তবে ভালোবাসো কী পর্ব-০৯

0
620

#তবে_ভালোবাসো_কী
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ০৯

-আমি তাও আবার আপনার প্রেমে পরব! সিরিয়াসলি ভাই!

আরহাম কিছু বললো না ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দেয়। মাহানুরের বোরিং লাগছে। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে অকেজো ভঙ্গিতে বসে রইলো।

-আন্টি আঙ্কেলরা আমাদের সাথে আসলো না?

-তারা কাল বিকেলেই চলে গিয়েছে।

-সুনহেরা আপুও গিয়েছে?

-হুম।

-আপু না অসুস্থ ছিল? তাছাড়াও এই অবস্থায় এতো জার্নি করা উচিত নয়।

-আম্মু বলেছিল বাসায় থাকতে। কিন্তু সে গ্রামে যাবেই যাবে। তাই অনেক দেখে শুনে নিয়ে গিয়েছে তাকে।

-ওহহ!

-শুনো সেখানে মা বাবাকে আন্টি আঙ্কেল বলিও না। আমি যা বলি তাই বলিও

-ঠিক আছে।

চুপ হয়ে গেলো দু’জন। আরহাম কী বলবে খুঁজে পেলো না। তাই মাহানুর নিজেই বললো,

-খুলনায় কোথায় আপনাদের দাদার বাসা?

-খুলনা বাগেরহাট। চিনো?

মাহানুর মেকি হেসে না বোধ মাথা নারায়। বোতল নিয়ে পানি খেতে খেতে জিজ্ঞেস করে,

-আপনি আগেও গিয়েছেন সেখানে?

-হুম, সাত বছর আগে গিয়েছিলাম।

-অনেক আগে! আপনার দাদা-দাদি বেঁচে আছে? আর কে কে আছে সেখানে?

-আমার দাদা মারা গিয়েছে দাদি বেঁচে আছে। তাকে দেখলে তুমি আশ্চর্য হয়ে যাবে।

-কেনো কেনো?

-আমার দাদির বয়স ভালোই কিন্তু মাশাআল্লাহ সে এখনও অনেক স্ট্রং আর তেজি। বাসায় তার হুকুমই চলে।

-ওওওও! আর কে কে আছে?

-আমার বাবারা দুই ভাই তিন বোন। চাচা দেশেই থাকে তার পরিবার নিয়ে। আর বড় ফুপ্পি ও ছোট ফুপ্পি দেশে থাকে। মেজো ফুপ্পি আবার আমাদের মতো ঢাকার বাসিন্দা।

-ফুপ্পিরা বাবার বাসায়ই থাকে! বিয়ে হয়নি তাঁদের?

মাহানুরের কথায় তাজ্জব বনে যায় আরহাম। বিরক্তিকর দৃষ্টিতে মাহানুরের দিকে। রুক্ষ কণ্ঠে বলে,

-ছোট ফুপ্পির জামাই খারাপ ছিল তাই ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। এক মেয়েকে নিয়ে বাসায়ই থাকে। আর বড় ফুপ্পিকে পাশের গ্রামেই বিয়ে দিয়েছিল। সেই সুবাদে বড় ফুপ্পিও গ্রামেই থাকে।

-ওহ এই কথা!

-হুম।

পুনরায় নিশ্চুপ হয়ে যায় দুইজন। আরহাম মাথা ঘুরিয়ে দেখে মাহানুর জ্বালানার সাথে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে। মৃদু হেসে মাহানুরের নেকাব নামিয়ে দিলো। বোরখায় অপরূপ লাগছে মাহানুরকে আরহামের নজরে।

আর কিছুক্ষন পরই তারা পৌঁছে যাবে। রাস্তায় আরহাম এক জায়গায় গাড়ি থামিয়ে তেল ভরে নিয়েছিল। তারপর আবারও গাড়ি চলতে থাকে বড় রাস্তা দিয়ে। মাহানুর কয়েক ঘন্টা ধরে ঘুমিয়ে আছে। আরহামও তাকে বিরক্ত করেনি। একবারে পৌঁছানোর পরই ডাক দেবে। অবশেষে গাড়ি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যায়। মাহানুরকে একবার ডাক দেওয়ার সাথে সাথেই চোখ খুলে ফেলে। গাড়ির দরজা খুলে বাহিরে বেরিয়ে আসে। মাহানুর ভ্রু কুঁচকে বলে,

-এটা গ্রাম?

আরহাম স্মিত হাসে। মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। দুইজনের ব্যাগ হাতে নিয়ে বলে,

-আমার দাদি বাড়িটা শহর সাইডে পরেছে তাই এখানটা সচরাচর গ্রামের মতো লাগে না।

-দুর! আমি ভাবলাম গ্রামীণ জায়গা হবে!

-সমস্যা নেই তোমাকে কাল বড় ফুপ্পিদের বাসায় নিয়ে যাবো নে। সেখানটা পুরো গ্রামীণ অঞ্চল।

-ঠিক আছে।

আরহাম সামনে বড় আকারে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে। মাহানুরও আরহামের পিছন পিছন যায়। খেলার মাঠের মতো সুবিশাল মাটির উঠান। উঠানের দুই সাইডে টিনসিট্ কয়েকটা ঘর আর মধ্যে এক তালার একটি দালান। মাহানুর আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছে। এক ঝাঁক মানুষ বেরিয়ে আসে দালান থেকে। মাহানুর ভীত চোখে সবটা পরোক্ষ করছে। একজন বৃদ্ধ মহিলা জাপ্টে ধরে আরহামকে। ইমোশনাল হয়ে কান্না করতে থাকে। মাহানুর বুঝলো ইনিই হয়তো আরহামের দাদি। বৃদ্ধ মহিলাটি কান্না করতে করতে বলে,

-দাদিমারে তো ভুইল্লাই(ভুলে) গেসত! কয় বছর পর তোর পা পরলো এই বাড়িতে মনে আছে? এই বুড়িডা যে তোর আশায় বইয়া থাহে একবারও হেডা খেয়াল আছে তোর?

-এতো ইমোশনাল হও কেনো দাদিমা! এখন এসেছি না একদম তোমাকে জ্বালিয়েই যাবো।

-আইচ্ছা জ্বালাইস।

আরহামের মা জিয়া এগিয়ে যায় মাহানুরের কাছে। মাহানুরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,

-মা কোনো অসুবিধা হয়নি তো আসতে?

-না মা।

জহুরি দৃষ্টিতে আরহামের দাদি মাহানুরের দিকে তাকায়। মুখ বাঁকিয়ে কিছু না বলেই আরহামকে নিয়ে ভিতরে চলে যায়। জিয়া মাহানুরকেও ভিতরে নিয়ে যায়। সকল অপরিচিত মুখ দেখে একটু নারভাস ফীল করে মাহানুর। জিয়া সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,

-আমার ছেলের বউ বড় সফর দিয়ে এসেছে। আগে একটু বিশ্রাম করে নেক তারপর সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো।

_______________🖤

-সাজিয়া আপু, ও সাজিয়া আপু?

চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে সাজিয়া নামক মেয়েটি। ছাদে বসে এক মনে পায়ে আলতা লাগাচ্ছিল সে। হঠাৎই পিছনের থেকে আচমকা নিজের নাম শুনে ভড়কে গিয়ে আলতা লেপ্টে গেলো পায়ের পাতার চারপাশ। রাগে ধমকে উঠলো সাজিয়া। সামনে দাঁড়ানো রাত্রী ভয়ে একটু দূরে যেয়ে দাঁড়ালো। সাজিয়া চিৎকার করে তাকে বলে,

-দিলি তো আমার সখের আলতা নষ্ট করে! এবার আমার পা সুন্দর দেখাবে কিভাবে?

রাত্রী নবজাতক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। একবার সাজিয়াকে দেখছে তো আরেকবার সাজিয়ার পা দেখছে। আমতা আমতা করে বলে,

-আফু আরহাম ভাই আইইয়া পরছে। এডা কইতেই আইছিলাম।

হঠাৎই সাজিয়ার রাগী মুখ খুশিতে চকচক হয়ে উঠে। আলতায় কৌঠা নিচে ফেলে উত্তেজিত হয়ে উঠে দাঁড়ায়। প্রফুল্ল হয়ে জিজ্ঞেস করে,

-মাত্রই এসেছে?

-হো। অহন বিশ্রাম করতে ঘরের ভিতরে গেছে। ভাবিও আইছে।

-দেখেছিস উনার বউকে?

-না বুরখা(বোরখা) পরা আছিলো।

-কী বলিস! শহুরের মেয়ে আবার বোরখা পরে এসেছে! চল গিয়ে দেখি।

-চলো।

গেস্ট রুমে এসে হাতের ব্যাগ গুলো কিনারে রাখে আরহাম। ক্লান্ত হয়ে সোফায় বসে পরে। জিয়া মাহানুরকে রুমে এনে চলে যায়। যাওয়ার আগে বলে গিয়েছে কোনো দরকার পরলে ডাক দিতে। মাহানুর পরিহিত বোরখা খুলে ফেলে। শরীরে সুন্দর মতো ওড়না জড়িয়ে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পরে। আরহাম বসে বসে শুধু মাহানুরের কান্ড দেখছে। এই মেয়েকে সে আর ভালো করতে পারবে না! আরহাম মাহানুরকে তাড়া দিয়ে বলে,

-শুলে কেনো উঠো দ্রুত! এই ময়লা শরীর নিয়ে কেউ ঘুমায়? আগে ফ্রেশ হয়ে এসো তারপর নাক ঢেকে ঘুম দিও।

মাহানুরের মধ্যে কোনো হেলদেল হলো না। শুয়ে থেকেই ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলে,

-ভাই আমি এখন ঘুমাবো।

-তোমাকে কেউ না করছে না মাহানুর। আগে ফ্রেশ হয়ে এসো প্লিজ।

-যান তো আপনি মিয়া!

আরহাম এবার একটু রাগী কঠোর স্বরে মাহানুরকে বলে,

-আমি কী বলেছি? আগে ফ্রেশ হয়ে এসো দ্রুত।

মাহানুর অগ্নিদৃষ্টিতে আরহামের পানে তাকায়। উঠে দাঁড়িয়ে চোখ বড় বড় করে বলে,

-ঐ মিয়া রাগ কাকে দেখাচ্ছেন? আবার আমার সাথে উঁচু আওয়াজে কথা বললে এই ফ্যানের সাথেই ঝুঁলিয়ে রাখবো আপনাকে। বুঝতে পেরেছেন?

আরহাম শব্দ করে হেসে দিলো। পুনরায় সোফায় বসতে বসতে শয়তানি করে বলে,

-ওহ মাই গড আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম! বাট সো সরি মাহানুর খান এটা বলছি না আমি। অনেক বড় বড় গুন্ডাদের সাথে পার্সোনালি বোঝাপড়া হয়েছে আমার সেখানে আপনি দুধভাত মাত্র!

মাহানুর চোয়াল শক্ত করে বুকে দুই হাত গুঁজে দাঁড়ায়। ফুল অফ এটিটিউড কুইন! শান্ত ভঙ্গিতে বলে,

-এই দুধভাতই যদি আগামী তিনদিন আপনার নাকে দড়ি দিয়ে না ঘুরিয়েছে তাহলে আমিও বড় বড় গুন্ডাদের সাথে বোঝাপড়া করা মেজো আরহাম চৌধুরীর ওয়াইফ নই।

কথা শেষ করে দ্রুত জামা নিয়ে ওয়াশরুম চলে যায় মাহানুর। আরহাম একটা ঘোরের মধ্যে পরে গেলো। মাহানুর নিজেকে তার ওয়াইফ বলে পরিচয় দিয়েছে! আরহামের বিশ্বাসই হচ্ছে না। মাথার পিছনে দুইহাত দিতে আয়েস করে বসে সোফায়। ধীরে ধীরে বলে,

-আর কত নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে! নিজের প্রেমের জালে ফেলে এমনেও তো গলায় দড়ি দিয়ে ঘুরাচ্ছ! তাই তো আমি বলি, নারীই সুখ নারীই মরণ!

মাহানুর শাওয়ার নিয়ে আসার পর আরহাম ওয়াশরুম ঢুকে। মাহানুর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঝাঁড়ছে। আর আরহামকে ইচ্ছে মতো বকে যাচ্ছে।

-আসতে পারি?

আচমকা মেয়েলি কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে মহানুরে গলার থেকে ওড়না নিয়ে দ্রুত ঘোমটা দেয়। তারপর মিহি কণ্ঠে বলে,

-হ্যাঁ আসুন।

চারটে মেয়ে ঢুকে রুমের ভিতরে। চারজনের হাতেই বিভিন্ন ধরণের খাবারের ট্রে। সবাই এক এক করে টি টেবিলের ওপরে খাবার গুলো রেখে দেয়। একজন হয়তো কাজের মেয়ে ছিল। সে খাবার রেখেই চলে যায়। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন একটা শরবতের গ্লাস তুলে এগিয়ে দেয় মাহানুরের দিকে। সম্মান দিয়ে বলে,

-ভাবি এইযে নিন শরবতটা খেয়ে নিন। আমি আপনার চাচাতো ননদ সাজিয়া। আপনাদের খেদমত করতে আমাদের পাঠিয়েছে।

-ওহ আচ্ছা।

-আরেহ আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেনো বসুন ভাবি। নিন শরবত।

মাহানুর বিছানায় বসলো। শরবতে এক চুমুক দিয়ে বাকি দুইজনের সাথে পরিচিত হয়ে নিলো। শ্যামলা বর্ণের মেয়েটির নাম কেয়া। আরহাম এর বড় ফুপ্পির ছোট মেয়ে। আর পিচ্চি মেয়েটির নাম রাত্রী। আরহামের ছোট ফুপ্পির মেয়ে। মাহানুরের আন্দাজে সাজিয়া আর কেয়া মেয়ে দুটোর বয়স হয়তো ১৮ কী ১৯ হবে আর রাত্রীর নাকি ১২ বছর সে নিজেই বলেছে। মাহানুরের সাথে টুকটাক ভালোই কথা হয় তাঁদের। তবে সাজিয়ার কথা গুলো একটু বেশিই সুন্দর। মেয়েটা অবশ্য দেখতেও সুন্দরী।

-কোন ক্লাসে পড়ছো তুমি সাজিয়া?

-দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলাম। কলেজেও ভর্তি হয়েছি কিন্তু আব্বা আর পড়তে দিবে না। তাইতো বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দিলো।

মাহানুর চমকিত কণ্ঠে বলে,

-তোমারই বিয়ে?

-হ্যাঁ ভাবি।

-এতো জলদি কেনো বিয়ে দিচ্ছে? বয়স কত তোমার?

-কিছুদিন আগে ১৯ হলো।

-প্রেমের বিয়ে নাকি?

-না পরিবারের পছন্দে বিয়ে।

-এটা তো ঠিক নয়! তোমার পড়াশোনা করার ইচ্ছে থাকলে বলো? আমি আর তোমার ভাইয়া মিলে তোমাকে ঢাকায় নিয়ে যাই তারপর সেখানে পড়বে?

-না ভাবি পরিবারের খুশির কাছে নিজের স্বপ্ন কুরবানী দিয়ে দিয়েছি।

সাজিয়ার কথা শুনে অনেক খারাপ লাগে মাহানুরের। এই যুগে এসেও এইরকম পরিবার আছে! মাহানুরের ভাবনার মাঝেই ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে আরহাম। তৌয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বিছানায় তাকায় সে। হঠাৎই তার স্বাভাবিক মুখ গম্ভীর ও কঠোর হয়ে যায়। সেটা সাজিয়াকে দেখে হয়েছে এটা লক্ষ্য করে মাহানুর। সাজিয়া এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আরহামের দিকে। বহু বছরের তেষ্টা মেটাচ্ছে জানো!

-ভালো আছেন? (সাজিয়া)

আরহাম সোফায় বসতে বসতে গম্ভীর মুখে বলে,

-হুম। তুই ভালো আছিস? (আরহাম)

-ছিলাম না আছি। শরবতটা খেয়ে নিন দাদিমা পাঠিয়েছে। (সাজিয়া)

আরহামের সাথে সাজিয়া যেভাবে কথা বলছে জানো সে আরহামের বিবাহিত স্ত্রী! চাচাতো ভাইকে ভাই না বলে কী প্রেমিকদের মতো আপনি আপনি শুরু করেছে! মাহানুর মিহি ভাবেই বলে,

-উনাকে ভাইয়া বলো না তুমি? (মাহানুর)

-আসলে আমি ছোটকাল থেকেই আরহাম ভাইকে আপনি বলেই ডেকেছি। তাই এখনও মুখে সেই ভাষাটাই রয়ে গিয়েছে। (সাজিয়া)

-ওহহ!

-আচ্ছা আপনারা বিশ্রাম করুন আমার আবার পরে আসছি। (সাজিয়া)
________________🖤

দুপুরে খাবার খেতে বাহিরে আসার সময় জিয়া সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় মাহানুরের। সবাই মাহানুরকে দেখে তারিফ করে। আজ রাতে বাড়ির উঠানে গায়ের হলুদের অনুষ্ঠান হবে। ডেকোরেশনের লোকরা এসে তাঁদের কাজ করছে। সাথে আরহাম আর তার চাচাতো ভাই সব দেখ ভাল করছে। মাহানুর বড়দের সাথে আরহামের দাদির রুমে বসে আছে। আরহামের দাদি পা থেকে মাথা পর্যন্ত আপাদমস্তক পরোক্ষ করে নেয় মাহানুরকে। তারপর মুখ বাঁকিয়ে বলে,

-বউ তো সুন্দর আছে কিন্তু শহুরে মাইয়া কামকাইজ পারেনি?

মাহানুর কিছু বলবে তার আগেই জিয়া বলে উঠে,

-মা আমাদের বাসায় কাজের মেয়ে আছে একমাত্র ছেলের বউকে দিয়ে ঘাঁটিয়ে খাবো নাকি! তাছাড়াও আমরা বউ নিবো কাজের মেয়ে না।

-তাও কাইজ কাম পারা লাগে। নইলে সন্তান গো মানুষ করব কেমবে!

-আমিই তো বেঁচে আছি আমার নাতি নাতনিদের দেখভাল করার জন্য। আর আমার বউমা যা পারে তাতেই হবে।

জিয়ার কথা শুনে ভড়কে যায় আরহামের দাদি। তার সাথে আরহামের বড় ফুপ্পিও মুখ ভেংচি দেয়। শাশুড়ির কথা শুনে বুক ভরে যায় মাহানুরের। আরো কিছুক্ষন সেখানে থেকে জিয়ার কথায় রুমে চলে আসে। দরজা দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে। পরিবারের সাথে একটু কথা বলে নিলো। তারপর কোলবালিশ ধরে গভীর ভাবে ঘুমের দেশে পারি জমায়।

>>>>চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে