হৃদয়ের বন্ধ পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব

0
901

#হৃদয়ের বন্ধ
অন্তিম পর্ব
#লেখিকা :Afshana Afrin
“” তোর্সা কনসিভ করার পর থেকে অর্নব বাসায় বসে সব কাজ করছে আর তিন জন কাজের লোক প্লাস নার্স অলটাইম তোর্সার আসে পাশে রেখে দিয়েছে অর্নব। অরন্য ও কম না সারা দিন তোর্সার পাশে বসে হাত পা টিপে মাজে মাজে খাইয়ে দেই জুতো পরিয়ে দেই
দুই ভাইয়ের যত্ন দেখে হেসেই ফেলে তোর্সা সারা দিন বাচ্চাদের মতো অর্নব আর অরন্য তোর্সা কে আগলে রাখে।
দেখতে দেখতে সময় ফুরিয়ে আসছে! তোর্সার এখন নয় মাস চলছে পেঠ একটু বেশিই ফুলে উঠেছে কারন বেবি হবে টুইং। এই তো সেই দিন যখন অর্নব যানতে পারলো তার দুই সন্তান হবে তখন থেকে আরো বেশি কেয়ার তোর্সার। নয় মাসের ভিতরে কখনো নিজের হাতে কিছুই করতে দেই নি। খাওয়ানো ঘুম পারিয়ে দেওয়া মাথা চুল বেঁধে দেওয়া ঔষুধ খাওয়ানো সব নিজের হাতে করেছে অর্নব আর অরন্য।
………………………….
তোর্সার অপারেশনের ডেইট চলে আসছে দশ দিন পর অপারেশন যার জন্য সারা দিন চিন্তায় আর ভয়ে থাকে অর্নব।
রাত দশটা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে অর্নব তোর্সার ডেলিভারির ডেট যতোই এ গিয়ে আসছে ততোই চিন্তা বেরেছে তার। ঘুম ভেঙ্গে আসে পাশে অর্নব কে না পেয়ে আস্তে করে নামে তোর্সা। অর্নব কে ঘরের মাজে না পেয়ে ব্যালকনিতে চোখ যাই দেখতে পাই অর্নব সিগারেট টানছে। তোর্সা আস্তে করে পিঠে হাত রাখে। অর্নব সিগারেট ফেলে দিয়ে সাথে সাথে ঘুরে বলে জান পাখি উঠে এলে কেন ? কিছু লাগবে? তোর্সা অর্নবের গলা জড়িয়ে ধরে বলে তোমাকে।
অর্নব মুচকি হেসে তোর্সার কপালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরে রুমে ডুকে যাই।
তোর্সা কে বুকে নিয়ে শুয়ে আছে অর্নব। তোর্সা অর্নবের বুকে মাথা রেখে প্রশ্ন করে কবে থেকে চলছে এই নেশা? অর্নব বলে আরে বেশি দিন না এমনি আরকি খাই। তোর্সা বলে আমি যানি কেন খাচ্ছো কারন তুমি চিন্তায় আছো আমি যদি মরে যাই কি হবে তোমার তাই না? অর্নব এইবার রেখে তোর্সা কে নীছে শুয়ে উঠে বসে বলে আর যেন এই কথা না শুনি দোয়া করো তোমার আগে যেন আমিই চলে যাই।
তোর্সা অর্নবের কাছে এসে জড়িয়ে ধরে বলে এমন বলো না আমার কষ্ট হয়। অর্নব উওর দেই আমার কেমন লাগে তাহলে? তোর্সা অর্নবের বুকে চুমু খেয়ে বলে সরি হানি আর বলবো না কথা দিলাম। আমি প্রমেস করছি আমি আর বেবিরা ঠিক সুস্হ ভাবে ফিরে আসবো ইনশাল্লাহ তাই তোমাকে ও কথা দিতে হবে আর সিগারেট খাবে না। অর্নব তোর্সার হাত ধরে বলে খাবো না বেবিদের কসম।

দেখতে দেখতে চলে যাই সাত দিন আজ তোর্সার অপারেশনের ডেইট অর্নব সব কিছু গুছিয়ে তোর্সা কে নিয়ে হসপিটাল যাই। আগে থেকে বড়ো বড়ো নাম করা ডক্টর এনে রেখেছে প্লাস বি আই পি কেবিন। রাত আটটায় তোর্সার ব্যথা উঠে তখনি ওকে O.T তে নেওয়া হয়। যাওয়ার আগে অর্নব শুধু একটা কথায় বলেছে তোমার বাঁচা মরার উপর নির্ভর করে আমার আর অরন্যর জীবন বলেই কপালে চুমু দেই। তোর্সা অর্নবের হাত ধরে ভরসা দেই সে ফিরে আসবে।
**** দীর্ঘ এক ঘন্টা ধরে বাহিরে অপেক্ষা করছে অর্নব আর অরন্যর সাথে আদি আর ইশা। এক ঘন্টা পর ডক্টর বেরিয়ে আসে কুলে দুই বাচ্চা।
ডক্টর অর্নবের কাজে দুই বেবি এনে দেখিয়ে বলে আপনার বেবিরা sir…
অর্নব আগে মেয়েকে কুলে নিয়ে চুমু খাই
এরপর ছেলেকে নেই।
দুই বেবি কে আদি ইশার কুলে দিয়ে তোর্সার কাছে যাই।
ভিতরে ডুকে দেখে তোর্সা ঘুমে।
অর্নব তোর্সার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে নরে চরে উঠে তোর্সা। চোখ খুলে দেখতে পাই অর্নব।
তোর্সা অর্নবের গালে হাত রেখে বলে হানি।
অর্নব তোর্সার হাতে চুমু খেয়ে বলল thank you বেইব এতো কিউট দুইটা বেবি দেওয়ার জন্য।
তোর্সা হেসে বলে অর্ধেক তোমার ক্রেডিট।
অর্নব তোর্সার কপালে কপাল ঠেকিয়ে হেসে দেই

******* একটু পর বেবি নিয়ে ভিতরে আসে অরন্য আদি আর ইশা। তোর্সার দুই পাশে দুই বেবি আবার দুই বেবির দুই পাশে অর্নব অরন্য। অর্নব এক জন কে চুমু দিচ্ছে অরন্য একজন কে। অরন্য মেয়ে বাবুর গালে হাত দিয়ে বলে এটা আমার বাবু আর ওই টা ভাইয়ার বাবু।
তোর্সা অরন্যর গাল টিপে দিয়ে বলে দুইটা তোমার বাবু।
অরন্যর অর্নব তোর্সা তিন জনেই হেসে দেই।
আদি ইশা বলে sir আপনি আর বেবিরা সবাই এক সাথে বসেন তো ছবি তুলি।
অর্নব মুচকি হেসে ছেলেকে কুলে নেই তোর্সা মাজ কানে বসে আছে আরেক পাশে অরন্য মেয়ে বাবু কে নেই আদি পাঁচ জনের ছবি তুলে।
তোর্সা অরন্য আর অর্নবের গালে চুমু খাই এরপর বেবি দের গালে চুমু দিয়ে বলে আমার পরিবারে যেন কারো কালো ছায়া না পরে। বেবি আর অর্নব অরন্য কে নিয়ে তোর্সা ভরা সংসার যেখানে শুধু খুশি।

আপর দিকে নীলিমা চৌধুরি আরিশ চৌধুরি সব সম্পত্তি নিয়ে তার এক বয়ফেন্ড এর কাছে চলে যাই সে ও চিট করে সব নিয়ে ছুরে ফেলে দেই নীলিমা চৌধুরি কে। আর এই সব কিছুর পিছনে আছে অর্নব।

বাচ্চা দের সাথে খেলছে অর্নব তখনি ফোনে কল আসে। অর্নব ফোনটা রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে বলে sir নীলিমা চোধুরি ভিখারি হয়ে গেছে। আপনার কথা মতো সব করে ফেলেছি। অর্নব ফোন কেটে শয়তানী হাঁসি দিয়ে বলে আমার মায়ের সাথে করা অন্যায়ের শ্বাস্তি আমি দিয়ে দিলাম নীলিমা চৌধুরি বলেই শয়তানী হাঁসি ।
পাঁচ বছর পর
বেবিরা এখন হাঁটতে পারে আর আদু আদু কন্ঠে বাবা মা চাচ্চু বলে। অরন্য সারা দিন বেবিদের খেয়াল রাখে।
রাত দশটা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে অর্নব। তোর্সা বেবিদের ঘুম পারিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। অর্নব তোর্সা কে সামনে টেনে আনে।
তোর্সা গলা জরিয়ে ধরে অর্নবের ঠুঁটে চুমু দিয়ে বলে আজকে সারা রাত আমাদের তোমার বাচ্চারা আর উঠবে না আজকে। অর্নব হেসে বলে তাই তা আজকে কি করবে। তোর্সা অর্নবের গলা জরিয়ে ধরে বলে বেবিদের জন্য নতুন ভাই বোন আনার কাজ বলেই অর্নবের ঠুঁটে আবার চুমু দেই। অর্নব তোর্সা কে কুলে তুলে ভিতরের রুমে নিয়ে যাই।
আবার ও একটা ভালোবাসার রাত পার করে অর্নব তোর্সা।

সমাপ্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে