যেই তোমার হাওয়া আমাকে ছুঁলো পর্ব-০৩

0
340

যেই তোমার হাওয়া আমাকে ছুঁলো
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
৩.

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করিডোরের একটি বেঞ্চিতে ঠাঁই বসে আছে পার্থ। সামনেই কেবিনের ভিতর হতে ভেসে আসছে সদ্য নিজের সন্তান হারানো এক মায়ের আর্তনাদ। স্তব্ধ পার্থর কানে সেই আর্তনাদ স্পষ্ট আঘাত হানছে।

“ কতবার বলসি এসব রাজনীতি করিস না। ছাইড়া দে। মায়ের কথা শুনলি না। আল্লাহ আমি এখন কি নিয়া বাঁচমু? আমার পোলাডারে খাইয়া ফেললো অমানুষের দল। “

এতক্ষণ কেবিনে অনুভূতিহীন মানুষের ন্যায় দাঁড়িয়ে থেকে বিভিন্ন পেপার ওয়ার্কস করছিলো তরী। সিয়ামের মায়ের তীক্ষ্ণ আর্তনাদে যেন তার মাথার প্রতিটা নিউরন ছিড়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছিলো। পেপার ওয়ার্কস শেষ হতেই সে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে। কেবিনের সামনেই পার্থকে বসে থাকতে দেখে সে মিনিট দুয়েক কিছু একটা ভাবে। পরপর মাঝখানে বেশ কয়েক হাত ব্যবধান রেখে বেঞ্চির অপর প্রান্তে বসে সে। শান্ত স্বরে বলে,

“ জীবনে প্রথম সামনাসামনি কারো মৃত্যু দেখলেন নেতা সাহেব? “

পার্থ কোনো জবাব দেয় না। ফিরেও তাকায় না। সে স্থির বসে রয়। তরী নিজেই আবার বলে,

“ আমার জন্য এরকম ঘটনা নতুন কিছু না। এর আগেও অগণিত বার আমি মৃত্যু দেখেছি। একপ্রকার বলতে পারেন প্রায় রোজই আমার মৃত্যুর সাথে দেখা হয়। “

পার্থ এবার শীতল দৃষ্টি মেলে তরীর দিকে তাকায়। তরী মৃদু অবজ্ঞার হাসি হেসে বলে,

“ ভিতরে যেই ভদ্রমহিলা নিজের ছেলের শোকে কাতর সেটাও নতুন কোনো ঘটনা না। আপনাদের মতো সো কল্ড জন সেবকদের পিছনে এরকম বহু মায়ের সন্তানরা হারিয়ে যায়। কিন্তু আপনাদের তাতে কি আসে যায়? আপনাদের ইমেজে তো এক বিন্দু দাগ লাগে না। আপনাদের জীবন তো আপন গতিতেই চলে। “

তরীর কথা শেষ হতেই নীরব করিডোরে রুবেলের হাস্যজ্বল স্বর শুনা যায়,

“ আরে…রে… আসতে দেরি করে ফেললাম মনে হচ্ছে। “

পার্থ ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে ফিরে রুবেলকে দেখতেই তার ভিতরের জমে থাকা রাগ ফুসে উঠে। কিন্তু নিজেকে সংবরণ করে সে চুপচাপ উঠে দাঁড়িয়ে শান্ত স্বরে বলে,

“ তোর চ্যালাপেলারা সিক্সথ ফ্লোরে। ভুল ফ্লোরে এসে পড়েছিস তুই। “

রুবেল গা কাপানো হাসি দিয়ে বলে,

“ আমি ঠিক জায়গায়ই এসেছি। আসলে ব্যাপার হলো রাজনীতি নিজের জায়গায় কিন্তু মনুষ্যত্ব তার আপন জায়গায়। ভাবলাম এসে সিয়াম ছেলেটার খবর নিয়ে যাবো। দেখ ওর সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমি ফুলের তোড়াও নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই ফুল আমার ওর কবরের উপর দিতে হবে। “

পার্থর চাপিয়ে রাখা রাগ এতক্ষণে বেরিয়ে আসে। সে উগ্রভাবে ক্ষেপে গিয়ে রুবেলের কলার চেপে ধরে। সাথে সাথে রুবেলের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা তার সাঙ্গ পাঙ্গরা ক্ষিপ্ত ভাবে এগিয়ে আসতে নেয়। রুবেল হাতের ইশারায় সবাইকে থামতে বলে। পার্থর পিছনে নীরব ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা তরী ভ্রু কুচকে দাঁড়িয়ে আছে। বাহিরের শোরগোলে ইতিমধ্যে পার্থর ছেলেপেলেরাও কেবিন থেকে বেরিয়ে এসেছে। তারাও ক্ষিপ্ত চোখে রুবেল আর তার লোকেদের দিকে তাকিয়ে আছে। আসিফ দাঁত চিবিয়ে বলে উঠে,

“ ভাই আপনি খালি একবার কন, এক্ষুনি এই সবগুলারে এইখানে গাইড়া দিমু। “

মুহুর্তেই যেন শান্ত হসপিটালের করিডোরটা ছোট খাটো একটা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। পার্থ শীতল কিন্তু ভয়ংকর স্বরে বলে,

“ সিয়ামের খুনীদের এতো সহজে ছেড়ে দিবো না। কথাটা মাথায় রাখবি। “

কথাটা বলেই পার্থ এক ধাক্কা দিয়ে রুবেলকে পিছনে ফেলে দেয়। সুজন পিছন থেকে রুবেলকে ধরে ফেলে। রুবেল কিছুটা সিরিয়াস ভঙ্গিতে তরীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,

“ ডাক্তার আপা, সিক্সথ ফ্লোরে এডমিট আমার ছেলেদের দিকে ভালো করে খেয়াল রাখবেন। আশেপাশে খুন খারাবির পরিমাণ খুব বেড়েছে ইদানীং। “

কথাটা দ্বারা যে আকারে ইঙ্গিতে পার্থ হতে ওই ছেলে গুলোকে বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে তা বুঝতে আর বাকি নেই তরীর। রুবেল আর অপেক্ষা না করে গটগট পায়ে সেখান থেকে প্রস্থান করে। তরী একবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেলে সবার দিকে তাকিয়ে নিজের কেবিনে ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।

__________

গ্রীষ্মের এক পড়ন্ত বিকেল। টিএসসির সামনে এলোমেলো চুলে এবং ঘর্মাক্ত গায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শোভন। বিকেলের শান্ত শীতল হাওয়াটাও যেন আশেপাশে মানুষের কোলাহলে আর উপভোগ্য ঠেকছে না। ঠিক তখনই এক জোড়া নরম শীতল হাত তার দু চোখের পাতা আড়াল করে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,

“ হ্যান্ডস আপ। আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। “

শোভনের এতক্ষণের ক্লান্তি এবং অপেক্ষা মুহুর্তেই স্বস্তিতে রূপ নেয়। শোভন হেসে শুধায়,

“ আমার অপরাধ কি মাননীয় আইন অধিদপ্তরের প্রধান? “

“ চুরি করেছেন। এক রমণীর মন চুরির অপরাধে আপনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। “

কথাটা বলেই রমণী শোভনের চোখের পাতা থেকে হাত সরিয়ে তার সামনে এসে দাঁড়ায়। শোভন চোখ মেলেই দেখতে পায় তার সামনে দাঁড়ানো রমণীর মুখে লেপ্টে থাকা আদুরে ঝলমলে হাসি। শোভন হেসে বলে উঠে,

“ অপরাধ তো আপনিও করেছেন মধু। আমাকে ঘড়ি ধরে ঠিক বাইশ মিনিট অপেক্ষা করিয়েছেন। আপনাকে কি শাস্তি দেওয়া যায়? “

মধুমিতা সামান্য রাগ দেখিয়ে শোভনের বুকে আলতো কিল মেরে বলে,

“ হেহ! প্রেম করতে এসেছো অথচ অধৈর্য্য এতো? এরকম নড়বড়ে ধৈর্য্য দিয়ে প্রেম হয় না মশাই। “

এই পর্যায়ে শোভন মধুমিতার হাত ধরে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বলে,

“ দুই বছরের সাধনার পরও আমার ধৈর্য্য নিয়ে তোমার সন্দেহ আছে? “

মধুমিতা বেশ কৌশলে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। শোভনের দিকে পিঠ করে উল্টো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠে,

“ সন্দেহ তো সম্পূর্ণ তোমার প্রতিই আছে। ডিউটিওয়ালা মানুষদের চরিত্রের ঠিক নেই কোনো। পুলিশ সম্প্রদায় যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন তার তোষামোদ করে চলে সবসময়। একইভাবে আজ আমার প্রতি ভালোবাসা কাল অন্য কারো প্রতি তোমার ভালোবাসা জাগলে? “

প্রেয়সীর করা ঠাট্টায় একজন কর্তব্যমান প্রেমিকের ন্যায় হাসে শোভন। বড় বড় কদম ফেলে মধুমিতার পাশে এসে তার সাথে কদম মিলিয়ে বলে,

“ এই সামান্য ডিউটিওয়ালা কি করলে আপনি তার বিশ্বস্ততার প্রমাণ পাবেন? “

“ আপাতত প্রেমিকার পিতা মহাশয়ের বিশ্বাস অর্জন করুন। বাড়িতে আমার বিয়ের কথা চলছিলো। সেই বিয়ের গুঞ্জনের ইতি টানতে আমি আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারটা বাসায় জানিয়ে দিয়েছি। এখন বাবা আপনার সাথে দেখা করতে আগ্রহী। “

কথার এই পর্যায়ে শোভন দাঁড়িয়ে পড়ে। বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে থেকে প্রশ্ন করে,

“ আংকেল কে জানিয়ে দিয়েছো? উনার রিয়্যাকশন কেমন ছিলো? “

“ সেটা তো সামনাসামনি গেলেই বুঝতে পারবো। সামনের সপ্তাহে আমি হল থেকে বাসায় ফিরছি। তুমিও সাথে যেতে চাইলে চলতে পারো। আমাদের সিলেটের সৌন্দর্যও দর্শনের সুযোগ পাবে আর সঙ্গে নিজের হবু শশুড় শাশুড়ি পটানোর সুযোগও পেয়ে যাবে। “

__________

আজকে পৃথার রেজাল্ট দেওয়া সত্ত্বেও সারাদিন তাকে অভিনন্দন জানানোর সুযোগটুকু পায় নি পার্থ। হসপিটালের ফর্মালিটিস শেষে বাদ আসর জানাজার ব্যবস্থা করা হয়। জানাজা শেষে সে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে হসপিটালে গিয়েছিলো। উদ্দেশ্য ছিল সকালের করিডোরের সামনের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করা। যদিও ডক্টর বলেছে ইন্টার্নাল ব্লিডিংয়ের ফলেই সিয়ামের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু পার্থ তা মানতে নারাজ। তার মনে একধরনের খচখচ রয়েই যায়। সেই সন্দেহ তার বিশ্বাসে পরিণত হয় যখন সিসিটিভি ফুটেজের ফাইল হতে সকালের রেকর্ডিংয়ের অংশটুকু ডিলেটেড শো করে।

আপাতত নিজের পার্টি অফিসে বসে এসবকিছুই চিন্তা করছিলো সে। তখনই তার সামনে বসা আসিফ বলে উঠে,

“ ভাই, আমি তো আগে থেকেই জানতাম এই রুবেল এতো চুপচাপ থাকবো না। যেই না পার্টি থেকে নির্বাচনের জন্য আপনারে মনোনয়ন দেওয়া হইলো, লগে লগে ওই হালার পুতের ইবলিশগিরি শুরু হইয়া গেসে। আপনি এর জবাব দিবেন না? “

চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে থাকা পার্থ শীতল স্বরে জবাব দেয়,

“ ইটের বিনিময়ে পাটকেল আর জানের বিনিময়ে জান। “

আসিফ সামান্য ভ্রু কুচকে তাকায়। বুঝার চেষ্টা করছে পার্থ কি ইঙ্গিত করছে। নিজের কৌতূহল দমাতে না পেরে সে প্রশ্ন করেই বসে,

“ বুঝি নাই ভাই। “

“ আপাতত কিছু করিস না কেউ। সিয়ামকে কোপানো ওই ছেলেগুলোর উপর নজর রাখ। সঠিক সময়ের অপেক্ষা কর। আগে সেবাযত্ন পেয়ে ওদের হাসপাতাল থেকে বের হতে দে। তারপর আমরাও নাহয় একটু খাতিরযত্ন করবো তাদের। “

আসিফ মনে মনে খুশি হয়। সিয়াম ছেলেটা নব্য রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলো। এখনো কারো সাথে কোনো ঝামেলায় জড়ায় নি। সকলকে বেশ সমীহ করে চলা একটা সৎ ছেলে ছিলো। ছেলেটার সাথে অল্প দিনের পরিচয় হলেও তার মৃত্যুতে তারা সকলেই গভীরভাবে শোকাহত। এই মৃত্যুর বিচার বর্তমান ক্ষমতায় থাকা দলের আওতায় পাওয়া কখনোই সম্ভব নয়। কারণ রুবেল হলো সরকারি দলের একজন সদস্য আর তারা সরকার বিরোধী পার্টি।

আর তাছাড়াও পার্থ যেচে কারো সাথে ঝামেলা করার মানুষ না। রাজনীতিতে তার বেশ ক্লিন ইমেজ রয়েছে এজন্য। কিন্তু কেউ সেধে এসে তার সাথে শত্রুতার সম্পর্ক গড়তে চাইলে সেই সম্পর্কও সে সম্পূর্ণ মন দিয়ে পালন করে।

আসিফের ভাবনার মধ্যেই পার্থ প্রশ্ন করে,

“ তোকে আরেকটাও কাজ দিয়েছিলাম। তা হয়েছে? “

আসিফ কিছু একটা মনে করার ভান করে বলে,

“ ওহ। ওই ডাক্তার আপার পরিচয়? উনার পুরা নাম তরী রশীদ। বাপের নাম হুমায়ুন রশীদ। উনার বাপ এই হসপিটাল তৈরির মেম্বারদের মধ্যে একজন আর তাছাড়াও উনি হসপিটালের চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার পদে আছেন। আর ওই ডাক্তার আপা একজন কার্ডিওলজিস্ট। “

পার্থ চোখ মেলে তাকায়। শান্ত ভঙ্গিতে বলে উঠে,

“ তার মানে ডাক্তার সাহেবা মিথ্যা বলে নাই। “

আসিফ গা ছাড়া ভাবে বলে,

“ হ ভাই। উনার বাপের হসপিটাল দেইখাই এতো ভাব দেখায়সিলো আপনারে। আর তাছাড়াও বেডি মানুষ হইসে পাপা কি পারি টাইপ প্রজাতি। এরা নিজেদের বাপ ছাড়া আর কোনো পুরুষরে গোণায় ধরে না। “

পার্থ আসিফের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ শুধু এইটুকুই জেনেছিস? “

আসিফ ভ্রু কুচকে তাকায়। পর মুহুর্তেই কিছু একটা মনে পরার ভান করে বলে,

“ ওহ। আর উনার একটা ছোট ভাইও আছে। তূর্য রশীদ। চ্যানেল ২৪ এর ক্রাইম বিষয়ক জার্নালিস্ট। “

__________

গোছল সেরে নিজের রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছিলো তূর্য। তখনই তার ফোনটা বেজে উঠে। এগিয়ে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রিনে আননোন নাম্বারটা দেখতেই তার শিথিল ভ্রু জোড়ায় সামান্য ভাজ পড়ে। রাত ১১ টার উপর বাজে। এই সময় কে তাকে কল করবে? কথাটা ভাবতে ভাবতেই সে ফোনটা রিসিভ করে। সাথে সাথেই ফোনের অপরপাশ থেকে একটি রিনঝিন নারী স্বর বলে উঠে,

“ বলো তো মশাই। তুমি প্রেমিক হতে চাও নাকি স্বামী? “

এতো রাতে এক অপরিচিত রমণীর মুখ থেকে এমন একখান প্রশ্ন পেয়ে তূর্যর বিব্রত হয়ে পড়ার কথা। কিন্তু সে বিব্রত হলো না। উল্টো ফোনের অপর পাশের রমণীকে বিব্রত করে বলে,

“ প্রেমিক হলে তো অধিকারবোধ নিয়ে সংশয়ে পড়বো। তার থেকে নাহয় স্বামীই হলাম। সম্পূর্ণ অধিকার সহিত স্বামী। “

তূর্যর থেকে এমন একটা উত্তর পেয়ে পৃথার লজ্জায় মূর্ছা যাওয়ার জোগাড়। এই লোকটা এরকম শেয়ানা? কোথায়? সকালে তো এই লোকটাকে দেখে পৃথার একবারও মনে হয়নি যে অষ্টাদশীর মনে কড়া নাড়া এই ভদ্রলোকটা এতো শেয়ানা হতে পারে। প্রথম দেখায় এই মানুষটাকে শান্ত, ভদ্র ভাবায় তার নিজের প্রতিই এখন মায়া হচ্ছে। এক মুহুর্তের জন্য স্তম্ভিত হয়ে যাওয়া পৃথা নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠে,

“ বুঝলাম। পুরুষ মানুষের অলিখিত স্বভাব হলো তারা নারীদের উপর অধিকার খাঁটাতে খুব পছন্দ করে। “

“ আর সদ্য যৌবনে পদার্পণকারী অষ্টাদশীর স্বভাব কি রাত বিরাতে একজন আগুন্তক পুরুষকে ফোন দিয়ে অদ্ভুত প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া? “

তূর্যর কথায় আরো একবার অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো পৃথা। এটাতো হওয়ার কথা ছিলো না। চাল সম্পূর্ণ ঘুরে গেলো। তূর্যকে কাবু করার বদলে পৃথা নিজে তূর্যর দ্বারা কাবু হয়ে যাচ্ছে। নীরব পৃথার মনে আরেকদফা ঝড় তুলে দিতে তূর্য বলে উঠলো,

“ সকালে শোনা কণ্ঠস্বর রাত পেরোনোর আগেই ভুলে যাওয়ার মতো ভুলো মনা নই আমি। “

সদ্য এলোমেলো হয়ে যাওয়া পৃথা বলার মতো কোনো কথা খুঁজে পেলো না। নিজের বুকের ভেতর বাজতে থাকা বাদ্যকে অবসর দিতে ফট করে ফোন কেটে দিলো। এইমাত্র এই লোকটাকে ফোন করে সে এক মস্ত ভুল করে বসলো। এই ভুলের মাশুল কি?

চলবে…

[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে