো হয়ে গেছে৷
আনিকা একটূ দুরে সরে গিয়ে বলল
,
–আবিদ?এবার হাটো
.
–আনিকা,আমি তো ভালো করে কিছুই দেখতে পারছিনা৷কিভাবে হাটবো
,
–একদম আলসেমি করবানা৷চূপ করে হাটো
,
–আরে ভালো করে তো কিছুই দেখছি না,আচ্ছা তার চেয়ে ভালো,তুমি এসে আমার হাতে ধরো,আর……
.
–একদম হাত ধরার কথা এখন বলবে না
,
–কেন?
.
–আমি তোমার হাত এখন ধরব না
,
–কিন্তু কেন আনিকা৷
,
–কারন তোমাকে একা একাই হাটতে হবে
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

.
–কিন্তু আমি যে হাটতে পারছিনা কারন কীছুই দেখছি না
,
–আচ্ছা তুমি হাটো,আমি তোমার পথ বলে দিচ্ছি
,
–হাত ধরবে না?
,
–ওই চূপ করে যেটা বলছি ,সেটা করো
.
–হুম
.
তারপর কি আর করার?ওর কথা মতই হাটা শুরু করলাম৷
আমি হাটতে লাগলাম আর ও বলতে লাগল
,
–আবিদ বাম দিকে হাটো,ডানে উচু.
আবিদ সোজা হাটো
আবিদ ডানে নিচু,বামে হাটো
আবিদ সামনে গর্ত,ডান বা বামে হাটো
.
এভাবেই সারাটাদিন আনিকা আমাকে হাটিয়েছে৷
সত্যি বলতে এ এক নতুন অভিজ্ঞতা৷
খুব ভাল লাগছিলো,যখন আনিকা একটু পর পর বলত,আবিদ বামে হাটো,ডানে উচু,নিচু,
ডানে হাটো,বামে সমস্যা৷
.
রাতের বেলা
,
আনিকা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিলো,আর বার বার বলছিল
.
–দেখছো আবিদ,আজ তুমি কতটা একা একা হাটছো?
তুমি কিন্তু একদমই চিন্তা করবেনা,দেখবে তুমি একদম ঠিক হয়ে গেছো৷
.
–হুম
.
–হুম৷তুমি আবার হাটবে,চলবে
.
–আচ্ছা আনিকা,একটা কথা বলব?
.
–হুম বলো
,
–এত কষ্ট করার কি দরকার?
,
–মানে?
,
–মানে এই যে তুমি দিন রাত,একটা অচলের পিছনে এভাবে এত কষ্ট করছো?আর নিজেও কত কষ্ট পাচ্ছো,এগুলো ছেড়ে তো তুমি ভালো……….(মুখ হাত দিয়ে আটকিয়ে দিল)
,
–আবিদ,তোমাকে এই কথাটা না বলতে আগেও নিষেধ করেছি৷কিন্তু তুমি আবারও বলছো কেন?আর হ্যা আমি কোনো কষ্ট পাচ্ছিনা,আর তোমাকে ছেড়ে আমি কখনই ভালো থাকতে পারব না৷তোমার ওই বুকে যে ,আমি আমার সব সুখ খুজে পাই৷
,
–কিন্তু..
.
–কোনো কিন্তু নেই,প্লীজ আবিদ,আমাকে আমার সুখ থেকে বঞ্চিত করো না,আমার সুখ টূকু তুমি কেড়ে নিও না আবিদ,আমি তোমার বুকে আমার পৃথীবির সবটূকু সূখ খূজে পাই,যেটা আর কোথাও পাইনি৷আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি,এই বুকের মধ্যে মাথা রেখেই যেন,আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারি
.
বলেই ফুপিয়ে কান্না করে দিল৷
.
–এই পাগলি,প্লীজ কান্না করো না৷আর কখনই বলব না
,
–(কান্না করেই চলছে)
,
–সত্যি বলছি,আর কখনই বলব না
,
–তাহলে তিন সত্যি বলো
,
–হুম তিন সত্যি
.
–এবার আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে
,
তখন কি আর করার? আনিকাকে তখন বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলাম৷
মনের ভিতর যে তখন কি পরিমান শান্তি লাগছিল,সেটা হয়ত প্রকাশ করার মত না৷
আর ওর ভালোবাসা পেয়ে,খাবারের কথা ভুলেই গেছি৷
এই মন তখন বারবার বলতে লাগল
.
“”””কিসের খাওয়া কিসের কি?
এমন পাগলি পেলে লাগে কি?””””””
.
.
.
.
চলবে…………

পতিতা মেয়ে part_9

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_9

অনেকক্ষন পর আনিকা আবারও নিজেকে ছুটিয়ে নিল৷ঠিক তখনই আনিকা বলে উঠল
,
–আবিদ,তুমি সব সময় তোমার ওই বুকে আমাকে আগলে রাখবে তো?কখনও আমাকে ছেড়ে যাবে না তো?(আনিকা)
.
–এই সেইম প্রশ্নগুলো তো আমারও,
.
–আমি তোমাকে কখনই ছেড়ে যাবো না৷এক মাত্র মৃত্যু ছাড়া আমাকে তোমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না
.
–আমারও সেইম কথা৷
.
তখন আনিকা আবারও আমার কপালে একটা চুমূ দিল৷
.
একটু পর ডাক্তার এসে আমাকে ঘুমের ইংজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে চলে গেল৷আমার আর কিছুই মনে নেই৷
হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল৷চারিদিকে একদম নিশ্চুপ৷হাতটা উঠাতে যাবো কিন্তু পারলাম না৷ঝাপসা ঝাপসা চোখেই ঝাপসা ভাবেই দেখতে পেলাম আনিকা আমার হাতটাকে তার মূখের ওপর রেখে আমার বেডের নিচেই শুয়ে আছে৷
ওকে মাত্র একটা ডাক দিতেই ও সজাগ হয়ে গেল৷
.
–আনিকা?
.
–কি?তুমি ঘূম থেকে কেন উঠছো?আর তোমার কি কিছু লাগবে?
.
–না,কিন্তু দেখো তো এখন কয়টা বাজে
.
–রাত ৩টা
,
–কিহহহ,তুমি এত রাতে এখানে কেন?বাসায় যাও নি?
.
–বাসা?কোথায় আমার বাসা?আমার বাসা তো তুমি৷তুমি যেখানে থাকবে,সেখানে আমিও থাকব
.
তখন বেড থেকে উঠতে চাইলাম কিন্তু উঠতে পারছিনা কেন?পা দুটো যেন শক্ত কোনো কিছুর সাথে বেধে রাখা হইছে৷গতকাল কি এমন ছিল না৷তাহলে আজকে এমন লাগছে কেন
,
–আনিকা দেখো তো,আমার পা কিসের সাথে বাধা?
.
–ফুপানোর আওয়াজ
.
–এই তোমাকে জিজ্ঞাসা করছি,আমার পা কোথায় বাধা,পা দুটো একদমই নাড়াতে পারছিনা,কিন্তু তুমি কান্না করছো কেন?
,
–পা দূটো এখন নাড়ানোর দরকার নেই
,
–কেন?
,
–আসলে
,
বলেই আবারও কান্না শুরু করে দিল
,
–আরে কান্না করছো কেন?বলবে তো আমার পায়ের কি হইছে?
,
–এক্সিডেন্টে তোমার দুটো পা ই ভেঙে গেছে৷আর এখন ব্যান্ডেজ করা আছে,তাই পা নাড়াতে পারছো না
,
কথাটা শুনেই কিছুক্ষনের জন্য নিঃস্তব্দ হয়ে গেলাম৷
গতকালও মনে করেছিলাম,হয়ত শরীর ব্যাথার কারনে পা নাড়াতে পারছিনা৷আর আজ আমি এটা কি শুনছি?আমার পা ভেঙে গেছে?
.
পোড়া কপাল আমার৷ছোটবেলায় মা বাবাকে হারিয়ে এতিম হয়ে বহুকষ্টে জীবনযাপন করলাম৷বড় হয়ে হলাম একটা বাজে ছেলে৷যখনই ভালো হতে চাইলাম৷ঠিক সেই মূহুর্তে কত ঝড় ছুটে আসলো আমার জীবনে৷চোখের সাথে যে পায়েরও এমন অবস্থা হবে,ভাবতেই পারিনি৷
ওপরের দিকে তাকিয়ে বললাম,,আল্লাহ,তুমি পারই বটে,তবে আমার আজ কোনো কষ্ট নেই৷সব কিছুর বিনিময়ে তুমি আমার পাগলিটাকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিছো,এটাই আমার কাছে অনেক৷
,
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–আবিদ,তুমি কান্না করোনা৷দেখবে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে
,
–হয়তবা,কিন্তু আনিকা,আমার মনে হয় তোমার চলে যাবাই ভালো,আমার মত একটা অচল…..(আমার মুখে হাত দিয়ে কথা বলতে দিব না)
.
–দেখো আবিদ,উল্টা পাল্টা কথা বলবে না,এই একই কথা যদি আমিও বলি,যখন তোমার সব কীছু ঠিক ছিল,তোমার কোনো সমস্যা ছিল না,তখন আমার মত হতদরিদ্র একটা পতিতাকে কেন ভালোবেসেছিলে?একটা পতিতাকে এতটা ভালোবাসা পায়?
.
–যায়,মন থেকে চাইলে,সব কিছুই সম্ভব
.
–ঠিক একই কথা আমারও৷মন থেকে চাইলে একটা অচল মানুষকেও ভালবাসা যায়৷আর হ্যা তোমাকে আমি আবার আগের মত গড়ে তুলব৷তুমি একদমই ভেঙে পরবে না৷
.
কি বলব বুঝতেই পারছিনা৷এই ভালোবাসাটা যদি আগে দেখাতো,তাহলে হয়ত এত কিছু হত না৷তারপরও আমি সুখি,কারন ও তো আমাকে এখন ভালবাসে
.
–আচ্ছা আনীকা ঘুমীয়ে পড়ো
.
–তুমিও ঘূমাও
,
–দুজনেই শুয়ে পরলাম,কিন্তু দুজনেই জায়গাটা একদমই ভিন্ন,আমি শুয়ে আছি হসপিটালের বেডে,আর পাগলিটা শুয়ে আছে,অর্ধেক বসে৷মাথাটা আমার বেডের আমার মাথার সাইডে,আর শরীরটা হসপিটালের ফ্লোরে৷
.
গভীর রাত৷হয়তবা রাতটা প্রায় শেষ৷চোখে ঘূম নেই৷শুধু আনমনে তখণ আনিকার কথাই ভাবছি,মেয়েটার সুন্দর জীবনটা আমার মত একটা অচলের সাথে শেষ করে দিবে?
চাইলে তো,ওর জীবনটা ও এখন ভাল কহে সাজাতেও পারে কীন্তূ তা করছে না কেন?
তাহলে কি ভালোবাসার জোড়েই ও এমন করছে?
,
ভাবতে ভাবতেই ফজরের আযান৷আযান শুনে চোখটা বন্ধ করে ফেললাম আর ঘুমানোর মিথ্যা অভিনয় করলাম কারন আনিকা ইতিমধ্যেই জেগে গেছে৷ও উঠেই বাহিরের দিকে গেল৷আর একটূ পর আবারও ফিরে এল৷দরজাটা অফ করে ও বেডের একসাইডে চলে গেল৷চোখে ঝাপসা থাকার কারনে তেমন স্পষ্ট ভাবে দেখতে পারছিনা৷তবে যতটা বুঝতে পারছি ও হয়তবা নামাজ পরছে৷
,
কিছুক্ষন পরই আমার ধারনাটা ঠিক হলো৷কারন ও কান্না করছিলো আর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করছিল৷
বার বারই বলছিলো,আল্লাহ,তুমি আবিদকে ভালো করে দাও,সুস্থ করে দাও৷দরকার পরলে আমার জীবন নিয়ে নাও,তবুও ওকে ভালো করে দিও,সুস্থ করে দাও
.
আনিকার কান্নাটা কেন জানি সহ্য করতে পারছিনা৷নিজের ঝাপসা চোখ দুখানা!আরও ঝাপসা হয়ে গেল৷একদন নিঃস্তব্দ হয়ে যাচ্ছি ওর এমন কীর্তি দেখে৷
.
হঠাৎই ওর নামাজ শেষ করে হয়ত আমার দিকে তাকিয়েছে৷আর আমাকে কান্না করতে দেখেই ও আমার কাছে আসল আর বলতে লাগল
.
–কান্না করছো কেন?খূব বেশি কষ্ট হচ্ছে তোমার?অনেক খারাপ লাগছে তোমার তাই না?দেখবে আল্লাহ ঠিক তোমাকে ভালো করে দিবে৷
.
–হুম(মাথা নাড়িয়ে)
.
–একদম কান্না করবে না,আমি তো তোমার পাশেই আছী,তাই না?
.

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–হুম
.
–তূমি কান্না করলে যে আমার খূব কষ্ট হয় আবিদ,অনেক কষ্ট লাগে,নিজেকে অনেক বড় অপরাধি মনে হয়,প্লীজ কান্না করো না
.
কিছুই আর বললাম না৷একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে,চোখ দুটো বন্ধ করে রাখলাম৷
এভাবেই হসপিটালেই কেটে গেল প্রায় একটা মাস৷
এই একটা মাসে আনিকার সেবা,আর ট্রিটমেন্ট সব মিলিয়ে আমার অবস্থা খুবই ভালো৷তবে চোখে এখনও ঝাপসা দেখি৷চোখে ঝাপসা দেখলেও সব কিছু বুঝতে পারি৷আর পায়ের অবস্থাও অনেক ভালো৷হয়ত সামনের সপ্তাহে আমাকে বাসায় নেবার কথা বলেছে ডাক্তার৷
.
দেখতে দেখতে একটা সপ্তাহ কেটে গেল৷
এতগুলি দিন কেটে গেল বুঝতেই পারিনি৷আর বুঝবই বা কিভাবে?যার পাশে এমন একজন আছে,সে কষ্টে থাকলেও তো অনেক সুখি৷সত্যি বলতে এতগুলো দিন আনিকা আমাকে ছাড়া একটা মুহুর্তও আমার কাছ থেকে দুরে যায়নি৷ওর আম্মু সহ দুজনেই একের পর এক আমার সাথে সময় দিয়েছে৷সেবা করেছে৷আর আনিকার কথা কি বলব?সকাল থেকে শুরু করে আর রাত শেষ হওয়া অব্দি মেয়েটা আমার পাশেই থাকত৷অনেক উৎসাহ দিতে৷বার বারই বলত আবিদ,তুমি আবারও ঠিক হয়ে যাবে৷তোমার কিছুই হবে না৷
.
আজ আমাকে বাসায় নিয়ে যাবে৷এখনও পা ঠিক হয়নি৷তবে বাসায় নেওয়া যাবে আমাকে৷তাই আনিকাকে বললাম,এই চার দেয়াল ছেড়ে যেন ,আমাকে বাসায় নিয়ে যেতে৷আর তাই আমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে৷
পায়ে এখনও ব্যান্ডেজ৷
এমন অবস্থায় বেডে করে গাড়িতে করে আমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে
.
অবশেষে আবারও আমাকে বাসায় নেওয়া হলো৷আর আনিকার আম্মুও আমাদের সাথেই থাকবে৷ওহ ভালো কথা,আপনাদের তো বলাই হয়নি,আনিকার আম্মুকে আমাদের বিয়ের কথা বলে দিয়েছি৷আর উনি তখন আমাদের মেনে নেয়৷
.
যাই হোক আমাকে বেডে করেই আমার রুমে নেওয়া হলো৷রুমে নেওয়ার পরই সবাই চলে গেল৷আর আনিকার আম্মু তখন ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায়৷কিন্তু আনিকা তখনও আমার পাশেই দাড়িয়ে আছে৷
.
–আনিকা,দাড়িয়ে আছে কেন?আমার পাশে বসো
,
–হুম৷
.
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–আচ্ছা আনিকা,তোমার বিরক্ত লাগে না?
.
–বিরক্ত?কিন্তূ কেন?
.
–এইযে এতটা দিন ধরে আমার মত একটা অচলের পাশে সময় দিচ্ছো?
.
–এই একদম উল্টা পাল্টা কথা বলবে না,তাহলে কিন্তু….
.
–আচ্ছা আর বলব না,একটু কাছে আসবে?
.
–হুম
.
আনিকা আমার কাছে আসতেই ওর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলাম৷
আর তখন আনিকাও আমার কপালে একটা চুমু দিয়েই বলে উঠল,,এই পাগলটাকে বড্ড বেশিই ভালোবাসি,অনেক বেশিই ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি,,
.
ভালোবাসা কি জিনিস,হয়ত আনিকাকে আমার জীবনে না পেলে কখনই বুঝতে পারতাম না৷
মানুষ পতিতাদের ঘৃনা করে,কিন্তু মানুষগুলো কেন পতিতা হয়?হয় আমাদের মত কিছু মানুষদের জন্যই৷
তবে হ্যা,এসকল মানুষদেরকে ভালোবাসতে পারলে,কখনই বৃথা যাবেনা৷কারন তাদের জীবনে একটু ভালবাসার আলো ফুটাতে পারলে,তারাও সব কিছু ছেড়ে দিয়ে,সমাজকে,আপনার আমার জীবনকে সুন্দর করার আলোতে নিজেদের পরিনত করে৷
ভালোবাসি আনিকাকে,খুব বেশিই ভালোবাসি….
.
.
.
.
চলবে…….

পতিতা মেয়ে part_8

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_8

চোখ খুলতেই কেমন ঝাপসা ঝাপসা দেখতে লাগলাম৷কিছুই ভালো করে দেখতে পারছিনা৷
চোখটা আস্তে আস্তে ঘুরাতে ঘুরাতে দেখলাম ,আমি কোনো হসপিটালে আছি৷কিন্তু আমি এখানে কেন?আর কেনই বা ভালো করে স্পষ্ঠভাবে কিছুই দেখতে পারছিনা?
ঠিক তখনই আপন কোনো মানুষের কান্নার আওয়াজ৷আর তার সাথে শুনতে পেলাম
,
–আবিদ,তোমার জ্ঞান ফিরছে?আবিদ তোমার কেমন লাগছে?আর সেদিন কি হইছে?(কান্না করতে করতে)
.
মাণুষটার দিকে তাকালাম কিন্তু চোখে ঝাপসা দেখার কারনে চেহারা বুঝতে পারছিনা৷তবে কন্ঠ শুনে বুঝা যায়,এটা আনিকা৷কিন্তু আমি ভালোভাবে দেখতে পারছিনা কেন?
ঠিক তখনই চিৎকার দিয়ে উঠলাম৷আর আমার মুখ থেকে আপনা আপনিই বের হয়ে গেল,
.
–আমি ভালো করে দেখতে পারছিনা কেন?সব কিছু এমন ঝাপসা লাগছে কেন?(আমি)
.
–কি বলছো আবিদ?তুমি ভালো করে দেখতে পারছো না?(কান্না করতে করতে)
.
–না,আমি কাউকেই ভালোভাবে দেখতে পারছিনা৷আমার চোখের কি হলো(কান্না করে দিলাম)
.
–না,তোমার কিছুই হতে পারেনা৷ডাক্তার,
ডাক্তার(চিৎকার করে)
.
ঠিক তখনই ডাক্তার এসে হাজির
,
–কি হইছে?আর রোগীর জ্ঞান কখন ফিরছে?(ডাক্তার)
.
–একটু আগেই ফিরছে৷ডাক্তার আবিদ ভালো করে কিছু দেখতে পারছে না কেন৷ওর চোখের কি হইছে?(কান্না করতে করতে)
.
–আসলে……….আচ্ছা আপনি আমার সাথে আমার চেম্বারে আসুন৷(ডাক্তার)
.
–ডাক্তার সাহেব,সমস্যা নাই৷আপনি এখানেই বলুন৷আমিও শুনতে চাই(আমি)
.
–আসলে আবিদ সাহেব,এক্সিডেন্টের সময়,আপনার মাথায় অনেকটাই আঘাত পরে৷কিন্তু তার চাইতে বেশি আঘাত পরে আপনার দুই চোখে৷চোখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গিয়েছিল৷আর আপনার চোখে প্রচন্ড আঘাত পরার কারনে চোখের রেটিনা,কর্নিয়ার মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেছে৷যার কারনে আপনি ঠিকমত,ভালভাবে দেখতে পারছেন না৷
.
–না,এ হতে পারেনা৷ডাক্তার আপনি বলে দেন,ওর চোখ আবার আগের মত ঠিক হয়ে যাবে(আনিকা)
.
–দেখুন,আমি তো ভেবেছিলাম,ও আর চোখেই দেখতে পাবেনা৷কারন চোখের যেই ক্ষতি হইছে,তাতে যে উনি এখনও দেখতে পাবে,সেটা আমি নিজেও ভাবিনি৷তবে হ্যা ,যদি চোখ পাল্টানো যায়,তখন হয়ত ওনি চোখে পূরোপুরি দেখতে পারবেন৷তাও সিউর না
.
–(আনিকা উচ্চস্বরে কান্না করতে লাগল)
.
–আর একটা কথা,ওনাকে কিছু চোখের ড্রপস আর ঔষধ লিখে দিচ্ছি,এগূলো রেগুলার ঠিকঠিক মত,ব্যবহার করলে,হয়তবা চোখের আলো ফিরে আসতে পারে৷আর চোখের ট্রিটমেন্ট ঠিকঠাক মত চালাবেন৷
.
–হুম
.
–আর ওনার সাথে সবসময় একজন মানূষ থাকতে হবে৷এতে ওনার জীবন নাশের ঝুকি কমে যাবে
.
বলেই ডাক্তার চলে গেল৷ঠিক তখন আনিকা অনেক জোড়ে জোড়ে কান্না করতে লাগল৷আর বলতে লাগল
.
–সব দোষ আমার,আমারাজন্যই তোমার এই অবস্থা হইছে৷সেদিন আমার কারনেই তুমি রাতে উল্টা পাল্টা জিনিস খেয়ে টেনশন নিয়ে গাড়ি ড্রাইব করে নিজের এত বড় ক্ষতি করলে৷
কেন এমনটা করলে?(কান্না করতেই লাগল)
.
–দেখো আনিকা,যা হবার হয়ে গেছে,আসলে তোমার কোনো দোষ নেই৷সব দোষ আমার কপালের৷এটা নিয়ে মন খারাপ করো না৷বাসায় যাও৷গিয়ে রেষ্ট নাও
.
–বাসায় যাবো?
.
–হূম৷বাসায় গিয়ে তোমার আম্মুর সাথে সময় কাটাও৷এতে ওনার অনেক ভাল লাগবে৷
.
–না,আমি তোমাকে ছেড়ে যাবোনা৷আর মা অনেক ভালো আছে,
.
–হুম৷খুব ভালো৷তবে আমার কাছে তোমার থাকার দরকার নেই৷আমি একাই ভালো থাকব৷
.
–একা ভালো থাকবে মানে?ডাক্তার কি বলছে শুনছো?
.
–হুম৷তবে আমার পাশে তোমার থাকার দরকার নেই৷বেঁচে তো আছি,মরে তো আর যাই নি?
.
–প্লীজ আবিদ,এভাবে বলো না,কষ্ট লাগে,,
.
–কষ্ট?কষ্ট লাগবে কেন?আমি তোমার কে?যে তোমার কষ্ট লাগবে?
.
–আবিদ,তুমি আমার স্বামি৷আর তোমার সব কষ্টের জন্য আমার কষ্ট তো লাগবেই.,..
.
–এই আনিকা কি বললে এটা?স্বামি?????
আমি কারও স্বামি টামি না৷আর হ্যা,আমার কাছে না এসে,তোমার ভালোবাসার মানুষের সাথে সুখে সংসার করো(খুব কষ্ট লাগছিল,কথাগুলো বলতে)
.
–প্লিজ আবিদ,এভাবে বলো না,আসলে তুমি যেন,আমার মত একটা খারাপ মেয়ের সাথে লাইফে না জড়াও,সেজন্য সেদিন মিথ্যা কথা বলেছিলাম৷
.
–খূব ভালো করছো৷এখন তুমি আসতে পারো(মনের ভিতর চাপা কষ্ট রেখে)
.
–প্লীজ,আবিদ এমন করো না৷আর আমার কিই বা করার ছিল?একটা মেয়ের অনেক কষ্টের সঞ্চিত সম্পদ হলো,তার ইজ্জত,যেটা প্রত্যেকটা মেয়ে অনেক কষ্টে আগলে রাখে,আর তার স্বামির হাতে সেটা তূলে দেয়,আর আমার কাছে কিই বা ছিল?যেটা তোমাকে দিবো?আমি তো তোমার হক অক্ষত অবস্থায় রাখতে পারিনি৷আমি চাইনি তোমাকে ঠকাতে৷আমিতো একটা পতিতা৷আর পতিতাদের তো সংসার করা মানায় না৷যার কারনেই এগূলো বলেছিলাম৷
আবিদ আমাকে তুমি মাফ না ই করো,মেনে নাই নাও,তবুও তোমার এই সময়টাতে তোমার পায়ের নিচে আমাকে একটু ঠাই দাও,
.
বলেই মেয়েটা অনেক কান্না করতে করতে পায়ে পড়ে গেল৷আর অনেক ফুপাতে ফুপাতে কান্না করতে লাগল৷
পূরো শরিরটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে৷শোয়া থেকে তখনও উঠতে পারিনি৷আর আনিকার এমন কীর্তি দেখে ,আমার ঝাপসা চোখ গুলো আরও বেশিই ঝাপসা হয়ে গেল৷
.
চাইলেই আনিকাকে আজ অনেক কিছু বলতে পারতাম৷কারন তার একটা মিথ্যা কথার জন্যই আমার আজ এই অবস্থা৷সেদিন রাতে এত ড্রিংক না করলে ,হয়ত আজ এমন হতো না৷
কিন্তু আনিকাকে কিছুই বলতে পারলাম না৷কারন ভালোবাসার টান যে এতটা ভয়াবহ,যেটা সত্যিকারের প্রেমিক ছাড়া আর কেউ অনুভব করতে পারেনা৷
.
–আনিকা পা ছেড়ে দাও,আসলে কি বলব বুঝতেই পারছিনা৷সেদিন তুমি তোমার অবস্থানের কথা চিন্তা করে,আমার কাছ থেকে দুরে সরে গিয়েছিলে৷আজ যদি আমি আমার এই করুন অবস্থার কথা চিন্তা করে,তোমাকে আমার জীবনে আর নাই জড়াই?
.
কথাটা বলতেই আনিকা চিৎকার দিয়ে কেদে উঠল৷
.
–প্লিজ আবিদ,এমনটা করো না৷দরকার পড়লে তোমার যত প্রকার শাস্তি আছে,সব আমাকে দাও!তারপরও এমন করো না৷আর তুমি হয়ত জানোনা,তোমার বুকে মাথা না রাখলে,এখন আর ঘূমই আসেনা৷খূব কষ্ট হয়,বুক ফেটে কান্না আসে,অসহ্য মরন যন্ত্রনা লাগে,এই গূলোর একটাই কারন আমিও যে তোমায় ভালোবাসি.কিন্তু নিজে একটা পতিতা বলে,সেগূলো প্রকাশ করতে কখনই সাহস পাইনি৷প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না৷আমাকে না হয় তোমার এই দিনগূলোতে তোমার পাশে থাকার সুযোগ দাও,তুমি সুস্থ হলে,না হয়,আমাকে তাড়িয়ে দিও,কিন্তু প্লিজ আমাকে এখন তোমার পাশে থাকতে দাও.
.
বলেই আনিকা গলাকাটা মুরগীর মত ছটফট করতে লাগল৷আর কান্নার পরিমান আরও বাড়িয়ে দিল৷
.
কি করব বুঝতে পারছিনা৷আমার এই অবস্থা দেখে,যে মেয়ে আমার পাশে থাকতে চাচ্ছে,সে মেয়ে নিঃসন্দেহে আমাকে ভালোবাসে৷
.
–আচ্ছা আনিকা,আমার শরীর ভালো হলে,তুমি চলে যাবে তো?
.
একটু নিরবতা পালন করে,বলে উঠল
.
–তুমি যদি,চাও,তুমি সুস্থ হলে,আমি চলে যাই,তাহলে তাই হবে
.
–এক্কেবারে থাপ্পর দিয়ে দাত ফেলে দিব,তাহলে আসারই দরকার নেই৷যদি সারাজীবনের জন্য আমার কাছে আসতে পারো,তাহলে এসো,আর যদি না পারো,ক্ষনিক সময়ের জন্য আসার দরকার নেই৷
.
–আমি রাজি,কখনই তোমাকে ছেড়ে যাবোনা৷জীবন থাকতে তোমাকে একা করব না
.
–হুম৷আর আমাকে অনেক ভালোবাসতে হবে কিন্তু
,
–নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসব তোমায়৷
.
–হুম
.
–একটা কথা বলব?
,
–হূম৷
.
–তোমার শরীরে খুব ব্যাথা করছে,তাই না?
.
–হুম
.
–যদি অনুমতি দাও,তাহলে তার অর্ধেক ভাগ আমি নিবো
.
–কিভাবে?
.
–আগে অনুমতি দাও
,
–হুম দিলাম
.
এরপর কি হলো বুঝতেই পারলাম না৷কারন কিছু বুঝে উঠার আগেই আনিকা আমার মাথার পাশে এসে বসল৷আর আমার মাথার পাশে বসেই,ওর ঠোট আর আমার ঠোট এক করে নিল৷
.
এই প্রথম আনিকা নিজ ইচ্ছায়,আমার সাথে এমন করায় খুব অবাক হয়ে গেলাম৷একটু পর ও নিজেকে ছাড়িয়ে বলল
.
–এখন কি কিছুটা কমছে
.
–কমেনি,উল্টো বেড়ে গেছে
,
–কিহহহহ
.
–মনের ভিতর খা খা শুরু হয়ে গেছে৷
,
–কেন
.
–যদি,আরও কয়েকটা পাওয়া যেত,তাহলে খুব ভালো হতো
.
–যাও দুষ্টু কোথাকার
.
–দাও না,
.

–প্লীজ,
.
তারপর আর কি?আনিকাকে নিয়ে চলে গেলাম ভালোবাসার রাজ্যে৷শরীরে ব্যাথা,অসুস্থতা যে কোথায় হারিয়ে গেল,সেটা অজানাই রয়ে গেল৷
,
,
.
চলবে…..

পতিতা মেয়ে part_7

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_7

ভালোবাসি রে তোকে,খুব ভালবাসি?কেন বুঝিস না তুই?তোকে যে অনেক বেশিই ভালবাসি,সব সময় এই বুকে আগলে রাখব তোকে,খুব ভালো বাসি,খুব বেশিই ভালোবাসি,”
.
আনিকাকে জড়িয়ে ধরেই আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখের নোনা জল ফেলছিলাম৷আর কথাগুলো বলছিলাম
.
ঠিক তখনই আনিকা বলে উঠল
,
–তুমি আমাকে যতই ভালোবাসো না কেন?আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারব না,তোমার জীবনে আমি নিজেকে চিরদিনের জন্য জড়াতে পারব না
.
কথাটা বলেই আনিকা নিজেকে ছাড়িয়ে নিল৷
তখন ঝাপসা চোখে ওর দিকে তাকালাম৷
খুব বেশিই আবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে,কিন্তু কিছুই বলতে পারছিনা৷আনিকাও আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে৷
চাঁদের আলোতে শুধু ওর চোখ দুটি চকচক করছে৷
আনিকাকে ঠিক তখনই বললাম
,
–কেন আনিকা?আমি কি তোমার যোগ্য না?
নাকি আমি খারাপ বলে,সেই যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছি?বিশ্বাস করো আনিকা আমি একদম ভালো হয়ে যাবো,কখনই অন্যায় কাজ করব না,
.
–দেখো আবিদ,তুমি অনেক ভালো ছেলে,সেটা আমি জানি,কিন্তু আমি তোমাকে আমার জীবনে মেনে নিতে পারব না…..
.
ঠিক তখনই বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছিল৷কেন আনিকা এই কথা বলছে?আমি কি তার যোগ্য না?নাকি অন্য কোনো কারন আছে?
.
–আচ্ছা আনিকা,আমাকে কি তোমার মেনে নিতে কোনো কারন আছে?নাকি তোমার লাইফে কেউ আছে?
.
–হুম আছে
.
কথাটা শুনেই বুকটা ফেটে গেল৷বুকের গহীনে ঝড়,শুরু হয়ে গেল৷
ভাবতেই অবাক লাগে!এই পৃথিবীতে আমি কত অসহায়.
.
–আনিকা ঠিক আছে,তাহলে আমি আর তোমাকে এই বিষয় নিয়ে কখনই আর জোড় করব না,
আসলে আমি বূঝতেই পারিনি,আমার কপালটা এত পোড়া,দেখই না,একটা মেয়েকে ভালোবেসে যখন সব মেয়েকেই ঘৃনা করতাম,ঠিক তখনই আবার তোমাকে ভালোবেসে ফেলি কিন্তু বুঝতেই পারিনি,আমার ভালোবাসা স্বার্থক না
.
–(অবাক চোখেই তাকিয়ে আছে)
.
–জানো আনিকা?ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলাম আমি,বাবা মা থাকতে ,তাদের কাছে যা চাইতাম তারা যেভাবেই হোক,সেটাই আমাকে এনে দিত,আর না দেয়া পর্যন্ত,অনেক জেদ ধরতাম৷বয়স যখন মাত্র ১২বছর ঠিক তখনই একদিন একটা এক্সিডেন্টে বাবা মা মারা যায়,
আর হারিয়ে যায় বাবা মা নামক ছায়াটা৷ সেদিন অনেক কান্না করেছিলাম৷এর পর থেকে কেউ কখনই আমার চাওয়া কোনো জিনিস আমাকে এনে দেয়নি৷
এরপর আমার চাচাও আমার সকল সম্পত্তি আত্মসাৎ করে ফেলে,রাস্তায় বের করে দিল আমাকে,হয়ে গেলাম রাস্তার ছেলে,আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম৷কাজ করে পড়াশোনা করতাম৷সারারাত কাজ করে দিনে স্কুলে যেতাম৷
আস্তে আস্তে যখন ভার্সিটি লাইফে চলে গেলাম,তখন ইভা নামের একটা মেয়েকে অনেক পছন্দ হয়,আর মেয়েটা অনেক বেশিই সুন্দর ছিল৷
আস্তে আস্তে ফ্রেন্ডশীপ আর তারপর রিলেশন৷
হঠাৎই একদিন দেখলাম ও আরেকটা ছেলের সাথে ঘুরছে৷আর আমি জিজ্ঞেস করার করনে ও বলেছিল আমার মত গরীব,অযোগ্য ছেলের সাথে নাকি ওর মানায় না,টাকাই ওর কাছে সব৷সেদিন ও আমাকে অনেক অপমান করে,নিজে অনেক সূন্দর বলে অনেক অহংকার করেছিল৷
সেদিন নিজেকে কোনোভাবেই ঠিক রাখতে পারিনি৷
টাকা কিভাবে আয় করতে পারি,সেটাই ভাবা শুরু করলাম,এরপরই ঘটনাক্রমে আমার চাচার কাছ থেকে আমি আমার সম্পত্তি আদায় করে নিলাম৷বাবার সম্পদ পেয়ে হয়ে গেলাম কোটিপতি৷
.
কোটিপতি হবার পরই সূন্দরি মেয়েদেরকে অনেক ঘৃনা করি,কারন ইভার সেই চরিত্রটা আমার সামনে ভেসে আছে৷
আর সব চাইতে মজার ঘটনা হলো,আমার লাইফে টাকার বিনিময়ে রাত কাটানো প্রথম মেয়েও ওই ইভাই৷পরে টাকার জন্য আমার সাথে রাত কাটায় সে৷
দিনে ভদ্রবেশধারী হলেও রাতে ওর মত খারাপ আর কেউ ছিল না৷
সেদিন থেকেই সুন্দরী মেয়েদেরকে হেট করতাম৷কারন তাদের সৌন্দয্যের ভিতর যে কতটা কালো থাকে,সেটা ইভাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না,
যাই হোক এর পর আর কোনো মেয়েকে কখনই ভালোবাসিনি,কারন তখন আমি নিজেই খারাপ জগতের বাসিন্দা,
.
এরপর তোমার সাথে পরিচয়৷আর তোমার সব কিছু জেনেও আবারও নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলি৷এরপরই তোমাকে খূব ভালোবেসেছি!বিশ্বাস করো আনিকা,তোমাকে খূব ভালোবাসি৷প্লীজ আমাকে একা করে দিও না,আর তুমি তো আমার বিয়ে করা বউ ও,তাই না?
.
বলেই চোখ দিয়ে পানি বের করতে লাগলাম৷কিন্তু সেটা হয়ত আনিকার কাছে কিছুই না৷ওর মনে আমার জন্য একটুও দয়া হলো না৷
ও তখনই বলে উঠল
,
–আবিদ!আমি তোমার সব কিছু বুঝতে পারছি,
কিন্তু তারপরও আমি তোমাকে মেনে নিতে পরব না,তবে দোয়া করি,তুমি যেন ভালো একটা মেয়েকে বউ করতে পারো,আর তুমি এখন অনেক ভালো একটা ছেলে,তোমাকে যেকেউ পছন্দ করবে৷আর আমার মত খারাপ একটা মেয়েকে নিয়ে বেশি কিছু ভেবো না
আর ভাবলে ভুল করবে,আর একটা কথা মনে রেখো,আমি তোমার দুমাসের জন্য বউ হয়েছি,সারাজীবনের জন্য না৷আর সেই দুমাস পার হতে আর মাত্র ৭টা দিন বাকি,এর পরই আমি চলে যাবো,
.
একটানা কথাগুলো বলেই আনিকা ছাদ থেকে চলে গেল৷আর রেখে গেল আমাকে৷
নিজেকে তখন অনেক বড় অসহায় লাগছিল৷
মনে হচ্ছে এই পৃথিবীতে আমার চেয়ে বড় অসহায় আর কেউ নেই৷
.
চোখদুটো বার বারই ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল৷
ভাবতেই অবাক লাগে,আমার জীবনে ভালোবাসা বলতে কোনো জিনিস নেই৷যাকে যাকে ভালোবাসলাম৷তারাই দূরে ঠেলে দিল আমায়৷
.
অনেকক্ষন ছাদে একা একা দাড়িয়ে চোখের জল ফেলেছিলাম৷
চোখ দূটো অনেক ফুলে গেছে মনে হচ্ছে৷অনেক ঘূম পাচ্ছে৷তাই রুমে চলে গেলাম৷
গিয়ে দেখলাম আনিকা নিজের মত করে ঘুমিয়ে আছে৷আনিকাকে আর জাগালাম না৷
চুপ করে খাটে শুতে গেলাম কিন্তু শুয়ে থাকতে পারলাম না৷আজ কেন জানি ওর সাথে শুয়ে থাকতে খূব বেশিই কষ্ট হচ্ছে৷বার বার মনে হচ্ছে আর তো মাত্র কয়েকটা দিন৷এর পর তো আমাকে একাই থাকতে হবে৷
খাট থেকে নেমে পড়লাম৷তারপর সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম৷কখন ঘুমিয়ে পড়ছি সেটা হয়ত মনে নেই৷
তবে যখন ঘুমটা ভেঙে গেছে তখন ঠিক ঘড়িতে রাত ৩টা বেজে ৩৯মিনিট
.
একদমই ঘূম আসছে না৷ঘুমহীনভাবেই রাতটা কেটে গেল৷
সকাল বেলা আনিকাকে হসপিটালে রেখে অফিসে চলে গেলাম৷
অফিস থেকে ফিরে আবার হসপিটালে গেলাম কারন আজকে আনিকার আম্মুকে বাসায় নেওয়ার কথা৷
হসপিটালে গিয়ে ওদেরকে পেলাম না৷এর আগেই ওরা ওখান থেকে বের হয়ে গেছে৷
.
আনিকাকে ফোন দিলাম
.
–আনিকা কোথায় আছো?
.
–বাসায়,কেন?(ওপাশ)
.
–না,তেমন কিছুই না,তোমার আম্মুকে বাসায় নিয়ৈ গেছো?
.
–হুম
.
–হুম খুব ভালো,তবে আমাকে কি সাথে নিয়ে গেলে বা আমাকে বললে কি আমি সাথে থাকতাম না?
,
–আসলে বুঝতে পারিনি সরি
.
–হুম৷আচ্ছা আমি বাসায় আসতেছি
.
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম৷
.
বাসায় চলে গেলাম৷ওদের সাথে অনেক মজা করলাম৷
এখন ওর থেকে দুরত্ব বজায় রেখেই চলতে হয়৷কারন ওর আম্মু জানেনা আমরা বিয়ে করেছি৷ওনি জানে ও আর আমি বন্ধু৷
ওর আম্মু,আমি আর আনিকা তিনজনে মিলে খুব আনন্দেই দিন কাটাচ্ছিলাম৷সবার মূখেই হাসি ছিল৷আনিকার আম্মু মন থেকে আমাকে অনেক পছন্দ করত৷আর ওনি আমাকে কয়েকবার বলেছিল,আনিকা আমি বিয়ে করে সবসময়ের জন্য রেখে দিতে৷
কিন্তু বারবারই তখন আনিকা অমত করে৷
.
হঠাৎই আনিকা আমাকে বলল
.
–আবিদ কিছু কথা বলার ছিল
.
–হুম বলো আনিকা
.
–একটু ছাদে আসো
.
–হুম
.
আনিকা তখন ছাদে চলে গেল৷
আমিও তার পিছু পিছু গুটিগুটি পা বাড়াচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম,আনিকা কি বলতে চাচ্ছে আমায়?সে চলে যাবে না তো?
ভাবতেই কেমন কষ্ট লাগে৷কিন্তূ কিছু কষ্ট দৃষ্টির আড়ালেই থাকে৷
ছাদে গেলাম৷গিয়েই বললাম
.
–বলো আনিকা কি বলতে চাও?
,
–আবিদ,তুমি আমার অনেক উপকার করেছো,আমার মায়ের জীবন বাঁচাতেও অনেক সাহায্য করেছো৷আসলে তোমার উপকারের ঋন হয়ত কখনই শেষ করতে পারব না
.
–হঠাৎ এগুলো বলছো যে
,
–আসলে আজকের দিন গড়িয়ে রাত পার হলেই তো ,তোমার দুমাস শেষ৷আর তারপরই তো আমি চলে যাবো,আর কাল সকালেই আমি মাকে নিয়ে চলে যাবো(অন্যদিকে তাকিয়ে)
.
–(অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি)
,
–কি হলো কীছু বলছো না যে?
.
–আসলে আমার কিছুই বলার নেই আনিকা,তবে দিনগুলি যে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেছে,সেটা খেয়ালই করিনি৷তবে তোমাকে আমি আর আটকাবো না৷যদি কখনও মনে হয় আমার কাছে তূমি ভালো থাকবে,তাহলে চলে এসো,আমার মনের দরজা তোমার জন্য সব সময় খোলা থাকবে৷
.
–ধন্যবাদ
.
–তবে আমার এক অনুরোধ রাখবে আনিকা?
.
–কি অনুরোধ?
.
–কাল যখন চলে যাবে,তোমাদেরকে আমি ড্রাইব করে,তোমার বাসায় পৌছে দিব৷
তবে সমস্যা নাই,যদি প্রবলেম থাকে,তাহলে যাবো না
,
তখন আনিকা আমার দিকে কেমন অবাক চোখে তাকিয়ে রইল৷আর মাথা নাড়ালো৷
.
সেদিন রাতে আনিকা সহ সবার সাথে অনেক বেশিই মজা করেছিলাম৷তারপর আনিকা ওর আম্মুর সাথেই ঘুমাতে চলে গেল৷আমিও চলে গেলাম ছাদে৷
সারারাত না ঘূমিয়ে একটার পর একটা সিগারেট টানতে লাগলাম৷মনের কষ্টগুলোকে সিগারেটের ধোয়ার সাথে মিশিয়ে দিচ্ছিলাম৷খুব কষ্ট লাগছিল,কারন আনিকাকে যে এতটা ভালোবেসে ফেলব বুঝতেই পারিনি৷আর ওর কি দোষ?ও নিজেও তো অন্য আরেকজনকে ভালোবাসে৷আমি যেমন আনিকাকে কাছে পেতে চাই ঠিক তেমন ও নিজেও তো ওর ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেতে চায়৷
এই কথাগুলো বলেই নিজেকে বার বার শান্তনা দিচ্ছিলাম৷
হঠাৎই ফজরের আযান দিচ্ছে৷আযান শুনে ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে গেলাম৷
সকালে খাওয়া দাওয়া করে ওদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম৷খুব দ্রুত গাড়িটা চলছে৷
আর খূব দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে আমার আনিকা৷
বিকেলের দিকে ওদের বাসায় পৌছে গেলাম৷ওদেরকে নামিয়ে দিয়েই
.
–আনিকা,আমি তাহলে চলে যাচ্ছি,ভালো থেকো,আর মায়ের প্রতি যত্ন নিও
.
— সে কি বাবা,তুমি মাত্র আমাদেরকে বাসায় পৌছে দিছো৷এখন তূমি নিজেই অনেক ক্লান্ত,একটু রেস্ট নিয়ে,খেয়ে দেয়ে তারপর যাও(আনিকার মা)
.
–না গো মা,সব জায়গায় থাকার আর খাওয়ার অধিকার হয়ত আল্লাহ সবার কপালে লিখেনি৷তবে আপনি বলেছেন এতেই আমি খুশি৷আনিকা আমি চলে যাচ্ছি,ভালো থেকো
.
–একটু থেকে গেলে কি হয়না?(নরম সুরেই আনিকা)
.
–না আনিকা,তুমি তো জানই আজকে আমার কাজ শেষ,আজ আমি অপ্রয়োজনীয়৷যাই হোক,ভালো থেকো আনিকা,অনেক সুখে থেকো
.
–হুম,তুমিও সুখে থেকো,আর ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করে,সুখের সংসার করো
.
–হা হা হা,হুম,করতে চেয়েছিলাম তো,কিন্তু সেটা হলো না৷আর এখন নতুন করে আমার কোনো ইচ্ছা নেই৷
ভালো থেকো গো পাগলি৷খুভ ভালো থেকো
.
বলেই ওখান থেকে চলে আসলাম৷আনিকার মা কয়েকবার আমার দিকে কেমন রহস্যজনকভাবে তাকিয়েছিল৷হয়ত কিছু বুঝবে হয়তবা না
,
বুকের কষ্টগুলোকে চাপা দিয়ে ওদের কাছ থেকে হাসিমুখে বিদায় নিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলাম৷গ্রামের আকাবাকা রাস্তা,তার ওপর চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে আসছিল বারবার,গতকাল রাতে না ঘুমানোর কারনে মাথাটাও কেমন ভনভন করে ঘুরাচ্ছিল৷
.
গাড়ির স্পীডটা আরও বাড়িয়ে দিলাম৷যেভাবেই হোক আমাকে এই মায়া ত্যাগ করে অনেক দূরে চলে যেতে হবে৷
গাড়ি আকাবাকা রাস্তা দিয়েই চালতে লাগল হঠাৎই মাথাটা কেমন ভন ভন করে ঘুরে গেল,আর চোখ দুটি বন্ধ হয়ে গেল৷সবকিছুই অন্ধকার মনে হচ্ছে৷
এরপর আর কিছু মনে নেই
.
.
.
.
.
চলবে……..

পতিতা মেয়ে part_6

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_6

আনিকার হাত ধরে বৈশাখি মেলাতে খুব খুশি মনেই হাটতেছিলাম৷ঠিক তখনই
একটা ছোট বাচ্ছা এসে আনিকার কাপড়ের আচল ধরে টানতে লাগল৷বাচ্ছাটা একদমই খালি গাঁয়ে আর পরনে শুধু একটা শর্ট প্যান্ট তাও সেটা অনেক নোংরা আর ছেড়া৷বয়স আনুমানিক ৮-৯বছর৷এই টূকু একটা বাচ্ছার এমন অবস্থা দেখলে কার না বুকটা কেপে উঠবে?ওই বাচ্ছাটা আনিকার কাপড় ধরেই বলতে লাগল
.
–আফা,দুইডা টেহা দেন না?খুব খিধা লাগজে,
দেন না আফা দুইডা টেহা
.
–(চুপ করেই বাচ্চাটার দিকে চেয়ে আছে)
.
–আফা,দেন না দুইডা টেহা,খুব খিধা লাগজে
.
–তোমার নাম কি বাবুমনি?(আনিকা)
.
–সূচনা
.
–তোমার বাবা মা কই?
.
–বাপ মা ,নাইকা,
.
–তাহলে থাকো কই?
.
–রাস্তার সাইডেই ,
.
–রাতে থাকো কই?
.
–স্টেশনের রাস্তার মোড়ে,দেন না দুইডা টেহা,অনেক খিধা লাগজে
,
মেয়েটার সাথে কথা বলছিল আর আনিকার চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে,আর অপর দিকে আমি অবাক হয়েই তাকিয়ে রইলাম৷মেয়েটার কথাগুলো শুনেই বুকটা কেপে উঠল৷বাবা মা না থাকলে জীবন যে কতটা কষ্টের হয় সেটা আমি বুঝি,কারন আমারও যে বাবা মা নেই৷
পান্জাবীর হাতা দিয়েই চোখটা মুছে ফেললাম৷
মেয়েটার সাথে কথা বলেই আনিকা আমার দিকে তাকিয়ে রইল৷
.
আমি বুঝতে পারলাম আনিকা ছোট মেয়েটাকে সাহায্য করতে চাচ্ছে কিন্তু ওর কাছে তো কোনো টাকা নেই,কারন আসার পথে ও টাকা নিয়ে আসেনি ,যার কারনে কিছুই দিতে পারছেনা৷
.
তখনই আমি মাটিতে হাটু গেড়ে
.
–সুচনা?(আমি)
.
–সাহেব,দুইডা টেহা দেন(আমার দিকে হাত পেতে)
.
–আমার সাথে যাবে?
.
–কই নিয়া যাইবেন আমারে?
.
–তোমাকে ভালো একটা স্কূলে নিয়ে যাবো,সেখানে তুমী বন্ধুদের সাথে গল্প করবা,লেখাপড়া করবা,খেলাধুলা করবা,যাবে আমার সাথে?
.
–হ যামু কিন্তু খাইতে দিবেন তো?আর কি কি কাম করতে হইব?আমি কিন্তু বেশি কাম পারিনা
.
মেয়েটার কথাটা শুনে একদমই অবাক হয়ে গেলাম৷এই টুকু একটা মেয়ে,কি বলে এসব?
.
–তোমার কাজ করতে হবে না,চলো আমার সাথে,আর তোমার আরও বন্ধু আছে?
.
–হ আছে
.
–তাদের কাছে আমাকে নিয়ে যাও
,
–হ আয়েন আমার লগে
.
তারপরই মেয়েটাকে ওই অবস্থাতেই ওর গালে একটা চুমু দিয়ে,কোলে তুলে নিলাম৷আর মেয়েটাকে কোলে নিয়েই তাদের পাড়াতে চলে গেলাম৷আনিকাও আমার সাথেই,আনিকা শুধূ অবাক দৃষ্টিতে আমাকে দেখছিল৷
.
যাই হোক মেয়েটাকে নিয়ে একটা চিপা গলিতে ডুকতেই দেখলাম আরও অনেকগুলো শিশু৷
তাদেরকে একজন মুরুব্বি বয়সের লোক ভিক্ষার গান শিখাচ্ছে৷দেখেই রাগ উঠে গেল৷আর তখনই
.
–এই বুড়ো,এইগুলো কি শিখাচ্ছো এগুলো,(রেগে)
.
–আপনার সমস্যা কি?যা খুশি তাই শিখামু,
.
–আমার অনেক সমস্যা,বাচ্ছাদের দিয়ে এগুলো করানো ঠিক না
.
–কোনটা ঠীক আর কোনটা বেঠিক আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে নাকি?ওদের খাওন তো আর আপনি দেন না
.
–আজ থেকে ওদের খাবার আমি দিব
.
–তাহলে আর দেড়ি করছেন কেন?এই হতচ্ছাড়াগুলো কে এখনি নিয়ে যান
.
–হুম নিয়ে যাবোই কিন্তূ ওদের বাবা মা কই
.

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–হুহহহ,বাবা মা?এগুলো সব পতিতাদের পোলা মাইয়া,ওদের নষ্টামির ডাস্টবিনের ফসল,
.
–আচ্ছা আমাকে ওদের কে নিয়ে যেতে দিন
,
–বললেই তো হবে না,এতদিন ধরে এগুলোরে বড় করছি,এই টেকা কে দিব?টাকা দিলে নিতে পারবেন নয়ত আমি ওগুলো শিখাবোই
.
কথাগুলো শুনার পর আনিকাও কেমন চূপসে গেল৷ওদের জন্য মেয়েটার কত মায়া?ঠিক তখনই বললাম
.
–কত টাকা লাগবে?
.
–৫লক্ষ টাকা দিলেই ওদের সবাইকে যেতে দিব
.
তারপরই আনিকাকে কিছুক্ষনের জন্য থাকতে বলে ওখান থেকে চলে আসলাম৷আর প্রায় ৩০মিনিট পরে ওখানে টাকা নিয়ে ওখানে গেলাম৷আর ওদেরকে নিয়ে আসলাম৷
তারপর সবাইকে একটা এতিম খানায় নীয়ে যেতেই কয়েকশত ছোট শিশু আমার দিকে দৌড়ে আসল৷সবাই আমাকে আব্বু আব্বু বলে ডাকতে লাগল৷
আনিকা তখন আমার দিকে অবাক করা দৃষ্টিতেই তাকিয়ে আছে৷
ঠিক তখনই ওখানকার হুজুর এসেই বলল
.
–স্যার আল্লাহ আপনার কল্যান করুক৷আজকে নতূন কাউকে নিয়ে এসেছেন?
.
–হ্যা চাচা,আজকে এই শিশূগুলোকে নীয়ে এসেছি,এদের দায়িত্বও কিন্তু তোমার(আমি)
.
–হুম,আপনি সাথে থাকলে আমিও রাজি আছি
,
–চাচা ওদেরকে নতূন পোশাক পরাও,
আর ভালোভাবে গোছল করিয়ে দিও
আমরা আজ সারাদিন একসাথে অনেক মজা করব৷
আনিকা তুমি আমার সাথে থাকবে তো?(আনিকার দিকে তাকিয়ে)
.
বলতে না বলতেই মেয়েটার চোখ দিয়ে অঝর ধারায় বৃষ্টি ঝরতে শুরু করল৷আর ওর মুখ দিয়ে ও এমনভাবে হাসতে লাগল যেন ও অনেক অনেক খুশি
,
–কি হলো আনিকা থাকবে তো?
.
–হ্যা আবিদ আমি থাকবো,আর আমি সবার সাথে আজ অনেক মজা করব,
.
ঠিক তখনই সব বাচ্ছাদের ডাক দিয়ে বললাম
,
–বাবুরা,এটা তোমাদের নতুন আম্মু৷ওকে সবাই আম্মূ বলেই ডাকবা
.
বলতে না বলতেই সব শিশূরা দৌড়ে আনিকার কোলের দিকে দৌড়ে গেল৷আর আনিকাও ওদের জন্য মাটিতে বসে দুহাত বাড়িয়ে দিল৷
.
বাচ্ছাগুলোকে একদম নিজের সাথে জড়িয়ে ধরেই অনেকক্ষন কাটিয়ে দিল৷
.
এই প্রথম আনিকাকে এত খুশি দেখে নিজের মনে এতটাই খুশি লাগছিল যেটা আগে কখনই আমার লাগে নি৷
.
মেয়েটাও বাচ্ছাদের সাথে একদম বাচ্ছা হয়েই মিশে গেল৷
.
বিকেল বেলা ওখানে ভালো খাবারের আয়োজন করা হলো আর সব বাচ্ছাদের নতুন পোশাক কিনে দিলাম৷
আনিকা নিজ হাতে সবাইকে খাইয়ে দিচ্ছে৷
আহ কত ভালো লাগছে, ঠিক তখনই বাচ্ছাদের খাওয়ানোর সময় ওর সামনে বসে পড়লাম৷আর
হা করেই বললাম
,
–ওদেরকে খাইয়ে দিবে আর আমাকে কি দিবেনা?
,
আনিকা তখনই একদম থ হয়ে গেল
.
–কি গো দিবে না খাইয়ে?আমার ও তো খুব খিদে পাইছে
.
–তোমাকে তো…..
.
–এই দেখো,এমন করছো কেন গো?দাও না গো একটু খাইয়ে?খুব খিদা লাগছে তো,বলেই হা করে রইলাম
.
তারপরই আনিকা আমার মূখের দিকে হাতে খাবার নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল৷আমি খেতে যাবো ঠিক তখনই খাবারটা নিচে পড়ে গেল৷তখন ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম ও অন্যদিকে তাকিয়ে আমাকে খেতে দিচ্ছিলো৷
.
খূবই খারাপ লাগলছিল,একটূ খেতে চাইলাম তাও সেটা নিজ ইচ্ছাতে দিল না৷হয়ত আমার জোড় করার করনেই অনিচ্ছায় দিতে চেয়েছিল৷
.
চূপ করে উঠে গেলাম৷আমাকে উঠে যেতে দেখেই আনিকা কেমন জানি হয়ে গেল৷আমি ওখান থেকে অন্য একটা কর্নারে গিয়ে দাড়িয়ে রইলাম৷আর ভাবতে লাগলাম ও কি আমাকে কখনই বুঝবে না?
.
ঠিক তখণই কেউ আমার হাতে ধরে টান দিল৷তাকাতেই দেখলাম আনিকা৷
আনিকাকে দেখে খূব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম৷কারন এই প্রথম আনিকা নিজে আমার হাত ধরেছে৷
আমি অবাক চোখেই ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম
ঠিক তখনই ও বলল
,
–কি হলো,চলে আসলে কেন?খাবে না?
.
–না
.
–সরি,আসলে কখনও কোনো ছেলেকে এভাবে খাইয়ে দেইনি তো,তাই নিজের কাছে অনেক সংকোচ বোধ লাগছিল
.
–আপনাকে সরি বলতে হবে না,আসলে বুঝতেই পারিনি,সব কিছু সবার কপালে সয় না,আর খারাপ মানুষদের কপালে তো,আরও সয় না,ভেবে নিব আমার কপালেও তাই(আনিকাকে হঠাৎই আপনি করে বললাম)
.
–সরি,চলো খেতে যাবে,
.
–না যাবো না,আর আপনি বাচ্ছাগুলোকে নিয়ে খেতে যান,ওরা খাবে এখন
.
–তুমি খাবেনা?শুধু বাচ্ছাদের কথাই কি ভাববে?
,
–হুম!আমি না খেলেও সমস্যা নেই,কিন্তু ওরা না খেয়ে থাকলে,অনেক সমস্যা
.
–বাচ্ছাগুলোকে অনেক ভালোবাসো বুঝি
,
–হুম নিজের জীবনের থেকেও বেশি,যেদিন আমার জীবন থেকে ইভা নামক মেয়েটা হারিয়ে গেল,সেদিন থেকেই ওরা আমার সব কিছু
.
–এই ইভা আবার কে?
.
–বাদ দিন,সময় হলেই বলব,এখন ওদেরকে খেতে দিন
,
–হুম,সাথে যে তোমাকেও যেতে হবে
.
ঠিক তখনই বাচ্ছাগুলো আমাকে জড়িয়ে ধরছে আর বলছে
.
–চলো না আব্বু,তুমি আমাদের সাথে খাবে,চলো না
.
তখন সবার কথায় খেতে গেলাম৷
তারপরই আনিকা আমার সাথে খূব ভালোভাবে কথা বলতে লাগল৷নিজ হাতে খাইয়ে দিল৷
খুব খুব বেশিই ভাল লাগছিল৷
.
সারাদিন অনেক মজা আর আনন্দের মাঝেই বৈশাখ পালন করে দুজনে বাসায় চলে আসলাম৷

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

রাতে একা একা ছাদে বসে তারাদের সাথে উকি মারছিলাম৷ঠিক তখনই আনিকা এসে হাজীর
,
–আবিদ ,জানো আজকে আমি খুব খুশি,আজকের মত কোনোদিন এত খুশি আমি হইনি৷সত্যিই তুমি অনেক ভালো
.
–আমি আবার কি করলাম?(অবাক হয়েই)
.
–এই যে এতিম বাচ্ছাদের এত ভালোবাসো আর তারাও তোমাকে কত ভালোবাসে
,
–হুম
.
–জানো আবিদ,তোমাকে আমি স্যুলুট জানাই
.
–কেন
.
–কারন তোমার ওখানে অনেক ছেলে বাচ্ছার পাশাপাশি অনেক মেয়ে বাচ্ছাও আছে,যাদের কোনো বাবা মা নেই
.
–হুম ,তো?
.
–জানো,এই মেয়েগুলোই একদিন সমাজের নির্মমতায় একদিন পতিতা হয়ে যাবে
.
–মানে?কি উল্টা পাল্টা বলছো এগূলো?(একটূ রেগেই)
.
–হুম আবিদ!যখন মেয়েগূলো আস্তে আস্তে এভাবে রাস্তায় বড় হবে,তখন তারা হয়ে যাবে রাস্তার মেয়ে!
তাদেরকে কেউ বিয়ে করবে না,অভাবের তাড়নায়,খাদের জালায় তারা একদিন এই পতিতা পেশাই বেছে নিত,আর সমাজে তখন আরও পতিতা বেড়ে যেত
.
কথাটা বলেই মেয়েটা কান্না করে দিল৷বুঝতেই পারলাম না,হঠাৎ আনিকা এগূলো কেন বলছে৷আর কেনই বা এমন কান্না করে দিল
.
ঠিক কিছুক্ষন পরই মাথায় আসতে লাগল,ও তো মিথ্যে বলেনি,মেয়েগূলো যখন একটু বড় হয়ে যেত,রাস্তায় থাকার কারনে মানুষরুপি অনেক শেয়াল কুকুরের থাবার নিচে নিজেদের বলি দিতে হত৷আর একটা সময় ঠিকই খারাপ পথটাই বেছে নিত৷
.
কথাগুলো যদিও আগে কখনই ভাবিনি,কিন্তু আনিকার এমন আচরন দেখেই মনের ভিতর ভাবনার সঞ্চার হতে লাগল৷
.
–আবিদ,তুমি না ওদেরকে কখনই খারাপ হতে দিও না,খারাপ পথটা অনেক কষ্টের,একবার খারাপ হয়ে গেলে,নিজেকে আর ভালো করা যায় না
.
–এই তুমি এই গুলো কি বলছো
,
–হুম,সত্যিই বলছি,
পতিতা শব্দটাতে মাত্র ৩টা অক্ষর কিন্তু এর ভয়াবহতা যে কতটা খারাপ,সেটা আমার মত পতিতারাই জানে,,,
.
—ঠাসসস ঠাসসসস,ওই কি বললি তুই?তোকে বলছি না,কখনই নিজেকে পতিতা বলবি না,সব কিছু ভুলে যেতে,ভুলে গিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে
আর একবার যদি নিজেকে পতিতা বলিস,তাহলে …….(রেগে ওকে মারতেই চোখ দিয়ে পানি বের হতে লাগল)
.
–মেরে ফেলবে তাই তো
.
–এই তুই এগুলো কি বলছিস?তোকে আমি মেরে ফেলব?নারে তোকে কখনই মারব না রে৷নিজে মরে গেলেও তোকে মরতে দিব না
,
বলেই কান্না করতে লাগলাম,আর তখনই নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আনিকাকে জড়িয়ে ধরলাম৷
.
আমিও কাদছি আনিকাও কাদছে
.
আর সেই কাদার মাঝখান থেকে,আমার মুখ দিয়ে একটা কথাই বের হচ্ছিলো
.
“”ভালোবাসি রে তোকে,খুব ভালবাসি?কেন বুঝিস না তুই?তোকে যে অনেক বেশিই ভালবাসি,সব সময় এই বুকে আগলে রাখব তোকে,খুব ভালো বাসি,খুবই ভালোবাসি,””””””

#_____________চলবে________________

পতিতা মেয়ে part_5

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_5

বাইরে থেকে একটা কাশির আওয়াজ দিয়ে ভিতরে ডুকলাম৷আমাকে দেখেই আনিকা তাড়াতাড়ি করে নিজের চোখের পানি মুছে ফেলল৷
আমি আর বেশি কিছু বললাম না৷ভিতরে গিয়েই অফিসে কাজ আছে বলেই বের হয়ে গেলাম৷
তারপর বাসায় এসে চুপ করে শুয়ে রইলাম৷
ভাবতে লাগলাম কি করব?
ওর সাথে প্রায় দুটা মাস কেটে গেল,১০টা দিন মাত্র বাকি,এতগুলো দিনেও কি ও আমাকে একটুও বুঝতে পারল না?
.
ভাবতে ভাবতেই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়লাম৷
হঠাৎই কারও ডাকে আমার ঘুম ভাঙল৷
চোখ খুলতেই দেখলাম আনিকা৷আমার দিকে কেমন অবাক করা দৃষ্টিতেই তাকিয়ে রইল মেয়েটা৷
আস্তে আস্তে খাটের একটা কর্নারে এসে বলল
.
–তুমি ঠিক আছো তো?তোমার কিছু হয়নি তো?কোনো সমস্যা?আর কখন বাসায় আসছো(এক সাথেই কথাগুলো জিজ্ঞাসা করল)
হয়ত আমি বাসায় এসে শুয়ে আছি আর ওকে জানায়নি বলে প্রশ্নগূলো করছে৷
–এই তো,হসপিটাল থেকে সোজা বাসায় চলে আসছি(ওপরের দিকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
.
—অফিসে যাও নি?
.
–না
.
–কেন
.
–এমনিতেই
.
–হুম ভালো,কিন্তু আমাকে তো একটু বলতে…..
.
বলতে গিয়েও আনিকা আর কিছু বললনা,কথাটা অপূর্নই রেখে দিল৷
.
আনিকার প্রতি খুব রাগ হচ্ছিলো,ও কি একটু বুঝতে পারছে না তাকে আমি কতটা ভালোবাসি?
ও কি আমাকে একটুও বুঝবেনা?নাকি বুঝতেই চায়না?
.
ওর প্রতি বুক ভরা অভিমান নিয়ে চূপ করেই শুয়ে রইলাম৷
.
–তুমি খাবে না?না খেয়েই শুয়ে থাকবা?(আনিকা)
.
–তোমার খেতে ইচ্ছে করলে তুমি খেয়ে তারপর ঘুমিয়ে পরো,আমাকে আর ডাকবেনা.(আমি)
.
–তুমি খাবেনা?আর আমি ডাকব না কেন?
.
–ওই ডাকবে না তো,ডাকবে না,আর একটা যদি ডাক দাও ,তাহলে………..
.
–তোমাকে আর বলতে হবে না,আর আমি এভাবে বলার কারনে লজ্জিত,আসলে নিজের অবস্থানের কথাটা ভুলেই গেছি,আর তো মাত্র ১০দিন৷তারপর ই তো চলে যাবো,
.
ওর চলে যাবার কথাটা শুনে বুক ফেটে কান্না আসছিলো৷
খূব কষ্ট লাগছিল,মনে মনে বলছিলাম
,,হায়রে আনিকা,একটু রাগ দেখালাম বলে ,খুব সহজেই উল্টা পাল্টা বুঝে নিলে,কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি বলে যে ,তোমার পাশে থাকতে চাচ্ছি,সেটা তুমি হয়ত কখনই আর বুঝবে না,,,,,,,,বলেই
বুক ফাটা ,একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম৷
.
এরপরও ও কয়েকবার ডেকেছিল খেতে কিন্তু ওর প্রতি একটু রাগ নিয়ে আবার নিষেধ করার কারনে আর ডাকেনি৷
.
চুপ চাপ শুয়েই রইলাম৷বুকটা খা খা করছিল,
ওকে বুকের সাথে মিশিয়ে,খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলতে ইচ্ছে করছিল,,আনিকা খুব ভালোবাসি তোমায়,খুব বেশিই ভালোবাসি,আমাকে না কখনও ছেড়ে যাবার কথা বলো না,
.
কিন্তু সেদিন মনের ভেতরের আর্তনাদ গুলো মুখ ফেটে বের করতে পারলাম না৷
.
কিছুক্ষন পর আনিকাও আমার পাশেই শুয়ে পড়ল৷প্রতিদিন পাগলিটাকে বুকে নিয়ে ঘুমাই৷আমার বুকটা ওর জন্য বালিশ বানিয়ে দেই৷কিন্তু আজ অভিমান করে ওকে আর আমার বুকে টেনে নিলাম না৷
ভাবলাম ও হয়ত আমাকে বলবে,
“”””আবিদ, আমি না তোমার ওই বুকে অনেক শান্তি পাই,আমাকে সব সময় তোমার ওই বুকের মধ্যেই রাখবা,আর আজকে আমাকে রাগ করে কেন বালিশে শুয়ে থাকতো বলছো?আমি কিন্তু তোমার বুকেই ঘূমাবো”””
.
কিন্তু আফসোস,আনিকা এগুলো বলবে তো দূরে থাক,ওর কল্পনায়ও এগূলো আসে না৷
আর হয়ত আমার সাথে শর্তের কারনেই যতটূকু থাকছে৷নয়ত ও হয়ত আমার কাছে কখনই থাকত না৷
.
বিছানায় ওর অপর দিকে মুখ করে বালিশে চোখ ভিজাচ্ছিলাম৷লাইট টা অফ আছে৷তাই হয়ত ওর চোখে আমার চোখের পানি পড়বেনা৷
.
চোখের নোনা জল ফেলতে ফেলতে,কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি বুঝতেই পারিনি৷
,
হঠাৎই কারো চিৎকার শুনেই ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলাম৷লাফিয়ে উঠতে চাইলেও তখন আমি উঠতে পারলাম না৷কারন এর আগেই আনিকা আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগল,আর বলতে লাগল
,””প্লীজ মামা,আমাকে ছেড়ে দাও!আমার সর্বনাশ করো না,মামা তুমি না আমার বাবার মত?
তুমি তো জানোই আমার বাবা নেই,প্লিজ আমাকে এই পতিতালয়ে ফেলে যেও না,
মামা যেও না, মামা,,,মামাআআআআআ
.
কথাগূলো বলছিল,আর মামা মামা,বলেই আনিকা চিৎকার করে কান্না করতে লাগল.আর ভয়ে কাপতে কাপতে আমাকে অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে লাগল৷হয়ত আমার বুকের ভিতর ও ডুকেই যাবে নয়ত আমার সাথে মিশে যাবে,,,আনিকাকে শান্ত করার জন্য ওকে ডাকতে লাগলাম,কিন্তু ও যেন শুনছেই না
.
–এই আনিকা,আনিকা,তোমার কি হইছে?আর কোথায় তোমার মামা?ওনাকে তো তুমি নিজ হাতেই শেষ করে দিছো,আনিকা ,এই দেখো,এখানে কেউ নেই…
.
–(চূপ)
.
–আনিকা,এই আনিকা,এই দেখো আমি আছি তো?কেউ তোমাকে কিচ্ছু করতে পারবে না,একবার মার দিকে দেখো?
.
অনেক বলার পর আনিকা ধীরে ধীরে শান্ত হয়,আর কেমন অসহায়ের মত আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল৷বুঝতে পারলাম মেয়েটা হয়ত বাঝে কোনো স্বপ্ন দেখে ভয় পাইছে৷
তখনও ও আমাকে জড়িয়ে ধরেই আছে৷
ও হঠাৎ কি বুঝে যেন,ও নিজেকে ছুটিয়ে নিতে চাইল৷
কিন্তু সেটা আর হতে দিলাম না৷
কারন সেই মুহুর্তেই আনিকাকে আমি আমার নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরে রইলাম৷আর ও তখন কিছুই বলল না৷শুধু চুপচাপই দেখছে
.
আনিকার মাথাটা তখন আমার বুকে মাঝে৷তখন ওর মূখটা একটু সামনে আনলাম,আর আস্তে করে ওর চোখের পানিটুকু মুছে দিলাম৷
.
অনেকক্ষন পর আনিকা যখন স্বাভাবিক হয়,তখন ওকে বলতে লাগল
,
–এই পাগলি,তোমার কিচ্ছু হবে না৷এই পাগল টা যে তোমার কিচ্ছু হতে দিবে না৷সব সময় এই বুকে আগলে রাখবে,কখনই আলাদা হতে দিবেনা
.
–(ও শুধু মাথা নাড়ালো)
,
–এই শুনো,আর কান্না না করে চুপ চাপ এই পাগলের বুক নামক বালিশটাতে ঘুমিয়ে পড়ো,আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,একদম কথা বলবে না কিন্তু…
.
তখন আনিকাকে আমার বুকের মধ্যে রেখেই শুয়ে থাকতে বললাম৷ও আমার কথা শুনে চুপ চাপ তাই করলো৷
আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম৷
.
আসলে আনিকার চূলগুলোও অনেক সুন্দর৷
ও যেমন সুন্দর ঠিক ওর চুলগুলোও৷
অনেক বড় বড় চুল৷
ওর চূল গুলো কাধ ছাড়িয়ে ওর কোমরেরও অনেক নিচে চলে যায়৷
.
যাই হোক ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মেয়েটা কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছে বুঝতেই পারিনি৷
ফজরের আযান দিয়ে দিচ্ছে,এখনও ও আমার বুকেই ঘুমাচ্ছে,আর আমিও সারারাত জেগে ওর মাথায় হাত বুলাতেই লাগলাম৷
.
একদম ছোট বাচ্ছাদের মতই ওকে ঘূম পাড়াইছি,আর ছোট বাচ্ছাদের মতই ও ঘুমাচ্ছে৷
.
একটা জিনিস তখনই মাথায় আসল,
এতদিন মেয়েটাকে বুকে নিয়ে ঘুমাতাম,একদিনও ও খারাপ কিছু স্বপ্নে দেখেনি,ভয় পায়নি৷আর আর আজ অভিমান করে ওকে বুক থেকে সরাতেই কেমন আবোল তাবোল স্বপ্ন দেখে মেয়েটা ভয় পাইছে৷
আর কখনই ,যতই রাগ করিনা কেন?ওকে আমার বুক থেকে আলাদা করব না৷
.
সকালাবেলা
.
ওকে হসপিটালে ওর মায়ের কাছে রেখেই অফিসে চলে গেলাম৷
একটু হাসিখুশি ভাবেই বসে আছি৷ঠিক তখনই আমার অফিসের কলিগ মিম আসল৷ওর সাথে আমি আবার একদমই ক্লোজ,ভালো ফ্রেন্ড বললেও চলে৷মিম এসেই বলল
.
–স্যার,একটা কথা বলব?যদি রাগ না করেন(মিম)
.
–হুম বলো
.
–স্যারকে আজ অনেক খুশি খুশি লাগছে,স্যার কি আজ অনেক খুশি নাকি?
.
–না,আসলে…..
.
–বুজতে পারছি স্যার ,ব্যাপারটা ভাবিকে নিয়ে,তাই তো???তো কাল পহেলা বৈশাখে ভাবিকে নিয়ে কি কি প্লান আছে ?
.
–পহেলা বৈশাখ?(অবাক হয়েই)
.
–কেন আপনি কি জানেন না নাকি?কোন দেশে থাকেন স্যার?
.
–আরে থাকি তো বাংলাদেশেই কিন্তু….
.
— হুম বুঝতে পারছি আপনি তো চলে গেছেন,ভাবির সাথে প্রেমের দেশে,আর যার কারনেই সব ভুলে গেছেন,তাই না স্যার
,
–(মাথায় হাত দিয়ে শুধু চুলকাচ্ছি)
,
–কি হলো স্যার,ধরে ফেললাম তো
.
-আগ্গে,,,,
.
বলেই দুজনে হো হো করে হেসে উঠলাম৷তখনই আমি ওকে বললাম
.
–আচ্ছা মিম,পহেলা বৈশাখে,তোমার ভাবিকে কিভাবে অনেক খুশি করা যায় ,?বলো তো
.
–আসলে স্যার,বাঙালী মেয়েরা তার স্বামীর কাছ থেকে তেমন কিছুই চায়না,শুধু চায় স্বামির একটু ভালোবাসা,তবে কাল ভাবিকে নিয়ে বৈশাখী মেলায় ঘুরতে পারেন,এতে ভাবি অনেক খুশি হতে পারে
,
–থ্যাংকু মিম,কিন্তূ দুজনে কি কি পড়ে গেলে ভালো হয়?
.
— স্যার, পোশাক বলতে কাল কিন্তু অবশ্যই ভাবিকে সাদা আর লাল রঙের মিশ্রনে একটা শাড়ি,খোপায় ফূল পড়ে সাজতে বলবেন৷আর আপনি সাদা পায়জমা আর একটা লাল ফতুয়া বা পান্জাবি পড়ে গেলে হয়ত অনেক ভালোই হবে
.
–থ্যাংকু মিম৷এত্ত এত্ত থ্যাংকু
.
বলেই অফিস থেকে বের হয়ে সরাসরি মার্কেটে চলে গেলাম৷ওর জন্য একটা লাল সাদা মিশ্রনে একটা বৈশাখি শাড়িসহ সব কিছু কিনে বাসায় গেলাম৷বাসায় যেতে যেতে রাত হয়ে গেল৷
ওকে আর রাতে কিছুই দেখালাম না৷
খুব ভালো লাগছে কাল সারাটাদিন মেয়েটার সাথে কাটাবো,ওর হাত ধরে হাটবো,ঘূরবো অনেক মজা করবো৷
.
রাতে খুশিতে ঘুমই আসছে না৷আনিকাকে বুকে রেখেই শুয়ে পড়লাম ৷আর একটূ পর পর ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলাম
.
আহ আমার পাগলিটাকে কাল আমি নিজ হাতে সাজাবো,কত্ত সুন্দর লাগবে ওকে?
.
ওর দিকে একটু পর পরই তাকিয়ে মুচকি হাসছিলাম৷
হয়ত ও আমাকে আজকে পাগল বলবে কারন বিষয়টা ও একটু অন্যরকম ভাবে নিচ্ছিল৷
.
যেভাবেই নিক,আমার কি?আমি তো খুব খুশি হি হি হি৷
.
অনেক অপেক্ষার পর সকালের আলো ফুটলো৷
আর তখনই সব কিছু ওর সামনে দিলাম
.
–আনিকা,এই নাও
.
–কি এটা?
.
–এটাতে বৈশাখি শাড়ি আছে,তুমি পড়ে এক্ষনি তৈরি হও,আমি পান্জাবি পড়ে আসছি
,
–আমি তৈরি হবো কেন?আর আমার জন্য এগূলো কেন
.
–আরে বোকা,আজ তো পহেলা বৈশাখ,তোমাকে নিয়ে আজ সারাদিন ঘুরব
,
–না,আমি যাবো না,
.
–প্লিজ আনিকা,না করো না,প্লীজ প্লীজ
.
–না,আমি এগূলো পড়ব না
.
ওর এমন কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল৷আজ এত আশা করেছিলাম,কত কি ভেবেছিলাম,আর ও সবকিছুই কেমন অগোছালো করে দিল?তাই মন খারাপ করে অন্য একটা রুমে গিয়ে বসে রইলাম৷
মন চাচ্ছিল,সব কিছুই ছিড়ে ফেলি,তবে কিছুই করলাম না৷মন খারাপ করেই বসে রইলাম৷
.
হঠাৎই দরজায় চোখ পড়ল৷দড়জায় চোখ পরতেই চোখ আসমানে উঠে গেল৷কারন মেয়েটা পোশাকগুলো পড়েছে৷
আনিকাকে যে এতটা সুন্দর লাগবে ভাবতেই পারিনি৷ওর দিকেই কেমন অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম
.
অনেকক্ষন পর
.
–এই যে মিষ্টার,হা করেই থাকবে নাকি আমাকে নিয়ে ঘূরতে যাবে?
.
–আনিকা,আমি স্বপ্ন দেখছি না তো?তুমি আমার সাথে যাবে?
.
–হুম,যাবো বলেই তো তৈরি হয়ে এসেছি
.
ওর এমন কথা শুনে মনের ভিতর লাড্ডু ফুটছিল৷
.
তখনই আনিকাকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে গেলাম৷
বৈশাখা মেলায় দুজনে হাতে হাত ধরে অনেকক্ষন ঘুরছিলাম,সব কাপলদের আর বিবাহিতদের জুটির ভিতর কেমন আমাদের জুটি টাই বেশি ভালো মনে হচ্ছিলো৷যার সাথে এমন একজন মানুষ আছে,তার জুটি কি খারাপ হতে পারে নাকি?
ওর হাত ধরে বৈশাখী মেলার ভিতর হাটাহাটি করছিলাম৷
আহ কত শান্তি?আনিকার হাত ধরে আজ হাটাহাটি করছি৷তখনই মনে মনে বলতে লাগলাম
শুভ নববর্ষ,আর এই শুভ নববর্ষ আমার জন্য শুভ দিন৷
ভাবতেই কেমন খুশিতে মন আনচান করছিলো ঠিক তখনই……..
.
.
.
.
.
চলবে………..

পতিতা মেয়ে part_4

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_4

–আমাকে এই অন্ধকারে তুলে আনার কারন কি?আর আপনি কে(আনিকার মামা)
.
–তোর যম(অন্ধকারে আমি)
.
–আপনি সামনে আসুন,আর আমাকে প্লীজ ছেড়ে দিন,আমাকে কেন তুলে এনেছেন(বিনয়ের সুরে)
.
–কেউ লাইট টা অন করো৷
.
ঠিক তখনই লাইট অন হয়ে গেল৷আর লাইট অন হতেই ওনি বলে উঠল
.
–স্যা সা স্যার আপনি(তোতলিয়ে)
.
–হুম,ম্যানেজার সাহেব,কেমন আছেন?
.
–হুম খু খু খুব ভালো(ঘেমে একাকার)
.
–আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব ,এভাবে ঘামছেন কেন?
.
–আমাকে লোক দিয়ে কেন উঠিয়ে এনেছেন?
,
–শুধু মাত্র কিছু হিসাব নিকাশের জন্য
,
–ওইগুলো তো অফিসেই মিটাতে পারতেন৷আর আমি সব হিসাব তো আপনাকে দিয়েই দিছি
,
–ম্যানেজার সাহেব,অফিসের হিসাব অফিসে দিছেন,কিন্তু জীবনের হিসাব একটু মিলিয়ে নিবো না?
.
–মানে কী স্যার?
.
–আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব,আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব
,
–হুম করেন,তবে ক ক কী প্রশ্ন(তোতলাচ্ছ
ে আর ঘামছে)
,
–বেশি কিছুনা৷আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব,আপনার ছেলে মেয়ে কয়জন?
,
–কেন?
,
–যেটা বলছি উত্তর দেন
,
–এক মেয়ে আছে
.
–হুম খুব ভালো,আরেকটা প্রশ্ন
.
–কি?
.
–আপনি কি আপনার মেয়েকে রেপ করতে পারবেন?
.
–স্যার,মুখ সামলিয়ে কথা বলুন?নয়ত(ধমক দিয়ে)
.
–নয়ত কি?একদম চুপ করে থাকবি জানোয়ারের বাচ্ছা,নয়ত এখনই একদম ওপারে পাঠিয়ে দিব(ওর মাথার রিবোলবার ধরে)
.
–আপনি এ এ এ এমন ক ক করছে ন কে কেন(তোতলাতে তোতলাতে)
.
–নিজের মেয়েকে রেপ করতে পারবিনা,তাহলে কেন নিজের ভাগনিকে এই কাজ করলি?সেও তো তোর নিজের মেয়ের মতই ছিল,……..
.
–আমি কীছু করিনি,আমাকে ছেড়ে দিন,আমি কীছু করিনি
,
–আনিকা,এইদিক আসো.
.
বলতেই আনিকা আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে সামনে এসে উপস্থিত৷
.
–আনিকা,ওকে শেষ করে দাও,এই নাও পিস্তল
,
–না,ওকে আমি এটা দিয়ে গুলি করে মারব না,ওকে আমি দা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মারব(আনিকা)
,
–না মা,আমাকে ছেড়ে দে মা,তুই তো আমার মেয়ের মত৷আমি না তোর মামা?আমাকে মারিস না(আনিকার পায়ে ধরে)
.

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
ঠিক তখনই আনিকা দা দিয়ে প্রথম আঘাতটা ওর ডান হাতে করল৷আর বলল
.
–এই হাত দিয়েই সেদিন আমার গায়ে প্রথম টাচ করেছিস,
.
–মা মা,তুই আমার মা,তুই আমার মেয়ে,আমাকে মারিস না,আমি তোর মামা,আমকে মারিস না মা,মা ও মা!আমাকে মারিস না তুই(চিৎকার করে কান্না করতে)
,
–হা হা হা,মা বলছিস৷ছিঃ ,ওয়াক থু,তোর মুখে থুথু,কোথায় ছিল,তোর মা?যেদিন জানোয়ারের মত,একটা অসহায় মেয়ের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিলি?তুই মাফ পাওয়ার যোগ্য না,যে নিজের ভাগনিকে………
.
বলেই আরও একটা আঘাত,তারপর আনিকা কেমন পাগলের মত একের পর এক আঘাত করতেই লাগল৷হয়ত সেদিনের কষ্টের ঝাল আজ খুব ভালোভাবেই নিচ্ছে,
মুহুর্তেই ওর মামা শেষ৷তারপরও আনিকা তখনও উন্মাদের মতই আঘাত করতেই লাগল৷
আর ওই পাপিকে ওখানেই শেষ করে দিলাম৷
এমন পাপির কোনো মাফ নেই৷সমাজে যারা এমন কাজ করে,তারা কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট,আর এত নিকৃষ্টদের সমাজে বাঁচার অধিকার নেই৷ওদের মত মানুষদের জন্যই সমাজে সৃষ্টি হয়,হাজারো পতিতা৷ধ্বংস হয়ে যায়,হাজারও মেয়ের স্বপ্ন৷বেছে নিতে হয়,পতিতাবৃত্তিকে নয়ত আত্মহত্যা করে চলে যেতে হয় পরপারে৷
.
আনিকা কে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷
আর দুজনেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম৷খুব ক্লান্ত তাই শুয়ে পড়লাম৷
ঠিক তখনই আনিকাও আমার পাশেই শুয়ে পড়ল৷আনিকাকে একটা টান দিয়েই বুকের ওপর তুলে নিলাম৷ও তখন একদম চুপ করে আছে৷
.
–এই মেয়ে,বালিশে শুয়েছিলে কেন?তোমাকে বলছিনা,সব সময় আমার বুকের ওপর মাথা রাখে ঘুমাবা?
.
–হা হা হা
.
–হাসছো কেন?
.
–হাসব না তো কি করব?দুদিন পর তো এমনিতেই বালিশে ঘুমাতে হবে তাই না?আর তো মাত্র ২৬টা দিন বাকি আছে,তাই না?এর পরই তো তোমার দুমাস শেষ,তবে যাই হোক,তোমার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকব
,
ওর মুখে কথাগুলো শুনে খুবই অবাক লাগছিল,কারন দিনগূলো আনিকা যে এত ভালোভাবে হিসাব রাখবে বুঝতেই পারিনি৷সময় যেতে যেতে যে এতগুলো দিন চলে গেছে সেটাও বুঝতেই পারিনী৷কিন্তু ও কি বুঝতেছে না?আমি ওকে এখন ভালোবাসি বলেই ওর পাশে আছি?
.
–কি হলো আবিদ সাহেব,চূপ কেন?
,
–না এমনিতেই৷(বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলাম)
.
–আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলব?
.
–হুম বলো
.
–এই যে তুমি,সেই প্রথম দিন থেকেই আমার এত উপকার করছো,তারপর আবার শর্ত মোতাবেক বিয়ে করে এতগুলো টাকাও দিয়েছো,আজ আবার আমাকে একটা জনোয়ারকে শেষ করতেও সাহায্য করেছো,সব ই তো আমাকে ভোগ করার জন্য তাই না?তাহলে আমকে তো এখনও ভোগ করো নি?কিন্তু কেন?
.
ওর কথাটা শুনে বুকটা কেমন ধুক করেই উঠল৷উপরের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেই মনে বললাম,ও কি ভাবছে এগূলো?ও কি এখনও বুঝতে পারছেনা,ওকে ভোগ করার জন্য আমি এগূলো করছিনা?ওকে ভালোবাসি বলে এগুলো করেছি৷তখনই ওকে নরম সূরেই বললাম
.
–জানো আনিকা?সব কিছু মানুষ ভোগের জন্য করেনা৷আর হ্যা তোমাকে ভোগ করার ইচ্ছা থাকলে,তোমার পাশে না থেকেও হয়ত তোমাকে প্রতিদিনই ভোগ করতে পারতাম৷আর তুমি আমার সাথে এতগুলো রাত কাটিয়েছো,কিন্তু তোমাকে শুধু আমার বুকের ওপর রেখেই জড়িয়ে ধরেই ঘূমিয়েছি,এছাড়া তোমার সাথে অন্যকোনো ধরনের বিহেইভ করিনি,যেটা দিয়ে প্রমানিত হয়,আমি তোমাকে ভোগ করতে চাচ্ছি
,
–(চুপ)
.
–আচ্ছা ঘূমাও,এমনিতেই আজ,অনেক ক্লান্ত তুমি,
.
তারপরই চূপচাপ ঘুমিয়ে পড়লাম৷শরীর ক্লান্ত থাকার কারনে ঘূম খুব তাড়াতাড়ি চলে আসল৷
.
আনিকাকে আজ ৫দিন পর ওর আম্মুর কাছে নিয়ে যাচ্ছি ৷এর ভিতর মেয়েটা অনেকবার যেতে চাইলেও ওকে যেতে দেইনি৷কারন এই কয়দিনের ভিতর আনিকাকে গোপন রেখে ওর আম্মুর অপারেশন করিয়ে ফেলেছি৷অপারেশন করার আগে খুব ভয়ে ছিলাম কারন,একটু এদিক সেদিক হয়ে গেলেই,আনিকার আম্মু শেষ হয়ে যেত৷আর আল্লাহ না করূক,এমন হলে ও হয়ত আমকে ভুল বুঝত,কারন ওর অগোচরে কাজটা করা ঠিক হয়নি৷তবুও করালাম কারন মেয়েটা বড্ড বেশিই মায়ের পাগল৷মাকে ছাড়া সব কীছুই ওর কাছে অর্থহীন৷আর যদি ও জানে ওর আম্মুর অপারেশন হবে,তাহলে হয়ত ও নিজেই ঠিক থাকতে পারত না৷তাই একটু বেশিই রিস্ক নিয়ে,ওর অজান্তেই……….
.
যাই হোক ওর আম্মু এখন অনেক ভালো আছে৷হাসপাতালে যেতেই ডাক্তার বলে উঠল
.
–আবিদ সাহেব,রোগি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছে৷সামনের সপ্তাহেই ইচ্ছা করলে নিয়ে যেতে পারেন৷তবে ওনার দিকে একটূ বেশিই খেয়াল রাখবেন,অপারেশনের রোগি তো,বুঝেনই,…….
.
আমি মাথা নাড়ালাম৷আর ডাক্তারের এমন কথা শুনে আনিকা কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷আর অনেক বেশি অবাক হয়েই জিজ্ঞাসা করল
.
–অপারেশন?কিসের অপারেশন?আর কার অপারেশন
,
–আমি তোমাকে পরে বলছি,আগে চলো মাকে দেখে আসি
.
–না,তুমি আগে বলো কিসের অপারেশন
.
ঠিক তখনই ডাক্তার বলে উঠল
.
–আসলে,আপনার মায়ের একটা অপারেশনের দরকার ছিল,আর ওটা অনেক রিস্কের অপারেশন৷তাই আবিদ সাহেব আপনাকে কিছুই জানায়নি,কারন এতে আপনি অনেক টেনশন করবেন৷আর অপারেশনটা না করালেও আপনার মাকে বাঁচানোর কোনো আশা ছিল না,হয়ত তখন ওনি মরেই যেতেন৷তবে যাই হোক,এখন আপনার মা সম্পুর্ন বিপদ মূক্ত৷খুব শীঘ্রয় আপনার মা ভালো হয়ে যাবে…
.
.
বলেই ডাক্তার চলে গেল৷আর এইদিকে আনিকার চোখে পানি,আর ও আমার দিকে কেমন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে৷মনে হচ্ছে আমার ওপর কেমন রেগে আছে
.
আমি তখন আনিকার হাতে ধরলমা৷আর ওর আম্মুর কাছে চলে গেলাম৷ভিতরে যাওয়ার পরই আমাদের কথার আওয়াজ শুনেই ওর মা জেগে উঠল
.
–তুই এসেছিস মা ,আর তুই এত শুকিয়ে গেছিস কেন?ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করিস না নাকি?
তুই যদি এমন করিস,তাহলে কিন্তু আমি আর ঔষধ খাবো না
.
–এগুলো বলো না মা,তুমি কেমন আছো?
.
–খুব ভালো আছি রে,খুব ভাল
.
বলেই মা মেয়ে কেমন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিছে৷আর আনিকার মা কেমন করে আনিকার কপালে চূমু দিচ্ছে,আর কেমন করে বুকে আগলে রেখেছে৷
.
ওদের এই দৃশ্যটা দেখে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে চোখের নোনা পানি বের হয়ে গাল বেয়ে বেয়ে পড়তে লাগল৷আর নিজের বাবা মায়ের কথা খুব মনে পড়তে লাগল৷বাবা মা যে কি জিনিস,সেটা যে হারিয়েছে,সেই ভালো জানে,খুব মিস করছিলাম বাবা মাকে৷আমার মত এতিমের কাছে যে,বাবা মায়ের ভালোবাসার মুল্য কত বেশি,সেটা একমাত্র আমি এতিমই জানি
.
ঠিক তখনই আনিকার মা আমাকে ডাক দিল
.
–বাবা,তুমি কান্না করছো কেন(আনিকার মা)
,
–আসলে মায়ের কথা খূব মনে পরছে আজ,খুব মিস করছি
.
–কেন,তোমার বাবা মা কোথায়?
.
–না,ছোটবেলায়ই তারা মারা গেছে,এতিম করে চলে গেছে আমায়(কান্না করতে করতেই)
.
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–কে বলেছে তুমি এতিম,আমি কি তোমার মা না?
এইদিকে আসো বাবা
.
তখনই দৌড়ে ওনার কাছে যেতেই ওনি আমাকে জড়িয়ে ধরেই বলতে লাগল,আজ থেকে তুমিও মার ছেলে!
.
আহ কি শান্তি?কলিজাটা জুড়িয়ে গেল৷তখনই আমি বললাম
.
–আচ্ছা আমি কি আপনাকে আজ থেকে মা বলে ডাকতে পারি?
.
–হুম,কেন পারবে না,অবশ্যই ডাকবে.
.
খুব খুশি লাগছিল৷আর তখনই একটা ফোন আসল
.
–আচ্ছা মা,আমি একটু বাইরে থেকে কথা বলে আসছি,আপনারা কথা বলুন
.
–যাও বাবা
.
তারপরই আমি বাইরে বের হয়ে গেলাম৷প্রায় ২০মিনিট পর ভিতরে যাবো,তখনই দরজার বাইরে থেকেই শুনতে পেলাম
.
–মা রে ছেলেটা কে?
.
–এই তো,আমার ক্ষনিকের ফ্রেন্ড,
.
–মারে ছেলেটা অনেক ভালো রে,তুই জানস,ছেলেটা এই কয়ডা দিন,কিভাবে আমার পিছনে খাটছে৷কত্ত সময় আমর পিছনে শেষ করছে৷হারাডা দিন,আমার সেবা করছে,
.
–তোমার অপারশন হইছে আমাক বলে নি কেন
.
–আমি নিষেধ করেছিলাম৷কারন তুই শুনলে অনেক ভেঙে পরবি৷তবে যাই হোক,ছেলেটাকে আমার খুব ভালো লেগেছে,এমন একটা ছেলে যদি…
.
–থাক মা,আর বলো না,
.
–কেন?
.
–কারন ও অনেক বড়লোক,
.
–তারপরও রে মা,আমার মনে হয়,ওই ছেলেটা তোরে ভালোবাসে,নয়ত……
.
–মা আর বলো না প্লীজ,ওদের কাছে ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই,ওরা বড়লোক,তাই ওদের কাছে মেয়েরা খেলার পূতূল,খেলা শেষ হলেই সব শেষ…আর আমি তার যোগ্য না মা,আর অযোগ্য হয়ে আমি কারও পরিহাসের,করুনার পাত্রি হতে চাই না
.
বলেই মেয়েটা কেমন কান্না করে দিল৷বাইরে থেকে কথাগুলো নিজেরই কান্না এসে গেল৷
তারমানে এতদিনে ওর মনে একটু ভালোবাসা আমি তৈরি করতে পারিনি?আর একটু জায়গাও তৈরি করতে পারলাম না?নাকি ওর অতীতের কারনে ও আমাকে ওর জীবনে জড়াতে চায় না?
.
.
.
.
.
.
চলবে…………..

পতিতা মেয়ে part_3

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_3

–আমি তো মাত্র একটা ভাড়াটে পতিতা,আমার কোনো ইচ্ছা নেই৷তবে বাঙ্গালি প্রত্যেকটা মেয়েদের খুব ইচ্ছা,বাসর রাতে লাল শাড়ী পড়ে স্বামির ঘরে যাবে৷তার সাথে নিজের সব কিছু ভাগাভাগি করে নিবে,আর তার সাথে অনেক গল্প করবে,আর সব সময় তার স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমাবে৷কখনই আলাদা হবে না
.
কথাগুলো বলেই মেয়েটা কেমন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল৷একটা জিনিস খেয়াল করলাম,মেয়েটা বেশিরভাগ টাইমই দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে৷বুকের ভিতর কতটা কষ্ট থাকলে একটা মেয়ে বারবার এমন করতে পারে,সেটা হয়ত আমার ধারনার বাইরে৷যাই হোক মেয়েটাকে এত কষ্ট আ পেতে দিবো না৷
তখনই আনিকাকে বললাম
.
–হুম খুব ভালো ধারনা আছে তো তোমার,কাজে লাগানো যাবে
.
—কিসের কাজ
,
-না কিছুনা,তবে আজকে কিন্তু তোমাকে আর ছাড়ব না,বাসর রাত বলে কথা
,
–হা হা হা
.
–হাসছো কেন?
.
–আমার জন্য আর বাসর রাত?আমার মতো পতিতার সাথে তো প্রতিদিনই….
.
–ওই একদম চূপ,আজ থেকে মুখে যেন পতিতা নামটাও যেন না আসে,আসলে খুব খারাপ হবে…
.
–দেখো,সত্যিটা তো আমাকে বলতেই হবে
,
–হুম বলো,কিন্তু আপাতত তুমি আমার বউ,সো আমার বউয়ের মতই তোমাকে থাকতে হবে…..
.
–হা হা হা,হায়রে বউ,তাও আবার দুমাস……
.
ওর কথাটা শুনে একটু অবাকই হলাম৷তারপরও ওকে বললাম
.
–দুমাস হোক,আর দুদিন হোক,এখন তো তুমি আমার বউ,আর এই দুমাস তোমাকে আমার স্ত্রীর পরিচয়ে থাকতে হবে
.
বলতেই মেয়েটা কেমন অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷তারপর ওকে খাট থেকে নিচে নামালাম৷আর হাত ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যেটে লাগলাম,ও শুধু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,আর হঠাৎই বলে উঠল
.
–আমাকে কি কোথাও নিয়ে যাচ্ছো?
,
–হুম৷আমার সাথেই চলো
.
–কোথায়?
.
–আমার সাথে গেলেই বুঝতে পারবা
.
তারপরই মেয়েটাকে ছাদে নিয়ে গেলাম৷অনেক রাত দেখে মেয়েটা একটু ভয় পেয়ে গেল৷কিন্তু ছাদে উঠতেই
.
ওয়াও কি সুন্দর ফুলের বাগান,আর আকাশে কত্ত সুন্দর চাঁদ উঠেছে
,
বলেই মেয়েটা আমার হাত থেকে ছুটে ছাদের ওপর কেমন নিজেকে মুক্ত পাখির মত মেলে ধরল৷ও একবার ফুলগুলোকে ধরছে আরেকবার চাঁদের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে৷রাতে চাঁদের আলোতে গোলাপ ফুলগুলোর সৌন্দর্যও আনিকার সৌন্দর্যের কাছেও হার মানছে৷
চাঁদের আলোতে মেয়েটাকে কেমন অপূর্ব সুন্দর লাগছে৷সত্যিই তখন আমি অনেক খশি হয়ে গেলাম কারন মেয়েটা আজ খুব খূশি৷
তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহকে মনে মনে একটা ডাক দিয়ে বললাম
,আল্লাহ,এই মেয়েটাকে যেন সব সময় এমন হাসিখুশি রাখতে পারি,আর কখনই যেন ওকে কষ্ট না দেই…..
.
বলেই মেয়েটার দিকে তাকালাম৷ঠিক তখনই দেখলাম মেয়েটা এক জায়গায় কেমন জড়সড় হয়ে কান্না করতে লাগল,হঠাৎ করে ওর এমন আচরন দেখে ভয় পেয়ে গেলাম৷আর ও তখন আমার সামনে এসেই বলতে লাগল
.
–প্লিজ ,আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও,আমার সহ্য হচ্ছেনা ,
.
হঠাৎই ওর মুখে এমন কথা শুনে আরও বেশি অবাক হয়ে গেলাম৷একটু আগেই যে মেয়েটা অনেক হাসিখুশি ছিল!আর মুহুর্তেই ওর কি হয়ে গেল,নিজের পুরানো খারাপ অতিতটা তাকে কষ্ট দিচ্ছে না তো?
,

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
–এই মেয়ে কান্না করছো কেন?
.
–(ফুপাচ্ছে)
,
–কথা বলো
.
–আমাকে এখন থেকে নিয়ে যাও
.
–কিন্তু কেন?
.
–আমার মত একটা পতিতা এমন নিষ্পাপ ফুল ছুতে পারেনা৷আর এই চাঁদের আলো,আমার মত বাজে মেয়ের ওপর মানায় না,কেমন কদাকার দেখায়
.
বলেই মেয়েটা কান্না করতে লাগল৷
.
–এই তুমি এগুলো কি বলছো,একদম উল্টা পাল্টা বলবে না,এখন থেকে তুমি আমার বউ
.
বলেই ওর চোখের পানিটা মুছে দিলাম৷আর ওর কপালে ঠোটের উষ্ণতা একে দিলাম৷
মেয়েটা তখন শুধু নির্বাক হয়ে আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল৷
আর তখনই মেয়েটাক নিজের সর্বোচ্ছ শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম৷
আর ও তখন কেমন কেপে উঠল৷যখন আমার কাছ থেকে ওকে ছুটালাম,তখন ও কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়েই আছে
হয়ত আনিকা ভাবছে ওর সাথে আমি যা করছি সবই ওকে ভোগ করার জন্য বা তার অসহায়ত্বের সুযোগ নেবার জন্য৷কিন্তু আমার মনে শুধু একটা কথাই যতদিন বেঁচে থাকব,কোনোভাবেই আর এই মেয়টাকে কষ্ট দিবো না,সব সময় ওর পাশে থাকব৷.
.
ওকে নিয়ে ঘরে চলে আসলাম৷আর বিছানায় শুয়ে পড়লাম৷
আনিকা তখন আমার পাশেই শুয়ে ছিল৷আর তখনই আনিকার কথাটা মনে পড়ল,একটু আগেই বলেছিল বাঙালি মেয়েরা চায়,সবসময় তার স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে ,হয়ত ওর ও এমনই ইচ্ছা ছিল৷
যাই হোক
তখনই আনিকাকে জড়িয়ে ধরলাম৷আর ও একদম চুপ হয়ে শুধু আমাকে দেখছিল৷তখন ওর মাথাটা আমার বুকে রাখতে বলে,ওকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমীয়ে পড়লাম৷
.
সকালবেলা
.
ঘুম ভাঙতেই দেখলাম মেয়েটা এখনও ঘূমিয়ে আছে?
আহঃ কি নিষ্পাপ মুখ,একদম ছোট বাচ্ছাদের মত করে ঘুমিয়ে আছে৷তখন ওর কপালে আলতো করে একটা চুমূ দিতেই ও কেমন জেগে উঠল৷আর আমার দিকে একবার তাকিয়েই নিচু হয়ে গেল৷
.
তারপর দুজনে ঘুম থেকে উঠলাম৷ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ,দুজনেই হাসপাতালে আনিকার আম্মুর কাছে চলে গেলাম৷
ওর আম্মু তখন ঘুমাচ্ছিল,ওকে হসপিটালে রেখেই চলে আসলাম৷আর আসার আগে ওকে বলে এসেছি,কোনো কারনেই যেন বাইরে বের না য়,সব সময় আম্মুর পাশেই যেন থাকে৷আর কোনো কিছু লাগলে আমাকে যেন ফোন দেয়৷মেয়েটা শুধু মাথা নাড়ছিল৷
.
আমি অফিসে চলে গেলাম৷আজ অনেকদিন পর অফিস যাচ্ছি৷সবাই আমাকে দেখে আজ একটু বেশিই অবাক৷কারন অনেক দিন অফিসে যাই না৷
যাই হোক আনিকাকে নিজের লাইফে জড়ানোর সাথে সাথেই ভাবলাম ,নিজেকেও ঠিক করে ফেলি,ভালো হয়ে যাই,আর ওকে নিয়ে সুখেই থাকি৷
.
.
১৫দিন পর
.
আনিকার আম্মু এখন অনেকটাই সুস্থ৷কিন্তু আরও কিছুদিন হসপিটালে থাকতে হবে আর একটা অপারেশন করতে হবে৷ওই অপারেশনের ওপরই নির্ভর করবে ওর আম্মু বেঁচে থাকবে না,পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে৷তবে ডাক্তার যতটা আমাকে বলেছে,বেঁচে যাবার সম্ভবনাই বেশি৷
আর এই কথাগূলো আনিকা জানেনা৷সে জানে ওর আম্মু সুস্থ আছে,আর খুব শীগ্রয় আবার আগের মত হয়ে যাবে৷
আনিকা আমার লাইফে আসার পর,আমি অনেক পাল্টে গেলাম৷
আমার অফিস,সবকিছু এখন নিয়মিত চলে৷
তবে এখনও আমার একটা ভালো কাজ বাকী আছে?সেটা হলো আনিকার মামা,ওই জানোয়ারের বাচ্ছাটাকে শেষ করে দেওয়া৷
এখন প্রতিদিনই আনিকা আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমায়,খুব শান্তি লাগে মনে৷কীন্তু সবকিছুর ভিতরই আনিকা কেমন অসস্থি ফিল করত৷
.
এইতো সেদিন রাতের বেলা
.
–আনিকা,তুমি কি কাল আমার সাথে আমার অফিসে যাবে?
.
–কেন(অবাক চোখে)
.
–না বলছিলাম কি?আমার সাথে একটূ ঘুরাঘুরি করলে হয়ত তোমার ভালো লাগতে পারে…
.
–ভালো?ভালো বলতে আমার জীবনে কীছুই নেই৷সবই অন্ধকার!তবে আমার জন্য তোমাকে চিন্তা না করলেও চলবে,তুমি নিজের জন্য চিন্তা করো
.
ওর এমন কথা শুনে একটু হতাশ হলাম৷তরপর আবারও বললাম
.
–চলোই না একটু ,তোমার ভালো লাগতে পারে
.
–হুম
.
পরেরদিন সকালে আনিকাকে নীয়ে অফিসে গেলাম৷সবাই কেমন আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে৷আমার সব ফ্রেন্ডদের সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দিলাম৷আর সবাই আমাদেরকে স্বাগত জানালো৷
.
ঠিক তখনই আমার অফিসের ম্যানেজার আমার ওখানে আসল ,ওনি আসার পরই আনিকা কেমন অস্থির হয়ে যাচ্ছিল ৷বার বার নিজেকে আড়াল করতে চাচ্ছিল৷ঠিক তখনই ম্যানেজার বলে উঠল
,
–স্যার,এই বেশ্যাটা কে?আর এখানে কেন?
.
সবার সামনে কথাটা বলতেই আনিকা কেমন ভয়ে কাপতে লাগল৷আর আমার মুখের দিক তাকিয়ে থরথর করে কাপতে লাগল৷সবাই তখন কেমন করে যেন আনিকার দিকে তাকিয়ে রইল৷আনিকার চোখ বেয়ে বেয়ে গাল দিয়ে তখন পানি বের হচ্ছিলো৷ওর চোখে পানি দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না৷
.
–ম্যানেজার সাহেব,ভদ্রভাবে কথা বলুন,এভাবে কথা বলার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?
.
-স্যার যেটা সত্যি,সেটা তো আমাকে বলতেই হবে,এই মেয়ে একটা পতিতা,চরিত্রহিনা,আর ওর সাথে আপনি?কত টাকা দিয়ে ভাড়া করেছেন৷মালটা কিন্তু……..
.
–কী বললি কুত্তার বাচ্ছা?
.
বলেই সবার সামনে ম্যানেজার মারা শুরু করে দিলাম৷সবাই তখন আমাকে থামাতে চেষ্টা করলো৷কিন্তু পারছিলনা৷এক পর্যায়ে সবাই ওরা ম্যানেজারকে বাইরে বের করে দিল৷
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
আমার মাথায় তখন রক্ত উঠে পড়েছিল৷ঠিক সেই মুহুর্তে আনিকাকে এভাবে কষ্ট দেবার কারনেও খুব কষ্ট লাগছিল৷মেয়েটা আসতে রাজি ছিল না৷আর আমার কথায় ও এসে সবার সামনে এভাবে…….?ছিঃ নিজের দোষে আজ আবারও ও কষ্ট পেলো৷পুরানো অতিতটা ওকে ভূলাতে গিয়েও মনে করিয়ে দিলাম৷ভাবতেই নিজৈর ওপর তখন রাগ হতে লাগল৷তখনই আনিকাকে খূজতেই দেখলাম আনিকা নেই৷ও গেল কোথায়?
ওকে খুজা শুরু করলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না৷বুকের ভিতর কেমন অস্থিরতা কাজ করছিল৷ও যদি নিজের কোনো ক্ষতি করে ফেলে,তাহলে তো নিজেকে আমি ক্ষমা করতে পারব না৷সব দোষ আমার ৷কেন যে ওকে এখানে আনতে গেলাম?কিন্তু ও কোথায়?
.
খুজতে লাগলাম আনিকাকে৷কিন্তু পাচ্ছিনা৷
অফিসে দাড়োয়ানকে জিজ্ঞাসা করতেই বলল,ও নাকী বের ও হয়নি৷তাহলে গেল কোথায়?
খুব কষ্ট লাগছিল৷নিজের একটূ ভুলের জন্য ওকে হারিয়ে ফেলব না তো?
.
হঠাৎ অফিসের একটা কর্মচারি এসে বলল,ও নাকি ছাদে গেছে৷
তাই আর এক মূহুর্তও দেড়ি করলাম না৷একটা দৌড় মারলাম৷আর ছাদে চলে গেলাম৷দেখলাম মেয়েটা ছাদ থেকে ঝাপ দিতে যাচ্ছে,ঠিক তখনই মেয়েটার হাত ধরে ফেললাম
,
–ঠাসসসসস,এই তোর সাহস হলো কিভাবে?এভাবে নিজেকে শেষ করে দেবার?
.
–আমি বাঁচতে চাইনা!আজ আমার জন্য তোমার কত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে.
.
–একদম কোনো কথা বলবে না,আমার কিছুই হয়নি
,
ঠিক তখনই মেয়েটা আমার পায়ে পড়ে গেল,আজ আমাকে হেল্প করতে এসে,আপনাকে কতটা অপমান সহ্য করতে হচ্ছে,সবার সামনে আপনাকে কত ছোট হতে হচ্ছে
.
–প্লীজ আনিকা এভাবে বলোনা৷সব দোষ আমার,আমি তোমাকে না আনলে হয়ত তোমাকে এই অপমান সহ্য করতে হতোনা,তুমি আমাকে মাফ করে দাও,আমার জন্যই
.
–এই তুমি এগুলো কী বলছো?আমার কোনো সমস্যা হয়নি,আমি তো পতিতা,তাই না???আর পতিতাদের এগালো শুনে কোনো সমস্যা হয় না৷তবে তোমার?
.
বলেই আবার কান্না শুরু করে দিল৷
.
–দেখো,একদম কান্না করবা না৷আর মরতে যাচ্ছো কেন?তুমি যদি মরে যাও?তোমার মাকে কে বাঁচাবে?
.
–মায়ের জন্যই তো বেঁচে আছি৷কিন্তু আমি যে আর নিতে পারছিনা৷ওই মানুষটা আমার জীবনটাকে শেষ করে দিছে,শেষ করে দিছে
.
বলেই কান্না করতেই লাগল
.
–কোন মানুষটা
.
–না কিছুনা
.
–কোন মানুষ?আমাকে বলো(একটু ধমকের সুরেই)
,
–না কেউ না৷
.
–বলো বলছা৷আর ওই ম্যানেজার তোমাকে কিভাবে চিনে
.
–(কান্না করতেই লাগল)
.
–বলো বলছি,ও তোমাকে কিভাবে চিনল
,
–ও আমাকে চিনে ,কারন ওই আমার মামা
.
কথাটা শুনেই মাথাটা নষ্ট হয়ে গেল৷কিহহহহহ যেই জানোয়ারের বাচ্ছাটাকে আমি শেষ করার জন্য ভাবছি!যে জানোয়ারটা একটা মেয়ের সুন্দর ভাবে বাঁচার অধিকার নষ্ট করে দিছে,যে জানোয়ারের বাচ্ছা,একটা পবিত্র দেহে ,জানোয়ারের মত ঝাপিয়ে ,পবিত্র সম্পর্ক নষ্ট করে,মেয়েটাকে অপবিত্র করেছে,সে আমার কোম্পানীরই ম্যানেজার?
.
তাকে তো আমি শেষই করে দিবো৷মৃত্যুর যন্ত্রনা যে কতটা কষ্টের,তাকে আমি বুঝিয়ে দিবো,তুই মরার জন্য প্রস্তুত হ কুত্তার বাচ্ছা……,….
.
.
#_____________চলবে________________

পতিতা মেয়ে part_2

0

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_2

মেয়েটার প্রতি হঠাৎ এত মায়া হচ্ছে কেন?
কেন ওর মুখটাকে খুব আপন মনে হচ্ছে?
ওর কাছ থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে সোফায় বসলাম৷আর তখনই একটা সিগারেট ধরালাম৷সিগারেট টানতেছি আর ভাবতেছি মেয়েটার মায়ের কি এমন হইছে যার কারনে ও এমন একটা পথ বেছে নিছে?কাজ করেও তো পারতো নিজের মায়ের চিকিৎসা করাতে৷ভাবতেই সিগারেট টানতে লাগলাম৷তখন খেয়াল করলাম মেয়েটা কেমন কাশতে লাগল৷হয়ত সিগারেট টা সহ্য করতে পারছে না৷আর মেয়েটা ভয়েও কিছুই বলতে পারছেনা৷শুধু আমার দিকে তাকিয়েই কাশতে লাগল৷সিগারেট টা নিভিয়ে দিলাম৷আর ওকে জিজ্ঞাসা করলাম
,
–এটার গন্ধ সহ্য করতে পারো না?(ভালোভাবেই বললাম)
.
–না(মাথা নাড়িয়ে)
.
–এদিকে আসো,
.
ও আমার দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসল৷আর তখনই বললাম
,
–সোফায় বসো
,
ও সোফায় বসল,বসার পরই ওর শাড়িটা এনে ওকে আবার পড়িয়ে দিতে লাগলাম৷মেয়েটা তখন কেমন অবাক হয়ে আছে৷আর শাড়ী পড়াতে বাধা দিচ্ছে,প্রথমে ভাবছিলাম হয়ত আমি পড়িয়ে দিচ্ছি বলে সংকোচ বোধ করছে৷পরে ও নিজেই বলল
.
–কি হলো,শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছেন কেন?আপনি তো এখনও কিছুই করেন নি,আপনি আপনার কাজ করবেন না?(ভয়ে কাপা কাপা কন্ঠে)
.
–না
,
আমার মুখ থেকে না শব্দটা শুনে মেয়েটা কেমন হতভম্ভ হয়ে গেল৷আর চোখ দুটো বড় বড় করে,জিজ্ঞাসা করল
,
–কেন করবেন না?আমাকে কি আপনার পছন্দ হয়নি? আমি আর বাধা দিব না,কোনো বাধা আসলেও বাধা দিব না৷প্লীজ আপনি আপনার কাজ করুন
কান্না করতে করতে আমার পা জড়িয়ে ধরল৷অনেক চেষ্টা করছিলাম কিন্তু পা ছাড়াতে পারছিলাম না৷
একটা মেয়ে কতটা মায়ের পাগল হলে?কতটা মাকে ভালবাসলে? মাকে বাঁচানোর জন্য নিজের সব কিছু অন্যের হাতে নিজের ইচ্ছায় এভাবে বিলিয়ে দিতে পারে,সেটা এই মেয়েটাকে না দেখলে কখনই বুঝতামই না৷
.
–দেখো,এই মুহুর্তে আমি কোনো কাজ করার মোডে নাই৷আমি এখন কিছুই করব না
,
–প্লীজ আপনি না করবেন না৷টাকাগুলো আমার খুব দরকার৷তাছাড়া আপনি নিজেই একটু আগে শুনেছেন!আম্মু কি বলছে,টাকা না ছাড়া আম্মু কে বাঁচানো যাবে না,যেকোনো মুল্যে আমার টাকা লাগবেই
,
,
–আচ্ছা,তোমার মায়ের কি এমন হইছে যার কারনে তুমি এই পথ বেঁছে নিছো?
.
মেয়েটা তখন হাউমাউ করে কান্না করে দিল৷আর কেমন ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলতে লাগল
,
–আমার মায়ের লিভার ডেমেজ হয়ে গেছে,ডাক্তার বলছে,মাকে বাঁচাতে অনেক টাকা লাগবে,
.
–হুম বুঝলাম অনেক টাকা লাগবে,কিন্তু কাজ করেও তো তুমি টাকা জোগার করতে পারতে এই পথে আসলে কেন?
.
—হা হা হা
.
মেয়েটার এমন অদ্ভদ হাসি দেখে অনেকটা অবাকই হলাম৷জিজ্ঞাসা করলাম
,
–হাসছো কেন?
.
–সুষ্ঠু সুন্দর ভাবে কাজ করার অধিকার হয়ত সৃষ্টিকর্তা কোনো সুন্দরি মেয়েকে দেয়নি,আর এই পথে আসতে আমাকে এই সমাজের মানুষ বাধ্য করেছে,বাধ্য করেছে আমার ভাগ্য
.
–কিভাবে?আচ্ছা তোমার এই পথে আসার গল্পটা আমাকে বলবে?খুব শুনতে ইচ্ছা করছে(খুব আগ্রহের সাথে)
.
–হা হা হা,পতিতাদের জীবন কাহিনী শুনে আপনি কি করবেন?
.
–শুনার ইচ্ছা,প্লীজ বলো,
.
মেয়েটাকে অনেক রিকোয়েষ্ট করার পর মেয়েটা রাজি হলো৷ওপরের দিকে তাকিয়ে মেয়েটা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল,আর তারপরই বলতে লাগল
.
–জানেন,ছোটবেলায় আমার বাবা মারা যায়,তারপর থেকেই আমার মা আমাকে মানুষের মত মানুষ করার জন্য অনেক পরিশ্রম করে৷নিজে না খেয়ে আমাকে খাওয়াতো,নিজে কষ্ট করে আমার লেখাপড়া চালাতো,হঠাৎ করেই একদিন বাসায় এসে দেখি মা অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে,তখন মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম৷অনেকগুলো টেষ্ট করালো,টেষ্টের টাকাগুলো মানূষের কাছ থেকে ধার করে পরিশোধ করি,কিন্তু রিপোর্টের পর জানা গেল,মায়ের লিভার ডেমেজ হয়ে গেছে,এখন বাঁচাতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন কিন্তু আমার হাতে কোনো টাকা ছিল না,কিভাবে টাকা জোগাড় করা যায়,সেটাই তখন ভাবতেছিলাম কিন্তু কোনো উপায় পেলাম না,কেউ আমাদের পাশে এসে দাড়ালো না৷চারিদিকে শুধু অভাব আর অভাব৷আর সবকিছু কেমন কদাকার?আমি তখন সবকিছুই অন্ধকার দেখেছিলাম,কি করব বুঝে উঠে পারছিলাম না
.
বলেই আকাশের দিকে আরেকটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল.
.
–তারপর?
.
–তারপর অসূস্থ মাকে বাসায় নিয়ে গেলাম৷মা বলল ঢাকায় মামার বাসাতে আসতে কারন আমার মামা অনেক বড়লোক,হয়ত বোনের অসূস্থতার জন্য ওনি আমাদের হেল্প করবে৷মায়ের কথা মতই সেদিন প্রথম এই ঢাকা শহরে আসলাম,মামার বাসায় যেতে মামা অনেক খুশি হয় কিন্তূ টাকার কথা বলতেই মখটা কেমন অন্ধকার করে ফেলে,মুখটা অন্ধকার করেই বলল,আমাকে কিছুদিন থাকতে,ওনি একটা ব্যবস্থা করবে,মাকে এই অবস্থায় ছেড়ে দূরে থাকতে খুব কষ্ট লাগছিলো,তবুও থাকলাম কারন মাকে তো আমাকে বাঁচাতেই হবে,এই দিকে মামা,মাকে একটা হসপিটালে ভর্তি করে দিল আর আমাকে ওনার কাছেই রেখে দিল৷দু তিন দিন পর মামিসহ মামাতো বোনেরা কোথাও বেড়তে গেল৷বাসায় আমি একা শুয়ে আছি,আর মায়ের কথাই ভাবছিলাম হঠাৎ কেউ একজন আমার রুমে ডূকল৷তাকাতেই দেখলাম আমার মামা,আমি একটু হাসি দিলাম কিন্তু সেই হাসিটা বেশি স্থায়ী হলো না
.
–কেন
.
–কারন তখনই মামা দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিল,ভালো মানুষের পিছনে মামার এত জঘন্য একটা রুপ সেদিনই আমার কাছে প্রকাশ পায়, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার মামা,আমার ওপর ঝাপিয়ে পরল,মামাকে বাবা পর্যন্ত ডেকেছিলাম,পায়ে হাত দিয়ে বারবার বলেছিলাম,বাবা যে জায়গায় মামাও সে একই জায়গায়,আমি তোমার মেয়ে মত,কিন্তু সেদিন এই অসহায় মেয়েটা,নিজের আপন মামার হিংস্রতার কাছ থেকেও রেহাই পেলো না,পশুর মত আমাকে ………..

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

.
বলেই কেমন ফুপিয়ে কান্না শুরু করে দিল৷ওর কথাটা শুনে আমিও নিজেও কেদে দিলাম৷কি বলছে এই মেয়েটা?আর কিভাবে মানুষ এতটা নিচ হতে পারে?আল্লাহ,তুমি এর আগে ওই জানোয়ারের বাচ্ছাটাকে শেষ করে দিলে না কেন?ওই জানোয়ারের বাচ্ছাকে আমি মাফ করব না৷আমি নিজে ওকে শেষ করে দিব৷
আমি তখন কেমন থরথর করে কাপতে লাগলাম৷একটা মেয়ে কতটা কষ্ট পেতে পারে,কেনই বা এমন পরিস্থিতে আসে,ওকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না,মানুষ পতিতাদের অনেক খারাপ বলে কিন্তু একটা মেয়ে কেন পতিতা হয়?কেন নীজের সব কিছু টাকার জন্য অন্যের কাছে বিলিয়ে দেয়,সেটা হয়ত সবারই অজানা৷আর এগুলো ভাবতেই তখন শুধু চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি বের হচ্ছে…কাপাকাপা কন্ঠে বলতে লাগলাম
.
–তা তার পর
.
মেয়েটা ওপরের দিকে তাকিয়ে অনেকগুলো দীর্ঘশ্বাস ফেলল,তারপর কিছুক্ষন নিরবতা৷একটু পরই নিরবতা ভেঙ্গে বলতে লাগল.
.
–সেদিন আমার সব কিছু ওনি কেড়ে নিয়েছিল,প্রচন্ড ব্যাথায় সেদিন বিছানা থেকে উঠতে পারিনি৷ওনার হিংস্রতা এতই বেশি ছিল যে,আমাকে একটুও ছাড় দেয় নি,ওনার কাজ শেষে একটা কথাই বলছিল,তোকে ভোগ করে অনেক আনন্দ পেলাম,আর মনে রাখিস এগুলো যদি কাউকে বলিস,তাহলে এই ভিডিওটা দেখ?আমাকে তখন একটা ভিডিও দেখালো,যেটাতে মামার হিংস্রতাই দেখতে পেলাম৷ভিডিওটা দেখিয়ে বলল,তোর এই ভিডিও আমি ভাইরাল করে দিব,তোর আম্মুর চিকিৎসার একটা টাকাও দিবো না৷তোর মা মরে যবে,
তখন নিজের কথা ভুলে গেলাম,মায়ের মুখখানায় মনে পড়ে গেল৷না মাকে কোনোভাবেই মরতে দেওয়া যাবে না৷তখন আমি চূপ করে গেলাম৷এর পর থেকেই মামা সহ,তার অনেক বন্ধু মিলে প্রতিদিন আমাকে হাত পা বেধে ,জোর করে ধর্ষন করত,আর আমাকে দিয়ে মামা ব্যবসা শুরু করে দিল,আর তারপর একটা সময় মামা আর মায়ের চিকিৎসার জন্য আগের মত টাকা দেয়না৷মায়ের অবস্থাও দিন দিন খারাপ হতে লাগল৷মামাকে কিছু বললেই আমাকে পতিতা বলে মারধর করতো৷যখন দেখলাম মায়ের আর চিকীৎসা চলছে না৷তখনই ওখান থেকে পালিয়ে বের হয়ে গেলাম৷আর বের হয়েই আপনার কাছে.
.
কথাগুলো বলেই মেয়েটা থরথর করে কাপতে লাগল৷আর প্রচন্ড কান্না করতে লাগল৷
আমি তখন নিজেও নিজেকে শান্ত করতে পারছিলাম না৷আর এই মেয়েটি কিভাবে নিজেকে শান্ত করবে?
জীবনে অনেক পতিতার সাথে রাত কাটিয়েছি কিন্তু কোনোদিন কারও এই পতিতা হবার গল্প শুনিনি৷শুধু ভোগ করেই চলে এসেছি৷জানতেও চাইনি তাদের এই পতিতা হবার কারন৷আর আজ যখন কোনো মেয়ের মূখে তার জীবন কাহিনি শুনলাম নিজের বুকটাই তখন তাদের জন্য কষ্টে ফেটে যাচ্ছে৷না এই মেয়েটা অনেক কষ্ট করেছে৷আর করতে দিবো না৷ওর কষ্টের জীবন আমি এখানেই শেষ করে দিবো৷কষ্ট ওর এখানেই শেষ,এবার ওর মূখে একটু হাসি দেখতে চাই,
.
তখন বুঝতেই পারলাম ,মেয়েটা টাকার জন্য সব করতে পারবে,এখন আমি তাড়িয়ে দিলে আমার কাছ থেকে চলে গিয়ে আবার অন্য কারো সাথে মিশবে!
তার চেয়ে ভালো এই মেয়েটাকে অনেক দিনের জন্য আমার কাছেই রেখে দেই৷তখনই বললাম
.
.
–আমি তোমার পাশে থাকতে চাই,রাখবে তোমার পাশে?
.
–হা হা হা!পতিতাদের সাথে থাকতে নেই,আর আমি ছেলে জাতটাকেই এখন ঘৃনা করি,আপনি আপনার কাজ শেষ করুন৷এমনিতেই রাত প্রায় শেষ পর্যায়,
.
বুঝতে পারলাম,ছেলেদের প্রতি ওর যথেষ্ঠ ঘৃনা জন্মে গেছে,এভাবে মেয়েটাকে আমার কাছে রাখতে পারব না৷অন্য একটা বুদ্ধি খাটাতে হবে.
–ওই যে একটা ব্যাগ দেখছো,ওই ব্যাগে অনেক টাকা আছে,প্রায় ১০লক্ষ টাকার মত আছে৷আমি জানি এই ১০লক্ষ টাকা তুমি পতিতা পেশায় কয়েক মাসেও কামাতে পারবা না৷তো আমি যদি তোমাকে ওই টাকা গুলো দিয়ে দেই,বিনিময়ে আমাকে কি দিবা?
.
কথাটা বলতেই মেয়েটা কেমন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল৷আর বলতে লাগল
,
–আপনি যা চাইবেন তাই৷দরকার পরলে সারাদিন,সারারাত,সব সময় আপনার সাথে কাটাবো ,কিন্তূ তারপরও আমার মাকে বাচাঁনোর জন্য টাকাগুলো দরকার(বলেই কান্না শুরু করে দিল)
.
–হুম৷একটা শর্তে তোমাকে টাকাগূলো দিবো
,
–কী শর্ত?
.
–কাল থেকে শুরু করে টানা দুমাসের জন্য তুমি আমার৷সব সময় আমার সাথে থাকতে হবে৷যা বলব তাই করতে হবে,কোনো কথায় না করতে পারবা না৷এই দুমাসে তোমার কাছে আমার যেটা যেটা ইচ্ছা সব তোমাকেই পূরন করতে হবে৷আমার সাথে রাত দিন,সব সময় কাটাতে হবে,রাজী আছো?
.
–আমি রাজি,তবুও টাকাগূলো আমার চাই,আমার মাকে বাঁচাতেই হবে,,
,
অবাক হয়ে গেলাম৷মেয়েটা বিন্দু পরিমানও ভাবার টাইম নিলো না৷এক কথায় সে রাজি৷
.
–ভেবে বলছো তো?
,
–হুম,আমি রাজী
.
–ঠিক আছে,টাকাগুলো তুমি কালই পাবে৷আর এখনি আমার সাথে চলো
.
–কোথায়?আপনি আপনার কাজ করবেন না?আমাকে তো সকালে বাসায় যেতে হবে
,
–হুম৷চূপ চাপ এখন আমার সাথে চলো,
.
-হুম
.
তখনই মেয়েটাকে আগে ওর শাড়িটা পড়িয়ে দিলাম৷আর ওকে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বললাম৷তারপরও ওকে নিয়ে আমার গাড়িতে উঠলাম৷ও কেমন ভয়ে ভয়ে গাড়িতে উঠল৷
প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে মেয়েটা৷হয়ত ভাবছে তাকে কোথাও নিয়ে কীছু করে ফেলব৷গাড়ি ড্রাইব করছি,
.
হঠাৎই মেয়েটাকে বললাম
,
–এই মেয়ে,এতক্ষন আমার সাথে আছো,অথচ নামটাই জানিনা,আর কাল থেকে তো তুমি আমার সাথেই থাকবা,তো নাম কি তোমার?
.
–জ্বি,মোসা:আনিক–জ্বি,মোসা:আনিকা আক্তার
,
–খুব সুন্দর নাম,রুপের সাথে নামের অনেক মিল আছে৷আর আমার নাম আবিদ হাসান ৷সবাই আবিদ বলেই ডাকে৷এখন থেকে তুমিও আবিদ বলেই ডাকবা
,
–আমি নাম ধরে ডাকতে পারব না৷স্যার বলে ডাকি(একদম নিচু স্বরে)
.
–কি বলছি?আমি যেটা বলছি চূপ করে সেটাই শুনবা,বুঝছো?
.
–হুম৷
.
–বলো আবিদ
,
–আ আ
,
–আ আ করছো কেন?বলো আবিদ
,
–আবিদ
.
–হুম৷এবার বলো গ্রামের বাসা কোথায়?আমরা এখন সেখানেই যাবো
,
–কিন্তু…
.
–কোনো কিন্তু নাই,এই দিকে তোমার আম্মুর অবস্থা অনেক খারাপ,তাই দেড়ি করা একদমই লাভ হবে না৷
.
–হুম
.
তারপরই ওর থেকে ঠিকানা নিয়ে ওদের গ্রামের বাসায় চলে গেলাম৷যেতে যেতে প্রায় সকাল হয়ে গেল৷আর ওর আম্মুকে ওখান থেকে নিয়ে আসলাম৷ঢাকাতে এনে বড় একটা ভালো হসপিটালে ভর্তি করে দিলাম৷
.
তখনই আনিকা বলে উঠল
,
— আপনার এই ঋন কিভাবে শোধ করবো আমি?হয়ত নিজের জীবন দিয়ে দিলেও আপনার এই ঋন আমি শোধ করতে পারব না
,
–শোধ করার দরকার নেই৷আর হ্যা শর্ত অনুযায়ী,আজ থেকে আমি যা যা বলব,সব তোমাকে মানতে হবে
.

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–হুম,বলুন আমাকে কি করতে হবে
,
–এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবা,আর আমার নাম ধরেই ডাকবা,যদি এর ব্যাতিক্রম করো,তাহলে……
.
–এই না,আপনি যেট বলবেন ,সেটাই করব
,
–আবার আপনি?
.
–তুমি
,
–হুম৷তোমার আম্মু এখন ঘুমাবে,ডাক্তার ওনাকে ঘুমেহ ঔষধ দিছে৷
,
–হুম
.
আনিকাকে নিয়ে বাসায় আর আসলাম না৷একদম কাজি অফিসে চলে গেলাম৷কাজী অফিস দেখে আনিকা বলে উঠল
,
–কাজী অফিসে কেন?আর কার বিয়ে?
,
–তোমার আর আমার বিয়ে
.
–মানে(অবাক হয়ে)
.
–তুমি আমার কাছে দুমাস পর্যন্ত আছো,আর আমি তোমাকে পতিতা পরিচয়ে আমার বাসায় রাখতে পারব না৷সো দুইমাসের জন্য আমার বউ হয়ে থাকবা
.
কথাটা শুনার পর আনিকা কেমন থ হয়ে গেল৷
.
–দুমাসের জন্য বিয়ে?
.
–হুম
,
–আমি পারব না এই বিয়ে করতে
,
-দেখো শর্ত অনুযায়ী তোমাকে করতেই হবে৷আর আমার সাথে দুমাস ওইভাবে মেলেমেশা করলে পাপের পরিমানটা অনেক বেশি হবে,আর এভাবে করলে সেটা আর হবে না
.
— হা হা হা
.
–হাসছো কেন?
.
–হাসব না তো কী করব?তোমরা বড়লোকরা পারই বটে৷তোমাদের কাছে সব কিছুই কেমন পুতুল খেলা মনে হয়৷আর আমাদের পুতুল ভেবে কত কিছুই না করছো৷সবই টাকা?
তবে কষ্ট নেই,আমি পুতূল হয়ে তোমার খেলায় থাকতে রাজী আছী৷কারন ….
.
–এতকীছু জানিনা৷চলো
.
তারপর আনিকার সাথে শর্ত মতাবেক বিয়েটা হয়েই গেল৷দুমাসের জন্য একটা পতিতা মেয়েকে বিয়ে করে নিলাম?
ওকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷
আপাতত একটা বাসর সাজালাম৷
বাসর ঘরে আনিকা বসে আছে৷
ডুকতেই আমাকে সালাম করল
.
–আরে আরে সালাম করছো কেন?
.
–বাসর রাতে বাঙালি মেয়েদের এটাই করতে হয়
,
–হুম৷তবে এটা তো মাত্র কয়েকদিনের বিয়ে,তাই না?
.
–হুম৷তবে একটা কথা মনে রাখবে,বাঙালি মেয়েদের বিয়ে বিয়েই৷৷সেটা শর্তে কয়েক দিনের জন্যই হোক বা সারাজীবনের জন্য
,
–হুম৷
.
তারপরই আনিকাকে বিছানায় উঠালাম৷আর জিজ্ঞাসা করলাম
.
–একটা সত্যি কথা বলবে?
.
–হুম
.
–আচ্ছা বাসর রাতে,তোমার কি কি ইচ্ছা ছিল
,
–হা হা হা
.
–হাসছো কেন?
.
-আপনি আমাকে ভোগ করবেন তো করেন?এত নাটকের কি দরকার?
,
–একদম চুপ করে থাকবা ,আমি যেটা বলছি সেটা বলো
.
–আমি একটা ভাড়াটে পতিতা,আমার কোনো ইচ্ছা নেই৷তবে বাঙ্গালি প্রত্যেকটা মেয়েদের খুব ইচ্ছা,বাসর রাতে লাল শাড়ী পড়ে স্বামির ঘরে যাবে৷তার সাথে নিজের সব কিছু ভাগাভাগি করে নিবে,আর তার সাথে অনেক গল্প করবে,আর সব সময় তার স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমাবে৷কখনই আলাদা হবে না
,
.
.
.
চলবে……..