Tuesday, July 15, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1378



তার শহরের প্রেম পর্ব-১৮ এবং শেষ পর্ব

1

গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- #Konika_islam

part:-18 Last part

রাতে আয়ান রুমে আসে দেখে আয়াত জুয়েলারি খুলছে তা দেখে আয়ান নিজে গিয়ে আয়াতের জুয়েলারি খুলে দেয়,,, আর আয়াত একমনে তাকিয়ে দেখছে আয়ানকে। এটা কি স্বপ্ন? যদি স্বপ্ন হয়তো তাহলে যেন কখনো আমার এই নিদ্রা না ভাঙে। এইসব আয়াত ভাবছিল কিন্তু আয়াতের ভাবনা জগৎে ছেদ ঘটে তখন যখন আয়ান আয়াতের গলায় একটা চেন পরিয়ে দেয় আর কানে কানে বলে

—– বিয়ের দিন রাতে কিছু না কিছু দিতে হয় নিজের বউকে তখন দেয়নি তো কি হয়েছে,,, এখন দিয়ে দিলাম। আয়াতও আয়ানের দিকে ঘুরে ফিরে বলে

—- আপনার জন্যও একটা কিছু আছে,,, বলেই আয়ানকে সাইড করে কাবার্ড থেকে একটা ঘড়ির বক্স নিয়ে আসে,,, আর সেটা থেকে ঘড়ি বের করে আয়ানের হাতে পরিয়ে দেয় আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে

—– ভালোবাসি তোকে প্রয়িতমা,,,, #তোর_শহরের_প্রেম কে ভালোবাসি জানানি কত দিন বাচঁবো কিন্তু তোকে নিয়ে বাঁচার ইচ্ছাটা প্রবল।

_________

অপর দিকে রুমে ঢুকে দাড়িয়ে আছে আরিয়ান আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে বলে

—- সমস্যা কি তোমার? আরিয়ান চোখ গুলো ছোট করে বলে

—- তুমি আমাকে বিয়ে কেন করলে? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে

—- ভালোবাসি তাই,,, আর এটা তোমার মেনে নিতে হবে আমি তোমার বিয়ে করা বউ। আরিয়ান,,, পান্ঞ্জাবির বোতাম খুলতে খুলতে বলে

— বললেই হলো? ইরা পাশে তাকিয়ে দেখে ফল কাটার ঝুড়িতে একটা ছুড়ি সেটা নিয়ে আরিয়ানের দিকে তেরে আসলে আরিয়ান দেয় এক দৌড়,, আর বলে

—– ইরাবতী,,,, ডলফিনের রাণী,, কুটনি বুড়ি তোমায় আমি ভালোবাসি,,, ছুড়িটা ফালাও,,,,। ইরা বলে

—– আমি কুটনি,,? ডলফিনের রাণী!? আরিয়ান বলে

—– বিগ বি গো তুমি আমাকে এই কষাইয়ের কাছে কেন পাঠাইলা,,,,, ।

_________

অন্য দিকে আরবি দাড়িয়ে আছে ছাঁদের এক কোণে। পাশেই অপূর্ব। অপূর্বকে আরবি বলে

—- এতো মেয়ে থাকতে আমাকে কেন বিয়ে করতে চাইছো,, আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে তুমি পেতে। অপূর্ব আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে

—- আমি তো তোর চেয়ে ভালো কাউকে চাইনি,, আমি তো তোকে চেয়েছি। আর আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গিয়েছি। ওয়াদা করলাম তোকে কখনো কাদঁতে দিব না।

___________

সকাল সকাল আফিয়া বেরিয়ে পরে সুইজারল্যান্ডের জন্য ,,, এইসবের মাঝে তাকে মানায় না। এতে অবশ্য কারো মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না।

সময় খুব অদ্ভুত জিনিস। কখনো খুব দ্রুত চলে যায় আবার কখনো যেনো কাটতেও চায় না। এটা নির্ভর করে মানুষ সময়কে কীভাবে চায় তার ওপর। সে বড়ই অবাধ্য। মানুষের মন মস্তিষ্ক নিয়ে খেলে খুব মজা পায় সে। যদি কেউ চায় সময় ধীরে চলুক তাহলে সময় যেনো খুব বেশিই দ্রুত চলে যায়। আবার যদি কেউ চায় সময় তাড়াতাড়ি পার হয়ে যাক তাহলে সময় যেনো আর কাটতেই চায় না। দোষটা আসলে কার? মানুষের মনের নাকি সময়ের সেটাও এক বিশাল প্রশ্ন। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ২ বছর এর মধ্যে। সময়টা একটু বেশিই দ্রুত চলে গেলো এরকমটাই মনে হচ্ছে আমার কাছে। কিন্তু কী আর করার?

আজ অপূর্ব আর আরবির বিয়ে। বড়ির মেয়ে+ বউ হওয়াতে আয়াতের যেন কাজের আর শেষ নেই। খাওয়া-দাওয়া না করেই কাজে লেগে আছে। আয়ানও কমনা দেখে মনে হবে না যে সে এতোকাজ করতে পারে। আরিয়ান আর সাদীও লেগে পরেছে কাজে,, সাদীর আর আলভিরার এনগেজমেন্ট হয়েছে মাসখানিক হবে। সব কেমন দ্রুত হয়ে যাচ্ছে তা বলা বড় দায়।

উপরে উঠছি,,, কাজ আছে। কিন্তু মাথাটা ঝিম ঝিম করছে,, সকাল থেকেই কেমন লাগছে মাথা। মাথা ঘুরে উঠছে মাঝেমাঝে। কিছু খেতেও ইচ্ছে করছেনা।কাউকে বলিনি কারণ বিয়ে বাড়িতে সবাই এখন আবার আমায় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরবে। আম্মু আমায় ফলের ঝুড়িটা আনতে বলল। আমিও ফলের ঝুড়ি নিয়ে বেড়িয়ে এসে আরেকটু এগোতেই মাথাটা ভীষণ জোরে ঘুরে উঠল। সবটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ঝুড়িটা আর ধরে রাখতে পারলাম না, পরে গেল হাত থেকে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কী হল জানিনা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না লুটিয়ে পরলাম মাটিতে। চোখ খুলে দেখি সবাই মিষ্টি খাচ্ছে আর আয়ান আমার হাত ধরে পাশে বসে আছে। আলভিরা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে

—- আপ্পি আমি ফুপি হবো আর তুমি মাম্মা। সাদী আলভিরারকে বলে

—- তুমি মামি হবে আর আমি মামা। আলভিরা ভাব নিয়ে বলে

—- তুমিই ফুপা হবা মানে আঙ্কেল,,, ইরা আরিয়ানকে বলে

—– ওয়াও,,,, কি মজা ছোট একটা বেবি আসবে। আরিয়ান ইরার মুখে মিষ্টি ভরে দিয়ে বলে

— এক বেইবি বলে আরেক বেইবির কথা। ইরা মিষ্টি টা শেষ করে বলে।

—- তুমি আমাকে ইনডিরেক্টলি অপমান করছ? আরিয়ান বলে

— না ডিরেক্ট। তখনই আয়ানের মা বলে

—- আয়ান তুই আয়াতের সাথে থাক আর আমরা বাকিটা দেখে নিচ্ছি। সবাই যেতেই আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে।

—- আই এম সো হ্যাপি আয়াত,,,, তোই আমাকে কতটা হ্যাপি করেছিস বলে বুঝতে পারবো না। আয়াতও অনেক হ্যাপি,, আয়াত আয়ানকে হাগ দিয়ে বলে

—- আমিও অনেক হ্যাপি।।

চারদিকে হৈচৈ,,, সবাই কত এনজয় করছে আর আয়াত এক কোনে বসে আছে। এটা আয়ানের সাফ কথা আয়াত কোনো কাজ করতে পারবেনা। আয়াতের কি বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে আর চাতক পাখির মতো এইদিক সেইদিক তাকাচ্ছে আর আয়ানকে খুজছে। কিছু সময়ের মধ্যেই আরবি আর অপূর্বের বিয়ে কম্পিলট হয়ে যায়। দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো আটটা মাস আয়াতের মেজাজ এখন খারাপ থাকে খিটখিটে হয়ে গিয়েছে,,, আয়ানকে ঝাড়ির উপর রাখে। আর আয়ানও মুখ বুজে সব সহ্য করে,,,, কখনো রাত ২ বাজে বলে সে আইসক্রিম খাবে কখনো বা রাতে তার ঘুম আসে না। এখনো সেম আয়াত আয়ানকে ডাকছে

—- এই এই শুনো। আয়ান ধরপাকড় খেয়ে উঠে বসে আর বলে

—- কি হয়েছে? পেন হচ্ছে ডক্টর ডাকবো?? দাঁড়াও আমি কার বের করছি। আয়াত ভ্রু কুচকে বলে

— কিছু হয়নি,,, আমার ঘুম আসছিল না। আয়ান বলে

—- কি!? তুই জানিস কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আয়াত বলে

—- মাঝে মাঝে ভয় পাওয়া ভালো,,, ভয় পেলে ভালোবাসা বারে,, আচ্ছা বায় এখন আমি ঘুমাবো। আয়ান মাথায় হাত দিয়ে বলে

—- আল্লাহ আর যে কত কি সহ্য করতে হবে। আয়ান গিয়ে আয়তের পাশে শুয়ে পরে। কিন্তু অন্য দিকে মুখ করে,, আয়াত তা দেখে আয়ানকে পিঠে হালকা করে মেরে বলে

—- এইদিকে ঘুরে ঘুমান। আয়ান এবার আয়াতকে নিজের হাতে নিয়ে আসে আর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে

—– ঘুমিয়ে পর সোনাপাখি। আয়াতেও ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পরে।

তারপরের দিন সকালে আয়াতকে নাশতা করিয়ে আয়ান অফিসে যায়,,,,, দুপুরের দিকে আয়াতের পানি তেষ্টা লাগে কিন্তু আয়াত দেখে রুমে পানি নেই তাই সে উঠে দাড়ায় পেটে হালকা হালকা ব্যাথা করছে,,,, আরিয়ান আর ইরা আয়াতের বেইবির জন্য সপিং করে বাসায় ফিরছে,, ড্রয়িং রুমে বসে সবাই একসাথে গল্প করছিল৷,, হঠাৎ করে আয়াত ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠে,, তা দেখে দৌড়ে গিয়ে আয়াতকে ধরে আরিয়ান আর৷ ইরা।। সবাই হসপিটালের বাইরে অপেক্ষা করছে তখনই পাগলের মতো ছুটে আসে আয়ান,,,আরবি অপূর্ব সাদী সবাই হাজির। তখনই একটা নার্স বের হয় কোলে ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে। নার্স এসে বাচ্চাটা আয়ানের কোলে দেয়। আয়ান তার মেয়েকে পেয়ে অনেক খুশি চুমুয় ভরিয়ে দেয় তার মুখ। সবাই মেতে উঠে বাচ্চা নিয়ে,, আয়ান জিজ্ঞেস করে

—- আমার আয়াত? তখনই নার্সটা বলে

—- সবাই ঠিক আছে,,একটু পর তাকে বেডে দেওয়া হবে।

চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আয়াত কিছু সময় আগেই তাকে বেডে দেওয়া হয়েছে। একে একে সবাই এসে দেখা করে যাচ্ছে কিন্তু আয়ান আর বেইবি আসছে না। সব শেষে আয়ান আসে কোলে তার বেইবি। আয়াত তার বেইবিকে দেখে খুশিতে কেঁদে দেয় আর হাতটা বারিয়ে দেয় আয়ান আয়াতের কাছেকোলে বেইবিটা দিয়ে আয়াতের মাথায় চুমু দিয়ে বলে

—- ভালোবাসি,,, আয়াত উপরের দিকে তাকিয়ে বলে

—- আমিও। আর বাইরে থেকে সবাই দেখছে আয়ান আর আয়াতকে।

ভালো থাকুক সুখে থাকুক আয়াত আর আয়ান। সবাই ভালো আছে। শুধু এত কিছুর পরেও সুখে নেই আফিয়া। হয়তো এটাই তার প্রাপ্য।

সমাপ্ত।

তার শহরের প্রেম পর্ব-১৭

0

গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- #Konika_islam

part:-17

আয়াত শাওয়ার নিয়ে এসে রেডি হচ্ছে,,,, চুলগুলো এখনো হালকা হালকা ভিজা,,,,,পরনে একটা স্কাই ব্লু কালারের ড্রেস সাথে স্কাই ব্লু কালারের পাথর বসানো।আয়াত মেকাপ করছে,, আর আয়ান একমনে তাকিয়ে আয়নায় দেখছে তার আয়াতকে। আয়াত বলে

—-কি দেখেন? আয়ান দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে

— দেখলাম,,, ভিভো থেকে আই ফোন কিভাবে হতে হয়। না ভাই মানে মেকাপ এমন একটা জিনিস,, যা,, কাককে বক আর বককে কাক করে দেয়। আয়াত রেগে চোখ গুলো বন্ধ করে চেচিয়ে বলে

—- আপনি বের হন,,, রুম থেকে,,, । আয়ান ভয় পেয়ে বলে

— আরে আরে আমিতো মজা করছিলাম,,, আয়াত আবারও একই রকম করে বলে

—- আমি বের হতে বলছি। আয়ান তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে যায়।

________________

মেহমান আসা শুরু হয়েছে,,,, সাদী, আয়ান, আরিয়ান ও অপূর্ব সবাই তাদের ওয়েলকাম জানাচ্ছে। তখনই আলভিরা আসে সাদীর সামনে। সাদীতো আলভিরাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পরনে রেড কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ। আলভিরা আয়ানকে বলে

—– ভাইয়া কয়েকটা পিক তুলে দিবা? তখনই আরিয়ান বলে

—– এমনই পেত্নীর মতো লাগছে নিজের ছবি নিজে দেখলে সেন্স হারাবি। আলভিরা নিজের চুলগুলো সরিয়ে ভাব নিয়ে বলে

—– দেখ আমি জানি আমাকে সুন্দর লাগছে ,,,, আর তাছাড়া আমি কোনো ছেলের পাশ দিয়ে গেলে,,,, সে এমনই সেন্স হারায়। আরিয়ান একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে

—– তো পারফিউম ব্যবহার করতে পারিস,,, তা তো করবি না। বুঝ তাহলে তোর ঘামের গন্ধে মানুষ সেন্স হারায়। আলভিরা এবার পারেতো কেঁদে দেয়,,,৷ আর সাদী তো ঠোঁট চেপে হাসছে। আয়ান আলভিরাকে হাগ করে বলে

—- এই কেউ আমার বুড়ি কে রাগাবি না। তখনই আসে ইরা ডার্ক গ্রিন কালারের ড্রেস সেম আয়াতের মতো। দুপাট্টা ঠিক করতে করতে আসছে। ইরাকে দেখে আরিয়ানের হার্ট জুড়ে জুড়ে বিট করতে লাগে। আরিয়ানের হাত আপনাআপনি বুকের বা পাশে চলে যায়। আর অন্য দিকে মুখ করে বলে

—- হায়। একটু হলেই এ্যাটাক করতাম। এতো সাজতে হয় নাকি!? সাজুক কিন্তু আমার কি?! ধূর কি হচ্ছে এইসব আমার সাথে। ইরা এসে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের কানে কানে কিছু বলে। আর আয়ান অপূর্বকে বলে

—– অপূর্ব আমার সাথে আয় একটু। আয়ান অপূর্বকে নিয়ে চলে যায়,,,, আর সাদী আলভিরার হাত ধরে বলে

—- আমারও আসছি। সবাই চলে গিয়েছে শুধু দাড়িয়ে আছে ইরা আর আরিয়ান। ইরা হালকা কাশি দিয়ে বলে

—– এহেম,,, এহেম,,,,আমাকে কেমন লাগছে বললে না যে? আরিয়ান অন্য দিকে মুখ করে বলে

—-আমি কি বলবো। ইরা ভেংচি কেটে বলে

—- আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম,,, তুমি একটা আহাম্মক। আর চলে যায় ।

____________

আয়াত নিচে নামছে,,, কানে দুল পরতে পরতে আর আয়ানও পানি খেয়ে কিচেন থেকে আসছে,, আর আয়াতকে দেখে আয়ান দাড়িয়ে যায়।।।।। আয়াত আয়ানকে দেখেও না দেখার মতো করে গার্ডেনে চলে যায়। আয়ান বলে

—- আয়ানরে তোর বউ রাগ করছে রাগ ভাঙা নয়তো রাতে বিছানা তো দূরে থাক রুমে অব্দি যেতে দিবে না। বউগো কই তুমি। এই বলে আয়ানও আয়াতের পিছু পিছু দৌড় আসে।।।। আর আরিয়ান,, সাদীকে বলে কিছু একটা। হঠাৎই গানের সুরে পিছনে তাকায় আয়াত,,,। এমা সে কাকে দেখছে তার গুনধর স্বামী,,, ভাই সবাই একসাথে,,,, হঠাৎ আয়ান গেয়ে উঠে

—-

এই মন টাকে লিখে দিলাম,,, তোরি নামেতে,,,

তুই কি আসবি বলনারে,, প্রেমের টানে।

( আয়াত হা হয়ে আছে সাথে এখন যোগ হয়েছে ইরা, আলভিরা। আর এইসব উপর থেকে দেখছে আরিফা। সত্যি আরিফা অনেক বড় ভুল করেছে আয়ানকে ছেড়ে। আয়ান আয়াতের হাত ধরে চুমু খেয়ে গানের সাথে তালমিলায়

ভালোবাসার মাতাল হাওয়া।
বইছে যে আমার প্রাণে।
তোর ছোঁয়া তে যেন যাই,,
সবকিছু আমি ভুলে… ( আলভিরার লজ্জা লাগছে)

ইরা আরিয়ানের সাথে ডান্স করছে।।।

তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।

(সাদী আলভিরার কাঁধে নিজের কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দেয় বেচারি লজ্জা পাচ্ছে)
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।।।।।

তখনই এন্ট্রি হয় আরবির,,,, সবাই থেমে যায়। ইয়েলো কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ আর জুয়েলারি,,,, আজ অনেকদিন পর নিজের বোনকে সাজতে দেখেছে আয়ান,, সবাই অনেক খুশি। তখনই অপূর্ব সবার সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে আরবির সামনে,,, এটা একটা প্লানিং ছিল,, সবাই জানতো,, আয়ানও জানতো। নিজের বোনের জীবনটা কে নতুন করে সাজিয়ে দিতে। অপূর্ব

——
ও,,পৃথিবীর সবটুকু সুখ, দেবো যে আমি তোকে।

সব বাধা পেরিয়ে, যদি তুই আছিস ছুটে।
ও,ও, বড় নাজেহাল এই দিল।
তোর ভালোবাসাতে,,
বাঁচি কি করে বলনা তোকে ছাড়া,,,,
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।

(বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিয়) আরবি অবাক সবাই চুপ মিউজিক ওফ হয়ে যায়। সবাই বলে

—- আরবি হ্যা করে দাও। আরবি আয়ানের দিকে তাকালে আয়ান চোখ দিয়ে বলে হ্যা করে দিতে

—– আরবিও হ্যা করে দেয়। সবাই করা তালি দেয় আর শুরু হয় পার্টি। আয়ান চোখের পানি মুছে তখনই আয়াত আয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে

—- কি হয়েছে কান্না করছেন কেন? আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে

—- আমার লাইফের বেস্ট গিফট হিসেবে আমি তোকে পেয়েছি আয়াত। জানিনা কি এমন কাজ করেছিলাম। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তুই আমার লাইফে আসার পর সব কেমন মেজিকের মতো লাগছে। আর ধন্যবাদ তোকে অপূর্বের ব্যাপারটা আমাকে বুঝানোর জন্য,, আমি তোকে পেয়ে সত্যি হ্যাপি। আয়াত বলে

—- বারে আরবি আপু বুঝি আমার কিছু লাগে না?।। আয়ান কিছু বলে না শুধু আয়াতকে হাগ করে রাখে।

__________

সাদী আলভিরার কানে কানে বলে

—- তোকেও কিছু দিন পর প্রপোজ করব। আলভিরা বলে

—- করলেও কাজ হবে না। যত দিন না অব্দি ইরা আপু আর আরিয়ান ভাইয়ার বিয়ে হয়। সাদী বলে

—– বিয়ে আজকেই হবে। আলভিরা বলে

—- মানে!? সাদী বলে

—- ইরা সেই ব্যবস্থা করে রেখেছে। হঠাৎ করেই ইরা গিয়ে আরিয়ানের বাবাকে বলে

—– আঙ্কেল তোমার ছেলে আমাকে পাত্তাই দেয় না। আরিয়ানের মা আরিয়ানের কান ধরে বলে

—– কেন রে মেয়েটা তোকে এত লাইক করে আর তুই? আরিয়ান কান ছাড়িয়ে বলে

—– তো আমি কি করব!? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে

—- বিয়ে,, মানে আমাকে বিয়ে করবা। আরিয়ান বলে

—- এ্যা!!! সবাই একসাথে বলে

—- এ্যা না হ্যা। আরিয়ান পিছাতে পিছাতে একদম স্টেজের শেষে চলে এসেছে,, যেই না নিচে পরে যাবে। ওমনি ইরা গিয়ে আরিয়ানের হাত ধরে ফেলে। আরিয়ান বলে

—- আমি বিয়ে করবো না। ইরা মাথা দোলাতে দোলাতে বলে

—- বিয়ে করতে হবে,, কাল করলেও করবা তা আজকেই কর।

_____________

ইরা আর আরিয়ানের কথাটাও সবাই জানতো শুধু আরিয়ান জানতো না। কাজী সাহেব আরিয়ানকে কবুল বলতে বলে। আরিয়ান সামনে তাকিয়ে দেখে ইরা একটা লম্বা হাসি দিয়ে বসে আছে। তা দেখে আরিয়ান বলে

—- এই ঐ হাসছে কেন আমি কবুল বলবো না। আয়াত ইরাকে ধমক দিয়ে বলে

—- এই ইরা চুপ। আয়ান আরিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে

—- এইবার কবুল বল। আরিয়ান আয়ানকে ধরে বলে

—- বিগ বি আমি এই বিয়ে করবো না। আয়ান আরিয়ানের পিঠে হাত বুলিয়ে বলে

—- কিচ্ছু হবে না। ডারকে আগে জিত হে মেরে ভাই। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে

—- আর এই কবুল বলার পর জেলে কারা বন্দি। অনেক কষ্টে আরিয়ান আর ইরার বিয়ে হয়।এই নিয়ে অবশ্য হাসাহাসি কম হয়নি।

————–

কিন্তু এখন ঘটছে বিপত্তি আরিয়ান ড্রয়িং রুমে বসে বসে ভিডিও গেম খেলছে। আর ইরা উপরে রুম দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। আয়াত আয়ানকে বলে

—– আরিয়ানকে রুমে যেত বল। আয়ান গিয়ে আরিয়ানকে বলে

—- কিরে রুমে যাবি না। আরিয়ান গেম খেলতে খেলতে বলে

—- এখন ঐটা আমার না ইরা শাঁকচুন্নির রুম। আয়ান বলে

—- ভালো কথায় কাজ হবে না। সাদী,, বাবা,চা্চ্চু, অপূর্ব সবাই আসো। সবাই মিলে আরিয়ানকে জোর করে উপরে তুলছে,,, আরিয়ান বলেছে

—- আমি যামু নারে।। যামু না।।।।।। আয়াত, আলভিরা,, আরবি সবাই হাসছে।।

আরবি বলে

—- ইতিহাসের পাতায় সুনালী অক্ষরে লেখা থাকবে,,, ইরা আর আরিয়ানের বিয়ের কাহিনী।

চলবে।

তার শহরের প্রেম পর্ব-১৬

0

গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- #Konika_islam

part:-16

আয়াতের পাশে হাত ধরে বসে আছে আয়ান,,,, সারা রুম জুরি সবার মুখে শুধু এক ভয়ের ছাপঁ। ডক্টর বলে

—- সমস্যা নেই,,, শুধু একটু দূর্বল আর ভয়ের কারণে এমন হয়েছে। ডক্টরকে বিদায় দিয়ে সবাই ড্রয়িং রুমে দাড়িয়ে আছে। পিনপিন নিরবতা,,, আর সোফায় বসে আছে আরিফা। হ্যা সেই মানুষটা আর কেউ না আরিফা। হঠাৎ করেই সাদী গিয়ে আরিফা কে দাড় করিয়ে বলে

—– এখানে আসার মানে কি?? আরিফা বলে

—- আমি আমার ভুল বুজতে পেরেছি,,, সৌরভ আমার জন্য ঠিক না,, আই এম সরি আয়ান,,। তখনই আরিফার আম্মু গিয়ে চড় বসিয়ে দেয় আরিফার গালে,,, আরিফাকে বলে

—- তোর আগে এইসব মনে ছিল না? এখন কেন এসেছিস? তোর মুখ পর্যন্ত আমরা দেখতে চাই না। আরিফা বলে

—- আমি বুঝতে পারেনি,, আয়ান প্লিজ আই এম সরি!! আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?? একবার ফিরিয়ে নাও!! আয়ান তাচ্ছিল্যের সুরে বলে

—- আমার শহরটা সাত রঙের রঙধনু মতো রঙিন আর যাক জমক,,,করে তুলিছে আয়াত,, যে টাকে তুমি করতে চেয়েছিলে অন্ধকারে ঘেরা এক অভিশপ্ত নরক,, কিন্তু তা তুমি পারোনি ।।। তাহলে কেন আজ আমার শহরে তুমি সুখের খুঁজ করতে আসো??? আমি যে আর চাই না তোমাকে,,,, কারণ সেটা তুমিও জানো!!! তারপর একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

আর আমার আয়াত আছে। আর আরিফা তোমাকে ওয়ার্ন করছি তোমার জন্য যদি আয়াতের কিছু হয়,, জানে মেরে ফেলব!! আরবি তুই একটা কথা বলেছিলি না। যে আমাকে ছাড়তে যে একবার ভাবেনি,, আর আরেকজনকে আমার ছাড়ার কথা বলতেই এই পৃথিবীর মায়া ছাড়তে চেয়েছে তো আজ আমি বলছি,,, তাকে আমি ছাড়ছি না এট লিস্ট এমন থার্ড ক্লাস মেয়ের জন্য তো নাই। আমি উপরে যাচ্ছি৷ আয়াত ঘুমাচ্ছে কোনো শব্দ আমি চাই না বিকেলে পার্টি সবাই হাসি খুশি থাকো। কোনো সিনক্রিয়েট করছো তো খবর আছে,,,এখন আমার দায়িত্ব শুধু আয়াত তা কিন্তু না আমার অস্তিত্ব আয়াত।

বলেই রুমে চলে যায়,, আর আয়ানের কথা মতো সবাই কাজে লেগে পরে,,, সবাই হাসছে কথা বলছে কিন্তু আরিফা তাদের সাথে কথা বলতে গেলেই তারা তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।

__________♪♪♪♪

আয়ান রুমে গিয়ে দেখে আয়াত জেগে গিয়েছে বালিশে হেলান দিয়ে আধো শুয়া হয়ে বসে আছে। আয়ান রুমে ঢুকে দরজাটা লাগাতেই আয়াত বলে উঠে

—– এখনতো আরিফা আপু চলে এসেছে,, তো আমাকে নিশ্চয়ই ছেড়ে দিবেন। আয়ান রেগে ছিল আগেই, কারণ একেতো অসুস্থ তারপর এইসব কথা। আয়ান সোজা গিয়ে আয়াতের দুই গাল চেপে ধরে বলে

—- তোকে আমি কোনো দিন ছাড়বো না। তুই আমার এই আয়ানের,, আর না খেয়ে খেয়ে অসুস্থ হওয়ার মানে কি? কানের নিচে দিব। আয়াত আয়ানকে ধরে কেঁদে দেয়। আয়ান আয়াতকে আগলে নিয়ে বলে

—- তুই আমার অস্তিত্ব হয়ে গিয়েছিস আর মানুষ নিজের অস্তিত্ব ছাড়া বাঁচে? পাগলীটা আমার। এখন রেস্ট কর বিকেলে পার্টি আছেতো? আয়াতও চুপচাপ আয়ানের কথা মেনে নেয়।

_______
দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসেছে আয়াত এখনো নামেনি,,, আয়ানের পাশের সিট টা ফাঁকা সেখানে আয়াত বসবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে বসে পরে আরিফা। আয়াত তখন নিচে নামছিল। তা দেখে আয়ান বলে

—- আয়াত উপরে যাও আমি খাবার নিয়ে আসছি। আয়ান আয়াতের আম্মুকে বলে

—- আম্মু আমার আর আয়াতের খাবারটা রুমে পাঠিয়ে দাও।আয়াতের চাচি বলে

—- সেটাই ভালো মেয়েটা অসুস্থ,, আয়াতের বাবা খাবার খেতে খেতে বলে

—- আয়াত মামুনি তুমি রুমে যাও। আয়াত রুমে চলে যায়।

। আরিয়ান আরিফার আম্মুকে বলে

—- মামী আমিও রুমেই খাবো। আরবি বলে

—- আমাদের রুমে চলো একসাথে খাবো আর গল্প হবে। তা দেখে আরিফা রেগে গিয়ে খাবারের টেবিল থেকে পেলেট টা নিচে ফেলে দেয় আর বলে

—- কি হয়েছে এমন!! ভুল করেছি ক্ষমাও চেয়েছি!!আর সবাই আমাকে এভাবে কেন ইগনোর করছ!? ছোট একটা কমন ব্যাপার আজকাল কতই তো এমন হয়!! আর আয়াতের তেমন কিছু হয়নি যে নিচে নামতে পারবে না।

আয়ান চেয়ার ছেড়ে উঠে সবার সামনে একটা চড় বসিয়ে দেয় আরিফার গালে। বসা থেকে সবাই দাড়িয়ে যায়। আয়ান দাঁত চেপে চেপে বলে

—– এটা তেমন কিছু না?? জানিস তোর জন্য আমাদের ফ্যামেলির কতটা অসম্মান হতো যদি আয়াত তখন বিয়ে টায় রাজি না হতো!! আরিফা রেগে চিৎকার বলে

—- এতে আয়াতেরও স্বার্থ ছিল কারণ আয়াত তোমাকে লাইক করত। আয়ান রেগে গিয়ে বলে

—- সেটা পরের হিসাব তোর একবার রুহ কাপেনি এইসব করতে? আরিফা অন্য দিকে মুখ করে নেয়। আয়ান বলে

—- তোর আর আয়াতের মধ্যে পার্থক্য,,,, তুই শুধু নিজেরটা বুঝিস আর আয়াত সবারটা নিয়ে ভাবে। তা তুই ফিরলি কেন? সৌরভ কোথায়!! আরিফা মাথা নিচু করে বলে

— সৌরভ আমাকে মিথ্যা বলেছে। সে বলেছিল তার বাবার কোম্পানি আছে,,, কিন্তু ওদের দিনই পার হয় টেনেটুনে,,, রুমে একটা এসি অব্দি নেই কারেন্ট চলে গেলে গরম। আর একটা সার্ভেন্টও নেই,,, মা অসুস্থ সব কাজ আমার করতে হয়। আরিয়ান বলে

—— অহহহহহ এই না হলে কাহিনী?? আলভিরা বসে খাবার খেতে খেতে বলে

—- Khuda pahar nikla coha… আরবি ভ্রু কুচকে বলে

—– তা তুই এখন কি চাইছিস? আরিফা বলে

—- আমি যেই ভুলটা করেছিলাম সেটা ঠিক করতে। সাদী বলে

—– মানে কি!! আরিফা বলে

—- মানে আয়ানের সাথে বিয়ে। আয়ান এবার রেগে গিয়ে আরেকটা চড় বাসায়,,, এবার আরিফা তাল সামলাতে না পেরে চেয়ারে বসে গিয়েছে। আলভিরা লাফিয়ে বলে উঠে

—– ২য় বলেই রান আউট। সবাই আলভিরার দিকে তাকায়। আলভিরা কি করবে ভেবে না পেয়ে খাবারটা নিয়ে রুমে চলে যায়। অন্য দিকে মাথা ঝিম ঝিম করছে আরিফার,,, থাপ্পড়টা এতটাই জুড়ে ছিল যে মনে হচ্ছে গালটা এখনই ফেটে যাবে। গরম হয়ে আছে। আয়ান বলে

—- কথা কান দিয়ে যায় না?? আয়াত আমার বিয়ে করা বউ আর আমি ওকে আমার বউ হিসাবে মেনে নিয়েছি বুঝছিস? আরিফা মাথা দোলায়। আরিফার বাবা বলে

—- সাদীর আম্মু,,, খাবার নিয়ে রুমে আসো। আর ওকে এখান থেকে বেড়িয়ে যেতে বলো। সুখের সংসারে আগুন লাগানোর কোনো প্রয়োজন নেই। আরবি বলে

—– এইসব না করলেই হতো,, আর এর জন্যই তোকে কেউ পছন্দ করে না আয়ান কি মনে করে তোকে লাইক করত,, কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয় যা হয়। ইরা বলে

—- কিছু মানুষই আছে,,, লজ্জা শরম কিছু থাকে না। আর আরিফা আপু তো ইস্টার জলসার অনেক বড় ভক্ত তা একটু আদটুতো শিখেছেই। অপূর্ব বেঙ্গ করে বলে

—- তা যা বলেছিস। আরিফা আর কিছু না বলেই উঠে চলে যেতে চাইলে আরিফার মা বলে

—- এগুলো পরিষ্কার কে করবে?? আরিফা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আয়াতের মা বলে

—– এগুলো আমি আমার বাসায় মেনে নিব না। আরিফার বাবা বলে

—- তোমাকে যেন দ্বিতীয় বার বলতে না হয় কালকে সকালে সুইজারল্যান্ডের টিকেট করে দিব সোজা চলে যাবে। আর তুমি তোমার ভাগের সব পেয়ে যাবে,, শুধু আমাদের মেয়ের জীবন থেকে সরে যাও। আরিফা বলে

—- আমি তোমার কিছু না? আরিফার বাবা চলে যেতে যেতে বলে

—- আমার একটাই মেয়ে আয়াত। একে একে সবাই চলে যায়। আর শুধু একা থাকে আরিফা

চলবে

তার শহরের প্রেম পর্ব-১৫

0

গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- #Konika_islam
part:-15

“সকাল একটি দুর্দান্ত আশীর্বাদ,, এটি প্রত্যাশার এক নতুন আলো, যা আমরা জীবন বলে থাকি তার আর একটি সূচনা দেয়। “সুযোগগুলি সূর্যোদয়ের মতো।আয়াতের ঘুম ভাঙতেই নিজেকে আবিষ্কার করে আয়ানের বাহুডোরে,, আয়ান আয়াতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, আয়াত তা দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার জড়িয়ে ধরে আয়ানকে,, আয়ান আয়াতের মাথায় চুমু দিয়ে বলে

—– মাহা রানীর ঘুম হলো। আয়াত বলে

—- হুমমম। তারপর দুজন উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়। আয়াত বারান্দায় দাড়িয়ে চুল ঝারছে,, আয়ান গিয়ে আয়াতকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা কিস দিয়ে বলে

—- নাশতা করবি নিচে চল। আয়াত বলে

— আপনি জান আমি আসছি। আয়ান আয়াতের চুলের গন্ধ নিতে নিতে বলে

—- উহুুু একসাথে। আয়াত কিছু বলে না,,, খাওয়া দাওয়া শেষ করে আয়ান আর আয়াত যায় গার্ডেনে। চারদিকে ফুলের সমারোহ আর পাখির কিচির মিচির শব্দ,,, পরিবেশটা খুব সুন্দর। আয়াত একটা গোলাপ ফুল ছিরে নিজের কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলে

—- দেখেন তো আমাকে কেমন লাগছে?? আয়ান ডেভিল হাসি দিয়ে বলে

— রেড ভেলভেট কেক লাগছে। আয়াত আয়ানকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখেই দৌড়। আয়ানও আয়াতের পিছু পিছু দৌড়। আয়াত যেতে যেতে একদম সুইমিংপুলের ধারে চলে এসেছে তা দেখে আয়ান বলে

—- এখন কোথায় যাবি? আয়াত আরেক পা পিছালেই পরে যেতে চাইলে আয়ান ধরে ফেলে। আর সুযোগ বুঝে আয়াত উপরে উঠে আয়ানকে পানিতে ফেলে দেয়। আর হাসতে লাগে। আয়ান ভিজে একাকার হয়েগেছে। আয়ান নিজের হাত বারিয়ে দেয় আর বলে

—- তুল আমাকে,, আয়াতও খুশি মনে তুলতে যায়,,, আর আয়ান আয়াতকে টান দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। আয়াত আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে

—– এটা কি হলে?? আয়ান বলে

—- তখনতো খুব হাসছিলি এখন?? আয়াত আয়ানের দিকে বাচ্চাদের মতো ফেস করে তাকায় আর ফিক করে হেসে দেয় সাথে আয়ানও।। আয়ান আয়াতের দিকে হাত দিয়ে পানি ছুড়ে মারে,, আয়াতও কম না।

_________________
আরিয়ান রুমে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে , চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,,,, ভয়টাও কাজ করছে প্রবল সামনেই দাড়িয়ে আছে ইরা,,, আরিয়ান চোখ মুখ শক্ত করে বসে আছে। ইরা বলে

—- তুমি কেন আয়াতের পিছু পরে আছ? আরিয়ান অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বলে

— কয আই লাভ হার। ইরা উঠে দাড়ায় আর চড় বসিয়ে দেয় আরিয়ানের গালে

— আয়াত আর আয়ান দু’জন দু’জনকে নিয়ে ভালো আছে। আজকেও তো তুমি ওদের দিনটা খারাপ করতে চেয়ে ছিলে। আরিয়ান রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইরার দিকে। ইরা বলে

—– আহমেদ মেনশনে আসার আগে আমি চৌধুরী মেনশনে গিয়ে ছিলাম তোমাকে সারপ্রাইজ দিব বলে,, কিন্তু তুমি তো আমাকে অবাক করে দিয়ে আয়ান আর আয়াতের রুমে চলে যাও। আর কি সব বলছিলে আয়ানকে সরিয়ে দিব!! তোমার লজ্জা করে না??আর তুমি কালকে বাইক থেকে পরে হাত কেটেছ?? সিরিয়াসলি ভাই। আমি কিন্তু তোমার সাথেই ছিলাম বাইকে,,, আমরা বাসায় আসার পর তুমি সোজা রুমে চলে গিয়েছিলে। আরিয়ান ইরার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ,,, অপূর্ব বলে

—- আমি জানি নিজের মানুষটাকে অন্যের হতে দেখা কতটা কষ্ট কর। কিন্তু আয়াত এখন বিবাহিত,, তোমাকে বুঝতে হবে,,, আরবিকে আমি লাইক করতাম সেটা যদি আমি আয়ানকে আগে বলতাম বা সম্পূর্ণ পরিবারকে বলতাম তাহলে এতো কিছু হতো না। বিয়ের আগের দিন আয়ানকে সব বলেছিলাম,, আয়ান বলেছিল এখন সম্ভব না কিছু। তখন আমি রেগে বলছিলাম,,, তোর থেকেও তোর প্রিয় মানুষটা আমি কেড়ে নিব,,, তাই সে আয়াতের উপর আরো আকৃষ্ট হয়ে পরে।।।তখনই আরিয়ান বলে

—- তো আমি কি করব??? আমি যে ওর প্রতি আসক্ত। ইরা গিয়ে আরিয়ানের দুইগালে হাত রেখে বলে

—- আয়াত তোমার না,, আয়ান আয়ানের আমাদের বিগ বির,,,, বিগ বি আমাদের কত লাভ করে আর সেখানে তুমি??? প্লিজ আরিয়ান। আরিয়ান এবার না পেরে ইরাকে ধরে কেঁদে দেয় আর বলে

—- আই এম রিয়েলি সরি ইরা আমার এমনটা ভাবা ঠিক হয়নি আমি আয়ান ভাইয়ার কাছে ক্ষমা চাইব। তখনই অপূর্ব বলে

—- সেটা আর বলতে হবে না,, পরিবেশ যেমন আছে থাক। আয়ানের রাগ সম্পর্কে আমাদের সবারই কম বেশি ধারনা আছে। আরিয়ান বলে

—- আমি হটাৎ করে ঘুমিয়ে গেলাম কিভাবে দুপুরে? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে

—- তোমার রুমে যে একটা সার্ভেন্ট এসেছিল জুস নিয়ে তাকে আমি পাঠিয়ে ছিলাম আর সেখানে ঘুমের ঔষধ মিলিয়ে দিয়ে ছিলাম। আরিয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,, ইরা বলে

—– থাক হয়েছে এবার নিচে চলো।

_____________

কিছু সময় পর সবাই একসাথে এসে হাজির আয়াত আয়ানও এসেছে। তখনই আয়াতের মা বলে

—- আয়াত তাড়াতাড়ি যা তৈরি হয়েনে। বিকেল থেকে তো সব কাজ শুরু হবে।

আয়াত বলে

—- একটু পর যাই,, গার্ডেনে দেখে আসি কি অবস্থা । আয়াতের পিছু পিছু আয়ানও যায়। আয়ানকে দেখে আয়াত বিরক্ত হয়ে বলে

—- কি শুরু করেছেন? এমন পিছু পিছু ঘুরার মানে কি?? সবাই কি ভাববে?? আয়ান চোখ গুলো ছোট ছোট করে বলে

—- আমার পা আমার ইচ্ছা যা খুশি করব। তোর কি? আয়াত বলে

—- আমার কিছু না জান।

অন্য দিকে আলভিরা শুধু বলছে,,

—- এটা এখানে কেন? ঐখানে কেন? ডেকোরেশনের লোকরা পাগল হয়েগেছে!! সাদী কমড়ে হাত দিয়ে বলে

—- এখানে কি করেন মেডাম আপনি?? আলভিরা ওড়না দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলে

—- দেখেন না কাজ করছি!! সাদী বলে

—- কাজ কইরা উল্টায় ফালায়ছে। নিজে কাজ না করে অন্যদের প্যারা দিস। আলভিরা ভেংচি কেটে বলে

—- তো কি হইছে,, আমিতো জ্বালাচ্ছি আর আপনি আপনি কি?? অন্য দিকে আয়াত আর আয়ান ঝগড়া করছে,, তা দেখে আরিয়ান এসে বলে

—– কি হয়েছে? আয়াত বলে

—-দেখনা তোমার ভাই এখন আমাকে রুমে নিয়ে যাবে। আমি নাকি রোদে থাকলে আমার রঙ জ্বলে যাবে,, আচ্ছা বলতো আমি কি কাপড় নাকি যে রঙ জ্বলবে?? আরিয়ান ফিক করে হেসে দেয়। তখনই ইরা এসে বলে

—- এটা কি ঠিক ভাইয়া। আয়ান বলে

—- কি করব!! পার্টিতে সবাই যদি আমার এমন রঙ জ্বলা বউ দেখে আমি মুখ লুকাবো কোথায়??

আয়াত বলে

—- সমস্যা নেই মেকাপ করে ঠিক করে নিব। আয়ান বলে

— এই আটা ময়দা সুজি মেখে আটার দাম আকাশ ছোঁয়া করে দিয়েছিস,, এখন থেকে বাবাকে বলবো আটা ময়দার বিজনেস শুরু করতে। আয়াত রেগে আয়ান কে মারতে আসলে আয়ান দেয় দৌড়,, আয়াত ও আয়ানকে ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু হঠাৎ করেই আয়ান থমকে যায়,,, আয়াত দাড়িয়ে পরে।।। আলভিরা সাদী ঝগড়া করছিল কিন্তু যখনই আয়ানের বরাবর চোখ যায় সবাই নিশ্চুপ কারো মুখ দিয়ে কথা অব্দি বের হচ্ছে না ।। আয়াতের হাত পা দিয়ে কাঁপ উঠে গিয়েছে হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পরে যায় আয়াত,, সেটা দেখে আরিয়ান

—– আয়াত বলে চিৎকার দিয়ে উঠে। আয়ানের হুশ আসেতেই দৌড়ে যায় সে আয়াতের কাছে,, আর আয়াতের দুই গাল ঝাঁকিয়ে বলে

—- এই এই আয়াত চোখ খুল। সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে আয়াতকে নিয়ে৷ আয়ান দেরি না করে আয়াতকে কোলে তুলে নিয়ে সোজা বাসায় ঢুকে যায়।

চলবে।

তার শহরের প্রেম পর্ব-১৪

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:14

আয়াত অপূর্বের দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে,,,, অপূর্ব আয়াতকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,,

—- এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আয়াত রেগে বলে

—- তোমরা তিনটায় কোনো খিচুড়ি পাকাচ্ছ,, নয়তো একসাথে তিনজনের হাত কি করে কাটে?? আরিয়ান বলে

—- আমি বাইকে থেকে পরে গিয়েছিলাম। সাদী কিছু না বলে খাবার ছেড়ে চলে যায়। আর আলভিরা তাকিয়ে আছে সাদীর যাওয়ার দিকে। খেতে খেতে আয়ান বলে

— তা আরবি তুই অপূর্বের রুমে কি করছিলি? আরবি থতমত খেয়ে বলে

—- না তেমন কিছু না ,, আমি পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম আর তখনই। আয়ান আয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলে

—- আমার লেট হচ্ছে আমি বের হচ্ছি। একটু রুমে আসো। আয়াতও আয়ানের সাথে রুমে চলে আসে। আয়ান আয়াতের কোপালে একটা চুমু দিয়ে বলে

—- জানটা আমার সাবধানে থাকিস ,,, আর বিকেলে অফিস থেকে ফিরে তোকে নিয়ে বের হবো। আয়াত তো অবাক, আয়ান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়। আয়ানকে আসতে দেখেই সেখান থেকে একটা ছায়া সরে যায়।
________

সাদী রুমে হঠাৎ করে ঢুকে যায় আলভিরা। আলভিরাকে দেখে বেস অবাক হয় সাদী। আলভিরা গিয়ে সরাসরি জড়িয়ে ধরে সাদীকে,, সাদী আলভিরাকে নিজের থেকে আলাদা করে বলে

— কি হয়েছে? এখানে কি চাই? আলভিরা সাদীর গালে হাত রেখে বলে

—- তোমাকে চাই… সাদী আলভিরার হাত সরিয়ে বলে

—- কালকে তো আমিও বলেছিলাম,, তখনতো আমাকে ফিরিয়ে দিতে ২বার ভাবিস নি? উল্টো ইগো দেখিয়ে ইগনোর করে ছাঁদ থেকে নিজের রুমে চলে গিয়েছিলি।

কালকের কথা রাতে রেস্টুরেন্টে থেকে আসার পর,, আলভিরা ছাঁদে চলে আসে ঘুম আসছিলো না,, আর তখনই সাদী ছাঁদে আসে,,,, আলভিরা সাদীকে দেখে জিজ্ঞেস করে

—- এতো রাতে?? জিএফ এর সাথে কথা বলতে আসছেন। সাদী আলভিরার পাশে রেলিঙে চড়ে বসে বলে

—- না জিএফ নেই কিন্তু একজন আছে যাকে অনেক ভালোবাসি। আলভিরা সাদীর দিকে তাকিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে বলে

— কে?? সাদী আলভিরার হাত ধরে চুমু দিয়ে বলে

— তুই,, #তোর_শহরের_প্রেম তোর হাসি সব। আলভিরা যেন আকাশ থেকে পরে, সেও যে সাদীকে ভালোবাসে,, খুশিতে চোখ বেয়ে পানি চলে আসে,, আর নিজেও জানে না কি মনে করে ছুটে নিজের রুমে চলে আসে। আর আলভিরার এমন কাজে রেগে ইচ্ছেমতো দেওয়ালে পান্ঞ্চ মারে সাদী, ফলে হাত ছিলে রক্ত বের হয়। আলভিরা বলে

—- আমি কি হ্যা না কিছু বলেছিলাম,, খুশিতে আত্মহারা হয়েছিলাম তাই দৌড়ে পালিয়ে ছিলাম। আর হাতের কি অবস্থা করেছেন। সাদী আলভিরাকে হাগ করে বলে

—+ আমার মায়া জ্বালে আটকালে তুমি আর বের হতে পারবে না,,, পাখি। আলভিরা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—- আচ্ছা এখন ছাড়ো,, আমাকে যেতে হবে,,নাশতা শেষ করবে নিচে আসো

________
বিকেল হয়ে গেছে,,, আয়াত ঘুম থেকে উঠে দেখে আরবি, আলভিরা আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আরবি বলে

—- উঠলি তবে,, কখন থেকে ডেকে চলছি। আলভিরা বলে

—- সে সব কথা পরে হবে,,, আগে রেডিতো কর। দুজন মিলে আমাকে রেডি করিয়ে দেয়। রেড গাউন চুলগুলো বান করা,,, মুখে মেকাপ আর জুয়েলারি। ফোনে মেসেজ আসতেই,, আমি নিচে নামতে লাগলাম ওদের বিদায় দিয়ে।। জনাব গাড়িতে হেলান দিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।। তাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে,, আমার অনেকটা আন ইজি লাগছে,, তাই কিছু না বলেই গাড়িতে বসে পরলাম। উনিও গাড়িতে বসে আমার সিটবেল্ট বেধে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলেন। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমি বললাম,

— ” কোথায় যাচ্ছি আমরা?”

আয়ান ড্রাইভ করতে করতে বললো

— ” গেলেই দেখতে পাবে।”

আমি বিরক্ত হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

— ” এমন কেনো আপনি? সবসময় থ্রিল থ্রিল ভাব রাখেন । সবসময় মনের মধ্যে চলতে থাকে এরপর কী হবে? এরপর কী হবে?”

আমার কথায় উনি শব্দ করে হেসে দেয়,

আমি মুখ ভেংচি কেটে বাইরে তাকিয়ে রইলাম। প্রায় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে গাড়ি চলল। আমি ওনাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি কারণ জানি কিছুই বলবেন না। হঠাৎ একটা জায়গায় গাড়ি এসে থামলো। আমি দেখলাম একটা বাড়ির সামনেই গেইটেই গাড়িটা থেমেছে হয়তো ফার্মহাউজ। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকাতেই উনি পকেট থেকে একটা রুমাল বার করে আমার চোখ বেধে দিলেন। আমি অবাক হয়ে বললাম,

— ” ক্ কী করছেন কী? এমন একটা জায়গায় নিয়ে এসছেন। মেরে গুম করে দেবেন নাকি? যাতে নতুন বউ আনতে সুবিধা হয়? ”

আয়ান আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন,

— “মাথায় সব উল্টা পাল্টা চিন্তা,, কিন্তু আইডিয়াটা কিন্তু মন্দ না।”

আমি হাসলাম না দেখেই বুঝতে পারলাম উনিও হাসছেন। অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও উনি হেটেই যাচ্ছেন। আমি বিরক্ত। তাই বললাম

— কোথায় যাচ্ছেন বলবেন? হাটছেন তো হাটছেনই কষ্ট হচ্ছে না।” আয়ান বলে

— ” আসলে পেছনে একটা নদী আছে। মেরে সেখানেই ফেলবো তোকে,, তাই একটু কষ্ট করাই যায়,, তোর মতো আপদকে বিদায় করতে।”

আমি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললাম,

— ” ওহ আচ্ছা।”

কিছুক্ষণ মধ্যেই উনি আমায় একটা জায়গায় দাঁড় করালেন। আমার দুইকাধে হাত রেখে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,

— ” আর ইউ রেডি টু ডাই?”

আমি ঠোঁটে হাসি রেখেই বললাম,

— ” কমপ্লিটলি।”

উনি আলতো করে আমার চোখের বাঁধন খুলে দিলেন। আমি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আবছা লালচে অন্ধকারে সামনে বয়ে চলা নদীটা খুব বেশি সুন্দর লাগছে। চারপাশটা এতোটা সুন্দর করে সাজানো যে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে আমার। আমার সরাসরি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। কারণ সামনে একটা বড় বোর্ডে গোলাপ ফুল দিয়ে মোটা করে ইংলিশে লেখা আই লাভ ইউ। আমি সাথেসাথেই শক্ত হয়ে গেলাম। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে। উনি আমার দুই বাহু ধরে নিজের ধারে ঘুরিয়ে নিলেন। আমি স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে। উনি মুখে মুচকি হাসি ঝুলিয়ে বললেন,

— ” ইয়েস আই লাভ ইউ।কখন থেকে ভালোবাসি আমি জানি না। নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসি। আমি নিজেও জানিনা কেনো, কীভাবে ভালোবেসেছি তোকে। শুধু এটুকু জানি যে ভালোবাসি। তোর হাসি, রাগ, কেদে দেওয়া, মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকা, ভ্রু কুচকানো এইসবকিছু আমার নেশা হয়েগেছে। অন্যদের মতো উইল ইউ ম্যারি মি বলতে পারবোনা কারণ বিয়ে হয়ে গেছে। আর আই এম সরি জান আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে,, কিন্তু আজকের পর আর তোর চোখের কোনে পানি আসতে দিব না।
#তোর_শহরের_প্রেম,, আমাকে প্রেমে পরতে বাধ্য করেছে।

আয়াত যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা,,, আয়ান এইসব বলছে,, এটা কি সে আয়ান যে আয়াতকে দেখতে পারতো না?? আয়াত বলে

—- আপনি মজা করছেন?? আয়ান রেগে বলে

— তোকে সত্যি এখন মেরে নদীতে ফেলে দিব। যা বলছি তার উত্তর দে। আয়াত রেগে ভেংচি কেটে বলে

—- সুন্দর করে বলেন,, নয়তো হ্যা বলবো না৷ আয়ান দাড়িয়ে বলে

—- তোর হ্যা বা নাতে আমার কিছু যায় আসে না। এখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, তাই আর আশিক ওয়ারার মতো ঘুরতে হবে না। আয়াত রেগে বলে

—- হিটলার একটা।আর দৌড়। আয়ান বলে

—- তবে রে দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা। আয়াত দৌড়াতে দৌড়াতে ফার্মহাউসের ভিতরে চলে যায়। আয়ান নিজের কোট টা সোফায় ছুড়ে মারে আর টাইটা খুলে হাতা ঘুটিয়ে আয়াতকে খুজতে লাগে। আয়াতকে পায় আয়ান একটা রুমে,, আয়াত আয়ানের কাছে এসে গালে আলতো করে হাত রেখে বলে

—– ভাবতেও পারেনি আপনার থেকে এমন কিছু পাবো,,, আই লাভ ইউ। আয়ানও আয়াতকে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে

—- আই লাভ ইউ টু ( এবার ওরা ওদের মতো থাকুক,, কালকে আবার দেখা হবে )

________

চলবে

তার শহরের প্রেম পর্ব-১৩

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:13

আয়ান রুমে আসতেই আয়াত আয়ানকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগে৷ আয়াতকে এমন ক্ষেপে থাকতে দেখে আয়ান মনে মনে বলে

—– আল্লাহগো এই যাত্রা বউয়ের হাত থেকে শহীদ হওয়ার আগে বাচায় নাও জীবেন আর করতাম কি না এমন পরে ভাববো,,, কারণ ওকে জ্বালায়তে সেই ভালো লাগে। আয়াত খেয়াল করে দেখে আয়ান আলাদা জগৎই হয়তো কিছু ভাবছে!! আয়াত আয়ানের চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে

— এই যে,,মি. লম্বু কি ভাবছেন?? একা একা ঝগড়া করে কি মজা আছে?? আয়ান বলে

—- ভালো করে ঝগড়া করবি?? তাহলে আগে আমি তোকে ইচ্ছে মতো মেরে নেই তারপর!! আয়াত ভাব নিয়ে বলে

—- আমি আপনাকে পিটাবো,, কারণ আপনি আমাকে চিমটি কেটেছেন। আয়ান হালকা রেগে বলে

—- তুই অপূর্বের সাথে জায়গা বদলি করেছিস তাই। আয়াত কমড়ে হাত দিয়ে এক ভ্রু উচু করে বলে

—- এর আগে কি আমার হাতে কাঁকড়া কামড়াচ্ছিল? আয়ান একটা ডেবিল হাসি দিয়ে বলে

— হ্যা আবার কামড়াবে,, বলেই আয়াতকে চিমটি কাটে আয়াত রুমের এইদিক সেইদিক দৌড়াতে লাগে,, আয়ানও। একটা সময় দু’জন হাপিয়ে গেলে আয়ান বলে

—– ওয়েট একটু রেস্ট নিয়েনেই,,, যা আমার জন্য কফি নিয়ে আয়। আয়াত বলে

—- আমি কেন কফি বানাবো?? সামনেই তো ক্যাফে আছে!! সেখান থেকে খেয়ে আসুন আর আমাকেও খাওয়ান!! আয়ান ভেবে বলে

—- ওকে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে,,,, আমি নিচে গিয়ে সবাইকে বলছি,, আর ডিনার করে ফিরব। আয়ান চলে যায় আর আয়াত তৈরি হতে লাগে,,,,,,,, বেইবি পিংক কালারের শাড়ি,, গলায় একটা চেন,,, কানে সাদা পাথরের ঝুমকা,,, চোখে কাজল,, আর ঠোঁটে পিং লিপস্টিক,,,,হাইলাইট করা কমড় অব্দি চলুগুলো খোলা,,,, সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।

_________

আয়াত শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে নিচে নামছে,,আরেক হাতে ফোন, আর আয়াতকে দেখে একই সাথে একই সময় দুজনের চোখ আটকে যায়,,,, আয়ান কি মনে করে আয়াতের হাত ধরে সোজা রুমে নিয়ে আসে,,, আয়াত বলে

—- কি হচ্ছে!? আরে বাবা হলো টাকি!! নিচে সবাই একসাথে ওদের অপেক্ষা করছে। আয়ান আয়াত কে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দেয় আর একটা টিসু নিয়ে, আয়াতের ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দেয়,,, চোখের কাজলটাও হালকা করে দেয় আর চোখ মুখ শক্ত করে বলে

—- এভাবে এতো সাজার কি আছে? আমি ছাড়া কারো সামনে এভাবে যাবি না। কারণ তুই আমার স্ত্রী অন্য কারো না৷ আয়াতের চোখ দিয়ে পানি পরছে এটা দুঃখের না সুখের কারণ আয়াতের মতে আয়ান এই প্রথম তার উপর জোর খাটিয়েছে,, আয়াতকে কান্না করতে দেখে আয়ান বলে

—- এই কান্না করবি না,,, এখন চল। সবাই একসাথে রেস্টুরেন্টে চলে আসে।। কিন্তু আসার সময় আরিয়ান আর ইরা, আলভিরা, সাদী বাইকে করে আসে। আরিয়ান ইরাকে বলে

—- ধরে বসো নয়তে পরে যাবে। ইরা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেছিল।

—- সেটাই ভালো। আরিয়ান হঠাৎ করে ইরার এমন পরিবর্তনের কারণ খুজতে লাগে,, আর তারা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যায়। সাদী আর আলভিরাও বাইকে এসেছে ,,, আর হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়াতে আলভিরা খানিকটা ভিজে যায়। আয়ান সামনের ক্যাফেটাতে না গিয়ে বেস দূরে একটা রেস্টুরেন্টে আসে। সাদী বলে

—- এইরে আলভিরা তোর তো আটা ময়দা সব ধুয়ে মুছে গিয়েছে!! আলভিরা রেগে নিজের পার্স দিয়ে সাদীকে মেরে বলে

—- মূর্খ বালক,,, কুদ্দুস আলী এটকে আটা ময়দা না মেকাপ বলে মেকাপ,,,, আর এটা ওয়াটার প্রুফ। সাদী উপরে উঠতে উঠতে বললো

—- মেকাপ মাইখা যদি এত সুন্দর হয়ে গেলি,, তাহলে একটু খেতেও তো পারিস!! তাহলে তোর কালো মন, দিল, প্রাণটা সাদা হবে। আলভিরা বলে

—- তোমার মতো,,, উল্লুকের মতো ভাল্লুকের থেকে এরে চেয়ে বেশি আশা করা,, বৃথা। তখনই ইরা আলভিরাকে ডাকে। তাড়াতাড়ি করে উপরে উঠতে যায়। আরিয়ান সেদিকে এক পলক তাকিয়ে সেও নিজের মতো ফোন বের করে উপরে উঠতে লাগে আর বলে

—সাদী একটু ওয়েট কর।সাদী বলে

–আরিয়ান একটা জিনিস খেয়াল করেছিস এবার কিন্তু ইরা অনেকটা বদলে গেছে তোর সাথে তেমন কথা বলে না ইভেন তোকে এভয়েড করে চলে । আরিয়ান বলে

—ওকে আমি খুব ভাল করেই চিনি দুইদিন যেতে দে দেখিস আবার আগের রুপে ফিরে আসবে এখন হয়তো এভাবেই একটু এটিটিউড দেখাচ্ছে ব্যাপার না বাদ দে ওর কথা। সাদীও আর তেমন কথা বারায় না সোজা ওপরে চলে যায় যে দেখে সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। কিন্তু সবার মাঝে এক কোণে বসে আছে অপূর্ব আর ফোনের ভিতরে কি যেন করছে তার এই সবে কোন ইন্টারেস্ট নেই গিয়ে বসে পড়ে অপূর্বর পাশে।। সাদী বলে
.

— আজকাল খেয়াল করলে দেখি এসে আরিয়ান কিন্তু আয়াতের উপরে বেশ সেনসিটিভ হয়ে যাচ্ছে ।স্বাদের কথা শুনে আরিয়ান মুচকি হাসে আর অপূর্ব আর আয়াতের দিকে এক পলক তাকিয়ে দেখে দুজন ছবি তুলতে ব্যস্ত আয়াত কি যেন বলছে আয়ানকে আর মুচকি মুচকি হাসছে । আয়াত বলছে

—- আপনার পিক গুলো সেম মুফিজ মুফিজ লাগছে। আয়ান চোখ গুলো ছোট ছোট করে বলে

—– তোকে কিসের মতো লাগছে রাক্ষস রাণী কটকটি। তখনই আরবি বলে

—- এখানে এসেও ঝগড়া করবি?? আর একবার যদি ঝগড়া করেছিস তাহলে আমি বেরিয়ে যাবো। আয়াত আয়ানের হাত ধরে বলে

—- কি যে বলো না আপু,, এগুলো তো খুনশুটি,, ভালোবাসার খুনশুটি। শাকিল বলে

—- আগেও আমারও মনে হতো,, কিন্তু খুনশুটি থেকে যে কখন খুনাখুনি হবে বুঝতেও পারবে না। জেইনাব চোখ রাঙিয়ে বলে।

—- আজকে আর বেড রুমে জায়গা হবে না। ফাহাদ বলে

—- তোমাদের তো খুনাখুনি, আর খুনশুটি আর আমাকে তো শুটকি মাছের মতো রোদে শুকায়৷ ফহাদের কথা শুনে ফারিন বলে

—- আজকে তোমারও জায়গা হবে না। সাদী দূর থেকে বলে

—- আলহামদুলিল্লাহ আমার কোনো শাকচুন্নি নেই। আলভিরা বলে

—- তোমার কপালে রাক্ষসী আছে। সাদী বাকা হাসি দিয়ে বলে

— না সে আমার রূপকথা গল্পের রাজকুমারী। আলভিরা ভেংচি কেটে ছবি তোলায় মনোযোগ দেয়।

_______________

চারদিকে পিন পিন নিরবতা,,,, চেয়ারে বসে পাশে থাকা টেবিলে লাইট টা একবার ওন করছে আরেকবার ওফ করছে সেই অজানা ব্যক্তি। তখনই তার ফোনে একটা আনানোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসে মেসেজে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে লেখা আছে

—– আয়াত আর আয়ানের মাঝ থেকে সরে যাও,, নয়তো আমার আসল রূপ দেখবে তুমি,,,, আয়ানকে আয়াতকে নিয়ে সুখে থাকতে দাও,, নয়তো তোমার জীবনে আমি চলে আসলে তোমার সব ফ্রিডম শেষ। তখন না এই কুল থাকবে না ঐকুল,,, ।। মেসেজটা দেখা মাত্র সেই অজানা ব্যাক্তিটার ঘাম ঝরতে লাগে,,, তাড়াতাড়ি করে পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যার্থ,, শেষ না পেরে পানির গ্লাসটা জোরে চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলে হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে,,, কিভাবে জানলো??? না আয়াত আমার।

________

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেতে খাবার টেবিলে বসে আয়াত অবাক, কারণ আরিয়ান আর সাদীর হাতে বেন্ডেজ করা,,, অপূর্বের হাতেও। আয়াত আরিয়ানকে বলে

—- হাতে কি হয়েছে??ইরাও আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে,, অসহায় দৃষ্টিতে,,, কারণ সে যতযাই করুক তাকে লাভ তো করে আরিয়ানের কষ্টতে তারও কষ্ট হচ্ছে। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে

—- কিছু না ব্যাথা পেয়েছি,, বাইক রেস করতে গিয়ে।

সাদী কিছু না বলেই খাবারের টেবিল ছেড়ে উঠে যায়। অপূর্ব চুপচাপ খাচ্ছে,,, আয়াত বলে

—- অপূর্ব ভাইয়া তুমি?? অপূর্ব বলে

—- জানিনা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম আর থামাতে বেলেন্স করতে গিয়ে এমন হয়েছে আর আরবি তো হাতের বেন্ডেজ করে দিয়েছে। আরবি খাওয়া ছেড়ে একবার আয়ানের দিকে তাকায় আরেকবার অপূর্বের দিকে,, অপূর্ব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাচ্ছে আর আয়াত রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অপূর্বের দিকে

চলবে৷

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে,,রিচেক করতে পারিনি। 🥰🥰

তার শহরের প্রেম পর্ব-১২

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:12

ছাঁদের দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আয়াত আর একটু দূরেই দাড়িয়ে আয়ান,, চোখ মুখে দুষ্ট হাসি,,, হাত ভরতি রঙ। আয়াত এখন পিছাতেও পারছে না আর আগাতেও না৷ আয়ান ঠোঁট কামড়ে এক ভ্রু উচু করে হাসি দিয়ে বলে

—- জানেমান এখন কথায় পালাবা। সবার হাত থেকে তো পালিয়ে এসেছিলে এখন?? আয়াত একটা শুকনো ঢুক গিলে বলে

—- দেখুন,, আম,,,আমার এই রঙ খেলায় কেনো রকম ইচ্ছে নেই,, তো আপনি খেলুন ওদের সাথে নিচে অনেকে আছে। আয়ান একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে বলে

—- নো বেইবি আমি আমার বউ এর সাথে রঙ খেলব। বলেই আয়াতের গালে রঙ মেখে দেয়। আয়াত রেগে তেরে আসলে। আয়ান দৌড়ে নিচে নামতে লাগে,, সাথে আয়াতও। আজ সবাই মিলে রঙ খেলছে কারণ আজ অপূর্ব ছোট বোন আর বাড়ির সবার চোখের মনি ইরা আসছে। তারই আসার আয়োজন। আর আয়াত এইসব থেকে বাচার জন্য ছাঁদে এসে বসেছিল,, কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো কই? আয়ান এসে ঠিকই রঙ লাগিয়ে দিয়েছে। আয়ান দৌড়াচ্ছে আর বলছে

—- তোর মতো ডোরেমন আমাকে ধরতে পারবে? আয়াত রেগে নাক ফুলিয়ে বলে

—- তাল গাছের মতো লম্বা আপনি,,, পা গুলে এতো বড় বড় তো ধরব কি ভাবে? একটু ধীর গতিতে দৌড়ালে কি হয়। আয়ান সোজা দৌড় দিয়ে গার্ডেনে চলে যায়। আয়াতও আসে আর সাথে সাথে আয়ান আয়াতের দিকে রঙ ছুড়ে মারে। আয়াতও কমনা নিজের পা এগিয়ে দেয় আর লেং মেরে আয়ানকে নিচে ফেলে দেয় ,,,,, আয়ান নিচে পরে যায় তা দেখে আয়াত হাহা করে হাসতে লাগে। আয়ান নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে

—- ফাজিল মেয়ে উঠা আমাকে।। আয়াত হাতটা এগিয়ে দিয়ে আবার ফিরিয়ে নিয়ে বলে

—- সময় নেই। আয়াত চলে যেতে চাইলে আয়ান আয়াতের উড়না ধরে বলে

—- বউগো আমাকে উঠাও না। খুব ব্যাথা পেয়েছি। আয়াত ও নিজের হাত বাড়িয়ে দেয় আয়ান উঠে দাড়িয়ে বলে

—- এখন তোর কি হবে?

আয়াত দৌড় আয়াতকে আর পায়কে। আয়ান আর আয়াত মেতে উঠেছে রঙ খেলায়,,,, অন্য দিকে আরেকজন রাগে ফুসছে।।।।।

হঠাৎ ভিরের মাঝে কে যেন আয়াতকে রঙ লাগিয়ে দেয়। আয়াত সেটা কে বুঝে উঠার আগেই আলভিরা পিছন থেকে বলে

—- আমাদের ইরা বতি,,,, আর সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে ইরাকে নিয়ে। ইরার সবার সাথে কথা বললেও,,, আরিয়ানের সাথে কথা বলে না,,,, ইরা বরাবরই আরিয়ানকে লাইক করে কিন্তু আরিয়ান ইরাকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু এইবার আরিয়ান ইগনোর করার আগেই ইরা আরিয়ানকে ইগনোর করছে। তাতে অবশ্য আরিয়ানের কিছু যায় আসে কি না বুঝা যাচ্ছে না।

___________

অপর দিকে আয়াত সেই কখন থেকে ওয়াশরুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে,, আয়ান বের হলেই সে শাওয়ার নিতে যাবে। আরিয়ান দরজাটা হালকা ফাক করে বলে

—- আয়াত তোয়ালেটা দেতো নিতে ভুলে গিয়েছে। আয়াত বিরক্ত হয়েই তোয়ালেটা এগিয়ে দেয় আয়ানের দিকে। কিন্তু তার আগেই আয়ান আয়াতের হাত ধরে টান দিয়ে ভিতরে নিয়ে আসে। হঠাৎ এমন করাতে আয়াত ঘাবড়ে যায়। ঝরনার পানিতে দুজনে ভিজে একাকার,,,, আয়াত বার বার চোখের পলক ফেলছে,, কারণ পানির গতি অনেক। তা দেখে আয়ান মুচকি হাসি দিয়ে আয়াতের চোখে দুটো চুমু দেয়। আয়াতের সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কখনো খুব কেয়ার করে কখনো আবার খুব করে বকে। আয়ান আয়াতের দিকে তাকিয়ে বলে

—- শাওয়ার নিয়ে আসো। আর আমি রুমে চেন্ঞ্জ করে নিচ্ছি। বলেই চলে যায়। আয়াত এখনো সেই আগের জায়গায় দাড়িয়ে আছে। আয়ান দরজায় নক কর বলে

—- ফাস্ট । আয়াতের হুশ আসতেই দরজটা আটকে শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসে। আয়ান রুমে নেই হয়তো নিচে। আয়াত বেলকনিতে গিয়ে দেখে,, আরিয়ান আর আয়ান কোনো ব্যাপার নিয়ে কথা বলছে। আয়ান পরেছে হুয়াইট শার্ট হাতা গুলো কনুই অব্দি উঠানো,,,,, আর কালো পেন্ট,,, আরিয়ানও কম কিসে ইস্কাই ব্লু কালারের শার্ট আর হুয়াই পেন্টে। আসলে বাগান পরিষ্কার করা হচ্ছে,, রঙ খেলায় বাজে অবস্থা তখনই ইরা আসে আয়াতের রুমে আর ভাওও করে আয়াতকে ভয় পায়িয়ে দেয়। আয়াত রেগে ইরার কান ধরে বলে

—- জীবনে ভালো হবি না। ইরা ঠোঁট উল্টে বলে

—- আহহ আয়ত আপুই লাগছে তো ছাড়োনা। আয়াত ছেড়ে দেয় পরে দু’জন ইচ্ছে মতো গল্প করে। কিন্তু এতটুকু সময় অপূর্বের দেখা একবারও মেলেনি। অন্য দিকে নিজের রুম থেকে বের হচ্ছে আলভিরা,, বের হতে না হতেই আরেক জনের সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে চাইলে তাকে সে ধরে ফেলে। সাদী ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো

—- তোর জন্য চশমা কিনতে হবে,, কখনো পানিতে পরিস আবার কখনো শুকনো জায়গায়। আলভিরা সোজা হয়ে দাড়িয়ে বলে

—- আর আমার গল্পে হিরোর মতো এন্ট্রি নাও তুমি,, এটা তোমার প্লানিং!! সাদী বলে

— গল্পের ভিলেন আমি,,এই নে তোর পায়েল,,, রঙ খেলার সময় খুলে গিয়েছিল। আর আমার সব বিগ বি গুলো কই? অপূর্ব ভাইয়া আয়ান ভাইয়া আরিয়ান একজন কেও তো দেখছি না। আলভিরা পায়েলটা নিয়ে বলে

—- আমি জানি না,, আরবি আপুকে জিজ্ঞেস কর গিয়ে। কিচেনে আছে। সাদী আলভিরার চুল টান দিয়ে চলে যায়। আলভিরা রেগে বলে

—- বিগ বির কাছে বলে দিব৷ সাদী বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—- বিবি আমাকে কিছু বলবে না আর করতেও পারবে না। নিচে আয় একটু পর সবাই খেতে বসবে।

_________

সবাই একসাথে খাচ্ছে আর গল্প করছে কিন্তু এইসবের মাঝে আয়াত পরেছে বিপদে,, আয়ান এক হাত দিয়ে খাচ্ছে আরেক হাত দিয়ে মাঝে মাঝে আয়াতের হাতে চিমটি দিচ্ছে। আয়াত না পারছে সহ্য করতে না পারছে কিছু বলতে । তখনই অপূর্ব বলে

—- আয়াত তোমার সমস্যা হলে তুমি আমার জায়গায় এসে বসো। আর আমি না হয়। আয়াত রাজি হয়ে যায়,,, আয়ান একবার আয়াতের দিকে তাকিয়ে বেস জুড়েই চিমটি দেয়। আয়াত বেচার আম্মু বলে চেচিয়ে উঠে।। তা দেখে সবাই বলে

—- কি হয়েছে কি হয়েছে?? আয়াত পরিস্থিতি সামাল দিতে বলে

—- মাছের ঝুলটা যা হয়েছে না,, আরেক পিছ। আয়ান মিট মিট করে হাসছে। একটু পরই অপূর্ব এসে বসে পরে আরবি আর আয়ানের মাঝে,,, আর আয়াত গিয়ে বসে পরে আরিয়ানের পাশে মানে অপূর্বের জায়গায়। পাশেই আলভিরা আর সাদী বসা। আয়াতের মা আয়াতের প্লেটে মাছ দিতে দিতে বলে

—- সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে!! আলভিরা শশা খেতে খেতে বলে

—- সামনাসামনি। আয়ানকে উদ্দেশ্য করে। সাদী আলভিরার মাথায় হলাকা থাপ্পড় দিয়ে বলে

—- সূর্য উত্তর দিকে উঠে গাঁধা,,, পূর্ব দিকে উঠে। আলভিরা এক রকম কেঁদে দেয় আর বলে

—- আমি আয়ান ভাইয়ার কথা বলছি,,, তুমি না দেখালা আয়ান ভাইয়া আয়াত আপুর হাতে চিমটি কাটছিল। আর সবাই একসাথে হেসে দেয়,, শুধু একজন ছাড়া। আয়াত বেচারির গলায় খাবার আটকে যায় ।৷ আরিয়ান তাড়াতাড়ি করে পানি এগিয়ে দেয়,, আর সাদী রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আলভিরার দিকে। আয়াত পানি খেয়ে বলে

— আমার খাওয়া শেষ,, আর সোজা রুমে দৌড়। আয়ান বেচারার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে বেচারও বলে

—- আমার খাওয়াও শেষ। আর আয়ানও দৌড়। আয়ান যেতেই সবাই হাসিতে ফেটে পরে। ইরার হাসতে হাসতে প্রায় অবস্থা খারাপ তাই সে সামনের থাকা গ্লাসটার দিকে হাত বারায় পানি খাওয়ার জন্য, আর আরিয়ানও। কিন্তু আরিয়ান গ্লাসের বদলি ইরার হাত ধরে

চলবে।

তার শহরের প্রেম পর্ব-১১

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:11

কলেজ শেষে একটার পর একটা ফুচকা খাচ্ছে, আয়াত আর আলভিরা। অন্য দিকে আরিয়ান ওদের খাওয়া দেখছে। হঠাৎ করেই একটা বাচ্চা এসে আয়াতের হাতে একটা লাল চিরকুট আর একটা গোলাপ ফুল দিয়ে যায়। আয়াত বলে

—- বাবু এটা তোমাকে কি দিতে বলেছে? বাবুটা ইশারা করে বুঝায় সে কথা বলতে পারে না আর দৌড়ে চলে যায়। আরিয়ান বলে

—- এটা আবার কোন নতুন আপদ!! দেখি আমাকে দাও। আয়াত চিরকুটা আরিয়ানের কাছে দেয় আরিয়ান পড়ে দেখে তাতে লেখা

—– সৌন্দর্যের পরিপূর্ণ সম্ভার বললেও হবে না ভুল,

যেমন সুন্দর তোমার মাথার ঘন কালো চুল,

তেমনই তোমার টিয়া পাখীর মত লাল ঠোঁট অনন্য,

একেবারে পাগল আমি তোমাকে পাবার জন্য!

অপ্সরার রানি রম্ভার মত গায়ের রং তোমার,

তুলার মত নরম কোমল গালে থাকবে স্পর্শ আমার,

এমনই সাধ জাগে মনের মাঝে,

সকাল দুপুর কিংবা সাঁঝে!

বিধাতার বিশেষ সৃষ্টি তুমি,

তোমার মন জয় করে ছাড়বই আমি♥️♥️ চিরকুটের লেখাটা শুনে হুহু করে হাসতে লাগে,, আলভিরা আর আয়াত।। আরয়িন বলে

—- হায় দিন দুপুরের আয়াত তোমার জন্য নতুন প্রেমিক তৈরি হয়েছে,, এবার তুমি সমালাও। বলেই হাসতে লাগে। আয়াত ফুচকা চিবুতে চিবুতে বলে

—- পুরান পাগলের ভাত নাই,, নতুন পাগলের আমদানি,, ডিপলি ভাবা যায় এগুলো??!! কোথায় থেকে আসে এরা!! আলভিরা বলে

—- ভাবি আমি শিহরিত,,, । কিন্তু আয়ান ভাইয়াকে জ্বালানো যাবে। আজ কালতো সে আবার তার বউকে চোখে হারায়। আয়াত রেগে সে ফুচকাটা খেতে খেতে বলে

—– কচু চিন? ঐ কচু। আরিয়ান চিরকুটটা আয়াতের দিকে এগিয়ে দেয় আর বলে

—- না আজকাল তো তাই দেখছি। তা এটার কি করবে?? আয়াত বলে

— কি আর? ডাস্টবিনে জায়গা হবে। বলেই চিরকুট টা ছিড়ে ফেলে দেয়। আর তিনজনই বেরিয়ে পরে আয়াতদের বাসার উদ্দেশ্য। চারদিকে যাক যমক,,, বাড়ি ঘর সাজাতে মেতে উঠেছে সবাই। এতো সাজ সজ্জা কেন? আয়াত সাদীকে জিজ্ঞেস করে

—- এই সাদী এতো সাজসজ্জা কেন? সাদী আয়াতের গাল টেনে বলে

—- তোর অপূর্ব ভাইয়া আসছে,,,।

অপূর্ব ভাইয়া নামটা শুনেই খুশিতে গদগদ হয়ে উঠি,,, অপূর্ব ভাইয়া হচ্ছে আমার বাবার,,,চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মানে আমার ভাই লাগে। আগে প্রায় আসতো কিন্তু বিয়ের পর আর দেখা হয়নি৷ আরিফা আপুর বিয়ের ১ মাস আগে বলে ছিল দেখিস আরিফার পরেই তোর বিয়ে। আমাকে অনেক আদর করে।। খুশি মনে বাসায় চলে আসাল আয়াত।

_________

বিকেলে অফিস থেকে ফিরে আয়ান দেখে আয়াত আর সবাই একসাথে খুশিতে মেতে উঠেছে,,, আর আয়াতের সাথে বসে আছে অপূর্ব। অপূর্বর সাথে আয়ানের সম্পর্কটা সাপ নেয়ুলের মতো। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। কারণ সেটা অজানা৷ (পরে জানতে পারবে) আয়ান আয়াতকে ডাকে আর বলে

—- আয়াত উপরে আসো।অপূর্ব বাঁকা হাসি দেয় আর বলে

—- হেই বিগ বি,,, কেমন আছো? আয়ান বলে

—- আলহামদুলিল্লাহ,, আয়াত জলদি রুমে আসো।

আয়াতকে সবাই পিন্ঞ্চ মেরে বলে যাও যাও। কিন্তু সব কিছুর পরও অপূর্বের চোখ জোরা সবার আড়ালে গিয়ে আটকে আছে একজনের দিকে। আয়াত রুমে এসে দেখে আয়ান টাই খুলছে চোখ মুখে ভয়ংকর রাগ। আয়াত মনে মনে বলে

—- আয়াতরে কেটে পর কেটে পর,, যেই ভাবা সেই কাজ কিন্তু তার আগেই আয়ান আয়াতের হাত ধরে দরজটা লাগিয়ে দেয় আর আয়াতের দুই হাত চেপে ধরে বলে

—- ফাস্ট আর লাস্ট বারের মতো বলছি,, অপূর্বের থেকে দূরে থাকবি, তোর ,, আশেপাশেও যেন ওকে না দেখি। আমি একটু সাহস জুগিয়ে বলি

— কেন অপূর্ব ভাইয়া কি!!? আয়ান রেগে দেওয়ালে পান্ঞ্চ মারে বলে

—- না মানে না। এর উপরে কোনো কথা চাই না। আয়ান রাগের বসে সেই কাটা হাত দিয়ে দেওয়ালে মেরেছে ফলে হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আয়াত রেগে গিয়ে আয়ানের হাত ধরে বলে

—- সবসময় ফালতু রাগ আর জিদ আপনার,, রাগের বসে তো আপনারই ক্ষতি হয়েছে,, ব্যাথা করছে না, আমি এখনই ।।।। বলে আয়াত যেতে চাইলে আয়ান আয়াতের হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর জাড়িয়ে ধরে। আয়াত রেগে অনেক কথা বলছে কিন্তু সেদিকে আয়ানের খেয়াল নেই। আয়ান মনে মনে বলে

—- অপূর্ব থেকে তোর দূরে থাকতে হবে,, কারণ অপূর্ব মনে করে তার থেকে তার প্রিয় মানুষটাকে দূরে আমি সরিয়েছি,, কিন্তু না সব ছিল ভাগ্যের লেখা৷ আই এম সরি অপূর্ব,, এতে আমার কোন ভুল ছিল না। আর আমি আমার আয়াতকে কোথাও যেতে দিব না। আয়াত আমার আছে আমারই থাকবে। আয়াত নিজেকে আয়ানের থেকে ছাড়িয়ে আবার হাতে বেন্ডেজ করে দেয়।

________

রাতে শুয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আয়াত। তখনই আয়ান এসে বলে

—- তোর পড়া শেষ? নাকি শুধু কলেজই যাস। আর আসিস। আয়াত রাগী চোখে তাকিয়ে বলে

—- রাত ১২টা অব্দি বাইরে থাকলে দেখবেন কি করে? তখনই অপূর্ব দরজায় করা নারে। আয়াত দরজা খুলে বলে

—- তুমি এখানে? কিছু লাগবে ভাইয়া?? অপূর্ব বলে

—- সবাই একসাথে উপরে গল্প করছে তুই আর আয়ানও আয়। আয়াত বলে

— সে মাত্র বাইরে থেকে এসেছে তুমি যাও আমরা আসছি। আয়ান ভেবে দেখে এখন যদি সে বারণ করে তাহলে খারাপ দেখায় তাই বলে

—- আয়াত তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। আয়াত মনে মন বলে

—- সবার সামনে তুমি আর একা তুই,, হারামি। আয়াত আর অপূর্ব কথা বলতে বলতে চলে যায়। আয়ান ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হতে যাবে তখনই কিছু তরল জাতীয় জিনিসের উপর স্লিপ করে। কিন্তু বেলেন্স করে নেয়। সামনে তাকাতেই দেখে একটা কাচের গ্লাস ভাঙা,, আর নিচে জুস৷। এইরে একটুর জন্য কাচের উপর পরত। তখনই আয়ান একটা সার্ভেন্টকে ডাকে আর বলে

—- এগুলো একটু দেখে শুনে করবেন,, একটু হলেই তো। সার্ভেন্ট টা বলে

—- সরি,,, স্যার মাফ করবেন। কিছু সময় আগেই তো একজন উপরে জুস দিয়ে এসেছে তখন হয়তো। আমি পররিষ্কার করে দিচ্ছি। আয়ান পাশ কাটিয়ে চলে আসে ছাঁদে। তারপর শুরুহয় তাদের আড্ডা। আয়াত বলে

—- আমার সাথে একটু কেউ নিচে কিচেনে চলো না,, পানি খাবো,, এখানে তো সব,, আয়ান বলে

—- চলো,,, আর সবাইকে গুড নাইট
কালকে আয়াতের কলেজ আছে, আলভিরা ঘুমাতে যা আরবি তুইও,, আর আরিয়ান তো কিছু সময় আগেই বাসার উদ্দেশ্য বের হয়েছে একটা কল দিয়ে৷ তখনই আরিয়ানের মেসেজ আসে সে ঠিক মতো বাসায় পৌঁছে গিয়েছে আর তার দিদুন নাকি আর তিনদিন পর আসবে৷ আয়াত নিচে নামতে নামতে বলে

—- আচ্ছা আপনি এমন হঠাৎ বদলে গেলেন কিভাবে? এতো ভালো ব্যবহার৷ আয়ান রাগী কন্ঠে বলে

—- কেন বাজে ব্যবহারটাই কি ঠিক? আসলে আমারই ভুল,,,বেশি মাথায় তুলে ফেলেছি। আয়াত চুপ হয়ে যায় আর মনে মনে বলে

—- ঠিকইতো হয়তো সিমপ্যাথি দেখাচ্ছে এর বেশি কিছু না। নিজের বেহায়া মনটাকে ইচ্ছে মতো বকে
_______

অপর দিকে অজানা ব্যক্তিটা রেগে একাকার। আয়ান কিভাবে বেঁচে গেলো?

——৷ আহহহহহহহ,,, আয়ান,,, আয়ান,, আয়ান। কি এমন আছে ওর মাঝে যা আমার মাঝে নেই। আয়াত আমার আর ওকে খুব জলদি আমার করে নিব,, মাঝপথে বাঁধা শুধু আয়ান। আর আয়ান আই এম সরি BB,,,, তোমাকে সরতে হবে। ৪দিন পরই তো আহমেদ বাড়িতে উৎসব। আর সেটাই হবে আমার আয়ানকে পথ থেকে সরানোর আসল দিন। এই চোর পুলিশের খেলা আর না এবার সামনা সামনি খেলা হবে। বলেই বাঁকা হাসি দেয়। আর হাতে থাকা ছুড়িটা ছুড়ে মারে আয়াত আর আয়ানের বিয়ের ছবি বরাবর।

চলবে।

তার শহরের প্রেম পর্ব-১০

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:10

সকালের মিষ্টি সোনালী রোদ্দুর চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে যায় আয়ানের। আয়ান তাকিয়ে দেখে তার বুকে মুখ গুজে শুয়ে আছে আয়াত। আয়ান আজ আর সেইদিনের মতো আয়াতকে বালিশে শুয়িয়ে দেয়নি,,, খুব যত্নে আবার তার বাহুডোরে আবদ্ধ করে কোপালে একটা চুমু দিয়ে চোখ বুঝে নেয়। আর সাথে সাথে আয়াত চোখ মেলে তাকায়। আর দেখে তাকে আয়ান খুব শক্ত করে ধরে আছে। আয়াত আয়ানের বাহুডোর থেকে বের হতে চাইলে,, আয়ান আরো শক্ত করে ধরে রাখে। আয়াত কিছু বলতেও পারছে না। কারণ তার মতে যদি আয়ান জেগে তাহলে আবার নতুন কাহিনী শুরু করবে। ধূর এখন কি হবে,,,, । একসময় আয়াতকে আয়ান ছেড়ে দেয়,, আয়াত তাড়াতাড়ি করে উঠে চলে যায় ফ্রেশ হতে।
আয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—– বউ তুমি এতো কিউট কেন? প্রায় ২০ মিনিট পর আয়াত বের হয় শাওয়ার নিয়ে,,,,, সাদার মধ্যে লাল রংরে সুতোয় ফুলের কাজ করা। চুলগুলো থেকে টুপ টুপ পানি পরছে,, আয়ান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়াতের দিকে,, তা দেখে আয়াত সোজা বেলকনিতে চলে যায়। কারণ তার অস্তিত্ব লাগছে। আয়ানও তোওয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে,, আয়াত বিছানা ঠিক করছে। আয়ান তোয়ালেটা সোফার উপর ফেলে চলে যায় বেলকনিতে আর একটা সিগারেট ধরায়। প্রায় ২/৩ দিন যাবৎ সিগারেট খাওয়া হয়নি৷ তাই সিগারেট টানছে। আয়াত রেগে এসে হাত থেকে সিগারেট টা নিয়ে ফেলে দিয়ে আর ভিজা তোয়ালেটা হাত ধরিয়ে বলে

—- এটা আমার রুম কোনো গরু ছাগলের না!!! আর শুনেন এই ছাইপাঁশ খাওয়াটা বন্ধ করুন ,, এট লিস্ট আমার সামনে না। আর রুমের কি অবস্থা করেছেন কালকের জামা কাপড় সোফায় পরে আছে জান সেগুলো গুছান। আয়ান অসহায় ফেস নিয়ে বলে

—- বউগো আমার সোনা বউ লক্ষ্মী বউ,, আমি কি সেগুলো পারি বলো? আয়াত দাঁত চেপে চেপে বলে

—- না পারলে আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসুন,,, যা বলছি তাড়াতাড়ি করুন,, নয়তো আপনার এই সরংজাম নিয়ে আমার রুম থেকে বের হন। আয়ান বলে

—- একটাই ধনে লঙ্কা,, আরকেটা বিয়ে করলে তো আমি খতম। আল্লাহ এখন বউয়ের জন্য ঘর গুছাতে হবে। এই আয়াত না করলে হয় না? আয়াত একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে

—- হয় তো ঐ যে দরজা বেরিয়ে জান। আয়ান রেগে তোয়ালেটা শুকাতে দিয়ে নিজের জামা কাপড় ঠিক করতে লাগে। আয়াত তা দেখে বেস মজা পাচ্ছে। আয়াতের নজর যায় গার্ডেনের দিকে। পর পর দুইটা গাড়ি বাসার ভিতরে ডুকছে। একটা থেকে জেনইনাব, ফারিন, ফাহাদ (ফারিনে হাসবেন্ড), আর শাকিল (জেইনাবের).। পরের গাড়িটা থেকে নেমে আসে,, আরিয়ান,আরবি আর আলভিরা। সবাইকে দেখে আয়াত খুশি হয়ে যায়। আয়ান তখন রুম থেকে বলে

—- হয়েগেছে। আয়াত রুমে এসে দেখে সব সুন্দর করে নিজের কাজ করেছে আয়ান। আয়াত বলে

—–এখন নিচে চলুন,, সকালের নাশতা করবেন। আয়ান নিচে গিয়ে দেখে সবাই একসাথে,,,, সেটা অবশ্য কালকেই জানতো সে। সকালের নাশতা সবাই আজ এক সাথে করবে তাই আর আয়ান আয়াতকে ডাকে নেই কেউ। খাওয়া শেষে সবাই একসাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল ,, কিন্তু আয়াত চুপচাপ।।।।। তা দেখে সাদী বলে

—- কি রে আজ এতা চুপচাপ? আয়াত বলে

—- তো কি করব?? জেইনাব বলে

—- তা আয়ান হানিমুনে কোথায় যাবি?? আয়ান বলে

— এক বোতল হানি আর একটা কৃত্রিম মুন কিনে আনব,, হয়ে গেলো হানিমুন। সবাই একসাথে হুহ করে হেসে দেয়। আরবি বলে

—- সুইজারল্যান্ডের যা। আলভিরা বলে

— ইন্ডিয়া গিয়ে তাজমহল দেখে আসো। আয়ান ঠোঁট উল্টে বলে

—- যার হানিমুন তার হুশ নাই আর তোদের চোখে ঘুম নাই। আয়াত বলে

—- তোমরা চুপ করবে!! আর আরয়িনা কোথায়? সাদী বলে

—- গার্ডেনে,,, ফোনে কথা বলছে,, কেন? আয়াত বলে

— নাহ এমনি।

তারপর সবাই ঠিক করলো বিকেলে ঘুরতে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। একটা গাঢ়ো নীল রঙের শাড়ি পরেছে আয়াত সাথে চুলগুলো খুলা,, সাজ বলতে চোখে কাজল আর তেমন কিছু না। সেই সাজই যে কারো দিল ঘায়েল করতে পারে। সবাই একসাথে ঘুরতে গিয়েছে নদীর পারে। আয়ান আয়াতের হাত ধরে হাটছে আর গল্প করছে সবার সাথে। কিন্তু তখনই আলভিরা কিভাবে যেন পানিতে পরে যায়। আর সেটা দেখে সাথে সাথে পানিতে ঝাপ দেয় সাদী। আলভিরার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে,, আর উপরে চলে আসে। আলভিরা বেশ পানি খেয়ে নিয়েছে,, তাই কুহু কুহু করে কাশতে লাগে । সবাই ব্যাস্ত হয়ে যায় আলভিরাকে নিয়ে। আয়ান জিজ্ঞেস করে

—- তুই পরলি কিভাবে? আলভিরা বলে

—- আমাকে কে যেন ধাক্কা দিয়েছে। আরিয়ান রেগে বলে

—- তোর সবসময় লাফালাফি,, এখন নিজে দোষ করে অন্যের নাম দিচ্ছিস? তোকে কে ধাক্কা দিবে?? আরবি বলে

—- আহহ বদা দে না,, ও ঠিক আছে এটাই অনেক আর সাদী তোকে ধন্যবাদ। এখন বাসায় যাওয়া যাক। দুজনেই কাক ভিজা হয়ে গিয়েছিস। আয়ান বলে

—- তাই ভালো হবে। সবাই বাসায় চলে আসে।

________

অন্ধকার রুমে আর গুন গুন করে গান গাইছে সেই ব্যক্তি।।।

—- Hame tumse peyar kitna yea ham nhi jante.. আমার তোমাকে চাই আয়াত তাইতো তোমাকে আয়ানের থেকে আলাদা করতে হলে যা দরকার সব করব,, সরি মাই সুইটি আলভিরা,,,আই এম রিয়েলি সরি বেইবি,,,,, আমার ইচ্ছে ছিল না তোমাকে পানিতে ফেলার,, কিন্তু আয়ান আর আয়াতকে যে আমার এক সাথে সহ্য হচ্ছিল না ।।।।।।। তারপর সে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।

__________।

সবাই ছাঁদে বসে আড্ডায় মতে উঠেছে। আর আয়াত ফোন নিয়ে ব্যাস্ত,,, আরিয়ান কোলডিংক্স হাতে ছাঁদে আসছে আর আয়ান সাদী বারবিকিউ কাজে বিজি। আয়ান হুট করে এসে আয়াতের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নেয় আর বলে

—- বউ তুমি ফোনে এতো কি কর? সবার সাথে গল্প কর। নয়তো চোখে বড় বড় দুইটা চশমা লাগবে। আয়াত ছু মেরে আয়ানের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বলে

—- নিজের চরকায় তেল ব্রাশ করুন,, নয়তো সম্পূর্ণ ঢেলে দেন। আর আমার থেকে দূরে থাকুন। আরবি গান ধরে

— তুমি দূরে দূরে থেকো না। আর সবাই হেসে দেয়,, আলভিরা বলে

—- ভাইয়া একটা গান গাউনা ভাবির জন্য!!! আয়াত বলে

—- আমার জন্য আবার গান?? সাদী বলে

—- এখনই গিটার নিয়ে আসছি। আয়াত তাচ্ছিল্যের সুরে বলে

—- কারো জন্য গান গাইতে হলে ফিলিংস এর প্রয়োজন হয়। যেটা ওনার মাঝে নেই। আয়ান শুধু বাকা হাসি দিয়ে বলে

—- ফিলিংস আল্লায় ঢাইলা দিছে এখন জাস্ট তোমাকে দেখামু বউ। আর সাদীও হাজির। আয়ান গিটার হাতে নিয়ে গান গাইতে লাগে

—বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনা,
বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা আমারে,
বোঝেনা বোঝেনা,বোঝেনা আমারে,

জিবন পুরা বদলে গেলো ছিলো যেসব অগোছালো,
শিখছি আমি নতুন করে বউয়ের চাপে ঘর গোছানো,

(আয়ানের সাথে তাল মিলিয়ে শাকিল গায়)

ঝাড়ু দেয়া ভেজা তাওয়াল,, এই অভ্যাস ভাল্লাগেনা,

যে চোখে তার মায়ায় ছিলো আজ আমাকেই ভাল্লাগেনা, ( তার পরের লাইন ফাহাদ হায়)

(আয়ান আয়াতের দিকে তাকিয়ে আবার গান ধরে)

তবে কোথায় হারালো সেই প্রেমঅনুভুতি জোয়ার মায়া তোমার আমার,
অভিমানে ঢাকা পড়ে গেছি লাগে বেশি বেশি যখন কাছে আসি,

( তখন সাদী ও তাল মিলায়)
আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে,

(সব ছেলেরা এক সাথে গাইতে লাগে)বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনারে,বোঝেনা বোঝেনা,বোঝেনা বোঝেনা আমারে,
বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনারে, (বকিটা নিজ দায়িত্ব শুনে নিয়) আয়াত, জেইনাব, আর ফারিন তো গান শুনে অবাক।। আর বাকি সবাই মজা নিচ্ছে।

চলবে??

ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে,, রিচেক করতে পারিনি।

তার শহরের প্রেম পর্ব-০৯

0

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:09

এক হাতে বিয়ারের বোতল আরেক হাতে ফোনের স্কিনে হাস্যজ্জ্বল এক যুবতীর ছবি,,, জ্বল জ্বল করছে।৷ ছবিটা আর কারো না আয়াতের,,, ব্যক্তিটার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরছে নুনা জল। ব্যক্তিটা নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না,, তাই আয়াতের ছবিটায় চুমু খেয়ে বলে

—- আমি জানি তুমি এখন আয়ানের,, তাও কেন তোমার উপর আমি এতো দূর্বল,,, জানতো খুব ইচ্ছে ছিল তুমি বউ সাজবে,, লাল লেহেঙ্গা ভারি গহনা,, বউ বউ সাজ,, তুমিতো সাজলে ঠিকই কিন্তু আমার জন্য না অন্য কারো জন্য,, অনেক চেষ্টা করেছি আর পারব না। আমার তোমাকে চাই এট এনি কস্ট,,, বলেই চমুক দেয়,,,,,,,,

অপর দিকে আয়াত ভাবছে সে কালকে সকালেই চলে যাবে,,, কলেজ শেষে সেখান থেকে সোজা নিজ বাসায়,,,,

অন্য দিকে আয়ান ভাবছে খুব জলদি সব কিছু ঠিক করে,, আয়াতকে তার কাছে নিয়ে আসবে।।।। কালকে কলেজ শেষে এক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাবে,, আয়াতকে তার জন্য তার আরিয়ান আর আলভিরার হেল্প লাগবে।। আলভিরা জানে কিন্তু আরিয়ানকে এখনো বলতে পারেনি,,, সে তাদের বন্ধুদের সাথে বেরিয়েছে। ফিরতে বেশ রাত হবে।

___________

আমাদের এই ব্যাস্ততম জীবনে সকালই হলো এমন একটা বিশেষ এবং শান্তি পূর্ণ সময় যখন আমরা কিছু নতুন আশা ও লক্ষ নিয়ে জীবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি। প্রতিটি সকাল আমাদের জীবনকে নতুন ভাবে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটায়। আয়াত ঘুম থেকে উঠে বসে,, তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই একটা সার্ভেন্ট এসে আয়াতের হাতে একটা ঝুড়ি ধরিয়ে দিয়ে বলে

—- ম্যাম এটা আপনার জন্য।

আয়াত ভাবে তাকে আবার কে কি দিল!! ঝুড়িটা খুলে দেখে একটা পিংক কালারের টেডিবিয়ার,, সাথে আর কিছু সূর্যমূখী ফুল আর একটা চিরকুট রাখা।

।।চিরকুটে লিখা।।♥️

আজকের সকালটা না হয় তোমাকে দিয়েই শুরু করি,, Good morning 💜

উপর থেকে এইসব দেখছে আয়ান!! চোখ মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট,, কারণ এটা সে করেনি,,, তাহলে কার কাজ?! আয়াতেরও সেম প্রশ্ন।

সেদিন সকালে আয়ান আর ডাইনিং এ আসেনি, তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায়। আয়াত আয়ানের মাকে বলে

—- ফুপি আমি,, আমাদের বাসায় যেতে চাই,, আম্মুর কথা অনেক মনে পরছে। আয়ানের মাও এতে আপত্তি করেনি,, আয়াত নিজের ব্যাগ পেক করছে আলভিরা নিজের নখ কামড়াচ্ছেন আর রুম জুরে পাইচারি করছে। অন্য দিকে আরবি আয়াতকে বলছে

—- আয়াত না গেলে কি হয় না?? আয়ান আসুক তারপর না হয়,, আয়াত বেগ গুছিয়ে বলে

— আমাকে নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমি যদি চলে যাই তাহলে সে মুক্ত।।।।

তখনই সাদী চলে আসে,, আয়াতের চাচাতো ভাই। সাদী আসতেই নিজ বাড়িতে চলে যায় আয়াত। হাজারো মায়া আর পিছুটান ভুলে পা বারায় নিজের জন্য আলাদা এক জীবনে
____________

বাসায় এসে হাজারো প্রশ্নের সমক্ষীন হতে হয় আয়াতের সে একা কেন কিসের জন্য একা এসেছে। আয়াত রেগে গিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে

—- একা এসেছি বেস করেছি,, আর কোনো কথা চাই না আর এখন থেকে আমি এখানেই থাকবো,, আয়াতের মা কিছু বলতে চাইলে,, আয়াতের বাবা বলে

—- বেস মামুনি তুমি এখানেই থাকবে আমাদের সাথে,, । আর আয়াতের আম্মু তুমি রুমে আসো কথা আছে। আয়াতের চাচা বলে

—- তাহলে জেইনাব,ফারিন ওদের আসতে বলো (ছোট ফুপির ছেলে মেয়ে)। সবাই একসাথে গেট টুগেদার করা যাবে। আয়াত আর কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে আসে। আর লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে ঘুমিয়ে পরে নিজের ফোনটা বন্ধ করে। রাত ১০টার দিকে আয়াতের ঘুম ভেঙে দেখে তখনই ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে আয়ান। আয়াত তো আয়ানকে দেখে লাফিয়ে ওঠে বসে,, সে এখানে কি করে নাকি ঘুমের ঘোরে উল্টা পাল্টা কিছু দেখছে। আয়াতকে উঠতে দেখেই আয়ান তোয়ালেটা সোফায় ছুড়ে মারে,, আর একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—- বাহহ মহারানীর ঘুম ভাঙলো তবে। কথায় রাগ স্পষ্ট ,, আয়াত বলে

—- আপনি এখানে? আয়ান দাঁত চেপে চেপে বলে

—- কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলি বুঝি। আয়াত বলে

—- বাজে বকা বন্ধ করুন,, আর এটা বলেন এখানে কি চাই? আয়ান বলে

—- তুই এখানে কার পারমিশনে এসেছিস? আয়াত বলে

—- আমি ফুপিকে বলে এসেছি,, আর আমার কারো পারমিশন লাগে না। আয়ান রেগে আয়াতের গাল চেপে ধরে বলে

— বাহহহ,, ভালোই তো মুখে খই ফুটেছে। আয়াত আয়ানের হাত সরিয়ে বলে

—- কেন এসেছেন? আমি তো আপনার থেকে দূরে সরে এসেছি, তাহলে কেন আবার আমাকে আপনার মায়াতে ফেলছেন। বলেই কেঁদে দেয়। আয়ান তা দেখে একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে

—- দেখ তুই তো একটা শাঁকচুন্নি তোকে ছেড়ে দিলে আর কেউ বিয়ে করবেনা তাই তোর ভাই হিসাবে একটা দায়িত্ব আছে না? আয়াত রেগে গিয়ে বালিশ দিয়ে আয়ানকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগে আর বলে

—- তুই জীবনে ভালো হবি না,,,, আমি শাকচুন্নি না!! তুই কি হ্যা,আমার রুম থেকে বেরহ,, তখনই আয়ান আয়াতকে বেডের সাথে চেপে ধরে,, আয়াত মূহুর্তেই চুপ হয়ে যায়,, আয়ান আয়াতের দিকে একমনে তাকিয়ে আছে। কখনো এতটা কাছ থেকে মেয়েটাকে দেখেনি সে,,, এক অন্য রকম অনুভূতি কাজ করছে। তখনই দরজায় নক করে আয়াতের মা,,তাদের খেতে,, যেতে বলছে, আর আয়াত আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে উঠে বসে পরে আর বলে

—- হ্যা আম্মু তুমি যাও আমরা আসছি৷ আয়ান আয়াতের উড়না ধরে বলে

—- বউগো,,, আয়াত বিরক্ত হয়ে বলে

— হ্যা ৫ মাসের বউ। আয়ান বলে

— সেটা দেখা যাবে এখন খাবো প্রচুর পরিমানে খুদা লেগেছে। আয়াত আর আয়ান নিচে এসে দেখে সবাই ডাইনিং রুমে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য,,, আয়াতের দিদুন বলে

—- কি হয়েছে দাদুভাই,,,,? আয়ান চেয়ারে বসতে বসতে বলে

— দেখ না,, কেমন ভরকে আছে,,,,!! আয়াত কথা না বলে চুপচাপ নিজের খাবার খাচ্ছে।। আয়ান আয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলে

—- বউ কথা কয়না,,,,, আমার সাথে। আয়াত তাও কিছু বলেনা,,, সবাইতো ওদের কান্ড দেখে হাসছে। বেচারা আয়ান এত কথা বলার চেষ্টা করেও ব্যার্থ।

__________

খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাত্রই রুমে ঢুকেছে আয়ান,, আর আয়াত। রুমে আসতেই আয়াত কাবার্ড একটা বালিশ নিয়ে সোফায় শুতে যাবে,, তখনই আয়ান পাশে টিবিলে রাখা পানিটা সোফায় ঢেলে দেয়। আর আয়াতের দিকে তাকিয়ে একটা বাচ্চাদের মতো হাসি দিয়ে বলে

— সরি বেইবি,,,। আয়াত রেগে আয়ানকে বলে

— আবার কি নাটক শুরু করেছেন আপনি?? কি চাই!! আয়ান একটু ভাবার চিন্তা করে গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে বলে

—- তোমার নামের রোদ্দুরে
আমি ডুবেছি সমুদ্দুরে
জানি না যাব কতদূরে এখনও
আমার পোড়া কপালে
আর আমার সন্ধ্যে সকালে
তুমি কেন এলে জানি না এখনও
ফন্দি আঁটে মন পালাবার
বন্দি আছে কাছে সে তোমার
যদি সত্যি জানতে চাও
তোমাকে চাই, তোমাকে চাই
যদি মিথ্যে মানতে চাও
তোমাকেই চাই
যদি সত্যি জানতে চাও,,, আয়াত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে এর মানে আয়ান তাকে মেনে নিয়েছে,, কিন্তু পরক্ষণেই আয়ান বলে

— গানটা কিন্তু সেই। আয়াত রেগে এবার কান্না করে দিয়ে বলে

—- তোর গান তুই শুন,,,, এই বলে সোজা বেলকনিতে চলে যায়,, আয়ান বলে

— হায় মে মারযাওয়া।। বউ পালতে এত জ্বালা,, বউগো ও বউ,, কই গেলা,, আমারে ছাইড়া। আয়ান বেলকনিতে গিয়ে দেখে আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখ মুছে চলেছে,, আয়ান বলে

—- আয়াত চল ঘুমাবি। আয়াত বলে

— আপনি জান আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না। তখনই আয়ান আয়াতকে কোলে তুলে নেয়। আয়াত ভয় পেয়ে আকরে ধরে আয়ানের গলা। আয়ান আয়াতকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে টেবিল লাইটা ওফ করে দেয়। আয়াত বলে

— ছাড়ুন আমাকে। আয়ান বলে

—- এখন আমি ঘুমাবো,, কোনো কথা হবে না।

চলবে