আমার তোমাকে প্রয়োজন পর্ব-২৮+২৯

0
906

#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_28

কপি নিষিদ্ধ ❌

আহাদকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঐশী বলে,
এভাবে কি দেখছেন?

আমার বউকে।

সে তো প্রতিদিনই দেখেন।

হুম হা করো।

আহাদ ঐশীকে সম্পূর্ণ খাবার খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়।

আহাদ নিচে এসে এঁটো বাসনগুলো বেসিনে রেখে পূণরায় উপরে চলে আসে।

আহাদ ঐশীর পাশে বসে ওর চুলে হাত বুলিয়ে বলে,
জান মাথায় পানি দিয়ে দেই,ভালো লাগবে দিবো?
আহাদের কথায় ঐশী মাথা নাড়ায়।

আহাদ ড্রয়ার থেকে রেক্সিন বের করে বালিশের উপর বিছিয়ে দেয়,রেক্সিনের কারণে বালিশ ভিজবে না।
আহাদ ঐশীকে পাতালে করে শুইয়ে দিয়ে বালিশের উপর মাথা রেখে ঐশীর গায়ে কম্বল দিয়ে দেয়।
আহাদ ওয়াশরুমে যেয়ে এক বালতি পানি এনে চেয়ার টেনে ঐশীর মাথার কাছে বসে।

আহাদ ঐশীর মাথায় পানি দিচ্ছে আর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ঐশী চুপটি করে শুয়ে আছে ঔষধ খাওয়াতে ঐশীর শরীর ছেড়ে দিয়েছে,আহাদের মনে হচ্ছে ঐশীর মাথা থেকে যেন আ’গু’ন বের হচ্ছে।
ঐশীর মাথা ঠান্ডা না হওয়া অব্দি আহাদ ওর মাথায়
পানি ঢালে।
পানি ঢালা শেষে আহাদ ঐশীর চুল মুছে হেয়ার ড্রেয়ার
দিয়ে চুল শুকিয়ে ফেলে।

ঐশীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে আহাদ,আহাদের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ঐশী,ঐশী ঘুমিয়ে গেলেও ঘুম নেই আহাদের চোখে কিছুক্ষণ পর পর ঐশীর ঘুম
ভেঙে যায় আর আহাদ ঐশীর চুলে হাত বুলিয়ে
ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
উহুম আহাদ এতে বিরক্ত নয় ও ওর প্রিয়তমার যত্ন করতে পছন্দ করে,অসুস্থ স্ত্রীর যত্ন করতে সে কখনোই পিছুপা হয় না।

৪ টার দিকে আহাদের চোখ লেগে যায় আর তখনই ঐশীর ঘুম ভেঙে যায় ঐশী আহাদের বুকের উপর থেকে সরে আসে,ও সরে আসতেই আহাদের ঘুম ভেঙে যায় ও উঠে বসে।

কি হয়েছে জান উঠলে কেন?

আমার ক্ষুধা লেগেছে।

ক্ষুধা লেগেছে,কি খাবে?

ফুচকা খাবো।

ফুচকা!

হ্যাঁ আমার খুব ঝাল করে ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে।

আহাদ ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে ৪ টা বাজে।

জান এ সময় ফুচকা কোথায় পাবো।

আহাদ আমার খুব ঝাল করে ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে প্লিজ আমাকে ফুচকা এনে দিন,আমি ফুচকা খাবো।

কিন্তু জান এসময় তো ফুচকা বিক্রি করে না।

আমি কিছু জানি না আমি ফুচকা খাবো আমাকে ফুচকা এনে দিন,প্লিজ আহাদ আমি ফুচকা খাবো।।
ঐশী বাচ্চাদের মতো বায়না করছে।
বেচারা আহাদ ওকে বোঝাতে পারছে না।
ঐশী আহাদের উপর রেগে যায়।
আপনি যদি আমাকে ফুচকা এনে না দেন তাহলে কিন্তু আমি কান্না করে দিবো।

এই না না কান্না করো না।
আহাদ মনে মনে ভাবে,
এখন কি করি ও তো কিছু বুঝতেই চাইছে না,জ্বর হলে কেমন বাচ্চাদের মতো হয়ে যায় কিছু থেকে কিছু হলেই কান্না করার হু’মকি দেয়,এখন কি করবো আমি,
এ সময় ফুচকা পাবো কোথায়।

এই কি হলো কি ভাবছেন,আমাকে ফুচকা এনে দিবেন না?

হুম দিব তুমি অপেক্ষা করো আমি তোমার জন্য ফুচকা বানিয়ে নিয়ে আসছি।

ঐশী খুশি হয়ে বলে,
আপনি আমার জন্য ফুচকা বানাবেন!

হ্যাঁ জান তুমি আমার কাছে কিছু চেয়েছো আর আমি তা দিবো না তা কি হয়।

ঐশী খুশি হয়ে আহাদের গালে চুমু দেয়।

জান তুমি বসো আমি তোমার জন্য ফুচকা বানিয়ে নিয়ে আনছি।

আচ্ছা।

আহাদ ওয়াশরুমে যেয়ে হাত মুখ ধুইয়ে রান্নাঘরে চলে যায়।

রান্নাঘরের কেবিনেট থেকে রেডিমেড ফুচকার প্যাকেট,
ডাবলি,আলু,তেতুল,লবণ,ডিম,পেঁয়াজ,ধনেপাতা,
কাচামরিচ,বিট লবণ,চাট মসলা,শুকনা মরিচ,জিরা গুঁড়া বের করে।

আহাদ একটি পাএে আলু,ডিম দিয়ে চুলায় সিদ্ধ হতে দেয়,অপর চুলায় একটি পাএে ডাবলি সিদ্ধ হতে দেয়।

এগুলো সিদ্ধ হতে হতে আহাদ টক তৈরি করে ফেলে এবং পেঁয়াজ মরিচ কুঁচি কুঁচি করে কেটে ফেলে।
আলু,ডিম সিদ্ধ হতেই পাএটি চুলা থেকে নামিয়ে চুলায় ফ্রাই প্যান বসিয়ে শুকনা মরিচ এবং জিরা টেলে নেয়।
আহাদ একটি পাএে তেল দিয়ে তাতে রেডিমেড ফুচকা গুলো ভেজে নেয়।

আহাদ একটি বোলে সবকিছু পরিমাণ মতো নিয়ে ফুচকার পুর তৈরি করে,ফুচকার মাঝে ছিদ্র করে তাতে পুর ভরে প্লেটে সাজায়,ছোট একটি বাটিতে টক নিয়ে নেয়,প্লেট আর বাটিটা ট্রেতে রেখে ট্রেটা হাতে নিয়ে পেছনে ফিরতেই ঐশীকে দেখতে পায়।

তুমি কখনো এলে?

অনেকক্ষণ হলো আপনি কাজের মাঝে ডুবে ছিলেন তাই হয়তো খেয়াল করেননি।

আহাদ ট্রেটা টেবিলের উপর রেখে ঐশীকে উঁচু করে টেবিলের উপর বসিয়ে দেয়।
আহাদ ফুচকায় টক ঢেলে ঐশীকে খাইয়ে দেয়।
ফুচকায় কামড় দিতেই ঐশী হাত উঠিয়ে (👌) এমন করে।

কেমন হয়েছে?

একদম আপনার মতো টক ঝাল মিষ্টি।
ঐশীর কথায় আহাদ হেসে দেয়।

আপনি বিজনেস ম্যান না হয়ে শেফ হলে ভালো হতো,
আমি তাহলে প্রতিদিন আপনার হাতের রান্না খেতে পারতাম।
ঐশী একটা ফুচকায় টক ঢেলে আহাদকে খাইয়ে দেয়।

এবার তুমি খুশি তো।

খুশি মানে মহা খুশি থ্যাঙ্ক ইউ আমার সব ইচ্ছে পূরণ করার জন্য।

থ্যাঙ্ক ইউ দিচ্ছো কেন তোমার ইচ্ছে আমি পূরণ করবো না তো কে পূরণ করবে।

ঐশী খুশি হয়ে আহাদের গলা জড়িয়ে ধরে।
আহাদ মুচকি হেসে ওর নাকে টোকা দেয়।
_

আহহা ছাড়ুন না।

উহুম ছাড়বো না।

সিয়াম ৮ টা বাজে ছাড়ুন ফ্রেশ হতে হবে রাত ভর জালিয়েও আপনার শান্তি হয়নি।

উহুম।

প্লিজ ছাড়ুন না।

আচ্ছা ছাড়তে পারি কিন্তু একটা শর্তে।

শর্ত! কি শর্ত।

সিয়াম রোজার কানে ফিসফিস করে কিছু একটা বলে।

ইসস।

আমার শর্ত তোমাকে মানতেই হবে নাহলে তোমাকে উঠতে দিবো না।

আচ্ছা আচ্ছা মানবো।

সিয়াম রোজার ঠোঁটে ভালবাসার পরশ একে দিয়ে রোজাকে ছেড়ে দেয়।
_

এরই মাঝে কেটে গেছে আরো কয়েক দিন।

রোজা ঐশী ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাসে চলে আসে।

রোজা আইসক্রিম খাবি?

হুম খাওয়া যায়।

ওরা দোকান থেকে দুটো আইসক্রিম কিনে গাছের নিচে বসে,ওরা গল্প করছিলো আর আইসক্রিম খাচ্ছিলো।

ঐশী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে,
এইরে অনেক দেরি হয়ে গেছে আহাদ হয়তো বাসায় চলে এসেছে,চল বাসায় চলে যাই।

হুম চল।

ওরা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে হাঁটা শুরু করে,গেটের কাছে যেতেই ঐশীকে কেউ পেছন থেকে ডাক দেয়,ঐশী রোজা পেছনে ফিরে তাকায়,ওদের পেছনে ফিরতে দেখে ছেলেটা ওদের কাছে চলে আসে,
রোজা ঐশীকে অবাক করে দিয়ে ছেলেটি ঐশীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে হাতের ফুলটি বাড়িয়ে বলে,
আই লাভ ইউ।

ওয়াট!

ছেলেটা দাঁড়িয়ে বলে,
ইয়েস আই লাভ ইউ,প্রথম দেখাতেই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।

আপনার কি মাথা ঠিক আছে,আপনি জানে আমি কে কি আমার পরিচয়,কোন সাহসে আমাকে এসব কথা বলছেন।

ভালোবাসি বলতে কি সাহস লাগে নাকি,হ্যাঁ আমি জানি না আপনি কে কি আপনার পরিচয় কিন্তু প্রথম দেখাতেই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।

ঐশী কিছু বলবে তার পূর্বেই গার্ডরা চলে আসে।

ম্যাম কোনো সমস্যা?

না।

ঐশী চলে যাওয়ার জন্য সামনের দিকে পা বাড়াতেই ছেলেটা ওর হাত ধরে বলে,
কিছু বললেন না যে।

কথাটা বলতে দেরি কিন্তু গার্ডদের ওর মাথায় ব’ন্দু’ক ধরতে দেরি হলো না।
ব’ন্দু’ক ধরাতেও ঐশী ছেলেটির চেহারায় ভয়ের ছিটেফোঁটাও দেখতে পেলো না ছেলেটি স্বাভাবিক ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে।

ঐশী হাতের ইশারায় গার্ডের ব’ন্দু’ক নামাতে বলে।

শুনুন মি. আপনি কে কি আপনার পরিচয় তা জানতে আমার শুধু দশ মিনিট লাগবে,আর আপনাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করতে জাস্ট এক সেকেন্ড লাগবে।
আমি আহাদ শেখের ওয়াইফ,আমার থেকে দূরে থাকবেন,ওকে।
কথাটা বলেই ঐশী সামনের দিকে হাঁটা শুরু করে।
গাড়ি কাছে যেয়ে পেছনে ফিরে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।

ঐশীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছেলেটি বাঁকা হাসি দিয়ে বলে,
কি ভেবেছিলে আমি ব’ন্দু’ক দেখে ভয় পেয়ে যাবো,
যে প্রতিদিন মৃ’ত্যু নিয়ে খেলে তাকেই মৃ’ত্যু’র ভয় দেখাচ্ছো,আহাদের বউ তুমি,আহাদের বউকে দেখার অনেক শখ ছিলো আজ দেখে নিলাম,একদম আহাদের মতোই তেজ,সে তুমি যার বউ হওনা কেন,তোমার উপর আমার নজর পরেছে আমার তোমাকে চাই।
মিযান যা চায় তাই পায় আপোষে না পেলে ছিনিয়ে নেয়,তোমাকে আমি আহাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসবো জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।

#চলবে

#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_29

কপি নিষিদ্ধ ❌

লোকটার সাহস দেখেছিস তোকে আহাদ শেখের ওয়াইফকে সবার সামনে প্রোপোস করলো যেখানে কেউ তোর দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পায় না সেখানে সে লোক প্রোপোস করে ফেললো এমন কি গার্ডরা তার মাথায় ব’ন্দু’ক ধরাতেও সে ভয় পায়নি ভাইয়া যদি ওর কথা জানতে পারে তবে আল্লাহই জানে ওর কি হবে।

না রোজা আহাদকে এসব বলিস না আমি কোনো ঝামেলা চাইনা।

কিন্তু ঐশী লোকটা যদি আবারও তোর সামনে আসে তখন?

তখন নাহয় আহাদকে বলবো কিন্তু এখন না।
ঐশী মনে মনে ভাবে,
“সত্যি তো লোকটা কে,সেকি আহাদের সম্পর্কে জানে না আহাদের রাগ সম্পর্কে জানে না আহাদকে কি বিষয়টা জানাবো?
না থাক উনি শুধু শুধু ঝা’মেলা করবে যদি লোকটা বেশি বাড়াবাড়ি করে তখন নাহয় আহাদকে জানাবো।”

ঐশী রোজা বাসায় চলে আসে,ওরা ওদের রুমে চলে যায়,ঐশী দরজা খুলে দেখে আহাদ সোফায় বসে ফোন চালাচ্ছে,ঐশী দরজা লাগিয়ে ব্যাগ টেবিলের উপর রেখে বলে,
কখন এসেছেন?

এইতো কিছুক্ষণ হলো,তোমার আসতে দেরি হলো যে?

আসলে রোজার সাথে গল্প করছিলাম আপনি তো জানেন আমরা একসাথে গল্প করতে বসলে দিন দুনিয়ার খবর রাখি না তাই আসতে দেরি হয়ে গেছে।

ওহ,আচ্ছা যাও গোসল করে আসো।

আচ্ছা।

ঐশী কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় কিছুক্ষণ পর চুলে টাওয়াল পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয় আহাদ ওর কাছে যেয়ে ওর চুল মুছে দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে দেয়।
ওরা নিচে চলে আসে রোজা সিয়ামও রুম থেকে বের হয় সবাই একসাথে ডাইনিং টেবিলে বসে,রোজা ঐশী ওদের খাবার সার্ভ করে দিয়ে নিজেদের প্লেটেও খাবার তুলে নেয়,সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খেয়ে যার যার রুমে চলে যায়।

ঐশী টেবিলে বসে পড়ছিলো আর আহাদ ল্যাপটপে কাজ করছিলো।
পড়া মাঝে ঐশীর ফোনে একটা মেসেজ আসে ঐশী ফোনটা হাতে তুলে দেখে সিম কোম্পানি থেকে মেসেজ এসেছে,ও ফোনটা রাখতে যেয়েও থেমে যায় আজকের তারিখটা চোখে পড়তেই ঐশী জিভে কাম’ড় দেয়।
“এইরে কাল যে ওনার বার্থডে আমি তো ভুলেই গিয়ে ছিলাম,উনি তো আমার বার্থডেতে আমাকে সারপ্রাইজ দিয়েছিলাে আমারও তো তাকে কিছু দেওয়া উচিত,
বেচারা সারাদিন কাজ করে একটু সারপ্রাইজ পেলে খুশি হবে,কিন্তু সারপ্রাইজটা দিবো কিভাবে?”
কথাগুলো ভেবে ঐশী আহাদের দিকে তাকায় ও দেখে আহাদ মনযোগ দিয়ে কাজ করছে ঐশী আহাদকে বলে,”শুনছেন”।

আহাদ ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলে,
হ্যাঁ জান বলো।

কাজের কি অনেক চাপ?

হুম আমাকে দুদিনের মধ্যে ফাইলটা রেডি করতে হবে।

আজ কি আসতে দেরি হবে?

হুম ১০ টার পরে ১১ টার দিকে আসবো।

ওহ।

“ভালো হয়েছে উনি দেরি করে আসলে আমি হাতে অনেক সময় পাবো,জনাব আজকের রাতটা আপনি সারাজীবন মনে রাখবে আজকের রাতটা আপনার জন্য খুব স্পেশাল হবে,রাত অব্দি অপেক্ষা করুন।”
আহাদের দিকে তাকিয়ে ঐশী কথা গুলো ভাবছিলো।

৪ টার দিকে আহাদ অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নেয়,ঐশী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আহাদকে দেখছে,
আহাদকে টাই বাঁধতে দেখে ঐশী আহাদের হাত থেকে টাইটা নিয়ে বাঁধতে শুরু করে আহাদ ঐশীর কোমড় জড়িয়ে ধরে,টাই বাঁধা শেষে আহাদ ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে ঐশীকে ছেড়ে দেয়,টেবিল থেকে ব্যাগটা নিয়ে ঐশীকে “বায়” বলে চলে যায়।

ঐশী রোজা লিভিং রুমে বসে আছে।

কি বলছিস কাল ভাইয়ার বার্থডে!

হ্যাঁ কাল উনার বার্থডে আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম ভাগ্যিস দুপুরে তারিখ দেখে মনে পড়েছিলো।

ওহ,আচ্ছা আমাদের ভাইয়ার জন্য তো কিছু করা উচিত।

হ্যাঁ আমি ভেবেছি ওনাকে ছোট খাটো একটা সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু কিভাবে কি করবো বুঝতে পারছি না।

আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে শুন তবে।
_

রাত ১১:১৫ টায়,
আহাদ গাড়িতে বসে আছে,সিয়ামকে দশ টায় বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিল,আহাদকে ঐশীকে কল দেয়,
ঐশী কল রিসিভ করে,
জ্বী বলেন।

কি করছো জান?

এইতো বসে আছি,আপনি কি করছেন?

গাড়িতে বাসায় আসছি।

ওহ আসুন তবে।

আচ্ছা।

ঐশী কল কেটে দেয়।

কিছুক্ষণ পর আহাদের গাড়ি গেট দিয়ে প্রবেশ করে।
আহাদ গাড়ি থেকে নেমে সদর দরজার সামনে যেয়ে কলিবেলে চাপ দেয় সার্ভেন্ট এসে দরজা খুলে দেয়,
আহাদ ভেতরে এসে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
দরজা খুলে দেখে পুরো রুম ফাঁকা কোথায় ঐশী নেই, আহাদ ভাবে ঐশী হয়তো রান্নাঘরে গিয়েছে।
খুব ক্লান্ত লাগছে আহাদ কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,বেশ কিছুক্ষণ পর চুল মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে।
আহাদ টাওয়ালটা বারান্দায় মেলে দিয়ে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়ায় আর আয়নায় একটা কাগজ আটকানো দেখতে পায়।
আহাদ আয়না থেকে চিঠিটা ছাড়িয়ে হাতে নিয়ে খাম থেকে চিঠি বের করে খুলে পড়তে শুরু করে,
“এতোক্ষণে আপনার বের হওয়ার সময় হলো,
আমি কতক্ষণ ধরে আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম,
খুব ক্লান্ত লাগছে তাই না টেবিলের উপর শরবত রেখেছি শরবতটা খেয়ে কাবার্ডটা খুলুন।”

চিঠিটা পড়ে আহাদ ঐশীর কথা মতো টেবিলের উপরে রাখা শরবতটা খেয়ে কাবার্ডের কাছে যায়।
কাবার্ডটা খুলতেই সেখানেও একটা চিরকুট দেখতে পায়,আহাদ চিরকুটটা খুলে পড়ে,
“এসেছেন ঐ যে দেখুন পাশেই একটা নীল রঙের প্যাকেট আছে।”
ঐশীর কথা মতো আহাদ প্যাকেটটা হাতে নিয়ে বেডে বসে,প্যাকেট খুলে দেখে প্যাকেটে কালো রঙের শার্ট, প্যান্ট,ঘড়ি আর একটা চিরকুট।
আহাদ চিরকুটটা খুলে পড়ে,
“কি জনাব পছন্দ হয়েছে?
আজ আপনাকে কালোতে দেখতে চাই,ঝটপট এগুলো পড়ে ছাদে চলে আসেন আপনার জান আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।”
আহাদ লেখা গুলো পড়ে মুচকি হাসে।

আহাদ ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ঘড়ি পড়ছে,
কালোতে আহাদকে বেশ মানায় আহাদ গায়ে পারফিউম দিয়ে রুম থেকে বের হয়,কিছুদূর যেতেই দেয়ালে এবং মেঝেতে ফুল দিয়ে এরো চিহ্ন দেখতে পায়,আহাদ সে অনুযায়ী হাটছে আরো কিছুদূর যেতেই দেয়ালের সঁপিসের উপর একটি চিরকুট দেখতে পায়,
আহাদ চিরকুটটা খুলে পড়ে,
“আহহা আসতে এতক্ষণ লাগছে কেন একটু তাড়াতাড়ি আসুন না আমি তো আপনার জন্য অপেক্ষা করতে করতে শুকিয়ে যাচ্ছি।”
লেখাটা পড়ে আহাদ ফিক করে হেসে দেয়।

আহাদ সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসে দরজা খুলে ভেতরে পা রাখতেই আহাদের উপর লাল গোলাপের বর্ষণ শুরু হয়,আর রোজা,সিয়াম,ঐশী চেচিয়ে বলে,
“Happy Birthday To YOU.”

আহাদ ওদের কথায় চমকে যায় আজ যে ওর বার্থডে তা ও ভুলেই গিয়েছিল।
ঐশী আহাদের সামনে এসে আহাদের হাত ধরে ছাদের কর্নারে নিয়ে আসে ঐশী এদিকটা বেলুন,লেটার বেলুন,
ফুল আর ফেয়রি লাইট দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে,আহাদ চার দিকে চোখ বুলিয়ে ঐশীর দিকে তাকায়।
ঐশী মুচকি হেসে বলে,
পছন্দ হয়েছে?

ভিষণ।

আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে আমার কল্পনার থেকেও আরো বেশি সুন্দর লাগছে।

আমার জানকেও খুব সুন্দর লাগছে,আচ্ছা এগুলো করার কি দরকার ছিল।

আমার বরকে আমি সারপ্রাইজ দিয়েছি এতে আপনার কি।
ঐশীর কথায় আহাদ হেসে দেয়।

চলুন এবার কেক কাটি।

ঐশী আহাদকে টেবিলের সামনে দাঁড় করিয়ে আহাদের পাশে দাঁড়ায়,ঐশীর পাশে রোজা দাঁড়ায় আর আহাদের পাশে সিয়াম।
ঐশী টেবিল থেকে নাই’ফটা তুলে আহাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে আহাদের হাতের উপর হাত রাখে।
ঐশী আহাদকে ক্যান্ডেল নেভাতে বললে,আহাদ ফু দিয়ে ক্যান্ডেল গুলো নিভিয়ে কেক কাটে।
ওরা আহাদকে উইস করে,আহাদ কেক কেটে ঐশীকে খাইয়ে দেয়,ঐশীও আহাদকে কেক খাইয়ে দেয়,আহাদ রোজা সিয়ামকে কেক খাইয়ে দেয় ওরাও আহাদকে কেক খাইয়ে দেয়।

সিয়াম রোজা একটা রেপিং করা বক্স আহাদের হাতে দিয়ে বলে,
ভাইয়া এটা আমার আর রোজার পক্ষ থেকে আপনার জন্য ছোট একটা গিফট।

আহাদ “থ্যাঙ্ক ইউ” বলে সিয়ামকে জড়িয়ে ধরে।

কিছুক্ষণ পর,
সিয়াম রোজাকে চোখের ইশরায় কাছে ডেকে কানে ফিসফিস করে বলে,
চলো আমরা চলে যাই ভাইয়া ভাবিকে একান্তে সময় কাটাতে দেই।

হুম চলুন।

সিয়াম রোজা ছাদ থেকে নেমে যায়।

ঐশী টেবিলের উপর থেকে সাউন্ড বক্সের রিমোটটা হাতে তুলে বাটন প্রেস করে মুহুর্তের মাঝে গানের সুর ভেসে আসে,ঐশী রিমোটটা টেবিলের উপর রেখে আহাদের দিকে তাকায় আহাদ ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল।

ঐশী আলতো পায়ে আহাদের কাছে এসে আহাদের
দু কাধেঁর উপর হাত রেখে পা কিছুটা উচ্চু করে।
ঐশী আহাদের কানে ফিসফিস করে বলে,
Congratulation I Love you.
কথাটা কানে যেতেই আহাদের বুক ধক করে উঠে আহাদ অবাক হয়ে ঐশীর দিকে তাকায়,ঐশী আহাদকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহাদকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রেখে মুচকি হাসে।
ঐশী আহাদের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে আলতো ভাবে গাল ছুঁয়ে গেয়ে উঠে,
Jabtak Hai Zameen
Jabtak Hai Aasman

আহাদের হাত ধরে ঘুরে আহাদের বুকে পিঠ ঠেকায়,
Tum Mere Hi Raho
Bas Itna Hi Arman

ঐশী ওর আঁচল দিয়ে আহাদকে জড়িয়ে ধরে,
Tujhe Bandh Lu Main Aanchal Mein
Jaise Chand Rahe Badal Mein
Hum Jachte Hai Aise Jaise
Saje Nain Kajal Mein

ঐশী আহাদের কাছে আসে আহাদ ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে কাঁধে ঠোঁট ছোঁয়ায়,
Mehabooba Main Teri Mehabooba
Mehabooba Main Teri Mehbooba

ঐশী আহাদের হাত ধরে ঘুরে,
Mehabooba Main Teri Mehabooba
Mehbooba O Main Teri Mehabooba

ঐশীর কন্ঠে গাওয়া সম্পূর্ন গানটা আহাদ অনুভব করে,
ঐশী আহাদের কাছে এসে আহাদের মাথার পেছনে হাত দিয়ে চুলে হাত ডুবিয়ে পা একটু উঁচু করে আহাদের ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে