ভালোবাসি সমুদ্র পর্ব-০১

0
942

#ভালোবাসি_সমুদ্র
#পর্ব_1
#মৌসুমি

বয়সটা সবে মাত্র তেরো।শুরু হয়েছিল আবেগের বয়স ,ভালো লাগার বয়স।
দিনটা ছিল রবিবার ছুটির দিন।বাজারের এক মোড়ে‌‌‌ দেখা হয় তার সাথে ভালোলেগেছিল খুব।যদিও আমার বয়সটা ছিল আবেগের কিন্তু সে ছিল যথেষ্ট ম্যাচিউর তাই হয়তো আবেগ কে পশ্রয় দেয়নি।রোজই তাকে একটা নজর দেখার জন্য বাজারের সেই রাস্তার মোড়ে যেতাম।তাকে দেখলে মনের মাঝে এক প্রশান্তির হাওয়া বইত চারদিকে সব কিছুই রঙিন লাগত।আমার কিশোরী হৃদয়ে ভালোলাগার হাওয়া লাগানোর মানুষটার নাম ছিল সমুদ্র।
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে সে আহামরি সুন্দর ও ছিলনা কিন্তু আমার চোখে দেখা সেরা পুরুষ ছিল সে।
এইভাবে কয়েকমাস কেটে যায় কিন্তু তার প্রতি আমার অনুভূতি শেষ হয় না।
আমার নাম মিষ্টি সবে মাত্র ক্লাস এইটে পড়ি।মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে বাবা অসুস্থ মায়ের উপর সংসার চলত।গায়ের রং শ্যামবর্ন ছিল অনেকে আবার ফর্সা ও বলত।একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলাম কিন্তু তার কথা ভেবে পড়াশোনায় ঠিক করে মন দিতে পারতাম না খালি ইচ্ছে হতো সারাদিন ও কে দেখি।মা হয়তো কিছু বুঝতে পেরেছিল তাই হয়তো বর্তমান বয়স আর যুগের কথা ভেবে সাবধান করেছিল বারবার।
মায়ের এই কথায় আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ি।তাই সিদ্ধান্ত নিই তাকে মনের সব কথা খুলে বলব।করেও ফেলেছিলাম সেই ভয়ংকর কাজটা।
দিনটা ছিল সরস্বতী পুজো একথায় বাঙালির ভালোবাসার দিন খুব কষ্ট করে তার পছন্দের রংটা জানতে পেরেছিলাম।
একটা নীল শাড়ি পড়ে আমার বাগানের গোলাপ গাছ থেকে একগুচ্ছ গোলাপ নিয়েছিলাম তার জন্য।সে আর পাচটা ছেলের মতো দিনটাকে উপভোগ করছিল না সে তো ছিল তার ভবিষৎ এর চিন্তায়।আর পাচটা দিনের মতোই সেদিন ও সে একটা সাদা শার্ট জিন্স পড়ে মোড়ের ওষুধের দোকানে কাজ করছিল।আমাকে দেখে হয়তো আন্দাজ করতে পারে কিছু বলতে এসেছি‌ তাই হয়তো সে বেরিয়ে আসে এবং আমাকে অবাক করে দিয়ে হাতের ঈশারায় পাশের গলিতে যেতে বলে। আমার খুশি তখন আকাশ স্পর্শ করার মতো ভেবেছিলাম হয়তো সে ও আমার মতো অনুভূতির সাাগরে ভাসছে।তাই খুব সাহষ করে সবটা বলেই বসেছিলাম।তারপর সমুদ্র আমাকে বলল,”দেখো মিষ্টি আমি তোমার চাহনি দেখেই সব বুঝতে পেরেছিলাম তুমি হয়তো ভাবছো তাহলে কেন এতদিন কিছু বলিনি ।বলিনি কারন আমার মনে হয়েছিল আবেগের বয়স তোমার হয়তো দুদিন পর সব ভুলে যাবা কিন্তু তোমার পাগলামি দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।আমি চাইলেই হয়তো তোমার সরলতার সুযোগ নিতে পারতাম কিন্তু কেন নেব আমি নারী জাতীকে সম্মান করি।আমাকে যে গর্ভে ধারন করেছে সেও একজন মেয়ে।তাই তাদের সম্মান করতে না পারলেও অসম্মান কখনো করিনা।তাই তোমাকে ভালো ভাবে বলছি বাড়ি যাও গিয়ে পড়াশোনা করো কী বা বয়স তোমার শুনেছি তোমার বাবা অসুস্থ মায়ের উপর সংসার জীবনে কিছু করতে হবে তো।
তখন আমি আলতো ভাবে ঘাড় নাড়লাম আর বললাম আমি তো তোমাকে ভালোবাসি সারাদিন তোমাকে ছাড়া কিছু মনে আসেনা।তুমি আমাকে প্লিজ ফিরিয়ে দিও না এবং তার হাত চেপে ধরলে সে এক ভয়ংকর কাজ করে ফেলে আমাকে একটা চড় মারে গালে।
চড় খেয়ে রাগে ,অভিমানে কষ্টে আর ফিরে তাকায়নি তার দিকে চলে এসেছিলাম সেখান থেকে আর ফুলগুলো তার পায়ের সামনে হয়তো সেইভাবে পড়েছিল।
চলবে……….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে