Tuesday, August 12, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1560



বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৯ | বাংলা ধারাবাহিক গল্প

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_29

হসপিটালে কডিটরে মাথা নিচু করে পাথর হয়ে বসে আছে আদনান। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। প্রচন্ড শক্ত গম্ভীর মানুষ আদনান এতো সহজে ভেঙে পরে না কিন্তু আজকে ভেঙে পরেছে। নিজেকে শূন্য লাগছে ওর। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু অদ্ভুত পারছে না আর পারবে কি করে? ও তো মেয়ে না ও ছেলে মেয়েদের মতো নিজের কষ্ট সবার মাঝে বিলিন করতে পারেনা। মেয়েদের মতো সহজেই কাঁদতেও পারেনা।পারলে বোধহয় ভালো হতো যন্ত্রনা টা কমতো।এতো কষ্ট হচ্ছে যে ওর বুকের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। চোখ মুখ টকটকে লাল রং ধারণ করেছে
ভেঙে পরেছে আদনান। নিজের ভালোবাসার ওই অবস্থা ও কিছু তেই সহ্য করতে পারছেনা।কিভাবে এসব হলো আদনান এর মাথায় আসছে না।
দোলাকে সেই মুহূর্তে ওই অবস্থায় দেখে আদনান সেই মুহূর্তে দোলার মাথাটা টেনে নিজের বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে। পাগলের মত করে দোলাতে ডাকতে থাকে। আদনান এর ওই চিৎকার শুনে দৌড়ে আসে দাড়োয়ান। তিনিও স্তব্ধ হয়ে যায় দোলার অবস্থা দেখে। সাথে আদনান পাগলের মত দোলার গালে হাত দিয়ে ডাকছে। রক্ত দেখে আরো পাগলামো বাড়িয়ে ফেলে। সেসব দেখে দারোয়ান ছুটে ভিতরে গিয়ে সবাইকে ডেকে নিয়ে আসে। সবাই বাইরে এসে থমকে যায়। দোলার মা তো দোলা বলে চিৎকার দিয়ে ওইখানেই জ্ঞান হারায়। তাকে কোনমতেই সামলায় আদনান এর মা। তার চোখেও জল ভরে আসে। দোলার বাবা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে তার একমাত্র কলিজার টুকরা মেয়ে দিকে। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে দোলার ছেড়ে আর নিচে আদনান দোলা কে ধরে পাগলামো করছে। দোলা রানী জান কলিজা বলে ডেকেই চলেছে দোলা সাড়াশব্দ দিচ্ছে না।

আদনানের বাবা দোলার বাবার দিকে তাকিয়ে বলে বন্ধু তাড়াতাড়ি চল দোলাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে ‌হবৈ। ভেঙে পরিস না বন্ধু আমাদের দোলার কিছু হবে না।

আদনান দোলাকে ছাড়বে না ওভাবে ধরে ডেকে চলেছে দোলা কে। তাই সবাই আদনান কে টেনে সরিয়ে দোলাকে গাড়িতে উঠায়।
আদনান দোলার জন্য কতোটা পাগল পরিবারের সবাই জানে তাই আদনান কে বুঝিয়ে হসপিটালে নিয়ে আসে।
দোলার মাথার শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে ডাক্তার জানিয়েছে।
দোলার অবস্থা ক্রিটিক্যাল অনেক কারণ আঘাতটা গুরুতর ভাবেই লেগেছে।
একঘন্টা পর অটি থেকে ডাক্তার বেরিয়ে এলো আর জানালো,
ডাক্তার আমার মেয়ের কি অবস্থা? ও ঠিক হয়ে যাবে তো।
দোলার বাবা দৌড়ে এসে জিজ্ঞেস করে।
ডাক্তার বলে,
সরি মিস্টার বারো ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে আমাদের পক্ষ্যে কিছু করা সম্ভব না।
দোলার বাবা এটা শুনে পরে যেতে নেয় আদনান এর বাবা তাকে আগলে নেয়।
আদনান বসেই ছিলো ডাক্তার এর কথা শুনেই এক ঝটকায় ছুটে আসে আর ডাক্তার এর শার্টের কলার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ক্রোধ নিয়ে বলে।
“কি বললেন আপনি কিছু করা সম্ভব না?”
ডাক্তার আদনান এর এমন কান্ডে বিষ্ময়ে হতদম্ব হয়ে যায়। বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বলে,
কি করছেন ছাড়ুন?
আপনি আমার দোলাকে বাঁচাতে পারবেনা না কেন? দোলার কিছু হলে খুন করে ফেলবো।
এবার ডাক্তার রেগে যান আর আদনান কে অনেক কষ্টে এক নিজের থেকে সরিয়ে বলে,,,
এসব কি‌ গুন্ডামু হচ্ছে আপনি আমাকে থ্রেট দিচ্ছেন কেন? আর শুনেন কোন ডাক্তার চায় না তার পেশেন মারা যাক তাই এমন করবেন না আমাদের সাথে আমরা চাই তারা আমাদের কাছে আসে তাদের যেন ঠিক করতে পারি কিন্তু আমাদের হাতে তো সব নেয়। কারন উপরে একজন আছে যিনি সব কিছু নির্ধারণ করে রাখেন। মহান আল্লাহ তাআলা তাই আমাকে এভাবে না ধমকের আল্লাহর কাছে দোয়া করুন চাইলে তিনিই পারবেন আপনাদের কাছে মানুষ কে ফিরিয়ে দিতে।
রাগে উনার চোখ লাল হয়ে এসেছে আদনান এর বাবা আদনান কে সরিয়ে বলল,,
ডাক্তার আই এম সরি ওর হয়ে বলছি আসলে দোলাকে খুব ভালোবাসে তো তাই এমন করে ফেলেছে।প্লিজ কিছু মনে করবেন না।

ডাক্তার বলল, উনার কষ্ট হচ্ছে বুঝেছি বাট এসব কি তবুও ক্ষমা করলাম ভালোবাসার মানুষটির কিছু হলে কেমন লাগে সেটা আমি জানি। বাট নেক্সট এমন করলে আর না।
বলেই ডাক্তার চলে গেল।
ছেলের দিকে রেগে তাকালো উনি আদনান আর দাঁড়ালো না জানালার কাছে এসে আবসা ভাবেই দোলার শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে র‌ইল।
তারপর কি যেন ভেবেই হসপিটালে থেকে বেরিয়ে এলো।
আদনান কে বেরিয়ে যেতে দেখে আদনান এর বাবা চিন্তা করছে কডিটরে বসে ছেলে এই রাতে কোথায় গেল এদিকে বন্ধু কে একা রেখে যেতেও পারছেনা। ছেলেটাকে নিয়ে আর পারিনা। দোলার এই অবস্থা ও যদি নিজের কোন ক্ষতি করে বসে ভয় পাচ্ছে উনি।
আদনান সোজা মসজিদে চলে আসে। ডাক্তার এর কথা শুনার পর ওর এটাই মনে হচ্ছিল।
দুহাত তুলে দোলার জীবন চাচ্ছে দোলাকে ছাড়া ও বাঁচবে না। এতো দিন পর এতো প্রতিক্ষার পর আমি আমার ভালোবাসা মানুষকে পেয়েছি আল্লাহ তাকে এইভাবে আমার থেকে কেড়ে নিও না।
ওর জীবন তুমি ভিক্ষা দাও আমাকে আমার ভালোবাসা অপূর্ণ রেখে না আল্লাহ।

এদিকে তিথি নিজে আদনান এর মার কাছে বসে আছে। আর দোলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে।
দোলার মাকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে সে এখন ঘুমিয়ে আছে। পাগলামা করছিল অনেক তাই এই অবস্থা।
তিথি আদনান এর মাকে বশ‌ করতে চাইছে। কারন একদিন এই বাড়ির বউ হবার কথা তার শাশুড়ি কে পটিয়ে রাখবে।
এই তুমি যাও তো।
তিথি কথা অফ করে বলল,
কেন আন্টি কি হয়েছে?
তোমার কথা আমার ভালো লাগছে না। আমার দোলার চিন্তায় আমার মরছি আর তুমি আজেবাজে বলছো।
তিথি রেগে চলে এলো। অসভ্য মহিলা এটাকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে একবার ব‌উ হয়ে আসি তারপর দেখাবো।

ভোরের দিকে আদনান হসপিটালে আসে। মুখটা শুকিয়ে একটু খানি হয়েই আছে।এসেই দোলার কাছে যাওয়ার জন্য জরাজরি করতে লাগে।দোলাকে একবার নিজের কাছ থেকে না দেখতে পারলে একটু স্পর্শ না করতে পারলে একদম বন্ধ হয়ে আসছে। এদিকে ডাক্তার যেতে নিষেধ করেছে কিন্তু আদনান এর জরাজরির সাথে না পেরে পাঁচ মিনিট এর জন্য এলাও করে।
আদনান ধীরপায়ে এগিয়ে যায় দোলা কাছে মাথা ব্যান্ডেজ করা ও এগিয়ে গিয়ে নিঃস পলক ফেলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দোলার কপালে আস্তে করে চুমু খায়।তারপর হাতটা আস্তে করে ধরে নিজের বুকের চেপে ধরে। ছলছল চোখে দোলার দিকে তাকিয়ে থেকে মৃদু কন্ঠে বলে,
দোলা রানী তোর কিছু হবে না দেখিস। আল্লাহ আমার কাছ থেকে তোকে নেবে না আমার ভালোবাসাকে অপূর্ণ রেখে।আর তোর এই অবস্থা যে করেছে তাকে আমি এর থেকেও কঠিন শাস্তি দেব। তুই খালি তাড়াতাড়ি আমার বুকে ফিরে আয়। আমার বুকটা মে ফাঁকা হয়ে গেছে শূন্য হয়ে গেছে আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা এইভাবে যন্ত্রণা হচ্ছে খুব। এই যন্ত্রনা একমাত্র তোর সুস্থ তা ঠিক করতে পারবে।
বলে কপালে আরেকটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে বেরিয়ে আসে।

বারো ঘন্টা হতে আর আধা ঘন্টা কিন্তু দোলার নো রেসপন্স সবাই চিন্তিত হয়ে বসে আছে আদনান ছটফট করছে কিন্তু ওর বিশ্বাস দোলা ঠিক হবেই।
দোলার মা আদনান এর মা সকালেই চলে এসেছে।সাথে খাবার নিয়ে এসেছে।সবার জন্য কিছু বলতে পারছে না আসলে দোলা জ্ঞান না ফিরলে বলতেও পারবে না দোলার মা এসব জানে না ঘন্টার খবর সে জানে দোলা ঠিক আছে।

#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৮ | বাংলা রোমান্টিক গল্প

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_28

আমি সবার আড়ালে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কান দিয়ে আমার গরম হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। ইশ ভাইয়াকে আমি চুমু খেলাম ছিঃ ভাইয়া আমাকে কি ভাবছে? এই লজ্জা আমি ক‌ই রাখি ভাইয়ার সামনে কি করে যাব আমি‌।
সবাই কতো ইনজয় করছে আমি একা লুকিয়ে বাগানে আছি। ভাইয়ার জন্য তো এখানে এসে আমি আমার তো ভাইয়ার কাছে যেতেই লজ্জা করছে কিভাবে যাব তার সামনে।
এক হাত দিয়ে আরেক হাত মুচরাতে মুচরাতে ভাবনা ভাবছি।
তখন হঠাৎ মনে হলো কেউ আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চমকে পেছনে ফিরে তাকায় কিন্তু কেউ নেই। কিন্তু আমার মনে হলো কেউ আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। এবার আমি ভয় পেয়ে গেলাম এভাবে বাসায় বাইরে আশা ঠিক হয়নি আমার। এদিকে কেউ নেই আমি বাসায় আশার সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমি এক পা এগিয়ে যেতেই খচ করে শব্দ হলো আমি ভয়ে কেঁপে উঠলাম দ্রুত পাশ ফিরতেই কেউ আমার মাথায় আঘাত করলো,
আঘাত পেয়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম ব্যাথায় চিৎকার করে উঠলাম এক হাতে মাথায় চেপে ধরে।
মাথায় হাত দিয়ে ভিজা অনুভব করলাম ঝাপসা চোখে হাত চোখের সামনে এনে ধরতেই লাল টকটকে রক্ত ভাসলো আমি থমকে গেলাম। ব্যাথা চোখ খুলে রাখতে পারছি না। ওইভাবেই ওইখানে পরে গেলাম তীব্র ব্যাথা আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না আমার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসছে।

এতো কষ্ট আমার কখনো হয়নি কখনো না। মনে হচ্ছে এই কষ্টে আমি আমার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবো। পৃথিবীতে সময় কি তাহলে আমার শেষ। হঠাৎ চোখের সামনে বাবা মার মুখ টা ভেসে উঠলো তাদের ভালোবাসার কথা কতো ভালোবাসে আমাকে বকে কিন্তু ভালোবাসার খুবই। আমি মরে গেলে খুব কষ্ট পাবে তারা খুব। কাঁদবে আমার জন্য আদনান ভাই সেও কি কষ্ট পাবে হুম পাবে তো কালকেই ভাইয়ার আমাকে ভালোবাসি বলল আর আজ আমার এই অবস্থা ভাইয়ার ভালোবাসা পাওয়া কি আমার কপালে ছিলো না। হয়তো ছিলো না আমার সময় এই পর্যন্ত ছিলো।চোখ খুলে রাখতে পারছি না বন্ধ হয়ে গেল চোখের কোণে পানি পরছে। কেউ আমার সামনে দাড়িয়ে কিন্তু কে সে যে আমার এই অবস্থা করলো আমি তাকাতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে কষ্টে।

তিথি পৈশাচিক আনন্দ নিয়ে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে। ওর আনন্দ যেন উপচে পরছে। এতো দিনে আদনান ওর হবে খুশি ওর নাচতে ইচ্ছে করছে। আচমকা দোলার পাশে বসে পরলো।
“ইশ বেচারি। ভালোবাসা পেয়ে কি আনন্দটাই না করছিল আর কিছু ক্ষনের মাঝে তার এই অবস্থা। তোমার জন্য খারাপ লাগছে দোলা আমি এমন টা করতে চাইনি কিন্তু কি করবো বলো তুমি বেঁচে থাকলে আদনান কখনো আমার হতো না। এবার তুমি নেই এই কষ্টে পাগল হয়ে যাবে নিংস হয়ে মাবূ আর আমি হব ওর সব কিছু।এবার আদনান কে আমায় ভালোবাসতেই হবে।”
দোলার দিকে তাকিয়ে আরো কিছু কথা বলে তিথি লুকিয়ে পার্টিতে চলে এলো।
পার্টিতে এসে ড্রিংস এর কাছে এসে বসলো। একটা ওয়ানার হাতে নিয়ে তাতে চুমুক দিচ্ছে আর ভাবছে আজকে তো আমাকে সেলিবেশণ করতেই হবে আমার পথের কাঁটা দূর করতে পেরেছি বলে কথা।
আদনান এখন করছে কি আচ্ছা একটু পর যখন ওর প্রানের দোলা রানীর ওই অবস্থা দেখবে ওর কি হাল হবে? ও কি করবে?
আদনান তোকে আমি এই কষ্ট দিতাম‌ই এটা না পেলে মে তুই আমার সত্যি না কখনো। জানি আমার অন্যায় করেছি কিন্তু ভালোবাসার ক্ষেত্রে কিছু অপরাধ না আমার কাছে।

আদনান দোলার কাছে হতদম্ব হয়ে গেছে। দোলা এমন ভাবে কিস করবে ও ভাবেনি। কিন্তু মেয়েটা গেল কোথায় সে কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি। লজ্জায় ওর মুখে লাল হয়ে গেছিল ঝুঁকের বসে কিস করে নিজেই লজ্জা মরে যাচ্ছে পাগলি একটা। দোলার কথা ভেবে আদনান এর মুখে ও হাঁসি ফুটে উঠেছে। বারবার দোলার স্পর্শের কথা মনে হচ্ছে। আমি যে নিজের ভালোবাসার মানুষটির কাছে থেকে এতো তাড়াতাড়ি ভালোবাসা পাব কল্পনাতেও ভাবিনি‌। পার্টিতে দোলাকে খুজছে আদনান কিন্তু পাচ্ছে না বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে।

গেল কোথায় এখানে তো নাই ওই তো দোলার মা আন্টি আম্মু সবাই ওই খানে যার সবাই সবার মতো ইনজয় করছে। হঠাৎ কোথা থেকে তিথি এসে আমার হাতে বাহু জরিয়ে ধরলো আমি চমকে উঠলাম। রেগে ওর দিকে তাকালাম তিথির সেদিকে লক্ষ্য নেই ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে হা করে আমি ঝামটা মেরে ওর হাত নিজের বাহু থেকে সরিয়ে দিলাম।
“কি হচ্ছে এসব? এমন করছিস কেন অসভ্যের মতো।”
তিথি আমার থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে মুখ বেকা করে তখন আমার দিকে‌ তাকালো।
“তুই আমাকে আবার অসভ্য বললি আদনান।”
“অসভ্যের মত কাজ করলে বলবো না।”
‘আমি ধরলে ফোসকা পড়ে তোর গায়ে আর ওই দোলা তোকে কিস করলে কিছু হয় না তাই না।”
তিথির মুখে কিসের কথা শুনে আদনান বিশ্মিত হয়ে তাকালো ওর মুখের দিকে।
“কি রে অবাক হচ্ছিস কেন ভাবছিস আমি কি করে জানলাম এই সব?”
প্রশ্ন তো চোখে তাকিয়ে আছে আদনান।
“খোলামেলা জায়গায় এসব করলে তো আমাদের মত অনেকেই দেখতে পাবে তাই না।”
তিরস্কার করে বলল তিথি।
“সর আমার সামনে থেকে তুই ড্রাংক।”
তিথি শুনলো না উল্টা আদনান এর কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
“আই লাভ ইউ আদনান। আমি তাকে খুব ভালোবাসি ওই দোলার থেকে ও বেশি। প্লিজ লাভ মি।”
“ছার আমাকে তিথি। কি করছিস সব কিছুর কিন্তু একটা লিমিট আছে।”
“না ছারব না আগে বল তুই আমাকে ভালবাসবে!”
‘পাগলামো করিস না বাবা-মা আছে এখানে এভাবে দেখলে কিন্তু ওনারা মাইন্ড করবে।”
“আই ডোন্ট কেয়ার।
তিথিকে বলেও আদনান কিছু বোঝাতে পারলো না তাই নিজেই জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে আচমকা তিথির গালে ঠাস করে চড় মেরে বসলো। রাগে আদনান এর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“বাসায় এত লোকের সামনে এর থেকে আর ভালো কোন পানিশমেন্ট তোর জন্য পেলাম না।নেক্সট টাইম আমি যেন তোকে আমার চোখে সামনে আর না দেখি আজকে বাসায় চলে যাবি।”
কথাগুলো বলে আদনান ওর সামনে থেকে চলে এলো।

তিথি গালে হাত দিয়ে ফুসফুস করতে করতে আদনান এর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। তুই আমাকে চড় মারলি আর কি বললি আমি যেন চলে যাই আমি কখনো যাবনা। চলে যাবে ওই দোলা যার জন্য তুই আমাকে এতো ইন্সাল্ট করলি।
আদনান রাগে গজগজ করতে করতে বাসার বাইরে চলে রাগে মাথার চুল ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। তিথিকে বাসায় আনা উচিত হয় নাই। ও নিজে তো না কখনো কিন্তু ঐদিন অফিস থেকে আসার পথে তিথির সাথে দেখা হয়ে যায় আর তিথি নিজেই বলে যে আদনান,” তোর বাসায় পার্টি হচ্ছে আর তুই আমাকে একটু বললি ও না।”
তিথির মুখে পার্টির কথা শুনে আদনান চমকে ছিল কারণ তিথি এসব জানলে কিভাবে? জিজ্ঞেস করায় বলে তাদের এত বড় কোম্পানি ফার্স্ট হয়েছে সেটা কি আমরা জানব না।
আদনানর এর বিশ্বাস হয় ওর কথা আর এতো দিনে বন্ধুত্ব ওদের তাই নিজে থেকে আসা র জন্য বলাতে আর মানা করে না‌‌। আর এসে এসব শুরু করেছে।
আস্তে আস্তে বাগানে চলে এসেছে আদনান। তিথি কে নিয়ে ভাবছে আর রাগে ফুসফুস করছে। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে নিজে কিছু পরে নরম কিছু ও চমকে পা সরিয়ে নেয় তাড়াতাড়ি।
হালকা আলোয় ও নিচের দিকে তাকিয়ে থমকে যায় সাথে সাথেই স্তব্ধ-হতভম্ব হয়ে যায়।স্তব্ধ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে এসব কি দোলা এ ভাবে শুয়ে আছো কেনো তাও এই খানে।ভয়ে তাড়াতাড়ি নিচে বসে পড়ে ওর বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে ওঠে অজানা ভয়ে।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৭ | বাংলা নতুন ধারাবাহিক গল্প

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_27

মুচকি মুচকি হাসছি সোফায় বসে। খুশিতে আমার হাত পা তুলে নাচতে ইচ্ছে করছে। ফাইনালি ভাইয়া ভাইয়া ভালোবাসি স্বীকার করলো।ও গড এতো খুশি আমি রাখবো কোথায?
ভাইয়া কোন এক কাজে বাসার বাইরে গেছে তখন থেকে আমি এখানে বসে মুচকি মুচকি হাসছি।
এদিকে তিথি আমাকে ভাইয়ার সাথে ভাইয়ার রুমে যেতে দেখেছিল। ও রাগে গজগজ করতে করতে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে। এখন দুতালায় দাঁড়িয়ে আমার দিকে আছে। আমার তো আর সেদিকে খেয়াল নেই।
তিথি রেগে তাকিয়ে আছে ওর মন চাইছে দোলা কে খুন করে ফেলতে নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে অন্য কাউকে দেখা কতো কষ্ট এর ও জানে।
এই সব কিছুর জন্য দায়ী ওই দোলা ওর জন্য আদনান আমাকে বার বার না করেছে।
ওকে আমার ছারবো না ভাইয়ার ভরসা করলে কিছু হবে না যা করার আমি করবো।

রাগে গজগজ করতে করতে দোলার পাশে এসে বসলো।
আমি ভাইয়ার কথা ভাবছিলাম তখন মনে হলো কেউ আমার পাশে বসেছে তাকিয়ে দেখি তিথি রেগে তাকিয়ে আছে।আমি রাগ দেখে ভয় পেয়ে গেলাম।
মাথা সোজা করে উনার দিকে তাকালাম,
“আপনার কি হয়েছে এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?”
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে বললাম,
আমার কথা শুনেই মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললো। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি।
“কি করছো দোলা? আর তোমাকে এতো খুশি পাস দেখাচ্ছে যে?”
মুখে হাসি নিয়ে বললো কিন্তু তার এই হাসিটা আমার একদম‌ই সত্যি লাগছে না মনে হচ্ছে দেখানে একটা মেকি হাসি।
তবুও কিছু বললাম না,,
“বসে আছি দেখতে পারছো না।”
“হুম তা দেখছি। আচ্ছা তুমি এখন ও আমার সাথে রেগে আছো?”
আমি বললাম, ” না তো রেগে কেন থাকবো?”
“রেগে নাই তাহলে কথা বলতে এতো সংকোচ করো কেন?”
“ওই আপনাকে ভালো করে চিনি না তো তাই।”
“চেনো চিনি নাও। আমি তো তোমার আপুর মতো তাই না।”
আমি বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছি তাও বললাম,
“হুম। আচ্ছা আমি আসি আপনি থাকেন?”
বলেই উঠে দাঁড়ালাম।তিথির দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে গটগট করে চলে এলাম। বাসায় এসে থপ করে বিছানায় শুইয়ে পরলাম।

নেহা ইলমা সুমাইয়া সবাই কে কনফারেন্স এ কল করলাম তারপর সব বলে দিলাম।সব শুনে তো ওরা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল।কথা শেষ হতেই আমি আজকে কোন ড্রেস পরবো সেটা দেখতে লাগলাম।
আলমারী থেকে সব ড্রেস বের করে সব আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখছি কোন টা পরবো। একটা দেখছি আর ফেলে আরেকটা সব ড্রেস সুন্দর কিন্তু আমার ভালো লাগছে না মনে হচ্ছে আরো সুন্দর দরকার। আজকে ভাইয়া আমাকে ভালোবাসি বলেছে আজকে আমার ভাইয়ার মন মতো সাজা উচিত।
ড্রেস বিছানায় রেখে চুপ করে বসে আছি গালে হাত দিয়ে।

বিকেলে ভাইয়া আমার জন্য ড্রেস পাঠালো। রুমে এসে প্যাকেট খুলে চমকে উঠলাম অনেক সুন্দর ড্রেস। কালো গাউন।ভাইয়ার পছন্দ আছে বলতে হয় আমার খুব পছন্দ হয়েছে আমি ওই ড্রেসটাই পরলাম।
পছন্দ না হলেও আমি এইটাই পরতাম কারণ ভাইয়া দিয়েছে। সন্ধ্যার পর রেডি হয়ে আসলাম এই বাসায় লোকজন এর অভাব নাই।
এতো মানুষ দেখে কিছু টা নার্ভাস ফিল হচ্ছে আব্বু আম্মু পেছনে আছি আমি।তারা চলেই গেছে আমি ভাইয়াকে খুঁজছি চারপাশে। এমন সময় তিথি আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
তিথির দিকে তাকিয়ে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। তিথির দিকে তাকিয়ে আশেপাশে তাকালাম সব ছেলেরা হুমকি খেয়ে পরছে ওর উপর। আর পরবেই না কেন পরছে কি অসভ্য ড্রেস ছিঃ আমার তাকিয়ে লজ্জা লাগছে।
তিথি লাল টকটকে গাউন পরেছে হাতা কাটা। গলার দিকে বেশি নামানো, আবার এদিকে হাঁটু উপর পর্যন্ত শুধু পেট ঢাকা। ঠোঁটে লাল টকটকে লিপস্টিক দিয়েছে চুল ফুলিয়ে উপরে খোঁপা করা কি বাজে লাগছে আমি নাক ছিটকে তাকিয়ে আছি।আর ছেলেরা চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।
তিথি এসবে মজা পাচ্ছে মনে হচ্ছে সবার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে আমাকে বলল,
‘হাই দোলা লেট করে এলে দেখছি।”

‘হুম আমার রেডি হতে সময় লেগেছে।”
“পার্লারে যাও নাই।”
‘না।”
“ও এজন্যই তোমাকে ভালো লাগছে না।আর চুল ছারছো কেন? কেমন জানি লাগছে ঠোটেও লিপস্টিক দাও নাই। কিন্তু ড্রেসটা সুন্দর এটা তোমার থেকে আমাকে বেশি মানাতো।”
ভাব নিয়ে বলল।
তিথি রীতিমতো আমাকে অপমান করছে তাও কিছু বলছি না চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। চোখে আমার জল চিকচিক করছে সত্যি কি আমাকে খারাপ লাগছে। ভাইয়া তো বেশি সাজ পছন্দ করে না আর চুল খোলা রাখাটাই ভাইয়া পছন্দ করে এজন্য তো আমি এভাবে এসেছি।
” আচ্ছা মন খারাপ করো না নেক্সট আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব কিভাবে সাজ গোজ করতে হয়।তুমি তো বাচ্চা পারবে কি করে দেখ সবাই আমার দিকে কি ভাবে তাকিয়ে আছে আর তোমার দিকে কেউ তাকাচ্ছে না।”
বলেই আশেপাশে তাকালো।
আমি সবার দিকে তাকিয়ে কিছু বলবে তখন কোথা থেকে ভাইয়া চলে এলো। আর আমার পাশে দাঁড়িয়ে এক হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো,,
ভাইয়ার জরিয়ে ধরাতে আমি চমকে তাকালাম, ভাইয়া আমার দিকে না তাকিয়ে তিথির দিকে নিজের দৃষ্টি রেখে বলল,
“তোর মতো নিজের শরীরের অংশ অন্যকে দেখিয়ে নিজের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে না আমার দোলা। তাই নিজের সাথে দোলাকে মিলাতে আসবি না। আর কি বলেছিলি সবাই তোকে খেয়াল করছে এটা ভুল সবাই তোকে না তোর শরীর খেয়াল করছে। যে ড্রেস পরেছিস এটা পরার থেকে না পরা বেটার ছিলো আর এসব বাজে পোশাক সাজগোজ আমাদের বাড়ির মেয়েরা করে না।”
বলেই আমার দিকে তাকালো আমার গভীর ভাবে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।আমার চোখে এখনো পানি আছে ভাইয়া বাম হাত বাড়িয়ে আমার চোখের জল মুছে দিলো।
আর বল্ল,,
” ইডিয়ট ওর কথায় কাঁদছিলি। একটু তেই এতো কাদিস কেন বলতো।”
তিথি রেগে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।তারার কটমট করে বলল,,
” তুই আমাকে এভাবে অপমান করতে পারলি এই মেয়েটার সামনে।”
ফুঁসে উঠলো।
“এই মেয়ে না দোলা বলবি।চাইলে ভাবিও বলতে পারিস।”
তিথি রেগে ফুসফুস করতে করতে চলে গেল আমাদের সামনে থেকে।

আমি ভাইয়ার দিকে অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
‘ভাই আমাকে সত্যিই কী বাজে লাগছে দেখতে?”
ভাইয়া আমাকে ছেড়ে হাতের বাহু শক্ত করে ধরে এক সাইটে নিয়ে এলো।
তারপর আমার কোমর শক্ত ধরে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল,
‘দাঁড়া ভালো করে দেখে বলি।”
আমি মাথা নিচু করে বললাম,
” আমাকে দেখতে বাজে লাগছে তাই না। তিথি আপু ঠিকই বলছি।”
মন খারাপ করে। ভাইয়া আমার দিকে এক দিকে তাকিয়ে আছে কি বলছে না?
আমার ভ্রু কুঁচকে বললাম,
” কি হলো কথা বলছো না কেন?”
ভাইয়া চোখের পলক ও ফেলছে না।
ভাইয়া নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলল,
“দোলা রানী তুই আজ আমার মন মতো সেজেছিস আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না।”
‘কেন বিশ্বাস না করার কি আছে? ”
ভাইয়া আমার চুল কানে গুঁজে দিয়ে আদুরে গলায় বলল,
“ভালোবাসি দোলা রানী।”
আমি ভাইয়া মুখে ভালোবাসি দোলা রানী শুনে স্তব্ধ হয়ে হয়ে তাকিয়ে আছি।কথাটা আমার কানে বাজছে শরীর কাঁপছে আমার ভাইয়ার এতো আবেগ মাখা কন্ঠ শুনে আমি খুশি বাকবাকুম হয়ে গেলাম।
খুশির ঠেলায় ভাইয়ার গালে চুমু একে দিলাম।আমি চুমু দিয়ে নিজেই বোকা বনে গেলাম অতি আনন্দে কি করে ফেললাম লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম। ভাইয়া স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কোমরে রাখা হাত আলগা হয়ে গেছে। আমার এমনটা হয়তো আশা করে নি।
আমি লজ্জা মাথা নিচু করে আছি একবার ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে চলে এলাম ছিঃ কি করে ফেললাম এখন ভাইয়ার সামনে যাব কি করে?

#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৬ | বাংলা ভালোবাসার গল্প

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_26

এতো শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে যে আমি শ্বাস নিতে পারছি না। জরোসরো হয়ে ভাইয়া বুকে নিজের নাক ঠেকিয়ে আছি। শরীর একটু ও ধরাতে পারছি না কি শক্ত করে ধরেছে।
হঠাৎ পায়ের শব্দ শুনে ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।
আমি ছাড়া পেয়ে যেন বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম। উফ আর একটু হলে নিশ্চিত দম বন্ধ হয়ে মারা যেতাম। আব্বু আম্মু এসেছে। ভাইয়া তাদের সাথে কথা বলছে সহজ ভাবে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
রাতে আর ওইবাসায় থাকলাম না চলে এলাম সবাই।
পরদিন কলেজে থেকে এসেই ভাইয়া দের বাসায় চলে এলাম। সাজানো হয়েছে বাসা দরজার কাছে এসেই ভাইয়ার উপর নজর পরলো ভাইয়া কাজ পরছে। ঘেমে একাকার হয়ে গেছে আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
তারপর আমি সোজা ভাইয়ার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।

“কি হয়েছে সামনে এসে দাড়ালি কেন? দেখতে পাচ্ছিস না আমি কাজ করছি।”
আমি চোখ ছোট করে বললাম,,
“আমি কি বলেছি তুমি কাজ করছো না? আর আমি কানা না যে দেখতে পাব না।”
“তাও ভালো এমন ভাবে আসছিলি কানাই ভাবছিলাম।”
গাল ফুলিয়ে বল্লাম, কি বললে?
ভাইয়া বলল, কানা না বুঝলাম বয়রা কড়ে থেকে হলি।”
“ঝগড়া করছো কেন? গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কেউ ঝগড়া করে বুঝি।”
অভিমানী হয়ে।
“আচ্ছা ঝগড়া করে না তো কি করে।”
“সুন্দর করে কথা বলতে হয়।
“আমার কথা তোর সুন্দর না লাগলে আমি কি করবো।”
“তুমি সুন্দর করে বললে কোথায় খালি তো খোঁচা মারলো? আমাকে ইনসাল্ট করলা।”
“তো তুই কি চাইছিল আমার কাছে।”
বলেই ভাইয়া আমার কোমর জড়িয়ে ধরলো। আমি বড় বড় চোখ করে ফেললাম,
“কি করছো?”
বলেই এদিক ওদিক তাকাতে থাকলাম। তাও ভালো এখানে কেউ নাই।
তুই তো এসব‌ই চাস। বলেই আমাকে একদম নিজের কাছে নিয়ে ডান হাত উঁচু করে কপালে থেকে চুল সরিয়ে কানে গুঁজে দিল। আমি ভাইয়ার স্পর্শ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি বুকের ভেতর হাতুড়িপেটা হচ্ছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে ভাইয়া কাছে আসলি ইদানিং আমার সাথে ঘটছে এইসব। ভাইয়া আমার একদম মুখের কাছে এসে তারপর বলল,,
“ইদানিং তুই আমাকে একটু ও ভয় পাচ্ছিস না খুব ভার বেড়েছিস।আর এই অসভ্যতামি করার জন্য আমার কাছে ঘেষলে চরিয়ে দাঁত ফেলে দেব।”
আমি হাঁ করে ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম ভাইয়ের স্পর্শে আমার সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে নিঃশ্বাস নিতে ভুলে যাচ্ছি মনে হয়। তখনই হুট করে ভাইয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিজে থেকে সরিয়ে দিল।

ভাইয়া আবার ধমক দিয়ে বলল,, কি হলো যা এখান থেকে।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে বললাম,,” গরিলা একটা এইভাবে আমার সুন্দর মুহূর্তটাকে নষ্ট করে দিল।”
ভাইয়াকে চোখ পাকাতে পাকাতে আমি পেছাতে লাগলাম তখনই কারো সাথে ধাক্কা খেলাম জোরে। পেছনে তাকিয়ে চমকে উঠলাম তিথি দাঁড়িয়ে আছে।
আমাকে দেখে একটা মুখ বিকৃতি অবস্থা করে আবার তাতে হাসি ফোটালো। আমি ব্রু কুঁচকে একবার তিথি দিকে তাকিয়ে ভাইয়া দিকে তাকালাম।
“হাই দোলা, কেমন আছো?
আমি ছোট ছোট করে দিয়েছি দিকে তাকিয়ে আছি।
“আরে দোলা কথা বলছো না কেন ?আমার সাথে কথা বলবা না নাকি? এখনো মাইন্ড করে আছো?
“মাইন্ড কেন করবো আপনি না ওই দিন কলেজ এসে সরি বললেন?
আমার কথা শুনে তিথি মুখে ভয়ের আবাস দেখতে পেলাম তারপর হেসে বলল,,
“ও হ্যাঁ আমার তো মনে ছিলো না দোলা কি মন ভুলা আমি।”
ও।
আদনান ভাই এগিয়ে এসে বলল,
“তুই দোলার কলেজে গেছিলি?
শক্ত মুখ করেই বললো আদনান ভাই।
ভয়াত মুখ করে বলল তিথি,, “ওই হ্যাঁ গেছিলাম আসলে ওই দিক দিয়ে চাচ্ছিলাম তাই আর কি?
“ওই দিক দিয়ে তুই কোথায় যাচ্ছিলে?
“ওই একটা দরকারে চাচ্ছিলাম এখনও মনে পড়ছে না আমিতো ওইটাই ভুলে গেছিলাম।”
ভাইয়ের সন্দেহের চোখে তিথি দিকে তাকিয়ে আছে তিথি হেসে হেসে কথা বলছে সাথে ভয় ও মুখে।

আমি চলে এলাম দুজনকে একা ছেড়ে দিয়ে তিথি আবার এই বাড়িতে কি করছে? ভাইয়া কি আবার নিয়ে এসেছে ওকে।
মন খারাপ করে মামনি কাছে এসে দাঁড়ালাম। তিথি টাকে আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। মেয়েটা আদনান ভাইয়ের গায়ে পড়া পড়া ভাব। ভাইয়া তো আমাকে ভালোবাসে তবুও মেয়েটার ভাব ভঙ্গি ভালো লাগেনা।
মামনি আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি মন খারাপ করে আছো কেন?
আমি কিছু বললাম না।
চলে এলাম ভালো লাগছে না। হঠাৎ কে যেন আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। ভালো করে তাকিয়ে দেখি আদনান ভাই। ভাই আমাকে সোজা নিজের রুমে নিয়ে এসে দরজা আটকে দিল।
আমি মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছি।
‘কি হয়েছে মুখটা এমন বাংলার পাঁচের মতো করেছিস কেন?”
আমি চুপ করে ভাইয়া কে জরিয়ে ধরলাম শক্ত করে।ভাইয়া চমকে উঠলো,,

‘আবার শুরু করলি।
ছারাতে চেয়ে। আমি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম।
“হুম করলাম। আর করবোই আমার মা ইচ্ছে তাই করবো তুমি মানা করতে পারবে না।”
‘ওরে বাবা তাই এতো অধিকার।”
“হুম অনেক। তুমি ওই তিথি ফিতি কে এনেছো কেন”
এনেছি‌ তো কি হয়েছে?
কেন আনবে ওকে আমার একটু ও ভালো লাগে না।
তোর না ভালো লাগুক আমার তো লাগে।
কথাটা শুনেই আমার চোখ জ্বলে উঠলো আমি ভাইয়াকে ছেড়ে শার্টের কলার শক্ত করে ধরলাম।
“কি বললে তোমার ভালো লাগে।”
নাক ফুলিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে।
“আরে কি করছিস কলার ছার!”
হতদম্ব হয়ে ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“ছারবো না কি করবে ধমকাবে ধমকাও। কিন্তু ছারবো না তুমি ওই মেয়েকে ভালো লাগে বললে কেন? তোমার শুধু আমাকে ভালো লাগবে আর কাউকে না।”
বলেই ভাইয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি ভাই আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে।আমি ভাইয়ার নিরব নেশাতুর চোখের দিকে তাকিয়ে শার্টের কলার ছেড়ে দিলাম।
দূরে সরে দাঁড়াতে গেলাম পারলাম না ভাইয়া আমার কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। আমি থমকে গেলাম ভাইয়া আমাকে একদম কাছে নিয়ে নেশা নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে র‌ইলো আমার মুখের দিকে আমি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া নিজের মুখ আমার দিকে এগিয়ে আনছে আমি ভোট গিলছি ভাইয়ার প্রতিটা নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে।
ভাইয়া নিজের কপাল আমার কপালের সাথে ঢেকিয়ে দিলো আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করে ফেললাম আমি চোখ খুলে রাখতে পারছি না। ভাইয়া এবার নরম কন্ঠ বলতে লাগলো,,
“তুই আমাকে এতো ভালোবাসিস দোলা রানী। আমি বিশ্বাস করতে পারছি আমার এসব সপ্ন লাগছে যেন আমি একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখছি যেখানে আমার দোলার রানী আমাকে পাগলের মত ভালবাসে। জোর করে আমাকে ভালোবাসে যেটা আমি দশ বছর ধরে একা বেসে আসছি।না প্রকাশ করতে পারছি না সইতে পারছি দুকেদুকে ভালোবাসাটা নিজের মাঝে লুকিয়ে রেখেছি।আর মনে মনে সব সময় চেয়েছি আমার দোলা রানী আমি যেন আমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে। কারো সাথে যেন সহ্য করতে না পারে যেমন টা আমিও পারিনা।আজ কয়েকদিন ধরে আমি তার পাগলামো ভালোবাসা দেখছি আর ভাবছি এটা কি সত্যি মনের অনুভূতি ভালোবাসা নাকি শুধুই তার পাগলামো। যা আবার সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাবে আমার ভয় হয়
দোলা রাণী এমন হবে না তো।তুই আমাকে সত্যিই ভালবাসিস তো আবার অস্বীকার করবি নাতো।”

আমি ভাইয়ের কথাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছি।
“কখনো না ভাই‌য়া।”
ভাই বলল,,এতো ভালো কবে থেকে বাসা শুরু করলি।
সে তো অনেক দিন। কিন্তু বলার সাহস পায়নি যদি বকো তাই।
কতো দিন।
দু বছর।
বলিস কি এতো দিন।
হুম কিন্তু তোমার থেকে কম।ভাইয়া তুমি লুকালে কি করে বলো? আমি একটু ও বুঝতে পারি না তাহলে এতো দিন লুকাতাম না আগেই বলে দিতাম
আমি আরো কতো কি ভাবতাম।
কি ভাবতি?
অনেক কিছু তুমি আমকে মারবে বকবে এসব ভেবেই তো বলবো না ভেবেছিলাম কিন্তু আমার ফ্রেন্ড রা বলল তুমি নাকি আমাকে ভালোবাস।
ওরা বুঝলো কি করে?
তা তো জানি।
তা জানবি কি করে? খালি জানো আকাম করতে।
হুম তাইতো জানতে পারলাম আমার গরিলা ভাইটা আমাকে কতো ভালোবাসে।
বলেই ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলাম।
আরে কি করছিস ছার।
না ছারবো না। এতো ছার ছার করো কেন ধরো ধরো করতে পারো না আনরোমান্টিক একটা।
ভাইয়াও আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,
“কি বললি আমি আনরোমান্টিক একবার বিয়ে হতে দে দেখিয়ে দেব।”
এখন দেখাও।
মাথা উঁচু করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম।ভাইয়া আমার কপালে চুমু দিয়ে বলল।
হ্যাত আমি হারাম কাজ করি না।

#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৫

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_25

বুকের ভেতর টা হাতুড়ি পেটা হচ্ছে। বুকে হাত দিয়ে বড় বড় শ্বাস নিলাম। রান্না ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে তখন মামনি ডেকে উঠলো।
“দোলা নাকি রে ওইখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? এখানে আয়!”
মামনির ডাকে চকিতে চাইলাম। আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি নাভাস নেস কমাতে কমাতে এগিয়ে গেলাম মুখে মেকি হাসি ফুটিয়ে।
আমি কাছে যেতেই মামনি বলল,,
“কি রে ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?”
আমি মামনির কথা। হকচকিয়ে গেলাম। কি বলবো ভাবছি আর এদিকে ওদিকে তাকাতাকি করছি।তখন আম্মু বলল,
“খিদে পেয়েছে বোধহয় বাসায় ও তো এমন করে খিদে পেলে।”
আমি আম্মুর দিকে চাইলাম।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি রে তাই তো।”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম। এটাই ভালো হলো।
মামনি আমার গালে হাত দিয়ে বলল,,
“আহারে কতো খিদে পেয়েছে। এই তো রান্না শেষ তুই গিয়ে সবাইকে নিয়ে বস টেবিলে আমরা খাবার নিয়ে আসছি।”
আমি আচ্ছা বলে চলে এলাম।

ডয়িং রুমের কাছে এসে দেখি আব্বু বাবাই আর আদনান ভাইয়া কি যেন বলে হাসাহাসি করছে।আমি মুগ্ধ হয়ে ভাইয়ার হাসির দিকে তাকিয়ে আছি কি অপূর্ব হাসি।
আচমকা আলো বাম হাত গান গালে চলে গেলো এইখানে ভাইয়া আমাকে চুমু দিয়েছে।ইশ কি লজ্জা? সাথে আমি দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে লজ্জায় লাল নীল বেগুনী হতে লাগলাম।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখ ঢেকে ব্লাসিং হচ্ছি।
“কি রে এখানে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছিস কেন পাগলের মতো?”
ভাইয়া আওয়াজ পেয়ে হকচকিয়ে চোখ খোলে ফেললাম। মুখে থেকে হাত সরিয়ে দেখলাম ভাইয়া আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। আমি সোফার দিকে তাকিয়ে দেখি কেউ নাই।
বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,,
“তু–মি এখানে কখন এলে? তুমি না ওইখানে বসে ছিলে!”
“হুম ছিলাম কিন্তু তুই তো পাগলের মত অনেকক্ষণ ধরে এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস তাই এলাম আবার সত্যি মাথা খারাপ হলো নাকি দেখতে।”
“আমার মাথা খারাপ হয়নি তুমি বাজে কথা একদম বলবে না।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।
“মাথা খারাপ হয়নি তো এখানে এমন করে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?”
“আমি তো লজ্জা…
বলেই থামলাম কি বলছিলাম এসব বললেই ভাইয়া আমাকে ইনসাইড করবে।
‘কি লজ্জা?”
ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল।
আমি কিছু বললাম না।
ভাইয়া আমার দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে।আমি এবার বললাম,,
“তুমি সরো তো আমার খিদে পেয়েছে।”
“তো খা না এখানে না দাঁড়িয়ে থেকে। ”
বলে উঠলো আমি আসতে গেলেই বলল,,” ওই ওয়েট!”
আমি ঘাড় বাঁকিয়ে বললাম,” কি?”
বললি না তো প্রেম করতে রাজি নাকি আমার সাথে।
আমি সোজা হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম খুশি হয়ে।
‘আমি তো সেই কবে থেকেই রাজি।”
উত্তেজিত হয়ে।
ভাইয়া বলল,,”খুশি পরে হ‌ও আমার কথায় রাজি নাকি তাই বল।”
“কোন কথায়?”
‘ওই যে আমি তোকে কিস করবো‌।”
“কিসের কথা শুনেই চোখ বড় করে ফেললাম।
তুমি আমাকে থপ দিচ্ছে আগে তো শুনিনি প্রেম করলে এসব করতে হয়।”
“হয় না তো।”
“তাহলে তুমি আমাকে এই বাজে বাজে কথা বললে কেন?”
রাগ নিয়ে বললাম।
ভাইয়া বলল,,”আমি অন্যের কথার কথা বলি নি আমার সাথে প্রেম করলে তোকে এসব সহ্য করতে হবে। কারন আমার তো আমার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে এসব করার ইচ্ছা। তাকে অনেক অনেক জ্বালাবো যেমন ধর রাতে ঘুমাতে দেব না সারা রাত কথা বলবো।সহ্য করতে পারবি তো।”
“ও মাই গড সারারাত কথা বলতে হবে। আমার তো ঘুম আসবে।”
“তো আমি কি করবো? আমার সাথে প্রেম করলছ আমার সব কথা তোকে শুনতে হবে।’
“সব।”
“হুম সব।”
আমি আগুল মুখে দিয়ে ভাবছি ভাইয়া আমকূ ভয় দেখাচ্ছে নিশ্চিত যাতে না বলি আমি এতো বোকা না রাজি আমি হবোই।
“আমি রাজি সব কিছু তেই।”
‘ভেবে বলছিস?”
“হুম আর এত ভাবাভাবি কি আছে এমন ভাবে বলছ যেন আমি প্রেম না যুদ্ধ করতে যাচ্ছি।”
গাল ফুলিয়ে বললাম। ভাই আমার গালের মধ্যে ঢোকা মেরে বললো,,
“একদম গাল ফুলাবি না আমার সামনে।”
“কেন তোমার জন্য গাল ফুলালে কি সমস্যা?”
চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“যেটা বলছি সেটাই করবি না হলে ব্রেকআপ করে দেবো।”
“ও আল্লাহ কি কও প্রেম শুরু করার আগেই ব্রেকআপ।”
চল খেতে চল।

আমি আর ভাইয়া এক পাসেই বসলাম।আমি খাচ্ছি কম ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি ভাইয়া কড়া চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি তখন একটা হাসি দিয়ে খেতে লাগলাম। আবার ভাইয়ের দিকে তাকালাম হঠাৎ করে আমার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো। আমি আমার পা নিয়ে ভাই এর পায়ের উপর রাখলাম ভাইয়াকে জ্বালানোর জন্য ভাই আমার দিকে তাকাচ্ছে না খালি খাচ্ছে কোথায় প্রেম শুরু করলো আমার দিকে তাকাবে। তা না খালি খেয়ে যাচ্ছে।
আমি হাজার বার তাকালে ভাইয়া একবার তাকায়।খাবার টেবিলে বসে জানতে পারলাম ডিনারের জন্য ডেকেছে কারণ আমাদের আদনান ভাই বিজনেস এইবার টপ হয়েছে। সেই নিয়ে একটা অনুষ্ঠান হবে।তার আগে আগে আমাদের দাওয়াত খাইয়ে নিল কারণ আমার আব্বু আদনান ভাইয়ের আব্বুর বেস্ট ফ্রেন্ড।
ভাইয়ের পায়ে নিজের পা নিয়ে খোচা মারছে। ভাইয়া খাবার মুখে দিয়েছিল সে আমার দিকে তাকালো প্রচন্ড রেগে। আর ইশারায় আমাকে পা সরাতে বলল।
আমি শুনেও না শোনার ভান করলাম।
ভাইয়া এবার আমার দিকে তাকিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,
“পা সরাতে বলেছি।”
“না সরাবো না।”
ভাইয়া চোখ শক্ত করে বলল,,
“মার খাবি কিন্তু।”
‘ধুর ছাই। ভাল্লাগেনা তুমি আমার দিকে তাকাও না কেন হ্যা আমি কতো বার তাকালাম আর তুমি একবার ও না।”
“বাবা মা কে তোর চোখে পরছে না তাদের সামনে বসে এমন করিস ভয় পাস না।”
‘ভয় কেন পাব?”
“তুমি আসলেই পাগল।”
“ভালোবাসি তো তাই পাগল বলবাই। যখন ভালোবাসবো না তখন বুঝবা।”
বলেই ভেংচি কেটে পা সরিয়ে নিলাম। আর খেলাম ও না হাত ধুয়ে সোফায় এসে বসলাম খুব অভিমান হয়েছে আমার। ভাইয়া সব সময় বকে একটুও কি ভালোবাসা যায় না।
আমি গালে হাত দিয়ে চুপটি করে বসে আছি।
ভাইয়া হুক করে আমার পাশে এসে বসলো আর আমার হাত ধরে নিজের দিকে টেনে নিলো।আমার ভাইয়া কে দেখেও চুপ করে মাথা নিচু করে বসে আছি। ভাইয়া আমার থুতনিতে ধরে নিজের দিকে তাকানোর চেষ্টা করে বললো,,
“কি বললি তখন?”
ভাইয়া চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে ।চোখমুখ লাল করে আমাকে জিজ্ঞেস করলো ভাইয়ের চোখের দিকে তাকালাম আমি আর ভয় পেয়ে গেলাম।
“কি বললি যখন ভালোবাসবি না? আমাকে ভালবাসবি না তো কাকে ভালবাসবি?”
আমি চোখ ছোট করেই বললাম,,
“অন্য কাউকে এই ধরে ওই আরাফাত ছেলেটাকে।
আচমকা ভাই আমার গলা টিপে ধরল।”
“বলছি না ওই ছেলেটার নাম মুখে নিবিনা আর একবার তোর মত মুখে ওই ছেলেটার নাম শুনলে একদম মেরে ফেলবো। জানে মেরে দেবো ওই ছেলেটাকে।”
“বলবো 100 বার বলবো তুমি কাউকে ভালবাসো কি করলা ভালবেসে? এখন পর্যন্ত তো ভালবাসি বললা না।”
“সবকিছু তোকে মুখে বলতে হবে কেন।বুঝতে পারছিস না মুখে বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায় অনুভব করতে না।”
“আমি এতকিছু জানি না তুমি মুখে বলবা আর আমাকে নায়কের মত প্রসোজ করবা ফুল দিয়ে।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।
কি হলো এই ভাবে তাকিয়ে আছো কেন করবা না প্রপোজ?
“প্রপোজ ইম্পসিবল আমি ওসব করতে পারবো না।
“দেখছো তুমি আমার কোন কথাই রাখো না আর ছাড়ো তো আবার আসছি মেরে ফেলতে তোমার থেকে আরাফাতে ভালো। আমাকে ঠিক প্রপোজ করত।
আবারে আরাফাতে কথা বলছিস। তোকে বলছিলাম তুই আমার সব কথা শুনবি।
হ্যাঁ বলছিলে না শুনলে ব্রেকআপ করে দেবে করে দাও। আমি আরাফাতের সাথে রিলেশন করব তোমার সাথে না। তুমি আমাকে সামান্য প্রপোজ তাই করতে পারবানা।
বলে ভাইয়া কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে দাঁড়াতে গেলাম ভাই আমাকে টেনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আচমকা ভাইয়ার জরিয়ে ধরাতে আমি ফ্রিজড হয়ে গেলাম।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৪ | বাংলা রোমান্টিক গল্প

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_24

ভাইয়া তুমি আমাকে ভালোবাসো একটু না পাগলের মতো।আজকে আমি তোমার চোখে আমার জন্য অফুরান্ত ভালোবাসা যা খুব গভীর। এই ভালোবাসা অন্ত নেই কিন্তু তাহলে আমাকে বলছো না কেন? এই ভাবে লুকিয়ে কেন রাখছো কিছু তো কারন আছেই। আমার সেই কারন টাই জানতে হবে ইয়েস।
যেভাবেই হোক জানতেই হবে কি সেই কারণ তার জন্য তুমি তোমার সমস্ত অনুভূতি আড়াল করে রেখেছো।
উফফ গালে ব্যাথা করছে গরিলা একটা এতো শক্ত করে কেউ ধরে। গালে হাত বুলাতে বুলাতে নিচে নেমে এলাম।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি তখন আম্মু আমার পাশে এসে বসলো। আমি চোখ খুলে আবার বন্ধ করে ফেললাম।আর আমার মাথা আম্মুর কোলের উপর রাখলাম।
আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে।
“দোলা আজকে তোর মামনির বাসায় যেতে হবে।”
আমি মামনির বাসায় যাওয়ার কথা শুনেই চোখ খুলে ফেললাম।
আম্মু বলল,,” আমাদের সবার‌ই যেতে হবে। ডিনার এর জন্য দাওয়াত আছে।”
আমি বললাম,,”আচ্ছা আমি তাহলে রেডি হয়।”

আম্মু আমার রেডি হ‌ওয়ার কথা শুনে বলল,,
“কি আবার রেডি হবি।”
“ওই একটু সাজবো।”
“সাজার কি দরকার এমন করছিস যেন আগে কখনো যাস নি।”
“আম্মু গেছি তখন তো এমনি এখন আমার সাজতেই ইচ্ছে হচ্ছিল তাই তারপর ওই বাসায় যাব এটা তো দাওয়াত বলো। সেখানে সেজে গেলে সমস্যা কি আম্মু।”
আমি চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“বুঝি না বাবা কি হয় তোর।আগে তো শত বলেও সাজগোজ করানো যেত না আর এখন যখন তখন সাজতে ইচ্ছে হয়।”
“তোমরা আমার সব কিছু তেই প্রশ্ন করো খালি।”
“আচ্ছা তোর যা ইচ্ছে কর।”
বলেই আম্মু চলে গেল আমি উঠে সাজতে বসলাম আমার সাজ হচ্ছে অন্যরকম আজ।আমি গালে লাল ফ্রেস পাওডার দিলাম। তারপর কাজল দিয়ে নিচে নেমে এলাম।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি করে এটা কি হয়েছে গাল এতো লাল কেন? ব্যাথা পেয়েছিস নাকি তখন তো দেখলাম না।”
“ওইটা কিছু না চলো।”
আব্বু বললো, “সত্যি ব্যাথা পাওনি তো।”
“নো আব্বু আমি এ্যাম ফাইন।”
“ওকে ডেয়ার চলো।”
এখানে এসেই আম্মু মামনির কাছে রান্না ঘরে চলে গেল।

আব্বু তার প্রান প্রিয় বন্ধুর কাছে বসে পরলো সোফায় শুরু হলো তাদের গল্প। আমি আব্বুর পাশে এতিমের মতো বসে আছি। আর সুযোগ খুঁজছি এখানে থেকে কেটে পরার জন্য। পেয়েও গেলাম উঠে সোজা আদনান ভাইয়ের রুমে চলে এলাম। ভাইয়া রুমে নেই বাথরুমের থেকে শব্দ আসছে আমি দরজা ভেতরে থেকে বন্ধ করে দিলাম। তারপর বিছানায় উপর বসলাম ভাইয়া পাঁচ মিনিট এ আসলো আর আমাকে দেখে ভ্রু কুঁচকালো।
‘তুই এখানে কি করছিস?”
“বসে আছি দেখতে পাচ্ছ না।”
“বসে কেন আছিস সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি।”
আমি কিছু না বলে উঠে দাঁড়ালাম আর ভাইয়ার গলা জড়িয়ে ধরলাম।
ভাইয়া হকচকিয়ে গেল আমার কান্ডে সাথে হতদম্ব হয়ে গেল।
“কি করছিস?”
আমি গাল ফুলিয়ে অভিমানী গলায় বললাম,
“কি করেছো দেখ?
বলে গাল দেখালাম।
ভাইয়া আমার গালে দিকে তাকিয়ে আছে ভ্রু কুঁচকে। এক হাত উঁচু করে ভাইয়া আমার গাল স্পর্শ করলো তারপর নিজের হাতে দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি এসব লাগিয়েছিস?”
“কিছু লাগায়নি, তুমি আমার গাল টিপে কি করেছো দেখ লাল হয়ে গেছে কি ব্যাথা ?”
বলেই ভাইয়ার গলা থেকে হাত সরিয়ে নিলাম।

আদনান ভাইয়া আচমকা আমার হাত শক্ত করে ধরে নিজের কাছে টেনে নিলো। এক হাত আমার কোমর ধরলো শক্ত করে। আদনান ভাইয়ার ঠান্ডা হাতের স্পর্শ নিজের নিজের কোমরে পেয়ে আমি জমে গেলাম। সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমার হার্টবিট দ্রুত গতিতে লাফাচ্ছে।
“কি রে এমন কাঁপছিস কেন?”
ভাইয়া নির্বিকার ভাবে কথাটা বলল।
আমি ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি।
স”ব সময় তো আমার গা ঘেঁষতে তোর ভালো লাগে। তা এখন আমি ধরলাম
এমন করছিস কেন?”
“ভাইয়া ছার আমার কেমন জানি লাগছে।”
“কেন ছারবো কেন? আর কেমন লাগছে শুনি।”
“কেমন জানি লাগছে। আমি ধরলে তো এমন লাগে না।”
‘কেমন লাগছে বল!”
বলেই ভাইয়া নিজের এক হাত উঁচু করে আমার গালে রাখলো। আমার কাপাকাপি আরো বেরে গেল।
আমি ঢোক গিলে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ভাইয়া আমার গাল মুছে দিচ্ছে অনুভব করছি।
“তাকা আমার দিকে।”
আমি চোখ খিচে বন্ধ করে আছি।
বন্ধ অবস্থায় বললাম,,” ছার প্লিজ আমাকে ভাইয়া।”
ভাইয়া আবার বলল,,,” কি হলো চোখ খোল? আর ছাড়বো কেন? এখন থেকে বেশি করে ধরবো তুই তো এইটাই চাইছিলি তাহলে এখন এমন আন‌ইজি ফিল করছিস কেন?”
ভাইয়ার গরম নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে আছড়ে পরছে। আমি থরথর করে কাঁপছি ভাইয়ার নরম কন্ঠ শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে তাকালাম। ভাইয়া নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি এমন ভয়ঙ্কর চাহনি দেখে ভয়ে ঘামতে লাগলাম।
আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম,,”আমি এসব কখন চাইলাম।”
চোখ ছোট করে ভীতু মুখ করে তাকিয়ে বললাম।ভাইয়া আমাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরলো কোমর আমি ছটফট করছি ছুটার জন্য। কিন্তু ভাইয়ার সাথে পারলে তো।
ভাইয়া আমার মুখের কাছে চলে এলো একদম আমি ভয়ে ঘাড় পিছিয়ে নিলাম ভাইয়া আমার ঘাড় ধরে নিলো শক্ত করে তারপর বলল,,
“কেন প্রেম করবি না?”
ভাইয়ার কথা শুনে আমি চকিতে চাইলাম। স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
“কি হলো প্রেম করবি না আমার সাথে?”
আমি বললাম,,” হুম কিন্তু তার সাথে এসবের কি মানে?”
“প্রেম করলো তো এসব করবোই। আরো‌ কতো কিছু। কেন তুই জানতি না? আচ্ছা প্রেম মানে কি বুঝিস।”
আমি ভীতু মুখ করে বললাম,,”কি আবার তোমার সাথে ফোনে কথা বলবো, তারপর তুমি আমাকে গোলাপ দিবে, ঘুরতে নিয়ে যাবে এসব।”
“শুধু এইগুলো আর কিছু না।”
“না তো।”
“কে বলেছে এসব তোকে প্রেম করলে আরো অনেক কিছু হয় এই যেমন
বলেই ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আনতে লাগলো নিজের মুখ তারপর ফট করে আমার গালে চুমু খেল আমি চমকে উঠলাম।
বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়া কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। আমি ভাইয়ার এমন দৃষ্টিতে আমার বুকটা ধক করে উঠল। কান আমার গরম হয়ে গেছে মনে হচ্ছে গরম হাওয়া বের হচ্ছে আমি জোরে একটা ঝামটা মেরে ভাইয়ার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। বুকে হাত দিয়ে হাপাচ্ছি। ঝড়ের গতিতে লাফাচ্ছে আমার হার্টবিট। কি ডেঞ্জারাস অনুভূতি হচ্ছে।

আচ্ছা তুই কি প্রেম করবি না ভাবছিস।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।
“কি রে চুপ না থেকে বল। কারন প্রেম করলে এমন কয়েকটা কিস তোকে সহ্য করতে হবে।আর একটা খেয়েই তোর এই অবস্থা আমার তো.
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে এলাম। ভাইয়াকে চিনতে পারছি না কেমন করছে। আর প্রেম করলে চুমু খেতে হয় জানতাম না তো।
বুকটা এখন তো ধুকধুক শব্দ করছে।
নিচে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে র‌ইলাম। আমি আসার কিছু ক্ষন পর আদনান ভাই ও নেমে এলো আমি একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার শরীর কাঁপছে ভাইয়ার সামনে থাকতে পারছি না এতো লজ্জা লাগছে। আবার ভাইয়ার দিকে আড়চোখে তাকালাম ভাইয়া এখন ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি সোজা পেছনে ঘুরে রান্না ঘরে চলে গেলাম।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৩

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_23

কলেজে থেকে এসে গোসল করে, খাবার খেয়ে টিভির সামনে বসে আছি।অনেকদিন ধরে টিভি দেখা হয় না।
টিভি দেখছি আর ওই আরাফাতের কথা ভাবছি কি অসভ্য ছেলে দুইদিন ভালো করে কথা বলেই প্রপোজ করে বসলো। আগেই এই ছেলের মতিগতি আমার ভালো ঢেকছিল না আজ বুঝেই গেলাম।
টিভি না দেখে এইসব ভাবছিলাম ওমনি আম্মুর শক্ত কন্ঠ কানে এলো।
আমি ভাবনার থেকে ফিরে ভ্রু কুটি করে আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম,,
“কি হয়েছে আম্মু?”
আম্মু বললো,,
“এইসব কি দেখছিস? ছিঃ ছিঃ বাবা মার সামনে এসব দেখতে লজ্জা করে না।”
আমি হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি আমি আবারা কি দেখছি যে লজ্জা করবে।
ভাবতে ভাবতে টিভির দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। বিষ্ময় হতদম্ব হয়ে গেলাম টিভি থেকে চোখ সরিয়ে আম্মুর দিকে তাকাতেই আতকে উঠলাম আম্মু রেগে তাকিয়ে আছে আমি তাড়াতাড়ি রিমোট খুঁজতে লাগলাম।
টিভিতে যে কিস দেখাচ্ছে যেটা আম্মু দেখেই আমাকে ধমকালো।
কি মুসকিল রিমোট গেল কোথায় ধুর দরকারের সময় কিছু পাই না।

আম্মু আমার দিকে কটমট চাহনি দিতে দিতে চলে গেল। আমি শেষে সোফার নিচে রিমোট পেলাম আর থপ করে বন্ধ করে রুমে চলে এলাম।
কি করবো কি করবো ভাবছি তারপর ইলমাকে কল করলাম আর আজকে ওই আরাফাতের কথা গুলো সব ওকে বললাম।
ও শুনে অবাক সাথে হাসতে হাসতে শেষ কারন সুমাইয়া তাকে পছন্দ করে। আর সে কিনা আমাকে প্রপোজ করে বসলো। দুজনে এসব বলে হাসতে হাসতে শেষ।
পরদিন কলেজে গিয়ে সবাই মিলে এসব বলছি আর হাসছি এক কোণে গোমড়া মুখে বসে আছে সুমাইয়া। ওকে দেখে আরো বেশি করে হাসছি সবাই। হুট করে নেহা বলে উঠলো,,
“দোলা তুই প্রস্তাব এ রাজি হয়ে যা!”
ওর কথা শুনে আমরা সবাই অবাক হয়ে তাকালাম।
“কি রে সব কটা এইভাবে তাকাচ্ছিস কেন? যেন দিয়ে গিলে খাবি।”
আমি বললাম,,
“কি বললি তুই আমি প্রপোজ এ রাজি হবো।”
শক্ত মুখ করে বললাম।
ও নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল,, “হ্যা আমি তো তাই বলছি।”
আমি রেগে বল্লাম,,”আবার স্বীকার করছিস? তুই জানিস না আমি আদনান ভাইকে ভালোবাসি আর ভাইয়া ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু স্বীকার করে না। এসব জেনেও তুমি এই কথা বলছিস?”
“হুম বলছি আর বলার কারন ও আছে।”
“কি কারন শুনি তুই জেনে শুনে আমাকে ওই ছেলের প্রপোজ এ রাজি কি করে হতে বলছিস?”
কটমট করে তাকিয়ে বললাম।
“আরে আরো রাগিস না রাগিনী।শুন আমার কথা আমি তোর ভালোর জন্যই রাজি হতে বলছি তুই রাজি হয়ে দেখ কি ভাবে তোর ভাই…
,”চুপ আমি রাজি কিছু তেই হবো না‌”
“আরে শুনো এটা জাসট ফান হিসেবে রাজি হ।”

ওরা আমাকে বুঝালো নাটক করতে যে আমি যদি এটা করা তাহলে নাকি ভাইয়া ভালোবাসা স্বীকার করবে। বাট আমি রাজি হলাম না কারন কারো ইমোশনাল নিয়ে আমি খেলতে চাইনা।
ওরা বুঝালো আমি মানলাম না। কিন্তু কাজটা পছন্দ হয়েছে।তাই আমি মনে মনে একটা সিদ্ধান্ত নিলাম।
বিকেলে ছাদে এসে দাঁড়ালাম ভাইয়া ফেবারিট কালার নীল কালো আমি নীল ছেলোয়ার কামিজ পরলাম। কপালে ছোট টিপ ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক হাতে চুরি খোলা চুল নিয়ে ছাদে এলাম।
তারপর ফোন বের করে কাউকে কল না দিয়ে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড এর মতো কথা বলতে লাগলাম। এদিকে ভাইয়া দুপুর বেলা বাসায় এসেছিল আর যাই নাই। তাই বিকেলে ছাদে এসেছে এসেই আমাকে এমন সেজে গুজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কর্নারে এসে দাঁড়াল। আমি ভাইয়ার ফেবারিট কালার পরেছি ভাইয়া মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি সেদিকে লক্ষ্য করছি না ফোনে কথা বলছি।
ভাইয়া দাঁড়িয়ে আমার কান্ড কারখানা দেখছি সব সময় আমি ভাইয়াকে দেখেই পাগল করে ফেলি বা ফোন থাকলে হাতে লুকাই আজ তা করছি না দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি হেসে হেসে কথা বলছি ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। তারপর বিরক্ত হয়ে বলল,,
“দোলা কার সাথে এতো কথা বলছিস?”
আমি ভাইয়ার কথা শুনে ভয় পাওয়ার মত করে ফোন কানে থেকে নামিয়ে বললাম।
“ভাইয়া তুমি কখন এলে?”
“কেন আমি এসে ডিসটাব করলাম নাকি?”
আমি বললাম,, “ক‌ই না তো।”
ভাইয়া বলল,, “এতো সেজে গুজে আছিস কেন? আর এতো হেসে হেসে কার সাথে কথা বলছিলি।”
আমি লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে বললাম,,
“কেউ না।”
ভাইয়া আমাকে লজ্জা পেতে দেখে সন্দেহ চোখে তাকালো।
“লজ্জা পাচ্ছিস কেন?”

ভাইয়ার কথায় আরো লজ্জাঢ় মিলিয়ে গেলাম ভাইয়া রেগে গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আমার ভাব ভঙ্গি দেখছে।
তারপর বলল,,
“কি হলো কথা বলছিস না কেন? কার সাথে কথা বলছিলি বল।”
আমি লজ্জা মাখা কন্ঠে বললাম,,”আমার বুঝি লজ্জা করে না তোমাকে বলতে। যত‌ই হোক তুমি তো আমার ভাই হ‌ও।”
ভাইয়া কিছু টা আন্দাজ করতে পেরেছে মনে হয়।
বললাম,,”ঢং বাদ দিয়ে সত্যি কথা বল!”
আমি বললাম,,” বয়ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছিলাম।”
কথাটা বলেই ভাইয়ার দিকে তাকালাম ভাইয়া আগুন চোখ দিয়ে আমাকে দেখছছ চোখ দিয়ে ভষ্স করে দেবে।
আমি ভয় পেলাম তার চাহনি দেখে কিন্তু কিছুই বুঝতে দিলাম না। ভাইয়া সাথে সাথে গম্ভীর গলায় বলল,,
“এসব কবে থেকে চলছে কাল ও না আমাকে জ্বালালি।”
আমি বললাম,,”আজ থেকে। আর তোমাকে জ্বালাবো না ভাইয়া তুমি আমার ভাইয়ায় থাক বয়ফ্রেন্ড আমি পেয়ে গেছি।কতো ভালোবাসে আমাকে আহা এমন একজন কেই তো চেয়েছিলাম। শুধু শুধু তোমাকে ছ
জ্বালিয়ে মেরেছি। আচ্ছা ভাইয়া তুমি যাও আমার উনি কল করছে আবার রাগ করবো।”
বলেই ফোন কানে নিলাম আর হেসে হেসে কথা বলতে লাগলাম ভাইয়া আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি উলটো ঘুরেই ফোন কানে নিয়ে হাসছি বুঝ ঠেলা।
ভাইয়া রেগে গমগম করতে করতে চলে গেল।

আর আমার ছাদে এলো।আমি ভাইয়াকে দেখে বললাম,
“একি ভাইয়া তুমি এখানে কেন দেখছো না কথা বলছি‌।”
ভাইয়া আমার হাত থেকে টান মেরে ফোনটা নিয়ে নিলো আমি আঁতকে উঠলাম। কারন করে কেউ নাই।
ভাইয়া ফোন নিয়ে চেক করতে গেল আর ফোনের দিকে তাকিয়ে রেগে তাকালো আমার দিকে।
তারপর শক্ত করে হাতের বাহু ধরে বললো,,
“তুই আমাকে মিথ্যা বলছিলি।”
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
“কি হলো আনসার মি।”
আমি কিছু বলছি না এইভাবে ধরা খাব ভাবিনি।
“কি হলো বলছিস না কেন ?এসব করে কি বুঝাতে চাইছি লি?”
আমি বললাম,,”আমি ভাবছিলাম তুমি এসব দেখে স্বীকার করবে আমাকে ভালোবাস কিন্তু ধরা খেয়ে গেলাম।”
ভাইয়া শান্ত চাহনি দিয়ে তাকিয়ে আছে।
“ইডিয়েট একটা এসব কে ঢোকায় তোর মাথায়।”
“কেউ না।”
গাল ফুলিয়ে।
“ভাইয়া শেষ বারের মতো বলছি ভালোবাসি স্বীকার করো নয়তো।”
ভাইয়া বলল,,”নয়তো কি?”
আমি বললাম,,”নয়তো আমি ওই আরাফাত ছেলেটাকে হ্যাঁ বলে দেব।”
ভাইয়া ভ্রুকুটি করে বলল,,”এটা ও বানানো কেউ।”
আমি বললাম,,” না। এটা বানানো না সত্যি কাল আমাকে প্রপোজ করেছে তুমি যদি আমাকে ভালো না বাসো তো তার সাথেই প্রেম করবো সেও দেখতে সুন্দর স্মার্ট।”
ভাইয়া আচমকা আমার গাল চেপে ধরল।আমি বিষ্ময়ে হতদম্ব হয়ে গেলাম ভাইয়া আমাকে টেনে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ধরলো।
তারপর মৃদু চিৎকার করে বললো,,
“এই মুখে অন্য কারো প্রশংসা শুনলে খুন করে ফেলবো।”
আমি গালে ব্যাথা পাচ্ছি। ভাইয়াকে এতোটা হিংস্র হতে কখনো দেখি নি। আমার চোখে পানি টলটল করছে ভাইয়া রেগে চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে। আচমকা গাল ছেড়ে দিয়ে বলল,,
“লেখা পড়া ছাড়া অন্য দিকে মন দিলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।”

বলেই চলে গেল আমি হতদম্ব হয়ে ভাইয়া যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২২

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Nondini_Nila
#part_22

গালে হাত দিয়ে চিন্তিত হয়ে বসে আছি। বানিয়ে বানিয়ে কিছু দিয়ে ট্রাই ও করলাম পারলাম না। অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছি। তারপর ল্যাপটপ অফ করে উঠে দাঁড়ালাম ওমনি ভাইয়া আসলো রুমে। ভাইয়াকে দেখেই আমি হতদম্ব হয়ে গেলাম। চমকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। ভাইয়াকে ক্লান্ত লাগছে অনেক চোখ মুখ ক্লান্তে ভরা ভাইয়া আমাকে দেখে নি আয়ি ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
ভাইয়া আমার দিকে তাকালো আর ভ্রু কুটি করলো।
আমি ঢোক গিলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি‌।
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
“এখানে কি করছিস?”
আমি ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে ঝড়ের গতিতে ভাইয়ার সামনে এসে বললাম,,,
“ভাইয়া তুমি এতো তাড়াতাড়ি চলে এলে যে।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তাড়াতাড়ি এসেছি এতে কি তোর সমস্যা হয়ে গেল।”
“এই না না সমস্যা হবে কেন? আমার তো ভালো হলো।”
ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,,” ভালো হলো মানে!”
“ভালোই তো আমি তো তোমার অপেক্ষায় করছিলাম।”

“আমার অপেক্ষা করছিলি কেন?”
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে।
আমি হকচকিয়ে বললাম,,
“করছিলাম একটা কারনে!”
“কি কারন?”
আমি চিন্তা করছি এখন কি বলবো?আমি চিন্তা করছি তখন ভাইয়া বলে উঠলো,,
“বুঝতে পেরেছি আবার আজেবাজে কাজের কথা ভাবছিল।”
ভাইয়া শক্ত কন্ঠে বলল।
আমি বুঝতে পারছি না কি আজেবাজে কাজ আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া বলল,
“দেখ দোলা এখন আমি খুব ক্লান্ত এখন প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব করিসনা।”
“আমি তোমায় ডিস্টাব কোথায় করলাম।”
“করিস নি করবি আমি জানি।এখন আমি রেস্ট করবো প্লিজ যা।”
সত্যি ভাইয়াকে অনেক ক্লান্ত লাগছে আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।ভাইয়া আমার দিকে নীরব হয়ে তাকিয়ে বাথটাবে চলে গেল।
কিছু ক্ষন পর এসে বিছানায় শুয়ে পরলো আর আমাকে এখনো ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,,,
“,এখন ও যাস নি কেন?”
আমি আসলে ইচ্ছে করেই যাইনি। আমার কেন জানি যেতে ইচ্ছে করেনি। ভাইয়ার ক্লান্ত মুখ দেখে থেকে গেছি।
আমি ভাইয়ার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভাইয়ার মাথায় কাছে বসে পরলাম।
ভাইয়া আমাকে নিজের মাথায় কাছে বসতে দেখে বসতে গেল।
“কাল হচ্ছে কি দোলা ?তোকে আমি যেতে বলছিলাম। তুই এখানে এসে বসলি কেন?”
আমি ভাইয়াকে উঠতে দিলাম না টেনে ধরে রাখলাম। ভাইয়া চরম বিস্মিত হল আর বড় বড় করে তাকিয়ে বললো,,
“কি করছিহ?”
আমি বললাম,,
“উফফ ভাইয়া উঠছো কেন? শুয়ে থাকো।”
“মানে।”
‘আরে শুয়ে পরো তো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তোমার তো মাথা ব্যথা ও করছে তাইনা।”
বলেই ভাইয়ার মাথায় হাত দিলাম।

ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি বললাম,,
“কি হলো এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”
“তুই চলে যা দোলা।”
“কোথায় যাব?”
“বাসায় যা আমার কাছে এতো আসিস না।”
বলেই ভাইয়া চোখ বন্ধ করে ফেলল।
আমি ভাইয়ার মাথা হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম,,
“সত্যি আসবো না।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে র‌ইলো কিছু বলল না।
“কি হলো বলো সত্যি আসবো না।আমি না আসলে তুমি হ্যাপি থাকবে তাইনা।”
বলেই মুখটা ছোট করে ফেললাম।
ভাইয়া আচমকা আমার হাত মাথা থেকে টেনে নিয়ে নিজের বুকের কাছে রাখলো শক্ত করে।আমি থমকে গেলাম। ভাইয়া আমার হাতে নিজের বুকে শক্ত করে ধরে রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলল আর বলল,,,
“না রে তুই আমার কাছে এলেও কষ্ট হয়। দূরে গেলেও কষ্ট হয়। এই কষ্ট আমি কাটাতে পারছিনা।বুকের ভেতরটা প্রচন্ড ব্যাথা করে।‌মাথা বিগড়ে যায়। এই কষ্ট আমি কাউকে দেখাতে পারিনা কাউকে না।”
আমি হাঁ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো শুনলাম আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না।হা করে তাকিয়ে বুঝতে চাইছি।
ভাইয়া আবার বলল,,
“আমার বুকের ভেতরটা পুরে ছারখার হয়ে গেছে রে। একটু ভালোবাসার জন্য ভালোবাসার মানুষটি কাছে থেকেও দূরে এতো কাছে তবু আপন করতে পারছি না। বলতে পারছি না দেয়ালে আটকে আছি সেই সময়ে জন্য। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত থাকাটা কতোটা কষ্ট তা শুধু আমি জানি না বলতে পারছি না স‌ইতে। আমার আর এই কষ্ট সহ্য হচ্ছে না। ভালোবাসা পাবার জন্য এই মনটা ছটফট করছে খুব।”
ভাইয়ার কথার মাথা কিছুই বুঝলাম না।

“ভাইয়া কি সব বলছো ভালো করে বলো বুঝতে পারছি না তো।”
আমার কন্ঠ কানে যেতেই ভাইয়া চমকে তাকালো আর আতকে উঠলো।
তাড়াতাড়ি আমার হাত ছেড়ে উঠে বসলো।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি।
তারপর বললাম,,
“ভাইয়া কি যেন বলছিলে ভালোবাসা আমি বুঝিনি ভালো করে বলো।”
ভাইয়া আমার মুখে ভালোবাসা শুনে আতকে উঠলো। কিন্তু বুঝিনি বলতেই একটা নীরব হয়ে শক্ত করে মুখ আমার হাতের বাহু ধরলো।
“কি করছো এভাবে ধরছো কেন?”
“তোকে আমি চলে যেতে বলছিলাম এখন ও আছিস কেন?”
“আমি তো…
“চুপ আর একটা কথা ও শুনতে চাইনা। আর আমার এতো কাছে আসবি না।”
“ভাইয়া আমি
“আমি কিছু শুনতে চাই না।”
বলেই টেনে রুমের বাইরে এনে দরজা আটকে দিল।

আমি কিছু ক্ষন হতদম্ব হয়ে থেকে বাসায় ফিরে এলাম। পরদিন কলেজ করে আসার পথে আবার ওই আরাফাতের সাথে দেখা হলো। আমি সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকে ইগনোর করে গাড়ির দিকে গেলাম সে এক প্রকার দৌড়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো আর বললো,,
“এই যে ম্যাম আমাকে দেখেন নি নাকি কথা না বলে চলে এলেন।”
আমি কর্কশ গলায় বললাম,,
“আপনাকে দেখলেই আমার কথা কেন বলতে হবে।আর আপনি আজ ও এখানে কি করছেন?”
“আমি ওই তো কাছে এসেছিলাম।”
আমি রেগে বললাম,,
“আপনার প্রতিদিন এইখানেই কাজ থাকে।”
উনি বললো,,
“না তো।”
“আপনাকে আমি প্রতিদিন এইখানেই দেখতাছি।”
“প্রতিদিন কোথায় দুইদিন না দেখলে।”
“জি না আরেকদিন আসছিলেন। আর আপনার সমস্ত কাজ ইদানিং এই দিকেই পরছে নাকি‌।”
আমার কথা উনি একটু বিচলিত হলো কিন্তু প্রকাশ করলো না মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে বললো,,
“তা হচ্ছে। কিন্তু আরেক কথা আপনার সাথে পরিচিত হবার পর বেশি হচ্ছে মানে আপনার সাথে আমার দেখা হ‌ওয়ার একটা পথ হয়েছে।বিষয়টা কিন্তু ভালো হয়েছে কি বলেন?”
“মুটেও না এই কাজটা আমার একটু ও ভালো লাগেনি। ফালতু কাজ আমার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে ফলো করছেন।আর ক্রমাগত আমাকে মিথ্যা বলছেন।”
আরাফাত চমকে উঠলো আর মনে মনে ভাবলো কি মেয়েরে বাবা? এইভাবে বললো এটা আমার করছি ঠিক তাই না জেনে অপমান আর জানলেও কি এভাবে বলা যায়।মেয়েটাকে নরম ভেবেছিলাম কিন্তু মনে হচ্ছে ধানি লন্কা এটা।
“কি হলো ধরা পরে মুখ বন্ধ হয়ে গেল নাকি?”
” নো ম্যাম আপনি তো সত্যি বুদ্ধি মতি। অথৈ তাড়াতাড়ি বুঝে গেলেন।”
“সেসব পরে হবে আগে বলেন আমাকে ফলো করার কারন কি?”
” সত্যি বলতে ,”আই লাইক ইউ” আমি তোমাকে পছন্দ করি।”
“বাবাহ এটা বলতেই আপনার থেকে তুমি তে চলে এলেন।”
“তা তো আসতেই হবে গার্লফ্রেন্ড কে কি আপনি করে বলবো নাকি।”
‘গার্লফ্রেন্ড। বলতে না বলতেই।”
“হুম আমি বলেছি আপনি রাজি তো..
“এক মিনিট আমার রাজি হলাম কখন?”
“হোননি হবেন।”
“আমি হবো কে বলল।”
“বলার কি দরকার রাজি হবে আমার মনে হয়।”
“এমনটা মনে হ‌ওয়ার কারণ টা জানতে পারি।”.
“রাজি না হওয়ার কোন কারণ দেখছি আমি দেখতে সুন্দর, স্মার্ট, ধনী আমার সব আছে। একটা মেয়ের পছন্দের সো রাজি না হ‌ওয়ার কোন আফিডেন্স দেখছি না।”
আমি ওনার কথায় হাহাহা করে হেসে উঠলাম।
“তুমি হাসছো কেন?”
আমার বললাম,,
“আপনার কথা শুনে।কি মিস্টার আরাফাত আমি তো রাজি না।”
“মানে।”
“বিকজ আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি সো আপনার সব থাকলেও আমার কিছু ই ভালো লাগে না। আসি বাই‌”
বলেই গাড়িতে উঠে পড়লাম।
পাগল ছেলে।

#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২১

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_21

লোকটা আমার কলেজে আসলো আবার আমার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা ও বলল। দূর থাক গে।
বাসায় এসে আদনান রুমে উঁকি মারলাম কেউ নাই‌।
ভাইয়া অফিস এ মনে হয় সন্ধ্যায় পরে আসবে।
আমি খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম উঠে মাঠে এলাম। আজকে খেলবো ওরনা কোমরে বেঁধে খেলতে লাগলাম।
আমি বল ছুরছি। সামনের জনকে একবারেই আউট করে দিলাম সবাই মিলে আনন্দ এ লাফিয়ে উঠলাম।
আর ইমন মুখ ছোট করে বাট রেখে চলে গেল। আবার আরেক জন এলো আমি আবার বল করার জন্য দৌড় দিলাম তখন বল ছুরার আগেই কোথা থেকে ভাইয়া চলে এলো।
ভাইয়াকে দেখেই আমি বল হাতে নিয়েছি দাঁড়িয়ে পরলাম।
ভাইয়া রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি ভাইয়া দেখেই হতদম্ব হয়ে গেলাম। ভাইয়া এখানে কা করছ? এখন অফিসে থাকার কথা।
ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি ভাইয়া আশেপাশে তাকিয়ে বলল,,,
“আবার তুই এখানে লাফালাফি করছিস?”
শক্ত মুখ করে বলল।
আমি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছি ভাইয়া দিকে ভাইয়া আমার কোমরের দিকে তাকিয়ে কর্কশ গলায় বললো,,,
“ওরনা কি কোমরে বেঁধে রাখার জিনিস?”
রেগে বললো।
আমি বললাম,,” না তো। ”
“তাহলে ওখানে কেন?”
“খেলছিলাম তাই।”
ভাইয়া কোমর থেকে ওরনা ছারিয়ে আমার গলায় দিয়ে দিল। তারপর আর কিছু না বলে হাত শক্ত করে ধরে বলল।
‘চল।”
আর কিছু বললাম না। ভাইয়ার সাথে চলতে লাগলাম ভাইয়া মাঠ ছেড়ে আসতেই থামলো আর বলল,,,
“তোকে বলেছিলাম না এখানে এসে লাফালাফি না করতে।”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
“তাহলে কেন এসেছিস? এসে থামিসনি বাচ্চাদের মত লাফালাফি করছিস?”
ভাইয়া মৃদু চিৎকার করতে লাগলো।

নাক মুখ কুঁচকে ভাবছি কি করা যায়?
“কি হলো এখন বোবা হয়ে গেলি কেন?”
ভাইয়া আমার দুই কাঁধে হাত রেখে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বললো।
“উফ ভাইয়া ঝাকাচ্ছো কেন?”
বলেই হাত সরাতে চাইলাম।
‘তুই আমার কথা অমান্য করে কেন খেলেছিস?”
‘খেলেছি বেশ করেছি।”
র্নিবিক ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললাম।
ভাইয়া আমার কথা শুনে রাগে ফায়ার হয়ে যায়।
“কি বললি? তা করেছিস বেশ করেছিস?”
“হুম, আমি তোমার কথা কেন শুনতে যাব। তুমি কি আমার কথা শুন!”
ভাইয়া রেগেই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“রাগছো কেন? তুমি কি আমার কথা শুনেছো শুনোনি তো। আমার সাথে প্রম করতে বলছি করছোই না খালি ধমকাধমকি করো।”
“ফাজিল মেয়ে ভাইয়া কে প্রমের প্রস্তাব দিতে লজ্জা করেনা।”
“না করে না তুমি আমার আপন ভাই নাকি। চাচাতো ভাইও না তুমি আমার কোন সম্পর্কের ভাই না। আব্বু আর আন্কেল বন্ধু তাই জাস্ট ভাই বলি। তোমার সাথে প্রেম করাই যায়।”
“তোর মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে।”
“হুম শুধু তোমার জন্য।”
“চুপ বেয়াদব।”
“ধুর সব সময় ধমকাবেনা তো। একটু সুন্দর করে রোমান্টিক হয়ে কথা বলতে পারোনা!”
“তোর সাথে কথা বলাই বেকার।”
বলে ভাইয়া আমাকে রেখেই বিরক্ত হয়ে চলে যেতে লাগল।

আমি দৌড়ে ভাইয়ার হাত ধরে ফেললাম।
ভাইয়া আমার দিকে শক্ত চোখে তাকালো।
‘কি হলো হাত ধরলি কেন তার?”
“না চলো আমার সাথে।”
“হাত ছার। আমি কোথাও যাব না তোর মতো বেয়াদবের সাথে।”
ভাইয়াকে নিতেই পারলাম না। তাও হাত ছারলাম না।
“হাত মারতে বলেছি তো।”
“ছারবো না।”
ভাইয়া গম্ভীর হয়ে বলল,,,
“দোলা।”
“হুম ছারবো কেন? একটু আগে তো তুমি‌ই জোর করে হাত ধরে নিয়ে এলে। এখন আমি তোমাকে ধরে থাকবো।”
“পাগল করে ছারবি তুই আমাকে।”
বলেই ভাইয়া আর হাত ছারালো না বিরক্ত হয়ে হাঁটতে লাগলো।
আমি বাসার কাছে এসে হাত ছেড়ে দৌড়ে বাসায় চলে এলাম।

পরদিন কলেজে গিয়ে আবার দেখি হলো আরাফাতের সাথে আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
আমাকে দেখেই দাঁত কেলিয়ে হেসে আমার কাছে এগিয়ে এলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি লোকটা আজ আবার এখানে কি করছ?
“হাই দোলা , কেমন আছো?”
আমি নাক মুখ কুঁচকে বললাম,, “আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি?”
“আলহামদুলিল্লাহ।” হেসে উঠলো।
‘তা আজ আবার এখানে কি করছেন?”
চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“এতো এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই।”
“আপনি আজকেও এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলেন কেন?”
“একটা কাজ আছে।”
“ভালো তা কাজ না করে আমার জন্য দাঁড়ানোর কারণ টা বুঝলাম না।”
“এমনি ভাবলাম।”
“উফফ আপনি এটা কেন ভাবলেন ? আর আমার সাথে দেখা করে আপনার কি লাভ?”
“সে তো কতোই লাভ?”
“কি বললেন?”
“কিছু না আসলে কাল পরিচিত হলাম তাই আর কি।আপনি কি বিরক্ত আমাকে দেখে।”
আমার লোকটার দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছি। লোকটাকে কেন জানি সুবিধার মনে হচ্ছে না। কিন্তু সেটা তো বলা যায় না তাই বললাম,,

“না না তা হতে যাব কেন?”
‘আমার মনে হচ্ছে আমাকে দেখে আফনি খুশি না।”
“আপনাকে দেখে আমি কেন খুশি হতে যাব। কে না কে কিন্তু অবাক হয়েছি।”
“আচ্ছা আর আসবো না‌।”
‘আমি আপনাকে আসতেও মানা করেনি‌। কিন্তু আমার জন্য এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না আমার ভালো লাগেনা।”
“আপনি আমাকে খারাপ ভাবছেন?”
“সেটা ভাবাটা কি অস্বাভাবিক?”
“না এটা ভাবাটাই ঠিক আছে। কিন্তু আমার খারাপ না।”
“ওকে ভালো থাকবেন। আমার ক্লাস আছে।”
‘আচ্ছা বাই।টেক কেয়ার!”
হালকা হাসির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে কলেজে ঢূকে গেলাম।

নেহাদের সাথে ক্লাসে বসে আছি আর ওই আরাফাতের কথা বলছি ওরা শুনেও অবাক। আবার বলল,
“ওই ছেলেকে আবার দেখলে আমায় ঢাকিস তো।”
সুমাইয়ার কথায় সবকটা চোখ বড় করে তাকালো।
‘কেন তোকে কেন থাকবে?”
“এমনি!”
“এমনি নাকি অন্য কিছু।”
ওরা সবাই সুমাইয়াকে জেরা করতে লাগলো আমি থামালাম।
“আমি এখন কি করবো বল তো ভাইয়া তো আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।”
মুখটা মলিন করে বললাম।
নেহা বলল,,”আসলেই তোর ভাই এতো চাপা কেন রে?”
“আচ্ছা আমাদের বুঝতে ভুল হচ্ছে না তো। এমন না তো ভাইয়া আমাকে ভালোই বাসে না আমাদের ধারনা ভুল।”
ইলমা বললো,,” ইম্পসিবল দোস্ত। এটা ভুল হতেই পারেনা। তোর ভাই তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে আমি সিউর!”
“তুই এতো সিউর হচ্ছিস কি করে বল তো!”
“আরে এখন ও বুঝিসনি গাধা। তোকে ভালো না বাসলে এখন ও না মেরে আস্ত রাখতো। তুই যা সব শুরু করছিস এসবের জন্য কি তোর বাবা মাকে জানাতো না। ”
জানিনা।
“গাধা এসব করে নি তার একটাই কারণ তোকে আদনান ভাই পাগলের মত ভালোবাসে। কিন্তু সমস্যা একটাই বলে না কেন? স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়?”
“জানিনা।ভাইয়া সব সময় ইগনোর করে রে আমাকে। কতো পাগলামো না করলাম।”
বলেই মুখটা ছোট করলাম।
“ডোন্ট ওয়ারি দোস্ত আমরা আছি তো ঠিক একটা বুদ্ধি বের করবোই তোর ওই গোমড়া মুখ ভাইয়ের মুখ থেকে ভালোবাসি বের করেই ছাড়বো।”

ক্লাস শেষে বাসায় আসলাম। তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুম উঠে আদনান ভাইয়ের বাসায় এসে পরলাম।
ভাই এখন বাসায় নাই আমি তার রুমে গিয়ে ল্যাপটপ ধরলাম। ভাইয়ার আইডিতে ঢুকতে হবে দেখবো কোন গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা।
ওপেন করতেই চমকে উঠলাম ভূত দেখার মত।
ল্যাপটপের স্কিনে আমার ছবি। এইটা কবে তুলছে কে জানে? আমি ছাদে দাঁড়িয়ে আছি বাতাসে আমার চুল উড়ছে কিছু দেখে আমি হাহাহা করে হাসছি। ছবিটা অনেক সুন্দর হয়েছে।
হতদম্ব হয়ে কিছু ক্ষন তাকিয়ে র‌ইলাম তারপর পরলাম বিপদে পাসওয়ার্ড দেওয়া এখন খুলবো কি করে?
#চলবে

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২০

0

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_20

রাতে একেবারে খেতে বের হলাম আম্মুর রিয়াকশণ দেখে তো মনে হচ্ছে না ভাইয়া কিছু বলেছে। ভাইয়া তার মানে কিছু বলে নি খুশিতৈ খাওয়ার টেবিলেই চেঁচিয়ে উঠলাম,,,
আমার চেঁচানো দেখে আব্বু আম্মু দুজনেই চমকে তাকালো।
“কিরে এভাবে চেঁচিয়ে উঠলি কেন?”
আম্মু বলে উঠলো আব্বু বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমি আম্মুর কথায় চমকে উঠলাম।‌ হতদম্ব হয়ে র
তাদের দিকে তাকালাম।
“কি হলো এমন অবাক হয়ে তাকাচ্ছিস কেন? চেচালি কেন?”
“আম্মু আমি ওই আসলে।”
তোতলাতে লাগলাম।
“তোতলাচ্ছিস কেন?” আম্মু সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আব্বুর চোখে মুখেও প্রশ্ন।
‘আম্মু আব্বু আমি না একটা কথা মনে করে চিৎকার করেছি?”
“কি কথা?”
“ওই আসলে হ্যা আমার না একটা সিনেমার কথা মনে পরেছিল তাই।”
আমি ভয়ে ভয়ে দুজনের দিকে তাকাচ্ছি বিশ্বাস করেছে কিনা কে জানে? কিন্তু কেউ আর কিছু বলল না। খাওয়া শেষ করে রুমে এসে দরজা আটকে দিলাম।

বিছানায় শুয়ে ভাবছি কি করা যায় হুট করেই উঠে বসলাম আর ফোন বের করলাম। তারপর ভাইয়ার নাম্বার এ কল করলাম।
রিং হচ্ছে আর আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে আজকে আমি ভাইয়ার সাথে প্রম করবো? ভাবতেই মন টা নেচে উঠছে।
ফোন বেজে কেটে গেল আমি রেগে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি আবার কল করলাম। এবারো তাই আবার করলাম এবার ভাইয়া কেটে দিল।তারমানে ইচ্ছে করে ফোন রিসিভ করছে না।
আমার ফট করে উঠে বারান্দায় এলাম আর এসেই দেখি ভাইয়া রেগে দাড়িয়ে আছে হাতে ফোন।
আমি আবার কল করলাম কারণ এখন কথা বলল বাসর কেউ জেগে যেতে পারে।
এবার ভাইয়া রিসিভ করলো আর কর্কশ গলায় বললো,,,
“এতো রাতে না ঘুমিয়ে আমাকে ফোন দিয়ে জ্বালাচ্ছিস কেন?”

“জ্বালানি শুরু করার আগেই বলছো জ্বালাচ্ছি?”
ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম।
“মানে!”
“মানে আবার কি? মানে তো বিকেলেই বলে দিলাম আমি প্রম করবো। কিন্তু তুমি তো ফোন‌ই রিসিভ করছিলে না।”
“তোর পাগলামি আবার শুরু হয়েছে‌।”
“এটা পাগলামো না এটাকে ভালোবাসা বলে।”
মুচকি হেসে বলে উঠলাম।
ভাইয়া দাঁত কিড়মিড় করে বলল,, “আর একটা বাজে কথা বললে কিন্তু আমি তোকে ঠাস করে চর মারবো।”
“তুমি আমাকে মারতে পারবা।”
“পারবো না কেন?”
“উফ মারবা কেন ভালোবাসার মানুষ কে কেউ বুঝি মারে। চাইলে কিস করতে পারো।”
লজ্জা মাখা গলায় বললাম।
ভাইয়া বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে‌।
“ছিঃ লজ্জা করছে না তোর ভাই কে এসব বলতে।”
“তুমি আর আমার ভাই না বলছি না।এখন একবার ও ভাই বলেনি দেখ না‌। আর বলবো না।”
“তুই পাগল হয়েছিস।”
“বারবার পাগল কেন? বলছো আমি পাগল কেন হবো‌?”
“ফোন রাখ ফালতু কথা বার্তা না বলে আর এসব বলতে আমাকে কল করবি না।”
“এমা কি বলছো এখন‌ই ফোন কেন রাখবো ? এখনো ও তো করা শুরু ই করলাম না।”
“হোয়াট কিসের কথা?”
“প্রমের কথা।”
“তুই এখন সামনে থাকলে চরিয়ে তোর গাল লাল করে ফেলতাম ইডিয়েট!”
“পারতা না তুমি আমাকে একটু ও মারতে পারতা না।”
“কে বলছে আপনাকে মারতে পারতাম না?
আমি জানি।”
‘ভুল জানিস। তুই দিন দিন একটা বেয়াদব হয়েছিস তোকে আমার মারতে একটু হাত কাঁপপে না।”
“ধুর ভালো লাগেনা, কোথায় একটু প্রেম করবা রোমান্টিক কথা বলবা তা না খালি ধমকাচ্ছো।”
“ফাজিল রুমে গিয়ে ঘুমা ফালতু কথা না বলে।”
কথাটা বলে ভাইয়া ফোন রেখে দিল। আর হাত দিয়ে আমার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়তে বলল।
আমি ও ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। কি আর করব আসলে এখন আমার ঘুম পাচ্ছে।

পরদিন সকালে কলেজে যাব তাই রেডি হয়ে নিচে নামতেই ভাইয়ের সাথে হলো। ভাইয়া রেখে দাঁড়িয়ে আছে।আমাকে যেতে দেখে ঝড়ের গতিতে আমার সামনে এসে হাতের বাহু শক্ত করে ধরল। আমি হকচকিয়ে গেলাম। দূর থেকে আমি যত‌ই সাহস দেখায় না কেন কাছে এলেই ভীতু হয়ে যাই‌।
“ভাইয়া কি করছো ছাড় আমার ব্যাথা লাগছে!”
হাত ছারানোর চেষ্টা করতে করতে বললাম।
ভাই আরো শক্ত করে ধরে বলল,,,
“কাল রাতে কি বলছিলি কি বলছিলি বল?”
“কি বলছিলাম?”
“চড় মারবো কিন্তু একটা। বল কি বলছিলি? প্রেম করবে আমার সাথে? আমি তোকে কিস ছিঃ এসব কথা কি করে বলতে পারলি।”
‘বলেছি বেশ করেছি। আমি কি তোমার মতো ভীতু নাকি?”
ভাইয়া হতভম্ব হয়ে বলল,,,”কি বললি আমি ভীতু? ভীতুর কি করেছি আমি।”
“করেছে তো ভালোবাসা অথচ বলতে পারো না।”
“কে কাকে ভালোবাসে?”
“কে আবার তুমি আমাকে?তুমি আমাকে “ভালোবাসো কিনা সেটা বলো না লুকিয়ে রাখ আমিতো তোমার মতো ভীতু না। দেখনা কত সাহসী তোমাকে বলে দিয়েছি আমার মনের কথা।”
“কি হল কথা বলছো না কেন ভাইয়া তুমি আমাকে ভালোবাসো না সত্যি করে বল।”
“বললাম তো ভালোবাসি না। না এসব কথা আর বলবে না।”
বলে ভাই আমাদের ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। আমি ভাইয়া যাওয়া দিকে তাকিয়ে রইলাম। তারপর কলেজে চলে এলাম।

দুইটা ক্লাস আজকে হলো না তাই আগেই ছুটি হয়ে গেল গেটের বাইরে এসে আইসক্রিম কিনে খাচ্ছি আর গাড়ির জন্য ওয়েট করছি তখনই কোথা থেকে একটা ছেলে এলো।ছেলেটাকে দেখে কিছুটা চেনা চেনা লাগছে কিন্তু চিনতে পারছিনা ছেলেটা একদম মুখোমুখি দাঁড়ালো। আমি ব্রু কুঁচকে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছি।
“হ্যালো মিস চিনতে পারছেন আমাকে?”
ছেলেটার কথায় অবাক হলাম তারপর মাথা নেড়ে বললাম না।
‘আরে ম্যাডাম এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন।”
“আচ্ছা আমি কি আপনাকে চিনি আমার চেনা চেনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পারছিনা।”
“অবশ্যই চেনেন আপনার জন্য আমার কি হাল হয়েছিল।”
“আচ্ছা আপনার সাথে আমার কোথায় দেখা হয়েছে কিভাবে চিনি আপনাকে?”
“ওইযে শপিংমলে আপনি আমার শরীরে কেক ফেলে দিয়েছিলেন।”
“ওপসস ভুলে গিয়েছিলাম। মনে পড়েছে।”
তাও ভাল মনে পরেছে আমি তো ভাবলাম একদম ভুলে গেছেন।”
‘তা আপনি এখানে কি করছেন?”
“এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই আপনাকে দেখলাম চলে এলাম কথা বলতে।”
‘ও তা কি কথা বলবেন?”
“এমনি পরিচিত হয় সেই দিন তো শুধু ঝগড়াই করেছিলাম।”
“তা ঝগড়া করবোনা আপনার জন্যেই তো এসব হয়েছিল।”
“এই যে ম্যাম পড়ে কিন্তু আমি আপনাকে কেক কিনে দিয়েছিলাম।”
“হুম তা দিয়েছিলেন।”
“আচ্ছা তা ম্যাডামের নাম কি?”
‘নাম দিয়ে কাম কি?”
“কেন নাম কি জানতে পারি না।”
“বলেন নাম জেনে কি করবেন?”
“কি আর করব জেনে রাখবো যদি কখনো দেখা হয় নাম ধরে ডাকবো।”
‘আচ্ছা আমার নাম দোলা। আমার নাম কি?”
‘আমার নাম আরাফাত হোসেন।”
‘ও আচ্ছা আমার গাড়ি চলে এসেছে যায়।”
‘ওকে আপনার বাসাটা কোথায় চলে যান।”
আমি বাসার ঠিকানা দিলাম না চলে এলাম।

#চলবে