@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৯)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–তোর মতো ছোটখাটো একটা হাতির বাচ্ছা যদি আমার
বুকে মাথা রেখে ঘুমাস তাহলে তো আমি মরে যাবো।
আচ্ছা রাজি।(আমি)
.
–কি আমি হাতির বাচ্ছা। তার মানে আমার আব্বু আম্মু
হাতি।দাড়া তোরে পরে দেখে নেবো।
শর্ত (৩)কোন মেয়ের দিকে তাকানো যাবে না।(নূরী)
.
–এটা পারবো না।মেয়ে যদি সামনে পড়ে যায় তখন কি না
তাকিয়ে থাকা যায়।তাছাড়া বাড়ী থেকে বের হলে তো
শুধু মেয়ে দেখতে পাই।(আমি)
.
–তাকাতে বারন করছি তাকাবি না। যদি বেশি
বারাবারি করিস তাহলে ঠ্যাং ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে
দিবো।(নূরী)
.
–একি তুই বাঁসর ঘরে বর পিটাবি নাকি।(আমি)
.
–আবার যদি কথা বলিস তাহলে শুধু পিটাবো না আরো
অনেক কিছু করবো।চুপচাপ যে শর্ত গুলো দিচ্ছি সেগুলো
পালন করবি কোন কথা বলবি না এখন শুধু শুনবি।(নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে, এই দেখ মুখে তালা দিলাম।(আমি)
.
–শর্ত (৪) নামায পড়তে হবে প্রতিদিন। (নূরী)
.
–আর কোন কিছু না থাকে বলার তাহলে আমি একটু ঘুমাই।
তোর বক বক শুনতে বিস্বাস কর আর ভাল্লাগছে না।(আমি)
.
আল্লাহ আমারে উডিয়ে নাও না কেনো।এ মাইয়ার
জ্বালায় শান্তিতে একটু ঘুমাতেও পারবো না নাকি।
আল্লাহ তোমার কি কোন দয় মায়া নাই।তুমি কি করে
পারলে আমার মতো একটা নিষ্পাপ শিশুকে নূরীর মতো
একটা জলহস্তীর সাথে বিয়ে ঠিক করে দিলে, শুধু ঠিক
করে বিয়েটাও হয়ে গেলো কেনো এমন করলে আল্লাহ।এই
মাইয়া এতক্ষন বসে বসে কানের পোকা বের করার পরও
এখন বসে বসে কাঁদছে। না পারছি মারতে, না পারছি
বাইরে বের করতে আর না পারছি ঘুমাতে কি করবো।
খোদা।
.
— এই মুটকি তোর ন্যাকা কান্না বন্ধ করবি নাকি তোর
মুখে টেপ লাগিয়ে দিবো।(আমি)
.
–তুই আমাকে মুটকি বললি বান্দর পোলা।( নূরী)
.
–মুটকি কে মুটকি বলবো না তো কি রসগোল্লা বলবো
নাকি।তোর কান্না থামা বলছি না হলে কিন্তু……।
(আমি)
.
–কিন্তু কি?হ্যাঁ। তুই কি করবি।কথা ছিলো আমাকে বুকে
মাথা শুতে দিবি তুইতো সেটা করিসনি আরো উল্টো
আমাকে হুমকি দিচ্ছিস।(নূরী)
.
–আচ্ছা বাবা ভুল হয়ে গিয়েছে আয় বুকে আয়।(আমি)
.
— এইতো লক্ষি বর।(নূরী)
.
–এই চুপচাপ শুয়ে থাক না হলে খাটের নিচে ফেলে
দিবো। (আমি)
.
কতক্ষণ ঘুমাইছি জানি না।সকাল সকাল দরজা
ধাক্কানোর শ্বদে ঘুম ভাঙ্গলো।প্রথমে মনে করছিলাম
ডাকাত পড়ছে।কিন্তু না ডাকাত আসবে কোথায় থেকে
আমাদের এখানে তো চিরুনি তল্লাসি করলেও একটা
চোর পাওয়া যাবে না ডাকাত তো অনেক দূরের কথা।
পাশে তাকিয়ে দেখি নূরী নেই।আয় হায় এই মাইয়া আবার
গেলো কই।মাইয়ার চিন্তা পরে করবো আগে শ্বশুরের
দরজা
বাঁচাই।
দরজা খুলে তো আমি অবাক বুড়িটা এখানে কি করছে।
.
–বুড়ি তুমি এখানে কি করছো।তুমি জানো না সহ্য
বিবাহিত বর কনের ঘরে ডুকতে নেই।
(আমি)
.
–এই চুপ কর তো। বড় বড় ডায়লগ দিতে আসছে।তুই সারারাত
কি অত্যাচার করছিস মেয়েটির উপর আমি জানি না মনে
করছিস।(নানি)
.
–তুমি কি আমাদের খাটের নিচে বসে ছিলে নাকি।
(আমি)
.
–বসে থাকবো কেনো রে বান্দর। তোর নানা যা করছিলো
বাঁসর রাতে কি আর বলবো। (নানি)
.
–আমি এখন তোমার বাঁসর রাতের গল্প শুনতে ইচ্ছুক নই।
তুমি যাও আমি ঘুমাবো।(আমি)
.
–রাতে খুব দখল গেছে মনে হয়।(নানি)
.
–বুড়ি এবার কিন্তু খুব বেশি বারাবারি হয়ে যাচ্ছে।তুমি
যাও।(আমি)
.
–যাবো মানে কি রে। তুই আমার নাত বউয়ের সাথে কি
করছিস। কি অত্যাচার করছিস আমাকে জানতে হবে।
(নানি)
.
–ওহে বুড়ি আমাদের মাঝে কিছু হয়নি। তুমি যা ভাবছো
তার কিছুই হয়নি বুঝছো বুড়ি।(আমি)
.
–সেটা তো তোরে দেখলে বুঝা যাচ্ছে কি হয়েছে আর
কি হয় নাই।(নানি)
.
–ওই বুড়ি ওই আমারে দেখলে বুঝা যাচ্ছে মানে কি।
(আমি)
.
বুড়ি আমার কথার কোন উওর না দিয়ে সোজা রুমে ডুকে
পড়লো।রুমে ডুকছে সেটা কোন ব্যাপার না কিন্তু বুড়ি
এটা কেনো বললো আমাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে।
.
–পেয়েছি পেয়েছি তুই না বলছিস তোদের মাঝে কিছু হয়
নাই তাহলে নূরীর ঘাড়ে কামড়ের দাগ কেনো।তোর গলায়
লিপস্টিকের দাগ কেনো লেগে আছে এখনো।(নানি)
.
–বুড়ি তুমি এখানে আসছো কেনো।(আমি)
.
–রাতে কিছু হয়েছে কি না সেটা বুঝতে আসছি।(নানি)
.
–কি বুঝলা তুমি।(আমি)
.
–বুঝলাম কাজ হয়ে গেছে।(নানি)
.
–এ্যয়য়য়য়, বুড়ি বলে কি।আমাদের মাঝে কিছুই হয়নি।(নূরী
আর আমি একসাথে বলে উঠলাম।)
.
না না এ অন্যায় আর সহ্য করা যায় না। আমাদের মাঝে
যখন রাতে কিছুই হয়নি তাহলে বুড়ি কি করে বুঝলো
আমাদের মাঝে কিছু হয়েছে। তাছাড়া বুড়ি নূরীর ঘাড়ে
কামড়ের দাগ আর আমার গলায় লিপস্টিকের দাগ ফেলো
কি করে।
.
–নূরী এসবের মানে কি বল আমায়।(আমি)
.
–কোথায়? কি সবের মানে বলবো তোরে।(নূরী)
.
–এই যে বুড়ি বলে গেলো এসবের মানে কি।(আমি)
.
–আমি জানি না।(নূরী)
.
–তুই জানিস।আমি তো তোর মতো লিপস্টিক লাগাই না
তাহলে বুড়ি লিপস্টিকের দাগ পেলো কি করে।(আমি)
.
–আমি জানি না কি করে তোর গায়ে লিপস্টিক
লাগলো।(নূরী)
.
–এখনো সময় আছে সবকিছু স্বিকার কর না হলে কিন্তু ।
(আমি)
.
–না হলে কি হ্যাঁ কি করবি তুই কালকে রাত থেকে হুমকি
দিয়ে আসছিস দেখছি কি করবি তুই করে দেখা।(নূরী)
.
–কি করবো মানে এক্ষুনি চলে যাবো।তোর বউ ভাতে
থাকবো না।যখন সবাই এসে জানতে চাইবে তোর বর
কোথায় তখন তুই কি করবি।থাক তুই তোর মতো গেলাম
আমি।(আমি)
.
–বলছি দাড়া প্লিজ।আমাদের মাঝে কালকে রাতে
অনেক কিছু হয়েছে।(নূরী)
.
–যেমন……. (আমি)
.
–বাঁসর রাতে যা হয় তা হয়েছে।(নূরী)
.
–আমি কোথায় ছিলাম।(আমি)
.
–তুই আমার কাছে ছিলি আমার সাথে ছিলি। আর তোর
গলায় লিপস্টিকের দাগ আমি দিয়েছি।আমি জানতাম
যে সকালে নানি আসবে তাই তোর গায়ে লিপস্টিক
লাগিয়ে দিয়েছি কারন তুই ঘুমের ঘোরে ছিলি তোর কিছু
মনে থাকবে না জানি তাই লিপস্টিক লাগিয়ে বুঝিয়ে
দিলাম আমাদের মাঝে কিছু হয়েছে । (নূরী)
.
–তোরে আমি দেখে নিবো দেখিস তুই।(আমি)
.
–আমি তো কোথাও যাচ্ছি না তোর কাছে আছি
থাকবো। তুই ছাড়া আমাকে কে দেখবে বল।(নূরী)
.
.
.
চলবে@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৯)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–তোর মতো ছোটখাটো একটা হাতির বাচ্ছা যদি আমার
বুকে মাথা রেখে ঘুমাস তাহলে তো আমি মরে যাবো।
আচ্ছা রাজি।(আমি)
.
–কি আমি হাতির বাচ্ছা। তার মানে আমার আব্বু আম্মু
হাতি।দাড়া তোরে পরে দেখে নেবো।
শর্ত (৩)কোন মেয়ের দিকে তাকানো যাবে না।(নূরী)
.
–এটা পারবো না।মেয়ে যদি সামনে পড়ে যায় তখন কি না
তাকিয়ে থাকা যায়।তাছাড়া বাড়ী থেকে বের হলে তো
শুধু মেয়ে দেখতে পাই।(আমি)
.
–তাকাতে বারন করছি তাকাবি না। যদি বেশি
বারাবারি করিস তাহলে ঠ্যাং ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে
দিবো।(নূরী)
.
–একি তুই বাঁসর ঘরে বর পিটাবি নাকি।(আমি)
.
–আবার যদি কথা বলিস তাহলে শুধু পিটাবো না আরো
অনেক কিছু করবো।চুপচাপ যে শর্ত গুলো দিচ্ছি সেগুলো
পালন করবি কোন কথা বলবি না এখন শুধু শুনবি।(নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে, এই দেখ মুখে তালা দিলাম।(আমি)
.
–শর্ত (৪) নামায পড়তে হবে প্রতিদিন। (নূরী)
.
–আর কোন কিছু না থাকে বলার তাহলে আমি একটু ঘুমাই।
তোর বক বক শুনতে বিস্বাস কর আর ভাল্লাগছে না।(আমি)
.
আল্লাহ আমারে উডিয়ে নাও না কেনো।এ মাইয়ার
জ্বালায় শান্তিতে একটু ঘুমাতেও পারবো না নাকি।
আল্লাহ তোমার কি কোন দয় মায়া নাই।তুমি কি করে
পারলে আমার মতো একটা নিষ্পাপ শিশুকে নূরীর মতো
একটা জলহস্তীর সাথে বিয়ে ঠিক করে দিলে, শুধু ঠিক
করে বিয়েটাও হয়ে গেলো কেনো এমন করলে আল্লাহ।এই
মাইয়া এতক্ষন বসে বসে কানের পোকা বের করার পরও
এখন বসে বসে কাঁদছে। না পারছি মারতে, না পারছি
বাইরে বের করতে আর না পারছি ঘুমাতে কি করবো।
খোদা।
.
— এই মুটকি তোর ন্যাকা কান্না বন্ধ করবি নাকি তোর
মুখে টেপ লাগিয়ে দিবো।(আমি)
.
–তুই আমাকে মুটকি বললি বান্দর পোলা।( নূরী)
.
–মুটকি কে মুটকি বলবো না তো কি রসগোল্লা বলবো
নাকি।তোর কান্না থামা বলছি না হলে কিন্তু……।
(আমি)
.
–কিন্তু কি?হ্যাঁ। তুই কি করবি।কথা ছিলো আমাকে বুকে
মাথা শুতে দিবি তুইতো সেটা করিসনি আরো উল্টো
আমাকে হুমকি দিচ্ছিস।(নূরী)
.
–আচ্ছা বাবা ভুল হয়ে গিয়েছে আয় বুকে আয়।(আমি)
.
— এইতো লক্ষি বর।(নূরী)
.
–এই চুপচাপ শুয়ে থাক না হলে খাটের নিচে ফেলে
দিবো। (আমি)
.
কতক্ষণ ঘুমাইছি জানি না।সকাল সকাল দরজা
ধাক্কানোর শ্বদে ঘুম ভাঙ্গলো।প্রথমে মনে করছিলাম
ডাকাত পড়ছে।কিন্তু না ডাকাত আসবে কোথায় থেকে
আমাদের এখানে তো চিরুনি তল্লাসি করলেও একটা
চোর পাওয়া যাবে না ডাকাত তো অনেক দূরের কথা।
পাশে তাকিয়ে দেখি নূরী নেই।আয় হায় এই মাইয়া আবার
গেলো কই।মাইয়ার চিন্তা পরে করবো আগে শ্বশুরের
দরজা
বাঁচাই।
দরজা খুলে তো আমি অবাক বুড়িটা এখানে কি করছে।
.
–বুড়ি তুমি এখানে কি করছো।তুমি জানো না সহ্য
বিবাহিত বর কনের ঘরে ডুকতে নেই।
(আমি)
.
–এই চুপ কর তো। বড় বড় ডায়লগ দিতে আসছে।তুই সারারাত
কি অত্যাচার করছিস মেয়েটির উপর আমি জানি না মনে
করছিস।(নানি)
.
–তুমি কি আমাদের খাটের নিচে বসে ছিলে নাকি।
(আমি)
.
–বসে থাকবো কেনো রে বান্দর। তোর নানা যা করছিলো
বাঁসর রাতে কি আর বলবো। (নানি)
.
–আমি এখন তোমার বাঁসর রাতের গল্প শুনতে ইচ্ছুক নই।
তুমি যাও আমি ঘুমাবো।(আমি)
.
–রাতে খুব দখল গেছে মনে হয়।(নানি)
.
–বুড়ি এবার কিন্তু খুব বেশি বারাবারি হয়ে যাচ্ছে।তুমি
যাও।(আমি)
.
–যাবো মানে কি রে। তুই আমার নাত বউয়ের সাথে কি
করছিস। কি অত্যাচার করছিস আমাকে জানতে হবে।
(নানি)
.
–ওহে বুড়ি আমাদের মাঝে কিছু হয়নি। তুমি যা ভাবছো
তার কিছুই হয়নি বুঝছো বুড়ি।(আমি)
.
–সেটা তো তোরে দেখলে বুঝা যাচ্ছে কি হয়েছে আর
কি হয় নাই।(নানি)
.
–ওই বুড়ি ওই আমারে দেখলে বুঝা যাচ্ছে মানে কি।
(আমি)
.
বুড়ি আমার কথার কোন উওর না দিয়ে সোজা রুমে ডুকে
পড়লো।রুমে ডুকছে সেটা কোন ব্যাপার না কিন্তু বুড়ি
এটা কেনো বললো আমাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে।
.
–পেয়েছি পেয়েছি তুই না বলছিস তোদের মাঝে কিছু হয়
নাই তাহলে নূরীর ঘাড়ে কামড়ের দাগ কেনো।তোর গলায়
লিপস্টিকের দাগ কেনো লেগে আছে এখনো।(নানি)
.
–বুড়ি তুমি এখানে আসছো কেনো।(আমি)
.
–রাতে কিছু হয়েছে কি না সেটা বুঝতে আসছি।(নানি)
.
–কি বুঝলা তুমি।(আমি)
.
–বুঝলাম কাজ হয়ে গেছে।(নানি)
.
–এ্যয়য়য়য়, বুড়ি বলে কি।আমাদের মাঝে কিছুই হয়নি।(নূরী
আর আমি একসাথে বলে উঠলাম।)
.
না না এ অন্যায় আর সহ্য করা যায় না। আমাদের মাঝে
যখন রাতে কিছুই হয়নি তাহলে বুড়ি কি করে বুঝলো
আমাদের মাঝে কিছু হয়েছে। তাছাড়া বুড়ি নূরীর ঘাড়ে
কামড়ের দাগ আর আমার গলায় লিপস্টিকের দাগ ফেলো
কি করে।
.
–নূরী এসবের মানে কি বল আমায়।(আমি)
.
–কোথায়? কি সবের মানে বলবো তোরে।(নূরী)
.
–এই যে বুড়ি বলে গেলো এসবের মানে কি।(আমি)
.
–আমি জানি না।(নূরী)
.
–তুই জানিস।আমি তো তোর মতো লিপস্টিক লাগাই না
তাহলে বুড়ি লিপস্টিকের দাগ পেলো কি করে।(আমি)
.
–আমি জানি না কি করে তোর গায়ে লিপস্টিক
লাগলো।(নূরী)
.
–এখনো সময় আছে সবকিছু স্বিকার কর না হলে কিন্তু ।
(আমি)
.
–না হলে কি হ্যাঁ কি করবি তুই কালকে রাত থেকে হুমকি
দিয়ে আসছিস দেখছি কি করবি তুই করে দেখা।(নূরী)
.
–কি করবো মানে এক্ষুনি চলে যাবো।তোর বউ ভাতে
থাকবো না।যখন সবাই এসে জানতে চাইবে তোর বর
কোথায় তখন তুই কি করবি।থাক তুই তোর মতো গেলাম
আমি।(আমি)
.
–বলছি দাড়া প্লিজ।আমাদের মাঝে কালকে রাতে
অনেক কিছু হয়েছে।(নূরী)
.
–যেমন……. (আমি)
.
–বাঁসর রাতে যা হয় তা হয়েছে।(নূরী)
.
–আমি কোথায় ছিলাম।(আমি)
.
–তুই আমার কাছে ছিলি আমার সাথে ছিলি। আর তোর
গলায় লিপস্টিকের দাগ আমি দিয়েছি।আমি জানতাম
যে সকালে নানি আসবে তাই তোর গায়ে লিপস্টিক
লাগিয়ে দিয়েছি কারন তুই ঘুমের ঘোরে ছিলি তোর কিছু
মনে থাকবে না জানি তাই লিপস্টিক লাগিয়ে বুঝিয়ে
দিলাম আমাদের মাঝে কিছু হয়েছে । (নূরী)
.
–তোরে আমি দেখে নিবো দেখিস তুই।(আমি)
.
–আমি তো কোথাও যাচ্ছি না তোর কাছে আছি
থাকবো। তুই ছাড়া আমাকে কে দেখবে বল।(নূরী)
.
.
.
চলবে
sanam teri kasam part 9
sanam teri kasam part 8
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৮)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি পাঠাও।(আমি)
.
কি কপাল আমার জোর করে বিয়ে করতে হলো আবার এখন লুকানোর অপরাধে থাপ্পড় খেলাম।
.
–এই নে তোর খাবার।খেয়ে নেয় তাড়াতাড়ি। (নীরব)
.
–তোর মুখে ওটা কি ডুকিয়েছিস রে। (আমি)
.
–না ওটা কিছু না তুই খেয়ে নেয়।(নীরব)
.
–শালা হারামি আমার ভাগের ডিমটা মেরে দিলি। (আমি)
.
–মারছি বেশ করছি এখন যদি আরেকটু দেরি আস্তে আস্তে করে তোর পুরো প্লেটের সব শেষ হয়ে যাবে শুধু ভাত পড়ে থাকবে।(নীরব)
.
–তুই আমার সামনে থেকে যা রাক্ষস। (আমি)
.
আমি শান্তিতে খেতেও পারবো না মনে হয় যে অবস্থা শুরু করছে।
.
–এই পিমু কি এদিকে আসেন তো একটু।(আমি)
.
–কি হয়ে বলেল ভাইয়া।(রাকিবের gf)
.
–হাতে ওটা কি?(আমি)
.
–প্লেট। (পিমু)
.
–আরে বাবা সেটা তো আমিও দেখতে পাচ্ছি। কি নিয়ে যাচ্ছেন সেটা জানতে চাইছি।(আমি)
.
–খাবার নিয়ে যাচ্ছি নূরী ভাবীর জন্য।হ্যাপি।(পিমু)
.
–প্লেট টা নিচে নামান তো একটু।(আমি)
.
–এটা কিন্তু আপনি ঠিক করেন নাই ভাইয়া।বেচারি দুপুরে খেতে পারেনি আর এখন আপনি মাংস, ডিম সব নিয়ে নিলেন মাছটা ছাড়া।(পিমু)
.
–আপনাকে এত টেনশন করতে হবে না। ও এমনিতে ছোটখাটো একটা হাতির বাচ্ছা মাংস আর ডিম যত খাবে ততবেশি মোটা হবে।(আমি)
.
আহহহহহুহুহুহুম খাওয়া হয়েছে হেব্বি। এবার একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারলে বাঁচি।
.
–বস শেরওয়ানীটা পড়ে নে। (জাহেদ)
.
–কেনো। (আমি)
.
–বাঁসর ঘরে ডুকবা শেরওয়ানী পড়বা না তা কি করে হয়।(নীরব)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে পড়ে নিচ্ছি। (আমি)
.
বাইরে বা অন্য রুমে যাওয়া যাবে না আব্বু আম্মু দুজনে মিলে পিটাবে তাই বাধ্য হয়ে নূরীর রুমে যাচ্ছি কারন ওখানে শান্তিতে ঘুমাতে পারবো।
.
–নে ভাই চল আমি রেডি।(আমি)
.
–বসের দেখি আর দেরি সহ্য হচ্ছে না। (জাহেদ)
.
–না বেটা সহ্য হচ্ছে না তোদের সাথে বকবক করে যদি সারারাত কাটিয়ে দিই তাহলে বাঁসর রাতে বিড়াল মারবো কি করে।(আমি)
.
–আচ্ছা চল তোরে বাঁসর ঘরে ডুকিয়ে দিয়ে ওদের আবার বাড়ীতে ছেড়ে দিতে হবে। (নীরব)
.
রুমের সামনে গিয়ে দেখি বন্ধুদের gf গুলোর সাথে দুপুরের সেই মেয়েটি আছে তাদের সাথে আরো কয়েকটা সুন্দরি ললনা দাড়িয়ে আছে।
.
–ভাইয়া ১০ হাজার টাকা বের করেন না হলে রুমে ডুকতে দিবো না।(ললনা একটা)
.
–এক টাকাও দিবো না।(আমি)
.
–তাহলে আপনার আর বাঁসর করা হলো না।(ওরা)
.
–এই বেবি চল তুমি না বলছিলা নূরীর সতীন হতেও রাজী আমার জন্য, তাহলে দেরি করছো কেনো চল নূরী কে বাদ দিয়ে তোমার সাথে বাঁসর করি।(আমি)
.
–আদর ভাইয়া কি সব উল্টাপাল্টা বলছেন রুমে গেলে তারপর বুঝবেন কত ধানে কত চাল।(পিমু)
.
–এই নাও তোমাদের
টাকা। এবার ওকে ছেড়ে দাও।(অসীম)
.
–মাএ ৫ হাজার।(পিমু)
.
–অনেক দিয়েছি আর না এবার রুমের চাবি খুলে দাও আর বাড়ীর দিকে রওনা হও।(জাহেদ)
.
হারামি বন্ধুরা সবাই আমারে রুমে ডুকিয়ে দিয়ে চলে গেলো।রুমের চারদিকে লুকানোর মতো একটা জায়গা খুজতেছি আমি জানি আমাকে মার খেতে হবে।হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম আমার পা ছুয়ে নূরী সালাম করছে।
.
–উঠো মা উঠো।বেঁচে থাকো স্বামী সন্তান নিয়ে।(আমি)
.
–কি কইলি তুই।(কলার চেপে ধরে, নূরী)
.
–কি আর বলবো সালাম করছো তাই তোমার জন্য দোয়া করলাম।(আমি)
.
–তাই বলে মা বলবি।(নূরী)
.
–লক্ষি মেয়ে বরের সাথে কেউ তুই তোকারি করতে নেই।(আমি)
.
–পাম দিস না।তুই কি ভাবছিস পাম দিয়ে তুই বেঁচে যাবি আজকে দুপুর থেকে যা যা করছিস সবকিছুর শাস্তি তোরে পেতে হবে বান্দর।(নূরী)
.
–মারামারি করে কি লাভ হবে সোনা তার থেকে বেশি ভালো হবে যদি আমরা বাঁসর রাতের টি-20 ম্যাচটা খেলা শুরু করি কি বলো তুমি।(আমি)
.
–তোর টি-20 ম্যাচ পরে হবে আগে তোরে শাস্তি পেতে হবে তারপর ম্যাচ। (নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাজি।(আমি)
.
–এত তাড়াতাড়ি রাজি হয়ে যাবি আমি তা কল্পনাতেও ভাবিনি।যে ছেলে বিয়েতে রাজি হচ্ছিলো না সে এত তাড়াতাড়ি রাজি হয়ে গেলো। (নূরী)
.
–রাজি না কি আর কোন উপায় আছে বল।এখন যদি রাজি না হতাম তাহলে তো শাস্তি শেষ হতে রাত পেরিয়ে যাবে টি-20 খেলা আর হবে না।(আমি)
.
–হয়েছে এবার আমাকে প্রপোজ কর। (নূরী)
.
–পারবো না।(আমি)
.
–আমি বলছি তুই আমাকে প্রপোজ করবি।(নূরী)
.
–বললাম না তোরে আমি প্রপোজ করতে পারবো না। (আমি)
.
–কেনো পারবি না।(নূরী)
.
–পারবো না কেনো সেটা আমি জানি না। (আমি)
.
–শুধু একবার হাটু গেড়ে বসে বল তুই আমাকে ভালোবাসিস।(নূরী)
.
–পারবো না বলতে।কালকে রাতে ঘুমাতে পারিনি। আমি ঘুমাবো তুই আমাকে ডিস্টার্ব করবি না।(আমি)
.
–তুই ম্যাচ খেলবি না।(নূরী)
.
–তোর ম্যাচের গুষ্টি কিলাই খেলবো না ম্যাচ।(আমি)
.
কালকে রাতে না ঘুমানোর কারনে বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে ঘুম চলে আসলো।
জানি না কতক্ষণ ঘুমিয়েছি।
ফোঁপানোর শ্বদে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। উঠে দেখি নূরী বিছানায় মাথা দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে।
এখনো কাপড় চেন্স করে নাই।
.
–নূরী কি হয়েছে কাঁদছিস কেনো।(আমি)
.
–তুই আমাকে একটুও ভালোবাসিস না আদর।(নূরী)
.
–বেশি কথা বলিশ তুই।এখনো ফ্রেশ না হয়ে বসে বসে কাঁদছিস কেনো।(আমি)
.
–কি করবো তুইতো আমাকে ভালোবাসিস না।(নূরী)
.
–যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় তারপর তোর সব কথা শুনবো।(আমি)
.
–এই বান্দর পোলা আমাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলে তুই ঘুমাচ্ছিস।(নূরী)
.
–খুব ঘুম পাচ্ছে বক বক না করে তুইও ঘুমা।(আমি)
.
–ঘুমাবো তবে কিছু শর্ত আছে।(নূরী)
.
–কি শর্ত বলে শুয়ে পড়।(আমি)
.
–শর্ত শুনে তা পালন করার অঙ্গীকার বদ্ধ হয়ে তারপর ঘুমাবি।(নূরী)
.
–প্যাঁচাল কম করে শর্তগুলো ফটাফট বল।(আমি)
.
— শর্ত (১) আমাকে ভালোবাসতে হবে।(নূরী)
.
–তোরে ভালোবাসার কি আছে ভালোবাসলেও তুই আমার ভালো না বাসলেও তুই আমার।(আমি)
.
–চুপ আমি তোর হবো না তো অন্য কারো হবো নাকি।শর্ত (২)আমাকে তোর বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে দিতে হবে।(নূরী)
.
–তোর মতো ছোটখাটো একটা হাতির বাচ্ছা যদি আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাস তাহলে তো আমি মরে যাবো।
আচ্ছা রাজি।(আমি)
.
.
.
চলবে
sanam teri kasam part 7
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৭)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun(কাল্পনিক লেখক)
.
–না রে ভাই পাম দিচ্ছি না। সত্যি বলছি তোদের মানাবে বেশ।(জাহেদ)
.
–অনেক হয়েছে বক বক বন্ধ কর আর শেরওয়ানীটা পড়ে নেয়।(নীরব)
.
–ভাই এবার চল দেরি হয়ে যাচ্ছে।(অসীম)
.
অবশেষে আমি কাজী সাহেবের সামনে বসে আছি। আমার পাশে বসে আছে আমার জানে দুশমন নূরী।
.
–দুলাভাই শেরওয়ানীটা কিন্তু দারুণ। আপনাকে নীল শেরওয়ানী তে রাজকুমারের মতো লাগছে।(তাহারে আমি চিনি না তাই নামটাও জানি না)
.
–এমা তাই।(আমি)
.
–সত্যি বলছি। ইচ্ছে করছে নূরীর জায়গায় আমি বসি আর আপনার বউ হয়ে যাই।(অচেনা মেয়েটি)
.
–তাহলে তো ভালোই হতো। কিন্তু আপনার ভাগ্য খারাপ। (আমি)
.
–শালী তো আদা ঘরওয়ালী আমাকেও নূরীর সাথে নিয়ে চলুন আপনার করে।(মাইরাল্লা মাইয়া কয় কি)
.
–তাহলে তো আপনি নূরীর সতীন হয়ে যাবেন।(আমি)
.
–তাতে কি আমি আপনার জন্য সতীনের সাথে থাকতেও রাজী।(মেয়েটি)
.
মাইয়ার কথার উওর না দিয়ে আমি সোজা কাজী বেটার দিকে তাকালাম।বেটা দেখি অালাপ সারছে। একদিকে আমার হালুয়া টাইট হয়ে যাচ্ছে। আমি শিওর যে বাঁসর রাতে বউয়ের হাতে মাইর একটাও নিচে পড়বে না সবকটা আমার পিঠে পড়বে।এখন যদি নূরীর দিকে তাকাই আমারে চোঁখ দিয়ে গিলে খাবে।
.
কাজী বেটা অবশেষে বিয়ে পড়ানো শেষ করলো।
মেয়ে বিদায়ের প্রস্তুতি শুরু করছে সবাই।আমার মাথায় কিছুতেই ডুকতেছে না যে মাইয়া তো এ বাড়ীতে ছিলো এখনও থাকবে পরর্বতীতেও থাকবে তাহলে মেয়ে বিদায়ের জন্য সবাই এত প্রস্তুতি নিচ্ছে কেনো।
.
–ওই নীরব এদিকে আয়।(আমি)
.
–কি হয়েছে। (নীরব)
.
–কোথায় যাচ্ছিস আমাকে রেখে। (আমি)
.
–দোস্ত ম্যাডামেরা আসছে তোদের বাঁসর সাজাতে।(নীরব)
.
–ওদের কাউকে দেখলাম না যে।ওরা আসেনি কেনো?(আমি)
.
–ওরা ঠিকই আসছে তুই দেখিস নাই। এসে আবার চলে গিয়েছে এখন তোদের বাঁসর সাজাতে যাচ্ছে।(নীরব)
.
–ওরা তো এখানে থাকবে কোথায় যাচ্ছে।(আমি)
.
–তোর শ্বশুর বাড়ী তো ওরা চিনে না তাই ওদের নিয়ে যাচ্ছি।ওখানে তোদের বাঁসর হবে।এখন যারা চলে যাবে তারা কালকে বৌ ভাতে ওখানে যাবে আর যারা থাকবে তারা সবাই তোদের পিছন পিছন যাবে।(নীরব)
.
এটা কি হলো এতদিন জানতাম বিয়ে পর মেয়েরা আসে ছেলের বাড়ীতে আর আমার ভেলায় তার উল্টো আমাকে যেতে হচ্ছে মেয়ের বাড়ীতে আমারে কেউ এক গ্লাস পানি দাও ডুইবা মরি।
.
–আদর বাবা আজ থেকে আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিলাম।আমার মেয়ের ভালো মন্দের সব দায়িত্ব আজ থেকে তোমার।(শ্বশুর)
.
–আরে বেয়াই আমার ছেলেকে আপনার মেয়ের হাতে তুলে দিবো আজকে।নূরী মা আজ থেকে এই লেজ ছাড়া বান্দরটার সব দায়িত্ব তোর উপর।তুই জানিস বান্দর কে কি করে মানুষ করবি। সুখে থাকিস তোরা।(আব্বু)
.
আব্বুটার জন্য শান্তি নাই।পরিবারের সবাই আমার বিরুদ্ধে।আব্বু যে এ মাইয়াটারে আমার দায়িত্ব দিছে এ মাইয়া তো আমারে এক দিনে মেরে ফেলবে।
আমি শুধু ভাবতেছি কি করে পারলো আব্বু আমাকে জমের মুখে ছেড়ে দিতে।
.
আমি এখন ফুল দিতে সাজানো কারটাতে বসে আছি।ব্যাপারটা সত্যিই অদ্ভুত তাই না।বিয়ে করতে আসছি হেঁটে আর এখন বউ নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে ফিরছি গাড়ী করে হায় রে কপাল।যদি কপালের লেখাটা মুছে নিজের হাতে লিখতে পারতাম তাহলে নিশ্চই আমাকে এসব সহ্য করতে হতো না।
.
শ্বশুর বাড়িতে বউ নিয়ে এসে থুক্কু শ্বশুর বাড়ীতে বউ আমারে নিয়ে আসছে।বাড়ীতে ডুকার সাথে সাথে বন্ধুরা এবং ওদের gf গুলো বের হয়ে আর আমার সামনে থেকে আমার বউটারে নিয়ে চলে গেলো।আমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।নূরীরদের বাড়ীতে আগেও অনেক বার আসছি তবে এখানেও আমার জন্য রুম একটা বরাদ্দ আছে।আমি আসলে ওই রুমটাতে থাকি। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখি সবাই হাজির এখানে।
.
— কি রে বেটা বিয়ে করে সবাই বউ নিয়ে বাড়ীতে যায় আর তুই কিনা শ্বশুর বাড়ীতে আসছিস।হাহাহাহা।(আব্বু)
.
–বিটকেলের মতো দাঁত বের করে হেসো না সবকিছু তোমার জন্য হয়েছে।(আমি)
.
–আরে বাপ আমি কিছু করি নাই এসব কিছুর পিছনে আছে নূরীর হাত।নূরীর কথাতেই এসব হয়েছে। (আব্বু)
.
–তাহলে এখানে দাড়িয়ে না থেকে যাও গিয়ে নূরীর গুনগান কর। যতসব ভাল্লাগে না।(আমি)
.
–আরে কোথায় যাচ্ছিস। (আম্মু)
.
–জাহান্নামে যাচ্ছি যাবা,গাড়ী নিয়ে আসবো।(আমি)
.
–জাহান্নামে যাচ্ছিস যা, তবে কিছুক্ষণ পর ফিরে আসিস।(আম্মু)
.
দূর দূর ঘেন্না ধরে গেলো জীবনের প্রতি। ইচ্ছে করছে কিছুদিনের জন্য জঙ্গলে চলে যাই মঙ্গল করতে তবে একটা সমস্যা আছে আমি যাবো মঙ্গল করতে কিন্তু কেউ যদি আমারে খেয়ে নিজের ভুড়ি ভোজ করে নেয় তখন আমার সদ্য বিয়ে করা বউয়ের কি হবে তারথেকে বড় প্রশ্ন বাংলাদেশ জাতীয় দলের লেগস্পিনারের অভাব কে পূরণ করবে।
এসব চিন্তা ভাবনা করতে করতে অনেকটা দূর চলে এসেছি মোবাইলটাও নিয়ে আসি নাই এদিকে রাত হয়ে গেলো তবে চাঁদের আলোয় হাটতে দারুন লাগছে।
বেশ কিছুক্ষণ পর শ্বশুর বাড়ীতে প্রবেশ করলাম। কথা শুনে যা মনে হচ্ছে সবাই আমাকে খুজতেছে।আমিও এই সুযোগটা কাজে লাগানোর জন্য আস্তে করে সবার চোঁখ ফাকি দিয়ে ছাদে চলে গেলাম আর সুযোগ বুঝে লুকিয়ে পড়লাম।
বুঝো ঠেলা।
অনেক্ষন লুকিয়ে ছিলাম জব্বর ক্ষিদেও পেয়েছে আর লুকিয়ে না থেকে বের হয়ে নিচে নেমে পড়লাম।এখনো দেখছি আমাকে খুজতেছে সবাই আমার আর কি নো টেনশন আমি তো কোথাও যাইনি বাড়ীতে আছি কেউ না খুজে পেলে আমার কি।
বসে বসে টিভি দেখছি আর মিষ্টি খাচ্ছি।
একটু পরে মামাতো ভাই শিবলু দেখতে পেলো আর আব্বু কে গিয়ে বলে দিলো।
.
–এই তুই কোথায় ছিলি এতক্ষন।(আব্বু)
.
–আমিতো ছাদে ছিলাম তোমরা দেখতে না পেলে আমার কি?(আমি)
.
–ঠাসসসস,বেয়াদব পোলা।আমরা এতক্ষন খুজতে খুজতে হয়রান হয়ে গেছি আর তুই বলছিস ছাদে ছিলি তাহলে আমরা খুজে পাইনি কেনো।(আব্বু)
.
–আমি যখন ছাদে যাচ্ছি তোমরা তখন ছাদ থেকে নিচে নেমে গিয়েছো তাই দেখতে পাওনি।আর হাঁ খুব ক্ষিদে লাগছে খেতে দাও আর থাপ্পড় খেতে পারবো না বলে দিলাম।(আমি)
.
–১১ টা বেজে গেছে এখনো কেউ খায়নি তোর জন্য সবাই খাবে তুই এখানে বসে থাক আমি খাবার পাঠাচ্ছি। (আম্মু)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি পাঠাও। (আমি)
.
চলবে
sanam teri kasam part 6
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৬)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–হয়েছে আর পাম দিস না।সক্কাল সক্কাল উঠে পড়ছিস যে।(আমি)
.
–তোর কাছে এখনো সকাল মনে হচ্ছে বান্দর। (নূরী)
.
— দুই মিনিট হয় নাই শুয়েছি এর মধ্যে বক বক শুরু করে দিছিস।তোর জন্য শান্তিতে একটু ঘুমাতেও পারছি না।(আমি)
.
–বক বক না করে উঠ।১ টা বাজে গোসল করে আয়।তোরে রেডি করে আমাকেও রেডি হতে হবে।(নূরী)
.
–শেরওয়ানীটা পড়ে আমি নিজে আসতে পারবো তুই যা তো।(আমি)
.
–আমি তোরে কালকেও বলছি যে অামি আমার মতো করে তোরে সাজিয়ে গুছিয়ে নিবো।(নূরী)
.
–তোর মতলবটা আমায় একটু বলছি।আমাকে কি তুই আটা ময়দা মাখাবি নাকি।(আমি)
.
–আমি বুঝবো আমার বরকে কি করবো তোরে ভাবতে হবে না।(নূরী)
.
–এখনো তোর বর হই নাই।যখন হবো তখন দেখা যাবে।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিকআছে, এখন গোসল করে আয় দেরি হয়ে যাচ্ছে।(নূরী)
.
–যাচ্ছি যাচ্ছি। তোর মতো মাইয়া যেনো কারো কপালে না জুটে।(আমি)
.
–কারো কপালে জুটোক না জুটোক তোর কপালে আমি জুটেছি। (নূরী)
.
কি ডেন্জার মাইয়া মাইরি।যার কপালে এই মাইয়া জুটবে তার জীবন তেজপাতাময় হয়ে যাবে আমি গ্যারান্টি দিতে পারি।
দুঃখের ছোটে মাইরি ভুলবাল বলা শুরু করে দিছি মাইয়া তো আমার কপালে জুটে যাচ্ছে কোন উপায় নাই এই মাইয়ারে পিছু ছাড়ানোর।
দুঃখ ভুলতে শাওয়ারের নিচে দাঁড়াইয়া ইভান ভাইয়ের তামাক পাতা গানটা গাইতেছি আর ওই দিকে জানোয়ার টাইপের মাইয়া দরজা ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এই মাইয়ার উপর কোন বিস্বাস নাই দরজা যদি ভেঙ্গে দেয়।
.
–হাতির বাইচ্ছা, দরজা ধাক্কাচ্ছিস কেনো।ভেঙ্গে ফেলবি নাকি।(আমি)
.
–তুই বের হতে এত সময় নিচ্ছিস কেনো । গোসল করতে এত সময় লাগে নাকি গোসল করতে।(নূরী)
.
–তোর জ্বালায় শান্তিতে একটু গোসল করতেও পারবো না নাকি।(আমি)
.
–আজকে একটু তাড়াতাড়ি বের হও, দেরি হয়ে যাচ্ছে কেনো বুঝতে পারছিস না।(নূরী)
.
–দেরি হলে হবে তাতে আমার কি, আমি আরো পরে বের হবো।(আমি)
.
–মাথা গরম করিস না।দরজা ভেঙ্গে ফেলবো বলে দিলাম।(নূরী)
.
–বের হচ্ছি বের হচ্ছি দাঁড়া জলহস্তিনী। (আমি)
.
–তাড়াতাড়ি বের হও। (নূরী)
.
–আরে এক সেকেন্ড দাড়া জাইঙ্গাটা(শব্দটা ব্যবহার করার জন্য দুঃখিত) পড়ে নিই নাকি সেটাও তুই পরিয়ে দিবি।(আমি)
.
–বান্দর পোলা তুই রেডি হয়ে নিচে আয় আমি যাচ্ছি। (নূরী)
.
যাক শান্তি।এবার আমারে পায় কে শাওয়ারের নিচে বসে থাকবো আর ইভান ভাইয়ের গান গাইবো।
এত সুখ সইলো না আমার কপালে জানোয়ারটা গিয়ে হারামি সবাইরে আমার রুমে ডুকাই দিছে। এমনিতে একজনের জ্বালা সহ্য হচ্ছে না তারউপর আরো সাত সাতটা হারামি জ্বালা এত জ্বালা কোন বস্তায় রাখি।
দুঃখের কথা কারে কইতাম।আমি যদি এক্ষুনি বের না হই তাহলে আমার একটা পারফিউম রাখবে না।
হারামিগুলো আমার চোখেঁর পানি নাকের পানি এক কইরা দিছে।
.
–এই তোদের আমার রুমে ডুকতে দিছে কে।(আমি)
.
–ভাবি তো পাঠিয়েছে তোরে নিয়ে যেতে।(নীরব)
.
–আরে লম্বু আমারে নিয়ে যেতে বলছে আমার পারফিউমের গুষ্টি উদ্দার করতে তো বলে নাই তোদের।(আমি)
.
–তোরে তো নিয়ে যাবো, তার বিনিময়ে আমরা কি কিছু পাবো না।(মুন্না)
.
–মোটু।আমার একটা পারফিউমও তো ছাড়লি না ৭ হনুমানে ৭ টা শেষ করে দিলি।আজকে আন্টিদের জিঙ্গাস করবো তোদের জন্মের পর কি তোদের গায়ে পারফিউম মারছিলো নাকি।(আমি)
.
–রাগ করিস না দোস্ত।আমরা তো দিয়েছি আর তো কেউ দেয় নাই।(অসীম )
.
–ঢান্ডিয়া(এ শব্দটা কোন ধর্ম কে ছোট করার জন্য বলি নাই।কেউ নিজের বা ধর্মের উপর টেনে নিবেন না কথাটি।) মেয়েদের হাতে যখন কেলানি খাওয়াইছিস তখন মনে ছিলো না।(আমি)
.
–আমি বৌদি কে ডেকে আনছি তুই আমারে আজকেও ঢান্ডিয়া বলছিস।(অসীম)
.
–যা না যা, আমাদের সবার মধ্যে তুই একমাএ হিন্দু। তোরে আমরা কত ভালোবাসি।তোরে ভালোবেসে ঢান্ডিয়া ডাকি।(আরশাফ)
.
–তুই কি পাগল নাকি।আমি কি কিছু বুঝি না।এত বছর পযন্ত আমি তোদের বন্ধু আর তুই আমাকে এখনো চিন্তে পারিস নাই।(অসীম)
.
–এই তোদের ডায়লগ বন্ধ কর।আর ফটাফট কেঁটে পড় আমার রুম থেকে।(আমি)
.
–তোরে নিয়ে যেতে হবে। না হলে আমাদের খাওয়া বন্ধ বলছে বৌদি। (অসীম)
.
–কস কি?তাহলে তো আমি ভুলেও ভুলেও যাবো না।আমি তো চাই তোদের কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া বন্ধ হোক।এই সুযোগ আর মিস করা যাবে না।(আমি)
.
–তোরে নিয়ে যেতে পারি আর নাই পারি খাওয়া মিস হবে না।যে করে হোক খাবো খাবো।(জাহেদ)
.
–তাহলে যা ভাগ।(আমি)
.
–তোরা যা আমি আমার বন্ধুকে সাথে নিয়ে যাবো।(নীরব)
.
–তুই এত সাধু সাজিস না। সাবার মধ্যে তুই একমাএ ব্যক্তি যে আমারে বাঁশ দেওয়া ছাড়া কোনদিন ছাড়িস নাই এখন সাধু সাজতে আসছে।(আমি)
.
–ওসব বাদ দেয় তখন তোরে বাঁশ দিছি এখন তো তুই আমাদের আরও বড় বাঁশ দিচ্ছিস। আমরা ৪-৫ বছর শুধু প্রেম করে চলছি বিয়ের কথা এখনো বাড়িতে বলতে পারি নাই আর তুই কোন মাইয়ার ধারে কাছে না গিয়েও বিয়ে করছিস এর থেকে বড় বাঁশ আর কি হতে পারে।(নীবর)
.
–চুপ হারামির দল তোরা সবাই মিলে আমারে বলি দিচ্ছিস। (আমি)
.
–ভাই বলি দিই আর যাই দিই।তোর পরে আমাদের রাস্তা পরিষ্কার। আমি তো ভাবতেছি আজকেই গিয়ে বাড়িতে বলবো বিয়ের কথা।(মুন্না)
.
–বলার কি দরকার।রাস্তা যেহেতু পরিষ্কার বিয়ে করে বাড়িয়ে নিয়ে যা।আমার মাথায় ডুকে না তোর মতো আলুর বস্তাকে শুটকি টা পছন্দ করলো কি করে।(আমি)
.
–মামা সেটাতো আমিও ভাবতেছি।(নীবর)
.
–তুই এত ভাবিস না। তোর মতো জিরাফের সাথে কি মরে হরিণের মতো বেঁটে মেয়েটির সম্পক হলো সেটাই বুঝতেছি না।(আমি)
.
–ভাই তোরে এত কিছু বুঝতে হবে না।দেখ, আশরাফ,রাকিব ওরা সুন্দর ওদের gf অতটা সুন্দর নয়।রায়হান, জাহেদ, আমি কালো তাই আমাদের gf গুলো সুন্দর।(অসীম)
.
–তোরটার মতো একটাও নাই।যাই বলিস হিন্দু মেয়েরা কিন্তু একটার থেকে একটা হেব্বি।(জাহেদ)
.
–নূরী ভাবীর সাথে কিন্তু আদরকে মানিয়েছে ভালো।কারো থেকে কেউ কম না।(নীরব)
.
–হয়েছে হয়েছে আর পাম দিস না বেলুনের মতো ফেঁটে যাবো।(আমি)
.
–না রে ভাই পাম দিচ্ছি না।সত্যি বলছি তোদের মানাবে বেশ।(জাহেদ)
.
.
.
.
চলবে
sanam teri kasam part 5
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৫)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun(কাল্পনিক লেখক)
.
–তাহলে তোরা এমন করছিস কেনো।কোথায় আমাকে পালাতে হেল্প করবি তা না করে সবাইকে বলে বেড়াচ্ছিস।(আমি)
.
–তুই ভাবলি কি করে তোরে আমরা হেল্প করবো। (জাহেদ)
.
–কেনো হেল্প করবি না, আমি তোদের বন্ধু না।(আমি)
.
–বন্ধুতো কিন্তু তুই এখন আমাদের উপকার করছিস। এখন যদি তোরে পালাতে হেল্প করি তাহলে আমাদের লোকসান হবে।(জাহেদ)
.
–তোদের কথা আমি কিছুই বুঝতেছি না।(আমি)
.
–দাড়া আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি তোরে।তুইই যদি এখন বিয়ে করে নিস তাহলে আমাদের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।তোর পরে আমাদের বিয়ের সিরিয়াল। তুই বিয়ে করে নিলে আমাদের বিয়েও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।তোর বিয়ের দোহাই দিয়ে আমরাও সিঙ্গেল থেকে জোড়া হয়ে যাবো।তাছাড়া এতদিন পর একটা বিয়ের দাওয়াত পেলাম কব্জি ডুবিয়ে খাবো কিন্তু তুই পালিয়ে গেলে সেটা আর হবে না। তাই আমরা তোরে কোন হেল্প করবো না।(রাকিব)
.
–তোদের সুবিধার জন্য আমারে বলির ফাঠা বানিয়ে দিলি।(আমি)
.
–দোস্ত এছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না। (জাহেদ)
.
–দূর, তোদের গুষ্টিরপিণ্ডি। তোদের আমি দাওয়াত দিই নাই তোরা এবার যেতে পারিস তোদের মতো হারামিদের আমার দরকার নাই।(আমি)
.
–আমরা তো কেউ যাবো না রে দোস্ত আমরা এখন সবাই ঘুমাবো।(নীরব)
.
–কেনো যাবি না তোরা।(আমি)
.
–আমি ওদের সবাইকে এবং ওদের পরিবার কে দাওয়াত দিছি।(আব্বু)
.
–কি উপলক্ষে দাওয়াত দিছো।(আমি)
.
–কেনো, তোর বিয়ের দাওয়াত দিছি।(আব্বু)
.
–আমি তে বিয়ে করবো না। (আমি)
.
–তুই করবি না তোর বাপ করবে বিয়ে।(আব্বু)
.
–আম্মু শুনছো আব্বু বিয়ে করবে বলছে আমি করবো না বিয়ে।(আমি)
.
–চুপ বেয়াদব পোলা।নূরী তুই বান্দর পোলাটারে নিয় যা।(আম্মু)
.
–না আম্মু আমি নূরীর রুমে যাবো না।আমি আমার রুমে ঘুমাবো ঠান্ডা লাগছে।(আমি)
.
–সেটা হচ্ছে না চান্দু। তোরে একা ছাড়লে তুই আবার পালাতে পারিস তাই তোরে নূরীর সাথে থাকতে হবে। (আব্বু)
.
–এটা অন্যায় আব্বু।বিয়ের আগে আমি ওর সাথে থাকবো না।(আমি)
.
–কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় সেটা আমরা বুঝবো বাবা তুমি নূরীর সাথে উপরে যাও।(আঙ্কেল থুক্কু শ্বশুড়)
.
–না আমি যাবো না।(আমি)
.
–বাপ তুইতো মেহেদী পড়িস নাই নূরীর সাথে যা ও মেহেদী পড়িয়ে দিবো। (আম্মু)
.
–আমি মেহেদী পড়বো না।(আমি)
.
–তোরা হা করে কি দেখছিস বান্দরটাকে নূরীর রুমে দিয়ে আয়।(আম্মু)
.
বুঝো ঠেলা এবার কি করবো।কিছুই বুঝে উঠার আগে আমারে সবাই আমারে তুলে নিয়ে বিয়ের আগে বাসর করতে পাঠিয়ে দিলো।
বিয়ের আগে বাসর হয়ে যাচ্ছে বলে খুশিতে নাচবো নাকি বিয়ে করবো না বলে কাঁদবো কিছুই বুঝতেছি না।
একটু পরে নূরী এসে রুমে ডুকলো।
ওকে দেখে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম।
কিছুক্ষণ দাড়িতে দেখে নূরী আমার পাশে শুয়ে পড়লো।
কম্বল নিয়ে টানা টানি শুরু করে দিছে।আর কতক্ষণ সহ্য করবো মুখ বুঝে।
.
–কম্বলটা ছাড় বলবি নূরী। (আমি)
.
–তোর কথা মতো হবে নাকি সবকিছু। (নূরী)
.
–আমার কথা মতো হবে মানে। ১০০ বার হতে হবে,কারন তুই আমারে টেনে হিছড়ে তোর রুমে নিয়ে আসছিস সো আমি যেটা বলবো সেটা হবে।(আমি)
.
–তারমানে এ নয় যে আমি কম্বল গায়ে দিতে পারবো না।(নূরী)
.
–না পারবি না। আমি একা গায়ে দিবো তুই নিচে গিয়ে ঘুমা।(আমি)
.
–নিচে ঘুমাবো বলে তো তোরে নিয়ে আসিনি তোর বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো বলে তোরে আমার রুমে নিয়ে আসছি।(নূরী)
.
–তুই তো একটা ছোটখাটো হাতি। তুই আমার উপরে উঠলে আমিতো পটল তুলবো।(আমি)
.
–বাজে কথা বলিশ না।আমি মোটেও মোটা না।(নূরী)
.
–আমি তোরে মোটা বললাম কখন আমি তো বলছি তুই একটা ছোটখাটো হাতি।(আমি)
.
–যা বান্দর পোলা তোর সাথে কোন কথা নাই।ফাজিল।(নূরী)
.
–তুই কথা না বললে আমি অনেক খুশি।যা এবার নিচে গিয়ে শুয়ে পড়।(আমি)
.
–আমি কথা বলবো না বলছি।তোর সাথে ঘুমাবো না সেটা তো আর বলি নাই।(নূরী)
.
–আমার কথা আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিস। (আমি)
.
–এইতো বুদ্ধিমান ছেলে।হাত দেয় মেহেদী লাগিয়ে দিই।(নূরী)
.
–ফাউ, আমি মেহেদী লাগাবো না।তুই নিজে লাগিয়ে বসে থাক।(আমি)
.
–তুই আমার আমি যেভাবে ইচ্ছে তোরে সাজিয়ে গুছিয়ে নিবো।(নূরী)
.
–আমাকে তাহলে কালকে সাজিয়ে তোর বর করে নিস।(আমি)
.
–তোর কি মনে হয় আমি অন্য কাউকে দিবো তোরে সাজাতে।আমার পছন্দ মতো তোরে কালকেও সাজিয়ে দিবো।(নূরী)
.
–সবকিছু যদি তুই করবি তাহলে কালকে আমার হয়ে কবুল তুই বলে দিস।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিকআছে।এই না না কবুল দুজনকে বলতে হবে।(নূরী)
.
–ঘুমাতে দেয় তো একটু কালকের কথা কালকে দেখা যাবে।(আমি)
.
–ঘুমাবি মানে কি।আমি তোরে মেহেদী লাগিয়ে দিবো হাতে তুই দু-হাত সুন্দর করে মেলে ধরবি।(নূরী)
.
–আমি পারবো না।আমি ঘুমাবো তোর যা করার কর।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে মেহেদী লাগানোর পর তুই ঘুমিয়ে পড়িস।(নূরী)
.
আজ মনে হয় আমার ভাগ্যে ঘুম লেখা নাই।শালার পোড়া কপাল।
আগে যদি জানিতাম এই মাইয়া জুটবে আমার কপালে তাহলে অনেক আগে হেতিরে উপরে পাঠিয়ে দিতাম এখন আর আমায় এত জ্বালা সহ্য করিতে হইতো না।এই জ্বালা আর প্রানে সহে না।
একটু এদিক সেদিক গড়াগড়ি না খেলে কি আর ঘুম হয়।কিন্তু এ মাইয়ারে বুঝাবে কে।হেতি আমার হাত যেভাবে চেপে ধরে রাখছে মনে হচ্ছে আমি কোন অাসামি।আর ভাল্লাগে না।
ফজরের আযান দেওয়ার পর মাইয়া আমার হাত দুটো ছাড়লো আর আমিও গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম।
আমার মনে হয় ৫ মিনিটও ঘুমাইনি এর মধ্যে কে জেনে টেনে টেনে আমারে লম্বা ফেলছে।
মনে মনে তাহার জাত গুষ্টি উদ্দার করতেছি ঠিক এমন সময় আমার ঠোটেঁ পিপড়া কামড়াইছে নাকি কেউ সুঁই ডুকিয়ে দিছে বুঝে উঠতে পারছি না।বিছানা থেকে এক লাফে ডেসিন টেবিলের আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।ঠোটঁ ঠোটেঁর জায়গায় আছে কিনা দেখতেছি না ঠিক আছে ঠোটঁ। যাক বাঁচা গেলো।কিন্তু ঠোটেঁ এত ব্যাথা অনুভব করলাম কেনো।
.
–কিরে জানোয়ার এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো।আমারে আগে কোনদিন দেখিস নাই নাকি।(আমি)
.
–দেখছি, তবে তোরে আজ অন্যরকম লাগছে।(নূরী)
.
–হয়েছে আর পাম দিস না।সক্কাল সক্কাল উঠে পড়ছিস যে।(আমি)
.
.
চলবে
sanam teri kasam part 4
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৪)
.
লেখক : Abdullah Al Ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
— গুড। এবার সামনে থেকে যা।(আমি)
.
–আর কিছুদিন পর দেখবো তুই কিভাবে আমাকে দূর দূর কুত্তার মতো তাড়াস।(নূরী)
.
–ওরে জানোয়ার ওটা কুত্তী হবে। (আমি)
.
–ওই হলো একটা আর কি।(নূরী)
.
ওরে বাপরে বাপ বকা শুরু হলে বন্ধ হওয়ার নাম নেই।ওর দোষ কি দিবো আমি নিজেও তো তেমনি আমারে কোন ভূতে বলে ওর সাথে বক বক করতে আমি যদি কথা না বলি ও তো বক বক করতে পারবে না।
দূর কোন দুঃখে যে কথাটা মাথায় আসে না বুঝতে পারি না।সবসময় শুধু পালানোর চিন্তা।
.
না না আর থাকা জাস্ট ইয়ামপসিবল আদরের পালানো কেউ আটকাতে পারবে না মাগার বিয়ের কসম পালাবো মানে পালাবো।
.
আহ্ কি শান্তি সবাই বিয়ের কাজে ব্যস্ত আমি মশাই ডান পায়ের উপর বাম পা তুলে বসে আছি আমার আর কি হলুদের রাতে পালবো মানে আজকে পালাবো তাই চিনিযুক্ত চিন্তা করা ছেড়ে বসে বসে ভুড়ি বোজ চালাচ্ছি। যা হওয়ার তা তো রাতে হবে।
.
হলুদের অনুষ্ঠানে…
.
–আমার মেয়ের জামাইটা কে একটু দেখি।কত দিন জামাই কে দেখি নাই।(আন্টি,নূরীর আম্মু)
.
–ওরে বাঁশ,আন্টি বিয়ে করতে চাই না আমি।(আমি)
.
–এখনো আন্টি ডাকবি নাকি পাগল ছেলে মা ডাকবি মা।(আন্টি)
.
–আমি মরি আমার জ্বালায় আর বুড়ি আইছে ডায়লগ দিতে।(আস্তে করে আমি)
.
–কিছু বললি বাবা।(আন্টি)
.
–কিছু তো বলি নাই বলছি শুধু বলছি আগে বিয়ে হোক তারপর না হয় ডাকবো।(আমি)
.
–শুধু তো আজকে রাতটা কালকে তো বিয়ে হয়ে যাবে।(আন্টি)
.
–হওয়াচ্ছি বিয়ে দাড়াও।(আমি)
.
–কিছু বললি নাকি।(আন্টি)
.
–না না কিছু বলি নাই।অনুষ্ঠান শুরু কর।(আমি)
.
অনুষ্ঠান শেষ হতে দাও তারপর বুঝাবো কত ধানে কত চাল হয়।এ মাইয়ারে যদি ৩ বার কবুল বলে যদি বিবাহ্ করি তাহলে আমার জীবনটা পুরো সিগারেটের মতো হয়ে যাবে।
তার থেকে বরং এটাই ভালো হবে যে পালিয়ে গিয়ে কিছুদিন ঘুরে আসি তারপর আবার না হয় বাড়িতে ডুকবো।
.
অনুষ্ঠান শেষ করার পর ঘুমাতে গেলাম।হয়তো ভাবছেন হলুদের অনুষ্ঠানে কোন নাচ গান হচ্ছে না কেনো।সত্যি বলতে আমাদের সমাজে এসব নিষিদ্ধ। আমাদের সমাজের মানুষ মনে করে বিয়ে হলো একটা শুভ কাজ এই কাজে নাচ গান করে পবিএ কাজটা অপবিত্র করা যাবে না। এই কথা সবাই মানে। যত ধনী ব্যক্তি হোক না কেনো সমাজের নিয়ম যেটা আছে সেটাই চলবে।
সমাজের কথা আর নাই বলি ওটা ওখানে থাক আমি পালিয়ে বাঁচি।
সবাই যখন ঘুমে ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে গুটি গুটি পায়ে রুম থেকে বের হয়ে নিচে নেমে চারদিকে একবার ভালো করে দেখে নিয়ে দরজা খুলতে যেই না গেলাম তখনি পিছন থেকে কেউ টেনে ধরলো।
.
–কে রে একটু শান্তিতে পালাতেও দিবে না দেখছি।(আমি)
.
–পিছনে তাকিয়ে দেখ কে?(নূরী)
.
–ওহহহ তুই আগে বলবি তো।সবাই ঘুমাচ্ছে তুইও দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পড় গিয়ে। (আমি)
.
–শুয়ে পড়বো মানে কি?তুই কোথায় যাচ্ছিস।(নূরী)
.
–কাউকে বলিস না আমি পালিয়ে যাচ্ছি।(আমি)
.
–এ্যয়য়য়…(নূরী)
.
–মুখ বন্ধ কর মশা ডুকবে। যা লক্ষী মেয়ের মতো গিয়ে শুয়ে পড়।কিছুদিন পর আবার ফিরে আসবো।(আমি)
.
–আমি কিন্তু চিৎকার করবো বলে দিলাম।তুই এভাবে আমাকে ছেড়ে যেতে পারিস না।(নূরী)
.
–আরে আমি ফিরে আসবো তো।(আমি)
.
–আঙ্কেল,আন্টি,মা দেখে যাও আদর পালিয়ে যাচ্ছে আমাকে রেখে।(নূরী)
.
–আরে আরে কি করছিস সবাই জেগে যাবে তো।পরে আমার আর পালানো হবে না।(আমি)
.
–কে কোথায় পালাচ্ছে। (আব্বু)
.
–ও আমাকে রেখে পালিয়ে যাচ্ছে আবার বলছে ও চলে যাওয়ার পর দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়তে।তোমরা বল আমি ওকে ছাড়া কি এক মিনিটও থাকতে পারবো।(নূরী)
.
–তুই পালাতে দিচ্ছিস কেনো বান্দরটাকে। (আম্মু)
.
–আরে আমি তো চুরি করে পালিয়ে যাইনি যেভাবে আসামি বানিয়ে রেখেছো।নূরী তো ছিলো ওকে তো বললাম দরজা বন্ধ করতে আমি যাওয়ার পর তাহলে তোমরা বল এটাকে কি পালানো বলে তাছাড়া পালানোর আইডিয়া তো নূরী দিছে।(আমি)
.
–তুই তো বললি তোর কোন এক বন্ধু পালাবে ওর যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তাকে বিয়ে করবে না ও পালিয়ে গিয়ে ওর gf কে বিয়ে করবে।(নূরী)
.
–ঠিকই তো আছে, বন্ধু পালানো আর আমি পালানো একি হলো।(আমি)
.
–এই চুপ,মা যা তুই ওকে নিয়ে যা পালিয়ে যেত
দিস না কখনো।(আম্মু)
.
–পালাতে দিবে না বললেই হলো নাকি আমি পালাবো।(আমি)
.
–তুই যদি পালিয়ে যাস তাহলে আমাকে নিয়ে পালাবি নয়তো তোর পালানো হবে না।(নূরী)
.
–তুই বললেই হলো নাকি।আমি পালাবো মানে পালাবো।(আমি)
.
–তোরে পালাতে দিবো না আমি, দেখি তুই কিভাবে পালাস।(নূরী)
.
–কিভাবে পালবো মানে?পালানোর আইডিয়া তো তুই দিয়েছিলি আমাকে।(আমি)
.
–কি এত বড় মিথ্যা কথা।আমি তোরে কখন পালাতে বলছি।(নূরী)
.
–সেদিন তুইতো বললি ছ যেনো পালিয়ে যাই।(আমি)
.
–সেটা তো তোর কোন এক বন্ধু পালানোর কথা ছিলো। (নূরী)
.
–বন্ধু পালানো আর আমি পালানো একি কথা।(আমি)
.
–তবে রে বান্দর পোলা, আমি তোরে পালাতে বলি নাই তুই পালাতে পারবি না।(নূরী)
.
–এই চুপকর দুজনে।তোদের এত কথা শুনতে চাই না। ঘুমাতে যা দুজনে।নূরী ওকে নিয়ে যা।(আব্বু)
.
–আমি যাবো না নূরীর সাথে। (আমি)
.
–কেনো যাবি না নূরীর সাথে।(আম্মু)
.
–আমি বিয়ে করবো না তাই যাবো না।(আমি)
.
–কেনো বিয়ে করবি না। (হবু শ্বশুড়)
.
–বিয়ে করলে আমি আমার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলবো তাই বিয়ে করবো না।(আমি)
.
–ভাই তুই এটা বলিস না,এটা বল যে মেয়েদের হাতে পথেঘাটে মার খাওয়ার উপায় খুজে পাবি না।(ইমন)
.
–তোরে এখানে কে ডাকছে। যা তুই এখন থেকে।(আমি)
.
–তুই পালাবি আর আমি বসে থাকবো তা কি করে হয়।(ইমন)
.
–আমি পালাবো তুই জানলি কি করে।(আমি)
.
–কেনো তোর বন্ধুরা বলছে।(নূরী)
.
–শয়তানের বাইচ্ছারা এখন কোথায়। (আমি)
.
–চিন্তা করসি না তোর বিয়েটা হয়ে যাবে।(জাহেদ)
.
–আচ্ছা তোরা আমার বন্ধু নাকি শ্রুএ কিছুই বুঝতেছি না।(আমি)
.
–ভাই এভাবে বলিস না তুই আমাদের বন্ধু আর আমরাও তোর বন্ধু।(নীরব)
.
–তাহলে তোরা এমন করিস কেনো।কোথায় আমাকে পালাতে হেল্প করবি তা না করে সবাই কে বলে বেড়াচ্ছিস।(আমি)
.
.
.চলবে
sanam teri kasam part 3
@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (৩)
.
লেখক : Abdullah Al Ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–তুই কথাই বলিস না, তোর শরম থাকা উচিৎ মেয়েদের হাতে মার খেয়ে এসেছিস।(নূরী)
.
–এই চুপ থাক।বক বক করবি নাক ফাটিয়ে ফেলবো মেরে।(আমি)
.
–হক কথা বললেই দোষ।(নূরী)
.
–তোর হক কথার গুষ্টি কিলাই। আমার সামনে থেকে যা।(আমি)
.
–যাচ্ছি যাচ্ছি তুই রুমে যা,আমি মলম নিয়ে আসছি।(নূরী)
.
–তুই কিন্তু এবার মাথা গরম করে দিচ্ছিস।আমার এমন অবস্তা এখনো হয়নি যে ওদের মার খেয়ে মলম লাগাতে হবে।(আমি)
.
–যা তো, তোর ক্ষমতা কতটুকু জানা হয়ে গেছে।(নূরী)
.
এই মাইয়ার কি মনে হয় ওদের মার খেয়ে আমাকে মলম লাগাতে হবে।
ওর কি মনে হয় আমি ওদের কিছুই করতে পারতাম না।মেয়ে বলে কিছু বলি নাই নাহলে ওদের মেরে লুকিয়ে ফেলা আমার বা হাতের খেল।
.
–কিরে তুই নাকি মেয়েদের হাতে মার খেয়ে এসেছিস।(ইমন)
.
–কে বলছে তোরে এসব।(আমি)
.
–আরে বলছে কেউ একজন তুই নাকি মার খেয়ে বর্তা হয়ে বাড়িতে এসেছিস।(ইমন)
.
–এই নূরীর বাইচ্ছা নূরী।এদিকে আয় বলছি।(আমি)
.
–কি হয়েছে ষাঁড়ের মতো চিল্লাস কেনো।(নূরী)
.
–তুই আমাদের নেতা কে কি বলছিস।(আমি)
.
–কই আমি তো কিছু বলিনি।এই ইমন তোরে আমি কিছু বলছি নাকি।(নূরী)
.
–আরে ভাই হবু ভাবি কিছু বলে নাই। আমাকে তোর বন্ধু নীরব বলছে।(ইমন)
.
–জানোয়ার গুলোকে তো আজকে শেষ করে ফেলবো। ওদের জন্য আমাকে আজ মেয়েদের হাতে মার খেতে হয়েছে আবার সবাইকে বলে বেড়ানো হচ্ছে। (আমি)
.
–আরে আরে কি করছিস রামতা (ক্রিস)নিয়ে কোথায় যাচ্ছি।(নূরী)
.
–আরে ভাবি ওকে আটকাও না হলে আজকে কেউ বাঁচবে না।(ইমন)
.
–আমি চেষ্টা করছি তুই ওদের ফোন দিয়ে বল ফালিয়ে যেতে।(নূরী)
.
–ঠিক আছে তাই করছি।আগের মতো খেপেছে আজকে হাতের কাছে ফেলে নির্ঘাত তাদের মূত্যু।(ইমন)
.
যখন ক্রিসটা নিয়ে যাচ্ছিলাম তখনি আব্বু দেখে ফেলে গাড়ি থেকে।কোন অলুক্ষনে সময়ে আব্বু বের হয়েছে।
.
–এই দাড়া বলছি দাড়া।(আব্বু)
.
–কি বলবা বল।(আমি)
.
–কাকে মারতে যাচ্ছিস। (আব্বু)
.
–কাউকে না।এমনি একটু মজা করার জন্য বের হয়েছি।(আমি)
.
–ঠাসসস, তুই আমার কাছে মিথ্যা বলছিস। আমি জানি তুই কাদের মারতে যাচ্ছিস।শুন ওরা তোর বন্ধু ওদের সাথে এক সাথে পড়া লেখা খেলাধুলা করছিস।আজকে ওরা তোর সাথে মজা করছে বলে ওদের মারতে যাচ্ছিস।(আব্বু)
.
–ওরা কি করছে তুমি জানো। (আমি)
.
–আমি সব জানি কি হয়েছে।ওরা তোর বন্ধু একদিন মজা করবে একদিন বুকে টেনে নিবে।তাছাড়া বাইরের কাউকে তো বলে নাই কিছু তোরে রাগানোর জন্য আমাদের বলছে।এসব ঠিক না বাড়িতে চল।(আব্বু)
.
–আমি তো এটা নিয়ে একটু মজা করতে যাচ্ছিলাম।(আমি)
.
–বুঝলাম মজা করতে যাচ্ছিস।হঠাৎ করে যদি ওরা কেউ উল্টাপাল্টা কথা বলতো তাহলে তো ঝামেলা হয়ে যেতো তখন কি করতি।তাছাড়া ওরা তোর বন্ধু ওরা তোকে বুঝবে আর যারা তোরে ক্রিস হাতে দেখছে তাদের চোঁখে তো তুই খারাপ হয়ে গেছিস । (আব্বু)
.
— ভুল হয়ে গেছে আর এমনটা হবে না।স্যরি। (আমি)
.
–চল বাড়িতে চল।রাতে নাকি তোদের খেলা আছে খেয়ে ঘুমাবি তাহলে ভালো কিছু করতে পারবি। (আব্বু)
.
বাড়িতে গিয়ে বান্দরের মতো লাফাতে লাফাতে ছাদে উঠে দেখি নূরী আমার গোলাপ গাছগুলোর পাতা কাঁটছে। চুপি চুপি গিয়ে চুলের মুঠি ধরে তুললাম।
.
–আহহহহ, ছাড়। কেউ এমন করে হবু বউয়ের সাথে।(নূরী)
.
–কিসের হবু।কার হবু। কেমন হবু।(আমি)
.
–হবু মানে যে কিছুদিন পর তোর বা তোর পরিবারের কেউ হবে।(নূরী)
.
–সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু বউ মানে কি?(আমি)
.
–না বুঝলে মুড়ি খা গিয়ে। (নূরী)
.
–নিজেই যেহেতু জানিস না তাহলে আবার বউ হতে চাস কেনো।(আমি)
.
–বউ কারে কয় সেটা কিছুদিন পর বুঝতে পারবি।(নূরী)
.
–পারলে এখন বুঝিয়ে যা।(আমি)
.
–আগে বিয়েটা হয়ে যাক তারপর বুঝাবো।(নূরী)
.
–পাগল নাকি তোরে আমি বিয়ে করবো ভাবলি কি করে।(আমি)
.
–তোরে ভাবতে তো কেউ বলে নাই। বিয়ের পর ভাবিস।(নূরী)
.
–দেখা যাবে।(আমি)
.
–ওই ছেলেটি কি পালিয়েছে।(নূরী)
.
–আবার কার দিকে নজর দিলি তোর নজর তো খুব খারাপ।(আমি)
.
–বাজে বকিস না তো।ওইদিন যে বললি একটা ছেলে পালাবে ও কি পালিয়েছে। (নূরী)
.
–না না ও এখনো পালায়নি পালাবে কিছুদিনের মধ্যে।(আমি)
.
–তুই যে বললি ও সেদিনই পালিয়ে যাবে।(নূরী)
.
–খুব তাড়াতাড়ি পালাবে এটা তুই শিউর থাক।(আমি)
.
— বুঝতে পারছি কে পালাবে?কবে পালাবে?কেনো পালাবে?(নূরী)
.
–গুড।এবার সামনে থেকে যা।(আমি)
.
চলবে
sanam teri kasam part 2
@@ sanam teri kasam@@
.
পর্ব : (২)
.
লেখক: Abdullah Al Ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–আমার মতে ছেলেটির এখন ফালিয়ে যাওয়া উচিৎ।(নূরী)
.
–ঠিক বলছিস তো, পরে আবার যদি মত বদলাস তাহল তোর খবর আছে।(আমি)
.
–আরে বাবা আমি হলেও ঠিক এমনটাই করতাম।আচ্ছা এটা বল ছেলেটি কে।(নূরী)
.
–আমার পরিচিত একজন। আমি তাহলে ওকে বলি ফালিয়ে যেতে কি বলিস।(আমি)
.
–হুম তাড়াতাড়ি বল ও যেনো ফালিয়ে যায়।(নূরী)
.
–তুই এখানে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছিস কেনো যা ফট এখান থেকে।(আমি)
.
— এত ভালো একটা উপায় বলে দিলাম কোথায় একটু বসতে বলবি তা না করে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছিস।(নূরী)
.
–তোরে কোলে নিয়ে নাচবো নাকি যা ফট।(আমি)
.
–এ্যয়য়য়য়য়…(নূরী)
.
–এই কাঁদবি না যা সামনে থেকে যা বলছি।(আমি)
.
–তোরে আর কোনদিনও কোন উপকার করবো না।(নূরী)
.
–তোর উপকারের গুষ্টি কিলাই যা তো।(আমি)
.
যাক অবশেষে শান্তি।বুদ্ধি আছে বলতে হবে। না হলে কি করে নূরীর বাইচ্ছা কে বোকা বানিয়ে ওর থেকে নিজের পালানোর উপায় বের করে নিলাম।
ভাবছি আজকে রাতে পালাবো কিন্তু না সেটা করবো না আরো কিছুদিন যাক তারপর পালাবো।
.
–ওরে কোন জানোয়ার এত ঠান্ডার মধ্যে গায়ে পানি দিয়ে দিলি।(আমি)
.
–আমি পানি ডালছি তোর গায়ে।(নূরী)
.
–এই কোন সমাজের মেয়েরে তুই। তুই জানিস না শীত কালে পানি মারামারি নিয়ে কত ঝগড়া হয়।(আমি)
.
–তুই জ্ঞান দিতে আসিস না।(নূরী)
.
–এই তুই জ্ঞানের দেখছিস কি।তুই পানি মারলি কেনো আমারে।(আমি)
.
–তুই ঘুমের ঘোরে ফুল কলি ফুল কলি করছিস কেনো।(নূরী)
.
–ফুল কলি ফুল কলি করবো না তো কি নূরী নূরী করবো নাকি।(আমি)
.
–সেটা করলে তো অন্য কিছু দিতাম পানি দিতাম না।(নূরী)
.
— জানোয়ার সর সামনে থেকে। তোর অন্য কিছুর আমার দরকার নাই।(আমি)
.
–ফুল কলিটা কে?(নূরী)
.
–গার্লফ্রেন্ড। (আমি)
.
–ফুল কলি নাকি শুধু কলি।(নূরী)
.
–শুধু কলি।ফুল কলি ডাকি কারন ও ফুলের মতো পবিএ। (আমি)
.
–ওহহহহহ,আচ্ছা। ফ্রেশ হয়ে আয় নাস্তা দিচ্ছি।(নূরী)
.
–আচ্ছা যা আসছি।(আমি)
.
যাক এবার শান্তিতে থাকা যাবে।গার্লফ্রেন্ড আছে শুনে নিশ্চই আর বিরক্ত করবে না সাথে বিয়েটাও ভেঙ্গে যাবে।
প্রবেলম একটাই গার্লফ্রেন্ড আছে বলে নূরী কে না হয় তাড়িয়ে দিলাম কিন্তু আমার তো গার্লফ্রেন্ড নাই গার্লফ্রেন্ড কোথায় পাবো।
নাস্তা করে বের হয়ে হলাম সাথে হারামির দলের সাথে দেখা হয়ে গেলো।যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। এই হারামিদের দেখলে আমি ঘোড়ার মতো দৌড়ানি লাগাই।এক মাস হলো ওদের সাথে কোন দেখা নেই কথা নেই ফোন দিলে রিসিভ করি না।ওদের সাথে থাকলে প্রতিদিন সকালে যে আব্বুর পকেট থেকে টাকা চুরি করি সেগুলো ওদের পেটে চলে যায়। এছাড়াও ওদের দ্বারা আরো অনেক কাজ হয় আর সে সব কাজের মাসুল দিতে হয় আমার মতো অবুজ শিশুকে।
এইতো এক মাস আগের ঘটনা হাতির বাইচ্ছা গুলোর সাথে রেস্টুরেন্টএ গিয়েছি কথা ছিলো যার যা ইচ্ছে খাবে কিন্তু নিজের বিল নিজে দিবে।হাতির বাইচ্ছাগুলো ইচ্ছে মতো খাচ্ছে আর আমি হতভাগা হা করে তাকিয়ে আছি। খাওয়া শেষ করে সবাই এক এক করে কেঁটে পড়েছে, আমাকে পাছায় বাঁশ আর হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিলো।কি আর করা পাক্কা ৫ হাজার ৩ শত ৩৩ টাকা দিয়ে একটা টিসু চোঁখেরর পানি আর নাকের পানিতে ভিজিয়ে বাড়ি ফিরলাম তারপর থেকে হারামিদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকি।
.
–দোস্ত পালিয়ে যাচ্ছিস কেনো।(জাহেদ)
.
–আরে তোরা হলি আমার জানের প্রানের কলিজার টুকরা দোস্ত তোদের দেখে পালাবো কেনো।(আমি)
.
–তাহেল এক্ষুনি বাড়ির দিকে যাচ্ছিস কেনো মাএ তো বের হলি।(নীরব)
.
–মানিব্যাগ রেখে আসতে যাচ্ছি।তোরা যতই আমার জানের প্রানের কলিজার দোস্ত হও আমার মানিব্যাগের সাথে তোদের কোন সম্পক নেই।(আমি)
.
–আরে পাগল আয় তো তোর মানিব্যাগের উপর কোন চাপ দিবো না। (আরমান)
.
–না ভাই তোদের বিস্বাস নাই।তোরা যেকোন সময় যেখানে সেখানে আমাকে ফাসিয়ে দিতে পারিস।আমাকে ফাসিয়ে দিলেও আমার মানিব্যাগটা তো বেঁচে যাবে।(আমি)
.
–আচ্ছা যা ভাই রেখে আয়।একটু তাড়াতাড়ি আয়। (রাকিব)
.
মানিব্যাগটা বাড়িতে রেখে হারামিদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম আমি বসছি একটা গাছের গুড়ির উপর আর ৬ হারামি বসছে কোমর পযর্ন্ত দেওয়ালের উপর। আমি পশ্চিম দিকে মুখ করে বসছি আর ওরা পূর্ব দিকে। আমি নিচে বসে আছি আর ওরা সবাই দেওয়ালের উল্টো দিকে নেমে গেলো আমি বসে আছি। আমি মনে করছি হয়তো কারো মানিব্যাগ পড়ে গেছে তাই ওটার জন্য নিচে নেমে গেছে।
হঠাৎ করে একটা শব্দ বের হয়ে এলো “”এই সেক্সিরা তোমাদের যা হট লাগছে না””
.
–এই তোরা এটা কাকে বললি।এখানে তো কেউ নাই।(আমি)
.
–বেয়াদব পেছনে তাকা। তোর মতো ছেলেদের জন্য রাস্তায় বের হতেও পারবো না একটু।তোর ঘরে কি মা বোন নাই।(মেয়ে গুলো)
.
–আমি তো আপনাদের কিছু বলি নাই।ওরা বলছে।(আমি)
.
–তুই ছাড়া তো এখানে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।কাদের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছিস।(মেয়েরা)
.
–আরে ম্যাডাম আমি আপনাদের তো কিছুই বলিনি।আর আমার বন্ধুরা তো এখানে ছিলো ওরা কিছু বলছে হয়তো।(আমি)
.
–আমাদের কি পাগল মনে হচ্ছে তোর। তোর বন্ধুরা যদি এখানে থাকতো তাহলে ওদের দেখতে পাচ্ছি না কেনো।(মেয়ে)
.
–আরে ওরা তো এক্ষুনি সবাই আমার সাথে ছিলো এখানে আমরা সবাই বসে ছিলাম তারপর হঠাৎ করে ওরা সবাই দেওয়ালের ওপাশে গেলো তারপর তো আপনাদের বকবক করতে হচ্ছে। (আমি)
.
–কোথায় দেওয়ালের ওপাশে তো কেউ নেই।(মেয়েরা)
.
–আরে এটা কি করে হতে পারে ওরা সবাই এখানে ছিলো।(আমি)
.
–সবাই ওকে ধরতো। মেয়েদের ডিস্টার্ব করার শাস্তি কি হতে পারে দেখিয়ে দেয়।
.
উরাধুরা ৩ গাভীর থুক্কু মেয়ের হাতে মার খেয়ে বাড়িতে পৌছালাম।
কলিং বেল বাজাতে নূরী দরজা খুলে দিলো।আমার এমন অবস্হা দেখে হা করে আছে। এমন মার মেরেছে আমার এত শখের নীল শার্ট টা ছিড়ে ফেলছে পুরোটাই।
.
–কিরে তোর এ অবস্হা কে করলো।(নূরী)
.
–আরে আর বলিসনা আজকেও ওরা ফাসিয়ে দিলো।(আমি)
.
–ওরা যেহেতু তোরে বার বার ফাসিয়ে দেয় তাহলে তুই ওদের সাথে থাকিস কেনো।(নূরী)
.
–আরে আমি কি করে জানবো যে আমাকে মেয়ে গুলোর হাতে ছেড়ে দিয়ে সবাই পালিয়ে যাবে আর মেয়েগুলো আমাকে অালু বর্তা বানিয়ে দিবে।(আমি)
.
চলবে
sanam teri kasam part 1
@@sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (১)
.
লেখক : Abdullah Al Ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
— ও আম্মু ও আম্মু গেলো রে গেলো আমার নাকটা বুঝি এবার গেলো।(আমি)
.
–কিরে কি হয়েছে চোঁখ খুলতে দেরি কিন্তু তোর চিল্লানি শুরু হতে দেরি হলো না।এত চিল্লাচিল্লি করছিস কেনো। (আম্মু)
.
–আরে রাখ তোমার বক বক আমার নাকটা আগের জায়গায় আছে কিনা দেখ।(আমি)
.
–নাকের আবার কি হলো নাক তো নাকের জায়গায় আছে।(আম্মু)
.
–আম্মু আমার মনে হচ্ছে এই মানব সংসার আমাকে ত্যাগ করে জঙ্গলে গিয়ে থাকতে হবে।(আমি)
.
–কিন্তু কেনো।(আম্মু)
.
–লেজ ছাড়া যেমন বান্দর কে মানায় না তেমনি নাক ছাড়া আমাকেও এই মানব সমাজে মানাবে না।জঙ্গলে গিয়ে হনুমানের সাথে থাকতে হবে।(আমি)
.
–হনুমানের তো নাক আছে।(আম্মু)
.
–আমার নাকটাও হনুমানের মতো হয়ে যাবে চ্যাপটা আকৃতির।(আমি)
.
–তোর নাকটা হনুমানের মতো হবে কি করে।(আম্মু)
.
–কিভাবে হবে তুমি জানো না বুঝি।ঘরের মধ্যে তো একটা শয়তানের বাইচ্ছা আছে ও করবে আমাকে হনুমান। (আমি)
.
–নূরী আবার কি করছে। (আম্মু)
.
–ওই হারামির বাইচ্ছা তো সকাল সকাল আমার নাকের উপর হামলা করে আমাকে হনুমান বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।(আমি)
.
–তোর এত বড় সাহস আমার বান্ধবী কে হারামি বলিস।(আম্মু)
.
–তোমার বান্ধবী যদি হারামি না হয় তাহলে ডাইনির মতো মেয়েটি কে কেনো এখানে রাখছে।(আমি)
.
–আমার কপালে মেয়ে নাই তো ৩ টা বান্দর পোলা ছাড়া তাই ওরে আমার মেয়ে করে নিয়ে এসেছি এবং পরর্বতীতে এ বাড়ির বউ হয়ে থাকবে।(আম্মু)
.
–আচ্ছা এটা বল যে কি মনে করে বা কি দেখে তুমি ওর মতো একটা প্রেত্নি কে এ বাড়ির বউ করতে চাইছো।(আমি)
.
–নূরী আমাদের জানা শুনা, বাইরের মেয়ে কেমন হবে কি করে বলবো তাই আগে থেকে ভেবে রেখেছি ও হবে এ বাড়ির বউ।(আম্মু)
.
–নূরীর বাইচ্ছাটা কি জানে ও এ বাড়ির বউ হবে।(আমি)
.
–হুম।(আম্মু)
.
–তোমার ৩ ছেলের মধ্যে কোন ছেলের বউ হবে ওই ফাজিলটা।(আমি)
.
–তোর বউ মানে বাড়ির বড় বউ।(আম্মু)
.
–আম্মু মাংস পুড়ে যাচ্ছে মনে হয় গন্ধ আসছে নাকে।(আমি)
.
–মাংস যদি পুড়ে তোর খবর আছে।(আম্মু)
.
কি ভাবছেন বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় মাংস পুড়ো যাচ্ছে বলে আম্মু কে তাড়িয়ে দিছি।
সেটা যদি ভাবেব তাহলে আমি বলবো অযথা ভাবছেন।
এখন শান্তিতে বসে একটু চিন্তা ভাবনা করে কিছুনা কিছু বের করতে হবে।
নূরীর মতো ফাজিল মেয়ে কে বিয়ে করে মৌমাছির মতো জীবনটা নষ্ট করতে চাই না।
পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। আগে পেটের মধ্যে দানা পানি দিতে হবে তারপর ভাবতে হবে।
কি একটা বলতে ভুলে যাচ্ছি। কি যেনো মনে পড়ছে না।ওয়াও রুম থেকে ঘুরে আসি যদি মনে পড়ে তাহলে বলবো।
ওহহ মনে পড়ছে মনে পড়ছে, আমার পরিচয় তো জানেন নতুন করে আবার জানিয়ে দিই।আমি আদর।ভার্চুয়াল লাইফে সবাই আদর নামে চিনে।ভার্চুয়ালের বাইরে সবাই আদর এবং মামুন দুই নামে চিনে।খেলার মাঠে সবাই নিলয় নামে চিনে তবে এখন নতুন করে আরেকটা উপাধি যোগ করা হয়েছে লেগি নিলয় (লেগ স্পিনার)
আমরা ৩ ভাই, আব্বু -আম্মু আর সাথে আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে নূরী।
.
–আদর ভাইয়া তোরে হবু ভাবি ডাকছে নাস্তা করতে।(রনি)
.
–জানোয়ার জানোয়ার আরেক বার যদি ভাবি ডাকিস না তোর হালুয়া টাইট করে দিবো জানোয়ার। (আমি)
.
জানোয়ার হবু ভাবি বলতে আসছে।আজকে একটা ফয়সালা করতে হবে।
ছোট্র পিচ্ছি ভাইটাও ভাবি ডাকতে শুরু করছে। আরেক জনের তো এখনো পাত্তাই নাই।
মি.ইমন থুক্কু নেতা ইমন।
.
নাস্তা করতে বসলাম সবাই এক সাথে।আমি ছাড়া সবাই মিটিমিটি করে হাসছে।কিছুই বুঝতেছি না।আমাকে কি ওদের পাগল মনে হয় সবার।যদি পাগল মনে করতো তাহলে নূরী কে আমার মাথায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতো না এখনে নিশ্চই অন্য কোন মতলব আছে।
.
–খেতে বসছিস খা দাঁত বের করছিস কেনো।(আমি)
.
–আমার দাঁত আমি যা ইচ্ছে তাই করবো তাতে তোর কি।(নূরী)
.
–তুই আমার মুখোমুখি চেয়ারে বসে আমার দিকে তাকিয়ে হাসবি না বলে দিলাম।(আমি)
.
–ভাবির হাসি পাচ্ছে হাসছে তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো। (ইমন)
.
–এই বক বক না করে নাস্তা করে বের হও। (আমি)
.
–আব্বু তুমি তাহলে ডেকোরেশনের মালিক হারুন করে বলে দিও।(ইমন)
.
–এই তোরে না বলছি হাসবি না সরে যা আমার সামনের চেয়ার থেকে এটা অন্য কারো নাকে বুক করা আছে।(আমি)
.
–এই বাড়িতে ও ছাড়া যদি অন্য কেউ আসে তাহলে তোরে মেরে ফেলবো।(আম্মু)
.
–আমি মরে গেলে নূরীর কি হবে।(আয় হায় কি বলতে কি বলে দিলাম)
.
–তুই যেহেতু রাজি তাহলে শুভ কাজে দেরি করতে নেই।(আব্বু)
.
–না না শুভ কাজে দেরি করে লাভ কি ১ মাসের মধ্যে সবকিছুই রেড়ি কর।(আমি)
.
তোমাদের শুভ কাজ তোমাদের কে মোবারক আজকে কোন উপায় বের করতে হবে যে করেই হোক।
.
বিকালে ছাদে গোলাপ গাছে পানি দিচ্ছিলাম ঠিক তখনি নূরীর বাইচ্ছাটা লাফিয়ে লাফিয়ে ছাদে এসে সাথে সাথে একটা কালো গোলাপ ছিড়ে নিলো।
আমাকে দেখে ভয়ে চুপশে গেলো।প্রতিদিন একটা করে গোলাপ ছিড়ে ফেলতো।কিন্তু কে এমন করতো জানতাম না।আজকেই সে মহান ব্যক্তি ধরা খেয়েছে।
.
–এই এদিকে আয়।(আমি)
.
–প্লিজ আদর ছেড়ে দেয়।আর কোন দিনও একটাও ফুল ছিড়বো না।(নূরী)
.
–এতদিন তো ঠিকই ছিড়ছো।তখন মনে ছিলো না ধরা গেলে কি অবস্হা করবো।(আমি)
.
–ও গো হবু বর আর কোনদিনও এমন করবো না।(নূরী)
.
–শয়তানের বাইচ্ছা কান ধরে সামনে আয়।(আমি)
.
–কান ধরতে পারি ঠিকই কিন্তু তোর সামনে যাবো না তুই আমাকে মারবি।(নূরী)
.
–যদি না আসিস তাহলে চিকেন রোল বানিয়ে ফেলবো।(আমি)
.
–প্লিজ আদর প্লিজ…(নূরী)
.
–এই কাঁদবি না সোজা সামনে এসে দাড়াবি। (আমি)
.
–মারিস না প্লিজ…(নূরী)
.
–মারবো না যদি একটা উপায় বলে দিতে পারিস তবে বেঁচে যাবি।(আমি)
.
–আমি রাজি।তোর মতো দানবের হাতে মাইর খাওয়ার চেয়ে সমাধান দেওয়া ঠিক হবে।(নূরী)
.
–তোর সমাধান যদি ভুল হয় তাহলে মাইর একটাও মাটিতে পড়বে না সব তোর পিঠে পড়বে।(আমি)
.
–বকবক না করে কি করতে হবে সেটা বল।(নূরী)
.
–শোন একটা ছেলেকে বিয়ে করার জন্য ওর বাবা মা ভাই বোন সবাই জোর করছে।কিন্তু যে মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে ঠিক করা হয়েছে সে মেয়ের সাথে ছেলেটির বনে না তাই ছেলেটি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।এখন তুই বল ছেলেটির কি করা উচিৎ।(আমি)
.
.
চলবে
খেলাঘর পর্ব-৩৫
খেলাঘর পর্ব-৩৫
লেখা-সুলতানা ইতি
মিথিলা ভাবছে এতো গুলো দিন পর সে কেনো এলো আমার বাড়িতে যখন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলাম তখন ও তো সে আমায় ফিরিয়ে নিতে আসেনি তা হলে আজ কেনো?
মিথিলা- উনি কেনো এসেছে কিছু বলেছি কি?
নির্ঝরিণী – অনেক বার জানতে ছেয়েছি উনি বলছে তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো,
মিথিলা- আমি এখন পিছনের দরজা দিয়ে বাসায় ডুকবো, তুইগিয়ে বলবি আপু আসে নি ওকে
নির্ঝরিণী – ঠিক আছে, এই আয়ান ব্যাগ গুলো আপুরর সাথে নিয়ে যা তো
নির্ঝরিণী বসার ঘরে ফিরে এলো
ইভান নির্ঝরিণী কে দেখে উঠে দাঁড়িয়েছে
– তোমার আপু এসেছে?
নির্ঝরিণী একটু ইতস্তত করে বল্লো
– না, আপু আসেনি, আমি বলি কি আপনি আজ চলে যান
ইভান- আর একটু অপেক্ষা করি না হয়তো এসে পড়বে তোমার আপু
নির্ঝরিণী আর কিছু না বলে ভেতরে চলে যায়
গত পাঁচ ঘন্টা ধরে বসে আছি অপেক্ষার সময় সত্যি অনেক কষ্টকর কাটতেই চায় না
মিথিলা আমি জানি তুমি বাসায় ফিরেছো শুধু আমার সামনে আসতে চাইছো না, আসলে না আসতে চাওয়া টা ই স্বাভাবিক তোমার সাথে কতো খারাপ বিহেভ করেছি, যার জন্য করেছি তাকে তো পেয়ে সম্পূর্ণ পাইনি,আজ সে আমার সাথে এক ছাদের নিছে থেকে আলাদা রুমে থাকে দুজনের চলার পথ আলাদা হয়ে গেছে, আসলে নায়া কখনো আমায় ভালোবাসেনি একটা লোভী প্রতারক মেয়ে আমি বুঝতে পারিনি ওর মিষ্টি চেহারার পিছনে ভয়ংকর রুপ টা ছিনতে পারিনি
মিথিলা তোমাকে ফিরে আসো এই কথা বলার মুখ আমার নেই কিন্তু ক্ষমা তো ছাইতে পারি অনেক অন্যায় করেছি তোমার সাথে জানি তার ক্ষমা হয়না তবু ও আসলাম,
ইভান আর ও কিছুক্ষন বসে থেকে আয়ান কে ডাকলো
আয়ান- কিছু বলবেন?
ইভান- তোমার আপুকে একটু আসতে বলো
আয়ান- আপু এখন ও আসেনি
ইভান- মিথ্যা বলছো কেনো মিথিলা অনেক আগে ই এসেছে
আয়ান- তা হলে নিশ্চয়ই এতোক্ষনে আপনার বুঝে যাওয়ার কথা আপু আপনার সাথে দেখা দিতে চায় না
ইভান- বুঝতে ফেরেছি আয়ান,তবুও প্লিজ তোমার আপু কে একটু বুঝিয়ে বলো না
আয়ান- স্যরি আমরা আপুর ছোট হয়ে তাকে কি বুঝাতে যাবো আমাদের ছেয়ে অনেক বেশি জ্ঞান আপু রাখে সো বুঝতেই পারছেন
ইভান আর কিছু বল্লো না, ভাবছে চার বছর আগের কথা, তখন এই বাড়িতে এলে পিচ্ছি দুই টা দুলাভাই দুলাভাই করে পাগল করে দিতো আজ ওরা মনে হয় দুলাভাই বলে ডাকতে ও ভুলে গেছে, খুব অন্যায় করেছি আমি তাদের সাথে তাদের বোনের সাথে ইভান নিশ্চুপ উঠে বেরিয়ে গেলো মিথিলা আসবে না বুঝে গিয়েছে
আয়ান আর নির্ঝরিণীর এক্সাম শেষ দুজনেই এখন ফ্রি সময় পার করছে,
মিথিলা- আয়ান নির্ঝর তোরা দুজনেই তো এখন ফ্রি আছিস,আমি চাই তোরা এই অবশর সময়ে বসে না থেকে কম্পিউটার শিখ
আয়ান- আপু কম্পিউটার শিখতে গেলে অনেক টাকা লাগবে
মিথিলা- চিন্তা নেই পরশু থেকে জবে জয়েন করবো, কম্পিউটার খরচ দিতে পারবো
নির্ঝরিণী – আপু আমার কম্পিউটার শিখতে মন চায় না
মিথিলা- তা হলে তুই কি করতে চাস
নির্ঝরিণী – আপু আমি গান টা কন্টিনিউ করতে চাই,
মিথিলা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো নির্ঝরিণীর দিকে
মিথিকার তাকানো দেখে নির্ঝরিণী ভয় পেলে ও অনেক সাহস সঞ্চয় করে বল্লো
– প্লিজ আপু রাগ করিস না,আমার খুব ইচ্ছে নিজে কিছু করার আর দেখ না আপু আমি তো গান গাইতে পারি সবাই আমার গানের প্রশংসা করে,প্লিজ আপি একটা সুযোগ দে না আমায়
মিথিলা গম্ভীর কন্ঠে বল্লো বাবা মা বেছে থাকলে কি করতো আমি জানি না তবে গান করা টা আমার মনে হয় উনারা পছন্দ করতেন না
তুই এখন বড় হয়েছিস অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছিস, খুব কঠিন সময় পার করেছি, কঠিন
সময় টা কিন্তু এখন ও কাটেনি, সো আমার কিছু বলার নেই তোর যা ইচ্ছে কর তার পর আয়ানের দিকে তাকিয়ে বল্লো কিরে তোর ও কি কম্পিউটার শিখতে আপত্তি আছে?
আয়ান- না আপি আমার কোন প্রব্লেম নেই
মিথিলা – ওকে তোরা যা এখন আমার একটু কাজ আছে
নির্ঝরিণী মুখ ভার করে বসে আছে
আয়ান- এমন পেত্নীর মতো মুখ করে বসে আছিস কেনো? আপু তো বলেই দিয়েছে তোর যা ইচ্ছে করতে আপুর কোন আপত্তি নেই
নির্ঝরিণী – আপু তো বলেছে কিন্তু আমি জানি আপু মন থেকে আমার গানের ব্যাপার টা মেনে নেয়নি
আয়ান- তাতে কি তুই যখন গান গেয়ে সাকসেস হবি লোকে তোকে ছিনবে, যখন আপু রাস্তায় বের হলে সবাই বলবে ঐ দেখ শিল্পী নির্ঝরিণীর বোন যাচ্ছে তখন আপু ঠিক ই ফ্রাউড ফিল করবে দেখিস
নির্ঝরিণী শুকনো মুখ করে বল্লো
– বলছিস তুই?
আয়ান- হুম
নির্ঝরিণী – ভাই তুই পাশে আছিস তো
আয়ান- অবশ্যই,
নির্ঝরিণী – ওকে তা হলে কাল ই আমি গানের স্কুলে যোগাযোগ করবো
আয়ান- এতো তাড়া তাড়ি কি করে করবি?
নির্ঝরিণী – কাউকে বলবি না তো?
আয়ান- না
নির্ঝরিণী – আপুকে ও বলতে পারবি না
আয়ান- তুই সত্যি করে বলতো তুই কার কথা বলতে চাইছিস
নির্ঝরিণী – আয়াপ খানের কথা উনার পার্সোনাল নাম্বার দিয়েছে আমাকে,বলেছে উনার সাথে বললে উনি সব ঠিক করে দিবে
আয়ান- ওকে তোর যা ইচ্ছে
আজ মিথিলার অফিসের প্রথম দিন মিথিলা অফিসে যেতেই ম্যানেজার বল্লো
আফরিনা ম্যাডাম বসস আপনাকে এসেই দেখা করতে বলেছে
মিথিলা- বসস এসে গেছে? এতো তাড়াতাড়ি
ম্যানেজার- জ্বী ম্যাডাম বসস টাইমের ব্যাপারে খুব ফাংচুয়াল,
মিথিলা- ওহ,ঠিক আছে আমি যাই তা হলে
মিথিলা বসের ক্যাবেনি ডুকার জন্য অনুমতি ছেয়ে নক করলো
ভেতর থেকে একটা শব্দ এলো ইয়েস কাম
মিথিলা ভেতরে যেয়ে দেখলো একজন লোক পিছনে ফিরে বসে আছে চেয়ারের জন্য লোক টার পিছনের অংশ ঠিক করে বুঝা যাচ্ছে না
– বসো মিথিলা
মিথিলা বসলো কিন্তু ভয়েজ টা তার কেমন চেনা চেনা, ইন্টার্ভিউ দিতে এসে যার সাথে কথা বলে ছিলো ইনি সে না, কিন্তু ভয়েজ টা আগে কোথাও শুনেছে মনে হচ্ছে,মিথিলা মনে করার চেষ্টা করছে অপর পাশের মানুষ টা কে হতে পারে
-মিসেস আফরিনা মিথিলা আপনি কি এখন ও বই পড়তে ভালোবাসেন?
মিথিলা চমকে উঠলো কথা টা শুনে তার আর বুঝতে বাকি রইলো না ঐ পাশের মানুষ টা কে?
– ইহান তুই?
চেয়ার গুরিয়ে মিথিলার দিকে ফিরে মুচকি হেসে বল্লো
– ইয়েস আমি, ইহান চৌধুরী ছিনতে ফেরেছেন তা হলে
মিথিলা সংগে সংগে উঠে দাড়ালো
– এই অফিস টা তোর?
ইহান- হুম এতে অবাক হওয়ার কি আছে, তুই তো আমার আব্বুকে ও ছিনিস না তাই তুই কালকে সুন্দর ভাবে তার সাথে কথা বলছিলি
মিথিলা- তুই সব শুনেছিস
ইহান- আরেহ কাল তো আমার ই ইন্টার্ভিউ নেয়ার কথা ছিলো,কিন্তু রিসেপশন রুমে তোকে বসে থাকতে দেখে আমি বুঝে নিয়েছি সব বাবার সাথে তোর সব কথা ই আমি শুনেছি
মিথিলা – তা হলে তোর কথাতে চাকরী হয়েছে
ইহান- আমার কথায় নয়, আমি বাবা কে কিছু বলিনি যখন বাবা ই তোকে চাকরী টা দিয়েছে কিন্তু অগ্রিম স্যালারী দিতে রাজি হয়নি তখন আমি একটু হেল্প করেছি এইটুকু ই
মিথিলা- ওহ
ইহান- প্লিজ মিথিলা আমাকে ভুল বুঝে জব টা চাড়িস না
এতো কষ্টে একটা জব পেলাম তা ও ইহানের চোখের সামনে থাকতে হবে সারাক্ষন, কিন্তু জব টা ছাড়লে হবে না নির্ঝরী গান শিখতে চায়, অনেক টাকা লাগবে, নিজের জন্য না হোক ভাই বোনের জন্য হলেও আমায় এই টুকু মানতে হবে
ইহান- কিরে কি ভাবছিস
মিথিলা- না কিছু না,আপাদত আমার কাজ টা আমায় বুঝিয়ে দে
ই্হান- ওকে এই ফাইল গুলো দেখ
ফাইল দেখেই মিথিলা মাথা গুরে গেলো কি করবো এখন, কি করতে হবে এগুলা নিয়ে
ইহান- এগুলার মাঝে কিছু হিসেব আছে,হিসেব গুলো ঠিক আছে কি না দেখ
মিথিলা অবাক হয়ে তাকালো ইহানের দিকে আজ ও ইহান আমার মনের কথা বুঝতে পারে
ইহান- কিরে কি হলো যা,না থাক এখানে বসেই দেখ, যেটা না বুঝবি আমাকে বলবি আমি বুঝিয়ে দেবো
ইহানের কথায় মিথিলার স্মৃতির পাতায় তার শ্বাশুড়ির বলা একটা কথা ভেসে উঠে
– ইভু বউমা কিছু না বুঝলে তুই তাকে বুঝিয়ে দিস, আফটার অল তুই তার স্বামি,কিন্তু মানুষ টা সেদিন কোন মূল্য দেয়নি আমাকে,
মিথিলা মনের সাথে আরেক বার যুদ্ধ করে ফাইলে মনোযোগ দিলো
হ্যালো আয়াপ খান বলছেন? ওহ হা আমি নির্ঝরিণী
আয়াপ খান- হেই কোকিলা, ফোন করলে তা হলে আমায়
নির্ঝরিণী – হুম,আসলে আপনি যে বললেন গানের ব্যাপার হলে যে কোন হেল্প করবেন আমাকে তাই ফোন করা
আয়াপ,খান- হুম,বলো,আমি কি করতে পারি তোমার জন্য
নির্ঝরিণী – আমি গানের স্কুলে ভর্তি হতে চাই
আয়াপ খান- আরেহ তুমি তো গান পারো ই তা হলে গান শিখার কি দরকার,তোমার ভয়েজ দারুন
নির্ঝরিণী – না তবু ও আরেকটু শিওর হয়ে নেয়া ভালো
আয়াপ খান- ঠিক বলেছো,আমি কাল এসে তোমায় নিয়ে যাবো
নির্ঝরিণী – না না আপনার আসার দরকার নাই আপি দেখলে বকবে,আপনি ঠিকানা বলুন আমি আসছি আপনার কাছে
আয়াপ – ওকে ডিয়ার, আমি তোমায় একটা মেসেজ করবো, বাই
অফিসছুটির পর মিথিলা দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য
এমন সময় ইহান গাড়ি নিয়ে এসে বল্লো
কিরে- দাঁড়িয়ে আছিস যে আয় আয় তোকে নামিয়ে দিবো যাওয়ার পথে
মিথিলা- থাক দরকার নাই, আমি রিক্সায় যেতে পারবো
ইহান- আরেহ আয়না,এখন ও আগের মতো ই ঘাড় তেড়া ই আছিস
মিথিলা আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসলো
দুজনেই চুপ নিরাবতা ভেংগে মিথিলা বল্লো
– অরণির সাথে যোগাযোগ আছে?
ইহান মিথিলার দিকে তাকিয়ে বল্লো
– ভুলতে পারিসনি অরণি কে তাই না
মিথিলা- আজ ও বুঝি ক্ষমা করতে পারিস নি
ইহান তাচ্ছিল্য হাসি হেসে বল্লো
– তোর সাথে আগের মতো কথা বলে ভেবে ভাবিস না তোকে ও ক্ষমা করে দিয়েছি
মিথিলা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ইহানের দিকে
ইহান আবার বল্লো- মৃত্যুর আগে ও তোরা দুজন ক্ষমা পাবি না
মিথিলা – তা হলে আমাকে হেল্প করছিস কেনো?
ইহান- কারো বিপদে পাশে দাড়ানোর মানে এই নয় তার সব অন্যায় মাপ হয়ে গেছে
মিথিলা আর কিছু বল্লো না,আসলে বলার সাহস তার হয়নি
বেশকিছু সময় পর মিথিলা বল্লো
– শুনেছি অরণি খুব অসুস্থ আমেরিকা সিটি হোসপিটালে ভর্তি আছে
ইহান- খোজ রাখার প্রয়োজন নেই
মিথিলা -এবার তো অরণি কে ক্ষমা কর মেয়েটা তোকে সত্যি অনেক ভালোবাসে,
ইহান হঠ্যাৎ করে হার্ড ব্রেক করে গাড়ি থামিয়ে বল্লো গেট লস্ট
মিথিলা- মানে এখন ও তো অনেক দূর আমার বাসা
ইহান- হোক দূরে তুই নাম,নাম বলছি
মিথিলা আর কিছু না বলে চুপ চাপ গাড়ি থেকে নেমে গেলো
ইহান গাড়ির স্প্রিড বাড়িয়ে চলে গেলো
মিথিলা যাক ভাভা এমন করলো কেনো,নিজেই সেধে গাড়িতে উঠতে বল্লো নিজেই নামিয়ে দিলো এখন তো কোন রিক্সা পাবো না হেটেই যেতে হবে
মিথিলা হাটছে আন মনে
চলবে
ভুক ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-৩৪
খেলাঘর পর্ব-৩৪
লেখা-সুলতানা ইতি
নাক ফুল বিক্রি করে সেদিন মাছ ভাতের ব্যাবস্থা করলো রাতে সবাই তৃপ্তি করে খেলো কিন্তু দুজনের একজন ও জিজ্ঞাস করেনি,মাছ আনতে টাকা কোথায় পেলো কিন্তু এতে মিথিলার কোন আফসোস নেইই
তার ভাই বোনের খুশির জন্য সব করতে পারে
পরদিন আয়ান নির্ঝরিণী বেরিয়ে যাওয়ার পর
মিথিলা বেরিয়ে গেলো একটা চাকরীর ইন্টার্ভিউ দিতে
অনেক্ষন সময় ধরে রিসেপশন রুমে বসে থাকার পর মিথিলার ডাক পড়লো
ইন্টার্ভিউ নিচ্ছে একজন মাত্র ব্যাক্তি বয়স তার ৫০-৫৫ কাছা কাছি এমন কিছুই হবে মাথা কাচা পাকা চুল দেহের গড়ন শক্ত সামর্থ্য বয়স যে এতো হয়েছে দেখে বুঝার উপায় নেই ইনি হচ্ছেন চৌধুরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির এমডি রায়হান চৌধুরী
মিথিলা- মে আই কামিন
রায়হান চৌধুরী- ইয়েস
মিথিলা যেতেই তিনি তাকে বসতে দিলেন
তিনি মিথিলার সার্টিফিকেটে একবার চোখ বুলিয়ে বল্লো,,
এইচ এস সি কমপ্লিট করা জব তো এটা না এখানে ডিগ্রী মাস্টার্স কমপ্লিট কারী কে নিয়োগ দেয়া হবে,আপনি বিজ্ঞাপন টা ঠিক করে পড়েননি
মিথিলা বিনয়ের সাথে বল্লো
– জ্বী স্যার বিজ্ঞাপন টা আমি পড়েছি, পার্সোনাল অ্যাসেসন্ট ছেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন
আর আমি মনে করি একজন এইচ এস সি কমপ্লিট ব্যাক্তি একজন এমডির পি,এস হওয়ার যোগ্যতা রাখে
রায়হান চৌধুরী- কি করে সম্ভব এটা আমাকে বুঝান
মিথিলা বিনয়ের সাথে আবার ও বলতে শুরু করলো
– একজন লোকের যোগ্যতা প্রমান হয় তার কাজে, এদিকে দেখতে গেলে একজন মাস্টার্স কমপ্লিট কারি লোকের কাজের ছেয়ে একজন এইচ এস সি কমপ্লিট কারির কাজের দিকে এগিয়ে যেতে পারে আবার না ও যেতে পারে,পুরোটা নির্ভর করে ব্যাক্তির কনসেন্ট্রেশন এর উপরে যে যার কাজ যতো মন দিয়ে করবে সে তত এগিয়ে যেতে পারবে,
রায়হান চৌধুরী মুগ্ধ হয়ে মিথিলার কথা গুলো শুনছে মেয়েটা ভুল কিছু বলেনি সার্টিফিকেট দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটা পড়াশুনায় অনেক ভালো ছিলো কিন্তু ওর কথা শুনে মনে হচ্ছে শুধু পড়াশুনা নয়, কথায় ও খই ফুটাতে জানে
রায়হান চৌধুরী কে চুপ করে থাকতে দেখে মিথিলা বল্লো,স্যার আমি কি কিছু ভুল বলেছি
রায়হান চৌধুরী- না আপনি ভুল কিছু বলেননি আচ্ছা আমার আরেক টা প্রশ্নের উত্তর দিন একজন এমডির পি এস কে অনেক ধরনের কাজ করতে হয় সেটা অনেক কঠিন কাজ ও হতে পারে আবার নর্মাল ও হতে পারে আবার দেখা যায় যে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেছে, সেখানে একজন ছেলের প্রব্লেম হওয়ার কথা নয় কিন্তু একজন মেয়ের অনেক প্রব্লেম আসার কথা,তা হলে আপনি মেয়ে হয়ে এই কাজ করতে পারবেন?
মিথিলা খুব স্ট্রোং ভাবে বল্লো
– স্যার আমার মনে হয় এই প্রশ্ন টা আমার কাজের সাথে সম্পর্কিত না,তবু ও আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, আমাদের সরকার নারী পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছেন, তা হলে একজন ছেলের কাজ মেয়ে কেনো করতে পারবে না, আর একজন মেয়ের কাজ ছেলে কেনো করতে পারবে না,তা হলে সমান অধিকার দিয়েছে কেনো,আসলে স্যার সব কিছুর জন্য প্রয়োজন সাহসের, একজন ভিতু লোক মুখে মুখে ছেলে মেয়ের সমান অধিকার দাবি করলে ও কাজে প্রমান করতে পারবে না,
রায়হান চৌধুরী আবার মুগ্ধ হলো
– ঠিক আছে তুমি বাইরে যাও গিয়ে বসো, প্রয়োজনে তোমাকে ডাকা হবে
মিথিলা সালাম দিয়ে উঠে দাঁড়ালো বাইরে বসে বসে ভাবছে জব টা হবে তো? এই জব টা না হলে কি করবো আমি
প্রায় তিন ঘন্টা বসে থাকার পর মিথিলার আবার ডাক পড়লো
মিথিলা ভিতরে গিয়ে বসলো
মিথিলার সামনের চেয়ারে বসা লোক টা হাসি হাসি মুখ করে বল্লো
– আমি অনেক ভেবেছি তার পর মনে হলো তুমি আসলে চাকরী টা পাওয়ার যোগ্য,কিছু মনে করো না তুমি আমার মেয়ের বয়সী হবে তাই তুমি করে বললাম
মিথিলা- ইটস ওকে স্যার
রায়হান চৌধুরী- এই নাও এটা তোমার এপারমেন্ট লেটার, আগামি মাসের প্রথম তারিখ থেকে তুমি জয়েন করবে
মিথিলা আগেই সব কথা মনে মনে গুছিয়ে রেখেছিলো তাই বলতে শুরু করলো
– কিছু মনে করবেন না স্যার আসলে জব পেয়ে আমি সত্যি খুব খুশি আর ও খুশি হতাম যদি আমার প্রথম মাসের স্যালারী টা অগ্রিম দিতেন
রায়হান চৌধুরী অবাক হয়ে তাকালো মিথিলার দিকে
মিস আফরিনা মিথিলা এটা কিন্তু আমাদের রুলসে নেই
মিথিলা- হতে পারে স্যার তবু ও এই মুহুর্তে আমার টাকার খুব দরকার তাই বলেছি, আসলে আমার মা একটা কথা সব সময় বলতেন,পেটে খিধা মুখে লাজ রেখে লাভ নাই,,তাই আমি বলেছি এখন পুরোটা আপনার ব্যাপার
এমন সময় রায়হান চৌধুরীর অফিস টেলিফোন এ একটা জরুরী কল আসে টেলিফোনে কথা বলা শেষ করে
মিথিলার দিকে তাকিয়ে বল্লো
– মিস আফরিনা মিথিলা আমি তোমার কথা টা মেনে নিলাম,আমি অফিসের একাউন্টার কে বলে দিচ্ছি তুমি যাওয়ার সময় টাকাটা নিয়ে যেও তোমাকে এখন তোমার স্যালারি থেকে অগ্রিম অর্ধেক স্যালারি দেয়া হচ্ছে পুরো টা তোমার কাজ দেখার পর দিবো
মিথিলা খুশি হয়ে বল্লো
– ওকে স্যার, সেটা ই ভালো
মিথিলা আজ খুশি মনে বাড়ি ফিরলো আসার সময় মার্কেট হয়ে আসলো,, ঘরের প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরলো
ততক্ষনে আয়ান নির্ঝরিণী ও ফিরেছে
মিথিলা- নির্ঝরী এগুলা ভিতরে নিতে আমাকে একটু হেল্প কর
মিথিলার কথা মনে হয় নির্ঝরিণীর কান অব্দি পৌছয়নি
মিথিলা- কিরে শুনতে পাচ্ছিস না
নির্ঝরিণী – আপু দুলা ভাই এসেছে
মিথিলা ভ্রুকুচকে নির্ঝরিণীর দিকে তাকিয়ে বল্লো
– কোন দুলা ভাই?
নির্ঝরিণী – আমাদের মেঝো দুলা ভাই
মিথিলা – মানে ইভান চৌধুরী?
নির্ঝরিণী – হুম,
মিথিলা ভাবছে এতো গুলো দিন পর কেনো সে কেনো এলো আমার বাড়িতে যখন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলাম তখন ও তো সে আমায় ফিরিয়ে নিতে আসেনি তা হলে আজ কেনো?
চলবে-
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-৩৩
খেলাঘর পর্ব-৩৩
লেখা- সুলতানা ইতি
এর মাঝে নির্ঝরিণী এসে যায়,বাসায় এসে আয়ানের কাছে সব কথা শুনে নির্ঝরিণী ভয় পেয়ে যায়, আপু তো এমন কখনো করে না আজ তা হলে কি হলো,আমাকে আনতে যাবে বলে তা ও গেলো না, কি হয়েছে আপুর
নির্ঝরিণী অনেক্ষন মিথিলার রুমের দরজায় নক করলো তার পর কোন রেসপন্স না পেয়ে ঘুমাতে চলে গেলো
মিথিলার নির্ঘুম রাতের মাঝে আর ও একটি রাত জমা হলো, ঘুমের যে তার সাথে শক্রুতা হয়েছে অনেক আগেই
সকাল বেলা মিথিলা ভাই বোনদের নাস্তা বেড়ে দিচ্ছিলো
নির্ঝরিণী আপু কাল রাতে তোমায় এতো ডাকলাম তুমি শুনলে না যে
মিথিলা- ওহ ডেকেছিস নাকি খেয়াল করিনি
নির্ঝরিণী অবাক হলো আপু তো এমন না
কি হয়েছে তার আমি কাল রাতে কখন ফিরেছি কার সাথে ফিরেছি সেটা ও জানতে চাইলো না
– আপু তুমি কি অসুস্থ?
মিথিলা- না আমি ঠিক আছি,আচ্ছা তোদের ফরম ফিলাপ কখন হবে
আয়ান- আর বেশি দিন নেই,কেনো
মিথিলা- এমনি জানতে চাইলাম আর কি
নির্ঝরিণী – আপু আজ তুমি স্কুলে যাবে না, মানে রেডি হচ্ছো না যে
মিথিলা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বল্লো
– নারে যাবো না চাকরী টা আর নেই
আয়ান আর নির্ঝরিণী দুজনেই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মিথিলার দিকে তা হলে কাল রাতে আপুর মন খারাপের কারন এটাই ছিলো
মিথিলা- তোরা কোন চিন্তা করিস না, আরেক টা চাকরী ঠিক পেয়ে যাবো
শুধু টিউশনি দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না মিথিলা নানান জায়গায় ইন্টার ভিউ দিয়ে লাভ হয়নি,মোটা টাকা আর মামা আংকেলের অভাবে আজ কাল চাকরী হয় না
চিন্তায় মিথিলার নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে
তার উপর আয়ান আর নির্ঝরিণী জানালো আগামি পাচ দিনের মধ্যে পরিক্ষার ফি জমা দিতে হবে কই থেকে যে কি করবে
মিথিলা বসে বসে ভাবছে
এর মাঝে নির্ঝরিণী এসে বল্লো
-আপু কি এতো ভাবছিস বল,,টাকা না দিতে পারলে পরীক্ষা দিবো না তবুও তুই এমন মন মরা হয়ে থাকিস না
মিথিলা বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লো
– নারে পাগলি সেই সব চিন্তা করছি না, এমনি একটা জব তো যোগাড় করতে হবে তাই না
নির্ঝরিণী – আপু আমি তো খুব ভালো গান পারি না মানে সবাই বলে,তুমি চাইলে আমি আমার গান দিয়ে একটা চেষ্টা চালাতে পারি
মিথিলা ভ্রু কুঁচকে তাকালো নির্ঝরিণীর দিকে
মিথিলার তাকানো দেখে নির্ঝরিণী ভয় পেয়ে গেলো
মিথিলা- ঐ ছেলেটার সাথে কি তোর যোগাযোগ আছে নাকি
নির্ঝরিণী ভয়ে মিথ্যা বললো কই না তো, আমি তো গানের কথা তোমায় এমনি বলেছি
মিথিলা- আর কখনো যেন তোর মুখে এই সব না শুনি এখন যা
এই মাসে সব গুলো টিউশনির টাকা এক করে ও
কোন লাভ হয়নি আর ও কিছু টাকা বাকি থেকেই যায়
আয়ান- আপু আসবো?
মিথিলা – হুম আয়
আয়ান কোন ভনিতা না করেই বল্লো
-আপু তোমার দেয়া টিফিনের টাকা থেকে কিছু টাকা আমি জমিয়েছি প্রায় আটশো হবে,
সেগুলা তোমার টিউশনির বেতনের সাথে যোগ করে দেখো কতো হয়,আমাদের দুজনের পরীক্ষার ফি হয় কি না
মিথিলা অবাক হয়ে ভাইকে দেখে আবার গভীর মমতায় কাছে টেনে নিলো
মিথিলা- পাগল ভাই আমার ঐ টাকা টা তোর কাছেই রাখ, আসা যাওয়ার খরচ লাগবে না
আয়ান- তা হলে তুমি কোথা থেকে দিবে
মিথিলা- বিয়েতে আব্বুর দেয়া সোনার চেন টা বিক্রি করে দিয়েছি আজকে বিকেলের মধ্যে টাকা টা হাতে চলে আসবে
আয়ান- কিন্তু আপু চেন টা তো তোমার খুব প্রিয়ো
মিথিলা- আমার ভাই বোনের থেকে প্রিয়ো নিশ্চই নয়
আয়ান কিছু বলতে যাবে…
মিথিলা আয়ান কে থামিয়ে বল্লো আর কোন কথা নয় যাও পড়তে বসো
আয়ান চুপচাপ উঠে গেলো
আয়ান আর নির্ঝরিণীর পিছনে সব টাকা খরচ হয়ে গেছে,এখন সংসারের নিত্য দিনের খরচ চালাতে হিম সিম খাচ্ছে মিথিলা,আজ পাঁচ দিন থেকে ডাল আর কাচা মরিচ দিয়ে ভাত খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গেছে আয়ান,
নির্ঝরিণী ও বিরক্ত কিন্তু তবু ও কিছু বলছে না, কি বা বলবে বোন কে আর ছাপ দিতে চায় না তাই মুখ বুজে সহ্য করছে কিন্তু আয়ান চুপ থাকেনি
– আপু আমি আর এই সব খেতে পারছি না
মিথিলা- একটু কষ্ট কর, দু একটা জবের ইন্টার্ভিউ দিয়েছি দেখি কি হয় তার পর আর এসব খেতে হবে না
আয়ান- তুই জানিস আমি মরিচ খেতে পারি না
নির্ঝরিণী – ভাই একটু সহ্য করলে কি হয় বল,আপু একা হাতে কয়দিক সামলাবে বল,আমরা দুজন কি পারি আপু কে হেল্প করতে
আয়ান – ধূর ভালো লাগে না,ভাতের প্লেট রেখে উঠে যায়
নির্ঝরিণী – ভাই সামনে খাবার রেখে উঠে যেতে নেই
মিথিলা – থাক বাদ দে নির্ঝর, দেখি রাতের জন্য ভালো কিছু আনতে পারি কি না
মিথিলা ও খাবার অসম্পূর্ণ রেখে উঠে যায় মন টা তার ভিষন খারাপ কি করবে সে, আয়নার সামনে দাড়াতেই নিজের নাক ফুলের দিকে নজর পড়ে মুহুর্তেই চোখ টা আনন্দে চিক চিক করে উঠে মিথিলা
আর দেরি না করে নাক ফুল খুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলো,,নাক ফুল বিক্রি করে সেদিন মাছ ভাতের ব্যাবস্থা করলো
রাতে সবাই তৃপ্তি করে খেলো কিন্তু দুজনের একজন ও জিজ্ঞাস করেনি,মাছ আনতে টাকা কোথায় পেলো কিন্তু এতে মিথিলার কোন আফসোস নেই
ভাই বোনের খুশিই তার খুশি
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-৩২
খেলাঘর. পর্ব-৩২
লেখা- সুলতানা ইতি
আয়াপের কথা শুনে ছেয়ে আছে তার দিকে নির্ঝরিণীর মুখে তার কোন কথা নেই পুরো বরফের মতো জমে গেছে
আয়াপ- হেই তুমি কি সবার সামনেই এমন নার্ভাস ফিল করো নাকি,আমাকে দেখলেই এমন হয়ে যাও
নির্ঝরিণী কোন কথা বল্লো না শুধু ঠোট দুটো নড়ে উঠলো কিন্তু কোন শব্দ বের হয়নি
আনিশা-ওকে আপনারা পরে কথা বলবেন এখন কেক কাটতে হবে, চলুন
কেক কাটার পর আবির বল্লো
আয়াপ একটা গান ধর আজকের দিনে তুই গান না গাইলে কেমন দেখায় বলতো
আয়াপ গান তো গাইবো ই, গান ই তো আমার প্রান
আয়াপ গান ধরলো
“নির্ঝরে বৃষ্টি করেছে সৃষ্টি
মনের মাঝে ভালো লাগার নতুন আবেশ
এলো মেলো ভেবে যায় মন তোমাকে সারাক্ষন
এতো ভালোবাসে তোমায় মন, তবু ও লাগে অচেনা অচেনা…
নির্ঝরে বৃষ্টি……..
দিলে এক পলক দেখা
তখন ই হয়েছে লেখা আছো তুমি
হৃদয়ে আঁকা
হোওওওও নির্ঝরে বৃষ্টি করেছে সৃষ্টি
মনের মাঝে ভালো লাগার নতুন ছোয়া ”
নির্ঝরিণী তনয় হয়ে গান শুনছিলো বাইরে বৃষ্টির ছন্দ গানের ছন্দ মিলেমিশে একা কার হয়ে গেছে মনে হচ্ছে গানের প্রতিটা শব্দ আমার জন্য গাওয়া
আয়াপের গান শেষ হতেই সবাই আরেকটা গাওয়ার জন্য রিকুয়েস্ট করলো
আয়াপ- গাইজ গান তো আমি গাইবো,তোমাদের কথা আমি ফেলতে পারবো না,কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে
আমন্ত্রিত সব মেহমান এক স্বরে বলে উঠলো শর্ত যা ই হোক তারা মানবে তবু ও তারা গান শুনবে
আয়াপ- আমার সাথে আরেক জনের গান গাইতে হবে আর সে হচ্ছে আনিশার পাশে দাঁড়ানো কোকিলা কন্ঠি প্লিজ চলে আসুন
নির্ঝরিণীর আবার হার্টবীট বেড়ে যায় সাথে সাথে চোখ বুঝে ফেললো
আনিশা- কিরে আয়
নির্ঝরিণী – আ,মি আমি
আনিশা- তুই পরে তোতলাস আগে আয় আনিশা হাত ধরে আয়াপের পাশে দাড় করিয়ে দিলো
আয়াপ গান শুরু করলো
“নাম টা তোমার জানা কি যাবে
ঠিকানাটা পাওয়া কি যাবে???হোওওওও নাম টা তোমার জানা কি যাবে ঠিকানা টা পাওয়া কি যাবে
এই টুকু বলে নির্ঝরিণী কে বল্লো এই বার তোমার গাওয়ার কথা
নির্ঝরিণী লজ্জা পেয়ে গেলো আয়াপের এর এমন কথা তে
আয়াপ লজ্জা পেতে বলিনি গান গাইতে বলেছি
এবার নির্ঝরিণী সব লজ্জা সংকোচ ভুলে গাইতে শুরু করলো
??নামটা না হয় আমার রাখো তুমি তোমার. নিজের মতো করে ডাকবে যে নামে আমায় সারাটি জীবন ধরে ???
হোওও নাম টা তোমার জানা কি যাবে ঠিকানাটা পাওয়া কি যাবে??????????
কেড়ে নিয়েছো মন তুমি প্রথম দেখায়,, পরিচয় না জানলে খুঁজবো তোমায় কোথায়
ছুঁয়েছ এই মন প্রথম দেখায় যখন পেয়ে যাবে পরিচয় ভেবনা এতো এখন
হোওওও নাম টা তোমার জানা কি যাবে ঠিকানা টা কি পাওয়া কি যাবে ?????????????
নিজের দেয়া নামে আগে ডাকো আমায় পরিচয় পরে না হয় দেয়া যাবে তোমায় ?????????
পড়েছি বেকায়দায় কি আর করা যায় আজ থেকে কোকিলা বলে ডাকবো যে তোমায়
হোওওও নাম টা আমার এখন বলা যাবে ঠিকানাটা এখন দেয়া যাবে ??নাম টা আমার এখন বলা যাবে ঠিকানাটা এখন দেয়া যাবে
“”” আমার নাম “”””????????
নির্ঝরিণী নাম না বলে গান বন্ধ করে দিলো চারিদিকে করতালিতে মুখর
নির্ঝরিণী আবার এসে আনিশার পাশে দাড়ালো
আনিশা- খাবার রেডি চল খাবি, সবাইকে খেতে দিলো প্রতি টেবিলে দুজন করে
কাকতালিয়ে ভাবে আয়াপ আর নির্ঝরিণী এক টেবিলে পড়ে গেলো
আয়াপ কে দেখে নির্ঝরিণীর খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো
আয়াপ- তোমার বান্ধুবীর কাছে শুনলাম তুমি বেশ ছটফট করা মেয়ে,অনেক কথা বলো কিন্তু আমার সামনে আসলে কথা বলো না কেনো
নির্ঝরিণী কিছু বল্লো না শুধু মুচকি হাসলো
আয়াপ নির্ঝরিণীর হাসি দেখে আপন মনেই বলে উঠলো
“ঐ মেয়ে তোর মুচকি হাসি দেখে
হৃদয় আমার উঠলো জেগে
প্রেমের উজান যায় বয়ে
আমার এই মন সাগরে
প্রেমের খেয়া পার করে আয়না,
আমার এ মন পিঞ্জরে
যতন করে আদর দিয়ে রাখি তোকে
হিয়ার মাঝে,তোর ঐরেশমি চুলের মাঝে
রাখতে দিবি কি
আমার হৃদয় নিংড়ানো ফুল
চলে আয়না হিয়ার মাঝে
রাখবো তোর সব ই বায়না
ভিজবো দুজন একই সাথে
দুজনারে প্রেম সাগরে
ও সখি তুই করিস না আর বাহানা”
নির্ঝরিণী খাওয়া কম্পলিট না করে উঠে গেলো
আয়াপ- যাক ভাভা চলে গেলো? হয় হয় এমনি হয় কতো মেয়ের ক্রাশ আমি আর আমার ক্রাশ আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না,নিজেই নিজের কথায় হাসলো
রাত বারোটা বাজে আনিশা নির্ঝরিণী কে বল্লো ঝড় তুই থেকে যা না আজ
নির্ঝরিণী – নারে আপু বকবে তা ছাড়া আপু আমায় নিতে আসবে
আনিশা- বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তোর আপু মনে হয় আজ আর আসতে পারবে না
নির্ঝরিণী – আপু যখন একবার আসবে বলেছে তখন আসবেই আমি বরং গেইটে গিয়ে অপেক্ষা করি তা ছাড়া বৃষ্টি এখন থেমে গেছে
আনিশা- ওকে, তুই যা ভালো বুঝিস
নির্ঝরিণী গেইটের সামনে অনেক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো
দূর থেকে আয়াপ নির্ঝরিণী কে দেখছে
মেয়েটা এতো সুন্দর কেনো আহামরি সুন্দরী না হলে এতো ভালো লাগে কেনো তাকে
সব সময় দেখতাম মেয়েদের গালে টোল পড়ে আর এমন টোল পড়া মেয়েদের উপর কতো ছেলে ই ক্রাশ খায়, আমি ও এমন ক্রাশ খেয়েছি,কিন্তু এই মেয়ে তো পুরো ভিন্ন,
এই মেয়ে হাসলে তার থুঁতনির দু পাশে টোল পড়ে কি সুন্দর ই না লাগে তাকে এই রকম আন কমন সুন্দর্য আমি আর দেখিনি থুঁতনির দু পাশে টোল তো কখনো ই দেখিনি
কপালের উপর পড়ে থাকা গুচ্ছ চুল যেন ওর সুন্দর্যের আরেক উপমা একটা মেয়ের এতো গুলো আকর্ষনিয় সুন্দর্য থাকতে পারে,সেই প্রথম দিনের ওর লজ্জা মেশানো হাসি আমায় পাগল করে দিয়েছে তার পর দৌড়ে স্টেজ থেকে নেমে যাওয়া হার্ট ছেপে বসে থাকা সব কিছু যেন এতো মহময়ী লাগছে কেনো?
কিন্তু ও এখানে দাঁড়িয়ে আছে কেনো,কেউ কি আসবে তাকে নিতে? আমি কি জিজ্ঞাস করবো? যদি আমায় ছ্যাচড়া মনে করে, ধেৎ মনে করুক তাতে আমার কি গিয়ে জিজ্ঞাস করি
– এখানে দাঁড়িয়ে আছো যে,কেউ কি আসবে?
নির্ঝরিণী এক পলক তাকিয়ে আবার দৃষ্টি সরিয়ে বল্লো
– হুম
আয়াপ- কে বয় ফ্রেন্ড?,নিজে প্রশ্ন করে নিজেই মনে মনে বল্লো আল্লাহ যেন উওর টা হ্যাঁ না হয়
নির্ঝরিণী নিচের দিকে তাকিয়ে বল্লো
আমার আপু আসবে
আয়াপ যেন হাফ ছেড়ে বাচলো,একটা হাসি দিয়ে বল্লো
– এতো রাতে মনে হয় তোমার আপু আসবে না
নির্ঝরিণী – আপু যখন একবার আসবে বলেছে না এসে আর থাকবে না
আয়াপ- দেখো বৃষ্টি মনে হয় আবার শুরু হবে চলো তোমায় নামিয়ে দিই তোমার বাসায়
এই বৃষ্টির রাতে তোমার আপু আর আসবে না মনে হয়
তুমি চাইলে আমি তোমাকে ড্রপ করতে পারি আমার সাথে গাড়ি আছে
নির্ঝরিণী – কোন দরকার নেই আমার আপু আসবে বলেছে যখন তখন আসবে ই
আয়াপ- এতো রাতে একা দাঁড়িয়ে থাকা সোভা পাচ্ছে না প্লিজ চলো তোমায় নামিয়ে দিয়ে আসি, ট্রাস্ট মি,কোন প্রব্লেম হবে না
নির্ঝরিণী আয়াপের দিকে আবার তাকালো না, নিঃসন্দেহ একে বিশ্বাস করা যায়,মানুষের অপরাধ তার চোখের চাহনিতে লুকিয়ে থাকে এর চোখ তা বলছে না
আয়াপ- দাঁড়িয়ে না থেকে চলো তো
নির্ঝরিণী আর কোন কথা না বলে গাড়ির পিছনের সিটে গিয়ে বসলো
আয়াপ আর কিছু বল্লো না একটু কথা বলার সুযোগ পেয়েছে এতেই হলো,সামনের সিটে আসতে বললে যদি কিছু মনে করে
আয়াপ গাড়ি স্ট্রাট দিলো
গাড়ির লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে নির্ঝরিণী কে একবার দেখে বল্লো
– তোমার নাম টা এখন ও জানা হয়নি বলবে কি তোমার নাম টা
– নির্ঝরিণী
আয়াপ- নির্ঝরিণী, নিরজোহর একজন কন্ঠ শিল্পী, চাইলে তুমি ও ভালো গাইকা হতে পারবে যদি চাও আমি তোমায় হেল্প করবো
নির্ঝরিণী – আপু বকবে এই সব বললে
আয়াপ- তোমার আপু কি বদরাগী নাকি
নির্ঝরিণী এবার জোর গলায় কন্ঠে একটু ঝাঁজ মিশিয়ে বল্লো
– কাউকে না দেখে তাকে ভালো করে না ছিনে,তার ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক নয়, আমার আপু অনেক ভালো ‘ my sister world best sister’
আয়াপ মনে মনে বলছে যাক ভাভা কি এমন বললাম যে এতো রিয়েক্ট করতে হলো
– ওহ তাই, ভালো তো খুব ভালো
মিথিলা আজ রুমের দরজা বন্ধ করে বসে আছে কি করবে কিচ্ছু তার মাথায় আসছে না
আয়ান কয়েক বার এসে ডেকে গেছে তবু ও কোন রেসপন্স করেনি, কয়েক দিন পর আয়ান আর নির্ঝরের পরীক্ষার ফি আসবে কোথা থেকে দিবে এতো টাকা,কেনো ই বার বার আমার সাথে এমন হচ্ছে
এর মাঝে নির্ঝরিণী এসে যায়,বাসায় এসে আয়ানের কাছে সব কথা শুনে নির্ঝরিণী ভয় পেয়ে যায়, আপু তো এমন কখনো করে না আজ তা হলে কি হলো,আমাকে আনতে যাবে বলে তা ও গেলো না, কি হয়েছে আপুর
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-৩১
খেলাঘর পর্ব-৩১
লেখা- সুলতানা ইতি
আর খবর করতে হবে না অনেক খবর হয়ে গেছে আমাদের, বারোটার আগে ঘুমাবো না হলো তো
মিথিলা মুচকি হেসে আয়ানের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলো
সকাল বেলা নির্ঝরিণী এসে বল্লো
আপুউউউউউ
মিথিলা- কিরে কিছু বলবি?
নির্ঝরিণী – শুন না আপুনি
মিথিলা- এতো ডং করছিস কেনো, যা স্কুলের জন্য রেডি হয়ে নে
নির্ঝরিণী – আপু আমার একটা কথা ছিলো
মিথিলা- বল
নির্ঝরিণী – আগে বলো বকবে না আর আমার কথা টা তুমি রাখবে
মিথিলা – আচ্ছা যা বল
নির্ঝরিণী – আপু আজকে না আনিশার বার্থডে, তো আমাদের সবাই কে ইনভাইট করেছে স্কুল শেষে ওর বাড়ি যেতে বলেছে
মিথিলা- হুম বুঝলাম, ফিরবি কখন
নির্ঝরিণী – অনেক রাত হয়ে যাবে আসতে না পারলে ওদের বাড়ি থেকে যাবো
মিথিলা ভাবনায় পড়ে গেলো কি করবে এখন আবার বোন কে অচেনা একটা বাসায় রাতে থাকতে বলতে ও মন শায় দিচ্ছে না
– ঠিক আছে যাস, তবে আমি টিউশনি শেষে তোকে আনতে যাবো,, তোর বান্ধবীর বাসার এড্রেস দে
নির্ঝরিণী – তোমার যেতে হবে না আপি, এক রাত থাকলে কি হবে
মিথিলা ধমক দিয়ে বল্লো
– বেশি বুঝিস না, রাত পর্যন্ত থাকতে দিয়েছি এটা ই কি বেশি নয়
নির্ঝরিণী – ওকে তুমি যা বলবে
,,মিথিলা বেশির ভাগ সময় হেটেই যায় স্কুলে যখন টাইম থাকে না তখন রিক্সায় যায়
আজ টাইম আছে তাই হেটেই যাচ্ছিলো
মিথিলার সামনে ঠিক দু হাত দূরে একটা গাড়ি এসে থেমে যায়
গাড়ি থেকে ইহান কে নামতে দেখে মিথিলা থমকে যায়, মনে হচ্ছে চোখে ভুল দেখেছে আজ এতো গুলো দিন পর ইহানের সাথে দেখা হবে ভাবতে ও পারিনি,
অনেক চেঞ্জ হয়েছে ইহান,
ইহান মিথিলার সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায় দেখছে মিথিলা কে দু চোখ ভরে,
ইহান- এখন ও আগের মতো ই বিউটি আছিস ন্যাচারাল বিউটি, চশমার পাওয়ার টা মনে হচ্ছে চেঞ্জ করতে হয়েছে,
হা হা ইহান নিজেই হেসে দিলো আমি তোকে নিয়ে খুব ভাবি মিথিলা
কথা টা শুনে মিথিলা ইহানের দিকে তাকায়
ইহান- না মানে ভাবি আর কি তুই যখন বুড়ি হবি তখন তোর চোখে কতো পাওয়ারের চশমা উঠবে সেটা নিয়ে,আচ্ছা থাক এই সব কথা,কেমন আছিস বল,কোথায় যাচ্ছিলি
মিথিলা- স্কু.লে -স্কুলে যাচ্ছি
ইহান- ওহ, বাচ্ছা কাচ্ছা পড়াস নাকি, ম্যাডাম ম্যাডাম লাগছে তোকে
চুলে বেণী বাধা,চোখে চশমা পরনে শাড়ি আগে কতো করে বলে ও তোকে একদিনের জন্য শাড়ি পরাতে পারিনি
মিথিলা – ভু-ভুলিসনি সে সব কথা
মিথিলার কথা শুনে ইহান অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে
– তুই এখন ও সেই আগের মতো নার্ভাস ফিল করছিস, এই আমি কি বাঘ নাকি রে, ভয়ে তুতলিয়ে কথা বলছিস
মিথিলা- কবে এলি, আর সেদিনের পর থেকে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি
ইহান- খুঁজছিলি নাকি,কেনো খুঁজছিলি?
মিথিলা- ক্ষমা করেছিস তো
ইহান- রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলবি নাকি কোথায় ও গিয়ে বসবি
মিথিলা- আমার স্কুলের দেরি হয়ে যাবে
তুই কিন্তু আমার একটা কথার উওর দিসনি
ইহান- সব প্রশ্নের উত্তর একদিনেই পেতে চাস? তাই আমি বলবো না, আচ্ছা বাই তোর তো লেইট হয়ে যাচ্ছে
এই বলে ইহান মিথিলা কে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়ি স্ট্রাট দিয়ে চলে যায়
মিথিলা স্টাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভাবতে পারছে না সে এই মুহুর্ত টা কি স্বপ্ন ছিলো,হঠ্যাৎ করে ইহান কোথা থেকে এলো,অস্ট্রিয়া থেকে কখন এসেছে
ঘড়িতে কাটায় কাটায় দশটা বাজে মোবাইলে এলার্ম দেয়া ই ছিলো,এলার্মের শব্দে মিথিলার ঘোর কাটে একি স্কুলে কখন গিয়ে পৌছবো ইসসস আজ আমার চাকরী টা মনে হয় থাকবে ই না
স্কুলে যেতে যেতে দশটা চল্লিশ ভেজে গেছে যা ভয় পেয়ে ছিলো ঠিক তাই হলো, আজ প্রিন্সিপাল মিথিলা কে সবার সামনে ডেকে নিয়ে অপমান করেছে সাথে স্কুল থেকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে,,প্রিন্সিপাল এর একটাই কথা অন্য শিক্ষক দের কাছে মিথিলা উদাহরণ হয়ে থাকবে লেইটে করে আসার ফল এইটা ই,তা ছাড়া মিথিলা কে অনেক ছাড় দিয়েছে আর নয়
মিথিলা আজ চোখে অন্ধকার দেখছে সংসার ভাই বোনের পড়া শুনা চলবে কি দিয়ে, অসহায় হয়ে তাকিয়ে আছে দূর আকাশের পানে পৃথিবীর মানুষ গুলো এতো নিষ্টুর কেনো
আনিশা নির্ঝরিণী কে বল্লো শুন ঝড় তুই কিন্তু একটা গান গাইবি আজ
নির্ঝরিণী – আমি? এমা না না কি বলছিস আমি গান গাইতে পারবো না এতো লোক জনের সামনে আমি কি করে গান গাই বল
আনিশা-সেদিন স্কুলে গেয়েছিস না?
কিন্তু তবু ও নির্ঝরিণী রাজি হয়নি
রাত আটটায় অনুষ্টান শুরু হয় যদি আনিশার বাবা মা রাত বারোটায় কেক কাটতে ছেয়ে ছিলো কিন্তু আনিশা এতে শায় দেয়নি কেনো না ওর বান্ধবীরা এতো রাত অব্দি থাকতে পারবে না
অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে আনিশার কাজিন আবির এসে যায়
আনিশা- আবির ভাইয়া তুমি আসতে এতো লেইট কেনো করলে
আবির- আরেহ পাগলি তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে
আনিশা- কি সারপ্রাইজ গো
আবির, কই আয়াপ বিতরে আয়,
আমার বন্ধু আয়াপ খান বর্তমানে নাম করা একজন সিংগার আর মেয়েদের হার্ট থ্রোব
আনিশা- ওয়াও আবির ভাইয়া আয়াপ খান যে তোমার ফ্রেন্ড আগে বলোনি তো
আবির- আগে বল্লো কি এখন তুই অবাক হতি
আনিশা- তা ঠিক, তো আয়াপ ভাইয়া কেমন আছেন,জানেন আমার একজন বান্ধুবী আপনার অন্ধ ভক্ত, এতো ভক্ত যে কি বলবো আপনার সব গান ওর কালেক্টে থাকে,, আর সব গুলো গান হাজার বার শুনে
আয়াপ-ওয়াও তা সে কি আজ পার্টিতে এসেছে
আনিশা- অফকোর্স, ভাইয়া, দাড়ান ডেকে আনছি, ঝড় টা যেন কোথায় গেলো
এই ঝড় এদিকে আয়
নির্ঝরিণী – আসছি রে
আনিশা- কোথায় ছিলি
নির্ঝরিণী – তোর রুমের বারান্দায় ছিলাম আজ মনে হয় বৃষ্টি হবে, বৃষ্টির আগের ঠান্ডা আব হাওয়া টা মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো তাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম
আনিশা- হুম আজ তোর কপাল ভালো যা দেখবি তাতে ইই তোর মন ছুয়ে যাবে
নির্ঝরিণী – মানে?
আনিশা- চল দেখবি
আয়াপ কে দেখে নির্ঝরিণীরর হার্ট বীট আবার বেড়ে যায়,, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে হার্ট বীট টিক টিক করে চলছে শব্দ টা নির্ঝরিণী শুনতে পাচ্ছে এমন লাগছে, নির্ঝরিণী চোখ বুঝে গেলো
আনিশা- আয়াপ ভাইয়া এই আপনার পাগলী ভক্ত
আয়াপ- আরেহ এতো সেই কোকিলা কন্ঠি হেই তোমাকে না বলেছি আমাকে মেসেজ করতে
নির্ঝরিণী আয়াপের কথা শুনে ছেয়ে আছে তার দিকে,মুখে তার কোন কথা নেই
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-৩০
খেলাঘর পর্ব-৩০
লেখা-সুলতানা ইতি
এটাই আমার শাস্তি আজ আমি বড্ড একা হয়ে গেছি আম্মু বড্ড একা, মিস করছি তোমাকে কিন্তু তোমার কাছে যাওয়ার কোন পথ খোলা নেই
দরজা নকের শব্দ শুনে মিথিলা গিয়ে দরজা খুলে দেখলো উতলা এসেছে
মিথিলা- আরে উতলা তুমি? তুমি তো আমাদের বাসায় আসো ই না,এখন কি মনে করে এলে
উতলা- না আপু এমনি এসেছি বিকেল বেলা ভালো লাগছিলো না তাই,,নির্ঝরিণী কোথায় আপু
মিথিলা- আয়ান আর ও পড়ছে, সামনে এক্সাম তো তাই
উতলা- ঠিক আছে আমি যাই ওদের সাথে দেখা করে আসি, এই বলে মিথিলা কে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে স্টাডি রুমের দিকে গেলো উতলা
মিথিলা- মেয়েটা তো বড্ড ফাজিল,লজ্জা শরম কিছু নেই নাকি,একটা ছেলের পিছনে ধেইধেই করে ঘুরছে,আল্লাহ ওর পাল্লায় পড়ে আমার ভাইয়ের পড়ার যেন কোন ক্ষতি না হয়
উতলা নির্ঝরিণীরর সাথে কথা বলছে আর আড় চোখে আয়ান কে দেখছে
নির্ঝরিণী মুচকি হেসে বল্লো
– আপু তোমার চোখ বার এদিক ওদিক ঘুরছে কেনো তুমি কি কাউকে খুজছো আই মিন কাউকে দেখছো
উতলা লজ্জা পেয়ে বল্লো নাহ কাকে দেখবো কাউকে না,আচ্ছা তুই কি আয়াপ খানের সাথে যোগাযোগ করেছিস
নির্ঝরিণী ফিস ফিস করে বল্লো
– আস্তে বলো আপু শুনলে বকবে, আসলে আমি কার্ড টা ফেলে দিয়েছি
উতলা- কি বলছিস, এই রকম সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করে
নির্ঝরিণী কিছু বলতে যাবে এমন সময় মিথিলা এসে বল্লো
– কিরে নির্ঝর তোর অংক টা করেছিস তো? আয়ান ইংলিশ রচনাটা পড়া হয়েছে?
মিথিলা জানে ওদের পড়া হয়নি তবু ও উতলা কে চলে যেতে বলার এটা একটা কৌশল
নির্ঝরিণী আমতা আমতা কিরে বল্লো
– না আপু
মিথিলা- তা হলে কি করছিলি এতোক্ষন
উতলা- আপু ও আমার সাথে কথা বলতে গিয়ে দেরি করে ফেলেছে ঠিক আছে আমি যাই
মিথিলা- না তুমি বসো প্রব্লেম নেই
উতলা- না থাক পরে আসবো আমি
উতলা চলে যায়
মিথিলা যেন হাফ ছেড়ে বাছলো এই মেয়ের কাছে থেকে আমার ভাইকে দূরে দূরে রাখতে হবে এই বয়সে এই সবের পিছনে ঝড়িয়ে গেলে পড়াশুনা গোল্লায় যাবে
কিরে আয়ান কি করছিস
আয়ান- এই তো আপু লিখছি
মিথিলা- তোকে তো পড়তে দিয়েছি লিখতে দিইনি,দেখি তো কি লিখেছিস
আয়ান কাগজ টা তাড়াতাড়ি শরাতে যাবে তার আগেই মিথিলা কাগজ টা কেড়ে নেয় কি লিখেছিস এই সব তুই
” উতলা তোমাকে দেখলে কেনো চোখের
তৃষ্ণা মিটে না,শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে,হাহাকার করে আমার মন একটু বৃষ্টি দিয়ে মরুভূমি টা ভিজিয়ে দিবে বলে
তোমার চোখের ঐ লম্বা গুছানো পাপড়ির বাঁঝে ফুঁ দিয়ে এলো মেলো করে দিতে চাই
তুমি কি রেগে যাবে,
তোমার ঠোটের উপর তিলটা ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে”এভাবে আর ও কিছু এলো মেলো কথা লিখেছে আয়ান
মানে কি আয়ান? এসব কি? তুই এতো খারাপ হয়ে গেছিস ছিঃ বাইর হও আজ তোর একদিন কি আমার একদিন
আয়ানা- আ.পু প্লিজ আর এমন করবো না এবারের মতো
– ঠাসসসস মিথিলা আয়ান কে থাপ্পড় মারে তার পর শোলা দিয়ে অনেক মার ধর করে
তোর জন্য আমি কখনো কোন ব্যাপারে কাপর্ন করিনি শুধু ছেয়েছি ভালো রেজাল্ট আর তুই প্রেম করছিস? করাচ্ছি তোকে প্রেম, বাইর হও, বাড়ি থেকে, তোর মতো ভাইয়ের দরকার নেই আমার
আমি কার জন্য এতো কষ্ট করতেছি বল আমার জন্য? কই আমার তো কোন লাভ দেখছি না, মিথিলা বলতে বলতে কেঁদে দিলো নির্ঝরিণী ও কাঁদছে আয়ান দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে হয়তো মাথা উচু করে চোখের পানি কাউকে দেখাতে চায় না তাই
মিথিলা কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো, টিউশনি করিয়ে তার পর ফিরবে অনেক রাতে
তৃধা দের বাড়ি একটু দূরে টিউশানি শেষে প্রতিদিন রিক্সায় আসে আজ কেনো জানি রিক্সায় উঠতে ইচ্ছে করলো না হেটেই আসছে
আয়ানের কান্না মাখা মুখ টা ভেসে উঠছে চোখের সামনে, এভাবে গায়ে হাত তোলা ঠিক হয়নি আমার ওরা তো এখন আর ছোট নেই, ইসস কি করলাম এটা আমি ওরা আমায় মায়ের মতো করে দেখে , আর আমি?
আচ্ছা আজ মা বেছে থাকলে কি মারতো ওদের হয়তো মারতো না
মিথিলা এই সব ভাবছে আর আনমনে হাটছে কখন যে মাঝ রাস্তায় চলে এসেছে খেয়াল নেই তার হঠ্যাৎ কই থেকে যেন একটা গাড়ি এসে ধাক্কা দেয়
ভাগ্যিস খুব একটা লাগেনি মিথিলা নিজেই উঠে দাড়ালো যেই ড্রাইবার কে কিছু বলার জন্য মুখ তুলেছে অমনি ড্রাইভার কে দেখে মুখ টা বন্ধ হয়ে গেলো ড্রাইবার আর অন্য কেউ নয় ইভান ই ছিলো
ইভান ব্যাস্ত কন্ঠে বল্লো
– একি তুমি এখানে এতো রাতে,তোমার লাগেনি তো কোথা ও
মিথিলা প্রথম কথার উত্তর না দিয়ে পরের টার উত্তর দিলো
– ছোটলোক পরিবারের মানুষদের এই রকম একটু আধটু হোছট খেতে হয়,এ আর এমন কি,,হোছট খেয়ে অনেক কিছু বোঝা যায় শিখা যায়
ইভান- চলো তোমায় পৌছে দিই
মিথিলা- স্যরি গরিব ঘরে জন্ম নিয়ে পায়ে হেটে অনেক দূর যেতে শিখেছি,বড় লোকদের মতো গাড়ি হাকিয়ে যাওয়ার অভ্যাস নেই
এই বলে মিথিলা দূর্ত হাটতে থাকলো পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা লেগেছে হাটতে কষ্ট হচ্ছে তবু ও সব শক্তি এক করে হাটছে
মিথিলার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে ইভান
– তুমি ঠিক আগের মতো ই আছো মিথি একটু ও চেঞ্জ হওনি শুধু তোমার মনে ঝং ধরেছে আমার জন্য, তোমাকে হারিয়ে বুঝেছি মিথি তুমি সত্যি অনন্য
আব্বু আম্মু ঠিক মানুষটি কে ই সিলেক্ট করেছিলো আমি ছিনতে পারিনি
ইভান আবার গাড়িতে গিয়ে বসলো
মনে পড়ে গেলো তার,এই রকম ই এক্সিডেন্ট করে একদিন তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিলো সেদিন তোমাকে না ছিনে রুঢ় ব্যাবহার করেছিলাম,কিন্তু আজ তোমায়
ছিনতে ফেরে ও আটকে রাখার কোন অধিকার আমার নেই,আমি নিজেই নিজের অধিকার হারিয়েছি
মিথিলা হাটছে মনে তার প্রশান্তি কাজ করছে
আজ ইভান কে একদম অন্য রকম লাগছে ছন্নছাড়া, আজ তার চোখের ভাষা জানান দিচ্ছিলো আমায়
সে অসহায় এই টা ই তো আমি ছেয়ে ছিলাম মনে মনে সত্যি তাই হলো
যে চোখ দিয়ে সে আমায় ঘৃনার দৃষ্টিতে দেখে ছিলো,আজ সে চোখেই আমার জন্য একরাশ ভালোবাসা দেখেছি আমি,কিন্তু আজ আমার এই ভালোবাসার দরকার নেই বেশ আছি ভাই বোন কে নিয়ে ওদের নিয়ে ই আমার পৃথিবী
মিথিলা বাসায় এসে দেখলো নির্ঝরিণী পড়ছে
মিথিলা- কিরে পড়ছিস?
নির্ঝরিণী – হুম
মিথিলা- খেয়েছিস তোরা
নির্ঝরিণী – আয়ান খায়নি তাই আমি ও খাইনি
মিথিলা- কোথায় আয়ান?
নির্ঝরিণী – শুয়ে আছে
মিথিলা কিছু না বলে আয়ানের রুমে গেছে আয়ান শুয়ে আছে ঠিক শুয়ে নেই কাঁদছে বালিশে মুখ গুঁজে
মিথিলার বুকের ভিতর ছ্যাঁত করে উঠেছে কি করলাম এটা আমি মা বাবা হারা ভাই কে মারলাম
আস্তে করে মিথিলা ডাকলো
– আয়ান, আয়ান
আয়ান চুপটি করে শুয়ে আছে হয়তো চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা করছে
মিথিলা- আমার ভুল হয়ে গেছে ভাই আমি আর তোর গায়ে হাত তুলবো না তোকে বকবো না
আয়ান এবার উঠে বসলো
– না আপু তোমার কোন ভুল নেই ভুল আমার ই আমি না বুঝে তোমায় কষ্ট দিয়েছি মাফ করে দাও আমায়
ভাই বোন কিছুক্ষন গলা ঝড়িয়ে কাদলো
তার পর মিথিলা নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো আয় খাবি
মিথিলা আয়ান আর নির্ঝরিণী কে খেতে দিলো
কিন্তু ওরা দুজনেই বসে আছে কেউ খাচ্ছে না
মিথিলা কিরে খাচ্ছিস না কেনো
আয়ান- তুই খাইয়ে দে, নইলে খাবো না
মিথিলা একটি কথা ও না বলে ভাত মাখিয়ে ভাই বোন কে খাইয়ে দিলো
খাওয়া শেষে মিথিলা বল্লো এখন সোজা গিয়ে পড়তে বসবি রাত বারোটার আগে ঘুমাবি না যদি ঘুমাস তো,খবর আছে দুজনের
আয়ান- আর খবর করতে হবে না অনেক খবর হয়ে গেছে আমাদের, বারোটার আগে ঘুমাবো না হলো তো
মিথিলা মুচকি হেসে আয়ানের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলো
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-২৯
খেলাঘর পর্ব-২৯
লেখা-সুলতানা ইতি
মিথিলা এখন ও বাসায় এসে পৌছয়নি
নির্ঝরিণী কখন বোনের কাছে কথা গুলো বলবে সে জন্য ছটফট করছিলো
এর মাঝে আয়ান এসে নির্ঝরিণী কে পোচাতে শুরু করলো
আয়ান- এই নির কোথাও তোর গান আয়াপ খানের অপছন্দ হয়নি তো,তাই তোকে বকা দেয়ার জন্য তার ঠিকানা দিয়ে গেছে
নির্ঝরিণী – ভাই ভালো হচ্ছে না,উনি কিন্তু আমায় কোকিলা কন্ঠি ও বলেছেন
আয়ান- কি বলিস তো, তুই তো অনেক মানুষের সামনে তোর বেসুরা বাঁশি বাজিয়েছিস তাই তিনি তোর মান রক্ষার্তে তোর একটু প্রশংসা করলো আর কি
নির্ঝরিণী কিছু বলতে যাবে তখন ই দরজায় নক হয়
নির্ঝরিণী দরজা খুলে দিলো
মিথিলা ঘরে পা দিতেই নির্ঝরিণী বল্লো
জানো আপু আজ কি হয়েছে
মিথিলার ক্লান্তিতে শরির ভেঙে আসছিলো,বোনের এই হাসি মুখ দেখে ক্লান্তি কে প্রশ্রয় না দিয়ে বল্লো
– না বললে জানবো কি করে
আয়ান- আপি আমি বলছি,আজ আমাদের বাঁশি ওয়ালী তার বেসুরা সুরে বাঁশি বাজিয়েছে শিল্পি আয়াপ খানের মঞ্চে
মিথিলা অবাক হয়ে বল্লো
নির্ঝর কবে থেকে বাঁশি বাজানো শিখলো
নির্ঝরিণী – আপি তুমি ভাইয়ের কথা শুনো না তো
আয়ান- আরেহ আপু শুন না,মানে গান গেয়েছিলো আর কি,তো আয়াপ খনা ওর সম্মান বাছানোরর জন্য একটু প্রশংসা করেছিলো এই আর কি
নির্ঝরিণী – এবার আমার কিছু বলি আপু,আজ আমাদের লাজুক রোমিও…..
আয়ান – নির প্লিজ আপু কে কিছু বলিস না তোকে ক্যাটবেরি দিবো,অনেক গুলো আইসক্রিম দিবো
নির্ঝরিণী – আপু দেখো আমাকে ঘুষ দিতে চাচ্ছে কিন্তু আমি তো ঘুষ নিবো না,আমি আজ বলবো ই
মিথিলা- আসল কথা বল
নির্ঝরিণী – আজ আমদের রোমিও প্রথম বারের মতো তার জুলিয়েটের সাথে কথা বলেছে তা ও কি লজ্জা ই না পাচ্ছিলো, অবশ্যইই জুলিয়েট ও লজ্জা পেয়েছিলো,কিন্তু আমাদের রোমিও ভেবেছে আমি কিছুই দেখিনি তাই সে এতোক্ষন আমাকে পচাইতেছিলো নিশ্চিন্তে
আয়ান- মাথা নিচু করে আছে
মিথিলা- আর তুই কি বলতে ছেয়ে ছিলি
নির্ঝরিণী আয়াপ খানের সব কথা বলে
মিথিলা সব কথা শুনে শান্ত আর কঠোর কন্ঠে বললে
নির্ঝর, আয়ান,তোদের দুজনকে ই বলছি
এই সময় টা পড়াশুনায় ফোকাস করার সময়,সামনে এস. এস.সি এক্সাম সেদিকে যেন খেয়াল থাকে
আর নির্ঝর তোকে বলছি এই সব সেলিব্রেটিদের কথায় এতো নাচার কিছু নেই, এদের টাকা আছে এরা সব করতে পারে, আমরা খুব ই সাধারণ পরিবারে মানুষ হয়েছি সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে, মনে থাকবে?
নির্ঝরিণী আর আয়ান দুজনেই মাথা নাড়িয়ে শায় জানালো
মিথিলা ফ্রেশ হতে চলে গেলো,,
– নায়া কোথায় তুমি? তাড়াতাড়ি বাসায় এসো,হুমম আমি এসেছি অনেক্ষন হলো
কথা শেষ করে ইভান কল অফ করে দিলো অফিস শেষ করে ইভান বাসায় এসে দেখলো নায়া নেই তাই ওকে কল করে আসতে বল্লো
উফফ খিধে পেয়েছে খুব, দেখিতো রান্না করা আছে কি না, একি কিছু ই তো রান্না করা নেই, ইভানের মেজাজ গরম হয়ে যায়
সন্ধ্যা লগ্নে নায়া বাসায় এলো
ইভান- কোথায় গিয়েছিলে?
নায়া- এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে গেছি
ইভান – ইদানীং তোমার বন্ধু বান্ধবের অভাব নেই দেখছি,হোয়াটএবার রান্না করে যাওনি কেনো
নায়া- আমি কি কাজের বুয়া নাকি যে রান্না করবো,তোমার খিদা ফেলে বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খাইতা
ইভান- বাইরের খাবার খেতে খেতে আমার অবস্থা শেষ নায়া,,আমি আর খেতে পারছি না,কতো দিন বাড়ির রান্না খাই না
নায়া- তো আমি কি করবো? আমি রাঁধতে পারি না,
ইভান- তুমি পারো টা কি? এটা পারো না ওটা পারো না,বাসায় বুয়া রাখতে দিচ্ছো না,বুয়ার পাশে দিয়ে হাটতে তোমার ঘেন্না লাগে, তুমি পারো টা কি
নায়া- হোয়াট, তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছো কেনো,,
ইভান- নায়া আমি তোমার হাজবেন্ড আমার কিসে ভালো কিসে মন্দ তোমার তা দেখতে হবে
নায়া- উফফ থার্ড ক্লাস হাজবেন্ড দের মতো কথা বলো না তো
এমন সময় নায়ার কল আসে
– হ্যালো বেবী, এই তো বাসায়, ওয়াও আমি আসছি
কল অফ করে নায়া বেরিয়ে যাচ্ছিলো
ইভান নায়ার পথ আটকে দাঁড়ায় কোথায় যাচ্ছো?কে ফোন করেছে
নায়া- রোমি ফোন করেছে
ইভান- এতো রাতে তুমি রোমির বাসায় যাচ্ছো? ইদানীং খুব বেশি রোমির সাথে সময় কাটাচ্ছো মনে হচ্ছে
নায়া- আমি কার সাথে সময় কাটাবো,কার সাথে কাটাবো না সেটা আমার ব্যাপার তুমি এতে ইন্টারফেয়ার করতে এসো না
ইভান- আমি তোমার হাজবেন্ড নায়া তোমার ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করার অধিকার আছে আমার
নায়া- উফফ,আমি তোমাকে সে অধিকার কখনো দিই নি ইভান,শরো তো,রাত নটা বাজে বলছে অনেক রাত, থার্ড ক্লাস মেন্টালিটি
ইভান- বাহ এখন আমার মেন্টালিটি থার্ড ক্লাস হয়ে গেলো,বিয়ের আগে পর্যন্ত তো আমি তোমার চোখে পৃথিবীর সেরা প্রেমিক ছিলাম,আর এখন?
নায়া- তখন তুমি এমন ছিলে না……
ইভান- নায়া তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না,তোমার জন্য আমি আমার ফ্যামেলী ছেড়েছি
নায়া- ওহ আর আমি কিছু ছাড়িনি তাই না,তোমার জন্য আমার ড্যাড মোমের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে আমার একমাত্র ভাই আমায় বোন বলে দাবি করে না
ইভান- কারন তুমি অন্যের স্বামি কে কেড়ে নিয়েছো তাই
নায়া তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বল্লো
– ভূতের মুখে রাম নাম,তোমার বউ থাকতে তুমি আমার ডাকে সাড়া দিয়েছিলে কেনো,,তোমার চরিত্রে যে দোষ আছে সেটা দেখছো না
ইভান আর কিছু বলতে পারলো না এই ফাকে নায়া বেরিয়ে গেলো, ইভান কিছুই বল্লো না কিই বা বলবো আমি
সব অপরাধ তো আমার ই,মিথিলার মতো একটা মেয়েকে আমি কষ্ট দিয়েছি, আমার পছন্দের খাবার রান্না করে কতো রাত আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলো, আর আমি কি না ছিঃ
ইভান সোফায় গা এলিয়ে দিলো বড্ড ক্লান্ত লাগছে মোবাইল টা নিয়ে মায়ের নাম্বার ডায়েল করলো
ওপাশ থেকে মিসেস আয়মন কল রিসিভ করে বল্লো
– কে বলছেন?
ইভান- আম্মু আমি….
কথা শেষ করতে দিলো না ইভান কে
– স্যরি আমাদের কোন সন্তান নেই রঙ নাম্বার
মিসেস আয়মন অপাশ থেকে কল অফ করে দিলো
এটা ই আমার শাস্তি আজ আমি বড্ড একা হয়ে গেছি আম্মু বড্ড একা,
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
খেলাঘর পর্ব-২৮
খেলাঘর পর্ব-২৮
লেখা-সুলতানা ইতি
আজ নির্ঝরিণী ও কোন হেল্প করেনি সকাল থেকেই স্কুলে যাওয়ার জন্য তার কতো আয়োজন ভাবা যায় বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী আয়াপ খান আসছে
মিথিলা – আয়ান নির্ঝরী খেতে আয়, আমার লেইট হয়ে যাচ্ছে
আয়ান এসে বল্লো আপু
– আজ নির্ঝর কে খাবার টেবিলে পাবি না
মিথিলা- কেনো
আয়ান- আজ নির যেই সাজ দিয়েছে খেতে গেলে ওর লিপইস্টিক নষ্ট হয়ে যাবে না হি হি হি
মিথিলা কিছু বলার আগে নির্ঝরিণী এসে বল্লো
– আপু তুমি ফাজিটার কোন কথা শুনবে না,দেখো আমি কেমন সেজেছি
মিথিলা বোনের দিকে তাকিয়ে আয়ান কে বল্লো
– কিরে দুষ্টু কই নির্ঝর সেঝেছে বল
নির্ঝরিণী – আরেহ আপু আমি কেনো সাজতে যাবো বলো,আমি তো তোমারি বোন তাই না
আয়ান- ঠিক আছে তুই মিথিলার বোন কিন্তু আলাদা,রাগি, গুন্ডি,বদমেজাজি আর কতো কি
নির্ঝরিণী – আপু ওকে কিছু বলো আমি কিন্তু না খেয়ে চলে যাবো বলে দিলাম
মিথিলা মিষ্টি স্বরে ভাইকে ধমক দিয়ে বল্লো
– তোরা কবে যে বড় হবি, এখন ও একজন আরেকজনের পিছনে লেগে থাকিস
আয়ান- তোর মতো বোন রুপি মা যতো দিন থাকবে ততদিন আমরা বড় হবো না
নির্ঝরিণী – ঠিক বলেছিস ভাই, আপু একদম মায়ের মতো মমতাময়ী,, বইয়ে পড়েছি মা না থাকলে নাকি বড় বোন মায়ের জায়গা নিতে পারে,তুই আমাদের মায়ের জায়গা ই নিয়েছিস আপু
মিথিলা কিছু বল্লো না,আবেগে কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছে তার
– তোরা খেয়ে দরজায় তালা টা লাগিয়ে চলে যাস, আমি ছাবি নিয়ে যাচ্ছি আমার লেইট হয়ে গেছে অনেক
মিথিলা না খেয়ে বেরিয়ে গেলো ভাই বোন দের দুষ্টুমিষ্টি ঝগড়া দেখে খাওয়ার কথা ভুলেই গেছে এ দিকে দশ মিনিট লেইট হয়ে গেছে আজ কি হয় কে জানে
মিথিলা আজ স্কুলে যেতেই প্রিন্সিপ্যাল তার রুমে ডেকে নিয়ে অনেক কথা শুনিয়েছে তাকে শেষে লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়েছে, আর যেন কখনো লেইট করে না আসে আসলেই তার বিরুদ্ধে কঠিন স্টেপ নেয়া হবে
মিথিলা কিছু না বলে মাথা নিছু বেরিয়ে গেলো কি বলবে সে দোষ তো তার ই, এভাবে প্রায় ই ওর লেইট হয়,কাল থেকে আর ও ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে
নির্ঝরিণী স্কুলে আসতে ই ওর বেষ্ট ফ্রেন্ড আনিশা বল্লো
কিরে আজ এতো তাড়াতাড়ি এলি তোকে তো ক্লাস শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে ছাড়া এতো সকাল কখনো স্কুলে আসতে দেখিনি
নির্ঝরিণী – উফফ আশা (আনিশা কে নির্ঝরিণী আশা ডাকে, আনিশা নির্ঝরিণী কে ঝড় বলে ডাকে)আজকের দিনে আমি লেইট করে আসবো এটা তুই ভাবলি কি করে
আনিশা- সেটাই তো তুই যে গান পাগলি তার উপর তোর পছন্দের শিল্পী আসছে তোর কি আজ আর বাড়িতে মন বসবে,আজ তো ঝড়ের গতিতে আসবি
নির্ঝরিণী – চল তো আগের সারিরর সিট নিতে হবে নইলে উনাকে দেখতে পাবো না,,
আনিশা- হুম তাই তো,না দেখলে কি তোর ঘুম হবে
নির্ঝরিণী – ফাউল বকিস না,,চল
আজ উতলা স্কুলে আসতে লেইট হয়ে গেছে,, আজকের দিনে লেইট হওয়া ঠিক মানতে পারছে না মেজাজ তার খুব বিগড়ে আছে, কিন্তু স্কুল ঘেটে আয়ান কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই তার মন টা ভালো হয়ে গেলো
উতলা আয়ানের দিকে তাকিয়ে সব সময় একটা মিষ্টি হাসি দেয় আজ ও তার ব্যাতিক্রম হয়নি
আজ উতলা পাস কেটে যেতেই আয়ান চারি দিকে তাকিয়ে দেখলো নির্ঝরিণী আসে পাশে আছে কি না, যখন দেখলো নেই
তখন উতলা কে পিছন থেকে ডাক দিলো,
– এই উতলা শুনতো
উতলা লাজরাংগা চাহনিতে আয়ানের দিকে তাকিয়ে একটি নিঃশব্দ হাসি দিয়ে বল্লো
– ডেকেছো?
আয়ান উতলা কে ডেকে অস্বস্তিতে পড়ে যায় আবার উতলা তাকে তুমি করে বলছে এটা তো তার হার্টে গিয়ে বিঁধেছে
উতলা- তুমি কিছু বলছো না যে
আয়ান স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে বল্লো
– তু- তুই আজ এতো লেইটে আসলি যে
উতলা কানে পিছনে চুল গুঁজতে গুঁজতে বল্লো
– মা আজ চুল বেধে দিতে সময় নিয়েছে তাই
আয়ান একটু হাসার চেষ্টা করে বল্লো
– ওহ
উতলা আর কিছু না বলে চলে গেলো আয়ান যেন হাফ ছেড়ে বাছলো আবার চারি দিকে তাকালো না নির্ঝরিণী নেই
উতলা কে দেখলে আমার কি যেন হয় বুঝি না বাপু,
উতলা বেশি ফর্সা নয়, আবার উজ্জ্বল শ্যামলা ও না তবু ও ওর চেহারা এতো মিষ্টি,সব ছেয়ে ওর হাসি সুন্দর এই হাসিতেই আমি শেষ,
চোখের পাপড়ি গুলো বড় বড় নিচের দিকে তাকিয়ে হাটলে যেন চোখ বুঝে হাটছে এমন মনে হয় ভারী মায়াবী লাগে তখন,
উতলা কে দেখলে আমার মন সত্যি উতলা হয়ে উঠে,ঠিক মতো গুছিয়ে কথা ও বলতে পারি না ওর সামনে গেলে
এমন সময় সিয়াম এসে আয়ানের পিঠে থাপ্পড় মেরে বল্লো সালা তুই এখানে
আয়ান উতলার চিন্তায় বুধ হয়ে ছিলো সিয়ামের থাপ্পড় চমকে উঠে
সিয়াম- সালা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলি নাকি, চমকে উঠলি যে
আয়ান- কিছু না চল
সিয়াম- আজকের অনুষ্ঠান হোষ্ট করে সোহাগ ভাই,উনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর হয়
আয়ান- হুম ভালো, চল গিয়ে বসি আয়ান আসতে আসতে লেইট করে ফেলেছিলো তাই ওরা সবার পিছনে সিট পেয়েছে
সবাই বসে অপেক্ষা করছে কিন্তু গায়ক এখন ও এসে পৌছয়নি,দশ মিনিট লেইট
এমন সময় গাড়ির হর্ন শুনা গেলো সবার মধ্যে চাঞ্চল্যতা দেখা দেয়
আয়াপ খান এসেই আর দেরি করেনি সোজা স্টেজে চলে আসে
নির্ঝরিণী অপলক ছেয়ে আছে হাজার হাজার কোটি কোটি বালিকার হার্ট থ্রব আয়াপ খানের দিকে,সত্যি ওর কন্ঠের থেকে ও অনেক সুন্দর, জোড়া ভ্রু, খোঁচা খোঁচা দাড়ি,হেয়ার স্টাইল সব যেন নজর কাড়া, মুখে যেন হাসি লেগেই আছে
আনিশা নির্ঝরিণী কে ধাক্কা দিয়ে বল্লো
– কিরে তোর মাঝে আছিস তো নাকি আয়াপের মাঝে হারিয়ে গেছিস
নির্ঝরিণী – পাকনামি করিস না তো,সামনে তাকা
নির্ঝরিণী আবার আয়াপের মাঝে ডুবে গেলো, এতো দিন শুধু গান শুনেছে,আজ গান ও শুনিবে দেখবে ও
আয়াপ – গাইজ আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত তোমাদের অপেক্ষা করানোর জন্য তবে আর তোমাদের অপেক্ষা করতে হবে না তো হয়ে যাক গান
আয়াপ গিটার বাজিয়ে গান ধরলো
“আমি তোমাকে আর ও কাছে থেকে তুমি আমাকে আর ও কাছে থেকে
যদি জানতে চাও তবে ভালোবাসা দাও ভালোবাসা নাও।।
নদী কেনো যায় সাগরের ডাকে
ছাতক কেনো বৃষ্টির আশায় থাকে
যদি বুঝতে চাও
আমি তোমার ঐ চোখে চোখ রেখে
তুমি আমার ঐ চোখে চোখ রেখে।।
স্বপ্ন দেখে যাই
তবে ভালোবাসা দাও, ভালোবাসা নাও
কাছে এলে যাও দূরে শরে
কতো দিন রাখবে আর একা করে
মনের টেনে নাও
আমি তোমার ঐ হাতে হাত রেখে
তুমি আমার ঐ হাতে হাত রেখে ।।
এসো এগিয়ে যাই
শুধু ভালোববাসা দাও ভালোবাসা নাও”
গান শেষ হতেই,দর্শকের রিকুয়েস্ট আরেকটা গাইতে হবে
আয়াপ চোখ বন্ধ করে আবার গান ধরলো
“ভালোবাসি কতো টা নাই বা বলি
কিছু কথা শুনার বোঝার কি বলি ।।
বুঝে নাও তুমি আমার চোখ টা দেখে
আছে কতো ভালোবাসা হৃদয় মেখে
বুঝে নাও তুমি আমার চোখ টা দেখে আছে কতো ভালোবাসা হৃদয় মেখে
যে পথে চলে সবাই সে পথে চলি না কারনে অকারনে ভালোবাসি বলি না ।।
বুঝে নাও তুমি আমায় চোখ টা দেখে
আছে কতো ভালোবাসা হৃদয়ে মেখে ।।
আমাদের প্রেম কেনো সবার মতো হবে তবে কি এই প্রেম উদাহরণ রবে ।।
বুঝে নাও তুমি আমার চোখ টা দেখে আছে কতো ভালোবাসা হৃদয়ে মেখে
ভালোবাসি কতো টা না ই বা বলি কিছু কথা নয় শুনার বোঝার রেখে বলি।।
এভাবে কয়েকটা গান গেয়ে একটা বিরতি নিলো
নির্ঝরিণী তনয় হয়ে শুনছিলো আয়াপ যে স্টেজ থেকে নেমে গেছে সেদিকে তার খেয়াল নেই
আনিশা টিপ্পনী কেটে বল্লো
– আহ হারে রোমিও চোখের আড়ালে চলে গেছে, কিন্তু জুলিয়েট বুঝতেই পারেনি
নির্ঝরিণীর তনয়তা কেটে যায় আনিশার কথায়
নির্ঝরিণী -কিছু বললি?
আনিশা- নাহ কিছু বলেনি,আচ্ছা শুন না যদি এখন এই স্টেজে তুই একটা গান গাস তা হলে কেমন হবে বলতো
নির্ঝরিণী – মাথা খারাপ হয়নি আমার,এই স্টেজে গান গাওয়ার যোগ্যতা আমি রাখি না
আনিশা- আচ্ছা রাখিস কি রাখিস না দেখ তা হলে
আনিশা উঠে গেলো,কিন্তু কেনো গেলো নির্ঝরিণী বুঝতে পারেনি
কিছুক্ষন পর উপস্থাপক সোহাগ ভাই ঘোষনা দিলো
– গাইজ এখন নিশ্চই আপনারা বসে বসে বোর হচ্ছেন কিন্তু আমার মনে হয় আর বোর হতে হবে না আমদের অতিথি এখন একটু বিশ্রাম নিচ্ছে তার মাঝে এখন আপনাদের সামনে গান নিয়ে আসবে এই স্কুলের সবার পরিচিত বোন নির্ঝরিণী,
নির্ঝরিণী নিজের নাম ঘোষনা হতে দেখেই লাফিয়ে উঠে তার পর কিছু না ভেবেই স্টেজে গিয়ে গান ধরলো
“তুমি যে কতো আদরের তুমি রয়েছো মন ঝুড়ে
ওওও জানি না সেই তোমাকে
কেনো এতো ভালো লাগে
মন দুয়ারে ডেকে যাই সুখের আংগিনায়
তোমারি মনেতে আমি
ভালোবেসে স্বপ্নেতে নামি
ওও আছো যখন বুকের
ভিতর দেবো তোমায় সুখের আছর।।
ওও চাইছো যখন মনের পাঁজর
দেবো তোমায় প্রেমের বাসর”
নির্ঝরিণীর গান শেষ হতেই পিছনে ফিরে দেখে তার স্বপ্নের পুরুষ আয়াপ খান দাঁড়িয়ে আছে, সে ও সবার সাথে তাল মিলিয়ে হাত তালি দিচ্ছে
নির্ঝরিণী পলকহীন ভাবে কিছুক্ষন আয়াপের দিকে ছেয়ে থেকে তার পর দৌড়ে স্টেজ থেকে নেমে যায়,সিটে এসে ই বুকের মধ্যে হাত দিয়ে ছেপে বসে আছে,হার্টবীট দূর্ত চলছে তার
নির্ঝরিণীর পুরো ব্যাপার টা আয়াপ ফলো করে মুচকি হেসে নিজে গান ধরলো,দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠান শেষ হয় সবাই অটোগ্রাফ ফটোগ্রাফ নেয়ার জন্য এগিয়ে গেলো আয়াপ খানের কাছে
শুধু নির্ঝরিণী যায়নি,তার স্টেজে চোখা চোখির কথা মনে পড়লেই হার্টবীট বেড়ে যায়
নির্ঝরিণী এখন ও হার্ট ছেপে বসে আছে
আয়াপ সবার ভীড় ঠেলে নির্ঝরিণীর কাছে গিয়ে বল্লো
হেই কোকিলা কন্ঠি তুমি ফটোগ্রাফ নেবে না
নির্ঝরিণী চমকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়
আয়াপ আবার সেই পাগল করা হাসি দিয়ে বল্লো
কুল বেবী কুল,এতো নার্ভাস হচ্ছো কেনো, বাই দ্যা য়ে এখন আমার তাড়া আছে, তুমি এই কার্ড টা রাখো আর কিছু না হোক একটা মেসেজ অবশ্যই দিবে আর হা তুমি খুব ভালো গান করো
বাই কোকিলা কণ্ঠি ,
আয়াপ চলে গেলো
সবাই নির্ঝরিণী কে ঘিরে ধরলো
আনিশা- কিরে এতো গুলো মেয়ে থাকতে, উনি তোর সাথে নিজে নিজে কথা বল্লো কেনো,, নাকি তোকে উনার….
নির্ঝরিণী – আনিশা বাজে বকিস না তেমন কিছু ই না,তোদের কথায় গান গেয়েছি,গান ভালো হয়েছে সেটা ই বলেছে উনি
উতলা এসে যোগ দিলো
– তাই নাকি তা হলে তোকে কার্ড দিয়ে গেলো কেনো
নির্ঝরিণী আর কিছু না বলে দূর্ত পা ফেলে বাসায় চলে আসে
মিথিলা তখন এসে পৌছয়নি
নির্ঝরিণী কখন বোনের কাছে কথা গুলো বলবে সে জন্য ছটফট করছিলো
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
মন ফড়িং ❤ ১৫.
মন ফড়িং ❤ ১৪.
অন্যরকম_বিয়ে শেষ_অংশ
অন্যরকম_বিয়ে শেষ_অংশ
এই মেয়ে রাতে আমার ঘরে কি করতে এসেছে,,,
– তুমি এখানে কেন ?
•
– কেন আবার ? সারাজীবন তোমার বোনের ঘরে থাকব নাকি,,, ??
আমি ওর কথা বাদ দিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলাম।মিলিকে কিছু বলে লাভ নাই।বাবা মা সবাই এখন ওর পক্ষে চলে গেছে।
আমি কিছু বললেই বলে,
•
– বউ হয়না তোর,,
•
কেউ আমাকে একটুও বোঝার চেষ্টা করেনা।
কিছুক্ষন যেতেই মিলি সাজতে বসে গেল,, আমি তাই দেখে বললাম,,,
•
– ঘুমানোর আগে সেজে কি করো ?
মিলি ঠোঁটে লিপস্টিক দিতে দিতে বলল,,,
– পরে বুঝবা,,
•
ওর সাজগোজ শেষ হলে ও আমার কাছে এসে বলল,,,
•
– কেমন লাগছে আমাকে ?
•
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,
– এমনিতেই তুমি এত সুন্দর তাও সাজো কেন ?
•
– তোমার জন্যই সাজলাম,,
কি করো তুমি ?
এত সুন্দর বউ থাকতে কষ্ট করে গল্প লিখে মেয়ে ইম্প্রেস করে কি করবা,,,,
•
– আমি মোটেও মেয়েদের ইম্প্রেস করার জন্য লিখিনা,,,
•
– জানি তুমি কেমন,,,জলদি শুতে আসো,,,
লাইট জালানো থাকলে ঘুম আসেনা।।।
•
মিলি গিয়ে শুয়ে পরলো।মিলির কথা শুনে মনে হলো ও আমার বউ হয়ে গেছে,,পুরোপুরী সিরিয়াস রকমের বউ।
ও শুয়ে পড়ার পর আমি এখনো বিছানার দিকে যাইনি।তবে আমার এখান থেকে ওর সুন্দর মুখ টা ঠিকই দেখা যাচ্ছে।
এই মেয়ের সাথে আজ রাতে থাকলে আমি নির্ঘাত এই মেয়ের প্রেমে পরে যাবো।
ঘরের বাইরে থাকাও যাবেনা,,বাবা দেখলে আরেক প্রবলেম।
এক প্রকার বাধ্য হয়ে বিছানার দিকে গেলাম।
মিলিকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে কি সুন্দরই না লাগছে।
ভাবলাম ওর কপালে একটা চুমু খাব কিনা।
অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি পাশে মিলি নেই।মাকে গিয়ে মিলির কথা জিগ্যেস করতেই মা বলল,,,
– মিলি বাসায় নেই।
•
– বাসায় নেই মানে কোথায় গেছে।
•
– মিলি একটু ওর বাবার বাসায় গেছে।
•
– কিন্তু ও তো আমাকে কিছু বলে যায়নি।
•
– তুই ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর তোকে ডাকে নি।আর ও তো একটু পরে এসেই পরবে।
•
– বাসায় মিলি নেই বাসাটাই কেমন যানি খালি খালি লাগছে,,,তাই সকালের নাস্তা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
•
•
রাতে বাসায় এসে দেখি মিলি চুলে তেল দিচ্ছে।আমাকে দেখেই বলল,,,
•
– আমাকে নাকি সকালে খুঁজছ ?
•
– হম,যাওয়ার আগে আমাকে বলে গেলেই পারতা।
•
– তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই আর ডাক দেই নি।
•
– এর পর থেকে যেখানে যাবে আমাকে বলে যাবে।
•
– আচ্ছা,,,
মাঝ রাতে যখন ঘুম ভাংলো তখন দেখি মিলি আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। অনেক চেষ্টা করেও ওর হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারলাম না।
কি আর করা ওই ভাবেই কিছুক্ষন শুয়ে রইলাম আর মাঝে মাঝে মিলিকে দেখছিলাম।আর মনে মনে ভাবছিলাম মেয়েটা এত সুন্দর কেন,,,
ও আমার এত কাছে ছিল যে, ওর নিশ্বাস আমার মুখের উপর পরছিল।আমার রুম দোতলায় হওয়ায় ঘরের জানালা দিয়ে ভালই
বাতাস আসে। বাতাসে ওর মাথার চুল গুলো উড়ছিল।কিছু চুল এসে ওর কপালের উপর পরেছিলো, আর ওগুলা আমার মুখেও লাগছিল। তাই আমি হাত দিয়ে ওগুলো সরিয়ে
দিতে লাগলাম।চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে মিলির দিকে তাকাতেই দেখি,,মিলির চোখ খোলা।
আমাকে দেখে মিলি হাসতে হাসতে বলল,,,
•
– কি করো ?
•
– না কিছুনা,,,,
•
– আচ্ছা,,, ঘুমাও তাহলে,,,
•
– তোমার থেকে একটা কথা জানার খুব ইচ্ছা,,,
•
– কি কথা বলো,,,
•
– আমি কি সত্যিই আগে কখনো তোমাকে বিয়ে করেছিলাম।
•
– হঠাত্ এই কথা কেন।
•
– সেদিন বাবাকে যে বিয়ের কাগজ দেখালে সেটাতে আমার সাইন ছিল।কিন্তু আমার যতদূর মনে পরে আমি তো তোমাকে বিয়ে করিনি।তাহলে এই সাইনটা কাগজে কেমনে আসলো,,,
•
– আমাকে তৃতীয় বার যে হেল্প করছিলা সেটা তোমার মনে আছে ?
•
– হম, খুব মনে আছে।সেই হেল্প করে পুলিশের দৌড়ানি পযন্ত খেয়েছি।
আমার মনে পরে গেল সেদিনের কথা,,,,
সেদিন সকালে ঘুমাচ্ছিলাম ঠিক তখনেই মিলির নাম্বার থেকে কল আসলো কিন্তু রিসিভ করিনি।কারন এই কল রিসিভ করলেই আবার হয়তো কোন বিপদে পরব।অনেক বার কল আসলো তাও আমি রিসিভ করলাম না।
অবশেষে একটা টেক্সট আসলো,,,,
“আমি খুব বিপদে পরেছি ••••••• এই ঠিকানাই আপনি এখনেই চলে আসুন প্লিজ”
এই টেক্সট দেখে আর ঠিক থাকতে পারলাম না।চলে গেলাম মিলির দেওয়া ঠিকানায়।গিয়ে দেখি এটা একটা কাজী অফিস।
আমাকে দেখেই মিলি বলল,,,
•
– আপনি এসেছেন,,,
•
– কি সমস্যা বলো।
•
– আমার বান্ধবীর বিয়ে এই শুক্রবারে।কিন্তু সে একটা ছেলে কে খুব ভালবাসে।আর ছেলেটাও তাকে খুব ভালবাসে।ছেলে আর মেয়ে দুজনেই বাসা থেকে পালিয়ে এসেছে।
•
– এখন আমি কি করব ?
•
– একটু পরেই ওদের বিয়ে হবে।আর এই বিয়েতে আপনাকে সাক্ষী হতে হবে।
সেদিন আমি ঐ বিয়ের সাক্ষী হতে চাইনি।কিন্তু বাধ্য হয়ে সাক্ষী হতে হল আমাকে।
বিয়ে শেষে জানতে পারলাম মেয়েটার বাবা নাকি পুলিশ।তার পর তো বুঝতেই পারছেন অবস্থা কি রকম হতে পারে,,,,
হম আমার সব মনে আছে,,,
•
– সেদিন তুমি কয়টা কাগজে সাইন দিয়েছিলে ?
•
– দুইটা কাগজে।
•
– সেই দুইটা কাগজের মধ্যে একটা হল তোমার বাবাকে যেটা দেখিয়েছি ওটা।এই সব কিছুই আমি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম।
•
– মিলির কথা শুনে খাট ভেঙে নিচে পরে যাওয়ার মত অবস্থা হল আমার।এই মেয়ে বলে কি,,,,
যাই হোক এমনটা না করলেও পারতে।
•
– এটা তো কিছুই না।তোমাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য এর থেকেও বেশি কিছু আমি করতে পারি।
•
– এতো ভালবাসো আমায় ?
•
– হম,অনেক ভালবাসি তোমায়।
এবার তাহলে কাছে এসো,,,,,
•
– আমি মেয়েটার কাছে না গিয়ে পারলাম না,, কিসের এত আকর্ষণ বুঝলাম না।
অবশেষে মেয়েটার বুদ্ধি এবং ভালোবাসা দুটোর কাছেই আমি পরাজিত হলাম।
#সমাপ্ত
(আজকে গল্পটা শেষ করে দিলাম।গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই জানাবেন। )