নীল ডায়েরির সেই মেয়েটি পর্ব-১২

0
399

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ১২

🍁

ফোন কেটে আঁধার ভ্রুকুঁচকে তার বাবার দিকে তাকায়!কিন্তু তারেক চৌধুরীর চোখ মুখ দেখে অবাক হয় আঁধার, তার হাসি-খুশি বাবাটা আজকে মুখ গোমড়া করে কি যেনো ভাবছে।

আঁধারের মনে প্রশ্ন জাগে, তার বাবা তো এমন নয়! সিরিয়াস ব্যাপারেও কখন ও সে তার বাবার মুখ গোমড়া দেখেনি, ছোট থেকেই সে আর আদর তার বাবা মায়ের কাছে বন্ধুর মতো আচরণ পেয়েছে। তাই তার বাবা মায়ের সব ব্যাপারই তাদের জানা!আঁধার কৌতুহল দমিয়ে না রাখতে পেরেই একপ্রকার বাধ্য হয়েই জিজ্ঞেস করে,,

–‘এনি প্রব্লেম আব্বু?’ তোমায় অনেক চিন্তিত দেখাচ্ছে যে?

ছেলের কথায় অসহায় দৃষ্টিতে তার দিকে কিছুক্ষণ তাকান তারেক চৌধুরী, আঁধার তার বাবার অসহায় দৃষ্টি দেখে ভড়কায় আর মনে মনে ভাবে সিরিয়াস ব্যাপার হয়তো!

–‘কি হলো আব্বু বলো?’ আমার সাথেও সেয়ার করবে না!

–‘বাপরে তোর মা মনে হয় প্রেমে পড়েছে!’ আমাকে এখন আর তার ভালো লাগে না, আমার কথার উত্তর দেওয়ার ও প্রয়জোন মনে করে না তোর মা।

আঁধার থমকায়, হতবাক হয়,অবাক হয় কিন্তু পরক্ষণেই ফিঁক করে হেসে দেয়।আদরের ছেলের এমন হাসি দেখে তারেক চৌধুরীর গাঁ জ্বলে যায়, রাগ হয় কিন্তু কিছু বলে না।

কারণ তার এই আদরের ছেলেটাই এখন একমাত্র ভরসা, তিনি যদি কিছু বলেন পরে যদি তাকে আর সাহায্য না করে তাই তিনি চুপ হয়ে যান,একেবারে মুখে কুলুপ এঁটে চুপকরে থাকেন।

আঁধার হাসি থামিয়ে সিরিয়াস ভঙ্গিতে তার বাবার দিকে তাকায়, তার বাবার আঁধার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ফিক করে হেসে দেয়, এবারের হাসিটা একটু জোড়েই হয়ে যায়।তাই তো রেস্টুরেন্টের সবাই আঁধার ও তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে।

তারেক চৌধুরী এবার বিরক্ত চোখে ছেলের দিকে তাকায়, আঁধার তার বাবার দৃষ্টি দেখেই বুঝতে পারে যে তার বর্তমানের হাসিটা তার বাবার পছন্দ হচ্ছে না। অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামিয়ে আঁধার এবার সিরিয়াস হওয়ার ভান করেই বলে,,

–‘বলো আব্বু কে সেই ছেলে যার এতো বড় সাহস তাশরিফ আঁধার চৌধুরীর মায়ের সাথে প্রেম করে?’

তারেক চৌধুরী এবার অসহায় কন্ঠে বলেন,,

–‘জানি না রে বাপ, তাই তো তোর কাছে আসলাম সমাধান নিতে!’

আঁধারের হাসি পেলেও আর হাসে না, অনেক কষ্টে হাসি আটকিয়ে মুখটা গম্ভীর করার চেষ্টায় আছে বেচারা। তবুও কোন রকম বলে,,

–‘আচ্ছা মানলাম, তা আম্মু কি নিজে থেকে তোমায় বলেছে সে প্রেমে পড়েছে? ‘

আঁধারের কথাশুনে তারেক চৌধুরী কিছুটা নড়েচড়ে বসে ব’লেন,,,

–‘তা বলেনি ঠিকই কিন্তু আমি বুঝতে পারছি, একসময় তো আমিও তো প্রেম করেছি।’

–‘তা করেছ আবার তোমার প্রেমিকার বিয়েও তো হয়ে গিয়েছে, বেচারির এখন ২ টা সন্তান আহা!’

কিছুটা দুঃখ প্রকাশ করে বলে আঁধার,,

তারেক চৌধুরী ভ্রুকুঁচকে বলে,,,

–‘আমি তোর বাপ সেটা কি তুই ভুলে গেছিস,বাপেরই সামনে তার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে মজা করছিস?’

–‘হুর কি যে বলো না, তুমি তো আমার বন্ধু তাই না!’

চোখ টিপ দিয়ে বলে আঁধার,,

তারেক চৌধুরী চোখ রাঙ্গিয়ে তাকায় ছেলের দিকে,,

–‘ও হো আব্বু আমি তো ভূলেই গেছিলাম তোমার গার্লফ্রেন্ড তো আবার আমার আম্মু নিজেই।’

মজার ছলে কথাটি বলেই হেসে দেয় আঁধার, তারেক চৌধুরী নিজেও হেসে ফেলে।তার এই এক ছেলে যাকে সবাই গম্ভীর, রাগী, ও বদ মেজাজি বলেই চিনে শুধু মাত্র এই বাবা-মায়ের কাছে ও বন্ধুদের কাছেই সে ফাজিলের ও বদের হাড্ডি।

কিন্তু ছোট থেকে বড় হয়েছে আঁধার তার তেমন কোন বন্ধু বান্ধব ও নেই এই হাতে গণা কয়েকজন বাদে।সবার সাথে সহজে মিশতে পারলেও কোন এক কারণে মেশে না আঁধার, সে কারণ তারেক চৌধুরী ও আঁকলিমা চৌধুরী ও এতোদিন খুঁজে বের করতে পারেনি।

আঁধার যেমন ঠিক আদর তার বিপরীত চঞ্চল, সে সবার সাথেই চঞ্চলতা করে। তার বন্ধু ও অনেক, কিন্তু আঁধারের মতো প্রকৃত বন্ধু পায়নি এখন অব্দি সে। কিন্তু দুই ভাই দু’জনের জান।

তারেক চৌধুরীকে গভীর ভাবে কিছু একটা ভাবতে দেখেই আঁধার আবার ভ্রুকুঁচকায়।

–‘আব্বু? ‘

ভাবনার মাঝেই আঁধারের গলা পেয়ে হকচকিয়ে যায় তারেক চৌধুরী,,,

–‘হুম হুম বল!’

–‘এতো গভীর ভাবে কি ভাবছো? ‘

আঁধারের প্রশ্নে তারেক চৌধুরী চোখ তুলে তাকায় তার ছেলের দিকে আর বলেন,,

–‘তোদের দুই ভাইয়ের কথা ভাবছিলাম!’ আগে তোরা একে অপরকে ছাড়া বুঝতি না এখন তোরা কেউ কারো সাথে কথায় বলিস না।

আঁধার তার বাবার কথার মানে ভালো করেই বুঝতে পারে কিন্তু ঐ প্রসঙ্গে কথা বলতে চায় না এখন সে,,

–‘তুমি বললে না তো তোমার বউয়ের প্রেমিকের কথা কিভাবে জানলে?’

আঁধারকে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে দেখে তারেক চৌধুরী ভালোই বুঝতে পারলেন যে তার ছেলে এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ এখন তাই তিনিও ছেলের প্রশ্নের উত্তর দিলেন,,,

–‘আমি সিড়ি দিয়ে নামছিলাম তখন তোমার মা নিচে একা একা দাড়িয়ে হাসছিল, লজ্জা পাচ্ছিল আমি প্রশ্ন করাতেই মুখের উপর ঝামটা মেরে চলে গেলো!’

আঁধার তার বাবার দুঃখী দুঃখী ভাবে কথাগুলো শুনে নিজেও কিছুটা দুঃখী হবার ভান করে বলে,,

–‘ আহা আব্বু আম্মুটা তোমার সাথে খুব অন্যায় করে ফেলছে তাই না!’ ইসস,

আঁধারের মজার ছলে বলা কথাটি শুনে তারেক চৌধুরী শক্ত চোখ মুখ করে তাকায় আঁধারের দিকে।

–‘উফফ আব্বু আমি ভয় পেয়ে যাচ্ছি তো এভাবে কেউ তাকায় নাকি,যাই হোক শুনো আম্মু হয়তো তোমার কথায় ভেবে লজ্জা পাচ্ছিল। ‘ আম্মুর ব্যাপারে আগের প্রেমিকের মতো সন্দেহ করা বন্ধ করো, আম্মু শুনলে তোমার খবর আছে!

আঁধার কিছুটা ভয় পাওয়ার ভঙ্গিতে বলে উক্ত কথাগুলো।

তারেক চৌধুরী ভাবে কিছুক্ষণ তারপর আঁধারকে বলে,,

–‘খেয়ে নে এবার, ভেবে দেখবো ব্যাপারটা আমি!’

আঁধারও আর কিছু বলে না চুপচাপ খেয়ে নেয়। ডিনার শেষে বাবা ছেলে মিলে গল্প করতে করতেই বাসায় চলে আসে, তখন রাত ১১টা বাজে ৪৫ মিনিট।

কলিং বেল বাজাতেই কাজের মেয়ে মিলি এসে দরজা খুলে দেয়।যদিও তাকে কাজের মেয়ের মতো কেউ ট্রিট করে না, পরিবারের সদস্যই মনে করে বাকি সবাই।

সে গ্রামে গেছিলো হয়তো আঁধাররা বের হয়ে যাওয়ার পর পরই চলে এসেছে তাই এখন কেবল দেখলো।আঁধার সামান্য হাসে মিলিকে দেখে, তারেক চৌধুরী ও হেসে মিলিকে জিজ্ঞেস করে,,

–‘মিলি মা কেমন আছিস?’ এতোদিন পর বুঝি আমাদের কথা মনে পড়লো?

–‘ভালা আছি আব্বা, আফনে কেমন আছেন?’

বোকা হেসে উত্তর দেয় মিলি।

–‘আমি তো অনেক ভালো আছি,বাকি সবাই কই?’

–‘ঘরে আছে আব্বা, আমি আফনাদের খাবার দিমু?’

–‘আরে না তোকে কষ্ট করতে হবে না আমরা খেয়ে এসেছি।’ তুই ঘুমা গিয়ে।

মিলি মাথা নেড়ে চলে যায়,আঁধার ও তারেক চৌধুরী ও নিজ নিজ কক্ষে চলে যায়।

আঁধার রুমে ঢুকতেই চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখে ভ্রুকুঁচকায়।বেডের দিকে চোখ যেতেই পুরো বেড ফাঁকা দেখে কুঁচকানো ভ্রুদ্বয় আরও একটু কুঁচকে নেয়।

লাইট জ্বালিয়ে পুরো ঘরে চোখ বুলায়, কিন্তু আরোহীর দেখা পায় না। তাই বেলকনিতে, ওয়াশরুমে সবখানে দেখে নেয় কিন্তু না তার বউটা কোথাও নেই। অন্যরুমে চলে যায়নি তো ভেবেই আঁধারের হঠাৎ করেই রাগ হয়। তাই আগে ফ্রেস হতে চলে যায়।

২০মিনিট ধরে ফ্রেস হয় আঁধার, শুধু ফ্রেসই হয়নি রাগটাকে ও কন্ট্রোল করে এসেছে সে। কিন্তু বাহিরে এসে আরোহীকে না দেখেই রাগটা আবার মাথা চড়া দিয়ে ওঠে।

হনহনিয়ে রুমের বাহিরে চলে যায় আরোহীকে দেখার উদ্দেশ্যে।আগে তার মা-বাবার রুমে দেখে কিন্তু না আরোহী নেই, আদরের রুমে তো থাকবে না সিয়র,তাই গেস্ট রুমগুলোতে দেখে কিন্তু না আরোহী নেই।

আঁধার সেখানেই দাড়িয়ে যায়, মনে মনে ভাবে তখনার ঘটনার জন্য আবার চলে যায়নি তো! নিজেই নিজেকে হাজারটা গালি দেয় আঁধার কি দরকার ছিল তখন ঝোঁকের বসে ওইসব করার,এখন যদি আরোহী তাকে খারাপ ভাবে আরও দূরে সরে যায়।

নিজের উপরই বিরক্ত হয় আঁধার, এতো দিনের পরিকল্পনা কি তাহলে তার নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারার জন্য শেষ হয়ে যাবে।না সেটা তো আঁধার হতে দিতে পারে না। এতো কষ্টের ফল এক নিমিষে শেষ হয়ে যাবে।

আঁধারের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়, অস্থিরতা এসে গ্রাস করছে তাকে, কি করবে কিছুই মাথায় আসছে না।আচ্ছা আরু কি তাহলে আমার সাথে আর সংসার করবে না, একটু ছোঁয়াতেই যদি চলে যেতে পারে তাহলে না না এসব কি ভাবছি আমি!

না চাইলেও ওকে আমার সাথে থাকতে হবে। নিজে নিজে কথাগুলো ভাবতেই হঠাৎ আঁধারের আলিশার ঘরের কথা মনে পড়ে,একবার কি যাবে,কিন্তু আলিশা তো আরোহীকে সহ্য করতে পারে না তাহলে ওর কাছে কি করে থাকবে, পরক্ষনেই আবার ভাবে একবার দেখে আসতেই বা কি সমস্যা!

না চাইতেও আলিশার রুমের সামনে চলে যায় আঁধার, দরজাটা খানিকটা চাপানো, অনেক দ্বিধা নিয়ে হালকা করে ধাক্কা দেয় এতেই যেনো পুরোটা খুলে যায় দরজাটা।নীল ড্রিম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দুই রমনী দুদিকে ফিরে শুয়ে আছে। আঁধার হাফ ছেড়ে বাঁচে, আরোহী যায়নি তাহলে!

কিন্তু আলিশা আর আরোহী একসাথে কি করে থাকতে পারে,তারা তো কেউ কাউকে দেখতেই পারেনা!অনেক প্রশ্ন জমে আধারের মনে কিন্তু এখন আরোহীকে নিয়ে যাবে কি করে সেটা ভাবে।ধির পায়ে এগিয়ে যায় বেডের বাম পাশে, আরোহীর চোখ মুখ দেখেই আঁধার অবাক হয়!

মনে হচ্ছে অনেক সময় ধরে কান্না করার ফলে এমনটা হয়েছে, কিন্তু কাঁদবে কি কারণে! নিজের মনের প্রশ্নগুলোকে আটকিয়ে রেখে আসতে করে আরোহীকে কোলে তুলে নেয় আঁধার।

আরোহী খানিকটা নড়েচড়ে উঠে আবার ঘুমিয়ে যায়,এতে সস্থির নিশ্বাস ছাড়ে আঁধার। না জানি কোলে দেখে আবার কি ভাবতো! দরজাটা হালকা করে চাপিয়ে দিয়ে আরোহীকে নিয়ে চলে যায় আঁধার। আলিশা ফট করে চোখ খুলে, আঁধারকে যেতে দেখে রহস্যময় হাসি দিয়ে ব’লে উঠে,,

–‘কাল থেকে দেখো কি কি হয় আঁধার।’

বলেই চোখ মুখ করে করে দরজার দিকে তাকায়।

আরোহীকে রুমে নিয়ে এসে এমন ভাবে শুইয়ে দেয় যেনো একটু ও ব্যাথা না পায় সে।আরোহী ঘুমে বুদ হয়েই আছে দেখে রুমের লাইট বন্ধ করে আরোহীর পাশে শুয়ে পড়ে। কিন্তু ঘুমায় না, আরোহীকে বুকের সাথে চেপে ধরে বলে,,

–‘তুমি আমার অনেক কষ্টে পাওয়া ফল আরু, ভুলেও কখনো আমার বিরুদ্ধে যেয়ো না! ‘ আমি তোমায় হারাতে পারবো না। তোমাকে পাওয়ার জন্য আমার অনেক কিছু করতে হয়েছে,যেসব আমার ব্যাক্তিত্বের সাথে যায় না!

বলেই চোখ বুজে নেয় সে।আরোহী হয়তো জেগে থাকলে আজকে অনেক কিছুর উত্তর পেয়ে যেতো , কিন্তু ঘুমে বুদ হওয়া আরোহী বুঝতেই পারলো না তার অগচরে কতো কি হচ্ছে তার সাথে।

মাঝরাতে অসস্তিতে আরোহীর ঘুম ভেঙে যায়, মনে হয় কেউ একজন শক্ত করে চেপে ধরে আছে আরোহীকে।চোখ মুখে কারো গরম নিশ্বাস নির্বিঘ্নে আছড়ে পড়ছে। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে তার, ঘুম ঘুম চোখে অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকিয়ে আঁধারের ক্লান্ত মুখশ্রী দেখতে পায়।একদম বাচ্চাদপর মতো করে ঠোঁট উল্টে ঘুমাচ্ছে সে। আঁধারকে দেখেই আরোহীর আদুরে ভাব চলে আসে,,,

কিন্তু আরোহীকে শক্ত করে চেপে ধরার কারণে নড়তে ও পারছে না আরোহী! অনেক কষ্ট হাতটা বের করতে সক্ষম হয় সে, আঁধারকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হয় না সে। আঁধারের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে দেয় কিন্তু আঁধার সে আদৌও কি বুঝতে পারছে কিছু, সে তো গভীর ঘুমে মগ্ন!

একসময় আরোহী নিজেই হাপিয়ে যায়, ঘনঘন নিশ্বাস নিচ্ছে সে, মনে হয় আজকে আমি দম বন্ধ হয়েই মরে যাব। বিরবির করতে করতে আরোহীর মাথায় একটা বুদ্ধি চলে আসে, মুখে হাসি ফুটিয়ে আঁধারের পুরো মুখে তার হাত দিয়ে ছুয়ে দিতে শুরু করে। একসময় ধিরে ধিরে আঁধারের গলার দিকে মুখটা নিয়ে যায়,,,

ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠে আঁধার, গলায় হাত বুলিয়ে চোখ খুলে আরোহীর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকায়।তার ঘুম অনেক আগেই ভেঙ্গেছে, আরোহী কি করে সেটা দেখার জন্যই মূলত সে ঘুমের ভান করে ছিলো। কিন্তু আরোহী যে এভাবে তাকে কামড়াবে সেটা স্বপ্নেও ভাবেনি সে।

আরোহীকে মিটমিট করে হাসতে দেখে রাগী দৃষ্টিতে তাকায় আরোহীর দিকে সে।আরোহী এবার চোখ মুখ কুঁচকে বলে,,,

–‘ছেড়ে দিন এবার।’ এভাবে কেউ ধরে দম বন্ধ করে মেরে ফেলতে চান নাকি!

আঁধারের মাথায় শয়তানী বুদ্ধি চলে আসে আরোহীর কথা শুনে,,,

আরোহী আঁধারকে বাঁকা হাসতে দেখে অবাক হয়, কিন্তু আঁধারকে তার দিকে মুখ এগিয়ে নিয়ে আসতে দেখে আঁতকে উঠে।কিন্তু ততোক্ষণে আঁধার তার কাজ শেষ করে দিয়েছে। ব্যাথায় আরোহীর চোখ মুখ নীল হয়ে যায়,,,

আঁধার বাঁকা হাসি দিয়ে সরে এসে বলে,,,

–‘কি হলো সুইটহার্ট, একটু কামড়েই দম শেষ তোমার!’

আরোহী তখনও গলায় হাত বুলচ্ছে, আঁধারের এবার একটু মায়া হয় তাই আরোহীর হাত সরিয়ে ফট করে একটা চুমু দিয়ে দেয় তার কামড় দেওয়া জায়গাতে। আরোহী কেঁপে উঠে, আঁধার ফট করে সরে এসে আরোহীর মুখের দিকে তাকায়।আরোহীকে লজ্জা পেতে দেখে বলে,,

–‘ঘুমাও নাহলে এই প্রক্রিয়ায় চলবে সারারাত!’

আরোহী চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ঘুমের ভান করে পড়ে থাকে।আঁধার আরোহীর কান্ডে হেসে আবার আগের মতো জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে নেয়। তার হার্ট-বিট অনেক ফাস্ট চলাচল করছে, মনের মধ্যে হাজারো অনুভূতিরা উঁকি দিচ্ছে কিন্তু আঁধার চায় না এখনই সেসব বাহিরে চলে আসুক। আরোহীকে আরও কিছুদিন সময় দিতে চায় সে, আরোহীর তার প্রতি অনুভূতিগুলো জানতে চায়!

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে