হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-১০

0
1139

হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-১০

লেখা- sharix dhrubo

অফিস থেকে ফোন। আর্জেন্ট অফিসে যেতে বলা হয়েছে। যে যেখানে যে অবস্থায় আছো সেখান থেকে সোজা অফিসে চলে আসতে বলা হয়েছে।
হঠাৎ এমন জরুরী তলব তাও এমন সময়। ইমার্জেন্সি ছাড়া এমন ভাবে তো ডাকের কথা নয়।
এখনই যেতে হবে, রাফি তাই উকি দিলো ভেতরের রুমে রুহীকে খুঁজতে। ভেতরের রুমে গিয়ে দেখে সেখানে পুরো একটা সেল্ফ ডকুমেন্টস এ ভর্তি আর রুহী হাটু ভাজ করে বসে মেঝের কাছাকাছি তাঁক থেকে নথি ঘাটছে। মেয়েটাকে এত ডেডিকেশন দিয়ে খুজঁতে দেখে রাফি ভাবলো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে মহাভারত অসুদ্ধ হয়ে যাবে না আবার ওইদিকে এমন সিরিয়াস কল রাফি তার পুরো চাকরীজীবনে পায় নি। শেষমেশ না পেরে রুহীকে উদ্দেশ্য করে বললো

রাফি – মিস রুহী, আমাকে এখনই একটু বের হতে হবে। অফিস থেকে জরুরী কল এসেছে।

রুহী – (বিরক্তিভরা দৃষ্টি দিয়ে) ফাজলামি হচ্ছে!!!!চুপচাপ অপেক্ষা করেন আমি ফাইলগুলো খুজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত কোথাও নড়াচড়া করবেন না। (খোঁজায় মন দিয়ে) আমিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছেড়ে আপনার সাহায্য করছি।

রাফি – দেখুন এটা দেশের ……..

রুহী – (কথা থামিয়ে দিয়ে) জানি জানি, হুহ, দেশপ্রেমিক মহাপুরুষ ।
রাফি গাড়ি নিয়ে এসেছিলো তাই ভাবলো বেশী সময় লাগবে না যেতে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফাইলটা নিয়ে যাওয়াটাই বেটার হবে।
এমন সময় রুহীর ফোনটাতে একটা মেসেজ এলো। রুহী ফোনটা বের করে কি যেন চেক করলো। ফোনটার দিকে চোখ আটকালো রাফির। রাফির মতন একই ফোন ইউজ করে মেয়েটা। মেয়েলী ধরনের পিংক কালারের Blackberry Glide।

রুহী – (ফোন চেক করতে করতে)আচ্ছা কি যেন বলছিলেন আপনি ব্যস্ত না কি?

রাফি – হ্যাঁ, মানে অফিস থেকে………..

রুহী – তো যান, দেশের ডাকে পিছু হাঁটতে নেই। আপনি একটা কাজ করুন আমাকে আপনার মেইল আইডি দিয়ে যান। আমি ফাইলগু‌লো খুজে কালকের ভেতর আপনাকে পাঠিয়ে দিবো। আমার টুনুমুনু আমাকে ডাকছে। আমাকে এখনই যেতে হবে।

রাফি- টুনুমুনু?

রুহী – হু, গেম খেলতে খেলতে একটা কঠিন লেভেলে আটকে গেছে। এখন যদি আমি হেল্প না করি তো আমাকে রাতে ঘুমাতে দেবে না। (উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে) দিন আপনার ইমেইল আইডিটা দিন।
রাফি কিছুটা বিরক্ত হলেও মনে মনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে নিজের পার্সোনাল ইমেইল আইডিটা রুহীকে দিলো কারন কেসটা এখন আনঅফিসিয়াল।
রুহী তার মোবাইলে ইমেইল আইডিটা নোট করে নিলো।

রুহী – তাহলে দৌড় দেন এখন। দেশ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।

রাফি – তাহলে কবে…….

রুহী – (কথা থামিয়ে দিয়ে) কাল সকালেই আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। এখন তাড়াতাড়ি বের হন অফিস থেকে। আমাকে এখনই বাসায় যেতে হবে, নাহলে তুলকালাম বেধে যাবে। (বলেই রাফিকে হাত দিয়ে বাইরে যাবার ইশারা করতে থাকলো)
রাফি আর সাতপাচ না ভেবে বাইরে চলে এলো। রুহী অফিস বন্ধ করে একপ্রকার দৌড় দিলো। রাফি অফিসে কি ঘটলো তা ভাবতে ভাবতে গাড়িতে উঠে সোজা অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
অফিসে এসে রাফির চোখ তো কপালে উঠে গেলো। সবাই ছুটাছুটির উপর আছে। রিসিপশনিষ্ট ললনার কাছে কারন জানতে চাইলে সে সোজা ডাইরেক্টর স্যারের অফিসে চলে যেতে বললো। অবস্থা নাকি সিরিয়াস।
রাফি সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে পেরে সোজা স্যারের রুমে উপস্থিত হলো।

ডাইরেক্টর – (উদ্বিগ্ন ও বিমর্ষ) রাফি, অনেক বড় খারাপ সংবাদ আছে। দেশের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেছে।

রাফি – কে বা কারা যেন ন্যাশনাল রিজার্ভ সার্ভার ডাউন করে দিয়ে আমাদের ন্যাশনাল রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক রিজার্ভ চুরি করে নিয়ে গেছে আর কয়েক ভাগে ভাগ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নামি বেনামী একাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছে। আমাদের সার্ভার পুরোটা ডাউন করে দিয়েছে যেন আমরা তাদের ট্রানজেকশন ট্রাক না করতে পারি।
রাফি বুঝলো হ্যাকাররা Distributed-Denial-of-Service-Attack (DDoS) দিয়ে সার্ভারটিকে এতবার হীট করেছে যে অতিরিক্ত প্রেশার সহ্য করতে না পেরে সার্ভার ডাউন হয়ে নন এক্সেসেবল হয়ে গেছে। সার্ভারকে রিএক্টিভ না করা পর্যন্ত কোন তথ্য বের করা সম্ভব হবে না। তার রাফি তার পুরাতন টিমকে আবার এক করলো। টিমের দুইজনকে সার্ভারের ড্যামেজ এনালাইসিস করতে বললো এবং অন্য দুইজনকে এই কাজ করার দায় কেউ স্বীকার করেছে কি না তা খুঁজতে বললো।

রাফি – Ok guys, you know what to do. Get back to work.

আধা ঘন্টা পর
রাফি – সার্ভারের কি অবস্থা এখন? রিএক্টিভ করতে কতক্ষণ সময় লাগবে?

– স্যার, সার্ভারের ম্যাক্সিমাম ড্যামেজ হয়ে গেছে . রিএক্টিভ করা কোনভাবে হয়তো সম্ভব কিন্তু কিছু ফিজিক্যাল পার্টস পরিবর্তন করলে ১০০% অনলাইন করা সম্ভব।

রাফি – কতক্ষণ সময় লাগবে?

– ফিজিক্যাল পার্টস চেন্জ হওয়ার ২ ঘন্টা বা তার থেকে কম সময়ের ভেতর রিএক্টিভ করা সম্ভব।
রাফি – সার্ভার লোকেট করে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নাও। Do it fast.

– Yes sir, consider it done.
রাফি – (অন্য টিমকে উদ্দেশ্য করে) এখনঅব্দি কোন হ্যাকার সংগঠন কি দায় স্বীকার করেছে?

– স্যার, একদল হ্যাকার তাদের সাইটে একটা মেসেজ আপলোড করেছে যার অর্থ Loss recovered. আর সাথে আমাদের সার্ভার ডাউন হবার ঘটনা ফলাও করে দেয়া যেখানে আমরা এখনো অফিশিয়ালী কোন ধরনের প্রেস রিলিজ করি নি।

রাফি – তাহলে তারাই আমাদের টার্গেট, ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করে যত দ্রুত সম্ভব আমাকে রিপোর্ট জানাও।
রাফি দুই টিমকে কাজে লাগিয়ে নিজে চেষ্টা করতে থাকলো সার্ভারটিকে রিএক্টিভ করার।
প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টার পর রাফি সার্ভারটিকে রিএক্টিভ করতে পারলো কিন্তু বেশীক্ষন সময়ের জন্য নয়। অল্প সময়ের ভেতরই সার্ভারটি আবার ডাউন হয়ে যাবে এবং এরপর আর ফিজিক্যাল পার্টস চেন্জ না করে আর সার্ভার চালু করা সম্ভব হবে না।
রাফি যতটা দ্রুত সম্ভব ডেটা ডাউনলোড শুরু করে দিলো। বিশেষ করে এক্সেস লগ যেখানে এই সার্ভার এক্সেস করা সকল আইপি এড্রেসের রেকর্ডস থাকে। ডাউনলোড চলতে থাকা অবস্থায় রাফি সার্ভাটির ডায়গনস্টিক স্ক্যান ও করতে থাকলো যেন কি কি ডেটা ড্যামেজ হয়েছে তার একটা শর্টলিষ্ট পাওয়া যায়।
ডাউনলোড প্রায় শেষ তখনই সিস্টেম একটা আনঅথরাইজড লগইন শো করে সার্ভারটিতে। রাফি এনালাইসিস করতে যাবে তখনই আবার সেই কোডের মেসেজ পায়। এইকয়দিনে এই কোডেড মেসেজগুলোর সাথে রাফি খুব পরিচিত হয়ে গেছে। আর ১০ জন এ্যানালিষ্টের কাছে এগুলো ইরর মেসেজ মনে হবে, কিন্তু রাফি খুব ভালো করেই জানে এই ধরনের আজুবা কমিউনিকেশন মাফিয়া গার্ল ছাড়া আর কেউ করে না।
ডিকোডিং শুরু করলো রাফি। ডিকোডিং শেষ হতে হতে সার্ভারটা ডাউন হয়ে গেলো। ডিকোডেড মেসেজটা অনেকটা এরকম।
#You_have_to_walk_your_own_path_Mafia_boy.
#I_can_only_show_you_the_way.
#mafia_girl
দিয়ে একটা নতুন সার্ভার লোকেশন অর্থাৎ আইপি এড্রেস পেল রাফি।
আইপি এড্রেস অর্থাৎ সার্ভারটি একসেস করলো রাফি। সার্ভার টাইপটা রাফির পরিচিত। এধরনের সার্ভার নর্মালি ব্যাকআপ সার্ভার নামে পরিচিত।
যদি কখনো প্রাইমারি সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন এই সার্ভারগুলো সেকেন্ডারী বা ব্যাকআপ সার্ভার হিসেবে কাজ করে নিরবিচ্ছিন্ন সার্ভিস প্রদান করে। কিন্তু হ্যাকাররা এত দ্রুত প্রাইমারি সার্ভারে DDoA এ্যাটাক চালিয়েছে যে ব্যাকআপ সার্ভারটি এক্টিভেট হওয়ার সময়টা পর্যন্ত পায় নি। রাফি ব্যাকআপ সার্ভারটি এ্যনালাইসিস করে দেখে প্রাইমারি সার্ভারের প্রায় সব ডাটাই এই ব্যাকআপ সার্ভারে সংরক্ষিত আছে শুধু একটা ফাইল অতিরিক্ত। ফাইলটি কোন লিষ্টেই ইনক্লুড নেই। ক্রিয়েশন টাইম ও ১০ মিনিট আগে।
রাফি ভাবলো হয়তো মাফিয়া গার্ল ওর জন্য কোন ক্লু রেখে গেছে। ফাইলের ভেতর কিছু ডকুমেন্টস ও একটা প্রোগ্রামিং পেলো রাফি। ডকুমেন্টসগুলো কয়েকজন মানুষের বায়োডাটা সহ তাদের সাইবার কর্মকান্ডের হিষ্টরী। অন্য ফাইলে কিভাবে হ্যাকাররা কাজটি সফল করলো তার ডিটেলস এবং সব শেষে একটা প্রোগ্রামিং পেলো যার নাম Use this virus to truck your money.
রাফি বুঝলো মাফিয়া গার্ল একটা ট্রাকিং ভাইরাস কোডেড করে দিয়েছে চুরি হওয়া ইলেকট্রনিক মানির সাথে। অর্থাৎ এই ছোট্ট ভাইরাসটি হ্যাকারদের চুরি করা টাকার সাথে এমন ভাবে কোডেড করে দেয়া যাতে ওই মূল কারেন্সি এমাউন্ট কয়টি ভাগে, পৃথিবীর কয়টি দেশের, কয়টি ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে বা হচ্ছে , কোথায় কোথায় কারেন্সি খরচ হচ্ছে এবং কয়বার হাতবদল হচ্ছে সাথে কোন একাউন্ট থেকে কত টাকা কোন দেশীয় কারেন্সি তে উত্তোলন হচ্ছে তা সব জানা যাবে।
রাফি ভাইরাসটি রান করলো আর সাথে সাথে লিষ্টিং হতে থাকলো বিভিন্ন দেশের ব্যাংক ও একাউন্ট নাম্বার এবং একাউন্ট ওনারের নাম, বিভিন্ন ক্যাসিনো এবং হোটেল লিষ্ট।
রাফি ক্যালকুলেশন করে দেখলো এই ভাইরাসটি প্রতি পয়সার উপর নজর রাখছে এবং রিয়েল টাইম আপডেট দিচ্ছে লিষ্টে।
রাফি ছুটে গেলো ডাইরেক্টর স্যারের কাছে।

রাফি – (অতি উত্তেজনায়) স্যার, মাফিয়া গার্ল।

ডাইরেক্টর – (প্রশ্নসূচক বিব্রতি নিয়ে)what! She stole the money!!

রাফি – (হেসে দিয়ে) no sir, she saved it all.
ডাইরেক্টর স্যার রাফির সাথে সাথে বের হলেন কন্ট্রোল রুমের উদ্দেশ্যে।
রাফি ভাবলো আজ সে প্রমাণ করতে পারবে যে মাফিয়া গার্লই সাহায্য করেছে এবং করে আসছে এতদিন ধরে।
ডাইরেক্টর স্যার রাফির ল্যাপটপে ঝুকে পড়লেন এবং ভাইরাসটির কর্মকান্ড দেখতে থাকলেন।
ডাইরেক্টর – (উৎসাহে হাততালি দিতে দিতে) বাহ রাফি। তুমি নিজের কোডনেম দিয়ে ট্রাকিং ভাইরাস ও তৈরী করে ফেলেছো । Woah, Rafi. I’m truly proud of you.

রাফি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। নিজের নামে ভাইরাস! কই ভাইরাসের নাম তো রাফি বা মাফিয়া বয় ছিল না। চট করে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে দেখলো ভাইরাসটি রিনেম হয়ে মাফিয়া বয় হয়ে গেছে। কিভাবে! !!!!!
রাফি জোর দিয়ে ভাবলো যে ভাইরাসটির নাম কখনোই মাফিয়া বয় ছিলো না, ছিল Use this virus to truck your money. তাহলে কিভাবে চেন্জ হলো।
কিছুক্ষণ ভাবার মধ্যে রাফির মোবাইলে একটা টেক্সট আসে। টেক্সট ওপেন করে মেসেজটা দেখেই রাফি চোখ ছানাবড়া করে বসে পড়লো চেয়ারের উপরে।
টেক্সটটি ছিলো
I FOUND YOU, Mafia boy.
Mr. Rafiqul Islam Rafi.
Cyber Crime Analysist Officer(CCAO)
National Security Agency
Mafia Girl
রাফি কিছুতেই বুঝতে পারছিলো না কিভাবে কি হলো। কিভাবে মাাফিয়া গার্ল ধরে ফেললো রাফিকে!!!!
অবশেষে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলেই রাফির কাছে সব ক্লিয়ার হয়ে যায়।
ট্রাকিং ভাইরাসটি পেয়ে রাফি এতটাই উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলো যে কোন সেফটি ডায়গনসিস রান না করেই ভাইরাসটি নিজের ল্যাপটপে চালিয়ে দিয়েছিল। আর এই ভাইরাসটি যে শুধু ট্রানজেকশন ট্রাক করে তা নয়, কে কে এই ভাইরাসটি ব্যবহার করছে তার ডিটেইল ইনফরমেশন ও ট্রান্সমিট করেছে ক্রিয়েটর মাফিয়া গার্লের কাছে। যে কারনে মাফিয়া গার্ল রাফির অরিজিনাল আইপি ট্রাক করতে পেরেছে আর ল্যাপটপে ঢুকে ভাইরাসটির নাম পর্যন্ত বদলে দিয়েছে!!!!!!!
এদিকে রাফির সাফল্য নিয়ে অফিসে হৈচৈ পড়ে গেলো যে রাফি অপরাধীদের ট্রাক করতে সক্ষম হয়েছে আর অন্য দিকে রাফি মাফিয়া গার্লের সামনে এক্সপোজ হয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে বসে থাকলো।
সবাই এসে ঘুরে ফিরে রাফিকে কংগ্রাচুলেট করছে আর রাফিও মলিন চেহারায় ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
উৎসাহ কমলে রাফি এসে বসে তার ল্যাপটপের সামনে। নিজের ল্যাটপটা দিকে তাকিয়ে নিজেরই কেমন যেন লাগলো রাফির। নিজের সামান্য ভূলের জন্য আজ নিজের আইডেন্টিটি কমপ্রোমাইজ হয়ে গেলো মাফিয়া গার্লের কাছে। অনেকটা ভুত নিজেই ওঝাকে ঝেড়ে দিলো টাইপ। রাফি স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে আছে আর দেখছে ভাইরাসটি কতটা আপন মনে চোরগুলোর পকেটে সিল মেরে লিষ্টিং করতেছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর রাফির চোখ আটকাতে লাগলো কয়েকটি ব্যাংক একাউন্ট। সব টাকাগুলো বিভিন্ন দেশের ব্যাংক একাউন্ট ঘুরে হাতে গোনা কয়েকটি একাউন্টে জমা হচ্ছে।
এমন সময় সরাসরি রাফি পার্সোনাল মেইল আইডিতে একটা মেইল আসলো। কোন মেইল আইডি নেই সেন্ডারে। মেইল ওপেন করে রাফির কপালের শেষ ভাজটাও পড়ে গেলো।

দেশের স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রনালয় এবং ন্যাশনাল রিজার্ভ সিষ্টেমের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের চুরি রিলেটেড কনভার্সেশন রেকর্ডিংস, কিছু ইললিগ্যাল ডকুমেন্টস কারচুপি করে লীগাল করার প্রুফ, হ্যাকার ভাড়া করা , বিদেশী মদদ দাতাদের লিষ্ট ও তাদের সাথে এইসব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যোগসাযোস সহ কয়েকটি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার যার মালিক পরোক্ষভাবে ঔসব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ও তাদের মদদদাতাদের।

মেইল বডি পড়া শুরু করলো রাফি। তাতে লেখা
“দেশের রক্ষকই ভক্ষক। সকল প্রমাণ তোমার হাতে তুলে দিলাম। তাদেরকা শাস্তি দেয়ার দায়িত্ব তোমার। আর হ্যাঁ, আমার অস্তিত্ব প্রমান করতে যেও না, তোমার অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।”
#mafia_girl

রাফি ডাটাগুলো এক এক করে চেক করতে থাকে। হঠাৎ মেইল বডির দিকে চোখ যায় রাফির। মাফিয়া গার্লের নিজের লেখা মেইইল যেন সে নিজেই আবার ব্যাকস্পেস দিয়ে মুছে দিলো।
ভয় পেলো রাফি। তাহলে কি মাফিয়া গার্ল আমার মেইলে বসে ছিলো এতক্ষণ!!!

এক হ্যাঁচকা টানে ল্যাপটপ থেকে ল্যান কানেকশন খুলে নিলো রাফি। নাহ, সারাজীবন মাফিয়ার মত সাইবার দুনিয়ায় রাজ করা মাফিয়া বয় আজ মুরগির মত অফলাইন হয়ে বসে পড়লো মাফিয়া গার্লের জন্য।
কি করবে না করবে কিছুই ভেবে পায় না রাফি। জীবনে এর আগে কখনো এমন সিচুয়েশন তৈরী হয় নি, আজ তাড়াহুড়া এবং মাত্রাতিরিক্ত টেনশনে এমন একটা ভূল করে বসলো যার পরিনাম ভাবতে পারছে না রাফি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে