Tuesday, July 1, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2375



প্রেমের_পরশ  পার্ট_10

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_10
#জামিয়া_পারভীন

রিমির মাথায় প্রচন্ডরকম আঘাত ছিলো বিধায় জ্ঞান ফিরতে 4 দিন দেরি হয়। শুভ রিমির পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নিরু একটু দূরে বসে আছে, কয়েকটা দিন সব সময় রিমিকে যে রুমে রাখা হয়েছিলো সেই রুমের বাইরে সবার অবস্থান ছিলো। আজই ভিতরে প্রবেশের অনুমতি এসেছে রিমির জ্ঞান ফিরেছে দেখে। রুবি কে পাশের বেডে রেখেছে, কারণ ওর অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না। রুবির বাবা মাকে রুবির পাশে থাকতে দেওয়া হয়নি, রুবির দেখাশোনা সেজন্য নিরু আর নার্স রা করছে। রুবির কথা বলার শক্তি নাই, কারণ পুরো গলায় ব্যান্ডেজ করা। আর রিমি মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে বলে কথা বলছেনা। দুজন কেই বেশিরভাগ সময় ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
কষ্টের সময় গুলি অনেক কষ্টে পার করে ১৫ দিন পর দুইজন কে নিয়ে বাসায় আসে সবাই। রিমিকে শুভ কোলে করে ওর ঘরে রেখে আসে। নিচে রুবি কে বসিয়ে রেখেছে সাগর আর ওর বাবা মা।।

__ “ ওই মেয়েকে বাসায় না এনে জেলে দেওয়া ই উচিৎ ছিলো। ” শুভর মা বলে।

__ “ ঠিক বলেছো হেলেনা, এই মেয়ের এই বাসায় জায়গা হতে পারেনা। ” শুভর বাবা বলে শুভর মা কে।

__ “ বাবা, আম্মা, আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ থাকবে আমার, দয়া করে রাখুন প্লিজ। ” নিরু দুজনের উদ্দেশ্যে বলে।
সবাই চুপ আছে দেখে নিরু আবারো বলে,
__ “ রুবি আপা অন্যায় করেছে মানলাম, সে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো, আমি না হয়ে রিমি আপার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছিলো। রিমি একটু কষ্ট পেলেও আল্লাহর রহমত এ এখন সুস্থ আছে। তাছাড়া রুবি আপা এই বাড়ির বউ, সাগর ভাই আপা কে খুব ভালোবাসে, সেটা তো আপনারা জানেন। রুবি আপার অন্যায়ের শাস্তি সাগর ভাই দিতে চাইলেও আপা নিজেই নিজেকে শাস্তি দিয়েছে। সাগর ভাই এখন আর চায় না আপার আর শাস্তি হোক। তাছাড়া আপাকে জেলে দিলেও বাড়ির বউ জেলে গিয়েছে বলে এই বাড়ির সম্মান হানি হবে। লোকে খারাপ কথা বলবে, আপার দিকে না তাকিয়ে হলেও সবার সম্মান আর ভাইয়ের ভালোবাসার দিকে তাকিয়ে আপাকে ক্ষমা করে দেন প্লিজ। ”

__ “ হ্যাঁ মা, নিরু ঠিক কথায় বলেছে। ভাই ভাবীকে খুব ভালোবাসে, ভাবীকে জেলে দিয়ে ভাই কে কষ্ট দিতে চাইনা। রিমিও সেটা বুঝবে, আম্মা, আব্বু। ” শুভ নিচে নেমেই নিরুর কথার সাথে তাল মেলায়।

__ “ তোমরা যা ভালো মনে হয় করো। ” শুভর বাবা কথাটা বলে নিজের ঘরে চলে যায়, শুভর মা ও চলে যায়। সাগর আর রুবি বসে থাকে নিচে। নিরু শুভ নিজের রুমে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিতে যায়। প্রচুর ধকল গেছে এই ১৫ টা দিন। যদিও সবাই পুরোপুরি সুস্থ না, তারপরও ঝুঁকি কেটে গেছে এটাই নিশ্চিত হবার কারণ।

রুবি সাগর কে খুব আস্তে করে বলে,
__ “ আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি মায়ের কথা শুনে। পারলে ক্ষমা করে দাও তুমি সাগর।”
__ “ হুম, ভুল মানুষ মাত্রই হয়। কিন্তু নেক্সট এই রকম বাড়াবাড়ি করলে ছেড়ে কথা বলবোনা। ”
__ “আসলে কি জানো, নিরু মেয়েটা আমার সৎ বোন হয়েও যা যা করছে, আপন মা ও সেটা করেনা। ”
__ “ নিরুর জন্ম রহস্য টা কি তুমি জানো রুবি। ”
__ “ আমি নিজেও আম্মু কে জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যা বলেছে সব মিথ্যে ছিলো। এটা একমাত্র আব্বু অথবা ফুপি বলতে পারবে। ”

শুভ নিচে পানি নিতে এসে রুবির কথা শুনে। শুভ মনেমনে ঠিক করে নিরুর রহস্যটা জেনেই ছাড়বে যেকোনো উপায়ে। নিরুকে হত্যা করতে চাওয়ার কারণ নিরুর জন্ম রহস্য যেটা শুভ বুঝে গেছে।
শুভ রুমে চলে যায়, দেখে নিরু উল্টো হয়ে ঘুমিয়ে আছে, পিঠের কাপড় সরে গেছে, গলার পিছন থেকে চুল গুলো সরে গিয়ে অনেকটা গলার অংশ দেখা যাচ্ছে। ফরসা পিঠ খুব কাছে টানছে শুভ কে নিরু। শুভ কাছে
গিয়ে আলতো করে পিঠে চুমু দিয়ে কম্বল দিয়ে পুরো শরীর ঢেকে দেয়। মনেমনে ভাবে, “ নাহহ, আগে নিষ্পাপ মেয়েটাকে বাঁচাতে হবে । পরে কাছে আসার অনেক সুযোগ পাবো যদি ও বেঁচে থাকে তো।
( জামিয়া পারভীন তানি)

পরদিন শুভ সকাল সকাল নিরুর বাবার অফিসে যায়, পরিচয় গোপন রেখে। অফিসের সব স্টাফকে পর্যবেক্ষণ করে ম্যানেজার কে খুব মনে ধরে শুভর। বয়স্ক একজন ব্যক্তি, তাই উনাকেই বেছে নেয় শুভ।
__ “ আসসালামুয়ালাইকুম ম্যানেজার সাহেব।”
__“ ওয়ালাইকুম আসসালাম, বলুন কি করতে পারি।”
__ “যদি অনুমতি দিতেন কিছু জরুরী কথা ছিলো। ”
__ “ বলুন কি ব্যাপার? ”
__ “ এখানে বলা যাবেনা, শুভর কার্ড দিয়ে বলে প্লিজ এখানে যোগাযোগ করবেন আজ লাঞ্চ টাইমে, জরুরী কিছু ব্যাপার ছিলো। ”
ম্যানেজার সাহেব প্রথমে রাজি না হলেও পরে দেখা করার অভয় দেন। শুভ একটা কফি শপ এ আসতে বলে চলে আসে।
,
,
নিরু রিমির রুমে গিয়ে বসে আছে,
__ “ কিছু লাগবে রিমি।”
__ “ না ভাবী, মাথা টা একটু ঝিম ধরে আছে। ”
__ “ রোজ ঘুমের ওষুধ খাও যে তাই এমন লাগছে, কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবে।”
__ “ আচ্ছা আমাকে আমার ফোন টা দাও তো, জরুরী যোগাযোগ করতে হবে।”
__ “ কি এমন জরুরী কাজ ম্যাম? তোমার প্রাক্টিকাল খাতা কিন্তু তোমার কলেজে গিয়ে আমি সাইন করিয়ে এনেছিলাম পরেরদিন। কলেজের সব আপডেট নিউজ তোমার ভাই জানে। তাই এতো টেনশন করোনা তো। নিশ্চিন্তে থাকতে পারো তুমি।”
__“ পড়াশোনা ব্যাপার না, জরুরী কল করার আছে, সে খুব টেনশন করবে।”
__ “ তুমি কি কারোর সাথে প্রেম ট্রেম করো নাকি?”
__ “ আমি একজন কে খুব পছন্দ করি ভাবী, জানিনা এতো দিন আমার খবর না পেয়ে তার কি অবস্থা।”
__ “ ওরে বাবা! ভয়ংকর ব্যাপার, ওকে ওকে কথা বলো। ”
__ “ প্লিজ ভাবী, এখন এসব কাউকে বলোনা কিন্তু।”
__ “ ওকে ”
রিমি কে ফোন দিয়ে নিরু শুভর মায়ের ঘরে আসে, ঘর গুছিয়ে গল্প করে শাশুড়ির সাথে।

দুপুরে যথাসময়ে ম্যানেজার সাহেব শুভর সাথে কথা বলে।
__ “ আপনি এই কম্পানি তে কতো বছর ধরে জব করছেন? ”
__ “ তা প্রায়ই ২৩ বছর। কেনো বলুন তো? ”
__ “ কারণ পরে বলছি, এই কম্পানির আসল মালিক কে ছিলো?”
__ “ এসব বলা নিষেধ আছে, বললে চাকুরী থাকবেনা। ”
শুভ বুঝতে পারে এখানেই কোন কিছু আছে।
__ “ চাকুরী নিয়ে চিন্তা করবেন না কাকা, আমার অফিসে চাকুরী সহ মোটা অংকের বেতন পাবেন। বলে একটা চেক ম্যানেজার এর হাতে ধরিয়ে দেয় শুভ। ”
__ চেক এ ২০০০০ টাকা লিখা দেখে সব বলতে থাকে ম্যানেজার সাহেব
“ আগের মালিক ছিলো আসমত চৌধুরী। ”
__ “ উনি এখন কোথায়? ”
__ “ উনি তো মারা গেছে সেইই ১৮ বছর আগে।”
__ “ কিভাবে মারা গেছে জানেন? ”
__ “ হার্ট এটাক হয়েছিলো অফিসেই, এরপর উনি মারা যান। ”
__ “ এখন কার মালিক কি উনার ছেলে হন? ”
__ “ নাহ, উনার একমাত্র মেয়ের জামাই উনি।”
__ “ উনার মেয়ের নাম কি? মনে আছে কি? ”
__ “ নিলাশা চৌধুরী ”
__ “ কি বলছেন কি? উনার মেয়ে সম্পর্কে কিছু জানেন কি?”
__ “ উনার মেয়ে ছিলো উনার একমাত্র উত্তরাধিকারী। তখন আমি মাত্রই জয়েন করি। উনার সুন্দরী মেয়ে প্রায়ই অফিসে যাওয়া আসা করতো। তখন বর্তমান মালিক কেমনে জানি উনার সাথে প্রেমে জড়িয়ে যায়। বিয়েও করে কয়েকমাস পর। বিয়ের পরপর আগের মালিক হার্ট এটাক করেন। এরপর উনার মেয়েকে আর দেখিনি কখনো। শুনেছিলাম অন্তঃসত্ত্বা, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে নাকি মারা গেছেন। আহারে মানুষের জীবন কি ভয়াবহ বুঝেছো বাবা। ”
__ “ ঘটনা শুনে মনে হচ্ছে উনারা দুইজন ই খুনের স্বীকার হয়েছিলেন। ”
__ “ এটা কিভাবে হয়? ”
__ “ আচ্ছা যে বাচ্চাটা জন্ম দিতে গিয়ে উনি মারা যান সেইই বাচ্চা টা এখন কোথায় সেটা কি জানেন? ”
__ “ তা জানিনা কোথায় আছে, তবে সব সম্পত্তি এখন ওই বাচ্চার নামে, বাবা হিসেবে এখন মালিক কম্পানি চালাচ্ছে তাই। কিন্তু আসল মালিক উনার মেয়ে। ”
__ “ বাচ্চা কি ছেলে না মেয়ে? ওর নাম কি জানেন কিছু? ”
__ “ না বাবা, এইটা বলতে পারলাম না। ”
শুভর কাছে অনেক কিছুই পরিষ্কার লাগছে। তাই আর কথা না বাড়িয়ে একে অপরের থেকে বিদায় নেন। আর কথপকথন রেকর্ড রাখতে ভুলেনা শুভ। এবার শুভ অনেকটা নিশ্চিত হয়েই নিরুর বাবার চেম্বারে গিয়ে হাজির হয়। কোন রকম ভদ্র‍তা না দেখিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে। নিরুর বাবা বেশ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
__ “ আপনি কেমন বাবা যে নিজ সন্তানের মৃত্যু কামনা করেন সম্পত্তির লোভে, রুবি আপনার সন্তান আর নিরু কি আপনার অবৈধ সন্তান যে নিরুকে খুন করে নিরুর সম্পত্তি রুবিকে দিতে চান? ”
__ “ এসব কি বলছো বাবা, কে বলেছে তোমায় এসব কথা, নিরুকে আমি খুব ভালোবাসি। তাছাড়া নিরুর আমি কোন ক্ষতি চাইনা, নিরু তোমার কাছে আছে যেদিন থেকে খুব নিশ্চিন্তে আছি আমি। ”
__ “ তাহলে নিরুর মা কে কেনো খুন করেছিলেন? ”
এবার নিরুর বাবা বেশ ভয়ে পেয়ে যায়।
__ ঢোক গিলে বলে “ বিশ্বাস করো বাবা, সে প্রেগন্যান্সির কম্পলিকেশন এর জন্য মারা গিয়েছিলো। ”
__ “ আপনার বানানো নাটক কি আমায় বিশ্বাস করতে হবে? কান টানলে মাথা আসে একটা প্রবাদ আছে মনে আছে কি? রুবি যে নিরুকে হত্যা করতে গিয়েছিলো সেটার প্রমাণ আছে আমার কাছে। দুই মেয়েকে বাঁচাতে চাইলে সব কিছু খুলে বলুন। ”
__ “ হ্যাঁ আমি সব কিছুই খুলে বলবো তোমায়, কথা দিচ্ছি কারোও ক্ষতি করবোনা আমি।”

চলবে……..

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_6/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/bo

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_10/

ro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_7/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_8/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_9/

প্রেমের_পরশ পার্ট_9

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_9
#জামিয়া_পারভীন

হসপিটাল এ রুবি সাগর কে বলে,
__ “ আমি কিছু কথা বলতে চাই। ”

__ “ ভনিতা না করে যা বলার বলে ফেলো।”

__ “ আমি তো সকালে ঘরে একাই থাকি বরিং সময় পার করি। তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, নিরু আর রিমিকে কথা বলতে শুনেছি। পাশের ঘরের জানালা দিয়ে কথা কিছুটা শুনা যায়। ”

__ “ তো কি হয়েছে? ”

__ “ আরে কথা বলছিলো শুনেছি , এরপর আমি ওয়াশরুমে যায় আর কিছুক্ষণের মধ্যেই রিমির চিৎকার শুনতে পাই।”

__ “ এর দ্বারা কি বুঝাতে চাইছো?”

__ “ এটাই বুঝাতে চাইছি নিরু রিমি কে কোন ভাবে ফেলে দিয়েছে। এরপর বাবা মা সবার কাছে ভালো বউমা সাজার নাটক করছে। ”

__ “ প্রমাণ ছাড়া কাউকে দোষারোপ আমি করিনা। আর তুমিও করবেনা আশা করি। আর যদি প্রমাণ করতে পারো নিরু দোষী তো ওকে আমি ছাড়বোনা। আর একটাও মিথ্যে অপবাদ দিওনা রুবি। ”

__ “ তুমি আমায় অবিশ্বাস করতে পারলে সাগর, আমাদের এতো দিনের সম্পর্ক। কখনো আমায় অবিশ্বাস করোনি। আর একটা মেয়ের জন্য আমায় অবিশ্বাস করতে পারলে? আমি তোমার অবিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকি কেমন করে? ”

__“ আচ্ছা নাটক জানো তো তুমি, ডিসগাস্টিং। ” রাগ করে সাগর চলে আসে।

নিরু ও শুভ সিড়ির উপরে গিয়ে ডিটার্জেন্ট এর হালকা গন্ধ পায়।

__ “ আচ্ছা নিরু, আজ কি কেউ ছাদে কাপড় দিয়ে এসেছে? ”

__ “ আমি তো জানিনা, চলুন দেখে আসি। ”

দুজনে ছাদে গিয়ে কাপড় মেলা দেখতে পায়। নিরু জিজ্ঞেস করে,
__ “তাহলে কি কাপড়ের বালতি নেওয়ার সময় পানি পড়েছে? ”

__ “ চলো নিচে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। ”

শুভ কোন কাজের মানুষ কে না ডেকে নিজে সব বালতি মুছে সাফ করে। এরপর পানি ভরে দেখে কোন বালতিইই ছিদ্র নাই। এরপর শুভ বলে নিরুকে

__ “ আচ্ছা নিরু ওই সময় যখন রিমি পড়ে যায় তুমি কি করছিলে? ”

__ “ আমি রিমির ঘরে গল্প করতে যায়। রিমি কলেজ যাবে , প্রাক্টিকাল খাতা সাইন করাতে বলে কলেজ বের হচ্ছিলো তাড়াহুড়ো করে। ”

__ “ আচ্ছা অন্যদিন তুমি এই সময় কি করো? আমি তো প্রায়ই সকালে বাসায় থাকিনা তাই বলো? ”

__” আপনি চলে গেলে কিছুক্ষণ ঘর গোছগাছ করি। তারপর আম্মার ঘরে নিচে যায়, আম্মার ঘর গুছিয়ে দিই, গল্প করি এরপর ইচ্ছে হলে রান্না করি যদি আম্মা রান্না করতে দেয় তাহলে। “

__ “ যা বুঝার বুঝে গিয়েছি, চলো হসপিটালে। ”

__ “ কি বুঝলেন? বলবেন না? ”

__ “ সময় হলেই সব বুঝিয়ে দিবো। ” শুভ বলে।

নিরু মনে মনে চিন্তায় পড়ে যায়, উনি কি আমাকে সন্দেহ করছে নাকি। আমি তো এমন কিছুই করিনি। নিরু মন খারাপ করে গাড়িতে গিয়ে বসে।
হসপিটালে পৌঁছে শুভ ওর বাবা মা আর সাগরকে কে বলে,

__ “ আম্মা, আব্বু, ভাই আমি বড় ভুল করে ফেলেছি, রিমির এটা এক্সিডেন্ট ছিলো না। ওকে ইচ্ছে করে খুন করতে চাওয়া হয়েছে। ” বলে কান্নার অভিনয় করে শুভ।

__ “ কি বলছিস? কে করেছে এইসব। ” সাগর বলে

__ “ আমার সন্দেহ নিরু করেছে। ” শুভ বলে

পাশে রুবি দাঁড়িয়ে ছিলো, মনে মনে বলছে “ এ যে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি, ভালোই হয়েছে নিরুকে সন্দেহ করেছে। ”

__ “ রুবিও এই কথা বলছিলো, নিরু করেছে। ওকে আমি ছাড়বোনা শুভ। ”

__ “ আরে ভয় পাস না, বিশ্বাসঘাতক কে আমি পুলিশের কাছে দিয়ে এসেছি। ” শুভ বলে।

__ “ দেখেছো শুভ, ওই বদমাশ মেয়েটাকে বিয়ে করে কতো বড় ভুল করেছো। ” রুবি বলে

__ “ ভাবী তোমার বোন এখন পুলিশের হাতে, ওর উচিৎ বিচারের ব্যবস্থা করেছি। ”

__ “ আচ্ছা শুভ, নিরু কোথায় আছে, ওর সাথে কি কথা বলা যাবে? না মানে জিজ্ঞেস করতাম কেনো করেছে? ” রুবি জিজ্ঞেস করে শুভকে।

__ “ হ্যাঁ ও তো হসপিটালের পুলিশ কাস্টেডিতে রেখে এসেছি। চাইলেই দেখা করতে পারো। কিছুক্ষণ পর ওকে নিয়ে যাবে কোর্ট এ, দেখা করতে চাইলে এখুনি যাও। ” এই কথা বলে শুভ মনে মনে খুব হাসছে।
রুবি সবাইকে বলে যায় নিরুকে উচিৎ জবাব দিয়ে আসবে।

রুবি হসপিটালের পুলিশ রুমে গিয়ে দেখে বাইরে দুজন পুলিশ বসে আছে, বড় রুমের এক কোণায় নিরু চুপচাপ বসে আছে। রুবি গিয়ে নিরুর পাশে বসে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে,

__ “ কিরে কেমন লাগছে এখন, বড় বাড়ির বউ হবি তাইনা, এখন খুনের দায়ে জেলে যেতে হবে, কেমন লাগছে? ”

__ “ আপু আমি কিছু করিনি, বিশ্বাস করো। ” নিরু খুব কাঁদতে থাকে।

__ “ আহারে, কি কষ্ট, কি কষ্ট, বেচারি। ”

__ “ আমি সত্যিই করিনি আপু, শুভ আমায় ভুল বুঝেছে। ”

__ “ আমি তো জানি তুই করিস নি। কিন্তু প্রমাণ কি করতে পারবি। হা হা হা। ”

__ “ তার মানে তুমি করেছো এইসব, তাইনা। ” কেঁদে কেঁদে বলে নিরু।

__ “ কে জানতো, তোর বদলে রিমি যাচ্ছে, আমার ননদ কে মারতে চাইনি, তোকে মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুই কি করলি বল, তুই নিচে না নেমে রিমির ঘরে গেলি, আর কি, বিপদ টা তোর না হয়ে রিমির হয়ে গেলো। তোর তো কই মাছের প্রাণ রে, বেঁচে যাস বারবার, এবার কিভাবে বাঁচবি বল। ”

__ “ আপু বলে ডাকি তোমায়, তুমি কেনো তোমার বোনকে মারতে চাও বলো।”

__ “ তুই আমার সৎ বোন, এটাই তোর পাপ। ”
একজন পুলিশ কে ভিতরে ঢুকতে দেখে রুবি চলে আসে। রুবি সবার সামনে এসে নিরুকে খুনি বলে নাটক করতে থাকে। তখন শুভ নিরুকে নিয়ে আসে,

__ “ ওর খুনী কে কেনো নিয়ে এসেছিস আমার সামনে। ” শুভর মা চিল্লিয়ে বলে।

__ “ ওকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে ছাড়বো। ” শুভর বাবা বলে।

__ “ আহহহহ! আব্বু , আম্মু এতো উত্তেজিত হচ্ছো কেনো, নিরু তো খুন করেনি। ” শুভ বলে।

__ “ কি নাটক শুরু করেছিস তুই শুভ। ” সাগর বলে

__ “ আরে এএএ ভাইইইই! নাটকের দরকার ছিলো, আসল খুনী কে ধরার জন্য। ”
শুভ মুচকি হেসে কথা গুলো বলে।

__ “ আসল খুনী মানে? কার কথা বলছো শুভ? ”রুবি কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে।

আরেএ ভাবী এখুনি এতো ভয় পেয়ে গেলে। কেমন করে হবে, কতো কিছুর মোকাবেলা করতে হবে তোমায়। একজন মহিলা পুলিশ এসে রুবিকে হাতকড়া পরিয়ে দেয়।

__ “ কি হচ্ছেটাকি শুভ, আমি কি করেছি? ”

__ “ নাটক টা শুরু করেছো তুমি, শেষ করলাম আমি। কি ভেবেছিলে তুমি, নিরু বাচ্চা একটা মেয়ে, সহজসরল মেয়ের মাথায় কুটচাল আসবে আর আমি বিশ্বাস করবো। আসল খুনী কে ধরার কোন প্রুভ ছিলো না। তাই নিরুকে পুলিশ কাস্টেডি তে রেখে আমায় এই নাটক করতে হয়েছে। রুবিকে ইচ্ছে করে নিরুর সাথে কথা বলতে পাঠিয়েছি, নিরুর ফোনে রেকর্ড অন করে এসেছিলাম। জানি নিরু বাচ্চা মেয়ে অভিনয় করতে পারবেনা, তাই ওকে খুব কষ্ট দিয়ে ফেললাম। ”

সবাইকে রেকর্ড টা শুনায় শুভ, নিরু আর রুবির কথোপকথন

__ “ ছিঃ রুবি, ছিঃ আই হেট ইউ। ওর উচিৎ বিচার চাই আমি। ” সাগর বলে।

__ “ প্লিজ আপুকে ছেড়ে দিন, না বুঝে ভুল করে ফেলেছে, আর করবেনা এমন ভুল, প্লিজ মাফ করে দিন। ” শুভর পা জড়িয়ে ধরে নিরু বলে।

__ “ আহহহ নিরু, রিমি আমার জানের টুকরো বোন, আর তুমি আমার কলিজার টুকরো স্ত্রী। তোমায় মারার প্লানের ফাঁদে আমার বোন পড়েছে। আর খুনী কে আমি ছেড়ে দিবো ভেবেছো। ” শুভ রাগে গজগজ করতে করতে কথা গুলি বলে।

নিরু শুভর কাছে নিরাশ হয়ে শুভির মায়ের পা ধরে বলে “ আম্মা, ও তো আমার বোন, একটা ভুল করে ফেলেছে মাফ করে দেন না। ”

__ “ ওর মতো মেয়ের শাস্তি হওয়াই উচিৎ। ” শুভর মা

রুবি নিরুর কথায় ভরসা পেয়ে সাগর কে বলে,
__ “ প্লিজ সাগর, আমায় মাফ করে দাও, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আর এমন হবেনা কখনো, আমাকে আঘাত করো, মারো কাটো, তাও পুলিশে দিওনা। দয়া করো আমায় সাগর, প্লিজ ” কেউ ওর কথা শুনছেনা আজ। রুবি সুযোগ বুঝে হাতের ব্যাগ থেকে ছোট ছুরি বের করে গলায় চালিয়ে দেয়।

হটাৎ রুবি এই কাজ করবে কেউ বুঝতে পারেনি , রুবির গলা দিয়ে প্রচুর ব্লাড ঝরছে দেখে সাগর তাড়াতাড়ি রুবির গলা চেপে ধরে। রুবিকে তাড়াতাড়ি ICU তে ভর্তি করে অপারেশন এর ব্যবস্থা করে সাগর। হাজার হোক দীর্ঘ দিনের প্রেমের বিয়ে ছিলো। একদিনে তো ভুলা যাবেনা ।সাগর খুব অস্থির হয়ে উঠেছে। ডাক্তার বের হয়ে আসে প্রায়ই ঘন্টা খানেক পর।

এসে বলে “ গলার একপাশের রক্তনালি কেটে গেছে, প্রচুর ব্লাড বের হয়েছে অল্প সময়ে। ব্লাড লাগবে, O±, কিন্তু এই গ্রুপের ব্লাড এখন হসপিটালে নাই। দ্রুত ব্যবস্থা নিন, নইলে রোগী বাঁচবেনা। ”

__ “ আমার O+ ব্লাড, আমার থেকে নিন। ” নিরু বলে
শুভ মানবিকতার খাতিরে নিষেধ করেনা নিরুকে। নিরু ব্লাড দিতে যায় , আইসিইউর পাশের ব্রেঞ্চে শুভর বাবা, মা, শুভ বসে আছে। সাগর বাইরে পায়চারী করছে, সবার মাঝে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। খবর পেয়ে রুবির বাবা মা ও ছুটে আসে হসপিটালে।

চলবে……

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_6/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_7/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_8/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_9/

প্রেমের_পরশ পার্ট_8

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_8

জামিয়া_পারভীন

শুভ নিরুকে কিস করতে গেলে নিরু মুখে হাত দিয়ে আটকায়,
__ “ আপনি সব এমন করেন কেনো? ”

__ “ আদর করতে ইচ্ছে করে যে। ”

__ “ এটা আবার কেমন আদর, মুখে মুখ দিয়ে। আমার তো কেমন জানি গা গুলায়। ”

__ “ বাচ্চা বউ আমার কিছুই বুঝেনা। ” নিরুকে ছেড়ে দিয়ে শুভ বলে।

__ “ আমি মোটেও বাচ্চা না, যথেষ্ট বড় হয়েছি। ”

__ “ বড় হয়েছো কতটা, তা তো দেখতেই পাচ্ছি। ফুলসজ্যা ও বুঝোনা, আদর ও বুঝোনা। বাদ দাও, তোমার কোন বান্ধবী নাই? ”

__ “ যখন এতিমখানা তে ছিলাম তখন বান্ধবী ছিলো, যখন স্কুলে ভর্তি হয়ে হোস্টেলে আসি, সবার বাবা মা আছে, সবাই অনেক ধনী ঘরের মেয়ে ছিলো, কেউ কখনো পাত্তা দিতো না, জানেন সবাই আমার সাথে মজা নিতো। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট পেতাম, সবার সাথে মিশতে চাইতাম। কিন্তু পরে আর মিশার ট্রাই করিনি, কারণ আমি বুঝে গেছিলাম আমি অনাথ, বাবা থেকেও আমি অনাথ। আমার সৎ মা বলে আমার মা নাকি বাবাকে যাদু করে বিয়ে করেছিলো, তাই নাকি আমার জন্মের পর আমার মা মরে গেছে। আচ্ছা এটা কি সত্যিই, আমি কখনো আমার সৎ মায়ের কথা বিশ্বাস করিনি। ”
খুব কান্নায় ভেঙে পড়ে নিরু।
শুভ নিরুকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়, তখন নিরু বলে,
__ “ একমাত্র আপনি প্রথম, যে আমাকে এতো সম্মান দিয়ে বিয়ে করেছেন। রিমি ২য় জন, যে আমাকে বোনের চোখে দেখেছে , রিমিই শিখিয়েছে আপনার বাবা মা কে মা বাবা ডাকতে। জানেন আপনার জন্যই আমি একটা বাবা, একটা মা, একটা বোন পেয়েছি। খুব খুশি আমি আপনার সাতে থাকতে পেরে। কিন্তু….. ”

__ “ আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি মিষ্টি মেয়ে। তাই এতো কিছু করি তোমার জন্য। ”

__ “ কিন্তু সামিহা আপু ও তো আপনাকে ভালোবাসে।”

__ “ ভালোবাসা মানে কি বুঝো তুমি? ”

__ “ মানে,, উঁহু, জানিনা। সেদিন আপুটা আপনাকে বলছিলো, এটুকুই জানি। ”

__ “ হাহাহা, বোকা মেয়ে। ”

__ “ হাসছেন কেনো? ”

__ “ ভালোবাসা মানে বিয়ের পর দুটি হৃদয়ের বন্ধন, সামিহার সাথে তো আমার বিয়ে হয়নি, বিয়ে হয়েছে তোমার সাথে।৷ তাই ভালোও বাসি শুধু তোমাকে। বুঝলে মিষ্টি মেয়েটা। ”
শুভ নিরুর কপালে কিস দিয়ে বলে, “যেদিন সব বুঝে আমার কাছে এসে ধরা দিবে সেদিন ই তোমায় কাছে টেনে নিবো, তার আগে না। ”

দুজনে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নেয় সবার সাথে।
,
রুবি ঘর ফাঁকা পেয়ে ওর মা কে ফোন দেয়,
__ “ আম্মু, ওকে কি করা যায় বলোতো, আমার শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই ওর প্রশংসা করে। আমি তো খুব বোরিং হয়ে যাচ্ছি। ”

__ “ ওকে মেরে ফেলতে হবে। ”

__ “ কিন্তু কিভাবে, আগে মারাটাই সহজ ছিলো, তখন তো মারতে পারোনি। এখন তোমার মেয়ের গলার কাঁটা হয়ে বিঁধেছে। ”

__ “ আমি তো মেরেই ফেলতে পারতাম কিন্তু তোর বাপ তো সুযোগ বুঝে এতিমখানায় দিয়ে দেয়। মেয়ে জন্ম দিছে, ভালোবাসে মেয়েকে, আর আমরা যেন গাঙে ভেসে এসেছি। ”

__ “ ওকে না মারতে পারলে তো আমরা সব কিছু থেকেই বঞ্চিত হবো আম্মু। ”

__ “ হ্যাঁ জানি! তাই যা করার তোকেই করতে হবে। ”

রুবি কিছু প্লান বলে ওর মা কে। ওর আম্মুও খুব খুশি হয়ে ফোন টা রেখে দেয়।।

শুভ বাইরে যায়, নিরু শাশুড়ির সাথে গল্প করে কিছুক্ষণ, আজও রান্নার দাবী করে। শাশুড়ি ও নিরুর হাতে রান্না খাবার জন্য রাজি হয়ে যায়। দুপুরে সবাই লাঞ্চের পর ঘরে চলে যায়। নিরু সব কিছু গুছিয়ে রেখে ঘরে আসে। শুভ নিরুর জন্য ঘরের ভিতর লুকিয়ে অপেক্ষা করছিলো। নিরু আসতেই পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,
নিরু ভয় পেয়ে চিৎকার করতে গেলে শুভ মুখ চেপে ধরে।
__ “ এতো ভয় পাবার কি আছে? লক্ষ্মীটি “

__ “ না মানে, চমকিয়ে গিয়েছিলাম যে। ”
শুভ হাতে পাশে থাকা একটা গিফট বক্স নিরুর হাতে দেয়।
__ “ কি এটা? ”

__ “ খুলেই দেখো। ”
নিরু গিফট বক্স টা খুলে দেখে একটা স্মার্টফোন।
__ “ এটা দিয়ে আমি কি করবো? ”

__ “ কি করবা মানে, এটা কি জিনিস জানোনা নাকি? ”

__ “ এটুকু জানি, এটা ফোন কিন্তু কখনো ছুঁয়ে দেখিনি। ”

__ “ আমার সাথে কথা বলবে। ”

__ “ আপনি তো ঘরেই থাকেন, কথা তো হয় ই, তাহলে ফোনের কি দরকার? ”

__ “ আরে পাগলী, আমি তো চাকুরী করি তাইনা, অফিসে যেতে হয়, মিস করবো তোমাকে তখন কথা বলে নিবে আমার সাথে। ”

শুভ নিরুকে ফোনের ব্যবহার করার সব নিয়ম শিখিয়ে দেয়। তারপর বলে,

__ “ বিয়ে তো হটাৎ করে করেছি, যদিও অফিসের বস , তবুও দায়িত্ব বলে তো কথা আছে তাইনা। প্রচুর কাজ জমে গিয়েছে। কাল থেকে জয়েন না করলে প্রচুর লস হয়ে যাবে। তাই ফোন নিয়ে আসলাম, সুন্দরী কে মিস করলে যেন কথা বলে নিতে পারি। ”

__ “ আমার একা একা তো মন খারাপ করবে। ”

__ “ আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। ” বলে কপালে চুমু দেয় শুভ।
পরদিন শুভ ব্রেকফাস্ট সেরে অফিসে যায়, তখন নিরু কিছুক্ষণ একা ঘরে বসে থেকে বোরিং হচ্ছিলো। মনে মনে ভাবে রিমির কাছে যাবে। রুবি ভেবে নেয় নিরু এই সময় দুইদিন রান্না করার জন্য নিচে নেমেছে তাই আজকেও নামবে। সিড়ির উপরে ডিটারজেন্ট গুলা পানি ছিটিয়ে দেয়। নিরু রিমির রুমে গেলে রিমি বলে,
__ “ আরে ভাবী, তুমি এসেছো, আমি না আজ একটুও গল্প করতে পারবোনা। ”

__ “ কোথায় যাচ্ছো ? ”

__ “ আর বলোনা, অনুষ্ঠান এর জন্য কয়েকদিন কলেজে যেতে পারিনি। আজ জরুরী ভাবে যেতে বলেছে প্রাক্টিকাল খাতা আজই সাইন করাতে হবে। নইলে আমি ফেইল করবো বুঝলে। ওকে আসি বায় বায়। ”

রিমি খুব দ্রুত যাচ্ছিলো, আর রুবি র আগে থেকে ডিটারজেন্ট গুলো পানিতে পা পড়ে জোরে করে চিৎকার দিয়ে সিড়ি থেকে প্রথমে দেয়ালে মাথায় আঘাত পেয়ে নিচে পড়ে আবারো আঘাত পায়। চিৎকারে সবাই দৌড়ে আসে , সাগর, শুভ কেউ নাই, নিরুও নামতে গিয়ে স্লিপ খেতে খেতে রেলিং ধরে বেঁচে যায়।

নিচে গিয়ে দেখে রিমির মাথা ফেটে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে, এক হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে
শাশুড়ি কে বলে, “ মা ওকে এখুনি হসপিটাল এ নিতে হবে, তাড়াতাড়ি ধরুন। ” নিরু আর ওর শাশুড়ি দুইজন মিলে রিমিকে ধরে গাড়িতে তুলে। রুবি তখন ও ঘর থেকে বের হয়নি, যখন গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছে তখন দৌড়ে এসে জিজ্ঞেস করে “ কি হয়েছে? ” নিরু বলে, “ রিমির মাথা ফেটে গেছে,” রুবিও গাড়িতে উঠে বসে।
এক হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে আরেক হাত দিয়ে ফোন বের করে শু ভ কে কল দেয়, রিসিভ হতেই

__ “ আপনি খুব তাড়াতাড়ি চলে আসুন, রিমির মাথা ফেটে গেছে। ”

__ “ কিভাবে হলো এসব, আমি আসছি, ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। কুইক ”

__ “ জ্বী আমরা হসপিটালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। ”

__ “ ওকে, যাও আমি খুব শীঘ্রই আসছি। ”

হসপিটালে পৌঁছে রিমিকে দ্রুত ভর্তি করে। রোগীর অবস্থা দেখে I C U তে নেয় নার্স রা। দ্রুতই ডাক্তার এসে মাথায় ব্যান্ডেজ করে দেয়। রিমির প্রচুর পরিমাণ এ ব্লাড গেছে, ব্লাড লাগবে, ততক্ষণে শুভ এসে গেছে। সাগর এসে ব্লাডের ব্যবস্থা করে দেয়। ICU থেকে ডক্টর বের হয়ে আসলে জিজ্ঞেস করে শুভ,

__ “ আমার বোন কেমন আছে? সেরে উঠবে তো? ”

__ “ আপনাদের ভাষ্যমতে সিড়ি দিয়ে পিছলে পড়ে রোগীর এই অবস্থা, চোট টা গুরুতর, ব্যান্ডেজ করিয়ে দিয়েছি, MRI করে আসবেন, ব্রেইন ড্যামেজ না হয়ে গেলে রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।” ডক্টর বলে চলে যায়।

__ শুভ ওর বাবা কে বলে “ এখন কি হবে বাবা, আমাদের একমাত্র বোন, ওর কিছু হয়ে গেলে আমি সহ্য করতে পারবোনা। ”

__ “ আল্লাহ কে ডাক বাবা। আমি আর নিতে পারছিনা। ” শুভর বাবা মেয়ের জন্য কান্না করছে।

এরই মাঝে সাগর এসে সবাইকে জিজ্ঞেস করে কিভাবে এটা হলো।

__ “ রিমি কলেজ যাচ্ছিলো, তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে মনে হয় পা পিছলে পড়ে গেছে। ”
নিরু বলে

__ “ আমরা ঘরে ই ছিলাম, চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি রিমির মাথা থেকে রক্তের বন্যা বইছে। ” শুভর মা কথা গুলি বলছে আর কাঁদছে।

__ “ মা আপনি চিন্তা করবেন না, রিমি ঠিক হয়ে যাবে। ” নিরু শাশুড়ি কে জড়িয়ে কথা গুলো বলে।

শুভকে আড়ালে ডেকে নিরু বলে
__ “ সিড়িতে কেউ পিচ্ছিল কিছু ফেলেছিলো, এটা কাকতালীয় বা ইচ্ছাকৃত ভাবে। ”

__ “ কি বলছো এসব তুমি, মাথা ঠিক আছে কি? ”

__ “ জ্বী মাথা একদম ঠিক আছে, আমিও পড়ে যাচ্ছিলাম, রেলিং ধিরে বেঁচে গেছি। ওখানে ডিটারজেন্ট এর গন্ধ পেয়েছি। ”

শুভ সবাইকে রেখে নিরুকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, প্রমাণ খুঁজতে।

চলবে……

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_6/

 

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_7/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_8/

প্রেমের_পরশ পার্ট_7

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_7
#জামিয়া_পারভীন

নিরু একটু ভয় একটু লজ্জায় শুভর বুকে মারতে শুরু করে, শুভর হাত একটু হালকা হতেই নিরু শুভকে সরিয়ে দিয়ে দৌড় দিতে শুরু করে। নিরুর শাড়ির কিছু অংশ শুভর পায়ের নিচে ছিলো, হটাৎ দৌড়াতে গিয়ে টান লেগে শাড়ির কুচি খুলে যায়। নিরুর পেটের অনেকটা অংশ বের হয়ে যায়, কোনরকম কুচি গুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নিরু। শুভ অনেকটা রেগে গাল গুলো লাল হয়ে গেছে নিরুর এমন কাণ্ডে। রাগ করে বলে,
__ “ বেশ হয়েছে, এখন এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকো। ”

__ “ সরিইইই,” মাথা নিচু করে বলে নিরু।

__ “ এটাই তোমার শাস্তি আজ। ” বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় শুভ।

নিরু ওভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে এলোমেলো শাড়ি নিয়ে বিছানার কম্বলের নিচে ঢুকে পড়ে, একে তো শাড়ি পড়তে পারেনা, যদি কেউ এসে দেখে ফেলে, কি লজ্জার ব্যাপার হবে তখন, মনে মনে ভাবছে আর লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে নিরুর। কিছুক্ষণ পর ফুপি শাশুড়ি ঘরে আসে,
__ “ কি ব্যাপার নতুন বউ, সারাদিন শ্বশুর , শাশুড়ি আর ননদকেই চিনলে আর আমরা বুঝি কেউউ না। ”

__ “ ভুল হয়ে গেছে ফুপি, মাফ করে দিবেন। ”

__ “ এই অবেলায় শুয়ে আছো কেনো, শরীর খারাপ করলো নাকি? ”

__ “ আমি আসলে শাড়ি পড়তে পারিনা, পায়ের সাথে লেগে শাড়ি খুলে গেছে তাই। ” মাথা নিচু করে বলছে।

__ “ ওহহহ এই ব্যাপার, আসো আমি শিখিয়ে দিচ্ছি। এর আগে কখনো পড়নি বুঝি। ”

__ “ না ফুপি, কখনো পড়িনি, কেউ ছিলেন না শিখিয়ে দেওয়ার মতো। ”

শুভর ফুপি স্টেপ বাই স্টেপ শাড়ি পড়ানো শিখিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ গল্প করে দেখে রাতের খাবার সময় হয়ে গেছে, দুজনেই তাড়াহুড়ো করে ডাইনিং এ যায়। দেরি হয়ে গেলে আবার বকা খেতে হবে। ডাইনিং টেবিলে শুভ নিরুকে দেখে চমকে উঠে। মনে মনে ভাবছে “ শাড়ি তো পড়তে পারেনা কিন্তু পড়লো কিভাবে ? ” শুভর মনের কথা মনেই থাকলো নিরু তার আগেই শুভর পাশে গিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বসে পড়ে, আস্তে করে বলে “ অবাক হয়েছেন বুঝি, এভাবে তাকিয়ে থাকবেন না আমার লজ্জা করে ।” শুভ চোখ সরিয়ে নেয় নিরুর থেকে। সবাই ডিনার শেষে যে যার মতো রুমে চলে যায়। শুভ রাগ করে আর নিরুর দিকে তাকায়নি রাত্রে। একই ঘরে উল্টো দিক হয়ে রাত্রে ঘুমিয়ে পড়ে। নিরুও বেচারি শুভর পাশেই ঘুমিয়ে পড়ে, মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে।

পরদিন সকালে নিরুর ঘুম ভেঙে শুভকে দেখতে পায়নি, হয়তো আগেই উঠেছে তাই উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই রিমি আসে রুমে। রিমির সাথে আগেই নাস্তা করে পার্লারে যায়, যেহুতু পার্লারে যেতে হবে তাই তিন জন তাড়াতাড়ি নাস্তা সারে। রিমি রুবি আর নিরু কে নিয়ে পার্লার এসে তিনজনের সাজতে প্রায়ই দুপুর হয়ে আসে। তিনজনই কারে করে করে আগের ঠিক করে রাখা কমিনিউটি সেন্টারে আসে।

স্টেজ সাজানো হয়েছে খুব সুন্দর করে, পিছনের দিকে তাজা ফুল রজনীগন্ধা, গোলার আর গন্ধরাজ ফুলের মিশ্রণে সাজানো হয়েছে। দুই জোড়া ডিজাইন করা সোফা রেখেছে , একটা সোফায় শুভ আরেকটাতে সাগর বসে আছে। পাশে রুবি আর নিরুর জন্য যায়গা রাখা আছে। নিরুকে আসতে দেখে শুভ আর চোখের পলক ফেলতে পারছেনা। রিমির পছন্দ করা নীল রঙের গাউনের সাথে ম্যাচিং ওড়না, ম্যাচিং গয়না পড়েছে নিরু। চুলগুলো সামনের দিকে একপাশে ডিজাইন করে ছাড়া আছে, মাথায় ফিরোজা আর মিষ্টি কালারের ফুল। হাত ভর্তি চুড়ি, পায়ে উঁচু হিল পড়েছে নিরু। শুভ শেরওয়ানী পড়েছে, ম্যাচিং পাজামা, আর জুতা। নিরুও শুভর দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে। শুভ তো চোখের পাতা ফেলতেই পারছেনা তার নীল পরীর দিক থেকে।

রুবি লাল বেনারসি পড়ে ম্যাচিং গয়না আর মাথায় ওড়না দিয়ে সেজেছে। রুবিকেও বেশ সুন্দরী লাগছে, সাগর কোর্ট পড়েছে আর সু। ওদের দুজনের জুটিকেও মানিয়েছে বেশ। রিমি পিংক কালার গাউনের সাথে সেজেছে, ওকেও বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে। রিমি নিরুকে শুভর পাশে বসিয়ে বলে,
__ “ ভাইয়া! একটু মুখ টা বন্ধ কর, এভাবে ভাবীর দিকে নজর দিস না, সবাই কিন্তু তোকে নিয়ে হাসবে। ” হিহিহি।

__ “ এই যা ভাগ, তোকেও বেশ সুন্দর লাগছে। ”

__ “ দেখতে হবেনা কার পছন্দ এইগুলি। ”

__ “ আমার পাগলী বোনের চয়েস আছে বলতে হয়। তোদের দু’জন কেই জোশ লাগছে। ”

__ “ আমাকে ওত টাও বললে না, যতটা ভাবী কে লাগছে। ”

দুই ভাই বোনের খুনসুঁটি তে নিরু মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে। যেহুতু সম্মানের একটা ব্যাপার আছে তাই রুবির বাবা মাও এসেছে। রুবির মা নিরু কে দেখে জ্বলে যাচ্ছিলো কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা। শুভর খালাতো বোন সামিহাও অনেক জ্বলছিলো। আর রুবি নিরুর ফুপু আর ফুপাত ভাই রাকিব ও এসেছে, রাকিব কে দেখে নিরু চমকিয়ে যায়, শুভকে ধরে ফেলে ভয়ে, শুভ বলে
__ “ এনি প্রব্লেম? ”

__ “ রাকিব এসেছে এখানে, ওকে আমার ভয় লাগে। ওদের কেনো ডেকেছেন? ” আস্তে আস্তে নিরু বলে।

__ “ আমি আছি তো, এতো ভয় কিসের তোমার। ”

__ “ ওরা খুব খারাপ, আপনার যদি ক্ষতি করে। ”

__ “ আরে ভয় পেওনা, কিছুই হবেনা শুভ বেঁচে থাকতে। যারা জ্বলার তাদের চিনে রেখেছি, সবাইকে দেখে নিবো আমি। ”

__ “ ভরসা করি। ”

__ “ পরে বুঝিয়ে দিচ্ছি তোমায়। ”

__ “ কি বোঝাবেন? ”

__ “ কিছুনা। ”

শুভ আর নিরু ফটো তুলার জন্য একটা পার্কে যায়, সেখানে ক্যামেরাম্যান সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে দেয়। যখন নিরুকে শুভর কাঁধে হাত রাখতে বলে নিরু যেন লজ্জায় মরে যাচ্ছে, বিভিন্ন পোজ দিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে শুভ নিরুর লজ্জা পাওয়া খুব কাছে থেকে উপভোগ করে। একটা ছবি তে নিরু শুভর ঘাড়ে হাত দিয়ে শুভর চোখে চোখ রেখে ছবি তুলতে গিয়ে নিরু বার বার লজ্জায় চোখ নিচু করে নিচ্ছিলো। অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর ছবি তোলে নিরু আর শুভ। পার্ক থেকে বের হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়, গাড়িতে করে দুইজন বাসায় ফিরছে। শুভ নিরুকে জিজ্ঞেস করে,
__ “ কেমন লাগলো আজকের ঘুরাঘুরি? ”

__ “ জানেন! আজ আমি খুউউউউউব হ্যাপি, জীবনে প্রথম আমি এতো আনন্দ করেছি। ”

__ “ আমার এই পার্কে অনেক আশা হলেও লজ্জাবতীর সাথে এই বার সব চেয়ে বেশি এনজয় করেছি। যখন তুমি লজ্জায় চোখ নামাচ্ছিলে তখন সব চেয়ে সুন্দর লাগছিলো তোমায়। ”

__ “ আপনি আমায় অনেক করুনা করেছেন, আমার এতো সুন্দর জীবন দান করার জন্য আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে। ” ঘুম ঘুম ভাব চোখে নিরুর।

__ “ আর একদম আজেবাজে চিন্তা মাথায় আনবে না, আমি মোটেও করুনা করিনি। ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়, নইলে শুভর রাগ সম্পর্কে তোমার আইডিয়া নাই। ” কথা শেষ করে শুভ খেয়াল করে নিরু কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে।
“ সারাদিন এতো ধকল বাচ্চা মেয়েটা সহ্য করতে পারছেনা। ” মনে মনে বলে শুভ।

বাসায় এসে গেছে কিন্তু নিরু ঘুমাচ্ছে তাই আস্তে করে নিরু কে কোলে তুলে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে শুভ। শুভর ফ্যামিলির লোক একটু অবাক হলেও কেউ কিছু বলেনা। শুভ নিরুকে রুমে শুইয়ে দেয়, ঘুমন্ত নিরুকে দেখতে নীলপরীর মতো লাগছে। অপলক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বের হয়। সবার সাথে আড্ডা দিয়ে রুমে আসার পথে সামিহার সাথে দেখা শুভর। খুব সুন্দর করে ইগনোর করে রুমে চলে আসে শুভ।

রুমে এসে দেখে নিরু এখনো ঘুমিয়ে আছে। শুভ নিরুকে ডাকতে থাকে,

__ “ এই নিরু, উঠো। ”
নিরু ঘুমের ঘোরে শব্দ করছে, শুভর বেশ মজা লাগছে। কিন্তু মেকআপ না তুলে ঘুমালে স্কিন নষ্ট হয়ে যাবে তাই শুভ নিরুর মুখে পানি ছিঁটা দিয়ে তুলে দেয়।

__ “ এমন কেনো করেন, আমি একটু ঘুমাই, প্লিজ। ”

__ “ পরে ঘুমিও, মেকআপ তুলে ঘুমিও, এখন উঠো ঘুম থেকে। ”

__ “ না তুললে কি হয় প্লিজ প্লিজ প্লিজ।”

__ “ ক্ষতি হবে, আমার সুন্দরী বউয়ের চেহেরা নষ্ট হয়ে যাবে। যাও মেকআপ তুলে ড্রেস চেঞ্জ করে এসে ঘুমাও। ”

নিরু ঢুলতে ঢুলতে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে এসেই শুয়ে পড়ে। শুভ ও বাধ্য ছেলের মতো নিরুর পাশে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে নিরুর ঘুম ভাঙে আগে, ঘুম থেকে উঠে খেয়াল করে বেড ফুল দিয়ে সাজানো, বেলী ফুল, রজনীগন্ধা আর খয়েরী গোলাপ দিয়ে। “ যাহহ বাবা এটা কোথায় আমি, স্বপ্ন দেখছি নাকি। ” মনে মনে বলে নিরু। পাশে শুভ কে শুয়ে থাকতে দেখে বুঝতে পারে শুভর ঘরে আছে। এর মাঝে শুভর ঘুম ভাঙে, শুভ উঠে বসতেই নিরু জিজ্ঞেস করে,
__“ আচ্ছা কাল তো আমরা গাড়ি করে আসছিলাম, তারপর কিছুই মনে নাই। আমি এখানে আসলাম কিভাবে ? ”

__ “ কিভাবে আর আমি কোলে করে নিয়ে এসেছি। ”

__ নিজের শরীরের দিকে খেয়াল করে চিল্লিয়ে উঠে নিরু, “ হায় আল্লাহ, আমার ড্রেস কে চেঞ্জ করে দিলো? ”
__ “ আরে আরে কাঁদার কি হলো? কাল রাতের কথা ভুলে গেছো? তুমি তো নিজেই চেঞ্জ করেছো ঘুমের ঘোরে ছিলে কাল। ”

__ “ ওওও আমি চেঞ্জ করেছি তাইনা।? ”

__ “ কি ভেবেছিলে তুমি? ”

__ “ এই ঘরে এতো ফুল দিয়ে সাজানো কেনো? ”

__ “ গতরাতে তো তোমার আমার ফুলসজ্যা ছিলো। তুমিই তো ঘুমিয়ে গিয়ে সব নষ্ট করে দিলে। ”

__ “ ফুলসজ্যা তে কি হয়? ”

__ “ দেখবে ”

__ “ হু দেখান ”

শুভ নিরুকে টান দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়, নিরুর পিঠে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে।
__ “ এমন করছেন কেনো, ছাড়ুন না। ”

__ “ তুমিই তো দেখতে চাইলে। ”

__ “ এটা কি ফুলসজ্যা নাকি? ”

__ “ ফুলসজ্যা দেখানো যায় না করে দেখাতে হয়। ”

চলবে……….

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_6/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_7/

প্রেমের_পরশ পার্ট_6

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_6
#জামিয়া_পারভীন

শুভ সন্ধ্যার পরে রুমে ঢুকে দেখে নিরুকে যে স্থানে রেখে গিয়েছিলো ওখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। প্রায়ই চার ঘন্টা হয়ে গেছে ও একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে দেখে শুভর মাথা খারাপ হয়ে যায়, নিরুকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেয়, নিরুও হটাৎ করে শুভর এমন কাণ্ডে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।

__ “ কি ব্যাপার, এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলে কেনো? নিজেকে কষ্ট দিয়ে কিসের সুখ পাও তুমি? আমি চলে গেছিলাম অপরাধ বোধ হচ্ছিলো তাই, মানুষের কথায় তোমাকে সন্দেহ করা আমার উচিৎ হয়নি, খুব খারাপ লাগছিলো নিজের কাছে, তাই বেরিয়ে গেছিলাম। আর তুমি এতক্ষণ এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকলে? আর এমন পাগলামি করবে না ঠিক আছে? ” রাগ কন্ট্রোল করে শান্ত গলায় বলে শুভ।

__ “ জ্বী, মনে থাকবে। ”

__ “ গুড গার্ল, এখন রেস্ট করো, আমি বাসার বাইরে যাবো। ”

__ “ জ্বী আচ্ছা।”
শুভ রেডি হয়ে নিরুর কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে বের হয়ে যায়। রিমি কিছুক্ষণ পর ঘরে আসে,

__ “ কি ব্যাপার ভাবী! কি হয়েছে? চোখ ফুলে আছে কেনো? ”

__ “ চোখে কি যেনো পড়েছিলো, ঠিক হয়ে যাবে। ”

__ “ মিথ্যে বলো না তো, ভাইয়া নিশ্চিত তোমায় কিছু বলেছে, নইলে তুমি কাঁদতে না । কি বলেছে সেটা বলো শুধু? ভাইয়া আসলে ওর সাথে যুদ্ধ করবো। ”

__ নিরু সব খুলে বলে, যা যা হয়েছে সব।

__ “ আজ আসলে ওর খবর আছে, মনে রেখো। ”

__ “ নাহহহ! কিছু বলবে না, তাহলে আমায় উনি ভুল বুঝবে। ”

__ “ সে অন্যায় করলে তাকে কি বারণ করা যাবেনা। ”

__ “ প্লিজ রিমি! ভুল বোঝো না, আমি চাইনা আমার প্রতি প্রথম দিন ই নেগেটিভ ধারণা করুক। ”

__ “ তুমি তো দেখছি অনেক কিছু বুঝো ভাবী। ”

__ “ এইটুকু না বুঝলে এতো দিনে আমি কোথায় হারিয়ে যেতাম, আমার জীবন টা ছোট থেকেই যুদ্ধ করে চলছে। যুদ্ধ তে যে আমার টিকে থাকতেই হবে। ”

__ “ ঠিক বলেছো, আমরা তো আর এমন পরিস্থিতি তে পড়িনি, তাই জীবন যন্ত্রণা এখনো বুঝিনি, তবে তোমাকে দেখে অনেক কিছু শিখার আছে। আচ্ছা যাও বাদ দাও, আজ খাওয়া দাওয়া করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেও, কাল বাসায় অনুষ্ঠান আছে, আম্মু তোমাদের দুই বউ কে একসাথেই বরণ করে নিবেন। । অনেক সাজতে হবে কাল তোমায়, বুঝলে। ”

__ “ এমনি তেই তো ভালো, সাজলে ভালো লাগেনা আমায়। ”

__ “ হু বাবা, তোমার রূপ আছে তাই ভালো লাগেনা সাজতে, আমরা দেখতে পঁচা, তাই সাজি। ”

__ “ উঁহু! আমি ওইভাবে বলিনি, আচ্ছা তোমরা যা চাইবে তাই হবে, এতো রাগ করিও না তো। ”
রিমির সাথে নিরুর মান অভিমান এর গল্প চলতে থাকে। অনুষ্ঠান হিসেবে আরোও কিছু আত্মীয় বাসায় আসে। শুভর চাচা , চাচী তাদের ছেলে আর মেয়ে, শুভর ফুপি আর তাদের ছেলে, শুভর খালামনির মেয়ে ও আসে। সবাই মিলে নিচে ড্রইং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে তখন সাগর আর রুবিও যায়। ছোট খালার মেয়ে সামিহা রুবির সাথে ভাব জমিয়ে ফেলে, খুব আস্তে আস্তে সামিহা রুবি কে জিজ্ঞেস করে

__ “ ওই মেয়েটা, মানে শুভ যাকে বিয়ে করেছে সে আপনার কেমন বোন? ”

__ “ কেমন আবার, সৎ তো সৎ ই, ওকে আমি বোন বলে মানি না। ”

_ “ তাহলে তো ভালোই হলো, বোন বলেও মানেন না আবার জা বলেও কখনো একসেপ্ট করবেন না জানি, পথের কাঁটা সরিয়ে দিন তাহলে। ”

__ “ আমি তো সেটাই চাই , কিন্তু কিভাবে? ”

__ “ আগে বলেন ওই মেয়ের কোন উইক পয়েন্ট আছে কিনা? ” সামিহা জিজ্ঞেস করে।

__ “ হুম, অবশ্যই থাকতে পারে, ভাবতে হবে। কিন্তু ওকে সরিয়ে আপনার লাভ কি সেটা আগে বলুন তো? ” রুবি বুঝতে পারছেনা সামিহা বন্ধু না শত্রু।

__ “ সময় হলে সব জানতে পারবেন? এখন শুধু এটুকুই শুনে রাখুন। ”

__ “ ওকে, এজ ইউর উইস। ”
সবার সাথে আড্ডা দিতে দিতে শুভ ফিরে আসে, সামিহা উঠে গিয়ে সুযোগ বুঝে ফাঁকা ঘরে শুভ কে জড়িয়ে ধরে।

__ “ আরে পাগল হলি নাকি , করছিস কি, ছাড় আমাকে ? ”

__ “ আমাদের এতো দিনের প্রেম বুঝি কিছুই না? বিয়ে করে নিলেই আমি তোমাকে ভুলে যাবো? ”

__ “ দেখ সামিহা, আমি তোকে ” কিছু বলার আগেই সামিহা শুভর ঠোঁট চেপে ধরে

__ “ মিথ্যে বলোনা, সবাই জানতো তুমি আমাকে বিয়ে করবে আর এখন কিনা আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে নিলে? কেনো শুভ কেনো, বিয়ের সময় কি একবার ও চিন্তা করলেনা তুমি বিয়ে করলে আমার কি হবে? ”

__ “ দেখ সামিহা, তোকে বিয়ের কথা আমি কখনো বলিনি, তুই আর তোর মা সেটা চাইতিস, এখন সেটা ভুলে যা। ”

__ “ শুভ ওওও, তুমি যদি ওই মেয়েটার সাথে ঘর করো তাহলে আমি বিষ খাবো। নিশ্চয়ই চাওনা আমি মরে যাই। ”

__ “ যা মরে যা তুই, আমার সামনে আসবি না কখনও । ”

সামিহা শুভর রুম থেকে বের হয়ে যায়, নিরু আর রিমি বেলকনিতে ছিলো বলে সব শুনতে পাই, নিরু কোন কথা না বলে বসে পড়ে বেলকনি তে থাকা দোলনায়। রিমিও নিরুর পাশে বসে বলে
__ “ চিন্তা করিওনা, কিছুই হবেনা এমন। ”

__ “ আমার চলে যাওয়া টাই ভালো হবে। ”

__ “ কোথায় যাবে তুমি? তুমি কি ভাবছো সামিহা আপু ভাইয়া কে লাভ করে, কখনও ই না। ”

__ “ তাহলে? ”

__ “ যদি লাভ করতো তো মরার কথা বলে ব্লাকমেইল করতো না, আমি চাই তুমি নিজেই খুঁজে নাও সামিহা আপু কি চাই। ”

__ “ ওকে, তাই হবে, ঘুম পাচ্ছে খুব। ”

__ “ বুঝছি কথা এড়াতে চাচ্ছো তুমি। ”

__ “ হিহিহি। ”

নিরু আর রিমি ঘরে আসতেই শুভ চমকিয়ে যায়,
__ “ কিরে ভাইয়া, ভয় পাইছিস? মনে হচ্ছে তুই আমাদের এখানে আশা করিস নি। ”

__ “ তা কেনো হবে? ”

__ “ তোর বউকে নিয়ে গল্প কর? আমি যাইইই, হি হি। ”

__ “ পাগলী একটা। ”

রিমি চলে যেতেই নিরু বলে

__ “ এক্সট্রা কম্বল এনেছেন কি আজ? ”

__ “ কেনো কি কাজে লাগবে? ”

__ “ বা রে! কাল ই তো আপনি বললেন, এক্সট্রা কম্বল এনে দিবেন যাতে আমি সোফায় ঘুমুতে পারি। ”

__ “ আলাদা ঘুমাতে চাও তুমি? ”

__ “ হু ”

শুভ উঠে এসে নিরুকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিরুকে শক্ত করে চেপে ধরে,

__ “ আলাদা থাকবে তাইনা? ”

__ “ হ্যাঁ মা মা নে না। ”

__ “ তোতলাচ্ছো কেনো? ”

__ “ ভয়ে, না মানে এমনি। ”

__ “ খুব ভয় পাও তাইনা। ” শুভর হাত নিরুর ঠোঁটের কাছে আনতেই নিরু আঙ্গুলে কামড়ে দেয়।
দিয়ে বলে “ মোটেও ভয় পাইনা। ” আর শুভ ব্যথা তে “ উঁহু” করে উঠে।
শুভ বলে

__ “ কামড় দিতে খুব মজা তাই না, এবার আমি দিই। ”

__ “ না, মোটেও না, খুব খারাপ হবে কিন্তু। ”
শুভ নিরুর ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে দেয়, নিরু উষ্ণ পরশে পাগল হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ভয়ে শুভর থেকে নিজেকে ছাড়াতে শুভর বুকে মারতে শুরু করে।

( আজ অনেক ব্যস্ততায় ছোট হয়ে গেলো, কাল একটু বড় করে লিখবো। সরিইই )

চলবে..

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_6/

প্রেমের_পরশ পার্ট_5

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_5
#জামিয়া_পারভীন

__ শুভ সোফায় বসে বই পড়ছিলো এই সময় নিরু বের হয়ে আসে। নিরুর মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে শুভর মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। মাথার চুলগুলো টাওয়েল দিয়ে খোঁপার মতো করে বেধেছে, লাল ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়ে শাড়ি কোন রকমে পেচিয়ে বের হয়ে এসেছে। শাড়ি ভালো করে না পড়তে পারায় নিজেকে ঢাকার বৃথা চেষ্টা করছে নিরু। ভেজা চুল, সিক্ত শরীরের নিরু শুভকে কাছে টানছে। শুভ উঠে ঘরের দরজা টা লাগিয়ে দেয়, নিরুর দিকে এগোতে থাকে।

__ “ দরজা কেনো লাগাচ্ছেন? ” কাঁপা কণ্ঠে বলে নিরু।

__ শুভ কোন কথা না বলেই এগিয়ে যায়, নিরু কিছুটা সংকোচ, কিছুটা ভয়ে পিছনে সরে আসে। শুভ নিরুকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে, নিরু কোন দিকেই যেতে পারছেনা, মাথা টা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে নিরু। শুভ নিজের গাল টা নিরুর গালে নিয়ে গিয়ে আলতো ছোঁয়া দেয়। নিরু কেঁপে উঠছে “ উঁ উঁ ” শব্দ করে মুখে। শুভ গাল সরিয়ে এনে শাড়ি টা খুলে সুন্দর করে পড়িয়ে দেয়, শাড়ির কুচি পেটের কাছে গুঁজে দেবার সময় শুভর হাতের স্পর্শে নিরু বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছিলো। শুভ নিরুর হাত ধরে টেনে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড় করায় নিরুকে, প্রথমে চুল আঁচড়িয়ে দেয় শুভ, নিরুর হাত ধরে হাতে হালকা করে লোশন লাগিয়ে মুখে স্নো দিয়ে দেয় শুভ , এরপর পিছন থেকে এক হাত মুখে আরেক হাত পেটে রেখে আয়নায় নিরুকে দেখে বলে জাস্ট অপুর্ব, এতো রূপ এতক্ষণ কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলে সুন্দরী। নিরু কিছুটা লজ্জায় সরে যেতে চাইলে শুভ এক ঝটকায় কাছে টেনে নেয়, মাথার পিছনে হাত দিয়ে নিরুর মুখ টাকে কাছে নিয়ে আসে গালে একটা চুমু দিতেই নিরু কাঁদতে শুরু করে। নিরুর নিঃশব্দে কান্নার চোখের পানি শুভর নাক স্পর্শ করে। নিরুকে ছেড়ে দিয়ে দূরে এসে দাঁড়ায়,

__ “যদি অন্যায় কিছু করে ফেলি তাহলে দূরে চলে যেতে পারো।” একটু রাগী গলায় বলে শুভ।

__ নিশ্চুপ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে নিরু।

__ “ কি হলো? কথা বলছোনা কেনো? ”

__ নিশ্চুপ

__ এবার রাগী গলায় জোরে করে বলে ফেলে, “ যাও সামনে থেকে কখনো আর সামনে আসবেনা। ”
নিরু ভয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। দুপুর হয়ে এসেছিলো বিধায় সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই রিমি এসে ভাবী বলে জড়িয়ে ধরে।

__ “ ওয়াও, ভাবী তুমি এতো সুন্দরী, লাল শাড়ি তে তো তোমায় লাল পরী লাগছে গো, আমার ছোট ভাইয়া তো তোমার দিক থেকে মুখ ই ফেরাতে পারবেনা। ”

__ “ নাহহ, মানে, সবাইকে খেতে দিতে হবে তো, চলো যাই রান্নাঘর এ। ”

__ “ হু, শুনলাম, তুমি আজ রান্না করেছো, প্রথমদিন এসেই মায়ের মন যোগাতে শুরু করেছো। ভালো ভালো চালিয়ে যাও, জানি তুমি পারবে আমার রাগী ভাই টাকে প্রেমের ছোঁয়া তে স্বাভাবিক করে তুলতে। ”

__ “ আমি তো কিছুই করিনি তেমন, উনি খুব রেগে আমাকে বের করে দিয়েছে। ”

__ “ কেনো কি হয়েছে? ”

__ “ ভয় পেয়েছিলাম খুব তাই। ”

__ “ কিসের ভয়? ”

__ “ ও কিছুনা, পরে বলবো, চলো যাই। ”

__ “ ওকে চলো তাহলে। ”

রিমি আর নিরু সমবয়সী, দু’জনে ই একাদশ শ্রেণী তে পড়ে কিন্তু কলেজ ভিন্ন। তাই ওদের ননদ ভাবীর সম্পর্ক বেশ জমে উঠেছে।
,
দুপুরে যারা বাসায় আছে সবাই কে ডাক দিলো শুভর মা, বাসায় যতজন থাকবে সবাইকে এক সাথে খেতে বসতে হয়। ডাইনিং টেবিলের এক পাশে শুভর বাবা, পাশে মা, অপর পাশে সাগর, তার পাশে রুবি, শুভর মায়ের পাশে রিমি নিরুকে নিয়ে বসেছে, শুভ পরে এসে বাধ্য হয়ে নিরুর পাশে বসে। খাওয়ার সময় সবাই চুপচাপ খেয়ে নেয় কিন্তু আজ শুভর বাবা রান্নার প্রশংসা করে, এতে রুবির জ্বলে যাচ্ছে, রিমি তো খুব খুশি হয়েছে আর প্রশংসা করছে “ এমন খাবার কখনো খায়নি, ইয়াম্মি ”।
__ শুভর মা বলে “ দেখতে হবেনা রান্না টা কার। ”

__ “কে রান্না করেছে আম্মু? ” রিমি জেনেও বলে।

__ “ কে আবার? আমাদের লক্ষ্মী নতুন বউ। ” শুভর মা বলে।

__ “ বড় ভাবী নাকি? ” রিমি জিজ্ঞেস করে।

__ “ ওর মতো বড়লোক এর মেয়ে রান্না জানবে নাকি, যার তার কাছে রান্না জিনিস টা কখনো ভালো হয় না।
বুঝলি বোকা মেয়ে, এটা আমার ছোট বউমার রান্না ”

__ “ হুহহহ, রান্না করে মনে হচ্ছে বাড়ি কিনে নিয়েছে। ” মনে মনে রুবি বলছে।

__ “ আম্মু, রুবিও ভালো রান্না পারে। ” সাগর বলে উঠে।

__ “ কই ঘর থেকে তো একবার ও বের হলো না, বাসায় যে শ্বশুর শাশুড়ি আছে, কই দেখা ও তো করতে আসেনি। ভদ্রতা বলেও তো কোন কথা থাকে নাকি। বড় ঘরে জন্ম নিলেই বড় হওয়া যায় না, ওর বোন টা কে দেখেও ওর শিখার আছে। ” শুভর বাবা বলে।

নিরু চুপচাপ খাবার সামনে নিয়ে বসে সবার কথা শুনছিলো, শুভ এতক্ষণ নিরুর দিকে আড়চোখে দেখছিলো, নিজের বউয়ের প্রশংসা শুনে কোথায় খুশি হবে উল্টো মেজাজ গরম করে বললো

__ “ রান্না ভালো হয়েছে, সবাই খাবে, খাবার টেবিলে এতো কথা বলার কি আছে? এতো সুনাম করিও না, অহংকার বেড়ে যাবে। ” রাগ দেখিয়ে খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে চলে যায় শুভ।

খাবার টেবিলে থাকা শুভর খালামণি বলে উঠে
__ “ তাই তো, এতো সুনাম করার কি আছে আপু, বউ বিগড়ে যেতে কতক্ষণ। আআপনাদের মন ভুলাচ্ছে বুঝছেন না কেনো? ”
__ “ আচ্ছা বাদ দে, এখন খেয়ে ঘরে যা। ” বোন কে বলে শুভর মা।

সবাই খাওয়া দাওয়া করে রুমে চলে যায়, বিয়ে বাড়ি বলে আত্নীয় সজন আছে কয়েকজন। নিরু রিমির সাথে রিমির রুমে গিয়ে বসে বসে কাঁদতে থাকে।
__ “ কি হয়েছে, কাঁদছো কেনো? ঘরে যাবে না? ” রিমি

__ “ নিষেধ করেছে উনার সামনে যেতে ”, বলেই কান্না শুরু করে।

,
শুভর খালা শুভকে ঘরে একা পেয়ে গল্প জমায়, গল্পের এক পর্যায়ে বলে

__ “ এই শুভ, আগে তো ভেবে দেখিনি, এখন তো চিন্তায় আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। ”

__ “ কি হয়েছে সেটা খুলে বলো। ”

__ “ তোর বউ মানে নিরু, কাল যে তোর উপরে পড়লো, কিভাবে পড়ে গেছে জিজ্ঞেস করেছিস কিছু? ”

__ “ না সেভাবে কিছুই বলেনি, ছোট মেয়ে পা পিছলে পড়ে যেতেই পারে। ”

__ “ না রে এতো সহজে নিস না ব্যাপার টা, নিশ্চিত ওই মেয়ে ছাদে কারো সাথে অকর্ম করতে গিয়েছিলো, নইলে বিয়ে বাড়ির এতো মানুষ রেখে ছাদে কেনো যাবে বল? ”

__ “ তুমি এসব কি বলছো? যা বলার ভেবে বলছো কি? ” একটু রেগে জিজ্ঞেস করে।

__ “ ওরে বাপরে! আমাকে রাগ দেখাচ্ছিস কেনো? বউকে ডেকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোতলায় তাহলেই ধরে নিবি কোন অকর্ম করতে গিয়ে পড়ে গেছে। ”

__ শুভর মেজাজ চরম পর্যায়ে খারাপ হয়ে গেছে “ এখন যাও তো তুমি, পরে আসিও, ভালো লাগছেনা কিছুই।”

__ “ কথা গুলো ভেবে দেখিস বাবা ”।

__ “তুমি কি যাবে? ” চিৎকার করে উঠে শুভ

ভদ্রমহিলা আর কথা বলার সুযোগ না নিয়ে ভালোই ভালোই রুম থেকে কেটে পড়ে। এদিকে শুভর মাতগা গরম হয়ে গেছে। মাথা গরম করে নিরু বলে চিৎকার দেয়।

দুই ঘর পরে রিমির ঘর, ডাক শুনে ভয়ে ভয়ে নিরু এগিয়ে আসে।
শুভ নিরুকে দেখে দরজা লাগিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে, আরেক হাত দিয়ে থুতনিতে চেপে ধরে জিজ্ঞেস করে

__ “ কাল ছাদে কি করতে গিয়েছিলে? ”

__ “ কক ক খ ন ”

__ “ ন্যাকামি করো? ” থুতনি আরোও জোরে চাপ দিয়ে বলে “ যা জিজ্ঞেস করছি তার সোজা উত্তর দিবে বুঝলে? ”

__ “ লা আ আ আ গছে তো ”

__“ লাগুক, সত্যি কথা বলো বলছি। ”

__ “ আমি বলছি তো, ছাড়ুন বলছি। ”

__ “এভাবেই বলো। ”

__ “ কাল আপুর আম্মু আমাকে খুব বকে, গালি দেয়, আমার পরিচয় বিয়ে বাড়ির মানুষের সামনে কিভাবে দিবে তাই আমি ছাদে গিয়ে লুকিয়ে ছিলাম। ”

__ “ তাহলে পড়লে কিভাবে ? ”

__ “ ছাদে যখন একা ছিলাম, হাটতে হাটতে পা ফসকে পড়ে যায়। ”
শুভ নিরুকে চড় মেরে দেয়।
__ “ অসভ্য, চরিত্রহীনা, মিথ্যে বলতে লজ্জা করছে না। কাল পড়ে যাওয়ার সময় তোমার গায়ে ওড়না ছিলো না। যদি চরিত্রহীনা না হতে তো সকাল থেকে আমার আদর উপেক্ষা করতে না। ”

__ “ আপনি ভুল বুঝছেন। ”

__ “ তো সত্যিই টা কি? ”

__ “ আমি যখন ছাদে ছিলাম তখন, রাকিব এসেছিলো। বিয়ে বাড়ির চিৎকারে আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছিলো, আমি পিছনে সরতে গিয়ে কখন ধারে চলে গেছিলাম খেয়াল করিনি, হটাৎ সে ওড়না ধরে টান দেয়, নিজেকে সামাল দেয়ার আগেই আমি পড়ে যায়। ভেবেছিলাম মরেই গেছি আমি। কিন্তু আপনি বাঁচাবেন বুঝতে পারিনি। আমি চরিত্রহীনা নই, প্লিজ বিশ্বাস করুন, তখন আপনাকে আমি ভয় পেয়ে দূরে সরে গিয়েছিলাম। আমার খুব ভয় করছিলো তাই , কাঁদতে শুরু করেছিলাম। সত্যিই আমি কোন দোষ করিনি প্লিজ বিশ্বাস করুন। ” খুব কান্না করতে থাকে নিরু।

শুভ আর কথা না বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়। নিরু নিষ্পাপ সেও জানে কিন্তু ওকে বকাবকি করাতে এখন অপরাধ বোধে ভুগছে। সন্ধ্যা গড়িয়ে শুভ রুমে ফিরে আসে, নিরু তখন ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে যেখানে রেখে গিয়েছিলো সেখানেই।

চলবে…..

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_4/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/প্রেমের_পরশ-পার্ট_5/

প্রেমের_পরশ  পার্ট_4

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_4

জামিয়া_পারভীন

শুভ রুমে ঢুকে নিরুকে কম্বলের নিচে দেখে বলে
__ “ কি ব্যাপার, রাত্রে কি ঘুমাওনি নাকি, নতুন বউয়ের এতো ঘুমালে কি চলে। ”

__ কম্বলের নিচ থেকে মাথা বের করে বলে “ আপনার মাথা টা একটু এগিয়ে দেন প্লিজ। ”

__ “ কেনো, কি করবে? ”

__ “ আপনাদের মনে কি দয়া মায়া নাই নাকি? আমি অসহায় একটা মেয়ে , সেইইই কাল সকালে খেয়েছি, এরপর কলেজের মারামারি, হোস্টেল বন্ধ, বাসায় গিয়েও উপোস, রাত্রেও কিছু দিলেন না, আর কতক্ষণ না খাইয়ে রাখবেন বলেন? ”

__ “ ওরে বাবা হয়েছে হয়েছে, এবার খেয়ে উদ্ধার করো। ”

__ নিরু শুভর হাতের দিকে এতক্ষণ খেয়াল ই করেনি, ফলের প্যাকেট দেখে লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে ফল নিয়ে খেতে শুরু করে। শুভ মনেমনে বলে “ পাগল মেয়ে একটা, ওর বাচ্চামি তে কি আমি ওর প্রেমে পড়ে যাচ্ছি নাকি। ” এরপর নিরুকে বলে

__ “ একাই খাচ্ছো? আমি তো দু’জনের জন্য আনলাম। ”

__ “ কেনো? আপনি খান নি? ”

__ “ কখন খেলাম? কাল দুপুরে খেয়ে বের হয়েছি। এখনো তো খেতে পারলাম না। ”

নিরু লাফিয়ে এসে শুভর হাত ধরে টেনে বসিয়ে দেয়, হাতের ফলের প্যাকেট এগিয়ে বলে
__ “ খেয়ে নিন। ”

__ “ হুম ”

বাসার পরিস্থিতি কাল থেকে ভালো নেই, একের পর এক ঝামেলা তে সবার মন খারাপ হয়ে আছে। এরই মাঝে রিমি এসে বলে

__ “ ভাইয়া, নিচে চলো, সবাই তোমাদের জন্য ওয়েট করছে। ”

__ “ তুই খেয়েছিস? ”

__ “ হুম খেয়েছি, তোমাকে ও খেতে ডাকছে। ”

__ “ আসবো, তুই রেডি হয়ে নে। ”

__ “ ওকে তাড়াতাড়ি আসো। ”
নিরুকে উদ্দেশ্য করে বলে “ ভাবী তুমিও যাবে নাকি? ”
__ “ না ও আজ কোথাও যাবেনা, ঘরেই থাকবে। ” নিরুর কিছু বলার আগেই শুভ বলে।
রিমি রুম থেকে বের হয়ে যায়। শুভ আর নিরু নিচে নামে, নিরু বোন কে নিচে দেখতে পেলো, বোনের পাশে একজন বসা ছিলো তাকে দুলাভাই মনে করে নেয়।

শুভর মা বাবা নাস্তায় বসেছিলো তাই নিরু এবার সালাম দেয়নি, শুভ একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে, নিরু দাঁড়িয়ে আছে দেখে শুভর মা বলে

__ “ কি ব্যাপার বউমা, দাঁড়িয়ে কেনো? বসো শুভর পাশে। ”

__ “ না মানে, গুরুজনের সামনে বসতে নেই , আপনাদের খাবার তুলে দিই।”

__ “ শুনো বউমা, এই বাড়িতে খাবার তুলে দেওয়ার লোকের অভাব নাই। তুমি আমাদের সাথে বসে খেতে পারো। এটা এই বাড়ির নিয়ম সকালে আর রাত্রে সবাই একসাথে বসে খাওয়া। তুমি নতুন মানুষ কিছুই জানো না তাই বলে দিচ্ছি। ”
__ “ জ্বী আচ্ছা ”

শুভর পাশে বসে পড়ে নিরু, কিন্তু নিরুকে দেখে রুবি জ্বলছে, আর মনে মনে বলছে “ এই ছোটলোক কিনা আমার সাথে এক টেবিলে বসে খাচ্ছে। ” সবাই নিশ্চুপ খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ করে যে যার মতো উঠে গেলো। এদিকে রিমি রেডি হয়ে বের হয়ে আসে, শুভ রেডি ছিলো আগে থেকে, রিমি কে নিয়ে বের হয়ে যায় শুভ, আর নিরু ঘরে একেলা বসে বসে বোরিং হচ্ছে। এই সময় ওর বোন এসে ঢুকে।

__ “ কিরে অভদ্র মেয়ে, তোর এতো বড় সাহস যে আমার সংসারে এসে ঢুকেছিস? ”

__ “ তোমার বরের সংসারে তো আর সতীন হয়ে ঢুকিনি আপু। তোমার দেওরের সাথে বিয়ে করেছি। ”

__ “ কি বললি তুই, যত বড় মুখ না তত বড় কথা। ” বলে নিরুকে মারতে গেলে নিরু হাত ধরে নেয় রুবির।

__ “ আপু, এতো দিন তো অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি, কারণ আমি অনাথ ছিলাম। কিন্তু আর সহ্য করবোনা কারণ আমার জীবনে সব চেয়ে ভালো মানুষ কে স্বামী হিসেবে পেয়েছি। যাই হোক, তুমি বেশি কষ্ট দিতে এসোনা আমায়, নইলে উনাকে সব বলে দিবো। ”

রুবি প্রচন্ড রাগ করে নিরুর ঘর থেকে বের হয়ে নিজের ঘরে গিয়ে মা কে ফোন দেয়। রিসিভ হতেই

__ “ আম্মু, জানো ওই ছোটলোক নিরু কিনা আমার সংসারে ঢুকেছে। ”

__ “ কি বলিস, কাল তো ওকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলাম, কিভাবে তোর সংসারে গেলো। ”

__ “ আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা, কাল নাগিনী শুভকে যাদু করেছে, শুভর বউ হয়ে বাসায় এসেছে, আজ আমি শাসন করতে গেলে আমাকেই চোখ রাঙিয়ে দেয়। আম্মু কিছু তো করো আর তো সহ্য হচ্ছেনা আমার। ”

__ “ আমি তো নিজেই বুঝছিনা কিভাবে কি হলো?”

__ “ আজ সকালে কিভাবে যেন আমার শাশুড়ি মা কেও পটিয়ে নিয়েছে , জানো আমার সাথে আমার শ্বশুর শাশুড়ি কেউ কথা বলেনি অথচ ওকে বউমা বলে ডাকছিলো। আমার তো ডাক শুনেই মনে হচ্ছিলো ওকে পুতে ফেলি। ”

__ “ আরে শুন শুন, ওর ব্যবস্থা আমি পরে করছি, কিছুদিন ওকে সহ্য কর, আর সাগর কে বশে রাখার চেষ্টা কর। সব ঠিক হয়ে যাবে। চিন্তা করিস না তুই একদম। ”

__ মায়ের সাথে কথা বলে রুবি ভরসা পেলো। “ ওকে আম্মু তাহলে আমি রাখছি, তুমি দেখিও কিন্তু ”
বলে ফোন টা রেখে দেয়।
নিরু একা বসে বসে বোরিং হয়ে শুভর মায়ের রুমে চলে যায়। শুভর মা তখন পেপার পড়ছিলো

__ “ আম্মু, ঘরে বসে বসে বোরিং হয়ে যাচ্ছি, আপনার সাথে কি একটু গল্প করতে পারি। ”

__ “আজকাল কার ছেলের বউ রা কি শাশুড়ির সাথে গল্প করতে আসে নাকি। ” শুভর মা বলে।

__ নিরু শাশুড়ির পায়ের কাছে বসে বলে “ জীবনে কারো কাছে প্রথম মা ডাক শুনেছি, আপনি আমায় অনেক স্নেহ করে বউমা ডেকেছেন, আপনার কাছে এই ডাকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি, আপনার কাছে আসবো না তো কার কাছে আসবো বলুন। ”

__ নিরুর গালে হাত রেখে বলে “ ওরে আমার মেয়েটা, কিন্তু এখন তো রান্নার সময় হয়ে এলো, কি রান্না হবে সব দেখিয়ে দিতে হবে, এখন ঘরে যাও, পরে বসে গল্প করবো। ”

__ “ আম্মু, কিছু মনে না করলে আজ আমি রান্না করি। ”

__ “ নতুন মানুষ, ছোট মেয়ে, রান্না পারবেনা। ”

__ “ একবার সুযোগ দিয়েই দেখেন, সব চেয়ে বেষ্ট রান্না করবো কথা দিলাম। ”

__ “ তুমি তো পাকুনি বুড়ি দেখছি, ওকে চলো। ”

রুবি নিচে বসে সবার সাথে গল্প করছিলো তখন দেখে নিরু তার শাশুড়ির সাথে কিচেনে যাচ্ছে। এটা দেখে রুবির মাথা খুব গরম হয়ে গেলো। মনে মনে ভাবছে “ সবাইকে কি যাদু করছে নাকি? আমি এতো ফ্রি হতে পারলাম না আর শাশুমা ওর সাথে বেশি কথা বলছে। ”
তখন রুবির পাশে বসা ফুপু শাশুড়ি বলে
__ “ কিরে হিংসা হচ্ছে তোর বোন কে দেখে? ”

__ নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বলে “ হিংসা হবে কেনো? ও তো আমার ই বোন। ” কিন্তু মনের ভিতর আগুন জ্বলছে।

__ “ আরে বুঝি বুঝি, আমার ভাবী সেইই মুডী মানুষ, ওর সাথে তুই এখনো মিশতে পারলি না আর বোন কে দেখ কি সুন্দর হাসিখুশি ঘুরে বেড়াচ্ছে, এটা দেখেই তো তুই জ্বলছিস। আচ্ছা ও তোর সৎ বোন কিভাবে হলো। ”

__ “ আমি জানিনা, বাবার বউয়ের মেয়ে, কোথেকে জুটলো কিভাবে বলবো? ” একটু রাগী গলায় বলে রুবি।

__ “ ভুলে যাস না আমি তোর ফুপু শাশুড়ি, আমার কথায় একদম রাগ দেখাবিনা, নইলে ভাইকে বলে সাগরের সাথে ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করবো। ”

__ রুবির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা , তাড়াতাড়ি ফুপু শাশুড়ির সামনে বসে বলে ” সরি ফুপি, আসলে ওকে চিনিনা তো, তাই মাথা খারাপ হয়ে গেছিলো। ”

__ “আচ্ছা ঠিক আছে, যা সামনে থেকে। ” রুবি আর কিছু না বলে রুমে এসে রাগে গড়গড় করতে থাকে।

শুভ আর রিমি পছন্দ মতো শপিং করে বাসায় ফিরতে প্রায়ই দুপুর হয়ে যায়। বাসায় ফিরে রুমে গিয়ে দেখে নিরু নাই। মেজাজ টা একটু খারাপ হয় শুভর কোথায় গেলো মেয়েটা।
রিমি রান্নাঘরে ঘরে গিয়ে নিরুকে জড়িয়ে ধরে
__ “ আম্মু বললো তুমি কিচেনে, তাই সোজা চলে আসলাম। অনেক করেছো এবার ঘরে যাও তো। ”

__ “ কেনো, ঘরে কি আছে?”

__ “ আরে যাও তো, গেলেই বুঝবে। ”

__ “ ওকে, যাচ্ছি। ”
নিরু হাতের কাজ শেষ করে রুমে গেলো, শুভ বেডে শুয়ে আছে।

__ “ কি ব্যাপার, কোথায় ছিলে? ”

__ “ একা একা বোর হচ্ছিলাম তাই আম্মুর ঘরে গিয়েছিলাম। ” মাথা নিচু করে নিরু বলে।

__ “ ওকে, ওকে, এখন যাও, ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পড়বে। ”

__ “ আমি তো শাড়ি পড়তে পারিনা। ”

__ শুভ আগে নিরুকে ইউটিউব এ শাড়ি পড়ার একটা ভিডিও দেখায়, নিরু মন দিয়ে দেখে।

__ “ মনে হয়না পারবো। জিলাপির প্যাচ। ”

__ “ আরে পারবে পারবে। যাও আগে শাওয়ার নিয়ে এসো। ”

__ “ ওকে ” একটা শাড়ি নিয়ে ঢুকে যায় ওয়াশরুমে।

চলবে…………

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/?p=8228&preview=true

 

প্রেমের_পরশ পার্ট_3

0

প্রেমের_পরশ
পার্ট_3

জামিয়া_পারভীন

শুভর ঠোঁট এর স্পর্শে নিরু জেগে উঠে, শুভকে ধাক্কা দিয়ে
__ ” আপনি না কাল বর্ডার দিলেন, আমি ক্রশ করলে আমাকে শাস্তি দিবেন বললেন , এখন আপনি ক্রশ করেছেন, আপনার কি শাস্তি হবে। ”

__ শুভ চোখ বড় বড় করে বলে ” বর্ডার তোমার জন্য দিয়েছি, আমার যখন যা ইচ্ছা তাই করবো। আজ থেকে কি তোমার কথা শুনে চলতে হবে নাকি? ” নিরুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

__ ” যাহহ বাবা! এতো রাগের কি হলো? আমার জন্যই শুধু নিয়ম লাগে নাকি? এখানে নিয়ে এসে যেন আমায় উদ্ধার করে দিয়েছে, হুহহহহ এবার কাছে আসুক শুধু মজা দেখাবো, রাগ হুহহ এতো রাগ কাকে দেখাচ্ছে, সারাজীবন রাগ দেখে এসেছি, এবার আমি দেখাবো রাগ কাকে বলে। । ” একা একাই কথা বলছে নিরু।

,
বাইরে কেউ দরজা ধাক্কা দিচ্ছে, কিন্তু নিরু খুলার সাহস পাচ্ছেনা। কম্বলের নিচে চুপচাপ শুয়ে থাকে ঘুমের ভান ধরে।
শুভ কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দরজা খুলে দেয়।

__ ” ভাইয়া তোমার সাথে আড়ি, আমি তো এসেছে নতুন ভাবীকে দেখতে। ” শুভর একমাত্র ছোট বোন রিমি বলে কথা গুলি। ( শুভ সবার উপর রাগ দেখালেও এই পুচকে মেয়েটার উপরে কখনো রাগ দেখাতে পারেনা। )

__ “ভাবী দেখতে হবেনা, আগে তুই তোর এক সেট ড্রেস ওকে এনে দে তারপর দেখিস। কিন্তু কিসের আড়ি দিলি সেটা বল?”

__ ” বা রে! কাল নতুন বউ নিয়ে ঘরে ঢুকে গেলে। একবার ও কি ডেকেছিলে? ”

__ ” কাল দুজনেই ভিজে গিয়ে ছিলাম, প্রচুর ঠান্ডা লাগছিলো তাই আর ডাকিনি। ”

__ ” তাই বুঝি, নাকিইইই? ”

__ ” কি বলতে চাচ্ছিস তুই, কানের নিচে দিবো একটা, যা ভাগ। ”

__” হিহিহি ”

__ ” হাসতে হবেনা, যা বললাম তাই কর আগে। ”

__ ” হুম যাচ্ছি বাবা যাচ্ছি, এতো তাড়া দিওনা বাপু ” বলে রিমি বের হয়ে যায়।

এতক্ষণ নিরু কম্বলের নিচ দিয়ে এক চোখ বের করে দেখছিলো কি হচ্ছে না হচ্ছে। তখন শুভ বলে
__ ” কি হলো ম্যাডাম, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছেন টা কি? এখানে কি কোন সিরিয়াল চলছিলো? ”

__ ” মোটেও আমি লুকিয়ে লুকিয়ে কিছু দেখিনি। ”

__ “লুকিয়ে না দেখলে বুঝলে কিভাবে তোমার দিকে তাকিয়ে কথা বলছি ”

__ ” আ আ আ মি উনার চলে যাবার শব্দ পেয়েছি। ”

__ ” মিথ্যে বলতে ওস্তাদ, যাই হোক এখন ফ্রেশ হয়ে এসো, রিমির ড্রেস পড়ে বাইরে আসবে। ”

__ ” এই রিমি টা কে? ”

__ ” আমার ছোট বোন। ”

__ ” আপন। ”

__ ” হ্যাঁ আপন ” ভ্রু কুচকে তাকাচ্ছে।

__ ” এএএহ এতো রাগ করার কি আছে? ” আস্তে আস্তে বলছে নিরু

__ ” কিছু কি বললে? ”

__” কই না তো ” মুচকি হেসে

এরই মাঝে রিমি এসে দেখে বিছানায় একটা মেয়ে এলোমেলো চুলে একটা শার্ট পড়ে বসে আছে। কোন সাজসজ্জা ছাড়াই মেয়েটাকে পরীর মতো লাগছিলো।

__ ” ওও এই বুঝি আমার ভাবী। ” বলেই দৌড়ে গিয়ে বিছানায় নিরুকে জড়িয়ে ধরে বলে ” বুঝলে ভাবী, আমার ভাইয়ের কোন মেয়েকেই মনে ধরতো না, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি তোমার রূপ দেখে পাগল হয়ে বিয়ে করেছে। ” বলেই ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে।

__ ” একদম ন্যাকা কথা বলবিনা, এখন যা এখান থেকে। ”

__ ” ওওও এখন ওকে পেয়ে আর আমাকে ভালো লাগছেনা বুঝি ” অভিমানের সুরে বলে রিমি।

__ ” উফফফফ, আচ্ছা বস ঘরে আমিই যাচ্ছি, ওকে চেঞ্জ করিয়ে বাইরে নিয়ে আন। তোকে নিয়ে একটু শপিং এ যেতে হবে। ”

__ ” কি কিনে দিবে শুনি। ”

__ ” তোর যা খুশি নিস। ”

__ ” লাভ ইউ ভাইয়া। ” বলে ফ্লাইং কিস দেয় রিমি।

,
সাগর বিয়ে বাড়ির ঝামেলার পর নিজের ঘরেই আর ঢুকেনি। নতুন বউ ঘরে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে সাগর রুমে ঢুকে সকালে, ফ্রেশ হয়ে বের হতে চালাক রুবি পিছন থেকে সাগর কে জড়িয়ে ধরে।

__ ” আই এম সরি, আমার যে সৎ বোন আছে আমি নিজেই জানতাম না। ” ( জেনেও মিথ্যে কথা বলে সাগরের রাগ ভাঙাতে)

__ ” তোমার বাবা কি সুপার ম্যান, বাচ্চা জন্ম দিয়ে গুম করে রেখেছিলো এতোদিন। ”

__ ” আমি সত্যিই বলছি ওই মেয়েটা যে কোথা থেকে আসলো আমি জানিই না। ”

__ ” কচি খুকি তুমি, তোমার বাসায় একটা মেয়ে ঢুকে গেলো আর তুমি জানো না? ”

__ সাগরের পিঠে কিস দিয়ে বলে ” কি করে জানবো বলো, কাল তো আমার বিয়ে ছিলো, আমিতো পার্লারে সাজতে গিয়েছিলাম। ”

__ ” তা তোমার প্লান কি? ”

__ ” প্লান মানে? ”

__ ” তোমার বাবা তো লুকিয়ে দুইটা বিয়ে করেছে, তুমি কয়টা করবে। ”

__ ” কি যে বলোনা তুমি, আমি এতো খারাপ, আমাকে তুমি এই চিনলে?” বলে ন্যাকা কান্না শুরু করে রুবি।

রুবির ন্যাকা কান্নায় সাগর গলে যায়, হাজার হোক আগে প্রেমিকা ছিলো, এখন বউ, একটু তো টান থাকবেই। মাথায় হাত দিয়ে শান্তনা দেয় রুবিকে

__ ” ঠিক আছে, আর কাঁদতে হবেনা। তোমাকে মেনে নিয়েছি এটাই বড়। তোমার ফ্যামিলির কথা ভুলেও মুখে আনবেনা। ”

__ ” আচ্ছা, আমি তো শুনলাম আমার ওই সৎ বোন টা কে নাকি তোমার ছোট ভাই বিয়ে করে এনেছে। ”

__ ” হুম, ঠিকই শুনেছো, আকাশ থেকে আমার ভাইয়ের কোলে পড়লো, আর ভাই ওর রূপ দেখে গলে গেলো। ”

__ ” যাদু জানে বুঝছো, নইলে যে শুভ এতোদিন কোন মেয়ের দিকে তাকাতো না সেই শুভ বিয়ে করেছে, ভাবা যায় বলো। আমি তো এটাই বুঝছি না আমার বাবা এতো ভালো মানুষ কে ওর মা কিভাবে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছিলো, ও হয়তো বা তাই, ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছে তোমার ভাই কে। ”

__ ” তুমি ঠিকই বলেছো, ওই মেয়ে যাদু জানে। শুভ কে পটানো এতো সহজ নয়। ”
নিরু সম্পর্কে বানিয়ে বানিয়ে কথা বলে সাগরের কান পঁচিয়ে ফেলে রুবি।

,
,
রিমির থ্রিপিছ পড়ে রিমির সাথে বাইরে আসে নিরু। নিরুকে দেখে প্রথমে নিরুর চুল ধরে টান দেয় শুভ

__ ” শ্বশুর বাড়ি প্রথম এসে চুল ছেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো, অসভ্য মেয়ে, কোন শিক্ষা নাই, মাথায় কাপড় দাও বলছি। ”

__ ” উহহহহহ লাগছে তো মাথায়,
এতো জোরে চুল টেনেছেন, সব চুল পড়ে যাবে , তখন লোকে বলবে আপনার বউ নাড্ডু। হিহি ” নিরুর কথায় রিমিও হেসে ফেলে।

__ রিমি বলে শুভকে ” একদম উপযুক্ত বউ এনেছো ভাইয়া , তোমার সাথে পারফেক্ট জুটি, তোমরা শুধু ঝগড়া করবে আর আমি দেখবো। হিহিহি ”

শুভ রেগে ওইখান থেকে চলে যায়।
নিরু প্রথমে মাথায় ওড়না তুলে দেয় পরে
শুভর বাবা, মায়ের ঘরে প্রথমে নিয়ে যায় রিমি।
নিরু রুমে ঢুকে সবাইকে সালাম দেয়। রিমি মা বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় নিরুর।
__ শুভর মা নিরুর সালামের জবাব দিয়ে রিমির দিয়ে তাকিয়ে বলে ” থাক আর ন্যাকামি করতে হবেনা রিমি, ওকে ওর রুমে দিয়ে আই। ”

__ রিমি কিছু বলার আগে নিরু বলে ” কেনো মা আমি কি আপনার মেয়ে হিসেবে খারাপ ? আমার তো মা নেই, কাউকে মা ডাকিনি কখনো, আপনাকে ও কি কখনো মা ডাকতে পারবোনা। ” চোখে পানি চলে আসে নিরুর।

__ ” ঠিক আছে, ঠিক আছে আর ন্যাকামি করতে হবেনা, মা বলেই ডেকো। ” শুভর মা আবার একটু তেই ইমোশনাল হয়ে পড়ে। এরপর বলে ” আচ্ছা তুমি তোমার বাবার নাকি ছোট মেয়ে, তোমার বাবা দুইটা বিয়ে করলো কেনো ? আর তোমার মা কিভাবে মারা গেছে? ”

__ ” আমি জ্ঞান হওয়া থেকে এতিমখানায় বড় হয়েছি। এরপর আমাকে বাবা এক মেসে রাখেন, সেখান থেকেই এসএসসি দিই। এরপর তিনমাস গ্যাপে বাবা কলেজ আর হোস্টেল ঠিক করে দেন। আমি হোস্টেলে ই থাকতাম, এর বেশি কিছুই জানিনা। কাল কলেজে মারামারি হওয়াতে আমাকে বাবা বাসায় নিয়ে যান। এর আগেও মাঝে মাঝে বাসায় যেতাম কিন্তু সৎ মায়ের সামনে বাবা কখনো আদর করে না। কিন্তু বাবা আমায় খুব ভালোবাসেন। ” বলে কান্না করতে থাকে।

কথা গুলো শুনে শুভর বাবা মা দুই জনের ই নিরুর উপর অভিমান কমে যায়, কিন্তু নিরুর বাবা আর সৎ মাকে সন্দেহ করতে থাকে।

__ ” যাও বৌমা এখন ঘরে যাও, আগে তোমার কিছু কাপড়ের ব্যবস্থা করি, এরপর বের হইও। ”

নিরু রিমির সাথে বের হয়ে আসে। মনে মনে বলতে থাকে
__ ” ইসসস ক্ষুদা তে পেট জ্বলে যাচ্ছে, এরা কি খেতেও দিবেনা নাকি, ধ্যাত ভালোই লাগেনা কিছু। ”
চুপচাপ শুভর রুমে গিয়ে কম্বলের নিচে ঢুকে পড়ে নিরু।

চলবে…..

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f_3/

প্রেমের_পরশ part_2

0

প্রেমের_পরশ
part_2
জামিয়া_পারভীন

__ একে তো শীত তার উপর বৃষ্টি তে কাক ভেজা হয়ে ভিজে গাড়িতে গুটিশুটি মেরে বসে কাঁপছে নিরু, শুভর কথা শুনে জোরে জোরে কান্না শুরু করে দেয়। শুভ মনে মনে চরম বিরক্ত হয়ে গিয়েছে মেয়েটার উপর। এ কিসের টান এ পড়েছে শুভ, না পারছে রাস্তায় ছাড়তে না পারছে কাছে রাখতে।

__ শুভর বলা যায়গায় ড্রাইভার গাড়ি থামায়। শুভ গাড়ি থেকে নেমে আসে আগে।
__ ” এইযে, এবার নামুন, চলে এসেছি। ”

__ ” না, আমি আপনার সাথে যাবো না। আপনি আমার ক্ষতি করবেন। ”

__ ” কি বললে তুমি যাবে না। ” বলতে বলতে গাড়ি থেকে টেনে বের করে কোলে তুলে নিয়ে একটা বাসায় ঢুকে। নিরু ও একের পর এক কিল মারতে থাকে শুভর পিঠে তাও শুভ থামে না। বাসার গেট এ কলিংবেল দিতে একজন ভদ্রলোক বের হয়ে আসেন।

__ “তোমরা কে বাবা, এতো রাত্রে দুইজন, তাও দুজনে। ”

__ ” এইখানে কাজী সাহেব কে? তাকে ডাকুন। ” শুভ একটু কড়া মেজাজ এ বলে।

__ ” আরে আমিই তো কাজী, কি দরকার বাবা? ”

__ ” আমরা কি কাজীর কাছে লুডু খেলতে এসেছি নাকি? জলদি বিয়ের ব্যবস্থা করুন। ”

__ ” এইভাবে, এতো রাতে বিয়ে, সাক্ষী কোথায়। ”

__ ” আপনার বাড়িতে লোক নাই, ওদের সাক্ষী দিয়েন দিবেন, বাকিটা ব্যবস্থা করেন তাড়াতাড়ি। ”

শুভ নিরুকে এবার নামিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে ভিতরে গিয়ে বসে পড়ে। নিরু হতবাক হয়ে গেছে বিয়ের কথা শুনে।

__ কাজী সাহেব বলেন ” আচ্ছা আপনারা কি পালিয়ে এসেছেন?? ”

__ ” তা জেনে আপনি কি করবেন। ”

__ ” ওহহ আচ্ছা আচ্ছা! বরের নাম কি?

__ ” আসাদুজ্জামান শুভ ”

__ ” কনের নাম কি? ”

__ ” এই তোমার নাম কি বলো? ” নিরু কে উদ্দেশ্য করে শুভ বলে।

__ ” এ কেমন কথা! বিয়ে করতে এসেছেন বউয়ের নাম জানেন না? ” কাজী সাহেবের তাচ্ছিল্যের হাসি।

__ কাজীর উদ্দেশ্যে বলে ” এই আপনার প্রব্লেম কি? আপনি কথা কম বলুন আর কাজ বেশি করুন। ” এবার নিরুর দিকে তাকিয়ে
” এই মেয়ে তোমার নাম বলো? ”

__ ” জ্বী নিরুফার জাহান, সবাই নিরু বলেই ডাকে। ”

বিয়ের সব কাজ কম্পলিট করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। নিরু কি বলবে বুঝতে পারছেনা, তাই চুপচাপ থাকে।

বাসায় পৌঁছে শুভর সাথে নিরু কে দেখে সবার চোখ কপালে উঠে। বিয়ে বাড়িতে ঝামেলা হবার পর বাসর ঘরে বউ পাঠিয়ে দিয়ে সবাই ড্রইং রুমে আলোচনা করছিলো। তখনি শুভ বউ নিয়ে বাড়ি ঢুকে।

__ ” এই শুভ, সাথে এটা কে? আর এইভাবে ভিজলি কিভাবে? ঠান্ডা লাগবে তো। ” শুভর মা বলে।

__ ” এই মেয়েকে নিয়ে এসেছিস যে? কি প্রব্লেম তোর “। শুভর ভাই সাগর বলে।

__ ” কিরে কিছু বলছিস না কেনো? ” শুভর বাবা

__ ” তোমাদের ছোট ছেলের বউ নিরু। আর কিছু কারোর জানার আছে? এবার সামনে থেকে সরো। ”

এ কথা বলে নিরুর হাত ধরে টানতে টানতে নিজের ঘরে নিয়ে যায় শুভ। বাসার সবাই আর শুভর সামনে কথা বললো না, কারণ শুভর রাগ আর জেদ সবার জানা আছে। শুভ চোখের আড়াল হতেই

__ ” এই পেত্নী টা শুভ ঘাড়ে টুপ করে পড়লো, আর শুভ ওকে নিয়ে চলে এলো। ” শুভর খালামণি বলে।

__” আহহহ স্নেহা! অনাথ মেয়ে, দেখতেও ভালো, শুভ যদি মানিয়ে নিতে পারে আমাদের আপত্তি কোথায়। ” শুভর বাবা ধমকের শুরে বলে।

__ ” ওহহহ তাহলে আমাদের কোন কথাই বলার থাকেনা, হুহহহ” বলে রুম থেকে বের হয়ে আসে শুভর ছোট খালামনি স্নেহা।

__ ” ওই মেয়েটাকেই ওর বিয়ে করা লাগতো বাবা? এমনিতেই একটা মেয়েকে এনে ফেঁসে গেছি, ওই মেয়েটা কেও কি আনা লাগতো। ” সাগর বলে।

__ ” মেয়েটা দেখতে কিন্তু সুন্দরী, বউমা পছন্দ হয়েছে, শুভর চোখ আছে বলতে হয়। ” শুভর মা

শুভ নিরুকে ঘরে নিয়ে এনে হাত ছেড়ে দেয়। শুভর নিজের একটা শার্ট, আর প্যান্ট এগিয়ে দেয় নিরুর দিকে

__” যাও আজকের মতো এগুলো ই পড়ে আসো। কাল নতুন জামাকাপড় সব পাবে। ভিজা কাপড়ে এতক্ষণ থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে। ” নিরুকে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে নিজেও চেঞ্জ করে নেয়। একদম ঠান্ডায় জমে গেছে। নিরু ওয়াশরুমের দরজা খুলতেই শুভ বলে

__ ” প্রচুর ঠান্ডা বাইরে, আমারও ঠান্ডা লেগেছে খুব। তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসো,
আমিও যাবো ওয়াশরুমে। ”

__ নিরু তাও দাড়িয়ে আছে।

__ শুভ গিয়ে নিরুর হাত দিয়ে টান দিয়ে বের করে ” কি ব্যাপার, কথা শুনতে পাও না? ”

__ নিরু শুধু শার্ট পড়ে, তাই লজ্জা করে বের হচ্ছিলো না। শুভর কাছে আসাতে মাথা নিচু করে ফেলে। উত্তর না পেয়ে নিরুকে সরিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় শুভ। কিছুক্ষণ পর শুভ বের হয়ে দেখে নিরু দাঁড়িয়ে আছে।

__ ” কি ব্যাপার, দাঁড়িয়ে আছো কেনো? ”

__ ” কোথায় যাবো? ”

__ ” এতো বড় বিছানা দেখতে পাচ্ছোনা, নাকি কানা। ”

__ ” আসলে ”

__ ” কি আসলে ”

__ ” ভয় লাগছে? কখনো ছেলে মানুষের ঘরে থাকিনি তো! ”

__ ” কি বললে তুমি? এসো আমি তোমার ভয় ভাঙায়। ” বলে শুভ এগিয়ে আসে। নিরু পিছনে সরতে থাকে ভয়ে, শুভ এসে নিরুকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ” সবাই আমাকে ভয় করে আর তুমি আমার মুখে মুখে তর্ক করছো তাইনা। ” বলে হাত ধরে টেনে এনে বিছানায় ফেলে দেয়। বিছানার মাঝে কোলবালিশ দিয়ে বলে ” তোমাকে বিয়ে করেছি বলে স্ত্রীর অধিকার চাইতে এসোনা কখনো। মরতে চাইছিলে বিধায় বাঁচিয়েছি, এই বাসায় রাজরানী হয়ে থাকবে কিন্তু স্ত্রী মর্যাদা আমার কাছে পাবেনা। যাও বিছানা ভাগ করে দিলাম, ভাগ ক্রশ করার চেষ্টা করবেনা। আজ প্রচুর ঠান্ডা, কম্বল একটা সো এখানেই থাকতে তুমি বাধ্য। কাল থেকে সোফায় ঘুমাবে। ” কথাগুলো খুব রাগের সাথে বলে শুভ। নিরু ভয়ে আর কথা না বলে শুয়ে পড়ে। শুভ আর কথা না বাড়িয়ে অপরপাশে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে যায়। নিরু কাঁদতেও পারছেনা ভয়ে কিন্তু প্রচুর ঠান্ডায় জমে গেছে। এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে শুভ। রাত্রে হটাৎ শুভর ঘুম ভেঙে যায় বিছানা কাঁপছে খুব। পাশ ফিরে দেখে নিরু খুব কাঁপছে। বুঝতে পারে জ্বর এসেছে নিরুর। এতক্ষণ ভিজেছে, একটু মায়া জাগে মেয়েটার উপর। বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় নিরুকে। নিজের শরীরের গরমে যেন মেয়েটা একটু আরাম পায়। শুভ ও খেয়াল করে কাঁপুনি একটু কমেছে। আরোও চেপে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে শুভ।

সকালে শুভর ঘুম ভাঙে, কারোর গমম নিঃস্বাসের অনুভূতি তে শুভর হার্টবিট কিছুটা বেড়ে যায়। চোখ মেলে তাকাতে যেন চোখের সামনে ঘুম্নত অপ্সরীকে দেখছে। মায়াবী মুখ, নিষ্পাপ চেহেরা শুভকে আরোও কাছে টানছে। একটু একটু করে ঠোঁট নিরুর ঠোঁটের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। নাহ আটকাতে পারছেনা নিজেকে, গভীর আকর্ষণে টানছে শুভকে।

চলবে….

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_1/

https://golpopoka-4ad355.ingress-bonde.easywp.com/boro-golpo/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0_%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%b6-part_2/

প্রেমেরপরশ part_1

0

প্রেমেরপরশ ____ #রোমান্টিকপ্রেমেরগল্প হবে♥
part_1
জামিয়া_পারভীন

_____ নিরু কাউকে না জানিয়ে বাসায় ফিরে আসাতে তার সৎ মা একটা রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়েই বললো ” কিরে অলক্ষ্মী, কাউকে না জানিয়ে বাসায় ফিরলি কিসের জন্য? আজ আমার মেয়েটার বিয়ে , আর তোকে কি আজকেই আসতে হলো, এখন আমি সবার সামনে তোর পরিচয় দিবো কিভাবে? তোর জন্য আমার মেয়ের বিয়ে যদি ভাঙে তাহলে তোকে জ্যান্ত খুন করে পুতে দিয়ে আসবো মনে রাখিস। ” কথাগুলো রাগে গজগজ করতে করতে বলে।

__ ” আসলে আজ কলেজে মারামারি হয়েছে। তাই সবাই কে হোস্টেল ছাড়তে বলেছে? বাসায় না আসলে আমি কোথায় যেতাম আম্মু। আমার তো যাওয়ার আর যায়গা নেই। ” মাথা নিচু করে কথা গুলো বলে নিরু।

__ ” হয়েছে থাক, তোকে আর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলতে হবেনা। তুই তো একটা কুলক্ষ্মী, আমার মেয়ের যদি কিছু হয় তাহলে তোর খবর খারাপ করে দিবো। ” রাগের জন্য ফরসা গাল পুরোই লাল হয়ে গেছে লুতফা বেগমের।

__ ” আমি আব্বু কে জানিয়েই এসেছি আম্মু, আর আমি তোমাদের কারোও ক্ষতি করবোনা। চিন্তা করিওনা তোমরা আমি সন্ধ্যার আগেই ছাদে যাবো। যতক্ষণ আপুর বিদায় না হবে ততক্ষণ আসবোনা নিচে। ” কাঁদতে কাঁদতে বলে কথাগুলো।

__ ” আহহহ ন্যাকা হুহ। ” বলে জোরে দরজা খুলে বের হয়ে যান।

__ আজ নিরুর বোনের বিয়ে, ” ইশ যদি লিজা আপু আপন বোন হতো তাহলে বিয়েতে কত্ত মজা করতাম। আমার যদি একটা মা থাকতো তাহলে যে কতো আদর করতো । আজ আমার আপনজন বলে কেউ নেই। আমার মা নাই বলে কি কখনো সুখ পাবোনা। ” এইসব ভেবে কান্না করতে থাকে নিরু।
” কি নেই আমার বাবার, সব কিছু আছে। বাড়ি গাড়ি সম্পত্তি সব তো আছে তোমার। তাহলে কেনো তোমার এই মেয়েটার দুঃখ বুঝোনা? বাবা কোথায় তুমি? একটু দেখে যাও না আমায়। কখনো তো একটু ও আদর করোনা। আমার মা নেই বলে আমাকে এতো কষ্ট দাও কেনো? ” বুকের ভিতর এক চাঁপা কষ্ট নিরু কে চিরেচিরে খাচ্ছে।

এরই মাঝে মাগরিবের আজান হচ্ছে। নিরু ফ্রেশ হয়ে ওজু করে মাগরিবের নামাজ পড়ে বাড়ির পেছনের সিড়ি বেয়ে ছাদে চলে যায়। দোতলার ফ্লাট টা কি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। চারিদিকে এতো লাইটিং, আলোয় ঝলমল করছে চারিদিক। ” আহ! সবার জীবন কতো ই রঙিন, শুধু আমার জীবন টাই আঁধার। ” বিরবির করে বলে নিরু। কিছুক্ষণ পর গাড়ির হর্ণ শুনতে পায় নিরু, বুঝতে পারে বর এসেছে। ” সবাই মিলে বর এর সাথে কতো মজা টাই না করছে। ইশ আমি যদি মজা করতে পারতাম । ” এক চাঁপা যন্ত্রণায় ভিতর টা হুহু করে উঠে।

কিছুক্ষণ পর কারো পায়ের শব্দ শুনতে পায় নিরু, চোখ টা মুছে ফেলে, খুব স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করে।
__ ” কিরে নিরু, একা একা ছাদে কি করছিস ” বলতে বলতে ছাদের দরজা টা লাগিয়ে দেয় রাকিব। রাকিব নিরুর ফুপাতো ভাই। স্বভাব চরিত্র নিরুর মোটেও ভালো লাগেনা তাই সাধারণত এড়িয়ে চলে। আর আজ সুযোগ পেয়েই চলে এসেছে।

__ ” আমি এখানে আছি তোমাকে কে বললো ? ” রাগী স্বরে বলে নিরু।

__ ” আরে, এতো রাগ করার কি আছে। সবাই তো বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত, তাই আমি তোমাকে নিয়ে ব্যস্ত হতে চলে আসলাম। ” শয়তানি হাসি দিয়ে কথা গুলো বলতে বলতে এগিয়ে আসছে রাকিব।

__ ” আর এক পা এগুলেই আমি কিন্তু চিৎকার দিবো। ” কিছুটা ভয় পেয়ে যায়, পিছনের দিকে সরে যেতে যেতে ছাদের কিনারে চলে আসে।

__ ” বিয়ে বাড়ি, এতো জোরে গান বাজছে, এতো হৈচৈ চারিদিকে, তোমার চিৎকার টা শুধু আজ আমিই শুনবো আর উপভোগ করবো। হা হা হা ” পৈশাচিক আনন্দ রাকিবের মনে।

__ নিরু পেছনে সরতে সরতে বলে ” একদম ভালো হবেনা কিন্তু আ আ আ আ আ আ ” রেলিং খুবই অল্প ছিলো বলে ছাদ থেকে পড়ে যায় নিরু।

চিৎকারের শব্দে মাথা টা উপরে করতেই কাউকে পড়ে যেতে দেখে শুভ। কিছু বোঝার আগেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে ধরে ফেলে মেয়েটিকে। নিরু কিছুক্ষণ গলা জড়িয়ে ধরে থাকে ছেলেটির। কিছুক্ষণ দুজনের নিরবতা। নিরু বুঝতে পারছেনা সে ছাদ থেকে পড়ে মরে গেছে না বেঁচে আছে। আর শুভ বুঝতে পারেনি এটা কি হলো কিন্তু মেয়েটার চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে শুভ।

চারিদিকে হৈচৈ এ দুজনে বাস্তবে ফিরে আসে, নিরু বুঝতে পারে সে মরেনি এই যাত্রায় বেঁচে গেছে। কোল থেকে নামে কিন্তু খেয়াল করে গায়ে ওড়না টা নাই। দুই হাত সামনে নিয়ে আনে, জানুয়ার টা পড়ে যাবার সময় ওড়না টা নিয়ে নিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকতেও ইতস্তত বোধ করছে। এতক্ষণ ছেলেটার বুকের সাথে লেপ্টে ছিলো কিন্তু এখন দাঁড়াতে ও পারছেনা। শুভ খেয়াল করে নিজের শেরওয়ানির সাথে থাকা কোর্ট টা খুলে পড়িয়ে দেয় নিরুকে। চারিদিকে বিভিন্ন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যে। একেকজন একেক কথা বলছে।

__ ” ছিঃ ছিঃ , আজব কান্ড, একেবারে পর পুরুষের গায়ে। ”

__ ” কি কুলক্ষ্মী মেয়েরে বাবা, বিয়েতে কোন অশান্তি হবে না তো। ”

__ ” তা কোথেকে উড়ে আসলো এই মেয়ে, আমরা তো চিনি না।”

__ ” হবে হয়তো কোন ভিখারী, বড়লোকদের বিয়েতে চলে আসছে। ছেলে পছন্দ হয়েছে বলে পেত্নীর মতো ঝুলে পড়েছে। ”

এতক্ষণে নিরুর সৎ মা এসে নিরুকে মারতে থাকে।
__ ” অলক্ষ্মী, শেষ পর্যন্ত বিয়েতে অশান্তি করেই ফেললি। মরিস না কেন মুখপুরি। তুই মরলে এই সংসার এ শান্তি ফিরবে, তার আগে না। ”

এতক্ষণে শুভ মুখ খুলে
__ ” স্টপ ইট, হচ্ছেটা কি? মগের মুল্লুক নাকি, যে যা খুশি করতে থাকবেন? ”

__ ” আহ লুতফা! বেশি সিনক্রিয়েট করো না। ওকে ওর ঘরে বন্দী করে রাখো। ” এতক্ষণে নিরুর বাবা আফজাল হোসেন এসে কথা গুলো বলে।

লুতফা নিরুকে টেনে নিয়ে যেতে থাকলে শুভ বলে
__ ” আগে বলুন মেয়েটা কে? কি হয়েছিলো? এরপর ওকে নিয়ে যাবেন। ”

__ ” আসলে ও ওও আমার ছোট মেয়ে। ” মুখ নিচু করে বলে আফজাল হোসেন।

__” বাহ বাহ! আপনাদের নাকি একমাত্র মেয়ে, এখন আরেকটা উদয় হলো কিভাবে? আর কতো কি লুকিয়েছেন? ” খুব গম্ভীর ভাবে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে শুভ।

একেএকে বরপক্ষের সবাই বের হতে থাকে। ঘটনা শুনে দেখে সবাই ছিঃ ছিঃ করছে। কিন্তু ততক্ষণে বিয়ে পড়ানো হয়ে গেছে। কিন্তু বরপক্ষের সবাই মেয়ে নিয়ে যেতে চাইছেনা।

__ ” আসলে নিরু হোস্টেলে থাকে তো , তাই ওর কথা মনেই থাকে না।” হাসতে হাসতে বলে আফজাল হোসেন।

__ কি সুন্দর গুছিয়ে মিথ্যে বলেন আপনি, ছিঃ ছিঃ, নিজের মেয়ের নাম্বার বলতেও ভুল করেন। ” বরের বাবা আব্দুর রহমান সাহেব বলেন।

__ ” নাহ দুলাভাই, এই বাড়ির মেয়ে ঘরে তুলবো না। ” বরের খালা বলে।

__ ” অসম্ভব ব্যাপার, যেই বাড়িতে এতো ঘাপলা সেই বাড়ির সাথে কিসের আত্মীয়তা? ” বরের চাচা বলে এই কথা।

সবার চোখেমুখে রাগ দেখা যাচ্ছে, বর ও বের হয়ে এসেছে, নিরুর বোন ও বের হয়ে এসেছে ।

__ ” এতো বছর প্রেম করে বিয়ে করতে আসলাম, আর এই বাড়িতে এতো গলদ, ছিঃ আগে জানলে রিলেশন ই করতাম না। ” বর বলে বরের বাবার উদ্দেশ্যে।

__ কনে ওর মায়ের বুকে মাথা লুকিয়ে ন্যাকা কান্না জুড়ে দিয়েছে ” কিছু হবেনা মা, দেখছি আমি ” ন্যাকা শান্তনা দিচ্ছে লুতফা বেগম।

নিরু বুঝতে পারছে যার উপরে পড়েছে সে বরের বাড়ির লোক। সবার সামনেই দৌড়ে গিয়ে ছেলেটার পা জড়িয়ে ধরে। বলতে থাকে

__ ” প্লিজ, আমার বোনকে একলা রেখে আপনারা যাবেন না। ” কান্না করতে থাকে।

__ ” আরে কি করছেন পা ছাড়ুন। ”

__ ” আমার জন্য আমার বোনের কোন ক্ষতি হোক আমি তা কখনোই চাইনা। দয়া করে আপনারা কেউ আমার বোন কে রেখে যাবেন না। ”

__ ” আরে কি আশ্চর্য, আপনি উঠুন বলছি, আচ্ছা আপনারা সবাই কি ন্যাকা। পর পুরুষ এর পা ধরতে লজ্জা করে না? বাপ মা কিছুই শিখায়নি নাকি?

__ এতো খারাপ কথা শুনে পা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে ” আমার মা নেই। জন্মের সময় মরে গেছে, তাই সবাই আমায় অলক্ষ্মী বলে। ক্ষমা করবেন ” কথাগুলো কান্নায় জড়িয়ে যাচ্ছিলো।

__ এভাবে আসলেই বলা উচিৎ হয়নি শুভর। নিজেই নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছে, সরি বলতে যাবে তার আগেই মেয়েটা অনেকটা দূরে চলে গেছে। ওর সৎ মা ওকে জোরে একটা চড় মারে, এতে মেয়েটা পড়ে যায়। শুভর কেনো জানি মনে হলো চড় টা ওর গায়ে লাগলো।

__ ” অলক্ষ্মী মেয়ে, আজ তুই হয় নিজে এই বাড়ি ছেড়ে বের হবি না হয় আমি তোকে জানে মেরে ফেলবো। ” সৎ মায়ের গলা দিয়ে কথা গুলো বের হচ্ছে।

__ শুভ সবটা ই শুনতে পাচ্ছে , ওর বাবা কে গিয়ে বলে ” বাবা, যা হবার হয়ে গেছে, বউ তুলে নাও, এই বাড়ির সাথে সম্পর্ক রেখোনা তাহলেই হবে। ” বর কে গিয়ে বলে ” যা হবার হয়ে গেছে, এবার বউ নিয়ে বাড়ি চল ”

__ ” এই মেয়ের সাথে ঘর করবো কিভাবে বল? ” বর

__ ” দেখতেই তো পাচ্ছো সৎ বোন বলে বলেনি। ”

__ ” হুম তুই যখন বলছিস তখন মেনে নিবো কিন্তু ওর বাবা মা কে কখনো মানছি না। ” রাগী গলায় বলে শুভর ভাই সাগর।

শুভ খেয়াল করে মেয়েটি নাই, আর মায়া না করে সবাইকে বের হতে বলে। বর বউ এক গাড়িতে উঠলো কিন্তু বউ এর মা বাবা কাউকেই কাছে আসতে দেয়নি শুভর পরিবার। সবাইকে গাড়িতে উঠিয়ে নিজে উঠার সময় খেয়াল করে একটা মেয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ে বের হয়ে যাচ্ছে। শুভর কিছুটা সন্দেহ হয়, তাই গাড়িতে না উঠে সবাই কে চলে যেতে বলে পিছু নেয় মেয়েটার। মেয়েটা টা কি করছে দেখার জন্য জোরে জোরে হাটতে থাকে। শীতকাল হবার পরও নিম্নচাপ এর কারণ এ আবহাওয়া খারাপ, বৃষ্টি হতে পারে যেকোনো মুহুর্তে। প্রচুর শীত পড়েছে, এতো ঠান্ডার মাঝে শুধুমাত্র একটা জামা পড়ে কিভাবে মানুষ থাকে। মনে মনে কথা বলছে শুভ। শুভর হটাৎ মনে হলো মেয়েটা আত্মহত্যা করতে চাচ্ছে। দৌড়ে গিয়ে হাত ধরে টেনে আনে। হটাৎ টানে মুখের কাপড় সরে যায়।

__ মেয়েটার দুই হাত ধরে জোরে করে চিল্লিয়ে বলে ” কি ব্যাপার , এতো আত্মহত্যা করার শখ হলো কেনো? মরার এতো শখ তাহলে একদিন আমার মনঃরঞ্জন করেই মরো। ” কয়েকটা চড় মেরে দেয় শুভ রাগের বশে।

__ ” ছাড়ুন আমাকে, আমি খারাপ, যার জীবনে যায় তার ক্ষতি করে দিই। আমি আমার মা কে মেরেছি, বাবাকে দূরে সরিয়েছি, আর কি চাই আমার। সৎ মায়ের খোটা, বাবার অবহেলা আমি আর নিতে পারছিনা। এর চেয়ে আমি মরে গেলেই ভালো হবে। কারোও কষ্ট হবেনা তখন। এই দুনিয়ায় আমার কেউ নাই, ছোট তে বড় হয়েছি অনাথ আশ্রমে, বড় হয়ে হোস্টেলে। আজ হোস্টেল ও বন্ধ তাই বাড়ি এসেছিলাম কিন্তু উপহার পেয়ে গেছি। ” বলতে বলতে কান্না করতে থাকে। এরই মাঝে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়, কোনটা চোখের জল আর কোনটা বৃষ্টির পানি বুঝা যাচ্ছেনা।

__ ” তাহলে মরবেই তাইনা, তো চলো আমার সাথে “। কোলে তুলে নেয় মেয়েটি কে, বাড়ির দিকে হাটতে থাকে। একটু শুকনো যায়গায় এসে ফোন বের করে ড্রাইভার কে গাড়ি আনতে বলে। নিরুর চিল্লাচিল্লি শুনে এক ধমক দেয় শুভ। একে তো শীত তার উপর বৃষ্টি, হাড় কাপুনি ঠান্ডা তে দুজনেই জমে গেছে। ড্রাইভার আসতেই নিরুকে গাড়িতে জোর করে ঢুকিয়ে এক যায়গায় যেতে বলে শুভ।

__ ” কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? ”

__ ” জাহান্নামে ”

__ ” প্লিজ আমার ক্ষতি করবেন না। ”

__ এই কথা শুনে শুভর মেজাজ বিগড়ে গেলো ” একশো বার করবো, পারলে ঠেকাও।। ”

চলবে…..