বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1199



ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৫

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

_অরণী অট্ট হাঁসি দিয়ে আমার জন্য কোনো মানা নাই ভাইয়া।যেতেই পারি।

অরণীর কথা শুনে আয়ান নিজেও হাঁসতে শুরু করলো।
অরণী- আচ্ছা তাহলে তোমরা কথা বলো আমি আসছি।সিয়াম আবার একা রুমে বসে আছে।কাল কিন্তু আমরা বিকেলবেলা মেয়ে দেখতে যাচ্ছি এটাই ফাইনাল।
কথাটা বলেই অরণী চলে গেলো।

আয়ান -প্রাপ্তি! তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে গিয়ে শুয়ে পড়লো।আয়ান মনে মনে ভাবছে সবেমাত্র কথা বলা শুরু করেছে কোনো কিছু নিয়ে বেশি চাপাচাপি করা যাবেনা।না হলে আবার আগের মতোই হয়ে যাবে।
সকাল বেলা অরণীর ডাকে ঘুম ভাঙলো প্রাপ্তি আর আয়ানের। আয়ান ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে অরণীকে দেখে কি ব্যাপার অরণী কিছু বলবে?অরণী রুমে ঢুকে কয়টা বাজে দেখেছো? (প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে)বাহ্ মহারাণী ও তো দেখছি এখনি আড়মোড়া ভাঙতেছে।
আয়ান হাতের ঘড়ি টার দিকে তাকিয়ে দেখে ৯.২০ বেজে গেছে।ও মাই গড! তুমি এতোক্ষণ ডাকনি কেনো?

অরণী -আচ্ছা সারারাত কি দুজন ঘুমাওনি?
অবশ্য জেগে থেকেই বা কি করবে ঘুমানো ছাড়া।

প্রাপ্তি -তুই একটু চুপ করবি?কখন থেকেই বকবক করে যাচ্ছিস।
(আয়ান তয়ালেটা হাতে নিয়ে হাঁসতে হাঁসতে ওয়াশ রুমের দিকে যাচ্ছে)

অরণী -চুপ থাকতে বলছিস কেন? আপু আমি কিন্তু ছোটো নয় সবকিছুই বুজার বয়স আমার হয়েছে।

প্রাপ্তি -কি বলতে চাইছিস তুই?

অরণী -কথা টা শুনে তুই রাগ করিস না। তবে আমার যা মনে হচ্ছে তাই বলছি।
আমার মনে হয় তোদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে সেটাই তোদের মাঝে নাই।
অরণীর কথা শুনেই আয়ান ওয়াশ রুমের দরজাই দাঁড়িয়ে পড়লো।
আর প্রাপ্তি অবাক হয়ে অরণীর দিকে তাকিয়ে কি বলছিস তুই এই সব?
আয়ান আবার অরণীর আর প্রাপ্তির কাছে এগিয়ে এসে অরণী তোমার এমন কেনো মনে হলো?

অরণী -আগে মনে হয়নি, কাল তোমার কথা শুনেই মনে হলো,আচ্ছা তুমিই বলো কেউ কারো বউয়ের জামা কাপড় চেঞ্জ করতে লজ্জা পায়?
(অরণীর কথা শুনেই প্রাপ্তি আর আয়ান দুইজন দুজনার দিকে তাকিয়ে আছে।)

কথাটা মনে হয় ঠিকি বলছি না হলে দুজন এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?

আয়ান অরণীকে আর কিছু না বলেই ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলো।

প্রাপ্তি -তুই আসলে কি বলতো কথা টা আমাকে আলাদা ভাবেও তো বলতে পারতি।এইভাবে ওনার সামনে না বললেও পারতি।

অরণী -তুই চুপ করতো।দোষ তো তোরই তুই ভাইয়াকে কষ্ট দিচ্ছিস কেনো?একটা মানুষের সাথে দুইটা বছরের বেশি সংসার করছিস এখনো তুমি কথাটা বলতে শিখিসনি।তোর এইসব পাগলামো কিভাবে যে ভাইয়া সহ্য করে আল্লাহ ভালো জানে।সিয়ামের সাথে তোর বিয়েটা হয়নি ভালোই হয়েছে।না হলে আরো আগে তোকে এই বাড়িতে আসা লাগতো।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আমি যেনো তোকে আর না দেখি ভাইয়াকে আপনি করে ডাকছিস।তুমি করে বলবি।এখন ফ্রেশ হয়ে দুইজনে নাস্তা করতে আয়।

প্রাপ্তি বোকার মতো দাঁড়িয়ে কথা গুলো শুনেই যাচ্ছিলো।অরণী চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে অরণী সত্যিই বলছে অন্য কোনো ছেলে হলে আমাকে আরো আগেই ডিভোর্স দিয়ে চলে যেতো।কিন্তু আয়ান আমার জন্য নিজের সব কিছু ছেড়ে আমার কাছে পড়ে আছে। শুধু আমাকে ভালোবাসে।এখনকার ছেলেরা শুধু মেয়েদের দেহ টাই বুজে কিন্তু আয়ান কখনো আমাকে কোনো কিছু নিয়ে জোর করেনি।আয়ানের মতো যদি ছেলেরা হতো তাহলে কখনো মেয়েদের এতো অপমান,অপদস্থ, লাঞ্ছিত হতে হতো না।মেয়েরা নিজেদের সম্মান নিয়েই বেঁচে থাকতে পারতো।আয়ান এসে প্রাপ্তির কাঁধে হাত দিতেই প্রাপ্তি চমকে গিয়ে আয়ানের দিকে তাকালো,

আয়ান -কি হলো এইভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।

প্রাপ্তি হুম বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

নিলিমা বেগম টেবিলে নাস্তা দিয়েছে, আয়ান, প্রাপ্তি, অরণী আর আজাদ সাহেব বসেছে নাস্তা করার জন্য।

আয়ান -মা রেশী কোথায়?ভাইয়া আর সিয়াম কেও তো দেখছি না।ওরা নাস্তা করবেনা?
নিলিমা বেগম -আসিফ নাস্তা করেই রেশীকে নিয়ে ওর কলেজে গেছে,বলেছে রেশীকে নামিয়ে দিয়ে অফিসে যাবে।

অরণী -সিয়াম ও খেয়ে অফিসে চলে গেলো।আব্বু তোমার সাথে নাস্তা করবে বলেই সকাল থেকে নাস্তা করেনি।
কথা শুনেই আয়ান লজ্জা পেয়ে গেলো।তার কখনোই ঘুম থেকে উঠতে এতো দেরী হয়না।আজ যে কি হলো বুজলাম না।

আয়ান-সরি আসলে আমি আজ বলতেই পারবো না।

আজাদ সাহেব -আরে কোনো প্রবলেম নাই।আমি এমনিতেই নাস্তা একটু দেরিতেই করি।

কথাটা শুনে আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে, প্রাপ্তি তুমি না আজ শপিং করতে যাও? নাস্তা করে রেডি হয়ে নাও।অরণী তাহলে তুমিও রেডি হয়ে নাও।

প্রাপ্তি -আজকেই যেতে হবে?

আয়ান -হুম আজকেই।(মনে মনে)আজ যখন তোমাকে নিয়ে ঘুরার সুযোগ পেয়েছি এইটা হাত ছাড়া করি কিভাবে?

অরণী -আপু তুই না করিস না।চলনা একসাথে ঘুরে আসি।

প্রাপ্তি -আচ্ছা ঠিক আছে।

সবাই নাস্তা শেষ করে তিন জনই শপিং করার উদ্দেশ্য বের হলো।
প্রাপ্তি এই প্রথম আয়ানের সাথে শপিং করতে আসলো। এতো দিন প্রাপ্তির যা কিছু লেগেছে আয়ানই সব কিছু প্রাপ্তি না চাইতেই এনে দিতো।আয়ান কেমন করে সব বুজে যায়। প্রাপ্তির মনে কখন কি চায়।সবকিছু বুজার চেষ্টা করে।হয়তো প্রাপ্তির চোখে চোখ রেখে প্রাপ্তির মনকে পড়তে আপ্রাণ চেষ্টা করে।
আজ অনেক শপিং করলো প্রাপ্তি কিন্তু নিজের জন্য কিছুই নিলো না সব কিছু আয়ান আর নিজের পরিবারের জন্য।রুমকির জন্য তো ড্রেস খেলনা সব কিছুই নিয়েছে।

আয়ান প্রাপ্তির কান্ড গুলো দেখেই যাচ্ছে কিছু বলছেনা প্রাপ্তির মনে কষ্ট পাবে তাই।কিন্তু একটা কথা না বলে পারছেনা। তাই প্রাপ্তির কানের কাছে গিয়ে, আচ্ছা প্রাপ্তি সবার জন্য এতো কিছু নিলে নিজের জন্য কিছু নিচ্ছো না যে।

প্রাপ্তি মুছকি হেঁসে আমার নিজের জন্য নিজে কিনার প্রয়োজন নেই।তুমিই আমার জন্য যে শপিং করো সেই গুলোই শেষ করতে পারিনা।এখন যদি আমিও আমার জন্য নিতে থাকি তাহলে মানুষে কি নিবে।
কথাটা শুনে আয়ানের খুব ভালো লেগেছে,কিন্তু না হেঁসে পারলোনা।

আয়ান -আচ্ছা তাই নাকি?কিন্তু প্রাপ্তি আমাদের বাড়ির সবার জন্য যে নিলে এইগুলো দিবে কি করে?

প্রাপ্তি -ওইটা নিয়ে তোমায় এখন ভাবতে হবে না। বাসায় গিয়ে দেখা যাবে কি করা যায়।
এইদিকে আয়ানও প্রাপ্তিকে না জানিয়ে নিজের পছন্দের দুইটা শাড়ি নিয়ে নিলো।
শপিং শেষ করে তিন জনে একটা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্য রওনা হলো।আয়ান প্রাপ্তি আর অরণীকে রেস্টুরেন্টের সামনে নামিয়ে দিয়ে,তোমরা গিয়ে বসো আমি গাড়িটা রেখে আসছি।প্রাপ্তি আর অরণী কথা বলতে বলতে দুইজনে গিয়ে বসলো।অরণী বসতেই ফোনটা বেজে উঠলো।

অরণী ফোনটা পার্স থেকে বের করতে করতে সিয়াম মনে হয় ফোন করেছে, তুই এইখানে বস আমি কথা বলেই আসছি।

পাশের টেবিলের একটা লোক বার বার প্রাপ্তিকে দেখছে।প্রাপ্তির নজর পড়তেই অস অসস্থি বোধ হচ্ছে।কিন্তু লোকটাকে কোথায় যেনো দেখেছি।মনে হচ্ছে ওনার সাথে আমার আগেও দেখা হয়েছে।ওনাকে দেখে বাজে লোক মনে হচ্ছে না।মনে হচ্ছে ওনিও আমাকে চিনার চেষ্টা করছে।এমন সময় আয়ান এসে প্রাপ্তির পাশে বসতে বসতে কি ব্যাপার অরণী কই? এখনো খাবার অর্ডার করোনি?
কথা গুলো বলতে বলতে আয়ান খাবারে মেনু গুলো দেখছে।কি হলো কিছু বলছনাযে,প্রাপ্তি চুপ হয়ে থাকতে দেখে দুই হাত দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে সে পাশের টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে।নিজের হাত দিয়ে প্রাপ্তির মাথাটা ঘুরিয়ে, আমার দিকে তাকাও এতোক্ষণ কি জিজ্ঞেস করছি তোমায়?
আর এইভাবে ঘামাচ্ছো কেনো কি হয়েছে তোমার?

প্রাপ্তি নিজের ঘাম গুলো মুছতে যাবে তখনি আয়ান হাতটা ধরে ফেললো।আয়ানের হাত ধরতে দেখে প্রাপ্তি আস্তে করে বললো কিছু হয়নি।এমনি হয়তো ঘামাচ্ছি।

আয়ান অনেকক্ষণ প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে থেকে তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।ঘামালেও মানুষকে সুন্দর দেখায় এইটা তোমাকে দেখে বুজলাম।এখন আমি তোমার ঘাম খাবো।

প্রাপ্তি -(চোখ মুখ কুঁচকে) কিহ্। আপনার মাথা খারাপ হলো নাকি? কি উল্টা পাল্টা বকছেন? (প্রাপ্তি ভেবেছে আয়ান হয়তো তাকে কিস করা কথা বলছে। এইখানে পাবলিক প্লেসে যে ওনার মাথায় কি ভূত চাপছে বুজতেই তো পারছিনা।)আমি বুজেছি কি বলতে চাচ্ছেন আমরা বাসায় যাই তারপর না হয়,,,,,,

আয়ান -না এইখানেই,,,কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ছেড়ে দিয়ে প্রাপ্তির কপাল থেকে একটু খানি ঘাম আয়ান মুখে দিয়ে হুম্মম্মম্মম অনেক টেস্ট।
প্রাপ্তি আয়ানের দিকে অবাক চোখে নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।,,,,,,

চলবে,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৪

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৪

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আয়ান বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো এক অজানার পথে। কোথায় যাবে কি করবে কিছুই মাথায় আসছে না আয়ানের। বাড়ি থেকে না এসেও উপায় কি? ওই বাড়িতে থাকলে প্রাপ্তিকে বার বার আব্বুর কাছে অপমান আর অপদস্থ হতে হতো।নিজের স্ত্রী কে নিজের চোখের সামনে এইভাবে দেখা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব না।কথা গুলো ভাবতেই প্রাপ্তির দিকে নজর পড়লো আয়ানের। সকাল থেকে তো মেয়েটা কিছু খায়নি।আমি অফিসে যাবো বলে সবকিছু রেডি করতেই তো সময় চলে গেলো তারপর তো আব্বু আসার পর আর খাওয়াই হয়নি।
একটা রিকশা দাঁড় করিয়ে, মামা রেস্টুরেন্ট এর দিকে চলেন।কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে এমন একটা অবস্থায় রেস্টুরেন্টে যাবার কথা মাথায় আসে কি করে। এখন কি রেস্টুরেন্টে যাবার সময়?

আয়ান-হা করে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? রিকশায় উঠো।

প্রাপ্তি চুপচাপ রিকশায় উঠে বসলো।দুজনে রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো। আয়ান অনেক গুলা খাবার অর্ডার করলো। প্রাপ্তি শুধু দেখেই যাচ্ছে।

আয়ান প্রাপ্তির তাকানো দেখে, চিন্তা হচ্ছে?
চিন্তা করোনা! দেখবে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।ওয়েট! আসিফ ভাইয়াকে একটা ফোন দিয়ে এইখানে আসতে বলি।
ফোনটা পকেট থেকে বের করে আসিফকে ফোন দিয়ে বললো রেস্টুরেন্টে আসার জন্য।
আসিফ আর কোনো প্রশ্ন করলো না আয়ান কে।
আয়ান আসিফের সাথে কথা শেষ করে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।সকাল থেকেতো কিছুই খাওনি।
এখন খেয়ে নাও।ভাইয়া আসলে তুমি ভাইয়ার সাথে চলে যাবে।এইদিকে আমি বাসা ঠিক করে একটা চাকরি পেয়ে গেলেই তোমাকে নিয়ে আসবো।

প্রাপ্তির হাজার টা প্রশ্ন নিয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।আমাকে ওই বাড়িতে দিয়ে ওনি কোথায় থাকবে? চাকরি বা পাবে কোথায় এখন?এই কয়েকটা দিন ওনাকে দেখেই কেমন জানি মায়া কাজ করে।

আয়ান প্রাপ্তির চোখের দিকে তাকিয়ে মুছকি হেঁসে,শুধু তাকিয়েই থাকতে পারো মুখে তো আর কিছু বলতে পারো না।মনে যে প্রশ্ন গুলো দানা বেধেছে সেই প্রশ্ন গুলো আনসার পরে দিবো। আগে খেয়ে নাও।

অনেকক্ষণ পরে আসিফ চলে আসলো।আসিফকে দেখে আয়ান উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে ভাইয়া বসুন।

আসিফ -হুম তুমিও বসো।

আসিফ বসতে বসতে তোমরা কোথাও যাচ্ছো নাকি?

প্রাপ্তি -তুই কি করে বুজলি আমরা কোথাও যচ্ছি?
আসিফ -ব্যাগ দেখে।তো হঠাৎ আমাকে ডাকা?
আয়ান -আসলে ভাইয়া,,, আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি। আমার আব্বু হঠাৎ করে আজ সকালেই দেশে চলে আসে তারপর কি আর বলবো আপনাকে!

আসিফ -আর কিছু বলতে হবেনা আমি বুজেছি।এখন কি! আমার বোন কে আমি নিয়ে যাবো তাই তো? আয়ান আমি তোমাকে বিয়ের দিনে বলেছিলাম এই বিয়েটা করোনা। (প্রাপ্তি আসিফকে আকটাতে চেষ্টা করছে,সেই দিকে আসিফের কোনো খেয়ালি নেই,)কিন্তু তুমি আমার কথা শুনো নাই।আমার বোন আমাদের কাছে এতোটা ফেলনা নয় যে তাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিবো।

আয়ান -ভাইয়া আপনি আমার কথা টা একবার শুনুন?

আসিফ -কি শুনবো তুমি আমার কাছে এখন ক্ষমা চাইবে তাই তো? কোনো প্রয়োজন নেই, আমি আমার বোন কে নিয়ে যাচ্ছি।কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ধরে টেনে উঠাতে যাবে তখনি প্রাপ্তি আসিফের হাত ঝেড়ে ফেলে দিয়ে তুই একটু চুপ করবি? অনেকক্ষণ থেকে একটা মানুষের নামে যা নয় তাই বলে যাচ্ছিস।

আসিফ -কি শুনাবি? দেখি শুনা। আবার বসে পড়ে)

প্রাপ্তি -(কমল স্বরে)ওনিও সব কিছু ছেড়ে আমার সাথে চলে এসেছে।প্রাপ্তি সব কিছুই আসিফকে বললো।আসিফ সব শুনে লজ্জা পেয়ে আয়ানের হাত দুটো ছেপে ধরে সরি আয়ান! আসলে আমি বুজতে পারিনি।

আয়ান -কোনো সমস্যা না।আপনাকে শুধু এই জন্যই ডেকেছি প্রাপ্তিকে কয়েক দিনের জন্য আপনাদের বাড়িতে নিয়ে যান আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করেই নিয়ে আসবো।

আসিফ প্রাপ্তিকে নিয়ে আসার দুইদিন পরেই আয়ান অভ্রকে নিয়ে প্রাপ্তিদের বাড়ি আসে প্রাপ্তিকে নিতে। এই দুই দিন প্রাপ্তির কিভাবে যে কেটেছিলো প্রাপ্তি কাউকে বুজাতে পারবেনা।রুমে বসে আয়ানের কথার শব্দ শুনে যেনো সুস্থির নিশ্বাস ফিরে এলো প্রাপ্তির।

আসিফ আর আজাদ সাহেব এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে,,
আজাদ সাহেব -কেমন আছো বাবা?

আয়ান -জ্বী বাবা ভালো।অভ্রর দিকে তাকিয়ে ওহ্ বাবা আপনাদের তো পরিচয় করানো হলোনা।ও হচ্ছে অভ্র আমি যে অফিসে এমডি হিসেবে জয়েন করেছি। ও সেই অফিসে চাকরি করে।

আসিফ -হাই অভ্র কেমন আছো?

অভ্র -জ্বী ভালো।

আয়ান -ভাইয়া অভ্র আমাকে আর ও একটা হেল্প করেছে।নতুন যে বাসাটা নিয়েছি সেটা অভ্রর জন্যই।

নিলিমা বেগম নাস্তা নিয়ে আসতে আসতে আয়ান তুমি দেখছি একদম সব ঠিক করেই আসছো?

আয়ান -আসসালামু আলাইকুম মা! আপনি কেমন আছেন?

নিলিমা বেগম -আমি একদম ঠিক আছি।
এতো তাড়াতাড়ি সব কিছু ঠিক করে ফেললে?

আয়ান -মা! আমার পক্ষে একা সম্ভব ছিলোনা।পাশে অভ্র ছিলো বলেই এতো তাড়াতাড়ি সব সম্ভব হয়েছে।আচ্ছা মা! প্রাপ্তি কোথায় ওকে দেখছিনা তো।

আজাদ সাহেব -আয়ান! ও এই বাড়িতে আসার পর থেকেই তো কারো সাথে কথা বলে না।সবসময় কেমন যেনো চিন্তার ভাব নিয়ে থাকে।ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া ও করেনা।

আসিফ -তুমি বসো আমি ডেকে নিয়ে আসছি।

আয়ান -ভাইয়া! আমিই যাচ্ছি আপনি বসেন।
আয়ান প্রাপ্তির রুমে গিয়ে দেখে,প্রাপ্তি মুখে হাঁসির ঝলক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আয়ান গিয়ে খাটের উপর বসে পায়ের উপর পা দিয়ে নাড়াতে নাড়াতে বললো মহারাণী! নতুন বাসা ঠিক করে আসলাম।বলেছিলাম না বেশি সময় লাগবেনা।
সব কিছু গুছিয়ে নাও নতুন বাসায় নতুন করে প্রাপ্তিকে পেতে চাই। (কথাটা শুনে প্রাপ্তি হাঁসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো) কি! ভয়ে পেয়ে গেলে?আমি সেই পাবার কথা বলিনি।ওই বাসাতে তো সব কিছু তোমার ছোঁয়াই থাকবে।তোমার হাতের রান্না খাবো।কি! খাওয়াবে তো।আমিও কিন্তু মোটামোটি রান্না পারি তুমি না পারলেও আমি যা পারি ওতেই চলে যাবে আমাদের, কি বলো?ও তুমি তো আবার কথা বলনা আমার সাথে কাকে যে কি বলি।
বিকাল বেলা সব কিছু গুছিয়ে প্রাপ্তি আর আয়ান নতুন এক সংসারে পা বাড়ালো।সেই সংসারে কয়েক দিন পর এলো রেশী। তিন জন মিলেই চলতে থাকলো তাদের নতুন জীবন।

_আপু! আপু! কই তোরা? অরণী বারান্দার দরজায় দাঁড়িয়ে বাহ্ দুজনে এইখানে প্রেম করা হচ্ছে?অরণীর ডাক শুনে আয়ান আর প্রাপ্তি ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলো।
(পাঠক আপনারাও ফিরে আসুন ভাবনার জগত থেকে।)

প্রাপ্তি -হুম কিরে,,, কিছু বলবি?
অরণীকে দেখে আয়ান আবার অন্য দিকে ফিরে আছে।

অরণী আয়ানের মুখ ফিরেতে দেখে ভাইয়া আপনি কেনো যে আমার সাথে এই রকম করেন আমি জানি না।যদিও আমার কোনো অন্যায় থাকে তাহলে কি ক্ষমা করা যায়না?

প্রাপ্তি আয়ান কিছু বলার আশায় তাকিয়ে দুজনকেই দেখছে।আয়ান কিছু বলছেনা দেখে প্রাপ্তি বললো,আপনি কিন্তু অরণীকে আজ ক্ষমা করা উচিত। আপনি তো ভাবতেন সেইদিনের ঘটনার জন্যই আমি আপনার সাথে কথা বলিনা।আজ তো আমি আপনার সাথে কথা বলছি তাহলে আপনার ও উচিত ওর সাথে কথা বলার।
প্রাপ্তির কথা শুনে আয়ান অরণীর দিকে ফিরে তাকিয়ে, বলতে পারি যদি তুমি কাল প্রাপ্তির সাথে শপিং এ যাও।

অরণী অট্ট হাঁসি দিয়ে আমার জন্য কোনো মানা নাই ভাইয়া।যেতেই পারি।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২৩

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তি আর আয়ান রুমে গিয়ে নিজেদের জামা কাপড় গুলো গুছিয়ে নিচ্ছে।আয়েশা বেগম এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে আয়ান তুই আমাদের ছেড়ে যাসনা।আমি আমার ছেলেকে ছাড়া থাকবো কি করে? তোর আব্বুর রাগটা কমে যাক দেখবি তোকে আবার বুকে টেনে নিবে।এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলতে লাগলেন আয়েশা বেগম।আয়ান আয়েশা বেগম কে ছাড়িয়ে গাল দুটো হাত দিয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায়,আম্মু তোমাদের ছেড়ে থাকতে আমারো অনেক কষ্ট হবে,কিন্তু আমি জানি আব্বু কখনোই আমাকে আর এই বাড়িতে থাকতে বলবেনা।আর কখনোই বলবেনা আয়ান অফিসে যাবিনা,বলবেনা লেট আমার একদম পছন্দ না।,তোর কোনো সময়ের জ্ঞান নেই বলে কি আমারও নেই।আকাশ ভাইয়া এসে আব্বুর বুকনি থেকে আমাকে বাঁচাতে হবেনা।এই সব কিছু আমি অনেক মিস করবো আম্মু।মিস করবো তোমার ভালোবাসা।কথাগুলো বলতে বলতে আয়ানের গাল বেয়ে বেয়ে চোখের পানি পড়ে শার্ট ভিজে যাচ্ছে।কথা গুলো বলতে মনে হচ্ছে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।প্রাপ্তিও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মা ছেলের দৃশ দেখে সেও কান্না করে যাচ্ছে।

আয়েশা বেগম -(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে) তুই এখন হঠাৎ এইভাবে মেয়েটাকে নিয়ে গিয়ে কোথায় থাকবি? তোর কাছে তো এখন কোনো টাকাও নেই। এইভাবে রাগ করে গিয়ে থাকা যায়না আয়ন।

আয়ান আয়েশা বেগমের কাছ থেকে সরে গিয়ে চোখ মুছে ব্যাগ টা আটকাতে আটকাতে স্বাভাবিক গলায় বললো চিন্তা করো না মা আমার কাছে কিছু টাকা আছে সেটা দিয়ে কয়েক দিন কেটে যাবে।তারপর একটা চাকরি ব্যবস্থা ঠিক করে ফেলবো।

আয়েশা বেগম বুজে গেছে ছেলেকে বুজিয়ে কোনো লাভ হবে না।আয়ানের রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে, আকাশ! আকাশ!

আকাশ কাছে গিয়ে আম্মু তুমি পড়বে তো তুমি এইরকম করোনা।এইরকম করলে তো অসুস্থ হয়ে যাবে।

আয়েশা বেগম আকাশের হাত ধরে তুই আমার কথা চিন্তা করিস না।তুই পারবি আয়ানকে আটকাতে। ওকে এইভাবে কোথাও যেতে দিস না।

আকাশ -আম্মু তুমি শান্ত হও আমি দেখছি বলে উপরে যাবার জন্য সিঁড়িতে পা দিতেই দেখে আয়ান আর প্রাপ্তি নেমে আসছে।

আয়ান নেমে এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে, ভাইয়া আম্মুর দিকে খেয়াল রাখিস,

আকাশ-(অসহায় ভাবে) আয়ান! আর একটা বার ভেবে দেখ।আব্বু রাগের মাথায় কি বলতে কি বলেছে তার জন্য তুই বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবি?

আয়ান-(আকাশ কে ছেড়ে দিয়ে) ভাইয়া প্লিজ আবিদ চৌধুরী অহংকার নিয়ে ওনি থাকুক।আর যে বাড়িতে আমার স্ত্রী থাকতে পারবে না।সে বাড়িতে আমিও থাকতে পারবোনা।সবাইকে নিয়ে ভালো থাকিস।সবার খেয়াল রাখিস।
রুমকি দৌড়ে এসে কোলে উঠে মামা তুমি আর আসবে না? তুমি মামনিকে নিয়ে চলে যাবে?তুমি মামনিকে নিয়ে যেও না।

রুমকির কথা শুনে আয়ানের চোখের পানি টলমল করছে,রুমকির মন খারাপ হবে দেখে অন্য দিকে ফিয়ে চোখ মুছে মামাই আবার চলে আসবো। এই কয়দিন আম্মুর সব কথা শুনে লক্ষী মেয়ের মতো থাকবা।আমি আর তোমার মামনি এসেই যেনো শুনি রুমকি সবার সব কথা শুনে।প্রাপ্তি এগিয়ে এসে রুমকিকে কোলে নিলো। আয়ান ঝিনুক আর মিনুর কাছে যেতেই দুই বোন আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো,আয়ানও কাঁদোকাঁদো গলায় কান্না করছিস কেনো? আমিতো আর মরে যাইনি।ঝিনুক কথাটা শুনেই আয়ানের গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে মুখে যাই আসে তাই বলে যাচ্ছিস।তুই এতোই পর ভাবিস আমাদের?ঠিক আছে তোকে আজ আটকাবো না।আমি চাই তুইও আব্বুকে দেখিয়ে দিবি আব্বুকে ছাড়া তুই ও চলতে পারিস।আর কোনো সমস্যা হলে নিহাদ কে জানাস।

মিনু -নিজের দিকে খেয়াল রাখিস।যেখাই যাবি ফোন দিয়ে জানাস।যে মেয়ের জন্য এই বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিস ওর খেয়াল রাখিস।

আয়ানও ঝিনুকের চোখের পানি মুছে দিয়ে রুমকির দিকে খেয়াল রাখিস।
মিনু! রাহাতের সাথে তুই একদম রাগারাগি করবিনা।

সুমির কাছে এগিয়ে গিয়ে, সুইট হার্ট তোমাকে আর জ্বালানো সহ্য করতে হবেনা।তোমাকে সকাল বেলা আর আমাকে জাগিয়ে তুলতে হবেনা।আর কেউ তোমাকে এই কথা বলে জ্বালাবে না সুইট হার্ট তোমার হাতে কফি না হলে ভালো লাগে না।

সুমি নিজের চোখের পানি মুছে, তুমি এইগুলে জ্বালানি বলছো কেনো? এই গুলো করতে আমার খুব ভালো লাগে আয়ান।সুমি প্রাপ্তিকে আয়ানের কাছে টেনে এনে,প্রাপ্তি এই ছেলেটার সব দায়িত্ব এখন থেকে তোমার। আমার দেখা এই প্রথম কোনো ছেলে একটা মেয়েকে কতোটা ভালোবাসতে পারলে একটা ছেলে এতো অর্থ প্রাচুর্য ছেড়ে অজানা পথে হাঁটতে পারে।প্রাপ্তি! তুমি অনেক ভাগ্যেবান। কারণ ভাগ্যে করেই এইরম স্বামী পাওয়া যায়।
তাই আবারো বলছি নিজের মতো করে ওর একটু যত্ন নিও।

সুমির সব কথা শুনেই প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।

আয়েশা বেগমের মুখে কোনো কথা নেই নিস্তব্ধ হয়ে সোফায় বসে আয়ানে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে।

প্রাপ্তি এসে আয়েশা বেগমকে সালাম করে,(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে) মা, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আজ আমার জন্যই আপনার ছেলেকে আপনার কাছ থেকে আলাদা হতে হচ্ছে।মা! আমি কখনো চাইনি এই রকম কিছু হোক।
আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে উঠিয়ে, আমার ছেলেটার দিকে খেয়াল রেখো। আজ নিজেকে খুব ভাগ্যেবান মনে হচ্ছে।অনেক গর্বও হচ্ছে কেনো যানো? আমার ছেলেকে আমি ঠিক মতোই মানুষ করতে পেরেছি।সে মেয়েদের সম্মান দিতে জানে।কোনো মা জাতি কে অসম্মান করতে দেয়নি।তোমরা যেইখানেই থাকো ভালো থাকো।

আয়ান গিয়ে আবিদ চৌধুরীর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে,আব্বু আমি চলে যাচ্ছি।আমাকে নিয়ে তোমার আর কোনো অম্মান হবেনা।নিজের দিকে খেয়াল রেখো।আব্বু তুমি কি আমার কথা শুনছো? তোমাকে আর তোমার ছোটো ছেলেকে নিয়ে কোথাও অপদস্থ হতে হবেনা।আম্মুর দিকে খেয়াল রেখো।
আবিদ চৌধুরীর কোনো সাড়া না পেয়ে আয়ান ড্রইংরুম এসে, প্রাপ্তি! চলো।কথাটা বলেই আয়ান আর পিছু ফিরে তাকালোনা। তাড়াতাড়ি করে পা গুলো এগুতে লাগলো এক অজানার পথে। প্রাপ্তিও আয়ানের পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলো।কেউই জানেনা কথায় যাবে কি করবে। আয়ান শুধু এইটা ভেবেই নিজেকে বুজ দিয়েছে ভালোবাসার মানুষের অসম্মান সে হতে দেয়নি।যদি কোনো একদিন আবিদ চৌধুরী সম্মানের সাথেই তার ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে আনবে সেই দিনই আবার এই বাড়ি ফিরে আসবে।

চলবে,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২২

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২২

#Rabeya Sultana Nipa

 

__আয়ানের বউ কথাটা শুনেই আবিদ চৌধুরী আয়নের দিকে তাকালো। আয়ান মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আয়েশা বেগমের দিকে তাকালো সেও নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আকাশের দিকে তাকাতেই সে অন্য দিকে ফিরে গেলো। একেক করে সবার দিকে তাকাতে থাকলো একেক জন একেক রকম দেখাচ্ছে।সবার মুখে ভয়েরচিহ্ন। সবার কাছে এমন মনে হচ্ছে যে কোনো এক বাঘের সামনে সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
আবিদ চৌধুরী -সবাই এইভাবে আছো কেনো?সুমি! এই মেয়েটাকে তো সেদিন দেখলাম না।যার সাথে বিয়ে ঠিক করে এসেছি সে কই?

সুমি কিছু বলার আগেই আয়ান মুখ থেকে হাত সরিয়ে আব্বু আসলে,,,,,,,,

আবিদ চৌধুরী হাত দিয়ে ইশারা করে আয়ানকে চুপ থাকতে বললো।সুমি! তুমি কথা বলছো না কেনো?আমি কি প্রশ্ন করছি তার আনসার দাও?

সুমি -বাবা আসলে সেই দিন আমরা যেই মেয়েকে দেখেছিলাম আয়ান সে মেয়ের কথা বলেনি বলেছে এই প্রাপ্তির কথা।ওই মেয়েটার একটা রিলেশন ছিলো যার সাথে প্রাপ্তির বিয়ে ঠিক হয়েছিলো।বিয়ের দিন প্রাপ্তি জানতে পেরে ওর বোন কে ওই ছেলের হাতে তুলে দেয়।আর আয়ান নিজের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করে।

আবিদ চৌধুরী -এতো কিছু হয়ে গেলো আর আমাকে কিছুই জানালে না? (আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে)তুমিও তো আমাকে একবারের জন্য কথা গুলো বলোনি।
যাইহোক তবে বউ আমার পছন্দ হয়েছে।

কথাটা শুনেই সবার মুখে যেনো হাঁসির ঝলক ফুটে উঠলো।

সুমি-বাবা তাহলে আপনি বসুন আমি এখনি মিষ্টি নিয়ে আসছি।আজকে এই খুশির দিনে মিষ্টি না হলে হয়।সুমি গিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসলো।প্রাপ্তির হাতে মিষ্টির প্লেট দিয়ে, প্রাপ্তি তুমি বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে দাও।
প্রাপ্তি মিষ্টির প্লেট হাতে নিতেই অধরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে, ভাবী! তোমাদের নাটকের কাহিনী আরো কিছু বাকী রয়ে গেলো।সেই গুলো বলো জেঠুকে।
ঝিনুক বিড়বিড় করে, এসে গেছে আর দেরী করলো না।কাকা কাকী চলে গেছে এইটাকে যে কেনো রেখে গেলো! সুমি ঝিনুকে চোখ দিয়ে ইশারায় করে বললো এইবার কি হবে?
ঝিনুকও সুমিকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো চিন্তা করো না।আয়ান আছে তো।

আবিদ চৌধুরী অধরা কাছে আসতেই জড়িয়ে ধরে কেমন আছো মা!

অধরা -খুব ভালো। জেঠু তোমাকে অনেক মিস করেছি আমি।

আবিদ চৌধুরী -আমি ও। কিন্তু তুমি তখন কিসের নাটকের কথা বলছো?

অধরা -জেঠু! এই মেয়েটা মানে আয়ানের বউ রূপে গুণে সব ঠিক আছে কিন্তু তবে আরেকটা প্রবলেম ও আছে।

আবিদ চৌধুরী আয়ানের দিকে তাকিয়ে, সে প্রবলেম কি অধরা?

অধরা -আয়ান তোমার বউয়ের কথা তুমিই বলো। আমি বললে তো পরে বলবে অধরা সব বলে দিয়েছে।অবশ্য তুমি হয়তো ভাববে আমি এতো কিছু কি করে জানলাম।আয়ান! আমি অধরা চৌধুরী। যে মেয়ের কারনে তুমি আমাকে Avoid করবে তার হাঁড়ির সব খবর না জানলে তো আমার মরেও শান্তি হবে না।সেইদিন সুমি ভাবীকে জিজ্ঞাস করেছিলাম ভাবী অজুহাত দেখিয়ে চলে গেলো তারপর মিনু আপুকে জোর করতেই তারপর সব আমাকে বললো।এতো দিন আমি চুপ করেছিলাম কারণ আমি জেঠু আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

আবিদ চৌধুরী -(ধমক দিয়ে)প্লিজ কেউ কি আমাকে বলবে সমস্যা টা কি?

কেউ কিছু বলছেনা সবাই চুপ হয়ে নিচে দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়েশা বেগম নিরবতা ভেঙে, তুমি রুমে চলো ফ্রেশ হয়ে নাও আমরা এইসব নিয়ে পরেও কথা বলতে পারবো।

আয়ান বাবার দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই ঘটনার জন্য নিজেকে আমি আগেই প্রস্তুত করে রেখেছি কিন্তু সময়টা যে এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবে এইটা ভাবিনি।

আয়ান -প্রাপ্তি! মিষ্টির প্লেটটা রেখে দাও।(অফিসের ফাইল গুলো এগিয়ে দিয়ে)তুমি এই গুলো নিয়ে রুমে যাও আমি আব্বুর সাথে কথা বলছি।

প্রাপ্তি প্লেট টা সুমির হাতে দিয়ে ফাইল গুলো নিয়ে উপরে যাবার জন্য পা বাড়াতেই

আবিদ চৌধুরী -দাঁড়াও এখন কেউ কোথাও যাবে না।আগে আমি সব শুনবো তারপর যে যেখানে যাবার যাবে।(আয়েশা বেগমের দিকে এগিয়ে গিয়ে)তুমি এখন সব বলবে। বলো কি হয়েছে?

আয়েশা বেগম – আসলে ছোটো বউয়ের এইখানে কোনো দোষ নেই।মেয়েটা খুব ভালো, অনেক লক্ষী একটা মেয়ে।এই কয়েদিনে সবাইকে এক বাঁধনে বেধে ফেলেছে।

আবিদ চৌধুরী বিরক্তিকর ভাব নিয়ে আয়েশাাাাাাাাাাাাাা আমি এতো গুনো গান শুনতে চাইনি।সমস্যা কি সেটা বলো।

আয়েশা বেগম -(ভয়ে ভয়ে)বলছিতো! সময়তো দিবে নাকি?মানে প্রাপ্তিকে কয়েকটা ছেলে উঠিয়ে নিয়ে Rape করেছে।

আয়েশা বেগম কথা টা বলতেই প্রাপ্তি কান্না ভরা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। আল্লা তুমি আমাকে এই দিন দেখার জন্য বাঁচিয়ে রাখলে?এইগুলো দেখার আগে মরণ ও ভালো ছিলো।আর কতো সহ্য করবো আমি?

আবিদ চৌধুরী -(চেঁচিয়ে) কিহ্! আর সেই মেয়ে আমার ঘরের বউ।আকাশ! তোমাকে আমি সব দায়িত্ব দিয়ে গেলাম এই দৃশ্য দেখার জন্য?তোমাদের কি করে সাহস হয় এই মেয়েকে বউ হিসেবে ঘরে উটানোর?

আয়েশা বেগম-তুমি একটু শান্ত হও। তুমি এইরকম করলে তোমার প্রেশার টা বেড়ে যাবে।

আবিদ চৌধুরী -আমার জন্য যখন এতোই চিন্তা তাহলে এইটা চিন্তা হয়নি এই মেয়েকে কখনোই এই বাড়ী বউ হিসেবে আমি মেনে নিবো না?এই সমাজে আমার একটা সম্মান আছে সেই সম্মান নিয়ে ছিলিমিলি খেলার অধিকার তোমারদের কে দিয়েছে?আজ আমি এই জায়গা এমনি এসে পৌঁছায়নি।অনেক কষ্ট করেই আজ আমি বিখ্যাত ব্যবসায়ী আবিদ চৌধুরী ।

আয়ান- আব্বু আমার লাইফটাকে তোমার বিজনেসের সাথে যদি তুলনা করো তাহলে ভুল করছো।আমি ওকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছি।

আবিদ চৌধুরী -(তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে)ভালোবাসা! এই মেয়েকে? এইসব মেয়েকে ভালোবাসা যায়না।শুধু দয়া করা যায়।যদি তোমার এই মেয়ের প্রতি এতোই দয়া হয়েছে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করে আসতে।

আয়ান-আমি তো ওকে কোনো দয়া করে বিয়ে করিনি।ওকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি।আর আমার ওয়াইফ কে অপমান করার অধিকার তোমার নেই।

আকাশ আয়ানের কথা শুনে, আয়ান!অফিসে যা। আব্বু তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমরা এইসব নিয়ে পরে কথা বলবো।
সুমি তুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে রুমে যাও।আমি আয়ানকে নিয়ে যাচ্ছি।

আবিদ চৌধুরী -আকাশ! ওকে আমার সাথে কথা বলেতে দাও। ও কি বলেছে আমার নাকি ওর ওয়াইফকে অপমান করার কোনো অধিকার নেই।তাই নাকি মিস্টার আয়ান! যখন অধিকারের কথায় উঠাইছেন তাহলে শুনেন। আপনি যে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উড়াচ্ছেন,দামী গাড়ী ব্যবহার করছেন,এ সি রুমে ঘুমাচ্ছেন। সব টাকাই আমার।যে জব টা করছেন সেটাও আমার দেওয়া।এখন আপনিই বলুন আমার কি কোনো অধিকার নেই?

আয়েশা বেগম -কি বলছো তুমি এইসব। নিজের ছেলেকে এইভাবে বলতে পারলে?

আবিদ চৌধুরী -আয়েশা! এর মাঝে তুমি এসো না।আমার ছেলে আমাকেই অধিকারের কথা বলছে।কার জন্য করলাম এতো কিছু?যাইহোক আমার এটাই শেষ কথা এই মেয়ে এই বাড়ীতে থাকতে পারবেনা।আমি ফ্রেশ হতে রুমে যাচ্ছি এসেই যেন দেখি এই মেয়ে চলে গেছে।
কথাটা বলেই আবিদ চৌধুরী রুমের দিকে পা বাড়াতেই আয়ান বলে উঠলো, দাঁড়াও আব্বু ও যদি যেতেই হয় তাহলে আমাকেই তো যেতে হবে।কারণ বিয়েতো ওকে জোর করে করেছি আমি।ও তো ইচ্ছে করে এই বাড়ীতে আসিনি।তুমি যখন ওকে মেনে নিতে পারবে না তাহলে আমার ও এই বাড়ীতে থাকা হবে না।

ছেলের কথা শুনে অনেকক্ষণ চুপ করে আয়ানের দিকে তাকিয়ে থেকে আকাশ কে বললো (গম্ভীর ভাবে)আকাশ, ওর থেকে গাড়ীর চাবি টা নিয়ে নাও।ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করে দাও,অসিফের কাজ গুলো বুজে নাও।বাহিরের মানুষকে তো আর এইগুলো দেওয়া যায়না।কথাটা বলে আবিদ চৌধুরী চলে যেতে লাগলেন।
আয়েশা বেগম কাঁদতে কাঁদতে পিছনে যেতে যেতে, কি বলছো তুমি এই সব।তুমি তোমার কথা ফিয়ে নাও।আমি আমার ছেলেকে ছাড়া থেকতে পারবো না।প্লিজ কথা বলো।ও এইভাবে কোথায় গিয়ে থাকবে।হঠাৎ করে এইভাবে বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে বললেই কি চলে যাওয়া যায়? তুমি ওকে কয়েকটা দিন সময় দাও তারপর না হয়,,,,,,
আবিদ চৌধুরী রুমে ঢুকে আয়েশা বেগমকে বাহিরে রেখে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
আয়েশা বেগম কান্ন জড়িতো কন্ঠে, হাত দিয়ে দরজায় থাপ্পড়াতে থাপ্পড়াতে তুমি শুনে রাখো আমি আমার ছেলেকে কখনোই বাড়ী ছাড়া হতে দিবোনা।(চেঁচিয়ে) শুনেছো তুমি!

প্রাপ্তি এখনো সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কান্না করছে।আমার জন্য আজ একটা ফ্যামিলি আলাদা হচ্ছে।আমি কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা। ওনাদের ছেলে বাড়ীতেই থাকুক আমি বরং এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাই।সত্যিই তো আমার মতো মেয়েদের ভালো ঘরের কেউ বউ হিসেবে মেনে নিবে না।আমার মতো মেয়েদের কপালে সংসার নামক শব্দটা থাকতে নেই।ঝিনুক,মিনু,আকাশ এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে,আয়ান পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। চোখে বিষণ্ণতার কোনো চাপ নেই।সবাইকে সরিয়ে দিয়ে প্রাপ্তি! উপরে যাও সব কিছু গুছিয়ে নাও।অবশ্য এই বাড়ীতে আমার তেমন কিছুই নেই। তবে তোমার যা কিছু আছে আমার রোজগারের টাকারই কিনা।ওইখানে আবিদ চৌধুরীর কোনো ভাগ বসাতে পারবেনা।আচ্ছা চলো আমি তোমায় হেল্প করছি গুছিয়ে নেওয়ার জন্য।

প্রাপ্তি চোখ মুছে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আপনি যাওয়ার দরকার নেই আমি ভাইয়াকে ফোন দিচ্ছি ও এসে আমাকে নিয়ে যাবে।

আয়ান রাগী ভাব নিয়ে ধমক দিয়ে, সেট আপ,,,এতো দিন যেহেতু আমার সাথে তুমি কোনো কথা বলোনি আজ বলবানা।আমি যা বলছি তাড়াতাড়ি গিয়ে সেই কাজটা করো।

সুমি অধরার কাছে এগিয়ে গিয়ে, শান্তি হয়েছে তোমার? এটাই তো ছেয়েছিলে তাইনা? তোমার মতো মেয়েরা কখনো কারো ভালো দেখতে পারেনা।কি ক্ষতি করেছিলাম আমরা তোমার? বলো!এখন আনসার দিচ্ছো না কেন?

অধরাকিছু না বলে মুখটাকে বাঁকা করে উপরে উঠে গেলো।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২১

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২১

#Rabeya Sultana Nipa

 

_প্রাপ্তির কান্না ভালো লাগছে না আয়ানের কিন্তু কিছু কারার নেই তার দেখে যাওয়া ছাড়া। চুপকরেই প্রাপ্তি এক পাশে বসে আছে।খুব অসহায় লাগছে নিজেকে।ওই বাড়ীতেই ভালো ছিলো কেন যে আসতে গেলাম।

নিলিমা বেগম এসে, বাবা তুমি কিছু মনে করো না এদের কথায়।

আয়ান -উঠে দাঁড়িয়ে না মা আমি কিছু মনে করিনি।মা আপনি যদি কিছু মনে না করেন আমি একটা কথা বলবো?

নিলিমা বেগম -বলনা কোনো সমস্যা নেই। বলো আমার কাছে তোমার সংকোচ করার কিছু নেই বাবা।

আয়ান-(আমতা আমতা করে প্রাপ্তির দিকে আড় চোখে তাকিয়ে)আমি,, আমি,,,চাচ্ছি মানে আমি চাচ্ছি এইখান থেকে বিকালবেলা চলে যেতে।
আয়ানের কথা শুনে নিলিমা বেগম কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে গেলেন।

আসিফ নিলিমা বেগমকে চুপ হয়ে এসে সোপায় বসতে দেখে,আম্মু কি হয়েছে? আয়ান কি কিছু বলছে?

নিলিমা বেগম -তেমন কিছু না। ও চাচ্ছে বিকেলে চলে যেতে।এইটা কি ভালো দেখাবে তুই বল?ওই বাড়ীর সবাই কি বলবে?

আসিফ কিছু বলার আগেই আয়ান এসে,মা আমাদের বাড়ী কেউ কিচ্ছু মনে করবে না।আমি সব বুজিয়ে নিবো।ভাইয়া আপনি তো ব্যাপার টা বুজবেন,আমার মনে হয় প্রাপ্তিকে এইখানে রাখাটা ঠিক হবেনা।

আসিফ -আচ্ছা ঠিক আছে তোমরা আগে খাওয়াদাওয়া করে নাও তারপর না হয় দেখা যাবে।
দুপুয়ের খাওয়াদাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে সবার সাথে কথাবার্তা বলে সন্ধ্যায় আয়ান আর প্রাপ্তি আয়ানদের বাড়ী উদ্দেশ্য রওনা হলো।আয়ানের সাথে মোটরবাইকে করে যেতে খারাপ লাগছেনা প্রাপ্তির, অনেক খানি পথ যেতেই জোনাকি পোকার আলোতে ভালোই লাগছে,কয়েকটাকে হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করছে।গ্লাসের মধ্যে প্রাপ্তির এইভাবে হাত বাড়িয়ে পোকা গুলোকে ছুতে দেখে মোটরবাইক কে রাস্তার এক পাশে দাঁড় করালো।মোটরবাইক দাঁড় করাতে দেখে প্রাপ্তি পেয়ে ভাবলো, আমাকে বকাঝকা করবে নাকি? চুপচাপ কিছু না বলে মাঝ রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমার ও এইভাবে হাত বাড়ানো উচিত হয়নি।

আয়ান -বসে আছো যে? আমি বুজতে পেরেছি জায়গা টা তোমার ভালো লেগেছে। জোনাকি পোকার আলোয় চারপাশ ঝিকমিক করছে।এইখানে কিছু সময় কাটিয়ে তারপর না হয় বাড়ী যাবো।

আয়ানের কথা শুনে এক নিমিষেই মনটা ভালো হয়ে গেলো প্রাপ্তির।ও কি করে বুজলো জোনাকি পোকা আমার ভালো লাগার মধ্যে একটা।হয়তো হাত বাড়ানো দেখেই বুজে নিয়েছে।বাহিরে কিছুটা সময় পার করে বাসায় এলো দুজন। তাদের দেখে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।

আকাশ -কিরে তোরা? তোদের না আজ ওই বাড়ীতে থাকার কথা?

আয়ান -(কথা ঘুরিয়ে)আর বলিস না ওই খানে আমার একদম ভালো লাগছেনা।তোদের সবার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। তাই চলে এলাম।রুমকিকে কোলে নিয়ে কি ছোটো আম্মু ঠিক করিনি?

রুমকি -একদম ঠিক করেছো আমারো ভালো লাগছিলো না নতুন মামনিকে না দেখে।সুমি প্রাপ্তির কাছে এসে, তুমি চলে যাওয়াতে আমার ও ভালো লাগছিলো না।
যাও আয়ান আর তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।আমি চা দিচ্ছি।
আয়ান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাবে তখনি অধরা নেমে আসতে আসতে (ন্যাকামি করে)আয়ান তুমি এসেছো । তুমি চলে যাওয়ার পর আমার খুব খারাপ লাগছিলো।প্রাপ্তি তাদের দিকে একবার তাকিয়ে তাদের পাশ দিয়ে উপরে উঠে চলে গেলো।
অধরা -(হাত ধরে)আয়ান তুমি এখন কোথায় যাচ্চো? চলো আমার রুমে আমি আর তুমি বসে আড্ডা দিবো। তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে।

আয়ান-অধরা হাত টা ছাড়ো।আমি রুমে যাবো। ফ্রেশ হতে হবে।

অধরা -আয়ান বিয়ে করে তুমি এতোটা পাল্টে গেলে? তুমি দেখছি পুরোই বউ পাগল হয়ে গেছো।

আয়ান -প্লিজ অধরা উল্টা পাল্টা কথা বলবে না।আমাকে যেতে দাও প্রাপ্তি রুমে একা আছে।

অধরা ও আর কথা বাড়ালো না।হাত টা ছেড়ে দিয়ে এসে ভাবি (সুমিকে)সত্যি করে বলো তো প্রাপ্তির সাথে আয়ানের কি আগে কোনো রিলেশন ছিলো?

সুমি ভাবছে অধরা কে কি থেকে কি বলবে বুজতে পারছেনা।মিনু এসে সুমি আমতা আমতা করছে দেখে ভাবী ভাইয়া তোমাকে ডাকছে আগে গিয়ে কথা শুনে আসো। পরে এসে না হয় অধরাকে সব বলবে।

মিনুর কথা শুনে সুমি যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো।
প্রাপ্তির বিয়ের এক সাপ্তাহ কেটে গেলো। এই বাড়ী সবাই প্রাপ্তিকে ভালোবেসে ফেলেছে।প্রাপ্তিও সবাইকে ভালোবাসে।শুধু আয়ানে সাথে কথা হয়না প্রাপ্তির। আয়ান সবসময় নিজেই বকবক করে যায় আর প্রাপ্তি শুধু শুনেই যায়।সকালে নাস্তা করে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো আয়ান আর আকাশ।
সুমি রান্নাঘর থেকে দৌঁড়ে এসে আকাশ অফিস থেকে আজ বিকালে চলে এসো, মা ফোন করেছে একবার গিয়ে দেখা করে আসতে।

আকাশ -আচ্ছা রেডি হয়ে নিও আমি এসে তোমাকে নিয়ে যাবো।
কথাটা বলতে বলতে বাসা থেকে বের হবে এমন সময় দেখে আবিদ চৌধুরী দরজায় দাঁড়িয়ে।

আকাশ -(অবাক হয়ে)আব্বু! তুমি?

আবিদ চৌধুরী -হুম আমি! (বাসার ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে)কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বল?রফিক গাড়ী থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে আসো।

আয়ান এসে, আব্বু! সত্যিই অনেক বড় সারপ্রাইজ । তুমি না একমাসে জন্য গেছো।

আবিদ চৌধুরী -বাড়ীর ছোটো লক্ষী কে দেখার জন্য কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করলাম।

আকাশ -আব্বু তুমি একবার বলে আসতে। আমি না হয় এয়ারপোর্ট গিয়ে তোমাকে নিয়ে আসতাম।

আবিদ চৌধুরী -এতো চিন্তা করতে হবে না।আমার কোনো প্রবলেম হয়নি।
সুমি গিয়ে আয়েশা বেগমকে ডেকে আনলেন।
আয়েশা বেগম -সবাইকে কি সারপ্রাইজ দিলে নাকি?
আবিদ চৌধুরী -হুম ঠিক বলছো।কই সবাইকে ডাকো। সুমি ছোটো বউ, ঝিনুক মিনু এরা কোথায়?
আয়ান বার বার উপরের দিকে তাকাচ্ছে। সুমির দিকে তাকিয়ে ইশারা দিয়ে প্রাপ্তিকে নিয়ে আসতে বললো।
রুমকি দৌঁড়ে এসে নানা ভাইয়া এসেছে নানা ভাইয়া এসেছে বলে কোলে উঠলো।

আবিদ চৌধুরী -আমার রুমকি মনি দেখছি আমাকে ভুলেই গেছে।আমি যাওয়ার পর আমাকে একবারো ফোন দেয়নি।
কথা গুলো বলতে বলতে সিঁড়ি দিকে নজর পড়তেই দেখে সুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে নামছে।সবাই চুপ হয়ে আছে। আয়ান মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়েশা বেগম চুপচাপ গিয়ে সোফায় বসে পড়লো।
প্রাপ্তি কাছে এসে আবিদ চৌধুরীকে পা ছুঁয়ে সালাম করে উঠে দাঁড়াতেই, সুমি কে ও?

সুমি -বাবা ও,, ও,, আয়ানের বউ!

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:২০

1

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:২০

#Rabeya Sultana Nipa

 

_ আসিফের ফোন শুনে আয়ানের হাত থেকে ফোন নিয়ে আয়ানের রুমে চলে গেলো। প্রাপ্তি ফোন রিসিভ করে,চুপ করে আছে।

আসিফ -হ্যালো! প্রাপ্তি কেমন আছিস তুই?

প্রাপ্তি-ভালো। তুই কেমন আছিস? অরণী কেমন আছে?আব্বু আম্মু কেমন আছে?

আসিফ -আস্তে আস্তে এতো প্রশ্ন একসাথে করলে আনসার দিবো কি করে? সবাই ভালো আছে।তুই ঠিক আছিস তো?

প্রাপ্তি-জানিস ভাইয়া এই বাড়ীরর সবাই অনেক অনেক ভালো।বড় আপু কাল একটু রাগ ছিলো সকালে দেখি সবার থেকে ওনি আমার হয়ে কথা বলছে?

আসিফ -তাই বেশ ভালো। আমিও চাই আমার বোনটা অনেক সুখে থাকুক।আচ্ছা তোরা কখন আসছিস?

প্রাপ্তি-আমি তো জানিনা।ভাইয়া অরণী আসবে না?

আসিফ -না! সিয়ামের মাকে বলেছি ওনি বলেছে দুইদিন পর।শুন ফোন টা আয়ানের কাছে দে!

প্রাপ্তি -একটু ওয়েট কর দিচ্ছি।প্রাপ্তি ফোন নিয়ে দরজার কাছে আসতেই দেখে আয়ান দাঁড়িয়ে আছে। ফোনটা এগিয়ে দিয়ে প্রাপ্তি নিছে নেমে চলে এলো।

আয়ান -(প্রাপ্তির চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে থেকে)জ্বী বলুন?

আসিফ -আয়ান! তোমরা আসবে কখন?

আয়ান -আপনাকে একটু পর জানাবো।আম্মুকে আগে বলি তার পর।

আসিফ -আচ্ছা ওনাকে বলে আমাকে জানিও।

অধরা প্রাপ্তিকে আসতে দেখে, এই মেয়ে শুনো।

প্রাপ্তি -আমাকে বলছেন?

অধরা -হুম, তোমাকেই।

প্রাপ্তি অধরার কাছে আসতেই,অধরা বললো পড়াশুনা কতো দূর?
প্রাপ্তি-জ্বী অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।

অধরা -ভালোই! আর পড়ার ইচ্ছা নেই?

প্রাপ্তি কিছু বলছেনা কি বলেতে কি বলে পেলে পরে আবার ঝামেলা হবে।সুমি প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখে অধরা আয়ান যদি চায় তাহলে তো পড়বেই।তোমার ওকে নিয়ে না ভাবলেও চলবে। প্রাপ্তি তুমি রেডি হয়ে নাও। মা বলেছে আয়ান আর তুমি তোমাদের বাড়ীতে যাবে।
প্রাপ্তি সুমির দিকে এগিয়ে এসে, মা বলেছে?

সুমি -হুম মাই তো বললো।যাও রেডি হয়ে নাও।কথাটা শুনে রুমকি এসে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে মামনি চলে যাবে?
রুমকিকে কোলে তুলে নিয়ে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে আপু আপনিও চলেন না!

ঝিনুক -না প্রাপ্তি তুমি গিয়ে ঘুরে আসো আমরা অন্য একসময় যাবো।

প্রাপ্তিও কথা বাড়ালো না,কারণ ওই বাড়ীতে গেলে কে কি বলবে তার কোনো ঠিক নেই। আয়ান এসে তুমি গিয়ে রেডি হয়ে নাও আমি আসছি।কথাটা বলেই মায়ের কাছে রান্না ঘরে চলে গেলো।
পিছন দিক থেকে মাকে জড়িয়ে ধরে আম্মু আব্বু ফোন দিয়েছে?

আয়েশা বেগম -রাতে কথা হয়েছে, আর তো ফোন দেয়নি।কেন কিছু হয়েছে?

আয়ান -না এমনি।আচ্ছা আম্মু প্রাপ্তিকে তোমার কাছে কেমন লেগেছে?

আয়েশা বেগম -ওনি এখন এইখানে আসছেন মায়ের কাছ থেকে বউয়ের গুনো গান শুনার জন্য।এখন আমাকে ছাড় শ্বশুর বাড়ী থেকে আগে ঘুরে আয় তারপর দেখা যাবে।তবে এইটুকু বলতে পারি লক্ষ্মী একটা মেয়ে।এখন যা তো, তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে।

আয়ান -thank you আম্মু!

আয়ান রুমে গিয়ে দেখে প্রাপ্তি রেডি হয়ে বসে আছে। আয়ান কে দেখেই দাঁড়িয়ে পড়লো।

আয়ান -তোমাকে যতো দেখি ততো অবাক লাগে একটা মানুষকে এতো সুন্দর কী ভেবে লাগতে পারে?তবে এটাও ভালো লাগছে তোমার অন্য মেয়েদের মতো রেডি হতে এতো সময় লাগেনা।
(প্রাপ্তি অন্য দিকে তাকিয়ে কথা গুলো শুনছে।)
তুমি একটু ওয়েট করো আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি।
একটু পর দুজনেই রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।
ঝিনুক মুছকি হেঁসে, একদম পরীর মতো লাগছে।(সুমির দিকে তাকিয়ে)কি বলো সুমি?
সুমিও হাঁসি দিয়ে এগিয়ে এসে, ঠিক বলেছো আপু আমাদের বাড়ীর ছোটো পরী।
অধরা বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে আছে সবার দিকে, এই মেয়ের মাঝে কি এমন আছে সবাই ওকে নিয়ে এতো তামাসা করছে।মনে হচ্ছে এই বাড়ীয়ে শুধু ও একাই আছে। আমি যে এতো দিন পরে এলাম তার দিকে কারো কোনো খেয়ালি নেই।
প্রাপ্তি আয়ানের মাকে আর কাকা কাকী কে সালাম করে নিলো। রুমকিকে কোলে নিয়ে আম্মু সব কথা শুনবে ঠিক আছে।আমি ফিরে এসে তোমাকে অনেক গল্প শুনাবো।বুজেছোতো,,,,,বলেই হাঁসি দিয়ে রুমকির কপালে একটা চুমু দিলো।
রুমকিকে নামিয়ে দিয়ে, মা! আপনার শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন।আয়ান চুপচাপ প্রাপ্তিকে দেখেই যাচ্ছে, প্রাপ্তিকে সে যতো দেখছে ততো সে মুগ্ধ হচ্ছে সবার সাথে কি সহজ ভাবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কে বলবে কালকেও এই মেয়ে মাঝে অনেক রাগ ছিলো। যার রাগে পুরো বিয়ে বাড়ী কেপেছে,আর সেই মেয়ে আজ কতো ঠাণ্ডা।
সুমি আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই, পাশে এসে আস্তে করে বললো,কিইইইইইই,,,,যতো দেখি মন ভরে না তাই না? এইবার কিন্তু চোখ নষ্ট হয়ে যাবে।

আয়ান নিজের চুল গুলো ঠিক করতে করতে সুইট হার্ট বেশী বেশী বলেই হাঁসতে শুরু করলো।

আয়েশা বেগম -বাড়ী এসে অনেক হাঁসতে পারবে এখন যাও। এমনিতেই অনেক বেলা হয়ে গেছে।আর বাসার গাড়ীটা নিয়ে যা।আকাশ ড্রাইভার কে বলে দিয়েছিস তো?

আকাশ আমি আগেই বলে রেখেছি ড্রাইভার কে।

আয়ান -ড্রাইভার কে বলে রেখেছো মানে?
আমি গাড়ী নিয়ে যাবো না।আমার মোটরবাইকে করেই যাবো।

আকাশ -ফাজিল কথাকার! তুই নতুন বউকে নিয়ে মোটরবাইকে যাবি?

আয়ান -হুম যাবো। আর তোমাদেরও চিন্তা করতে হবে না।

কথাটা বলেই আয়ান বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো।
আকাশ -দেখেছো আম্মু! তোমার এই ছেলের কখনোই কি বুদ্ধি হবে না?

সুমি -তুমি এই রকম করছো কেনো।ওর তো একটা স্বাদ আহ্লাদ থাকতে পারে।নিজের সেটা নাই বলে অন্য কাউর থাকবেনা তাতো না?

আকাশ সুমির কথা শুনে কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।
আয়ান প্রাপ্তিকে নিয়েই মোটরবাইক প্রাপ্তিদের বাড়ী সামনে এসে থামতেই আসিফ এগিয়ে এসে তাদেরকে বাসার ভিতরে নিয়ে গেলো।প্রাপ্তি এসেছে শুনে আশে পাশের মানুষ আসতে শুরু করলো আয়নকে দেখার জন্য।আয়ান এসে আজাদ সাহেব আর নিলিমা বেগমকে সালাম করলো। নিলিমা বেগম আয়ান কে প্রাপ্তির মামা মামী, কাকা,কাকী, কাজিনদের সবার সাথে পরিচয় করাতে লাগলো।প্রাপ্তি এসে কাউকে কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।পাশের বাড়ীর রানু কাকী এসেছে, সাথে করে আরো ৭/৮ জন মহিলাকেও নিয়ে এসে কই আসিফের মা তোমাদের নাকি নতুন জামাই আসছে?
আয়ান তাদের দেখে সালাম দিলো।

রানু কাকী -ওয়ালাইকুম সালাম! তো বাবা কেমন আছো? সব ঠিকঠাক তো?

আয়ান -জ্বী, আপনার কথা বুজলাম না।

রানু কাকী -কি আর বুজবা,তোমরা ছেলেরা মেয়ে একটা দেখলে তো পাগল হয়ে যাও।
খুঁজ খবর নিয়ে বিয়ে করেছো নাকি এমনিতেই গলায় ঝুলিয়ে নিয়েছো।

আয়ান -গলায় ঝুলাতে যাবো কেনো। সম্মানের সাথেই আমি ওকে বিয়ে করেছি।আর আপনি কি বলছেন এই সব?

আসিফ -কাকী আপনি এইখান থেকে এখন যান। আমদের টা আমাদের বুজতে দিন।

রানু কাকী -আরে বাবা! আমরা এইখানে থাকতে আসিনি।তোমাদের অপকর্ম তোমরা ডেকে রাখো তাতে আমাদের কী। নিজেদের মেয়েকে তো অসহায় একটা ছেলেকে পেয়ে তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছো এখন আমাদের বললেই দোষ। তোমাদের মেয়েকে যে তিন দিন দরে আটকে রেখে কি করেছে না করেছে আমরা তো সবি জানি।কি বাবা তুমি সব জেনে বিয়ে করেছো তো?

আয়ান -আপনারা আর একটাও বাজে কথা বলবেন না।আমি ওর সব জেনেই বিয়ে করেছি।আপনাদের এইটা নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।আপনাদের এতোক্ষণ সম্মান দিয়েই কথা বলছি।যদি আমার বউয়ের নামে আর একটাও বাজে কথা বলেন তখন আমি ভুলে যাবো আপনারা আমার শ্বশুরের এলাকার লোক।

রানু কাকী -এই তোরা চল।আজকাল ভালো কথা বলতে নাই।
সবাই চলে যাওয়ার পরে আয়ান দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে আছে আর গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে।
আয়ান -প্রাপ্তিইইইইইই,,,,
আয়ান প্রাপ্তি বলতেই প্রাপ্তি চোখের পানি মুছে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।
পিছন পিছন আয়ান ও তার রুমে গেলো।

আয়ান -প্লিজ এইভাবে কান্না করোনা।মানুষ তো বলবেই। তাই বলে কান্না করবে।আমি জানি তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।কিন্তু আমার দোষ কি বলো?আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি কোনো অসম্মান বা করুণা নয়।লোকে কথা শুনে যদি কান্নাকাটি করো তাহলে এইটা কি ঠিক হবে।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৯

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৯

#Rabeya Sultana Nipa

 

__প্রাপ্তির গম্ভীর চোখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।(মনে মনে ভাবছে)তাহলে কি তার ধারণায় ঠিক সব ছেলেই একরকম? ওনার নাকি ১০.০০ ছাড়া ঘুম ভাঙে না এখন ৭.০০ না বাজতেই অন্য মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছে।আমিও না কি বুজে এইসব ন্যাকামি দেখছি।

প্রাপ্তি আয়ানের থেকে মুখ ফিরিয়ে আয়েশা বেগমমের দিকে তাকিয়ে মা চলুন আপনি না কোথাও যাবেন?

আয়েশা বেগম -ওহ্ আমি তো ভুলেই গেছি।অধরা তুমি আয়ান কে নিয়ে নাস্তা করতে আসো আমরা বরং আসি।

আয়ান অধরাকে সরিয়ে, আম্মু দাঁড়াও!
তুমি যাও আমি প্রাপ্তিকে নিয়ে আসছি।

আয়েশা বেগম -আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আয়।কথাটা বলেই চলে গেলেন আয়েশা বেগম।

প্রাপ্তি অন্য দিকে ফিরে আছে দেখে আয়ান অধরাকে প্রাপ্তির সামনে নিয়ে এসে, আমার মনে হয় তোমাদের পরিচয় হয়নি এখনো, প্রাপ্তি! ও আমার কাজিন, এবং ফ্রেন্ড। আমি যখন পড়া লেখার জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলাম তখন আমি ওদের বাসায় থাকতাম।কথাটা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের দিকে ফিরে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ভাবছে এখনি এই অবস্থা আর বাসায় থাকাকালীন কি করছে আল্লাই ভালো জানে।প্রাপ্তিকে এইভাবে তাকাতে দেখে,
অধরা! ও হচ্ছে আমার ওয়াইফ প্রাপ্তি।

অধরা -(হাত বাড়িয়ে দিয়ে)হাই!

প্রাপ্তি -হ্যালো!নাইছ টু মিট ইউ।

আয়ান প্রাপ্তি মুখে কথা শুনে, আচ্ছা তোমরা কথা বলো,আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

অধরা -পরে এসে কথা বলবো। এখনো কারো সাথে দেখা হয়নি আগে তাদের সাথে দেখা করে আসি।

আয়ান -আচ্ছা! তুমি যাও, প্রাপ্তি! তুমি বসো আমি আসা ছাড়া এক পা ও এগুবে না।আয়ানের কথা শুনে প্রাপ্তি এসে খাটের উপর বসলো।
আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে প্রাপ্তি সত্যিই বসে আছে, ফোন হাতে নিয়ে সুমিকে ফোন দিয়ে সুইট হার্ট তুমি কোথায়?একটু আমার রুমে আসো।
সুমি এসে কি ব্যাপার আয়ান আজ এতো তাড়াতাড়ি তাও আবার ফোন করে ডাকা হচ্ছে কেনো।কোনো সমস্যা?
প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে সে চুপচাপ হয়ে বসে আছে।সুমি আয়ানের দিকে তাকিয়ে প্রাপ্তিকে দেখিয়ে, আয়ান! ওর মন খারাপ কেনো?

আয়ান -ও তো এই বাড়ীতে আসার পর থেকে তো এইভাবেই আছে।

সুমি -রাতে এতো ভালোবাসা দিয়েও ঠিক করতে পারলানা? যাইহোক ডেকেছো কেনো?

আয়ান -ছোটো কাকারা আসছে, ওকে একটু রেডি করিয়ে নিছে নিয়ে আসো আমি গিয়ে দেখা করে আসি।

সুমি -সরি আসলে আমি একদম ভুলে গিয়েছিলাম এই কথা। তুমি যাও আমি এখনি রেডি করে নিয়ে যাচ্ছি।

রফিক সবাইকে নাস্তা দিচ্ছে টেবিলে,বাড়ীর সবাই ড্রইংরুমেই আছে।আয়ান এসে কাকা কাকী কে সালাম করে, কেমন আছেন কাকাই?

কাকা-এই ভালো। তোর কি খবর বল? শেষমেশ তাহলে বিয়েটা করেই ফেললি? (কথাটা বলেই হা হা করে হাঁসতে শুরু করলেন আয়ানের কাকা)

আয়ান একটু লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

আকাশ -কিরে,,, তুমি মেয়ে মানুষের মতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো? বস এইখানে।

রুমকি এসে আকাশের কোলে বসতে বসতে মামা দেখো ছোটো মামনি আসছে।
কথাটা শুনেই আয়ান সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে হা করে আছে,আয়ানের দিকে তাকিয়ে সবাই মিটমিট করে হাঁসছে সেইদিকে তার কোনো খেয়ালি নেই।প্রাপ্তিও আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই, ভাবছে হনুমানের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেনো মনে হচ্ছে এইখানে শুধু আমিই আছি।
রাহাত -এহেমমম,,,,,আয়ান ভাইয়া সারা রাত দেখেও মন ভরেনি?
রাহাতের কথা শুনে আয়ান মুছকি হেঁসে, রফিক চাচা কফি টা দিয়ে যান।
আয়েশা বেগম রান্নাঘর থেকে হাত টা আঁচলে মুছতে মুছতে তুই এখন কিসের কফি খাবি আগে নাস্তা করে নে।আর সবাই আসো নাস্তাটা করে নাও এখনো অনেক কাজ পড়ে আছে।সুমি প্রাপ্তিকে কাকা কাকীর সামনে এনে,এই হচ্ছে তোমাদের আদরের আয়ানের বউ।

কাকী -মাসাল্লাহ্! আয়ানের বউ দেখতে তো অনেক মিষ্ট। (আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে)ভাবী সত্যিই বলছি আয়ানের পছন্দ আছে বটে।লক্ষ্মী একটা মেয়ে।

কাকা -নতুন বউয়ের মুখ দেখে কিছু তো একটা দিতে হয়।(গহনার বাক্স টা বের করে প্রাপ্তির হাতে দিয়ে)সামনের বছর যেন নাতী নাতনীর মুখ দেখতে পাই।
কথাটা শুনে সুমি হাঁসি মুখটা মলিন করে প্রাপ্তির হাত ছেড়ে দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো।আকাশ সুমিকে চলে যেতে দেখে সুমি শুনো! কোথায় যাচ্ছো বলেতে বলতে সুমির পিছন পিছন রান্নাঘরে চলে গেলো।

কাকা -আমি কি কিছু ভুল বলে পেললাম?

আয়েশা বেগম কথা ঘুরিয়ে কিছু ভুল হয়নি।এখন সবাই চলো নাস্তা করে নাও।

অধরা মিনুর সাথে কথা বলতে বলতে নিচে নেমে এসে, আয়ানের হাত ধরে টেনে আয়ান চলো তোমার সাথে নাস্তা করবো।
ঝিনুক নিহাদের কানের কাছে, এইমেয়েকে বেশী সুবিধার লাগছেনা। একটা ঝামেলা পাকানোর জন্য বসে আছে।কথাটা বলে ঝিনুক উঠে গিয়ে অধরা আমার ইচ্ছে করছে কি জানো আমি তোমার সাথে বসে নাস্তা করবো।আয়ান আজ ওর বউয়ের সাথে বসে নাস্তা করুক। তুমি আমার সাথে বসো।কতো দিন পর তোমার সাথে দেখা।

অধরা -না আপু তোমার সাথে অন্য একদিন আজ আমি আয়ানের সাথেই বসি।আয়ান তাড়াতাড়ি নাস্তা করে নাও তুমি আর আমি বাহিরে ঘুরতে যাবো।আয়ান কথাটা শুনে বার বার প্রাপ্তির দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্তি এইদিকে কান না দিয়ে আয়েশা বেগমকে সবাইকে নাস্তা দিতে হেল্প করার জন্য এগিয়ে গেলো।
ঝিনুক আবারো অধরাকে বলতে লাগলো, ওমা,,,,, তোমাকে বলা হয়নি তুমি আয়ানকে নিয়ে ঘুরতে যাবে কি করে আয়ান তো একটু পর প্রাপ্তির সাথে প্রাপ্তিদের বাড়ী যাবে।তাদের তো আজ রিসেপশন পার্টি হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সেটা হচ্ছে না, আব্বু আসার পর হবে।ঝিনুকের কথা শুনে আয়েশা বেগম মুখে হাত দিয়ে মুখ ছেপে হাঁসছে।আকাশ ও সুমিকে বুজিয়ে রান্নাঘর থেকে নিয়ে এসেছে।
অধরা -আপু কি বলেছে আয়ান? তুমি সত্যি আমাকে রেখে ওইমেয়েটার বাড়ীতে যাবে?
আয়ান অধরার কথা শুনে, কি ওই মেয়েটা ওই মেয়েটা করছো অধরা? ওর একটা নাম আছে ওকে নাম ধরেই ডাকবে।
ঝিনুক এসে প্রাপ্তির পাশে দাঁড়িয়ে,ওই মেয়ে বেশী সুবিধার নয় সময় থাকতে নিজের হ্যাজবেন্ডকে নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করো।না হলে পরে প্রস্তাতে হবে।ঝিনুকের কথা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ভাবী কাল সত্যিই বলে ছিলো আপু সবার থেকে আলাদা এই গরম তো এই নরম।একটা মানুষের হাজারো ভাবে ভালোবাসতে পারে এইটা ওনাকে না দেখলে বুজতামই না।

ঝিনুক প্রাপ্তিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে, এইভাবে হা করে তাকিয়ে কি দেখছো যাও নিজের বরকে ওই মেয়েত হাত থেকে সামলাও।

প্রাপ্তি ঝিনুকের কথা শুনে, (কমল স্বরে) আপু যে থাকার সে এমনিতেই থাকবে।তাকে নিয়ে আমি কোনো জোর করতে চাইনা।ওনি নিজেই সবার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে এই বাড়ীতে এনেছেন তিনি যদি বলেন আমাকে চলে আমি চলে যাবো।

ঝিনুক -তোমরা যা ভালো মনে করো।

সুমি -বলেছিলম না দেখবে আপু তোমাকে ঠিক ভালোবেসে পেলবে।

সবাই নাস্তা শেষ করে ড্রইংরুমে আড্ডা দিচ্ছে।আয়ান সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছে ঠিকে মন পড়ে আছে প্রাপ্তির দিকে,প্রাপ্তি সবার সাথে টুকটাক কথা যাই বলে আয়ানের সাথে তার এখনো কোনো কথা হয়নি।আচ্ছা ও কি আমার সাথে কোনো কথায় বলবে না?আমার কি অন্যায়, নাকি আমাকে ওর পছন্দ হয়নি? আয়েশা বেগম রান্না করছে রফিক আর সুমি হেল্প করছে।প্রাপ্তি উঠে রান্নাঘরে গিয়ে দাঁড়াতেই,

সুমি -তুমি আবার উঠে এলে কেনো প্রাপ্তি?

প্রাপ্তি -আপনাদের একটু হেল্প করি?

সুমি -এখন কিচ্ছু করতে হবে না।আমি আর মা তো আছি কয়েকদিন যাক তারপর মায়ের ছুটি। তুমি আর আমি মিলে সব সামলে নিবো।
সুমির কথা শেষ হতেই আয়েশা বেগম বললো, প্রাপ্তি! তুমি রান্না করতে পারো?
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি কি বলবে বুজতে পারছেনা।কারণ সে কখনো রান্না করেনি মাঝেমাঝে দুই এক বার করেছে তাও আবার ডিম ভাজা।প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখে আয়েশা বেগম বললো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, বেশী ভাগ মেয়েই রান্না শিখে শ্বশুর বাড়ীতে যায় না।আমি তোমাকে সব শিখিয়ে দিবো।প্রাপ্তি আয়ানের মায়ের কথা শুনে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে,

সুমি -আরে,,, তুমি কান্না করছো কেনো?
মা এই রকমই,আমাকেও সব কিছু নিজের হাতে শিখিয়েছিলো।

প্রাপ্তি সবার কথা শুনে ভাবছে এই বাড়ী মানুষ গুলো এতো ভালো, কেউ আমাকে একবারো অন্য চোখে দেখেনি।আমি কি সবার এতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য? কথা গুলো ভাবতেই পিছন থেকে আয়ান এসে ফোনটা প্রাপ্তির সামনে ধরে তোমার ভাইয়া ফোন করেছে কথা বলো!

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৮

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে, বুজা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক লজ্জা পেয়েছে।আসলে আপনি কিছু মনে করবেন না।আপনি শাড়ী চেঞ্জ করেছেন বলে ভাবী এই কথা বলেছে।

প্রাপ্তি কিছু না বলেই খাটে একপাশে গিয়ে বসলো।
আয়ান-আপনি খাননি কেনো? চলেন এখন খাবেন।
প্রাপ্তি কোনো কথা বলছে না দেখে আয়ান বললো, কি হলো খাবেন না? আর হে আমি কিন্তু এতো আপনি আপনি করতে পারবোনা। আমি তুমি করেই বলবো।
প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখেই আয়ান বললো হুম বুজেছি চুপ থাকা মানে সম্মতির লক্ষণ।
তাহলে এইবার খেয়ে নাও।খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। সারাদিন তোমার উপর অনেক ধকল গেছে।

প্রাপ্তি আয়ানের কথা যতো শুনছে ততো অবাক হচ্ছে।আয়ান বার বার তার ধারণা গুলো ভুল প্রমাণ করছে।এই ছেলেকি সবার থেকে আলাদা নাকি? ছেলেদের প্রতি আমার যা ধারণা এই দেখছি পুরোই উল্টো।
মনে ভিতর তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে নাকি আমায় দেখাছে?সে সবার থেকে আলাদা।

আয়ান খাবারের প্লেট প্রাপ্তির সামনে ধরতেই প্রাপ্তি চমকে উঠে প্লেটের দিকে তাকালো।এই দেখছি মহা মুশকিল পড়া গেলো।না খাইয়ে দেখছি ছাড়বেনা।পেটেও তো অনেক ক্ষুধা সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। এর ছেয়ে বরং খেয়েই নি।প্রাপ্তি খাবার প্লেট টা হাতে নিয়েই আয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে খেতে শুরু করলো।আয়ান প্রাপ্তির খাওয়া দেখে নিজের খাওয়া বন্ধ করে মুখে হাত দিয়ে মুছকি মুছকি হাঁসছে।
প্রাপ্তি খাওয়া শেষ করে আয়ানের দিকে নজর পড়তেই (মনে মনে) এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছে। মার্বেলের মতো চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে মেয়ে মানুষ এই জন্মই দেখে নাই।

আয়ান হালকা একটু কেশে এইযে, মিসেস আয়ান, তুমি আমার সাথে কথা না বলে এইভাবেই থাকবে?
প্রাপ্তি কোনো কথার আনসার না দিয়ে বার বার খাটের দিকে তাকাচ্চিলো,
প্রাপ্তির তাকানো দেখে আয়ান বুজতে পেরে, তুমি কি ভেবেছো তোমার সাথে শুইলে আমি আমার অধিকার ফলাবো তোমার উপর? (তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে) কখনোই না।আয়ানের মন যদি চায় তোমাকে ছুঁয়েও দেখবে না তাহলে সে সত্যিই তোমাকে ছুঁয়ে দেখবেনা।তুমি নিচিন্তায় ঘুমাতে পারো।
প্রাপ্তি সত্যি সত্যি একপাশ হয়ে শুয়ে পড়লো।
আয়ান উঠে হাতটা ধুয়ে এসে খাটের আরেক পাশে ফোন নিয়ে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লো।ফোন নিয়ে বন্ধুদের এসএমএস এর আনসার দিতে দিতেই রাতের অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলো।হঠাৎ প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই হালকা মৃদু আলোতে প্রাপ্তিকে পুরো অপ্সরী মতো লাগছে।ঘুমন্ত মানুষকে এতো সুন্দর দেখায় আয়ান তা আজ প্রথম প্রাপ্তিকে দেখে বুজলো।নিষ্পাপ শিশুদের মতো কি সুন্দর করে ঘুমাছে।হয়তো প্রাপ্তি আমায় বিশ্বাস করেছে না হলে এতো নিচিন্তে একটা মেয়ে কখনোই ঘুমাতো না।বিশ্বাস কথাটা মনে আসতে আয়ানের মনে শান্তির রেখা ফুটে উঠলো।ফোনটা পাশে রেখে ঠিক করে শুয়ে প্রাপ্তির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আয়ানের এইভেবে ভালোলাগছে যাকে সে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ছিলো তাকেই সে তার জীবনের সাথী হিসেবে পেয়েছে।থাকুক না প্রাপ্তির হাজারটা সমস্যা। সব সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে সে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নেই।
প্রাপ্তি ফজরের আজানের শব্দ শুনেই উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে নিলো। জায়নামাজ টা উঠিয়ে রাখতে গিয়ে আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি।একটা ছেলেকে ঘুমালে এতো মায়া লাগে সে কখনো দেখেনি।প্রাপ্তির আয়ানের থেকে চোখ ফিরাইতে ইচ্ছে করছেনা।আচ্ছা এই মানুষটা কি আমায় সত্যি ভালোবেসে বিয়ে করেছে নাকি সবার সামনে মহৎ সাজার চেষ্টা করছে? দেখতে তো এতোটা খারাপ বুজা যায় না।অবশ্য দেখা না দেখায় কি যায় আসে।আয়ান এই পাশ থেকে ওপাশ ফিরতেই প্রাপ্তি তাড়াতাড়ি এসে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লো। একটু পর দরজা নক করা শব্দ পেয়ে উঠে বসে ভাবছে এতো সকাল বেলা কে আসলো আবার।ভাবী নয়তো? ও আল্লা এইবার এসে আবার কি বলে তুমিই ভালো জানো। প্রাপ্তি খাট থেকে নেমে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা খুলে দিয়ে দেখে আয়ানের মা।প্রাপ্তি সুস্থির নিশ্বাস পেলে মুছকি হাঁসি দিয়ে মনে মনে ভাবছে আল্লা এইযাত্রায় বেঁচে গেলাম।

আয়েশা বেগম প্রাপ্তির হাঁসি দেখে নিজেও হেঁসে তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না এখন ঘুম থেকে উঠেছো?

প্রাপ্তি -জ্বী মা! উঠে ফজরের নামাজ আদায় করলাম।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে লক্ষ্মী মেয়ে, আমি জানতাম আমার আয়ান কখনো কোনো ভুল করতে পারেনা।আমার আয়ান তার যোগ্য বউকেই ঘরে এনেছে।
যাইহোক কাজের কথাটা বলি, আমি এইখানে এসেছি আয়ানের ছোটো কাকা কাকী এসেছে।ওরা তো আমেরিকায় থাকে তাই আসতে দেরী হয়ে গেলো। আয়ান উঠতে অনেক দেরী আছে মহারাজের ১০.০০টা ছাড়া ঘুম ভাঙবে না।চলো তোমাকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়েদি। প্রাপ্তি পা বাড়াতে যাবে তখনি আয়ান! আয়ান! বলে একটা মেয়ে রুমে ঢুকলো। প্রাপ্তিকে কিছু না বলেই আয়ানের কাছে চলে গেলো, এমন ভাব করছে মনে হচ্ছে প্রাপ্তিকে সে দেখেইনি।কি সব ছেলেদের মতো পোশাক পরে আছে।যাকে এককথায় মডার্ন মেয়ে বলে।

আয়েশা বেগম -(প্রাপ্তি মেয়েটার দিকে বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে) ওহ্ প্রাপ্তি ওর কথা তোমাকে বলায় হয়নি।ও হচ্ছে আয়ানের ছোটো কাকার একমাত্র মেয়ে,আমেরিকা থাকে।নাম অধরা,আয়ানের খুব ভালো বন্ধু।

অধরা -আয়ান!! তুমাকে আমি এইভাবে ডাকার পরেও তুমি ঘুমাবা?

আয়ান ঘুম ঘুম চোখে অধরা দিকে তাকাতে চমকে উঠে তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে অধরা তুমি!কখন এলে?

আয়ান দাঁড়াতেই অধরা আয়ানকে জড়িয়ে ধরে তোমাকে অনেক মিস করছি আমি।
আয়ানের খেয়ালি নেই তারা ছাড়াও এই রুমে কেউ আছে আয়ানে প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই,,,,,

চলবে,,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৭

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৭

#Rabeya Sultana Nipa

 

__কথাটা শুনেই আয়েশা বেগম ছেলের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ছেলেটা কি পাগল হয়ে গেলো নাকি।নিজের পায়ে নিজে এইভাবে কেউ কুড়াল মারে?ওই বাড়ীতে কি কি হয়েছে ধীরে ধীরে সব কিছু সুমি আয়েশা বেগমের কাছে বলতে লাগলো।সব শুনে আয়েশা বেগম আয়ান কে উঠিয়ে নিজের পাশে বসালো।

আয়ান -আম্মু তুমিও কিছু বলবে না? কেউ আমার পাশে থাকুক আর না থাকুক আমি জানি আমার আম্মু আমার পাশে থাকবে।

আয়েশা বেগম আয়ানের মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বললো আমি তোকে বলবো না ওই মেয়েকে ছেড়ে দে।কারণ আমি মেয়ে, আমি মা,আমি বোন, ওর কষ্ট টা আমি বুজি।আমি শুধু এইটুকুই বলবো তুই যখন মেয়েটাকে বিয়ে করে এনেছিস ওর কোনো অসম্মান করিস না।তোকে এখন একেক জন একেক কথা বলবে তুই কোনো কথায় কান দিস না।শুধু এইটাই ভাববি ওই এখন তোর জীবনে একটা অংশ।
কথা গুলো শুনে আয়ান চোখের কোনে পানি এসে গেছে আয়েশা বেগমকে জড়িয়ে ধরে thank you আম্মু।আমি তোমার কথা রাখবো।

সুমি আয়ানের চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে মায়ের বাধ্য ছেলে।

আয়েশা বেগম মনে মনে ভাবছে তোর বাবা আসলে জানি না ওই মেয়েকে মেনে নিবে কিনা।তাই তোকে আগেই কথা গুলো বলে দিলাম।যেনো তুই ওই মেয়েকে ছেড়ে না যাস।

ঝিনুক সুমিকে খুঁজতে খুঁজতে আয়েশা বেগমের রুমে এসে আয়ানকে দেখে বাহ্ আগেভাগে মাকে বুজিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আয়ান -তোর হিংসে হচ্ছে নাকি? অবশ্য তোর হিংসে হতেই পারে।

ঝিনুক -আমি তোকে হিংসে করি? এইটা তুই বলতে পারলি?

সুমি -আপু থাকনা।রুমকি কোথায়?

ঝিনুক -আমিও তাকে খুঁজতে এসেছি।এখানে এসে তো দেখি অন্য কিছু।

সুমি -আচ্ছা চলো দেখি ও কোথায় আছে।

রুমকি প্রাপ্তির পাশে গিয়ে গালে আঙুল দিয়ে প্রাপ্তিকে ভালো করে দেখছে।প্রাপ্তির চোখ পড়তেই মুছকি হাঁসি দিয়ে, এক হাত দিয়ে রুমকিকে কাছে টেনে এনে কোলে বসিয়ে, কি নাম তোমার?

রুমকি কি যেন ভেবে বললো আমি রুমকি। তুমি?

প্রাপ্তি -আমি প্রাপ্তি।

রুমকি -তুমি জানো আমি তোমার কি হই?

প্রাপ্তি -প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে না বুজালো।

রুমকি -ওমা এটাও জানোনা? আমি তোমার ছোটো মা হই ছোটো মা।এইবার বুজেছো?

প্রাপ্তি এইটাও মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।

রুমকি -তুমি কিন্তু আমার আরেকটা মামনি বুজলেতো?আচ্ছা তুমি গল্প বলতে পারো?

প্রাপ্তি -একটুআধটু পারি।

রুমকি -ধুত তোমার মধ্যে কোনো রোমাঞ্চ নাই।তাহলে ছোটো মামার সাথে কথা বলবা কেমনে।

কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে, তাই নাকি তুমি জানো রোমাঞ্চ কি করে করে।

রুমকি -ওই যে তোমার মতো একটুআধটু জানি।

সুমি আর ঝিনুক এসে দেখে রুমকির আর প্রাপ্তির ভালোই ভাব হয়েছে।

সুমি -বাহ্ আমাদের রুমকি মামনি দেখছি তার ছোটো মামনির সাথে ভালোই ভাব হয়েছে।এইযে প্রাপ্তি এই হচ্ছে এই বাড়ীর মহারাণী। ওর জেনো কোনো অযত্ন না হয়।

ঝিনুক -রুমকি আসো রাত অনেক হয়েছে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।এইখানে বসার কোনো দরকার নেই।
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি ঝিনুকের দিকে আড় চোখে তাকাতেই এই শুনো আমি তোমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি।

সুমি -আপু তুমি ওর সাথে এইভাবে কথা বলো না।

ঝিনুক -আমি কোনো ভাবেই কথা বলছিনা।তোমরা থাকো তোমাদের নিয়ে আমি যাই।
কথাটা বলেই ঝিনুক নিজের রুমে চলে গেলো।

সুমি -প্রাপ্তি! আপুর কথায় কিছু মনে করো না।আপু কিন্তু অনেক ভালো। হয়তো কাল দেখবে সবছেয়ে বেশী আপুই তোমাকে আদর করবে।

প্রাপ্তি -আমি কিছু মনে করিনি।এইগুলো শুনতে শুনতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে।

সুমি -আচ্ছা ঠিক আছে এখন চলো খাবে।

প্রাপ্তি -না ভাবী আমি একটু ও খেতে পারবো না।

সুমি -যার বউ সে দেখবে।এখন চলো তোমাকে রুমে দিয়ে আসি।মিনুটা কই গেলো। মিনু! এই মিনু একটু এইদিকে আসো।

মিনু এসে, ভাবী আমায় ডেকেছো?

সুমি-হুম চলো প্রাপ্তিকে রুমে দিয়ে আসি।

আয়ান এখনো আয়েশা বেগমের রুমে বসে আছে।কিরে বাবা এইখানেই বসে থাকবি?
আয়ান -আম্মু তুমি এতো ভালো কেনো বলো তো?

আয়েশা বেগম -কোনো মাই কখনো খারাপ হয়না।সব বাবা মাই তার সন্তানের জন্য ভালো চায়।এখন যাও রুমে যাও মেয়েটা মনে হয় একাই বসে আছে।

আয়ান মায়ের কোল থেকে মাথা উঠিয়ে, তুমি রেস্ট নাও তাহলে আমি আসি।

প্রাপ্তি বসে আছে আয়ানের রুমেই।রুমটাকে ফুল দিয়ে অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।
সব কিছুই গুছানো। ছেলেদের রুম এতোটা গুছানো হয় তার জানা ছিলো না।প্রাপ্তি মনে মনে তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে রুমটা সাজিয়েছে কার জন্য আর বসে আছে কে? আজ এইখানে অরণীর থাকার কথা ছিলো। আর এখন আমার মতো একটা মেয়ে বসে আছে।আচ্ছা বাসরঘরে নাকি দুজনের জীবনের জন্য একটা সপ্নের রাত।কিন্তু আমার তো কোনো সপ্ন নেই। থাকবেই বা কি করে আমার মতো মেয়েদের থাকার কথাও না। আয়ান চৌধুরী যখন নিজের অধিকার চাইবে আমি কি বলবো।অবশ্য ছেলে বলে কথা নিজের অধিকার ঠিকি ছিনিয়ে নিবে।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আয়ান দরজায় নক করে ভিতরে ঢুকলো। প্রাপ্তিকে বসে থাকতে দেখে, আরে,,,,,,আপনি এখনো ফ্রেশ হননি? এই ভারী সাজ নিয়ে কিভাবে বসে আছেন আপনার কষ্ট হচ্ছে না?কথাটা বলতে বলতে আলমারি থেকে একটা থ্রি পিজ বের করে প্রাপ্তির সামনে দিয়ে ওই পাশে ওয়াশরুম আছে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।(প্রাপ্তি আয়ানের কথা শুনে অবাক হয়েই তার দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে হয়তো তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসতে বলছে তার অধিকার ফলানোর জন্য নাকি?)এইযে,,,, হা াাাাাাাাাাা করে এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন?মশা ডুকে যাবে তো।(কথাটা শুনে লজ্জা পেয়ে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে)তাড়াতাড়ি উঠুন।
প্রাপ্তি উঠে জামা নিয়েই ওয়াশরুমে চলে গেলো। আয়ান ওই বাড়ী থেকে এসেই ফ্রেশ হয়ে আয়েশা বেগমের রুমে গিয়েছিলো । তাই তার ফ্রেশ হওয়ার চিন্তা নেই।ফোন টা হাতে নিয়ে খাটে বসে মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখে এসএমএস এ ভরপুর।অনেক ফ্রেন্ড এর এসএমএস দেখে আয়ানের মেজাজ টাই গরম হয়ে গেলো ফোনটা জিদ করে খাটের উপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে দুই হাত দিয়ে মুখটা মুছেই সামনে চোখ পড়তেই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুমের দরজা আটকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়ানের তাকানো দেখে প্রাপ্তিও লজ্জা পেয়ে গেছে।আয়ান নিজের অজান্তেই বলে উঠলো আমার ঘরে কি কোনো পরী নেমে আসলো নাকি?
এমন সময় দরজায় নক করার শব্দে আয়ানের হুশ ফিরে এলো।আয়ান গিয়ে দরজা খুলেই দেখে সুমি খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আয়ান -সুইট হার্ট তুমি এই সময়?

সুমি -দেখছো না খাবার নিয়ে আসছি।তোমার বউ তো কিছুই খায়নি।এখন সামনে থেকে সরো ভিতরে ঢুকতে দাও।নাকি সমস্যা আছে?

আয়ান -আরে না! না! আসো।
সুমি ঢুকেই প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই, আয়ানের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু একটা হাঁসি দিয়ে আয়ান বাবু আর দেরী সয়েছিলো না।তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি?
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি লজ্জায় নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।

আয়ান -সুইট হার্ট কি যা তা বলছো, কিছুই তো বুজতেছি না।

সুমি -গোসল ও সেরে নিয়েছে তারপর ও বুজাতে হবে? যাই হোক দুইজনি খেয়ে নাও কথা টা বলে সুমি হাঁসতে হাঁসতে চলে গেলো।
আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে, বুজা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক লজ্জা পেয়েছে।আসলে আপনি কিছু মনে করবেন না।আপনি শাড়ী চেঞ্জ করেছেন বলে ভাবী এই কথা বলেছে

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:১৬

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:১৬

#Rabeya Sultana Nipa

 

_সবাই প্রাপ্তির জন্য কান্নাকাটি করছে এতে প্রাপ্তির কোনো কুরুক্ষেপ নেই।প্রাপ্তি মনে মনে ভাবছে নিজের যে বিপদ যে নিজে ডেকে আনতে পারে সেটা এই ছেলেকে না দেখলে বুজতামই না।মিঃ আয়ান আপনি হয়তো বড়লোক বাবার ছেলে বিয়েটা আপনার কাছে ছেলে খেলা হয়তো মনে হয়েছে।নাকি নিজেকে সবার কাছে মহৎ সাজার জন্য বিয়ে করেছেন সেটা আল্লাহ ভালো জানে।আয়ান প্রাপ্তির কানের কাছে এসে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো মিসেস আয়ান চৌধরী আপনি মনে মনে যা ভাবছেন তা ঠিক নয়। আমি কারো কাছে মহৎ সাজার চেষ্টা করিনি।আপনাকে ভালোবেসেই বিয়েটা করেছি।
প্রাপ্তি আয়ানের দিকে তাকিয়ে,এই কি করে জানলো আমি কি ভাবছি?মানুষের মনের কথা পড়তে পারে নাকি?

আকাশ আসিফকে ডেকে এনে বললো, আসিফ এমনিতে অনেক দেরী হয়ে গেছে। এইবার তো আমাদের যেতে হবে।আমাদের গাড়ী এসে গেছে প্রাপ্তিকে বিদায় দেওয়ার ব্যবস্থা করো।

আসিফ -হ্যাঁ ভাইয়া দিচ্ছি।

সুমি, ঝিনুক, মিনু যে বিয়ে নিয়ে এতো আনন্দ ছিলো সেই বিয়েতে তারা মন মরা হয়ে আছে।

রুমকি ঝিনুককে চুপচাপ থেকতে দেখে নিহাদ কে বলতে লাগলো,বাবাই এই নতুন বউটা ভালো না?সবাই কেনো এমন কররছে?

নিহাদ -না মা! নতুন বউটা অনেক ভালো।নতুন বউ এখন আমাদের সাথে চলে যাবে তাই সবার মন খারাপ।

সুমি এসে প্রাপ্তির হাত ধরে এসো আমার সাথে আসো, সবার থেকে বিদায় নিয়ে প্রাপ্তিকে গাড়ীতে বসালো সুমি।নিলিমা বেগম মেয়ের নিস্তব্ধতা দেখে আজাদ সাহেবকে বললো দেখোছো মেয়ে কেমন জানি হয়ে গেছে।বিয়েটা দিয়ে কোনো ভুল করলাম নাতো? মেয়েটা কারো সাথে একটা কথাও বললো না।

আজাদ সাহেব আয়ানকে জড়িয়ে ধরে বাবা আয়ান তোমাকে বিশ্বাস করেই কিন্তু মেয়েটা তোমার হাতে তুলে দিলাম।তুমি তো সবি জেনেছো এবং জেনে শুনেই বিয়ে করেছো মেয়েটা অনেক গম্ভীর কাউকে শত কষ্টেও মুখ ফুটে কিছু বলেনা তাই বলছি মেয়েটার দিকে একটু খেয়াল রেখো। প্রাপ্তির বাবার কথা শুনে আয়ান বললো আপনি চিন্তা করবেন না।

সুমি মুছকি হাঁসি দিয়ে,আংকেল আপনি চিন্তা করবেন না আমরা সবাইতো আছিই।

আসিফ -ভাবী প্লিজ একটু খেয়াল রাখবেন।

সুমি -বললাম তো আসিফ কোনো চিন্তা করো না।আমরা সবাই মিলেই দেখবো।
প্রাপ্তি গাড়ীর ভিতরেই বসে চোখের পানি গুলোকে লুকানোর চেষ্টা করছে,আসিফ গাড়ী ভেতরে ঢুকে প্রাপ্তির চোখ গুলোকে মুছে আমি জানি তুই রাগ করে আছিস আমার উপর তাইনা? প্রাপ্তি বিশ্বাস কর আমি সবসময় চাই তুই ভালো থাকবি তুই সুখে থাকবি।আমার মনে হচ্ছে তোকে ভালো রাখার মানুষের কাছেই তোকে তুলে দিলাম।তুই আমার কথা কোনো একদিন মিলিয়ে নিস তোকে এই মানুষ টাই তোর অতীতকে ভুলিয়ে দিবে।(প্রাপ্তি কিছু বলছে না শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।)প্রাপ্তি! লক্ষ্মী বোন যাওয়ার আগেও আমার সাথে কথা বলবিনা? রাগ করেই থাকবি? কথাটা বলতেই প্রাপ্তি আসিফ কে জড়িয়ে ধরে ভাইয়া! আমি তোকে ছেড়ে যেতে পারবোনা। তুই ছাড়া আমাকে কেউ বুজেনা।(আসিফ প্রাপ্তির মাথা উঠিয়ে চোখ মুছে) কাঁদতে কাঁদতে কি করেছিস চেহারাটার।
আকাশ গাড়ীর সামনে এগিয়ে এসে, আসিফ আমাদের তো এমনিতেই দেরী হয়ে গেছে একটু তাড়াতাড়ি করো।

আসিফ প্রাপ্তিকে বসিয়ে নিজে বেরিয়ে এসে আয়ান তুমি বসো।
সব গুলো গাড়ী আগেই চলতে শুরু করলো।শুধু আয়ানের গাড়ীটাই বাকী ছিলো। আয়ান উঠে বসতেই সেটাও চলেতে শুরু করলো।গাড়ী পিছন পিছন আসিফ এগুতে থাকলো প্রাপ্তি পানি ভরা একজোড়া চোখ গাড়ী বাহিরেই তাকিয়ে ছিলো যতক্ষণ আসিফ কে দেখা যায় ততক্ষণ।
তারপর চুপ করে বসে ছিলো আয়ানদের বাড়ী আসা পর্যন্ত। আয়ান ও কিছু বলেনি।

আয়েশা বেগম অপেক্ষায় বসে আছে কখন ছেলের বউ আসবে।মিনু অবশ্য একবার ফোন করে বলেছিলো কি সব ঝামেলার কথা।তারপর কি হলো একবার জানালো না।সুমিদের গাড়ী এসে থামতেই আয়শা বেগম এগিয়ে দরজার দিকে গেলো।ঝিনুক রুমকিকে কোলে নিয়ে মন খারাপ করে বাসায় ঢুকেই সোঝা নিজের রুমেই চলে গেলো।আয়শা বেগমের সাথে একটা কথাও বললো না।সুমি ও এসে, একি মা! আপনি দরজায় দাঁড়িয়ে কেনো বউকে বরন করতে হবে তো।ওরা পিছনের গাড়ীতেই আছে হাতে বেশী সময় নেই।

আয়েশা বেগম -এতো উতালা হওয়ার কি আছে? আসুক না আগে।কিন্তু ওই বাড়ীতে কি এতো ঝামেলা হয়েছে সেটা বল? ঝিনুকও কিছু না বলে মন খারাপ করে রুমে চলে গেলো কি হয়েছে মা বলনা?

সুমি আস্তে করে আয়েশা বেগমের কাছে গিয়ে, মা! এখন এতো কথা বলার সময় নয় আমি তোমাকে পরে সব বুজিয়ে বলবো।আর শুনো বউকে এইখানে রাখা ঠিক হবেনা।যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আয়ানের রুমে দিয়ে দেওয়াটা ভালো হবে।

আয়েশা বেগম -তুমি কি বলছো আমি তো কিছুই বুজতেছিনা।

কথাটা বলতেই গাড়ী থেকে আয়ান নেমে এসে, ভাবী তুমি গিয়ে ওকে নিয়ে আসো, আয়ানের কথা শুনে সুমি মুছকি হেঁসে, হুম নিয়ে আসছি।
সুমি গিয়ে প্রাপ্তিকে নিয়ে এসে দরজায় দাঁড়াতেই আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে দেখে,মাসাল্লাহ্ আমার ছোটো ছেলের পছন্দ আছে বলতে হবে।সুমি আয়ানের মায়ের সামনে প্রাপ্তিকে দাঁড় করিয়ে, প্রাপ্তি ইনি আমাদের শাশুড়ি মা! শাশুড়ি বললে ভুল হবে, মা,বন্ধু, যা থাকে একটা সম্পর্কের মাঝে সবটা! প্রাপ্তি পা ছুঁয়ে আয়েশা বেগমকে সালাম করতে যাবে তখনি আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে উঠিয়ে আরে আরে পাগলি মেয়েটা কি করছে? পা ছুঁয়ে সালাম করতে হবে না।এই বাড়ী সবার ছোটো তুমি তাই আজ থেকে তুমি আমার ছোটো মেয়ে। কি বুজেছোতো?আর আমাকে মা বলে ডাকবে, শুধু মা না বুন্ধুও ভাববে এইটাও বুজেছোতো,,,,,বলে হা হা হা করেই হাঁসা শুরু করলো।
প্রাপ্তি সারাটা দিন মন খারাপ করে থাকলেও আয়ানের মায়ের কথা শুনে না হেঁসে পারলো না।মুছকি হাঁসি দিয়ে হ্যাঁ বুজালো।

এইদিকে সবাই প্রাপ্তিকে দেখেতে ড্রইংরুমে ভিড় জমিয়েছে।সুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে মোটামুটি পরিচয় করিয়ে দিলো।আয়েশা বেগম মিনু আর সুমি কে সব সামলাতে বলে নিজে রুমে গেলো আবিদ চৌধুরী ফোন দিয়েছে কথা বলার জন্য।আবিদ চৌধুরী বার বার ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করছে বিয়ের সব কিছু আকাশ সামলাতে পারছে কিনা। সুমি মিনুকে ডেকে নিয়ে বললো, এক কাজ করো মিনু! প্রাপ্তিকে আপাদত তোমার রুমে নিয়ে যাও।মাকে তো এখনো কিছু বলা হয়নি প্রাপ্তির ব্যাপারে।লোকজনকে দেখো সবাই কানাঘুষায় নেমেছে মনে হচ্ছে ওদের কানাঘুষার জন্য বেতন ভুক্ত কর্মচারী রাখা হয়েছে।

মিনু -ভাবী কিছু করার নাই এরা বলবেই কারণ বলার জন্য আমার ভাই নিজের হাতে বদনাম গুলো ওদের মুখে তুলে দিয়েছে। আর যতোই চেষ্টা করো এইগুলো থামাতে পারবেনা।

সুমি -আরে আমি সেই কথা বলছিনা।মা সবার মুখ থেকে জানার আগে আমরা বলে দিলে ভালো হয় না?

মিনু-আচ্ছা ঠিক আছে আমি নিয়ে যাচ্ছি। তবে মহারাজা কথায় গেলেন মহারানীকে রেখে? আমাদেরকে এখন ঝামেলার মধ্যে ফেলে নিজেই উধাও।
প্রাপ্তি সোপায় বসে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে।চারপাশ থেকে লোকজন একেকজন একেক কথায় বলে যাচ্ছে।প্রাপ্তি তাদের কথা গুলো নিজের শরীরের সাথে তেমন মাখছেনা।কারণ এই কানাঘুষা শুনা তার জন্য নতুন কোনো ব্যাপার নয়। এইগুলো শুনতে শুনতে সেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে মিনু এসে বললো উঠে দাঁড়াও! প্রাপ্তি দাঁড়াতেই প্রাপ্তির হাত ধরে টেনে নিজের রুমে নিয়ে গিয়ে খাটের উপর বসালো।মিনু প্রাপ্তির দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে মেয়েটাকে খারাপ লাগছেনা।আয়ানের পছন্দ আছে মানতে হবে।

প্রাপ্তি মিনুর দিকে চোখ পড়তেই, আপু আপনি কিছু বলবেন?

মিনু প্রাপ্তির কথা শুনে একটু চমকিয়ে,আরে না না! তুমি বসো আমি আসছি।
সুমি আয়েশা বেগমের রুমের দিকে পা এগুতেই কাজের লোক রফিক এসে, ভাবী! যে রান্নাটা বসিয়েছি যদি একটু দেখে নিতেন তাহলে ভালো হতো।

সুমি -আচ্ছা চলো পরে না হয় মায়ের কাছে যাবো।

আয়েশা বেগম ফোনে কথা শেষ করে উঠে দাঁড়িয়ে পিছনে ফিরে দেখে আয়ান দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।কিরে বাবা তুই দরজায় দাঁড়িয়ে আছিস কেনো ভিতরে আয়।
আয়ান ভিতরে এসে আয়েশা বেগমকে বসিয়ে পা দুটো জড়িয়ে কলে মাথা রেখে নিচে বসলো।
আয়েশা বেগম -কিরে বাবা! কি হয়েছে? মন খারাপ করে আছিস মেয়ে তো তোর পছন্দ করা মেয়ে তাহলে মন খারাপ কেনো?
আয়ান -আম্মু আমি যদি তোমাকে না জানিয়ে কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেতো?

আয়েশা বেগম -আমি জানি আমার আকাশ আর আয়ান কখনো কোনো ভুল করতে পারে না।যদিও কোনো ভুল করে সেটা কারো না কারো ভালোর জন্যই করবে।

আয়ান -আম্মু আজ আমি একটা ভুল করেছি অবশ্য এইটা ভুল কিনা আমি জানি না কারো ভালো হয়েছে কিনা আমি তাও জানি না শুধু জানি আমার ভালোবাসার জয় হয়েছে।

আয়েশা বেগম -কি হয়েছে বাবা আমি তোর কথা কিছুই বুজতেছিনা।তুই এতো পেছিয়ে না বলে সোজাসুজি ভাবে বল বাবা?

আয়ান -আম্মু ঠিকি বলেছো তোমাকে কথাটা সোজাসুজি ভাবেই বলা উচিত। আসলে আব্বু যে মেয়েকে ঠিক করে এসেছে এই মেয়ে সেই মেয়ে নয়। কিন্তু সেই দিন আমি ওকে পছন্দ করে ছিলাম ওই মেয়েকে নয়।

আয়েশা বেগম -তাতে কি হয়েছে তোর পছন্দ বড় কথা।

আয়ান -আরো একটা কারণ আছে আম্মু,এইমেয়ের জীবনে অনেক বড় একটা দুর্ঘটনা আছে সেটা শুনলে তো আব্বু কখনো মেনে নিবেনা আম্মু।

আয়েশা বেগম-কি হয়েছে বলতো?

আয়ান আমতা আমতা করে, আাাাাম্মুুুুুুুুুুুুুুও ও ও সুমি এসে আয়ানকে তোতলাতে দেখে, আয়ান আমি বলছি। আসলে মা ওই মেয়ে ধর্ষিতা।সুমি কতো সহজে কথাটা বলে পেললো দেখে আয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সুমির দিকে।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:১৫

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:১৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

__আয়ানের কথা শুনে আকাশ আর ঝিনুক আয়ানকে এক পাশে টেনে নিয়ে,

আকাশ -তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
না জেনে শুনে তুই মেয়েটাকে বিয়ে করবি?
আব্বু যখন জিজ্ঞাস করবে তখন কি বলবো?

আয়ান -ভাইয়া আমি ওই অরণী নামের মেয়েটা কে কখনোই বিয়ে করবোনা।বিয়ে যদি করতেই হয় আমি প্রাপ্তিকেই করবো ওর জীবনে যাই ঘটুকনা কেনো!

ঝিনুক -প্লিজ আয়ান তুই একবার ভেবে দেখ, এই মেয়ের সাথে এমন কিছু ঘটেছে যা এই এলাকার সবাই জানে।

আয়ান -আপু! তোরা ভালো করেই জানিস আমি এক কথার মানুষ। বিয়ে যখন আমি করবো বলছি ওই মেয়েকেই করবো।
আয়ান আসিফের কাছে এসে, ভাইয়া প্লিজ আমাকে একবার ওর সাথে কথা বলতে দিন।
আসিফ চোখে কোনে পানি নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক বুজিয়ে আজাদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে, আব্বু! তুমি বাহিরের দিক টা দেখো আমি এইদিক টা ঠিক করেই আসছি।

আসিফ আয়ানকে নিয়ে প্রাপ্তির দরজার সামনে গিয়ে দেখে দরজা ভিতর থেকে আটকানো। আসিফ দরজায় নক করে, প্রাপ্তিকে বলতে লাগলো,আমি জানি তুই আমার কথা গুলো শুনছিস।আমি তোকে কোনো কিছু নিয়ে জোর করবো না শুধু এইটুকু বলবো তোর জন্য যদি আমি সামান্য কিছুও করে থাকি সেই আবদার নিয়ে বলছি তুই দরজাটা একবার খোল।
আমি জানি তোর সঙ্গে আজ যা হয়েছে সব কিছুর জন্য আমি দায়ী। কি করবো বল আমি যে তোকে সুখে দেখতে চাই।কিরে,,,, দরজাটা খুলবিনা?ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।কথা বলতেই প্রাপ্তি দরজা খুলে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আসিফ আর আয়ানকে কিছু না বলেই খাটের এক কোণায় গিয়ে বসে পড়লো।
আয়ান রুমে এসে আসিফ কে বললো ভাইয়া আপনি কিছু মনে করবেন না আমি ওনার সাথে আলাদা ভাবে একটু কথা বলতে চাই।আসিফ কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।আয়ান চুপ করে থেকে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে একদম অপ্সরী। দেখেছেন আমার পছন্দ আছে মানতে হবে।
কথাটা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের দিকে আড় চোখে একবার তাকিয়ে আবার নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়ান আবার বলতে লাগলো আপনার জীবনে কি ঘটেছে আমার জানার দরকার নেই।আমি শুধু জানি আপনাকে প্রথম দেখাতেই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আরেক টা জিনিস আমি খেয়াল করেছি আল্লাহ চান আমাদের বিয়েটা হোক।
এই কথাটা শুনে প্রাপ্তি পুরোপুরি ভাবে আয়ানের দিকে তাকালো,আয়ান মুছকি হেঁসে আমার কিন্তু তাই মনে হচ্ছে না হলে দেখুন না আপনার পরার শাড়ী গহনা গুলোতো যার সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা তাকেই দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ভুল হয়ে হয়তো সেই গুলো আপনাকেই পরানোই হয়েছে।তাহলে এইভার ভেবে দেখুন তো কিছু কিছু ভুলও মানুষের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে।
ওহ্ দেখেছে কতক্ষণ থেকে আমি একা একাই বকবক করেই যাচ্ছি আপনি কিছু বলুন।(প্রাপ্তি আবার অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে আছে)কি বলবেন না তাই তো?আচ্ছা আমাকে কি আপনার পছন্দ হয়নি? না হলেও বলতে পারেন।
আচ্ছা আপনি এইরকম পাথরের মতো হয়ে আছেন কেনো? কিছুতো বলুন! বিয়ে টা কি হচ্ছে?

প্রাপ্তি -(নিরবতা ভেঙে বললো) নাহ্।

আয়ান -কেনো আমাকে কি আপনার যোগ্য
মনে হয় মা?

প্রাপ্তি -আমিই আপনার যোগ্য না।আমার জীবন এতো সহজ সরল নয়। আমাকে বিয়ে করলে এই সমাজ আপনাকে ভালো চোখে দেখবেনা।আর আপনি জানলেও এই বিয়ের কথা মুখ দিয়েই বের করতেন না।

আয়ান -আমার জানা দরকার নেই।তোমার অতীত আমি জানতে চা,,,,,,,,,,

প্রাপ্তি আয়ানকে থামিয়ে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা ছেয়ে নিচ্ছি আপনারা চলে যান।তবে এইটা ভেবে আমি শান্তি পাচ্ছি দুটো মানুষের ভালোবাসার জয় হয়েছে আজ।

আয়ান -না আমি যাবো না। আমি জানতে চাই কেনো আপনি আমাকে বিয়ে করবেন না?

আয়ানের কথা শুনি প্রাপ্তি উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে কারণ আমি ধর্ষিতা।(কথাটা বলতেই আয়ানের সব কিছু যেনো থমকে গেছে মনে হচ্ছে আবার প্রাপ্তির কথাটা বার বার তার কানে ভেসে আসছে প্রাপ্তির দিকে একরাশ অবাক দুটো চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আয়ান)হ্যাঁ আমি ধর্ষিতা।আমাকে সেইদিন ৪ জন মিলে ৩ দিন ধরে একটা রুমে আটকে রেখে ছিলো। যখন যার ইচ্ছে হতো সেই এসে আমাকে ভোগ করতো।আমি তাদের হাতের একটা পুতুল ছিলাম মাত্র।আমি এই এইগুলোর কথা বলতে সাহস পাইনা। আজ যখন আপনি জোর করেলে তাই বললাম।বুজতে পেরেছেন মিঃ আয়ান।আর কিছু জানতে চান? নাকি ওই ৩ দিন যা যা আমার সাথে করে ছিলো সেই গুলোও আপনাকে ভেঙে ভেঙে বলতে হবে।ওকে তাহলে সেই গুলোও বলছি তাহলে শুনুন
কথাটা বলতেই আয়ান চিৎকার দিয়ে জাস্ট সেট আপ।আপনাকে আমি একবারো বলেছি এইগুলো বলতে।আপনার মন মানসিকতা ঠিক করে নিন কারণ আজ এবং এখনি বিয়েটা হচ্ছে।

কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক দুটো চোখ নিয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে, করুণা করছেন? চাইনা আমি কারো করুণা।

আয়ান -বললাম না আপনার মন মানসিকতা ঠিক করুণ। যেটাকে আপনার কাছে করুণা মনে হচ্ছে সেটা আমার কাছে ভালোবাসা।কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ধরে টেনে ড্রইংরুমে নিয়ে গেলো।সবার মনে এক বিষণ্ণতার চাপ।আসিফ ভাবছে আয়ান কি পারবে প্রাপ্তিকে রাজি করেতে?
আয়ানে আর প্রাপ্তিকে একসাথে দেখে ঝিনুক আর সুমি বসা থেকে উঠে আয়ানের কাছে আসলো।আয়ান তাদেরকে কিছু না বলে আসিফ কে বললো আপনি বিয়ের ব্যবস্থা করুন।আসিফ দৌঁড়ে এসে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে তুই আমার লক্ষ্মী বোন।আমি জানতাম তুই আমার কথা রাখবি।(মামার দিকে তাকিয়ে)মামা বিয়ের ব্যবস্থা করুন।
সবকিছু ঠিকঠাক করে দুইটো বিয়েই একসাথে হলো।প্রাপ্তির মুখে কোনো কথা নেই সেইযে আয়ানের সাথে কয়েকটা কথা বলেই চুপ করলো আর এখনো কথা বলেনি।সিয়ামরা সন্ধ্যার আগেই বিদায় নিয়ে অরণীকে নিয়ে চলে গেলো। এইবার প্রাপ্তিকে বিদায় দেওয়ার ফালা কিন্তু সেই কোনো কথাই বলছেনা।আসিফ আয়ানের হাতে প্রাপ্তির হাত তুলে দিতে যাবে তখনি প্রাপ্তি আয়ানের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই হাতটা গুটিয়ে নিলো।
আয়ান দেখে আসিফ কে বললো ভাইয়া হাত দিতে হবেনা শুধু পরিস্থিতি টা সামাল দিন।আয়ানের কথা শুনে আসিফ মনে মনে ভাবছে আমার বোনের জন্য হয়তো আল্লাহ ঠিক মানুষটাই তার জীবনে পাঠিয়েছে।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৪

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৪

#Rabeya Sultana Nipa

 

__প্রাপ্তিকে দেখেই সিয়াম চোখ বড় বড় করে চেঁচিয়ে, আপনি কে?
প্রাপ্তি আস্তে করে নিজের কাঁধের থেকে সিয়ামের হাত দুটো সরিয়ে সিয়ামকে সামনে থেকে সরিয়ে চুপচাপ দরজার দিকে এগুতে লাগলো।প্রাপ্তির নিস্তব্ধতায় চেহারায় কোনো বিষণ্ণতার কোনো চাপ নাই।আছে শুধু একরাশ অভিমান। দরজাটা খুলেই প্রাপ্তি ড্রইংরুমে চলে গেলো।প্রাপ্তিকে দেখে সব কিছু যেনো থমকে গেলো,যারা বসা ছিলো তারা দাঁড়িয়ে গেলো।যারা হাট ছিলো তারাও দাঁড়িয়ে গেছে তাকে দেখে।নিলিমা বেগম মেয়েকে দেখে কাছে এসে বললো প্রাপ্তি তুই এইখা,,,,,,,,,নিলিমা বেগম কে হাত দিয়ে এশারায় করে থামিয়ে দিলো প্রাপ্তি।অরণীর রুমে গিয়ে অরণীকে হাত ধরে টেনে ড্রইংরুমে নিয়ে আসলো।

অরণী -আপু তুই কি করছিস?এইভাবে এইখানে টেনে নিয়ে এলি কেনো?
প্রাপ্তির রুম থেকে সিয়াম এসে দাঁড়াতেই অরণী ঘাবড়ে গিয়ে চুপ করে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রাপ্তির অবস্থা দেখে নিলিমা বেগম আজাদ সাহেব কে আসিফকে ডেকে আনতে বললো।প্রাপ্তির কাণ্ড দেখে বাহিরের লোকজন ও ভিতরে আসতে শুরু করলো।
আয়ানদের আর সিয়ামদের বাড়ীর সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ঝিনুক সুমি কানের কাছে গিয়ে ভাবী এইগুলো কি হচ্ছে মান সম্মান তো কিছুই থাকবে না।আকাশ ঝিনুক কে থামিয়ে, চুপ কর এইখানে এমন কিছু আছে যা আমরা জানিনা।হয়তো আমাদেরকে জানানো হয়নি।
সুমি -আমি আগেই বলেছিলাম। মা আমাকে সেইদিন চুপ করিরে দিয়েছিলো।
নিহাদ-ভাবী এইসব না ভেবে নাটক শেষ পর্যন্ত দেখা উচিত আমাদের।দেখিনা কি হয়।
রাহাত -ভাইয়া! আয়ান তো ওইখানে একা একা বসে আছে।

আকাশ -আগে দেখি এইখানে কি হয়।তারপর না হয় ডাকবো।

প্রাপ্তি নিস্তব্ধতা ভেঙে সবার উদ্দেশ্য বললো, আপনাদের সবার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আজ এই পরিস্থিতি জন্য।
আসিফ এসে প্রাপ্তিকে থামানোর চেষ্টা করছে,প্রাপ্তি আসিফের দিকে তাকিয়ে আজ শুধু আমি বলবো।আর তুই চুপ থাকবি।আমি আমার ফ্যামিলিকে একটা কথা আগে জিজ্ঞাস করতে চাই আচ্ছা আমি কি তোমাদের কাছে এতোই বোঝা হয়ে গিয়েছিলাম? যার কারণে একটা ছেলের কোনো মতামত না জেনে আমাকে তার কাছে বিয়ে দিচ্ছো?তোমরা আমাকে বলতে পারতে আমি সবাইকে ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যেতাম।

আসিফ -কি বলছিস তুই এইসব? তুই কখনো আমাদের কাছে বোঝা হয়ে যাসনি।তোকে কি আমরা কখনো বুজতে দিয়েছি?

প্রাপ্তি -হুম এতো দিন দেসনি তবে আজ আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিস।কেনো রে ভাইয়া আমি জানি সেইদিনের ঘটনাটা পরিণাম শুধু আমাকেই ভোগ করতে হবে।কিন্তু তোদের কাছ থেকে করতে হবে তা কখনো ভাবিনি।

আজাদ সাহেব -প্রাপ্তি তুই কি বলছিস মা?আমরা তো তোর ভালোর জন্যই করছি।

প্রাপ্তি -আব্বু আমাকে বলতে দাও।আজ যদি আমি চুপ করে থাকি তাহলে চারটা জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।
আপনারা যারা এইখানে আছেন আমি সবাইকে বলছি এবং এইখানে থাকা অনেকেই কমবেশি জানেন আমার সম্পর্কে।
যাইহোক আমি ওই দিকে এগুতে চাচ্ছিনা।আপনারা সবাই এইখানে আছেন তাই আমি বলছি আজ দুইটা বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এইখানে এখন একটাই বিয়ে হবে আর সেটা অরণী আর সিয়ামের।কথাটা শুনেই সবাই অবাক চোখে প্রাপ্তি আর অরণীকে দেখছে।

নিলিমা বেগম -আসিফ তুই চুপ করে দাঁড়িয়ে কি দেখছিস? ওকে এইখান থেকে নিয়ে যা।

প্রাপ্তি -আম্মু! আমাকে এইখান থেকে সরালেই কি সত্যিটা চাপা পড়ে যাবে, কখনোই না।সিয়াম এইখানে তোমার বড় মেয়েকে বিয়ে করতে আসেনি এসেছে অরণীকে বিয়ে করতে।সেইদিন তোমাদের আর ওর বাবা মায়ের ভুলের কারণে আজ সবাইকে এই জায়গা এসে দাঁড়াতে হচ্ছে।

আসিফ -কি বলছিস তুই এইগুলো?
আমি কিছুইতো বুজতে পারছিনা।(সিয়ামের দদিকে তাকিয়ে)সিয়াম তুমি কি বলেছো ওকে?

সিয়াম -আমি ওনাকে খারাপ কিছু বলিনি।আমি সেইদিন আমার বাবা মা কে পাঠিয়েছিলাম অরণীকে দেখে যাওয়ার জন্য কিন্তু সেটা বিপরীত হয়ে গেলো।

প্রাপ্তি -অরণী তুইকি এখনো চুপ করে থাকবি? তুই যদি চুপ করে থাকিস তাহলে আমিই বলছি।ভাইয়া, আম্মু, আব্বু তোমরা একটা বার ভেবে দেখেছো যে মানুষ টা সারাক্ষণ হাঁসি খুশি থাকতো সেই মানুষ টা হঠাৎ চুপ হয়ে গেলো কেন? কিন্তু আমি ভেবেছি।আমার কাছে সবকিছু গোলমাল লাগছিলো আর সেটা আজ পুরোপুরি ক্লিয়ার হলো।অরণী আর সিয়াম দুইজন দুইজনকে ভালোবাসে।

আকাশ -কি বলছে এই সব এরা। আজ কি অপমানিত হয়ে বাড়ীতে যেতে হবে নাকি।রাহাত! তুমি গিয়ে আয়ানকে ডেকে আনো। দেখি ও কি বলতে চায়।

আসিফ অরণীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে, নিছের দিকে তাকিয়ে না থেকে আমার দিকে তাকা।(ধমকিয়ে)তাকা বলছি!
(অরণী ভেজা চোখ দুটো নিয়ে আসিফের দিকে তাকাতেই) প্রাপ্তি যা বলছে সব কি সত্যি? অরণী কথা বলছেনা দেখে ধাক্কা দিয়ে কি হলো অরণী সেইদিনের মতো আজও চুপ করে থাকবি? তোর সেই দিনে চুপ থাকায় প্রাপ্তির আজ এই অবস্থা! আর আজও চুপ করে থেকে ওর কোন ক্ষতি করতে চাস তুই?
কথাটা শুনে অরণী চিৎকার দিয়ে কি বলছিস ভাইয়া? আমি আপুর কোনো ক্ষতি চাইনা।সেই দিন আমি ভেবেছিলাম সিয়ামের বাবা মা আপুকেই দেখতে আসছে তাই আমি আপুর ভালো থাকার কথা ভেবে সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম।

প্রাপ্তি -(প্প্রাপ্তির চোখের পানি গুলো অনবরত ঝরছে।)বাহ্ তুই সাক্রিফাইস করা শিখেগেছিস। তোরা সবাই এইটা কেনো বুজতে চাস না আমার মতো মেয়েদের কেউ বিয়ে করেনা বা করবেও না।কথাটা বলেই প্রাপ্তি কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমে চলে যাচ্ছে তখনি আয়ান পিছন দিক থেকে বললো দাঁড়ান!কোথায় যাচ্ছেন আপনি?

আয়ানের ডাক শুনে প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে পিছনে ফিরে দেখে সেই ছেলেটা, যার সাথে তার এক পলক দেখা হয়েছিলো।

আয়ান একটু এগিয়ে এসে ভাবী সেইদিন তোমরা কাকে দেখে গেছো?

সুমি -(অরণীকে দেখিয়ে) ওকেই তো দেখে দেখে গেলাম।কিন্তু এখন তো,,,,,,

আয়ান -কিন্তু আমি তো তোমাকে সেইদিন এই মেয়ের কথা বলিনি।(প্রাপ্তিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে)আমি তো তোমাকে এর কথা বলেছিলাম।

সুমি -মানে, কি বলছো?

আয়ান -হ্যাঁ ভাবী আমি এর কথাই বলেছিলা।আর বিয়ে করলে আমি একেই করবো।

প্রাপ্তি আয়ানের কথা শুনে চিৎকার দিয়ে এইখানে শুধু একটাই বিয়ে হবে।আর সেটা অরণী আর সিয়ামের।কথাটা বলেই প্রাপ্তি নিজের রুমে চলে গেলো।

আসিফ -আপনাদের সবার উদ্দেশ্য বলছি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিছু ভুল বুঝাবুঝির কারণে আজ এই অবস্থা।আপনারা সবাই খাওয়াদাওয়া শেষ করুন এইদিকে আমরা বিয়ের জন্য সব গুছিয়ে নিচ্ছি।
কথা গুলো বলতেই গেস্টরা সবাই বাহিরে চলে এলো।আয়ান দের বাড়ীর সবাই ড্রইংরুমেই আছে।

আকাশ -আসিফ এখন আমারা এইখানে থাকাটা মনে হয় ভালো দেখায়না।আমাদের মান সম্মানের একটা ব্যাপার আছে।তোমাদের কি ঘটেছে না ঘটেছে তার জন্য ফল আমরাও ভোগ করতে হলো।

আয়ান -ভাইয়া চুপ কর! বিয়েটা হবে আর সেটা আমি প্রাপ্তি নামের মেয়েটাকেই করবো।ভালো হয়েছে ঝামেলাটা আগেই শুরু হয়েছে না হলে তো আমিই ঝামেলা করতাম। কারণ আমি ওর কথাই সেইদিন বলেছিলাম ভাবীকে।

আসিফ -সরি ভাই! বিয়েটা আর হচ্ছে না।আর ওর অতীতের কথা শুনলে তুমিও এই বিয়ে করবে না।

আয়ান -ওর অতীত নিয়ে আমি মাথা ঘামাতে চাইনা।আপনারা চাইলে আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই।

ঝিনুক -তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? এতোক্ষণ লোকজন ওই মেয়েকে নিয়ে অনেক কানাঘুষা করতে শুনলাম আর তুই কিনা সেই মেয়েকে,,,,,,,,

আয়ান -আপু শুন আমরা যা দেখি তা কিন্তু ঘটনা নাও হতে পারে। আমাদের দেখার বাহিরেও যে কিছু থাকতে পারে সেটা আমরা মানিনা।
(প্রাপ্তির ফ্যামিলির দিকে তাকিয়ে) প্লিজ আমি আপনাদের আবারো বলছি ওর সাথে আমাক একবার কথা বলতে দিন।

চলবে,,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১৩

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

_সকাল আট টা বাজে ছেলেটা এখনো ঘুম থেকে উঠিনি?কথায় আছে না যার বিয়ে তার খবর নেই,পাড়া পড়শির ঘুম নেই।আমার ছেলেটার ও হয়েছে তাই।আয়েশা বেগম কথা গুলো বলতে বলতে সুমির হাতে আয়ানের জন্য চায়ের কাপ টা দিয়ে, সুমি যাও তো! আয়ান টা কে ঘুম থেকে উঠিয়ে দাও।আর কতো ঘুমাবে?আমার আকাশটা আজ কয়েক দিন থেকে খাওয়াদাওয়া নেই ঘুম নেই শুধু ওর বিয়ে জন্য।
সুমি চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে মা! আপনি চিন্তা করবেননা তো, আর মাত্র দুইদিন পরে তো সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে।

ঝিনুক এসে রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ভাবী তুমি এই খানে?

সুমি -কেনো? কিছু হয়েছে?

ঝিনুক -দেখনা রুমকি টা কি জেদ ধরেছে।মেয়েদের বাড়ীতে কি ড্রেস পরে যাবে সে নিয়ে বসে আছে।আর বলছে তুমি চয়েস না করে দিলে ও পরবে না।
তোমার এইদিকে কতো কাজ ওকে নিয়ে পড়ে থাকলে হবে?
সুমি -ঝিনুক তুমি যাও আমি আয়ানকে চা টা দিয়ে আসছি।আর মা! আপনি সিয়ামদের বাড়ীতে ফোন দিয়েছেন?

আয়েশা বেগম -না আজ আর দিই নি।কেনো?

সুমি -আপনি ওনাদের বলেদিন আমরা একসাথেই ওদের বাড়ীতে যাবো।তাহলে আর আসিফদের ও কষ্ট হবেনা।

আয়েশা বেগম- তুমি ঠিকি বলেছো।আমরা এক ছেলের বিয়ে নিয়ে কি জালায় আছি আর ওদের দুইটা বিয়ে।

সুমি আর কিছু না বলে আয়ানের রুমে চলে গেলো।
আয়ানের রুমে গিয়ে লাইট অন করে দেখে আয়ান গভীর ঘুমে ডুবে আছে।
হায়রে! মা ঠিকি বলেছে ওর বিয়ে ওরি খবর নাই।আর আমরা ওর বিয়ে নিয়ে জ্বালায় মরছি।(আয়ানকে ধাক্কিয়ে)আয়ান! আয়ান! তুমি কি উঠবা নাকি পানি এনে ঢালবো?

আয়ান-(ঘুম ঘুম চোখে)ভাবী! প্লিজ আরেকটু ঘুমাই না।

সুমি -আয়ান! এইবার মা এসে তোমাকে বকা দিবে।দিনের কয়টা বাজে একবার দেখেছো? এইদিকে কতো কাজ পড়ে আছে।তোমাকে নিয়ে পড়ে থাকলে হবে?
সুমির পেঁনপেঁনানি শুনে আয়ান উঠে বসলো।
এইতো গুড বয়।যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।কাল থেকে অবশ্য একটা জ্বালা আমার কমবে।

আয়ান আড়মোড় ভাঙতে ভাঙতে সুমির দিকে তাকিয়ে কি জ্বালা কমবে তোমার?

সুমি -সকালে এসে ঘুম থেকে উঠানো।কাল থেকে এই কাজ তোমার বউয়ের।

আয়ান বউ কথা টা শুনেই একটু লজ্জা পেয়ে, সুইট হার্ট কাল থেকে তোমার ডিউটি বাড়িয়ে দিলাম।এতোদিন তুমি শুধু আমায় ডাকতে কাল থেকে দুইজন কে ডাকবে। তুমি যতোক্ষণ না ডাকবে আমার তো সকাল হবে না।
সুমি -ফাজলামো করা হচ্ছে আমার সাথে? ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নাও।আমি নিহাদ আর রাহাত ভাইয়াকে ডেকে আনতেছি তোমাকে ভালো করে পানিতে চুবানোর জন্য।কথাটা বলেই সুমি হাঁসতে হাঁসতে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।

প্রাপ্তি আর অরণীকে গোসল করিয়ে সাজতে বসিয়ে দিলো।প্রাপ্তি অরণীকে সাজাতে বলে উঠে ড্রইংরুমে আসলো আসিফকে খুঁজার জন্য।

সামনে প্রাপ্তির মামাকে আসতে দেখে মামা! ভাইয়াকে দেখেছেন?
মামা -প্রাপ্তি তোমাকে এখনো সাজানো হয়নাই এইদিকে ছেলের বাড়ী থেকে লোকজন রওনা দিয়ে দিয়েছে । নিলিমা! কোথায় গেলো কাজের সময় তাকেও খুঁজে পাওয়া যায়না।

নিলিমা বেগম এসে কি হয়েছে ভাইয়া?কোনো কিছু লাগবে?

মামা -প্রাপ্তিকে এখনো সাজানো হয়নি?এইদিকে দুই বাড়ীথেকেই ফোন দিয়েছে তারা আসতেছে।

নিলিমা বেগম -ওকে তো আমি সাজাতেই বসিয়ে দিয়ে এলাম।

প্রাপ্তি -আম্মু! মামা! সমস্যা নেই অরণীকে আগে সাজিয়ে নেক আমি পরে সাজলেও হবে।কিন্তু ভাইয়া কোথায়? ওর সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।

মামা-তুই যা মা! আমি আসিফ কে পাঠিয়ে দিচ্ছি। ও হয়তো কোনো কাজে আটকে আছে।

নিলিমা বেগম -এখন চল তোর ভাইয়া আসতে আসতে সেজে নে।

আসিফ মামার মুখ থেকে প্রাপ্তি তাকে ডাকছে শুনে চিন্তায় পড়ে গেলো।প্রাপ্তি তাকে কেনো ডাকছে তার ভালো করেই জানা আছে।ওকে যে কিভাবে বুজাই! আচ্ছা গিয়ে দেখি কি বলে।প্রাপ্তি সেজে নিজের রুমেই বসে আছে আসিফের অপেক্ষায়।আসিফ ভিতরে আসতেই,কিরে ভাইয়া তোকে কতো বারা ডেকেছি আর তোর এখন আসার সময় হলো?

আসিফ প্রাপ্তির কথা ঘুরিয়ে, আমার বোনটাকে পুরো রাজকন্যার মতো লাগছে।
সিয়াম ব্যাটার চয়েস আছে বলতে হবে।তোর জন্য যতো গুলো শাড়ী গহনা পাঠিয়েছে সব গুলোই পরলে তোকে অনেক সুন্দর দেখায়।কিন্তু অরণী শ্বশুর বাড়ীর গুলো আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনি।

প্রাপ্তি -(আসিফের দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে)তোকে আমি এইখানে এইগুলো বলার জন্য ডাকিনি।কে শাড়ী গহনা ভালো দিয়েছে আর কে খারাপ দিয়েছে।তোকে যে জন্য ডেকেছি তুই সেটা ভালো করেই জানিস।

আসিফ -প্রাপ্তি! তুই আমার লক্ষ্মী বোন। প্লিজ কোনো পাগলামো করিস না এখন।

প্রাপ্তি -(চেঁচিয়ে) পাগলামি! কোনটা কে তুই পাগলামি বলছিস ভাইয়া।তোরা কোনো কিছু না জানিয়ে একটা ছেলের কাছে আমাকে বিয়ে দিবি এইটা সে পরে জানতে পারলে আমাকে মেনে নিবে? কখনোই না! কোনো ছেলেই মেনে নিবে না।কারণ টা তুই ভালো করেই জানিস।আর আমার কাছে কেনো জানি মনে হচ্ছে বড় কোনো ঝড় আসতে যাচ্ছে। সব কিছু কেমন জানি গোলমাল লাগছে।

আসিফ কিছু বলতে যাবে তখনি আজাদ সাহেব এসে আসিফ তুই এইখানে তাড়াতাড়ি চল বর এসে গেছে।তোর জন্য সবাই বসে আছে।
আসিফ প্রাপ্তিকে খাটে বসিয়ে চুপ করে এইখানে বস আমি দেখছি তুই কোনো বাজে চিন্তা করবিনা।

আয়ান আর সিয়াম কে এনে স্টেজে বসিয়েছে। দুইজন দুজনার সাথে তেমন কথা নেই চুপচাপ হয়েই বসে আছে।সিয়াম অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থেকে তারপর তার বন্ধু রাফসান কে বললো বিয়ে পড়ার আগে আমি অরণীর সাথে কথা বলতে চাই তুই ব্যবস্থা কর প্লিজ।আয়ান নিহাদ রাহাত আকাশের সাথেই কথা বলে যাচ্ছে।

আকাশ -তোরা বস আমি ভিতরে গিয়ে দেখে আসি।ঝিনুক মিনু সুমি সবাই ভিতরে কি করছে আমি দেখে আসি।আয়ান সুমি কথায় ভাবছে ভাবী তো পারতো আমার সাথে এখন থাকার। ভাবীকে বলে না হয় ওকে একবার দেখার সুযোগ করে নিতাম।
রাফসান আসিফকে দেখতে পেয়ে আরে ভাইয়া আপনাকে অনেকক্ষণ হলো খুঁজছি।

আসিফ -কেনো কিছু লাগবে?

রাফসান -আসলে ভাইয়া কি বলবো সিয়াম চাচ্ছে আপনার বোনের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলতে।
কথাটা শুনেই আসিফ থমকে গেলো।সিয়াম কি প্রাপ্তির ঘটনা টা জেনেই প্রাপ্তির সাথে কথা বলতে চাইছে?তাহলে তো ভালোই হলো দুজনে আলাদা ভাবে কথা বলুক।

রাফসান -ভাইয়া আপনি চুপ করে আছেন কেনো?
আসিফ -সিয়াম কে নিয়ে আসো আমি ব্যবস্থা করছি।আর শুনো এই ব্যাপারে কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।

রাফসান -না ভাইয়া কেউ কিছু জানবে না।

সুমি, ঝিনুক,মিনু অরণীর রুমে এসে অরণী কে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছে।তাদেরকে দেখে অরণী বসা থেকে দাঁড়িয়ে সালাম দিলো।সুমি অরণীর কাছে এসে মুছকি হাঁসি দিয়ে অরণী তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।কিন্তু তোমাকে কে সাজিয়েছে এই শাড়ী গহনা গুলো দিয়ে?
অরণী -জ্বী আপনারা নাকি কাল এইগুলো পাঠিয়েছেন।
ঝিনুক -কিহ্ আমরা এইগুলো,,,,,,,,
সুমি ঝিনুককে থামিয়ে হুম আমরাই তো পাঠালাম।(মিনুর আর ঝিনুককে চোখের ইশারা দিয়ে) বাহিরে আসো। আকাশ মনে হয় ডাকছে।

সুমি বাহিরে এসে মিনুর দিকে তাকিয়ে তুমি আর রাহাত ভাইয়া যে কাল শাড়ী গহনা গুলা নিয়ে আসছো এইগুলো কার কাছে দিছো।

মিনু -ভাবী! প্যাকেট গুলো মেয়ের মায়ের হাতেই দিয়েছিলাম।কিন্তু তখন সিয়ামদের বাড়ী থেকে লোক এসেছিলো আমার মনে হয় এই গুলো পাল্টা পাল্টি হয়ে গেছে।

সুমি -হুম তাই মনে হচ্ছে। শুনো এখন কেউ কিছু বলার দরকার নেই। পরে সব আমরা আসিফ কে বুজিয়ে বলা যাবে।

আসিফ সিয়াম কে প্রাপ্তির রুমের সামনে দাঁড় করিয়ে প্রাপ্তিকে একা রেখে সবাইকে বাহিরে যেতে বললো।

প্রাপ্তি -কি হয়েছে ভাইয়া?

আসিফ -তুই আমাকে তখন যেই প্রশ্ন গুলো করেছিস সেই গুলোর আনসার সাথে করে নিয়ে এসেছি।তুই বস সিয়াম বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে তোর সাথে কথা বলবে বলে।আমি আসছি!
সিয়াম ভিতরে এসে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে প্রাপ্তির পাশে এসে বসলো।কি! ম্যাডাম কেমন সারপ্রাইজ দিলাম? ম্যাডাম আমার দিকে ফিরেন। আমি এইদিকে ওই দিকে তাকিয়ে কোনো লাভ নেই।(কথা গুলো শুনে প্রাপ্তি ভাবছে ওনি এইভাবে কথা বলছে কেনো মনে হচ্ছে ওনি আমাকে আগে থেকেই চিনেন।)
তুমি কি ভেবেছিলে ফোন অফ করে রেখে একসাথে বউয়ের সাজে আমার কাছে আসবে? আমি ভেবেছিলাম বাবা মাকে পাঠিয়েছি বিয়ে ঠিক করার জন্য সেই খুশিতে সারপ্রাইজ হয়ে তুমি আমাকে ফোন দিবে তানা উল্টো ফোন অফ করেই রাখলে?
আচ্ছা এই শাড়ী টা তুমি পরলে কেনো। তোমার পছন্দমতই শাড়ী আমি তোমার জন্য পাঠিয়েছি আর তুমি সেই শাড়ী না পরে অন্য শাড়ী পরে আছো।এই অরণী কথা বলছো না কেনো।
কথাটা গুলো শুনে প্রাপ্তি নিস্তব্ধতায় কান্না করেই যাচ্ছে।আর ভাবতে লাগলো অরণী আমার বোন হয়ে সব জেনেও আমার সাথে এইরকম করতে পারলো?
সিয়াম বিরক্তিকর ভাব নিয়ে প্রাপ্তির কাঁধে হাত দিয়ে এই অরণী এইদিকে ফিরে কিছু বলো প্লিজ।কথা বলেই প্রাপ্তিকে নিজের দিকে ফিরালো সিয়াম।
প্রাপ্তিকে দেখেই সিয়াম চোখ বড় বড় করে চেঁচিয়ে, আপনি কে?

চলবে,,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১২

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১২

#Rabeya Sultana Nipa

 

_গোসল করেই ওই বাড়ীর দেওয়া শাড়ীটা পরেই ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো প্রাপ্তি।নিলিমা বেগম মেয়েকে দেখে মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে মেয়েকে টেনে এনে আয়নার সামনে নিয়ে এসে দাঁড় করিয়ে নিজের চোখেই নিজেকে দেখ কতোটা ভালো লাগছে তোকে।

প্রাপ্তি-(মুখে বিরক্তির ভাব এনে)ওহ্ আম্মু ছাড়োতো। ভালোলাগছে না! আমাকে যতোই সুন্দর দেখাক না কেনো তার পরোও সবাই বলবে আমি ধর্ষিতা।

নিলিমা বেগম -তোকে একটা কথা বললে একটুও শান্তি পাইনা।তুই এইটাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অন্য জায়গা নিয়ে যাস।এখন চল আসিফ তোদের জন্য এখনো খায়নি। খেয়েনিবি চল।

আসিফের কথা শুনে প্রাপ্তি নিলিমা বেগম কে কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে চলে গেলো। প্রাপ্তিকে সবাই দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।

প্রাপ্তির মামী -আসিফ দেখ তোর বোনকে। একদম পরীর মতো লাগছে।মনে হচ্ছে ভুলে কোনো পরী এই বাড়ীতে চলে আসছে। আসিফ পিছনে ফিরে প্রাপ্তির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তার বোনকে সত্যিই পরীর মতো লাগছে।প্রাপ্তিকে দেখে আসিফের নিজের অজান্তেই চোখের কোনে পানি এসে গেছে।প্রাপ্তি এসে আসিফের সামনে দাঁড়াতেই আসিফ প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে কান্না ভেঙে পড়লো।কান্নার আওয়াজ শুনে আজাদ সাহেব রুম থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলো।আজাদ সাহেব ভাইবোনের এমন দৃশ্য দেখে নিজের চোখ দুটো ও পানিতে টলমল করছে।অরণী ও রুম থেকে এসে আসিফকে ধরে সে কাঁদতে শুরু করলো।

প্রাপ্তির কাকী আসিফের কাঁধে হাত রেখে আসিফ আজকে দিনে কাঁদতে নেই বাবা।তোর বোনেরা তো একসাথে কোথাও চলে যাচ্ছে না।
নিলিমা বেগম নিজের মনকে শক্ত করে এই তিন জনি ছাড়। ছাড় বলছি এতো কান্নাকাটি করার কি আছে? কই আমি তো কাঁদছি না।তাহলে তোরা কেনো কাঁদছিস?

আসিফ দুই বোনকে ছেড়ে দিয়ে না খেয়েই রুমে চলে গেলো।প্রাপ্তি তখনো কাঁদতে ছিলো।

নিলিমা বেগম -দেখেছিস ছেলের কাণ্ড না খেয়েই চলে গেলো।আমি কি ওকে খারাপ কিছু বলেছি?

প্রাপ্তি -আম্মু খাবার টা আমার হাতে দাও আমি ভাইয়ার রুমে যাচ্ছি।প্রাপ্তির মামী খাবার প্লেটটা প্রাপ্তির হাতে দিয়ে বললো সকাল থেকেই ছেলেটা কিছু খায়নি।খাবেই বা কি করে? দেখ খাওয়াতে পারিস কিনা।

প্রাপ্তি মামী কে কিছু না বলে খাবারটা নিয়ে আসিফের রুমে গিয়ে দেখে রুমটা অন্ধকার হয়ে আছে। প্রাপ্তি লাইট অন করে দেখে আসিফ খাঁটের সামনে নিচে হাত পা গুটে বসে আছে।প্রাপ্তিও সামনে এসে বসেছে প্রাপ্তিকে বসতে দেখে আয়ান মাথাটা উঠিয়ে কিরে,,, তুই লাইট অন করলি কেনো?

প্রাপ্তি -তুই কি মনে করছিস তুই শুধু একা তোর বোনদের ভালোবাসিস।ওরা তোকে ভালোবাসেনা?তাই একা একা থাকতে চাইছিস।

আসিফ -আমি তা তো একবারো বলিনি।তোদের ছাড়া আমি এই বাড়ীতে থাকবো কি করে?
প্রাপ্তি -পরে দেখা যাবে কিভাবে থাকবি আগে খেয়েনে।

আসিফ -নারে,,,তুই খায়েনে আমি খাবোনা।

প্রাপ্তি -তুই কি করে ভাবলি তুই খাবিনা আমি খেয়ে নিবো।খেলে এক সাথেই খাবো।
হাঁ করতো আজ আমি তোকে খাইয়ে দিবো।

প্রাপ্তির কথা শুনে আয়ান চোখ মুছে ঠিক আছে তাহলে খেতেই পারি।

আবিদ চৌধুরী রেডি হচ্ছে সন্ধ্যার আগেই বাড়ী থেকে বের হয়ে যাবে।সবার মন খারাপ করে আছে।আয়েশা বেগম ব্যাগ গুছিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে এসেছে।বাসায় অনেক গেস্ট সবাই ড্রইংরুমেই দাঁড়িয়ে আছে।

আবিদ চৌধুরী -রফিক ব্যাগ গুলো গাড়ীতে রেখে আসো।সবার দিকে তাকিয়ে, তোমরা কেউ মন খারাপ করার দরকার নেই।মাত্র এক মাসেরই তো ব্যাপার আর আমি তো চেষ্টা করবো আরো আগেই আসার জন্য।(আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে)যে আসছে মনে করবে সে তোমার ঘরের লক্ষ্মী আর ঘরের লক্ষ্মীকে যত্ন করেই ঘরে তুলবে। আকাশ! তোমাকে তো আর কিছু বলতে হবে না।সবাইকেই বলছি ভালো ভাবে বিয়েটা ইনজয় করো।আমার কথা ভেবে কেউ মন খারাপ করবে না।
কথা গুলো বলেই আবিদ চৌধুরী চলে গেলো।সবাই যে যার কাজে লেগে গেলো।

ঝিনুক -ভাবী! এই ভাবী! মেয়েদের বাড়ীতে একটা ফোন দিয়ে দেখো কি অবস্থা।আমাদের তো যাওয়ার কথা ছিলো ওনাদের বলে দাও এখন আর যাবো না।

সুমি -চিন্তা নেই আমি সব আগেই বলে দিয়েছি আসিফ কে।ঝিনুক আপু এক কাজ করো তুমি আয়ান কে রেডি হতে বলো। অনুষ্ঠান যখন হবে মা বলেছে তাড়াতাড়িই করতে। বেশী রাত জেনো না হয়।
ঝিনুক -আচ্ছা আমি দেখছি। ভাবী রুমকি কে দেখেছো?

সুমি -হুম আয়ানের কাছেই আছে।আর তুমিও যাও।আয়ান কে তাড়া দাও না হলে ও আজও লেট করবে।

ঝিনুক সুমির কথা শুনে হাঁসতে হাঁসতে আয়ানের রুমে চলে গেলো।

পার্লার থেকে লোক এসে দুই বোনকে সাজিয়ে দিয়ে গেলো।প্রাপ্তির না চাইলেও সাজতে হয়েছে। আসিফ অনেক বার বলাতে ভাইয়ে কথা ফেলতে না পেরে সেজেছে। নিজের কাছে খুব অসস্থি লাগছে প্রাপ্তির।আর অরণী! সেই এতো চঞ্চল মেয়ে হয়েও কেমন জানি নিরব হয়ে আছে।সব কিছুতেই চুপচাপ থাকে।প্রাপ্তির মনে বার বার একটাই প্রশ্ন জাগে উঠে কোথাও কোনো কিছু গোলমাল আছে।কিন্তু এই প্রশ্নটা কেনো আসে।হাজার বার চেষ্টা করলেও ভুলতে পারিনা।কি করে ভুলবো অরণীকে দেখলে তো ভুলা যায় না।প্রাপ্তি কথা গুলো ভাবছে আর অরণীর দিকে তাকিয়ে আছে।
অরণীর নজর পড়তেই, মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে কিরে আপু এইভাবে তাকিয়ে আমায় কি দেখছিস?

প্রাপ্তি -তোকে ! আমার সেই ছোট্র বোন আজ কতো বড় হয়ে গেছে। জানিস অরণী আমি কিন্তু আজ একটা জিনিস খুব মিস করছি।

অরণী -কি মিস করছিস আপু?

প্রাপ্তি -সেই চঞ্চল অরণীকে।যে অরণী সবার নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাতো।কোনো বিষয় তার কাছে সিরিয়াস ছিলোনা। আমি সেই অরণীকে মিস করছি আজ যে অরণী এই আপুকে ছাড়া তার দিনই শুরু হতো না।আচ্ছা অরণী কি আমার কিছু লুকাচ্ছে?

অরণী -আপু তুইইতো আমার থেকে দূরে সরে গেলি।হ্যাঁ হয়তো তার কারণ আছে।এইসব বাদ দে আপু আজ আমি অতীত কে এইখানে টেনে নিয়ে আসতে চাইনা।আর হ্যাঁ আমি তোর কাছে কিছুই লুকাচ্ছিনা।
কথা গুলো শেষ করে অরণী ভাবছে, আপু মিথ্যা টা বলার জন্য আমায় ক্ষমা করেদিস।আমি তোর ভালো চাই।সিয়াম হয়তো সব কিছু জেনে বুজেই এই বিয়েটা করেছে।হয়তো আমাকে ওর ভালো লাগেনি।

এমন সময় আজাদ সাহেব এসে বললো অনুষ্ঠান শুরু করা হক। আসিফ কোথায় গেলো প্রাপ্তি আর অরণী কে নিয়ে ছাদে আসতে বলো।অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে।

প্রাপ্তির মামা -ওই তো আসিফ এসে গেছে।এই আসিফ তুই এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? চল ওদেরকে নিয়ে যাই।
তিন বাড়ীতেই হৈচৈ চলছে।সবার মনে আনন্দের রেখা থাকলে ও প্রাপ্তি আর অরণীর মনে নেই।প্রাপ্তির মনে শুধু একটাই চিন্তা তার জীবনে কি কোনো নতুন ঝড় আসছে? ভাইয়া কে এতো করে জিজ্ঞাস করলাম আমার কোনো আনসার সে দিলোনা।জানিনা কাল আমার জীবনে কি ঘটতে চলেছে।সিয়ামের সাথে আমার একটু কথা বলা উচিত ছিলো কিন্তু তাও পারলাম না।
মিনু! এই মিনু! তুই কতো পিকচার উঠাবি আর অনুষ্ঠান তো শুরু হয়ে গেলো।আয়েশা বেগমে কথা শুনে মিনু অট্র হাঁসি দিয়ে আম্মু আমাদের বাড়ীতে এটাই শেষ বিয়ে।আবার কবে বিয়ে হবে না হবে তার কোনো গ্যারান্টি আছে।
সুমি -আচ্ছা এখন এইদিকে আসো।

মিনু -ঝিনুক আপু! দেখ ভাবী কে আজ কতো সুন্দর লাগছে।কিন্তু আমার ছাগল ভাইটা কাজ নিয়ে পড়েই আছে বউয়ের দিকে কোনো খবর আছে?

রাহাত-মিনু যা বলো না কেনো আজ যদি আয়ান হতো বউয়ের পিছু আর ছাড়তোনা।

আয়ানের এইসব কথায় কোনো মন নেই।তার চোখে প্রাপ্তির মুখ বার বার ভেসে উঠছে।হুলুদের সাজে আজ তাকে কেমন লাগছে একটা বার যদি দেখতে পেতাম। নিশ্চয় পরীর মতোই লাগছে, আমার বউ বলে কথা।কাল গিয়ে আগে ওকে দেখবো।
এইদিকে সিয়ামের মনেও একি কথা । কাল যেই করেই হোক আগে গিয়ে আমি অরণী সাথে কথা বলবো তার পর বিয়ে।তিন বাড়ীতেই গাঁয়ে হলুদের সব নিয়মনীতি শেষ করতে করতে ভোর হয়ে গেলো।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১১

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১১

#Rabeya Sultana Nipa

 

__ দুই মেয়ের একসাথে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে উনি।একা হাতে কতো করবো আমি।এই লোকের সাথে ৩০ টা বছর ঘর করে এলাম এখনো আমার কষ্টটা বুজলো না।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে কবেই এইবাড়ী রেখে চলে যেতো।নিলিমা বেগমের মাছির মতো পেঁনপেঁনানি শুনে পিছন থেকে আজাদ সাহেব হাঁসি ছেপে রেখে বলতে লাগলেন,সব মেয়েই এই কথা বলে।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে চলে যেতো।এইটা পুরনো ডায়লগ, আমার কাছে ভালো লাগেনি অন্য কিছু বলো।

নিলিমা বেগম -দেখেছো আবার মুখে মুখে তর্ক করছে, এখন তর্ক করার সময়?
আসিফ গাঁয়ে হলুদের ফুল নিয়ে এসে ছাদে যাবে তখনি মা বাবারর কাণ্ড দেখে,আব্বু
এখন রাগারাগি করার সময়?আম্মু শুনো প্রাপ্তি আর অরণীর বন্ধুরা এসে ড্রইংরুমে বসে আছে। মামী কে বলো তাদের নাস্তা দিতে।

আজাদ সাহেব- হে রে আসিফ তোর বন্ধুদের আসতে বলিসনি?

আসিফ- হ্যাঁ আব্বু ওরা সবাই একটু পর চলে আসবে।আচ্ছা আমি গিয়ে ছাদে স্টেজ সাজানোর জন্য ফুল গুলো দিয়ে আসি।তুমি ডেকোরেশন গুলো ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখো।আসিফ কথা গুলো বলতে বলতে উপরে চলে গেলো।

নিলিমা বেগম প্রাপ্তির রুমে এসে দেখে প্রাপ্তি বই পড়ছে।
নিলিমা বেগম -কিরে,,,,,তুই এখনো গোসল করিসনি? অরণী তো গোসল সেরে ফেলেছে।যা না মা বই পড়ার অনেক টাইম পাবি। কিন্তু বিয়েটা মানুষের জীবনে একবারে আসে।মন টা কে পাথরের মতো না রেখে একটু নরম কর।
যা উঠে যা এই নে এই শাড়ী টা গোসল করে পরেনিবি।
প্রাপ্তি -(বিরুক্তির চাপ নিয়ে)আম্মু আমার ভালোলাগছে না।কেন শাড়ী পড়বো এখন?

নিলিমা বেগম -দুই বাড়ী থেকে সকালে শাড়ী গহনা পাঠিয়েছে। সিয়াম আর আয়ানের মা যোগাযোগ করে এইগুলো পাঠিয়েছে।যখন শুনেছে তোদের দুই বোনের এক সাথে বিয়ে আয়ানের মা নাকি আসিফের থেকে নাম্বার নিয়ে সিয়ামের মাকে ফোন দিয়েছে, সবছেয়ে অবাক ব্যাপার কি জানিস ফোন দিয়ে দেখে আয়ানের মায়ের ছোটো বেলার বন্ধু সিয়ামের মা! (কথাটা বলেই হাঁসিতে গড়িয়ে পড়ছে নিলিমা বেগম)আয়ানের মা তো ফোন করে বলেছে ওনাদের বাড়ী বউ আজ থেকেই ওদের বাড়ীর শাড়ী গহনা পরে থাকবে।সিয়ামের মা ও তাই বললো। শাড়ীর প্যাকেট টা প্রাপ্তির হাতে দিয়ে ঠেলে নিয়ে ওয়াশ রুমে দিয়ে আসলো নিলিমা বেগম।তাড়াতাড়ি গোসল করে বের হও একটু পর পার্লারে যেতে হবে তোদের।
মায়ের কথা শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থেকে গেলো।গোসল টা সেরেনি পরে না হয় বলা যাবে।

ভাবী! সুইট হার্ট! কই তুমি এইদিকে আসোতো। দোতালা থেকে আয়ানের ডাক শুনে সুমি হাতের কাজ টা রেখে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের রুমে গেলো।

সুমি -এই শুনো আমাকে আর সুইট হার্ট বলে ডাকবেনা।

আয়ান -(গোসল করে এসে চুলের পানি নিতে নিতে)কেন সুইট হার্ট?এতো দিনের অভ্যাস সেটা কি চেঞ্জ করা যায়?

সুমি -হুম করবা। কারণ তোমার বউ এসে হয়তো সহ্য করবে না হয়তো তোমার সাথে রাগও করতে পারে।পরে আমাকেও খারাপ ভাববে।
আয়ান মন খারাপ করে মেয়েটাকে কি তোমার এইরকম মনে হয়।আমার কিন্তু তেমন মনে হয়নি।মনে হয়েছে ঠান্ডা,সহজ, সরল, ভালোবাসার মতো একজন মানুষ। চোখ গুলো দেখে মনে হয় যাকে একনজর দেখলেই বিশ্বাস করা যায় ভালোবাসা যায়।আমি এতো মেয়ে দেখেছি ওর মতো মেয়ে আগে কখনো দেখিনি।

সুমি -তুমি যে রকম বলছো আমার কাছে মেয়ের বড় বোনকে সেই রকমই লেগেছে।তবে মেয়েটাও খারাপ না।যাইহোক আমাকে এই ভাবে ডেকেছো কেন?
আয়ান -আজকের জন্য আমি যে শাড়ী টা পছন্দ করে কিনে ছিলাম পাঠিয়ে ছিলে ওদের বাড়ী তে?
সুমি -হুম মিনু আর ওর হ্যাজবেন্ড গিয়ে সকালে দিয়ে এসেছে।গাঁয়ে হলুদের আর বিয়ের শাড়ী গুলোও পাঠিয়ে দিয়েছি।

আয়ান -হুম ভালো করেছো।

সুমি -আচ্ছা আমি এখন যাই কতো কাজ পড়ে আছে। এখন তোমার সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় নয়।ঘরে নতুন বউ আসুক একসাথে আড্ডা দিবো।

রুমকি এসে মামনি, মামা নানা ভাইয়া সবাইকে নিচে ডাকছে।

আয়ান রুমকি কে কোলে নিয়ে চলোতো দেখি কেনো ডাকছে।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখে আয়েশা বেগম ঝিনুক, আকাশ,মিনু, সবাই মন খারাপ করে বসে আছে।আবিদ সাহেবও গম্ভীর হয়ে বসে আছে।
সুমি সবার দিকে তাকিয়ে, কি হয়েছে সবার? সবাই চুপ কেন?

ঝিনুক -ভাবী! আব্বু এইসব কি বলছে?

আয়ান -কেন? কি হয়েছে?

আয়েশা বেগম -তোর আব্বু বলছে তোর বিয়েতে নাকি থাকতে পারবেনা। এইটা কোনো কথা বল? নিজের ছেলের বিয়ে আর নিজেই থাকবে না।

আয়ান -আব্বু কি শুনছি এইসব? কেনো থাকবে না বিয়েতে।

আবিদ চৌধুরী গলা টা একটু ঝেড়ে নিয়ে বললো,আয়ান তোকে বলা হয়নি আমাদের
নতুন প্রজেক্ট এর কাজে আমাকে দেশের বাহিরে যেতে হবে এইখানে কছু করার নেই।

আকাশ -আয়ান! আমি আব্বুকে অনেক বার বলেছি আমি যাই।কিন্তু আব্বু কিছুতেই রাজী হচ্ছেনা।

আবিদ চৌধুরী -তুমি গেলে এতো দ্বায়িত্ব বিয়ের সেই গুলো করবে কে? আমি তোমার কাঁধে বিয়ের সব দ্বায়িত্ব দিয়ে যাবো।আমি এসে যেনো শুনি সব ঠিক ভাবেই হয়েছে।আর বাড়ীর জামাইরা তো আছেই তারাও তোমাকে হেল্প করবে।(মিনু আর ঝিনুকের হ্যাজবেন্ডের দিকে তাকিয়ে)কি বলো তোমরা?

নিহাদ(ঝিনুকের হ্যাজবেন্ড)-হ্যাঁ বাবা আমি আর রাহাত(মিনুর হ্যাজবেন্ড)আকাশ ভাইয়ার সাথে আছি।আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।

আয়েশা বেগম -তোহ্ তুমি যাচ্ছো কখন?

আবিদ চৌধুরী -আজ সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হবো।তুমি গিয়ে আমার সব কিছু গুছিয়ে দাও।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম মন খারাপ করে কেমন বাবা কাল ছেলের বিয়ে আর তুমিই থাকবে না।এমন টাকার দরকার কি যেই টাকা নিজের আপন জনদের সাথে থাকতে দেয়না কথা গুলো বলতে বলতে আয়েশা বেগম রুমে চলে গেলেন।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১১

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১১

#Rabeya Sultana Nipa

 

__ দুই মেয়ের একসাথে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে উনি।একা হাতে কতো করবো আমি।এই লোকের সাথে ৩০ টা বছর ঘর করে এলাম এখনো আমার কষ্টটা বুজলো না।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে কবেই এইবাড়ী রেখে চলে যেতো।নিলিমা বেগমের মাছির মতো পেঁনপেঁনানি শুনে পিছন থেকে আজাদ সাহেব হাঁসি ছেপে রেখে বলতে লাগলেন,সব মেয়েই এই কথা বলে।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে চলে যেতো।এইটা পুরনো ডায়লগ, আমার কাছে ভালো লাগেনি অন্য কিছু বলো।

নিলিমা বেগম -দেখেছো আবার মুখে মুখে তর্ক করছে, এখন তর্ক করার সময়?
আসিফ গাঁয়ে হলুদের ফুল নিয়ে এসে ছাদে যাবে তখনি মা বাবারর কাণ্ড দেখে,আব্বু
এখন রাগারাগি করার সময়?আম্মু শুনো প্রাপ্তি আর অরণীর বন্ধুরা এসে ড্রইংরুমে বসে আছে। মামী কে বলো তাদের নাস্তা দিতে।

আজাদ সাহেব- হে রে আসিফ তোর বন্ধুদের আসতে বলিসনি?

আসিফ- হ্যাঁ আব্বু ওরা সবাই একটু পর চলে আসবে।আচ্ছা আমি গিয়ে ছাদে স্টেজ সাজানোর জন্য ফুল গুলো দিয়ে আসি।তুমি ডেকোরেশন গুলো ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখো।আসিফ কথা গুলো বলতে বলতে উপরে চলে গেলো।

নিলিমা বেগম প্রাপ্তির রুমে এসে দেখে প্রাপ্তি বই পড়ছে।
নিলিমা বেগম -কিরে,,,,,তুই এখনো গোসল করিসনি? অরণী তো গোসল সেরে ফেলেছে।যা না মা বই পড়ার অনেক টাইম পাবি। কিন্তু বিয়েটা মানুষের জীবনে একবারে আসে।মন টা কে পাথরের মতো না রেখে একটু নরম কর।
যা উঠে যা এই নে এই শাড়ী টা গোসল করে পরেনিবি।
প্রাপ্তি -(বিরুক্তির চাপ নিয়ে)আম্মু আমার ভালোলাগছে না।কেন শাড়ী পড়বো এখন?

নিলিমা বেগম -দুই বাড়ী থেকে সকালে শাড়ী গহনা পাঠিয়েছে। সিয়াম আর আয়ানের মা যোগাযোগ করে এইগুলো পাঠিয়েছে।যখন শুনেছে তোদের দুই বোনের এক সাথে বিয়ে আয়ানের মা নাকি আসিফের থেকে নাম্বার নিয়ে সিয়ামের মাকে ফোন দিয়েছে, সবছেয়ে অবাক ব্যাপার কি জানিস ফোন দিয়ে দেখে আয়ানের মায়ের ছোটো বেলার বন্ধু সিয়ামের মা! (কথাটা বলেই হাঁসিতে গড়িয়ে পড়ছে নিলিমা বেগম)আয়ানের মা তো ফোন করে বলেছে ওনাদের বাড়ী বউ আজ থেকেই ওদের বাড়ীর শাড়ী গহনা পরে থাকবে।সিয়ামের মা ও তাই বললো। শাড়ীর প্যাকেট টা প্রাপ্তির হাতে দিয়ে ঠেলে নিয়ে ওয়াশ রুমে দিয়ে আসলো নিলিমা বেগম।তাড়াতাড়ি গোসল করে বের হও একটু পর পার্লারে যেতে হবে তোদের।
মায়ের কথা শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থেকে গেলো।গোসল টা সেরেনি পরে না হয় বলা যাবে।

ভাবী! সুইট হার্ট! কই তুমি এইদিকে আসোতো। দোতালা থেকে আয়ানের ডাক শুনে সুমি হাতের কাজ টা রেখে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের রুমে গেলো।

সুমি -এই শুনো আমাকে আর সুইট হার্ট বলে ডাকবেনা।

আয়ান -(গোসল করে এসে চুলের পানি নিতে নিতে)কেন সুইট হার্ট?এতো দিনের অভ্যাস সেটা কি চেঞ্জ করা যায়?

সুমি -হুম করবা। কারণ তোমার বউ এসে হয়তো সহ্য করবে না হয়তো তোমার সাথে রাগও করতে পারে।পরে আমাকেও খারাপ ভাববে।
আয়ান মন খারাপ করে মেয়েটাকে কি তোমার এইরকম মনে হয়।আমার কিন্তু তেমন মনে হয়নি।মনে হয়েছে ঠান্ডা,সহজ, সরল, ভালোবাসার মতো একজন মানুষ। চোখ গুলো দেখে মনে হয় যাকে একনজর দেখলেই বিশ্বাস করা যায় ভালোবাসা যায়।আমি এতো মেয়ে দেখেছি ওর মতো মেয়ে আগে কখনো দেখিনি।

সুমি -তুমি যে রকম বলছো আমার কাছে মেয়ের বড় বোনকে সেই রকমই লেগেছে।তবে মেয়েটাও খারাপ না।যাইহোক আমাকে এই ভাবে ডেকেছো কেন?
আয়ান -আজকের জন্য আমি যে শাড়ী টা পছন্দ করে কিনে ছিলাম পাঠিয়ে ছিলে ওদের বাড়ী তে?
সুমি -হুম মিনু আর ওর হ্যাজবেন্ড গিয়ে সকালে দিয়ে এসেছে।গাঁয়ে হলুদের আর বিয়ের শাড়ী গুলোও পাঠিয়ে দিয়েছি।

আয়ান -হুম ভালো করেছো।

সুমি -আচ্ছা আমি এখন যাই কতো কাজ পড়ে আছে। এখন তোমার সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় নয়।ঘরে নতুন বউ আসুক একসাথে আড্ডা দিবো।

রুমকি এসে মামনি, মামা নানা ভাইয়া সবাইকে নিচে ডাকছে।

আয়ান রুমকি কে কোলে নিয়ে চলোতো দেখি কেনো ডাকছে।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখে আয়েশা বেগম ঝিনুক, আকাশ,মিনু, সবাই মন খারাপ করে বসে আছে।আবিদ সাহেবও গম্ভীর হয়ে বসে আছে।
সুমি সবার দিকে তাকিয়ে, কি হয়েছে সবার? সবাই চুপ কেন?

ঝিনুক -ভাবী! আব্বু এইসব কি বলছে?

আয়ান -কেন? কি হয়েছে?

আয়েশা বেগম -তোর আব্বু বলছে তোর বিয়েতে নাকি থাকতে পারবেনা। এইটা কোনো কথা বল? নিজের ছেলের বিয়ে আর নিজেই থাকবে না।

আয়ান -আব্বু কি শুনছি এইসব? কেনো থাকবে না বিয়েতে।

আবিদ চৌধুরী গলা টা একটু ঝেড়ে নিয়ে বললো,আয়ান তোকে বলা হয়নি আমাদের
নতুন প্রজেক্ট এর কাজে আমাকে দেশের বাহিরে যেতে হবে এইখানে কছু করার নেই।

আকাশ -আয়ান! আমি আব্বুকে অনেক বার বলেছি আমি যাই।কিন্তু আব্বু কিছুতেই রাজী হচ্ছেনা।

আবিদ চৌধুরী -তুমি গেলে এতো দ্বায়িত্ব বিয়ের সেই গুলো করবে কে? আমি তোমার কাঁধে বিয়ের সব দ্বায়িত্ব দিয়ে যাবো।আমি এসে যেনো শুনি সব ঠিক ভাবেই হয়েছে।আর বাড়ীর জামাইরা তো আছেই তারাও তোমাকে হেল্প করবে।(মিনু আর ঝিনুকের হ্যাজবেন্ডের দিকে তাকিয়ে)কি বলো তোমরা?

নিহাদ(ঝিনুকের হ্যাজবেন্ড)-হ্যাঁ বাবা আমি আর রাহাত(মিনুর হ্যাজবেন্ড)আকাশ ভাইয়ার সাথে আছি।আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।

আয়েশা বেগম -তোহ্ তুমি যাচ্ছো কখন?

আবিদ চৌধুরী -আজ সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হবো।তুমি গিয়ে আমার সব কিছু গুছিয়ে দাও।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম মন খারাপ করে কেমন বাবা কাল ছেলের বিয়ে আর তুমিই থাকবে না।এমন টাকার দরকার কি যেই টাকা নিজের আপন জনদের সাথে থাকতে দেয়না কথা গুলো বলতে বলতে আয়েশা বেগম রুমে চলে গেলেন।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১০

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১০

#Rabeya Sultana Nipa

 

__ঝিনুক আর মিনু অরণীকে দেখে আসার কথা শুনেই পরের দিনই বাপের বাড়ীতে চলে এলো।মিনুরর ৩ বছর বিয়ে হয়েছে। তার সংসার নিয়ে ভালোই কাঁটছে তার দিন।ঝিনুকের মেয়ে রুমকি বয়স ৫ বছর কিন্তু কথা শুনলে ৬০ বছরকেও হার মানায়।তার দুই বাড়ীতেই রাজত্ব। রুমকির দাদার বাড়ীতে রুমকি ছাড়া আর ছোটো বাচ্চা নেই। নানার বাড়ীতেও তাই।সবার আদরের রুমকি।নানার বাড়ীতে এলে সারাক্ষণ সুমির কাছেই থাকে।তার যতো আবদার সুমি আর আয়ানের কাছেই।আজ রাতে রুমকি সুমির হাতে খাবে বলেই জিদ ধরেছে।ঝিনুক খাবারের প্লেট নিয়ে পিছন পিছন দৌঁড়াচ্ছে,

রুমকি -আম্মু আমি তোমার হাতে খাবো না। মামনি কে ডাকো আমি তার হাতেই খাবো।

মিনু আর আয়েশা বেগম মা মেয়ের কান্ড দেখে হাঁসতে লাগলো।

আয়েশ বেগম -ঝিনুক! ওর সাথে জোরাজোরি করছিস কেনো?একটু পর সুমি আর আয়ান চলে আসবে শপিং থেকে।তারপর সুমি এসেই খাইয়ে দিবে। কথাটা শেষ করতেই কলিং বেল বেজে উঠলো।

মিনু -আম্মু তুমি বসো আমি দরজা খুলছি।

মিনুকে দেখে আয়ান অবাক হয়ে তোরা কখন এলি?

মিনু- কেন তোকে ভাবী বলেনি আমরা এসেছি।

সুমি ভিতরে আসতে আসতে না বলিনি।আমি ছেয়েছি ওকে একটু সারপ্রাইজ দিবো।
ঝিনুক আর মিনু এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে,
ঝিনুক -কেমন আছিস তুই।একটু আমাকে দেখতেই যাস না।ফোনে দুই এক মিনিট কথা বলে দ্বায়িত্ব গুলো ঝেড়ে ফেলছিস।এখনি এই অবস্থা বিয়ের পর তো ফোনই দিবিনা।

আয়ান -আপু তুই আমাকে ভুল বুজছিস।আমি সময় পাই না।(সুমির দিকে তাকিয়ে) ভাবী তুমি বলো আমি সময় পাই?

রুমকি -ছাড়ো তো আম্মুর কথা।তোমার ছোটো আম্মু যে এইখানে দাঁড়িয়ে আছে তা কি তোমার খেয়াল আছে?

আয়ান -আমি একদমি ভুলে গেছি ছোটো আম্মু। তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও।কথাটা বলতে বলতে রুমকিকে কোলে তুলে নিলো।

রুমকি -ওকে ওকে আজকের মতো ক্ষমা করে দিলাম।

আয়েশা বেগম কাজের লোক রফিক কে চা দিতে বললো সবাইকে।আয়ান শুনে বললো আম্মু আমি চা খাবোনা আমাকে কফি দিতে বলো।
মিনু -আম্মুউউউউ!!!! কয়েকদিন পর তোমার আর এতো কিছু খেয়াল রাখতে হবে না।এই বাড়ীতে যে আসছে সেই খেয়াল রাখবে।

আয়ান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো ছোটো আপু তুই কি মনে করেছিস যে আসছে তার জন্য কি সব পাল্টে যাবে নাকি।আয়ানের কিছুই পাল্টাবে না।

সুমি -ঝিনুক আপু জানো? আয়ানের বউ দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর তবে বড় বোন টা কে আরো বেশী ভালো লাগে।

আয়ান -বড় বোন! বড় বোন আমি তো দেখিনি।তুমি দেখেছো? কিন্তু আমাদের সামনে আসলো নাতো।

সুমি -হ্যাঁ সেটা আমিও ভাবছি।আমি ও দেখতাম না যদি আমি উঠে গিয়ে বাসাটা ঘুরে না দেখতাম। জানো আমি যখন ওর রুমে গেলাম একটাও কথা বললোনা।
মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে বারান্দায় চলে গেলো।পরে মেয়ের ভাইকে জিজ্ঞাস করলাম মেয়েটা কে এবং কথা বললো না কেন?সে বললো আমার বোন ও কারো সাথে কথা বলেনা।জানো কিছু একটা আছে হয়তো আমরা জানি না।

আয়েশা বেগম -সুমি! এইগুলো ভাবার দরকার নেই সবার পরিবারে কম বেশী কিছু ঘটনা থাকে।আজকের পর আর এইসব নিয়ে ঘাটাঘাটি করার দরকার নেই।
রাতে খাওয়াদাওয়া শেষ করে আবিদ চৌধুরী বসতে বললো সবাইকে।

আবিদ চৌধুরী -সবাইকে থাকতে বলেছি কারণ আমি আর আকাশ সন্ধ্যায় মেয়েদের বাড়ীতে গিয়ে পাকা কথা দিয়ে আসছি সামনের সোমবার বিয়ে।মেয়েদের বাড়ীতে একসাথে দুইটো বিয়ে।

ঝিনুক -আব্বু কি বলো আমরা দুই বোন তো এখনো মেয়েই দেখলাম না। আর আজ বুধবার আর মাত্র ৪ দিন পর।

সুমি-আব্বু আমরা কি এতো কিছু এতো তাড়াতাড়ি সামাল দিতে পারবো?
আয়ান মনে মনে ভাবছে কেমন মেয়েরে বাবা! একটা ফোন ও দিলোনা।অন্য কোনো মেয়ে হলে কতো বার যে ফোন দিতো হিসাব ছাড়া।আর এই মেয়ে একটা কথাও বললো না।আচ্ছা শুধু বিয়েটা হতে দাও তারপর দেখাবো আয়ান চৌধুরী কী!

আবিদ চৌধুরী আয়ানের দিকে তাকিয়ে তোমার কিছু বলার আছে?

আকাশ -আব্বু ও আবার কি বলবে? ও শুধু এখন বিয়ে জন্য প্রস্তুত নিবে।
আয়ান কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো।

সুমি -রুমকি চলো আজ তুমি আমাদের সাথে ঘুমাবে।
রুমকি -ওকে মামনি।(সুমির হাত ধরে) টাটা আম্মু গুড নাইট।

আবিদ চৌধুরী ঝিনুক আর মিনুকে বললো,জামাইরা কখন আসবে?

ঝিনুক -আব্বু! ও বলছে বিয়ের আগের দিন ঠিক চলে আসবে।আগেই আসতো কাজের জন্য আসতে পারবেনা।

আবিদ চৌধুরী -মিনু তুমি কিছু বলছো না যে?

মিনু -আব্বু! কলেজ অফ করে তো আর আসতে পারবেনা।আমি বলেছি বিয়ের তারিখ পড়লেই ফোন দিবো ও চলে আসবে।

আবিদ চৌধুরী -ঠিক আছে তাহলে আর কি সবাই ঘুমাতে যাও কথাটা বলেই তিনি নিজের রুমে চলে গেলেন।

প্রাপ্তিদের বাড়ীতে মেহমানের আনাগোনা তেমনি আয়ান আর সিয়ামদের বাড়ীতেও।প্রাপ্তির মামীরা চাচীরা সবাই কাজ করছে প্রাপ্তির মায়ের সাথে। প্রাপ্তির মনে একটাই চিন্তা আমার ব্যাপারে ভাইয়া কি ওদের সব জানিয়েছে? ভাইয়া তো বলেছে জানাবে। আচ্ছা সেইদিন অরণীর ব্যাপার আমার কাছে ভালো লাগলো না।অরণী কি সিয়াম কে চিনে।আমার বিয়েটা ঠিক হওয়ার পর থেকেই মন মরা হয়ে আছে।যে অরণী আমার বিয়ে নিয়ে কতো প্লান করতো আর সে অরণী আমার সাথেও তেমন কথা বলে না।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে প্রাপ্তি উঠে গিয়ে অরণীর রুমে গেলো।অরণী খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে আর ভাবছে কি করবো আমি? সিয়ামকে আমি কখনো ভুলতে পারবোনা আর ওই আয়ান না কি, ওই ছেলের সাথেও সংসার করতে পারবোনা।প্রাপ্তি অরণী পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত রাখতেই অরণী চমকে উঠে বললো আরে আপু তুই?

প্রাপ্তি -হুম আমি! কি ভাবছিস এতো দেওয়ানা হয়ে? মনে হচ্ছে রাজ্যের চিন্তা তোর মাথায়।

অরণী -নাহ্ আপু কিছু ভাবছিনা।তুই কেমনে কেমনে এই রুমে?

প্রাপ্তি দুইদিন পরতো তোর সাথে তেমন সময় কাটাতে পারবোনা। আচ্ছা অরণী সিয়াম কে তুই আগে থেকে ছিনিস তাইনা?

অরণী প্রাপ্তির এমন প্রশ্ন শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে আ আ আ পু পু,,,, কি কি,,, ব ব ব লছি স স?
প্রাপ্তি -তুই এইরকম তোতলাচ্ছিস কেনো?
আমি তোকে একটা প্রশ্ন করলাম মাত্র।

অরণী ভাবছে সরি আপু এই মিথ্যা অভিনয়টা আমাকে করতেই হবে।শুধু তোকে ভালো রাখার জন্য।

প্রাপ্তি -কি ভাবছিস এতো?

অরণী -আমি কি করে চিনবো বল? ধুর এই সব বাদ দে। শুননা আপু! তুই ওই বাড়ীতে গেলে তুই আমাকে রোজ একবার করে ফোন দিবি।কি! দিবি তো?

প্রাপ্তি হাঁসি দিয়ে অরণীকে জড়িয়ে ধরে হুম দিবো।আসিফ এসে দরজায় দাঁড়িয়ে বাহ্ ভালোই তো, আমাকে কেউ ফোন দিবেনা? আমাকে পর করে দিলি?
প্রাপ্তি অরণীকে ছেড়ে দিয়ে তুই আমার সব রে ভাইয়া।তুই না থাকলে তো আমি কতো আগেই হারিয়ে যেতাম।

আসিফ -আবার শুরু করলি? খুশীর এই দুইটা দিনে পুরোনো কোনো অতীত নয়।কাল তোদের গাঁয়ে হলুদ আমার কতো কাজ পড়ে আছে তোরা গল্প কর আমি আসছি।

চলবে,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৯

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৯

#Rabeya Sultana Nipa

 

আয়ান -ওহ্ মাই গড আমিতো ভুলেই গেছিলাম আজ আব্বুর সাথে মেয়ে দেখতে যাবার কথা।আবিদ চৌধুরী আজ আমায় গিলে খাবে । তুমিও তো রেডি হয়ে আছো দেখছি।ভাবী আমি ৫ মিনিটেই রেডি হয়ে আসছি।

সুমি -তাড়াতাড়ি করো। ৫ মিনিট বলে ৫০ মিনিট লাগাবা।

আয়ান মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে, ওকে সুইট হার্ট বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
আয়ান ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসতেই আবিদ চৌধুরী উঠে দাঁড়িয়ে ঘড়ির দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন কয়টা বাজে দেখেছো? তোমার কাছে সময়ের কোনো মূল্য না থাকতে পারে কিন্তু আমার কাছে আছে।মেয়েদের বাড়ীতে জানিয়েছিলাম ১১ টায় যাবো। এখুনি তো ১০ টা বাজে। আয়ান নিচের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বললো, আব্বু আমার মনে ছিলো না।

আবিদ চৌধুরী -তোমার যে সময়ের জ্ঞানের অভাব আছে সেটা আমার আগেই জানা আছে।

আকাশ সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে আব্বু ঠিক আছে ওকে বকতে হবেনা।আমাদের তো দেরী হয়ে যাবে।আমি গাড়ী বের করছি তোমরা আসো।আয়ানও আকাশের পিছন পিছন চলে গেলো।

আদিদ চৌধুরী -সুমি! মেয়ের জন্য যে আংটি টা এনেছি ওইটা নিয়েছো তো?

সুমি -আব্বু আজ সত্যিই আংটি পরিয়ে আসবেন?

আবিদ চৌধুরী -হ্যাঁ আসবো। এখন চলো।

আয়ানরা সবাই প্রাপ্তিদের বাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
প্রাপ্তি নাস্তা করতে এসে দেখে অনেক আয়োজন চলছে বাড়ীতে।প্রাপ্তির মামী আর আম্মু কাজে অনেক ব্যস্ত। বড় ঘর থেকে অরণীর জন্য প্রস্তাব আসছে এইটা তো আর হাত ছাড়া করা যায়না।
প্রাপ্তির মামী -আপা! (নিলিমা বেগমকে)আসিফ তো অফিসে চলে গেলো এইদিকে ছেলের বাড়ী থেকেও নাকি লোকজন আসছে ভাই (প্রাপ্তির বাবা)কি পারবে এতো কিছু সামাল দিতে।

নিলিমা বেগম-চিন্তা করিস না।আসিফ বলেছে মিটিং শেষ করেই চলে আসবে।

সিয়াম বার বার অরণীকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে অরণী একবারের জন্যও রিসিভ করছেনা।উল্টো ফোন অফ করে দিয়েছে।সিয়াম মনে মনে ভাবছে ব্যাপার কি ওকে সারপ্রাইজ দিবো বলেই তো বাবা মা কে না বলে ওদের বাড়ীতে পাঠিয়েছিলাম।মা তো বলেছে বিয়ের কথা পাকাপাকি করে আসছে শুধু তারিখটা ফেলবে।ও তো খুশী হয়ে আমাকে ফোন দেওয়া উচিত কিন্তু তানা উল্টো ফোনটাই অফ করে রেখেছে।আচ্ছা ও কি আমাকে বিয়ের দিন সারপ্রাইজ দিবে বলে হয়তো ফোন অফ করে রেখেছে।হয়তো ও বউয়ের সাজেই এক সাথে সামনে আসতে চায়।ঠিক আছে আমিও অপেক্ষা করে রইলাম।তোমাকে একসাথেই দেখবো আর ফোন দিবো না তোমাকে।

প্রাপ্তি হাঁটতে হাঁটতে বাগানের দিকে এলো।ফুল গুলোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে কিযে ভালো লাগছে তার।তাদের বাড়ীর সামনে যে একটা গাড়ী এসে থামলো সেই দিকে তার কোনো খেয়ালই নেই।
গাড়ী থেকে নেমেই আবিদ চৌধুরী ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ীর ভিতরে ঢুকলেন।আকাশ আর সুমি কথা বলতে বলতে তারাও চলে গেলো।
আয়ান বাড়ীতে ঢুকতেই প্রাপ্তির দিকে নজর পড়লো।তখন প্রাপ্তি ফুলের দিকে তাকিয়ে নিজে নিজে ফুল গুলোর সাথে কথা বলছে।প্রাপ্তির ধারনা মানুষের থেকে ফুল গুলোই ভালো। কারণ শুধু ফুল গুলোই তার কথা শুনে। তার দিকে খারাপ ধারনা নিয়ে তাকায়না।আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়েই আছে তার মনে হচ্ছে তার দেখা সুন্দর মানুষটি তার সামনে।আচ্ছা ওই ফুল গুলোকে কি বলছে আর নিজে নিজে মিটমিট করে হাঁসছে।আয়ান প্রাপ্তির দিকে এগুতে এগুতে ভাবতে লাগলো এই মেয়েকেই আজ দেখতে আসছি? আমি যাকে এতো দিন মনে মনে খুঁজছি এইসেই মেয়ে।আমি ওকে হারাতে চাই না কোনো ভাবেই না।আব্বু কে আজ আর বলবো না আমার মেয়ে পছন্দ হয়নি।মনে হচ্ছে একটা পরী আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
হঠাৎ প্রাপ্তির নজর পড়তেই দেখে আয়ান তার পাশে দাঁড়িয়ে পলকহীন ভাবে তাকেই দেখছে।প্রাপ্তি কিছু না বলেই দৌঁড়েই বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো।আয়ান মুছকি একটা হাঁসি দিয়ে নিজেও বাসায় ঢুকলো।

সুমি আয়ানকে দেখে কোথায় ছিলে এতোক্ষণ তুমি?

আয়ান-(ফিসফিস করে)সুইট হার্ট মেয়ে আমার দেখা হয়ে গেছে।আমি এখনি হ্যাঁ বলে দিলাম।তোমাদের আর মেয়ে খুঁজতে হবে না।

সুমি -ঠিক আছে দেখি তোমার পছন্দ কি রকম। বাবা তো বলেইছে পছন্দ হলে আংটি পরিয়ে যাবে।

নিলিমা বেগম আর আজাদ সেহেব বসে মেয়ের গুনো গান গাইছেন। কিন্তু আয়ানের সেইদিকে কোনো মন নেই। আয়ান ভাবছে কখন মেয়েটাকে তার সামনে নিয়ে আসবে।
আসিফ এসে সবাইকে সালাম দিয়ে বাসায় ঢুকলো।সবার সাথে একটু কথাবার্তা বলে বললো আপনার বসুন আমি আমার বোনকে নিয়ে আসছি।
আসিফ ভিতরের রুমে যেতেই আবিদ সাহেবের অফিস থেকে ফোন আসলো জরুরী ভাবে যাওয়ার জন্য।ফোন রেখেই আবিদ সাহেব বললো অফিস থেকে ফোন আসলো তাড়াতাড়ি যেতে হবে। তোমরা তাহলে দেখো আমি আসছি।

সুমি -বাবা আপনি চলে গেলে আংটি পরাবে কে?
আবিদ সাহেব -আগে আয়ানের পছন্দ হয় কিনা দেখো তারপর বাকী কথা।

সুমি -বাবা আমি বলি কি আয়ান নাকি মেয়েকে দেখেছে এবং তার পছন্দ ও হয়েছে।

আকাশ -তাই নাকি।আব্বু তাহলে বরং অফিসে আয়ান যাক আপনি থাকেন।ওর যখন পছন্দ হয়েছে তাহলেতো আর কথাই নেই।

আয়ান -আব্বু আপনি থাকেন আমিই যাচ্ছি। একদিক দিয়ে আসিফ অরণী কে নিয়ে আসলো অন্যদিক দিয়ে আয়ান বেরিয়ে গেলো।আয়ানের যেতে ইচ্ছে করছেনা ওই পরীর মতো মুখটা আরেক বার দেখতে ইচ্ছে করছে।ওই মেয়ের চোখে একটা মায়া আছে যে মায়া আমাকে বার বার টানে।
অরণী কে দেখে আবিদ চৌধুরীর পছন্দ হয়েছে। সুমির দিকে তাকিয়ে তোমরা কি বলো আয়ানেরও যখন পছন্দ হয়েছে তাহলে আংটি পরিয়েই যাই।

আকাশ -আব্বু আপনি ঠিকি বলেছেন। আয়ানের তো মতের কোনো ঠিকই নেই।কখন আবার কি করে। এর ছেড়ে ভালো পরিয়েই যাওয়াটা ভালো হবে।

আবিদ সাহেব আংটি টা অরণীর আঙুলে না পরিয়ে আসিফের হাতে দিয়ে বললো আপনারা পড়িয়ে নিবেন।প্রাপ্তিদের বাড়ীতে খাওয়াদাওয়া করে বাড়ী ফিরে এলো আয়ানদের সবাই।আয়েশা বেগম ড্রইংরুমে বসে অপেক্ষা করছিলো তাদের জন্য।আবিদ সাহেব কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে গেলো।সুমি এসে বসতে বসতে মা! আর কোনো চিন্তা নেই আপনার ছোটো ছেলের বউ বাড়ীতে আসছে কয়দিন পর। সব কিছু রেডী করেন।ঝিনুক আর মিনু (আয়ানের বোন)আপুদের খবর দিন।

আকাশ -সুমি তুমি এমন ভাব করছো যেন বউ কালকেই ঘরে আসছে।

আয়েশা বেগম খুশী হয়ে তোরা সত্যিই বলছিস বিয়েটা হচ্ছে? আচ্ছা আয়ানের মেয়ে পছন্দ হয়েছে? আয়ান কোথায় ওকে তো দেখছিনা?

আকাশ -আম্মু! আয়ান অফিসের কাজে গেছে।তবে ওর পছন্দেরই মেয়ে।ও সুমিকে ওইখানেই বলেছে মেয়ে নাকি তার পছন্দ হয়েছে।

আয়েশা বেগম- আলহামদুলিল্লাহ্‌! ওকে নিয়েই তে বড় চিন্তা ছিলো।আমি এখনি ঝিনুক আর মিনুকে ফোন দিয়ে বলছি।ওরা শুনে কতো খুশীই না হবে।রুমকি (ঝিনুকের মেয়ে)শুনলে তো এখনি আসার জন্য কান্নাকাটি করা শুরু করবে।

সুমি -হ্যাঁ মা ঝিনুক আপু তো ভাইয়ার চাকরীর জন্য আসতেই পারে না।রুমকি কে কতো দিন হয়েছে দেখি না।কতো মিষ্টি একটা মেয়ে।সারাক্ষণ মামনি মামনি বলে আমার কাছে পড়ে থাকে। ওকে কাছে ফেলে আমার মা না হওয়ার কষ্ট টা আর মনে থাকেনা।কথাটা বলেই সুমি কান্না করতে করতে দোতালায় চলে গেলো।নিজের রুমে গিয়ে বালিশ বুকের নিছে দিয়ে শুয়ে শুয়ে কান্না করছে।

আয়েশা বেগম আকাশ কে চোখ দিয়ে ইশারা দিলো সুমির কাছে যেতে।আকাশ ও মায়ের কথা শুনে রুমে গিয়ে সুমির পাশে গিয়ে বসলো।

আকাশ -সুমি! এই সুমি! তুমি কেন কান্না করছো? আমি তো তোমাকে কতো বার বলেছি সমস্যা যারি থাকুক না কেন ডাক্তার দেখাতে কিন্তু না তুমি যাবে না।আমি তোমাকে এটাও বলেছি না হলে আমারা বাচ্চা দত্তক নিবো তুমি সেটাও মানো না।কি হলো কথা বলছো না কেন? ওকে,,,,, তুমি যদি চাও আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারো আমি বাঁধা দিবো না।কথাটা শুনেই সুমি এক ঝটকায় উঠে আকাশকে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়িতো কন্ঠে বললো এইসব কি বলছো তুমি আমি তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো? ওকে ফাইন (চোখ মুছতে মুছতে) আমি আর কখনো কাঁদবো না।এইবার তুমি খুশীতো?

আকাশ -তুমি জানো তোমার কান্না আমার ভালো লাগেনা।আচ্ছা সুমি তুমিই বলো আল্লাহ আমাদের পরিক্ষা করছে তাইনা? আল্লাহ সবাইকে সব কিছু দেয়না সুমি।আল্লা আমাদের কি না দিয়েছে কিন্তু একটা সন্তান দেয়নি।

সুমি আকাশে কথা শুনে চুপ করে আছে।আমার তো আর একা কষ্ট হচ্ছে না আমি জানি আকাশ ও মনে মনে কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু কাউকে বুজতে দেয়না।

চলবে,,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ৮

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

প্রাপ্তি কথা শুনে আয়ান চোখ বড় বড় করে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে।

প্রাপ্তি মাথাটা নিচু করে, সরি।

আসিফ প্রাপ্তির রুমে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে তাদের কথাবার্তা শুনে ভালোই লাগছে তার।তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে। দরজার দিকে রেশীর নজর পড়তেই আরে ভাইয়া আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?

আয়ান -ভাইয়া ভিতরে আসুন।

আসিফ -দুজোনের তো আজ কিছুই খাওয়া হয়নি, চলো খাবে।

রেশী আর প্রাপ্তি উঠে গিয়ে নিলামা বেগমের কাছে গেলো।

আসিফ ওদের কে চলে যেতে দেখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো তোমাকে ধন্যবাদ বললে ছোটো করা হবে,শুধু একটা কথায় বলতে চাই তোমার মতো ছেলে আর একটাও হবেনা।আমাদের সমাজের দিকে তাকিয়েই দেখলে খুব ঘৃণা লাগে।কারণ প্রাপ্তির মতো মেয়েদের সমাজের লোক ভালো চোখে দেখেনা।এবং বিয়ের পর তাদের স্বামী ও না। যখন তোমার কথা মনে পড়ে তখন খুব গর্ব হয় তোমার মতো একটা ছেলে আমাদের পরিবারের একজন। প্রাপ্তিকে আগে আমি সবসময় বলতাম তোর জীবনে এমন একজন আসবে যে তোকে সবকিছু ভুলিয়ে দিবে।তোর অতীত কখনো তোকে মনে করতে দিবে না।

আয়ান কথা গুলো এতোক্ষন চুপ করে শুনছিলো।আসিফের বলা শেষ হতেই, ভাইয়া প্রাপ্তিকে আমি যেদিন ফাস্ট দেখেছিলাম সেইদিন থেকেই ভালোবেসেছি তার সবকিছু না জেনেই।এইখানে প্রাপ্তির কোনো দোষ ছিলোনা।এইটা তার ভাগ্যেই লিখা ছিলো।আর কার ভাগ্যে কখন কি লিখা থাকে বলা যায়না।যাইহোক আপনারা প্রাপ্তিকে নিয়ে কোনো চিন্তা করবেননা। আমি আছিতো।
আসিফ আয়ান কে জড়িয়ে ধরে, ঠিক বলছো,, আচ্ছা খেতে চলো সারাদিন তো না খেয়েই আছো।

খাওয়া শেষ করে সবাই রুমে যাবে এমন সময় আজাদ সাহেব বললেন তোমরা সবাই বসো আমার কিছু জরুরী কথা বলার আছে।সিয়াম বিরক্তির চাপ নিয়ে আব্বু কি বলবেন বলেন।আমার খুব টায়ার্ড লাগছে।

আজাদ সাহেব -বাবা তুমি না শুনতে চাইলে সমস্যা নেই।তোমার বেশী টায়ার্ড লাগলে যেতে পারো।

সিয়াম -আব্বু আমি তেমন ভাবে বলতে চাইনি।আচ্ছা বলুন!

আজাদ সাহেব -আয়ান! তুমি এখন আমার বাড়ীর বড় জামাই তোমার ও দায়ীত্ব আছে আছে তাই বলছি,কথাটা হচ্ছে আসিফের বিয়ের ব্যাপারে।

আয়ান-ভাইয়ার বিয়ে! সত্যি আব্বু আমার খুব ভালো লাগছে শুনে।তোহ্ মেয়ে দেখেছেন?

আজাদ সাহেব -না! ভাবছি দেখবো তোমরা সহ।

আয়ান -আব্বু ভাইয়ার বিয়ের ব্যাপারে আপনি যখন বলবেন আমি আপনার পাশে আছি।

আয়ানের কথা শুনে সিয়ামও বললো আব্বু আমি আপনার পাশে আছি।

আসিফ -তোমরা একটু চুপ করবে?আমি এখন বিয়ে করবোনা।

নিলিমা বেগম আসিফের কথা শুনে তুই কি বলছিস? বয়স তো কম হলো না তোর।বুড়ো হলে কোনো মেয়েকে কেউ তোর কাছে বিয়ে দিবে?

প্রাপ্তি -ভাইয়া! তুই একদম কথা বলবি না।বিয়ে তোকে দিচ্ছি।আর যদি তোর পছন্দের কেউ থাকে তাহলে বল? তাকে আমরা সবাই মিলে দেখে আসি কি বলো সবাই।

আয়ান -প্রাপ্তি যা বলবে তাই হবে।বিয়ে হচ্ছে মানে হচ্ছে।আমার ফ্রেন্ডের একটা বোন আছে তোমরা যদি চাও তাহলে ওকে দেখতে পারো।

প্রাপ্তি -দেখবো কখন আপনি তো বললেন কাল চলে যাবেন।নাহলে অরণী আর আমি দেখে আসতে পারতাম।সাথে আপনি আর সিয়াম ভাইয়াও যেতে পারেন।

আয়ান -আমার জন্য তো সমস্যা না অভ্র আছে ও সব সামলে নিবে।কিন্তু রেশীর কলেজ তো খোলা।

আসিফ -আচ্ছা আমি না হয় দিয়ে আসবো।যদি ও যেতে চায়।

রেশী কথাটা শুনেই প্রাপ্তি আর আয়ানের দিকে তাকালো।

প্রাপ্তি মুছকি হেঁসে বললো তাহলে কোনো সমস্যা নেই, কি রেশী তুমি যাবেতো?
রেশী মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো সে যাবে।

অরণী -এইবার আমি কিছু বলি?

নিলিমা বেগম -কি বলবি বল?

ভাইয়ার বিয়েতে সকল গেস্ট দুইদিন আগেই থেকেই আসতে হবে। বিয়ের শপিং আমি আর আপু মিলেই করবো ইচ্ছে মতো।

আয়ান -তাহলে আমার একটা কথা আছে?

আসিফ -কি কথা?

আয়ান -যে যতো শপিং করবে কোনো সমস্যা নাই শপিং এর বিল টা আমি দিবো।

আসিফ -না আয়ান এইটা হয় না।আমি আছি কি করতে আমার বোনেরা শপিং করবে টাকাটা আমিই দিবো।

সাথে আজাদ সাহেবও বললেন না আয়ান এইটা খারাপ দেখা যায়।

আয়ান মন খারাপ করে আপনার তাহলে আমাকে আপনাদের পরিবারের কেউ ভাবতে পারেন নাই।আব্বু আপনারা আমায় এতোটা পর ভাববেন আমি জানতামই না।
আসলে কি বলুন তো আমার ভাগ্যেটাই খারাপ।কথাটা বলেই আয়ান কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে চলে গেলো।

প্রাপ্তি -শুনুন আরে শুনুননা! (প্রাপ্তি বার বার ডাকাতেও সাড়া না দিয়ে চলে গেলো।)তোমরা ওকে কষ্ট না দিলেও পারতে।ও যখন চাইছে তখন করুক না।ও হয়তো একটু শান্তি পেতো। কথাটা বলে প্রাপ্তিও উঠে চলে গেলো।
রুমে এসে দেখে আয়ান রুমে নেই। বারান্দা থেকে কান্নার শব্দ শুনে প্রাপ্তি বারান্দা গিয়ে দেখে আয়ান ইজিচেয়ারটায় বসে কান্না করছে।প্রাপ্তিকে দেখে তাড়াতাড়ি করে চোখমুখ মুছে দাঁড়িয়ে,তুমি!,,,,,

প্রাপ্তি কাছে এসে নিজের কোমরে হাত দিয়ে কাল আমি শপিং এ যাবো।আর কতো টাকা আছে আপনার আমি একটু দেখতে চাই।

আয়ান চোখমুখ ভালো করে মুছে, মানে?যেই মেয়ে আমার কাছে মুখ ফু্ঁটে কিছু চায় না আর সে করবে শপিং?

প্রাপ্তি -কেন করবোনা বলেন? আপনার তো অনেক টাকা হয়েছে তাই কাল শপিং করবো।আর হ্যাঁ ভাইয়ার বিয়ের শপিং টা ও আপনি করবেন।

আয়ান -সত্যি! তাহলে ঠিক আছে।জানো আমার খুব ভালো লাগছে কথাটা শুনে।

প্রাপ্তি -(গলার স্বর টা একটু নরম করে)কান্না করছিলেন কেন?আপনার পরিবারে কথা খুব মনে পড়ছে তাইনা?

আয়ান -(আয়ান কথাটা শুনে মন খারাপ করে)কই নাতো।

প্রাপ্তি -আমি জানি! চলেন না আমরা ওই বাড়ীতে গিয়ে মা কে একবার দেখে আসি।কতো দিন হয়েছে মাকে দেখি না।

আয়ান -প্রাপ্তি! এইটা সম্ভব না! আমরা গেলে মা আরো কষ্ট পাবে।আমরা আসার সময় মা আরো কান্নাকাটি করবে।এরছেয়ে ভালো আবিদ চৌধুরীর অহংকার যেইদিন থাকবে না সেইদিন তোমাকে নিয়ে ওই বাড়ীতে যাবো।(কথাটা বলেই দীর্ঘ শ্বাস ফেলে) জানো প্রাপ্তি সবকিছু ছেড়ে দিতে পারি কিন্তু তোমাকে ছাড়তে পারবোনা।

প্রাপ্তি -আপনার আব্বুর ও হয়তো আপনার জন্য মন কাঁদে। হয়তো তিনি প্রকাশ করতে পারেন না।গম্ভীর মানুষ তো তাই হয়তো নিজেকে ছোটো করতে রাজী না।যারা উপরে কঠোর তবে ওদের নাকি মন ভালো হয়।

আয়ান -প্রাপ্তি! ওনি আমার বাবা, আমার থেকে বেশী তুমি ওনাকে ছিনোনা।প্রাপ্তি মনে আছে তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা।আয়ান ফিরে গিয়েছিলো সেইদিন গুলোতে।সেই দিন অরণীকে দেখতে আসার কথা ছিলো। সকাল থেকেই আয়ানদের বাড়ীতে অনেক হৈ চৈ হচ্ছিলো।সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছিলো আয়ানের।সুমি (আয়ানের বড় ভাবী) আয়ানের রুমে এসে কি আয়ান সাহেব আজও লেট? বাবা নিচে বসে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে?

আয়ান -কেন? মাই সুইট হার্ট?

সুমি -ফাজলামো রাখো। তোমার না আজ মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা?এই নিয়ে ১৩ টা মেয়ে দেখছো। তোমার কি কোনো মেয়েই পছন্দ হবেনা? আচ্ছা বলোতো তুমি কি রকম মেয়ে চাও একটু বলবে আমায়? বাবা কে বলবো বাবা! আয়ানের জন্য এইরকম মেয়েই খুঁজেন।তুমি যেই রকম বলবে।

আয়ান -ওহ্ মাই গড আমিতো ভুলেই গেছিলাম আজ আব্বুর সাথে মেয়ে দেখতে যাবার কথা।আবিদ চৌধুরী আজ আমায় গিলে খাবে । তুমিও তো রেডি হয়ে আছো দেখছি।ভাবী আমি ৫ মিনিটেই রেডি হয়ে আসছি।

চলবে,,,,,,

ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ৭

0

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ৭

#Rabeya Sultana Nipa

 

সকালের মিষ্টি রোদের আভা জানালার ফাঁক দিয়ে চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে গেলো প্রাপ্তির।আড়মোড় ভেঙে বিছানা ছেড়ে উঠেই বারান্দায় গেলো।বাড়ীরর এক কোনায় ফুলের বাগানের দিকে চোখ পড়তেই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি।অবাক হবে নাবাই কেনো? এক বছর আগে প্রাপ্তি অনেক গুলো গোলাপের গাছ এনে লাগিয়ে ছিলো ওই বাগান টায়।কখনো ভালো করে ফুল ফুটেনি কিন্তু আজ সব গাছে ফুল ফুটেছে।কি ভালো লাগছে প্রাপ্তির কাউকে বলে বুজাতে পারবেনা।ফ্রেশ হয়ে আসি,তারপর ওদের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাবো আজ।
প্রাপ্তি! এই প্রাপ্তি! আমার মিষ্টি বোনটা কোথায় গেলো।এখনো ঘুম থেকে উঠেনি নাকি? আসিফ ডাকতে ডাকতে প্রাপ্তির রুমে এসে দেখে প্রাপ্তি রুমে নেই।
আসিফের ডাক শুনে প্রাপ্তি বারান্দা থেকে দৌঁড়ে রুমে গেলো,ভাইয়া ডেকেছিস?

আসিফ -তুই বারান্দায়? মনে হচ্ছে আজ আমার মিষ্টি বোনটি অনেক খুশী।

প্রাপ্তি – (এক্সাইটেড হয়ে)ভাইয়া জানিস আজ বাগানে সব গুলো ফুল ফুটেছে কি ভালো লাগছে তোকে বলে বুজাতে পারবো না।

আসিফ অনেক দিন পর প্রাপ্তিকে এইভাবে দেখে মুখে হাঁসি নিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

প্রাপ্তির সেই দিকে কোনো খেয়াল নেই কথা বলেই যাচ্ছে।আসিফ মাথায় হাত রাখতেই, ওহ্ তুই আমায় কেন ডাকছিলি বললিনা তো? আমি তো বকবক করেই যাচ্ছি।

আসিফ -থামলি কেন? ভালোই লাগছে শুনতে।কতো দিন পর সেই আগের প্রাপ্তিকে একটু খানিকের জন্য ফেরে ফেলাম।

কথাটা শুনে প্রাপ্তি আসিফের হাতটা মাথা থেকে সরিয়ে কি জন্য এসেছিস সেটা বল?

আসিফ ভালো করেই জানে প্রাপ্তি এই কথা থেকে নিজেকে সরাতে চাইছে,হুম আমি অফিসে যাচ্ছি তোর কিছু লাগবে কিনা জিজ্ঞাস করতে এলাম।তুই তো কাউকে কিছু বলিসনা তাই আরকি।

প্রাপ্তি -না আমার কিছু লাগবেনা।

আসিফ -তাহলে চল নাস্তা করেনি।

প্রাপ্তি -ভাইয়া, তুই যা আমি আসছি।

কাঁধে কারো হাতের ছোঁয়া পেয়ে ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলো প্রাপ্তি।পিছনে ফিরে অবাক হয়ে আপনি কখন এলেন?
আর বৃষ্টিতে কেন ভিজছেন ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো।

আয়ান -এতো কষ্ট কেন দিচ্ছো নিজেকে?এই বৃষ্টির মধ্যে কান্না করলে কেউ বুজবেনা তাই তো?আমি অফিসে যাওয়ার পর কেউ তোমাকে কিছু বলেছে? আমি এইজন্য এইখানে আসতে চাইনা।তোমাকে আর কতো বুজাবো লোকের কথায় কোনো কান দিবানা।
এতোক্ষণ টানা বৃষ্টিতে ভেজার কারণে ভীষণ মাথা ব্যাথা করছে, আয়ানের দিকে ঠিক ভাবে তাকাতে পারচ্ছেনা প্রাপ্তি।চোখ গুলো নিভো নিভো হয়ে আসছে,প্রাপ্তি মুখে বাজিয়ে বাজিয়ে বলতে লাগলো জানেন আমার ভাইয়া ঠিক বলেছিলো এমন একজন আমার জীবনে আসবে যে আমার সবকিছু ভুলিয়ে দিবে।পৃথিবীর মানুষ গুলো আমায় বার বার মনে করিয়ে দেয় আমি ধর্ষিতা।শুধু একমাত্র আপনি বলেন আমিই আপনার সব আমি যে ধর্ষিতা আপনি মনেই করতে দেন না।কথা গুলো বলতে বলতে প্রাপ্তি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতেই আয়ান ধরে ফেললো।আয়ান কোলে করে প্রাপ্তিকে নিচে নামিয়ে এনে প্রাপ্তির রুমে নিয়ে রেশী কে ডাক দিলো।
আয়ান -রেশী তোর ভাবীর শাড়ীটা পাল্টে দে।আমি এইগুলো চেইঞ্জ করে আসছি।আয়ানের কথা শুনে অরণীর খটকা লাগলো,বিয়ের দুই বছর হয়ে গেলো। নিজের বউয়ের শাড়ী চেইঞ্জ করতে কিসের এতো লজ্জা।আমাকে তো জানতেই হবে।
অরণী আসিফকে ফোন দিয়ে আসতে বলো। নিলিমা বেগম আর রেশী প্রাপ্তির হাতে পায়ে মালিশ করছে।আয়ান তার ডাক্তার আংকেল কে ফোন দিয়ে প্রাপ্তির কথা জানালো।তিনি আশ্বাস দিলেন এসে দেখে যাবেন। আসিফ অফিস থেকে এসেই প্রাপ্তির রুমে গিয়ে দেখে প্রাপ্তির অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।
আসিফ -ওর এই অবস্থা হলো কিভাবে? তোমরা কোথায় ছিলা সবাই?

অরণী -আসলে ভাইয়া আমি সকালে,,,,,, কথাটা বলার আগেই নিলিমা বেগম থামিয়ে
আসলে সকালে আয়ান যাওয়ার পর থেকেই এই রকম হয়েছে।

আয়ান -আম্মু আপনি সত্যি কথা বলছেন না।আমি যাওয়ার পর প্রাপ্তিকে কেউ কিছু বলেছে।রেশী তুই কোথায় ছিলি?

রেশী -ভাইয়া আমি এসে দেখি ভাবী রান্নাঘরের সামনে আন্টির কোলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।তারপর কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলো।ভাবী রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিলো।তারপর কি হলো আমি জানি না ভাবী দৌঁড়ে ছাদে চলে গেলো।আমি ভাবীর পিছনেই যাচ্ছিলাম অরণী আপু বললেন ভাবী নাকি এখন একাই থাকবে।আমি গেলে রাগ করবে।

আসিফ বুজতে পেরেছে প্রাপ্তিকে কেউ কিছু বলেছে।আয়ান! তুমি কখন এলে?

আয়ান -রেশী আমায় ফোন দিয়েছিলো।আমি তখনি বুজতে পেরেছি প্রাপ্তির কিছু একটা হয়েছে।আম্মু প্লিজ বলেননা কি হয়েছে।

আসিফ -আয়ান যা হবার হয়ে গেছে। আমি ডাক্তার কে ফোন দিচ্ছি, চিন্তা করোনা।

আয়ান -ভাইয়া আমি ফোন দিয়েছি।

সবাই বসে অপেক্ষা করছে প্রাপ্তির কখন জ্ঞান ফিরবে।ডাক্তার ও এসে দেখে গেছে।জ্ঞান ফিরতে একটু দেরী হবেই।

সন্ধ্যায় প্রাপ্তির জ্ঞান ফিরে দেখে সবাই বসে আছে।আয়ানের চোখ গুলো লাল হয়ে আছে।দেখেই মনে হচ্ছে অনেক কান্না করেছে।আসিফ প্রাপ্তিকে উঠিয়ে হেলান দিয়ে বসিয়েছে।কিরে,,,,,,কেমন লাগছে এখন তোর?

প্রাপ্তি -ভালো,,,,,,,,

আসিফ -তুই কি আমাদের কোনো কথা শুনবি না?আমাদের কথা না হয় বাদ দিলাম ওই ছেলেটার দিকে তাকা।তোর এই অবস্থার পর থেকে এখনো এক গ্লাস পানিও খায়নি।

(প্রাপ্তি আয়ানের দিকে আড় চোখে বার বার দেখছে।)

এই ছেলেটা মুখের দিকে তাকিয়েও তো সব ভুলে যেতে পারিস।

প্রাপ্তি চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে। গলাটা এতোটাই ভারী হয়ে আছে যে কথা বলতেও পারছেনা।

আয়ান প্রাপ্তির চোখের পানি দেখে ভাইয়া প্লিজ ওকে কিছু বলবেননা। ওর এইসব ব্যবহার আমার সহ্য করার ক্ষমতা হয়ে গেছে।
নিলিমা বেগম -মানুষের জীবনে কতো কিছুই ঘটে কই তারা তো এইরকম করে না।তুই করছিস কেন?

অরণী -আপু তুই সবসময় বাড়াবাড়ি করছিস।কতো মেয়ে নিজের ইচ্ছায় ছেলেদের সাথে মিলামিশা করে আর তুই! তুই তো নিজের ইচ্ছায় যাসনি।প্লিজ আপু তুই স্বাভাবিক ভাবেই থাকতে পারিস না?

প্রাপ্তি চিৎকার দিয়ে না আমি পারিনা।তোমরা প্লিজ যাও এখান থেকে আমাকে একা থাকতে দাও।

আসিফ -আয়ান তুমি থাকো আমরা সবাই যাচ্ছি।
সবাই চলে গেলো,

আয়ান ও প্রাপ্তির পাশে এসে বসলো।প্রাপ্তির দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে একটা হাত টেনে নিজের কাছে নিলো।সবাইকে এইরকম ভাবে না বললেও পারতে।

প্রাপ্তি -না বললে ওরা কেউ এখান থেকে যেতো না।আর ওদের এইসব জ্ঞান মূলক কথা আমার ভালো লাগছিলো না।আপনি থেকে গেলেন কেন?

আয়ান -কেন থেকেছি জানো আমার পাগলি সবাইকে যেতে বললেও মনে মনে ঠিকি ছেয়েছে আমি যেনো থেকে যাই।আমি কি ঠিক বলছি?

প্রাপ্তি -না আপনি ঠিক বলেননি। আপনি খাননি কেন?

আয়ান -আমার পাগলি না খেলে আমি কি খেতে পারি? তুমিও তো কিছু খাওনি।

রেশী! রেশী! একটু এইদিকে আয়?

রেশী রুমে এসে আয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে, জ্বী ভাইয়া কিছু লাগবে?

আসিফ -কাল তো তোর কলেজ নাই তাই না?
রেশী -না ভাইয়া।পরশু দিন থেকে কলেজ খোলা।

আসিফ -ঠিক আছে আমরা কাল এইখান থেকে চলে যাবো।তুই এককাজ কর তোর ভাবীরর জন্য খাবার নিয়ে আয়।

প্রাপ্তি -রেশী তুই এইখানে বস।আমি ড্রইংরুমে গিয়ে সবাই একসাথেই খাবো।তোর কষ্ট করতে হবে না।

রেশী বসতে বসতে বললো জানো ভাবী আজ আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ভাইয়া পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলো। ভাইয়া যখন অফিস থেকে আসলো তুমি যদি দেখতে ভাইয়ার কি অবস্থা হয়েছিলো। ভাবী তুমি আর ভাইয়া যদি না থাকতে এই রেশী কোথায় হারিয়ে যেতো।তোমারা এনে আমাকে নতুন জীবন দিলে।কলেজে পড়ার সুযোগ করে দিলে।সেই দিন ভাইয়া যদি আমাকে রাতের অন্ধকারে না বাঁচাতো আমাকে তো ওরা মেরেই ফেলতো।

প্রাপ্তি -পাগলি মেয়ে এখন এইসব মনে করার সময়।তোর ভাইয়া উদার মনের মানুষ তাই আমাকে রাখতে গিয়ে নিজেই ঘর ছাড়া।

প্রাপ্তি কথা শুনে আয়ান চোখ বড় বড় করে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে।

প্রাপ্তি মাথাটা নিচু করে, সরি।

চলবে,,,,,