অবুঝ ছাত্রী পর্ব-১৬

0
1937

#অবুঝ_ছাত্রী

#লেখক_IR_Iman_Islam

#part_16

)

তারপর আন্টি আমাকে এক কাপ চা দিলেন।তো আংকেল এবার বলে কি জন‍্য ডেকেছেন।

হুম শুনো তাহলে,,,,,,,,,,,,,,,,?

আমি তো আংকেলের কথা শুনে অবাক কারন,,,

আংকেল বলতেছে যে তুমি নাকি প্রায়ভেট পড়াও।

হুম আংকেল কেনো।

তোমাকে আমার দুইটা ছেলে মেয়েকে প্রায়ভেট পড়াতে হবে।
কিন্তু আংকেল?

কোন কিন্তু না তোমাকে পড়াতেই হবে।আর দেশের যে অবস্হা করোনার ভাইরাসে স্কুল,কলেজ,প্রায়ভেট সব বন্ধু।দূরের কোন টিসার পাওয়া যাচ্ছে না।তাই আমি শুনছিলাম তুমি নাকি ভালো ছাত্র এবং পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশন করো।তাই বলতেছি কি যদি তুমি পড়াতে।
ওকে আংকেল।
তোমার কোন সমস‍্যা হবে না তো বাবা।আর টাকার চিন্তা করিও না।
না আংকেল।
তাহলে কাল থেকে তুমি পড়াতে এসো।আর কখন পড়াতে আসবে তুমি।
ঠিক আছে আংকেল কালকে থেকে পড়াতে আসবো।আর সকাল 8টার দিকে আসবো।
তাহলে কালকে আসিও।
ওকে তাহলে আসি আমি আংকেল।
সন্ধ‍্যা তো হয়ে গেছে,রাতের খাবার টা এখানে খেয়ে যাও বাবা।(আন্টি বলতেছে)
আন্টি আজকে না।অন‍্য একদিন।তাহলে আসি আমি।
ওকে তাহলে যাও।
আংকেল আন্টি আজকে কি যে আমার উপকার করলো কখনো ভূলতে পারবো।বিপদে সব সময় আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ্ আপনার ডাকে সাড়া দিবেই।আমি কতোই না টেনশন হচ্ছিলো কারন রাফিজাকে তো পড়ানো বাদ দিয়েছি তাই সংসার চলতো কিভাবে এটা ভেবে আমি খুব টেনশনে ছিলাম।এখন মন ভরে হাসতে ইচ্ছা করতেছে।আর টাকার সমস‍্যা হবে না।আবার টিউশন পেয়েছি।হাসতে হাসতে বাসায় আসলাম।
বাবা হাসতেছিস কেনো।
এমনি মা।আর আংকেল তাদের ছেলে মেয়েকে প্রায়ভেট পড়াতে বলতেছে।পড়াবো কি মা।কারন মাকে বলে সব কিছু করি আমি তাই মাকে বললাম।মাকে এখনো বলি নাই যে আমি রাফিজাকে পড়াতে যাই না আর।
ঠিক আছে পড়া তাহলে।
ওকে মা।খুশির ঠেলাই মাকে জরিয়ে ধরে বলতেছি সোনা মা আমার।
পাগল ছেলে আমার।
তারপর রূমে এসে শুয়ে পড়লাম।এখন শুয়ে থাকা ছাড়া কি করবো কোন কাজ নাই।হঠাৎ রাফিজার কথা মনে পড়লো পাগলীটা কি করতেছে।আমার কথা কি মনে পড়ে ওর।ফোনটা তো এখনো খুলি নাই,দেখি একটু খুলে।ফোনটা খুলার সাথে সাথে অনেক গুলো মিচকল আর মেসেজ।মেসেজ দেখে তো আমি অবাক মানুষকে এতো কল আর মেসেজ দেয় নাকি।মেসেজ গুলো দেখতেছি
কেমন আছেন স‍্যার।আমার ফোন ধরতেছেন না কেনো।আপনার ফোন বন্ধ কেনো।প্লিজ স‍্যার আমার ফোনটা ধরেন আপনার কি হয়েছে ইত্যাদি অনেক মেসেজ।মেসেজ দেখে মনে হচ্ছে পাগলিটা আমাকে অনেক ভালোবাসে।কিন্তু এই ভালোবাসা তো সমাজ মেনে নিবে না।তাই আমি ওর কাছ থেকে দূরে আসলাম।
এদিকে রাফিজাকে পরের দিন ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছে।আজকে রাফিজা আরো বেশি পাগলামি করতেছে।বলতেছে আমি এই বিয়ে করবো না।কিনতু ওর কথা কে শুনে থানার ওসির মেয়ে বলে কথা।

পার্লার থেকে লোক এসেছে তাকে সাজাতে।তাকে লাল টুকটুকে বেনারশি সাড়ি পড়িয়ে ছে হাল্কা মেকাপ ইত‍্যাদি অনেক কিছু দিয়ে বউ সাজিয়েছে।তার ইচ্ছা না থাকাও তাকে অন‍্যের বউ সাজতে হচ্ছে।মানুষ তো জীবনে একবারে মন থেকে ভালো বাসে কাউকে না কাউকে কিন্তু সবার ভালোবাসা পূর্নতা পায় না।কিন্তু রাফিজার ভাগ‍্যে কি আছে এটা আমিও জানি না শেষ পর্যন্ত কি হবে।
কি মেয়েকে সাজানো হয়েছে।(মমিন চৌধুরি মানে রাফিজার বাবা )
জ্বী আংকেল আর একটু।(পার্লারে একটা মেয়ে )

ওকে তারাতারি রেডি করো।আমার মেয়েকে তো আজকে পরীর মতো লাগছে।
জ্বী মামা রাফিজাকে আজকে অনেক সুন্দর লাগতেছে।(মিম আপু )
ঠিক আছে।তোমরা রাফিজাকে সাজাও আমি নিচে যাচ্ছি।
ওকে আংকেল জান।
তারপর রাফিজাকে পার্লারের মেয়েরা সাজিয়ে চলে গেলো।রূমে শুধু ওর মামা তো বোন আর রাফিজা আছে।সবাই নিচে চলে গেছে।
রাফিজা তোকে আজকে অনেক সুন্দর লাগতেছে (মিম আপু)
চুপ করে আছে।
এই রাফিজা।আপু আমার শরীলে হাত দেওয়ার কারনে আমার হুস আসলো।
হুম আপু।
কি ভাবতেছিস।
কিছু না আপু।
তোকে আজকে অনেক সুন্দর লাগতেছে।আজকে তোকে দুলাভাই দেখলে একবার পাগল হয়ে যাবে।

ধন‍্যবাদ আপু।আপু শুধু বক বক করতেছে।আমার এক দম ভালো লাগতেছে না আপুর কথা।আমি চিন্তায় মরতেছি আর ওনি খালি বক বক করতেছে।
আপু তোমার বলা শেষ হয়েছে।
হুম কেনো রে।
আমাকে একটু একা থাকতে দাও তো।আমার ভালো লাগতেছে না।
ঠিক আছে আমি নিচে যাইতেছি।
ওকে যাও তো।তার পর আপু চলে গেলো মনে হচ্ছে আমি বাচলাম।কিন্তু আমার ফোনটা কই স‍্যার কে দেখি লাস্ট একটা ফোন দেই।এবার ফোন দিয়ে দেখি ফোন ঢুকতেছে।ফোন ঢুকা দেখে আমার একটু খুশি লাগতেছে কিন্তু ফোন ধরতেছে না।

ফোনের রিংটনের শব্দ শুনে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।ঘড়িতে দেখি রাত নয়টা বাজতেছে।ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রাফিজা দুইবার ফোনদিয়েছে।ফোনটা কি ধরবো না ধরবো ভেবে পাচ্ছি না।না আমাকে ফোনটা ধরতে হবে ওকে বলতে হবে আমি তাকে আর পড়াতে পারবো না।দেখতেছি আবার ফোনটা বাজতেছে এবার ফোনটা রিচিপ করলাম,,,

আসসালামু লাইকুম স‍্যার আপনি ঠিক আছেন।কেমন আছে।কি হয়েছে আপনার।আমি তো শেষ।
ওলাইকুম আসসালাম আরে এক সাথে এতো প্রশ্ন করলে কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দিবো।আমি ভালো আছে তুমি কেমন আছো।
কথা না বলে ফোনের ওপাশ থেকে শুধু কান্নার আওয়াজ আসতেছে।
কি হয়েছে রাফিজা তুমি কান্না করতেছো কেনো কি হয়েছে।ওর কান্নার শব্দ শুনে মনে হচ্ছে আমার বুকে কে যেনো তির দিয়ে ঘুতা দিচ্ছে আর চিন চিন ব‍্যথা হচ্ছে।
এই কথা বলে কান্নার আওয়াজ আরো বৃদ্ধি পেলো মনে হচ্ছে।
আরে বলবে তো এতো কান্না করতেছো কেনো।না বললে ফোনটা কেটে দিচ্ছি।
স‍্যার ফোন কাটবেন না প্লিজ।আপনার সাথে আমার কথা আছে।এটাই আমাদের শেষ কথাও হতে পারে।

আর কি বলতেছো পাগলামি করো না।আমারো তোমার সাথে কথা আছে।তাহলে তুমি আগে বলো।

আজকে আমার বিয়ে।

কি বলতেছো এইটা।(আমি ত অবাক এটা কি শুনতেছি আমী)

হুম।
এটা তুমি মিথ‍্যা বলতেছো।
না আমি সত‍্যি বলতেছি।আজকে আমার বিয়ে আপনি আমাকে এখান থেকে নিয়ে জান।আমি শুধু আপনাকে বিয়ে করতে চাই।আমাকে নিয়ে জান না হলে আমি আত্মহত্যা করবো।আমি এই বিয়ে করবো না।

রাফিজা পাগলামি করো না।আর তোমার বাবা মা সব সময় চাইবে যে মেয়েকে বড় ঘরে বিয়ে দিতে।কখনো কারো মা বাবা চাইবে না যে তাদের মেয়েকে একটা গরীব ঘরে বিয়ে দিতে।আমি তো গরীব ঘরের ছেলে।আমাদের নুন আনতে পন্তা ফুরায় তাদের গড়ে কি তোমার বাবা বিয়ে দিবে।তারা সবসময় চাইবে তাদের মেয়ে শুখে থাক।
আমি তো তখনেই শুখি হবো যখন আপনাকে বিয়ে করবো।কেনো কেউ বুঝতেছে না আমার কষ্ট টা।আপনি আমাকে এখান থেকে পালায় নিয়ে জান।

এটা হয় না রাফিজা।আমি তোমাকে পালায় নিয়ে কই যাবো বলো তোমার বাবা ঠিক আমাদের ধরে নিয়ে যাবে।আমরা দুই জনে পরিস্থিতির শিখার।এটাই আমাদের মানতে হবে।তুমি তাকে বিয়ে করো যাকে তোমার মা বাবা পছন্দ করেছে।

আমি এই বিয়ে করবো না।পারলে আত্মহত্যা করবো তাও না।ওকে বায় ভালো থাকবেন।এটা আমাদের শেষ কথা।

এই রাফিজা পাগলামি করো না।কথা শেষ না হতে কল কেটে দিয়েছে।আবার আমি ফোন দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ।

তো মমিন তোর মেয়েকে নিয়ে আয়।কতক্ষন বসে রাখবি।(ছেলের বাবা )

হুম কতোক্ষন বসে রাখবেন ভাইজান।(ছেলের মা)

আরে আর একটু।রাফিজার মা রাফিজাকে নিয়ে আসো।
ওকে আনতেছি।তোমরা বসে আর একটু গল্প করো।
ওকে।
রহিমা বেগম মেয়েকে ডাকতে গিয়ে দেখে দরজার সামনে কিসের জেনো রক্ত।এটা আবার কিসের রক্ত।রহিমা বেগম দরজা খুলে দেখে তার মেয়ে পড়ে আছে।আর পূরো রূমটা রক্তে লাল হয়ে আছে।
রাফিজা কি করেছিস মা এটা।তুই আমাদের ছেড়ে যেতে পারিস না।তুই কেনো করলি এটা।জোড়ে জোড়ে কান্না করোতেছে আর বলতেছে ।
(রাফিজা সুসাইট করেছে।হাতে রগ কেটে দিয়েছে।)

এই কথা নিচে শুনে রাফিজার বাবা উপরে চলে এসেছে।এসে দেখে রাফিজার মেজেতে সুয়ে আছে আর পূরো রূম রক্তে লাল হয়ে আছে।মেয়ের এই অবস্হা দেখে সাথে সাথে ওখানে পড়ে যায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে