Monday, June 30, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2380



love At 1St Sight Season 3 Part – 35

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 35

writer-Jubaida Sobti

সামিরের বাবা-মা স্নেহাকে অনেক প্রশ্নই করে যাচ্ছে…তার কি পছন্দ না পছন্দ,পড়া লিখা কেমন চলছে..এমন অনেক ধরনেরই, কিন্তু স্নেহা কিছুরই জবাব দিতে পারছিলো না বার বার কথা আটকে যাচ্ছে, মুখ দিয়ে কোনো শব্দই বেরুচ্ছিলো না…

স্নেহা একটু লাজুক বলে,সব প্রশ্নের উত্তর স্নেহার বাবাই দিচ্ছিলো…

সামিরের মা : লাজুক তো এমন সবাই হয়…সব সময় লাজুকতায় থাকে নাকি আজ আমাদের দেখে লজ্জা পাচ্ছে!

স্নেহার বাবা : না আসলে ও ছোট থেকেই এমন!

সবাই কথা বলাবলি করছে হাসাহাসি করছে, মামী এসে টেবিলে নাশতা দিয়ে গেলো, স্নেহাকে অনেক জোড় করা শর্তে ও কিছু মুখে দিলো না স্নেহা!

মাথা নিচু করেই বসে আছে, আড়চোখে সামিরের দিক তাকালেই দেখে সামির ও কিছুক্ষণ পরপর তাকাচ্ছে স্নেহার দিক! মোটেও ভালো লাগছিলো না এসব স্নেহার! ইচ্ছে করছে দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে রাহুলের কাছেই ছুটে যাবে…

সামিরের মা : আচ্ছা আমরা একটু ওদের একা কথা বলতেদি! ওদের পার্সোনাল কোনো কথা থাকলে ওটাও ডিসকাস করেনিক!

স্নেহার বাবা : হ্যা! এটাও ঠিক! [ বলেই আমরিনকে ডাক দিলো, আমরিন এগিয়ে আসতেই ]

– শোন আমরিন তুই স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ঘুড়িয়ে আন!

আমরিন : আচ্ছা!

[ আমরিন স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গেলো, পা চলছিলো না স্নেহার,যেনো পায়ে কেউ কাটা বেধে দিয়েছে, তাও বাধ্য হয়ে ছাদে উঠলো ]

আমরিন : আপনারা কথা বলে বলে দেখুন! আমি ওদিকটাই আছি! [ স্নেহাকে চোখ মেরে ] স্নেহা! তুই ঘুড়িয়ে দেখা! [ বলেই হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]

স্নেহা সামিরের দিক একবার তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়! এদিকওদিক তাকিয়ে রিলিং এ হাত রেখে দাঁড়ালো, চারদিক তাকাতেও আজ অসজ্য লাগছে স্নেহার! তারউপর এই শাড়ী!

সামির : [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আমি জানি স্নেহা! হুট করেই এসব তোমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে!

– আমি চাইলেই তোমাকে ভার্সটিতে পার্সোনাল অর সবার সামনে প্রপোজ করে মনের কথা বলতে পারতাম! কিন্তু আমি এসব করিনি কারণ…আমি জানতাম তুমি কক্ষনোই হ্যা বলতে না!

– কিন্তু স্নেহা! বিশাস করো যেদিন থেকে তোমাকে দেখেছি… আমার সবই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো!

স্নেহা : দে…দেখেন! এসব আমাকে বলে লাভ নেই! আপনিতো জানেনই রাহুল আর আমার ব্যা..ব্যাপারটা!

সামির : হ্যা! জানি!

স্নেহা : তাহলে এসব কেনো করলেন?..

সামির : ভাগ্য! ভাগ্যই আমাকে তোমার কাছে টেনে এনেছে!

– ভালো তো অনেককেই বাসা যায় স্নেহা, কিন্তু ভাগ্যে যার সাথে মিল থাকবে তুমি তো তারই হবে তাই না!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আ…আমি আপনাকে বি..বিয়ে করতে পারবো না…

– আমি রাহুলকে…. [ বলতেই চোখে পানি এসে জমে গেলো ]

সামির : রাহুল! [ বলেই হেসে উঠে ] ওর বাবা – মাই তো একত্রে থাকতে পারলো না! আর ও তোমাকে সারাজীবন এক করে রাখতে পারবে তার গ্যারান্টি কি?..

স্নেহা : দেখেন! এসব ফালতু কথা আমার সাথে বলবেন না! আমাদের মাঝে গ্যারেন্টি বলতে কিছু নেই,রাহুল কেমন?..আমাকে কিভাবে রাখবে এসব আমাদের মাঝেই থাক!

সামির : ওকে! সরি!

স্নেহা : আপনার পরিবার আমার পরিবারের জন্য যা করেছে তার জন্য ধন্যবাদ দিলেও ছোট হবে!

– চেষ্টা করবো আপনাদের টাকা গুলো যাতে তাড়াতাড়ি …

সামির : হেইই ওকে ওকে! টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না! ওসব বাদ দাও!

স্নেহা : আ..আপ..আপনি প্লিজ! আপনার বাবা- মা কে বলে দিবেন! যে আপনার আমাকে পছন্দ না! আর আপনি এই বিয়ে করবেন না!

[ বলেই স্নেহা পাশমুড়ে দৌড়ে নিচে চলে যায়, সামির ও একটু হেসে এদিকওদিক তাকিয়ে নিচে নেমে আসে ]

স্নেহা নিচে নেমে রুমে ঢুকে হাতের চুরি কানের দুল সব খুলেই টেবিলে ছুড়ে মারলো!

স্নেহার মা : [ রুমে এগিয়ে এসে ] স্নেহা! সব ঠিকাছে তো! [ স্নেহা চুপ করে রইলো ]

– আরে কি হলো?.. কিছু বলছিস না কেনো?…

স্নেহা : মা আমি এসব শাড়ী পড়ে থাকতে পারছিনা! আমি চেঞ্জ করে আসি!

স্নেহার মা : আরে?..আগে ওদের যেতে তো দে!

[ হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়লো, তাকিয়ে দেখলেই দেখে সামিরের মা এগিয়ে আসছে ]

স্নেহার মা : আরে আপনি আসুন!…

সামিরের মা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] স্নেহা?..কথা হয়েছে তো সামিরের সাথে?…

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ]…জি! হ…হয়েছে!

সামিরের মা : [ হেসে ] আচ্ছা! [ বলেই তার হাত থেকে দুটো চুড়ি খুলে স্নেহার হাতে পড়িয়ে দেয় ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] জি…এসব?..

সামিরের মা : এসব আমার থেকে তোমার জন্য গিফট! ওকে?.. [ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো! কি হচ্ছে এসব তার সাথে, ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কেঁদে উঠবে ]

– আচ্ছা আমরা এখন আসি হ্যা!

স্নেহার মা : আরে না এভাবে কেনো যাবেন! কিছুক্ষণই তো হলো এসেছেন!

সামিরের মা : আমরা তো স্নেহাকে দেখতে এসেছি, স্নেহাকে দেখা শেষ! তাই এখন চলে যাওয়ার পালা…

– শেষ বললে ও হয়না! মাশাল্লা পরীর মতো দেখতে!

– আচ্ছা স্নেহা! আমরা আসি হ্যা! ভালো থেকো! [ বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে বেড়িয়ে যায়, সাথে স্নেহার মা ও পিছু পিছু বেড়িয়ে গেলো ]

[ ধপাস করেই স্নেহা খাটে বসে পড়লো,কি হচ্ছে? কি করবে? কিছুই মাথায় আসছে না! চোখ থেকে পানি ফেলছে আর ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে ]

[ কিছুক্ষণ পর রুমে কেউ ঢুকার আওয়াজ আসলে স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে ]

আমরিন : ওহো! স্নেহা! সব ঠিকটাক তো?..আচ্ছা হ্যা! তুই ঐ সময় এভাবে না বলে চলে এলি কেনো…বেশি লজ্জা লাগছিলো বুঝি! হ্যা?

– [ স্নেহার হাত টেনে নিয়ে ] ওয়াওও দেখি…কে পড়িয়েছে?..

পেছন থেকে,

স্নেহার মা : কে আর পড়াবে?.. স্নেহার হবু শাশুড়ি পড়িয়ে দিয়েছে! [ বলতেই স্নেহা পেছনে তাকিয়ে দেখে মা আর মামী দুজনেই এসেছে ]

আমরিন : বাহ! তাহলে একটা বিয়ে খাচ্ছি শিঘ্রই!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে খাট থেকে কাপড় গুলো টেনে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়, দরজা আটকাতেই চোখে জমিয়ে রাখা অভিমান সব ঝড়ে পড়তে লাগলো, মুখ চেপে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠছে স্নেহা! ]

মা! ওয়াসরুমের দরজা বাড়ি দিতেই,

কিছুক্ষণ পর, শাড়ী চেঞ্জ করে তার কাপড় পরে বেড়িয়ে আসে স্নেহা, রুমে ঢুকতেই দেখে তার মা বসে আছে, স্নেহা কিছু না বলে সোজা ব্যাগটা এগিয়ে নিয়ে টেবিল থেকে মোবাইল ব্যাগে ঢুকিয়ে কাধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো!

স্নেহার মা : আরে স্নেহা! দাড়া কোথায় যাচ্ছিস!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে ] কো..কোথায় যাবো আর?..

স্নেহার মা : কি হয়েছে স্নেহা?..তুই ঠিকাছিস তো?…

স্নেহা : হ্যা! ঠিকাছি

মা : [ বুঝতে পারলো স্নেহা কেঁদেছে ]

– দেখ স্নেহা হুট করেই এসব হয়েছে তাই হয়তো তোর!

স্নেহা : মা! [ বলেই হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে তার মায়ের হাতে এগিয়ে দিয়ে ] আ..এসব তোমার কাছেই রাখো!

মা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..পাগল নাকি?.. এসব তোকে দিয়েছে পড়তে [ বলেই স্নেহার হাত টেনে পড়িয়ে দিয়ে ] এগুলো পড়ে থাক এখন খুলবি না!

স্নেহা : কিন্তু মা এসব আমি…

মা : স্নেহা! সামান্য চুড়িই তো পড়ে থাকতে সমস্যা কি?…

স্নেহা : আচ্ছা!

-আমি! যাচ্ছি…

মা : কিন্তু স্নেহা! আজ থেকে যা নাহয়!

স্নেহা : মা! সা..সামনে এক্সাম আছে! আমার পড়তে হবে! [ বলেই বেড়িয়ে যাচ্ছে হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে পেছন ফিরে এগিয়ে এসে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, মা তাকিয়ে আছে দেখে স্নেহা আয়না থেকে টিপটা হাতে নিয়ে বেড়িয়ে যায় মা ও হেসে পেছন পেছন এগিয়ে আসে ড্রইং রুমে ]

বাবা : স্নেহা! কোথায় যাচ্ছিস?… আজ এইখানেই থেকে যা?…

স্নেহা : আ..বাবা! কাল ভার্সেটিতে Assignment জমা দিতে হবে! ওটা রেডি করা বাকি থেকে গেছে!

বাবা : আচ্ছা চল তোকে আমি পৌছেদি!

স্নেহা : এখনো সন্ধায় তো বাবা! যেতে পারবো আমি!

– আর এতোদিন তো একাই সব করেছি তাই না!

বাবা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে যা! কাল আসছিস তো আবার?…

স্নেহা : হ্যা! আ..আসবো! ভার্সেটি শেষ করে!

বাবা : আচ্ছা!

স্নেহা : আসি বাবা!

[ বলেই দরজা খুলে বেড়িয়ে পড়ে, জোড়ে একটি শাস ফেললো স্নেহা! দম আটকে যাচ্ছিলো এতোক্ষণ!
কান্না লুকিয়ে রাখতে যে এতো কষ্ট তা আজই বুঝছে স্নেহা!

কপালে টিপটা লাগিয়ে, হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে ব্যাগে ভরে নেই, নিচে নেমে আসলো, রাস্তায় হাটছে আর ভাবছে,কিভাবে এসব আবার সমাধান করা যাবে, সামির বলবে তো তার বাবা মা কে?..সব আবার আগে মতো হয়ে যাবে তো?.. বিনা বাধায় রাহুলের কাছে ছুটে যেতে পারবে তো?.. এসব চিন্তায় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আর চোখ থেকে অজস্র অশ্রু ঝড়ে যাচ্ছে ]

গাড়ী ঠিক করতেও ভুলে গেছে হাটতে হাটতে ব্রীজের ধারে চলে এলো, রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে নদীতে বয়ে যাওয়া পানি গুলোই দেখছে! আর চোখ থেকে জল ফেলছে!

হঠাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো, ধীরেধীরে ব্যাগ থেকে ফোনটা এগিয়ে নিতেই রাহুলের কল দেখে স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, রিসিভ করে কথা বলবে রাহুলের সাথে সে সাহস পাচ্ছে না!

জীবনটা বার বার এভাবেই থমকে যাচ্ছে স্নেহার! যখনি কিছু ভালোবেসে আগলে নিতে চাই! একটা না একটা কাটা বেধে সামনে এসে দাঁড়ায়!

দু-তিনবার কল দিলো রাহুল আর স্নেহা ফোনের দিক তাকিয়ে তাকিয়ে কেঁদে চলছে!
এসময় রাহুলের সাথে কথা বললে ও রাহুল ধরে ফেলবে যে সে কাঁদছে!

দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা! ওভাবেই! এতেই ভালো লাগছে….

ভাবছে,

যদি নদীর ঢেউ হতো বিনা বাধায় এভাবেই বয়ে চলতো! না কোনো কষ্ট থাকতো না চিন্তা থাকতো… রাহুলের সাথে ও আর দেখা হতো না!
রাহুলকে হারানোর ভয় ও আর থাকতো না!

আধ ঘন্টা হয়ে গেলো, এভাবে ভেবে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে,কুয়াশায় চারদিক ভরপুর ঠান্ডা ও লাগছে, আশেপাশে একবার তাকিয়ে দেখলো সবাই সবার মতো করে চলছে.. দূরের দিক মিটিমিটি লাল-সাদা বাতি ঝলছে, কেউ কেউ ফল-ফ্রুট বিক্রি করছে আবার কেউ বাজার করছে, মাঝে মাঝে ব্রীজের নিচ দিয়ে একটা দুটা শিপ আওয়াজ করে চলে যাচ্ছে, শপিংমলের বাইরে কয়েকজন কাপল দাঁড়িয়ে আছে! তারা হাসাহাসি করছে কথা বলছে,

তা দেখে রাহুলের কথাই মনে পড়ছে স্নেহার! রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে, চোখ মুছে নিলো, ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করলো, রাহুলকে ফোন দিবে বলে, আবার ভাবলো না থাক এক্কেবারে বাসায় গিয়েই ফোন দিবে!

মোবাইলটা ব্যাগে ঢুকাতেই ফোনটা বেজে উঠলো, হাতে নিয়ে দেখে রাহুলেরই ফোন!

স্নেহা : [ রিসিভ করে ] হ্যালো?…

রাহুল : ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছিলে না?..

স্নেহা : আ..আসলে ফোন সাইলেন্ট ছিলো তাই?…

রাহুল : কই তুমি?..

স্নেহা : এইতো বাব…বাসায়!

রাহুল : কবে এসেছো?…

স্নেহা : আ..আধ..আধ ঘন্টা হলো!

রাহুল : কি করছো?..

স্নেহা : Assignment কক…করছি!

রাহুল : ব্রীজের ধারে?..

স্নেহা শকড হয়ে গেলো রাহুলের কথা শুনে, তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাস্তার ওপাড়ে রাহুল তার গাড়ীর সামনে কানে ফোন রেখে দাঁড়িয়ে আছে!

স্নেহা : আ..আপ..আপনি?…

রাহুল : কেনো আমাকে দেখে অবাক হয়েছো?..

স্নেহা ধীরেধীরে কান থেকে ফোনটা নামিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,রাহুল ও ফোন পকেটে ঢুকিয়ে রাস্তা পাড় হয়ে এগিয়ে এলো স্নেহার দিক!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আপনি..আস আসলে….

রাহুল : মিথ্যে বললে কেনো?…

স্নেহা : মি…মিথ্যে…কই নাতো…[ একটু হেসে ] আমি মজা করছিলাম আপনার সাথে?…

রাহুল : তাই?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] হ্যা!

রাহুল : এখন যে মিথ্যেটা বলছো ওটাও সাজিয়ে বলতে পারছো না! [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : কাঁদছো কেনো?…

স্নেহা : [ চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ] কক…কই?.. নাতো!

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তার দিক ফিরিয়ে ] ইউ কান্ট লাই টু মি! স্নেহা!

– তোমার চোখ আমি পড়তে জানি ওকে?…

স্নেহা : [ চোখ নামিয়ে ] স..সত্যি রাহুল! আমি কাঁদছি না! [ বলতেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পানি পড়লো ]

রাহুল : [ চোখ মুছে দিয়ে স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] কি হয়েছে স্নেহা?…বলো আমাকে?..

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] আ..আপনি কিক…কিভাবে জানলেন আমি এইখানে?…

রাহুল : সিরিয়াসলি? এখন এটা জানা বেশি ইম্পর্টেন্ট ?..

– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে পকেটে হাত রেখে ] ওখে! তোমার লোকেশন ট্রেস করলাম!

– [ রাগান্বিত ভাবে ] জারিফাকে ফোন দিলাম বললো ও বাসায় আসেনি!

– তোমাকে ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছো না!

– স্নেহা! কথা না বললে অন্তত একটা মেসেজ করে জানাতে পারতে! আমার টেনশন হচ্ছিলো তোমার জন্য! তোমার তো এসবে কিছু আসে যায় না!

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] স…সরি!

রাহুল : এবার বলো তুমি এইখানে কি করছো একা?…

স্নেহা : আব….চচ..চলেন আমরা..ওদিক থেকে হেটে আসি…ঠান্ডা বাতাস আছে!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] Shut-up ok?..just shut-up!
[ স্নেহা ঢোগ গিলতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা! হোয়াট হ্যাপেন?..প্লিজ টেল মি!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কিছুই তো হয়নি কি বলবো?..

রাহুল : [ স্নেহার কপালের টিপটা সোজা করে বসিয়ে দিয়ে ] এটাও ঠিক মতো পড়তে পারোনি!

[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে বাতাসে চুল গুলো উড়ছে, রাহুল সামনে চলে আসা স্নেহার চুল গুলো কানে গুজে দিলো ]

রাহুল : তোমার বাবা-মা কিছু বলেছে?…

স্নেহা : না..নাহ তো!

রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?..কোনো আমার কথা বলায় তোমার বাবা রেগে যায়নি তো!

স্নেহা : নাহ…আ…আসলে বব…বলতে পারিনি!

রাহুল : তাই?.

স্নেহা : জার্নিং করে এসেছে ওরা! ভাবলাম আজ রেষ্ট করুক! কাল না হয় বলবো!

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওকেই! বাই দ্যা ওয়ে তোমার বাবা রাজি না হলে ও টেনশন করার দরকার নেই! তোমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলবো [ বলেই হেসে দেই ]

[ স্নেহা চুপ করে রইলো ]

রাহুল : [ আশেপাশে তাকিয়ে ] আচ্ছা তোমার ঠান্ডা লাগছে না এইখানে ?…[ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?..স্নেহা!

– তুলে নিবো বলছি তাই কাদছো?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে একটু হেসে ] আব..কিছু না! [ রাহুলের হাত জড়িয়ে ] আসলে আপ..আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম!

রাহুল : আচ্ছা তাই তো ফোন রিসিভ করছিলেনা!

স্নেহা : বললাম তো ফোন সাইলেন্ট ছিলো রাহুল!

রাহুল : আচ্ছা চলো! গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : গা..গাড়ীতে কেনো?

রাহুল : স্নেহা! এইখানে অনেক ঠান্ডা তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বা! চলো [ বলেই টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে সামনের দরজা খুলে দিলো, স্নেহা কিছু না বলে হুট করেই পেছনের দরজা খুলে উঠে বসে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হেই! পেছনে কেনো উঠলে?…

স্নেহা : আব..আস আসলে আমার মাথাটা না পেইন করছে! সামনে গাড়ীর লাইটিং পড়বে তাই পেছনে এসে বসেছি!

রাহুল : আচ্ছা?.. [ বলেই রাহুল ও স্নেহার পাশে এসে বসে ] ওকে দাও আমি মাথা টিপে দি… [ বলেই স্নেহার মাথা টিপে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : আরে রাহুল! [ বলেই রাহুলের হাত সরিয়ে ] ওকে চলে গেছে মাথা ব্যথা!

রাহুল : বাহ! স্নেহা! আগে জানতাম না তো আমার হাতে এতো জাদু আছে, হাত লাগাতেই মাথা ব্যথা উধাও!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা আপনি সামনে যান…আমি এইখানেই ঠিক আছি!

রাহুল : মেইন রিজনটাই বলো স্নেহা তুমি তোমার চোখের পানি লুকাতেই এইখানে এসে বসেছে তাই না?…

[ স্নেহা কিছুক্ষণ রাহুলের দিক তাকিয়ে কেঁদে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে, রাহুল ও অবাক হয়ে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা! ইউ ওকে?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] ওকে ডোন্ট ক্রাই এখন তো তোমার পাশেই আছি!

স্নেহা : [ ধীরেধীরে ছুটে এসে রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] রাহুল! আমি…আপ..আপনাকে….[ বলেই জলভরা চোখে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

– আপনাকে….

রাহুল : [ একটু হেসে ] আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] আই লাভ ইউ টু! [ বলতেই স্নেহা ও হেসে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ রাহুল! [ বলেই ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে এনে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো?.. [ চোখের পানি মুছে দিয়ে ] লাল হয়ে যাচ্ছো পুরা স্নেহা! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি আমাকে…কখনো ছেড়ে যাবেননা প্রমিস করেছিলেন!..

– আ…আপনি যাবেননা তো?

রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত শক্ত করে ধরে ] কক্ষনো না!

স্নেহা : আপনাকে ছেড়ে থাকবো এমন ভাবলেই মনে হয়…যেনো নিশাসটা আটকে গেছে!

রাহুল : রিলেক্স! তাহলে ভাবছো কেনো?…

[ স্নেহা অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক বাচ্চাদের মতো ঠোট টেনে টেনে কান্না চেপে রাখছে, তা দেখে রাহুল মুচকি হাসে ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আহা!স্নেহা বাচ্চা মেয়েদের মতো কেঁদে যাচ্ছো! এভাবে… কি কিউট লাগছে তোমাকে জানো? একটা ফটো তুলি?..

[ স্নেহা চোখ মুছে একটু হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত তার হাতে শক্ত করে ধরে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : এতো ভালোবাসো?..

স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকালো, রাহুল ও চেয়ে আছে, দুজনেই কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো, স্নেহার গাল বেয়ে পানি পড়ছে,

চোখ সরিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে ফেললো স্নেহা,

তা দেখে রাহুল স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে রাহুলের দাড়ির উপর হাত বুলিয়ে ধীরেধীরে সেও একটি চুমু খেলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিলো স্নেহার দিক তাকিয়ে!

স্নেহা চেয়ে আছে রাহুলের চেহেরার দিক, রাহুল চোখ নামিয়ে স্নেহার ঠোটের দিক তাকালো!

চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! রাহুল তার মুখ স্নেহার ঠোটের দিক এগুতেই হঠাৎ পেছন থেকে গাড়ীর লাইটের ফ্লাশ এসে পড়লো!

স্নেহা চমকে চোখ খুলে ফেললো তাড়াতাড়ি, রাহুল হেসে স্নেহার ঘাড়ে মাথা নুয়ে দিলো, স্নেহা ও হেসে দিলো,

রাহুল : [ হেসে ] You know স্নেহা! আমার কিন্তু মিস্ যেতো না! যদি কাজ কন্টিনিউ রাখতাম না!

– তাহলে আমাদের দেখতে দেখতে ওরা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো!

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 34

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 34

writer-Jubaida Sobti

জারিফা স্নেহার হাত ধরে কেক কাটিয়ে মুখে তুলে দিলো স্নেহার…

স্নেহা : উমমম! অনেক টেষ্টি! [ বলেই জারিফার হাতের দিক খেয়াল করে দেখে ব্যান্ডেজ করা ]

– আরে! এসব কিভাবে হলো?…

জারিফা : ওহ ওটা! ব্যাস ভার্সেটি থেকে আসার সময়, ছোটখাটো এক্সিডেন্ট হয়েছিলাম…

স্নেহা : [ জারিফার হাতে টেনে নিয়ে ] এক্সিডেন্ট?.. আমাকে কিছু বলিসনি যে ?…ফোন করে বলতে পারতি?…

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ] আরে স্নেহা! এতো টেনশন নিচ্ছিস কেনো?…এক্সিডেন্ট এর কারণে আজ না কি রোমান্টিক সিন দেখতে পেলাম ভার্সেটিতে জানিস! [ স্নেহা কনফিউজড হয়ে তাকালো ]

মার্জান : ও যে গাড়ীর সাথে ধাক্ষা খেয়ে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো, ঐ ড্রাইভারটাকে না রিদোয়ান এসে…এমন এমন এমন ভাবে কেলিয়েছে…[ হেসে হেসে ]ওহ মাই গড…নেক্সট টাইম ও আর গাড়ী চালাতে পারবে কিনা আমার মনে হচ্ছে না… [ এক্সাইটেড হয়ে ] তারপর কি হয়েছে জানিস!

– [ জারিফার কাছে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ] রিদোয়ান সবার সামনে জারিফাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের গাড়ীতে বসিয়েছিলো…

জারিফা : [ লজ্জা পেয়ে খাটে বসে ] আচ্ছা হয়েছে এবার!

মার্জান : আরে বলতে দেনা! কি রোমান্টিক ছিলো স্নেহা! তুই তো জানিস না, আমি তো এই প্রথম লাইভ দেখেছি এসব…

– ও হ্যা! তারপর… কি সফট কন্ঠে বলেছিলো…

– জারিফা!

– বেশি লেগেছে?… তখন তুই জারিফার চেহেরাটা দেখলে না স্নেহা…[ বলতেই জারিফা উঠে মার্জানের মুখ চেপে ধরে ]

জারিফা : ব্যাস! হয়েছে!

স্নেহা : [ একটু হেসে খাটে বসে ] বাহ! তাহলে অনেক রোমান্স হয়েগেছে! [ বলতেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে পাশে এসে বসে ]

মার্জান : তা তো অবশ্যয়! তবে আমরা আরেকটা রোমান্স দেখিনি!… [ বলেই আড়চোখ দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] আ..আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো… তখনি জারিফা আর মার্জান দুজনেই দুদিক থেকে দু-হাত টেনে আবার বসিয়ে দেই ]

জারিফা : আরে স্নেহা! এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো…? বলনা! [ ফিসফিসিয়ে ] কি কি করেছিস!

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] কি কি করেছি মানে?…

মার্জান : দেখ! এখন এটা বলিস না যে তেমন কিছুই হয়নি…যেটা তোরা ভাবছিস!

– কিছু না কিছু তো হয়েছেই তাই না!

– [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] ফর এক্সাম্পল, হাত ধরা, কাছে আসা, জড়িয়ে ধরা, কিস্ করা…

স্নেহা : কে…কেক কেটেছি! ডিনার করেছি ব্যাস! এসবই হয়েছে!

মার্জান : হোয়াট! এমন ডেট করেছিস তোরা?…কি নিরামিষ! রাহুল এতো বোরিং দেখেতো মনে হয় না!

জারিফা : আমার তো মনে হয় না রাহুল! বোরিং! তবে হ্যা! হতেও পারে বোরিং, কার সাথে ডেট করছে সেটা ও তো দেখতে হবে তাই না?…
[ স্নেহা জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে হেসে উঠে ]

স্নেহা : আচ্ছা! এসব কথা ছাড়…তোদের আরেকটা কথা বলি…

জারিফা : হুম বল!

স্নেহা : কাল বাবা-মা আসছে! মামার বাসায়!

– আর আমি ডিসাইড করেছি! কালই ওদের রাহুল আর আমার কথা জানিয়ে দিবো…

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] বাহ! বাহ! বাহ!…কি নিউজ ছিলো স্নেহা!..হ্যা বলেদিস তারপর ভালো থেকে একটা তারিখ ডিসাইড করে বিয়েটা তাড়াতাড়ি করেনে,

জারিফা : আরে এতো তাড়াতাড়ি?..আমার ভালো ড্রেস নেই পড়ার! শপিং করতে টাইম লাগবে তো!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] গার্লস্ আই এম সিরিয়াস ওকে?…

জারিফা : বাট আই এম অলসো্!

স্নেহা : আগে বাবা-মা কে তো জানাতে দে!

মার্জান : সো্ হোয়াট! জানিয়ে দিবি না দিবি এটা তোর ব্যাপার…আমরা তো শুধু বিয়ের দিন গুনছি!

– হলে থাকবে বড় করে বোর্ডে লিখা, রাহুল ওয়েডস্ স্নেহা!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইকুয়েল রাস্নেহা!

মার্জান : ওয়াও দারুণ তো! রাস্নেহা! এটা তো তোদের কাপল টিটল নেম হয়ে গেছে!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্!

– [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] বাহ! স্নেহা তুই বউ সাজবি… তোর বিয়ে হবে…শশুরবাড়ী চলে যাবি [ কাদো কন্ঠে ] আমার তো কান্না আসছে স্নেহা তুই আমাদের ফেলে শশুরবাড়ী চলে যাবি.. [ স্নেহা অবাক চোখে তাকালো ]

মার্জান : [ শকড হয়ে তাকিয়ে জারিফার পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে ] ডোন্ট ক্রাই ডোন্ট ক্রাই!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আজিব ব্যাপার! তোরা পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি?…

মার্জান : আরে আমি কি করলাম..যত্তসব ওভার একটিং এর দোকান জারিফা!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা! তোর যদি এখন বিয়ে ঠিক হয়! তাহলে তুই বলে বিয়ের ডেট টা একটু পেছনে দিয়ে দিশ! নাহলে আমি যদি আগের ড্রেসটাই পড়ি তাহলে কেমন দেখাবে?…ওটা দিয়ে তো আমি একশো দেড়শো এর উপরে ফটো তুলে ফেলেছি… উফফ! [ বলেই মাথায় হাত দিয়ে টেনশন করতে লাগলো ]

[ স্নেহা জোড়ে একটি শাস ফেলে দুজনের দিক একবার একবার তাকিয়ে, উঠে ওয়াশরুম চলে যায়, মার্জান মুখ চেপে হাসতে থাকে ]

পরদিন সকালে,

মার্জান : [ ভার্সেটির জন্য রেডি হতে হতে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

মার্জান : তুই না তোর মামার বাড়ী যাবি?..

স্নেহা : [ গায়ে শাল মুড়িয়ে ] হ্যা! যাবোই তো…

মার্জান : তাহলে ভার্সেটি যাচ্ছিস যে?..

স্নেহা : মামার বাসায়! দুপুরবেলা যাবো,

জারিফা : [ ব্যাগ গোছাতে গোছাতে ] হ্যা! মামার বাসায় দুপুরবেলা যাবে, সকাল বেলায় রাহুলকে এক পলক না দেখলে কি হয়! [ স্নেহা মুচকি হাসে ]

মার্জান : আচ্ছা সেটাও ঠিক,
________________________________

In varsity,

রাহুল গাড়ীর দরজা খোলা রেখে ড্রাইভিং সি্টে বসে স্মোক করছে, রিদোয়ান পেছনের সি্টে দরজা খোলা রেখে বসে, আর আসিফ পাশে তার গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্মোক করছে,

রিদোয়ান : আরে রাহুল ওরা দুজন দুজনের সাথে এমন রিয়েক্ট করে যেনো একজন আরেকজনের দুশমন!

আসিফ : ও আমার দুশমনই, এমন মেয়ে আমি আমার জন্মে দেখিনি…কথায় কথায় ট্যাড়ামি!

রাহুল : [ হেসে ] দুশমনকে বাঁচাতে বাঁচাতে, কোনো মোহাব্বত না করে বসো দোস্ত! [ রিদোয়ান হেসে উঠে ]

আসিফ : [ হেসে ] মোহাব্বত?..আর ওকে?..সো্ ফানি!

– আর এমনিতেও ওকে আর ফলো করার প্রয়োজন মনে করছিনা রাহুল! ও স্ট্রং আছে, সামলিয়ে নিতে পারবে,

রিদোয়ান : আরে! তাও মেয়ে মানুষ বলে কথা…এমনিতেও তো তোর আর খেয়েদেয়ে কাজ নেই..এই কাজটাই করতে থাক!

আসিফ : এক্সকিউজ মি! খেয়েদেয়ে কাজ নেই বলে আমি ওর পেছন পেছন ঘুরবো নাকি! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করে রিদোয়ান সিগারেট টা ছুড়ে ফেলে গাড়ী থেকে বেড়িয়ে দাঁড়ায়, রাহুল আর আসিফ অবাক হয়ে পাশফিরে তাকাতেই দেখে জারিফা! ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আপনাকে না নিষেধ করেছি এসব কলকারখানার ধোয়া খেয়ে পেট না পুরাতে! [ জারিফার কথা শুনে রাহুল আর আসিফ লুকিয়ে হেসে উঠে, ধীরেধীরে হাত নামিয়ে না দেখে মতো রাহুল ও তার সিগারেট টা মাটিতে ফেলে পা দিয়ে ঢেকে রাখে ]

রিদোয়ান : এক্সুলি! এটা আমি খাচ্ছিলাম না…নতুন বেড়িয়েছে তো তাই একটু টেষ্ট করে দেখছিলাম!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] টেষ্ট করছিলেন?..

আসিফ : আরে, রিদ! তুকে তো আমি আর রাহুল নিষেধ করেছিলাম, দেখ ভাই এসব খাস না…জারিফা যখন নিষেধ করেছে তুই কথাটা রাখ!

[ রিদোয়ান আড় চোখে তাকালো ]

আসিফ : [ হেসে ] কিরে রাহুল! ঠিক বলেছিনা আমরা নিষেধ করেছিলাম তো ?…

রাহুল : [ কি বলবে কনফিউজড হয়ে আবার একটু হেসে ] আ..ইয়া..ইয়াহ!

রিদোয়ান : আচ্ছা?… [ বলেই এপাশওপাশ তাকিয়ে দেখে স্নেহা কোথায় ]

জারিফা : আপনি এদিকওদিক কি দেখছেন?…

রিদোয়ান : তুমি তোমার বাকি ফ্রেন্ডসদের ওদিক ফেলে রেখে এসেছো কেনো?…ওদের ও ডাকো?..

জারিফা : কেনো?.. ওদের ও কি আপনি সিগারেট টেষ্ট করাবেন নাকি?..

রিদোয়ান : আরে না পাগল নাকি?..আচ্ছা ওকে!

– [ বলেই চেঁচিয়ে ] স্নেহা! [ স্নেহা আর মার্জান ফিরে তাকিয়ে দেখে রিদোয়ান ইশারা করছে কাছে আসতে ]

আসিফ : [ হেসে ] হোয়াট এ আইডিয়া রিদ! রাহুল তুমনে হাসি্ তো পাসি্!

রাহুল : Listen! [ with tedi smile ]

রিদোয়ান : আমি শুনছিনা কিছু! [ জারিফার দিক এগিয়ে গিয়ে ] দেখো তো কি হয়েছে আমার কানে কিছু শুনছিনা কেনো!

আসিফ : [ হেসে ] জারিফা! কষিয়ে একটা থাপ্পড় দাও তারপর শুনবে! [ বলতেই মার্জান আর স্নেহা এগিয়ে আসায় মার্জানের দিক চোখ পড়লো মার্জান মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : ওহ! ইয়াহ ফার্ষ্ট অফ অল! [ হ্যান্ডশেক করে ] উইশ ইউ এ ভেরি ভেরি হ্যাপি বার্থডে স্নেহা!

স্নেহা : থেংক ইউ!

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] অহ! শিট [ বলেই স্নেহার দিক এসে, হ্যান্ডশেক করে ]… হ্যাপি বার্থডে! স্নেহা! অল দ্যা বেষ্ট ফর আপকামিং ডে!

স্নেহা : [ হেসে ] থেংক ইউউ! [ রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা ও একটু হেসে চোখ ফিরিয়ে নেই ]

রিদোয়ান : স্নেহা! [ স্নেহা তাকালে ]

– রাহুলের কের্চ গুলো খুব দারুণ হয়েছে তাই না! [ বলতেই সবাই রাহুলের জুতার দিক তাকালো, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে রিদোয়ানের দিক তাকায়, ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে ] আরে রাহুল একটু হেটে দেখানা…কেমন লাগছে হাটলে দেখি!

আসিফ : ইয়াহ! রাহুল একটু হেটে দেখা!

রিদোয়ান : আচ্ছা যা একটু পা সামনে বাড়িয়ে দেখা ওটাও চলবে! [ রাহুল রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে একটু হেসে পা হেচড়িয়ে সামনে বাড়ালো ]

আসিফ : আরে পায়ের নিচে কিছু একটা মনে হচ্ছে রাহুল?..

জারিফা : কি আজিব! আপনারা ওনার পা নিয়ে পড়ে আছেন কেনো?..[ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আই থিংক আপনার জুতাগুলো ওনাদের বেশি পছন্দ হয়েছে দু-জনকে দু-টো দান করে দিয়েন…নাহলে ওনাদের নজরে দেখবেন জুতা গুলো আজই ছিড়ে গেছে [ বলতেই সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : [ স্নেহার দিক ফিসফিসিয়ে ] কিছু তো গড়বড় হচ্ছে স্নেহা! তোর কি মনে হয়!

স্নেহা : আই ডোন্ট নো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না…

রিদোয়ান : আরে রাহুল! আসিফ যে বললো তোর জুতার নিচ কিছু আছে সত্যি নাকি?… [ রাহুল আর কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গাড়ীর দরজা বন্ধ করে সরে দাঁড়ায়, সাথে সাথেই সবার নজর একসাথে রাহুলের জুতার নিচেই যায় ]

রিদোয়ান : [ হেসে চেঁচিয়ে ] ওহ আচ্ছা সিগারেট খাচ্ছিলি! লুকিয়ে রেখেছিস আগে বলবিনা! সরি দোস্ত! সরি! সরি! [ বলেই চোখ টিপ মারে ]

রাহুল : হয়েছে? ড্রামা?… [ with tedi smile ]

রিদোয়ান : আসলে স্নেহা! ওকে আমি নিষেধ করেছি এসব না খেতে…বললাম এসব খেলে ক্যান্সার হয়! ধুমপান সাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক! ক্ষতিকারক! বার বার বলতে লাগলাম তাও শুনেনা…

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে তার দিকে ফিরিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আপনি নিষেধ করেছেন?…

রিদোয়ান : [ হেসে ] ডার্লিং তুমি আবার এভাবে ভালোবাসার চোখে তাকিয়ে আছো কেনো?…চলো তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো!

[ বলেই জারিফা আর কিছু বলে উঠার আগেই টেনে অন্যপাশ নিয়ে গিয়ে দাঁড় করায়,
মার্জান কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,

রাহুল তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক…আর স্নেহা একবার রাহুলের দিক আরেকবার অন্যদিক দিক তাকিয়ে ফেলছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] তুমি আজ তোমার মামার বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো! ভার্সেটিতে এলে যে!

মার্জান : দুপুর!..দুপুরবেলা যাবে! আপনি টপিক চেঞ্জ করবেন না…স্নেহা ধ্যানে আছে আপনাকে কি পানিশমেন্ট দেওয়া যায় চিন্তা করছে!

রাহুল : ঐ তুমি ও ওদের মতো আমার সাথে দুশমনি শুরু করে দিলা!

মার্জান : নো, নো জিজাজি! আমি দুশমনি করবো কেনো?…তবে আমি আমার ফ্রেন্ড কে এতো তাড়াতাড়ি বিধবা দেখতে চাই না!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাই?..তবে মারা গেলে বোধ হয় খুশিই হবে! তাই তো কিছু আন্সার দিচ্ছে না…

মার্জান : আহা! আসলে ও এখন লিষ্ট গুনছে যদি আপনি মারা যান…তাহলে নেক্সট কাকে বিয়ে করবে ওটাই ভাবছে!

রাহুল : [ হেসে মার্জানের চুল টেনে দিয়ে ] তোমাকে তো পড়ে দেখে নিবো! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে টেনে অন্যপাশ নিয়ে চলে যায়,]

[ মার্জান হাসতে থাকে হঠাৎ আসিফের দিক চোখ পড়ায় নাক ফুলিয়ে মুখ ভেংগিয়ে সামনে রাহুলের গাড়ীর বনাটের উপর উঠে বসে, আসিফ ও তার কান্ড দেখে হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]
________________________________

রাহুল : স্নেহা! কি হয়েছে কিছু বলছো না কেনো?…

স্নেহা : কেনো?.. মার্জান বলছে শুনতে পাননি?..আমি লিষ্ট গুনছি! কাকে বিয়ে করা যায়!….

রাহুল : ওহ রিয়েলি! [ বলেই স্নেহার কাছে এগুই, স্নেহা ঘাবড়ে গিয়ে পেছনে পা বাড়াতেই গাড়ীর সাথে ধাক্ষা খেয়ে দাড়িয়ে পড়ে ]

রাহুল : সইতে পারবে তো আমার মারা যাওয়ার খবর?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে মাথা নুয়ে ] দেখেন উলটা পালটা কথা বলবেন না!

রাহুল : তাহলে বললে যে লিষ্ট গুনছো!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] ওটা তো এমনিতে বলেছি, রাগ করে আপনি স্মোক করেছেন তাই!

রাহুল : [ একটু হেসে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক ]

– ওকে আই উইল ট্রাই! এমনিতেও আগে থেকে অনেক কমিয়ে দিয়েছি!

স্নেহা : হোয়াট?..ট্রাই মানে?..[ হাত এগিয়ে দিয়ে ] প্রমিস্ করেন..আজকে থেকে এসব আর ছুঁয়ে ও দেখবেন না!

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! এটা কি হুট করেই ছাড়া যায় নাকি?…

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] যায়! চেষ্টা করলে পারবেন! এখন আর কথা না বাড়িয়ে প্রমিস করেন!

রাহুল : [ স্নেহার কান্ডে একটু হেসে স্নেহার হাতের উপর হাত রেখে ] ওকে প্রমিস!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] থেংক ইউ!

[ হঠাৎ পেছন থেকে কেউ কেশে উঠার আওয়াজ আসলো, রাহুল আর স্নেহা দুজনেই ফিরে তাকিয়ে দেখে জারিফা আর মার্জান এসেছে ]

জারিফা : সরি! ফর ডিষ্টার্বিং ইউ গাইস্ এক্সুলি এটা বলতে আসলাম যে স্নেহা আমরা ক্লাসে যাচ্ছি! তোর হলে ক্লাসেই আশিস!

স্নেহা : আমিও আসছি ওয়েট! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] বাই রাহুল! আমি যাওয়ার সময় দেখা করবো আপনার সাথে…

রাহুল : ওয়েট! আমার তোমাকে কিছু দেওয়ার ছিলো..

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] কিহ?..

মার্জান : আচ্ছা! আমরা ঐদিকে সামনের দিকই আছি! [ বলেই জারিফার হাত ধরে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ ]

জারিফা : [ হাত ছুটিয়ে কনফিউজড হয়ে স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে গলার চুল গুলো সরিয়ে ] আরে স্নেহা!কিভাবে হয়েছে এসব! এভাবে লাল কেনো হয়েছে?…

স্নেহা : [ শকড হয়ে গলায় হাত রেখে ] লা..লাল হয়েছে মানে?…

মার্জান : আরেহ! হ্যা তাই তো!

জারিফা : আই থিংক কিছু কামড়িয়েছে?… [ বলতেই স্নেহা চোখ বড় করে শকড হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

[ রাহুল হেসে ঘাড়ে হাত রেখে চুলকাতে চুলকাতে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি চুল সামনে এনে দিয়ে ] তোদের লাগছে হয়তো! আ..আই থিংক ঠা..ঠান্ডায় হয়েছে!

[ Rahul give a tedi smile ? ]

জারিফা : ওওহ!

রাহুল : আ..আই থিংক ঠান্ডায় হয়েছে মনে হচ্ছে না! কোনো মশা কামড়িয়েছে! এমনই লাগছে!

জারিফা : [ হেসে ] ইয়েস্ জিজাজি! রাইট! মশাই কামড়িয়েছে হবে!

[ স্নেহা কিছু বললো না আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

জারিফা : ওকে স্নেহা! আমরা ঐ দিকটা আছি তুই আয়! [ বলেই হেটে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ, আবার পেছন মুড়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ]

– বাই দ্যা ওয়ে! জিজু…মশাটা কতো বড় হবে?… [ বলতেই রাহুল তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

জারিফা : আ..আই থিংক আপনার হাইটের সমান তো হবেই তাই না?

– [ চোখ মেরে ] এম আই রাইট জিজাজি?.. [ রাহুল মুচকি হেসে ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে, জারিফা আর মার্জান হাসতে হাসতে সামনের দিক এগিয়ে চলে যায় ]

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে লজ্জা লেগে উঠলো স্নেহার, কি আজিব ব্যাপার-স্যাপার, কাধের ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো, ঐ মুহূর্তেই রাহুল হাত ধরে আটকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : হোয়ার আর ইউ গোয়িং?

– কামঅন স্নেহা! এটা তো শুধু ট্রেলার ছিলো, পিকচার এখনো বাকি আছে [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] আ…আই থিংক আমার এখন যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : আচ্ছা? তো যাও!

[ স্নেহা রাহুলের ধরে রাখা হাতের দিক তাকালো, কেমনি যাবে ধরে রাখলে! ]

রাহুল : একবার ছেড়ে দিলে আর ধরছি না কিন্তু, স্নেহা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] মানে?..

রাহুল : [ হেসে] রিলেক্স স্নেহা! আই জাষ্ট কিডিং!

স্নেহা : [ গোমড়া মুখে ] কেনো? কেনো করবেন এমন মজা?…

রাহুল : ওখে স্নেহা!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আপনি জানেন! আমার এই ধরনের মজা মোটেও পছন্দ না!

রাহুল : [ স্নেহাকে কাছে টেনে ] ওকে ওকে! আম সরি! আম সরি! [ বলেই স্নেহাকে জড়িয়ে বুকে টেনে নিচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ আশেপাশে তাকিয়ে একটু হেসে ] অওহ! সরিইইই!…

স্নেহা : আচ্ছা আমার লেইট হচ্ছে রাহুল!

রাহুল : ইয়াহ! এক সেকেন্ড [ বলেই.. পকেট থেকে একটি প্যাকেট বের করে তা থেকে একটি টিপ ছুটিয়ে স্নেহার কপালে লাগিয়ে দিলো, স্নেহা অবাক হয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : এমনিতে আমার মেয়েদের সাজগোছ সম্পর্কে তেমন আইডিয়া নেই! তবে গতকাল তোমাকে এটা লাগাতে দেখেছিলাম…

– আমার খুব ভালো লেগেছিলো! তাই আসার সময় কিনে এনেছি,

[ স্নেহা একটু হেসে টিপের প্যাকেট টা হাতে এগিয়ে নেই, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাহুলের দিক মুচকি হেসে চলে যায়, রাহুল ও পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা সামনের দিক এগিয়ে যেতেই,

জারিফা : ওহো! কাম কাম স্নেহা! মেরি জান!

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] কাল তো অনেক বলছিলি, কি কি হয়েছে মানে! কেক কেটেছি আর ডিনার করেছি ব্যাস তাই না?…

স্নেহা : কা..ক্লাসে লেইট হচ্ছে [ বলেই দৌড়ে হেটে চলে গেলো ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা! [ বলেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই পেছন পেছন দৌড়ে এগিয়ে গেলো ]

In Class, স্যার লেকচার দিয়ে যাচ্ছে,স্নেহা নোট করছে,

জারিফা : [ স্নেহাকে ধাক্ষিয়ে ফিসফিসিয়ে ] ঐ স্নেহা বলনা! কি কি করেছিস!

মার্জান : বল স্নেহা! আই এম সো্ এক্সাইটেড ইয়ার!

[ স্নেহা চুপ করে লিখেই যাচ্ছে ]

জারিফা : আরে কি আজিব বলনা স্নেহা! আচ্ছা হালকা একটু বল..সব বলিস না…

মার্জান : [ স্নেহার হাতের কলম টেনে নিয়ে ] স্নেহা! মাই ডিয়ার! বল বল আরেকবার বলতে হলে না এই কলম দিয়ে তুকে খুন করবো আজ আমি!

স্নেহা : আরে? নোট করছি তো! এইদিকে দে!

মার্জান : হ্যা করিস! ইচ্ছা মতো করিস..কিন্তু এর আগে আমাদের এটা বলে দে… তোর গলায় লাল রাংগুলির রাজ কি! হুম হুম?

জারিফা : [ হেসে ] বল বল স্নেহা! [ ধাক্ষিয়ে ] আরে বলনা…

স্নেহা : [ আর না পেরে কানে হাত দিয়ে ] ওকেইইই! ওকে…বলছি!

– [ চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করে ] কিক…কিস্ করেছিলো…

জারিফা : অওওও! স্নেহা!

মার্জান : এত্তো জোড়ে স্নেহা! আই থট রাহুল বোরিং বাট ও তো জখমি করে দিলো.. [ বলতেই জারিফা মুখ চেপে হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] হয়েছে মার্জান! কলম দে এইবার!

মার্জান : নো নো স্নেহা! তারপর বল আরো সামথিং..হুম হুম!

স্নেহা : আরে! পাগল নাকি আরো সামথিং মানে!

জারিফা : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার মুখে স্লাইড করে ] মানে…জখম কি শুধু, ওহ সরি! কিস্ কি শুধু গলায় করেছে অর…নাকি…আরো অন্যকিছু ও.. মানে

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ জারিফা! [ বলতেই ক্লাসের সবাই স্নেহার দিক তাকায় ]

স্যার : হোয়াট হ্যাপেন স্নেহা!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে ] আব…নো নো স্যার নাথিং!

স্যার : অলরাইট! সি্ট ডাউন! [ স্নেহা বসে আড় চোখে দু-জনের দিক তাকাতেই দেখে জারিফা আর মার্জান দুজনেই মিটিমিটি করে হাসছে! আর কিছু না বলে স্নেহা ব্যাগটা হাতে নিয়ে অন্য সিটে এগিয়ে গিয়ে বসে পড়লো ]

ভার্সেটি ছুটির পর,

জারিফা : যা মেরি জান! রাহুল ওয়েটিং ফর ইউ!

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা তোর ফিল কেমন হয়েছিলো?..হুম! বলনা বলনা?

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আজিব এখনো ওসবে পড়ে আছিস? আমি যাচ্ছি! বাসায় ফিরতে লেইট হতে পারে! [ বলেই হাটা শুরু করে ]

জারিফা : [ হেসে চেঁচিয়ে ] ওকে! অল দ্যা বেষ্ট! স্নেহা!

[ স্নেহা বেড়িয়ে বারান্দার দিক খুজলো রাহুলকে ফোন দিচ্ছে রিসিভই করছে না, পার্কিং এর দিক দেখবে বলে গার্ডেন পেড়িয়ে হেটে যাচ্ছে হঠাৎ কেউ এসে হাত টেনে গাছের নিচে এনে দাড় করালো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রাহুল! ভয়ে পাইয়ে দিলেন তো!

রাহুল : ভয় পাওয়ার কি আছে! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আপনাকে ফোন করছিলাম রিসিভ করছিলেন না…

রাহুল : [ পকেটে হাত দিয়ে ] ওহ শিট! মোবাইল গাড়ীতেই ফেলে এসেছি!

স্নেহা : আচ্ছা! আমি যাচ্ছি এখন! আপনার সাথে পরে ফোনে কথা বলবো! বাই! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো হুট করেই রাহুল আবার টেনে পার্কিং এর দিক নিয়ে যাচ্ছে ]

– আরে রাহুল! আবার কই নিচ্ছেন?..

রাহুল : [ পার্কিং এ এনে গাড়ীর দরজা খুলে দিয়ে ] চলো উঠো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে] আপনি!

রাহুল : নট ওয়ান মোর ওয়ার্ড প্লিজ! উঠো,

[ স্নেহা আর কিছু বললো না, উঠে বসলো, রাহুল ও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে উঠে বসে ]

স্নেহা : আপনার আবার কষ্ট করার কি দরকার ছিলো! আমি যেতেই পারতাম!

রাহুল : [ হেসে ] কষ্ট?..কামঅন স্নেহা! তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা সেকেন্ড আমার জন্য সর্গের মতো আর তুমি বলছো,

– [ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ] হোয়াটেবার! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে ওপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে মেম!.. যাবো কোন জায়গায়?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] সি্.পি রোড! থার্ড সেন্টার, হাউজ নং টুয়েন্টি ওয়ান!

রাহুল : ওখেই!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে তাকিয়েই থাকে রাহুলের দিক.. মনে মনে ভেবে যাচ্ছে, কি হ্যান্ডসাম লাগছে রাহুলকে, ইচ্ছে করছে তার খোচা খোচা দাড়ি গুলো একটু ছুয়ে দেখবে ]

হঠাৎ,

রাহুল : একটা খুব ভালো কাজ করেছো কি জানো?…

[ স্নেহা চমকে উঠে তাকালো ]

– তোমার ঐ ডিস্কাস্টিং ওভারটাইম ডান্স ক্লাসটা ছেড়ে দিয়ে,

স্নেহা : হোহ! মোটেও ডিস্কাস্টিং না ডান্স একটা পেশোন রেসপেক্ট দিতে শিখুন!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়া…আই লাভ ইয়র সেক্সি ডেন্স! বাট নট ইয়র হোপলেস্ জব! [ স্নেহা শকড হয়ে তাকালো ]

– আরে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..

স্নেহা : আপনি কিছুর তারিফ করলে বার বার এই বাজে ওয়ার্ডটা ইউজ করেন কেনো?…

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আই সে্ সেক্সি! নট সেক্স! দুটোর আলাদা মিনিং আছে ওকে! [ with tedi smile ]

স্নেহা : ওকে ওকে স্টপ!

রাহুল : ওকেই [ বলে হাসতে থাকে ]

কিছুসময় পর,

স্নেহা : ওকে ওকে! রাহুল! এইখানেই থামান!

রাহুল : বাট এটা তো হাউজ নং আ… [ জানালা দিয়ে তাকিয়ে ] নাইন্টিন!

স্নেহা : যদি বাবা দেখে ফেলে আপনার সাথে এসেছি! তাই একটু আগেই নামছি!

রাহুল : [ হেসে ] Shut-up স্নেহা এতো ভয় পাচ্ছো কেনো?…দেখলে দেখবে আরকি!

স্নেহা : না নাহ! রাহুল! যদি দেখে বাবা না বুঝে হুট করেই আপনার উপর রেগে যায়?

রাহুল : সো্ হোয়াট! রাগলে রাগবে…তারপর পরে বুঝিয়ে দিবো…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] বাই!

– আর হ্যা মনে করে আপনার ফোন গাড়ী থেকে নিয়ে নিবেন!

রাহুল : ও হ্যা! [ স্নেহা গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায় ]

রাহুল : আরে স্নেহা!

স্নেহা : [ জানালা দিয়ে ] বাই রাহুল! [ বলেই হেসে হেটে সামনের দিক চলে যায়, রাহুলের ও আর কি করার,গাড়ী ব্যাক দিয়ে সে ও ফিরে যায় ]
________________________________

বেল বাজাতেই স্নেহার মামী এসে দরজা খুললো,

মামী : আরে স্নেহা! আয় আয় ভেতরে আয়…তোর অপেক্ষায় করছিলাম! [ স্নেহা পা ধরে সালাম করে ভেতরে ঢুকলো, স্নেহার মা এগিয়ে আসতেই স্নেহা ও এগিয়ে গিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ]

মা : কি হয়ে গেছিস স্নেহা! এভাবে শুকিয়ে কাঠের মতো? …খাবার-দাবার ঠিক মতো করিস না তাই তো?…

স্নেহা : করি মা! আচ্ছা বাবা কোথায়?..

মা : আছে ভেতরে আছে,

রাশু : [ চেঁচিয়ে ] ওহো আপু! হ্যাপি বার্থডে…আমার জন্য কি এনেছো?..

স্নেহা : বার্থডে আমার আর গিফট দিবো তোকে?..

রাশু : আমিও এনেছি! হুম!

স্নেহা : কি এনেছিস!

রাশু : বাদাম ছোলার ভর্তা!

স্নেহা : এইদিকে আয় তুই [ বলতেই রাশু হেসে দৌড় মারে ]

হঠাৎ,

স্নেহার বাবা : [ রুম থেকে বেড়িয়ে এসে ] স্নেহা! কেমন আছিস তুই কবে এসেছিস!

স্নেহা : এইতো বাবা..ভালোই এক্ষুনি এলাম!

বাবা : [ হেসে স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] অনেক বড় হয়ে গেছে আমার স্নেহা! দেখলে তো? শহরে একা থেকে পড়ালিখা করছে!

– তো বল পড়ালিখা কেমন চলছে!

স্নেহা : হ্যা! ভালো.. তোমার শরীর ঠিকাছে তো এখন ?..

বাবা : হ্যা! ওসব আর কি বয়স হয়ে গিয়েছে! এসব শরীর-টরীর তো খারাপ হবেই!

– আচ্ছা তুই বয়! রেষ্ট কর..ভার্সেটি থেকে এসেছিস বুঝি?..

স্নেহা : হ্যা! সমস্যা নেই! আমি ঠিকাছি!

আমরিন : [ স্নেহার মামাতো বোন ] আরে স্নেহা?.. [ বলেই এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : [ হেসে ] তুমি?..কবে এলে?..

আমরিন : এইতো সকালেই এলাম!

স্নেহা : আচ্ছা? তোমার বেবি কোথায় ?..

আমরিন : ভেতরেই আছে,

বাবা : যা স্নেহা! ভেতরে গিয়ে রেষ্ট কর!

[ স্নেহা ভেতরে গিয়েই তার মামাতো বোন আর তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে গল্পসল্পে ব্যস্ত ]

দুপুরে,সবাই একসাথেই লাঞ্চ করলো,

মা : স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা?..

মা : একটু এদিক আয়! [ বলেই ভেতরের রুমে গেলো ]

স্নেহা : [ রুমে এসে ] হ্যা বলো!

মা : এদিকে বয়!

স্নেহা : [ পাশে বসে ] আচ্ছা তুমি না আমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলেছো কোথায় হুম?..

মা : [ হেসে ] দেখ স্নেহা! হঠাৎ করে এসব শুনলে হয়তো তুই সারপ্রাইজ না হয়ে, তোর খারাপ ও লাগতে পারে, তুই তো জানিস কয়েকদিন আগে আমাদের কি অবস্থা ছিলো! সব শেষ হয়ে যাচ্ছিলো…রাশুর পড়ার খরচ ও বেড়ে গিয়েছিলো কোন দিক থেকে কি করবো কিছুই মাথায় আসছিলো না…

– হঠাৎ করেই কেউ এসে আমাদের সাহায্য করে, আমরা তার থেকে টাকা নিতে চাইছিলাম না! কিন্তু ওনি তোর বাবাকে বললো আমাকে আপনার ভাই মনে করে এই কর্তব্যটা পালন করতে দেন! আপনার যদি তাও সংকোচ হয় তাহলে আমাকে আপনি টাকা গুলো ধীরেধীরে শোধ করে দিবেন!

স্নেহা : আচ্ছা? ভালোই তো মানুষটা! কিন্তু তাও টাকা শোধ করে দিবে বলোনি?..

মা : হ্যা বলেছি!

স্নেহা : ঠিক বলেছো! যারই হোক টাকা শোধ করেই দেওয়াটাই বেটার!

– আচ্ছা! কিন্তু অনি আমাদের এসব ব্যাপারে কিভাবে জানলো..?

মা : বাড়ী নিলামের জন্য ব্যাংক থেকে অর্ডার এসেছে.. যারা কেনার জন্য আগ্রহী তারা এসে বাড়ী দেখে যাচ্ছিলো, উনি নাকি খামার বানানোর জন্য জায়গা খুজছিলো, তখন ব্যাংক থেকে জায়গার কাগজ ওনার কাছে ও যায়, তারপর আমাদের বাড়ী এসে জিজ্ঞেস করলো কেনো নিলাম হচ্ছে?…
তখন সব খুলে বললো তোর বাবা! আর উনি আমাদের সাহায্য করতে চাইছিলো!

স্নেহা : ভাগ্যিস ঠিক সময়ে উনি হেল্প করেছে…আমার তো টেনশনই হচ্ছিলো এতোটাকা কিভাবে জমা করবো কয়েকদিনে!

মা : স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা!

মা : উনি বলেছে ওনার ছেলে তোর একই ভার্সেটিতেই পড়ে, তোর সিনিয়র,

– তোকে খুব পছন্দ করেছে ছেলেটা! ফ্যামিলি ও অনেক ভালো, ছেলে ও দেখতে যেনো হাজারে একটা, উনি তোকে নিজের ছেলের বউ করতে চাই!

[ মায়ের কথা শুনে স্নেহা চমকে গেলো, এমন লাগছিলো যেনো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ]

মা : তাকে কিভাবে ধন্যবাদ দিবে খুজেই পাচ্ছিলো না তোর বাবা! তখনি উনি বলে উঠে…ধন্যবাদ দিতে হবে না..শুধু দু-পরিবারকে এক করার সুযোগ করে দিন এতেই চলবে! আমরা তো অবাক হলাম!

– [ মুচকি হেসে ] তারপর উনি বললো আপনার মেয়েকে আমি নিজের মেয়ে বানাতে চাই!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিক…কিন্তু! মা এসব…

মা : আমি জানি তোর শুনে এমনই লাগবে! আমার তো এর চেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছিলো কেঁদে কেঁদে পুরোদিন পার করে দিয়েছিলাম..

– বিয়ের কথা শুনলে প্রত্যেক মেয়েরই এমন হয়! সাভাবিক…পড়ে মানিয়ে যাবে ধীরেধীরে!

– [ একটু হেসে ] ও হ্যা! তোর স্ট্যাডি ও কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না…ওরা বলেছে তুই যতোটুকু চাস ততোটুকু পড়বি!

[ হতাশ হয়ে গেলো স্নেহা, কি বলবে এসময় কিছইু বুঝতে পারছে না ]

মা : এসব শুনে, এমন পরিবার দেখে তোর বাবা ও আর না করতে পারেনি! বরং খুশিতে কাঁদতে বসেছিলো! বলছে আমার স্নেহার জন্য এমনই একটা পরিবারের চেয়েছিলাম..তা আল্লাহ মিলিয়েই দিলো…

– আমাদের বিপদে ওরা এগিয়ে এলো.. তোর কথা বলায় তোর বাবা ও হ্যা বলেদিয়েছে!

– ওরা এটাও বলেছে! তোর মতামত ও জেনে নিতে, কিন্তু তোর বাবা বলেছে তুই তোর বাবা যেটা ভালো বলে সেটাই করিস,

[ ভাষা হারিয়ে ফেলেছে স্নেহা! মুখ দিয়ে আর একটা শব্দই বের হচ্ছে না খালি ঢোগ গিলছে আর এক পলকে তাকিয়ে মায়ের কথা শুনছে ]

মা : ও হ্যা! এটা দেখ [ বলেই পাশ থেকে একটা প্যাকেট এগিয়ে নিলো ] এই শাড়ীটা তোর বাবা নিজ হাতে পছন্দ করে কিনেছে তোর জন্য!

স্নেহা : শা..শাড়ী কেনো?…

মা : আজ বিকেলে ওরা তোকে দেখতে আসবে! তখন এটা পড়বি!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আজ?..

মা : হ্যা কি হয়েছে?..

স্নেহা : না বলছিলাম যে ওরা তো আমাকে দেখেছে তাই না…আবার আজ দেখতে আসার কি প্রয়োজন!

মা : [ একটু হেসে ] আরে পাগলী দেখেছে তো শুধু ছেলে তাই না?…আর ওভাবে দেখা এক কথা আজ দেখা এক কথা..

– সবাই মিলে কথাবার্তা বলবে,সব ঠিকটাক করবে তারপরই তো বিয়ে হবে তাই না?…

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো ]

মা : [ চোখ মুছে দিয়ে ] আরে কাঁদছিস কেনো বিদায় কি আজ দিবো নাকি পাগলী?…

– আচ্ছা তুই যেনো কি বলবি বলেছিলি?.. [ বলতেই স্নেহার মামাতো বোন আমরিন রুমে ঢুকে ]

আমরিন : কি কথা হচ্ছে মা মেয়ের?.. হুম?..

স্নেহার মা : আরে! এইদিকে আয়! তুই ওকে রেডি করে দে!

আমরিন : হ্যা! হ্যা! এমনভাবে রেডি করে দিবো যাতে হবু বর তার চোখই সরাতে না পারে!

স্নেহার মা : [ একটু হেসে ] সাজানোর ও কি দরকার আমার মেয়েকে ও তো এমনিতেই ও দেখতে সর্গরাণীর মতো,

[ স্নেহার শুধু রাহুলের কথায় মনে পড়ছে এই মুহূর্তে, ইচ্ছে করছে দৌড়ে ছুটে যাবে রাহুলের কাছে, জড়িয়ে ধরবে তাকে টাইট করে ]

মা : আরে হ্যা স্নেহা! বলনা কি বলবি?..

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা?…নাহ! কিক..কিছুনা!

মা : কিন্তু তুই বলেছিলি যে কি যেনো বলার আছে?..

স্নেহা : তে..তেমন কিছুনা!

মা : আচ্ছা! [ বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে উঠে চলে যায় ]

বিকেল হয়ে গেলো,

স্নেহা ড্রেসিং টেবল এর সামনে বসে আছে,মেজেন্ডা রঙের শাড়ী পড়ে, আমরিন স্নেহাকে সাজিয়ে দিচ্ছে,

আমরিন : আরে স্নেহা! কি হয়েছে তোর, মুখটা এমন গোমড়া বানিয়ে রেখেছিস কেনো?.. [ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না ]

আমরিন : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! কোনো লাভার-সাভার আছে নাকি?.. [ বলেই চোখ মারে ]

[ স্নেহা হতাশ হয়ে চোখ তুলে তাকালো আমরিনের দিক, না চাইতেও একটু হেসে মাথা নাড়িয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো, হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ালো, আমরিন ভেতরে আসতে বললে দেখে স্নেহার বাবা এসে ঢুকলো ]

বাবা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] বাহ! পরী লাগছে আমার মেয়েকে!

[ স্নেহা কিছু বলবে বলে তার বাবার দিক তাকিয়ে ঢোগ গিলতে লাগলো ]

বাবা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] আমি জানতাম তুই আমার কথা ফেলবি না, আমার মান রাখবি! আর আমি তো তোর ভালোই চাইবো!…হুম?.. [ গোমড়া মুখে একটু হাসলো স্নেহা! ]

বাব : আরে! অনেকে আমার কান ভরিয়েছে তোর সাথে নাকি কোন ছেলের কি কি চলছে! কিন্তু আমার তোর উপর পুরো বিশাস ছিলো! আমার মেয়ে কখনোই এসব ফালতু কাজ করবে না!

[ দম আটকে গেছে স্নেহার, তার বাবার কথা শুনতেই ,গলা শুকিয়ে আসছে,]

বাবা : আচ্ছা তুই তাড়াতাড়ি তৈরী হয়েনে! ওরা এক্ষুণি চলে আসবে আমি নিচে যাচ্ছি ওদের রিসিভ করতে!

[ বলেই স্নেহার বাবা চলে যায়, জমিয়ে রাখা চোখের পানি গুলো টপ করেই গাল বেয়ে পড়লো স্নেহার! ]

আমরিন : স্নেহা?..তুই ঠিকাছিস তো?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে হেসে ] হ্যা! চোখে কিছু ঢুকেছে হয়তো তাই!

আমরিন : আচ্ছা আমি আসছি! তুই বস!

[ বলেই বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা ধীরেধীরে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো, নিজের দিক তাকিয়ে রইলো, খুব অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে, কিছুই করতে পারছে না,

রাহুলের তেডি স্মাইল, বার বার স্নেহার কানে চুল গুজে দেওয়া,জোড় করে করে কোলে তুলে নেওয়া, এসব মনে করছে আর হাসছে,

হঠাৎ কপালের দিক তাকাতেই আজ সকালে রাহুল পড়িয়ে দেওয়া টিপটার কথা মনে পড়লো, তাড়াতাড়ি নাক ফুলিয়ে কপাল থেকে টিপটা খুলে আয়নায় লাগিয়ে দিলো, আর মনে মনে ভাবছে টিপ পড়িয়েছে রাহুল আর ওকে কেনো দেখাবে? শুধু রাহুলই দেখবে আর কেউ না,

বিরক্তি হয়ে পাশ মুড়ে ধীরেধীরে মোবাইল টা হাতে এগিয়ে নিয়ে খাটে বসলো, ডায়াল লিষ্টে রাহুলের নাম্বারটা এনে তাকিয়ে আছে আর চোখ থেকে জল ফেলছে, রাহুলকে এখন বলবে কিনা ও ভাবছে! আবার ভাবছে, রাহুল তো হুট করেই রেগে যায় না জানি আবার কি তোলপাড় করে বসে,সব তাড়াহুড়োতে করলে ও ঠিক হবে না, থাক ঐ ছেলেটাকেই বুঝিয়ে বলে দিবো যে আমি রাহুলকে ভালোবাসি ওকে বিয়ে করতে পারবো না ]

কিছুক্ষণ পরই আমরিন এগিয়ে এলো,

আমরিন : ওয়াও স্নেহা! ছেলে কি হ্যান্ডসাম রে,

স্নেহা : [ শকড হয়ে মনে মনে ] এসেই গেছে! উফফ…

আমরিন : পুরাই ফরমাল গেটাপে! যেমন লম্বা তেমন হ্যান্ডসাম!

স্নেহা : [ মনে মনে ] হুহ! আমার রাহুলের থেকে কমই হবে!

হঠাৎ,

রাশু : [ দৌড়ে এসে ] ওয়াও আপু! কি গাড়ী নিয়ে এসেছে জানো?..ঐ যে তোমাকে দেখিয়েছিলাম না একদিন…ঐরকম রেড কালারের,

স্নেহা : [ মনে মনে ] আজিব তো! তাতে কি হয়েছে রাহুল থেকে ও আছে এমন! ওর টা আরো সুন্দর,হোয়াইট কালারের!

– রেড! ইয়াক ছিঃ এটা কোনো কালার?

আমরিন : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে স্নেহা! তুই কি ভাবছিস মনে মনে?..

স্নেহা : [ মনে মনে ] আমি?..পাগলই তো হয়ে গেছি! তোমাদের মতো পাগলামো টপিক নিয়ে ভাবছি!

হঠাৎ,

স্নেহার মা : আরে আমরিন! স্নেহাকে নিয়ে আয়! [ বুকটা ধুপ করে উঠলো স্নেহার ভয়ে,কেমন যেনো লাগছে, শরীর কাঁপতে লাগলো,কি ভেবেছিলো আর কি হয়ে যাচ্ছে, ]

আমরিন : [ হেসে ] স্নেহা! আমার তো মনে হচ্ছে! তোকে আজই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে তোর চেহেরার কি না হাল করে রেখেছিস,

স্নেহা : এ..এখন যেতে হবে?.. আরেকটু পরে গেলে হয় না?..

আমরিন : আরে এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো?..[ ফিসফিসিয়ে ] ওর সামনে গেলে লজ্জা পাস এখন না! [ বলেই টেনে বের করে ড্রইং রুমে এগিয়ে নিয়ে যায়, স্নেহা তার বাবার দিক তাকালো ]

বাবা : আয় স্নেহা! [ বলেই স্নেহাকে এগিয়ে নিয়ে সোফায় বসতে দিলো, স্নেহা সোফায় বসতে যাবে তখনি আড়চোখে পাশে তাকাতেই স্নেহা থমকে যায়, বাজ ভেঙে পড়েছে যেনো মাথায়, মনে মনে ভাবছে ” সামির “? ও…? কিক..কিন্তু ও তো আমার আর রাহুলের ব্যাপারটা ও জানে!

সামির ও স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হাসলো, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে ফেলে, ]

বাবা : বয় স্নেহা!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! [ বলেই বসলো ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 33

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 33

writer-Jubaida Sobti

রাহুল হাত দিয়ে স্নেহার পিঠ আলগে ধরে স্লাইড করছে, ক্রীম গুলো সব স্নেহার পিঠেই মাঝতে লাগলো তাতেও খবর নেই, হারিয়ে গেছে রাহুল অজানা এক ভালো লাগাই!…

স্নেহা : [ ছুটে এসে ] রার…রাহুল! ড্রেস খারাপ হচ্ছে…

রাহুল : হোক! [ বলেই স্নেহার গলায় কিস্ করতে লাগলো ]

কিছুক্ষণ পরেই স্নেহা রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে সরে যাচ্ছিলো …. রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হেসে স্নেহার হাত ধরে টান দিয়ে আবার দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দাড় করায়,

রাহুল : সামান্যতে এতো লজ্জা স্নেহা?…[ with tedi smile ]

স্নেহা কিছু বললো না লজ্জায় ঘাবড়ে গেলো, চুপ করে মাথা নুয়ে আছে,জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে,

রাহুল : [ স্নেহার একদম কাছে মুখ এনে ] কামঅন স্নেহা! ভয় পেতে হবে না, আমি তোমার পার্মিশন ছাড়া আর কিছু করবো না…

– উইদাউট কিস্ [ বলেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, স্নেহা শকড হয়ে তাকালে, রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার গায়ে ওড়নাটা পড়িয়ে দিলো, তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে হুট করে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : আরে ?…

রাহুল : অওহ! স্নেহা! তোমাকে দেখে লাগছে না, কিন্তু আগে থেকে একটু ভারী হয়ে গেছো!

স্নেহা : দেখেন উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না,আপনি যে ড্রেস টা কিনেছেন এটাই তো কমপক্ষে চল্লিশ-পঞ্চাশ কেজি হবে!

– [ মুখ ভেঙিয়ে ] এমনিতেও! আমি কি বলেছি আপনাকে কোলে নিতে?…

রাহুল : না বলোনি কিন্তু আমার ইচ্ছে হয়েছে নিয়েছি! যখন ইচ্ছে হবে নিবো, এবং সারাজীবনই নিয়ে যাবো,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] নিয়ে যাবেন?.. কোথায়?..

রাহুল : স্মার্ট কুয়েশন!.. [ with tedi smile ]

– বাকি গুলো পরে দেখে নেবো, তবে আপাতত এখন রুফটপে নিয়ে যাচ্ছি, [ বলেই হাটা শুরু করে ]

স্নেহা : রুফ টপে?..কিন্তু কেনো?..

রাহুল : আগে চলোতো…তারপর নিজেই দেখে নিবে! [ আর কিছু বললো না স্নেহা, ব্লাশিং হয়ে মুচকি হেসে রাহুলের কাধ শক্ত করে জড়িয়ে তাকিয়ে রইলো এক পলকে ]

রুফ টপে পৌছাতেই স্নেহা আশেপাশে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলো,চারদিক সাদা কাপড় আর অনেকগুচ্ছো সাদা গোলাপে মুড়িয়ে সাজানো হলো…

রাহুলের কোল থেকে নেমে দাঁড়ালো স্নেহা!

সামনে হেটে এগিয়ে যেতেই দেখে মাঝে একটি ডিনার টেবিল ও রেডি করা আছে, তারউপর হলুদ বাতির দুটো ক্যান্ডেল লাইট জলছে! হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুল পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, স্নেহা তাকাতেই,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : আজ ডিনার করবে তো?..নাকি আজ ও পেট ভরে গেছে সামথিং অর ক্ষিধে নেই!…

[ রাহুলের কথা শুনে স্নেহা লজ্জায় একটু হেসে তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : তবে আজ কিন্তু পেট আমার অনেক ভরেছে…ডিলেশিয়াস্ ক্রিমি প্লাস…

স্নেহা : [ লজ্জায় চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে.. ফিনিশ!

[ বলেই হাত বাড়িয়ে দিলো স্নেহার দিক, একটু হেসে রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো স্নেহা!, এগিয়ে নিয়ে একটি চেয়ার টেনে বসালো রাহুল স্নেহাকে!]

স্নেহা : এমন লাগছে যেনো,কোনো সাদা গোলাপের বাগানে এসেছি!

রাহুল : পরীরা যেখানে পা রাখবে জায়গাটা ডেফিনিটলি ফুলের বাগানের মতোই তো লাগবে!

স্নেহা : হোহ?.. পরী কে?…

রাহুল : তুমি!

স্নেহা : ওও! তাহলে আপনি?…

রাহুল : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] আমি ভুত!

স্নেহা : [ হেসে ] ভুত হতে যাবেন কেনো?..

রাহুল : [ হেসে ] তাহলে আর কি হবো?..ভুত ছাড়া?..সব ইউজলেস জিনিষের সাথেই ছেলেদের তুলোনা করা হয়!

– মেয়েদের ডেডিকেট করার জন্য, পরী আছে, ফুল আছে, চাঁদ আছে, আরো কতো কি…আর এগুলোর অপোজিট ডেডিকেট করো ছেলেদের,

– তুমি পরী হলে আমি ভুত!, ভুত দেখলেই তো মানুষ ভয়ে কাঁপতে থাকে, কারণ এর চেহেরা ভয়ানক আর কুৎসিত,

– তুমি ফুল হলে আমি কাটা, একটা সুন্দর ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে যখন সেটা ছিড়তে যাবে তখন ঐ যে কাটায় গিয়ে আঘাত পাবে [ একটু হেসে ] তারপর নাও কাটার উষ্টিগুষ্টিকে গালি দিয়ে ভরিয়ে ফেলবে!

– তারপর তুমি চাঁদ হলে আমি সূর্য, ইংলিশ ট্রান্সলেটে ও মুনকে ফিমেল ধরে আর সা্ন কে মেল, চাঁদ দেখলেই মানুষ পোয়োট্রিক হয়ে যায়, চাঁদের আলো আর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাকে মেয়েদের সাথে তুলোনা করে, আর সূর্য যার আলোতে গোটা পৃথিবী ভরে যায় তাকে মানুষ গালি দিতে থাকে কারণ তার তাপ একটু বেশী,

[ স্নেহা রাহুলের কথা শুনে কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : হুম! হুম! হাসো…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! আপসে্ট হচ্ছেন কেনো?…সব স্ট্রং জিনিষই তো ছেলেদের সাথে তুলোনা করা হয়েছে!

– এই যে যেমন বলছেন ভুত, যেটা দেখলে মানুষ ভয় পায় কারণ তার সাথে মানুষ মোকাবেলা করতে পারবে না,

– সেকেন্ড কাটা, কাটাতো ফুলের সুরক্ষকারী যার ভয়ে মানুষ ফুল ছিরতে ভয় পায়,

– আর সূর্য যার তাপ অনেক বেশি যেমনটা ছেলেদের রাগ বেশি, ইনফ্যাক্ট সূর্যের এমন আলো যার কারণে মানুষ চোখ তুলে ও সূর্যের দিক বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না, সো্ দ্যাটস্ ইট!

রাহুল : হুম! এবার বুঝলাম তোমার চশমা কেনো প্রয়োজন হয়েছে! লজিক আছে কথায়, ব্রিলিয়ান্ট!

স্নেহা : এক্সকিউজ মি! চশমা আমি Headache এর জন্য ইউজ করি!

রাহুল : ঐ তো Headache তখনিই তো হয় যখন তুমি প্রেশার দিয়ে এসব চিন্তাভাবনা করো!

স্নেহা : হয়েছে?..হুম?..

রাহুল : হুম! হয়েছে [ with tedi smile ]

– ওকে..এবার ডিনার শুরু করো!

– আচ্ছা ওয়েট…ওয়েট ফার্ষ্ট মি..ওকে.?.[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো, রাহুল স্পুনে খাবার তুলে স্নেহার মুখের দিক এগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] ওয়েট! [ বলেই সে ও তার স্পুনে খাবার তুলে রাহুলের মুখের দিক এগিয়ে দিলো, দুজনেই হেসে উঠে দুজনের হাতে এগিয়ে দেওয়া স্পুনের খাবারগুলো খেয়ে নিলো ]

After Dinner,

রাহুল ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক, স্নেহা হেসে হেসে পানি খেয়ে একটা টিসু এগিয়ে নিয়ে মুখ মুছে নিলো…

মুখে হাত দিয়ে বসে আছে স্নেহা..আর রাহুল তাকিয়েই আছে… [ Then Eye Contact ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহা চোখ দিয়ে ইশারা করলো রাহুলকে… দেখা হয়েছে কিনা..?

রাহুল ও ভোর কুঁচকে ইশারা করে বললো… না হয়নি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আই থিংক আমার এখন ড্রেসটা চেঞ্জ করা উচিৎ! রাহুল!

– আমি যাচ্ছি! [ বলেই উঠে দাঁড়ালো ]

রাহুল : আরে চেঞ্জ করবা মানে ?…ভালোই তো লাগছে!

স্নেহা : পাগল নাকি?.. আমি এটা কেড়ি করে নিয়ে এখন বাসায় যাবো?…

রাহুল : [ উঠে দাঁড়িয়ে ] হ্যা তো কি হয়েছে…?

– ওকে তোমার হাটতে হবে না আমি কোলে করে গাড়ীতে তুলে দিবো তারপর আবার কোলে করে গাড়ী থেকে নামিয়ে আবার কোলে তুলে…

স্নেহা : ব্যাস! ব্যাস! [ হেসে ] এতোবার কোলে তুলতে হবে না…এটা এখানেই থাক…

রাহুল : এখানে থাকবে কেনো ?..আমি পড়ার জন্য?…

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আপনি পড়তে যাবেন কেনো…. [ রাহুলের কাছে এসে জ্যাকেট টেনে ঠিক করে দিয়ে.. ]

– আসবোই তো একদিন এইখানে, এক্কেবারের জন্য…. হুম?…তখন পড়বো!

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে ] আচ্ছা?… তো ঐ দিনটা কবে আসছে…?

স্নেহা : আসছে! ওয়েট করুন!…

রাহুল : [ স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে ] ওহ নো স্নেহা! আই কান্ট ওয়েট!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] বাট ওয়েট করতে হবে! [ বলেই কোমোড় থেকে রাহুলের হাত ছুটিয়ে ঘাগড়া হাতে তুলে দৌড়ে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

[ স্নেহা থেমে গিয়ে পেছন মুড়ে তাকায়, রাহুল এগিয়ে এসে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কোলে তুলে নেয়! স্নেহা ও আর কিছু বললো না… ব্লাশিং হয়ে হেসে রাহুলের গলায় জড়িয়ে কাধে মাথা রেখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক ]

নিচে নেমে আসলে…রাহুল কোল থেকে নামাতে না চাইলেও স্নেহা ছুটাছুটি করে নেমে বেডরুমে চলে যায়,রাহুল হাসতে থাকে,

কিছুক্ষণ পর স্নেহা চেঞ্জ করে ড্রইংরুমে এগিয়ে এসে দেখে রাহুল সোফার হাতের উপর বসে আছে, পা নাড়িয়ে গুণগুণ করে গান করছে….

রাহুল : [ স্নেহাকে দেখতেই ঘুমের আলসেমি কেটে ] স্নেহা! আমার না আসলে অনেক টায়ার্ড লাগছে…আ..আই মিন ঘুম পাচ্ছে চোখটা খুলে রাখতে পারছি না, চলো ঘুমিয়ে পড়ি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] তাই?…কম্বল আর বালিশটাও কি এইখানে সোফায় এনে দেবো?..

রাহুল : না..নাহ থাক ওসবের দরকার নেই! [ চোখ টিপ মেরে ] শুধু তুমি আসলেই চলবে…

স্নেহা : তাই?…

রাহুল : ইয়েস্! [ With tedi smile ]

স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ালো, রাহুল ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে স্নেহার হাত ধরতেই যাবে..তখনি

স্নেহা : [ হেসে হাত কাধে উঠিয়ে ব্যাগ ঠিক করে ] বাই! [ বলেই হেটে দরজার দিক চলে যায় ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা ওয়েট! [ বলেই দৌড়ে এগিয়ে যায় স্নেহা হেসে দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো ]

রাহুল : [ পেছন থেকে স্নেহার হাত ধরে ] ঐ…

স্নেহা : ইয়েস্

রাহুল : নাহ বলছিলাম যে.. আজ না হয় থেকে যাও…

স্নেহা : থেকে কি হবে?…

রাহুল : থেকে কি হবে মানে?..কিছু তো করতে দিবা না…এমনিতেও আর একদিনে কি বা..হয়ে যাবে…আফটার অল! টেন মানথস্ তো লাগবেই!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] Listen! জাষ্ট তাকিয়ে থাকবো তোমাকে!…

স্নেহা : [ রাহুলের নাক চেপে দিয়ে ] অনেক তাকিয়ে ফেলেছেন আজ! আর তাকিয়ে থাকতে হবে না! [ বলেই হাটা শুরু করে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ওহো স্নেহা! আমি যেমনকি বাচ্চা! নাক চেপে আদর করে দিলা তো ব্যাস! হয়ে গেলো!

[ স্নেহা ফিরে তাকিয়ে একটু হেসে মুখে আংগুল দিয়ে আস্তে বলার জন্য ইশারা করে, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে দৌড়ে গিয়ে স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : আরে রাহুল! কি করছেন! পাগল নাকি?..সিকিউরিটি দেখছেন না?…[ বলেই ছুটাছুটি করতে থাকে, রাহুল হেসে স্নেহাকে টেনে তারদিক ফিরিয়ে কোলে তুলে নেয়! ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে রাহুল! নামান প্লিজ! এসব ভালো হচ্ছে না…[ বলেই নেমে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে, সিকিউরিটিদের দিক তাকিয়ে,কাঁকা বলে চেঁচিয়ে উঠে, এবং সিকিউরিটি দু-জনই হেসে আঙুল দেখিয়ে অল দ্যা বেষ্ট ইশারা করে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] জানো ওরা কি বললো?… মানে অল দ্যা বেষ্ট! প্রেম চালিয়ে যাও!

স্নেহা : আপনি না একটু বেশিই করছেন রাহুল!

– নামান আমাকে প্লিইইজ!

[ রাহুল একটু হেসে গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে স্নেহাকে নামিয়ে দরজা খুলে দিলো, স্নেহা নাক ফুলিয়ে গাড়ীতে উঠে বসে, রাহুল দরজা বন্ধ করার আগেই স্নেহা ধুম করে টেনে দরজা বন্ধ করে দিলো, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে ড্রাইভিং সি্টে এগিয়ে গিয়ে বসলো ]

গাড়ী চলছে স্নেহা কিছু বলছে না জানালার দিক তাকিয়ে আছে…রাহুল কিছুক্ষণ সোজা তাকাচ্ছে তো কিছুক্ষণ হেসে আবার স্নেহার দিক তাকাচ্ছে, রেগে আছে স্নেহা! তবে রাগ দেখালে স্নেহাকে আরো একটু বেশিই কিউট লাগে…

রাহুল : এতো রাগার কি আছে…ওরা আমার ঘরের মানুষের মতোই! ইনফ্যাক্ট আমার কয়টা গার্লফ্রেন্ড আছে না আছে, ওরা কবে আমার বাসায় আসছে না আসছে সব খবরই ওদের থাকে…এক কথায় আমার ভেতর বাহিরের খবর…

– [ একটু হেসে ] দাদী যদি ওদের জিজ্ঞেস করে বাসায় কবে ফিরেছি…লেইট নাইটে ফিরলেও ওরা বাচিয়ে নেই! দ্যাটস্ হোয়াই আই লাভ দেম!

স্নেহা : [ আড় চোখে অবাক হয়ে তাকালো ] কয়টা গার্লফ্রেন্ড আছে না আছে মানে?…কয়টা আছে?…

রাহুল : [ হেসে ] ওহহো এভাবে তাকাচ্ছো কেনো… গার্লফ্রেন্ড মিনস্ আ..জাষ্ট লাইক শ্রেয়া!

– নট ইউ! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না জানালার দিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : ওয়াও! স্নেহা জলতে ও পারে!

স্নেহা : আই এম নট ফিলিং জ্যালা্স! ইফ দেয়ার অনলি ফ্রেন্ডস!

– লাইক শ্রেয়া!

রাহুল : ওকেই! [ With tedi smile ]

স্নেহা : আর আপনি বক বক না করে না সোজা তাকিয়ে গাড়ী চালান! প্লিজ!

রাহুল : তুমি যতোই রাগো না কেনো স্নেহা…আমার মন চাইলেই কোলে তুলে নিবো… সেটা পাবলিক প্লেস্ হোক অর প্রাইভেট প্লেস্ আই ডোন্ট কেয়ার!

[ স্নেহা আর তাকালো না রাহুলের দিক, মনে মনে হাসছে রাহুলের কথায়, আর ব্লাশিং হচ্ছে ]

বাড়ী এসে পৌছালো, গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকালো রাহুল!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো!

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : আমি কাল থেকে আর ডান্স ক্লাস যাচ্ছিনা!

রাহুল : ওওয়াও! দ্যাটস্ আ..গ্রেট নিউজ!

স্নেহা : কাল! বাবা-মা আসছে, মামার বাসায়!

রাহুল : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওউউউ! গুড নিউজ!..

স্নেহা : আমি কাল আপনার কথা বাবা-মা কে জানিয়ে দিবো!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ওহ! ওয়াওও! দ্যাটস্ আ…ব্রেকিং নিউজ ফর টুডে!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] উফফো! রাহুল! আমি সিরিয়াসলি কথা বলে যাচ্ছি…আর আপনি মজা করেই যাচ্ছেন! [ বলেই দরজা খুলে নেমে পড়ে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! ওয়েট! [ বলেই নেমে স্নেহার দিক এগিয়ে আসে ] আমি মজা করছিলাম না সত্যি! বাই দ্যা ওয়ে ব্রেকিং নিউজই তো হবে তাই না? ফাইনালি স্নেহা তার পেরেন্টস্ কে তার ভালোবাসার কথা বলবে! হুম! হুম!

স্নেহা : সব কিছু যতোটাও সোজা মনে করছেন রাহুল! ততোটাও সোজা না! ভালোবাসায় দু-জনের মনের মিল করে! আর বিয়ে! দুটো পরিবারকে এক করে!

– রাহুল! আপনার পরিবারের স্ট্যাটাস আর আমার পরিবারের স্ট্যাটাস আসমান-জমিনের তফাৎ!

রাহুল : বাট! স্নেহা! আমি কারো স্ট্যাটাসকে ভালোবাসিনি… আমি তোমাকে ভালোবেসেছি! আমাদের ভালোবাসায় স্ট্যাটাস কেনো আসবে?

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] আই হোপ সো্… যাতে কোনো বাধা না আসে!

রাহুল : বাধা কেনো আসবে?…কে বাধা দেবে?..

– [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] Listen! তোমাকে রাহুল ভালোবেসেছে ওকে?…

স্নেহা : [ একটু হেসে রাহুলের নাক চেপে দিয়ে ] হুম! রাহুল ভালোবেসেছে…

রাহুল : ইয়েস্ মাইন্ড ইট!

স্নেহা : [ রাহুলের দুহাত মুঠি বেধে ধরে ] রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : বাবা অনেক সেনসিটিভ মাইণ্ডের মানুষ! ছোট থেকেই আমি বাবাকে মুখ ফুটে কিছু বলিনি! মনের মধ্যে ভয় কাজ করে কিছু বলতে!

– কিন্তু আজ উদ্দ্যেগ নিয়েছি! বাবাকে বলবোই, আমার আপনাকেই চাই সারাজীবনের জন্য!
[ চোখে পানি টলমল করছে স্নেহার তাও হেসে উঠে ] এই প্রথম কিছু বলবো তো!.. তাও ভালোবাসার কথা… একটু নার্ভাস লাগছে…

রাহুল : [ হেসে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] You know স্নেহা?

– জীবনে হয়তো কোনো একটা ভালোকাজ করেছিলাম..যার কারণে আমি তোমাকে পেয়েছি!

– দেখোনা তুমি তোমার ফাদারকে কতো রেসপেক্ট করো, কতো ভালোবাসো… আর আমাকে দেখো.. [ বলেই হেসে উঠে ] তোমার এই পিউর লাইফের সাথে না আমার এই ডিস্কাস্টিং লাইফের তুলোনাই হয়না!

স্নেহা : [ রাহুলের চেপে রাখা কষ্ট!বুঝতে পেরে তার হাত আরো শক্ত করে ধরে ]

– রাহুল!

রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! তোমার বাবাও তোমাকে এমনভাবে ভালোবাসে তাই না!

স্নেহা : রাহুল! পাষ্ট সবারই থাকে…পাষ্ট দিয়ে কি থেমে থাকা যায়?.. এসব নিয়ে নিজেকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ? চাইলেই আপনি আপনার বাবা… [ বলতেই রাহুল জোড়ে একটি শাস ফেলে স্নেহার দুগালে হাত রাখে ]

রাহুল : ওকে স্নেহা! অল দ্যা বেষ্ট!…সব ঠিকটাকই হবে…ডোন্ট ওয়ারি!

– এন্ড আই এম ওয়েটিং! [ with tedi smile ] কখন আসবে এক্কেবারের জন্য! হুম?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : আপনি আপনার বাবাকে ভালোবাসেন?..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে অন্যপাশ তাকিয়ে ] ঠান্ডা অনেক ভেতরে যাও…গুড নাইট!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে মুচকি হেসে কিছুক্ষণ একপলকে রাহুলের দিক তাকিয়ে থেকে ] গুড নাইট!

চলে গেলো স্নেহা, তাকিয়ে আছে রাহুল, চোখ লাল হয়ে আসছে রাহুলের কেনো যেনো,
তাও কন্ট্রোল করে নিচ্ছে নিজেকে…

গাড়ীতে উঠে বসলো,

ভাবতে লাগলো সেই মোমেন্ট গুলো, একা একা রাতে বসে বাবার বার্থডে সেলেব্রেট করা, সব গাড়ীর টায়ার ইচ্ছে করে পাম্পচার করে দেওয়া, যাতে বাবা গেইটের দিক তার থেকে লিফট নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে! চোখ ভিজে যাচ্ছে রাহুলের!
________________________________

এইদিকে,

স্নেহা বেল বাজাতেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই একসাথে এগিয়ে এসে দরজা খুললো,

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওউ বার্থডে গার্ল কামিং!

[ স্নেহা ঢুকতেই জারিফা মার্জান দুজনেই ঝাপিয়ে জড়িয়ে ধরে,]

– হ্যাপি বার্থডে মেরি জান!

স্নেহা : [ দুজনকে জড়িয়ে দুজনের কপালে চুমু দিয়ে ] থেংক ইউউ!

জারিফা : [ স্নেহাকে টেনে ভেতরের রুমে এগিয়ে নিয়ে ] চল চল! স্নেহা… কেক টেষ্ট করে বল কেমন হয়েছে! [ স্নেহা হাসতে লাগলো জারিফার কান্ডে ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 32

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 32

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : স্নেহা আই সে্ প্লিজ ডোন্ট ক্রাই!

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো, কিন্তু তাও চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে ]

রাহুল : Listen! তোমাকে কান্নাচোখে এতোটা কিউট লাগছে না, কোন সময় সবার সামনে কিস্ দিয়ে বসি কে জানে সো্ বি কেয়ারফুল! স্নেহা আমি কিন্তু বেশিক্ষণ কন্ট্রোল করতে পারবো না নিজেকে! [ স্নেহা চোখ মুছে রাহুলের দিক তাকিয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : Now better! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আপ…আপনি..কি? রের..রেগে আছেন আমার উপর?…

রাহুল : মোটেও না! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে হুট করেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] বাই!

বলেই ড্রাইভিং সি্টের দিক এগিয়ে গেলো, স্নেহা অতোটুকুতেই শকড হয়ে গেছে আশেপাশে তাকিয়ে দেখবে কেউ দেখেছে কিনা সে সাহসটুকু ও হারিয়ে ফেলেছে,রাহুল ওদিক দিয়েই দাঁড়িয়ে থেকে স্নেহার দিক তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতে লাগলো, মনে মনে ভাবতে লাগলো স্নেহা,এই রাহুলটাও না মাঝেমাঝে এমন কান্ড করে বসে থাকে লজ্জায় ইচ্ছে করে ওদিকের মাটি কুড়েই ঢুকে পড়বে,আর কিছু না বলে পেছন মুড়ে চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো স্নেহা, হঠাৎ বুকটা আবার ধুপ করে উঠলো,কোনো এক ভয় বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে বসেছে,তাড়াতাড়ি রাহুলের দিক আবার ফিরে তাকালো, রাহুল গাড়ীর চালের উপর হাত রেখে ঐভাবেই হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,হঠাৎ স্নেহার মুখ গোমড়া আর চোখে পানি দেখে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এলো!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! আবার কি হলো?…

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে কাঁদো কন্ঠে ] রার…রাতে বব..বলেছিলাম না…

রাহুল : হোয়াট হ্যাপেন স্নেহা?.. এইভাবে কাঁদছো কেনো?…দেখো আশেপাশে অনেকে তাকিয়ে আছে![ স্নেহা কান্না কন্ট্রোল করে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা!..তুমি এভাবে ভয় পেয়ে আছো কেনো?…কি হয়েছে?..আমাকে বলো…

স্নেহা : রার..রাহুল আ…আমি ঐ সপ্নটা এমনই দেখেছিলাম…আপ..আপনি এইভাবেই…

রাহুল : [ হেসে ] পাগলী একটা তুমি! আমরা এতো রাস্তাই তো পেড়িয়ে আসলাম কই কিছুই তো হলো না তাই না?..

– আর তোমাকে বললাম না এসব বিলিভ না করতে, স্নেহা! জাষ্ট একটা ড্রিমই তো! এটাকে এতো সি্রিয়াসলি নিচ্ছো কেনো?…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল…

রাহুল : ওকে স্টপ ইট! যাও ভেতরে যাও….

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! তুমিও না দাদীর মতো সামান্য বেপারটাকে এতো বড় করে ভাবো! [ চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে স্নেহার ]

রাহুল : ওকে Listen! তুমি তো দোয়া করছো আমার জন্য যাতে আমার কিছু না হয় তাই না ? [ একটু হেসে ] সো্ এতো কিউট একটা মেয়ের দোয়া কি আল্লাহ কবুল করবে না?..হুম?..

স্নেহা : [ হাত এগিয়ে দিয়ে ] আপনি সানগ্লাস পড়বেন না ড্রাইভ করার সময় প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ হেসে ] এক্সকিউজ মি! তুমি কি সপ্নে আমাকে সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভ করতে দেখেছো?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] মনে নেই রাহুল! ব্যাস আপনি প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ স্নেহার হাতে হাত রেখে ] ওকে প্রমিস্!

স্নেহা : ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবেন না! স্লোলি করবেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে! প্রমিস্ ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবো না স্লোলি করবো!

স্নেহা : ওভারটেক করবেননা বারবার!

রাহুল : [ আহ্লাদী কন্ঠে ] ওহো স্নেহা! এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?…

স্নেহা : [ চোখ রাঙিয়ে ] প্রমিস্ করেন?

[ কি আর করার রাহুল বাধ্য হয়ে স্নেহার মনের ভয় দূর করতে প্রমিস্ করেই দিলো ]

রাহুল : হ্যাপি?..

[ স্নেহা মুখ গোমড়া করে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : ওকে! এবার ভেতরে যাও তারপর আমি গাড়ীতে উঠবো!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিকে,রাহুল আবার ও চোখ দিয়ে ইশারা করলো ভেতরে যেতে, স্নেহার ও আর কি করার বাধ্য মেয়ের মতো ভেতরে ঢুকে পড়লো তবে ভেতরে ঢুকেছে ঠিক…কিন্তু মনটা রাহুলের কাছেই পড়ে আছে… তাড়াতাড়ি দু-তলায় উঠে শিরির জানালার গ্লাস খুলে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, রাহুলের মুখটাও গোমড়া দেখাচ্ছে…নিশ্চয় তারমনটাও স্নেহাকে খুঁজছে, না চাইতেও বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল…তাকিয়ে আছে স্নেহা, যতোক্ষণ না রাহুলের গাড়ী দেখা যাচ্ছিলো, চলে গেলো রাহুল ]
________________________________

দুপুর ৩ টা বেজে ১০ মিনিট,

রেষ্টুরেন্টের বারের মধ্যেই বসে আছে রাহুল তার ফ্রেন্ডসদের সাথে,সবাই এসেছে লাঞ্চ করার নামে অথচ কেউই লাঞ্চ করার ধারেকাছে নেই, সামনে গ্লাস নিয়ে এলকোহল খাওয়া শুরু করে দিয়েছে সবাই, ইনফ্যাক্ট তাদের কথা বলেও কি হবে রাহুল ও আগে সে্ইম কাজটাই করতো, বাট এখন তো খাওয়া দূরের কথা ছুঁয়ে ও দেখছে না, তা দেখে অবশ্য রাহুলের অনেক ফ্রেন্ডসরাই তাকে নিয়ে মজা করছে, কিন্তু তাও রাহুল এসব কথায় কেয়ার করছে না, কারণ ঐদিন শিপে স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো রাহুল!…

হঠাৎ,ফোনটা বেজে উঠলো রাহুলের,স্নেহার কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসি্ভ করতে গেলো রাহুল! তখনি

রিদোয়ান : [ টেনে নিয়ে রিসি্ভ করে ] হাই ডার্লিং!

[ স্নেহা অবাক হয়ে কান পেতেই রইলো, সাথে সাথেই রাহুল হেসে রিদোয়ানের মাথায় বাড়ি দিয়ে ফোনটা কেড়ে নিলো ]

রিদোয়ান : আরে দোস্ত আমাদের ও একটু বলতে দে!

রাহুল : [ ফোন কানে দিয়ে ] আমি জানতাম এরমধ্যেই তোমার ফোন আসবে, [ রিদোয়ান ও কান লাগিয়ে রাখলো রাহুলের ফোনের সাথে ]

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি কোথায় এখন?…

রাহুল : আমি..আ..আমি এখন রেষ্টুরেন্টে,

রিদোয়ান : [ হেসে চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল মিথ্যে বলছিস কেনো…? বলনা তুই এখন বাড়ে বসে ড্রিংক্স করছিস… [ রাহুল চোখ রাঙিয়ে তাকালো ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে ফিসফিসিয়ে ] আই এমমম জোকিংং!

স্নেহা : আপনি ড্রিংক্স করছেন রাহুল?..

রাহুল : নো! স্নেহা! [ বলেই গ্লাস টেনে হাতে নিলো রিদোয়ানকে মারার জন্য সাথে সাথেই রিদোয়ান উঠে হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! ওখানেই কেউ এখন বলে উঠলো আপনি ড্রিংক্স করছেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] রিদোয়ান ছিলো! মজা করছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওহ!

রাহুল : তবে মিথ্যে বলছিনা, আমি বাড়েই আছি! কিন্তু এসব ড্রিংক্স ট্রিংক্স কিছুই ধরে দেখিনি!

স্নেহা : হোহ! তাহলে আপনি ওখানে কি করছেন…?

রাহুল : আরে ওরা এসেছে লাঞ্চ করবে বলে আমি ও ভাবলাম তাই…কিন্তু এসে দেখি উলটা হয়ে গেছে,

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি ওখানে বসে আছেন…আমিও কেমনি বিশাস করবো আপনি ধরে ও দেখেননি!

রাহুল : তাই?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : হুম..তাই!

রাহুল : নিজেকেও ততোটা বিলিভ করোনা যতোটা আমাকে করো আই নো দ্যাট স্নেহা ওকে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা লাঞ্চ করেছেন?…

রাহুল : নাহ! তুমি?…

স্নেহা : আমিও নাহ!

রাহুল : তোমার তো ওসব Disgusted unlogical টেনশনে পেটে কিছু ঢুকছিলো না তাই না?…

– বাই দ্যা ওয়ে প্রুফ হলো তো? যে এসব বোকাস্!

স্নেহা : বাট রাহুল আমি অনেক শুনেছি দূর্সপ্ন তখনি দেখে যখন কোনো বিপদ ঘুরঘুর…

রাহুল : Again?…

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা আপনি লাঞ্চ করেননি কেনো এখনো?…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম তুমিও করোনি! তোমার ফোনেরই অপেক্ষা করছিলাম!

স্নেহা : তাই? তাহলে এবার লাঞ্চ করেনিন আমিও রাখছি…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে শুনোতো [ একটু হেসেই ফোনটা কেটে দিলো স্নেহা ]

রাহুল : [ মনে মনে ] আজিব মেয়ে!
________________________________

রাত ১০টা বেজে ২০মিনিট,

চুলটা খোপা করে,শালটা গায়ে মুড়িয়ে, ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে বেড়িয়ে এলো স্নেহা! নিচে নেমে আসতেই দেখে রাহুল হাতে হাত বটে গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,

স্নেহাকে দেখেই,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে ] হেইইই! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : [ একটু হেসে এগিয়ে এলো ] আপনি?…

রাহুল : কেনো? অবাক হওয়ার কি আছে..আগেই তো বলেছি আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : কিন্তু শুধু আসার সময় ড্রপ করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] তোমার কথা শুনে না মাঝে মাঝে সুইসাইড করতে ইচ্ছে করে আমার!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের পাশে এসে দাঁড়ায় ] হুট করেই রেগে যান কেনো বলেন তো?…

– আমি মজা করছিলাম!

রাহুল : কটা বাজছে বলোতো?…আজ ২০মিনিটস্ লেইট!

স্নেহা : হ্যা তো কি হয়েছে! আপনি আছেন না সাথে!

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা ও হঠাৎ লজ্জা পেয়ে ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে ] গাড়ীতে ওঠো! [ বলেই দরজা খুলে দিলো, স্নেহা উঠে বসলো, রাহুল ও ওপাশ গিয়ে উঠে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনি…আপ…আপনার জ্যাকেট চেঞ্জ করে ফেললেন যে?..

রাহুল : মানে?..

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মানে আপনি তখন ব্লু-জ্যাকেট পড়েছিলেন,এখন আবার হোয়াইট!

রাহুল : [ একটু হেসে ] শাওয়ার নিয়েছিলাম তাই!

স্নেহা : [ আড় চোখে তাকিয়ে ] আপনি উইন্টারে একদিনে কয়বার শাওয়ার নেন বলেন তো?..আচ্ছা মানলাম শাওয়ার নিয়েছেন! কিন্তু ব্লু-জ্যাকেট টা তো আবার পড়া যেতো তাই না?..

– এ..এক মিনিট! আপনি মিথ্যে বলছেন কেনো? আপনি যদি সত্যিই আবার শাওয়ার নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার হোয়াইট শার্ট ব্লাক প্যান্টটা তো ঠিকই আছে,

রাহুল : এক্সকিউজ মি! তখন হোয়াইট শার্ট ছিলো এখন টি-শার্ট!

স্নেহা : যাই হোক সব গুলো তো সেইম রাখলেন কিন্তু যেটা আমার সাথে ম্যাচ হয়েছিলো ওটাই চেঞ্জ করে ফেললেন!

রাহুল : রাগছো কেনো?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : রাগবো কেনো! এ..এমনিই বলছি!

রাহুল : তাহলে মানছো যে তখন ইচ্ছে করেই আমার সাথে ব্লু ম্যাচিং করে পড়েছিলে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– তবে তাতে আপনার কি?..আপনার তো আমার সাথে ম্যাচিং করে পড়ার কোনো ইন্ট্রেষ্ট নেই!

[ রাহুল হেসে কিছু বলতে যাবে তখনি স্নেহার ফোনটা বেজে উঠে,স্নেহা ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে তার মা ফোন দিয়েছে, রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কে?. ]

স্নেহা : মা!

রাহুল : ওহ! [ বলেই আবার ড্রাইভ করতে ব্যস্ত ]

স্নেহা : রার..রাহুল একটু গাড়ী থামান!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] কেনো?..

স্নেহা : এক্সুলি! আ…

[ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা রাহুলের সামনে হয়তো তার মায়ের সাথে কথা বলতে চাইছে না ]

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে! রিলেক্স! আই আন্ডারষ্ট্যান্ড! [ বলেই রাহুল একপাশ করে গাড়ী থামালো, স্নেহা দরজা খুলে গাড়ী থেকে নামতেই যাচ্ছিলো তখনি, ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]
তুমি ভেতরে বসো আমিই নামছি! কথা শেষ হলে নক দিও! [ বলেই রাহুল গাড়ী থেকে নেমে দরজা বন্ধ করে দিলো ]

কিছুক্ষণ নিস্থব্ধ হয়ে বসে রইলো স্নেহা! কেনো যেনো রাহুলের এতো কেয়ার,এতো ভালোবাসার মাঝে তার ভালোবাসাকে খুবই ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে আজ! কখনো ভাবেনি স্নেহা তার জীবনে এমন একজন ভালোবাসার মানুষ আসবে! যে তাকে চোখের আড়াল হতে দিবে না, ভাবতেই চোখে জল জমে আসছে স্নেহার! সাথে ব্লাশিং ও হচ্ছে!
চোখ মুছে ডায়াল লিষ্টে গিয়ে তার মা কে আবার কল ব্যাক করলো!

মা : হ্যালো!

স্নেহা : হ্যা! মা বলো.! সব ঠিকাছে তো?..এতো রাতে ফোন দিলে যে!

মা : সব ঠিকটাক! এবং সব ঠিক হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ! এখন আর কোনো টেনশন নেই! সব ধীরেধীরে শোধ করতে পারবো স্নেহা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিন্তু মা এসব কিভাবে হলো ?…

মা : ব্যাস! কাউকে পাঠিয়েছে আল্লাহ! ফেরেশতা বানিয়ে!

স্নেহা : মানে?..

মা : [ একটু হেসে ] মানে সব কাল এসেই বলবো!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে ] কাল এসে মানে?..তোমরা কাল শহরে আসছো?..

মা : হ্যা! তোর মামার বাসায় আসছি!আর শোন এখন থেকে সব ধ্যান পড়ার মধ্যেই দিবি! ডান্স ক্লাস নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না!

স্নেহা : মা! তুমি জানো না কতো বড় সারপ্রাইজ দিয়েছো!

মা : তোর জন্য তো আরেকটা সারপ্রাইজ আছে!

স্নেহা : তাইই?.. কি সারপ্রাইজ?

মা : কাল দুপুরবেলাই পৌছাবো আমরা,তখন তুই মামার বাড়ীতেই এসে দেখেনিস সারপ্রাইজটা!

স্নেহা : আরে মা! আমি এমন সারপ্রাইজ পছন্দ করি না তুমি তো জানো…আমার রাতে ঘুম হবে না সো্ বলে দাও কিহ সারপ্রাইজ!

মা : এখন বললে লজ্জায় তোর আরো ঘুম হবে না আমি জানি! তাই কালই দেখিস!

স্নেহা : উফফ! আচ্ছা বাদ দাও, বাই দ্যা ওয়ে আমার ও তোমাদের কিছু বলার ছিলো…

– কাল আসলে তখন বলবো!

মা : আচ্ছা!

স্নেহা : বাবা কেমন আছে…?

মা : ভালো আছে…তোর জন্যই চিন্তা সারাক্ষণ!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আর রাশু!

মা : সে তো মহাখুশি! কাল আপুর সাথে দেখা হবে!

স্নেহা : তাই?.. আচ্ছা মা শোনো আমি না এখন রাখছি তোমার সাথে পড়ে কথা বলবো!

মা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ স্নেহা ফোন কেটে বেগে ঢুকিয়ে ড্রাইভিং সি্টে এগিয়ে গিয়ে বসে জানালার গ্লাসটা নামালো ]

স্নেহা : হ্যালোও! [ রাহুল এগিয়ে এসে দরজা খুললো ]

স্নেহা : উমম! ভাবছি ড্রাইভ আমি করি!

রাহুল : [ একটু হেসে ] তাই?..তাহলে বোধ হয় তোমার সপ্নটা আজ সত্যি হতে চলছে! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ টিপ মাড়লো! ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! তোমার এক্সপেরিয়েন্স থাকা উচিৎ আসলে! সব মেয়েদেরই উচিৎ ড্রাইভিং জানা! তুমি চাইলে আমার কোলে বসে ড্রাইভ শিখতে পারো আগে! আমি মাইন্ড করবো না!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে হেসে ] থেংক্স বাট নো নিড! [ বলেই স্নেহা তার সি্টে চলে গেলো, রাহুল ও হেসে উঠে বসে গাড়ী স্টার্ট দিলো, কিছুদূর যাওয়ার পরেই ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আরে ওদিকে কই যাচ্ছেন! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না ]

স্নেহা : রাহুল! কিছু বলছেন না কেনো?..

রাহুল : ভরসা আছে আমার উপর?…

স্নেহা : হ্যা! আছে…

রাহুল : তাহলে অস্থির হচ্ছো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না সি্টে হেলান দিয়েই বসে থাকে, কিছুক্ষণ পর দেখে গাড়ী রাহুলদের বাড়ীর গেইটের ভেতরই ঢুকছে, স্নেহা উঠে বসে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে ] কাম!

স্নেহা : রাহুল…আপনি এইখানে হঠাৎ…

রাহুল : এতো প্রশ্ন করো কেনো বলোতো?..ওহ ইয়াহ! আমি তো ভুলেই গেলাম তুমি ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্ট![ রাহুলের কথা শুনে স্নেহা একটু হেসে উঠে ]

রাহুল : [ হাত জোড় করে ] ক্রিপিয়া করুণ স্নেহা মেম! যদি আপনার হাতে কিছু সময় থাকে তাহলে আমার প্রতি দয়া করে একটু ভেতরে আসবেন?…

-প্লিইইইজ!

[ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দিয়ে গাড়ী থেকে বেড়িয়ে আসে, রাহুল স্নেহাকে নিয়ে তার গেষ্ট হাউজের ভেতরই ঢুকলো, দরজা খুললেই ]

স্নেহা : এতো অন্ধকার কেনো?..

রাহুল : আমার হাত ধরো,

স্নেহা : কিন্তু রাহুল লাইট জালালেই তো হয়! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না তাতে স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুল রাগছে তাই স্নেহা হেসে রাহুলের হাতটা জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : তোমরা মেয়েরা এমনই! বিশেষ করে ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্টরা, স্যার এই সূত্রটা না ঐ সূত্রটা ছিলো মনে হয়,কিছুক্ষণ চিন্তা করবে তারপর ধীরেধীরে লাইনে আসবে ওহ নো স্যার সরি স্যার এক্সুলি এটাই ছিলো!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি আমার সাবজেক্ট এর পেছনে কেনো লেগে আছেন বলেন তো?

রাহুল : এক্সেম্পল দিলাম!
[ বলেই স্নেহাকে হাত ধরে নিয়ে বেডরুমে ঢুকিয়ে লাইট জালালো, হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো, খাটের উপর কয়েকটা গিফট বক্স পড়ে আছে, রাহুল এগিয়ে গিয়ে সব চেয়ে বড় যেটি সেটি হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : টেক ইট! [ স্নেহা অবাক হয়ে হাতে নিলো ] ওপেন করো! [ স্নেহা ধীরেধীরে ওপেন করে দেখে একটি সাদা ড্রেস! ]

স্নেহা : এটা?…

রাহুল : এটা তুমি এখন পড়বা!

স্নেহা : কিক…কিন্তু কেনো?…

রাহুল : বিকজ আমার ও [ বলেই রাহুল হাত দিয়ে তার জ্যাকেটের কলার ধরে নাড়ালো,] ইন্ট্রেষ্ট আছে! [ স্নেহা অবাক হলো রাহুলের কান্ডে তাও হাসলো ]

স্নেহা : এসবের কি দরকার ছিলো..ব্লুতে ও তো আমরা ম্যাচিং ছিলাম!

রাহুল : আমার দরকার আছে! সো্ আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ এটা পড়ে নাও!

স্নেহা : রাহুল! ড্রেসটা দেখেই মনে হচ্ছে অনেক ভারী হবে!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আচ্ছা?..দেখি [ বলেই রাহুল প্যাকেট থেকে ড্রেসটা বের করে হাতে ধরলো ] আরে হ্যা! তাই তো অনেক ভারী! নিচের পার্ট এটা, কি যেনো বলে এটাকে উমমম!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ঘাগড়া!

রাহুল : ইয়া..ইয়াহ! ঘাগড়া ক্যারেক্ট! বাট নিচের পার্টটাই এতো ভারী আর পুরোটা পড়লে তোমার শরীর বলছে তুমি এদিকেই কাত হয়ে যাবে…[ বলেই হেসে উঠে রাহুল স্নেহা চোখ রাংগিয়ে তাকিয়ে রইলো, রাহুলের দিক ]

রাহুল : ওকে ওকে আম সরি! আম সরি!

– এক্সুলি অনলাইনে এটাই ভালো লেগেছে তাই এটাই অর্ডার করেছি আমি আসলে বুঝতে পারিনি!
– আর তুমি তো দেখেই বুঝে গেছো ব্রিলিয়ান্ট

– আচ্ছা এমন ভারী ড্রেস মেয়েরা কেড়ি করবে কেমনি বলোতো? যারা ড্রেস গুলো বানিয়েছে তাদের এগুলো দিয়ে কবর দেওয়া উচিৎ! [ স্নেহা হেসে উঠে রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ড্রেসটা খাটে ছুড়ে মেরে ] এনিওয়ে বাদ দাও এসব! অন্য একটা ট্রাই করবো!

স্নেহা : আচ্ছা আপনার ফেভারিট কালার কি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কানের কাছে মাথা এনে ফিসফিসিয়ে ] তোমার স্কিন কালার! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ড্রেসটা খাট থেকে এগিয়ে নিলো ]

রাহুল : Listen!

স্নেহা : শিসসস! [ বলেই হেসে উঠে, রাহুল ও হেসে উঠে ]

স্নেহা প্যাকেট থেকে টপসটা হাতে নিয়ে ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে টপসটা হাতে তুলে ধরে শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো,

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] আবার কি হলো ?..

স্নেহা : রার…রাহুল টপসটা অনেক ছোট আমি এমন টপস কখনো পড়িনি,

রাহুল : [ একটু হেসে ] পড়েছিলে, [ স্নেহার কাছে এসে ] মার্মেড হাউজ!

স্নেহা : হ্যা! কিক..কিন্তু এটা ওটার চেয়েও ছোট!

রাহুল : আসলে কি জানো তখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলেনা,তাই ওটা একটু বড় ছিলো, আর এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড তাই এটা একটু ছোট [ বলেই চোখ টিপ মেরে স্নেহার কাছে মুখ এনে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে, স্নেহা ও লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! এতো ভাবছো কেনো?…শুধু আমিই তো দেখবো…[ বলতেই স্নেহা শকড হয়ে তাকায় ]

– রিলেক্স স্নেহা, ওড়না মুড়িয়ে আসবা দ্যাটস ইট! [ বলেই স্নেহার চুলের খোপাটা খুলে দিলো, স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায় ]

কিছুক্ষণ পরই দরজা খোলার টুকটাক আওয়াজে রাহুল ফিরে তাকালো,স্নেহা বেড়িয়ে আসলো গায়ের ওড়নাটা কতোক্ষণ এদিক টানছে তো কতোক্ষণ ওদিক, কয়েক মিনিটের জন্য রাহুল নিস্থব্ধ হয়ে হারিয়েই গেছে,ধীরেধীরে রাহুল পা এগিয়ে স্নেহার কাছে আসতে লাগলো আর তা দেখে স্নেহার হার্টবিট বেড়েই চলছে….এদিকওদিক তাকাতে লাগলো স্নেহা,একহাত ঘাড়ে রেখে আরেক হাতে পেট ঢেকে রাখলো….রাহুল তার কাছে আসতেই

স্নেহা : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] ওড়নাটা অনেক পাতলা এর চেয়ে ঘঘ…ঘনো তো মশারি ও থাকে…

রাহুল : বাট এটাই তোমাকে অনেক সেক্সি লাগছে! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে চেঁচিয়ে ] হোয়াট!

রাহুল : আব…আমি কিছু বলেছি?.[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে ] এনিওয়ে এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড বলতেই পারি! [ স্নেহার কানের দিক মুখ এনে ] রিয়েলি ইউ লুকিং সো্ সেক্সি এন্ড হট! ইন দিস্ ড্রেস্ [ স্নেহা তার কোমোড় থেকে রাহুলের হাত ছুটিয়ে সরে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : আব…দেদ…দেখা শেষ…আমি চেঞ্জ করে আসি…[ বলেই স্নেহা মোড় ফিরে চলে যাচ্ছিলো বাট রাহুল হুট করেই স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে নেই ]

রাহুল : আমি বলেছি?.. চেঞ্জ করতে! [ বলেই স্নেহার পিঠে স্লাইড করে হাত রেখে চুল গুলো একপাশ করে রাখলো,ধীরেধীরে স্নেহার কাধে হাত রেখে স্নেহাকে পেছন ফেরালো, বুকটা ধুপধুপ করছে স্নেহার হঠাৎ খেয়াল করলো তার গলায় রাহুল কিছু পড়িয়ে দিচ্ছে তাকিয়ে দেখে একটি হোয়াইট স্টোনের নেকলেস ]

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! এসব….

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আঙুল দিয়ে ] শিসসস!….[ বলেই স্নেহাকে নেকলেসটি পড়িয়ে দিলো, ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার কানের দিক স্লাইড করে চুল গুলো গুজে দিলো, স্নেহা চোখ বন্ধ করে শিউরে উঠলো, রাহুল স্নেহার দু-কানেই ইয়ার রিং পড়িয়ে দিলো, স্নেহার হাতে স্লাইড করে তার দিক ফিরিয়ে নীল চুড়ি গুলো খুলে নিলো… ধীরেধীরে হোয়াইট স্টোনের কিছু চুড়ি পড়িয়ে দিলো,স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…]

রাহুল : [ স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] ব্যাস! এইদিনটার অপেক্ষা ছিলো…তোমাকে নিজের হাতে সাজাবো…. [ বলতেই স্নেহা রাহুলের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে ]

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ব্যাস ব্যাস স্নেহা তোমার চোখ বন্ধ করো,লেইট হচ্ছে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] চোখ বন্ধ করবো?..কিন্তু কেনো…?

রাহুল : ওহো! [ বলেই স্নেহার চোখে হাত দিয়ে চেপে ধরে, ড্রইং রুমের দিক এগিয়ে নিয়ে যায় ]

স্নেহা : রাহুল কোথায় নিচ্ছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ব্যাস আমি যতোক্ষণ বলবো না ততোক্ষণ চোখ খুলবানা প্রমিস করো!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আচ্ছা! [ রাহুল স্নেহা থেকে সরে দাঁড়িয়ে লাইট জালাতে এগিয়ে গেলো হঠাৎ আবার স্নেহার দিক তাকাতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, অন্ধকারে স্নেহাকে এমন ঝলমলে দেখাচ্ছে যেনো লাগছে রাতের কালো আকাশে চাঁদের আলো ভেসে আছে, ব্লাশিং হয়ে মাথা চুলকে লাইটের সুইচটা অন করলো রাহুল! বিকট এক শব্দ কানে ভেসে আসলো স্নেহার! চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো…সামনের দিক তাকাতেই দেখে সবদিক অন্ধকার শুধু কিছু হলুদ রঙের বাতি জলে উঠলো এবং তা দিয়ে বড় করে লিখা আছে ” HAPPY ” মাথার উপর থেকে কিছু ঝড়ে পড়ছে, তাই উপরের দিক তাকালো এবং দেখতে পাই গোলাপের পাপড়ি হঠাৎ আবারো সেই বিকট শব্দ, স্নেহা চমকে উঠে কানে হাত দিয়ে চেপে আবার সামনে তাকাতেই দেখে আরো কিছু বাতি জলে উঠলো, যেখানে লিখা আছে ” BIRTHDAY ” আবারো সেই শব্দ কানে ভেসে এলো চমকে উঠে চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! ধীরেধীরে কোমোড়ে কারো স্পর্শ পেতে স্নেহা চোখ খুলে তাকালো, সামনে তাকিয়ে যে লিখাটা দেখতে পেলো একই সাথে সেই শব্দগুলো ও কানের ধারে কেউ বলে উঠলো, ” HAPPY BIRTHDAY SNEHA” চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলো না স্নেহা! গড়গড় করেই ঝড়ে যাচ্ছে, রাহুলের দিক চোখ তুলে তাকাতেই সে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো,

রাহুল : আজ একদম কাঁদবা না বুঝেছো! আজকের দিনটা খুবই স্পেশাল! [ রাহুলে পকেটে হাত দিয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ] কারণ আজকের দিনে পৃথিবীতে একটা এঞ্জেল এর জন্ম হয়েছিলো! যে এঞ্জেলটা এখন আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, যে এঞ্জেলটাকে অন্ধকারে ও ঝলমলে দেখাচ্ছে… ওয়াহ স্নেহা আমার মাথা তো পুরাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তোমাকে যতো দেখছি! [ স্নেহা চোখ মুচছে আর হাসছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে দু-হাত মেলে দিলো,বুকে আসতে ইশারা করলো স্নেহাকে!…স্নেহা ও একটু হেসে দৌড়ে এসে রাহুলের বুকে ঝাপটে পড়লো, রাহুল ও হেসে টাইট করে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে ]

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ওয়েট আরেকটা সারপ্রাইজ বাকি আছে, [ বলেই পকেট থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিয়ে টিভিটা অন করলো, সাথে সাথেই জারিফা আর মার্জান একসাথে বলে উঠে, হ্যাপি বার্থডে স্নেহাআআআ, স্নেহা অবাক হয়ে খুশিতে মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখে ]

জারিফা : আরে ওয়াহ মাশাল্লা স্নেহা! কিনা লাগছে তোকে!

মার্জান : ইয়া আল্লাহ! বদমুখের নজর থেকে দূরেই রাখো আমার স্নেহাকে

জারিফা : [ মার্জানকে চিমটিয়ে ] এইই আমি মাশাল্লা বলেছি ওকে?..হুহ!

– বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! ওড়নাটা সরানা ফুল ড্রেস দেখি!

[ স্নেহা অবাক হয়ে একবার আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে সাথে সাথে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা ]

মার্জান : [ জারিফাকে ধাক্ষিয়ে ফিসফিসিয়ে ] পাগল হয়েছিস দেখছিস না রাহুল আছে!

জারিফা : [ জিহ্বায় কামড় খেয়ে একটু হেসে ] ডোন্ট ওয়ারি! জিজু ডোন্ট মাইন্ড আমরা কিন্তু সব দেখতে চাইনি জাষ্ট কাপড় দেখতে…[ বলতেই মার্জান জোড়ে একটি চিমটি দিলো ]

জারিফা : আআআহ! [ রাহুল হেসে উঠে ]

জারিফা : ওকে ওকে! হেই স্নেহা দেখ! আমি তোর জন্য কি বানিয়েছি! চকলেট কেক হুম!

মার্জান : ওই! তুই বানিয়েছিস?…

জারিফা : আচ্ছা ও হ্যা! মানে ঐও হালকা একটু হেল্প করেছে… বাট বেশি ক্রেডিট কিন্তু আমারই!

মার্জান : ব্যাস! জারিফা ব্যাস! এখন ভিডিও কলে আছি তাই কিছু বলছি না…

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! দুজনে মিলেই বানিয়েছি! স্নেহা তুই ঐ দিকে কাট আমাদের জিজুর সাথে আর আমরা এইদিকে কাটছি ওকে! [ স্নেহা জলভরা চোখে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : স্টপ ইট! স্নেহা! [ বলেই চোখ মুচে ছুরিটা হাতে ধরিয়ে দিলো ]

মার্জান : কামঅন স্নেহা! এসব কান্নাকাটি বন্ধ কর তাড়াতাড়ি কেক কাট! [ স্নেহা চোখ মুছে কেক কেটে আগে রাহুলকে খাওয়াতে চাইলে রাহুল স্নেহা থেকে কেড়ে নিয়ে আগে স্নেহাকেই খাওয়ালো ]

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! এখন আমরা নিজের হাতে নিজেই খাচ্ছি বাসায় আসলে তুকে খাইয়ে দিবো [ বলেই কেক কেটে মুখে ঢুকিয়ে নিলো ] ওয়াহ কি টেষ্ট!

মার্জান : [ হেসে ] খা! নাদানের বাচ্চা!

– আচ্ছা গাইস্! আমরা এখন রাখছি আমাদের কাজ শেষ! টাটা

জারিফা : বাইইই! স্নেহা…ওহহো! জিজাজি এতো ব্লাশিং হচ্ছেন কেনো…বলেন তো ?[ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

রাহুল : Shut-up [ জারিফা আর মার্জান দু-জনেই হেসে উঠে ]

মার্জান : ওকে ওকে! গুড নাইট [ বলেই কেটে দিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে ওরা বলেছে আজ আমার বার্থডে?…

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] নো! ঐদিন ভার্সেটিতে তোমার ফর্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো..ওটা Solve করার সময় হঠাৎ তোমার বার্থ ডেট খেয়াল করি! ব্যাস…

স্নেহা : [ রাহুলের মাথা টেনে তার কপালে লাগিয়ে ] সো্ মিষ্টার রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : আমার বার্থডে স্পেশাল আরেকটা গিফট চাই?…

রাহুল : ইয়েস্?..

স্নেহা : আপনি এখন! গিটার বাজিয়ে একটা গান করবেন!

রাহুল : [ একটু হেসে ] রিয়েলি?..এটাই?..

স্নেহা : হ্যা এটাই!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ওয়াল থেকে গিটারটা ছুটিয়ে নিয়ে স্নেহার কাছে এসে পাশে বসলো হঠাৎ স্নেহা রাহুলের কপালের দিক নেমে যাওয়া চুল গুলো হাত দিয়ে সোজা করে দিলো, রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কিহ?..]

স্নেহা : কিছু না [ বলেই গিটার বাজাতে ইশারা করলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে বাজাতে লাগলো আর স্নেহা মন দিয়ে শুনতে লাগলো ]

রাহুল : ? ??

” পে্হলি নাযা্র মে কেসা্ জাদু কারদিয়া, তে্রা বান্ বে্ইটা হে্ মে্রা জি্য়া,
জানে্ কি্য়া হোগা্ কিয়া্ হোগা্ কি্য়া পাতা্
ইস্ পাল্ কো মি্লকে আ জি্ লে যা্রা
মে্ হু ইয়া্হা তু হে্ ইয়া্হা
মেরি বা্~হো্মে আ আভি্যা্
ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জা্হা মে্রি বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

বেবি্ আ লাভ্ ইউ
বেবি্ আ লাভ্ ইউ সো্ মোর্
ওহ্ বেবি্ আ লাভ্ ইউ….

[ গিটার টা হাত থেকে পাশে রেখে রাহুল স্নেহার হাত টেনে দাড় করিয়ে ঘুড়িয়ে এক হাত স্নেহার কোমোড়ে আরেক হাতে স্নেহার হাত মুঠি বেধে ধরলো ]

রাহুল : মে আই?…[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা নাড়ালো রাহুল ও একটু হেসে স্নেহাকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে নাচাতে লাগলো ]

রাহুল : ♪♪ হার্ দুয়া্ মে্ শামিল্ তে্রা পি্য়ার হে ♪♪
বিন্ তে্রে লামহা্ বি্ দুশ্ওয়া্র হে্ ধাডখো্নো কো্ তুঝসে্ হি দারকা্র হে!

” তুঝ্সে্ হি্ রাহা্তে হে্ ”
” তুঝ্সে্ হি্ চাহা্তে হে্ ”

তু জো্ মিলি্ একদিন্ মুঝে্ মে্ কাহি্ হো্ গায়া্ লাপা্তা~~

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

[ রাহুল হেসে হেসেই গানটা গাইতে লাগলো আর স্নেহাকে নাচাতে লাগলো,রাহুলের কান্ডে স্নেহা ও হাসতে লাগলো হঠাৎ টেবিলের ধারে আসতেই স্নেহা কেক থেকে কিছু ক্রিম নিয়ে রাহুলের গালে লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ শকড হয়ে ] আচ্ছা?.. [ স্নেহা মুখ চেপে একটু হেসে রাহুলের আরেক গালে ও লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : তবে আমি কিন্তু শুরু করিনি তুমিই করেছো! [ বলেই রাহুল কেক থেকে অনেক গুলো ক্রিমই তার হাতে উঠিয়ে স্নেহাকে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো তাতে স্নেহা ও পিছিয়ে নয় সে ও দৌড়াতে লাগলো হঠাৎ পেছন ফিরে তাকাতেই Unfortunately রাহুল স্নেহাকে নিয়ে লিভিং সোফায় ঝাপিয়ে পড়ে, আর স্নেহা ও Unbalance থাকায় ভয়ে চেঁচিয়ে উঠে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা কিছু করিওনি মাত্র শুলাম এতেই এতো বড় চিৎকার!

স্নেহা : ছিঃ রাহুল! [ বলেই উঠে দাঁড়াতে চাইলো কিন্তু ব্যর্থ, হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুল স্নেহার ওড়না সরিয়ে ক্রিম গুলো স্লাইড করে পেটে লাগিয়ে দিচ্ছে, কেপে উঠছে স্নেহা! রাহুলের জ্যাকেট খিঁচে ধরলো শক্ত করে, রাহুলের হাত ধীরেধীরে উপরের দিকই উঠছে তা খেয়াল করে স্নেহা লজ্জা পেয়ে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, দু-কদম পা বাড়াতেই স্নেহা থেমে গেলো,কেউ ওড়নাটা ধরে ফেলেছে, পেছন মুড়ে তাকালে দেখে রাহুল তার ওড়না টেনে ধরে তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না স্নেহার ওড়নাটা তার হাতে বটতে লাগলো আর পা স্নেহার দিক বাড়াতে লাগলো, স্নেহা ঢোগ গিলছে আর রাহুলের কাছে আসা দেখে সে পেছাতেই আছে, এক পর্যায়ে স্নেহা পেছাতে গিয়ে দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেলো আর পেছানোর জায়গা নেই বুঝতে পেরে নিচের দিক চোখ নামিয়ে রাখলো স্নেহা! ওড়নাটাও পুরোটা রাহুল তার হাতেই বটে নিলো, পেটের দিক থেকে লাগিয়ে দেওয়া কিছু ক্রিম রাহুল তার আংগুল দিয়ে কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো!.. জোড়ে জোড়ে শাস নিতে লাগলো স্নেহা! যতোবারই রাহুলের ছোয়া শরীরে লাগছে স্নেহার বুকটা কেপে উঠছে…

ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার গলায় চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো চুষে নিলো…কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্নেহা হারিয়েই গেছে এক অদ্ভুত ভালো লাগায়, রাহুল ছুটে আসলে স্নেহা চোখ মেলাতে না পেরে সরে যেতে চাইলো..কিন্তু রাহুল দেওয়ালে হাত রেখে স্নেহাকে আটকিয়ে ফেলে,স্নেহা নিরুপায় চোখে তাকালো রাহুলের দিক!… রাহুল স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে তার গালে লাগিয়ে দেওয়া ক্রিম গুলো ঘষে স্নেহার দু-গালে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো..এবং ধীরেধীরে গালে চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো ও চুষে নিলো…

শরীরের লোম শিউরে উঠছে স্নেহার চোখ বটে নিজের কাপড় নিজেই শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রেখেছে স্নেহা…

রাহলে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার পেট থেকে আঙুল দিয়ে স্লাইড করে আবারো কিছু ক্রিম কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো… ঠোট কাঁপছে স্নেহার রাহুলের হাতের স্পর্শে সাথে বুকটাও ধুপধুপ করে কেপে যাচ্ছে…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুল স্নেহার দিক,চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে স্নেহা…

রাহুল একটু হেসে ধীরেধীরে তার ঠোট দিয়ে স্নেহার ঠোটের ক্রিম গুলো ও চুষে নিতে লাগলো,

নিস্থব্ধ হয়ে গেছে স্নেহা…রাহুল তাকে পাগলের মতো ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে….

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 31

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 31

writer-Jubaida Sobti

রাহুলের বুকে মাথা রেখেই শুয়ে আছে স্নেহা,স্নেহার চুল বিলি করে দিচ্ছে রাহুল…

ঠেরই পেলো না কখন যে চোখটা লেগে এলো….

গাড়ীর হর্ণে ঘুমটা ভেঙে গেছে স্নেহার…. চোখ খুলতেই চোখে সকালের আবছা আলো ভেসে আসছে…হঠাৎ খেয়াল করলো সে রাহুলের বুকের মাঝেই এখনো শুয়ে আছে রাহুল তাকে জড়িয়ে রেখেছে…

চোখ তুলে তাকালো রাহুলের দিক,

রাহুল : গুড মর্নিং [ With tedi smile ]

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে উঠে বসে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে রাস্তাঘাটে মানুষজন ও কাজে বেড়িয়ে পড়েছে ]

রাহুল : না এই শহর দেখো, না এই লোকজনকে দেখো, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

– ব্যাস চোখ খুলো আর তোমার রাহুলকে দেখো [ বলেই চোখ টিপ মারলো, স্নেহা মুচকি হাসে ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মাথা এনে কানে নাক লাগিয়ে স্মেল নিয়ে ] আগুন সূর্যের কাছে আছে,কিন্তু জলতে হয় জমিনকে, সকালের খুশবু আছে তোমার কাছে কিন্তু জলতে হয় আমার এই বেচারা দিলকে,

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে ] সকাল সকাল পাগল হয়ে গিয়েছেন নাকি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন রাতে যেদিন তোমাকে প্রথম স্টেশনে দেখেছি, [ স্নেহার কাছে মাথা এনে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন সকালে যেদিন প্রথম তোমাকে ভার্সেটিতে দেখেছি, [ চোখ মেরে ] আর তুমি এই পাগলের পাগলী বুঝলে,

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে হেসে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : ” হেসো না এতো যেনো এই সকাল না ঠের পাই ” নাহলে তারিফ করতে থাকবে ও তোমার, আর নজর লেগে যাবে আমার স্নেহার ”

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হয়েছে?…হুম?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কাছে মুখ এনে ] আমার মর্নিং কিস্!

স্নেহা : [ হেসে হাত দিয়ে রাহুলের মুখটা সরিয়ে দিয়ে ] কোনো মর্নিং কিস্ টিস্ না বাই! [ বলেই গাড়ীর দরজাটা খুললো হঠাৎ তখনি ]

রাহুল : “তোমার চুল উড়বে বাতাসে আর জলবে গাছের পাতা ” “কাধ থেকে সরতে দিওনা ওড়না, নাহলে পাগল হবে আমার মতো আরো কতোজনের মাথা ”

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ধুপ করে দরজাটা আবার বন্ধ করে দিলো,রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : Listen! আজকে আর ভার্সেটি আসতে হবে না,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?…

রাহুল : [ ভেংগিয়ে ] হোহ! কেনো? তাই না?..তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছো শুধু! বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো, আর ডান্স ক্লাসে যেতে নিষেধ করলে তো শুনবানা, বলবা নাহ রাহুল এটা আমার জন্য খুব দরকার আপনি বোঝার চেষ্টা করছেন না কেনো! এই সেই আরো কতো কিছু!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] কিন্তু রাহুল! আমি ভার্সেটি ও যেতে পারবো, কারণ রাতে ও তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছি, আমার ঘুমতো দুটোই ভেঙেছে তাই না!

রাহুল : কথা যা বলছি তা শুনো! যাবা না বলছি ব্যাস যাবা না!

স্নেহা : আচ্ছা ওকে!

রাহুল : আর শুনো ডান্স ক্লাসে আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! আপনি সারারাত ও ঘুমাননি!

রাহুল : ঘুম তো তুমি আমার অনেক আগেই হারাম করে দিয়েছো! [ With tedi smile ] ডোণ্ট ওয়ারি আমি ম্যানেজ করে নিবো!

স্নেহা : তাও রাহুল…

রাহুল : আবার?..

স্নেহা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে আবার বেরুতে ছিলো হঠাৎ মনে পড়লো সে তো ওড়না ছাড়া এভাবে হেটে যাবে কি করে ধুপ করে আবার বন্ধ করে দিলো ]

রাহুল : [ একটু হেসে তার জ্যাকেটটা খুলে স্নেহার দিক এগিয়ে দিয়ে ] এটা পড়ে নাও, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ] ইটস্ ওকে স্নেহা! আমি জানি তোমার শীত লাগছে! তাই বেরুতে পারছো না! অন্যকিছু মনে করিনি,

[ স্নেহা বুঝতে পেরে একটু হেসে রাহুল থেকে জ্যাকেটটা এগিয়ে নিয়ে পড়ে নিলো ]

রাহুল : স্নেহা একটু বডিসডি বানাও, জ্যাকেটটা তোমাকে গিলে খেয়েছে!

স্নেহা : হোহ! আমি কেনো বডি বানাবো?.. আপনি নিজেই বডি কমিয়ে আসুন তাহলে আপনার জ্যাকেট পড়লে আমার ফিট হবে,

রাহুল : কামঅন! স্নেহা এই সিক্সপেক বডি বানাতে কতো মেহনত করতে হয় জানো?..

– তুমি তো রেডিমেড পেয়েছো তাই গুরুত্ব দিচ্ছো না, [ স্নেহার কাছে মুখ এনে চোখে চোখ রেখে ] নাহলে কতো মেয়েই লাইন ধরে আছে জানো এই সিক্সপেক বডির জন্য

[ বলেই রাহুল তার শার্টের বাটন খুলতে লাগলো, দুটো খুলতেই ]

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে রাহুলের হাত থামিয়ে দিয়ে ] ওকে ওকে! স্টপ…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] দেখলা তো দুটো বাটন খুলতেই ভয় পেয়ে গেছো… আর যদি সব বাটন খুলি….

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ রাহুল! [ বলেই দরজা খুলে নেমে দৌড়ে গেইটের দিক গিয়ে দাঁড়ালো, রাহুল ও হেসে নেমে দাঁড়ালো ]

রাহুল : বাট স্নেহা! আমার মর্নিং [ বলেই হাত দিয়ে ঠোটের দিক ইশারা করলো ]

স্নেহা : [ হেসে ] বাইই! [ বলেই ভেতরে ঢুকে গেলো ]

[ রাহুলের ও আর কি করার একটা তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে উঠে বেড়িয়ে পড়লো ]

[ স্নেহা বাসায় ঢুকতে গেলে দেখে দরজা বন্ধ,তাই বেল দিলো ]

জারিফা : [ দরজা খুলে হাতে হাত বটে স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] স্নেহা! মেরি জান! আমার জিজুটাকে ও সাথে নিয়ে আসতি বিনা ব্রেকফাস্টে পাঠিয়ে দিয়েছিস ?…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] তুত…তুই কি করে…

জারিফা : আমি কি করে জানি?..[ হেসে ] ঘুম ভাংগলে দেখি তুই নেই আর মার্জান তো মাইকে এনাউন্স করার জন্য ও রেডি হয়ে গিয়েছিলো, তাই না মার্জান? [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

স্নেহা : [ হেসে জারিফার মাথায় বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি জারিফা তুই ও না,[ বলেই ভেতরে ঢুকে পড়ে ]

জারিফা : [ পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে ] আসলে তুকে বাসায় না দেখে প্রথমে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তারপর টেবিলে তোর সেলফোনটা দেখতে পাই, আর লাষ্ট কলটা দেখি আমাদের জিজুর [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে থাকে ]

স্নেহা : লাষ্ট কল দেখেই শিয়র হয়ে গিয়েছিস আমি ওর সাথে? এমন তো না ও হতে পারতো!

মার্জান : আরে বারান্দা থেকে রাহুলের এতো বড় খাটারা টা দেখা যাচ্ছিলো না ওটা দেখে আরো ডেমন শিয়র হয়েছিলাম!

স্নেহা : খাটারা না এটা গাড়ী!

জারিফা : [ হেসে ] ওহো গায়ে লাগলো স্নেহার! [ চেঁচিয়ে ] এই মার্জান তুই রাহুলের গাড়ীকে খাটারা বললি কেনো?… গাড়ী বল গাড়ী… [ বলতেই মার্জান জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]

স্নেহা : তোরা ও না [ বলেই লজ্জা পেয়ে খাটে বসে কম্বলটা গায়ে টেনে নিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা মাই ডিয়ার! রাহুলের জ্যাকেটটা তুকে অনেক স্যুট করেছে, কি বলিস জারিফা?..

জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে গান করে করে ] ” শা্রমানা মাথ্ সা্জান নে পেহনায়া জ্যাকেট আব্ তো্ উথা্রনা নেহি হে ইসে্ সি্নে মে লাগাকে রাখনা হে বাস্ …..

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] Shut-up জারিফা!

জারিফা : আচ্ছা! সারাদিনে তো রোমান্স করা যায়…কিন্তু অর্ধেক রাতে উঠে তোরা কি রোমান্স করতে গিয়েছিলি বলতো?…হুম? হুম?

মার্জান : আহা, ছাড় জারিফা আমাদের কি আর বলবে কি কি করেছে….

স্নেহা : তেমন কিছুই না যেমনটা তোরা ভাবছিস!

জারিফা : আচ্ছা তাহলে তুইই বলেদে কেমনটা হয়েছে!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে মুখের উপর কম্বল দিয়ে শুয়ে পড়ে ]

মার্জান : আরে স্নেহা! ভার্সেটি যাবিনা?..

স্নেহা : [ মাথা থেকে কম্বল তুলে ] নাহ!

জারিফা : আচ্ছা সারারাত তো ঘুমোইনি রোমান্সে কাটিয়েছে,বেচারিকে ঘুমাতে দে!

মার্জান : ওহ হ্যা! আমিতো ভুলেই গেছি!

[ বলেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই হাসতে থাকে ]

স্নেহা : হয়েছে?..এখন না খিলখিলিয়ে রেডি হয়েনে!

[ বলেই স্নেহা আবার মুখের উপর কম্বল দিয়ে দেই, চোখ বন্ধ করতেই স্নেহার রাতে রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে পড়ছে, ব্লাশিং হতে হতে ঘুমিয়ে পড়লো স্নেহা ]

মার্জান আর জারিফা বেড়িয়ে পড়েছে ভার্সেটি যাওয়ার উদ্দেশ্যে, রাস্তার একপাশ দাঁড়িয়েছে বাসে্র জন্য! হঠাৎ শা– করে একটা কালো গাড়ী এসে তাদের সামনেই থামলো,

জারিফা আর মার্জান অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে, ধীরেধীরে গ্লাস নামালে দেখে আসিফ,

জারিফা : আরে! আপনি?…

আসিফ : ভার্সেটি যাচ্ছো?…

জারিফা : হ্যা!

আসিফ : আমি ও ভার্সেটিতেই যাচ্ছি,

– সো্ চলো.. সে্ইম রাস্তায় যখন যাচ্ছি একসাথেই যায়!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] Listen! আমাদের না আপনার হেল্প এর কোনো প্রয়োজন নেই! আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি আমার সামনে থেকে দাফা হয়ে যান বলেদিলাম!

জারিফা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] আরে মার্জান এভাবে বলছিস কেনো অনি কি মনে করবে?…

মার্জান : সো্ হোয়াট?..

[ আসিফ কিছু বললো না হেসেই তাকিয়ে রইলো মার্জানের দিক ]

জারিফা : এক্সুলি ও আজ সকালে নাশতা করেনি তো তাই মাথা একটু বিগ্রে আছে!

আসিফ : তাই নাকি?…যে কোনো একটা আইটেম হলে ও খেয়ে আসা উচিৎ ছিলো… যেমন হাতি তো আর ঘাস খেয়ে বেচে থাকতে পারে না…ঠিক..তেমনি…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] স্টপ! কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি হ্যা! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] এই আমাকে কি দেখতে হাতির মতো লাগে?..

জারিফা : [ একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে মার্জানের বডির দিক তাকিয়ে ] কইই নাতো… দেখেতো ছাগলের বাচ্চাই মনে হচ্ছে, [ বলতেই আসিফ কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] কিহ?..ছাগলের বাচ্চা?..

জারিফা : নাহ.. আই মিন…আমি ও এনিমেল দিয়ে এক্সেম্পল দিলাম আরকি! আচ্ছা চল রাগ করিস না [ বলেই গাড়ীর দিক টেনে উঠাতে চাইলে ]

মার্জান : আরে! পাগল নাকি?.. আমি বাসে্ই যাবো ওনার গাড়ীতে উঠবো না!

আসিফ : আসলে জারিফা কি জানো?…ও ভয় পাচ্ছে গাড়ীতে উঠতে…আই মিন যেমন ধরো এখন যদি কোনো হাতি আমার গাড়ীতে উঠে তাহলে তো গাড়ী এখানেই দুমড়ে-মুচড়ে যাবে তাই না?…

[ মার্জান রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

জারিফা : [ মুখ লুকিয়ে হেসে ] দেখেন আপনি কিন্তু আমার ফ্রেন্ডকে ইন্সাল্ট করছেন…ও মোটেও হাতির মতো না…সেটা আপনাকে প্রুফ করে দেখাবে!

আসিফ : তাই?.. তাহলে দেখাও…

জারিফা : [ মার্জানের কানে ] দেখা মার্জান…নাহলে প্রাউড করে যা বলেছি সব ধুলোই মিশে যাবে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! আমার কেনো ওকে প্রুফ দেখাতে হবে?…এসব ওর বাহানা আমি বুঝি সব ওকে? হুহ!

আসিফ : দেখলা? ও জানে এমনটাই হবে! তাই এখন বাহানা বলে উড়িয়ে দিচ্ছে!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] নাহহহ! এ হতে পারেনা… আপনাকে ও এক্ষুণি প্রুফ করে দেখাবে…আর ইউ রেডি মার্জান?…

[ মার্জান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জারিফার দিক ]

জারিফা : [ একটু হেসে ] যা…মেরি জান! নাহলে সত্যিই তোকে হাতি ভেবে বসে থাকবে!

[ মার্জান কিছু না বলে নাক ফুলিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টের দরজা খুলে উঠে বসলো, আসিফ ইশারা করতেই জারিফা ও দরজা লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে উঠে বসলো ]

মার্জান : [ হেসে ] লুক! দেখলি তো আমি বললাম না এসব ওর বাহানা, আর তুকে তো আমি পড়ে দেখে নেবো! [ বলেই দরজা খুলার চেষ্টা করে কিন্তু দরজাটা ওপেনই হচ্ছে না, রাগান্বিত চোখে আসিফের দিক তাকালে আসিফ লুকিং গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে হেসে গাড়ী টান দেই ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আপনি অটো লক দিলেন কেনো?…

আসিফ : জারিফা!

জারিফা : হুম?…

আসিফ : বলছি যে এমন মেয়েকে বউ বানাবো যে অল্প খাবার খায়, কারণ বেশি খেলে তো আবার হাতির মতো লাগবে তাই না!

জারিফা : হ্যা হ্যা! ঠিক…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফা!

জারিফা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! বল…

মার্জান : কিছুক্ষণ চুপ থাকবি?…

জারিফা : ওকে…ওকে!

আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা জারিফা! তুমি মিনিমাম একবসায় কইটা ডিশ খেতে পারবে?…

জারিফা : ডিশ ইউ মিন আইটেম?…

আসিফ : ইয়াপ!

জারিফা : ফুলফিল হলে…তিনটা ফুল কমপ্লিট করতে পারবো!

আসিফ : ওয়াহ! মেয়েতো নয় যেনো ফুলের পাতা,

[ মার্জান নাক ফুলিয়ে আসিফের দিক একবার তাকিয়ে আবার জানালা দিয়ে তাকিয়ে ফেলে ]

আসিফ : জানো জারিফা! ঐদিন ক্যান্টিনে আমার পাশে একটা মেয়ে বসেছিলো খেতে… একসাথে দশ-বিশটা আইটেম অর্ডার করে খেয়েছে! কি মেয়েরে বাবা!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] দশ-বিশটা?..অহ মাই গড কোন খাদকের বাচ্চা এটা!

[ আসিফ হেসে উঠে ]

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আমি সব গুলো থেকে একটু একটু করে খেয়েছি ফুলফিল খায়নি! ওকে?

জারিফা : তুই ছিলি এটা?…

মার্জান : আব…না হ্যা! [ চেঁচিয়ে ] মানে হ্যা! [ বলেই জানালার পাশ ফিরে যায় ]

[ জারিফা কিটকিটিয়ে হেসে উঠে, সাথে আসিফ ও ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফাআআ!

জারিফা : ওকে ওকে! ওকে…আমি চুপ!
________________________________

দুপুর ১২ টা বেজে ১০ মিনিট, ফোন বাজছে স্নেহার!

স্নেহা : [ ঘুম কন্ঠে ] হ্যালো!

রাহুল : ওয়াও! হোয়াট এ ভয়েস্!

স্নেহা : মানে?…

রাহুল : ওয়েক আপ! মাই এঞ্জেল!

স্নেহা : [ একটু হেসে কম্বল আরো মুড়িয়ে নিয়ে ] আপনি…গুড মর্নিং!

রাহুল : [ একটু হেসে ] মর্নিং অনেক আগেই শেষ!

[ স্নেহা উঠে বসে ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ১২টা বাজতে চলছে, ]

স্নেহা : সরি! আমি… আসলে…

রাহুল : আচ্ছা বলো ঘুম কেমন হয়েছে?…

স্নেহা : ভালো! আপনি ঘুমিয়েছেন?…

রাহুল : আমি রাত ছাড়া ঘুমাতে পারিনা,

স্নেহা : রাতে ও বা কই ঘুমিয়েছিলেন?…

রাহুল : আচ্ছা ছাড়ো এসব,রেডি হয়ে নিচে আসো আমি গাড়ীতে আছি!

স্নেহা : আপনি নিচেই?…

রাহুল : হুম! কেনো ভুলে গেছো কি বলেছি?…

স্নেহা : হুম! মনে আছে…

রাহুল : হুম!

স্নেহা ফোন কেটে টেবিলে রেখে ওয়াসরুমে যাওয়ার জন্যই উঠলো হঠাৎ আবার বারান্দা দিয়ে উকি দিয়ে দেখে রাহুল হোয়াইট শার্ট, ব্লু-জ্যাকেট, ব্লাক জিন্স, সাথে ব্লাক সানগ্লাস পড়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক তাকাচ্ছে, উপরের দিক একটু তাকিয়ে গাড়ীতে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ স্নেহার দিক চোখ পড়লো, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে লুকে পড়লো, আর রাহুল বুঝতে পেরে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে ঢুকে পড়ে,

কিছুক্ষণ পর রাহুল গেইট এর দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা এগিয়ে আসছে, সাথে রাহুল এটাও খেয়াল করলো স্নেহা একটি ব্লু সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চোখে আজ চশমা পড়েনি,ঘন করে কাজল লাগিয়েছে…হালকা ভেজা ভেজা চুল গুলো ও বিলিয়ে রেখেছে, কপালে সিলভার স্টোনের ছোট্ট একটি টিপ, হাতে সিলভার চুরি,কানে সিলভার ইয়ার রিং!

গাড়ীর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে বসলো স্নেহা,রাহুল হা করেই তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কি হলো?..এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?..

রাহুল : স্নেহা! তোমার কি আমাকে মেরে ফেলার প্লান আছে নাকি?…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! তা কেনো হবে?

রাহুল : আই থিংক উপরওয়ালা তোমাকে বানানোর পড়ে যা খুঁটিনাটি বেচে গিয়েছিলো তা দিয়েই চাঁদকে বানিয়েছে! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায়, ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে, নাইস্ কম্বিনেশন! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে আবার সোজা তাকিয়ে ফেলে ] তাইতো! মিলে গেছে!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : তোমাদের বারান্দায় একটা বেড়াল ঢুকেছে মনে হয় চেক করে নিও,আমাকে উকি দিচ্ছিলো,

[ স্নেহা হেসে লজ্জায় জানালার দিক তাকিয়ে ফেলে ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল এখনো তেডি স্মাইল দিয়ে তার দিক তাকিয়েই আছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুলল!

রাহুল : [ একটু হেসে ] আহহ! মনে হয় খোদা রেখেছে আমার দিল তার নিজের হাতে, নিলো স্নেহা আমার নাম খুব যত্নের সাথে!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সত্যি রাহুল! আপনি তো দেখছি সিংগার থেকে পোয়েট্রিক হয়ে যাচ্ছেন!

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে ] ব্যাস্ এভাবেই হাসতে থেকো চিরজীবন, আমি পোয়েট্রি বলে যাবো আজীবন!

স্নেহা : হুম! এবার যাবেন?..লেইট হচ্ছে!

রাহুল : [ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে ] হলে সমস্যা কি?…

স্নেহা : হোহ! লেইট হলে স্যালারি কেটে নিবে,

রাহুল : [ হুট করে গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তুমি এসব টাকার জন্য করছো রাইট?…

স্নেহা : আব…টা..টাকা? কক..কই নাতো?…

[ আড় চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়েই আছে মাথায় ও কিছু আসছে না স্নেহার কি বলবে! ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আস…আসলে আপনি বডি বানানোর জন্য জিমে যান না?…তো আমি ও ফিগার মেইনটেইনের জন্য এটা করছি! [ বলেই হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]

– [ একটুপর রাহুলের দিক আবার তাকিয়ে ] কি হলো চলেন!

রাহুল : বোকা পেয়েছো আমাকে? তাহলে ওভারটাইম করছো কেনো?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আই থিংক আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ রাহুল!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] ইয়াহ! [ বলেই জোড়ে গাড়ীর Steering ঘুড়িয়ে টান দিলো ]

কিছুক্ষণ পর স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল কিছু বলছে না নিশ্চয় মন খারাপ করে আছে,

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! তোমার টাকার প্রয়োজন এটা আমাকে বললেই পারতে,এতে কি বিগ্রে যেতো?…

স্নেহা : তেমন কিছুই না রাহুল!

– আচ্ছা! আপ..আপনি দেখেছেন…আমি আজ চশমা পড়িনি,

রাহুল : দেখেছি, কাজল পড়েছো…

স্নেহা : মন খারাপ করে বলছেন কেনো?..

[ রাহুল কোনো জবাব দিলো না চুপ করেই রইলো ]

ডান্স ক্লাসে এসে পৌছালো,দুজনেই চুপ করে আছে,

রাহুল : কি হলো এভাবে হয়ে আছো কেনো?…

স্নেহা : কিছু না!

[ বলেই গাড়ী থেকে নেমে দাঁড়ালো, রাহুল ও নেমে বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] সরি!

স্নেহা : কেনো?…

রাহুল : তোমার মন খারাপ করে দিয়েছি তাই! কিন্তু স্নেহা আমি আসলে…

– ওকে ফরগেট ইট! [ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]

রাহুল : হেইই! হোয়াট হ্যাপেন,.. আর আরে কাদছো কেনো?…ওকে ওকে আম সরি! আর চেঁচাবো না…প্লিজ ডোন্ট ক্রাই! [ বলেই যত্ন করে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দেই যাতে কাজল না লেপ্টে যায় ]

চলবে…..

Love At 1St Sight Season 3 Part – 30

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 30

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : বাই দ্যা ওয়ে, রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি লোকটাকে দেখে এমন রিয়েক্ট করলেন কেনো?…

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] আমার জাষ্ট এটা জানার ছিলো ওকে কে পাঠিয়েছে!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল আপনার এমন কেনো মনে হচ্ছিলো যে লোকটাকে কেউ পাঠিয়েছে!

রাহুল : তুমি যখন বেড়িয়েছো ও তখন তোমার পিছু নিচ্ছিলো, আমি গাড়ীতে বসেই দেখেছিলাম, ইনফ্যাক্ট ও ফোনে কারো সাথে কথাও বলছিলো তখন আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিয়র হয়েগিয়েছিলাম যে একে কেউ পাঠিয়েছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] এমন ও তো হতে পারে লোকটা নিজের পার্সোনাল মেটারে কাউকে ফোন দিয়েছে!

রাহুল : তোমার মতো বোকা মেয়েরা এসব ভেবেই বোকামি করে ফেলে!

– আরে ওর কোনো প্লান না থাকলে ওর থেকে আমি যখন জিজ্ঞেস করছিলাম তখন ও পালালো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না চুপ হয়েই রইলো ]

বাড়ী এসে পৌছালো, স্নেহা গাড়ী থেকে নামতেই রাহুল ও বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম! [ বলেই হেসে উঠে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হাসছো কেনো?

[ স্নেহা হেসে হেসে হাত দিয়ে রাহুলের নাকের দিক ইশারা করলো ]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] অহ ইয়াহ! [ বলেই স্নেহার ওড়নার আচল টেনে নিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে দেওয়া Mayonnaise গুলো মুছে নেয় ] এবার হাসো!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বাই গুডনাইট! [ বলেই ওপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]

রাহুল : আই লাভ ইউ!

স্নেহা অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, হঠাৎ কেনো যেন অনেকটা মায়াবী লাগছে আজ রাহুলের চেহেরাটা! স্নেহার ইচ্ছে করছিলো জোড়ে টাইট করে রাহুলকে জড়িয়ে ধরবে…কিন্তু কি করার আশেপাশে কেউ এসে দেখে ফেললে!

রাহুল ও তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,ধীরেধীরে এগিয়ে রাহুলের একদম কাছে এসেই দাঁড়ালো স্নেহা, আশেপাশে একবার তাকিয়ে, পা কিছুটা আলগা করে রাহুলের গালে একটি চুমু খেলো, তা দেখে রাহুলের চেহেরায় হাসি ফুটলো!

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়িয়ে ] বাই!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ] [ চলে গেলো স্নেহা, রাহুল ও হেসে বেড়িয়ে পড়লো ]

[ বাসায় ঢুকে স্নেহা ফ্রেশ হয়ে খাটে বসলো ]

মার্জান : স্নেহা! ডিনার করবিনা?..কখন থেকেই ডাকছি!

স্নেহা : এক্সুলি মার্জান আমার না খিদে নেই তোরা খেয়েনে!

জারিফা : [ স্নেহাকে হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে ] একটা সেন্ডুইচে পেট ভরে উলটে যায় না, ওকে! চল…

– আর এমনিতেও সারাদিনে যে ডান্স ডান্সে পার করিয়ে দিস এতে তো ক্ষিধে আরো বেশি লাগা উচিৎ তাই না!

স্নেহা : [ একটু হেসে জারিফা থেকে হাত ছুটিয়ে আবার খাটে বসে ] সত্যি ক্ষিধে নেই আমার, আর তোরা… ফোর্সড করিসনা প্লিজ…এক কাজ কর খাবার টেবিলে রেখে দে আমার ক্ষিধে লাগলে তখন নিয়ে খেয়ে নিবো!

জারিফা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] ওকেই…[ বলে উঠে চলে যায় ]

স্নেহা হেসে চোখ থেকে চশমাটা খুলে টেবিলে রাখে, কম্বলটা টেনে শুতে যাবে তখনি রাহুলের পড়িয়ে দেওয়া রিংটির দিকে চোখ পড়লো সাথে সাথেই ব্লাশিং হতে লাগলো! আর রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করতে লাগলো,

কিছুক্ষণ পর, পাশ থেকে মোবাইলটা নিয়ে রাহুলকে ফোন দিলো!

রাহুল : ব্যাস! ফোন দিতেই ছিলাম আর তুমি দিয়ে দিলা!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা?..তো কি করছিলেন?…

রাহুল : এইতো তোমাকেই মিস্ করছিলাম!

– উম! তুমি?…

স্নেহা : [ লজ্জায় কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আ…আমি ও!

রাহুল : রিয়েলি? [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ কম্বল গায়েটেনে শুয়ে ] হুম! রিয়েলি!

রাহুল : আচ্ছা শুনো তুমি আমাকে তুমি বলেই বলো! এসব আপনিটাপনি…

স্নেহা : হোহ! আপনাকে তুমি বলবো?

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : ইম্পসিবল রাহুল! আমার জন্য আপনিটাই ঠিক আছে!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : আই কান্ট রাহুল প্লিজ!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওখে! As ur wish!

স্নেহা : [ হেসে ] থেংক্স!

রাহুল : আচ্ছা চলো এইবার ঘুমিয়ে পড়ো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?..

রাহুল : হোহ কেনো?…সকাল থেকে কতোটা এনার্জি লস্ট করেছো ঐ Disgusted ওভারটাইম জবের পিছনে…

স্নেহা : [ হেসে মনে মনে ] আবারো শুরু হলো!

রাহুল : কি বলছি শুনছো?…

স্নেহা : হুম! কিন্তু…

রাহুল : নো এক্সকিউজ!

স্নেহা : বাট রাহুল…

রাহুল : এগেইন?..

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে!

রাহুল : [ হেসে ] বাই গুডনাইট!

স্নেহা : গুডনাইট!

[ কেটে দিলো ফোন, স্নেহা ও হেসে ব্লাশিং হয়ে ফোনটা টেবিলে রাখতেই জারিফা এসে হাজির হয়! ]

জারিফা : ওহো মেরি জান! কি খুশি দেখাচ্ছে…গালটাতো গোলাপের পাপড়ি হয়ে গেছে ব্লাশিং হতে হতে!

– [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] আমার জিজুর সাথে কথা হচ্ছিলো বুঝি?..হুমহুম?…[ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] Shut-up জারিফা! আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দে! [ বলেই কম্বলটা নাকে মুখে টেনে শুয়ে পড়ে, জারিফা স্নেহার কম্বলটা টেনে সরাতে চাইলো কিন্তু স্নেহা হেসে শক্ত করে চেপে ধরে রাখলো ]

জারিফা : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] আচ্ছা যা ছেড়ে দিলাম…বাট স্নেহা অনাথসনাথ কিছু করলে আমাকে আগে বলবি কিন্তু! আই মিন কিছুটা এমন!

– আচ্ছা তুই মার্ডার ফ্লিমটা দেখেছিস ইমরান হাশমির

স্নেহা : [ লাফিয়ে উঠে ] ছিঃ জারিফা…

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] অমনি ছিঃ হয়ে গেলো?…আচ্ছা রাহুলকে ফোন দিচ্ছি ওর থেকে জিজ্ঞেস করি ও দেখেছে কিনা [ বলেই স্নেহার ফোনটা টেবিল থেকে এগিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ জারিফার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ] স্টপ ইট জারিফা!

জারিফা : [ হেসে ] আরে!

মার্জান : কি হচ্ছে?…

জারিফা : ওহ হ্যা! বলছিলাম যে ইমরান হাশমির…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] ইয়াককক!

[ বলতেই জারিফা আর স্নেহা দু-জনেই হেসে উঠে ]

স্নেহা : হয়েছে অনেক যা এবার ঘুমিয়ে পড় আমাকে ও ঘুমাতে দে!

জারিফা : জি! মেম যাহা আপনার আজ্ঞা!

[ স্নেহা হেসে জারিফার মাথায় হালকা একটা বারি দিয়ে শুয়ে পড়ে ]

রাত ২টা বেজে ১০মিনিট! অনেকটাই গভীর ঘুমেই ঘুমিয়ে আছে সবাই!
________________________________

দিনটা শীতকালই চলছে! রাহুল আর স্নেহা দুজনেই গাড়ীতে বসে আছে,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ব্যাস! ব্যাস! রাহুল দাড়ান ঐ যে দেখেন কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি!

রাহুল : বাট স্নেহা! শীতে এভাবে আইসক্রিম খেলে তোমার গলা খারাপ হবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমি আপনার মতো সিংগার না আমার গলা খারাপ হলেও সমস্যা নেই! প্লিজ রাহুল!

[ বাধ্য হয়ে গাড়ী থামালো রাহুল! স্নেহাকে ও তার ইচ্ছামত কুলফি আইসক্রিম খাইয়ে তারপর আবার গাড়ীতে উঠালো, এবং ডান্সক্লাসে এসে পৌছাতেই রাহুল আগে নেমে এসে স্নেহার দিক দরজাটা খুলে দিলো,একটু হেসে নেমে এলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] বাই!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাই!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুল গাড়ীতে উঠে বসলো জানালার গ্লাস নামিয়ে আবারও একটা ফ্লায়িং কিস্ দিলো স্নেহাকে…স্নেহা মুচকি হাসে, একটা তেডি স্মাইল দিয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল! স্নেহা তাকিয়েই রইলো, কিছুটা দূর চলে যাওয়ার পর স্নেহা ও পাশফিরে ভেতরে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ বিকট এক কর্কট আওয়াজ কানে ভেসে আসলো, তাড়াতাড়ি পেছন মুড়ে তাকাতেই দেখে বড় এক ট্রলি গাড়ীর সাথে মুখোমুখি হয়ে রাহুলের গাড়ীটি দুমড়ে মুচড়ে গেছে,

– রাহুল! বলেই চিৎকার করে উঠলো স্নেহা! ]
________________________________

হুট করেই চোখ খুলে ফেলে স্নেহা! উঠে বসলো তাড়াতাড়ি! শরীরে ঘাম দিচ্ছে, জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে! চারদিক নিস্থব্দ হয়ে আছে,ঘড়ির টিকটক টিকটক আওয়াজটায় শুধু কানে বাজছে! তাকিয়ে দেখে ২টা বেজে ৩৫ মিনিট!

মার্জান আর জারিফার দিক তাকিয়ে দেখলো তারা ঘুমিয়েই আছে!

ধীরেধীরে চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে দেখে,বুকটা এখনো ধুপধুপ করে কাপছে! চোখের কোণে জমে থাকা পানিটি গড়িয়ে পড়লো! মনেমনে ভাবতে লাগলো ভাগ্যিস সপ্নই ছিলো!
কিছুক্ষণ এভাবেই চুপ হয়ে বসে রইলো!

কম্বল সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাড়ালো! টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলো! চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ভরপুর,রাস্তার লাল ল্যাম্পপোস্ট গুলোই জলছে,

ডায়াল লিষ্টে রাহুলের নাম্বারটার দিক তাকিয়ে রইলো! আর মনে মনে ভাবছে কল দিবে কি দিবে না! আবার ভাবছে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না!

আর কিছু না ভেবে রুমের ভেতরেই ঢুকে পড়লো! জারিফা আর মার্জানের গায়ের কম্বলটা ঠিক করে দিয়ে দিলো!

ধীরেধীরে আবারো বারান্দায় এগিয়ে গেলো! রাহুলের নাম্বারটা এনে হুট করেই কল দিয়ে দিলো! প্রথম রিং পড়তেই রাহুল রিসি্ভ করে স্নেহা! বলে উঠলো! স্নেহা মুখ চেপে ধরে হতোভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে!

বাতাস এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে স্নেহার! এলো মেলো হয়ে থাকা চুল গুলো ও উড়ছে,ঠান্ডায় গায়ের লোমগুলো ও দাঁড়িয়ে পড়ছে!

রাহুল : স্নেহা!

[ জোড়ে মুখ চেপে ধরে ফুফিয়ে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি কি কাঁদছো?…[ চুপ করেই রইলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] Talk to me sneha! কিছু বলছো না কেনো?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রার…রাহুল [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : আরে?.. কি হয়েছে স্নেহা ?..
– ওকে আমি আসছি! ওয়েট

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে চেঁচিয়ে উঠে ] না.. নাহ রাহুল! আ…আমি ঠিক…ঠিকাছি!

রাহুল : বাট আমার তোমাকে মোটেও ঠিক লাগছে না!

স্নেহা : [ কান্না কন্ট্রোল করে নিয়ে ] আপ…আপনি ঘুমাননি?…

রাহুল : আমারটা ছাড়ো! তুমি এতোরাতে জেগে আছো কেনো?…

স্নেহা : ব্যাস্ ঘুঘ…ঘুম ভেঙে গেছে!

রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে কাদো কন্ঠে ] আপ…আপনাকে মনে পড়ছিলো [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : ওকে রিলেক্স স্নেহা! ডোন্ট ক্রাই,

– এতে কান্নার কি আছে….আমি তো সবসময় তোমার সাথে আছি,

স্নেহা : [ ফুফিয়ে ] হুম!

রাহুল : স্নেহা প্লিজ! ডোন্ট ক্রাই…

[ কেঁদেই চলছে স্নেহা ]

রাহুল : ওকে! আমি আসছি…[ বলতেই ]

স্নেহা : [ আবার চেঁচিয়ে কাদো কন্ঠে ] নাহ প্লিজ রাহুল! ওকে আমি কাঁদছিনা প্লিজ! আসবেন না!

রাহুল : কেঁদে কেঁদেই বলছো আমি কাঁদছি না!

স্নেহা : [ চোখমুখ মুছে রিলেক্স হয়ে ] ওকে! এখন ঠিকাছি! আমি রাখি ঘুম পাচ্ছে আপনি ও ঘুমান!

রাহুল : হুম! [ স্নেহা ফোন কেটে বুকে জড়িয়ে আবারো ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো ]

[ ধীরেধীরে রুমে এগিয়ে এসে খাটে বসলো ]

স্নেহা : [ মনমনে ] হঠাৎ এমন সপ্ন কেনো দেখলাম!

– না নাহ! এসব আজেবাজে ভেবে লাভ নেই কিছুই হবে না রাহুলের,এটা তো সপ্নই ছিলো [ কিছুক্ষণ নিস্থব্দ হয়ে থেকে ]

– তবে দূর্সপ্নই কেনো দেখলাম! [ চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে ] উফফ! স্নেহা…এসব কেনো ভাবছিস হ্যা দূর্সপ্নই তো ছিলো তাতে কি হয়েছে [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক ছুটাছুটি করে হাটতে লাগলো, বেসি্নের দিক এগিয়ে গিয়ে মুখে ঝাপটে পানি দিলো, মুখ মুছে আবার খাটে এসে শুয়ে পড়ে ]

কিছুক্ষণ এপাশ ফিরছে তো কিছুক্ষণ ওপাশ ফিরছে,ঘুম আসছেই না চোখ বন্ধ করতেই রাহুলকে মনে পড়ছে!

হাটু কুড়িয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে, ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলছে, কম্বলটা ঠিক করে টেনে নিয়ে আবার শুয়ে পড়ছে হঠাৎ মোবাইলটা বেজেই উঠলো,

স্নেহা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যালো!

রাহুল : আমায় মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– [ কাদো কন্ঠে ] অনেক!

রাহুল : তাহলে নিচে আসো!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রার..রাহুল আপ..আপনি?..

রাহুল : আই এম ওয়েটিং [ বলেই ফোন কেটে দিলো ]

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে বারান্দায় এগিয়ে যায়, রাহুলকে দেখতেই চেহেরায় খুশির ঝলক ছুটছে সাথে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে, রাহুল ইশারা করলো নিচে নেমে আসতে, স্নেহা মাথা নাড়িয়ে চোখ মুছে তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে নিচে নেমে আসে, গেইট দিয়ে বেরুতেই রাহুল স্নেহার দিক এগিয়ে আসে, হুট করেই স্নেহা রাহুলকে জড়িয়ে ধরে ফেললো, রাহুল ও একটু হেসে জড়িয়ে নিলো ]

রাহুল : এতোটা মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে নিষেধ করেছিলাম না?..না আসতে?…

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে চলে যাচ্ছি [ বলেই স্নেহাকে ছুটিয়ে আনলো,স্নেহা মুখ গোমড়া করে তাকালো ]

রাহুল : বাই!

স্নেহা : [ হেসে চেঁচিয়ে ] রাহুল!

[ বলেই রাহুলের জ্যাকেট ধরে টান দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে বুকের মাঝেই মাথা লুকালো স্নেহা ]

[ রাহুল ও হেসে দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

রাহুল : সব ভালোবাসা কি আজ রাস্তায় দেখিয়ে দিবে নাকি?… [ With tedi smile ]

[ এইবার স্নেহার মাথায় এলো সে তো রাস্তায় দাড়িয়েই রাহুলকে জড়িয়ে ধরে আছে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! কেউ দেখেনি!

– আর সবাই এখন ঘুমের মধ্যেই ব্যস্ত! কার টাইম আছে আমাদের মতো এতোরাতে প্রেম করার [ বলেই স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নেই ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ বলেই আশেপাশে তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : আর তোমাকেই দেখো, আমাকে এতোটাই মিস্ করছিলে যে স্কার্ফ ছাড়ায় বেড়িয়ে এলে! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

[ স্নেহা গলায় হাত দিয়ে তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো স্কার্ফ, ওড়না, শাল কিছুই তো পড়ে এলো না, ছিঃ রাহুলের সাথে চোখ মেলাতেই লজ্জা লাগছে স্নেহার, আড়চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে পাশমোড়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টে ঢুকে বসে পড়লো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি করছেন?…

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি কিছুই করবো না [ বলেই গাড়ীর দরজাটা বন্ধ করে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়েই আছে ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! [ স্নেহা ও একটু মুচকি হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]

[ রাহুল স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, স্নেহা ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাহুলের বুকে মাথা হেলিয়ে দেই! সাথে সাথে রাহুল ও জড়িয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : আপনাকে ফোন দিতেই রিসি্ভ করে ফেলেছেন! আপনি…ঘুমাননি?…আই মিন…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম যে তুমি ফোন দিবা তাই!

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের বুকে বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি রাহুল!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার কপালের একটি চুমু দিয়ে ] ব্যাস! আমি ও তোমাকে মিস্ করছিলাম তাই ঘুম আসছিলো না! জেগে ছিলাম!

– কিন্তু তুমি এভাবে মিস্ করছিলে কেনো বলোতো?.. কেঁদে কেঁদে তো নাক মুখ লাল বানিয়ে ফেলেছো! [ বলতেই স্নেহার চোখে আবার পানি টলমল করছিলো ]

রাহুল : আরে?…আবার কি হলো?..এখন তো পাশেই আছি!

স্নেহা : [ রাহুলের বুকে মাথা রেখে ] ব্যাস! রাহুল একটা স..সপ্ন দেখেছি!

রাহুল : [ হেসে ] তাই?..আচ্ছা কি দেখলা…

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] দেখেছি…একটা বব…বড় গাড়ি… [ কাদো কন্ঠে ] মানে আপ…আপনার এক্সিডেন্ট! [ বলতেই চোখ থেকে গড়গড় করে পানি ছুটতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহার চোখ মুছে দিতে দিতে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো [ হেসে ] এটা তো সপ্নই ছিলো!

– আর রিয়েলিটিতে আমি অনেকবারই এক্সিডেন্ট হয়েছি! কিন্তু গুড লাক আমার [ চোখ মেরে ] কিছু হয়নি!

– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] সো্ ডোন্ট ওয়ারি প্লিজ!

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না চুপ হয়েই রইলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : আম সরি!

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : সকালে আমি যা বলেছি! আসলে!
– স্নেহা আমি এখন বুঝছি এসব হুট করেই….

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে দেই ] সরি! বলার দরকার নেই রাহুল!

– ইনফ্যাক্ট আমিতো খুশিতে আত্নহারা হয়ে গিয়েছিলাম! তখন [ বলতেই চোখে আবার পানি টলমল করছে ]

রাহুল : [ স্নেহার দুনো হাত তার হাতের মুঠোই নিয়ে ] স্নেহা! You know তুমি আমার লাভ এট ফার্ষ্ট সাইট!

– আমি তোমার বেকগ্রাউন্ড,ফ্যামিলি, তোমার স্টেটাস্ এসব কিছুই দেখে তোমার প্রেমে পড়িনি! ইনফ্যাক্ট এসবে আমার কিছু আসে যায় না!

– আমি তোমাকে দেখেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম! [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো ]

– [ একটু হেসে ] স্টেশনে যখন তুমি দৌড়ে আসছিলে,তোমার ভীতু চেহেরাটা… [ চোখ খুলে ] এক্সুলি স্নেহা! ঐদিন…

– তোমাকে আমি ইচ্ছে করেই ধাক্ষা দিয়ে ফেলেছিলাম! [ স্নেহা চোখ বড় করে অবাক হয়ে তাকালো ] কন্ট্রোলই হচ্ছিলো না…আমার ঐ মুহূর্তটা তখন সর্গীয় মনে হয়েছিলো,তোমাকে কাছে না পেলে পাগলই হয়ে যেতাম আমি!

[ স্নেহা হেসে উঠে,রাহুল ও হেসে চোখটা বন্ধ করে নেই ]

রাহুল : স্নেহা তোমাকে ভালোবাসার পর আমার নিজের চেয়ে ও তোমার উপর ট্রাষ্ট বেশি হয়ে গেছে! আমি হয়তো তোমাকে ছেড়ে দূরে যেতে পারি কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো দূরে থাকতে পারবে না!

[ পানি গড়িয়ে পড়ছে স্নেহার চোখ থেকে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার প্রতিটা ফিলিংস্ই আমি ফিল করতে পারি!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : একটা প্রশ্ন করি?…

রাহুল : [ চোখ খুলে ] শিয়র!

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] ব্যাস আমার চোখের দিক তাকাবেন না!

রাহুল : [ একটু অবাক হয়ে ] ওকেই [ বলেই চোখটা আবার বন্ধ করে নিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যদি! কখনো জানেন আমি আপনার কাছ থেকে কিছু লুকিয়েছি…তাহলে আপনি রার..রাগ করবেন?…

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] লুকিও না স্নেহা!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] Compulsion [বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

– আমাকে কিছুটা সময় দেন!

রাহুল : স্নেহা! আমার সাথে খুশি গুলো ঠিকই ভাগ করছো… কিন্তু দুঃখ্য গুলো একাই সইছো….

– স্নেহা! You know হাউ মাচ্ আই লাভ ইউ…

[ বলেই রাহুল চোখ খুললো স্নেহা তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে চোখে পানি টলমল করছে, স্নেহা একটু হেসে রাহুলের মাথা টেনে নিয়ে কপালে একটি চুমু খেলো, ধীরেধীরে রাহুলের দু-চোখে চুমু খেলো নাকের সাথে নাক ঘষে হেসে উঠলো ]

স্নেহা : ইয়েস্ I know হাউ মাচ্ ইউ লাভ মি!

[ রাহুল ও হেসে স্নেহার দু-গালে দাড়ি দিয়ে ঘষে দিলো, স্নেহা শিউরে উঠলো, দু-হাত গালের উপর রেখে স্নেহা রাহুলের খোচা খোচা দাড়িগুলোর উপর হাত বুলাতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি…ডিনার করেছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ] তোমার হাতেই তো করেছি!

স্নেহা : ব্যাস! ঐ দু-কামড় সেন্ডুইচে?..

রাহুল : হুমমম! এমনভাবে বলছো যেনো নিজেও আরো অনেক কিছু খেয়ে তড়িয়ে ফেলেছো!

স্নেহা : হ্যা! কিন্তু তাও আমিতো আপনার চেয়ে বেশিই খেয়েছি তাই না!

রাহুল : সো্ কি করা যায়?… [ with tedi smile ]

[ স্নেহা ঢোগ গিলে রাহুলের মুখ থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! আমি তোমার থেকে কিস্ চাইছি নাকি [ বলেই হেসে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

– আর শোনো তুমি ভার্সেটি থেকে ডান্স ক্লাসে একা যাবা না! আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হুম বলো! [ স্নেহা চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : [ উঠে বসে ] কি হলো বলো?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে সি্টে হেলান দিয়ে বসে,রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক! ধীরেধীরে স্নেহা রাহুলের জ্যাকেট ধরে তার একদম কাছে টেনে নেই, রাহুলের নিশাসগুলো স্নেহার মুখের উপরই পড়ছে! ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : শিসস! [ বলেই চোখটা আলতো করে বন্ধ করে ফেলে,এবং ধীরেধীরে রাহুলের ঘাড়ে স্লাইড করে হাত রেখে মুখটা কাছে টেনে ঠোটে একটি চুমু খেলো! রাহুল আকষ্মিক চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক চোখের কোণ থেকে পানি বেয়ে পড়ছে স্নেহার, কিছুক্ষণ পর ধীরেধীরে রাহুল ও স্নেহার পুরো ঠোট নিজের দখলে নিয়ে নেই! স্নেহা রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে ধরে আছে, হারিয়ে যাচ্ছে স্নেহা রাহুলের ভালোবাসায়…হ্যা এভাবেই হারিয়ে যেতে চাই সে…

রাহুল ছুটে এসে হাত দিয়ে স্নেহার চোখের কোণ বেয়ে পড়া পানি গুলো মুছে দিলো,

ধীরেধীরে স্নেহার গলার দিক থেকে চুলগুলো সরিয়ে নিলো…. স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে…রাহুল স্নেহার গলায় একটি গভীরচুমু খেলো,শক্ত করেই রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে চেপে ধরলো স্নেহা!

রাহুল মাথা তুলে স্নেহার দিক তাকাতেই স্নেহা ও চোখ খুললো….উঠে বসলো স্নেহা….

রাহুলের কাছে মুখ এগিয়ে এনে ধীরেধীরে রাহুলের ঠোট নিজের করে নিলো, রাহুল ও স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে স্নেহাকে আরো কাছে টেনে নেই! আলতো করে রাহুল ও স্নেহার ঠোটের সাধ গ্রহণ করতে লাগলো!

ছুটে আসলো রাহুল,স্নেহার বন্ধ করে রাখা দু-চোখ ভরে চুমু দিলো, কপালে, দু-গালে,

ধীরেধীরে ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে একপাশ এনে রাখলো…খালি পাশে একটি চুমু খেয়ে নাক দিয়ে স্মেল নিতে লাগলো… স্নেহা শিউরে উঠে রাহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফেললো…

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তোমার ভালোবাসা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে! [ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দেই ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 29

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 29

writer-Jubaida Sobti

In Restaurant,
জারিফা আর রিদোয়ান বসে আছে লাঞ্চ অর্ডার করে,

জারিফা : এতোকিছু অর্ডার করার মোটেও প্রয়োজন ছিলো না!

রিদোয়ান : আহা! অর্ডার করেছি যা মন চাই খাবা না খেলে ইগনোর করবা ব্যাস! [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

জারিফা : যা মন চাই খাওয়ার প্রয়োজন নেই ব্যাস আমাকে তাড়াতাড়ি পানি খাওয়ান আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে!

রিদোয়ান : ওয়েটারকে তো বললাম আগে একটা পানি দিতে কই গেলো ইডিয়টটা, আচ্ছা তুমি বসো আমি আসছি, [ বলেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো ]

[ হঠাৎ, কোনো একটা মেয়ে এসে হেইই রিদ বলে জড়িয়ে ধরলো, রিদোয়ান অবাক হয়ে তাড়াতাড়ি জারিফার দিক তাকালো ]

– হ্যালো রিদ! ইউ রিমেম্বার মি?…

রিদোয়ান : ইয়া,ইয়াহ! তারিনা রাইট?..

তারিনা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] হু ইজ শি?…

রিদোয়ান : আব…শি ইজ জারিফা! এন্ড জারিফা শি ইজ তারিনা!

তারিনা : অউউ! সো্ সুইট, হ্যালো!

জারিফা : [ হ্যান্ডশেক করে ] হাই!

তারিনা : নাইস্ টু মিট ইউ গাইস্ নাও বাই, সি্ ইউ লেটার! ইনজয় ইয়র ডে, বাইইইই!

রিদোয়ান : বাই!

[ চলে গেলো তারিনা, ওয়েটার এসে পানি দিয়ে গেলো, জারিফা গ্লাসে পানি ঢেলে নিচ্ছে ]

রিদোয়ান : [ চেয়ারে বসে হালকা একটু হেসে ] আর ইউ জেলাস্?

জারিফা : ওহ! নো শি ইজ এ ফ্রেন্ড! [ বলেই পানি খেতে লাগলো ]

রিদোয়ান : ইয়াহ! শি ইজ এ ফ্রেন্ড! বাই দ্যা ওয়ে! জারিফা You know আমি তোমার সাথে রিলেশনের আগে…

জারিফা : [ পানির গ্লাস টেবিলে রেখে ] ইয়াহ I know আমার সাথে রিলেশনের আগে আপনি আরো রিলেশন করেছিলেন, ভার্সেটির র্যাগিং মাষ্টার ছিলেন,মেয়েদের সাথে টিচ্ করতেন,পার্টিসার্টি, ডান্স, বেয়ার,গার্লস্ উইথ লং ড্রাইভ, Etc Etc

– আব..আই মিন লাইক এ প্লে বয় রাইট?…

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] ইয়াহ! রাইট বাট নো্ এক্সুলি রিলেশন তো শুধু তোমার সাথে করেছি এর আগে করিনি,

– কিন্তু জারিফা! এতোকিছু জেনে ও তুমি আমাকে হ্যা বললে যে?..

জারিফা : [ মুচকি হেসে ] তো আপনার কি মনে হয়?… আমার হ্যা বলাটা উচিৎ হয়নি?…

রিদোয়ান : [ ব্লাশিং হয়ে ] ইয়াহ দ্যাটস্ ইন্টেলিজেন্ট কুয়েশন [ বলতেই জারিফা ও হেসে উঠে ]
________________________________

গাড়ীতে,

আসিফ : [ একটু হেসে ] তুমি যা করেছো তাতে আমি একটু ও অবাক হয়নি! You know বেশিরভাগ মেয়েরায় এই কাজটা করে থাকে… সো্ সিম্পল!

মার্জান : হুহ! I know আপনি আমাকে বাকি মেয়েদের মতোই মনে করবেন! বাট you know what!

– no chance!

আসিফ : এক্সুলি আই হেভ নো ইন্ট্রেষ্ট! [ বলেই হেসে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা আপনি নিজেকে নিজে কি মনে করেন বলেন তো?…আমি কি ক্লাস টু তে পড়ি?..আমাকে আপনি বোকা পেয়েছেন?…

– [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! এতোটাই ইন্ট্রেষ্ট না থাকলে আমার পিছন ঘুর ঘুর করছিলেন কেনো?…আপনি কি ভেবেছেন আপনি আমাকে কেন্টিনে ফলো করে ঢুকেছিলেন সেটা আমি ঠের পাইনি?…পার্কিং এ ও আমাকে ফলো করতে করতে এসে হাজির হয়েছিলেন,

আসিফ : Compulsory ছিলো?…

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..Compulsory ছিলো মানে?… কে করেছে Compulsory ?..

– আরে বলেন কে বলেছে আপনাকে আমাকে ফলো করতে?…

আসিফ : সব কথা বলা যাবে না!

মার্জান : গাড়ী থামান!

আসিফ : বাট হোয়াই?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আই সে্ স্টপ দ্যা কার!

আসিফ : হাইওয়েতে আছি, বললেই কি হুট করে গাড়ী থামানো যায় নাকি?..কিন্তু কি হয়েছে সেটা তো বলো!

মার্জান : [ গাড়ীর দরজা ধরে ] আপনি গাড়ী থামাবেন নাকি আমি লাফ দিবো?…

আসিফ : ওকে ওকে ওয়েট!

[ বলেই আসিফ একপাশ করে গাড়ী থামালো এবং সাথে সাথেই মার্জান গাড়ী থেকে হুটহাট করে বেড়িয়ে এলো ]

আসিফ : হ্যালো কই যাও!

মার্জান : [ জানালা দিয়ে মাথা ঢুকিয়ে ] জাহান্নামে যাচ্ছি! যাবেন?..[ আসিফ হেসে উঠে ] এন্ড You know I have no interest on your help! so get lost! [ বলেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে টেক্সি একটা ঠিক করে চলে যায় ]

আসিফ রাহুলকে ফোন দিলো,

রাহুল : হ্যালো!

আসিফ : ইয়ার কি মেয়েরে বাবা! আমাকে এমন ভাবে ধমক দেই যেনো আমি ওর আগের জন্মের গোলাম ছিলাম,

রাহুল : এগেইন হোয়াট হ্যাপেন?..

আসিফ : ও বুঝতে পেরেছে আমি ওকে ফলো করেছিলাম, আমি বললাম আমার ইন্ট্রেষ্ট ছিলো না এটা করা আমার জন্য compulsory ছিলো,

রাহুল : এটা বলার কি দরকার ছিলো?..

আসিফ : আরে না বলে পারছিলাম না ও আমাকে মনে করছে আমি আমার নিজ ইচ্ছায় ওকে ফলো করছিলাম…

রাহুল : আচ্ছা এখন কই?…

আসিফ : গাড়ী থামিয়ে টেক্সি নিয়ে বেড়িয়ে গেছে!

রাহুল : আরে তুই পাগল নাকি একা যেতে দিলি কেনো?…আমি স্নেহাকে কথা দিয়েছি আসিফ!

আসিফ : আরে গাড়ী থামাচ্ছিলাম না বলে ও বলছে নাহলে লাফ দিবে! তাই আর কি করার!

রাহুল : বাড়ী না পৌছা পর্যন্ত টেক্সি ফলো কর! আর আমি রাখছি পরে কথা হবে এখন Busy আছি,

[ বলেই ফোন কেটে পকেটে ঢুকিয়ে নিলো, কিছুক্ষণ পরেই হসপিটাল এসে পৌছালো, তাড়াহুড়ো করে উপরে উঠতেই দেখে কেবিন থেকে দাদী বেরুচ্ছে ]

রাহুল : [ দাদীর দিক এগিয়ে গিয়ে ] দাদী! কি হয়েছে আব…ডক্টর এসেছে ?…

দাদী : হার্ট এট্যাক করেছে!

রাহুল : টাইমলি মেডিসিন না নিলে তো এমন হবেই! [ বলে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

দাদী : [ বিরক্তি হয়ে ] রাগ দেখানোর সীমা আছে একটা রাহুল!

– কতোবারই বলেছি বাবার সাথে বিজনেসে্ টুকটাক হাত বাটা,

রাহুল : আবার এসব স্টার্ট করোনা দাদী আমি আগেও বলেছি ওনার বিজনেসে্ আমার কোনো ইন্ট্রষ্ট নেই! ওনাকে বলো ওয়ার্ক প্রেশার কমাতে যাকে ইচ্ছে তাকে পার্টনার করে নিতে!

দাদী : পাঁচ-দশটা ছেলে আছে তাই না?.. যে যাকে ইচ্ছে তাকে বিজনেস্ পার্টনার করে নিবে?… [ রাহুলের হাত ধরে ] দেখ রাহুল! এসব সবই তো তোর জন্য…করছে

রাহুল : ফরগেট ইট দাদী! এটা বলো এখন কেমন আছে?…

দাদী : [ নাক ফুলিয়ে ] আমি কি জানি কেমন আছে?..জানার ইচ্ছে থাকলে নিজে গিয়ে দেখ!

রাহুল : [ একটু হেসে দাদীর গাল টেনে ] উফ! দাদী তুমি রাগ করলে না ইচ্ছে করে টাইট করে দুইটা পাপ্পি দি!

দাদী : [ রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে ] ছিঃ বদমাইশ!

[ রাহুল হেটে এগিয়ে গিয়ে কেবিনের দরজা খুলে তাকাতেই দেখে তার বাবা শুয়ে আছে, মাথা ফিরিয়ে তার বাবা ও দরজার দিক তাকাতেই রাহুলকে দেখতে পাই, সাথে সাথেই রাহুল দরজা বন্ধ করে আবার দাদীর দিক এগিয়ে আসে ]

দাদী : [ রাগান্বিত ভাবে ] হয়ে গেছে দেখা তাই না?…

রাহুল : [ হেসে ] ডিসচার্জ কখন দিবে?…

দাদী : তোকে বলার প্রয়োজন নেই!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ডক্টর থেকেই জেনে নিবো!

[ দাদী নাকফুলিয়ে রাহুলকে হাত দিয়ে সরিয়ে কেবিনে ঢুকে গেলো, রাহুল হাসতে থাকে দাদীর কান্ডে হঠাৎ আবার কেবিনের দিক তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেলে , চোখে পানি টলমল করছে…আশেপাশে তাকিয়ে কন্ট্রোল করে নিলো নিজেকে,ডাক্তার থেকে ও জেনে নিলো তার বাবাকে ডিসচার্জ কখন দিবে, নিচে গিয়ে বাইকে উঠে বসলো হঠাৎ আবার স্নেহার কথা মনে পড়তেই মোবাইলটা বের করলো ]
________________________________

In Dance class,
সব ডান্স টিচারদের কনফারেন্স রুমে একত্র করা হলো,

সিনিয়র টিচার : যা বলেছি সব বুঝতে পেরেছো তো! আমি এসব বারবার বলবো না,

– বার বার ব্রেক নেওয়া আমাদের স্টুডেন্টসদের জন্য অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে!

[ হঠাৎ, স্নেহার ফোনটা বেজে উঠলো, সাথে সাথেই সবাই স্নেহার দিক তাকালো, ফোনটা কাটতেই ছিলো স্নেহা, কিন্তু রাহুলের কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসি্ভ করলো ]

স্নেহা : [ ধীরো কন্ঠে ] হ্যালো!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তুমি আমার সাথে বিনা দেখা করেই চলে গেলা! আর এসব কি শুনছি তুমি নাকি ওভারটাইম…

স্নেহা : রার…রাহুল আমি আপনাকে পড়ে কল দিচ্ছি [ বলেই স্নেহা ফোন কেটে দিলো ]

সিনিয়র টিচার : স্নেহা! ইউ আর এ গ্রেট ডান্সার! বাট তোমার ক্ষেত্রেই কিছুদিন ধরে দেখি…তুমি রুলস একদমই…
[ বলতেই স্নেহার ফোনটা আবার বেজে উঠলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি কেটে দিয়ে ] সরি! স্যার!

সিনিয়র টিচার : তুমি অনেকদিন এভসে্ন ছিলা! এই কারণে স্যালারি কাটা যায় তুমি নিশ্চয় জানো?..

স্নেহা : জি স্যার!

সিনিয়র টিচার : আই হোপ নেক্সট থেকে এমন হবেনা, [ বলতেই স্নেহার ফোনটা আবার বেজে উঠে ] ফোনটা সুইচ অফ করলে ভালো হয়!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ফোন বন্ধ করে দিলো
রাহুল আবার ও কল দিলে দেখে স্নেহার ফোন বন্ধ, রেগে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বেড়িয়ে পড়লো হসপিটাল থেকে, বাসায় এসে রুমে ঢুকতেই দেখে ফোনটা বেজে উঠলো ]

রাহুল : জরুরী ছিলো না আমাকে ফোনটা করার,

স্নেহা : আরে রাগছেন কেনো রাহুল! আমি কনফারেন্স রুমে ছিলাম তাই..

রাহুল : ওহ ইয়াহ স্নেহা! আই গেট ইট প্রতিদিনই তোমার কোনো না কোনো বাহানা, ঐ দিন মামা সামনে ছিলো তাই রিসি্ভ করতে পারোনি,আজ কনফারেন্স রুমে ছিলা,কাল অন্য জায়গায় থাকবা, বাট স্নেহা বেরুবার সময় অন্তত আমার সাথে একবার দেখা করে যেতে পারতে,

স্নেহা : রাহুল আপনি রেগে বেড়িয়েছিলেন, আপনাকে কিছু বলবো ঐ সময়টাই আপনি আমাকে দেননি,

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] ওভারটাইম জব করার এতোটাই কি দরকার ছিলো ?…কিছু লাগলে আমাকে বলতে পারতে আমাকে শেয়ার করতে পারতে, ওহ ইয়াহ, কেনো বলবা আমি কে তোমার?…

স্নেহা : রাহুল আপনি এভাবে রাগছেন কেনো?..

রাহুল : স্নেহা! I don’t know তুমি আমার থেকে কি হাইড করছো, [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আমি তোমাকে বুঝতেই পারছি না,

স্নেহা : রাহুল!

[ কেটে দিলো রাহুল ফোন,স্নেহা আবার কল বেক করতে যাবে তখনি রুমে সিনিয়র টিচার এসে হাজির হয়, ফোনটা তাড়াতাড়ি সরিয়ে বেগে ভরে নিলো

এইদিকে,

মাথার চুল মুঠি বেধে ধরে চোখ বটে সোফায় বসে পড়লো রাহুল, কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে আবার উঠে গিয়ে ফ্রিজ থেকে বেয়ারের বোতোলটা এগিয়ে নিলো, বোতোলের দিক তাকাতেই শিপে স্নেহাকে বলা কথাটি মনে পড়লো ]
________________________________

{ রাহুল : i swear স্নেহা আমি Addicted না! বাট, যখনি পেইন লাগে…সজ্য হয় না..তখনি এটাকে পার্টনার করেনি!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত কাছে টেনে জড়িয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে কাধে মাথা রেখে ] এখন তো আর একা নয়! হুম?…

[ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত মুঠি বেধে শক্ত করে তার হাতে ধরে স্নেহার দিক তাকিয়ে মাথা নাড়ালো! ]

স্নেহা : আজ থেকে আর খেতে হবে না!ওকে?…আর যখনি এসব সামনে থাকবে…আপনি আমার কথা মনে করবেন দেখবেন! আপনার খেতে ইচ্ছেই করবে না }
________________________________

ভাবতেই বোতোলটা আবার ফ্রিজের মধ্যে ছুড়ে ধপ করেই ফ্রিজটা বন্ধ করে দিলো, মোবাইলটা আবার বেজে উঠলো স্নেহা মনে করে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে রিসি্ভ করতেই গেলো দেখে ড্রাইভার ফোন করেছে,

রাহুল : হ্যা বল,

ড্রাইভার : রাহুল ভাইয়া গাড়ী সব সার্ভিসিং থেকে এনে রেখেছি!

রাহুল : ওকে ডোর ওপেন আছে চাবি টেবিলে রেখে যা!

[ বলেই ফোনটা সোফায় ছুড়ে মাড়লো, ওয়াসরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে তৈরী হয়ে নিলো, আলমিরা থেকে রেড জ্যাকেটটা নিতেই যাচ্ছিলো হঠাৎ স্নেহাকে পড়তে দেওয়া এশ কালারের জ্যাকেটটার দিক চোখ পড়লো আর কিছু না ভেবে ঐটাই নিয়ে পড়ে নিলো, নিচে গিয়ে টেবিল থেকে সানগ্লাস টা টি-শার্টে ঝুলিয়ে নিলো, ফোন, মানিবেগ, কার কিইস্ পকেটে ভরে বেড়িয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ স্নেহার বলা কথাটি মনে পড়লো ]
________________________________

{ স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] জানেন রাহুল! আমার না অনেক ইচ্ছে ছিলো! এমন…উইদাউট সা্নরুফ গাড়ীতে চড়ার, ইনফেক্ট! ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এমন গাড়ী দেখলে না, হা করে তাকিয়ে থাকতাম }
________________________________

ভেবে উঠতেই আবার টেবিলের দিক এগিয়ে এসে হাতে নেওয়া গাড়ীর চাবির দিক তাকালো Audi Q7 কার কিইস্ দেখেই টেবিলে রেখে দিয়ে BMW I8 কার কিইসটা উঠিয়ে নিলো, একটা তেডি স্মাইল দিয়ে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহার ডান্স ক্লাসে যাওয়ার উদ্দ্যেশে!

বিকেল হয়ে গেলো,গাড়ীতেই বসে আছে রাহুল দু-ঘন্টা ধরে স্নেহাকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্নেহা রিসি্ভই করছে না!
________________________________

In dance class, হঠাৎ একজন সিকিউরিটি এগিয়ে এলো স্নেহার কাছে,

সিকিউরিটি : স্নেহা! মেম আপনার জন্য বারান্দায় কেউ একজন অপেক্ষা করছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা! আসছি, [ বলেই স্নেহা দু-মিনিটের ব্রেক দিয়ে বারান্দায় বেড়িয়ে এলো, হঠাৎ রাহুলকে দেখে চমকে উঠলো স্নেহা ]

স্নেহা : [ রাহুলের কাছে এগিয়ে এসে ] আপনি? এইখানে?…

রাহুল : আমি তোমাকে ফোন করছিলাম!

স্নেহা : [ রাহুলকে টেনে একপাশ দাড় করিয়ে ] সরি রাহুল! ফোন সাইলেন্ট ছিলো! দেখেন প্লিজ আমি জানি আপনি রেগে আছেন কিন্তু রাহুল….

রাহুল : ওকে স্টপ! [ স্নেহা থেমে গেলো ] আই এম সরি!

স্নেহা : সরি?..কিক…কিন্তু কেনো?

রাহুল : তখন তোমার উপর চেঁচিয়ে ছিলাম বলে!

স্নেহা : পাগল নাকি আপনি সরি বলছেন কেনো?..সরি তো আমার আপনাকে…

রাহুল : আমার কথা এখনো শেষ হয়নি!

– স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : আমি তোমাকে মিস্ করছিলাম!

[ স্নেহা অবাক দৃষ্টিতে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,কিছুক্ষণ পর ঠোটের কোণে একটু হাসি ভেসে উঠলো ]

রাহুল : তোমাকে মনে পড়ছিলো বার বার,

[ স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের টি-শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে নিয়ে চোখে লাগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : দু মিনিটের ব্রেক নিয়েছি! যেতে হবে!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : রাতে কথা হবে!

রাহুল : আমি নিচে ওয়েট করছি তুমি! আই মিন শেষ করে আসলে তখন ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! আমার শেষ হতে রাত হবে!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] I know!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] পাগল হয়েছেন আপনি?…আমি বাসে্ই যাবো! আর আপনি এখন বাসায় যান! রেষ্ট করেন…রাতে কথা হবে!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : [ তাড়াহুড়ো করে ] ওকে রাহুল! বাই হুম! তখন আবার ওরা চেঁচাবে এবার যান!

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে ধীরেধীরে পেছনে পা বাড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো আর স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের কথাটি ভাবছে { রাহুল : স্নেহা আমি তোমাকে মিস্ করেছি } মুচকি মুচকি হেসে ক্লাসে চলে এলো স্নেহা ]

রাত হয়ে গেলো, স্নেহা সব শেষ করে বেড়িয়েছে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে, দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার একপাশ বাসে্র অপেক্ষায়! বাস্ আসতেই উঠে পড়লো স্নেহা, খালি একটা সি্টে গিয়ে জানালার পাশেই বসলো, বাস ছেড়ে দিলো কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরই স্নেহা খেয়াল করলো তার পাশের সিটে কেউ এসে বসেছে, তাকিয়ে দেখে অপরিচিত একজন লোক, লোকটার বিহেভিয়ার স্নেহার মোটেও পছন্দ হলো না গায়ের সাথে একদম লেগেই বসেছে, কিছুক্ষণ পায়ের সাথে পা লাগাচ্ছে তো কিছুক্ষণ হাতের সাথে হাত, ইচ্ছে করেই গায়ের মাঝে হেলিয়ে পড়ছে খুব একটা সুবিধা না লাগায় স্নেহা উঠে যেতে চাইলো কিন্তু লোকটি এমনভাবে বসেছে যে উঠে অন্যসিটে যাওয়ার কোনো ওয়ে রাখেনি,ডাক দিয়ে সা্ইড দিতে বললেও লোকটি না শোনার ভান হয়ে থাকে…

হঠাৎ, খেয়াল করলো বাস্ খুব জোড়ে ব্রেক নিয়ে থেমে গেলো, মাথা তুলে তাকাতেই দেখে রাহুল এগিয়ে আসছে…এবং এসেই স্নেহা কিছু জিজ্ঞেস করবে এর আগেই স্নেহার পাশের সিটে বসা লোকটির কলার ধরে দাড় করিয়ে ফেললো রাহুল!

লোকটি : আরে কি করছেন?…

রাহুল : সোজা প্রশ্ন করবো সোজা উত্তর দিবি! বল কে পাঠিয়েছে?… [ বাসে্র সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

লোকটি : আরে কে পাঠিয়েছে মানে?..আপনার মাথা ঠিক আছে?…

রাহুল : [ লোকটিকে টেনে বের করে ] তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু দেখিনি?..অনেক্ষণ ধরেই তুই ওকে ফলো করছিলি! ইনফ্যাক্ট বাস্ অনেকটাই এসেছে কিন্তু তুই একটাই ও উঠিসনি যেই না ও এইবাসে্ উঠলো হুট করেই তুই ও উঠে পড়লি হোয়াই?…

[ লোকটি হিমসিম খেয়ে আর কোনো জবাব না দিয়ে হুট করে রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দৌড়ে বাস্ থেকে নেমে গেলো ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] এই দাড়া…[ বলেই দৌড়াতে ছিলো কিন্তু স্নেহা রাহুলের হাত ধরে ফেলে শক্ত করে ]

স্নেহা : ব্যাস্ রাহুল!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা প্লিজ!

স্নেহা : নাহ! [ বলেই রাহুলের হাত আরো শক্ত করে ধরে রইলো ]

রাহুল : Damn it! [ বলেই স্নেহাকে সহ নিয়ে বাস থেকে নেমে গেলো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : আপ…আপনি?…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] কোথাও যাচ্ছিনা আমি ও উঠছি! [ স্নেহা চমকে উঠে দরজা খুলে উঠে বসলো, রাহুল ও আশেপাশে একবার তাকিয়ে উঠে বসলো গাড়ীতে ]

গাড়ী চলছে, স্নেহা ভয়ে ভয়ে রাহুলের দিক তাকাচ্ছে রাহুল গাড়ীর Steering এমনভাবে ঘুরাচ্ছিলো তা দেখে স্নেহার কলিজাটা বিন্দু পরিমাণ হয়ে যাচ্ছে!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] ব্যাস! একবার জেনেনি কে পাঠিয়েছে ওকে… [ বলেই হাত দিয়ে steering এ জোড়ে বাড়ি মারলো, স্নেহা ভয় পেয়ে উঠলো ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : আপ…আপনি বাব..বাসায় যাননি?…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ভাগ্যিস যায়নি! আর তোমার মাথার এসব ওভারটাইম Disgusted আইডিয়া গুলা না!

– কি বলবো…

[ স্নেহা মাথা নিচু করে চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : ডিনার করেছো?…

স্নেহা : নাহ! আপ…আপনি?…

[ রাহুল হাত বাড়িয়ে স্নেহার সামনের ডেক্সটা ওপেন করে একটা খাবারের প্যাকেট এগিয়ে দিলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : এটাই কি?…

রাহুল : সে্ন্ডুইচ!

স্নেহা : আপনি খেখ…খেয়েছেন?…

রাহুল : খিধে নেই! তুমি কমপ্লিট করো!

– [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] কি হলো কথা কানে যায় না?..বললাম খাবার কমপ্লিট করতে!

[ স্নেহা ধীরেধীরে প্যাকেট খুলে এক কামড় খেয়ে নিলো ]

রাহুল : সরি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] আবার সরি! কেনো?..

রাহুল : তোমার উপর চেঁচালাম বলে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওকে নো্ নিড সরি কিন্তু একটা কথা শুনলে ভালো লাগতো!

রাহুল : কি?…

স্নেহা : আমার সাথে সেন্ডুইচ শেয়ার করতে হবে!

রাহুল : ড্রাইভ করছি!

স্নেহা : তাতে কি হয়েছে আমি খাইয়ে দিবো! [ বলেই রাহুলের মুখের দিক সেন্ডুইচটি এগিয়ে দিলো, রাহুল স্নেহার দিক একটু তাকিয়ে এক কামড় খেয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] সারাদিনে খেয়েছেন?..

রাহুল : [ হেসে ] কার কি যায় আসে ?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] এমনটাও না রাহুল! আমি জানি আপনি রেগে আছেন! কিন্তু রাহুল ওভারটাইম জব করা আমার জন্য খুবই দরকার!

রাহুল : স্নেহা! তোমার যদি কিছু চাই আমাকে বলতে পারো! তুমি এমনটাও মনে করোনা যে আমি কিছু ভাববো এতে নিজেকে ছোট মনে করার প্রশ্নই আসে না!

স্নেহা : হুম [ বলেই একটু হেসে রাহুলের মুখের সামনে আবার সেন্ডুইচটা এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] কথা এভোইড করছো কিন্তু স্নেহা!

স্নেহা : আরে আপনি খাবারের মাঝে এতো কথা বলেন কেনো বলেন তো?..

রাহুল : এটা তোমাকে ফিনিশ করতে দিয়েছি ওকে?

[ বলেই একহাত দিয়ে স্নেহার ঠোটের কোণে লেগে থাকা Mayonnaise গুলো আংগুল দিয়ে মুছে দিলো, স্নেহা তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক, রাহুল ড্রাইভ করছে, কিছুক্ষণ পর রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা এখনো তাকিয়ে আছে তাই রাহুল ও তেডি স্মাইল দিতে লাগলো! স্নেহা ও হেসে রাহুলের মুখের দিক সেন্ডুইচটা আবার এগিয়ে দিলো, রাহুল খেতে গেলেই স্নেহা রাহুলের নাকের সাথে সেন্ডুইচের Mayonnaise লাগিয়ে দিয়ে কিটকট করে হাসতে থাকে ]

রাহুল : This is not fair sneha!

স্নেহা : [ হেসে ] দারুণ লাগছে আপনাকে সত্যি!

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে হুট করেই স্নেহার চুলের ক্লিপটা খুলে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?…

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে গাড়ীর সানরুফটা নামিয়ে দিলো, সাথে সাথেই বাতাস এসে স্নেহার চুল গুলি বিলিয়ে দিচ্ছে, স্নেহা বুঝতে পেরে ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 28

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 28

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ হেসে মার্জানের কাছে এসে ] ইউ আর এ জিনিয়াস্ মার্জান [ বলেই আবার নেহার ফেইস রিয়েকশন মনে করে কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ] ওর চেহেরা কেমন বানিয়ে ছিলো…আই কান্ট এক্সপ্লেইন!

মার্জান : ইয়েস্ ইয়েস্ [ হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে, ওকে তো আমি আরো বাড়িয়ে দিতাম শিক্ষা! এই স্নেহা আমার হাতই ছাড়ছিলো না! [ বলতেই আসিফ, মার্জান, রাহুল তিনজনই আবার হেসে উঠে ]

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে সবাই হাসছে অথচ স্নেহা টেনশন চেহেরা বানিয়ে রেখে মার্জানের দিক চেয়ে আছে,

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] কি হয়েছে?…

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা?.. না কক..কই কিছুনা! [ বলেই ঢোগ গিলে মুখটা আবার গোমড়া করে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] ঐ স্নেহা! তোর চেহেরাটা এভাবে বানিয়ে রেখেছিস কেনো?…আরে আপসে্ট তো ও হবে…সবার সামনে যে সুন্দরীর চেহেরায় কালো চান লেগে গেছে [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে লাগলো হঠাৎ আসিফের দিক চোখ পড়তেই হাসি বন্ধ করে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় আসিফ ও হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] কাম!

স্নেহা : কোক…কোথায়?…

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহার হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান ব্যাগটা কাধে ঠিক করে নিয়ে আসিফের দিক তাকালো আসিফ তাকাতেই মুখটা ভেংগিয়ে চলে যাচ্ছিলো,

আসিফ : [ হেসে উঠে ] বাই দ্যা ওয়ে!মানতে হবে,

[ মার্জান অবাক হয়ে ফিরে তাকালো ]

আসিফ : সাহস আছে তোমার!

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] You know! আমি না! এখনো আমার আসল সাহস দেখায়নি!

আসিফ : [ হেসে ] তাই নাকি?..

মার্জান : [ হালকা একটু মুচকি হেসে ] এই যে আপনি নিজেকে নিজে যে ওভার স্মার্ট মনে করেন না! হাহা…ওটা না প্লিজ আমার সামনে দেখাবেন না…[ নাক ফুলিয়ে ] নাহলে তো দেখলেনই কেমন হাল করি,

আসিফ : আমি কি কিছু ভুল বলে ফেলেছি?..

মার্জান : [ কাধের পাশ থেকে চুলটা ] সরিয়ে দিয়ে ] ক্লাস ফাইভে ক্যারাটিতে পিংক এবং গোল্ডন বেল্ট মিলেছিলো আমার!

– এক চুটকিতে ধুল জমিয়ে দিতে পারবো মিষ্টার!

আসিফ : [ অবাক হয়ে চোখ বড় করে ] ওহ! ওয়াও এক্সিলেন্ট! তো এটাই তোমার ফিগারের রাজ?..

মার্জান : [ তাড়াতাড়ি ওড়না আর ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে নাক ফুলিয়ে ] Listen! চোখ একদিকেই রাখেন বুঝলেন.. বেশি উড়লে না চোখটা টপাক করে গেলে নিয়ে ফেলবো!

আসিফ : আমাদের কি তোমরা দেখিয়ে রাখলে চোখ তো যাবেই [ বলেই হেসে পাশ কেটে চলে যাচ্ছিলো, ]

মার্জান : [ দৌড়ে সামনে এসে পথ আটকিয়ে ] এক্সকিউজ মি! হোয়াট ডো ইউ মিন?…

আসিফ : আহা! আমি আজকের কথা বলছি না! [ মার্জানের কাছে মাথা এগিয়ে নিয়ে ফিসফিসিয়ে ] যখন ড্রাংক ছিলে!

[ বলেই হেসে চলে যায়, আর মার্জান স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ধীরেধীরে পাশ মুড়ে তাকিয়ে দেখে, আসিফ ও পেছন মুড়ে একটা হাসি দিয়ে আবার সোজা তাকিয়ে চলে যাচ্ছে ]

মার্জান : যয…যখন ড্রাংক ছিলাম মানে? [ বিরক্তি হয়ে চেঁচিয়ে ] মানে সে কি বুঝালো? [ নাক ফুলিয়ে ] আর এভাবে হাফ বলে চলে গেলো! আই মিন ওর বুঝিয়ে বলতে হবে না ড্রাংক অবস্থায় কি কি দেখেছে! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] ছিঃ ছিঃ মার্জান কিসব আজেবাজে ভাবছিস! [ বলেই হনহনিয়ে হেটে ক্লাসে চলে গেলো ]
________________________________

এইদিকে, গার্ডেনের কোণায় গাছতলার চৌকাটে বসে আছে রিদোয়ান আর জারিফা,

রিদোয়ান : আমি আজ ভার্সেটিতে কটা বাজে এসেছি জানো?

জারিফা : যতোটাই না আসেন আমার কি?..হাহা আমার জন্য তো আর আসেননি! [ বলেই নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : [ হেসে ] আব…এখন আর রাগ করোনা বলেদিলাম! মানে আমি সরি! তো গতকাল থেকেই বলে যাচ্ছি!

– মাই গড! সকালে লেইটে গুড মর্নিং বলায় এতোবড় শাস্তি, না জানি আমার আরো কতো রকমের শাস্তি অপেক্ষা করছে!

[ রিদোয়ানের কথা শোনে জারিফার হাসি পাচ্ছিলো তাও হাসি কন্ট্রোল করে রাখে ]

রিদোয়ান : চাও তো সবার সামনে এইদিকে কান ধরে উঠবস করতে রাজি তাও এভাবে কথা না বলে থেকো না প্লিজ!

জারিফা : [ কোণা চোখে তাকিয়ে ] আব..আসলে আইডিয়া খারাপ না…

রিদোয়ান : [ মুখ গোমড়া করে হেসে ] হিহি…হ্যা! আস…আসলেই!

জারিফা : সো্…. [ বলেই চোখ দিয়ে ইশারা করলো ]

রিদোয়ান : [ কাদো কন্ঠে ] সস..সত্যি জারিফা?…

জারিফা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রিদোয়ান মুখ গোমড়াকরে ধীরেধীরে উঠে দাঁড়াতে চাইলো হঠাৎ জারিফা আবার হাত টেনে বসিয়ে হেসে গালটা টেনে দেই, রিদোয়ান অবাক হয়ে তাকালো ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের হাতে হাত পেঁচিয়ে কাধে মাথা রেখে ] মজা করছিলাম!

রিদোয়ান : [ হেসে ] হুম হুম! করে নাও মজা আমাকে নিয়ে! সবই তো আমার আগের করুণার শাস্তি! [ আকাশের দিক তাকিয়ে কাদো কন্ঠে ] হে আল্লাহ তুমি বেশী দূরে না সবই তো দেখছো এই বাচ্চা ছেলেটার উপরে হওয়া অবিচার, তুমি এতোটাও নিষ্টুর নও I know!

জারিফা : [ হেসে জোড়ে একটা চিমটি দিয়ে ] চুপ!

[ রিদোয়ান ও ব্লাশিং হয়ে হেসে জারিফার মাথার সাথে মাথা টেকিয়ে রেখে হাতটা আরো শক্ত করে পেঁচিয়ে নেই, জারিফা চোখ বন্ধ করে রাখে ]

রিদোয়ান : তাহলে লাঞ্চ একসাথে করছি?…

জারিফা : উম!হুম!

রিদোয়ান : আবার?..

জারিফা : [ হেসে ] ওকে হুম!
________________________________

হলরুমে, রাহুল আর স্নেহা এক বেঞ্চে বসে আছে,…স্নেহা মুখ গোমড়া করে চুপ হয়ে রয়েছে…রাহুল স্নেহার চুল গুলো একবার কানে গুজে দিচ্ছে…আরেকবার সরিয়ে আনছে,

রাহুল : ব্যাস,স্নেহা! আর কতোক্ষণ এইভাবে সাইলেন্ট মুড নিয়ে বসে থাকবা?..

[ স্নেহা চুপ করেই রইলো ]

রাহুল : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] আমাকে খুলে বলোতো কি নিয়ে এতো ভেবে যাচ্ছো?…

স্নেহা : কিছুনা রাহুল! ব্যাস…এটাই ভাবছি…

রাহুল : বলো?…

স্নেহা : আসলে রাহুল নেহার সাথে আজ যা হয়েছে তা মোটেও ভালো হয়নি!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] তুমি এতোক্ষণ ধরে এসব ভাবছিলে?…Unbelievable স্নেহা এটা কোনো মানে হয়?…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল সবার সামনে এইভাবে…

রাহুল : সবার সামনে ওর সাথে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে! আর তুমি ভুলে গেছো ও তোমার সাথে কি কি করেছে?…

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] সেটাই তো ভাবছি… [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! ও যদি… মার..মার্জানকে কিছু করে?…

রাহুল : [ স্নেহার হাত তার হাতের উপর নিয়ে ] ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! ও মার্জানকে কিছুই করতে পারবে না!

স্নেহা : তাও রাহুল! আমার খুব ভয় করছে!

রাহুল : [ স্নেহার কপালটা টেনে তার কপালের সাথে লাগিয়ে ] আমি বলছি তো!
– ও কিছুই করতে পারবে না! রিলেক্স থাকো…ওকে?…

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : স্মাইল করো!

[ স্নেহা চোখ নামিয়ে একটু হাসলো,রাহুল ও তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

রাহুল : এনিওয়ে স্নেহা! একটা কথা বলার ছিলো!

[ স্নেহা কৌতুহলি হয়ে তাকালো..]

রাহুল : [ স্নেহার দুহাত তার হাতের মুঠোই ধরে ] গতকাল তোমাকে ড্রপ করে মায়ের কাছে গিয়েছিলাম!

– আর আমাদের কথা বলেছি! এন্ড মা আমাদের বিয়ের কথা বললো!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরে ]

রাহুল : স্নেহা আমি সারারাত ভেবেছি ইনফ্যাক্ট! আজ সকালে দাদী ও আমাদের বিয়ের কথায় বলছে!

– স্নেহা?…

স্নেহা : হুম?…

রাহুল : তুমি খুশী তো? হুম?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রাহুল উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে ও টেনে দাড় করায় স্নেহার দু-হাত মুঠি বেধে ধরে তার একদম কাছে টেনে নেই! ]

রাহুল : সো্ মিস্ স্নেহা! উইল ইউ মেরি মি?… [ With tedi smile ]

[ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা?…

– উইল ইউ মেরি মি?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] রাহুল! আই কান্ট এক্সপেক্ট দিস্ বাট, আপনার মনে হচ্ছে না খুব..একটা তাড়াতাড়ি হচ্ছে?…

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আমার কথা এতোটাও কমপ্লিকেটেড ছিলো না স্নেহা! সোজা প্রশ্ন করছি সোজা আন্সার দাও!

স্নেহা : [ রাহুল থেকে তার হাত ছুটিয়ে রাহুলের জ্যাকেটটা ঠিক করে দিয়ে কাছে টেনে নেয় ] রাহুল! আই এম নট সেয়িং নো!, বাট আই এম সেয়িং….. আপনি যে ডিসিশনটা নিয়েছেন…

– আ..আই থিং ইউ আর হায়ার ইমোশোন…

রাহুল : ওকে ! স্নেহা..আই গেট ইট!

– স্নেহা যখন আমি রিলেশনে পড়ার জন্য তৈরী, আমাদের রিলেশন আগে বাড়ানোর জন্য তৈরী…বাট ইউ আর বেকিং অফ হোয়াই?…

স্নেহা : রাহুল! প্লিজ আপনি ভুল বুঝছেন…

রাহুল : নো স্নেহা! আই থিংক আমিই ভুল বলে ফেলেছি!

স্নেহা : Listen to me রাহুল!

রাহুল : [ তার জ্যাকেট থেকে স্নেহার হাত ছুটিয়ে দিয়ে ] দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই হেটে চলে যেতে যেতে ] ক্লাসে যাও স্নেহা! লেইট হচ্ছে তোমার!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রাহুল! Listen to me প্লিজ!

চলে গেলো রাহুল নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা, চোখে জল এসে জমে যাচ্ছে! কিভাবে বোঝাবে সে রাহুলকে…রাহুল যা বলেছে তা আনএক্সপেক্টেড ছিলো তার কাছে..এতোটাই খুশির খবর ছিলো যে সে বোঝাতে পারবে না তার কেমন লাগছিলো ঐ মুহুর্তটা, রাহুলকে তো সে না বলছে না! রাহুল এমন বিহেভ করছে কেনো? [ কেঁদে কেঁদেই চোখ থেকে পানি ফেলছে স্নেহা ]

আর এইসময় তো স্নেহা তার ফ্যামিলিতে ও বিয়ের কথা বলতে পারবে না, এমন অবস্থা হয়ে আছে ফ্যামিলির,

– মাকে বলবে?..মা তো অলরেডি ডিপ্রেশনে আছে…

– বাবা?.. বাবা তো লোনের টেনশনে আধমরা হয়ে আছে! এই সময় বাবাকে ও সাহস করে গিয়ে বলাটা ইম্পসিবল, এইদিকে ১মাসের মধ্যে এতোটাকা জমা করাটা ও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে! না পারছে রাহুলকে এই ব্যাপারে কিছু বোঝাতে না পারছে ফ্যামিলির জন্য কিছু করতে,

কি করবে এইসময় কিছুই মাথায় আসছে না স্নেহার!

[ চোখ মুছে ধীরেধীরে বেড়িয়ে পড়লো হলরুম থেকে, ক্লাসে যাবে ভাবছে…কিন্তু এখন আর ক্লাসে ও মনটা বসবে না তাই এক্কেবারে ভার্সেটি থেকেই বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা! হেটে হেটে চলছে…আর ভাবছে! ]
________________________________

এইদিকে মার্জান ক্লাসে বসে আছে, স্যার লেকচার দিয়ে যাচ্ছে…কিন্তু তার মাথায় আসিফের বলে যাওয়া কথাটাই ঘুরঘুর করছে…

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে মনে মনে ] একতো মাথার মধ্যে ঐ ইডিয়ট টার কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে তার উপর ইনার বাকওয়াস্ লেকচার উফফ! [ বলেই ব্যাগটা কাধে নিয়ে ধীরেধীরে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে পড়লো, এবং হাটতে হাটতে ক্যান্টিনের দিক এগিয়ে গেলো, না স্নেহাকে দেখতে পাচ্ছে না জারিফাকে…যাক ভেতরে ঢুকে একটু পেট পুজো করলে খারাপ হয়না এই ভেবেই ক্যান্টিনের ভেতরে ঢুকে পড়লো এবং একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো… ]

মার্জান : [ মনে মনে ] ওহো! অর্ডারই তো করলাম না! [ বলেই উঠে এগিয়ে যায় অর্ডার করতে ]

– ভাইয়া একটা সেন্ডুইচ! আর একটা..উমম! হ্যা কোল্ড ড্রিংক্স ওকে!

[ বলেই পাশ মুরে আবার টেবিলে এগিয়ে আসতে গেলে দেখে ঐ টেবিলে আসিফই বসে আছে, নাক ফুলিয়ে এগিয়ে গেলো ]

আসিফ : [ হঠাৎ মার্জানকে দেখে ] হেইই! তুমি?..

মার্জান : ওটা আমার সি্ট ছিলো!

আসিফ : এক্সকিউজ মি!

মার্জান : ও হ্যালো! আপনাকে আগেও বলেছি আমার সামনে আপনার ওভার স্মার্টগিরি দেখাবেন না!

আসিফ : তুমি আমার পিছু নিচ্ছিলে?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] হোয়াট?.. মাথা ঠিকাছে আপনার?.. আমি আপনার পিছু নিবো?..

আসিফ : ওকে! আই আন্ডারস্ট্যান্ড!

মার্জান : Listen! এইখানে আরো অনেক সি্ট আছে আপনি ঐখানে গিয়ে বসতে পারতেন…মানে আপনার আমার মেটারে দখলবাজি করা ছাড়া পেটের ভাত হজম হয়না রাইট?…

আসিফ : আরে এইখানে কি তোমার নাম লিখা ছিলো?..আমি খালি পেয়েছি তাই বসেছি! সো্ হোয়াট?.. তোমার এতোটাই প্রবলেম হলে তুমি নিজেই গিয়ে অন্যসি্টে বসে পড়ো!

মার্জান : [ রেগে ] ইউ! ইডিয়ট

হঠাৎ,

ওয়েটার : মেম! আপনার সেন্ডুইচ! [ বলেই টেবিলে রেখে দিলো, আসিফের দিক তাকিয়ে ] ভাইয়া আপনার জন্য কিছু?..

আসিফ : [ একটু হেসে ] ইয়াহ! ওয়ান কফি!

ওয়েটার : ওকে থেংক ইউ! [ বলেই চলে গেলো ]

[ মার্জান রাগান্বিত ভাবে নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

আসিফ : [ একটু হেসে ] যদি চাও তো আমি তোমার সাথে টেবল শেয়ার করতে পারি! মাইন্ড করবো না আমি! বসতে পারো! নো প্রবলেম..

মার্জান : আপনি আমার সাথে শেয়ার করবেন?..ও হ্যালো এই চেয়ারে আমি আগে এসে বসেছিলাম..আপনি তো উড়ে এসে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে বসলেন! কিন্তু আমি ও এতো সহজে হার মানছি না! ওকে [ একটু হেসে ] আমিই শেয়ার করে দিলাম! আপনাকে..

[ বলেই মুখ ভেংগিয়ে চেয়ার টেনে বসে পড়লো,এবং সেন্ডুইচের প্লেটটি সামনে টেনে নিলো ]

আসিফ : চিজি সেন্ডুইচ খেলে তো এই ফিগার এর ১২টা বাজবে!

মার্জান : হুম! ১২টা না ১৩টা বাজুক…পারলে ১৪টা বাজুক, এবং খেয়ে এতোটাই মোটা হবো যে আমার পাশে লিটল এলিপেন্ট এর ফিগার ও হার মানবে… সো্ হোয়াট?..হুম [ চেঁচিয়ে ] তাতে আপনার প্রবলেম কি?…

আসিফ : এমনিতেই ও এখনো লিটল এলিপেন্ট থেকে কম না!

মার্জান : [ খেতে খেতে ] এক্সকিউজ মি!

আসিফ : না নাহ! ঐ দিন তোমাকে উঠাতে হলো না?..তখন বুঝেছি বাব্বা আমার একমাসের এনার্জি লস্ট হয়ে গিয়েছিলো!

[ মার্জান হাত থেকে সেন্ডুইচটা থপাস করে প্লেটে রেখে দিলো,আসিফ একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

ওয়েটার : স্যার কফি!

আসিফ : ইয়াহ! থেংক ইউ! [ ওয়েটার চলে গেলে ]

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] এক্সুলি না! আপনি এতোটাই লুজার যে আপনার অতোটাই অকাত ছিলো না,

– [ একটু হেসে ] এনার্জি লষ্ট ছাড়া উঠিয়ে রাখতে,

আসিফ : [ এক চুমুক কফি খেয়ে ] তুমি একজেটলি ভুলে গেছো হয়তো ঐদিন আমার এনার্জি কতোটুকু ছিলো! ইনফ্যাক্ট লুজার তো তুমিই হয়েগিয়েছিলে তাই আমার উঠিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিলো [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

[ মার্জান কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

আসিফ : আরে কি হলো খাচ্ছো না কেনো?.. ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো!

মার্জান : [ আড়চোখে তাকিয়ে বিড়বিড় করে ] ইডিয়ট উফফ! কেনো যে ঐদিন ড্রিংক্স করতে গেলাম, নাহলে আজকে ওকে হাড়ে হাড়ে জবাব দিতাম শয়তান একটা,

আসিফ : [ হাত দিয়ে ইশারা করে ] হ্যালো!

মার্জান : [ দাতকিলিয়ে হেসে ] ইয়াহ! খাবো! [ বলেই ওয়েটারকে ইশারা করলো কাছে আসতে ]

ওয়েটার : জি!

মার্জান : আপনাদের কাছে আইস্ক্রিম আছে?..

ওয়েটার : জি! আছে…

মার্জান : আপনি লিখেন আমি বলছি [ ওয়েটার লিখার জন্য কলমটা পকেট থেকে নিয়ে খাতায় ধরলো ] ওকে সো্ যতোটা ফ্লেভারের আইস্ক্রীম আছে সব গুলো থেকে একটা একটা করে নিয়ে আসেন!

ওয়েটার : ওকে!

মার্জান : আচ্ছা শুনেন! আপনাদের কাছে সুপ আছে?..

ওয়েটার : জি! অনলি মাশরুম সুপ!

মার্জান : নো প্রবলেম! ওটাও ডান! বাট এক ফ্লেভারের খেয়ে মন ভরবে নাকি?..

– উমম! আচ্ছা আপনি এক কাজ করেন! ঠান্ডা ঠান্ডা একটা লাচ্চি ও নিয়ে আসবেন, আর কিছুক্ষণ পর তো এমনিতেই লাঞ্চের টাইম হয়ে যাবে আপনি একটা ফ্রাইড রাইস্, এক প্লেট চিকেন, এক প্লেট ক্যাশোনাট সালাদ উমম, ও হ্যা সাথে চিলি চাটনি আর টক দই, আরে হ্যা মিষ্টির মধ্যে তো ভালো কিছু অর্ডারই করা হলো না, আপনি এক কাজ করেন আপনাদের কাছে যতো ফ্লেভারের পেষ্টি আছে সব গুলো থেকে একটা একটা নিয়ে আসবেন ও হ্যা! সাথে কুকিজ থাকলে কুকিজ ও নিয়ে আসবেন!

ওয়েটার : [ একটু ঢোগ গিলে ] ওকে মেম! আর কিছু?…

মার্জান : [ একটু হেসে ] হ্যা! একটা মিনারেল ওয়াটার প্লিজ!

ওয়েটার : ওকে! [ বলেই চলে গেলো ]

[ মার্জান আসিফের দিক তাকাতেই দেখে আসিফ হা করে তাকিয়ে আছে তার দিকে ]

মার্জান : আরে কি হলো?…আপনি কিছু অর্ডার করবেন নাকি?…

আসিফ : [ ঢোগ গিলে ] নাহ! আমার পেট ভরে গেছে!

মার্জান : এক কাপ কফিতেই?…[ কিটকিটিয়ে হেসে ] আরে আমার মতো খেতে শিখুন! বাচবেনই আর কয়দিন?…

[ আসিফ একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো, চুপ করে রইলো দুজন, আসিফ কিছুক্ষণ পর পর মগে চুমুক কেটে কফি খাচ্ছিলো আর মার্জানের দিক তাকাচ্ছিলো, মনে মনে ভাবছে এতোগুলো খাবার ও একা খাবে কি করে…দেখতে তো ফুল ফিট ফিগার, এসব ডেইলি খায়? নাকি আজ খাচ্ছে?..নাজানি মাথায় কি খিচুড়ি পাকিয়েছে ]

[ কিছুক্ষণ পরেই ওয়েটার অর্ডার অনুযায়ী সব খাবারই এনে দিলো ]

মার্জান : [ চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে ] ওয়াহ! কি স্মেল! [ বলেই ফ্রাইড রাইসের প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে দু-তিন চামচ খেয়ে নিলো, [ আসিফের দিক তাকিয়ে ] চিকেনটা খুব স্পাইসি্ মনে হচ্ছে তাই না?..[ বলেই রাইসে্র বাটি রেখে একটা চিকেন এগিয়ে নিয়ে এক কামড় খেলো এবং সাথে সাথেই আআহ বলে চেঁচিয়ে উঠলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি পানির বোতোল খুলে গ্লাসে ঢেলে এগিয়ে দিলো ] আরে কেয়ারফুল গরম-ঠান্ডা দেখে খাও,

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে ] আই এম ওকে! [ একটু হেসে সুপের বাটিটা এগিয়ে নিলো ] You know আই লাভ মাশরুম, [ বলেই নেড়ে এক চামচ ফু দিয়ে ঠান্ডা করে মুখে দিলো ]

[ আসিফ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে ]

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে কেশোনাট সালাদ! [ বলেই প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে এক চামচ মুখে দিলো ] ওয়াহ! কি টেষ্ট এটার যতোই তারিফ করি কম হবে, ওহ হ্যা! আইস্ক্রিম গুলো তো টেষ্টই করা হলো না [ বলেই সব গুলো থেকে এক চামচ এক চামচ কেটে নিয়ে খেয়ে সাধ নিলো ] আসলে আমি পেষ্টি তেমন খায় না…সব ফ্লেভারের পেষ্টি শুধু শুধু অর্ডার করেছি বাট চকলেট ফ্লেভার ওয়াও ওটা কিভাবে বাদ দিবো [ বলেই চকলেট ফ্লেভারের পেষ্টিটা এগিয়ে নিয়ে দু-চামচ কেটে খেলো ] আই লাভ কুকিজ, [ বলেই একটা কুকিজ মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিলো ] আসলে ফ্যাট কমানোর জন্য টক দই খাওয়া খুবই জরুরী, আর খাওয়ার পর টক দই খাওয়ার মজাটাই আলাদা [ বলেই টক দইয়ের প্লেটটা নিয়ে একচামচ খেলো ] আরে! ওনাকে বললাম টক দই দিতে এতো দেখি মিষ্টি দই উফ! [ বলেই বাটিটা পিছে ঠেলে দিলো, একটু হেসে লাচ্ছির গ্লাসটা এগিয়ে নিয়ে হাফ খেয়ে আবার টেবিলে রেখে দিলো, জোড়ে একটা শাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো, আসিফ একটু হাসলো, মার্জান ও একটু হেসে ব্যাগের ভেতর হাত দিয়ে মোবাইলটা বের করে নিলো ] আহা টাইমতো অনেক পেড়িয়ে গেছে,আসলে লাস্ট ক্লাসটা করা আমার জন্য খুব জরুরী! আমি আসি হ্যা! [ বলেই ব্যাগটা কাধে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো ওয়েটার এর দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি ভাইয়া,

ওয়েটার বিল পেইজ টা নিয়ে এগিয়ে আসলো!

[ মার্জান হেসে কাগজটা এগিয়ে নিয়ে আসিফের কফির মগের নিচে চেপে রাখলো আসিফ মার্জানের দিক তাকাতেই মার্জান একটা চোখ টিপ মেরে মুচকি হেসে হাটা শুরু করে,এবং কিছুদূর হেটে গিয়ে আবার মোড় ফিরে তাকালো, তা দেখে আসিফ ও একটা মুচকি হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো,]

মার্জান : [ মনে মনে হেসে ] এভারেস্ট জয় করলেও বোধহয় আমার এমন খুশি লাগতো না যা এই মিষ্টার ওভার স্মার্টকে শিক্ষা দিয়ে লাগছে, [ হাসতে হাসতেই ক্লাসের দিক চলে গেলো ]

ওয়েটার : ভাইয়া! ভার্সেটি কেন্টিনে এই অবস্থা, না জানি রেষ্টুরেন্টে ডেটে নিয়ে গেলে আপনার কি হাল করতো,

আসিফ : [ একটু হেসে পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে টেবিলের উপর টাকা রেখে বিল প্রেমেন করে দিলো ] এক্সুলি এটা রিভেঞ্জ ছিলো! ব্রো,

ওয়েটার : রিভেঞ্জ?..

আসিফ : [ ওয়েটারের কাধে বারি দিয়ে ] বুঝবিনা! [ বলেই একটু হেসে বেড়িয়ে গেলো ]
________________________________

ভার্সেটি ছুটি,

মার্জান : [ স্নেহাকে ফোন দিয়ে ] কোথায় তুই?..রাহুলের সাথে নাকি?..

স্নেহা : আব…না আস..আসলে আমি ডান্স ক্লাসে চলে এসেছি,

মার্জান : হোয়াট?…কিন্তু তুই তো বলেছিস ভার্সেটি ছুটির পর যাবি!

স্নেহা : হ্যা তাই তো করলাম!

মার্জান : ও হ্যা! কিন্তু একটু দেখা করে যেতে পারতি! আচ্ছা বুঝেছি রাহুল পৌছে দিয়েছে বুঝি?..হুম হুম?..

স্নেহা : নাহ! একাই এসেছি,

মার্জান : অহ!

স্নেহা : আচ্ছা আমি এখন রাখি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে!

মার্জান : আচ্ছা ওকে বাই! রাখি [ বলেই ফোন বেগে ঢুকিয়ে হেসে বেড়িয়ে পড়ছে ভার্সেটি থেকে হঠাৎ পার্কিং এর দিক চোখ যেতেই দেখে রাহুল বাইকের উপর একা বসে আছে,]

মার্জান : [ এগিয়ে গিয়ে টিচ্ করে ] হোয়াট হ্যাপেন রাহুল! এতো আপসে্ট কেনো?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] নো! নাথিং! আব…তুমি একা? আই মিন স্নেহা কোথায়?…

মার্জান : কেনো আপনাকে বলে যায়নি?..

রাহুল : বলে যায়নি মানে?..কোথায় গেছে?…

মার্জান : আরে ডান্স ক্লাস গেছে!

রাহুল : কিন্তু ওর ডান্স ক্লাস তো বিকেল ৫টা থেকে তাই না?…

মার্জান : ও হ্যা! আজ থেকে ওভারটাইম করবে ও! তাই…

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] এতোটাই কি দরকার ছিলো যে ওর ওভারটাইম জব করতে হচ্ছে?…

[ মার্জান টেনশনে পড়ে গেলো রাহুলকে কি জবাব দিবে তাই সে এদিকওদিক তাকাতে শুরু করলো ]

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] Damn it! আমাকে একবার বলে যাওয়াটা ও ইম্পরট্যান্ট মনে করলো না! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] এনিওয়ে, তুমি বাসায় যাচ্ছো?..

মার্জান : [ হেসে ] হ্যা! বাসায় যাচ্ছি

রাহুল : জারিফা?..

মার্জান : আর কোথায় হবে?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওহ! আচ্ছা চলো তোমাকে পৌছেদি,

মার্জান : না নাহ! ইটস্ ওকে আমি বাসে্ই যাবো! আর এমনিতেও আমার বাইকে অনেক ভয় করে!

রাহুল : অহ! এক্সুলি গাড়ী সব সার্ভিসিং এ দিয়ে দিছে ড্রাইভার, তাই বাইক আনতে হলো!

পেছন থেকে,

আসিফ : নো প্রবলেম চাইলে আমার গাড়ী থেকে লিফট নিতে পারে!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে পেছন তাকিয়ে ] থেংক্স বাট নো নিড!

রাহুল : ইয়াহ! হি ইজ রাইট! তুমি আসিফের সাথেই যাও ও গাড়ীইই এনেছে বাইক না! [ with tedi smile ]

আসিফ : [ কাছে এগিয়ে এসে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ভয় পাচ্ছো নাকি?..

মার্জান : এক্সকিউজ মি! ভয় কেনো পাবো?…

আসিফ : তাহলে?..

মার্জান : [ মনে মনে ] বোধ হয় ইনার শিক্ষা পাওয়াটা কম হয়ে গেছে ডোজ আরেকটু বাড়াতে হবে! বুঝেছি!

– [ একটু হেসে ] ওকে!

আসিফ : ওকেই!

মার্জান : বাই রাহুল!

রাহুল : বাই!

[ আসিফ গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে দিলে মার্জান নাক ফুলিয়ে হেসে হেসে উঠে বসে, তা দেখে আসিফ ও হাসতে থাকে ]

মার্জান আর আসিফ চলে যাওয়ার পর,

রাহুল : [ ভাবতে লাগলো ] কি হলো এই স্নেহার?…ও আমাকে বলে যেতে পারতো এনিওয়ে না বললে অন্তত একটা ফোনকল করতে পারতো, ঐদিন স্যারের বার্থডে বলেও ডান্স ক্লাস চলে গেছে আর আমাকে একটু ও বললো না আর আজ ও সেইম ওভারটাইম ডান্স ক্লাস, [ মুখটা গোমড়া করে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আই মিস্ ইউ স্নেহা!

[ হঠাৎ একটু হেসে সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে বাইকে উঠে স্টার্ট দিলো স্নেহার ডান্স ক্লাসে যাবে বলে কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পরই ফোনটা বেজে উঠলো, বাইক থামিয়ে ফোনটা রিসি্ভ করলো ]

রাহুল : হ্যা বল?.. [ বলতেই ফোনের ওপাশ থেকে যা শুনলো তা শুনে রাহুল শকড হয়ে গেলো ] হোয়াট?… ওকে ওকে আমি এক্ষুণি আসছি!

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 27

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 27

writer-Jubaida Sobti

After 5 mins,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের স্পর্শ ত্যাগ করে,চোখ খুলে তাকালো স্নেহার দিক….

লালচে হয়ে আছে স্নেহা, বাতাসে কিছু চুল বারবার মুখের সামনে এসে বাড়ি খেয়ে যাচ্ছে, লজ্জায় চোখটা এখনো বন্ধ করে রেখেছে,জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে…

[ রাহুল ধীরেধীরে দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ]

রাহুল : যদি প্রতিদিন রাতের ডিনার এটাই হয়! তাহলে সারাদিনই উপাস থাকতে রাজি আমি!

[ চুপ করে আছে স্নেহা চোখটা এখনো বন্ধ, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে….ক্যান্ডেল লাইটের হলদে আলো স্নেহার গায়ে নিবু নিবু করে ভেসে যাচ্ছে, সব মিলিয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই অপরুপ লাগছে স্নেহাকে ]

রাহুল : এতোটাই ব্লাশিং হইয়ো না স্নেহা! স্ট্রোভেরি ভেবে কখন যে কামড়াতে শুরু করি ঠেরই পাবা না…

[ একটু মুচকি হেসে ধীরেধীরে চোখ খুললো স্নেহা… রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, চোখেচোখ রাখতে না পেরে হুট করেই দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা চুলকাতে লাগলো ]

[ স্নেহা ড্রইং রুমে গিয়ে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুকটা এখনো ধুপধুপ করে স্নেহার,

কিছুক্ষণপর খেয়াল করলো কানের ধারে ফু দিয়ে কেউ চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে…স্নেহা শিউরে উঠে কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুলই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, স্নেহা রাহুলের দিক না তাকিয়ে ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে রাখে ]

রাহুল : আমি খাবার অর্ডার করেছি,কিছুক্ষণ পরই চলে আসবে!

স্নেহা : রাহুল! আমার এখন..যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আর ডিনার?..

স্নেহা : খাবো না! খিখ…খিধে নেই!

রাহুল : কেনো? কিস্ করে পেট ভরে গেছে নাকি ?…[ With tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জায় সরে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] আমি ভেবেছি খালি আমার পেট ভরেছে….

স্নেহা : এ..এমন কিক..কিছুই না…

রাহুল : [ স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] তাহলে কেমন!

স্নেহা : তেত…তেমন কিছুই না যেমন টা আপনি ভাব..ভাবছেন!

রাহুল : অহ! রিয়েলি

[ বলেই স্নেহাকে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাড় করালো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, ]

রাহুল : খিধে নেই তাহলে খিধে কিভাবে মিটেছে স্নেহা?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে হেসে ] হাটেন রাহুল! প্লিজ

[ বলেই রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে টেবিল থেকে ব্যাগটা কাধে তুলে নিলো ]

রাহুল : আরে স্নেহা! ডিনার অর্ডার করেছি খেয়েতো যাও….

স্নেহা : বললাম তো খিধে নেই!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে চেঁচিয়ে ] অহ! ইয়াহ আই গট ইট! খিধে কই গেছে….

[ স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল তার মজা উড়িয়ে হাসছে ]

স্নেহা : বাই! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতে লাগলো ]

রাহুল : আরে একা কই যাচ্ছো?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] একাইতো এসেছি! আর আমি বাচ্চা না এখনো… একা চলতে পারি! সো্ বাইই

[ বলেই স্নেহা দরজাটা ধুম করে লাগিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে আসে আর মুচকি মুচকি হাসতে থাকে…কিছুদূর হেটে যেতেই দেখে রাহুল এসে স্নেহার হাত ধরে টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : আরে! বললাম তো আমি একা যেতে পারি!

রাহুল : ইয়া! i know! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে ইশারা করলো ভেতরে বসতে ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে রাহুল থেকে পাশ কেটে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] কামঅন স্নেহা বাচ্চাদের মতো জেদ করছো কিন্তু!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে পেছন হয়ে হাটতে হাটতে ] কিন্তু আমি গাড়ীতে উঠবো না!

রাহুল : But why?…

স্নেহা : আরে ভুলে গেছেন?..আপনিই তো বলেছিলেন…যদি গাড়ীতে না উঠি তাহলে আপনার কাছে উঠানোর অনেক ওয়ে আছে…সো্ ডু ইট! [ বলেই হেসে সামনে ফিরে ব্যাগটা নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটতে লাগলো ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মনে মনে ] ওহ! এখন বুঝছি!

[ বলেই দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে তার দিক ফেরালো ]

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মুখে বললেই তো হতো কোলে চড়বা! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চলে যাচ্ছিলো রাহুল টেনে নিয়ে হুট করেই কোলে তুলে নিলো, স্নেহা কিছু না বলে তাকিয়ে থেকে ধীরেধীরে রাহুলের কাধের দিক হাত রেখে জড়িয়ে জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে, রাহুল ও কিছু না বলে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীর দিক এগিয়ে এসে স্নেহাকে সিটে্ বসিয়ে দিলো এবং সে গিয়ে ড্রাইভিং সি্টে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো… ]

কিছুদূর আসার পর,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : এইদিকে সামনে রেষ্টুরেন্ট আছে ডিনার করে নাও! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক তাকালে ]

রাহুল : [ হেসে ] ওহো! তোমার তো আবার পেট ভরে গেছে!

– আচ্ছা স্নেহা! তুমি তো বললা না কিভাবে ভরলো?..

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ হাসতে হাসতে ] ওক্কে ওকে! সরি! [ বলেই আবার হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি! হাসছেন কেনো?..

রাহুল : এমনিতেই!

স্নেহা : হোহ! এমনিতে তো পাগলরাই হাসে! আপনি পাগল নাকি?…

রাহুল : পাগল তো তুমি আমাকে করেই দিয়েছো আজ!

[ স্নেহা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি জানালার পাশ ফিরে যায় ]

হঠাৎ, চোখে পড়লো… সামনে সেই বরফওয়ালা কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি! তা দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকালো…স্নেহা ও রাহুলের দিক তাকালো কিন্তু কিছু বললো না!

রাহুল : স্নেহা! সামনে একটা আইসক্রিম পার্লার আছে চলো ওখান থেকে আইসক্রিম খাই!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] বাট রাহুল আমি এটাই খাবো!

রাহুল : [ হেসে ] I knew that!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে হেসে ] থেংক ইউ!

রাহুল : বাট উইন্টারে আমি তোমাকে আইসক্রিম খাইয়ে ভুল করছি!

স্নেহা : আরে উইন্টারে আইসক্রিম খাওয়ার মজাটাই আলাদা!

রাহুল হেসে গাড়ী একপাশ সাইড করে রেখে স্নেহাকে নিয়ে নেমে আইসক্রিম ভ্যান এর সামনে এগিয়ে এলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] ম্যাঙ্গো ফ্লেভার তো তাই না?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রাহুল দু-টো ম্যাঙ্গো ফ্লেভারের আইসক্রিমই অর্ডার করলো এবং আইসক্রিম দিতেই একটা স্নেহাকে এবং একটা সে নিলো,…চেয়ে আছে রাহুল আবারো স্নেহার বরফ চুষে আইসক্রিম খাওয়া…কিছুক্ষণ পর রাহুল ইচ্ছে করেই তার আইসক্রিমটা হাত থেকে ছেড়ে দিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..

রাহুল : আ..আমার কি দোষ পড়ে গেছে!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] আচ্ছা তাই?..কিন্তু আমি শেয়ার করছি না…

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তুমি অতোটাও সেল্ফিস হতে পারো না!

স্নেহা : I know রাহুল! আপনি ইচ্ছে করেই ফেলেছেন!

রাহুল : বুঝতেই যখন পেরেছো তাহলে…

স্নেহা : তাহলে?..

রাহুল : তাহলে এটা আমাকে দাও [ বলেই স্নেহা থেকে আইসক্রিমটা কেড়ে নিয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল! সব আইসক্রিমই তো সেইম টেষ্ট! আপনি আমার মুখেরটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন কেনো?…

রাহুল : হ্যা সব গুলোর সেইম টেষ্ট তাই খাচ্ছি না…আর এটাই তোমার ঠোটের ছোয়ায় স্পাশাল টেষ্ট হয়ে গেছে তাই আমি এটাই খাবো!

– [ চেঁচিয়ে ] মামা ওনাকে আরেকটা আইসক্রিম দেন!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] না.. নাহ আর লাগবে না…

রাহুল : আরে…

স্নেহা : মানে…আ..আমি ও এটা থেকে শেয়ার করে…নিবো [ বলেই ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

[ Rahul give a tedi smile ]

[ রাহুল অল্প একটু খেয়ে আইসক্রিমটা স্নেহাকে দিলো… এবং স্নেহা ও অল্প একটু খেয়ে আবার রাহুলকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলো, দুজনেই এভাবে শেয়ার করে আইসক্রিম টা খেয়ে নিলো, স্নেহা মনে মনে হাসছে রাহুলের কান্ডে…রাহুল আইসক্রিম খাবে তা না…বরং স্নেহার মুখে দেওয়া আইসক্রিমটাই খাবে এটা তার আসল বায়না ]

[ অতঃপর রাহুল স্নেহাকে বাড়ী পৌছে দিয়ে চলে গেলো… ]

[ বাসায় এসে বেল দিতেই জারিফা দরজা খুললো, স্নেহা ভেতরে ঢুকলো ]

জারিফা : [ স্নেহার পিছে পিছে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! মেরি জান…তোর ঠোট লাল কেনো…কি করেছে রাহুল হুম হুম [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : Shut-up জারিফা! আইসক্রিম খেয়েছি তাই লাল হয়েছে!

জারিফা : ওহ! আমিতো ভেবেছি রাহুল করে দিয়েছে…

[ জারিফার কথা শুনে মার্জান ও হাসতে লাগলো, স্নেহা রিলেক্স হয়ে খাটে গিয়ে বসলো ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে ] আচ্ছা স্নেহা তোর ডান্স ক্লাসেরটা কি হলো?..

স্নেহা : ওভারটাইম করবো কাল থেকে!

মার্জান : মানে?..

স্নেহা : [ মার্জানের দিক ফিরে ] স্যালারি ৪ হাজার…আর যদি ওভারটাইম করি তাহলে ৮হাজার!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আর বাসায় কবে আসবি?..

স্নেহা : রাত দশটা সাড়ে দশটা তো হবেই!

মার্জান : আর যাবি কবে?..

স্নেহা : ভার্সেটি থেকে সোজা চলে যাবো!

মার্জান : এমনিতেই তো ধুবলি! এসব ওভারটাইম ডান্স শেখাতে শেখাতে আরো ধুবলি হয়ে যাবি স্নেহা!

জারিফা : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] ইয়ার! মেরি জান…তুই সারাদিন এসবে থাকবি নাকি?…

স্নেহা : বাট জারিফা আমার করতে হবে! বাবার লোনের এখনো ১৫লাখ টাকা বাকি আছে! ১মাসের মধ্যে টাকা জমা না দিতে পারলে বাড়ীটা ও চলে যাবে!

– [ মুখ গোমড়া করে ] আমার তো মাথায় আসছে না কিভাবে ১মাসের মধ্যে এতোটাকা জমা করবো!

মার্জান : ডোন্ট বি সে্ড ডিয়ার [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] কিছু না কিছু হাল তো বেড়িয়ে আসবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমার না তোদের কিছু দেখানোর ছিলো…

মার্জান : [ মাথা তুলে ] কিহ!

[ স্নেহা তার হাত উপর করে ধরে হাতের রিংটি দেখালো ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] রাহুল পড়িয়েছে?..[ স্নেহা মাথা নাড়ালে ] ওয়াও… স্নেহা! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : আরে আমি দেখছিনা তো [ বলেই স্নেহার হাত এগিয়ে নিয়ে দেখে ] নাইস্! স্নেহা তোর হাতে তো দারুণ মানিয়েছে! আচ্ছা শোন আর কি কি করেছিস? [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : ডিনার রান্না করেছিলাম ওর জন্য!

জারিফা : আচ্ছা…তাই? তো বল খেয়ে কি বললো?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] লবণ এর জায়গায় সব চিনিই দিয়ে দিলাম!

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে ] হোয়াট!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাট ও তাও মজা হয়েছে বলে খাচ্ছিলো!

জারিফা : ওহো! খাবে না বুঝি! বিকজ রাহুলের স্নেহা বানিয়েছে বলে কথা! হুম হুম…

[ স্নেহা ব্লাশিং ]

মার্জান : বাট স্নেহা! তুই এতো বড় ভুল কিভাবে করলি! তুই তো রান্না ভালোই পারিস!

স্নেহা : আসলে আমরা তো আনপ্যাকড লবণ কিনে খায়, আর আমাদের লবণ গুলো ও দেখতে প্রায় চিনির মতো, তাই লবণ ভেবে চিনিই ঢেলে দিয়েছি!

[ মার্জান আর জারিফা হাসতে থাকে স্নেহার কথা শুনে ]

মার্জান : [ হেসে হেসে ] স্নেহা! তোর মাথায় রাখা উচিৎ ছিলো রাহুল তো আর আমাদের মতো খোলা লবণ খাবে না… ব্রান্ডেড সল্ট খাবে তাই না…[ বলেই আবার কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

স্নেহা : ব্যাস! এবার তোরা এটা নিয়ে ও মজা শুরু করে দিস না! [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে যেতে চাই ]

জারিফা : [ হাত টেনে আবার বসিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা স্নেহা! খাবার কে তো তুই মার্ডার করে দিলি… সো্ ডিনার করলি কি দিয়ে?…

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে হুট করেই উঠে চলে যায় ]

জারিফা : আরে স্নেহা! কিছুতো বল…[ চেঁচিয়ে ] কোনো অনাথসনাথ কিছু খাওয়াই দিলি নাতো?…

[ স্নেহা ওয়াসরুমে ঢুকতেই ছিলো জারিফার কথা শুনে আবার ব্লাশিং হয়ে হেসে দেই,]
________________________________

পরদিন ভার্সেটিতে, সবাই কথা বলে বলে ঢুকছিলো…হঠাৎ রিদোয়ান সামনে এসে দাঁড়ায়!

রিদোয়ান : হ্যালো গাইস্!

[ মার্জান আর স্নেহা জারিফার দিক তাকালো দেখে সে রিদোয়ানকে দেখে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেছে ]

মার্জান : হ্যা..হ্যালো রিদোয়ান গুড মর্নিং!

রিদোয়ান : [ হেসে ] গুড মর্নিং!

– গুড মর্নিং স্নেহা!

স্নেহা : গুড মর্নিং!

জারিফা : লেটস্ গো গাইস্ আমাদের ক্লাসে লেইট হচ্ছে [ বলেই এগুতে চাইলো ]

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সকালে, ২৫টা কল ৫৬টা মেসেজ করেছি আমি!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা তাই? কই আমিতো দেখিনি ?..

রিদোয়ান : দেখোনি মানে?..জারিফা তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেনো?…

জারিফা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] আপনার সাথে কথা বলাটা জরুরী মনে করছি না তাই! [ বলেই হাত ছুটিয়ে চলে যাচ্ছিলো, রিদোয়ান জারিফাকে টেনে গার্ডেনের দিক নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান : [ হেসে ] এই নটাংকির কান্ড দেখলি?…ভার্সেটি আসার আগে ওর মেসেজ গুলো ব্লাশিং হয়ে হয়ে পড়ছিলো আর এখন ওর সামনে কি না নাটক করছে!

[ স্নেহা ও হেসে দিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে আজ রাহুলকে দেখছি না!

স্নেহা : হয়তো এখনো আসেনি! আচ্ছা চল ক্লাসে [ বলেই হাটা শুরু করলো, ]

মার্জান : চল পার্কিং এ দেখি [ বলেই স্নেহাকে টেনে নিয়ে পার্কিং এর দিক চলে গেলো ]

স্নেহা : আরে মার্জান! আসলে তো মিট করতোই!

মার্জান : [ স্নেহার হাত জড়িয়ে নিয়ে হাটতে হাটতে ] আসলে না আমার আজ ক্লাস করতে মন চাইছে না…তাই হাটছি!

স্নেহা : [ হেসে ] আচ্ছা তো এটাই রিজন!

হঠাৎ দেখে,পার্ক করা একটি গাড়ী থেকে নেহা বেড়িয়ে আসছে! স্নেহা নেহাকে দেখে চোখ সরিয়ে ফেললো তাড়াতাড়ি!

মার্জান : [ দাত কিলিয়ে স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] আহারে! এই পেত্নীটার চেহেরা দেখতে হবে জানলে এইদিকে আসতামই না!

নেহা : [ তাদের সামনে এগিয়ে এসে দাঁড়িয়ে ] হেই স্নেহা! এইখানে কি করছো?..ওউ! ইয়াহ! আই আন্ডারস্ট্যান্ড কাউকে খুজছো বোধ হয়!

মার্জান : যাকেই খুজছে ইটস্ নান অফ ইয়র বিজনেস ওকে?…

নেহা : [ একটু হেসে ] অন্যের কথায় নাক গলাতে তোমাদের বলতে হয়না! [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! অন্যের জিনিষ চুরি করা ও তোমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এম আই রাইট স্নেহা?..

স্নেহা : [ মার্জানকে টেনে ] ক্লাসে চল মার্জান!

নেহা : হ্যা হ্যা! যাও…এমনিতেই তো চুরি করে নেওয়া ছাড়া এই রুপে কেউ মরবে না!

মার্জান নাক ফুলিয়ে স্নেহা থেকে হাত ছুটিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে দুটো গাড়ী বাদেই আসিফ তার গাড়ীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং একটা পিচ্ছি ছেলে তার গাড়ীর উপর লেগে যাওয়া কিছু ময়লা হয়তো তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে

পাশে ছোট একটি বালতি এবং তাতে কিছু নোংরা পানি ও আছে…নিশ্চয় গাড়ী পরিষ্কার করে রেখে গেছে!

দৌড়ে গিয়ে বালতিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো…

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! কই নিচ্ছো এটা?…[ বলেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান সাতপাঁচ না ভেবেই নেহার গায়ে ছুড়ে মারলো নোংরা পানি গুলো!

[ স্নেহা শকড হয়ে মুখে হাত দিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো ]

মার্জান : [ হাত থেকে বালতি ছুড়ে ফেলে ] এখন দেখি তোর এই রুপে কজন মরে?…

নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] ইউ! ব্লাডি… স্টুপিড…বাস্টার্ড [ বলতেই আসিফ দৌড়ে এগিয়ে আসে ]

আসিফ : হেই, হেই,স্টপ স্টপ! গাইস্!

[ আশেপাশে সবাই ভীর জমিয়ে তাকিয়ে আছে ]

নেহা : [ মার্জানের দিক আংগুল তুলে ] Listen! যা করেছো অনেক বড় ভুল করেছো…পঁচতাতে হবে কিন্তু তোমার!

– এর চেয়ে বড় ইন্সাল্ট হবা তুমি মাইন্ড ইট!

মার্জান : [ হেসে ] আরে যা যা…তোর ধমোকে কে ভয় পায়! আগে নিজের দিক একবার তাকিয়ে দেখ কি হাল হয়েছে!

আসিফ : শিসস! মার্জান স্টপ! [ মার্জান মুখ ভেংগিয়ে হাতে হাত বটে অন্যদিক ফিরে যায় ]

নেহা : [ আশেপাশে একবার তাকিয়ে ] কি হচ্ছে?..সিনেমা চলছে এইখানে…সবাই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..

স্নেহা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] কি দরকার ছিলো মার্জান এসব করার?..

মার্জান : তুই চুপ কর!

[ আশেপাশের সবাই মুখ লুকিয়ে একটু একটু হেসে সরে যায়, তা দেখে নেহা হনহনিয়ে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ দেখে সামনের দিক থেকে রাহুল আসছে বাইক করে, নেহা নাক ফুলিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে

রাহুল : [ বাইক থামিয়ে সানগ্লাসটা খুলে অবাক হয়ে সবার দিক একবার তাকিয়ে আবার নেহার দিক তাকিয়ে হেসে ] হেইই নেহা! কিভাবে হলো এই হাল!

[ নেহা কোনো জবাব না দিয়ে নাকফুলিয়ে ফুফাতে লাগলো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে ইউ লুকিং [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ফরগেট ইট!

[ বলেই সানগ্লাসটা আবার চোখে লাগিয়ে বাইকটা পার্কিং এ পার্ক করে রাখলো, নেহা চলে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে হেসে আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] কেমনি হলো দোস্ত?..

[ আসিফ হেসে চোখ দিয়ে ইশারা করে মার্জানের দিক দেখিয়ে দিলো ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 26

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 26

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে,দুজনে চোখ বন্ধ করে রাখলো…অন্যরকম অজানা এক ভালো লাগা কাজ করছে…যা পৃথিবীর সকল ভালো লাগাকে হার মানাবে,

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : হেই!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ফাইনালি তুমি এখন আমার হয়ে গেছো!

স্নেহা : উমম! কই?.. নাতো!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা! আপনার তো হয়েছি কিন্তু এখনো ফাইনালি হয়নি!

রাহুল : আচ্ছা? তো ফাইনালি কবে হবা?..

স্নেহা : [ রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যখন আমাদের বিয়ে হবে! তখন আমি ফাইনালি আপনার হবো!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে তার দিক ফিরিয়ে নিয়ে ] তাহলে চলো..বিয়ে করে ফেলি..

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : আমি তোমাকে ফাইনালি আমার করে নিতে চাই!

[ স্নেহা হেসে রাহুলের বুকে আবার মাথা রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা যখনি তোমাকে বুকে জড়িয়েনি এমনই মনে হয়…যেনো পৃথিবীতে আর কিছু পাওয়ার বাকি নেই! সব পেয়েগেছি!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আর আমি যখনি আপনার বুকে মাথা রাখি এমনই মনে হয় যেনো এর চেয়ে শান্তির স্থান আর কোথাও পাবো না…সব শান্তিই এইখানে!

রাহুল : [ স্নেহার কপাল টেনে নিয়ে একটি চুমু খেয়ে ] আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলকে আবার জড়িয়ে ধরে, রাহুল ও হেসে জড়িয়ে ধরে রাখে ]
________________________________

এইদিকে,

জারিফা আর মার্জান বই হাতে দু-জন খাটে বসে আছে,

মার্জান : ইয়ার! জারিফা এখন তো অন্তত ফোনটা ধর,

জারিফা : তুই চুপচাপ পড় আর আমাকে ও পড়তে দে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে জানালার সাথে হেলান দিয়ে বসে ] বাহ! কি ওয়েদার…ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস, আমার তো ইচ্ছে হয় যেনো সারাজীবনই শীতকাল থেকে যাক, আরে হ্যা! এই স্নেহা কই গেলো বলতো?.. একটু পর ৯টা বাজবে আর ও এখনো বাসায় আসেনি!

জারিফা : রাহুলের সাথেই আছে!

মার্জান : কথা হয়েছে তোর সাথে?..

জারিফা : মেসেজ করেছে!

– ইয়ার! একতো রাহুল গতকাল রাতে এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরে ও সকাল সকাল আবার ভার্সেটি এসে স্নেহার সাথে মিট করে গেছে…এখন আবার স্নেহার সাথে…মানে স্নেহা স্নেহা

– স্নেহা ছাড়া ও কিছু বুঝেই না…[ নাকফুলিয়ে ] আর এইদিকে ওকে দেখ… না ভার্সেটি এসেছিলো… না সকালে আমাকে ফোন দিয়ে একটা গুড মর্নিং বলেছে! জনাব দুপুর, ১২টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে গুড মর্নিং! [ বলেই মুখ ফুলিয়ে বই বন্ধ করে অন্যপাশ ফিরে বসে থাকে ]

মার্জান : [ হেসে ] আরে ওর ঘুম যখনি ভেংগেছে, তখন গুড মর্নিং বলেছে আরকি! আর ও তো বললোই ঘুমাতে ঘুমাতে সকাল ৬টা বেজে গেছিলো,

জারিফা : আরে! ওরা তিনজন মিলেই তো ঐ দারোয়ানটাকে ধোলায় করছিলো! নিশ্চয় রাহুলের ও ঘুমাতে লেইট হয়েছিলো তাও তো রাহুল স্নেহার জন্য ভার্সেটি চলে এসেছে!

মার্জান : [ বই বন্ধ করে জারিফার পাশ এসে বসে ] ইয়ার! সবার মাঝে ভালোবাসার ফিল আছে,কিন্তু সবার ফিলিংসটা সেইম না! এক এক জন এক এক তরিকায় সেটা প্রকাশ করে থাকে, রাহুল রাহুলের মতো করে তার ভালোবাসা প্রকাশ করে, আর রিদোয়ান রিদোয়ানের মতো,

– আর ও বেচারা কখন থেকেই তো তোকে সরি বলে যাচ্ছে, তুই তোর জেদ নিয়ে বসে আছিস!

জারিফা : ব্যাস! একবারে ওর শিক্ষা হয়ে যাক,এরপর থেকে ওর মনে থাকবে,

মার্জান : [ হেসে ] গুড মর্নিং মিস্ করেছে বেচারা! তাই এতোবড় শাস্তি, এরপর তো একটাও মিস্ করে নাই! গুড নুন, গুড আফটারনুন, গুড ইভিনিং এখন খালি গুড নাইটটা বলা বাকি আছে, [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]
________________________________

এইদিকে,

স্নেহা : রাহুল! ডিনার ঠান্ডা হচ্ছে,

রাহুল : উমম! ব্যাস আর কিছুক্ষণ জরিয়ে ধরে রাখি!

স্নেহা : [ হেসে ] ব্যাস, ব্যাস আর কিছুক্ষণ কতোবারই তো বলেছেন!

[ বলেই রাহুল থেকে ছুটে দাঁড়ায় এবং একটু হেসে রাহুলকে টেনে চেয়ারে বসিয়ে দেই, রাহুল ও হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে পাশের চেয়ারটিতে বসিয়ে দেই! স্নেহা প্লেটে খাবার বাড়ছে আর রাহুল মুখে হাত দিয়ে এক পলকে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে,]

স্নেহা : আর তাকিয়ে না থেকে নিন! এবার শুরু করুন!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওকে! [ বলেই চামচ এগিয়ে নিয়ে প্লেটে রাখলো ]

স্নেহা চেয়ে আছে রাহুল তার ব্যান্ডেজ করা আংগুলটি বাদে বাকি আংগুল গুলোদিয়ে চামচটা সুবিধা করে ধরে খাবার মুখে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে…

একটু হেসে চামচটা কেড়ে নিলো স্নেহা!
রাহুল অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক!

স্নেহা : আ…যয..যদি চান আমি খাওয়াতে পারি! [ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : [ কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল হাসছে ] আব..বলছি যে যদি আপনি চান, তাহলে,

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] উইদাউট স্পুন, যদি আপনি আপনার হাত দিয়ে খাওয়ান তাহলে খেতে পারি [ With tedi smile ]

স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে একটু হেসে বন প্লেটে হাতটা ধুয়ে নিলো,

রাহুল তাকিয়েই আছে স্নেহার চেহেরার দিক! স্নেহা রাহুলের প্লেটটা কাছে টেনে হাতে খাবার নিয়ে রাহুলের মুখে তুলে দিলো!

[ রাহুল খাবার মুখে নিয়ে বুকে হাত দিয়ে চোখ বড় করে করে চিবাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিক..কি হয়েছে?..ঠিকাছেন আপনি?..[ পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে ] পাপ…পানি খান!

রাহুল : [ পানির গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তোমার হাতে যাদু আছে মানতে হবে! কি না রান্না করেছো তোমারতো মাষ্টার সেফ এ জয়েন করা উচিৎ!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনার রিয়েক্ট দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম.. আমার মনে হয়েছিলো আপনার গলায় খাবার আটকে গেছে! [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আর আপনি যতোটাই রিয়েক্ট করছেন ততোটাই মজা হয়নি তা আমি ভালো করেই জানি!

রাহুল : রিয়েলি স্নেহা! আমি মিথ্যে বলছিনা…এক তো তোমার হাতের রান্না করা খাবার… তারউপর..তোমার সেই যাদুকরী হাতে খাইয়ে দিচ্ছো! ওয়াহ! সব মিলিয়ে একদম জমে ক্ষীর!

– বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে অলরাউন্ডার বলে নোবেল দেওয়া উচিৎ! সব দিকে ব্রিলিয়ান্ট তুমি, স্টাডি, ডান্স, সিংগিং, কুকিং সবই ফাটাফাটি!

স্নেহা : একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে না?..

রাহুল : আচ্ছা আমার ক্ষিদে বেড়ে গেছে তাড়াতাড়ি খাওয়াও… [ স্নেহা আবার খাইয়ে দিলো ]

রাহুল : ওয়াহ! স্নেহা সুপ্পার!

– আচ্ছা শুনো… এগুলো সবই কিন্তু আমি খাবো! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালে ] মানে যদি পেট ভরে যায়, সারারাত মিলে যখনি খিদে লাগবে একটু একটু করে খেয়ে নেবো! তাও সব আমিই খাবো!

– এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..তুমি রান্না করেছো বলে কথা!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] আসলেই কি খাবার এত্তো মজা হয়েছে?..আমি এর আগে রান্না করেছি,কই কখনো তো রাহুলের মতো করে কেউ তারিফ করেনি!

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে কি হলো খাওয়াবে না?..বললাম তো খিদে পেয়ে গেছে আমার অনেক!

স্নেহা : হুম খাওয়াচ্ছি..এ..এক সেকেন্ড [ বলেই স্নেহা টেষ্ট করার জন্য তার মুখে খাবার দিতেই ছিলো! হুট করেই রাহুল স্নেহার হাত থামিয়ে ফেলে, স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক! ]

রাহুল : আরে কি করছো স্নেহা বললাম তো সব খাবার আমি খাবো…তুমি না একদম বেশি…আমার ক্ষিদে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছো [ বলেই স্নেহা থেকে প্লেটটা কেড়ে নিয়ে চামচ দিয়ে…খাওয়া শুরু করলো ]

রাহুল : স্নেহা! খাবারের স্মেলটা ও কিন্তু ওয়াও!

স্নেহা রাহুলের দিক হা করে তাকিয়ে আছে, এর আগে কখনো রাহুলকে এভাবে খেতে দেখেনি! স্নেহার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে রাহুলের কান্ড গুলো আসলেই কি এতোটা মজা হয়েছে খাবার…ইনফ্যাক্ট রাহুল স্নেহাকে ও একটু খেতে দিচ্ছে না!…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্নেহা রাহুলের কাছ থেকে খাবারের প্লেটটা টেনে নিয়ে নিলো…

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?.. [ বলেই প্লেটটা কেড়ে নিতে চাইলো সাথে সাথে স্নেহা প্লেটটা ওপাশ সরিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি এমন মজা হয়েছে আমি ও একটু ট্রাই করি!

রাহুল : তোমার ট্রাই করতে হবে না তুমি নিজের রান্না অনেক খেয়েছো! এবার আমায় খেতে দাও!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে প্লেট থেকে খাবার নিয়ে মুখে তুলে নিলো,
এবং না চিবিয়ে স্নেহা অতোটুকুতেই মূর্তির মতো হয়ে গেলো, তা দেখে রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে যায়,…কিছুক্ষণ পর স্নেহা মুখে হাত দিয়ে কেশে উঠে… রাহুল তাড়াতাড়ি পানির গ্লাসটা নিয়ে স্নেহার মুখের সামনে এগিয়ে দিলো.. স্নেহা পানি খেয়ে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো.. ]

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার হাত থেকে প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে কোণা চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] খাইয়ে দিবে বলে খাওয়াচ্ছো না…আমি নিজে খাচ্ছিলাম..তাও টেনে নিয়ে ফেলছো! [ বলেই আবার চামচ দিয়ে খাবার মুখে দিতেই স্নেহা রাহুলের হাত ধরে থামিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি জঘন্য খাবার! মিষ্টির জন্য মুখেই দেওয়া যাচ্ছে না! আর আপনি এসব কিভাবে খাচ্ছেন!

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে আবারো খেতে চাইলে স্নেহা টান দিয়ে হাত থেকে চামচটা কেড়ে নিয়ে ফেলে ]

রাহুল : আরে স্নেহা!

স্নেহা : স্টপ রাহুল! এসব খেলে ফুড পয়েজন হবে!
আর আপনার ওভারএক্টিং দেখে আমার এমনই মনে হয়েছিলো,

– যে খাবারে কিছু একটা হয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার চেয়ারটা একদম কাছে টেনে নিয়ে স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে সোজা করে ] খাবার যেমনটাই হবে হোক আমার জন্য তো এটা পৃথিবীর বড় বড় সেফ এর ডিশকে ও হার মানাবে! [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কি গাধার কাজ করেছি আমি! চিনি আর লবণ এর পার্থক্যটাই ভুলে গেছি! এমনটা কেনো হয়েছে বুঝতে পারছিনা..

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! দ্যাটস্ ওকে নো প্রবলেম,আপসে্ট হচ্ছো কেনো?..

স্নেহা : আর আপনি কিভাবে খাচ্ছিলেন এসব ছিঃ!

রাহুল : ও হ্যা! খাওয়া কিন্তু এখনো শেষ হয়নি আমার…

[ বলেই আবার স্নেহা থেকে চামচটা কেড়ে নিতে চাইলে স্নেহা হাত পেছনে দিয়ে চামচটা লুকিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : [ রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] এতো ভালোবাসেন রাহুল?..

রাহুল : এনি ডাউট?.. [ With tedi smile ]

[ স্নেহার চোখে জল এসে জমে গেছে, মুখে হাসি ফুটছে সাথে ব্লাশিং হচ্ছে ]

রাহুল : হাগ করো!

[ স্নেহা হেসে রাহুলকে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : জানো! আজ প্রথম, মা আর দাদী ছাড়া অন্য কেউ খাইয়ে দিয়েছে!

[ স্নেহা রাহুলকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুমমম!

রাহুল : তোমাকে একটা জিনিষ দেওয়ার ছিলো!

স্নেহা : [ রাহুল থেকে ছুটে এসে ] কিহ?…

রাহুল : এক সেকেন্ড! [ বলেই পকেট থেকে একটি বক্স বের করে হাতে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] এটাই কি?…

রাহুল : [ বক্সটা খুলে একটি রিং বের করে হাতে ধরলো ] তোমার হাতটা দাও!

স্নেহা : রার…রাহুল! এটা…

রাহুল স্নেহার হাতটা এগিয়ে নিয়ে স্নেহার আংগুলে রিংটি পড়িয়ে দিলো!

[ স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়লো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হেই! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?..[ বলেই স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল!

রাহুল : শিসসস! ওক্কে..ওকে

[ বলেই ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে নিয়ে স্নেহার গালে একটি চুমু দিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ফিলিং বেটার?..

[ স্নেহা হেসে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! আমার তো অনেক খিধে পেয়েছে!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে খাবারের দিক তাকালো,আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা?..আ… আমি আবার কিছু বানিয়ে দি? আই প্রমিস্ এবার সব দেখেশুনে করবো!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মাথা নাড়িয়ে ] উম!হুম! এতে টাইম লেগে যাবে…আমার এক্ষুণি চাই! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে থাকে ]

[ স্নেহা বুঝতে পেরে চুপ হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে, রাহুল ধীরেধীরে মুখ কাছে আনতেই স্নেহা উঠে যেতে চায় কিন্তু রাহুল স্নেহার হাত চেপে ধরে রাখে…রাহুল চোখ বন্ধ করে মুখ যতো কাছে এগুচ্ছে আর স্নেহার হার্টবিট ততো বাড়তে চলছে… স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে গুটিশুটি হয়ে যায়! ]

রাহুল : [ স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে ] যদি করি!

– তাহলে রাগ করবা?…

স্নেহা : [ জোড়ে জোড়ে শাস ফেলে ] নাহ!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] তোমার কেমন ফিল হয়?..

স্নেহা : যেয…যেমনকি…হাহ..হারিয়ে গেছি…

[ রাহুল স্নেহার ঠোটের সাথে ঠোট লাগাতেই স্নেহা মাথা পিছিয়ে নেয় ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা!

– এর আগেও তো দু-বার করেছো…

– এতো ভয় পাচ্ছো কেনো!

স্নেহা : [ কাপা গলায় ] দুদ..দুবার ককবে…এ..একবার করেছি!

রাহুল : ভার্সেটিতে…

স্নেহা : জোজ…জোড় করে কক….করেছেন!

রাহুল : [ চোখ খুলে হেসে চেঁচিয়ে ] হোয়াট?..

স্নেহা ও চমকে উঠে চোখ খুলে তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে রাহুল থেকে সরে বসে,

রাহুল : [ হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা পারমিশন নিয়ে করায় মজা কোথায় যেটা জোড় করে করেই পাওয়া যায়!

স্নেহা পানি ঢেলে হাত ধুয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে, এবং ওড়না ঠিক করে মাথা নিচু করে অন্যপাশ ফিরে আছে…

কিছুক্ষণ পর রাহুলের দিক তাকাতেই হার্টবিট আবার দ্রুত চলতে লাগলো…

রাহুল উঠে দাঁড়ালো… তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার একদম কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পা পিছিয়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালো… রাহুল আবারো পা বাড়িয়ে কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পিছিয়ে গেলো… রাহুল এগিয়ে এলো… স্নেহা পেছাচ্ছে রাহুল এগুচ্ছে…

হুট করেই জানালার পাশের দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো স্নেহা! আড়চোখে পেছনের দিক তাকিয়ে দেখে আর পেছানোর জায়গা নেই!

বাতাস বেয়ে আসছে জানালা দিয়ে…পরদা গুলো ও বার বার উড়ে এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে….

চোখ তুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল স্নেহার এতোটাই কাছে এসে দাড়িয়েছে যে রাহুলের ছুড়ে দেওয়া প্রতিটা নিশাসই স্নেহার মুখে এসে পড়ছে…

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে একহাত দেওয়ালে রেখে আরেক হাতে স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিলো…

স্নেহা শিউরে উঠছে…

রাহুল স্নেহার কাছে মাথা এনে গাল দিয়ে স্নেহার গালে দাড়ি গুলো ঘষে দিলো… স্নেহা কেপে উঠছে বারবার, নাক দিয়ে মুখে স্লাইড করতেই স্নেহা ভোর কুচকে চোখ বন্ধ করে ফেললো….

ধীরেধীরে রাহুল মাথা নুয়ে…তার ঠোট দিয়ে স্নেহার পুরো ঠোট দখল করে নিলো…

সাথে সাথে স্নেহা রাহুলের…জ্যাকেটটা খামছে ধরলো….রাহুল স্নেহার পেটের দিক টি-শার্টের নিচে হাত দিয়ে স্লাইড করে কোমোড়ে জড়িয়ে ধরলো…

পা দিয়ে স্নেহার পায়ে স্লাইড করতেই স্নেহা শিউরে উঠে তার পা আলগে করে দাঁড়ায়…

চলবে….