রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] স্নেহা! তুমি যে প্রজেক্ট ক্লাসে, নেহার নাম চেঞ্জ করে তোমার নাম বসিয়ে দিচ্ছিলে..সব আমি দেখেছিলাম…কারণ আমার নজর ২৪ ঘন্টায় তোমার মধ্যেই থাকতো.. তুমি কোথায় যাচ্ছো না যাচ্ছো সব খবরই আমার কাছে আসতো… বাসায় বসে শুধু তোমার অপেক্ষায়…করতাম যে কখন বিকেলে তুমি আসবে…বারান্দায় দাঁড়িয়ে লুকে লুকে তোমায় দেখবো.. আর তোমার ঝুমুর পড়া নাচ…তোমার দুষ্টুমির ভঙ্গী…
স্নেহা! আমার আশেপাশে মেয়ের অভাব ছিলো না! অনেক মেয়ে দেখেছি… কিন্তু তাদের মাঝে তোমাকেই আমি চেয়েছি…কেনো জানো?..
তাদের চোখে আমি ঐ ভালোবাসাটা দেখিনি…যেটা তোমার চোখে দেখেছি..
স্নেহা! তোমার প্রশ্ন ছিলো…সামির তোমাকে মার্মেড কেফ না নিয়ে গিয়ে যে বারের মধ্যে নিয়েগেছে তা আমি কি করে জানলাম…
আমি জানতাম সামিরের উদ্দেশ্য কি…আমি তোমাকে বার বার বুঝিয়েছি কিন্তু তুমি বুঝোনি…তোমাদের আগেই গিয়ে আমি মার্মেড কেফ পৌছায়…এবং সামিরের গাড়ী ফলো করি, আমি যে তোমাদের ফলো করছিলাম তা সামির বুঝতে পেরেছিলো…তাই ও আমাকে ফাঁকি দিয়ে…তোমার সাথে?
স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত দিয়ে ] ওকে!?
রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে..একপায়ের হাটু গুটিয়ে মাটিতে বসলো ] স্নেহা will you marry me?..?
[স্নেহার বুক ফেটে কান্না আসছিলো…? সে জানতো না যে কখনো কেউ তাকে এভাবে ভালোবাসবে…ভাবতেই অবাক লাগছে.. চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো স্নেহার না না…এই জল কোনো দুঃখ্যের জল নয়…এটি তো খুশির জল]
রাহুল : কি হলো স্নেহা?..?
স্নেহা : [চোখ মুছে একটু হেসে..মাটিতে বসে পড়ে..] হুহ! এভাবে বললে হবে না…আমার সালমান খানের মতো করে বলতে হবে…?
রাহুল : রিয়েলি! এই টাইমেও ড্রামা করবা?..?
স্নেহা : মোটেও ড্রামানা… যা বলছি তা করো নাহলে বিয়ে করবো না…?
রাহুল : মানে! এমনি এমনি বলিনি যে তুমি ড্রামাকুইন!..?
স্নেহা : ? বলবা নাকি না?..
রাহুল : ওকে ওকে! মুজসে্ শাদী কারোগী স্নেহা?
স্নেহা : [ ?হেসে রাহুলের গাল টেনে তাকে ঝড়িয়ে ধরলো ] তাহলে আমি ড্রামাকুইন হলে তুমি হলে ড্রামাকিং.. ?
রাহুল : [ স্নেহাকে ঝড়িয়ে ] Shut-up তোমার ড্রামার কারণেই আমার ড্রামা করতে হচ্ছে..
রাহুল : এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে তো আমার পা ব্যথা করবে!?
স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের গালে আস্তে করে একটা থাপ্পড় দেই ?] ইডিয়ট একটা বাই!
[ স্নেহা চলে গেলো.. রাহুল ব্লাশিং?]
স্নেহা ও ব্লাশিং হতে হতে রুমে ঢুকছিলো..হঠাৎ পেছন থেকে..
মা : কোথায় গিয়েছিলি?..
স্নেহা : [ Shocked? ]
মা : [স্নেহাকে নাড়িয়ে] কি হলো? স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি?..
স্নেহা : মা!? আসলে!
মা : ছিঃ ছিঃ ছিঃ পুরো বাড়ীর নাক কাটাতে বসেছিস স্নেহা তুই! এতো রাতে একটা পর পুরুষের রুম থেকে আসছিস..
স্নেহা : মা! তুমি যা ভাবছো তেমন কিছুই না!?..
মা : খবরদার তোর এই নোংরা মুখে আমাকে মা ডাকবিনা!
মিলি : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] আরে স্নেহা! মা! কি হয়েছে?..?
মা : কি হয়েছে না! কি কি হয়নি তা জিজ্ঞেস কর ওর থেকে..? আমার তো ওর চেহেরা দেখতেই ঘৃণা লাগছে..
বাড়ীতে বসে বসে কাল সাপ পৌষছিলাম এতোদিন..
স্নেহা : মা! আমার কথাটাতো শোনো প্লিজ!?
[ মা,স্নেহাকে সজোড়ে একটি থাপ্পড় মারে,স্নেহা আনব্যালেন্সে থাকায় মিলির উপর গিয়ে পড়ে ]
মিলি : [ স্নেহাকে ধরে] আরে! মা! কি করছোটা কি.. ?
মা : পড়ার নাম আর মুখে? আনবিনা! শান্তিপুরের প্রস্তাবটা এখনো মুখ চেয়ে আছে…? আজই তোর বাবাকে বিয়ের কথা বলে…তাড়াতাড়ি এইঘর থেকে দূর করবো তোকে… নাহলে না জানি আরো কি কি কান্ড করে বসিস! [ স্নেহার মা চলে গেছে ]
[ স্নেহা কান্নায় ভেঙে মাটিতে বসে পড়ে ]
মিলি : স্নেহা! কাঁদিস না! প্লিজ! মা হয়তো রেগে গিয়ে এসব বলেছে..!
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে] আমি কিছু করিনি শুধু ওর রুমে গিয়েছিলাম!?
মিলি : শোন! তুই রাহুলকে ভালোবাসিস!?
স্নেহা : [ মাথা নাড়ালো ] হুম?
মিলি : তাহলে যা! ওকে নিয়ে পালিয়ে যা!
স্নেহা : পালাবো মানে! কিন্তু কেনো?..
মিলি : স্নেহা! তুইতো মা কে চিনিস! মা কখনো তোর আর রাহুলের সম্পর্ক মেনে নেবে না! বাবাকে ওল্টাপাল্টা বুঝিয়ে দেবে ওর সম্পর্কে…
স্নেহা : না..নাহ এটা কিভাবে করবো…যে পরিবার আমাকে ছোট থেকে আশ্রয় দিয়েছে… আমি সে পরিবারকে..কিভাবে ঠকাবো!
মিলি : স্নেহা এখন আর এসব ভেবে কিছু করতে পারবি না!?…আমার কথা শোন!
[ স্নেহা রুমে ঢুকে আয়নার সামনে দাঁড়ায়…অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকে নিজের চেহেরার দিকে…মুখের মধ্যে আংগুলের লাল ছাপ বসে আছে.. যা স্নেহাকে তার অতীত মনে করিয়ে দিচ্ছে..ভাবতেই চোখ থেকে অশ্রু ঝড়ে পড়ছে..কেনো এমন কেনো জীবনটা…? ]
হঠাৎ, হুট করে দরজা খোলার শব্দ..স্নেহা ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল..
স্নেহা তাড়াতাড়ি মুখ লুকিয়ে অন্যদিকে ফিরে যায়,
রাহুল : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা ?..কি শুনছি এসব?…তুমি বলেছো আমাকে চলে যেতে…
রাহুল : আমার দিকে তাকাও স্নেহা! আমি বলছি তোমার মায়ের সাথে কথা!…আর তুমি পেছন ফিরে মুখ ঢেকে আছো কেনো?…
স্নেহা : বুঝো না কেনো প্লিজ রাহুল তুমি..বেড়িয়ে..
[ রাহুল একটানে স্নেহাকে তার দিকে ফেরায়… স্নেহার চেহেরা দেখে রাহুল নিস্তব্ধ?হয়ে যায়…স্নেহার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে..মুখের মধ্যে চড়ের ছাপ..]
রাহুল : স্নেহা! এসব??
কে মেড়েছে তোমাকে??
[ রাহুলের আর বুঝার বাকি রইলো না রেগে স্নেহার হাত ধরে রুম থেকে বেড়িয়েই যাচ্ছিলো.. স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুল মায়ের কাছেই যাচ্ছে… স্নেহা রাহুলের হাত ধরে আটকিয়ে ফেলে..]
[ স্নেহা অভিমান আটকাতে না পেরে রাহুলকে ঝড়িয়ে ধরে ফেলে…রাহুলের বুকে মাথারেখে ফুফিয়ে কেঁদে দিলো স্নেহা ]
[রাহুলের রাগ বাড়তেই চলছে স্নেহার ফুফিয়ে কাদার শব্দ শুনে]
স্নেহা : ? প্লিজ! রাহুল কিছু বলো না! ওনার হক আছে আমার উপর!…তাই উনি আমাকে মেরেছে…?
ছোট বেলা থেকেই নিজের মেয়ের মতো করে…পেলেছে…এই অধিকারটা তো অন্তত ওনার আছে..?
[ স্নেহার কথা শুনে রাহুল একটু অবাক হলো ]
রাহুল : নিজের মেয়ের মতো করে মানে..? উনি তোমার আসল মা নাহ?..
রাহুল : এইতো একটু এইদিকটা যাচ্ছিলাম… [ রাহুল মনে মনে..ভাবতে লাগলো বাব্বা এত্তো খুশি লাগছে নিলাজ সাহেবকে কি ব্যাপার ]
স্নেহার বাবা : ওহ আচ্ছা যাও যাও! তবে খেয়েছো তো?..
রাহুল : জি খেয়েছি? কি ব্যাপার আংকেল অনেক খুশি মনে হচ্ছে..?
স্নেহার বাবা : ও হে! আমার মেয়েকে আজ বর পক্ষ দেখতে আসছে…অবশ্য ওরা আগে থেকেই…ওকে দেখে ঠিক করে রেখেছে…আজ আংগটি পড়াতে আসছে.. বিয়েটা কদিন পরেই…হয়ে যাবে…শোনো..বিয়েটা কিন্তু খেয়েই যাবে..?..
[রাহুল হতভাগ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে..কি শুনলো ও?…]
স্নেহার বাবা : আচ্ছা আমি আসি কেমন! তোমার কিছু লাগলে হরিকে বলো..
স্নেহা : না নাহ! কিছু লাগবে না..এদিকে দাও ঝুড়ি আমি দিয়ে আসি..
হরিকাকা : তুমি দিতে যাবা কেনো..আমি দিয়ে আসি!
স্নেহা : আরে কিছু হবে না! তুমি বাকি জিনিষ গুলো দেখো… আমি দিয়ে আসি..
[ স্নেহা হরিকাকা থেকে ঝুড়ি গুলো নিয়ে দিঘির পাড়ে গেলো দেখে রাশু আর কয়েকজন মাছ ধরছে.. আর মিষ্টার হ্যান্ডস্যাম অনেক তো বলেছে মাছ ধরতে যাচ্ছি…মাছ ধরার নাম নেই..ক্যামেরা দিয়ে ফোটো তুলতে আছে… স্নেহা গিয়ে ঘাটের মধ্যে ঝুড়ি গুলো রাখলো ]
রাহুল : হেই! ড্রামাকুইন! আমি তো জানতাম তুমি আসবে..?
স্নেহা : ওহ! ☺রিয়েলি! হাউ সুইট!?আমি এইখানে ঝুড়ি দিতে এসেছি.. নয়তো আমার বয়ে গেছে আসার জন্যে..
রাহুল : [স্নেহার কাছে এসে] এইদিকে তাকাওতো… [স্নেহা তাকাতেই রাহুল একটা ?ছবি তুলে নেই ..স্নেহা আরো রাগান্বিত ভাবে তাকায় রাহুল আবারো ফটো তুলে নেই]
রাহুল : ওয়াও…স্নেহা কি না পোজ দিলা?
[স্নেহা কিছু না বলে নাক ফুলিয়ে চলে যাচ্ছে…রাহুল ও স্নেহার পিছে পিছে দৌড়ে আসে]
রাহুল : হেই ড্রামাকুইন! কই যাও..
স্নেহা : মরতে যাচ্ছি..?
রাহুল : আরেহ! একা কেনো..আমায় ফেলে?…?
[ হঠাৎ অরণি,মহিমা আর গীতালি ও এগিয়ে আসে]
অরণি : আরে! ভাইয়া চলেন আম বাগানে যাবো.. আমার না কাচা আম খেতে মন চাইছে..☺
রাহুল : ওয়াও! ম্যাংগো? আই লাভ ইট..ওকে চলো…
স্নেহা : ??
অরণি : আরে আপু তুমিও চলো না প্লিজ!
স্নেহা : নাহ আমি যাবো না তোরা যা!?
মহিমা : আরেহ! চলো তো [ স্নেহাকে টানতে থাকে মহিমা]
স্নেহা : আরে! বললাম তো যাবো না!
রাহুল : থাক থাক বাদ দাও…এমনিতেও ও গিয়ে কি করবে?.. হাইটে ও ছোট মানুষ.. গাছ থেকে আম পারতে পারবে না..
স্নেহা : এক্সকিউজ মি! কি বললে হুম?..?
[ Rahul give a tedi smile?]
স্নেহা : শোনো এই তেডি স্মাইল দেওয়াটা না বন্ধ করো ওকে ফাইন! ?চ্যালেঞ্জ করলাম..যদি আমি তোমার চেয়ে বেশি পেরে দেখাতে পারি তাহলে!
রাহুল : তাহলে তুমি যেটা বলবে আমি সেটা করবো.. ?
স্নেহা : ওকে! ডান?
রাহুল : ?আর যদি আমি তোমার চেয়ে বেশি পেরে দেখাতে পারি…তাহলে আমি যেটা বলবো তুমি সেটা করবে..
স্নেহা : ?ওকে!
রাহুল : Think স্নেহা?
স্নেহা : ডান!?
রাহুল : ওকে তাহলে চলো ?
[ সবাই মিলে একসাথে হাটতে লাগলো.. স্নেহা রাহুলের পাশে হাটতে না চাইলেও রাহুল ইচ্ছে করে করে স্নেহার পাশে হাটছে…আর মিনিটে মিনিটে এক এক রিয়েকশনের ছবি তুলছে..]
রাশু : [রাহুলের দিক এগিয়ে এসে] এই নাও ভাই তোমার গিটার…
স্নেহার বাবা : এটা কি?..
রাশু : বাবা! সিংগার সিংগার..এটা বাজিয়ে ওনি গান গায়..?
স্নেহার বাবা : আরে তাই নাকি? তুমি গান করতে পারো?..
রাহুল : জি! হ্যা..মানে ম্যাগাজিন ওয়ার্কের পাশাপাশি গান ও গায় আরকি..?
রাশু : আজ রাতে তো তোমার গান গাইতেই হবে…ভাই
রাহুল : আরে না! কি বলছো এসব!
স্নেহার বাবা : নাহ! কেনো..আজ আমরা সবাই শুনবো তোমার গান!?
স্নেহা : [মনে মনে] গান গাইবে না..? পুরো গ্রামের মেয়েদের পাগল বানাবে.. disgusting [ হন হন করে স্নেহা ভেতরে চলে গেলো ]
[রুম থেকেই আবার উকি দিয়ে দিয়ে দেখছে রাহুল কি করছে…রাহুলের চোখে পড়াতে রাহুল আবারো ঠোটের দিক ইশারা করে স্নেহা তাড়াতাড়ি সরে যায়]
স্নেহা [মনেমনে] কি আজিব বার বার একই জিনিষ করে যাচ্ছে?…
মেহেমান চলে এলো চারদিক হৈচৈ..
মা : [ শরবত নিয়ে এসে ] স্নেহা ধর! এগুলো টেবিলে দিয়ে আয়..
[স্নেহা শরবত গুলো নিয়ে টেবিলে রেখে চলে আসছে ]
হঠাৎ,
রাহুল : [পাশে এসে!] Come on স্নেহা তুমি চ্যালেঞ্জ করে এখন ভয় পাচ্ছো…তাহলে তো তোমার নিকনেইম চেঞ্জ করে মিস্ ডারপোক দিতে হবে?
স্নেহা : মোটেও না! ভয় কেনো পাবো হুম!
রাহুল : আমিতো তোমার চোখে ভয় দেখছি!?
স্নেহা : ?প্রতিদিন চশমা পড়ে থাকতে থাকতে তুমি রাতকাণা হয়ে গেছো বুঝলে!
রাহুল : ওকে ফাইন! m waiting… ?যদি তুমি ডারপোক না হোও তাহলে প্রুফ করো…
[ স্নেহা কিছু না বলে রুমে এসে ঢুকে পড়ে]
স্নেহা : [জানালা দিয়ে উকি দিয়ে মনে মনে ] মানে কি! আমি কেনো ডারপোক হবো..? কিন্তু এমন একটা জিনিষ চেয়ে বসলো…উফফ!
মিলি : অই! কি দেখছিস এভাবে?..?
স্নেহা : কই নাতো! ও হে তোমার বর মিষ্টার সিয়াম কে দেখছি..অন্য কোনো মেয়ের সাথে লাইন মাড়ছে কিনা..? By the way কি নাহ লাগছে তোমায়? ভাইয়া তো দেখেই কাত হয়ে যাবে?
প্রায় কিছুক্ষণ পর স্নেহা চারদিক খুজতে লাগলো.. কিন্তু রাহুলকে দেখা যাচ্ছে না.. সবাই তো অনুষ্টানের মধ্যেই আছে..কিন্তু মিষ্টার তেডি স্মাইল কই গেলো…
[রাহুলের রুমের সামনে গিয়ে দেখে দরজা খোলা..স্নেহা উকি দিয়ে দেখলো রুমে নেই…. গিটারটা চৌকির উপর পড়ে আছে..স্নেহা ভেতরে গিয়ে গিটারটা হাতে নিলো.. আর ব্লাশিং হতে লাগলো… ? (মনে মনে) ওয়াহ কি না গেয়েছো…বস্?]
হঠাৎ পেছন থেকে,
রাহুল : মিস্ করছিলে আমায়?..
স্নেহা : [পেছন ফিরে তাকিয়ে?] নাহ! আমিতো.. এমনিতে
[ স্নেহা হুরহুর করে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো.. রাহুল স্নেহার হাত ধরে রুমের দরজা আটকিয়ে দেই]
স্নেহা : আরেহ! রাহুল! কি করছো বাড়ী ভর্তী মেহেমান…কেউ দেখে ফেলবে..সরো আমি যাবো…
রাহুল : আচ্ছা তুমি বেড়ালের মতো আমার রুমে উকি দাও কেনো বলো তো..? ডিরেক্ট আসতে পারো না..
স্নেহা : কই উকি দিলাম আমিতো..
রাহুল : তুমিতো আমাকে না দেখা ছাড়া থাকতে পারছিলে না তাইতো?
স্নেহা : নাহ তেমন কিছুই না?
রাহুল : [স্নেহার কাছে এসে] So মিস্ ডারপোক কি ডিসাইড করলে?….??
স্নেহা : Excuse me? i m not ডারপোক….
রাহুল : Ok proof it…?
স্নেহা : Yes! i will proof you!
রাহুল : when? ?
স্নেহা : Now?
রাহুল : রেডি?..?
[স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের কাছে আসে she try to kiss? rahul? কিন্তু রাহুলের চোখের দিক তাকাতেই আবার পিছিয়ে যায়..]
রাহুল : What happen ?
স্নেহা : দেখো প্লিজ তুমি আমার দিক তাকাবানা?
রাহুল : [হেসে?] Ok
[ স্নেহা রাহুলের কাছে এসে আবারো ট্রাই করলো কিন্তু কোনোভাবেই Possible হচ্ছে না..? চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো স্নেহা ]
[Then, রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কাছে এগুতে থাকে..স্নেহা পেছাতে লাগে?]
রাহুল : চ্যালেঞ্জ হেরেছো so punishment তো মিলবেই…?
স্নেহা : দেখো প্লিজ! এসব আমার দাড়া সম্ভব না!? [ স্নেহা রাহুলকে সরিয়ে চলে যাচ্ছিলো ]
রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] এভাবে ভেগে যাওয়াটাই তোমার কাজ! আমার ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই স্নেহা তোমার কাছে…?
[ স্নেহা ফিরে তাকালে দেখে রাহুল মাথা ঝুকে আছে
কেনো যেন স্নেহার অনেক মায়া হলো রাহুল মাথা ঝুকে থাকায়..]
রাহুল : ওকে স্নেহা গো…আমি আর আটাকাবো না… [ রাহুল স্নেহার হাত ছেড়ে দিলো ]
[ স্নেহা রাহুলের হাত ধরে তার দিক ফেরালো
রাহুল তাকিয়ে আছে..স্নেহ চোখ বন্ধ করে ফেলে]
[রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে]
স্নেহা : [রাহুলের অনেকটা কাছে এসে] কিস্ মি?…
রাহুল : ইউ ওকে..?
স্নেহা : ইয়াহ! আই এম ওকে!..
রাহুল : স্নেহা!
স্নেহা : শিসস্ Not one more word!
[ Sneha kissed to rahul??]
[After 2mins,both are silent.. nd blushing ?]
স্নেহা : i m not ডারপোক…?
[স্নেহা লজ্জায় লাল ?হয়ে যাচ্ছে আর এক মুহূর্ত ও রাহুলের সামনে দাড়ায়নি…দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়…]
[ রাহুল ও Shocked হয়ে ব্লাশিং হতে লাগলো ? কি হলো এটা…]
[রুম থেকে বের হলো…স্নেহা? রাহুলকে দেখতেই লুখে যায়…রাহুল হাসতে থাকে..স্নেহার কান্ড দেখে.. ]
মিলি : হে তাও ঠিক কিন্তু ছেলেটা হ্যান্ডস্যাম আছে দিলে ও দিতে পারিস..?
স্নেহা : ???
মিলি : না না ঠিকাছে তুই যা! চা দিয়ে আয়?
[ স্নেহা তার বাবাকে উঠোনে চা দিতে গেলো… দেখে রাহুল বারান্দার চৌকাটে বসে রাশুদের সাথে দুষ্টুমি করছে.. রাহুল স্নেহাকে দেখে ইশারা করে… যে তার কথা আছে স্নেহার সাথে…স্নেহা রাহুলকে মুখ ভেংগিয়ে ভেতরে চলে গেছে…]
রুমে গিয়ে দেখে…অরণি, গীতালি, মহিমা,আর মিলি আপু একসাথে কি কি জানে বলে ফেলছে..স্নেহা ঢুকাতে সবাই চুপ হয়ে যায়…
স্নেহা : কি হলো? আমি আসাতে চুপ?..
অরণি : তাই ভাবছি..আমরা অই ছেলেটার আশেপাশে গেলে তুমি এতো তেলে বেগুন হয়ে জলে উঠো কেনো..?
স্নেহা : ? [ রেগে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে নিজের রুমে চলে যায় ]
রাশু : আপু তোমাকে ডাকছে…
স্নেহা : কে??..
রাশু : অই যে রেষ্টুরেন্ট ওয়ালা..
স্নেহা : ওহ! ডাকুক..? ওকে গিয়ে বল তাড়াতাড়ি এই বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে..
রাশু : [ হাহা??ওকে! রাশু রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ]
কিছুক্ষণ পরে,
রাহুল : স্নেহা! [ স্নেহা Shocked?]
স্নেহা : তুমি এইখানে?..?
রাহুল : দেখো স্নেহা! অনেক হয়েছে হুম?.. চলো তোমার সাথে কথা আছে…
স্নেহা : আরে পাগল নাকি তুমি?..?কেউ দেখলে সমস্যা হবে প্লিজ যাও এইখান থেকে…
রাহুল : এক পা ও নড়াবো না…তুমি আসছো কি আসছো না বলো?..
স্নেহা : শিসস! ধীরে বলো প্লিজ! কেউ শুনতে পাবে!…
রাহুল : ওকে enough! এবার চলো!
স্নেহা : দেখো এখন আমি তোমার সাথে কথা বলতে পারবো না…বাবা ও বাড়ীতে..সবাই আশেপাশে…
রাহুল : ওকে তুমি আসতে পারবে না! ঠিকাছে..আমি তোমার বাবাকে গিয়ে সব সত্যি বলে দিচ্ছি.. ভার্সেটিতে কি হয়েছে না হয়েছে.. Then তোমার আর আমার লুকিয়ে কথা বলতে হবে না…
স্নেহা : [রাহুলের হাত ধরে] আরেহ আরেহ! কি আজিব! বাবাকে কেনো ওসব বলতে যাবা! আমি কি বলেছি কথা বলবো না?..? ঠিকাছে ঠিকাছে..তুমি যাও আমি আসছি!
রাহুল : m waiting! so hurry up…?
[স্নেহা বিড়বিড় করে…কি যেন বলছে]
রাহুল : What!?
স্নেহা : আসছি তো যাওনা!?
রাহুল : সন্ধায় এসো তখন রুমের বাতি অফ থাকলে কেউ দেখবে না…
স্নেহা : ছিঃ ?
রাহুল : ছিঃ কেনো?..
স্নেহা : তুমি কি কি করবা?..
রাহুল : Shut-up ok?..যেটা বলেছি সেটা করবা নাহলে তো জানোই আমি কি কি করতে পারি!? [ রাহুল বেরিয়ে গেলো ]
স্নেহা : শিসস! ধীরে বলো..আর কেউ শুনবে… তুমি কই কিছুইতো দেখছিনা..
[ রাহুল স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিলো ]
স্নেহা : আরেহ!?
রাহুল : এইতো আমি!?
স্নেহা : ছাড়ো প্লিজ!
রাহুল : শিসস! ধীরে বলো স্নেহা কেউ শুনবে!…??
স্নেহা : দেখো যা বলবা তাড়াতাড়ি বলো..আমার যেতে হবে..বিজলি আসলে তখন..কারো চোখে পড়ে যাবো.. ?
রাহুল : ওকে রিলেক্স! তুমি বের না হওয়া পর্যন্ত বিজলি আসবে না..?
স্নেহা : মানে কি!…
রাহুল : মানে আমার যাদু??
স্নেহা : তার মানে তুমিই..করেছো এসব?..
রাহুল : ইয়েস!? [ স্নেহা ব্লাশিং?]
স্নেহা : আচ্ছা হয়েছে..এবার বলো কি বলবা… [ স্নেহা রাহুলের হাত স্নেহার কোমোড় থেকে ছুটাতে চাচ্ছে..রাহুল আরো শক্ত করে ধরে রাখছে?]
স্নেহা : কি আজিব! ছাড়ো প্লিজ!?
রাহুল : [ হেসে ]? ওকে! রিলেক্স.. [স্নেহাকে ছেড়ে দিয়ে রাহুল স্নেহার চোখের উপর স্লাইড করলো স্নেহা চোখ বন্ধ করে ফেলে]
রাহুল : আমি না বলা পর্যন্ত চোখ বন্ধ রাখবে….?
স্নেহা : কিন্তু কেনো! ?
রাহুল : Shut-up বলেছি করবা..ব্যাস!
রাহুল… আগুন জালালো…স্নেহার মুখের উপর হলুদ অগ্নি আলো এসে পড়লো…
রাহুল : Shut-up স্নেহা! একদম চোখ খুলবা না…
স্নেহা : ওকে ওকে..! খুলছি না…?
[ কিছুক্ষণ পরে রাহুল স্নেহার পেছন থেকে…দু-পাশে হাত দিয়ে কোমোড়ে…ঝড়িয়ে ধরলো..]
রাহুল : Sooo… now u can open ur eye’s ?….
স্নেহা চোখ খুলে দেখে…গোলাপের? পাপড়ি দিয়ে সাজিয়ে লিখে রেখেছে… ?I Love You Miss Dramaqueen?মাঝে একটি কেট্রোস্ গাছ…
স্নেহা কেট্রোস্ গাছটি হাতে ছুয়ে অবাক হয়ে রাহুলের দিক ফিরে তাকালো…??…
রাহুল স্নেহার হাত দুটো তার হাতে নিয়ে চুমু খেলো…
রাহুল : স্নেহা! মনে আছে ভার্সেটিতে…প্রথমদিন তুমি এই কেট্রোস্ গাছ গুলোকে আলতো ভাবে ছুয়ে দেখছিলে..
তখন আমি দূর থেকে তোমাকে দেখে যাচ্ছিলাম… তোমার চুল গুলো উড়ছিলো…চোখের পাতা ঝুকে ছিলো…মিটিমিটি করে হাসছিলে তুমি..?
তখন আমি ভাবছিলাম কে এই মেয়ে..আগে তো দেখিনি…আমি অবাক দৃষ্টিতে তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম… ?
স্নেহা.. আমি তোমার আগে অনেক মেয়ে দেখেছি কখনো কারো দিক এভাবে তাকিয়ে থাকিনি… কেনো জানিনা ঐদিনই তোমায় দেখে আমি তোমার প্রেমে পড়ে যায়, u know যেটাকে বলে Love at 1st sight…?
স্নেহা : ???
রাহুল : ঐ রেসিং কারটার থেকে তোমাকে বাচানোর পর তুমি আমার সাথে যে রিয়েক্ট করলা… আমি তখন ভাবলাম নাহ দেখি এই মেয়ের কান্ড?…তোমার ছেলেপনা…বাচ্চাদের মতো কান্ড করা নেহার সাথে আমাকে দেখলে তোমার রাগ উঠা…সব কিছু আমার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে…?
কিন্তু আমি কিছু বলে উঠার আগেই তুমি পালিয়েছ ?
স্নেহা : আমাকে একটু চিমটি কাটো?
রাহুল : [ স্নেহাকে চিমটি কাটলো..] dream না reality…
স্নেহা : আই! ?আমিতো তোমাকে সব বলেদিয়েছিলাম…তোমার পিছে পিছে ঘুরেছি…তুমি আমাকে ইচ্ছে করে নাচিয়েছ?..
রাহুল স্নেহার দিকে তাকাতে তাকাতে হারিয়ে গেছে সে ভাবনার দেশে…?
হঠাৎ, একটি লোক এসে ঝাঁকুনি দিলো…
লোকটি : আরে ভাই কে আপনি…এভাবে ভিজতেসে্ন কেনো?…
রাহুল তাড়াতাড়ি আবারো উঠোনের দিক তাকালো…দেখে কেউ নেই… রাহুল একটু হেসে মাথা চুলকাতে লাগলো…?
লোকটি : গ্রামে নতুন মনে হচ্ছে?..
রাহুল : জি আমি এই গ্রামে নতুন এসেছি… আপনি কি ঐ বাড়ীটা চেনেন?..
লোকটি : আমি এইগ্রামের চৌকিদার..আর আমি চিনবো না…?
তবে কার বাড়ী যাবে তুমি?…
রাহুল : [ভাবতে লাগলো কার বাড়ী যাবে বলবে…এইখানে তো কাউকেই সে চেনে না..হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এলো গাড়ীতে একটি ক্যামেরা আছে] এক মিনিট ওকে…☺
রাহুল ক্যামেরাটি বের করলো..
লোকটি : এইটা আবার কি?..
রাহুল : জি! এটা দিয়ে ফোটো তুলে…আই মিন…মেমোরেবল মোমেন্ট..গুলো এইখানে..বন্ধি করে রাখে…
লোকটি : [কিছুই বুঝতে পারলো না]??
রাহুল : ওকে..মানে হচ্ছে যে আমি একজন ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…মানে সুন্দর সুন্দর গ্রামে যায়..তারপর ঐখানের রহস্যময় জিনিষ গুলো ছবি তুলে…তা আমার ম্যাগাজিনে ছাপায়..
আসলে আপনাদের গ্রামটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে…তাই ভাবলাম এইগ্রামের ও কিছু ফোটো তুলে নিয়ে যায়…
লোকটি : ওহ আচ্ছা তাই ভালো… তবে থাকবে কই?…
রাহুল : ?থাকার তো কোনো জায়গা নেই…but u don’t worry আমি আমার গাড়ীতেই রাত কাটিয়ে নিবো…
লোকটি : গাড়ীতে কাটাবে কেনো…তুমিতো আমাদের গ্রামের..অতিথি চলো তোমার থাকার ব্যবস্থা আমি করে দিচ্ছি…
রাহুল : [মনে মনে] Yes? এটাইতো চেয়েছিলাম…
লোকটি : চলো আমার সাথে..
রাহুল : ওয়েট জাষ্ট One second..
[রাহুল গাড়ী থেকে তার ব্যাগটি ও নিয়ে নিলো.. ]
হরিকাকা নিলাজ বাবুকে সহ নিয়ে আসে…[ নিলাজ মজুমদার স্নেহার বাবার নাম…গ্রামের একজন অতি সম্মানি ব্যাক্তি…আগে গ্রামের চেয়ারম্যান ছিলো..তবে নিজ ইচ্ছায়..পদত্যাগ করে নিয়েছে…তবুও গ্রামের সবাই..তার মতামত ছাড়া কিছু করে না…]
স্নেহার বাবা : আরে চন্দন কি হয়েছে?..
চন্দন মিয়া : বাবু অতিথি এসেছে গ্রামে…শহরে থাকে ছোড়া…..কি যেন নিয়ে আসছে…এই যে এটা…এটা দিয়ে ফোটো তুলে…গ্রামের দৃশ্য বইয়ে ছাপাইবে…
স্নেহার বাবা : থাক থাক…! তো এই গ্রামে আসার কারণ…?
রাহুল : জি! আমি ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…বিভিন্ন জায়গায় ষ্টেই করে করে…কিছু রহস্যময় জিনিষ ক্যাচ করেনি এই ক্যামরার মাধ্যমে…
আপনাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর… ভাবলাম এই গ্রামে ও অনেক কিছু থাকতে পারে যা আমার ম্যাগাজিনের কাজে লেগে যাবে…তাই আরকি দেরী না করে চলে এসেছি…?
ওনাকে বলেছিলাম আমি গাড়ীতে থেকে যাবো চিন্তা করার কিছু নেই..কিন্তু ওনি জোড় করে নিয়ে এসেছে..
স্নেহার বাবা : ? আরে কটা দিনই তো…
এসেছো আমাদের গ্রামে…গাড়ীতে থাকবে কেনো?… এই হরি.. যা তুই ওনার থাকার জন্য মেহেমান খানায় ব্যবস্থা কর… আর গিয়ে বল আমাদের জন্য চা পাঠাতে…
এসো এদিকে বসো…[ স্নেহার বাবা রাহুল..এবং চন্দন মিয়া গিয়ে উঠোনের একটা বৈঠকখানায় গিয়ে বসলো ]
স্নেহার বাবা! : আমাদের গ্রাম কিন্তু অনেক সুন্দর..অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য রয়েছে এখানে…
রাহুল : জি! আমি শুনেছি তাই এখানে এসেছি… [ হঠাৎ রাহুলের বারান্দা দিয়ে চোখ পড়লো, কয়েকটা মেয়ে চুপিচুপি বারান্দা দিয়ে দেখছে রাহুল দেখাতে তারা লুকে যায়.. আবার না দেখলে তখন তাকাতে থাকে..]
[স্নেহার বাবা রাহুলের সাথে গল্পে লেগে গেলো… রাহুল ও সাতপাঁচ বানিয়ে তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে…]
স্নেহা : বাবা! এই নাও তোমাদের চা!? [ চায়ের বাটি টেবিলে রাখতেই ছিলো.. কিন্তু পাশফিরতেই স্নেহা Shocked?হয়ে যায়]
[রাহুল তার মায়াবী চোখে স্নেহার দিকে চেয়ে আছে…?…স্নেহার হাত কাপছে গিরগির করে…মনে হচ্ছে চায়ের বাটি গুলো এক্ষুনি হাত থেকে পড়ে যাবে]
রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহার হাত থেকে চায়ের বাটি গুলো এগিয়ে নিলো…
স্নেহার বাবা : স্নেহা! কতোবার বলেছি তোকে বৃষ্টিতে ভিজিস না মা..ভিজিস না..এখন দেখ ঠান্ডায় শরীরটা কাঁপছে..
স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়েই রইলো..?
স্নেহার বাবা : ওহ! ওর নাম..রাহুল শহর থেকে এসেছে.. কদিন থাকবে..মেহেমান খানায়…এই গ্রামের…কিছু ছবি তুলে আবার চলে যাবে..
স্নেহা : what!?…
রাহুল : জি!?আমি ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…এই গ্রামের..সবচেয়ে সুন্দর জিনিষগুলো আমি আমার ক্যামেরায় তুলে নিতে এসেছি…
স্নেহার বাবা : ও হলো আমার মেয়ে স্নেহা!?.. ওও..কিছুদিন আগে এসেছে শহর থেকে…পড়তে গিয়েছিলো..?
রাহুল : হ্যালো!✋? [ চোখ টিপ মাড়লো স্নেহাকে ]
স্নেহা : ?… [মনে মনে] কি মিথ্যুক.. বাবাকে সাতপাঁচ বানিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে আর বাবাও বিশাস করে নিলো..ইহ!? কেনো এসেছে এখানে..কতো কষ্ট করে মনকে বুঝ দিয়ে এইখানে চলে আসলাম..আর ও?…[ স্নেহা বির বির করতে করতে চলে গেলো.. কিন্তু মনে মনে অবাক হয়ে আছে..রাহুল স্নেহার বাড়ী এখানে কেমনি জানলো…কেনই বা এলো..? আবার বাবাকে ও কেনো মিথ্যে বললো…এসব বিড়বিড় করে বলতে বলতে স্নেহা চলে গেলো ]
বারন্দায় উঠতেই দেখে…স্নেহার কিছু কাজিন আর কাজের মেয়েগুলো…লুকিয়ে লুকিয়ে কি যেন দেখছে…
স্নেহা : ?এই যে! আপনারা…কি এমন দেখছেন..একজনের গায়ের উপর আরেকজন উঠে…
গীতালি : [স্নেহার বাড়ীতে কাজ করে] আরে দিদি…ঐ দেখো ছেলেটা কি না দেখতে লাগছে…?
অরণি : [স্নেহার চাচাতো ভোন] আরে আপু দেখনা..ঐছেলেটা মনে হচ্ছে শহর থেকে এসেছে…? আমি তো পাক্কা ওর সাথে লাইন মারবো..
মহিমা : ?এই আমি কিন্তু আগে দেখেছিলাম…সানগ্লাসটা খুলে রেখেছে কেনো যখন সানগ্লাস লাগিয়ে উঠোনে ঢুকছিলো না?? উফ!
স্নেহা : ??(মনে মনে) কি বলেরে এগুলো…? (রাহুলের দিক তাকিয়ে মনেমনে)..সানগ্লাস লাগিয়ে ঢুকতে হয় নাকি এমনি আসা যায় না..যত্তোসব..]?আই শোন যা ভেতরে যা…বেশি পেকে গেছিস..! মা কে গিয়ে বললে না..তারপর লাইন মারা বেড়িয়ে যাবে..
[স্নেহার বকুনিতে সবাই..স্নেহাকে মুখ ভেঙিয়ে চলে গেলো ?]
[স্নেহা রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে ভেতরে চলে যায়…রুমে..জানালা খুলে লুকে লুকে তাকাতে থাকে..কি কি করছে রাহুল…]
অনেক্ষন পর দেখে বাবা উঠে ভেতরে চলে যায়…আর রাহুলকে বাড়ীর Opposite এ মেহেমানখানার একটি রুমে থাকতে দেওয়া হলো…শহর থেকে আসা প্রায় সব অতিথিদের ঐখানেই থাকতে দেওয়া হয়..
রাহুল রুমে ঢুকে দেখে..একটা চৌকি আর একটা টেবিল ছাড়া কিছুই নেই..
চৌকিটা ব্যাগ দিয়ে ঝেড়ে…একটু বসলো রুমের চারদিক ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে…
রাহুল : [মনে মনে] কি আর করবি রাহুল! প্রেমে যখন পড়েছিস… এইদিনটাও দেখতে হবে তোর…
হঠাৎ.. হুট করে স্নেহা রুমে ঢুকলো..ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে..দরজার এক কোণে গিয়ে দাঁড়ালো…যাতে বাইরের কেউ তাকে দেখতে না পায়…
রাহুল : ?আরে তুমি দরজার পেছনে লুকিয়ে আছো কেনো…
স্নেহা : শিস!☝…কেউ দেখলে সমস্যা হবে! আর তুমি এইখানে কেনো এসেছো বলোতো?..?
রাহুল : [দরজার কাছে এসে]???
স্নেহা : কি হলো কথা কি কানে যায় না?..এইখানে কেনো এসেছো?..
রাহুল : আগে তুমি বলো আমাকে না বলে চলে এলে কেনো?…?
স্নেহা : হুহ?তোমাকে বলে কেনো আসতে হবে…আমার ইচ্ছে..
রাহুল : ওহ রিয়েলি!? আমাকে কেনো বলে আসতে হবে তাই না? [ স্নেহার কাছে এসে]
স্নেহা : আরে কি করছোটা কি কেউ চলে আসবে তো?..দূরে গিয়ে দাঁড়াও ?
স্নেহা : দেখো! আমি যা করেছি সবই ভূল ছিলো..পরে আমি রিয়েলাইজ করে দেখলাম… আমার গ্রামে চলে আসাটাই বেটার হবে…
রাহুল : [স্নেহার কাছে এসে] আচ্ছা ভুল ছিলো তাই না?..? আমার রাতের ঘুম হারাম করে দিয়ে…আমার সবকিছু এলোমেলো..করে দিয়ে..এখন বলছো সব ভূল?…
স্নেহা : ?? [অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে রাহুলের দিকে]
রাহুল : লুক স্নেহা! যেদিন থেকে তোমাকে দেখছিনা..আমি একটা রাত ও ঘুমাতে পারিনি…?আমার সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো…
তুমি যেদিন ভার্সেটি আসোনি! সেদিন মার্জান থেকে জানতে পারলাম…তুমি গ্রামে চলে এসেছো.. তখন ইচ্ছে হয়েছিলো তোমাকে?…
স্নেহা : Oh my god…আমাকে দেখার জন্য এত্তো মেহেনত?
রাহুল : Shut-up ok?..this is not funny?
দেখো স্নেহা অনেক কষ্টে তোমার বাড়ীর ঠিকানা…বের করলাম..
আমি এখানে থাকতে আসিনি আমি তোমাকে নিতে এসেছি…
স্নেহা : [মনেমনে আচ্ছা তো ঐ মিস্ ইউনিভার্সকে কি করলো? ] তোমার নেহার কি খবর?
রাহুল : I don’t love neha…? এক্সুলি আমি সামিরের সাথে চ্যালেঞ্জ জিতার জন্য নেহার সাথে রিলেশন করি… নেহার জন্য আমার কোনো ফিলিংস নেই…জাষ্ট সবকিছু শো-অফ ছিলো…
স্নেহা : [কাপা গলায়] আমি জানিনা রাহুল কেমনি জানলো…
সামির : [চেঁচিয়ে ]তুমি জানো না?..মিথ্যা বলবা না…আমি ঐদিন দেখেছি…তুমি আর রাহুল এক ক্লাসে..ছিলে..আর রাহুল তোমার অনেকটা কাছে… আর আমি এটাও জানি যে তুমি আমার সাথে সব নাটক করেছো রাহুল কে দেখানোর জন্য…
স্নেহা অবাক হয়ে সামিরের দিকে তাকিয়ে রইলো.?
সামির : অবাক হচ্ছো কেনো?…[সামির স্নেহার গলা থেকে ছুরি নামিয়ে..] ছোট থেকেই রাহুল আমার লাইফ শেষ করে দিয়েছে….আমি যেটাই চায় সেটাই ও নিয়ে নেই… স্কুল লাইফ থেকে আমরা ফ্রেন্ড ছিলাম… সব গেইমে ওই ফার্ষ্ট আসতো…
একটা মেয়েকে পছন্দ করেছিলাম…মেয়েটা কিছু বলতো না শুধু হাসতো
ভয়ে বলতে পারছিলাম না..তখন রাহুল বুদ্ধি দিলো একটা চিঠি লিখতে..লিখলাম কিন্তু নিজ হাতে দিতে ভয় পাচ্ছিলাম..তাই রাহুলকে দিয়েই পাঠিয়েছিলাম…পরদিন মেয়েটা চিঠিতে উত্তর দিলো.. আমি তোমাকে দেখে হাসতাম না…তোমার পাশে যে হ্যান্ডস্যাম ছেলেটা ছিলো ওকে দেখে হাসতাম..আই লাভ হিম?
পরে কলেজে উঠি…কার রেসিং এ আমি আর রাহুল famous ছিলাম… একদিন একটা রেসিং কার চুজ করলাম কিনবো বলে… ? কিন্তু ঐ রাহুল সেটাও আমাকে কিনতে দিলো না..আমার কিনতে একটু লেইট হচ্ছিলো…তাই..তিনদিন পর দেখি অই কারটা রাহুল কিনে ফেলেছে… যদি ও আমি আবার কিনতে চাই..তা ইম্পোর্ট এর মাধ্যমে কিনতে হবে… অইভাবে কিনতে গেলে কমপক্ষে ১সপ্তাহ লাগবে… কিন্তু ৪দিন পরেই আমাদের রেস ছিলো… কি আর হলো রাহুলই ফার্ষ্ট হয়েছে..কারণ আমার কার ছিলো 1year old… আর ওরটা ছিলো নিউ মডেলের এন্ড ২গিয়ারের…
2nd সেমিষ্টারে উঠলাম… যেদিন প্রথমি আমি নেহাকে দেখি আর ওর প্রেমে পড়ে যায়…নেহার ড্রেস..নেহার ফ্যাশন নেহার সবকিছুই আমাকে মুগ্ধ করে দেই… ধীরেধীরে নেহার সাথে অনেকটা ক্লোজ হয়ে যায়…
রাহুল আনপ্লাগড সিংগিং করে…নেহার প্রতি রাহুলের কোনো ইন্ট্রেষ্ট ছিলো না..
কিন্তু রাহুল যখন জানতে পারে…আমি নেহাকে পছন্দ করি.. সেটা নিয়ে ও অনেক হাসাহাসি করে ও…আর ওর ফ্রেন্ডসরা…
নেহা জানতো যে রাহুল ওকে কেয়ার করে না..সেটা আমিও জানতাম… একদিন কলেজের একটা প্রোগ্রামে…নেহা রাহুলকে একটা গানের জন্য রিকোরেষ্ট করে,, এমন অনেক মেয়েই রাহুলকে রিকোয়েষ্ট করে কিন্তু রাহুল…সেগুলো কেয়ার করে না…রাহুল নেহাকেও কেয়ার না করা সত্ত্বে…ওর রিকোয়েষ্ট করা গানটি গায়….শুধু মাত্র আমাকে jealous করানোর জন্য..? ও মজা নিতো এসবে…
পরে গিয়ে আমি..রাহুলকে..অনেক হুমকি দেই…কিন্তু তাতে তার কিছু যায় আসে না সে উলটা হেসে আমাকে চ্যালেঞ্জ করে যায়… যে আমি নেহাকে ও হারাবো…
পরদিন দেখি কলেজের সবার সামনে…রাহুল নেহাকে প্রপোজ করে..আর নেহাও কলেজের সব মেয়েদের হিট লাগিয়ে নাচতে নাচতে রাহুলকে হ্যা বলে দেই… এরপর থেকে নেহা আমাকে আর পাত্তা ও দেই না…
ইনফেক্ট রাহুল এটাও জানে যে নেহা রাহুলকে না রাহুলের পপুলারিটিকে ভালোবাসে..
তুমি বলো স্নেহা আমার কি করা উচিৎ ?
[স্নেহার ভয়ে গলার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে..]
সামির : ?আমি ডিসাইট করেছি কি জানো এরপর থেকে কোনো মেয়েকেই ভালোবাসবো না…শুধু ধোকা দিবো.. You know what আমি দিয়েছি…আমি success হয়েছি…
[সামির স্নেহার অনেক কাছে এসে] আমি এটাও বুঝতে পেরেছি যে রাহুলের অনেক মায়া হয় তোমার জন্য…So তুমিই হলে রাহুলের weakness…
স্নেহা : দেখো… প্লিজ যা হয়েছে তা ভুলে যাও তুমি নতুন করে আবার…
সামির : শিসস!…No sneha নতুন করে কিছুই হবে না… তোমার সাথে ক্যান্টিনে ধাক্ষা খাওয়ার পরে..আমার আবার রিয়েল লাভের প্রতি ইন্ট্রেষ্ট জাগে…কিন্তু আবারো ঐ রাহুল আমার সব কিছুতে পানি ফেলে দিয়েছে..?…
হঠাৎ কেউ আসার শব্দ হচ্ছিলো..
সামির : ?So u are only mine….understand?. ..
Now you go…sneha…কিন্তু এই ক্লাসে যা হয়েছে তা যেন রাহুলের কানে না যায়… নয়তো তুমি বুঝতে পারছো আমি কি করবো…
রাহুল : [স্নেহাকে পিছে টেলে দেওয়ালের সাথে জোড়ে ধাক্ষা দিয়ে লাগায়…স্নেহা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে] আমার চোখের দিকে তাকাও তারপর কথাটা বলো…. ? কি হলো স্নেহা..
স্নেহা : দেখো সবাই চেয়ে আছে…?
রাহুল : চেয়ে থাকুক I don’t care…?
স্নেহা : [রাহুলের চোখের দিক তাকিয়ে চোখ থেকে দু ফুটো জল গড়িয়ে ফেলে..] আমি কাঁদলে তোমার কি কষ্ট হচ্ছে?…
[রাহুল স্নেহার দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে আছে…]
স্নেহা : বলো রাহুল..
[রাহুল মাথা নিচু করে স্নেহা থেকে হাত সরিয়ে নেই]
স্নেহা : জবাব নেই তাই না…তাহলে আমি কাঁদছি কেনো জেনে কি করবা…ওটাও না জানা থাকুক…
[ স্নেহা চলে গেলো ]
[সবাই রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে রাহুল ও আর কিছু না বলে চলে যায় ]
[রাহুল পার্কিং এর দিক গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলছিলো ঠিক সেই সময়..রাহুলের হঠাৎ সামিরের কথা মনে পড়ে…]
[ তাড়াতাড়ি গাড়ী ড্রাইভ করে রাহুল ভার্সেটি থেকে বের হয়…দেখে স্নেহা বাসে্ উঠে গিয়েছে…বাস্ চলতে থাকে রাহুল ফাষ্ট চালিয়ে বাস্ ওভারটেইক করে, গাড়ী সামনে এনে দাড় করায়…তাতে বাস্ ও থেমে যায়… রাহুল গাড়ী থেকে নেমে তাড়াহুড়ো করে বাসে্ উঠে…]
ড্রাইভার : আরে ভাই সমস্যা কি আপনার এভাবে গাড়ী সামনে এনে দাঁড়ায় করাইলেন…
স্নেহা : [চিৎকার করে করে বলতে লাগলো ] কিডন্যাপ প্লিজ হেল্প…কেউ বাচাও…প্লিজ
হঠাৎ..একটি সার্জেন পুলিশ এগিয়ে আসে…
সার্জেন পুলিশ : কি ব্যাপার কি হচ্ছে?…
স্নেহা : কিডন্যাপ করছে আমাকে প্লিজ হেল্প..
রাহুল : [ পুলিশকে ইশারা করে] পাগল তাই…?
স্নেহা : এক্সকিউজ মি আমি মোটেও পাগল না বুঝেছো…দেখেন স্যার প্লিজ আপনি ওতে লকাপে..ঢুকান..
[রাহুল পুলিশকে ইশারা করে পাশে ঢেকে নেই কানে কানে কি যেন বললো পুলিশ একটু হেসে দেই…তারপর রাহুল পকেট থেকে কি যেন বের করে কেউ না দেখে মতো পুলিশের হাতে ঢুকিয়ে দেই…পুলিশ একটু হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে চলে যাচ্ছিলো]
স্নেহা : আরেহ! কই যাচ্ছেন..স্যার..?
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] Shut-up?
স্নেহা : [চুপ হয়ে গেলো ]??
[রাহুল স্নেহাকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে লক করে দেই..]
[রাহুল ও গাড়িতে বসে..চালিয়ে চলে যায়]
[দুজন দুজনের দিক রাগান্বিতভাবে তাকাচ্ছে কিন্তু কেউ কিছু বলছে না…প্রায় আধ ঘন্টা পর রাহুল একটি নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে গাড়ী দাড় করালো…]
স্নেহা : দেখো রাহুল সামির বলেছে ও যদি আমাকে তোমার আশেপাশে দেখে তাহলে তোমার ক্ষতি করবে..? আমি চাই না আমার জন্য তোমার ক্ষতি হোক..[স্নেহা ফুফিয়ে কাঁদতে থাকে]
রাহুল : রিলেক্স স্নেহা কিছু করতে পারবেনা সামির আমাকে…
Damn it!? তুমি ওর কথায় আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছো… আমার দিকে তাকাও স্নেহা আর কিছু করেছে সামির তোমাকে?… [রাহুল স্নেহার চোখ মুছে দিলো স্নেহা রাহুলের রক্ত ভরা হাতটি টেনে নিলো.. রাহুল চেয়ে আছে]
রাহুল : Don’t worry..সেরে যাবে..
স্নেহা : সব কিছুতে এতো রাগ দেখাও কেনো…
রাহুল : দেখো স্নেহা..তুমি কাঁদলে আমার মোটেও সজ্য হয় না…
[রাহুল বাসায় গিয়ে রুমে বসে ভাবতে থাকে.. কেনো স্নেহাকে বলতে পারলো না…স্নেহার কান্না তার সজ্য হয়না…কেনো ?
এদিক ওদিক হাটতে থাকে রাহুল…ইচ্ছে করছে সামিরকে গিয়ে এক্ষুনি খুন করে ফেলতে..]
বিকেলে রাহুল অপেক্ষা করে..স্নেহা কখন আসবে…কিন্তু অপেক্ষার শেষ নেই…স্নেহা ও আসে না….
পরদিন ভার্সেটি গিয়ে পৌছায়…
[দেখে স্নেহা ক্লাসে ঢুকেছে..রাহুল স্নেহাকে দেখে একটু হাসে…কিন্তু স্নেহা না হেসে চুপচাপ গিয়ে বসে যায়]
ক্লাস শেষে বের হতে যাবে…ঠিক তখন দেখে রাহুলের ফ্রেন্ড আসিফ রাহুলকে ধরে বলতে লাগলো..
আসিফ : হেই রাহুল..সামির কে দেখে এসেছি হসপিটালে…?? কি না দিলি বস্ মনে হচ্ছে…২বছরেও বেড থেকে উঠে..দাড়াতে পারবে না…
রাহুল : ২বছর কেনো আমিতো চাই যেন সে সারা জীবন বেড থেকে উঠতে না পারে….?
আসিফ : আচ্ছা চল…কেন্টিনে..
[ আসিফ আর রাহুল কেন্টিনে চলে যাচ্ছিলো..পেছন থেকে স্নেহা এসে রাহুলের হাত ধরে ফেলে…রাহুল তাকিয়ে দেখে স্নেহা…আসিফ ও হা করে চেয়ে আছে কিন্তু কিছু বলছে না..স্নেহা রাহুলকে টেনে লাইব্রেরীর রুমে নিয়ে যায়… স্নেহা কিছু বলতে চাইলো কিন্তু আশেপাশে তাকিয়ে দেখে অনেকে চেয়ে আছে…রাহুল সেটা বুঝতে পারায়…সে স্নেহাকে নিয়ে সেল্ফের এক কোণায় দাড় করায়]
রাহুল : স্নেহা! কিছু বলবা?..
স্নেহা : তুমি সামিরকে মেরেছো?
রাহুল : [স্নেহার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে…] নাহ!
স্নেহা : মিথ্যে বলছো কেনো রাহুল..আমি তোমার আর আসিফের সব কথা শুনেছি…?
রাহুল : ?হ্যা মেরেছি…আমি সামিরকে মেরেছি তো?…
স্নেহা : তুমি মারামারি ?…
রাহুল : হ্যা আমি মারামারি করেছি… ?
স্নেহা : কেনো করেছো?…
[রাহুল Silent ]
স্নেহা : বলো না কেনো মেরেছো?…
রাহুল : মেরেছি কারণ ও তোমার সাথে..কথা বলেছে…ও তোমাকে টাচ্ করেছে..ও তোমাকে হুমকি দিয়েছে তাই…?
[স্নেহা Shocked হয়ে রাহুলের দিক চেয়ে আছে…রাহুল বেড়িয়ে গেছে…স্নেহা ও ধীরেধীরে ভাবতে ভাবতে লাইব্রেরী থেকে বেরিয়ে যায়]
আসিফ : স্নেহা!
স্নেহা : [পেছন ফিরে তাকায়] হ্যা..
আসিফ : ঐদিন সামির তোমাকে ক্লাসে..যা যা বলেছে সবকিছুর ডিটেল রাহুল বের করেছে…
[স্নেহা অবাক হয়ে চেয়ে আছে আসিফের দিকে]
আসিফ : এক্সুলি..আমাদের ভার্সেটির কিছু ছোট ভাই..রাহুলকে সব বলেছে…তারা দেখেছে সামির তোমাকে…গলায় ছুরি..?
[স্নেহার কিছু বলার শক্তি আর নেই…সে আর এক মুহূর্তের জন্য…ভার্সেটি দাঁড়াইনি…]
মার্জান : কি হলো স্নেহা?…তুই আমাকে ফেলে চলে এলি যে?..
স্নেহা : আমার না একটু খারাপ লাগছিলো…তাই..
মার্জান : অন্তত বলে আসতে পারতি…?
রাহুল তোকে খুঁজেছিলো…[স্নেহা উঠে চলে যায়]
বিকেলে স্নেহা রাহুলদের বাসায় যায়,
সিফা : স্নেহা কাল আসোনি যে?..তোমার জন্য অনেক্ষণ অপেক্ষা করেছিলো?
স্নেহা : আসলে কিভাবে বলি! আমি না..
সিফা : [স্নেহার কাছে এসে] কি হয়েছে স্নেহা তোমার কি মন খারাপ?…
স্নেহা : আমি আর আসতে পারবো না…প্লিজ ফাবিহার জন্য অন্য একটি টিচার খুজে নিয়েন…
সিফা : আসতে পারবে না মানে ?..কিন্তু কেনো?…
স্নেহা : আমি আসি…আমার একটু তাড়া আছে.. [ স্নেহা চলে যায়]
[স্নেহা হোষ্টেলে গিয়ে রুমে বসে কাঁদতে থাকে…হঠাৎ চোখ পড়ে…চেয়ারের উপর পড়ে থাকা সেই রক্ত ভরা ওড়নার উপর…. ওড়নাটি স্নেহার সাথে অনেক কথা বলছে…স্নেহা এক নজরে চেয়ে ওড়নাটিকে জবাব দিচ্ছে]
[রাহুল রুমে বসে তার হাতের দিকে চেয়ে আছে… মনে পড়ছে স্নেহা তার হাতকে ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে নিচ্ছিলো…রাহুল ভাবছে আর ব্লাশিং হচ্ছে…?]
মার্জান : এই স্নেহা! কি হলো তোর বলতো?…
স্নেহা : মার্জান! আমি বাবাকে ফোন করে বলেছি বাড়ী যাবো… বাবা! হরি কাকাকে পাঠাচ্ছে আমাকে নিতে…
মার্জান : কিহ!? তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?…
স্নেহা : মার্জান! আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম..?. আমি বুঝতে পারিনি…
আমার কারণে…রাহুলের ক্ষতি হোক আমি চাই না…রাহুল সামিরের সাথে মারামারি করেছে..আমার কারণে কাল না জানি আবার কি করে বসে…
রাহুল আর নেহার মাঝে…ঝগড়া হচ্ছে…এসব আমিই তো চেয়েছিলাম যে ওদের মাঝে ঝগড়া হোক…কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারছি…সব কিছুই ভুল হয়েছে আমার…?
মার্জান : কিন্তু স্নেহা…?
স্নেহা : আমি এখানে থাকলে নিজেকে রাহুলের কাছ থেকে দূরে রাখতে পারবো না মার্জান…?
[In rahul’s home]
রাহুল : ফাবিহা তোমার টিচার আসেনি.?
ফাবিহা : [মন খারাপ করে] টিচার আর কখনো আসবে না বলেছে..
সিফা : হ্যা তাইতো বলেছে..কারণ জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু কিছুই বললো না… মনে হচ্ছিলো অনেক টেনশনে আছে…
[রাহুল আর কিছু না বলে রুমে চলে যায়…ফেসবুকে ঢুকে স্নেহাকে মেসেজ করতে থাকে…কিন্তু স্নেহা অনলাইনে নেই…অনেক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকে কোনো রিপ্লাই আসে না..]
পরদিন ভার্সেটি গিয়ে পৌছায় রাহুল,কিন্তু স্নেহার কোনো দেখা নেই…ক্লাস শেষে
রাহুল : [ মার্জানের কাছে এসে] স্নেহা কোথায় ও গতকাল বাসায় ও আসেনি আজ ভার্সেটি আসেনি…ওর শরীর ঠিকাছে?…
[মার্জান কিছু না বলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে চলে যায়]
রাহুল মার্জান থেকে কোনো জবাব না পেয়ে…বাড়ী চলে যায়…ফেসবুকে ঢুকে দেখে কোনো রিপ্লাই আসেনি স্নেহার…আর সজ্য হচ্ছে না রাহুলের সোজা গিয়ে হোষ্টেলে পৌছায় রাহুল…
রাহুল : প্লিজ একবার বলো কোথায় গেছে…এরপর আমি তোমাকে আর ডিষ্টার্ব করবো না…
মার্জান : গৌরাকপুর, তার গ্রামের বাড়ী চলে গেছে..
[মার্জানের কথা শুনে রাহুলের মাথায় যেন বাজ ভেংগে পড়লো] রাহুলের মুখ দিয়ে আর একটা শব্দ বের হচ্ছে না…
মার্জান : স্নেহা তোমাকে অনেক!?
রাহুলের চোখ ভিজে আসছিলো জানেনা সে তার চোখ কেনো ভিজে যাচ্ছিলো… [ রাহুল চলে গেলো ]
প্রায় ১সপ্তাহ হয়ে গেলো… নেহা তার ফ্রেন্ডসদের নিয়ে ব্যাংকক এঞ্জয় করছে…এইদিকে স্নেহার ও আর কোনো খবর পেলো না…স্নেহাকে ছাড়া রাহুলের এক একটা দিন কাটছে বছরের মতো…
[রুমে বসে স্নেহার কথা ভাবছে রাহুল..স্নেহা এমন কেমনি করতে পারলো…একটাবার আমার কথা মনে পড়েনি ওর…]
হঠাৎ, ফোন বেজে উঠলো
রাহুল : হ্যালো…
আসিফ : দোস্ত গৌরাকপুরের ঠিকানা পেয়েছি..
রাহুল আসিফ থেকে ঠিকানা সব জেনে নিয়ে আর এক মুহূর্ত ও দেরী করেনি… গাড়ীতে উঠে সোজা গৌরাকপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই…
রাহুল : চেয়ারম্যান এর বাড়ী চেনো?… i mean আগে ছিলো চেয়ারম্যান এখন না…
ছেলেটি : নিলাজ বাড়ী?
রাহুল : হ্যা হ্যা ঐটাই…
ছেলেটি : ঐ যে সামনে যে দিঘিটা দেখতেসেন ঐটা ফালাই গেলে…যে বড় বাড়ীটা সেটাই…
রাহুল : ওকে থেংক্স??
রাহুল আবার গাড়ীতে উঠে…গিয়ে দিঘীর কিছুটা দূরে গিয়ে গাড়ী দার করালো সামনে আর যাওয়া যাবে না রাস্তা ছোটো… কিন্তু দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে নিলাজ বাড়ীটি…
অনেক পূরোনো বাড়ী মনে হচ্ছে…দূর থেকে চারদিক খুব সুন্দরই লাগছিলো…
ওয়েদারটাই স্নেহার কথা ও অনেক মনে পড়ছে রাহুলের? ভাবতে ভাবতেই রাহুল ব্লাশিং
[ বৃষ্টি নেমে এলো.. রাহুল তাড়াতাড়ি গাড়ীতে উঠে পড়ে…
[হঠাৎ…বাড়ীটির দিকে আবার তাকাতেই…রাহুলের বুকে কম্পন হতে লাগলো?]
স্নেহা উঠোনে নেমেছে বৃষ্টির মজা নিতে?রাহুল তাকিয়ে আছে…আজ কতোদিন পর এই চেহেরা দেখতে পাচ্ছে তাও আবার বৃষ্টি দিয়ে বরণ করে…
ভাবতে ভাবতে রাহুল ও গাড়ী থেকে নেমে পড়ে…ভিজে যাচ্ছে রাহুল…না থাক আজ ভিজেই যাক…তাতে ক্ষতি কি..? ধন্যবাদ জানালো রাহুল আল্লাহকে স্নেহাকে বরণ করার জন্য…
দাদী : [স্নেহার কাছে এসে] দেখ স্নেহা আমার মোটেও নেহাকে ভালো লাগে না… রাহুলকে অনেক বুঝিয়েছি…কিন্তু সে কিছুতেই বুঝেনা…অনেক মেয়ের ছবি দেখিয়েছি…সুন্দর সুন্দর কোনো মেয়ের প্রতি ওর ইন্ট্রেষ্ট নেই… তার শুধু নেহাকেই চাই…?
কিন্তু যখন ফাবিহা থেকে শুনেছি…আর ঐদিন তুই পড়ে যেতে ছিলি রাহুল তোকে ধরে ফেলেছিলো.. তখন থেকে ভাবলাম হয়তো রাহুল… তোর জন্য..
সিফা : [স্নেহাকে কাছে এসে টেনে নিয়ে] উফফ দাদী রাখো তো এসব কথা…রাহুল কে ডিসাইড করার যা করার আমরা করবো তাই না স্নেহা..?
স্নেহা লজ্জায় মাথা নিচে করে ফেললো…
সিফা : উফ! দেখো তো স্নেহা লজ্জা পাচ্ছে…?
ফাবিহা : [স্নেহার হাত ধরে টেনে] come on চাচী ডান্স ক্লাসে লেইট হয়ে যাচ্ছে তো…
স্নেহা : চাচী ?
ফাবিহা : আরেহ! চাচ্চুকে বিয়ে করলে তুমি আমার চাচী হবা না…তাই এখন থেকে প্রেকটিস্ করছি…?
[ফাবিহার কথা শুনে দাদী সিফা, স্নেহা সবাই হেসে দেই…]
স্নেহা ফাবিহাকে ডান্স শেখাতে চলে যায়… সবশেষে হোষ্টেলে ফিরে…
পরদিন ভার্সেটিতে…
ক্লাসে ঢুকে স্নেহা রাহুলকে দেখে মিটিমিটি হাসতে লাগলো… রাহুল তাকালেই স্নেহা হাসে…রাহুল খুব অবাক হচ্ছিলো স্নেহার এসব কান্ডে…আবার মনে মনে ভাবছে পাগল একটা…অকারণে হাসবেই তো.. ?
ক্লাস শেষ করে চলে আসছিলো স্নেহা…
রাহুল : স্নেহা!
স্���েহা : [ফিরে তাকিয়ে] ইয়েস্
রাহুল : তুমি আমাকে দেখে হাসছিলে কেনো?..
স্নেহা : কিছু ভাবছিলাম তাই…
রাহুল : কাকে আমাকে নিয়ে?..?
স্নেহা : দেখো একটা সময় ছিলো তখন তোমাকে নিয়ে ভেবেছি…এখন..
রাহুল : ??এখন?…
স্নেহা : সামির [ বলেই লজ্জায় ফিরে চলে যায়]
রাহুল স্নেহাকে ডাকতে চেয়েও আর ডাকেনি… মাথায় প্রচণ্ড রাগ উঠছিলো রাহুলের…স্নেহাকে সামিরের ব্যাপারে বুঝিয়ে দেওয়ার পরে ও…??
নেহা : রাহুল! কি বলছিলে স্নেহাকে?..
রাহুল : কই?…কিছু না..
নেহা : ওহ! I see…কিছুই বলোনি তুমি…দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওর চলে যাওয়া দেখছিলে…
স্নেহার রাহুলের কথা গুলো মনে পড়ছে অনেক
রাহুল বলেছিলো স্নেহাকে… বারণ করেছিলো কিন্তু স্নেহা??
সামির স্নেহার কাছে আসলে স্নেহা সামিরকে দেওয়ালের স���থে জোড়ে ধাক্ষা দিয়ে…দরজা খুলে পালিয়ে যায়…
সামির মাটিতে পড়ে যায়…সামির রেগে স্নেহা বলে বলে চিৎকার করে উঠে….
স্নেহা দৌড়ে পার্কিং এর একটা গাড়ির পেছনে লুকে যায়… সামির স্নেহাকে খুজতে আসে…
স্নেহা মনে মনে ভয়ে কাঁদছে… কেনো যে বিশাস করলো না রাহুলের কথা গুলো..?উলটা মজা করে উড়িয়ে দিয়েছে…
সামির স্নেহা বলে বলে চারদিক খুজতে লাগলো…
হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো সামির তার দিকেই এগিয়ে আসছে…?
স্নে���া সামিরের দিকে তাকালে…
সামির : স্নেহা ওয়েট!…
স্নেহা উঠে…দৌড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো…হঠাৎ সামনে থেকে একটা গাড়ী আসে..স্নেহা তার পায়ের সাথে আঘাত পেয়ে মাটিতে পড়ে যায়…
সামির স্নেহার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো কিন্তু আবার থেমে গেলো…
হঠাৎ দেখলো গাড়ী থেকে রাহুল নেমে…স্নেহাকে ধরে ফেলেছে…সামির আর সামনে যায়নি…পেছনদিকে চলে গেছে…
রাহুল : স্নেহা! ?? u ok?…
স্নেহা রাহুলকে দেখে ফুফিয়ে কেদে উঠে…?
রাহুল স���নেহার পা ঘষতে লাগে…
স্নেহা : রাহুল! ???
রাহুল : [স্নেহার দিকে তাকিয়ে] সরি! স্নেহা আমি খেয়াল করিনি…?
[স্নেহা ফুফিয়ে রাহুলকে ঝড়িয়ে ধরলো]?
রাহুল ফিল করছে স্নেহা অনেক ভয় পেয়ে আছে…?
রাহুল : স্নেহা?…?
স্নেহা : সরি! রাহুল?? আমি মনে করেছিলাম তুমি মিথ্যে বলছিলে সামিরের ব্যপারে…
রাহুল : ? সামির! কি করেছে?…[ স্নেহাকে সরিয়ে] বলো স্নেহা সামির তোমাকে কিছু করেছে?…
স্নেহা পেছন ফিরে তাকায় দেখে আশ���পাশে কোথাও সামির নেই…
স্নেহা আবার ও কেদে দিলো??
রাহুল : ওকে রিলেক্স…বলতে হবে না..উঠো..
স্নেহা : কিছুই করতে পারেনি..? কিন্তু করতে চেয়েছিলো??
রাহুল : ? আমিতো জানতাম এমন কিছু একটা হবে…
স্নেহা : ???
রাহুল : ওকে! আর কাঁদতে হবে না!…উঠো…
স্নেহা রাহুলকে ধরে উঠছিলো কিন্তু উঠতে পারছে না …
রাহুল বুঝতে পারলো পা হয়তো মচকে গিয়েছে…
রাহুল স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো…
স্নেহা রাহুলের দিকে চ���য়ে আছে…
রাহুল স্নেহাকে গাড়িতে তুলে নেই…
পুরো গাড়িতে রাহুল স্নেহাকে বকে বকে যাচ্ছে…
রাহুল : [ ড্রাইভিং করতে করতে ]বার বার ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম তোমাকে স্নেহা… ?আমার কথার দামই দিলানা… ও এর আগে ও অনেক মেয়ের সাথে??…
স্নেহা :??…
রাহুল : ঐ সামিরকে তো আমি??..
আসলে দোষ তোমার কি দরকার ছিলো ওর সাথে বের হওয়ার?..?
তখন তো আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক বলছিলে…মার্মেট কেফে যাবো..
হুহ? আরো কতো ���্রামা…?
স্নেহা রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে…
রাহুল বুঝতে পারায় ফিরে তাকালো..
রাহুল : কি হলো এমনিতে তো অনেক বক বক করো আজ চুপ করে রইলে যে… ওহ! বুঝতে পেরেছি.. সামিরকে অনেক মিস্ করছো তাই না…
স্নেহা একটু হেসে দেই…
হোষ্টেলে পৌছে..
স্নেহা গাড়ি থেকে নিজে নিজে নামতে চাইলে…
রাহুল : ওয়েট!
স্নেহা চুপ করে বসে পড়লো…
রাহুল উঠে…স্নেহার পাশে গিয়ে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো…
স্নেহা রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে?
রাহুল : কি হলো দেখে আছো…যে
স্নেহা : আমি তো তোমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে মার্মেট কেফের নাম নিয়েছিলাম..তুমি কিভাবে জানো আমি ঐ জায়গায়..?
রাহুল : [ রেগে ]পরে বলা যাবে…?
স্নেহা : এখন বলো না প্লিজ..
রাহুল আর কিছু না বলে স্নেহাকে নিয়ে হাটা শুরু করলো…
রাহুল হেসে উপরে উঠছিলো ঠিক সেই সময় রাহুলের ভাবী সিফা…একটু কেশে..রাহুলের সামনে দাঁড়ালো…
সিফা : দুইটা একসাথে…রাহুল..?
রাহুল : [একটু চিন্তায় পড়ে গেলো ভাবী কি সব দেখেছে কি না] দুইটা মানে?..?
সিফা : এই যে দাদীর সাথে নেহার জন্য ঝগড়া করেছিস…আবার এইদিকে এসে স্নেহার সাথে রোমান্স করছিস ?
রাহুল : স্নেহা! ?Come on ভাবী.. স্নেহার সাথে রোমান্স করতে যাবো কেনো..জাস্ট একটু ডান্স..
সিফা : হয়েছে হয়েছে আমাকে আর সাফায় দিতে হবে না… By the way ঐ নেহার চেয়ে স্নেহা কিন্তু ব্যাটার আছে… ??? ওহ! সরি আমি কিছু বলিনায়..[ভাবী তাড়াতাড়ি চলে গেলো ]
রাহুল আর কিছু না ভেবে রুমে চলে যায়…গিটার নিয়ে অনেক্ষণ বাজাতে??থাকে….ঠিক সেই সময় [স্নেহার সাথে করে যাওয়া মোমেন্ট গুলো মনে পড়ছে..রাহুল মনে মনে হেসে যাচ্ছে? আর ব্লাশিং হচ্ছে…]
মোবাইলটা চোখে পড়ায়…ভাবলো একটু ফেসবুকে ঢুকে দেখি ড্রামাকুইন আছে কি না…..
ঢুকে চেক করে দেখে স্নেহা অনলাইনে নেই…মোবাইলটা আবারো রেখে দিলো.. রাহুল…কিছুক্ষণ পর পর দেখছে রাহুল স্নেহা অনলাইনে আসছে কি না…
[রাতে, ১২টা বেজে ১৫ মিনিট…]
রাহুল দেখে স্নেহা অনলাইনে..এসেছে..
রাহুল : হ্যালো ড্রামাকুইন!?
স্নেহা : তোমার এসব বদমাইশির কারণে তোমাকে পচঁতাতে হবে বুঝেছো..
রাহুল : ওকে ওকে ফাইন ?আই এম ওয়েটিং ?..
স্নেহা : ওয়েট করো মিষ্টার রাহুল..স্নেহার সাথে বদমাইশি no way….
রাহুল : আচ্ছা তোমার কোমড়টা এতো সফট্ কেনো?
স্নেহা : ছিঃ কি বলছো এসসব?
রাহুল : তোমার হাত,পিট,কোমড়..??
স্নেহা : Stop it.. ওকে বাই..?
রাহুল : ওকে গেট লষ্ট..?
স্নেহা : ইউ টু..?
রাহুল : বাই ড্রামাকুইন?
[রাহুল স্নেহার কান্ড দেখে হেসে হেসে মোবাইল রেখে শুয়ে পরে…স্নেহার পাগলামি গুলো মনে পড়লে রাহুল আর না হেসে পারে না..??]
[কান্নার সূরে] দেখো ? তুমি আমাকে বকছো..কেনো? আমার যা ইচ্ছে তাই করবো তাতে তোমার কি?…তোমার তো আরো খুশি হওয়ার কথা…কারণ আমি আর তোমার পিছনে ডিষ্টার্ব করবো না…
রাহুল : [স্নেহার কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়] obviously you are right তাতে আমার কি… যাও ঐ সামিরের কাছে..?
[রাহুল রাগান্বিত ভাবে রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে]
স্নেহাও আর কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়…
সামির : হেই স্নেহা! come on কোথায় গিয়েছিলে?..আমিতো তোমাকে খুজতে খুজতে শেষ…?
[সামির স্নেহার হাত ধরে টেনে রাহুলের সামনে নিয়ে গেলো ]
সামির : রাহুল! She is my friend আদুরী! ওহ! সরি সরি??…স্নেহা..
and স্নেহা He is my friend Rahul..
স্নেহা : হ্যালো রাহুল✋?
রাহুল : অউ! হাই…?
নেহা এসে রাহুলের পাশে দাঁড়ায়..
নেহা : কোথায় ছিলে বেবি..কখন থেকে খুজছিলাম…
রাহুল : এইতো এইদিকটা গিয়েছিলাম..
নেহা : [ স্নেহার দিকে তাকিয়ে ] হেই..what are you doing here?..?
সামির : ওহ! নেহা she is my friend স্নেহা..and sneha she is my friend neha…?
নেহা : তোর ফ্রেন্ড.. ওয়াও??
স্নেহা : হ্যালো নেহা..✋?
নেহা : রাব্বিশ কোথাকার? চলো রাহুল…
[একে একে সামিরের সব ফ্রেন্ডসদের সাথে পরিচয় হয় স্নেহা…]
[সামির স্নেহাকে টেনে তাদের গ্রুপের মধ্যে আড্ডা দিতে নিয়ে যায়..স্নেহা চলে আসতে চাইলে ও রাহুলকে দেখে আর আসলো না..কারণ রাহুলকে jealous করাতে স্নেহার অনেক ভালোই লাগছিল.. ?]
আসিফ : রাহুল! এই সামির আবার স্নেহার পিছে পড়লো নাকি?..
♥Love At 1st Sight $2
Part : 7
writer-Jubaida Sobti♥
রাহুল আর কিছু না বলে চলে যায়..
স্নেহা : [মনে মনে] কতোক্ষণ এংগ্রি মুড আবার কতোক্ষণ রোমান্টিক মুড…কিছুই বুঝি না..?
স্নেহা ভাবতে ভাবতে হোষ্টেলে ফিরে গেলো…
দাদী : রাহুল! তুকে আমি কতোবার নিষেধ করেছি ঐ মেয়েকে এই বাড়ী আনবি না…তুই কি চাস আমি এই বাড়ী ছেড়ে চলে যায়?…
রাহুল : দাদী নেহার মধ্যে খারাপের কি আছে..
দাদী : খারাপের কি আছে মানে?..এটা জিজ্ঞেস কর যে ওর মধ্যে ভালোর কি আছে… আমার তো দেখলেই মাথাটা ধরে যায়…কি সব ড্রেস পড়ে আসে…
আর আজ কি করলো?..ড্রিংকস করে পুরা ছিঃ আমার তো লজ্জায়..
রাহুল : দাদী! নেহা অনেক ভালো একটা মেয়ে…তুমি বোঝার চেষ্টা করো..ও ড্রিংকস করে না
দাদী : নেহা তোর জন্য ভালো হতে পারে…এই বাড়ীর জন্য মোটেও না..
[রাহুল আর কিছু না বলে রাগ করে রুমে চলে যায়…অনেকবারই দাদীকে বোঝানো হয়েছে..কিন্তু কোনো লাভ হয়নি রাহুলের ]
পরদিন ভার্সেটিতে…
স্নেহা…পুরো ক্লাসই কমপ্লিট করলো কিন্তু রাহুলের কোনো দেখা নেই…
মার্জান : কি হলো কাকে খুঁজছিস?..
স্নেহা : ঐ নেহা ও আজ ক্লাস করতে এলোনা কি ব্যাপার বলতো…
আচ্ছা শোন তুই বস আমি একটু দেখে আসি..
মার্জান : স্নেহা আর কতো পাগলামি করবি?..
স্নেহা : যতোদিন না রাহুল আমার হবে..
ওকে বাই…
স্নেহা অনেকটা জায়গা ঘুরে…দেখে হঠাৎ, দেখতে পায়..নেহা ক্যান্টিনে বসে আছে…তার কিছু ফ্রেন্ডসদের সাথে..
স্নেহা : [ নেহার কাছে গিয়ে ] মিস্ ইউনিভার্স তুমি রাহুলকে দেখেছো?…?
নেহা : Just Shut-up রাহুলের নাম তোমার মুখেও আনবা না..বুঝেছো..?
[স্নেহা নেহাকে একটি স্প্রাইটের বোতোল এগিয়ে দেই] হঠাৎ রাহুল এসে স্প্রাইটের বোতোলটি স্নেহার হাত থেকে কেড়ে নেই..
স্নেহা : আরে কি করছো মিস্ ইউনিভার্স এর মাথা হট হয়ে গেছে তাই একটু ঠাণ্ডা করতে দিলাম…আর তুমি কিনা..
রাহুল : এতো ওভার স্মার্ট হইও না বুঝলে…তোমার চালাকি তোমার সব প্লান আমি বুঝি…
স্নেহা রাহুলের কাছ থেকে স্প্রাইটের বোতোলটা কেড়ে নিয়ে..ডুগডুগ করে খেতে লাগলো… আর রাহুল অবাক হয়ে চেয়ে আছে..
স্নেহা : [ রাহুলের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে] কি ভেবেছো আমি স্প্রাইটে ওয়াইন দিয়েছি…হি-হি নো মিষ্টার হ্যান্ডস্যাম..i think তুমি জানো না আমি এক প্লান দুইবার ইউজ করিনা..?
[ Rahul Shocked ?sneha Rocks? ]
স্নেহা বাইরে বেরিয়ে চলে গেলো.. ক্লাসের দিকে এগুতেই পিছন থেকে ডাক দিলো হেই চ্যান্ডি বলে…স্নেহা ফিরে তাকালে দেখে…ক্যান্টিনে ধাক্ষা খেয়েছিলো ছেলেটা…
সামির স্নেহার দিকে এগিয়ে আসে..
স্নেহা : আপনি কি আপনার চ্যান্ডিকে এখনো খুজে পাননি?..
সামির : ওহ সরি! আসলে..তোমাকে দেখতেই চ্যান্ডির কথা মনে পড়ে গেলো..
আচ্ছা কি যেন নাম বলেছিলে তোমার?..
স্নেহা : গতকাল বলেছিলাম..স্নেহা!
সামির : ওহ ইউ মিন..আদুরী ?
স্নেহা : মানে?..?
সামির : না মানে স্নেহ ?স্নেহ মানে আদর…
স্নেহা : Not স্নেহ it’s স্নেহা…
সামির : ওহ ওকে ওকে!?.. So কেমন আছো…
স্নেহা : হুম ভালো..
হঠাৎ রাহুল ক্যান্টিন থেকে বেড়িয়ে..আসে..
সামির : হেই রাহুল what’s up buddy?
[সামির স্নেহাকে ২মিনিট দাড়াতে বলে রাহুলের দিকে এগিয়ে যায়]
রাহুল : m alright.. তোর কি খবর বল?.কই ছিলি এতোদিন?…
সামির : মা কে দেখতে গিয়েছিলাম ব্যানারোসে্…
[স্নেহা দূর থেকে দেখতে থাকে তাদের আলাপ আলোচনা…]
রাহুল : So where is your চ্যান্ডি?
সামির : চ্যান্ডির খবর তো জানিনা দোস্ত কিন্তু নতুন একটা চ্যান্ডি পেয়েছি…?দেখার পর থেকেই…রাতের ঘুম হারাম?
ঐ দেখ সাদা জামা পড়া মেয়েটি..?
সামির রাহুলকে ইশারা করে স্নেহার দিক দেখিয়ে দিলো…
সামির আর রাহুল দুজনেই স্নেহার দিক তাকাতে… স্নেহা একটু অবাক হয়ে উঠে…
স্নেহা : [মনে মনে ] আমার কথা কিছু বলছে নাকি এই চ্যান্ডির বাচ্চা?
[রাহুলের মুখ থেকে হাসিটা উদাও হয়ে যায়..স্নেহাকে দেখে]
সামির : কি হলো দোস্ত কেমন বলনা?..
রাহুল : আমি আসি সামির পরে কথা হবে..[ রাহুল স্নেহাকে রাগান্বিত ভাবে দেখে চলে যায়…]
স্নেহা ও মুখ ভেঙিয়ে চলে যায়..ক্লাসে..
ক্লাস শেষে…
স্নেহা বের হচ্ছিলো ঠিক সেই সময়…হঠাৎ..রাহুল এসে স্নেহাকে টেনে উপরে নিয়ে যায়…
স্নেহা : ওউ…what happen মিষ্টার হ্যান্ডস্যাম…? আবার কি হলো..
রাহুল : Listen সামির তোমাকে কি বলছিলো?..?
স্নেহা : কি বলছিলো মানে?..?
রাহুল : Shut-up ড্রামা করবানা একদম?..?
স্নেহা : আজিব? এংগ্রি হওয়ার কি আছে?.. ও জাষ্ট হাই হ্যালো কেমন আছো জিজ্ঞেস করছিলো…
রাহুল : আর তুমি কি বলেছিলে?..?
স্নেহা : ওউ ওউ..wait মিষ্টার রাহুল… are you jealous?.. ?
রাহুল : আমি?..Jealous করবো তোমাকে নিয়ে…
স্নেহা : মনে তো তেমনি হচ্ছে…ফিল্মের হিরোয়িনরা যখন অন্য ছেলের সাথে কথা বলে…তখন হিরো Jealous হয়ে হিরোয়িনকে বকতে থাকে… আর এখন তো ঠিক আমি সেইরকমই কিছু দেখছি?
রাহুল : তোমার এসব ফিল্মি ড্রামা বন্ধ করো…ওকে.. আর আমি তোমাকে নিয়ে jealous করছি না… [ রাহুল চলে যেতে লাগলো ]
স্নেহা রাহুলের হাত ধরে তার দিকে এগিয়ে নেই..
স্নেহা : আচ্ছা ? তাইলে আমাকে এইখানে আনার মানেটা…
রাহুল : [একটু ভেবে] ওহ! আমি জাষ্ট..
স্নেহা : জাষ্ট! ?কি?..
রাহুল : দেখো আমার লেইট হচ্ছে বাই..
[ স্নেহাকে সরিয়ে রাহুল চলে যায়]
স্নেহা হাসতে থাকে…??
বাসায় গিয়ে রাহুল খাটে বসে…সামিরের কথাটি বার বার কানে বাজছে রাহুলের…
রাহুল : [ মনে মনে ] damn it! সামির যদিও স্নেহাকে লাইক করে থাকে তাতে আমার কি.. আমি কেনো এতো টেনশন নিচ্ছি…
[রাহুলের চোখে ভেসে আসছে স্নেহার চুপটি করে হেসে চলে যাওয়া… সামনে এসে রাহুলের পথ আটকানো… লাইব্রেরীতে রাহুলকে জোড় করে কাছে টেনে নেওয়া…জোড়ে বাড়ি মারাতে স্নেহার ভয় পেয়ে যাওয়া]
রাহুল : Shit! Shit! Shit! ?
Stop it! রাহুল” তুই আবারো ওই ড্রামা কুইনের কথা ভাবছিস..
রাহুল আর কিছু না ভেবে ফ্রেশ হতে চলে গেলো..
বিকেলে, স্নেহা রাহুলদের বাড়ীতে ঢুকতেই দেখে রাহুল ড্রইং রুমে বসে পেপার পড়ছে…
স্নেহা : [ মনে মনে] আজ বাসায়..এই টাইমে..?হাউ ব্রিলিয়ান্ট পেপার ও পড়ছে..
[রাহুল স্নেহার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আবারো পেপার পড়তে ব্যস্ত হয়ে যায়…]
রাহুল : [ মনে মনে] আসছে আবার ড্রামা করতে..
[স্নেহা কিছু না বলে ভেতরে চলে যায়]
স্নেহা ফাবিহাকে ডান্স শেখাতে থাকে.. হঠাৎ..দেখে রাহুল এইদিকটা এগিয়ে আসছে..
স্নেহা অবাক হয়ে যায়..রাহুল এসে এইভাবে তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…কেনো..
স্নেহা : [মনে মনে] এইভাবে হেসোনা বস্ নজর লেগে যাবে?
রাহুল : ভালোই তো ডান্স পারো বন্ধ করে দিলে যে?..
স্নেহা : ???
রাহুল : [স্নেহার দিকে এগিয়ে আসে ] ফাবিহা তোমার ডান্স টিচারকে বলবে.. আমাকেও একটু ডান্স শেখাতে..?
স্নেহা :[মনে মনে ] মাথায় কি পাকিয়ে এসেছে আল্লাহ জানে…?
ফাবিহা : চাচ্চু আমার টিচার তো সব..ডান্স পারে.. ?হিপ-হপ, ক্লাসি,
স্নেহা : দেখো ফাবিহা! আমি ছেলেদের ডান্স শেখায় না… ?
রাহুল : ফাবিহা মিউজিকটা স্টার্ট করো… তোমার টিচার আমাকে ডান্স শেখাবে…
স্নেহা : কবে বললাম আমি ডান্স শেখাবো?..?
রাহুল : উফ! স্নেহা! যদি..ডান্স পেরে থাকো তাহলে সবাইকে ডান্স শেখানো উচিৎ হোক সে ছেলে…আর হোক সে মেয়ে..?
স্নেহা : [ মনে মনে ] কিছু তো মাথায় পাকিয়েছে… নিশ্চয় নাহলে..মুডের এতো চেঞ্জ দেখা যাচ্ছে কেনো..?
রাহুল : কি ভাবছো স্নেহা! Come on?
ফাবিহা মিউজিক ছেড়ে দিলো…..
রাহুল হাত বাড়িয়ে দেই..স্নেহা হাত দেওয়ার জন্য…
স্নেহা হাত দিতেই রাহুল স্নেহাকে কাছে টেনে নেই…
স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে…?
[রাহুল স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড দিয়ে ধরলে স্নেহা শকড হয়ে যায়…?]
[Sneha’s heart beating fast]
স্নেহা : [রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে] দেখো আমি কাপল ডান্স পারি না.. so আমাকে দিয়ে হবে না…?
রাহুল : [স্নেহার কাছে এসে] ওকে আমি দেখিয়ে দিচ্ছি…? স্নেহা come..?
স্নেহা : দেখো কাছে আসবা না বলেদিলাম… ? [ বিড় বির করে বলতে লাগলো স্নেহা সব টাচ্ করার ধান্ধা]
রাহুল : why স্নেহা!?
স্নেহা : বললাম তো পারি না..আমি..?
[রাহুল স্নেহার কাছে এসে জোড় করে..স্নেহাকে টেনে নেই..]
স্নেহা : দেখো আজেবাজে জায়গায় হাত দিবা না…বলেদিলাম আমার মোটেও পছন্দ না এসব…?
[রাহুল স্নেহার পেটে স্লাইড করে?]
রাহুল : আর যদি দেই!?
স্নেহা : দেখো প্লিজ আমার অনেক শুরশুরি লাগে..এসব….?
[Rahul give a tedi smile?]
রাহুল : Come on স্নেহা feel it! and enjoy it..?
স্নেহা : লজ্জা করে না বাচ্চা মেয়ে একটার সামনে এসব করতে ?
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ফাবিহা.. প্লিজ ভলিউমটা আরেকটু স্পিড…?
ফাবিহা : ওকে চাচ্চু!
[স্নেহা রাহুল থেকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করলে রাহুল তাকে আরো শক্ত করে টেনে নেই…]
রাহুল : একদম ছুটার ট্রাই করবেনা… তুমি কি ভেবেছো ডিষ্টার্ব শুধু তুমি করতে পারো?
স্নেহা : দেখো আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো.. ?
রাহুল : ওকে ফাইন! করো..?
স্নেহা বুঝতে পারলো চিৎকার করে কোনো লাভ হবে না মিউজিক এতই জোড়ে বাজছিলো যে ফাবিহাকে ডাকলেও শুনবে না…
রাহুল স্নেহাকে নাচাতে নাচাতে…স্নেহার পিট, কোমোড়, পেট..এতে স্লাইড করতে থাকে… ?স্নেহা চেঁচিয়ে উঠলেও রাহুল আরো বেশি করে নাচাতে থাকে…?
[ Rahul enjoy that moment ??]
নাচতে নাচতে এক পর্যায়ে স্নেহা রাহুকে জোড়ে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে দেই…
রাহুল : What happen?..
স্নেহা দৌড়ে গিয়ে মিউজিক বন্ধ করে দেই…
স্নেহা : ফাবিহা আজকে আর না আমি এখন যায়.. কাল আসবো…স্নেহা দৌড়ে বেরিয়ে পড়ে…
রাহুল [ হেসে হেসে ] মিস্ ড্রামাকুইন… মাথায় প্লান শুধু তোমার আসে… তাই না..??
[স্নেহা বাইরে বেড়িয়ে..বুকে হাত দিয়ে দেখে.. বুকটায় এখনো অধিক জোড়ে কম্পন হচ্ছে…♥?আর কিছু না ভেবে স্নেহা তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পড়ে..]
চলবে…
♥ Love At 1st Sight $2
Part : 5
writer-Jubaida Sobti♥
স্নেহা : দেখো এসব কিন্তু ভালো হচ্ছে না..আমি কি তোমার সাথে….
রাহুল : [স্নেহার মুখে হাত দিয়ে] শিসস্! silent স্নেহা! and feel it!…?
স্নেহা রাহুলের কান্ড দেখে ফুল হতবাগ হয়ে তাকিয়ে আছে??….
তাকাতে তাকাতে স্নেহা কোন সময় প্রজেক্ট এর সুইচের উপর হাত দিয়ে দিয়েছে ঠেরি পাইনি… হঠাৎ স্নেহার হাতে শকট লেগে উঠলো… আর স্নেহা জোড়ে চিৎকার করে উঠে…
রাহুল : Shit! Careful damn it!?
সবাই স্নেহার দিকে এগিয়ে আসে কি হলো বলে….
রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহার হাত তার মুখে নিয়ে চেপে ধরে…
[Sneha closed her eyess?]
[রাহুলের কিছু ফ্রেন্ড রাহুলের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে…??]
রাহুল স্নেহার দিকে তাকিয়ে দেখে, স্নেহা চোখ বন্ধ করে গুটিমুটি হয়ে ঘাবড়ে আছে..
রাহুল : U Ok?…?
স্নেহা চোখ খুলে রাহুলের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো..?[ হুম ]
রাহুল আর কিছু না বলে…স্নেহার প্রজেক্ট কমপ্লিট করে দেই আগে…স্নেহা চুপ করে তাকিয়ে থাকে…?
রাহুল : তোমারটা কমপ্লিট হয়ে গেছে..তুমি জমা দিয়ে দিতে পারো..
স্নেহা : একসাথে দি?..?
রাহুল : ???
স্নেহা : ওকে!?? দিচ্ছি..
স্নেহা জমা দিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়ে..,
আসিফ : [রাহুলের ফ্রেন্ড] কি ব্যাপার দোস্ত ? দুইটা একসাথে?
রাহুল : আরে পাগল নাকি..ওর হাতে শকড লেগেছিলো তাই..
আসিফা : হে হে তাতো বুঝেছি??
রাহুল : Shut-up ok?
এইদিকে,
রিফাত : স্নেহা! তুই কি জিনিষরে বাবা! ?
স্নেহা : আমি কিছুই করিনি? সব Automatically হচ্ছে…
মার্জান : আহ! আহ! আমরা কিছু বুঝি না তাই তো..?
স্নেহা : হয়েছে চল..এবার.. আমার কেমন যেন মাথা গুরাচ্ছে…?
জারিফা : মাথা গুরাচ্ছে মানে..কি কি করেছিস…?
স্নেহা : চুপ কর বদমাইশ!?
স্নেহা হোষ্টেলে ফিরে আসে! লাঞ্চ করে ফেসবুকে ঢুকে…হঠাৎ দেখে রাহুল মেসেজ দিয়েছে..??
[ রাহুল : তুমি ঠিকাছো?..]
স্নেহা : মার্জান আমাকে একটা চিমটি দেতো ???
মার্জান উঠে স্নেহাকে জোড়ে একটি চিমটি কাটলো…?
স্নেহা : আআহ! ???উফ এতো জোড়ে দিতে বলেছি নাকি?..?
মার্জান : আচ্ছা কেনো দিতে বললি…??
স্নেহা : দেখ!?
মার্জান : ওয়াও…রাহুল মেসেজ দিয়েছে ☺☺
এইদিকে দে আমি লিখি… [ মার্জান স্নেহা থেকে মোবাইল কেরে নিয়ে লিখে দেই… { না গো কেমনি ঠিক থাকবো বলো তোমাকে ছাড়া} ]
স্নেহা :??? এটা কি লিখলি…
Rahul set a nickname for you [Dramaqueen]
মার্জান : তোর নিকনেইম সেট করেছে ড্রামাকুইন???
স্নেহা : [ মার্জান থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ]
রাহুলের নিকনেইম সেট করে দেই.. মি.হ্যান্ডস্যাম?
রাহুল : Again Drama??
স্নেহা : আমার সব কিছুই তোমার ড্রামা মনে হয় তাই না?…?
রাহুল : Of course u are a dramaqueen…?
স্নেহা : Don’t called me that! ok?
রাহুল : Dramaqueen?
স্নেহা : এসব কি ড্রামা দেখলা…এইবার তোমাকে আসল ড্রামা দেখাবো.. ?
রাহুল : ওকে.. i m waiting ?
স্নেহা : ??
বিকেলে, স্নেহা ফাবিহাকে ডান্স শিখিয়ে..চলে যাওয়ার সময় হলো..
স্নেহা : ফাবিহা..তোমার চাচ্চু কি আজ ও বাসায় নেই..?
ফাবিহা : আছে তো ওর রুমেই..
স্নেহা : ওহ!?
হঠাৎ স্নেহা উপরের দিকে তাকাতেই দেখে রাহুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে…হাতে কফির গ্লাস নিয়ে…স্নেহার দিকে চেয়ে আছে..
[রাহুল স্নেহাকে একটি চোখ টিপ মাড়লো? হাত দিয়ে ইশারা করে হ্যালো বললো..]
স্নেহা : [মনে মনে] এইতো দেখি আমার বাজি আমাকে মারছে…??
ফাবিহা : [স্নেহার পাশে এসে ফিসফিস করে] u love my chacchu..?
[স্নেহার কথাটি শুনে ধম আটকে গেলো.. কাশতে লাগলো স্নেহা..?]
ফাবিহা : i know that..টিচার..?
স্নেহা : কিভাবে?..?
ফাবিহা : ঐদিন আমি সব শুনেছি.. তুমি চাচ্চুর রুমে চাচ্চুকে আই লাভ ইউ বলছিলে..?
[স্নেহা তাড়াতাড়ি ফাবিহার মুখ চেপে ধরে…?]
[.কোনো কথা শুনতে পাচ্ছে না রাহুল..কিন্তু তাদের কান্ড দেখে অবাক হলো??]
[স্নেহা রাহুলের দিকে তাকিয়ে একটু হাসে..যাতে রাহুল কিছু বুঝতে না পারে..]
ফাবিহা : [ তার মুখ থেকে স্নেহার হাত সরিয়ে] don’t worry টিচার..রিলেক্স আমি কাউকে বলবো না..?
স্নেহা : [একটু হেসে] you help me?..?
ফাবিহা : Of course!☺☺
স্নেহা : [ ফাবিহাকে ঝড়িয়ে ] থেংক ইউ?
ফাবিহা : কিন্তু একটা কাটা আছে!..?
স্নেহা : কি কাটা?..?
ফাবিহা : ঐ যে! নেহা…? ও তো চাচ্চুর সাথে আটার মতো লেগে আছে..
স্নেহা : ওহ! ওর চিন্তা তুমি বাদ দাও ঐ পেত্নিকে তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও…?
ফাবিহা : ??
স্নেহা : ওকে! এবার যাওয়া যাক!?
স্নেহা ড্রইং রুমে গেলো.. দেখে দাদী আর সিফা দুজনই বসে আছে..
স্নেহা : ওকে বাই..Guys..কাল দেখা হবে!?
সিফা : আর একটু তাড়াতাড়ি আসতে পারো না.. আজ তো আর আড্ডা দেওয়া হলোনা..
স্নেহা :??ওকে কাল থেকে ট্রাই করবো..
[ কথাটি বলেই স্নেহা পিছন ফিরছিলো… হঠাৎ দেখে রাহুল নামছে]
স্নেহা আস্তে আস্তে হাটতে লাগলো.. ?রাহুল স্নেহাকে আড়চোখে দেখে দাদীদের দিকে এগিয়ে আসছে…
[ মাথায় সবসময় স্নেহার দুষ্টু বুদ্ধিই কাজ করে…? স্নেহা ইচ্ছে করেই রাহুলের সাথে ধাক্ষা খেয়ে পড়ে যেতে চাই..রাহুল স্নেহাকে তাড়াতাড়ি ধরে ফেলে ]
রাহুল : ?? এত্তো Careless কেনো..তুমি
স্নেহা : ???ট্রাই মাড়ছিলাম ধরো কিনা দেখার জন্য?
[দাদী, সিফা, ফাবিহা সবাই তাকিয়ে আছে…রাহুল আর স্নেহার দিকে…]
ফাবিহা : Wow চাচ্চু! u are rocks..?
ফাবিহার কথা শুনে সিফা আর দাদী হেসে উঠে…
রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহাকে ছেড়ে দেই…
স্নেহা : [ফিসফিস করে] ছাড়লে কেনো..আর কিছুক্ষণ ধরে রাখতে..? ভালোই তো লাগছিলো…
রাহুল : ????
স্নেহা : ওহ! সরি feel it rahul! feel it?
রাহুল : ড্রামেবাজ??…
স্নেহা চলে যায় হাসতে হাসতে!…??
দাদী : মেয়েটা কিন্তু ভালোই..আমার অনেক ভালো লাগে…
ফাবিহা : দাদী! আমার টিচার অনেক কিউট তাই না!? যখন ডান্স করে তখন তো আমি শুধু টিচারের চুল গুলো দেখে থাকি… কি সিল্কি সিল্কি চুল..? আমি তো ভাবি ইশ! আমার যদি এমন একটা চাচী থাকতো..
রাহুল : ??
সিফা রাহুলের দিকে তাকিয়ে হাসছে?
রাহুল : What!?
সিফা : মোমেন্ট টা অনেক Joss ছিলো রাহুল.. আমার হাতে ক্যামেরা থাকলে..
রাহুল : ওকে! স্টপ..ও পড়ে যাচ্ছিলো তাই…ধরেছি…
দাদী : না ধরলেও পারতি!…?
পড়লে পড়তো আরকি…
রাহুল : আজিব এটা এতো? সিরিয়াসলি নেওয়ার কি আছে…আমি তো..
সিফা : সাহায্য করছিলি..তাই না? ok we are understand তাই না দাদি..
দাদী : হুম হুম! বুঝতে পেরেছি?
রাহুল : ওকে ফাইন!? আমি এইখানে বসি সেটা তোমরা চাওনা তাই তো..Bye
[এই বলে রাহুল উঠে চলে যায়]
দাদী : আরে রাহুল…দাড়া!?
রাহুল রুমে গিয়ে গিটার নিয়ে বসে ??…বাজাতে বাজাতে হঠাৎ
ফাবিহার কথাটি কানে বেজে উঠলো রাহুলের..
[আমার টিচারটা অনেক কিউট তাই না! যখন ডান্স করে আমি শুধু টিচারের চুল গুলো দেখে থাকি..কি সিল্কি সিল্কি চুল? ইশ! আমার যদি এমন একটা চাচী থাকতো ]
রাহুল হঠাৎ একটু হেসে উঠলো…? আর ভাবতে লাগলো.. সত্যিই তো স্নেহাকে ডান্স করতে দারুণ লাগে…
আজ বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন দেখছিলাম.. গোলপী রঙ এর জামাটা ওকে অনেক সুট করে..গায়ের রঙের সাথে একেবারে মিশে গেছে জামাটা…
রাহুল স্নেহার সাথে ঘটে যাওয়া প্রতিটা মোমেন্ট মনে করছে…প্রথমদিন তাকে কিভাবে বাচিয়েছে..ক্লাসে এসে তার পাশে হুট করে বসে যাওয়া… রাহুলকে চোখ টিপ মারা…রিকোয়েষ্ট এক্সেপ্ট করার জন্য ঝর্ণার ধারে লাফিয়ে উঠা…ইচ্ছে করে গায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়া…?
হঠাৎ রাহুলের কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি..মনে পড়লো..স্নেহা পড়ে যাচ্ছিলো আর তাকে হুট করে ধরে ফেললো..
এসব ভেবে রাহুল ব্লাশিং হতে লাগলো..?? আয়নার দিকে তাকাতেই রাহুল তার নিজের চেহেরা দেখে অবাক হলো..
রাহুল : [মনে মনে] একি আমি ড্রামাকুইনের কথা ভেবে কেনো ব্লাশ হচ্ছি… ??
Shut-up rahul..stop it Ok… ওকে কেনো ভাবছিস…? She is a dramaqueen..
চলবে.,,,,