ছায়া মানব পর্ব-২৯+৩০+৩১

0
612

#ছায়া_মানব
#সাথী_ইসলাম

২৯.
মাহতিম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিল অনুজের পরিকল্পনা। আজ রাতেই তারা বিদেশীদের কাছে এ দেশের গোপন তথ্যগুলো বিক্রি করে দেবে। বলা হয়েছে কোনো একটা পেনড্রাইভে সব জমা রয়েছে। মাহতিম সিদ্ধান্ত নেয় সে আজকের মধ্যে‌ই অনুজকে মা’রতে যাবে। আশিশকে সাথে আসতে বললে সে বাহানা দিয়ে সরে পড়েছে।

রাত হয়ে আসতেই মাহতিম অহনার কাছে যায়। অহনা গোছগাছ করছিল ফিরে যাওয়ার জন্য। সকালের বাসেই সবাই শহরে পাড়ি জমাবে। মাহতিম এক পাশে তার অদৃশ্য ভাব রেখে অহনাকে দেখে। স্রষ্টার নিপুণ হাতে বানানো এই মায়াবিনীকে অপলক দেখতে থাকে।

কথা বলতে যাবে তখনি রোস্তম হাজির হয়। বাইরে ময়নার বাপ এসেছে তাকে নিয়ে যেতে। অহনা বাইরে চলে যায়। মাহতিম‌‌ও তার পেছন পেছন যায়।

ময়নার মন খারাপ। এতদিনের ভালোবাসায় আটকা পড়ে গেছে। কিছুতেই যেতে রাজি নয়। কিন্তু যেতে হবে। ময়না অহনাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে,’ আপা, তুমি খুব ভালো। তোমার কথা আমার খুব মনে পড়বে।’

‘‌আমিও তোমাকে অনেক মিস করব। আমার এই পিচ্চি বোনকে নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার অনেক ইচ্ছা। কিন্তু তা হবে না। তোমাকেতো তোমার বাবার খেয়াল রাখতে হবে তাই না? তুমি চলে গেলে তাকে কে দেখাশোনা করবে শুনি?’

‘ আপা তুমি আবার কবে আসবে?’

‘ খুব শিঘ্রই। আসলেই তোমাকে খবর দেব।’

‘ তুমি খবর দেওয়ার সাথে সাথেই দেখবে আমি কেমন হাজির হয়ে যাই।’

ময়নার বিদায়ের পর অহনা আবার নিজের ঘরে আসে। রুমি, ইরা মোবাইল নিয়ে শুয়ে পড়ে। ওদের একটাই কাজ, একটু সময় পেলেই সেলফি নিবে আর ফেসবুক স্ক্রল করবে। অহনা ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে আবার সব গোছগাছ করতে থাকে। হঠাৎ মনে হলো কেউ তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। অহনা পেছনে তাকাতেই কিছুই দেখতে পেল না। আবারো নিজের কাজে মন দিল। এবার মনে হলো কেউ তার চুল স্পর্শ করে গেল। কিন্তু পাশে কেউই নেই। অহনা ভাবল ইরা করছে এসব, কেননা ইরা অহনার পাশে কিছুটা দূরে খাটের উপর। মিটিমিটি হাসছে সে। অহনা ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াল,’ কি হচ্ছে এসব?’

ইরা অহনার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে বলল,’ যা, হবার তাই হচ্ছে।’

‘ একদম ফাজ’লামো করবি না। দেখছিস না, কাজ করছি।’

‘ আমি আবার কি করলাম মহারানী?’

‘ আমার চুলে টান দিলি কেন?’

‘ আমার খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। আমিতো চ্যাটিং করছি হৃদয়ের সাথে।’

অহনার কপাল কুঁচকে যায়। হৃদয় নাম শুনেই এক ঝটকায় ইরার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে দেখে সত্যি সে চ্যাটিং করছে একটা ছেলের সাথে। অহনা কোমরে দুহাত রেখে শুধায়,’ কতদূর আপা?’

‘ কি, কতদূর?’

‘এসব কতদূর?’

‘ আরে কি কতদূর, বলবি তো নাকি?’

‘ এই হৃদয় কে? কতদিন ধরে চলছে এসব?’

‘ ওহ আচ্ছা। তুই তো জানতি আলিফ আমাকে পছন্দ করে। অনেকদিন পেছন পেছন ঘুরছে, তাই কালকেই এক্সেপ্ট করে নিলাম। বেচারা কষ্ট পাবে। এমনিতে তাকেও আমার ভালো লাগে।’

‘ আলিফ না হয় বুঝলাম, কিন্তু এই হৃদয় কে? তুইও কি ঐসব মেয়েদের মতো হয়ে গেলি নাকি? একটা ছেড়ে আরেকটা।’

‘ আরে ধুর, কি বলছিস এসব? আমাকে বলতে দিবিতে নাকি? হৃদয় আমার বয়ফ্রেন্ড।’

‘ তাহলে আলিফ কে?’

‘ আলিফ আমার বয়ফ্রেন্ড।’

‘ তাহলে হৃদয় কোথা থেকে আসল? একটু বুঝিয়ে বলবি?’

‘ আলিফ আর হৃদয় এক‌ই ব্যক্তি। হৃদয় মাহমুদ আলিফ। তুইতো আমকে বলতেও সময় দিলি না। যত্ত’সব! আর বিরক্ত করবি না। নিজের কাজ কর, আর আমাকেও আমার কাজ করতে দে।’

‘ বাহ আপা বাহ। এতদিন আমরা ঠিক ছিলাম। এখন বয়ফ্রেন্ড পেতেই আমাদের অসহ্য লাগছে? এটা কিছুতেই মানব না।’

‘ রাগ করিস না। মাত্র কালকেই সম্পর্কটা শুরু করলাম।’

‘ আচ্ছা ঠিক আছে।’

অহনা অনুভব করল কেউ তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। অহনা বুঝেও না বোঝার ভান ধরে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। এই উপস্থিতি সে আগেও টের পেয়েছে। মন জানা হয়ে গেছে কাঙক্ষিত লোকটি কে হতে পারে। তবুও মুচকি হেসে বাইরে বেরোয়। চাঁদের প্রখর আলোয় চারদিক রঞ্জিত।

অহনাকে বাইরে বেরুতে দেখে রোস্তম এগিয়ে আসে,’ এতো রাতে বাইরে কেন যাচ্ছিস?’

অহনা থমথমে গলায় বলল,’ বাবা, আমার গরম লাগছে তাই বাইরে যাচ্ছি। একটু পর‌ই চলে আসব।’

‘ কাছেই থাকবি অন্য কোথাও বের হবি না। দিনকাল ভালো না, এমনিতেও কতকিছু ঘটে গেল। সাবধানে থাকিস।’

‘ আমার ভয় নেই বাবা। আমার ছায়া…’

অহনা থেমে যায়। পুনরায় বলল,’ আমার ছায়া সবসময় আমার সাথে থাকে। আমাকে প্রোটেক্ট করবে সে। তুমি চিন্তা করো না। আমি ঠিক থাকবে একদম, ফিরেও আসব ঠিকঠাক।’

‘ তাই যেন হয়। যা তবে।’

অহনা হাওয়ায় গা এলিয়ে দিয়ে অনেকটা দূরে চলে আসে। ঘরের পেছন বরাবর যে খালি জায়গাটা আছে, সেখানে গিয়ে চাঁদের দিকে তাকায়। অহনা অনুভব করে তার পাশে কেউ নেই। এক্ষুনি মাহতিম ছিল মনে হলো। হঠাৎ উধাও হয়ে গেল কেন? অহনা দিকবিদিক খুঁজতে থাকে। কেউ না থাকায় ভয় হতে থাকে। গ্রামে শেয়ালের ডাকটা কমন ব্যাপার। অনবরত ডেকে যাচ্ছে। অহনা ভয়ে চুপ হয়ে যায়। কয়েকবার ডাকে,’ মাহতিম?‌ মাহতিম আছ তুমি?’

কোনো উত্তর নেই। মাহতিম আছে ভেবে সাহস করে রাতের বেলা বেরিয়ে আসতে পেরেছে। কিন্তু এখন ভয়ে তার কাঁপন চলে এসেছে।
আচমকা মনে হয় অহনার পায়ের উপর দিয়ে কিছু হেঁটে গেল। ভয়ের তাড়নায় অহনা চিৎকার দিতেই মাহতিম ওর মুখ চেপে ধরে,’ আস্তে!’

অহনা মাহতিমের বুকে দুহাত রেখে তার পোশাক খামচে ধরে। কাঁদো কাঁদো ভাব স্পষ্ট, আর একটু হলেই কেঁদে দিত।

মাহতিম বোকা হাসে,’ এর সাহস তোমার। কিন্তু একটু একা বাইরে আসতেই এত ভয়?’

অহনা মাহতিমের বুকে কি’ল মারে,’তুমি একটা ইডি’য়ট।’

‘ইডি’য়টের সাথে দেখা করতে কেন এলে?’

‘ আমি মোটেও তোমার সাথে দেখা করতে আসিনি।’

‘ তাহলে কার জন্য এসেছ?’

‘ আমি ভেবেছি তুমি আমার পাশেই আছ তাই বেরিয়ে এলাম।’

‘ আমি? সেটা আবার কোন আমি? বুঝিয়ে বলবে?’

‘ তুমি অনেকগুলো। আমার কাছে তোমার অস্তিত্ব অনেক ভাবে ধরা দেয়। সমস্যা হলো, আসল তুমিকে কাছে পাই কম।’

মাহতিম অহনার গালে এক হাত রেখে চোখ স্থির করে তাকিয়ে থাকে। বাতাসের দক্ষতায় চোখের উপর পড়ে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দেয়। আরেকবার হাসি মেলে বলে,’ তুমি কতটা সুন্দর জানো?’

‘ হুম।’

মাহতিম অবাক হয়। গলা খাঁকারি দিয়ে বলে,’ বাহ, কি ভালো কথা! তুমি সুন্দর সেটা তুমি জানো?’

‘ কেন জানবো না?’

‘ জানলে কি করে?’

‘ তুমি বলেছ। তুমি বলেছ মানে আমি সুন্দর। তোমার জন্য‌ই আমি সুন্দর।’

‘ তুমি সকল রুপে আমার কাছে পরী। এভাবে চেয়ে থাকতেই আমার ভালো লাগে।’

‘ একটা কথা জানো?’

‘ কি?’

‘ তোমাকে দেখলেই আমার প্রেম প্রেম পায়।’
অহনা মাহতিমের বুক থেকে মাথা তুলে একনজর তাকে দেখে। আবার চোখ সরিয়ে বুকের সাথে লেপ্টে যায়। মাহতিম অনুভব করে অহনার গরম নিঃশ্বাস। অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যায় শরীরে। বিদ্যুতের গতিতে পুরো শরীর যেন শক খায়।
অহনার বোকা কথায় মাহতিম সাঁয় দিয়ে বলে,’ কেমন প্রেম পায়?’

‘ সেটা জানি না। তবে তোমাকে দেখলেই ইচ্ছে করে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এমন মনে হয়, এটা আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আমার ছাড়া, আর কারো অধিকার নেই তাতে। যখনি আমি তোমার বুকে ঢলে পড়ি, মনে হয় এই পৃথিবীতে এর থেকে বেশি সুখের আর কিছুই হতে পারে না। ছেড়ে দিলেই আমার যেন দম আটকে আসে। ভীষণ কষ্ট হয়।’

মাহতিম মন দিয়ে অহনার কথা শুনে। তার‌ও যে ভালো লাগে না সেটা নয়। সে পরিস্থিতির শিকার। অহনাকে কাছে পেতে চাইলে সে হারিয়ে যাবে। ক্রমশ তার শক্তি কমে আসছে। মাহতিম তবুও খুশি মনে শক্ত করে অহনাকে জড়িয়ে ধরে। সে চায় শেষ অস্তিত্ব পর্যন্ত অহনার সাথে থাকতে‌।

অনেকক্ষণ অহনাকে ঘরে না দেখে রোস্তম বাইরে বেরিয়ে আসে। কল পাড়, বাগান, পুকুরঘাট সব দেখে আসে। পায়না। আগ্রহ বশত ঘরের পেছনে যায়। দেখতে পায়, অহনা দাঁড়িয়ে আছে। অস্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে কাউকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে‌….

চলবে….

#ছায়া_মানব
#সাথী_ইসলাম

৩০.
মাহতিম দেখতে পায়, একটু ছায়া মূর্তি তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। অহনাকে বলল,’ ছাড়ো আমাকে।’

‘উহুম!’
অস্ফুট স্বরে বলল অহনা। ছাড়তে নারাজ সে।

‘এমন করো না। কেউ আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।’

‘ ওফফ্, এত কথা বলো কেন? আহামরি কিছুতো নিয়ে নিই না তোমার থেকে। শুধু একটু বুকে মাথা রেখে ঘুমুতে চাই। তোমার জন্য সেই শান্তিটাও নেই।’

‘ কেউ আসছে। আমাকে যেতে হবে।’

‘ তুমি ভয় পাচ্ছ কেন? ভয়তো আমি পাব। কারণ তোমাকে আমি ছাড়া আর কেউ দেখবে না।’

মাহতিমের মনেই ছিল না কথাটা। জোরে শ্বাস নেয়, বলল, আমারতো মনেই নেই। আর্মি হয়ে আর কি করলাম। এই সামান্য বিষয়টা মাথায় নেই।’

রোস্তম কাছাকাছি এসে যেতেই অহনা মাহতিমকে ছেড়ে দেয়। তবে হাতটা ধরে রেখেছে। হাত ছেড়ে দিলেই মাহতিম আজকের জন্য আবার পালাবে, তাই ধরে রেখেছে, ছাড়বে না কোনোমতেই। মাহতিম ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। রোস্তম অহনাকে বলল,’ আমার মনে হলো, এখানে কেউ ছিল। একা একা অন্ধকারে কি করছিলি এখানে?’

বলেই রোস্তম চারিদিকটা দেখতে থাকে। তেমন কিছু তার চোখে পড়ে না। অহনা বলল,’‌ এখান থেকে চাঁদটাকে সুন্দর দেখা যায়। তাই এসেছি, তুমি আবার কষ্ট করে এলে কেন?’

‘ অনেকক্ষণ হলো বেরিয়েছিস, বাইরে এতক্ষণ থাকা ভালো না। কতকিছুতো ঘটল তোর সাথে তাও মনে নেই? কবে একটু বুদ্ধি হবে তোর?’

‘ কিছু হবে না বাবা। আমি একদম সেভ ছিলাম। তুমি ঘরে যাও, আমি আসছি।’

রোস্তম চলে যায়। অহনা মাহতিমের দিকে তাকিয়ে বলল,’ মনে হচ্ছে এটা তোমার হাত না অমূল্য সম্পদ। আমার থেকে কেড়ে নেওয়ার অত্যন্ত চেষ্টা করছ।’

মাহতিম অহনার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। ঝাপসা আলোয় অহনা দেখতে পেল তাকে। অহনা আবার বলল,’ মেয়েদের হাসি নিয়ে কত কবি কতকি বলল, ছেলেদের হাসি নিয়ে বলল না কেন? বলা উচিত ছিল! এটা ঘোর অন্যায় করা হয়েছে ছেলেদের সাথে।’
একটু থেমে আবার বলে, ‘আমি কবি হলে, সবার আগে তোমার হাসির বর্ণনা দেব, তোমার ঠোঁটের মায়াবী আবরণ বিবরণে তুলে ধরব, তোমার এই হরিণের মতো চোখ নিয়ে হাজারটা কবিতা লিখব, তারপর চিকন ব্রু, তারপর সরু নাক, তারপর….’

মাহতিম অহনার ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে,’ আর কিছু বলতে হবে না। অনেক বলে ফেলেছ।’

‘ বলতেতো আরো কতকি ইচ্ছে করে, কিন্তু বলা হয়ে উঠে না। তোমাকে নিয়ে আমি এতদিনে কোটি-হাজার স্বপ্ন দেখেছি। সব স্বপ্ন যদি পূর্ণ হয় তাহলে এই জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই।’

‘ কোটি-হাজার স্বপ্ন? বাহ,’ মাহতিম হেসে ফেলে।

অহনা চোখ ঘুরিয়ে বলে,’ এভাবে হাসবে না।’

‘ কেন?’

‘ আমি নেশালো হয়ে যাই। লাজ লজ্জা চলে যায়, ইচ্ছে করে ঐ ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেই। আমাকে টানে খুব।’

বলেই অহনা নিজের জিভ কাটে। মুখ ঢেকে নেয়। লজ্জায় মুখ তার রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। কেমন একটা কথা বলে ফেলল। উল্টো দিকে ফিরে ঘরের দিকে র‌ওনা দিতেই মাহতিম বলল,’ খুব শিঘ্রই হবে। আজকের জন্য বিদায়।’

অহনা পেছনে তাকায় না, ঘরের দিকে পা বাড়ায়। লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে অহনা। গায়ে তার মাহতিমের শরীরের গরমটা এখনো উত্তপ্ত হয়ে ফুটছে। লেপ ফেলে দেয়। শিহরিত হয়ে, লাজুক মুখ নিয়ে ঘুমে তলিয়ে যায়।

মাহতিম পৌঁছে যায় অনুজের বাড়িতে। অনেকটা দেরী করে ফেলল, অনুজ বেরিয়ে পড়েছে। মাহতিম দিব্য দৃষ্টি অনুসরণ করে অনুজের কাছে পৌঁছে যায়।

পাঁচজন ক্লায়েন্টের সাথে দেখা করে অনুজ। ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে পেনড্রাইভ তুলে দেয় অজানা বিদেশিদের হাতে। মাহতিম কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। তার মনে পড়ে সে অদৃশ্য। তাই সহজেই লোকগুলোর কাছ থেকে খপ করে পেনড্রাইভটা নিয়ে নেয়। গাছের ছাওনি ছিল পাশেই, সেটা ছুঁড়ে মারে অনুজের দিকে। ঘৃর্ণিঝড়ের আভাস সৃষ্টি করে উড়িয়ে দেয় বিদেশীদের।
অনুজ নিজেকে ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা করে উল্টো দিকে ফিরে তাকায়। চিৎকার করে বলে,’ আমি জানি তুই এখানেই আছিস মাহতিম। সামনে আয়। পেছন থেকে অগোচরে আঘাত করে কাপু’রুষেরা, তুই নোস।’

মাহতিমের গায়ে লাগে কথাটা। মুহুর্তেই স্বশরীরে আসে সে,
‘ কা’পুরুষ আমি না। তুই কা’পুরুষ। না হয় নিজের দেশকে বিক্রি করে দিতি না।’

‘ এই দেশ কি দিয়েছে আমাদের? বল আমাকে। আচ্ছা আমার কথা বাদ দিলাম। তোকে কি দিয়েছে এ দেশ? সারাটা জীবনতো এই দেশের হয়ে যুদ্ধ করলি। প্রাণের ভয়ে না করে হাজারো সমস্যার সমাধান করলি। কিন্তু শেষে তোকে অপবাদ দেওয়া হয়। কেউ বিশ্বাস করেনি তোকে। এই প্রশাসন কি দিয়েছে এইবার বলতো।’

‘, দেশের মানুষ বিশ্বাস’ঘাতকতা করেছে আমার সাথে, আমার দেশ নয়।’

‘হা হা, সব শেষ হয়েও এখনো দেশের জন্য এত ভালোবাসা?’

‘আ’মৃত্যু থাকবে। আর এখন তোর সময় এগিয়ে এসেছে, এবার তোকে তোর জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া দরকার।’

একটা গাড়ি এগিয়ে আসে। অনুজ লাফিয়ে এটাতে উঠে পড়ে। মাহতিম তার পিছু নেয়। গাড়ি আপন গতিতে ছুটে চললেও মাহতিম সেটাকে আটকে রেখেছে। গাড়ি চলছে না দেখে অনুজ পেছন ফিরে তাকায়। দেখল মাহতিম এক হাতে ধরে আছে গাড়িটা।

অনুজ বেরিয়ে আসে, বলল,’ এতক্ষণ সুযোগ দিয়েছি, ভেবেছি চলে যাবি। কিন্তু তুই গেলি না, এবার আমি আমার মুক্ষম চালটাই দেব।’

‘ তুই কিচ্ছু করতে পারবি না। কারণ আমি এখন আর মানুষ ন‌ই।’

‘সে আমি জানি। তবে কী বলতো, সবার‌ই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকেই। যার জন্য সে হেরে যায়।’

‘ আমার কোনো দুর্বলতা নেই।’ বলেই মাহতিম অনুজকে আঘাত করতে গেলেই অনুজ বলল,’ ওয়েট, ওয়েট, একটু দাঁড়া।’

মাহতিম থেমে যেতেই অনুজ কাউকে ভিডিও কল দেয়। মাহতিম অবাক হয়ে যায় তার কান্ডে। ম’রতে বসেছে, আর এখন সে ভিডিও কল দিচ্ছে।

আরিশের ঘুম আসছিল না। বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল অহনার উজ্জ্বল মুখশ্রী। এত স্নিগ্ধ, কোমলমতি রমণী সে আর কখনো দেখেনি। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করে অহনাকে পাবে বলে। হাঁসফাঁস করছিল সে। ঘুম আজকের জন্য আর আসবে না। বিছানায় এপাশ ওপাশ করে এক পর্যায়ে উঠে যায়। নিজেকে নিজে শাঁসায়, কত বড় ভুল করলি আরিশ, বিয়েটা কেন পেছনে নিলি? দুমাস অপেক্ষা করবি কি করে? যদি নিজের মাথাটা একটু খাটাতি তাহলে দুইদিনের মধ্যেই অহনা তোর ব‌উ হয়ে যেত। অনেক বড় ভুল করে ফেললি আরিশ। এবার কিভাবে থাকবি। ওর জন্যতো তোর কাজেও মন বসবে না‌।

আরিশ সিদ্ধান্ত নেয়, সে এখন অহনাকে দেখতে যাবে। এই রাতের অন্ধকারে। একবার ভাবছে যাবে, আরেকবার ভাবছে যাবে না। দুটানায় পড়েও গায়ে একটা শাল জড়িয়ে নিয়ে র‌ওনা দেয় অহনার বাড়ির উদ্দেশ্য। তার মতে, জানালা দিয়ে দেখেই চলে আসবে, কেউ বুঝতে পারবে না।

অনুজ কাউকে ভিডিও কল দিতেই একজন বলল,’ জ্বী বস।’

অনুজ দাঁত কেলিয়ে বলল,’‌মেয়েটাকে দেখা।’

লোকটা অনুমতি পেয়ে অহনার মুখের কাছে ফোন ধরল। লোকটার হাতে ধা’রালো অ’স্ত্র। অহনা ঘুমে বিভোর, লোকটা তার পাশেই। ছু’রি তার দিকে তাক করে বসে আছে। অনুজকে উদ্দেশ্য করে বলল,’ বস, গলাটা কে’টে দেব?’

মাহতিম চিৎকার করে উঠে,’ না, ওর কিছু হবে না। ওকে ছেড়ে দে।’

অনুজ লোকটাকে বলল,’ কে’টে দে তার গলা। আমি দেখতে চাই এই আ’ত্মাটা কি করে তার ভালোবাসাকে বাঁচায় সেখানে গিয়ে……

চলবে…..

#ছায়া_মানব
#সাথী_ইসলাম

৩১.
মাহতিম দিশেহারা হয়ে যায়। অনুজকে বলল,’ ওর কিছু করিস না। আমি চলে যাচ্ছি, আর কখনো আসব না।’

অনুজ বিস্ময়কর হাসে,’‌না, তাতো হবে না। তোকে একবার শেষ করতে পারিনি তো কি হয়েছে, আর আবার শেষ করব।’

আরিশ অহনার ঘরের সামনে এসে পৌঁছেছে। তাকিয়ে দেখে ঘরের জানালা খোলা। বাইরে থেকে ঘরে উঁকি দিতেই থমকে দাঁড়ায়। একজনকে দেখতে পায় অহনার গলায় ছু’রি ধরে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই গলায় চালিয়ে দেবে। আরিশ এমন অবস্থায় ঘরে ঢুকে পড়ে। অচেনা লোকটার হাত থেকে এক ঝটকায় ছু’রিটা ফেলে দেয়। কলার চেপে ধরে কয়েক ঘা বসিয়ে দেয়।

আওয়াজ হতেই অহনা জেগে উঠে। এলাহি কান্ড দেখে থ হয়ে যায়। আরিশ এখনো লোকটাকে মেরেই যা’চ্ছে। এক পর্যায়ে ওকে ধরে রেখে পুলিশ কল করে।

সবাই জেগে গেছে। রোস্তম, হ্যারি, টিকু, রুমি, ইরা এরা অবাক হয়ে গেছে এতো রাতে আরিশকে দেখে, সাথে একজন লোককে মা’রতে দেখে আরো ঘাবরে যায়। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারে না।

পুলিশ এসে যায়। লোকটাকে একজন কনস্টেবল নিয়ে যায়। ইন্সপেক্টর রিজু সেন আসতেই অহনা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। লোকটা নির্ঘাত আবার কিছু বলে বসবে। হলোও তাই। এগিয়ে এসে আরিশকে সালাম জানালো। আরিশ বলল,’ কে তাকে এই কাজ করতে বলেছে, কেন বলেছে? সব জানতে চাই আমি।’

রিজু বলল,’ আমরা চেষ্টা করব। এটাতো আমাদের কর্তব্য। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। খুব শিঘ্রই আসল রহস্য জানতে পারব। কিন্তু স্যার, আপনি এত রাতে এখানে?’

আরিশ কি বলবে বুঝতে পারে না। আমতা আমতা করেও কোনো উত্তর নেই তার মুখে। এই মুহূর্তে কি বলা যেতে পারে সে জানে না। রিজু অহনার দিকে তাকিয়ে দেখল। চেনা ভাব ধরে বলল,’ আপনার নাম অহনা তাই না? আমাদের আরো দুইবার দেখা হয়েছিল। আজকে আবার দেখা হলো।’

অহনা কিছুটা হেসে বলল,’ জ্বী স্যার! আমাদের দেখা হয়েছিল।’

‘একটা বিষয় বুঝতে পারছি না। আপনার সাথে কেন এতসব ঘটনা ঘটছে? আপনার সাথে কি কারো কোনো শ’ত্রুতা আছে?’

‘একদম না। আমার সাথে কখনো কারো শত্রু নেই। আমি নিজেই বুঝতে পারি না কি হচ্ছে আমার সাথে। কেন হচ্ছে?’

‘ বিষয়টা আমাকে দেখতে হবে। হয়তো আপনি আপনার গোপন শত্রু সম্পর্কে জানেন না। বায় দ্য ওয়ে, আপনার হাজবেন্ড কোথায়?’

অহনা কি বলবে বুঝতে পারে না। যে ভয়টা পেয়েছিল সেটাই হয়েছে। এখন কি জবাব দেবে? আরিশ‌ও অবাক হয়ে যায়। যার সাথে তার কয়দিন পর বিয়ে তার হাজবেন্ডের কথা জিজ্ঞেস করছে কেন?
আরিশ বলে,’ আপনি ভুল করছেন। ওর এখনো বিয়ে হয়নি।’

রিজু হাতের লাঠিটাকে নাড়িয়ে বলে,’ কিন্তু আমার জানা মতে ওনার হাজবেন্ড আছে। যে তাকে প্রথমবার বিপদ থেকে উদ্ধার করেছিল।’

‘ ইন্সপেক্টর! আমি বললাম তো ওর কোনো হাজবেন্ড নেই। আমি ওর হবু বর। কিছুদিন পর বিয়ে হবে‌।’

‘কি হচ্ছে এসব। সব কিছু কেমন ধোঁয়াসা লাগছে। সত্যিটা কেউ বলবেন আমাকে। ওনার যদি হাজবেন্ড না থাকে তাহলে ওনাকে বাঁচানোর জন্য আমাকে কল করল কে? কিভাবে পসিবল এটা?’

‘ এই রাতের বেলা না ঘুমিয়ে আপনার সমস্যা হচ্ছে ইন্সপেক্টর। আপনি এখন আসতে পারেন। অহনা আমার হবু‌ ব‌উ, কিছুদিন পর বিয়ে হবে। আপনার দাওয়াত র‌ইল আসবেন কিন্তু।’

‘ সে না হয় আসব। কিন্তু…’

আরিশ থামিয়ে দেয় রিজুকে।
‘ আর কিছু বলতে হবে না। আপনি আসতে পারেন। ধন্যবাদ, এত রাতে সাহায্য করার জন্য।’

‘ এটা আমার দায়িত্ব। আসি তবে।’

রিজু অহনার দিকে তাকাতেই সে চোখ সরিয়ে নেয়। অদ্ভুত কান্ডে রিজু চরম বোকা বনে যায়। বেরিয়ে যায় তারাতাড়ি। তবে বিষয়টা পরখ করে দেখবে বলে ভেবে নেয়।

অনুজ দিশেহারা হয়ে গাড়ির দিকে ছুটে যায়। মাহতিম তার পেছনের সিটে গিয়ে বসে পড়ে। আরিশের জন্য অহনা বেঁ’চে গেল। এই মুহূর্তে অনুজের বাঁ’চার আর সম্ভাবনা নেই। অনুজ হাত জোড় করে ক্ষমা চায়। আর কখনো দেশ’দ্রো’হী’তা করবে না বলে শপথ নেয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা। মাহতিম বলল,’ কি দরকার আছে দেশের একটা বোঝাকে বাঁ’চিয়ে রাখার? কখন তার মত পাল্টে যায় আর আবার সে বিশ্বাস’ঘা’ত’কতা করে বলা যায়না। কথায় আছে না, কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না।’

‘ আর কখনো করব না। বিশ্বাস কর আমাকে‌। আমি ভালো হয়ে যাব।’

‘ তার আগেই তোর উপর থেকে ডাক এসেছে। তোকে এখনি শেষ করে দেব। তোর জন্য আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। তোকে ছেড়ে দিলে আমার পরিবার কষ্ট পাবে, আমি কষ্ট পাব।’

মাহতিম পুরো শরীরের শক্তি দিয়ে আঘাত করে অনুজের নাক বরাবর। গলগল করে র’ক্ত বয়ে পড়ে‌। পুনরায় আঘাত করতে অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে অনুজ। মুখ ফুটে কিছু বলতে চায়। মাহতিম শুনতে না চেয়ে আরেকবার আঘাত করতে যেতেই অনুজ বলল,’ আমি না। অন্যকেউ, অন্যকেউ মে’রেছে তোর পরিবারকে।’

‘ না মা’রার জন্য মিথ্যে বলছিস তুই।’ বলেই মাহতিম তাকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

আরিশকে একটা চেয়ারে বসিয়ে পানি দিল রোস্তম। অনবরত জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে সে কেন এসেছে এত রাতে‌। সে জানে কি করে অহনা বিপদে? আরিশ কিছুই বলতে পারে না। বেচারা এটাও বলতে পারছে না, অহনাকে সে মিস করছে, তাই দেখতে এসেছে। এমন কিছু হবে সে ভাবতে পারেনি। এক পর্যায়ে বুদ্ধি বের করে বলল,’ আমি ভেবেছি আজ রাতেই শহরে চলে যাব। যাওয়ার পথেই গাড়িটা খারাপ হয়ে যায়। আমি তখন গাড়ি ঠিক করার কাজ করছিলাম। পেছন থেকেই ঐ লোকটার কথা শুনি, ও কাউকে ফোনে বলেছিল অহনাকে মে’রে দেওয়ার জন্য। তাই লোকটার পিছু নিলাম আমি।’

‘ আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনি আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আপনি না থাকলে কিযে হতো কে জানে? আমার মেয়েটার উপর কিছুদিন যাবৎ খুব ঝড়-ঝাপটা যাচ্ছে। কেন হচ্ছে এসব বুঝতে পারছি না। আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দেব ভাষা আমার জানা নেই।’ রোস্তম হৃদয় কাঁপানো কন্ঠে কথাগুলো বলে গেল।

আরিশ অভয় দিয়ে বলল,’ আপনার মেয়ের দায়িত্বটা আমি নিয়েছি। সবসময় সবকিছু থেকে রক্ষা করার দায়িত্বটা এবার আমার। আমি কোনো ক্ষতি হতে দেব না। আর আপনি আমাকে নিজের ছেলের মতো ভাববেন, আপনার মেয়েকে যেভাবে থাকেন সেভাবেই ডাকবেন। আপনি আমার বড় হয়ে আমাকে আপনি আপনি করছেন, সেটা আমার পছন্দ না।’

‘ আচ্ছা বাবা। মনে হচ্ছে আমি আমার মেয়ের চিন্তা করা বাদ দিতে পারি। যোগ্য কাউকে পেয়ে গেছি।’

‘নিশ্চিন্তে।’

‘ আচ্ছা তোমরা কিছুক্ষণ কথা বলো, আমরা পাশের ঘরে যাই।’

‘হ্যাঁ যান তবে।’

আরিশের এমন কথায় সবাই থমকে যায়। রোস্তম কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে যায়।

ইরা বলল,’ আয়হায়, আমাদের বের করে সময় কাটাবেন তাই না?’

‘ আব.ব.. তেমন কিছু না। আমি একটু পরেই চলে যাব।’

‘ থাক আর লজ্জা পেতে হবে না। আমরা যাচ্ছি।’

রুমি কাছে এসে আরিশের কানের কাছে গিয়ে বলল,’ জিজু তুমি খুব কিউট। অহনাও কিউট। তাই ভুলে যাওয়া সম্ভব না এক দেখায়।’

হ্যারি মৃদু হেসে আরিশকে অভিবাদন করে চলে যায়। টিকু দাঁড়িয়ে থাকতেই হ্যারি তাকে টেনে বের করে নিয়ে যায়। বাইরে নিয়ে বলল,’ মনে হচ্ছে ওদের কেমিস্ট্রি দেখার তোর খুব সখ তাই না? আসতে চাইছিলি না কেন?’

‘ কি বলব বুঝতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে অহনা বিয়েতে রাজি না। আমার ওকে বাঁচানো দরকার।’

‘ বেশি‌ বুঝিস তুই। আমরা সবাই দেখলাম ও অনেক খুশি। চল এখান থেকে। বাইরে থেকে ঘুরে আসি।’

অহনা মুখ গম্ভীর করে নেয়। আরিশের দিকে তাকিয়ে গলা খাঁকারি দেয়। আরিশ কিছু বলছে না। কি বলবে, কি দিয়ে কথা শুরু করবে বুঝতে পারছে না। অহনা শুরু করে,’ আপনি কি জানেন, রাতের আঁধারে কে অন্যের বাড়িতে জানালা দিয়ে ঢুকে?’

‘ তুমি কি আমাকে চো’র প্রমাণিত করতে চাইছ?’

‘সেটা আপনি নিজে ভেবে নেন। আমি এত চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিতে পারি না।’

‘ কিন্তু যদি কেউ মনের টান থেকে ছুটে আসে তাহলে সেটাকে কি চোরের মত আসা বলে।’

অহনা থমথম খেয়ে যায়। পাশে তাকাতেই দেখতে পায় মাহতিম দাঁড়িয়ে আছে। অহনাকে দেখানোর জন্য সে মৃদু হাসল। প্রকৃতপক্ষে তার হৃদয়ে দহন চলছিল…..

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে