গল্প:- দুলহানীয়া পর্ব:-(০৩)
লেখা:- AL_Mohammad_Sourav
!!
আপনার মেয়ে কোনো দিন মা হতে পারবেনা! আর যদি কোনো দিন মা হতে চাই তাহলে সে বেচে থাকার সম্ভবনা খুবিই কম আর ৯০% মৃত্যু অনিবার্য্য। (ডাক্তার)
শ্বশুড়:- কি বলছেন ডাক্তার কেনো কি হয়ছে আমার মেয়ের?
ডাক্তার:- মাতৃ স্থানে ছোট একটা টিউমার হয়ছে যদি এখন অপেরেশন না করেন তাহলে আরো বড় ধরনের বিপদ হতে পারে আর রিপুটে তো তাই বলছে! (শ্বাশুমা শ্বশুড় দুজনে কান্নায় ভেংগে পড়ছে আমি ওনাদের সান্তনা দিতেছি)
আমি:- আঙ্কেল আন্টি আপনারা কোনো চিন্তা করিয়েন না আশফির কিছুই হবেনা। দেখবেন সব কিছু আগের মতই হয়ে যাবে। আচ্ছা ডক্টর অপেরেশন কবে করতে হবে?
ডাক্তার:- ১০ দিনের মধ্যে আরো কিছু টেষ্ট দিবো যদি সব টেষ্টে রিপুট একিই থাকে তাহলে অপেরেশন করতে হবে।
আমি:- আচ্ছা তাহলে কি আশফির সাথে এখন দেখা করতে পারবো?
ডাক্তার:- হ্যা পারবেন আর একটা কথা বেশিক্ষন সময় দিতে পারবেন না।
আমি:- ঠিক আছে! আঙ্কেল আপনারা একটু বসেন আমি আশফিকে দেখে আসছি। কেবিনে ঢুকে দেখি আশফি শুয়ে আছে চেহারাটা একদম মলিন হয়ে আছে। আমি আশফির পাশে বসে ওর হাতটা শক্ত করে ধরেছি। আশফি আমার দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিয়েছে। ওর চোখের পানি দেখে মনে হয়নি ও মিথ্যা কথা বলছে বা অভিনয় করতেছে।
আশফি:- বলে ছিলাম না আপনাকে আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নাই। কিন্তু এখন তো হবে ওল্টা আপনি নিজেই আমাকে বিয়ে করতে চাইবেন না।
আমি:- আগে তুমি সুস্থ হয়ে নাও এর পর দেখা যাবে আর আমি তোমাকে সারা জীবন ভালোবাসবো তুমি মা না হতে পারলেও।
আশফি:- এখন তো সান্তনা দেওয়ার জন্য এই কথা গুলি বলছেন তাইনা?
আমি:- নাহ আমি তোমাকে সত্যিটা বলছি আগে যেমন তোমাকে ভালোবাসতাম ঠিক এখন থেকে আরো বেশি ভালোবাসবো। আচ্ছা তুমি রেস্ট নাও বলে চলে আসতেছি আশফি পেছন থেকে আমার হাত ধরেছে। আমি তো পুরাই অভাক হয়ে তাকিয়ে আছি আশফির দিকে।
আশফি:- আরেকটু সময় আমার পাশে বসেন আমার খুব ভয় লাগছে।
আমি:- আমি আছি তোমার পাশে! আশফির মাথায় হাত ভুলিয়ে দিতেছি আশফি চোখ বন্ধ করে রাখছে এভাবে প্রায় ১০ মিনিট হাত ভুলিয়ে দিয়েছি এখন আশফি ঘুমিয়ে গেছে। ওর কপালে আলতু করে আদর করে দিয়েছি। আশফির ঘুমন্ত চেহারাটা অনেক কিউট লাগছে কিছুক্ষণ পর শ্বশুড় শ্বাশুমা আব্বা আম্মা সহ ডাক্তার এসে বলতেছে!
ডাক্তার:- আপনারা চাইলে রুগিকে বাড়ীতে নিতে পারেন। অপেরেশনের দুইদিন আগে ভর্তি করালে হবে আমি কিছু মেডিসিন দিতেছি সময় মত খেয়ে নিতে বলবেন কেমন?
শ্বশুড়:- ঠিক আছে!
শ্বাশুমা:- আশফি উঠো তোমাকে বাড়ীতে নিয়ে যাবো দুইটা ডাক দিতেই চোখ মেলেছে। সবাই মিলে আশফিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে এসেছি।
আব্বা:- বেয়াই সাহেব আপনি কোনো চিন্তা করিয়েন না সব ঠিক হয়ে যাবে। আঙ্কেল আব্বার কথায় ভরসা খুঁজে পেয়েছে। আশফিকে নিয়ে ওরা চলে গেছে আমরা আমাদের বাড়ীতে এসেছি। ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে রাত ২টা বেজে গেছে সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হাল্কা নাস্তা করে আশফির বাবার অফিসে এসেছি। আমাকে দেখে আঙ্কেল অনেক খুশি হয়েছে।
আঙ্কেল:- আরে আলিফ বাবা আমার এসেছো? আসো আমার সাথে নাও তুমি এই চেয়ারে বসবে এখন থেকে। আর ও হচ্ছে মিস সায়লা তোমার পার্সনাল সেক্রেটারি।
আমি:- ঠিক আছে! আপনি দুআ করবেন যাতে করে আমি আপনার সম্মান রাখতে পারি।
শ্বশুড়:- ঠিক আছে! আর সায়লা তুমি আলিফকে সব কিছু বুঝিয়ে দিবে কেমন?
সায়লা:- ওকে স্যার।
শ্বশুড়:- আলিফ তাহলে এখন কাজ দেখো আমি একটু বের হবো আমার এক ক্লাইন্টের সাথে দেখা করতে হবে।
আমি:- ঠিক আছে! ওনি চলে গেছে আমি কাজ গুলি কিছুটা বুঝার চেষ্টা করতেছি। আশফিকে আজকে অনেক ফোন করেছি কিন্তু রিসিব করছেনা। কিছু কাজ বুঝে নিলাম বিকালে অফিস থেকে বেরিয়ে আশফিদের বাড়ীতে গেলাম। দেখি আশফি নিচে বসে মটু পাতলু দেখছে আর হাসতেছে। আমাকে দেখে বসা থেকে উঠে উপড়ে দিকে হাটা দিয়েছে আমি গিয়ে ওর হাত ধরেছি।
আশফি:- আমার হাত ধরছেন কেনো? ছাড়েন বলছি তানা হলে ভালো হবেনা কিন্তু?
আমি:- কালকে তো তুমি হাত ধরার অনুমতি দিয়েছো এখন এমন করছো কেনো?
আশফি:- ছাড়েন বলছি বলে হাত টান মেরে ছাড়িয়ে নিয়েছে। আপনার সাহোস হয় কি করে আমার হাত ধরার আর এই বাড়ীতে এসেছেন কেনো?
আমি:- এসেছি তোমাকে দেখতে তুমি কেমন আছো?
আশফি:- দেখা হয়ছে এখন চলে যান! আর যতদিন বিয়ে না হচ্ছে ততদিন এই বাড়ীতে আসবেন না বলে দিলাম।
আমি:- তুমি এমন ভাবে কথা বলছো কেনো? তোমার বাবা মা কোথায়?
আশফি:- এর চেয়ে ভালো ব্যবহার পাওয়ার যোগ্যনা আপনি যান এখুনি বেড়িয়ে যান।
আমি:- ঠিক আছে যাচ্ছি! আর কোনো কথা না বলে সোজা বেড়িয়ে এসেছি। বাড়ীতে এসে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি। এভাবে নিয়ম করে আশফিকে ফোন, অফিস, বাড়ীতে চলে গেছে ৬ দিন। আজকে মনটা খুব খারাপ তাও অফিসে এসেছি কাজ করতেছি তখনি মিস সায়লা এসেছে।
সায়লা:- স্যার আসবো?
আমি:- হ্যা আসেন বলেন কি বলবেন?
সায়লা:- যদি একটু কাজ গুলি দেখে দিতেন?
আমি:- হ্যা দেন আমি দাঁড়িয়ে আছি যখনি খাতা গুলি দিতে ছিলো তখনি শাড়ীর সাথে পা লেগে খাতা অন্য দিকে কিন্তু সায়লা আমার বুকের মাঝে এসে পড়েছে। আমি সয়লাকে সরিয়ে দিয়েছি কিন্তু ওর শাড়ীর আচল আমার হাতে ঠিক তখনি হুব শ্বশুর আর আশফি আমার রুমে এসে ঢুকেছে।
আঙ্কেল:- আলিফ বলে জুড়ে চিৎকার দিয়েছে আমি আঁচল ছেড়ে দিয়েছি আর সায়লা কান্না শুরু করেছে।
সায়লা:- স্যার আমাকে বাচান সত্যি ওনি আমাকে বলে কান্না করতে লাগলো।
আমি:- আরে কি বলছেন আমি তো কিছু বুঝতে পারছিনা।
আঙ্কেল:- ছিঃ আলিফ ছিঃ তুমি এখুনি বেড়িয়ে যাও আমার অফিস থেকে আর বাকী কথা তোমার বাবার সাথে বলবো।
আমি:- আঙ্কেল কথাও একটা ভুল হচ্ছে আপনার?
আঙ্কেল:- আমি নিজের চোখে দেখছি আর তুমি বলছো ভুল হচ্ছে? তুমি এখুনি বেড়িয়ে যাও তানা হলে দারোয়ান ডেকে এনে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো।
আমি:- থাক তা আর লাগবে না! আমি নিজেই চলে যেতে পারবো তবে একটা কথা বলি আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। কথা গুলি বলে বেড়িয়ে আসবো তখনি আশফি বলে!
!!
To be continue,,,