Tuesday, August 12, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1561



বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৯

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#part_19

দরজা অফ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আর মিটিমিটি হাসছি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে এটা আমি সিউর হয়ে গেছি। আজ যখন ভাইয়াকে বলেছিলাম ” তুমি বলে আমাকে ভালোবাস?”
ভাইয়া আমার কথা শুনে হকচকিয়ে গেছিলো তাঁর চোখে মুখে আমি ভয় দেখতে পেয়েছি যেন আড়াল করা জিনিস সামনে চলে এসেছে। ভাইয়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
কিন্তু সমস্যা একটাই ভাইয়া শিকার করছে না। কেন শিকার করছে না এটাই মাথায় আসছে না। কপাল কুঁচকে আঙ্গুল চিবাতে চিবাতে ভাবছি
কি জন্য ভাইয়া আমাকে নিজের ভালোবাসার কথা বলছে না। আর নাকি আমি ভুল ভাবছি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে না।
উফ মাথা খারাপ হয়ে যাবে এতো কিছু ভাবতে গেল। সব ভাবনা দূরে যা। আদনান ভাই আমাকে ভালোবাসে এটাই ঠিক হুম ঠিক না হলে ঠিক করবো।
ভাইয়া আমাকে ভালো বাসলে ভালো আর না বাসলে বাসিয়েই ছারবো।
আর তোমাকেও আমি ভয় পাব না ভাইয়া এবার থেকে আমার মিশন শুরু তোমাকে দিয়ে আমি বলিয়েই ছারবো তুমি আমাকে ভালোবাস হু।
সামনের কাটা ছোট চুল গুলো ফূ দিয়ে উরিয়ে সরিয়ে দিলাম।

তখনই ঠাস ঠাস শব্দ এলো কানে সাথে ডাক আওয়াজ ভাইয়ার। ভাইয়া জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে দরজায় আমি শব্দ শুনেই চমকে উঠলাম সাথে ভয় পেলাম।
উফ দোলা তুই এতো ভীতু কেন? এতো ভীতু হলে ওই গম্ভীর খাটাশ আদনান এর সাথে প্রেম করবি কেমনে? তোকে সাহসী হতে হবে।
আমি আর তোমাকে ভয় পাব না ভাইয়া।
ওই পাশ থেকে দরজার এতো জোরে ধাক্কাচ্ছে যেন দরজা ভেঙে ফেলবে?
“দরজা খোল দোলা।”
ভাইয়া আমাকে দরজা খুলতে বলছে খুললেই আমাকে দ
ধমকানো শুরু করবে জানি কিন্তু আজকে আমি ধমক খাবো ইচ্ছে করে।
তার আরো আধাঘণ্টা পর আমি দরজা খুললাম। ততক্ষনে আমার দরজা মনে হয় অধেক ভেঙে গেছে উফ।

আদনান দরজার বাইরে আগুন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আধাঘণ্টা ধরে দরজা ধাক্কা ধাক্কি করছে কিন্তু খুলছে না দোলা। রাগে ওর শরীর কাঁপছে।
অবশেষে দরজা খুলা হলো দরজা খুলতেই আদনান রেগে ভেতরে ঢুকে গেল।
“তোকে আজকে আমি কি করবো নিজেও জানি না দোলা। তুমি লিমিটের বাইরে চলে গেছিস আজ তোর…
আর কিছু বলতে পারলো না দোলাকে দেখে। আমি মুচকি মুচকি হাসছে আদনান ভাই এর দিকে তাকিয়ে।
আদনান ভাই আমার দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে থাকবে না কেন আমি যে শাড়ি পরে আছি আসলে কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না তখন মনে পরলো ভাইয়া শাড়ি পছন্দ করে শাড়ি পরে ফেলি কিন্তু সমস্যা আমি তো শাড়ি পরতে পারি না।
ইউটিউব দেখে কোন রকম পেচিয়ে পরেছি শাড়ি।
ভাইয়া আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে আমি এখানে ঠিক করছি তো ওখানে এই ভাবে হা করে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় পড়া ভুল হয়েছে।
“উফ ভাইয়া এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন? আমার শাড়ি পড়া কি ভুল হয়েছে।”
ভাইয়া কিছু না বলে আচমকা হাহাহা করে হেসে উঠলো আমার তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে।
“কি হলো ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো হাসছো কেন?”

“এটা কি পরেছিস?”
“তোমার কি চোখ নাই দেখছো না শাড়ি পরেছি।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।
“এটা শাড়ি পড়া হয়েছে।” বলেই আবার হাসতে লাগলো।
“উফ এতো ভুল ধরো না তো! কতো কষ্ট করে শাড়ি পরলাম কোথায় প্রশংসা করবে তা না ভুল ধরছো!এ আমি কার প্রেমে পরলাম রে বাবা।”
আমার কথা শুনেই ভাইয়ার হাসি থেমে গেল আর মুখ টা গম্ভীর করে ফেলল।
“কি বললি?”
আমি বললাম,,”ক‌ই কি বললাম?”
“কার প্রেমে পরেছিস?”
আমি ভয় পাচ্ছি ভেতরে ভেতরে এই বুঝি খাবো একটা চর। ভীতু হয়ে আসছে আমার চোখ মুখ।
তবুও সাহস রাখছি না না একদম ভয় নয় ভয় পেলে ভাইকে পাওয়া হবে না।
সব ভয় ভুল সাহসী হতে হবে। হুম দোলা সাহসী ইয়েস।
ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমি ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছিলাম এবার না পিছিয়ে থেমে গেলাম। আর সাহসী হয়ে ভাইঢ়ার চোখের দিকে তাকালাম।
আমাকে থেমে যেতে দেখে ভাইয়া ও থেমে গেল।
হয়তো আমার এমন লুক ভাইয়া আশা করছি নি। আমার ভয় পাচ্ছি না এটা ভাইয়া দেখে চরম অবাক।
আমি দুইপা এগিয়ে একদম ভাইয়া কাছে চলে এলাম ভাইয়া থতমত খেয়ে গেল আমার এগিয়ে আসা দেখে।
“ভাইয়া ভয় পেলে আমাকে এগিয়ে আসতে দেখে।”
ভাইয়া বড় বড় চোখ করে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার কথা হয়তো হজম করতে পাচ্ছে না যে আমি কিনা ভাইয়াকে দেখলে ভয়ে কাঁপতে থাকি সেই আমি এতো সাহস দেখাচ্ছি। আসলেই আজ ও কাঁপছি সেটা বাইরে না ভেতরে।যা ভাইয়া দেখতে পাচ্ছে না আমি জানি সেটা।
আমি ভাইয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললাম ভাইয়া কিছু বলল না অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমার এটা দেখে আরও সাহসি হয়ে উঠলাম কারণ এখনো ভাইয়া আমাকে ধমক দেয়নি। আর আচমকা ভাইয়ার গলা জরিয়ে ধরলাম।
আমি জ্বিভা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিচ্ছি ভয়ে এর কারণে এর পরিমান কি হবে জানি না। ভাইয়া এবার চমকের চরম সীমায় পৌঁছে গেল। স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চমক নেস কমিয়ে বললো,,,

“কি করছিস এসব ছার আমাকে?”
গলার হাত ছুকানোর চেষ্টা করতে করতে। আমি ছারছি না আর ও শক্ত করে ধরে নিয়েছি।
“কি অসভ্যতামি হচ্ছে ছার? আমি তোর ভাই হয় সম্পর্কে?”
“ভাই মাই ফুট।ইউ আর মাই লাভ। আমি ভালোবাসি তোমায় তূমিও তো আমি জানি তাই এতো আক্টিন না করে শিকার করো।”
“দোলা আমার গলা থেকে হাত সরা আমি তোকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করতে চাইছি না। ভালোই ভালোই ছেড়ে দে আর পাগলামি করা বাদ দে।”
“আমি কোন পাগলামি করছিস না ভাইয়া। তুমি আমাকে ভালোবাসো শিকার করো না।”
ভাইয়া বিরক্ত হয়ে নাক মুখ কুঁচকে বলল,,
“কে তোকে এমন আজগুবি কথা বলেছে আমাকে বল?”
“কেউ বলে নি আমি জানি।”
“আচ্ছা বলতো আমাকে শাড়ি পরে কেমন লাগছে। আজ প্রথম তোমার জন্য নিজে কষ্ট করে শাড়ি পরেছি‌।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“ছারবি নাকি?”
আর সাহস কোলালো না ফট করে ছেড়ে দিলাম ভাইয়াকে আর একটু দূরে এসে দাঁড়ালাম।

“তুই খুব ভার বেড়ে গেছিস। এইসব…
“ভাইয়া ওফ সরি ভাইয়া তো বলবো না বলেছিলাম “কিন্তু অনেকদিনের অভ্যাস তো তাই ভুল হচ্ছে।”
আর একবার বাজে কথা বললে একটা চর মেরে দাঁত ফেলে দেব।”
“উফ ভাইয়া একটা চর মারলে কি দাঁত পরে। তুমি কি যে বলো না।”
“আবার মুখ মুখে তর্ক করছিস ইডিয়েট।”
“তর্ক কোথায় করলাম ভাইয়া।আর তুমি আমার সাথে প্রেম করবে থেকে করবা বললে না তো।”
“আবার এবার কিন্তু সত্যি…
ভাইয়া কথা শেষ করার আগেই আম্মু চলে এলো রুমে আর আমাদের বলল,,
“কি হয়েছে আদনান বেটা?”
আমি কাচুমাচু মুখ করে একবার ভাইয়া তো একবার আদনান ভাইয়ের দিকে তাকাচ্ছি। আম্মু এক এসব বলে দেবে না তো।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
” তুই শাড়ি পরেছিস কেন?”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
“ওই আসলে পড়া শিখেছিলাম।”
আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল, সত্যি
আমি হুম বললাম। আম্মু বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আদনান ভাই আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকে ফুসফুস করতে করতে আম্মু কে নিয়ে চলে গেল।
আমি দাঁত দিয়ে নখ কাটছি আর ভাবছি আম্মু কে সব বলে দেবে না তো ভাইয়া।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৮

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_18

চোখ বন্ধ করে ছিলাম ভয়ে। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। একেতে আদনান ভাইয়ের গায়ে সাথে ঘেঁষে আমিও বিছানায় পরে আছি। তার উপর ভাইয়ার আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি একবার তাকিয়ে আবার ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছি।
আদনান ভাইয়া হতদম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই সময় এখানে আমাকে একদম আশা করেনি।
হতদম্ব নেস কাটিয়ে বলল,,
“তুই আমার রুমে কি করছিস?”
আমি হকচকিয়ে চোখ মেলে তাকিয়ে এদিক ওদিক তাকাতোকি করতে লাগলাম।
তারপর ফট করে উঠে বসতে গেলাম বিছানায় থেকে ভাইয়া আমার হাত ধরে আটকে দিল।
আমি থমকে গেলাম। ভয়ার্ত চোখে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমার চোখ মুখে অসম্ভব ভয়। ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
উওরের আশায়।

“ভাইয়া আমি আসলে ওই তোমাকে ডাকতে এসেছিলাম।”
কেন? আজকে শুক্রবার তুই জানিস না আমি এতো সকালে উঠিনা।
“হুম কিন্তু আমি তো ভুলে গেছিলাম।”
তুই এখানে কেন এসেছিস সেটা বল।
আমি আচমকা বলে উঠলাম,,,” তোমাকে দেখতে।”
মুখ ফসকে কথাটা বেরিয়ে এলো। কথাটা বলেই চোখ বড় বড় করে জ্বিভে কামড় দিলাম। হায় আল্লাহ কি বলে ফেললাম ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকালাম ভাইয়া আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। একটা ধমক খাওয়ার জন্য এই বুঝি খেলাম একটা ধমক।
কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছু বলছে না নীরব হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

আমি কিছু বলতে যাব আদনান ভাই আমার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিল। আমার বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়া তার হাত দিয়ে আমার কপালে চুল সরিয়ে দিল আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। আমার সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ শক খেলে। ভাইয়া আলতো স্পর্শে আমি নাম না জানা অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম দিচ্ছিলাম।
তখন আমার জল্পনা কল্পনা ভঙ্গ করে ভাইয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসলো।আমি হকচকিয়ে উঠে বসলাম।
ভাইয়া…
তুই এখানে এসে ঠিক করিস নি।
আমি থমকে চুপ করে গেলাম।
ভাইয়া উঠে ওয়াশ রুমে চলে গেল। আমি হতদম্ব হয়ে বসে আছি তারপর উঠে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দেখি দরজা লক করা।
মাথায় হাত দিয়ে পিছিয়ে এলাম। ভাইয়া দরজা লক করেছে কেন?
আমি পেছাতে পেছাতে কারো সাথে ধাক্কা খেলাম তাকিয়ে দেখি ভাইয়া। আমি ভাইয়ার বুকের সাথে ধাক্কা খেয়েছি। আমি ছটকে সরে এলাম।

ভাইয়া আমাকে বলল,,
“এবার বল কি বলেছিলি আমাকে দেখতে এসেছিস?”
বলতে বলতে ভাইয়া আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আমি কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে সরু চোখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে।
তাঁরপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি হলো বল?”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
“না মানে আমি তো…
“তুই একটু আগে এটাই বলেছিলি।”
আমি মাথা নেড়ে না বললাম।
“আবার মিথ্যা বলছিস?”
বলেই আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো আমি হকচকিয়ে পেছাতে লাগল। আচ্ছা ভাইয়া কি আমাকে মারবে। পেছাতে পেছাতে আলমারির সাথে ঢেকে গেলাম। ভাইয়ার আসতে আসতে একদম আমার কাছে চলে এলো।
“সত্যি আমি ওইটা বলি নাই ভাইয়া।”
“আচ্ছা তাহলে কি বলেছিস? ”
“আমি তো বলেছি মা–মনি তো-মা-কে ডা-কতে ব-লেছিল।”
“তাই কিন্তু আমার তো শুনেছি তুই আমাকে দেখতে এসেছিস।”
আমি ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে।
“দেখছিস ও। আচ্ছা কি দেখতে এসেছিলি আমাকে।‌ আগে কখনো দেখেসনি‌।”
দেখেছি।”
“তাহলে কি দেখতে এসেছিলি।”
‘কিছু না।”
“সত্যি করে বল।”
” তুমি বলে আমাকে ভালোবাস।”
হুক করে প্রশ্ন করে উঠলাম,,, ভাইয়া আমার কথা হয়তো হজম করতে পারেনি। কথা বলতে বলতে ভাইয়া আমার দিকে ঝুঁকে ছিল আমার কথায় হকচকিয়ে গেল আর মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ালো।

আমি নিজেও প্রশ্ন করে ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে ফুসফুস করে উঠলো।
“যা বেরিয়ে যা আমার রুম থেকে। এমন কথা তুই বললি কি করে? আর কে বলেছে এই কথাটা।”
আমি ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম।
“কি হলো বল কেন এমন কথা বলেছে?”
আমি ভাইয়ার কথায় কেঁপে উঠলাম।
“কেউ বলেনি।”
“তাহলে বললি কেন আর আমার কি দেখে তোর মনে হলো আমি তোকে ভালবাসি।”
আমি বললাম,,”তুমি
“হ্যা বল আমি।”
আমি বললাম,,” কিছু না আমার মনে হয়েছে জাস্ট।”
ভাইয়া ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে বলল,,”এইসব মনে কেন হবে তোর।ইডিয়েট?”
ভাইয়া আমার মাথায় ঢোকা দিয়ে বললো,,
“লেখাপড়া কর ভালো করে। এসব আজেবাজে চিন্তা মাথায় আনবি না আর।”
আমি হুম বললাম।
ভাইয়া বলল,,”মনে থাকবে তো। আর আমার রুমে আসবি না এইভাবে।”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
ভাইয়া আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,,,
” তোর ব্যাথা কমেছে?”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।
“আর কখনো এমন কাজ করবি না যাতে তোর নিজের ক্ষতি হয়।”
“আচ্ছা।”
“যা এবার।”
“হুম।”
ভাইয়া হাতের ইশারায় চলে যেতে বলল আমি ছারা পেতেই ভৌ দৌড় দিলাম।
এক দৌড়ে নিচে এসে হাঁপাতে লাগলাম।
বুকের উপর হাত রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি।
মামনি আমাকে এতো সকালে বাসায় থেকে চমকালো সাথে হাঁপাতে দেখেও বিস্মিত হলো।

“কিরে দোলা তুই কখন এলি? আর তোর পেট ব্যাথা কমেছে।”
“হ্যা মামনি। ”
“কখন এলি আর উপরেই বা গেলি কখন?”
মামনি সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বলল।
আমি বললাম,,” ওই একটু আগে।”
“ওহ উপরে গেছিলি কেন ?”
“আমি আসলে ওই…
কি বলবো বুঝতে পারছি না। এদিক ওদিক তাকাচ্ছি।
“কি বল?”
“তুমি উপরে কিনা দেখতে।”
মামনি বলল,,”আমি এই সময় উপরে থাকি না। জানিস তো আমি রান্না করি।”
“আমার ভুলেই গেছিলাম।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
আমি মামনির সাথে চলে গেলাম।

আজকে কলেজে নেই অফ। তাই বাসায় এসেই ঘুম দিলাম। ঘুম ভেঙে গেল উঠে ছাদে এলাম হাতে ফোন নিয়ে কি মনে করে যেন ভাইয়ার নাম্বার এ কল করলাম। কিন্তু রিসিভ হলো না। কি করবো ভাবতে ভাবতে নেহা কে কল করলাম ও আজকের সব বললাম।
ও সব শুনে একটা কথায় বলল,,
“তোর ভাই তোকেই ভালোবাসে আমি সিউর দোলা কিন্তু শিকার করছে না। কোন কারণ অবশ্যই আছে।”
“আমাকে এতো ধমকাধমকি করলো তাও বলছি।”
“এখানে ধমক কোথায় খেলি তোর কেয়ার ও তো করলো।”
“হুম।”
ফোন কেটে দাঁড়িয়ে আছি। ওমনি চোখ গেল আদনান ভাইয়ের ছাদে ভাইয়া কিনারায় দাড়িয়ে আছে হাতে ফোন। আমি তাকাতেই উঁচু গলায় বলল,,
“ফোন কেন দিয়েছিস?”
আমি সব আকাম করেই বসে থাকি ফোন কেন দিলাভ জিজ্ঞেস করতে চলে এসেছে।
“তোমার সাথে প্রেম করতে।”
আমার কথায় ভাইয়া হকচকিয়ে গিয়ে।

“কি বললি?”
আমার এখন সাহস বেড়ে গেছে। তার মূল কারণ ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে।কেন জানি আমার কথাটা খুব বড় বিশ্বাস হয়েছে।
“তোমার সাথে প্রেম করার ইচ্ছা হয়েছে।”
নির্বাক ভঙিতে বললাম।
“হোয়াট! আর ইউ ম্যাড!”
“না আমি সত্যি বলছি ভাইয়া তোমার সাথে প্রেম করবো আমি।”
ভাইয়া এবার রেগে গেল।
“চর খাবি কিন্তু একটা।”
“উফফ সব সময় বকো না তো। ভাল্লাগেনা!”
“বকার মতো কাজ করে বলছিস বকবো না।”
“হুম বলছি। আর বকার মতো কাজ কি করলাম?”
“ভাই কে প্রেম করার কথা বলছিস এটা বকার মতো কাজ না বলছিস?” দাঁতে দাঁত চেপে বললো ভাইয়া।
আমি বললাম,,” কিসের ভাই ভাই করো বলো তো‌। তুমি কি আমার মায়ের পেটের ভাই নাকি হ্যা।আজ থেকে তোমাকে আর ভাই বলবো না যাও ‌”
“তুই এমন পাগলামী করছিস কেন? আর….
“এতো কথা না বলে বল প্রেম করবা কিনা।”
ভাইয়া রেগে চলে গেল ছাদ থেকে আমি সেদিকে তাকিয়ে থেকে দৌড়ে রুমে এসে দরজা আটকে দিলাম।জানি এখন ভাই এখন এখানে আসবে।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৭

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_17

পেট চেপে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছি আমি। আমার সামনে বসে আছে ডাক্তার আর পাশে গম্ভীর মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে আদনান ভাই। আমার দিকে শক্ত লাল চোখ করে তাকিয়ে আছে পেট ব্যাথার মাঝেও ভাইয়ার দিকে তাকালে আমার কান্নার রেশ কমে যাচ্ছে ভয়ে।
ডাক্তার চলে গেল আমাকে দেখে ভাইয়া তার সাথে গেল বাইরে। তখন আম্মু গরম পানির ভাপ দিতে এলো আমার পাশে আমাকে ছুঁতে বলে ভাপ দিতে লাগলো এতে নাকি ব্যাথা কমে।
কাঁদতে কাঁদতে আমার নাক মুখ লাল হয়ে গেছে।
ভাপ দেওয়ায় ব্যাথা কম লাগছে হালকা দশ মিনিট পর ভাইয়া এলো ওষুধ নিয়ে। তার দিকে তাকালেই আমি ভয়ে আতকে উঠি।
আম্মু উঠে বাইরে চলে গেল গরম পানি রাখতে মামনি আমার পাশে বসে আছে।
ভাইয়া আমার কাছে এসে দাঁড়ালো।

কি খেয়েছিলি?
ভাইয়া এখন ও জানে না কি জন্য এতো পেট ব্যাথা হয়েছে আমার। তখন মামনি ভাইয়াকে কল করে বলেছিল আমার কথা আর ছুটে চলে এসেছে। ডাক্তার নিয়ে এসেছে ভাইয়া জানে আমি গন্ডগল করে কিছু খেলেই এমন হয়। তাই তো এমন গম্ভীর মুখ করে তাকিয়ে ছিল এখন সূযোগ পেয়েছে আর দেবে আমাকে।
“কি হলো বল? কি খেয়েছিলি আজকে আবার?”
ভাইয়া শক্ত কন্ঠে আমি ভয়ে মামনির হাত শক্ত করে ধরে শুয়ে আছি।
আমি কিছু বলছি না দেখে ভাইয়া এবার চিৎকার করে উঠল।
আমি কেঁপে উঠলাম। মামনি ও আতকে উঠলো এবং ভাইয়াকে একটা ধমক দিল।
“কি হচ্ছে কি আদনান তুই এমন করে দোলাকে ভয় কেন দেখাচ্ছিস? দেখছিস তো ভয় পাচ্ছে?”
ভাইয়া উত্তেজিত হয়ে হয়ে আবার বলল,,,” এন্সার মি। আর আম্মু প্লিজ ওর হয়ে কথা বলো না।”
আমি কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললাম,,,
“ভাইয়া আমি কিছু করিনি।”

আমার বলতে দেরি হলো ভাইয়ার আরেক ধমক দিতে দেরি হলো না।
“চুপ মিথ্যুক। সত্যি করে বল।”
আম্মু ও ততক্ষণে এ চলে এসেছে। আর রেগে ভাইয়াকে সব বলে দিল।ভাইয়া সব শুনে আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে টেনে বিছানার উপর বসিয়ে দিল।
আমি কাঁপতে কাঁপতে উঠে বসলাম। ভাইয়া কিছু বলবে তার আগেই ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলাম।
সবাই আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে আগেই বলেছি। আমার কান্না দেখেই ভাইয়া ও থেমে গেল।

আমি কান্না গলায় বললাম,,,”আর এমন করবো না প্রমিজ।”
ভাইয়া কড়া গলায় বলল,,”ইডিয়েট একটা তিন প্রিলেট ফুসকা কেউ খায়। রাক্ষসী একটা মরার শক হয়েছে তোর তাইনা। এতো খেয়ে আবার লুকিয়ে ছিলি‌।”
“আর খাব না। আমি আর জীবনেও ফুসকা খাব না।”
কাঁদতে কাঁদতে বললাম।
ভাইয়া আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি কান্না করছি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। ভাইয়া আমার দুগালে নিজের হাত রাখলো। আচমকা ভাইয়া এভাবে ধরায় চমকে উঠলাম।
কান্না থেমে গেল আমি স্তব্ধ হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। ভাইয়া আমার চোখের পানি নিজের হাত দিয়ে মুছে দিল আমি হতদম্ব হয়ে ভাইয়া দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাই আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,,,
“আর কখনো যেন এমন করতে না দেখি।নিজের ভালোটাতো বুঝবি কবে বল। তোর ভুলে অন্যের ক্ষতি তো হলো না তোর নিজের ক্ষতি হলো। নিজে কষ্ট পেলি সাথে আমাদের কেও কষ্ট দিলি।”

“সরি ভাইয়া আর এমন করবো না। আসলে তখন সবার সাথে খেতে খেতে কখন যে এতো বেশি হয়ে গেছে বুঝিনি।”অসহায় মুখ করে।
ভাইয়া রেগে না নরম হয়েই বললো,,
“আচ্ছা। এতোটা ছেলে মানুষি ভালো না এখন নিজের কেয়ার নিতে শিখ।”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।
ভাইয়া আচমকা আমার কপালে কিস করলো। আমি বিষ্ময়ে হতদম্ব হয়ে গেলাম। বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম কিন্তু ভাইয়া কাজটা করে এক সেকেন্ড ও দাঁড়ালো না ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে গেল।
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে ভাইয়ার যাওয়ার পাশে তাকিয়ে আছি।

আমার সারা শরীর কেঁপে উঠলো। ভাইয়া এমন করলো কেন? চারপাশে তাকিয়ে দেখি আম্মু মামনি কেউ নেই আমি একা তারমানে কেউ দেখেনি।
আমি বিস্মিত হয়ে নিজের হাত কপালে রাখলাম সাথে সাথে কেঁপে উঠলাম। মনে হচ্ছে ভাইয়ার শরীরে স্পর্শ করছি।
হার্টবিট অতিরিক্ত মাত্রায় লাফাচ্ছে। আমি ওইভাবেই স্তব্ধ হয়ে বসে র‌ইলাম। তখন আম্মু আসলো।
আর আমাকে বললো,,
” কিরে এভাবে বসে আছিস কেন পাথর হয়ে?”
আমি হকচকিয়ে গেলাম আম্মুর কথায়।
“কি হলো চমকালি কেন?”
আম্মু কথায় নিজেকে স্বাভাবিক করলাম।
“ক‌ই কিছু হয়নি তো।”
“তাহলে…
“আম্মু আমার পেট…
মাকে কথা ঘুরানোর জন্য বললাম। আম্মু আমার পেট এর কথা শুনেই আর কিছু বলল না আমাকে শুতে বলল।
আমি ঘুমানোর জন্য চোখ বন্ধ করলাম আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আমি চোখ বন্ধ করে ও ঘুমাতে পারছি না বারবার ওই সময়ের কথা মনে পরছে।

ওইভাবে কখন ঘুমিয়ে পরেছি মনে নেই। পরদিন সকালে উঠে চমকালাম। কারন রাতে আমি একটা সপ্ন দেখেছি তাও রোমান্টিক সপ্ন সেটা আর কাউকে নিয়ে না ভাইয়া কে নিয়ে।
দেখেছি ভাইয়ার আর আমি হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছি সাগর পারে। ভাইয়া আমার হাতে চুমু খেয়ে বলছে আমকে খুব ভালোবাসে।
আমি বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি যেন সপ্ন দেখছি।
সপ্নে আমি এসব দেখেছি। ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে এসব কেন দেখলাম।

উঠে ওইভাবেই বারান্দায় এলাম আর ভাইয়ার রুমে জানালা দিয়ে উঁকি দিলাম।
ভাইয়া ঘুমিয়ে আছে আমি হাঁ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে।
হ্যা হতেই পারে কাল ইলমা রাও তাই বলেছিলি।
কিন্তু ভাইয়া আমাকে ভালোবাসলে বলে না কেন? সমস্যা কি?
আজকে থেকে আমার মিশন শুরু ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে কিনা জানতেই হবে।
আমি নাচতে নাচতে রুমে এলাম পেট ব্যাথা কমছে কিন্তু একটু একটু আছে আর লাফালাফি করলাম না ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে সোফায় বসলাম।
হাতে চিপস নিয়ে খেতে লাগলাম আম্মু এসেই দিল ধমক আর চিপস নিয়ে চলে গেল।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি আম্মুর দিকে এসব খেলে নাকি পেটের পেন বারবে তাই।

আমি কি মনে করে বাসা থেকে বেরিয়ে এলাম।সোজা মামনির বাসায় চলে এলাম।
বাসায় এসেই মামনির সাথে দেখা না করেই আদনান ভাইয়ের রুমে এলাম পা টিপে টিপে।
আদনান ভাই বুকে ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। আমি আস্তে আস্তে ভাইয়ার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম তারপর হা করে তাকিয়ে র‌ইলাম।
ভাইয়ার পরনে কালো গেঞ্জি আর ট্রাউজার।
হালকা পাতলা একটা চাদর গায়ে জড়ানো ভাইয়ার মাথায় খাড়াখাড়া চুল এলোমেলো হয়ে কপালে পড়ে আছে। ভাইয়ার কপালে একটা তিল আছে বাম ভ্রু এর উপরে হাল্কা লাল লাল। ভাইয়ার ফর্সা ধবধবে গায়ে রং। ভাইয়ার চাপ দাঁড়ি যেটা আমার সব থেকে ফেবারিট।
আমি নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ভাইয়াকে দেখলেই আমার কেমন কেমন জানি লাগে। এতো ভালো কেন লাগে সত্যি কি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে।
এটা যদি সত্যি হয় আমি তো খুশিতে মরেই যাবো।
আমি ভাবতে ভাবতেই চিৎকার করে উঠলাম।
আর ভুল করলাম ভাইয়া জেগে গেল। হকচকিয়ে গেলাম ভাইয়ার আওয়াজ পেয়ে। ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ভাইয়া আমার দিকে ঘুম ঘুম চোখে। আমি ভাইয়ার তাকিয়ে দেখেই ভৌ দৌড় দিলাম কিন্তু আমার কপাল সব থেকে খারাপ।
এই দেখুন কি করে ফেললাম,,
উত্তেজিত হয়ে দৌড়ে দিয়েছি কিছু না দেখেই মে আমি যাচ্ছি কোথায় তাই তো পরলাম বিপদে। আমি দৌড়ে একদম খাটে গিয়ে পরলাম তাও ভাইয়ার উপরে।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৬

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_16

কলেজে থেকে বাসায় এসে নিজের রুমে থ মেরে বসে আদনান ভাইয়ের বারান্দায় তাকিয়ে আছি। আমার মাথায় একটা কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে শুধু। ইলমাদের কথা গুলো আচ্ছা সত্যি কি আদনান ভাই আমাকে ভালোবাসে।
ভ্রু কুঁচকে গালে হাত দিয়ে হা করে তাকিয়ে আছি আদনান ভাইয়ের রুমের দিকে আর আকাশ পাতাল ভেবে যাচ্ছি।
ভাইয়া আমাকে ভালোবাসলে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে কেন?
আর এতো ধমকায়‌ই বা কেন? ভালোবাসার কথা জানায় না কেন?
কিন্তু ওদের কথাও তো ঠিক ভাইয়া আমার কোন ছেলেদের সাথে মেলামেশা পছন্দ করে না। আমি তার কথা না শুনলে আমাকে সেটা নিয়ে বকে‌। আবার আমার কিছু হলেই ভাইয়া পাগলামো করে সেটা ভালোবাসা থেকে জানি আমি তো সেটা শুধু বোন হিসেবে ভেবেছি। কিন্তু শুধু কি বোনের হিসেবে নাকি আমাকে ভালোবাসে।

ইশ কি করে জানবো? কলেজ ড্রেস ও খুলি নাই ওইভাবেই বসে ছিলাম উঠে বারান্দায় এসে ভাইয়ার রুমে উঁকি দিতে লাগলাম। তখনই ভাইয়া রুমে থেকে বারান্দায় এলো আমি এইভাবে ভাইয়াকে আশা করেনি। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম।
ভাইয়া আমার দিকে ভ্রুকুটি করে তাকিয়ে বলল,,”তুই এইভাবে এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে আর ভাবছি ভাইয়া আমাকে সত্যি ভালোবাসে কিনা।
“দোলা,,,
ভাইয়া ডাকে চমকিত হয়ে ধ্যান ভাঙলাম।
“কি হয়েছে?”
“তুই কলেজ ড্রেস পরে এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস?”
ভাইয়ার কথা শুনে নিজের দিকে তাকিয়ে আবার ভাইয়ার দিকে দিকে তাকালাম।
“কি হলো তুই ইদানিং আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে এতো কেন লেট করিস? যেন সব সময় কি উত্তর দিবি বানাতে থাকিস?”
বানাতে থাকি কথাটা ভাইয়ার মুখে শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। ভাইয়া জানালো কি করে আমি কথা বানায়।

আমি না নেড়ে না বললাম।
“ক‌ই না তো আমি বানাব কেন?”
“তাহলে কথা না বলে কি ভাবছিস?”
আমি কিছু ভাবছি না তো।”
ভাইয়া সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
“ফ্রেশ না হয়ে এখানে এসে আমার রুমে উঁকি দিচ্ছিলি কেন?”
ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম।
এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম। ভাইয়া‌ দেখলো কিভাবে আমি ভাইয়ার রুমে উঁকি দিচ্ছিলাম।
“আবার ভাবনায় চলে গেলি ইডিয়েট।”
আমি গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছি এখন। কিছু হলেই ভাইয়া আমাকে ইডিয়েট বলে।
“আবার গাল ফুলালি কেন?যা ফ্রেশ হ আর এক সেকেন্ড ও জানি এখানে এইভাবে দাঁড়িয়ে না থাকতে দেখি।এতোটা কেয়ার লেস কেউ কিভাবে হয়।”
আমি ভাইয়ার দিকে কটমট করে তাকিয়ে গটগট করে চলে এলাম রুমে।
তারপর ওয়াশরুমে গোসল করতে চলে এলাম।
আর ভাবতে লাগলাম ধুর এই গরিলা আমাকে একটু ও ভালোবাসে না আমি জানি। ভালোবাসা বলে এইভাবে বকতোই না।

গোসল শেষ করে একটা লম্বা ঘুম দিলাম। উঠে খেলাম।
পরদিন সকালে কলেজে এসেই জানতে পারলাম আজ আমার প্রান প্রিয় ইলমার জন্মদিন। তাই সবাই মিলে চলে এলাম মার্কেট এ আমার কাছে বেশি টাকা ছিল না আসলে আজ ইলমার জন্মদিন আগে থেকেই মনে থাকলে টাকা বেশি নিয়ে আসতাম। কিন্তু এখন তো আর সম্ভব না তাই মে কয়টাকা ছিল তাই দিয়ে ইলমার জন্য কানের দুল কিনলাম। ইলমা কানের দুল খুব পছন্দ করে। পাইজ লাগল,, দুইশ আশি টাকা। সবাই কম বেশি কিছু কিনলাম আরো পঞ্চাশ টাকা দিতে হলো সবাই মিলে কেক ও কিনে আনলাম।

আমার হাতে কেক দিয়ে সবাই হাঁটছে আমি বলছি আমি নিতে পারবো না যদি পরে যায় কিন্তু ওরা সেদিকে লক্ষ্য করছে না।আর বিপত্তি ঘটল তখন।
মার্কেট থেকে সবাই সব কিছু নিয়ে আগেই চলে গেল আমি একা কেক নিয়ে সাবধান এ আস্তে আস্তে আসছি কিন্তু একটা অসভ্য ছেলের জন্য আমার সাবধানে চলাটাও বৃথা হলো‌।
ছেলেটার সাথে ধাক্কা লেগে পুরো কেক উলটা হয়ে পরে ঢাকনা খুলে গেল আর সব ফ্লোরে ছরিয়ে কি বিচ্ছিরি অবস্থা মাই গড।
সেই কেক কিছুটা সামনের লোকটার শরীরে ছিটকে গেল। আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি আমার কেকের দিকে। তারপর চোখ সরিয়ে ওই খাটাশ লোকটার দিকে রেগে তাকালাম কিন্তু রাগ র‌ইলো না রাগ হাসিতে পরিনত হল।
আমি লোকটার দিকে তাকিয়ে হা হা করে হেসে উঠলাম।
লোকটা বিরক্তিকর চোখ দিয়ে আমাকে দেখছে।আমি তো হেসেই যাচ্ছি হাসবো না আবার আরে লোকটার মুখে লেগেছে কেক আর বিশেষ করে উনার হাতে উনি নিজের হাত দিয়ে যখন মুখ থেকে মুছতে যায় তখন আরো বরে এটা দেখে আমি পেট ধরে হাসছি। লোকটাকে জোকার থেকে কম লাগছে না।
“এই মেয়ে তুমি এইভাবে পাগলের মত হাসছো কেন হোয়াই?”
রেগে বলল লোকটা।

আমি তাও হাসান থামাতে পারছি না।আমার ফ্রেন্ড সার্কেল আমাকে না পেয়ে পেছনে তাকিয়ে এসব দেখে ছুটে আসে।
আমি অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামালাম তারপর মুখটা গম্ভীর সিরিয়ার মুখ করলাম।
নেহা বলল,,,”এটা কি করলি দোলা ইশ কেকটা নষ্ট হয়ে গেল। এখন কাজ হবে?”
সবাই এক‌ই কথা বলতে লাগল।
আমি ওই লোকটাকে বললাম,,
“এই যে আপনি কি করলেন আমাদের কেকটা নষ্ট করে ফেললেন কেন? দেখে চলতে পারেন না চোখ কি পকেটে নিয়ে ঘুরেন?”.
রেগে বললাম। লোকটা ও রেগে বলল,,,
“আমার জন্য মানে কি আমি কি করেছি? দোষ তো আপনার আপনার জন্য আমার ড্রেসের কি হলো দেখুন তো।”
আমি রেগে উঠলাম সাথে আমার ফ্রেন্ড গুলো ও।
“কি বললেন দোষ আমার? নিজের দোষ এখন “আমাদের ঘাড় এ চাপাতে চাইছেন এটা আমরা একদম মেনে নেব না‌।”
“দোষ আপনার আপনি আমার সাথে ধাক্কা খেয়েছেন আমি না।”
“অসম্ভব আমি না আপনি আমি খুব দেখে শুনে যাচ্ছিলাম।”
“নো ম্যাডাম আপনার দোষ।”
“বললাম না আপনার।”
এবার আমার ফ্রেন্ড রাও বলতে লাগলো।
“আপনার দোষ আপনি এখন আমাদের কেক কিনে দিবেন আপনার জন্য আমাদের কেক নষ্ট হয়েছে।”
“ইম্পসিবল।”
“কিনে আপনাকে দিতেই হবে।”
এই নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়ে গেল।
অবশেষে লোকটা হার মানলো।
আর কেক কিনে দিল কি করবে বেচারা এতো গুলো মেয়ের সাথে পারলে তো।

দোস্ত দোষটা কার বল তো।
ফারজানার কথায় আমি বললাম,,”,ওই লোকটার আমি খুবই সাবধানে যাচ্ছিলাম। আর একটা কথা সব চেয়ে দোষ তোদের বেশি?”
ওরা অবাক হয়ে বলল,,”আমাদের মানে?”
“তোদের মানে তোদের। তোরা আমাকে কেন দিলি ওটা নিতে।”
কথা বলতে বলতে কলেজে চলে এলাম।ক্লাসে না গিয়ে শিমুল গাছের তলে গেলাম ইলমা আসতেই ওর চোখ বেঁধে ওকে নিয়ে আসলো সবাই আমি ওইগুলো সাজিয়ে দিয়েছিলাম তখন।
চোখ খুলতেই চমকালো ইলমা খুশিতে সবাইকে জরিয়ে ধরলো।
কেঁদে ও দিল। কেক কেটে সবাই হ‌‌ইহুলা করলাম সবাই ক্লাস বাদ দিয়ে আমাদের এখানে এসে পরেছে সবাই একটু একটু কেক ও দিলাম।
ক্লাস শেষ এ ইলমা আমাদের ফুসকার ট্রিট দিল আমি পরপর তিন প্রিলেট ফুসকা একা খেলাম। খাওয়ার পর মনে পরলো আমার এতো খাওয়া ঠিক হয়নাই। কারন ফুসকা বেশি খেলে আমার পেট ব্যাথা হয়। কোন মতে বাসায় চলে এলাম। কাউকে বলার সাহস করলাম না বকে শেষ করবে।

রাতে আর থাকতে পারলাম না আম্মুকে বলে দিলাম। আম্মু শুনে চিন্তায় পরে গেল কারণ আজ আব্বু বাসায় নাই। কাজে ঢাকার বাইরে গেছে। আমি পেট ধরে কান্না করছি ফুঁপিয়ে। মামনি চলে এলো বাসায় কিন্তু আন্কেল আর ভাইয়া বাসায় নাই তাদের আজ আর্জেন্ট মিটিং আছে আসতে লেট হবে আম্মু আমাকে ধরে কাঁদছে আর বকে যাচ্ছে।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৫

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_15

ভাইয়া আমার ছবি তুলে দিল। তারপর আমাকে যেতে বলল,,
“কোথায় যাব?”
ভীতু মুখ করে বললাম,,,,,
ভাইয়া বলল,”কোথায় যাবি মানে? এখানে থাকবি নাকি।”
গম্ভীর হয়ে বলল। ভাইয়ার গম্ভীর কন্ঠ শুনে আমি থমকে গেলাম।
ভাইয়া বলল,,”চারপাশে দেখেছিস। তাও এখানে থাকতে চাইছিস যা।”
ভাইয়ার কথা শুনে আমি আমার পাশে তাকিয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম।
ছিঃ ছিঃ ছিঃ কি দেখলাম একটা ছেলে একটা মেয়েকে চুমু খাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে আবার খুললাম তারপর ভাইয়াকে বললাম,,
“তুমি এখানে কি করছো?”
আমার কথায় ভাইয়া সরু চোখ করে তাকালো,
“দেখলি না ফ্রেন্ডদের সাথে আছি।”
আমি আশেপাশে তাকিয়ে বললাম,,”তুমি ও এখানে থেকে চলে যাও। ছিঃ কি অসভ্য ছেলে মেয়ে।”
বলে নাক ছিট কালাম। তার পর নেতাদের কাছে গিয়ে বললাম,,,
“চল এই জায়গায় আর না। ছিঃ কি নির্লজ্জ ছেলে মেয়ে গুলো।”
বলেই চলে এলাম।

ভাইয়া আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো।
তারপর আমি চোখের আড়াল হতেই ফ্রেন্ডের কাছে গিয়ে বসলো। ভাইয়ার ফ্রেন্ডরা বলল,,
“আদনান এই তোর মায়াবতী তাই না।”
আদনান ভাই কিছু বলল ফোনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আরেক জন বলল,,
“হ্যা এই তো আমাদের ভাবি। ছোট্ট ভাবি আমাদের সেই ছোট বেলা থেকেই তো আদনান ওকে ভালোবাসে। কিন্তু এখন ও মনের কথা বলতে পারলো না।”
বলতে পরলো না কেন?
“আর বলিছ না ওর হিটলার শশুর মানে দোলার বাবা তো শর্ত দিয়ে রেখেছে। আগেই জানানো যাবেনা।”
আরেকজন বলল,,”বেচারা আদনান নিজের ভালোবাসার মানুষটির এতো কাছে থেকেও অনেক দূরে।”
সবাই কথা বলতে আদনান কে নিয়ে আর আদনান নিজের মন মতো ওর মায়াবতীর ছবি দেখছে।
একটু আগে যে ছবি গুলো তোলেছে সব ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। আজকে দোলাকে ওর ভাবনার থেকে ও বেশি সুন্দর লাগছে। এতো সুন্দর লাগছে যে নিজেকে কন্ট্রোল করা দায় হয়ে যাচ্ছে।
তৃষ্ণার্ত মনটা বারবার অন্যমনষ্ক হয়ে পরছে।

আমরা আবার চেয়ার এ বসলাম শাড়ি পরে হাঁটা খুব কষ্ট। বসতেই বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে এলো মামা আর আমাদের সবাইকে দিয়ে গেল।
এতো সুন্দর করে সেজেগুজে এসেছি কি খাওয়ার জন্য। বিরিয়ানি আমার অনেক পছন্দের কিন্তু খেলেই সাজ নষ্ট হবে জানি।তাই খাচ্ছি না কিন্তু না খেয়ে থাকতেও পারছিনা পছন্দের জিনিস থাকলে “কি থাকা যায়।”
“ওই খাস না কেন?”
“আমি খাব না রে। খেলেই দেখবি পুরো হাত মুখ নষ্ট হয়ে গেছে।”
“তাই বলে না খেয়ে থাকবি।”
“আসলাম তো মাত্র দুই ঘন্টা হয়েছে?”
“তোর কি খিদে পায় নি তাহলে আমাকে দে।”
আমাকে দে শুনেই চমকে উঠলাম। বিরিয়ানির প্যাকেট শক্ত করে ধরে বললাম,,
“কেন নিজেরটাই হয় না আমার টা কেন দিমু।”
তুই তো খাবি না তাই।”
“খাব না তাই কি পরে খাব।”
“আচ্ছা আমার মা লাগবে না।”
“ওই আমি তোর মা । ”
রেগে বললাম।
” না না তুই আমার মা হবি কেন তুই তো আমার নানি?”
আমি কটমট করে তাকিয়ে আছি।ওকে চোখ দিয়ে ভষ্স করে দেব।
“আরে এমন করে তাকাচ্ছিস কেন?”
“আমি তোকে …
বলেই মারতে যাব ও ভৌ দৌড়। পলকে আমার সামনে থেকে দূরে সরে গেছে। শাড়ি পড়ে এরা কি দৌড়ানো শুরু করছে পারেও আর আমি অর্কমার ঢেকি ঠিক মতো হাঁটতে ও পারিনা।
এই প্রথম ভাইয়ার একটা কথা ঠিক লাগছে।ভাইয়া এর জন্যই আমাকে অর্কমার ঢেকি বলে।

সবার খাওয়া শেষ আমি একমাত্র প্যাকেট নিয়ে বসে আছি তখন ভাইয়া এলো আর আমার হাতে দিকে তাকিয়ে বলল,,
“এটা হাতে নিয়ে বসে আছিস কেন ?”
আমি ভাইয়ার কথায় বললাম,,
“তো কি করবো ফেলে দেব নাকি।”
“আমি কি ফেলে দিতে বলেছি ইডিয়েট। খাস নি কেন?”
“কিভাবে খাব দেখো না আমাকে হাতে লাগবে আবার মুখেও লাগবে তাই পরে খাব।”
“এতো সময় না খেয়ে থাকবি।”
রেগে বলল।আমি কিছু বলার আগেই ভাইয়া আমার হাতে থেকে প্যাকেট নিল।আমি তো বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার হাতের দিকে তাকিয়ে আছি।
“কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন চল আমার সাথে?”
“তুমি আমার বিরিয়ানি নিলে কেন ?”
রেগে বললাম আমার এখন মনে হচ্ছে ভাইয়া আমার বিরিয়ানি খেয়ে নিবে।
ভাইয়া আমার উওর না দিয়ে হাত শক্ত করে ধরে নিলো।
“আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?”
“কথা বাদ দিয়ে চল।”
আর কিছু বললাম না।

ভাইয়া আমাকে নিয়ে তার গাড়িতে এলো আর আমাকে ভেতরে বসিয়ে নিজেও বসলো।
আমি ভ্রুকুটি করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া পানির বোতল নিয়ে নিজের হাত ধুয়ে প্যাকেট খুললো তার আমার সামনে খাবার তুললো।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া এটা করবে আমি কল্পনা ও করি নাই‌।
“হা করে তাকিয়ে না থেকে খা।”
আমি তাও হা করে তাকিয়ে আছি।
“খেতে বলেছি।”
এবার আমি কথা বললাম।
“তুমি আমাকে খাইয়ে দিচ্ছ?”
আমার কথায় ভাইয়া বলল,,,
“এমন ভাবে বলছিস যেন এই ফাস্ট খাইয়ে দিচ্ছি।”
আমি কিছু বললাম না।আসলেই ভাইয়া আমাকে আগেও খাইয়ে দিয়েছে কিন্তু সব সময় অসুস্থ থাকা কালীন।
আমি ভাইয়ার হাতে খেতে লাগলাম ভাইয়া বরাবরের মতো যত্ন করে খাইয়ে দিচ্ছে আমাকে আর আমি ভাইয়ার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি।

“এভাবে তাকিয়ে থাকিস না প্রমে পরে যাবি ‌।”
আচমকা ভাইয়ার এমন কথায় আমার হেঁচকি উঠে গেল।
আমি তো সেই কবেই ভাইয়ার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। আর ভাইয়া কিনা বলছে পরে যাব।
আমি মাথা নিচু করে ফেললাম ভাইয়া যদি বুঝে যায় তাই।

দিনটা এইভাবেই কাটলো।তিনটার দিকে ভাইয়া আমাকে নিয়ে বাসায় এলো আমি নিজের বাসায় গিয়ে গোসল দিয়ে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরলাম।
খুব ক্লান্ত লাগছে শুয়েই ঘুমিয়ে পরলাম।
পরদিন—
কলেজে গিয়ে আমি থমকে গেলাম একজন কে দেখে। সে আর কেউনা তিথি। উনি আমার কলেজে কি করছে?
আমাকে দেখেই এগিয়ে এলো।
মুখে তার শয়তানি হাসি।
আমি কাচুমাচু করে সরু চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছি।
“হাই দোলা!”
আমি কিছু বললাম না চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
“বাবাহ কথা বলবা না নাকি?”
আমি সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছি। মেয়েটার হাবভাব লক্ষ্য করছি।

“কেমন আছো দোলা?”
আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম,,” আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?”
“এতো আছি কোনো রকম। এই খানে পড় বুঝি?”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
“ওহ ভালো।”
“আপনি এখানে কি করছেন?”
“এই তো আসলে এইদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ তোমাকে দেখলাম তাই নামলাম।”
আমার কথাটা বিশ্বাস হলো না কারণ জনি এখানেই ছিলো।
আমার আগে থেকেই কিন্তু বলল অন্য কথা।
“ওহহ”
তাও কিছু বললাম না মেয়েটাকে আমার একদম ই পছন্দ না। কথা বলতেই চাই না।
তাই কথা বাড়ালাম না।
“আচ্ছা আমি আসি।”
বলেই পাস কাটিয়ে চলে এলাম কলেজে।
তিথি আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিল।
আমি কলেজে যেতেই আমার বান্ধবীরা জিজ্ঞেস করলো,,,” কে রে ওই মেয়েটা?”
আমি একবার তিথির দিকে তাকিয়ে বললাম,,”আদনান ভাইয়ের ফ্রেন্ড না গার্লফ্রেন্ড জানিনা।”
তখন ইলমা বলে উঠলো,,,
“আমার কি মনে হয় জানিস দোলা।”
আমি বললাম,,,”কি মনে হয়?”
ইলমা বলল,,,”আদনান ভাই তোকে ভালোবাসে।”
আমি ওর কথায় চমকে উঠলাম।
“হ্যাত কি বলিস?”
“সত্যি আমার এইটাই মনে হয়।দেখিস না তোকে কতো কেয়ার করে। কোন ছেলের সাথে কথা বলতে দেয় না। সব সময় ছায়ার মতো আগলে পাশে থাকে ভালো না বাসলে এমন করতো বল।”
আমি সরু চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৪

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_14

ভাইয়া কুঁচি ঠিক করে ধরে নিচে বসে আছে আর আমি উপরে ঠিক করছি। এদিকে আমার বান্ধবীর দল এসে উপস্থিত হলো এখানে সব গুলো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।
এদিকে ভাইয়া আমার এতো দেরি দেখে বলল,,,
“আর কতো সময় লাগবে তোর?”
ভাইয়ার কথা শুনে তারাতাড়ি কাজ শেষ করলাম।
“হয়েছে।”
আমি কাচুমাচু করে বললাম,,,”হুম।”
ভাইয়া তরিৎ গতীতে উঠে দাঁড়ালো। তারপর শার্টের হাতা ঠিক করে বুকের কাছে থেকে সানগ্লাস বের করে চোখে দিল। তারপর আমার ফ্রেন্ডের দিকে একবার তাকিয়ে আমার দিকে তাকালো আর মুখ দিয়ে বিরক্তি এনে বলল,,
“যতসব ফালতু ঝামেলা।”
বলেই চলে যেতে নিল তখন আমার ফ্রেন্ড ইলমা ভাইয়া বলে ডেকে উঠলো আদনান ভাইকে,,,
ভাইয়া ঘাড় বাঁকিয়ে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,,
“কিছু বলবা।”
ইলমা বলল,,”কেমন আছেন ভাইয়া?”
ভাইয়া বলল,,”ভালো। তোমরা কেমন আছো?”
আমার বান্ধবী সব গুলো বলে উঠলো ভালো ভাইয়া।
আর কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে ভাইয়া বলে উঠলো,,,
” এই ( আমাকে দেখিয়ে) ইডিয়েট টাকে দেখে রেখো কখন কোথায় কি ঘটিয়ে ফেলে। কেয়ারলেস একটা।”

ভাইয়া কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম। গাল ফুলিয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। ভাইয়া কিছু না বলে সানগ্লাস ঠিক করে স্টাইল করতে করতে চলে গেল।
আমি কটমট করে ভাইয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
খাটাশ একটা আমাকে আবার বকে গেল।
“ওই এমন ফুসফুস করছিস কেন?”
ইলমার কথায় ভাইয়ার থেকে চোখ সরালাম।
“আমাকে কি বলে গেল দেখলি।”
“ঠিকই তো বলেছে।”
বলেই জ্বিভে কামড় দিল নেহা।
আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,”কি বললি তুই?”
নেহা ভীতু মুখ করে বলল,,
“ক‌ই কি বললাম? আমি তো বলেছি হ্যা তোর ভাইটা আসলেই খারাপ এইভাবে কেউ বলে। আমাদের দোলা কতো ভালো।”
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,,,”তুই অন্য কথা বলছিলি।”
নেহা সবার দিকে তাকিয়ে বলল,,”এই তোরা বল আমি এটাই বলছিলাম তাই না।”
বলেই অসহায় মুখ করে তাকালো সবার দিকে।
“উফ তোরা কথা শেষ কর আর চল তো।”
আমি আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগলাম শাড়ি পড়ে সাবধানে যাতে খুলে না যায়।

প্রথমেই যে আকাম হলো।
“দোস্ত তোকে তা লাগছে না আজকে। সব ছেলেরা তো তোকে দেখে আজ ফিদা হয়ে যাবে।”
আমি কিছু বললাম না। মিষ্টি করে হাসলাম শুধু। আর আমার ফ্রেন্ড সার্কেল আমাকে নিয়ে প্রশংসা করতে লাগলো।
আমিও ওদেরকে নিয়ে করলাম। কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে শব্দে আমাদের একটা স্যার দেশের গান গাইছে ওনার কন্ঠস্বর একটুও সুন্দর না কিন্তু উনি ওই বেসুরো কন্ঠে গান গাইবে। স্যার বলে ওনাকে সবাই সহ্য করে। সেই সাথে আমরা ও করছি। বিরক্ত আর রাগ নিয়ে থাকতে পারলাম না স্যার ওই বেসুরো গলায় একটা না দুইটা গাইছে রাগে ফোন বের করে গান ছেড়ে ইয়ারফোন লাগিয়ে কানে দিলাম। উফফ শান্তি।
গান আমার পছন্দ তাই বলে এমন পা ধা নি তা গান না।
এই রমিজ উদ্দিন স্যারের গান শুনলে আমার গান শুনার আগ্ৰহ কমে যায়।

এখন শুরু হলো নাচ। আমাদের ক্লাসের চৈতি নাচ্ছে ওর নাচ বরাবরের মতো আজকেও সুন্দর হলো। বাট এর সাথে আমি কথা বলি না। মেয়েটার খুব ভাব।
নাচ শেষে শুরু হলো বক্তব্য আল্লাহ আজ কতোবার বক্তব্য দিবে। বোরিং হয়ে বসে শুনছি।

“ওই উঠ তো আমার কোমর ব্যাথা হয়ে গেছে বসে এই বোরিং কথা শুনতে শুনতে।”
“হ ঠিক বলছিস। চল আমরা ওই দিকে যায়।”
সবাই চলে এলাম আর মাঠের অপর প্রান্তে এলাম।এখানে সবাই জোটা জোটা বসে আছে।
ছেলে মেয়ে আমি সবার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। এগিয়ে যাচ্ছি।
নেহা আমার হাত ধরে আটকে দিল।
“ওই আর যাস না।এই প্রেমিক প্রেমিকা দের দিকে।”
“না আমি ওইদিকে যাব।”
সমানে একটা পুকুর আছে ওইখানে গিয়ে ছবি তোলার ইচ্ছে করছে।তাই বললাম।
“পাগল নাকি ওইদিকে আর যাব না।চল।”
“চুপ কর তো ওদের যা ইচ্ছা করুক আমি ছবি তুলবো চল তো।”
বলেই নেহার হাত শক্ত করে ধরলাম।
আমার সাথে কেউ পারলে তো যেতে লাগলো।
তখন ভাইয়াকে চোখে পরলো আমার। আদনান ভাই ও তার সাথে কয়েকটা ছেলে বসে আছে সামনে আর হাসাহাসি করছে। আমরাও পুকুর এর কাছে এসে গেছি। ভাইয়া রাও এখানেই আমি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি।ভাইয়ার সামনেই আবার চলে এলাম।
ভাইয়া এখন ও দেখে নাই। আমি ফটাফট অন্য দিকে ঘুরে গেলাম।ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে পেছনে দেখতে পাচ্ছে চিনে ফেলবে জানি কারণ গ্যাং নিয়ে এসেছি। ওদের দেখলেই আমি আছি বুঝে যাবে।
“ওই ছবি না বলে তুলবি। এইভাবে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
আমি ওদের হাতের ইশারায় ভাইয়াকে দেখালাম।
“ভাইয়া এখানেও ও দেখিস এখানে আসার জন্য আমাকে কি বকাটাই না দেয়।”
“চল তাহলে চলে যাই। এজন্য আসতে মানা করছিলাম।”
“আমি কি জানতাম গরিলাটা এখানে এসে বসে আছে।”
আমাদের কথার মাঝেই ভাইয়া আমাকে ঠেকে উঠল আদনান ভাইয়ের আওয়াজ শুনে আমি ফ্রিজ হয়ে গেলাম।
“আমাকে খাটাশ দেখে ফেলেছে।”
কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে বললাম।

আমি কাঁপতে কাঁপতে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া ওইখানে বসেই আমাকে ডাকছে।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। ভাইয়ার সাথে আর ও তিনজন ছেলে আছে যারা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমি তাকাতেই ভাইয়া উঁচু গলায় জিজ্ঞেস করলো।
“দোলা এখানে কি করছিস?”
আমি হকচকিয়ে গেলাম ভাইয়ার প্রশ্ন শুনে এই এতো লোকের মাঝে না জানি কতো বকা খেতে হয়।
ঢোক গিলে এদিক ওদিক তাকিয়ে নিলাম লোকজন ভালোই‌।
এক হাত দিয়ে আরেক হাত মুচরাতে মুচরাতে বললাম,,,,”ওই আমি তো…
ভাইয়া বলল,,,”তোতলাচ্ছিস কেন ভালো করে কথা বল?”
“আমি…
“ওয়েট আমি আসছি।”
বলেই ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো।

আমি শাড়ির আঁচল ধরে কাঁচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে একদম আমার সামনে দাড়িয়ে বলল,,,
“এখানে কি করছিস?”
শক্ত গলায় বলল। আমি চুপ করে আছি।
“কি হলো কথা বলছিস না কেন?”
আমি চমকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
“ভাইয়া আমি আসলে ওই ছবি তুলতে এসেছি।”
আদনান ভাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
“ছবি তুলতে।”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
“এখানে কেন আর জায়গা পাসনি।”
আমি অবাক হয়ে তাকালাম।
“এখানে কি হয়েছে। তুমি ও তো এখানেই আছো।
আমি আছি বলে কি তোকেও এখানে আসতে হবে।”
“আমি তো জানতাম‌ই না তুমি এখানে আছো জানলে আমি ভুলেও এখানে আসতাম না।”
“কি বললি।”
“ঠিক‌ই বলছি তোমার বকা খাওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই। আর তোমার সাথে দেখা হ‌‌ওয়া মানে‌ই বকা খাওয়া।”
ভাইয়া আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আমি হকচকিয়ে এদিকে ওদিকে তাকাতাকি করতে লাগলাম।

“আমি তোকে খালি বকি।”
আমি ঢোক গিলে বললাম,,,”না না। তুমি আমাকে বকবে কেন? তুমি তো বকতেই পারনা।”
মিনমিন করে বললাম,,,” গরিলা একটা বকে কিনা জিজ্ঞেস করছে? সারাক্ষণ আমার পেছনে পুলিশের মতো ঘেরাও করে বলে।”
“আচ্ছা চল আমি তোকে পিকচার তুলে দেব।”
ভাইয়ার কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। চমকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। ভাইয়া ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? এখন তো বকছি না তাহলে ভয় পাচ্ছিস কেন?
আমি মিনমিন করে বললাম,,,”বকছো না বলেই তো ভয় আরো বেশি পাচ্ছি।”
‘কি বললি‌?”
‘তুমি আমাকে ছবি তুলে দিবে।”
“হুম চল।”
“কিন্তু।”
“আবার কিন্তু কিসের?”

আমি আর কিছু বললাম না। হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া আমাকে বলেই নিজের ক্যামেরা বের করলো।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১৩

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_13

সবার জরাঝরিতে ভাইয়া গাড়িতে উঠতে হলো। আমি কটমট করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আদনান ভাই ও ড্রাইবিং সিটে বসে গাড়ি স্টাট দিলো। আমি চুপ করে একবার ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে র‌ইলাম।
শাড়ির কুচি হাত দিয়ে ঠিক বসে আছি ভাইয়া গাড়ি ছেড়েছে কিছু দূরে আসতেই গাড়ি থামালো। আমি ভ্রু কুঁচকে অবাক হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
ভাইয়া আমার দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছে। আমি ভাইয়ার তাকানো দেখে হকচকিয়ে গেলাম। এভাবে তাকালে লজ্জা করে আচ্ছা আমার কি কিছু ভুল হয়েছে এইভাবে গাড়ি থামিয়ে ভাইয়া তাকিয়ে আছে কেন?
আমি গাড়ির আয়না নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিজের মুখ দেখতে লাগলাম না সব‌ই তো ঠিক আছে তাহলে।
শাড়ির আঁচল, কুচি ঠিক করলাম তাও। আজকে ভাইয়ার সাথে কথা বলবে না ভাবছিলাম কিন্তু এখন না বলে থাকা যাবে না।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,,,
“কি হয়েছে? এমন হা করে তাকিয়ে আছো কেন? আগে জীবনে দেখো নাই আমাকে?”

আমার কথার জন্য ই ছিল মনে হয়। আমি কথা বলতেই ভাইয়া বলল,,
“দেখছি কিন্তু আজকের মতো দেখি নি।”
ভাইয়ার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে বললাম,,” মানে।”
মানে বলেই আবার বলে উঠলাম,,
“ও বুঝেছি আজ বুঝি খুব সুন্দর লাগছে আমাকে দেখতে যে চোখ সরাতে পারছো না। আমি এমনিতে সুন্দর আজকে আরো বেশি সুন্দর হয়ে গেছি সেজে তাই না। তোমার চোখ‌ই সরছে না।”
খুশি হয়ে বললাম। কারন ভাইয়া আমাকে দেখে ফিদা হয়ে গেছে। কেমন হা করে তাকিয়ে আছে। এক্সট্রা ভাব নিয়ে কানের দুল ঠিক করছি। মনে মনে আমার লাড্ডু ফুটছে।
সব খুশি ধপ করে নিভে গেল ভাইয়ার কথা শুনে।

“তোকে মুটেও সুন্দর লাগছে না। বরং আজকে সব চাইতে বাজে লাগছে দেখতে। ছিঃ কেমন লাল লিপস্টিক দিয়েছিস ঠোঁটে একটুও মানায় নাই।আবার চুল খোঁপা মাই গড বুড়ি লাগছে দেখতে।”
আদনান ভাইয়া আমার দিকে নাক ছিটকে তাকিয়ে বলছে।
“আর শাড়ি কেমন করে পরেছিস পেট দেগ যাচ্ছে। ছেলেদের তোর পেট না দেখালে হয় না তাই।”
এই কথাটা ভাইয়া মৃদু রাগ নিয়ে বলল।
আমি মলিন মুখ করে হা করে ভাইয়ার কথা শুনছিলাম। পেট দেখা যাচ্ছে শুনেই চমকে উঠলাম।
বড় বড় চোখ করে তাকালাম সত্যি শাড়ি সরে গেছে। ভাইয়া আমার পেটের দিকে তাকিয়ে আছে আমি তারাতাড়ি শাড়ি দিয়ে ডেকে নিলাম পেট।
লজ্জা লাগছে অনেক ভাইয়া আমার পেট দেখে নিল ছিঃ। আর কি বলল আমাকে বাজে লাগছে কিন্তু মামনি আম্মু যে বলল অনেক সুন্দর লাগছে।
তাহলে কি তারা মিথ্যা বলেছে।
গভীর চিন্তা করছি। নাকি ভাইয়া মিথ্যা বলল। আমাকে রাগানোর জন্য। গালে হাত দিয়ে ভাবছিলাম তখন হঠাৎ মনে হল কেউ আমার চুল ধরে ছে আমি চমকে উঠলাম।
দেখি আদনান ভাই আমার চুল খুলে দিচ্ছে।

আমি হাঁ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
তারপর বললাম,,,”ভাইয়া আমার চুল খুলছিস কেন?”
আদনান ভাই কড়া চোখে তাকালো আমার দিকে । আমি চুপ করে গেলাম।
ভাইয়া আমার চুল খুলে ছেড়ে দিল।
আমি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া এলোমেলো চুল ঠিক করে দিল।
তারপর একটা টিস্যু এনে আমার একদম কাছে চলে এলো ভাইয়ার গরম নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে। আমি অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেলাম ভাইয়াকে এই মাঝরাস্তায় আমার এতো কাছে আসতে দেখে।
ভাইয়া প্রতি আমি এমনিতে দূর্বল তাকে পছন্দ করি আমি‌ আর পছন্দের মানুষ এতো কাছে এলে কি নিজেকে কন্ট্রোল করা যায়। ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি। আচ্ছা ভাইয়া আমার এতো কাছে আসছে কেন আমাকে কি চুমু দিবে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ কি ভাবছি ভাইয়া আমাকে চুমু কেন দিবে‌? ভাইয়া তো আমাকে পছন্দ ও করে না ভালো ও বাসে না‌।
আচ্ছা এমন নয় তো ভাইয়া ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু বুঝতে দেয় না। আর আজকে আমাকে এতো সুন্দর লাগছে যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কাছে চলে এসেছে।
আমি তো এসব আকাশ পাতাল ভেবে মহা খুশি হয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম।এই বুঝি আমাকে চুমু খাবে।

আমার খুশি দেখে কে? কিন্তু একি আমার সমস্ত ভাবনা ভুল প্রমাণ করে ভাইয়া নিজের হাতে টিস্যু দিয়ে আমার ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দিলো। আমি হাঁ করে ভাইয়া কান্ড দেখছি।
“ফাউল চিন্তা ভাবনা করা থেকে বিরত থাক ইডিয়েট।”
আমি কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে মনে মনে বললাম,,,”কি ভাবলাম আর কি করলো খরিলা টা, শালা খাটাশ,।”
ভাইয়া নিজের কাজ শেষ করে নিজের জায়গায় বসে পরলো।
আমি বললাম,, “এটা কি করলা তুমি আমার লিপস্টিক মুছে দিলা কেন?”
“তোকে বাজে লাগছিল বললাম না। লিপস্টিক দিলে তোকে একদম মানায় না‌।”
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললাম,, “সত্যি।”
ভাইয়া সিকার করলো আর আমি বিলিভ করলাম।
“আর চুল কেন খোলা হলো। মামনি কতো সুন্দর করে খোঁপা করে দিয়েছিল।”
“খোঁপা থেকে খোলা চুলে তোকে ভালো লাগে। মায়াবতী লাগে…
ভাইয়া কথা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।

কি বললা?
ভাইয়া হকচকিয়ে গেল। আর বলল,,
“কিছু না। আর কখনো ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে আমার সামনে আসবি না।”
বলেই গাড়ি স্টাট দিলো ভাইয়া।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে র‌ইলাম ভাইয়ার দিকে।
ভাইয়া আর তাকালো না।
আয়নার দেখলাম সত্যি আমাকে চুল খোলা বেশি ভালো লাগছে বাট লিপস্টিক ছাড়া কেমন জানি। আগেই ভালে লাগছিল কিন্তু ভাইয়া যে বলল লিপস্টিক এ বাজে লাগছে।
আমি একটু পর পর ভাইয়ার দিকে তাকালাম। তাঁরপর বলেই ফেললাম,,
“ভাইয়া তুমি কি আমাকে মিথ্যা বলছো? দেখো আমাকে লিপস্টিক ছাড়াই খারাপ লাগছে থাকতে বেশি ভালো লাগছিল।”
আমার কথায় ভাইয়া কি যেন বলল,, আমি শুনতে
পেলাম না।
কি বললা শুনি নাই‌?
ভাইয়া ধমক দিয়ে থামালো।
“চুপ এক্সিডেন্ট হবে এমন করিস কেন?”
আর কথা বললাম না।
কলেজে চলে এলাম। সব মেয়েরাই লাল সবুজের শাড়ি কেউ সেলোয়ার কামিজ, পরে এসেছে। আমি আস্তে করে গাড়ি থেকে নামলাম।

আশেপাশে তাকাচ্ছি সবাই সবার মতো ইনজয় করছে ভাইয়া গাড়ি পার্ক করে ভেতরে যাবে বাট আমার সাথে না।
আমি নেহাদের খুঁজছি আর পেয়ে ও গেলাম ওরাও শাড়ি পরে এসেছে কি সুন্দর লাগছে ওদের আমাকে দেখেই তো চিৎকার করে উঠল সব কটা‌।
আমি ওদের দিকে তারাতাড়ি করে এগিয়ে যাচ্ছি আমার মনেই ছিলো না আমি কি পরে আছি।
আর পরলাম বিপদে শাড়ির কুচি খুলে গেল আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম।
কুঁচি ধরে থমকে চারপাশে তাকাচ্ছি। কারো তেমন আমার খেয়াল নাই সবাই সবার খেয়াল এ। আমার ফ্রেন্ড গুলো বুঝে গেছে আর এগিয়ে আসছে। আমি লজ্জায় লাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছি ইশ এখন কি হবে এজন্য আমি শাড়ি পরতে চাইনা।
হঠাৎ কোথা থেকে ভাইয়া এসে দাঁড়ালো আমার পাশে আর আমাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত স্কান করলো।
হয়তো বুঝে গেছে তাই আমার হাত ধরে শিমুল গাছের তলে আড়ালে নিয়ে গেল।

“ইডিয়েট আসতে আসতেই আকাম করে ফেলেছিস। দেখে হাটবি না।”
রেগে ধমক সুরে বলল।
আমি মুখ ছোট করে দাঁড়িয়ে আছি।
“গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে না থেকে ঠিক কর।”
আমি কুচি ধরে ঠিক করতে গেলাম কিন্তু ন
নিচে বেকা হয়ে গেছে কাউকে ধরতে হবে।
“কি হলো তারাতাড়ি কর?”
“আরেকজনের লাগবে।”
ভাইয়া বলল,,”কেন?”
আমি সব বলতেই ভাইয়া নিচে বসে পরলো আমি এটা দেখে থমকে গেলাম।
বিষ্ময় হতদম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
“হা করে তাকিয়ে না থেকে ঠিক কর ইডিয়েট।”
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১২

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_12

ছল ছল চোখে তাকিয়ে আছে আদনান এর দিকে তিথি।
আদনান আবার বলল,,” যা রুমে যা। আজ এখানেই থাক। কাল তোকে বাসা ঠিক করে দিয়ে আসবো।”
তিথি হকচকিয়ে বলল,,” মানে।”
আদনান বলল,,”মানে সিম্পুল তোকে বাসায় রাখা যাবে না। আজকে আনাটাও ভুল হয়েছে আমার।”
তিথি হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আদনান এর দিকে। বরাবরের মতো আজকেও তিথীকে আদনান ফিরিয়ে দিলো।
“যা রুমে যা।”
আদনান এর কথায় আর কিছু বলল না তিথী একবার তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো দোলার দিকে তারপর গটগট পায়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে।
তিথি রুমে এসে রাগে দুঃখে কাঁদতে লাগলো।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করছে কী নেয় আমার।ওই দোলার থেকে সব দিক দিয়ে আমি ফাস্ট‌।

কতো ছেলে আমার পেছনে পাগলের মত। আমি তাদের পাত্রা দেয় নাই। শুধু একজন কে ভালোবাসেছি আদনান। বিনিময়ে এ শুধু ইগনোর পেলাম যত বার বলেছি ততবার আমাকে অপমান করেছে রিজেক্ট করেছে আদনান।
এবার ও তাই করলো শুধু মাত্র ওই দোলার জন্য।
আয়নার কাছেই ফ্লোরে বসে দুহাতে চুল টেনে ধরলো তিথী।
( তিথী ধনী বাবার একমাত্র মেয়ে। যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে তিথী কখনো ওর চাওয়া অপূর্ণ রাখেনি তায়েফ আহমাদ। তিথির এক ভাই আছে নাম আরাফাত বোনকে প্রচন্ড ভালোবাসে।)
তিথি ফ্লোরে বসে কাঁদছিল তখন ওর ফোন বেজে উঠলো,, কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখ লাল হয়ে ফুলে উঠেছে। ওই ভাবেই তাকালো ফোনের স্ক্রিনে ভাইয়ের নাম্বার দেখে রিসিভ করলো।
হ্যালো,
বোনের গলা পেয়েই বুঝে গেছে আরাফাত বোনের কিছু হয়েছে।
“তিথি বোন আমার কি হয়েছে তোর?”
উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করল।
ভাইয়ের আওয়াজে তিথি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।

“কি রে কাঁদছিস কেন? কি হয়েছে বল আমাকে?”
তিথি কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না।
তবুও বললো,,,”ভাইয়া কালকেই তুই ঢাকা আয়?”
তিথির আচমকা এমন কথায় আরাফাত হতবাক হয়। আর বলে?
“কেন বোন কি হয়েছে বলবি তো?”
“তুই আসবি কিনা বল?”
তিথি খুব জেদি সেটা আরাফাত খুব ভাল করেই জানেই। এখন কিছু বলবে না তাই আর কিছু জিজ্ঞেস না করে রাজি হলো।

আদনানের রুমে থেকে তিথি যেতেই আদনান বারান্দায় যায়।আর গলার আওয়াজ বারিয়ে দোলাকে ডাকে।
আমি আরামছে বসে চা খাচ্ছিলাম আর রাস্তায় তাকিয়ে ছিলাম তখন কোথা থেকে ভাইয়া বারান্দায় এসে আমাকে ডাকতে লাগলো।
ভাইয়ার বাক শুনে চমকে উঠলাম,,
আমি দাঁড়িয়ে ভাইয়ার বারান্দায় তাকিয়ে দেখী ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
“ওই তোর কানে কি আমার ডাক যায় না।”
গম্ভীর হয়ে বলল।
আমি মনে মনে হাজার টা গালি দিলাম তারপর ভেংচি কেটে আবার বসে পরলাম।
“আমাকে ভেংচি দেওয়া হচ্ছে তোকে তো..
“চুপ যাও তো জালিয় না। আবার জ্বালাতে এসেছো কেন?”
ভাইয়া আমার কথা শুনে হা করে তাকিয়ে আছে। “আমি তোকে জ্বালায়?”
রেগে বলল।
আমি বললাম,,,”তোমার গার্লফ্রেন্ড আর তুমি আমাকে জ্বালিয়ে খেলে।”
বলেই ভাইয়াকে পাস করে রুমে চলে এলাম।

আদনান হা করে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। দোলার রেগে বলেছে কথাটা রাগলেও কি সুন্দর লাগে কপাল কুঁচকে বিরক্ত হয়ে বলে। দোলা থাকা কালীন মুখ গম্ভীর করে রাখলেও দোলা রেগে চলে যেতেই আদনান মুখে বাঁকা হাঁসি ফুটিয়ে তোলা।
পরদিন তিথীকে একটা বাসা ঠিক করে দিতে যায় কিন্তু তিথি রেগে বলে লাগবে না।
আমি আমার ব্যবস্থা করতে পারবো।
আদনান তাও ছাড়ে নি তিথি কে তিথি ওর কোন ফ্রেন্ড এর বাসায় যাবে বলে ছারিয়েছে আদনান কে।

তিথি সোজা ওর ভাইকে কল করে ওর ঠিকানায় চলে আসতে বলেছে ও এখন একটা হোটেলে উঠবে‌।
ওর ভাই আসার পর তাকে জরিয়ে ধরে কেঁদে সব বলেছে।ওর ভাই সাথে বাসার সবাই ই জানতো তিথী আদনান কে ভালোবাসে। আরাফাত সব শুনে রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে।
ওর বোনের চোখে বারবার জল এসেছে ওই স্কাওন্ডার জন্য ওকে আমি ছারবো।
“আমি ওকে খুন করে ফেলবো।”
রেগে বলল আরাফাত।
তিথী বলল,,”নানানা ভাইয়া কি সব বলছো আদনান এর কিছু করবে না তুমি ওকে আমি মন থেকে ভালোবাসি। ওর কিছু হলে আমি মরে যাব।”
আরাফাত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তাকায় বোনের দিকে।
“ওই দোলা মেয়েটাকে ওর জীবন থেকে সরাতে হবে ভাইয়া ওর জন্য আদনান বারবার আমাকে ইগনোর করেছে।”
“মানে।”
“ওই দোলাকে আদনান এর চোখে খারাপ করতে হবে ওকে ভালোবাসে আদনান ভুল করেছে এটা ওকৈ বুঝাতে হবে।”
কিন্তু কিভাবে?
সেটা আমি জানি না তোমার বোনের খুশির জন্য তোমাকে কিছু করতেই হবে ভাইয়া।
আরাফাত এমনিতে ভালো কিন্তু রগচটা তাই খারাপ ভাল বিবেচনা না করে বোনের চোখের জল দেখে তিথি তা বলে রাজি হয়ে যায়।এটা জীবনের চরম ভুল করে ও।

দোলা কলেজের মাঠে বসে আছে। সবাই ওকে জালিয়ে খাচ্ছে একটা কারনে সামনে ১৬ ডিসেম্বর তাই নিয়ে কলেজে অনুষ্ঠান হবে আর তাতে ওকে গান গাওয়ার জন্য পাগল করেছে ফ্রেন্ডরা।
আরে যুদ্ধের গান পারিনা ভাই তার আমাকে ইলমাকে বল।
সবাই ব্যর্থ হয়ে থামলো।
“আচ্ছা শাড়ি পড়ে আসবি তো নাকি এটাও না।”
“আমি আর শাড়ি ইম্পসিবল দোস্ত তোরা তো জানিস আমি শাড়ি সামলাতে পারিনা।”

সবাই গজে উঠলো,,”সব কিছু তেই তোর না কিছু করতে হবে না তোর।
মন খারাপ করে বললো সবাই আমি অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছি ওদের দিকে।
আমার দিকটা বুঝার চেষ্টা কর।
কি আর করার রাজি হলাম সবার জন্য আল্লাহ জানে কি হবে।
বাসায় এসে শাড়ির ব্যবস্থা করলাম আম্মুর শাড়ি লাল সবুজ মিক্স করা। ব্লাউজ লাল।
আমি শাড়ি পরবো শুনেই আম্মু আমাকে মার্কেট এ নিয়ে এলো আর সিমপুল গহনা কিনে দিল সাথে শাড়ি নিউ কিনে দিতে চেয়েছিল আমি মানা করেছি। বাসার ওইটাই পরবো‌।
বিজয় দিবস এর দিন মামনি আর আম্মু মিলে আমাকে সাজিয়ে দিল কুচি করে উপরে চীকন করে উঠিয়ে শাড়ি পরলাম কোমরে বিছা, গলায় লাল পাথরের হার, কানে জোমকা, চুল খোঁপা করে গাজরা দিয়ে দিল মামনি। হাতে লাল সবুজের মিক্সড করা চুড়ি হাত ভর্তি।ভালো করে পিন আপ করে দিল যাতে না খুলে আয়নার নিজেকে দেখছি কি সুন্দর লাগছে নিজেকে দেখে নিজেই চোখ ফেরাতে পারছি না। আম্মু আর মামনি তো প্রশংসা করতে করতেই শেষ। ঠোঁট লাল লিপস্টিক, চোখে কাজল দিয়েছি মোটা করে এসব মামির পছন্দের।
হাঁটতে গিয়ে পরলাম জ্বালায় বাপরে এটাই তো টেনশন।
ঢোক গিলে হাঁটছি পরলাম পরলাম ভাব এজন্য শাড়ি আমি পরতে চাইনা।
তবুও সবাই আমাকে এটা পরার জন্য ব্লাকমেইল করে। কাঁদো কাঁদো মুখ করে কুঁচি ধরে বেরিয়ে এলাম বাসা থেকে মামনি ও আসলো আমার সাথে আম্মু ও।

বাইরে এসেই মুখোমুখি হলাম আদনান ভাইয়ের সাথে।ভাইয়া গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে। আমার দিকে একবার তাকালো ফোন থেকে মাথা উঁচু করে ভাইয়া । তাকিয়ে হা হয়ে গেলে।
আদনান দোলার দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।
দোলা আদনান এর তাকানো দেখে ভ্রু কুঁচকে এগিয়ে গেল। তার পর ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বলল,,
“ভাইয়া এখানে কেন?”
“তোর সাথে যাবে।”
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে বললাম,,”কি আমার সাথে কেন যাবে?”
ভাইয়া বলল,,”তারাতাড়ি উঠ। রেডি হতে এতো সময় লাগে।”
বিরক্ত হয়ে বলল।
আমি একবার রেগে তাকিয়ে আম্মুকে বললাম।
“না আমি যাব না আমি একা যাব।”
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১১

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_11

হাতে আদনান ভাইয়ের শার্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।ভাইয়া রুমে থেকে চলে গেছে।আর নিজের দুইটা শার্ট দিয়ে গেছে ধুয়ার জন্য। এটা আমার শাস্তি আমি কটমট করে তখন থেকেই এইভাবে দাঁড়িয়ে আছি। জীবনে আমি জামাকাপড় ধুইনি আর আজকে আমার চির-শত্রুর জামা ধুতে হবে।
না ধুলে ও তো আমার কপালে শনি আছে।
ভাইয়া বলে গেছে যদি কথা না শুনি তাহলে আজকের করা বোকামির কথা আব্বু আম্মু কে বলে দেবে। আর আব্বু জানে তার মেয়ে কলেজে গিয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে প্রেমের সপ্ন বুনেছিল তাহলে আর রক্ষে নাই‌।
আমি রাগে ফুসফুস করতে করতে বাথটাবে গেলাম।
একঘন্টা ভড়ে কি করে কি যে ধুইলাম ঠিক নাই‌। শার্ট আর কি ধুইলাম নিজেই ভিজে একাকার।
বারান্দায় গিয়ে শার্ট মেলে রুমে এসে চিৎ হয়ে পরে যেতে নিলাম আমি ভয়ে চিৎকার করে উঠলাম। পরার কারন ও আছে তা হলো ভেজা শরীরে বাথরুমে থেকে এসেছি শরীর থেকে পানি পরেছে রুমে সেই পানিতে পিছিল খেয়েছি পরলে আমার কোমর যাবে।
আল্লাহর রহমতে পরা থেকে বাঁচলাম কোথা থেকে আদনান ভাই আসলো আর আমাকে পরা হাত থেকে বাচালো।
ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে আছি‌। ভাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। তার মুখে রাগ স্পস্ট।
ভাইয়া আমাকে ধরে রেখেই গম্ভীর গলায় বলল,,,
“ইডিয়েট একটা। কি করেছিস নিজের দুইটা শার্ট ধুতে কেউ গোসল করে ফেলে।”
ভাইয়ার ককর্শ গলায় বলা কথা শুনে পিটপিট করে তাকায় আমি।
আমি তাকাতেই ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দেয় আর নিজের শার্ট ঝাকাতে ঝাকাতে বলে,,”ওফ দিলি তো আমাকে ভিজিয়ে।”
আমি রাগ নিয়ে বললাম,,”একদম আমাকে ধমকাবে না তোমার জন্য আমি এই সন্ধায় ভিজে গেলাম। উফ শীত করছে এমন কাজ কেউ দেয় হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।”
হাত দেখতে দেখতে বললাম।

ভাইয়া আমার কথা শুনে তীক্ষ্ণ চোখে আমার হাতের দিকে তাকালো। আমার হাত সত্যি ব্যাথা করছে সাথে লাল হয়ে আছে। ভাইয়া শক্ত মুখ করে তাকিয়ে বলল,,
“এতো বড় হয়েছিস সামান্য জামা কাপড় ধুতে গিয়ে এই অবস্থা করিস নিজের। তোর মতো অর্কমা আমি একটাও দেখি নাই।”
আমি কঠিন মুখ করে তাকিয়ে বললাম,,” একদম আমাকে অর্কমা বলবে না।”
ভাইয়া আমার কথা শুনলো কিন্তু কিছুই বললো না নিজের ড্রয়ার খুলে একটা মলম আনলো হাতে দিতে তখন কোথা থেকে মামনি আমাকে ডাকতে ডাকতে আর এসে এমন ভেজা দেখে হতদম্ব হয়ে গেল।
অবাক হয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
“একি দোলা তুই ভেজা কেন?”
আমি কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে বললাম,,,
“তোমার এই গরিলা ছেলে আমার কি অবস্থা করেছে দেখো।”
আমি অভিযোগ সুরে বললাম।
আমার কথা শুনে মামনি রেগে তাকালো ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“বলবো তোর কৃতি কাহিনী।”
ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললাম।ভাইয়ার কথা শুনে একটা ঢোক গিলে মামনির দিকে তাকালাম।
“মামনি চল তো।”
বলেই মামনির হাত ধরে টেনে বেরিয়ে আসতে নিলাম।

“কিরে টানছিস কেন? আর আদনান কি বলবে বলল?”
বলেই সন্দেহ চোখে তাকালো আদনান ভাইয়ের দিকে।আমি জোর করে ধরে বললাম।
“ক‌ই কিছু না এমনি খালি আমাকে বকা খাওয়াতৈ চাওয়ার ধান্ধা বুঝো না।”
“সত্যি তো।”
“তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না মামনি।”
“আরে করি তো খুব করি।”
“তাহলে চলো।”
“আরে চলে যাব কেন আদনান তোর এই অবস্থা করলো কেন? কি করেছে তোর সাথে বল। ভিজলি কি করে?”
“আমি ওই….
কি বলবো বুঝতে পারছি না। আদনান ভাই সোফায় পায়ের উপর পা তোলে মজা নিচ্ছে।
মামনি বললো,,
“কি করে বল? আদনান তোকে আবার কাজ করিয়েছে? কি করেছে বল আজকে ওর একদিন তো আমার একদিন।”
কি মছিবতে পরলাম রে বাবা। এখন ভাইয়ার কাছে আমাকে ফাঁসানোর প্রমান না থাকলে আমার থেকে খুশি আর কে হতো। মামনি ভাইয়া কে আচ্ছা মতো বকে দিত আর শাস্তি ও। আমি পৈশাচিক আনন্দ পেতাম তা দেখে কিন্তু তা হচ্ছে না। হবে ও না এখন বলে দিলে আমার কথাও বলে দেবে আর আমি ফেসে যাব।
“নানানা মামনি ভাইয়াকে কিছু বলো না।”
মামনি আমার কথা শুনে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমি ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি। ভাইয়া শয়তানি হাসি মুখে নিয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি মামনি কে টেনে রুমে থেকে নিয়ে এলাম।

বাইরে এসেই দেখা হলো তিথির সাথে ডয়িং রুমে বসে আছে। মুখটা ছোট করে।
আমি যেতেই মাথা উঁচু করে তাকালো আমার দিকে। চোখে রাগ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
আমি ভেংচি কেটে চলে এলাম।
বাসায় আসতেই হাজার কথা আমি ভেজা কেন? কারো কথার উত্তর না দিয়ে রুমে এসে রাগে গজগজ করতে লাগলাম। ড্রেস চেঞ্জ করে এসে রাহেলা (আমাদের কাজের লোক তার বাসা আমার আম্মু দের বাসায় পাশে ছিলো গরিব। তাই আম্মু তাকে আমাদের বাসায় এনেছে তাকে আমি নানু বলি) নানুকে আমি চা দিতে বললাম।
তারপর চা নিয়ে বেলকনিতে বসলাম। এখন হালকা শীত পরছে শীত এসে পরলো। আজকে এইসময় গোসল করার জন্য শীত ভালোই লাগছে।
এদিকে আদনান ভাই নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল তখন হঠাৎ আমার বারান্দায় চোখ আসে আর আমাকে খেয়াল করে।
আদনান দোলাকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। দোলাকে খুব আবেদন ময়ী লাগছে ভেজা চুল পেছনে খোলা ।দোলা বারান্দায় লাইট দেয় নি অন্ধকারের মাঝে ও বাসায় বাসায় থেকে হালকা আলো এসে ওর মুখে লাগে এ যাতে ওকে অপ্সরার লাগছে।
নীল চাদর গায়ে জড়িয়ে ধরে কাপে চুমুক দিচ্ছে আর আশেপাশে তাকাচ্ছে।
দূরে থেকে নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদনান।
এই মুখটা দেখলে সমস্ত চিন্তাভাবনা ওলটপালট হয়ে যায়।ওর কি আছে এই মেয়েটার মাঝে ওকে এতো কেন ঘায়েল করে।

কিছুক্ষণ আগে আদনান গিয়ে কড়া গলায় শাসিয়ে এসেছে তিথিকে।তিথি খুব ভার বেরেছে।মেয়েটা এতোদিনেও একটু ও চেঞ্জ হয় নি।
ওর সাথে ফ্রেন্ডশীপে যাওয়ার পর থেকেই ও আদনান থেকে ডিস্টাব করে।
এই নিয়ে আদনান ওর সাথে কথা কাটাকাটি করে ফ্রেন্ডশীপ নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল কিন্তু আবার তিথি কান্না আর ক্ষমার জন্য মেনে নিয়েছে।
আজ আবার এতো দিন পর এসেও আমাকে জ্বালাতন করছে।একে বাসায় আনাটাই ভুল হয়েছে।দোলা যা বলেছে সব ঠিক আমি জানি‌।
দোলাকে শাস্তি দিয়েছি জাস্ট ফাহাদের জন্য। আর তারপর তিথি কেউ শাসিয়েছি। কালকেই ওটাকে বিদায় করতে হবে।
আদনান দোলার দিকে তাকিয়ে ছিলো তখন তিথি রুমে আসে আর দেখে আদনান সা করে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে।
কৌতুহল নিয়ে তিথিও তাকায় আর দেখে দোলাকে।
আদনান এখন ও নিজের মুখে বলেনি ও দোলাকে ভালোবাসে তাই তিথি আদনান এর সামনে এসে বলে।
“আদনান তোর সাথে একটু কথা ছিলো।”
আদনান তিথির আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠে।আর ভ্রু কুঁচকে তাকায় তিথির দিকে।

“কি কথা?”
“তুই কি দোলাকে ভালোবাসিস।”
আদনান ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে।
“হঠাৎ এই প্রশ্ন?”
“বল না।”
“জেনে কি করবি?”
“একটা কথায় বলতাম। তুই আমাকে একবার না বার বার রিজেক্ট করেছিস। কিন্তু কেন এই দোলার জন্য কি ? ”
“হ্যা।”
হ্যা শুনে তিথি গজে উঠলো ভেতরে ভেতরে কিন্তু বাইরে প্রকাশ করলো না।
তীব্র রাগ নিয়ে একবার দোলার দিকে তাকালো।
তারপর আদনানের দিকে তাকিয়ে বলল,, ” ওর মধ্যে কি আছে তা আমার নেই। ওর থেকে সব দিক দিয়েই আমি ফাস্ট। তাহলে আমাকে রেখে ওকে কেন তুই বেছে নিলি।”
রেগে বলল।
আদনান স্বাভাবিক ভাবেই বলল,,” ভালোবাসা রুপ ,গুন, দিয়ে হয়না‌। ভালোবাসা আসে মন থেকে। আর আমি ছোট থেকে শুধু একজনকে ভালোবাসি সে হলো আমার দোলারানী। আমার নেশা। যেসব ফিলিংস দোলার জন্য আসে তা আর কোন মেয়েকে দেখে আসেনি। সৈ যত‌ই সুন্দর হোক না কেন এই মনে শুধু একজনের বসবাস। আর তুই এমন পাগলামী করে আমাকে ফ্রেন্ডশীপ নষ্ট করলি বেশি কিছু না।তোকে আমি ফ্রেন্ডের বাইরে কখনো কিছু ভাবিনাই‌।”
তিথি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে।ও মন প্রান দিয়ে আদনান কে ভালোবাসে।
ভার্সিটিতে থেকে প্রথম দেখেই আদনানের প্রতি দূর্বলতা প্রকাশ করেছে বারবার বুঝিয়েছে কিন্তু আদনান বুঝেনি।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১০

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_10

আদনান ভাইয়া নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে আছে।আর ওই তিথী মেয়েটার ভাইয়ার পাশে বসে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। তারপর ভেতরে ঢুকলাম।আমার ঢুকার আওয়াজ পেয়ে কিছুটা ভয় পেয়ে গেল তিথী মনে হলে চমকে পেছনে তাকালো।
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি তিথির দিকে।
তু—মি ?
তোতলাতে তোতলাতে বললো তিথী‌।
আমি বললাম,,”হুম আমি। আপনি এখানে কি করছেন?”
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বললাম।
আমার কথায় তারাতাড়ি আমার কাছে এলো আর ফিসফিস করে বলল,,”আস বাইরে কথা বলি আদনান জেগে যাবে।”
ওনার মুখে ভয় স্পট আমি দেখতে পাচ্ছি।
ওনার ভয় আমি ধরতে পারলাম ভাইয়া জেগে গেল কিনা দেখে ভয়। আমি এখন ভাইয়া কে জাগানোর ইচ্ছে পুষন করলাম।
“বাইরে কেন যাব মা বলার এইখানে বলুন।”
আর হাত ধরে ফেললো। তিথির হাতে কাঁপছে।
“এতো জোরে কথা কেন বলছো?”
“ভাইয়া তো ঘুম আপনি তাহলে একা জেগে কি করছিলেন?”
আরে চলো তো।
বলেই আমাকে টেনে বাইরে আনতে গেল।

আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি কিন্তু ভাইয়াকে জাগিয়েই ছারবো।
তাই চিৎকার করে বললাম,,,
“আরে আপু আমার হাত ছার না।এভাবে টানছো কেন ?”
আমার কাজ সম্পূর্ণ হলো ভাইয়া জেগে গেল।
ভাইয়া ধরফরিয়ে উঠে বসলো আর আমার হাত শক্ত করে ধরে তিথি বাইরে নিয়ে যাচ্ছে দেখলো।
এটা দেখে ভাইয়া হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না।
তাই তিথি কে ডেকে উঠলো,,
“হোয়াট হ্যাপেনস তিথী কি হয়েছে এভাবে টানছিস কেন দোলাকে।ছার ওকে”
বলে বিছানায় থেকে উঠে দাড়ালো‌।
তিথি আদনান ভাইয়ার কথা শুনে ভয়ে আমার হাত ছেড়ে দিলো আর চমকে পেছনে তাকালো।
আদনান ভাই এগ এগিয়ে এসে বলল,,
“কি হয়েছে? তোরা আমার রুমে কি করছিস ?”
আমি কিছু বলার আগেই তিথি মেয়েটা বলল,,
“আদনান আমি নিচে যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম দোলা তোর রুমে আসছে তাই ওকে বারন করলাম যাতে না আসে। তুই তো কাউকে তোর ঘুমে ডিস্টাব করতে মানা করছিলি তাই‌। কিন্তু দোলা আমার কথা শুনলো না জোর করে চলে এলো তাই ওকে টেনে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলাম।”

আমি তিথির কথা শুনে হতদম্ব সাথে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। হা করে তাকিয়ে আছি তিথির দিকে চোখ সরিয়ে আদনান ভাইয়ের দিকে তাকালাম ভাইয়া ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
তিথি শয়তানি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি অসভ্য খারাপ মেয়ে বাবা কি মিথ্যা টাই না বলল‌। নিজের দোষ আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছে।
আমি কটমট করে তাকিয়ে আছি‌।
“আচ্ছা তুই যা।”
আদনান ভাই তিথি কে চলে যেতে বলল।
আমি তখন বললাম,,,” ও তো মিথ্যা বলতে ভাই আমি না ওই তো…
ভাইয়া আমাকে হাতের ইশারায় চুপ করতে বলে তিথি কে যেতে বলল,
“কি হলো যেতে বললাম তো।”
তিথি আমার দিকে শয়তানি হাসি দিয়ে চলে গেল।

তিথি বাইরে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলো। অফ বানিয়ে মিথ্যা বলে আমার দোষ ওই দোলার ঘাড়ে দিয়েছি। ভালোই হয়েছে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আদনান দোলাকে ভালোবাসে। এই কি সেই মেয়ে তার জন্য আমার প্রপোজাল রিজেক্ট করেছিল।
তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে আমাকে তো কিছু করতেই হবে। আর প্রথম দিন সবাই আমাকে খারাপ ভাবলো নো প্রবলেম বাসায় একবার ঢুকেছি এতো সহজে বের হবো না সবাইকে
কি করে বাঘে আনতে হয় খুব ভালো করে জানি আমি।
ভাবতে ভাবতে রুমে চলে এলো তিথি।

এদিকে আদনান ভাইয়া আমার দিকে কঠিন মুখ করে তাকিয়ে আছে।আমি সব বলার জন্য বসে আছি।
যেই মুখ খুলতে যাব ভাইয়া আমার একদম কাছে চলে এলো।আমি ভয়ে পিছিয়ে গেলাম।আর বললাম,,
“তুমি ওর কথা বিলিভ করছো ? আমি না ওই তো তোমার রুমে ছিলো আর সেটা আমি দেখেছি।ও সব মিথ্যা বলেছে।”
ভাইয়া যেন কথা শুনলোই না আমার দিকে আস্তে লাগলো।
আমি ভয় পেয়ে পেছাতে পেছাতে আলমারির সাথে ঢেকে গেলাম। কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া আমার কাছে এসে এক হাত আমার পাশে রেখে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
তাই আমি কিছু বলবো তার ভাই আগে বলল,,,
“তুই সত্যি বললি আমি কেন বিশ্বাস করবো।”
“আমার থেকে ওই মেয়েটাকে তুমি বেশি বিলিভ করো।”
“তোর থেকে ওকে বিশ্বাস করাও ভালো।”
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া একদম আমাকে টাচ করেনি একদম কাছে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কোথায় ও টাচ করেনা‌।
“তা তো করবেই গার্লফ্রেন্ড বলে কথা‌।”

আমার কথা ভাইয়া ভ্রু কুঁচকালো।
“মানে।”
“তিথি তোমার গার্লফ্রেন্ড আমি জানি।”
ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
“তোমার গার্লফ্রেন্ড এতো মিথ্যা বলে কেন? আর ভয় ও পায় ভালো। কীভাবে নিজের দোষ আমার উপর চাপিয়ে চলে গেল।”
“তুই ও তো মিথ্যা বলিস ?”
ভাইয়ার নরম কন্ঠ কিন্তু চোখ মুখে অসম্ভব রাগ।
আচমকা কথায় থমকে গেলাম। বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি।ভাইয়া গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আছে।
“আমি কি মিথ্যা বলেছি?”
কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম।
“ফাহাদ নেহাকে না তোকে প্রপোজ করতে এসেছিল।”
ভাইয়া কথা শুনে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি।

ভাইয়া আবার বলল,,” আমি মিথ্যা বলতে মানা করেছিলাম।তোর সম্পর্কে সব কিছু আমার জানা। তুই কি করিস না করিস সব আমার জানা আছে।”
আমি ভয়ে কাঁপা কাঁপি করছি।
“কাঁপছি কেন? আমাকে ভয় পাচ্ছিস?”
আমি চুপ করে আছি।
“তাকা আমার দিকে।”
ভাইয়ার ধমক খেয়ে তাকালাম।
“তোর খুব প্রেম করার শখ তাইনা।”
আমি শুকনো ঢোক গিললাম। আর মাথা নেড়ে না বললাম।
“মিথ্যা বলছিস আবার।” চিৎকার করে উঠল।
“না আর জীবনে এমন করবো না সরি এবারের মতো মাপ করে দাও ভাইয়া।”
“সব সময় ই তুই এই কথা বলিস।”
এই বার ই শেষ আর বলবো না।”

#চলবে