মাতাল হাওয়া পর্ব-০১

0
394

#মাতাল_হাওয়া। ইতি চৌধুরী। পর্ব-১
(দয়া করে কেউ কপি করবেন না।)

ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়ে গোসল সেরে একবারে ছয়টা নাগাদ রান্নাঘরে ডুকে চিত্রলেখা। এটা তার প্রতিদিনকার রুটি। প্রথমে রান্নাঘরে ডুকেই চায়ের পানি চুলায় চাপিয়ে দেয়। তারপর শুরু করে সবার জন্য সকালের নাস্তা বানানো। ছয় সদস্যের সংসারের সকালের নাস্তা বানাবোর দায়িত্বটা অলিখিত ভাবে চিত্রলেখাই পালন করে। শুধু সকালের নাস্তা নয়। সারাদিন অফিসে খাটাখাটনি করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে রাতের ও পরেরদিন দুপুরের খাবারটাও রান্না করে ফেলে। এত খাটাখাটনি করলেও চিত্রলেখার কপালে ক্লান্তি বা মন খারাপের কোনো রেখা দেখা যায় না কখনো। বরং এই মানুষগুলোর জন্য করতে তার ভালোই লাগে। বেঁচে থাকাটাই তো এদেরকে ঘিরে তাহলে এদের জন্য করতে কষ্ট হবে কেন! এটা চিত্রলেখার ভাব না। প্রথমেই আলু কেটে পেয়াজ, কাঁচা মরিচ, তেল, লবণ দিয়ে মাখিয়ে চুলায় চাপিয়ে দিয়েছে ভাজি রান্না করে। এক চুলায় ভাজি, আরেক চুলায় চায়ের পানি বলক আসতে আসতে এদিকে রুটির জন্য আটা ময়ান দিতে ব্যস্ত চিত্রলেখার পাশে এসে দাঁড়ান নারগিস বেগম। খালাকে দেখে তার দিকে তাকিয়ে একবার শব্দহীন হাসি বিনিময় হয় দু’জনার। তারপর চিত্রলেখাই আগে বলে,

-তুমি এত সকাল সকাল উঠতে গেলা কেন খালা? কতদিন বলছি নাস্তা রেডি করে আমি তোমারে ডাকবো। ততক্ষণ একটু ঘুমাইলেই পারো। এত সকাল সকাল উঠার কি দরকার? বয়স হইতেছে একটু বেশি বিশ্রাম করবা তা না সকাল সকাল চলে আসো এইখানে।

-তুই একলা একলা আর কত করবি বলতো?

-যতদিন বেঁচে আছি ততদিন করবো। মরে গেলে তো আর করার সুযোগ থাকবে না।

-এসব কি রে মা? সকাল সকাল তুই বাঁচা মরার কথা বলতেছিস!

-জীবন, মৃত্যু এসবই তো জীবনের আসল সত্যি খালা। বাকি সব তো ক্ষণস্থায়ী।

-কি হইছে তোর? সকাল সকাল এমন কথা বলতেছিস কেন? মনটা খারাপ?

-না তো। কিছু হয় নাই আমার। তুমি অহেতুকই ভাবতেছো।

নারগিস বেগম ভালো করেই জানেন হাজার সমস্যা বা কষ্ট হলেও তা মুখফুটে বলবে না চিত্রলেখা। নিজের কষ্টগুলো ভেতরে চেপে রাখে সবসময়। মুখে না বললেও মায়ের জায়গায় দাঁড়িয়ে নারগিস বেগম ঠিকই অনুভব করতে পারেন মেয়ের কষ্ট। মা হয়ে লালন পালন করেছেন এতটুকু তো চিনেনই তিনি। তাই আপাতত আর এসব মন খারাপের প্রসঙ্গে কথা বলে মেয়েটার মন আরও ভেঙে দিতে চান না তিনি। তাই প্রসঙ্গ পাল্টে বলেন,

-দে আমি রুটি বেলে দেই।

-একদম না। যেখানে দাঁড়ায় আছো, চুপচাপ ওখানেই দাঁড়ায় থাকো। নাইলে এককাজ করো, তুমি গিয়ে ড্রইং রুমে বসো। চা বলক এসে পড়ছে আরেকটু লিকারটা গাঢ় হলেই তোমাকে চা দিচ্ছি।

এসব কাজ চিত্রলেখা একাই করে। কাউকে হাত লাগাতে দেয় না। গিয়ে বসতে বলার পরেও খালাকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবার বলে,

-কি হইলো খালা যাও?

-আচ্ছা থাক আমি কিছু করতে চাইবো না। এখানে তোর পাশে দাঁড়ায় থাকি।

-চুলা জ্বলতেছে তোমার গরম লাগবে।

-নভেম্বর শুরু হয়ে গেছে, শীত পড়তে শুরু করছে। এই সময়ে আবার কিসের গরম? থাকি না একটু। তোর সাথে গল্প করি। একটু পরেই তো বের হয়ে যাবি সারাদিনের জন্য। আমার কথা বলারও কেউ থাকে না।

-কেন চারু তো সারাদিনই তোমার কাছে থাকে।

-ওর তো ক্লাস থাকে। বিকালে প্রাইভেটেও যায়। ওর এত সময় কই আমার সাথে বসে আজাইরা গল্প করবে।

খালার কথা শুনে হাসে চিত্রলেখা। কিন্তু হাসিটা যেন সম্পূর্ণ পরিস্ফুটিত হয় না তার চোখ-মুখে। বরং দেখে মনে হচ্ছে জোরপূর্বক নিজেকে খালার সামনে হাসিখুশি রাখতে হাসছে। আবার রুটি বেলায় মন দেয় চিত্রলেখা। নারগিস বেগমও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন। কোনো একটা বিষয় ভেবে খানিকটা চিন্তিত তিনি৷ কিন্তু এই মুহূর্তে এসব কথা বলা উচিত হবে কিনা বুঝতে পারছেন না তাই মনে মনে ছটফট করছেন। রুটি বেলতে বেলতেই চিত্রলেখা বলে,

-কি বলতে চাও খালা বলো তো শুনি।

এমনটা সবসময়ই হয়। চিত্রলেখার কাছ থেকে কোনো কথা বা চিন্তা কোনোটাই আড়াল করতে পারেন না তিনি। ধরা পড়ে গিয়ে আমতা আমতা করে বলেন,

-না মানে আসলে…

-এসব মানে, আসলে বাদ দিয়ে আসল কথাটা বলো। আমার রুটি বানানো প্রায় শেষ। ওদের সবাইকে খাওয়ার জন্য ডাকতে হবে। এর মধ্যে তোমার জরুরী কথাটা চট করে সেরে ফেলতো।

-একটা না দুটো কথা আছে।

-ঠিক আছে, একটা একটা করে বলো আমি শুনছি।

-কোনটা আগে বলবো বুঝতে পারতেছি না যে!

রুটি বেলা এক মুহূর্তের জন্য বন্ধ করে খালার দিকে তাকায় চিত্রলেখা তারপর বলে,

-তোমার মন যেভাবে সায় দেয় তুমি সেভাবেই বলো। যেটা আগে বলতে মন চায় সেটা আগে বলো।

দু’মুহূর্ত চুপ করে থেকে মনে মনে নিজেকে গুছিয়ে নেন নারগিস বেগম। তারপর বলেন,

-লিখনের সাথে রাতে কি কোনো কথা হইছে তোর?

-হইছে তো।

-কিছু বলছে ও তোরে?

-বলছে, বিদেশ যাইতে চায়।

-হুম।

-তুমি এইটা নিয়া চিন্তা করতেছো? রাতেই কথা হইছে ওর সাথে আমার। সব বলছে ও আমারে।

-কিন্তু কীভাবে কি করবি? ওর কথায় তো মনে হইতেছে ও খুবই সিরিয়াস।

-তুমি এসব নিয়ে চিন্তা করো না তো খালা। এখনো এক বছর সময় আছে হাতে। ওর ফাইনাল পরীক্ষাটা শেষ হোক। ততদিনে একটা না একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

-কি ব্যবস্থা?

-হয় ওর মাথা থেকে বিদেশ যাওয়ার ভূত নামবে নয় টাকার জোগাড় হবে।

-এত টাকা কই থেকে জোগাড় করবি তুই?

-তা তো এখন জানি না খালা। ভবিষ্যতের চিন্তা এখন করে লাভ আছে বলো? পরেরটা পরে দেখা যাবে। তুমি এখন থেকেই এসব চিন্তা করে প্রেসার বাড়াইতেছো কেন?

-তোর জন্য আমার চিন্তা হয় রে মা। সবার জন্য এত করিস কিন্তু নিজের জন্য কোনোদিন কিছু করিস না।

হাসে চিত্রলেখা জবাব দেয় না। নারগিস বেগমও জানেন এসব কথাবার্তা এড়িয়ে চলে সে। ওর জীবনটাই এমন। সবার জন্য করতেই হয়তো ওর জন্ম হয়েছে। যেখানে ওর নিজস্ব চাওয়া পাওয়া বলতে কিচ্ছু নেই। জীবনের এই কঠিন সত্যিটা অনেক আগেই মেনে নিয়েছে সে। তাই আর কোনো আক্ষেপ নেই। এই বিষয়ে আর কিছু না বললেও চিত্রলেখা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বলে,

-দুইটা কথা বলার ছিল তোমার। একটা তো আমি জানিই আরেকটা কি বলো তো শুনি।

এবারে আগের চাইতে আরও বেশি ইতস্তত করে নারগিস বেগম বলেন,

-তোর খালু বলতেছিল গ্রামের বাড়িতে দুইটা বাছুর কিনবে।

-কত টাকা লাগবে?

-বলল সব মিলায় সাত হাজার।

-আচ্ছা, এই মাসের বেতন আসলে দিয়ে দিবো।

লজ্জায় মাথা নুইয়ে আসে নারগিস বেগমের। নিজের স্বামীর কৃতকর্মের জন্য তিনি সারাজীবনই লজ্জিত। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই উনার। হাত-পা বাঁধা বলেই উনাকে উনার স্বামীর এসব অন্যায় আবদার মানতে হয়। খালার অবস্থাটা চিত্রলেখা বুঝে তাই সবসময় নিজের সাধ্য মতো করার চেষ্টা করে। এই মানুষটা না থাকলে আজ সে ও তার ছোট ছোট ভাইবোনগুলো কোথায় থাকতো আল্লাহই জানে। অসময়ে বাবা-মা মারা যাওয়ায় অকালেই কঠিন এই দুনিয়ার বুকে এতিম হয়ে গিয়েছে চিত্রলেখা। তখন দশম শ্রেনীর ছাত্রী চিত্রলেখা। চার ভাইবোনের মধ্যে ওই বড়। তারপর লিখন ওর থেকে চার বছরের ছোট। চার ভাইবোনের মধ্যে ছোট চারু ও চয়ন। ওরা দু’জন যমজ। চিত্রলেখার বাবা-মা মারা যাওয়ার সময় ওরা দু’জন কোলের ছিল। বাবা-মায়ের কথা স্পষ্ট মনেও নেই ওদের। আজও মনে আছে সেই দিনটার কথা চিত্রলেখার। বাড়িতে কিছু জমিজমার কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। জরুরী কাজ একদিনের জন্য যাবেন তাই ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নেয়নি। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে সকাল সকাল রওনা হয়ে গিয়েছেন। একটা দিন থেকে কাগজ-পত্রে স্বাক্ষর করে পরেরদিনই চলে আসবেন। কিন্তু সেই যাওয়া আর হয়নি। যাওয়ার পথে লঞ্চ ডুবে মারা যায় চিত্রলেখার বাবা-মা। দু’জনেরই লাশ পাওয়া গিয়েছিল। অসহায় পৃথিবীতে বাবা-মা দু’জনকে একত্রে হারিয়ে নিঃসঙ্গ, এতিম হয়ে পড়ে ওরা চার ভাইবোন। তখন চিত্রলেখার একমাত্র খালা এই নারগিস বেগমই ওদের বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। নিজের সন্তানের মতো লালন পালন করেছেন। নারগিস বেগম মমতা ভরে ওদের বুকে আগলে নিলেও উনার স্বামী জামশেদ আলীর ক্ষেত্রে তা নয়। প্রথমে উনি রাজি হতে চাননি। নারগিস বেগমের কোনো সন্তান নেই। কিন্তু তার শত আকুতিতেও মন গলেনি জামশেদ আলীর। নিজের স্বামীকে ভালো মতো চিনেন বলেই উনাকে উনার ভাষাতেই রাজি করিয়েছেন শেষপর্যন্ত।

শুনতে খারাপ শুনালেও এটাই সত্যি জামশেদ আলী লোভী প্রকৃতির মানুষ। নিজের স্বার্থ ব্যতীত কিছুই বুঝেন না। চরম পর্যায়ের স্বার্থপর একজন মানুষ। শুরুতে ওদের চার ভাইবোনকে নিজেদের কাছে রাখার পক্ষে ছিলেন না। বসিয়ে বসিয়ে চারজন মানুষ খাওয়ানোর পক্ষে তিনি ছিলেন না কখনোই। বয়স কম হলেও ঐসময় সবকিছু বুঝার মতো বয়স চিত্রলেখার হয়েছিল। তাই খালুর বলা কথাগুলো ঠিকই বুঝেছে। শেষমেশ নারগিস বেগম বাধ্য হয়ে উনার ও চিত্রলেখার মায়ের অর্থাৎ দু’বোনের বাবার কাছ থেকে পাওয়া সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে দেওয়ার কথা জানালে উনি আর আপত্তি করেননি ওদের নিজের কাছে রাখতে। লোভ এমন এক কঠিন ব্যধি যা মানুষের মনুষ্যত্ব ধ্বংস করে ফেলে। যার উদাহরণ সয়ং জামশেদ আলী। কতটুকু নীচু হলে সম্পত্তির লোভে এতিম বাচ্চাগুলোকে নিজেদের কাছে রাখতে রাজি হয় একজন মানুষ। অন্যদিক থেকে চিন্তা করলে সম্পত্তির লোভে হলেও জামশেদ আলী তো রাজি হয়েছেন কিন্তু অপরপক্ষে চিত্রলেখার চাচা ফুপিরা কেউ ওদের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। এমনকি ওর বাবার সম্পত্তির অংশও বুঝিয়ে দেয়নি। ওরা ছোট বলে এড়িয়ে গেছেন। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর চিত্রলেখা আর চাচাদের দারে যায়নি। যারা অসময়ে মাথার উপর ছায়া হতে পারেনি পরবর্তীতে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর রুচি হয়নি ওর। কোটিকোটি টাকা সম্পত্তি পাবে তেমনটা নয়। অল্প কিছু অংশের অংশীদার ছিল চিত্রলেখার বাবা। যা ওর চাচারা বলতে গেলে মেরে খেয়েছে। এসব প্রসঙ্গ উঠলে নারগিস বেগম সবসময় বলেন, ❝কারো হক মেরে কেউ গিলতে পারবে না। হয় দুনিয়ায় নয় আখিরাতে এর হিসাব দিতেই হবে।❞ এসব নিয়ে চিত্রলেখার কোনো আক্ষেপ নেই। জীবনের এতগুলো বছর বাবা-মায়ের ছায়া, আদর, ভালোবাসা ছাড়া কাটিয়ে দিয়েছে। সেখানে বাবার নামে সামান্য কিছু সম্পদ না পেলেও এই জীবন কোনোরকমে চলেই যাবে চাক্কার হাওয়া বের হয়ে যাওয়া লক্কর ঝক্কর রিকশার মতো।

খালার মন ভার হয়ে আছে তা বুঝতে পেরে চিত্রলেখা দু’কাপ চা বাড়িয়ে দিয়ে বলে,

-তুমি চা নিয়ে গিয়ে বসো। আর মাত্র ২ পিস রুটি সেকা বাকি। শেষ করে আসতেছি আমি। চা খেতে খেতে আজকে অনেক গল্প করবো দু’জনে।

নারগিস বেগম আর কথা বাড়ান না। চায়ের কাপ হাতে ড্রইং রুমের দিকে পা বাড়ান।

রায়ের বাজারের এই একতলা বাড়িটা জামশেদ আলীর। তার বাবার করে দেয়া অবশ্য। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে তিনি। অথচ উনার নিজের কোনো সন্তান নেই। এমনকি উনার ঘরে থাকা এতিম ছেলেমেয়েগুলোর দিকে কোনোদিন মায়া ভরা দৃষ্টিতে একবারের জন্যও তাকাননি। বাড়িটা নিজের হওয়ায় সুবিধা এতটুকুই হয়েছে এতগুলো মানুষের মাথা গুজার ঠাই হয়েছে। তা নাহলে মাস শেষে মোটা অংকের ভাড়া গুনতে হতো। যা এখন দিতে হয় না। ঢাকার শহরে ভাড়া থাকা অনেক কঠিন। কিন্তু বাড়ি ভাড়া না গুনতে হলেও সংসারের অন্যান্য খরচ ঠিকই চিত্রলেখাকে দিতে হয়। বলা যায় এতগুলো মানুষের খাওয়ার খরচের সবটাই ও একা হাতে সামলায়। সংসার খরচের পাশাপাশি, ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়া, আবদার সব দিকেই খেয়াল রাখতে হয় চিত্রলেখাকে। জীবনটা অনেক কঠিন ওর জন্য তবু এই জীবন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। দিনশেষে বেঁচে থাকাটাই মুখ্য ওর জন্য। হোক টুকটাক তবু ভাইবোনগুলোর খেয়াল রাখতে পারছে, আবদার পূরণ করতে পারছেই এতেই খুশি সে। মাঝেমধ্যে আফসোস হয় ভাইবোনদের সকল চাহিদার জোগাড় করতে পারে না ভেবে।

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে