#মনোহরা
#পর্বঃ১৭
#লেখিকাঃনির্মলা
জিসানঃ এ কথা বললি কেনো ইশা কিছু করেছে
শানঃ আরে কিছু না এমনি বললাম
বলেই শান হেসে দিলো
জিসানঃ ঠিকাছে চল
শানঃ হুম চল
তারপর সবাই মিলে ভেতরে গেলো।শান গিয়ে ইশার মা বাবাকে সালাম করলো আর বলল
শানঃ কেমন আছেন বাবা আর মা
ইশার বাবা ও মাঃ এই তো বাবা ভালো তুমি কেমন আছো
শানঃ জি ভালো
ইশার মাঃ তুমি বস বাবা আমি আসছি
শানঃ জি
এই বলে ইশার মা চলে গেলো। শান, জিসান,আর ইশার বাবা সোফায় বসলো
এদিকে
রিয়া আর নিতু আমাকে টেনে আমার রুমে নিয়ে গেলো।তারপর আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দুইজনে আমার দুই পাশে বসলো।আমি এদের দুইজনের মতলব বুঝতে পারছি না।দুইজন আমার দুই সাইডে বসলেও দুজন দুজনের সাথে চোখে চোখে কথা বলছিলো। সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি রে তোরা আমাকে এভাবে রুমে নিয়ে এলি কেনো
নিতুঃ গল্প করতে
রিয়া নিতুর কথায় মাথা নাড়ালো
ইশাঃ রাতে করবো এখন আমাকে fresh হতে দে
বলেই ইশা উঠতে নিলে রিয়া আর নিতু ইশার দুই হাত দুইজনে টেনে বসিয়ে দিলো
ইশাঃ আহ্ রিয়া নিতু কি করছিস তোরা
নিতুঃ বাসর রাতের কথা বলো না আপুনি
ইশা এদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়লো
রিয়া ইশাকে ঝাঁকিয়ে বলল
রিয়াঃ কি হলো বলো না আপুনি
ওপাশে
শান, ইশার বাবা আর জিসান বসে গল্প করছে তখনই ইশার মা সেখানে এসে বলল
ইশারঃ এই জিসান ইশা কোথায় ওকে তো দেখতে পাচ্ছি না
জিসানঃ মা নিতু আর রিয়া সেই কখন ওকে নিয়ে গেছে
ইশার মাঃ নাহ্ এই মেয়ে গুলো ও না।যাগে শান বাবা তুমি রুমে গিয়ে fresh হয়ে নেও।
জিসানঃ চল আমি তোমাকে নিয়ে যাই
ইশার বাবাঃ হ্যাঁ বাবা fresh হয়ে নেও
শানঃ জি
এই বলে শান আর জিসান ইশার রুমের দিকে গেলো
ইশাঃ আহ্ অনেক হয়েছে।ছাড় এবার আমাকে
নিতুঃ না
রিয়াঃ না
ইশাঃ মানে কি
নিতুঃএত সময় যা যা জিজ্ঞেস করছি সেগুলোর উত্তর দেও
রিয়াঃ তা না হলে যেতে দিবো না
ইশাঃ তোদের লজ্জা করে না বড় বোনকে এসব প্রশ্ন করতে। এতটা পাকলি কি করে
নিতুঃ বলো না please আপুনি
ইশাঃ না
রিয়াঃ না বললে কিন্তু যেতে দিবো না আপুনি
এখানে কি হচ্ছে! “”!!!
কারও একটা গলা আওয়াজ পেয়ে তিনজন দরজার দিকে তাকালো দেখলো জিসান আর শান দাড়িয়ে আছে।তিনজনের মুখ এখন শুকিয়ে গেছে। কারন তাদের মধ্যে এতসময় যে সব কথা বলা হচ্ছিলো।সেসব এরা দুজন শুনে নেয়নি তো সেটা ভাবছে তখনই জিসান বলে উঠলো
জিসানঃ কি করে ইশা আসতেই গল্প শুরু করে দিলি তোরা মেয়েরা পারিস বটে।
এমন কথা শুনে ইশা নিতু আর রিয়া তিনজনই দাড়িয়ে পড়লো
জিসানঃ এই নিতু রিয়া এখন যা
রিয়াঃ কেনো ভাইয়া
জিসান ভ্রু কুচকে বলল
জিসানঃ কেনো মানে কি রিয়া দেখছিসনা ওরা কতদূর থেকে এসেছে আগে ওদের fresh হতে দে তারপর না হয় তোরা গল্প করিস যা এখন।
নিতু রিয়া কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
আমি কোন কথা বললাম না আর উনিও কিছু বললেন না।জিসান ভাইয়া উনাকে রেখে চলে গেলেন।উনি এখনও দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে আমি সেটা দেখে বললাম
ইশাঃ কি হলো দাড়িয়ে আছেন কেনো ভেতরে আসুন
শানঃ আসছি তবে তোমরা এত সময় কি বলাবলি করছিলে
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম এই রে উনি শুনে ফেলেনি তো ইস এই মেয়ে দুটো না। আমি এসব ভাবছিলাম।ঠিক তখন উনি আমার সামনে এসে বললেন
শানঃhello,,,, কি কোথায় হারিয়ে গেছো
আমি উনার কথায় চমকে গেলাম।দেখলাম উনি একদম আমার কাছে।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ কিছু না আপনি fresh হয়ে নিন
বলেই চলে যেতে নিলে উনি আমার হাত ধরে ফেললেন আর বললেন
শানঃ কোথায় যাচ্ছো
ইশাঃ মায়ের কাছে
শানঃ কেনো এখানে থাকলে কি খুব সমস্যা
ইশাঃ না আসলে আসার পর থেকে মায়ের সাথে কথা হয় নি তো তাই
শানঃ ও ঠিকাছে যাও তবে তাড়াতাড়ি চলে আসবে
ইশাঃ হুম
উনি আমার হাতটা ছেড়ে দিলেন। আমি মায়ের কাছে চলে গেলাম।কিছু সময় পর মায়ের সাথে কথা বলার পর হঠাৎ আমার মনে পড়লো।উনার জামা কাপড় তো ব্যাগে উনি কি সে সব খুজে পেয়েছেন নাকি। ভেবেই আমি রুমের দিকে পা বাড়ালাম। রুমে ঢুকে আমি দেখলাম উনি এখনও washroom থেকে বের হন নি। তাই আমি ব্যাগ খুলে উনার জন্য একটা গেঞ্জি আর টাউজার বের করে রাখতেই হঠাৎ washroom এর দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। আমি সাইডে ঘুড়তেই আমি হা হয়ে গেলাম কারন উনার পরনে শুধু একটা তাওয়াল এটা দেখে আমি লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিলাম।আর বললাম
ইশাঃ এ……এ…..এখানে আপনার জামা কাপড় রাখা আছে( একটু তুতলিয়ে)
বলেই চলে যেতে নিলেই
শানঃ দাড়াও!!!
উনার ডাকে আমি থেমে গেলাম। উনি আসতে আসতে আমার কাছে আসতে লাগলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম যে উনি আমার খুব কাছে চলে এসেছেন। কার উনি কাছে আসলেই কেনে জানি না আমার হার্টবিট বেড়ে যায় এটা আমি আগেও অনুভব করেছি আর আজ তো একটু বেশি তার প্রভাব পাচ্ছি ।উনি আমার বাম হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরাতেই আমি আমার চোখ বন্ধ করে ফেললাম।উনি সেটা দেখে ভ্রু কুচকে বললেন
শানঃ কি হলো চোখ বন্ধ করে রেখেছো কেনো
আমি চোখ বন্ধ রেখেই বললাম
ইশাঃ আমাকে যেতে দিন আর please আপনি change করে নিন
আমার কথার কোন পাল্টা জবাব আমি পেলাম না। হঠাৎ করে দরজা আটকানো আওয়াজ পেলাম।আমি ফট করে চোখ খুলে দেখলাম।উনি আমার সামনে নেই। পিছনে ঘুরতেই দেখলাম উনি দরজা আটকে দিয়েছেন।সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি করছেন কি দরজা আটকাচ্ছেন কেনো
উনি আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললেন
শানঃ তুমি তো বললে change করতে তো দরজা খুলে change করবো (একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে)
উনাকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি পিছতে পিছতে বললাম
ইশাঃ মানে
শানঃ তোমার সব মানের উওর আমার কাছে নেই।
আমি পিছতে পিছতে দেয়ালে সাথে ঠেকে গেলাম। উনি আমার খুব কাছে চলে আসলেন আমি চলে নিলেই উনি উনার দুই হাত দেয়ালে রাখলেন আমি উনার দুই হাতের মাঝে ফেসে গেলাম। এবার আর আমার পালাবার কোন রাস্তা উনি রাখলেন না।আমরা দুজন দুই জনার দিকে তাকিয়ে আছি।আমি বুঝতে পারছি না উনি কি করতে চাচ্ছেন।গলা আমার শুকিয়ে যাচ্ছে।উনি উনার মুখ আমার দিকে এগিয়ে আনছেন সেটা দেখে আমার চোখ আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো।
কিছুসময় দুজনে এভাবেই রইলাম।উনার গরম নিশ্বাস আমার মুখে পরছে।তাতেই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে লাগলো।হাত পা কাঁপতে আরম্ভ করলো।
ইশাকে এভাবে কাঁপতে দেখে শান শব্দ ছাড়া হেসে উঠলো। ইশার থেকে একপা পিছিয়ে নিজের ভেজা চুলে হাত দিয়ে ঝাঁকাতেই চুলে জমে থাকা পানি গুলো ইশার নাক মুখে পড়লো। হঠাৎ এভাবে ইশার মুখে পানি পড়াতে ইশা চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো।সেটা দেখে শান তার হাসি আর চাপিয়ে রাখতে পারলো না জোরে জোরে হাসতে লাগলো
হঠাৎ আমার নাক মুখে পানির ছিটে পড়তেই আমি চমকে উঠলাম।আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমাদের ছাদ আবার ফুটো হয়ে যায় নিতো। ঠিক তখন উনার হাসির আওয়াজ আমার কানে ভেসে আসলো।আমি চোখ খুলে দেখলাম উনি হাসেই চলেছে।আমি উনার হাসির দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম।একজন মানুষকে হাসলে যে এত সুন্দর লাগতে পারে সেটা আমার জানাছিলো।উনি হাসতে হাসতে বিছানায় বসে পড়লে।আমি উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]
চলবে…..