#ডাকপিয়নের_ছুটি_নেই 🌼
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব____০৪.
ইশার মনেমনে অনেক কথা জমলো! কিন্তু এই মানুষটাকে কিছু বলার বোকামি সে করবেনা। তাই কোনো কথা না বলে চলে যেতে নিলেই খেতে হলো আরেক ধমক!
কেননা, সে কফির মগ গুলো নিয়ে পূনরায় নীচের দিকে রওনা হচ্ছিলো। শ্রাবণ ধমক দিয়ে বলল,
“উপরে যখন উঠেই গিয়েছিস, এগুলা দিয়ে বাকি গুলো ফ্লাক্সে করে নিয়ে আয়।;
ইশা ঢোক গিলে, হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে ধীর গতিতে উঠে যায় ছাদে। পেছন পেছন গুটি গুটি পায়ে এগোয় লতিফাও। শ্রাবণ ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে নীচে নেমে যায়। ফোনটা হয়তো ভে*ঙে গেছে! ভাবতে ভাবতে ফোনটা মেঝে থেকে কুড়িয়ে তুলতে দেখলো স্ক্রিনে দাগ পড়ে গেছে। আফসোস করে, কপাল ডলতে ডলতে চলে গেলো বাইরে। ইশা সবাইকে কফি দিয়ে এক প্রকার দৌড়ে এলো সিঁড়িতে। ভেবেছিলো শ্রাবণ হয়তো থাকবে, কিন্তু সে নেই। যা দেখে, মনের কোনে কালো মেঘেদের ভীড় জমলো। তবে শ্রাবণ যেমন হুকুম করে গেলো, তেমন ভাবেই সব তামিল করলো। পরের কফিগুলো দুটো ফ্লাক্সে ভরে নিয়ে এলো। এক এক করে সবাইকে কফি দিয়ে নিজের জন্যও নিলো। তুতুনের পাশে আসন করে বসতে বসতে আবারও এসে পড়লো আরেক গুরু দায়িত্ব। তাই বসেও আর বসা হলোনা। কফি নিয়েই উঠে যেতে হলো। পূণরায় এই গুরুদায়িত্ব শেষ করে বসতে ইচ্ছে করলেও বসলোনা আর। ফোন আর কফির মগটা নিয়ে চলে গেলো ছাঁদের একপাশে।
আকাশে মস্ত বড় একখানা চাঁদ উঠেছে। চাঁদের পাশে লক্ষাধিক তারার মেলা। চারপাশে মৃদু বাতাস। বাতাসে বৃষ্টির আভাস। মস্ত বড় চাঁদটাকে ঘিরে বারবার মেঘেদের হাট বসলেও পরক্ষণেই কেটে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে তা। আবারও, পূণরায় থেকে থেকে মেঘ জমে ঢেকে যাচ্ছে চাঁদটা। ইশা তার স্থীর দৃষ্টি জোড়া নিক্ষেপ করে রেখেছে চাঁদের পানে। কফির মগে এক বার চুমুক দিয়ে হারিয়ে গেলো প্রকৃতির এই সৌন্দর্য্যের মাঝে। প্রকৃতির এই অসামান্য রূপে সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা পেশ করলো মনেমনে। ঠিক তখনই মনটাকে বিষন্ন করে দিয়ে ফোনটা বেজে উঠলো ওর। ফোনটা সামনে ধরতেই দেখা মিললো তুর্জর নাম্বারটা। যা দেখতেই বিষন্ন মনে আরেকটু বি*ষ পড়লো যেন।
“বউ, কি করছো?;
ইশা মনেমনে বড্ড বির*ক্ত হলো। সরাসরি বলল,
“বিয়েটা না হওয়া অব্দি আমাকে এই ভাবে ডাকবেন না প্লিজ।;
“কেন? বউ কি রাগ করে?;
“প্লিজ তুর্জ!;
“ওকে, ফাইন। তুমি যা বলবে, সেটাই হবে। কি করছিলে?;
“কফি আড্ডা হচ্ছে।;
“তুমি তো আড্ডায় নেই, আরব বলল।;
” হু, সবাইকে কফি দিয়ে আমি চাঁদ বিলাস করতে এলাম।;
“একা কেন? আমাকে সঙ্গে নিতে অসুবিধা ছিলো?;
“মাঝেমাঝে কেবল একা, স্রেফ নিজেকে নিয়েই কিছু করতে হয়। আপনাকে নিয়ে চন্দ্র বিলাস করার অজস্র সুযোগ হবে। কিন্তু, নিজেকে নিয়ে হয়তো আর তেমন সময় হবেনা কখনোও।;
“আমার কাছে থাকলে, কোনো কাজই তোমাকে একা করতে দিবোনা। বাবার বাড়িও আসা চলবেনা। সার্বক্ষনিক, আমাকে সময় দিতে হবে।;
ইশা থমকালো কিঞ্চিৎ। মজা করছে কি তুর্জ?
“বিয়ের পর বাবার বাড়ি আসবোনা আমি?;
“না।;
“কেন? মা, বড় মামি, ছোট মামি তাদের দেখতে ইচ্ছে করলে?;
“ওসব জানিনা। আমি আমার বউকে একদমই ছাড়তে পারবোনা কোথাও।;
“ওহ। এই তবে আপনার প্লান।;
“তা নয়তো কি? আমি আমার বউকে ছাড়া একদমই থাকতে চাইনা। ব্যস।;
ইশার মন খারাপ হয়ে গেলো। মাকে ছাড়া কোনোদিনও এক মুহুর্তের জন্য থাকেনি সে। বড় মামি, ছোট মামি, মামারা কাউকেই একদিনের বেশি না দেখে থাকতে পারেনা ও। সেখানে, তুর্জর এমন আবদার! যেন অন্যায় আবদার ঠেকলো ইশার মনে।
“চুপ হয়ে গেলে কেন? কি ভাবছো?;
“কিছু ভাবছিনা। আপনি বলুন?;
“একটা কথা বলবো বউ?;
“বিয়ে না হওয়া অব্দি আমাকে ইশা বলেই সম্মোধন করুন, প্লিজ!; (কাঠ কাঠ গলায়)
ওপাশ থেকে বির/ক্ত গলা শোনা গেলো তুর্জর,
“আশ্চর্য, তুমি এতো রিয়াক্ট করছো কেন? বউই তো ডেকেছি! বউ বলে আদর সোহাগ তো করছিনা!;
ইশার অসহ্য লাগছে তুর্জর এমন আচরণ! বলছে তো এই ডাক তার ভালো লাগছেনা, তারপরও কেন ডাকতে হবে তাকে?
“কথায় কথায় তোমার ওভার রিয়াক্ট পছন্দ নয় আমার। প্লিজ বিয়ের আগেই যথাসম্ভব এই ব্যাড হ্যাবিট চেঞ্জ করো। বিয়ের পর এসব সহ্য করবোনা আমি!;
হুকুমের সুরেই বলল তুর্জ। বির*ক্তিতে কপালের ভাজ তীক্ষ্ণ হলো ইশার।
“মানে? আমার একটা কথা পছন্দ না হলে আমি বলতে পারবোনা? বললেই আপনার কাছে ওভার রিয়াক্ট বলে গণ্য হবে? কেন!;
“আমার হবু বউকে আমি বউ বলে ডাকলে কি অসুবিধা, আমি তো সেটাই বুঝতে পারছিনা!;
“তুর্জ প্লিজ, এতো প্রশ্ন করবেন না! আমি কেবল এই শব্দটা এখন ব্যবহার করতে না করছি। বিয়ের পর যা খুশি করুন, আমি বারন করিনি!;
“ঝগড়া করার হলে, নিজের রুমে যা! এখানে দশজনের সামনে নিজেদের পার্সোনাল প্রবলেম তুলে নাই ধরলি!;
বাতাসের তাল কেটে একখানা পরিচিত গলা কানের পর্দায় বারি খেতেই থেমে গেলো ইশা। ওপাশ থেকে ধেড়ে গলায় চেচাচ্ছে তুর্জ। ইশা পাশ ফিরে তাকালে শ্রাবণকে দেখতে পেলো। তাই তুর্জকে আর বিশেষ কিছু না বলে, ফোনটা কান থেকে নামিয়ে কেটে দিলো। শ্রাবণ আর দাঁড়িয়ে রইলোনা। কথাটা বলেই চলে গেলো ছাদের অন্য প্রান্তে। ইশা খেয়াল করলো শ্রাবণের হাত খালি। লতিফাকে বলেছিলো, শ্রাবণ এলে তাকেও যেন এক মগ কফি দেয়। নির্ঘাত ভুলে গিয়েছে! ইশা নিজের কফি রেখে দিয়ে, শ্রাবণের জন্য এক মগ নিয়ে গেলো। শ্রাবণ ছাদের রেলিঙের হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শীতল চাহনি তার চন্দ্রমাতে নিবদ্ধ। পেছনে কারোর অস্তিত্ব প্রগাঢ় ভাবে উপলব্ধি হলেও মুখে কোনো কথার স্থান দিলোনা শ্রাবণ। এক বুক য*ন্ত্র*ণা নিয়ে, বরাবরের ন্যায় নিজেকে খোলসের মধ্যে বন্দী রাখলো।
ইশা দুই মিনিট নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো তার পেছনে। অতঃপর নিজেই আগ বাড়িয়ে ডাকলো শ্রাবণকে,
“বড় মামি স্পেশালি কফিটা তোমাকে দিতে বলেছে। সন্ধ্যায় নাকি বলেছিলে, মাথা ধরেছে। কাজের চাপে তখন দিতে পারেনি। তারজন্য সরি!;
ইশার কোমল স্নিগ্ধ গলার স্বর বরাবরই তাকে খোলস ছেড়ে আসতে বাধ্য করে। তবুও সে, শক্ত হয়ে নিজের খোলস ধরে রাখে। এবারও তার ব্যাতিক্রম নয়। ইশার কোমল স্নিগ্ধ গলার স্বরকে তুচ্ছ করে কঠোর গলায় জবাব দিলো,
“মাথা ব্যাথা সেরে গেছে। এখন এসবের দরকার নেই!;
“শুধু কি মাথা ব্যাথা? ক্ কফি তো আরও অনেক প্রবলেম সল্ভ করতে পারে। এই যেমন মন?;
ভয় জড়ানো কন্ঠ বলল ইশা। শ্রাবণ ওর কথায় তাচ্ছিল্য মিশ্রিত হাসলো। তবে মুখ উল্টো দিকে থাকায় সেই হাসি দেখার ভাগ্য হলোনা ইশার। শ্রাবণ ঘুড়ে দাঁড়ালো ইশার পানে। ইশাকে একবার আপাদমস্তক দেখে বলল,
“তুর্জকে পছন্দ না হলে, বিয়ে কেন করছিস?;
শ্রাবণের থেকে এহেম প্রশ্ন পাওয়া অষ্টম আশ্চর্যের ব্যাপার। হতবিহ্বল নয়নে তাকালো ইশা। অবাকের শীর্ষে পৌঁছে বলল,
“ক্ কি বললে?;
“কিছুনা!;
বলেই কফিটা নিয়ে নিলো ইশার থেকে। পূণরায় উল্টো দিকে ঘুড়ে দাঁড়ালো। ফের, একবার, দু’বার অতঃপর লাগাতার কয়েক বার চুমুক দিলো কফিতে। ইশা পলকহীন চেয়ে রইলো শ্রাবণের পানে। সে কিছু বলতে চায় শ্রাবণকে। কিন্তু, কিভাবে বলবে জানেনা। মনেমনে আওড়াতে লাগলো কথাটা। অতঃপর, একপর্যায়ে বলতে পারলো,
“তুর্জ আমাকে বউ বলে ডাকতে চায়! তাই, এতো ঝগড়া।;
কথাটা যেন বি/স্ফো/র/ক ঘটালো শ্রাবণের ভেতরে। তার কফিতে চুমুক দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। ঝলসানো হৃদয়ে সে এবার যেন চেয়েও হাসতে পারলোনা। আহত গলায় বলল,
“ওহ, ভালোতো।;
“আমার ভালো লাগছেনা ওর থেকে এই ডাকটা শুনতে! এটা তো তুমি আমায়…;
“তুই ওর হবু বউ! কিছুদিন বাদে তোদের বিয়ে হবে। দ্যেন তুই ওর পার্মানেন্ট বউ হয়ে যাবি। তাহলে, বউ বলে ডাকলে তোর অসুবিধা হওয়ার কিছু তো দেখছিনা।;
“জ্ জানিনা!;
“এখন আর না জেনে উপায় নেই! অতীতের কথা ভুলে যা। অতীত ভেবে বর্তমান ন/ষ্ট করার কোনো মানে হয়না।;
“আ্ আমাকে তুমি আর কখনোও মাফ করবেনা, তাইনা?;
হেসে উঠলো শ্রাবণ। একবুক য/ন্ত্র/ণা ভেতরে চেপে রেখেই হেসে উঠলো সে। সম্মুখে ঘুরে, ইশাকে আবারও দেখতে লাগলো আপাদমস্তক। দেখা শেষে বলল,
“তুই সত্যিই বড্ড বোকারে ইশা! বড্ড বোকা।;
শ্রাবণের চোখ জোড়া ভাসছে নোনাজলে। যা দেখে ভেতরটায় ভাঙন ধরলো ইশার। কেন সে কষ্ট দিচ্ছে এই মানুষটাকে, আর কেন সে কষ্ট পাচ্ছে নিজেও! কেন?
“তিতিরের বিয়েটা হলেই তোরও বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে! বি প্রিপেয়ার্ড ইশুপাখি!;
কথাটা বলতে বলতে কফির মগটা ঠেসে দিলো ইশার হাতে। গরম কফিটা হাতে ঠেসে যেতে ছ্যাঁত করে পুড়ে গেলো, মন পোড়ার ন্যায়। তবে, তার চেয়েও বেশি আতংক ধরে গেলো শ্রাবণের কথাটায়! ওর বিয়েটা এক্ষনি হবে মানে কি? ও যে এক্ষনি বিয়ে করতে চায়না!
“ম্ মানে! ক্ কি বলছো এসব? আমি এখন বিয়ে করবোনা! শ্রাবণ ভাই, দাঁড়াও! দাঁড়াও প্লিজ…;
দাঁড়ালো না আর শ্রাবণ। গটগট পায়ে চলে গেলো নীচে।
দোতলা ভবনটিতে যথেষ্ট ঘর থাকলেও সবাইকে শুতে দিতে গিয়ে মনে হলো, আরও বেশ কয়েকটা ঘর হলে মন্দ হতোনা। প্রত্যেক ঘরেই গাদাগাদি করে শুতে হলো সবাইকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে বাড়ির মানুষ গাদাগাদি করেও জায়গা পেলোনা। আবার কেউ কেউ পেলেও অস্বস্তি নিয়ে শুতে পারলোনা। তুতুন আর তানি জেদ ধরলো তারা কেউ ইশাকে ছাড়া ঘুমাবেনা। ইশা জেদ ধরলো সেও তার বড় মামির কাছে ঘুমাবে। কিন্তু সব ঠিক হলেও জায়গা মিললো না কোথাও। অবশেষে জায়গা খুঁজে বের করলো শ্রাবণ। চিলেকোঠার ছোট্ট ঘরটিই এখন একমাত্র ভরসা। যেখানে আলোবাতাসের ছিটেফোঁটা অব্দি নেই। শ্রাবণ এবং আরব মিলে এক এক করে সব কিছুর ব্যবস্থা করলো। একটা স্ট্যান্ড ফ্যান বসিয়ে মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে দিলো। তার উপর তোশক দিয়ে চাদর বিছিয়ে দিলো ইশা। বালিশ নিয়ে এলো তুতুন আর তানি। বালিশ ঠিক করে বিছানা পেতে দিলো আরব। মোট ছ’খানা বালিশ দিলো বিছানায়। আরব, শ্রাবণ, আফিয়া বেগম, ইশা, তানি এবং তুতুন শুয়ে পড়লো পাশাপাশি। প্রত্যেকেই সটান হয়ে শুয়ে প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ছাড়লো। সারাদিন খুব ধকল গেলো সবার। ছোট বড় কাজ সবাইকেই করতে হয়েছে। কাল আবারও একই ধকল, একই খাটুনি যাবে সবার উপর থেকে। এখন এই টুকু সময়ও যদি রেস্ট নিতে না পারতো, তবে আর কাউকে দেখতে হতোনা!
“আচ্ছা বড়মা, বড় আপার বিয়ে হয়ে গেলে কি মেজ আপারও কি বিয়ে হয়ে যাবে?;
প্রশ্নটা তানির। স্বল্প বুঝে ঘটে যেটুকু ধারন করতে পারলো সেটুকু দিয়েই প্রশ্ন করলো সে। তবে এই প্রশ্নটাই কারোর কারোর মনে ঝড় তুলে দিলো। শ্রাবণ অনুভূতি শূন্য দৃষ্টিতে একবার পাশ ফিরে দেখলো ইশাকে। ইশাও দেখলো, তবে ওর দৃষ্টিতে ছিলো একরাশ অসহায়ত্বতা।
আফিয়া বেগম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ইশার মাথায় হাত রাখলেন। কতক্ষন কি যেন ভাবলেন আপন মনে। অতঃপর বললেন,
“ইশা যদি চায়, তাহলে কালই ওর বিয়ে হবে। কি রে, করবি নাকি দু’বোন একসাথে বিয়ে?;
ইশা অসহায় নেত্রে তাকালো বড় মামির দিকে। বলল,
“প্লিজ না! আমি এতো জলদি মোটেও বিয়ে করতে চাইনা।;
কথাটা একটু জোরেই বলল ইশা। যেন কাউকে শোনাতে চাইলো ওর অটুট সিদ্ধান্তের কথা।
“করে ফেল ইশু! পরে কিন্তু বুড়ি হয়ে বিয়ে করতে হবে!;
কথার তাল ধরলো আরব। মজার ছলে কথাটা বলে হেসে উঠলো সে। ইশাও হাসলো, তবে তাচ্ছিল্য করে আপন মনে। তুতুন বলল,
“মেজ আপার জন্য তুর্জ ভাইয়া একদম পার্ফেক্ট, তাইনা বলো বড় মা?;
“মানানসই বলছিস?; শুধালেন আফিয়া বেগম।
“হ্যাঁ গো।;
মন সায় দিলোনা আফিয়া বেগমের। বললেন,
“জানিনা রে মা। তবে আশা করবো তেমনটাই হবে।;
সবাই আবারও নিশ্চুপ। ধীরে ধীরে ক্লান্ত শরীরটা বিশ্রাম নেওয়ার লোভ সামলাতে না পেরে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো প্রত্যেকেরই। কেবল, চাতক পাখির মতো জেগে রইলো একজোড়া পাখি! তারা না পারছিলো ঘুমাতে, আর না পারছিলা কোনো কথা জোগাতে। কেবল দীর্ঘশ্বাসের পর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পার করতে লাগলো নির্ঘুম রাত।
#চলবে