আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ পর্ব-১৪

0
445

#আমার_শহরে_তোমার_আমন্ত্রণ
#পর্ব১৪
#Raiha_Zubair_Ripti

-“ তুষার ভাইয়া যাবে না গ্রামে?তাকে তো দেখছি না।

চিত্রার করা প্রশ্নে তৃষ্ণা তপ্ত শ্বাস ফেলে। সোফায় মাথা এলিয়ে দিয়ে বলে-
-“ সে আসলে তো তাকে দেখবি। ভাইয়া যাবে না আজ। কাল বা পরশু যাবে। অফিসে কিসের যেনো প্রবলেম হয়েছে।
-“ ওহ্ আচ্ছা চল গাড়িতে গিয়ে বসি।

চিত্রা তৃষ্ণা সোফা থেকে উঠতেই রিয়া সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামে। তৃষ্ণা চিত্রার সামনে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ ননদীরা রিমি কে একটু ধরো তো।
চিত্রা রিমি কে কোলে নেয়। রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ এখন ও রেডি হোস নি যে?
-“ বাচ্চা রেডি করালাম,বাচ্চার বাবাকে রেডি করালাম,নিজের রেডি হবার জন্য সময় হলো না।রিমি কে একটু রাখ আমি চটপট রেডি হয়ে আসছি।

চিত্রা তৃষ্ণা রিমিকে নিয়ে বাহিরে চলে আসে। আকাশে আজ সূর্য্যি মামার দেখা নেই। চারিপাশে বইছে ঠান্ডা শীতল বাতাস। তৃষ্ণার শরীরে শীতের বস্ত্র নেই। এই শীতল ঠান্ডা বাতাস তৃষ্ণার শীরের বিঁধছে। সেই সাথে বারংবার কেঁপে কেঁপে উঠছে। চিত্রা তৃষ্ণার দিকে তাকিয়ে বলে-

-“ শীতের পোষাক কেনো পড়িস নি? যা ফুপির থেকে জ্যাকেট বা চাদর নিয়ে আয়।
তৃষ্ণা বাড়ির সামনে থাকা গাড়ি গুলোর দিকে তাকায়।যেই গাড়ি গুলো দিয়ে তারা গ্রামে যাবে। গাড়ির সামনেই তৃষ্ণার বাবা,মামারা আর রায়ান, রাফি দাঁড়িয়ে আছে। তৃষ্ণা রাফির দিকে নজর দিলো। ছেলেটার শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে। পুরো শরীর শীতের পোষাক নামের জ্যাকেট, মাফলার, হাত মোজা দিয়ে নিজেকে পুরো প্যাকেট করে নিয়েছে।

তৃষ্ণা বুঝে উঠতে পারে না,এই ছেলের এতো শীত লাগে কিভাবে? যেখানে তৃষ্ণা নিজেই শুধু একটা কুর্তি পড়ে আছে।

-“ তামিম তুষার আসলো না কেনো?
রাসেলল আহমেদের কথায় তামিম খান বলে উঠল-
-“ আসলে ভাইজান অফিসে একটু সমস্যা হয়েছে তুষার সেখানেই আছে। সমস্যা টা সল্ভ করে তারপর আসবে।

রাসেল আহমেদ রাফির দিকে তাকিয়ে আফসোসের সুরে বলে-
-“ আমাদের রাফি টাও যদি একটু তুষারের মতো হতো তাহলে আমার আর এই ব্যাবসা নিয়ে চিন্তা পোহাতে হতো না।

তামিম খান মুচকি হাসলেন। রায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলে-
-“ সমস্যা কি ভাইজান রায়ান তো আছে। ফ্যামিলির সবাই যদি পারিবারিক ব্যাবসার হাল ধরে তাহলে বাহিরে সরকার যে এতো কর্মসংস্থান করেছে সেগুলো কাদের জন্য।
রাফি তার ফুপার আস্কারা পেয়ে বলে উঠে-
-“ সেটা কে বোঝাবে এদের ফুপা আপনিই বলেন৷ এসব বিজনেস টিজনেস এ আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই,এসব বুঝিও না আমার দ্বারা হবেও না। এর থেকে আমি যেমন আছি তেমন ভাবেই থাকতে চাই।

তামিম খান রাফির কাঁধে হাত দিয়ে বলে-
-“ শোনো ছেলের কথা ছেলে কি বলে। বিয়ের তো বয়স হয়েছে কয়েকদিন পর বিয়ে করবে। তখন বউকে খাওয়াবে কি? বেকার ছেলের কাছে মেয়ে তো কেউ দিতে চাইবে না।

রাফি উদাস হয়ে বলে-
-“ কেনো ফুপা আমাদের তো আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল তাহলে অসুবিধা কোথায় মেয়ে দিতে?
-“ এসব টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি এসব তো তোমার বাবা,চাচা ভাইয়ের করা, তারা শ্রম ব্যায় করে এসব গড়েছে,তোমার চেষ্টায় হয় নি। তোমার ইনকাম সোর্স নেই।
-“ তারমানে এখন কোনো বাবাই তার মেয়েকে আমার হাতে তুলে দিবে না?
-“৮০% দিবে না,যদি আমার মতো তাদের মেন্টালিটি থাকে তবে।
-“ তার মানে আপনার মেয়েকে পেতে হলে জব করা লাগবে তার?
-“ অবশ্যই।
-“ হ্যাঁ রে চিত্রা তোর মা চাচি আর ফুপি কোথায়?
সাহেল আহমেদ মেয়েকে দেখতে পেয়ে দূর থেকে কথাটা জিজ্ঞেস করে।
চিত্রা সদর দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে তার মা চাচি ফুপি আর রিয়ারে চলে এসেছে।
-“ ঐ যে আব্বু তারা চলে আসছে।

চয়নিকা বেগম বাড়ির সদর দরজায় তালা মেরে চাবিটা বাড়ির দারোয়ান কে দেয়। রিক্তা বেগমের হাতে থাকা ব্যাগ টা মাটিতে রেখে রাফি কে হাক ছেড়ে ডাক দিয়ে বলে-
-“ রাফি রে ব্যাগ টা নিয়ে যা তো বাপ।

রাফি মায়ের ডাক শুনে মায়ের কাছে এসে ব্যাগ টা গাড়িতে তুলে। মোট তিনটে দুটো গাড়ি। প্রথম গাড়িটায়, চয়নিকা বেগম, তানিয়া বেগম,রিক্তা বেগম,রাসেল আহমেদ, সাহেল আহমেদ তামিম খান উঠে বসে। আর ড্রাইভিং সিটে বসে রায়ান। সেকেন্ড গাড়িতে তৃষ্ণা, চিত্রা, রিয়া, রিমি আর রাফি বসে। ড্রাইভিং সিটে বসেছে রাফি।প্রথম গাড়ির থেকে এই গাড়িটা আকারে ছোট। রাফির পাশে বসেছে তৃষ্ণা। পেছনে চিত্রা আর রিয়া বসেছে।

তৃষ্ণা রাফির পানে তাকায়। আসার পর থেকে লোকটার মুখ এখনও দেখা হয়ে উঠে নি। বিরক্তি নিয়ে তৃষ্ণা ফিসফিস করে বলে-
-“ ভাইয়া মাফলার টা তো খুলুন।

রাফি গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে ভ্রু কুঁচকে বলে-
-“ আশ্চর্য আমি মাফলার কেনো খুলতে যাবো? দেখছো না কি শীত আর ঠান্ডা বাতাস। আমার নাক মুখ ঠান্ডা বরফের মতো জমে যাবে।

তৃষ্ণা নিজের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“আমার দিকে তাকিয়ে দেখেন তো একটু….
-“ না তোমার দিকে এখন তাকানো যাবে না গাড়ি চালাচ্ছি পরে না হয় তাকিয়ে থাকবো।

তৃষ্ণা বিরক্ত হলো। কথা শেষ করতে না দিয়ে কথা বলে।
-“ উফ আমি কি ওটা বলছি,বলছি যে এই যে দেখুন আমার শরীরে শীতের পোষাক নেই, বাতাসে তো আমার নাক মুখ ঠান্ডা বরফের মতো জমে যাচ্ছে না।
-“ তুমি আর ব্রো হচ্ছো এলিয়ান। ভুল করে আমাদের বাংলাদেশে এসে আছড়ে পড়েছো।

-“ এই তোমরা কি নিয়ে কথা বলছো দুজনে?

পেছন থেকে রিয়া ওদের মধ্যে কথোপকথন দেখে কথাটা জিজ্ঞেস করে।কি বলছে পেছন অব্দি আসছে না কথা গুলো। রাফি লুকিং গ্লাসে রিয়াকে একবার দেখে বলে-
-“ তেমন কিছু না ভাবি,আসলে অনেক দিনপর রামে যাচ্ছি তো আমরা দুই ভাইবোন একটু সুখ দুঃখের আলাপ করছিলাম।

তৃষ্ণা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো রাফির পানে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে-
-“ আমরা ভাই বোন?
-“ অবশ্যই আমরা ভাই বোন। তুমি নিজেই আমাকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডেকে বেড়াও।
-“ আশ্চর্য ভাইয়া ডাকি বলেই কি ভাইয়া লাগেন নাকি।
-“ তাহলে কি লাগি?
-“ জানেন না কি লাগেন?
-“ না জানি না,জানিয়ে দাও তাহলে জেনে যাবো।
-“ আপনি আমার…
রাফি মুচকি হেসে বলে-
-“ হু আমি তোমার।
-“ উফ বলতে দেন।
-“ হ্যাঁ বলো।
-“ আপনি আমার…
-“ এই তৃষ্ণা তোর ফোনটা দে তো।

মুহুর্তে তৃষ্ণার মুখটা চুপসে গেলো। মনে হলো নিজের ফোনটাকে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলতে। রাগ টাকে সংবরণ করে ফোন টা চিত্রার হাতে দেয়। রাফির খুব হাসি পেলো, মুখ টাকে জানালার দিকে ঘুরিয়ে হাসলো। তবে এ হাসিতে তৃপ্তি পেলো না। কারন হো হো করে হাসতে পারলো না সে। চিত্রা তৃষ্ণার ফোন টা নিয়ে হটস্পট অন করে। তার ফোনে ডাটা নেই। এই রকম নিদারুন জার্নিতে ফোনে ডাটা না থাকলে কি চলে? চিত্রা নিজের ফোন টিপতেই রিমি রিয়ার কোল থেকে তার কোলে চলে আসলো। চিত্রার ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ আমি দেকবো।

চিত্রা মুচকি হেসে রিমির গালে চুমু খেয়ে বলে-
-“ আমার মাম্মাম টা কি কার্টুন দেখবে?
রিমি উপর নিচ মাথা নাড়ালো। চিত্রা ইউটিউবে ঢুকে মটু পাতলু বের করে দেয়। রিমি ফোন টা নিয়ে নিজের মতো করে কার্টুন দেখতে থাকে। রিয়া জানালা দিয়ে চারপাশের দৃশ্য দেখছে। এই প্রথম বার সে গ্রামে যাচ্ছে। বিয়ের পরপরই চিত্রা, রাফি বিদেশ চলে যাওয়ায় আর স্বামীর ব্যাস্ততার জন্য আসা হয় নি। এমনি দাদা শ্বশুর আর দাদি শ্বাশুড়ি এসেছিল। রিয়া শুনেছে রায়ানদের গ্রামে নাকি অনেক রিলেটিভ। যাকে বলে যৌথ পরিবার। ব্যাবসার সূত্রে শুধু তারা এই কয়েকজনই ঢাকায় থাকে। তাছাড়া আর সবাই গ্রামে থাকে, গ্রামে বিঘা বিঘা জমি চাষাবাদ করে,কারো গরু মুরগির ফার্ম আছে। এই করে চলে তারা।

চিত্রা রিয়াকে বাহিরে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে-
-“ এখনই এভাবে তাকিয়ে আছিস গ্রামের ভেতরে যখন যাবি তখন কি কিভাবে তাকাবি জাস্ট সেটাই ভাবছি।
রিয়া স্মিত হেসে বলে-
-“ আমি কখনও গ্রামে যাই নি। আমার নানা দাদা বাড়ি সব আমাদের বাড়ির আশেপাশেই।
-“ এই যে আজ যাচ্ছিস, দেখবি আর শহরে যেতেই ইচ্ছে করবে না। দাদুর বাড়ি মানেই অজানা এক ভালো লাগা৷

———————-

-“ এই ব্যাটা প্লে বয় ভিডিও কল দিচ্ছি ধরছিস না কেনো?

রাফি পানি খাচ্ছিল হঠাৎ মেসেজের টং বেজে উঠতেই ফোন বের করে দেখে সিয়ামের মেসেজ। সিয়াম সম্পর্কে রাফির বাবার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। মেসেজ টা দেখে রাফি কল দেয় সিয়াম কে। রাগী কন্ঠে বলে উঠে-
-“ এই তুই আমাকে কোন সাহসে প্লে বয় বলিস হ্যাঁ? তুই নিজেই একটা প্লেবয় হয়ে আমাকে বলিস প্লেবয়।

ওপাশ থেকে সিয়াম হো হো করে হেঁসে উঠে।
-“ ভিডিও কল টা ধর আশপাশ টা দেখা। আচ্ছা তোর সেই ফুপির মেয়ে তোর বোন টা কি আসছে?

রাফির কপালে দু ভাজ পড়লো।
-“ আমার ফুপি আছে বাট তার কোনো মেয়ে আমার বোন নেই।
-“ এই মিথ্যা বলবি না একদম।
-“ আশ্চর্য মিথ্যা কেনো বলবো। সত্যি আমার ফুপির মেয়ে আমার বোন নাই।
-“ তৃষ্ণা টা কে তাহলে?
-“ ওটা ভাবি লাগে আহাম্মক।
-“ বুঝলি কি করে ওটা তোর ভাবি লাগে।

রাফি একপলক তৃষ্ণার দিকে তাকালো দাঁতে দাঁত চেপে বলে-
-“ গাধা তোর ভাবি লাগে আমার না।
-“ সরি ব্রো আমার কোনো ভাই নেই,আমি একা। আমার ভাবি হওয়ার কোনো চান্সই নেই।
-“ ব্যাটা আমি তোর কি লাগি? নজর ভালো কর,ভাবি হিসেবে ট্রিট করবি।

সিয়াম সন্দেহান দৃষ্টি নিয়ে বলে-
-“ সর আমি ভাবি হিসেবে ট্রিট করতে পারবো না।
-“ তাহলে আমি বাড়ি থাকা কালীন আমার বাড়ির আশেপাশে ও যেনো তরে না দেখি।
-“ এহ বললেই হলো নাকি। আমি আসবো তৃষ্ণা কে ইমপ্রেস করার চেষ্টা ও করবো। যদি একটু পটে যায়।
রাফির মুখটা মুহুর্তে গম্ভীর হয়ে গেলো।
-“ মা’টির তলে পুঁ’তে রেখে দিবো তরে রাগাস না আমায়।

-“ আচ্ছা রাগালাম না আর কতক্ষণ লাগবে তোদের আসতে?
-“ ঘন্টা খানেক। একটু রেস্তোরাঁয় নামছি সকলে খেতে।
-“ ওহ্ আচ্ছা খা তাহলে পেট ভরে আর তৃষ্ণা কে বলিস তার অপেক্ষায় তৃষ্ণার্ত হয়ে বসে আছে এই সিয়াম।

কথাটা বলে ফোন কেটে দেয় সিয়াম। রাফির মুড নষ্ট হয়ে গেলো। এখনই ফোন দিয়ে তৃষ্ণা তৃষ্ণা করছে বাড়িতে গেলে না জানি কি করে।

চিত্রা পরোটা আর ডিম খাচ্ছে মুহূর্তে ফোন টা বেজে উঠলো। ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখে তুষারের নম্বর জ্বলজ্বল করছে। আশেপাশে তাকালো মা, চাচি বাবা রা খাচ্ছে। অন্য সময় হলে সবার সামনেই ফোন ধরে বসতো কিন্তু এখন কেমন যেনো আনইজি লাগে। পরোটার মধ্যে ডিম টা ভরে সেটা রোলের মতো করে নিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে থমথমে গলায় ভেসে আসে-
-“ ফোন রিসিভ করতে এতক্ষণ লাগে?
তৃষ্ণা পরোটা টা মুখে দিতে দিতে বলে-
-“ আমি তো খাচ্ছিলাম।
-“ হ্যাঁ দূরে থেকেও আমার মাথা টাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছো।
চিত্রা ভ্রু কুঁচকালো।
-“ আশ্চর্য আমি কখন আপনার মাথা চিবিয়ে চিবিয়ে খেলাম? আমি তো পরোটা চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছি।
-“ কতদূর তোমরা?
-“ এই তো ঘন্টাখানেক লাগবে যেতে। আপনি আসলেন না যে?

তুষার হাই তুলতে তুলতে বলে-
-“ কেনো মিস করছো নাকি?
-“ না মিস করছি না তবে সবাই আসলো আপনি আসলেন না তাই আর কি।
-“ অফিসে সমস্যা হয়েছে তাই আসা হয় নি তবে চলে আসবো।
-“ অপেক্ষায় থাকবো।
তুষার নৈঃশব্দ্যে হাসলো। প্রাপ্য টা আস্তেধীরে প্রাপ্তি তে পরিনত হচ্ছে।
-“ জলদি আসার চেষ্টা করবো।
-“ অপেক্ষার প্রহর যেনো দীর্ঘ না হয় সেদিক টা খেয়াল রাখবেন।
-“ তুষার রা অপেক্ষা করে অপেক্ষা করায় না ম্যাডাম। সাবধানে যাবে,রাখি।

তুষার ফোন কেটে দেয়। চিত্রা ফোন টা বুকে জড়িয়ে ধরে। জীবনে যেটা পাওনি সেটা নিয়ে আফসোস না করে জীবনে যা পেতে চলছো সেটা সাদরে গ্রহণ করো,দেখবে জীবন তাতেই সুন্দর। চিত্রা ফাস্ট যাকে ভালোবেসেছিল সেটা ছিলো একতরফা। একতরফা ভালোবাসা গুলো নিখুঁত হয়। সেখানে ওপর পক্ষে থাকা মানুষটার প্রতি রাগ অভিমান ক্ষোভ থাকে না। কারন ওপর পক্ষের মানুষ তো জানতেই পারে না কেউ তাকে ভালোবেসেছে আড়ালে। আর দুপক্ষের ভালোবাসায় থাকে অগাধ মায়া,অভিমান, এক্সপেকটেশন, এটেনশন। চিত্রা নামক রমণী দু রকম ভালোবাসার স্বাদ গ্রহণ করলো। প্রথম টা ছিলো অপ্রাপ্তি আর দ্বিতীয় টায় আছে শেষ প্রাপ্তি।

( সেদিন কমেন্টে দেখলাম অনেকে বলছে রাফি কে আমি লুচু ক্যারেক্টার দিয়েছি। আমার প্রশ্ন টা সেখানে, সব গল্পেই যে নায়ক নায়েকা সৎ নিষ্ঠাবান হবে এটা কোথায় লেখা আছে? মানুষ একজনকে দেখলে মুগ্ধ হতেই পারে। রাফি হয়েছিল অধরা কে দেখে। কোনো স্নিগ্ধ চেহারা হঠাৎ করে মুখের সামনে চলে আসলে যে কেউ থমকে যায়। রাফি কোথাও স্বীকার করে নি সে অধরা কে ভালোবাসে বা তার প্রতি তার কোনো উইকনেস আছে,বা আমি কোথাও সেটা শো করি না। আর দ্বিতীয় হচ্ছে, রায়ান রিয়া আর রায়ানের মাকে যেনো শাস্তি দেই। তো কিসের ভিত্তিতে আমি তাদের শাস্তি দিবো? তারা কি অন্যায় করেছে? রায়ান তো জানেও না চিত্রা তাকে ভালোবাসে আর রিয়াও না। চিত্রা তো কাউকে বলেই নি। রায়ান রিয়ার এতো সময় ও নেই যে তুষারের মতো চিত্রার চোখের ভাষা বুঝে নিবে। কারন রায়ান রিয়া তো তখন প্রেম করতে ব্যাস্ত তাদের কি সময় আছে অন্যের চোখের ভাষা পড়ার? আর রায়ানের মা বলেছিল তাকে তার ছেলের বউ করবে কিন্তু যেখানে রায়ান রিয়াকে পছন্দ করে বসে আছে, এবল দুজন দুজন মানুষ কে ভালোবাসে সেখানে চিত্রার সুখের জন্য কেনো তিন তিনটে জীবন নষ্ট করবে? এর চাইতে কি তিনজনের জীবন নষ্ট না করে একজনের জীবনই নষ্ট হোক,চিত্রাই সাফার করুক। কারন তার ভালোবাসার ভ্যালু ছিলো না। আই থিংক বিষয় টা ক্লিয়ার)

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে