Monday, August 25, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2359



অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৬

0
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৬
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৬

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৬

 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

চলো আজকের এই দিন টা স্বরনীয় করে রাখতে তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো
গাইথি- কোথায় সে জায়গা
চুহেস- গেলেই দেখতে পাবে
গাইথি- আমাদের বিয়ের কথা বলতে যাবেন না
চুহেস- দাড়াও একটা ব্যাবস্থা করে আসি, তুমি এখান থেকে একটু নড়বে না কেমন

এই বলে গাইথিকে কোন কথার সুযোগ না দিয়ে চুহেস বাসা থেকে বেরিয়ে যায়,, আবার বিশ মিনিট পর ফিরে আসে,
গাইথি- কোথায় গিয়েছেন?

চুহেস মুচকি হেসে বল্লো গিয়েছি এক জায়গায়,এখন চলো আমার সাথে
এই বলে গাইথিকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়িতে বসালো,
ড্রাইভিং সিটের পাশে বসলো গাইথি,চুহেস ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্ট্রাট করলো,,

সাইমুম দের ড্রইং রুমে বসে আছে সাইমুম, সাইমুমের মা আয়শা বেগম, সাইমুমের বোন জেরীন
সবার প্রথমে জেরীন ই বল্লো
– ভাইয়া এই গাইথি ভাবি তোকে এই রকম এড়িয়ে চলে কেনো, সে কি তোকে পছন্দ করে না
সাইমুম- বলতে পারছি নারে, এই তো আজ ওকে আমি অফার করলাম ঘুরতে যাবো,সে একদম রিজেক্ট করে দিলো,একটা দিন ও সে আমার সাথে কাটাতে চায়না,আর আমি কিনা আমেরিকাতে আমার সব কাজ ফেলে বাংলাদেশে পড়ে আছি,তা ও ওর জন্য

আয়শা বেগম- তা যা বলেছিস, গাইথি মেয়েটা এমনি খুব ভালো,

জেরীন – মা তুমি গাইথি কে ভালো বলছো কিসের ভিত্তিতে,

আয়শা বেগম- শ্রুতি আর আমরা পাশা পাশি থাকি,কতো ভালো আচার আচরণ মেয়েটার, তাই তো শ্রুতি কে বললাম তার কোন বোন থাকলে আমার সাইমুমের জন্য নিয়ে আসতাম,আর সে ও তার বোনের কথা বলে,তখন শ্রুতির মুখে শুনে যতো টা না ভালো ভেবেছি এখন গাইথি কে দেখে আর ও ভালো মেয়ে মনে হচ্ছে

জেরীন- কিছু মনে করোনা,মা,আমার মনে গাইথি বিয়েতে রাজি নয়

সাইমুম- তোর এই মনে হওয়ার কারন কি

জেরীন- দেখিস না,গাইথি তোর সাথে কথা বলাতো দূরে থাক,আমি গেলে ও আমাকে ও ইগনোর করে

আয়শা বেগম- কিন্তু সেই রকম কিছু হলে
ও বলছে না কেনো তার ফ্যামেলী কে

মায়ের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে সাইমুম বল্লো
– আমার মনে হয় গাইথি লজ্জা পায় আমাদের

জেরীন- হবে হয়তো, বলে উঠে চলে গেলো

আয়শা বেগম- একটু চিন্তিত ভঙ্গীতে বল্লো,আচ্ছা দেখ শেষ পর্যন্ত কি হয়,আমি যায় তোর বাবাকে একটা মেসেজ করতে হবে তোর বিয়েতে কি কি মার্কেট করা হবে,এই নিয়ে,
উনি চায় উনার একমাত্র ছেলের বিয়ের সব কিনা কাটা আমেরিকা থেকে করতে
এই বলে আয়শা বেগম উঠে যায়

সাইমুম যেমন ছিলো তেমন ই বসে আছে,,,ভাবছে সে,গাইথির এই ইগনোরেন্স আমি আর নিতে পারছি না,কি ভাবে কেমন করে জানি না,ওকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি,
আমার কল্পনার সব টা ঝুড়ে এখন গাইথি ছাড়া কেউ নেই,ও যদি শেষে গিয়ে বিয়েটা করতে রাজি না হয় তা হলে….
এতোটুকু ভেবেই সাইমুম উঠে দাঁড়ালো নাহ আর ভাবতে পারছি না,,বুকের বিতর কেমন জানি করছে


চুহেস দের গাড়ি চলছে তো চলছে গাইথি বিরক্ত হয়ে গেলো,
– আমরা কিন্তু শহর থেকে অনেক দূরে চলে এসেছি, আমরা যাচ্ছি কোথায়

চুহেস মুচকি হেসে বল্লো
– ভয় করছে তোমার

গাইথি- উফফ ঢং করবেন না তো,বলুন কোথায় যাচ্ছি

চুহেস- আর দশ মিনিট ধৈর্য্য ধরে বসো নিজে ই বুঝতে পারবে

কিছুক্ষন পর গাড়ি টা থেমে গেলো, চুহেস গাড়ি থেকে নেমে বল্লো
– নেমে পড়ো আমরা এসে গেছি

গাইথি ধুরু ধুরু বুকে গাড়ি থেকে নেমে বল্লো,এতো একটা জংগল বাড়ি, আপনি আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেনো

চুজেস মুচকি হেসে বল্লো-
সাইন বোর্ডের নাম টা দেখোতো
গাইথি দেখলো লেখা আছে ‘নেইজিনের নীড় ‘
গাইথি -এটা কি?

চুহেস- এখন তুমি বলো,এর অর্থ কি হতে পারে,ভাবতে থাকো তুমি,আর চলো বিতরে যাই

বিতরে গিয়ে তো গাইথির ধারনা পালটে গেলো বাইরে থেকে জংগল মনে হলে ও বিতর থেকে একদম ই জংগল মনে হচ্ছে না,, একটা সবুজ নদী বলা যেতে পারে,তবে এই রকম অদ্ভুত জংলি গাছ দিয়ে বাড়িটা সাজানো দেখে গাইথি একটু অবাক হলো

চুহেস- কি পছন্দ হয়েছে
গাইথি- এটা আপনার বাড়ি
চুহেস- হুম, মন খারাপ থাকলে একা সময় গুলো এখানে এসে কাটাই
এই বাড়ির কথা নিহার ও জানে না,খুব গোপনে কাজ টা আমি সম্পূর্ণ করি

গাইথি- আমি তো জেনে গেলাম
চুহেস দু পা পিছিয়ে গাইথির হাত ধরে বল্লো,এখন বাড়িটা তোমার ও তাই তোমাকে নিয়ে আসলাম,

গাইথি – ঐ ঝোপের বিতরে কি আছে, মনে হচ্ছে খুব অন্ধকার সেখানে

চুহেস- চলো দেখবে
গাইথি ঝোপের বিতর টা দেখে অবাক, বাইর থেকে দেখতে যতটা ভয়ানক অন্ধকার মনে হয়েছিলো, বিতরে ঠিক ততটা ই মনোরম দৃশ্য,
একটা ছোট টেবিল কয়েকটা চেয়ার, টেবিলের মাঝখানে অসাধারণ একটা টব

গাইথি- ওয়াও আপনার এই বাড়িটা সত্যি অসাধারণ, চলুন মূল ভবন টা দেখবো

চুহেস – ঠিক আছে,তবে এখন নয়,চলো তোমাকে আমার প্রিয় একটা জায়গা দেখাই

গাইথি অবাক হয়ে বল্লো
– এই পুরো বাড়ি টা ই তো আপনার প্রিয়ো,এর পরে ও আর প্রিয়ো আছে

চুহেস চলো ই না সব দেখবে,চুহেস গাইথিকে নিয়ে পুকুর পাড়ে গেলো

গাইথি- ওয়াও এখানে পুকুর ও আছে,

চুহেস -চলো নৌকায় উঠি
চুহেস আর গাইথি নৌকায় করে মাঝ পুকুরে যায়

গাইথি- এই পুকুরে কয়েকটা কচরি ফেনা থাকলে ভালো হতো,এই সময় কচরি ফেনাতে ফুল হয় আর ফুল গুলো পুকুরের সুন্দর্য দশগুন বাড়িয়ে দিতো,বলে গাইথি নৌকার এক প্রান্তে পানিতে পা ডুবিয়ে বসলো

চুহেস- ঠিক আছে এর পরের বার আসলে কচরি ফেনা ও দেখতে পাবে

গাইথি- সত্যি আপনার পছন্দের তুলনা হয়না,,পুরো বাড়িটা ই অসাধারণ, যে কারো মন ভালো করার মন্ত্র দিয়ে সাঝানো এই বাড়ি
গাইথি কথা বলতে বলতে এক সময় নিরব হয়ে যায়

চুহেস চুপ থেকে গাইথির নিরাবতা উপভোগ করছে
কিছুক্ষন পর গাইথি কথা বল্লো –
একটা কথা জানতে আমার খুব ইচ্ছে,কিন্তু আমি এ ও জানি আমার প্রশ্ন টা শুনলে আপনার মন খারাপ হবে তবুও কৌতহুল থেকে প্রশ্ন টা করতে হচ্ছে

চুহেস- এতো দ্বিধা করছো কেনো বাবুই, তোমার প্রশ্ন যতো ই কঠিন হোক আমি উত্তর দিবো

গাইথি একটু গম্ভীর হয়ে বল্লো
– খালি হাতে আপনি বাড়ি ছেড়ে ছিলেন, বলতে গেলে এক কাপড়ে, তা হলে এতো কিছু করলেন কি করে

গাইথির প্রশ্ন শুনে চুহেস একটা নিশ্বাস নিলো,তার পর বল্লো হুম প্রশ্ন টা তোমার মনে আসবে এটা স্বাভাবিক, তবে এর উত্তর টা ও খুব স্বাভাবিক, বলতে পারো তোমার প্রশ্নের মতো ই,,
সেদিন বড় জেঠুর কথা গুলো আমার খুব গায়ে লেগেছিলো,নিজেই নিজেকে বললাম আমার তো কেউ নেই, আমি এখানে না পড়ে থেকে অন্য কোথায় ও গেলে আমার একা জীবন ভালো ভাবেই কাটবে,বাবা মায়ের সাথে ঘুরতে এসে রাস্তার পাশে রাত কাটানো কতো ছেলেকেই দেখেছি,তাদের তো জীবন চলে যাচ্ছে,সেদিন আমি ও এই রকম একটা জীবনের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি,,

একটা বাসে উঠে পড়ি বাস টা কোথায় যাবে আমি জানি না জিজ্ঞাস ও করিনি, কারন আমার তো কোন গন্তব্য ছিলো না, বাসের টিকেট নেই এই জন্য সারা পথ দাঁড়িয়ে ছিলাম,যখন গাড়িটা থামলো তখন বুঝলাম গাড়িটা ঢাকা এলো
গোলাপবাগ আসতেই একজন মহিলা নেমে গেলো,আমি ভাবলাম তার সিটে যদি একটু বসা যায়, সেই আসায় ঘুরে দাড়ালাম সিটের দিকে, দেখলাম একটা ব্যাগ,
মহিলাদের হাত ব্যাগ, আমি বুঝেছি ব্যাগটা ঐ মহিলার আমি ব্যাগ টা নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়ি উদ্দেশ্য ব্যাগের মালিকের কাছে যাওয়া,
আমি বাস থেকে নেমে দেখি একটু দূরে মহিলাটি দাঁড়িয়ে আছে, আমি মহিলাটির কাছে গিয়ে বললাম
– আন্টি এই ব্যাগটা কি আপনার,
আন্টি ব্যাগের দিকে এক নজর তাকিয়ে আমার দিকে নজর দিলো বল্লো –
হা ব্যাগটা আমার মনে হয় ভুলে সিটে ফেলে এসেছি তাই না

আমি বললাম জ্বী,দেখুন ব্যাগের বিতর সব ঠিক আছে কি না,

আন্টি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, যে ব্যাগ টা ফিরিয়ে দিতে পারে সে ব্যাগের কোন কিছুই আড়াল করবে না,
তুমি কোথায় যাবে বাবা

আমি আন্টি কে কিছু বলিনি,আন্টি নিজেই বল্লো বুঝেছি বাড়িতে বাব মা বকা দিয়েছে বলে পালিয়ে এসেছো তাই তো,
একটু পর আমার ছেলে আমাকে এখান থেকে নিতে আসবে,তুমি কি আমার সাথে যাবে
আমি কিছুই বলতে পারলাম না
যেখানে পুটপাতে থাকার জন্য এলাম সেখানে আল্লাহ হয়তো আমকে থাকার জন্য একটা ব্যাবস্থা করে দিলো,
সেদিন আন্টির সাথে আন্টির বাসায় আসি, উনার ছেলে আমাকে খুব একটা ভালো চোখে দেখতো না,
না দেখা ই উচিত,যেখানে বর্তমানে মানুষ মানুষকে না না ভাবে ধোকায় ফেলতে ব্যাস্ত সেখানে উনি কেনো আমাকে ভালো চোখে দেখতে যাবে, আন্টি আমাকে খুব আদর করতেন

আমাকে তিনি বলতেন তুমি চিকির কথায় কিছু মনে করো না বাবা,ও একটু এমন ই

আমি বললাম না আন্টি আমি এখানে ভালো ভাবে থাকতে পারছি এটা ই অনেক বড়ো
আন্টি আমাকে বল্লো,এতো আন্টি আন্টি করিস না তো,কেমন পর পর লাগে খালাম্মা বলবি বুঝলি,আমার ছেলেটা ও হয়েছে এক রকম,কি সব বলে

রাবেয়া খালাম্মা সেদিন আমার সম্পর্কে সব কিছু জিজ্ঞাস করে,সব শুনার পর উনি বলে আজ তোমার বাবা মা থাকলে তোমার ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল হতো,
যাই হোক আমার বাসায় অনেক মানুষ আছে কাজ করার জন্য তোমাকে কাজ করতে হবে না,তোমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবো,পড়াশুনা করবে
সেদিন আমি রাবেয়া খালার কথা শুনে খুব বিস্মিত হই, যেখানে আপন মানুষ পর করে দেয়,সেখানে অজানা মহিলাটা এতো কাছে টেনে নিলো

আন্টির কথা মতো পড়া শুরু করি এস এস সি এক্সামের পর আন্টির কথা মতো বিজনেস বিষয়ক পড়া শুনা শুরু করি, তত দিনে আন্টির ছেলে চিকি ফ্রান্সে চলে যায়,
আমার পড়াশুনা শেষ খালাম্মা তার ছেলে কে জানায়,
চিকি তখন তাদের এখান কার অফিসে এমডির আসনে আমাকে বসতে বলে, উনাদের সব কিছু দেখা শুনা করছি সব ভালো ভাবেই চলছে

হঠ্যাৎ একদিন খালাম্মা এসে জানায় তিনি ফ্রান্সে চলে যাবে তার ছেলের কাছে, আমি সেদিন খুব কান্না করেছি,খালাম্মা সেদিন নিহার কে আমার জন্য এনে দেয় বলে আজ থেকে এ তোমার সব ভালো মন্দের খেয়াল রাখবে বলতে পারো এ তোমার সেক্রেটারি, আন্টি চলে যায়,

নিজের প্রচেষ্টা তে আমি মেহেরা ফ্যাশন শো গড়ে তুলি,,তার পর থেকে ই আর আমাকে পিছনে তাকাতে হয়নি,

চুহেস থেমে যেতেই গাইথি বল্লো
– বাবা সত্যি আপনার উপর অনেক অন্যায় করেছে,
চুহেস আমি সে সব ভাবি না গাইথি,,আল্লাহ যে রাবেয়া খালাম্মার মতো একজন মা মিলিয়ে দিয়েছে আমাকে এটা ই অনেক,

চুহেস গাইথির দিকে তাকিয়ে বল্লো একি তুমি কাদছো
গাইথি- কই না তো

চুহেস আমার কাছে লুকিয়ো না,আমার কোন অভিযোগ নেই তোমার বাবার প্রতি, যদি অভিযোগ থাকতো তা হলে আমাদের দুজনের পথ এক হতো না

গাইথি – এক হলো আর কই,আপনি তো এখন ও বাবা আর ভাইয়া কে কিছুই বলেন নি

চুহেস মুখ টিপে হাসলো বল্লো,
– আমার হয়ে সব কথা নিহার বলবে,বলতে পারো ঘটকের কাজ টা নিহার করবে

গাইথি- ভীতু একটা নিজে বলতে পারে না আবার ঘটক ধরেছে

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৫

0
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৫
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৫

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৫

লেখা –সুলতানা ইতি

মনের অজান্তেই চুহেসের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে
বিছানায় বসে ই কিছুক্ষন ভাবলো,যদি এই কথা গুলো সরা সরি বাবুই আমাকে বলতো,মোবাইলে না বলে,
কিন্তু ওতো সামনে এলে কিছুই বলে না, খুব ভয় পায়, দূর কিচ্ছু ভালো লাগছে না,আমি কি আজ একবার যাবো ঐ বাসায়,নিজেই নিজেকে বল্লো,
– যেতেই পারি,
তার পর ফ্রেশ হয়ে অফিসে গেলো উদ্দেশ্য ফেরার পথে একবার বাবুই দের ওখানে যাবে
চুহেস অফিসের কাজ শেষ করে বের হতে হতে সাড়ে পাঁচটা বেজে গেলো

কিন্তু আজ একটু অবাক হলো এই ভেবে যে বাবুই লাঞ্চের কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য কোন টেক্সট, কোন ভয়েজ এস এম এস কিচ্ছু পাঠায়নি, ও কি ভুলে গেছে এস এম এস পাঠাতে, কিন্তু ভুলবে কেনো কেউ যদি মন থেকে কোন কাজ করতে চায়, সে ঐ কাজের কথা ভোলা সম্ভব ই না ,

আচ্ছা গেলেই বুঝতে পারবো কি হয়েছে আজ চুহেস একা গাড়ি ড্রাইভ করে এসেছে কাউকে সংগে আনেনি,ড্রাইভার কে আনা যেতো কিন্তু ড্রাইভার কে আনলে নিহার জানতে ফেরে যাবে আমি এখানে এসেছি,,কিছু না বললে ও সারা দিন আমার দিকে তাকিয়ে মিট মিট করে হাসবে,
কথা টা ভাবতে চুহেসের মনে অন্য ভাবনা জেগে উঠলো

যদি আমার একটা ভাই থাকতো সে ও কি এমন করতো আমার সাথে হয়তো করতো,হয়তো আমি ও তার ভয়ে এই ভাবে লুকিয়ে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে আসতাম, চুহেসের মনটা বিষাদে ভরে গেলো,

গাইথিদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামালো , মন টা কে হালকা করার জন্য চুহেস চারি দিকে নজর ভুলাল, দেখলো আর ও দুটি কার দাঁড়ানো,বুঝলো কেউ এসেছে,কিন্তু বাবুইরা কোন ফ্লরে থাকে সেটা ই তো জানি না, আচ্ছা কাউকে জিজ্ঞাস করি
কিন্তু আশে পাশে কাউকে দেখলো না,

চুহেস – ঠিক আছে একটা ফ্লরে গিয়ে নক করে জিজ্ঞাস করলে ই জানা যাবে
অবশেষে চুহেস গাইথিদের ফ্ল্যাটে এসে নক করলো

কিছুক্ষন পর দরজা খোলার শব্দ হলো আদনাম দরজা খুলেছে
আদনান – আরেহ চুহেস তুই,তুই এই বাসায়, মানে আমি স্বপ্ন দেখছি না তো

চুহেস- আগে বিতরে যেতে দিন ভাইয়া
আদনান- ওহ হা তাই তো আয়, আয়,

বাবা দেখো চুহেস এসেছে,বলতে বলতে আদনান চুহেস কে নিয়ে ড্রইং রুমে গেলো,,সেখানে আর ও কয়েক জনকে দেখতে ফেলো চুহেস

আহমদ মেহেরা- বস বাবা,চুহেস কে লক্ষ করে বল্লো
চুহেস বসলে আদনান বলে আলাপ করিয়ে দিচ্ছি আপনাদের সাথে

এই হচ্ছে আমার ভাই চুহেস মেহেরা,
আর চুহেস এ হচ্ছে সাইমুম এর নাম তুই শুনেছিস কিন্তু দেখিস নি,আর উনারা সাইমুমের বাবা,মা,বোন

চুহেসের এদের পরিচয় শুনেই মন খারাপ হয়ে গেলো,তবু ও আদনান কে থামিয়ে দিয়ে বল্লো,বুঝতে ফেরেছি ভাইয়া
তার পর চুহেস কিছক্ষন বসে,বল্লো
– আমি তা হলে এবার উঠি, আমার একটু কাজ আছে
আহমদ মেহেরা,- সেকি প্রথম এলে আমাদের বাড়িতে,খালি মুখে ই চলে যাবে
চুহেস কিছু বলতে যাবে তার আগে আদনান বল্লো
– তুই তো ঐশী, গাইথি কারো সাথে ই দেখা করলি না,তুই এসেছিস জানলে গাইথি খুশি হতো

চুহেস কিছু না বলে ঠোটে তাচ্ছল্য হাসি ফুটিয়ে বেরিয়ে এলো

চুহেস বেরিয়ে যাওয়ার পর সাইমুম আদনান কে বল্লো,আপনার ভাই মনে হয় আমাদের পছন্দ করেনি তাই ও ভাবে চলে গেছে

আদনান- আরেহ না,তেমন কিছু ই না,এ দেশের সাকসেসফুল বিজনেসম্যান দের মধ্যে ও একজন এদের কতো ব্যাস্ততা থাকে

সাইমুমের মা বল্লো,আপনি যাই বলুন আদনান
আমরা আপনাদের আত্মিয় হচ্ছি মানে, চুহেস মেহারার ও আত্মীয়,সেদিক থেকে আমাদের জন্য ওর মাঝে এতোটুকু সৌজন্যবোধ আমরা দেখিনি

ঐশী দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে ড্রইং রুমের সব কথা ই শুনেছে, শুনে এটা বুঝলো চুহেস যেমন সাইমুম কে পছন্দ করেনি,তেমন সাইমুম ও চুহেস কে,কিন্তু এ দুয়ের মাঝে আমার হাবা ননদ টা কাকে বেছে নিবে, দুজন ই ওর যোগ্য
যাই গাইথি কে খবর টা দিহে আসি,

এদিকে চুহেস গাইথিদের বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ির উপর দু হাত দিয়ে কিচ্ছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকলো,হয়তো যে শকড টা পেয়েছে সেটা হজম করার চেষ্টা করছে
তার পর গাড়িতে উঠে গাড়ি স্ট্রাট করলো
গাড়ি চলছে, ভাবছে চুহেসে,

কি ভুলটা ই না করলাম,কেমন করে ভুলে গেলাম এ কথা যে গাইথি আমার নয়,ও সম্পূর্ণ সাইমুমের, তা হলে আমি কেনো ওদের মাঝে বাধা হয়ে আসবো না না, আমি আর কখনো গাইথির মুখোমুখি হবো না, যাকে ভালোবাসি তাকে সুখি দেখতে চাই আমি

আমি আর গাইথির সাথে কোন ধরনের যোগা যোগ রাখবো না, এই বলে মোবাইল বের করে গাইথির নাম্বার বল্ক লিস্টে পাঠালো, তার পর ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে বাসায় পৌছলো

নিহার- স্যার আজ আবার একা একা কোথায় বেরিয়েছেন বলুন

চুহেস- এই এমনি একটু শহর টা দেখে এলাম,
এই বলে নিহার রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করে দেয়

নিহার চুহেসের এই আচরনে একটু অবাক হয়, স্যার শহর দেখতে বেরিয়েছে কথা টা একদম ই অবিশ্বাস ও,আবার মন খারাপ করে রুমে ডুকে দরজা লক করে দিলো,কিন্তু কেনো

চুহেস দরজা লক করে বিছানায় উপড় হয়ে শুয়ে পড়লো, ভাবছে গাইথির কথা, ওকি সুখি হবে সাইমুমের সাথে,হবে হয়তো,সাইমুম ছেলেটা তো অনেক ভালো, গাইথির প্রতি তার অনেক আগ্রহ, এই সব সাত পাচ ভাবতে ভাবতে ঘুমের অতল সাগরে ডুবে গেলো,

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেয়ে যেই না অফিসের জন্য বেরুতে যাবে,অমনি সামনে গাইথিকে দেখে ভুত দেখার মতো থেমে গেলো,এই সময় গাইথিকে একদম ই আশা করেনি চুহেস ভ্রু কুঁচকে বল্লো
– তুমি

গাইথি- কাল ঐ বাসা থেকে চোরের মতো পালিয়ে এলেন কেনো,আপনাকে তো খুব সুপুরুষ হিসেবে জানতাম,

চুহেস- এখানে চোরের কি দেখলে তুমি আমি তো সবার কাছে বলে এসেছি,জরুরি কাজ পড়ে যাওয়াতে চলে আসতে হলো

গাইথি- ঐ সব অজুহাত অন্য সবাইকে দেখিয়ে পার পেয়ে যাবেন,কিন্তু আমাকে ঐ সব অজুহাত দেখাবেন না

চুগেস গম্ভীর কন্ঠে বল্লো
– আমি তোমাকে কেনো অজুহাত দেখাতে যাবো,যা সত্যি তা ই বলেছি, আর নিজেকে খুব ইমপটেন্টস দিচ্ছো তুমি,আমার কাছে তোমার কোন গুরুত্ব ই নেই, পথ ছাড়ো অফিসে যাবো, লেইট হয়ে যাচ্ছে

গাইথি দু পা এগিয়ে চুহেস কে ধাক্কা দিয়ে বল্লো-
হোক লেইট, এই ছেলে খুব ভাব না আপনার,এতো ভাব রাখেন কোথায়,

তার পর আরেক টা ধাক্কা দিয়ে বল্লো,
-আর সবার সাথে রাগ দেখিয়ে ভাব দেখিয়ে নিজেকে লুকাতে পারলে ও,আমার কাছে পারবেন না, আমি আপনার সম্পর্কে সব বুঝি,এ থেকে যেড পর্যন্ত আমার মুখোস্ত

এই বলে চুহেসের বুকে মুখ লুকিয়ে বল্লো কেনো বুঝেন না আপনি,খুব ভালোবাসি আপনাকে, সেই দিন সুন্দর নগর দেখা হওয়ার পর থেকে ভালোবেসে ফেলেছি

আকস্মিক দুই টা ধাক্কা খেয়ে তার পর গাইথির স্পর্শ পেয়ে চুহেস যেন বড় ধরনের একটা শকড খেলো, গাইথির কথা গুলো যেন মাথার মধ্যে ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে

এবার গাইথি দু হাত ফেছিয়ে ধরে রাখলো চুহেস কে,যেন উত্তর না ফেয়ে ছাড়বে ই না
কিছুক্ষন পর চুহেস ও ঝড়িয়ে ধরলো গাইথি কে,ঝড়িয়ে ধরে বল্লো
– আমি ও

গাইথি চুহেস কে ছেড়ে দিয়ে পরিপূর্ণ দৃষ্টি মেলে চুহেসের দিকে তাকিয়ে কঠোর কন্ঠে বল্লো
– আমি ও কি?

চুহেস- ভালোবাসি এই পাগলিটাকে, ভালোবাসি তার ভালোবাসা ঝড়ানো শাসন গুলো কে

গাইথি – তা হলে চলুন বাবা আর ভাইয়া কে বলবেন, নইলে ওরা তাদের পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে

চুহেস একটু দুষ্টুমি করে বল্লো
– আমার যাওয়ার কি দরকার তুমি তো নিজেই বলতে পারো,এই একটু আগে যেমন রাগিণী হয়ে আমাকে বললে

গাইথি রাগে চোখ দুটোকে গোল। করে ফেল্লো
চুহেস– এই দেখো দেখো,তোমাকে এখন পেছার মতো লাগছে

গাইথি- ভালোবাস তে পারবে আর সাহস করে শ্বশুর কে,আর শালাকে বলতে পারবে না , ভিতু একটা

চুহেস- এহ আমি একদম ই ভিতু নই

গাইথি- প্রমান করুন,আগামি দুই ঘন্টার মধ্যে আমাদের বিয়ের কথা বাবা কে আর ভাইয়া কে বলে

চুহেস- না,না দুই ঘন্টার মধ্যে নয়,

গাইথি- কেনো

চুহেস- নিজের বিয়ের কথা বলতে যাচ্ছি,সাহস সঞ্চয় করতে হবে,লজ্জা সংবরণ করতে হবে তাই না

গাইথি- কি বললেন,ছেলেদের আবার ও লজ্জা ও আছে নাকি

চুহেস- কেনো লজ্জা শুধু কি নারীর ভূষণ হবে, ছেলেদের ভূষণ নয় কেনো

গাইথি- আর একটা কথা বললে মার খাবেন বলে দিলাম

গাইথি- ওরে বাবারে ভয় পেয়েছি,আমার মতো অসহায় একটা ছেলের গায়ে হাত তুলবে

গাইথি চুহেসের মুখে আঙুল দিয়ে ফিস ফিস করে বল্লো
-শুস একদম নিজেকে অসহায় বলবেন না, আমি আছি না

চুহেস হাত সরিয়ে বল্লো
– চলো আজকের এই দিন স্বরনীয় করে রাখতে তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৪ 

0
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৪ 
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৪ 

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৪ 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

গাইথি যাওয়ার পর চুহেস নিজে নিজে কিছুক্ষন হাসলো,এই ভেবে যে পাগলি টা এখন ও আমার ধমক শুনলে ভয় পায়,
তার পর চুহেসে কিচেনে গিয়ে, দু কাপ আদা দেয়া চা করে গাইথির রুমে যায়,
গাইথিকে রুমে দেখতে ফেলো না,
বুঝে নিয়েছে বারান্দায় আছে হয় তো,

চুহেস পা টিপে টিপে বারান্দার দিকে গেলো
চুহেসের উপস্থিতি টের পায়নি গাইথি,সে শূন্য দৃষ্টি মেলে আকাশের দিকে ছেয়ে আছে

চুহেস – তারা গুনছো

হঠ্যাৎ কারো কথা শুনে গাইথি চমকে উঠে পাশে তাকিয়ে দেখে চুহেস, গাইথি আবার আকাশের দিকে দৃষ্টি দিলো

চুহেস- আকাশে আজ তারা নেই,,মনে বৃষ্টি নামবে,নাও আদা দিয়ে চা করে আনলাম,তোমার জন্য
কাঁদতে কাঁদতে তো গলার স্বর খারাপ করে ফেলেছো,চা টা খাও ভালো লাগবে

গাইথি- প্রয়োজন নেই আমি এখন ঘুমাবো

চুহেস বুঝলো গাইথি পালটা প্রতিশোধ নিচ্ছে
– ঠিক আছে চা টা খেয়ে ঘুমাতে যেও,
নাও

গাইথি চুপ চাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
চুহেস চেয়ার দেখিয়ে বল্লো
– বসো,

চুহেসের এই স্বাভাবিক আচরনে গাইথির মনটা হালকা হয়, গাইথি মনে মনে বল্লো
– এই চুহেস মেহেরা কে আমি সব সময় চাই,ঐ উগরো মেজাজি চুহেস কে একটু ও চাই না

চুহেস- কি ভাবছো এতো গভীর ভাবে

গাইথি- ভাবছি যদি আজ আকাশে চাঁদ থাকতো

চুহেস- চাদের আলোর ছেয়ে এই ফিকে অন্ধকার টা অনেক সুন্দর, আর ব্যাস্ত ঢাকার চাদের আলো উপভোগ করা যায় না

গাইথি- কেনো

চুহেস- চাদের আলো উপভোগ করা যায় নির্ঝন পরিবেশে,যেটা গ্রামে সম্ভব, অবশ্য আরেক টা জায়গা আছে

গাইথি- কোথায় সে জায়গা

চুহেস কথা গুরিয়ে বল্লো,
– আজকের ঠান্ডা হাওয়া আবছা অন্ধকার খারাপ লাগছে না

গাইথি- আপনি কিন্তু আমার প্রশ্ন টার এড়িয়ে গেলেন

চু্হেস- এড়িয়ে গেছি? হুম মনে হয় সেটা আমি তোমাকে জানাতে চাইছিনা

গাইথি- সেটা বুঝলাম, কিন্তু কেনো বলতে চান না

চুহেস- ওটা আমার ব্যাপার

গাইথি এই তো আর ভালো লাগলো না,কি হয় মন খুলে কথা বললে

চুহেস- বহুদিন ধরে মন খুলে কথা বলার কোন সাথি নেই,তাই সেই অভ্যাস টা ও নেই

গাইথি- এখন যদি কেউ সেই সাথি হতে চায়,তাকে কি ফিরিয়ে দিবেন

চুহেস- কাউকে জীবন থেকে ফিরিয়ে দিই নি,তাই নতুন করে কোন সাথি ধরকার নেই মনে হয়

গাইথি- বুঝলাম না,কাকে ফিরিয়ে দেন নি,

চুহেস- আর কথা নয় অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও এই বলে চুহেস আর এক মুহুর্ত ও সেখানে দাড়ালো না

গাইথি যেমন ছিলো তেমন ই বসে আছে,ভাবছে চুহেসের বলা কথা টা,

তা হলে কি কেউ এসেছিলো তার জীবনে,এবং সে এখন ও আছে,তা হলে ওর জীবন এতো ছন্নছাড়া কেনো, উফফ আর ভাবতে পারছি না,ওর জীবনে অন্য কাউকে আমি মানতে পারবো না

চুহেস নিজের রুমে এসে ভাবছে গাইথির কথা,সেকি আমার জীবনে আসতে চায় কিন্তু কেনো তার তো সাইমুমের সাথে বিয়ে ফাইনাল হয়ে আছে তা হলে

কেউ যদি সাথি হতে চায় বলে কি বুঝালো সে,
সব কিছু কেমন যেন ধোয়াসা লাগছে,আমার জীবনে সে আসতে চাইবে কেনো,

চুহেস আয়নার সামনে দাঁড়ালো,সে দেখতে চায়,কিশোর কালের সেই লাবন্য চেহেরা টা এখন ও আছে কি না তার মাঝে, নাহ থাকবে কি করে বয়স তো আর কম হয়,থার্টিন চলছে,
এই পার্থক্য টা কি গাইথির চোখে পড়ছে না নাকি,

আচ্ছা অনেকে তো এই বয়সে বিয়ে করে,সব ছেলেরা যে পচিস, ছাব্বিশ বয়সে বিয়ে করবে তার তো কোন মানে নেই

দূর এই সব কি ভাবছি পাগলের মতো,বাবুই হয় তো এমনি কথা টা বলেছে,, কিন্তু বাবুই তো আর জানে না সেই ছোট বেলা থেকে ও আমার জীবন সাথি,ওর স্মৃতি টুকু আমার কাছে অনেক মূল্যবান

খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায় গাইথির, আজ ঘুম ভাংতেই কেমন জানি লাগছে, মনের এক কোনে শূন্য শূন্য লাগছে,অনেক্ষন বসে থাকার পর মনের বিরুদ্ধে গাইথি ফ্রেশ হতে গেলো,
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানানোর জন্য কিচেনে গেলো,, মন ভালো নেই তাই আর বেশি ঝামেলা না করে সেন্ডউইস বানিয়ে টেবিলে সাজিয়ে রাখলো

চুহেস আর নিহার খেতে বসলো, খেতে খেতে চুহেস নিহার কে বল্লো
– নিহার তুমি গাইথিকে অফিস যাওয়ার পথে ওদের বাসায় নামিয়ে দিবে

নিহার – স্যরি স্যার, আমার অফিসে কিছু কাজ আছে সেটা সে করে একটা জায়গা যেতে হবে

চুহেস- আজ তো আউটিং এ কোন কাজ নেই তা হলে

নিহার- স্যরি স্যার এটা আমার পার্সোনাল কাজ

গাইথি- উহুম উহুম, আমি কি আপনাদের কথার মাঝে একটা কথা বলতে পারি

চুহেস- কি কথা

গাইথি- আমি যত দূর জানি, গত কাল নিধিপা এসেছে ওর মামার বাসায়,মনে হয় আজ মিঃ নিহারের সাথে….

গাইথি কথা শেষ করতে পারলো না, নিহার বল্লো
– ঠিক বলেছেন ম্যাডাম

গাইথি- উহ ম্যাডাম কি কথা,আমাকে ম্যাডাম বলবেন না,গাইথি বললে খুশি হবো

নিহার কিছু বল্লো না, মনে মনে বল্লো,স্যারের হবু বউকে নাম ধরে ডাকবো,সেটা খুব ভালো দেখাবে

চুহেস- ঠিক আছে গাইথি তুমি রেডী হয়ে থেকো, ড্রাইভার তোমাকে নামিয়ে দিবে

নিহার- আরেহ,স্যার বাসায় আপনার মতো একজন পুরুষ থাকতে একজন মেয়ে একা বের হবে বাসা থেকে,তা ছাড়া পথে কতো রকম বিপদ থাকে তা বলে শেষ করা যায়

চুহেস- ইদানীং খুব বেশি বেড়েছো তুমি নিহার

নিহার- স্যরি স্যার,

অবশেষ এ গাইথি আর চুহেস এক সাথে বের হলো
দুজনেই নিরব গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে
গাইথিদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামলো
গাইথি নেমে চুহেস কে বল্লো
– ধন্যবাদ

চুহেস ভ্রু কুঁচকে বল্লো
– সো হোয়াট

গাইথি- এই যে আমার সাথে কষ্ট করে এতো টা পথ এলেন,এখন যদি আমার বাড়িতে আপনার পায়ের ধুলা দিতেন, তা হলে আমি ধন্য হতাম

চুহেস গম্ভীর হয়ে বল্লো
– আমার সময় নেই গাইথি
গাইথি- ওহ

গাড়ি স্ট্রাট দিলো, গাইথি এখন ও দাঁড়িয়ে আছে, ভাবছে চুহেসের শেষের কথা, চুহেস আমায় গাইথি বল্লো,কিন্তু ও তো আমায় বাবুই ছাড়া কথা বলতো না, হঠ্যাৎ এ পরিবর্তন
ঠিক আছে কোন ব্যাপার না, এবার গাইথি কি করে দেখো

চুহেস অফিসে গিয়ে কাজের মধ্যে ডুবে গেলো,দুপুর গড়িয়ে গেলো লাঞ্চ করার কোন খবর নেই,নিহার দু বার এসে বলেছে একবার ও পাত্তা দেয়নি

চুহেসের পার্সোনাল ফোনে কল আসে, অনেক্ষন রিং বেজে গেলো,চুহেস রিসিভ করেনি,কথা বলতে ইচ্ছে করছে না চুহেসের, নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে চায় চুহেস,

অফিস ছুটির পর চুহেস বাসায় যাচ্ছে, নিহার গাড়ি ড্রাইভ করছে, চুহেস ফোন হাতে নিয়ে কল লিস্ট দেখছে আননোন নাম্বার থেকে পঞ্চাস টা কল,একটা ভয়েস এস এম এস

চুহেস ভয়েজ এস এম এস টা রিসিভ করে শুনছে, গাইথি পাঠিয়েছে ভয়েজ টা
” হ্যালো চুহেস বাবুই বলছি,কল টা রিসিভ করো ”

ভয়েজ টা শুনে চুহেসের সারা মন প্রান ঝুড়ে আনন্দের শিহরিত হয়ে উঠলো, গাইথি এই প্রথম তাকে নাম ধরে ডেকেছে ভালোবাসার স্বরে কথা বলেছে, চুহেস খুশি মনে বাসায় আসে,,
ফ্রেশ হয়ে খেতে গিয়ে মন টা খারাপ হয়ে গেলো,বাবুই শত নিষেধ উপেক্ষা করে খাওয়ার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থেকে এটা ওটা এগিয়ে দিতো,
আজ বুয়া খাবার দিয়ে চলে গেলো
খাবার একটু মুখে দিয়ে হাত থেকে চামচ ফেলে দিয়ে উঠে দাঁড়ায়

নিহার- কি হলো স্যার খাবেন না,দুপুর ও তো কিছু খেলেন না

চুহেস- ভালো লাগছে না, তুমি খেয়ে নাও
চুহেস চলে যায়

নিহার মুচকি মুচকি হাসছে এই ভেবে যে এই কয় দিনে গাইথির হাতের রান্না খেয়ে আজ বুয়ার হাতের রান্না ভালো লাগেনি, বুঝতে ফেরেছি স্যার,খবর টা গাইথি কে দিতে হয়,,

রাতে অনেক দেরি করে ঘুমিয়েছে চুহেস সকালে উঠে সভাব মতো মোবাইল হাতে নিয়ে দেখছে একটা ভয়েজ মেসেজ, বাবুই পাঠিয়েছে”গুড মর্নিং চুহেস উঠে পড়ো, আর কতো ঘুমাবে”
মনের অজান্তেই চুহেসের ঠোঁটে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৩

0

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৩

 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

অন্তরে যে তার ছবি আকা সেটা বার বার চোখে ভাসছে
আমি কি পারবো এতো কাছে আসার পর দূরে সরতে,,

অফিস ছুটির পরে ও আজ চুহেস বাসায় যায়নি শহরের কোলাহল থেকে দূরে তার একটা বাংলো আছে,চুহেস বাংলো টার নাম দিয়েছে
” নেইজিনের নীড়ে “নাম অদ্ভুত হলে ও চুহেসের পছন্দের,, সেখানেই আসলো

বাংলোর তিন দিকে ই বাগান, শুধু ফুলের বাগান নয়, নানা রকম নাম না জানা গাছ, ও আগাছা ভরা বাগান টা,
এখানে পরিচিত কোন ফুল পাওয়া যাবে না,যা আছে সব জংলি ফুল, চুহেস এই সব ফেরিয়ে বাংলোর উত্তর দিকের বাগান ফেরিয়ে একটা ছোট্ট পুকুর আছে,
পুকুরের পাড়ে একটা নৌকা,চুহেস নৌকায় উঠে মাঝ পুকুরে গিয়ে বৈঠা ফেলে দিয়ে,

চারিদিকে বনোজ সুন্দর্য দেখতে লাগলো মুগ্ধ দৃষ্টি ফেলে,মুহুর্তেই চুহেসের মন টা ভালো হয়ে গেলো,

চুহেস মন খারাপ থাকলে এই নেইজিনের নীড়ে চলে আসে,কিছুক্ষন থেকে আবার চলে যায়,কিন্তু আজ কিছুতেই যেতে ইচ্ছে করছে না , কেনো জানি সব কিছু অন্য রকম লাগছস,,চুহেস মনে মনে কথা বলছে
– ভালো ই হয়েছে এই নীড়ের কথা কেউ জানে না নিহার ও না,নিশ্চিন্ত থাকা যাবে কেউ ডিস্টার্ব করতে আসবে না

রাত প্রায় নটা চুহেসে এখন ও ফেরেনি গাইথি এবার চিন্তায় পড়লো, কোথায় গেলো চুহেস,নিহার তো বলছে সে কিছু জানে না

অপর দিকে এটা ও বলছে এভাবে না বলে উনি কখনো কোথায় ও যান না,তা হলে আজ কোথায় গেলো ,,,
শুধু কি আমি, বাবা, আছি বলে ই কি উনি বাসায় আসতে চাইছেন না,,

কিন্তু আমাদের বললে ই তো হতো যে উনি আমাদের চোখের সামনে দেখতে চান না,, আমাদের কিছু না বলে নিজে ই উধাও ,,
প্রায় শত বার ফোনে ট্রাই করা হয়ে গেছে,রিসিভ হচ্ছে না কোন বিপদ আপদ হয়নি তো
কথা টা মনে পড়তে ই গাইথি আতকে উঠে,,
গাইথি চুহেসের রুমে বসেই এই সব ভাবছিলো, হঠ্যাৎ ঐশী এসে বল্লো
– গাইথি আমরা কাল সকাল সকাল ই নতুন বাসায় উঠবো
ঐশীর কথা শুনে গাইথি কোন রেসপন্স করেনি,যেমন বসে ছিলো,এখন তেমন ই আছে

ঐশী – গাইথি কে ধাক্কা দিয়ে বল্লো কিরে, কোন জগতে আছিস তুই
গাইথি চমকে উঠে বল্লো
– কিছু বলবে ভাবি

ঐশী- কিছু বলবো নয়, কিছু বলেছি,তুই শুনতে পাসনি

গাইথি- কি বলেছো
ঐশী- আগে বল তুই কি ভাবছিস

গাইথি ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে বল্লো
– ভাবি আজ উনি ফেরেন নি অফিস থেকে,কোথায় গেছে সেটা তার, পি এ, বলতে পারছে না

ঐশী- সে কি, আসেন নি কেনো
গাইথি- কেনো আসেনি সেটা তুমি ও হয়তো আচ করতে ফেরেছো

ঐশী- হুম সেটাই,আমরা কালকে আমাদের নতুন বাসায় উঠবো

কথা টা শুনে গাইথির মনে তেমন ভাবান্তর এলো না, উলটো ঐশী কে প্রশ্ন করলো
– আচ্ছা ভাবি উনি কোথায় যেতে পারেন

ঐশী- আমি কি করে বলবো, তুই এই ব্যাপারে নিহারের সাথে কথা বল

ঐশী বেরিয়ে যায়, কিছুক্ষন পর গাইথি উঠে নিহারের ঘরের দিকে যায়


গাইথি বিষন্ন মনে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে,চুহেস কাল রাতে বাসায় ফেরেনি,,নিহার অফিসে গিয়ে বাসায় ফোন করে জানিয়ে দেয় চুহেস অফিসে আছে

খবর টা শুনে গাইথি স্বস্তি পায়,আদনানরা চলে গেছে সকালে ই, গাইথি যায়নি,
বলেছে
– আমি চুহেসের সাথে দেখা না করে যাবো না, তোমরা যাও আমি পরে আসবো,

ঘড়িতে দুপুর বার টা এলার্ম বেঝে উঠে, গাউথি ভাবনায় ছেদ পড়ে, তার পর কিচেন রুমে যায়,,
কি রান্না করবে তাই ভাবছে,,
– কিন্তু চুহেস যদি আজ ও না আসে,কথা টা ভাবতেই মন খারাপ হয়ে গেলো

তবু ও মনকে বুঝালো এক রাত আসেনি তাই বলে আজ ও আসবে না এমন টা তো নয়, মনে আশার সঞ্চয় করে, রান্না শুরু করে দিলো

বিকাল
পাঁচটা বাজে চুহেস বাসায় আসে,,বাসা টা নিরিবিলি দেখে মন টা ছেৎ করে উঠে, তা হলে কি বাবুই চলে গেছে চারিদিকে এতো নিরব কেনো

চুহেস নিজের রুমে চলে যায়, ফ্রেশ হয়ে এসে, বুয়াকে ডেকে বল্লো
– বুয়া টেবিলে নাস্তা দাও,

গাইথি- সব রেডী আপনি আসুন

গাইথির কথা শুনে চমকে উঠে চুহেস তা হলে কি বাবুই যায় নি,,কিন্তু এতোক্ষন দেখিনি কেনো,হয় তো আমি ভুল শুনেছি, চুহেস গাইথির চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে, ডাইনিং রুমে যায়, গিয়ে দেখে বুয়া দাঁড়িয়ে আছে
চুহেস- যা ভেবেছিলাম তাই, আমি ভুল শুনেছি,বাবুই নেই

চুহেস বসে খেতে শুরু করলো,
– দুপুরে লাঞ্চ করেছেন
চুহেস কথা টা শুনেই পাশে তাকিয়ে দেখে গাইথি দাঁড়িয়ে আছে

চুহেস চোখ বন্ধ করে ফেলে, উফফ কেনো শুধু ওকে দেখি,ওতো বাসায় নেই

গাইথি- কি হলো চোখ বন্ধ করে কি ভাবছেন
চুহেস এবার চোখ মেলে দেখলো না কল্পনা নয়, বাস্তবে ই গাইথি দাঁড়িয়ে
আছে তার পাশে

গাইথি- কি হলো বলুন
চুহেস- ক্যান্টিনে খেয়ে নিয়েছি

গাইথি- কাল বাসায় ফিরেন নি কেনো

চুহেস প্রশ্ন টা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বল্লো
– এগুলা কি তুমি বানিয়েছ,খেতে ধারুন হয়েছে

গাইথি রেগে গিয়ে বল্লো
– আমাকে কি আপনার এখন ও বাচ্ছা মনে হয়, একটা প্রশ্নের আরেক টা উত্তর শুনে চুপ করে যাবো

চুহেস- আমার ঘাড়ে কটা মাথা আছে যে তোমাকে বাচ্ছা ভাবতে যাবো,জ্বীনের মতো চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে,কখন ঘাড় মোটকানো শুরু কর….

চুহেস কে কথা শেষ করতে দিলো না,গাইথি চিৎকার করে বল্লো
– কি বললেন আপনি

চুহেস গাইথির চোখের দিকে তাকিয়ে বল্লো
ঐ দেখো ঐ দেখো তোমার চোখ দিয়ে আগুনের ফুল্কি বের হচ্ছে,

গাইথি রেগে চলে যায়
চুহেস মিট মিট করে হাসছে,আর বলছে পাগলি একটা এখন ও বাচ্চা ই রয়ে গেলো,কেমন রাগিয়ে দিলাম

চুহেস খাবার শেষ করে, রুমে এলো
কিছুক্ষন পর গাইথি চুহেসের কাছে এলো সাথে একটা ব্যাগ

চুহেস ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বল্লো,এই রাতে কোথায় যাবে,একদম ব্যাগ প্যাক নিয়ে বের হচ্ছো

গাইথির চোখ তখনো লাল, দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রচুর কেঁদেছে
– আমি চলে যাবো এখন তাই বলতে এলাম

চুহেস কপাল কুঁচকে বল্লো
– একা একা কোথায় যাবে

গাইথি- আপনাকে বলা হয়নি,ভাইয়া আর ভাবি বাবা, সবাই সকালে ই চলে গেছে নতুন বাসাতে

চুহেস- তুমি যাওনি কেনো
গাইথি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বল্লো
– এতো দিন আপনার এখানে থাকলাম,আপনাকে না বলে যাওয়া টা ভালো মনে করিনি তাই, সবার পক্ষ থেকে আমি বলার জন্য থেকে গেলাম

চুহেস- তার কোন দরকার ছিলো না ওদের সাথে চলে গেলে ভালো হতো

চুহেসের কথা শুনে গাইথি চুহেসের দিকে তাকালো,মুখে যেন তার সব কথা হারিয়ে গেছে

নিরাবতা ভেঙে চুহেস বল্লো
-বাসা নিয়েছো কোথায়
গাইথি- বনশ্রী তে

চুহেস- এখন যেতে হবে না,সকালে নিহার তোমাকে নামিয়ে দিবে এখন যাও

গাইথি- তার কোন দরকার নেই,আমি এখন ই
যাবো

চুহেস কর্কশ কন্ঠে বল্লো
– এই মেয়ে তোমার প্রব্লেম কি হুম,নিজেকে খুব বেশি চালাক ভাবো,বললাম না সকালে যাবে,যাও এখন নিজের রুমে

চুহেসের রাগ দেখে গাইথি চুপসে গেলো,আনমনে হেটে বেরিয়ে গেলো চুহেসের রুম থেকে

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১২

0
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১২
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১২

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১২

 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

গাইথির কান্না দেখে চুহেসের বুকের বিতর প্রচণ্ড এক ব্যাথা অনুভব হয়,মনে হচ্ছে খুব অন্যায় কাজ করে ফেলেছি, চুহেস তাড়া তাড়ি করে বসে পড়ে কাউচে,নাহ এ ভাবে বলা উচিত হয়নি,মেয়েটা খুব কষ্ট পেয়েছে

চুহেস নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে নিচে গেস্ট রুমের দিকে যায়,গাইথির রুমের দরজা খোলা ই ছিলো,চুহেস দরজা টা একটু ফাক করে দেখতে পায় গাইথি বালিশে মুখ গুঁজে উপড় হয়ে শুয়ে আছে,মাঝে মাঝে কেপে উঠছে তার শরির,

চুহেসের বুকের বেতর চলাৎ করে উঠে, বাবুই এখন ও কাদছে

আমি কি তাকে ডাকবো, না থাক কাঁদুক কাঁদলে মন হালকা হবে,এই ভেবে উলটো দিকে হাটা ধরলো আবার কি মনে করে গাইথির রুমে ফিরে এলো,
তাকিয়ে আছে গাইথির দিকে, ছোট বেলার মতো রাগ হলে বালিশে মুখ গুঁজে কাদে,কারো সামনে কাঁদতে ওর অসস্থি হয়,ছোট বেলার অভ্যাস টা এখন ও ছাড়তে পারেনি,

চুহেস আসতে করে গাইথির পাশে বসলো
আদর মাখানো স্বরে ডাক দিলো
– বাবুই,কাঁদছিস কেনো, প্লিজ কাঁদিস না

গাইথি চোখ মুছে, বালিশ থেকে মুখ তুললো
বল্লো
– কেনো এসেছেন,আমাকে আমার জায়গা টা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ

চুহেস- আমি কথা টা এমনি বলেছি,আমি বুঝতে পারিনি আমার বলা কথা তোমাকে এতো টা আঘাত করবে,আমি স্যরি প্লিজ বাবুই

গাইথি চুহেসের মুখে বাবুই নাম টা শুনেই তার রাগ চলে যায়,আর রাগ উড়ে গিয়ে সেখানে সিমাহীন মায়া এসে ভীড় করে, এই ভেবে যে এতো বছর পরেই সেই নাম টা মনে রেখেছে চুহেস,সেই কবে এই নাম টা মুছে গেছিলো,

চুহেস গাইথি কে চুপ থাকতে দেখে বল্লো
– দেখ বাবুই প্রচন্ড খিদা লেগেছে,তুই যদি এবার না উঠিস তা হলে তোকে টেনে ফ্লোরে ফেলে দিবো

গাইথি মিষ্টি হেসে বল্লো
– আচ্ছা তাই,ঠিক আছে উঠলাম, আসুন

গাইথি চুহেস কে নিয়ে ডাইনিং রুমে গিয়ে বল্লো
-আপনি বসুন খাবার টা গরম করে নিয়ে আসি এতোক্ষনে ঠান্ডা হয়ে গেছে

চুহেস- লাগবে না,সব ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস আছে

চুহেস খাচ্ছে গাইথি পাশে বসে আছে
চুহেস খেতে খেতে বল্লো
– তুমি নাকি রাধতে জানো না,তা হলে এই রান্না টা কি করে রাধলে

গাইথি- বলবো না,নইলে আমার আর কোন ক্রেডিট থাকবে না,হি হি হি

চুহেস খাওয়া বন্ধ করে গাইথির হাসি মাখা মুখের দিকে তাকিয়ে বল্ল
– শুন, চোখের পানি খুব মূল্যবান এই পানি যার তার জন্য ফেলতে নেই,যত্ন করে রেখো,সঠিক মানুষের জন্য,

গাইথি- আপনার সেই পিন্ডিতি কথা গুলো আর গেলো না, চোখের পানি আবার মূল্যবান হয় নাকি

চুহেস- হয়, সেটা তুমি বুঝবে না,

গাইথি- আর কথা বলতে হবে না খেয়ে নিন,পরে কথা বলা যাবে

চুহেস খাওয়া শেষ করে বেলকনিতে গিয়ে দোলানায় বসে পড়ে

গাইথি দু মগ কফি নিয়ে বেলকনিতে যায়
চুহেস কফি দেখে খুশি হয়,কিন্তু খুশি টা প্রকাশ করলো না,
কিছুতেই গাইথির মায়ার জ্বালে ঝড়াতে চাইছে না,তবু ও অজান্তে ই যেন ঝড়িয়ে পড়ছে

গাইথি কফির মগ হাতে একটা চেয়ারে বসলো
গাইথি- কফি পেয়ে খুশি হন নি

চুহেস- কফি না হলে কোন সমস্যা ছিলো না

গাইথি কিছুক্ষন চুহেসের দিকে তাকিয়ে থেকে বল্লো
– ওহ বুঝতে পারি নি,

চুহেস কথা প্রসঙ্গ পালটিয়ে বল্লো
– তুমি ঘুমাবে না?

গাইথি- কেনো আপনার কি ঘুম পাচ্ছে

চুহেস কিছুক্ষন নিরব থেকে বল্লো
– হুম আমি এখন ই ঘুমাবো

চুহেসের কথা শুনে গাইথি চট করে উঠে হাতের কফি ফেলে দিয়ে দূত সেখান থেকে চলে গেলো

আকস্মিক গাইথির এই পরিবর্তন চুহেস কে খুব ভাবালো,

কিন্তু কিছু করার নেই,গাইথি ছোট, বয়স কম,আবেগ বেশি, তাই অন্যের বাগদত্তা হয়ে ও সেদিকে কোন খেয়াল নেই,

চুহেস রুমে চলে এলো ভাবছে সে,
গাইথি কে ভালোবাসি,কিন্তু এটা তাকে বুঝাতে চাই না,কষ্ট টা আমার এক তরফা থাক,যখন সাইমুম কে বিয়ে করে আমেরিকা চলে যাবে তখন সব ঠিক হয়ে যাবে

পরদিন সকালের নাস্তা টা ও গাইথি নিজ হাতে তৈরী করলো বুয়া কে হাত লাগাতে দেয় নি,, রাতের ঘটনায় যদি খুব কষ্ট পেয়েছে তবু ও নিজেকে সামলে নিয়েছে

ঐশী কিচেনে গিয়ে গাইথি কে দেখে দুষ্টুমির হাসি হেসে বল্লো,যাকে রান্না ঘরের পাশে দিয়ে হাটতে দেখিনি,সে আজ দু দিনে পাকা গৃহিনী হয়ে গেছে দেখছি
এতো কষ্ট কার জন্য

গাইথি ম্লান হেসে বল্লো
– ভাবি তোমার খোঁচা মেরে কথা বলা টা আর গেলো না

ঐশী- খোচা মারলাম কই,ভাগ্যিস কাল রাতে মিশমির কান্না থামানোর জন্য ওকে নিয়ে হাট ছিলাম,ড্রইং রুমে, নইলে দেখতে ই পেতাম না,
তা ননদিনী, উনার মনের বরফ কি গলেছে

গাইথি দীর্ঘ এক নিশ্বাস ফেলে বল্লো
-না ভাবি,তার মনের বরফ জমে সে বরফ পাথরে পরিনত হয়েছে
সে এখন অন্ধ,কারো মনের আকুতি ই তার স্পন্দন তোলে না

ঐশী- এতো তাড়া তাড়ি হাল ছেড়ে দিলে

গাইথি – না ভাবি, দেখি আমার ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যায়, ভাইয়ার কি খবর ফ্ল্যাট কি পাওয়া গেছে
ঐশী- হুম পাওয়া গেছে একটা, চুড়ান্ত কথা হবে আজকে

গাইথি আর কোন কথা বল্লো না, নাস্তা টেবিলে রাখলো

সবাই নাস্তা খেতে বসলো , চুহেস এখন ও সবার সাথে খেতে বসেনি,ব্যাপার টা গাইথির কাছে পরিস্কার হয়ে যায়,চুহেস তাদের কে এড়িয়ে চলছে,

চুহেস তাড়া হুড়া করে বেরিয়ে বল্লো,হাতে একদম সময় নেই,নাস্তা খেতে পারবো না,অফিস ক্যান্টিনে এক ফাকে খেয়ে নিবো,

আদনান – অল্প করে কিছু খেয়ে যা চুহেস

চুহেস- বললাম না লেইট হয়ে গেছে,
এই বলে নিহার কে উদ্দেশ্য করে বল্লো
– তুমি কি এখানে বসে থাকবে নাকি উঠবে

নিহার কিছু বলার আগে
গাইথি বল্লো
– আপনি নিজে খেতে চাইছেন না ভালো কথা, অন্য জনকে খেতে নিষেধ করার কোন রাইট আপনার নেই

চুহেস রাগে কট মট করে নিহারের দিকে তাকায়

নিহার বুঝতে পারলো চুহেস রেগে গেছে
– ইয়ে না মানে সত্যি লেইট হয়ে গেছে,আমি তা হলে উঠি,আজ অফিসে মিটিং আছে এই বলে নিহার গিয়ে গাড়ি তে বসলো

ওরা চলে যাওয়ার পর খাওয়ার টেবিলে পিন পতন নিরাবতা, নিরবতা ভেংগে আহমদ মেহেরা বল্লো
– আমাদের এখানে থাকা উচিত হচ্ছে না আদনান

আদনা কিছু বলতে যাবে তার আগে গাইথি বল্লো
– কেনো বাবা, চুহেসের এই ব্যাবহার তুমি নিতে পারছো না তাই তো,,কিন্তু চুহেস তো তোমার সাথে তেমন কিছুই করেনি,শুধু এড়িয়ে চলছে, আর আমি তার জায়গা হলে কি করতাম,
এতো টুকু বলে একটু দম নিলো গাইথি,হয়তো নিজেকে কন্ট্রোল করেছে ,থাক সেই কথা তোমাকে বলতে চাই না, তুমিআমার বাবা হয়তো এই কথা তুমি আমার কাছে থেকে আশা করো না

আদনান – আহ গাইথি চুপ করতো,তার পর আদনান আহমদ মেহেরা কে বল্লো
– বাবা আজ আমি আর ঐশী বেরুবো, বাড়িয়ালার সাথে কথা ফাইনাল করে, তার পর কালকের মধ্যে নতুন বাসায় গিয়ে উঠবো

চুহেস নিজের ক্যাবেনি বসে ভাবনার জগতে ভেসে যাচ্ছে,,
মিথ্যা বলে বেরিয়েছি বাবুই সামনে থাকলে নিজে কে ধরে রাখতে পারি না,
তাই ওর চোখের সামনে থেকে চলে এলাম কিন্তু অন্তরে যে তার ছবি আকা,সেটা বার বার চোখে ভাসছে

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১১

0
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১১
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১১

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১১

 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

চুহেস তো আমাদের কোন সুযোগ ই দিচ্ছে না

নিহার – সুযোগ টা আপনাদের করে নিতে হবে সে জন্য চুহেস স্যারের কাছা কাছি থাকলে ভালো হতো।

আদনান- আমার জন্য কোন প্রব্লেম নেই আমার তো এখানে ই থাকতে হয়, এখন, বাবা,আর গাইথি কি বলে সেটা ই বড় কথা

আহমদ মেহেরা- এই বয়সে এসে নিজেকে খুব অপরাধি মনে হচ্ছে,কি করবো বুঝতেছি না

গাইথি- আমার মনে হয় থাকা উচিত,তবে এখানে নয়,ভাইয়া তুমি আলাদা একটা বাসা বাড়া করো আমরা সেখানে গিয়ে উঠবো,কারো বাসায় এ ভাবে থাকতে কেমন জানি লাগে

ঐশী- ঠিক বলেছিস তুই গাইথি, তোর ভাইয়া চাকরি যেহেতু ঢাকায় করে সেহেতু কোন প্রব্লেম আছে বলে মনে হয় না

নিহার- ঠিক আছে,আপ্নারা যা ভালো বুঝেন, নিহার বেরিয়ে গেলো

চুহেস বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে, ভাবছে বাবুইর কথা চোখে চোখ পড়ার পর বাবুইর লজ্জা মাখা চাহনি টা বার বার মনের পাতায় ভাসছে, খুব ইচ্ছে করে বাবুই কে বলতে,যাসনে আমাকে ছেড়ে আমি যে খুব ই তৃষ্ণাত্ব, ভালোবাসার তৃষ্ণা যে অনেক বেশি, কিন্তু বলতে ছেয়ে বলতে পারি না,ও যে আমার নয়,

এর মাঝে নিহার এসে চুহেসের পাশে দাঁড়ায়
নিহার- স্যার কি ভাবছেন

চুহেস- কিছু না,,তুমি যাও আমার জন্য এক মগ কফি নিয়ে ছাদে এসো, আমি যাচ্ছি,

নিহার-ঠিক আছে বলে বেরিয়ে যায়,কিচেনে না গিয়ে গাইথি কে গিয়ে বলে
ম্যাডাম,স্যার ছাদের উপরে, আপনি এক মগ কফি করে নিয়ে যান তার জন্য

গাইথি খুশি হয়ে বল্লো
– উনি কি আমাকে নিয়ে যেতে বলেছেন
নিহার কিছু বল্লো না
শুধু বল্লো তাড়া তাড়ি যান

গাইথি যেন খুশিতে ডান্স করতে ইচ্ছে করছে, তার পর নিজেকে সামলে নিয়ে কিচেনে গিয়ে কফি করে,ছাদের দিকে যায়,গিয়ে দেখে চুহেস গিটার হাতে রেলিং ধরে দাড়িয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে

গাইথি চুহেসের পাশে যেয়ে হালকা করে গলাটা কেশে নিলো
চুহেস চমকে উঠে ভ্রু কুঁচকে পাশে তাকিয়ে বলে
– তুমি?

গাইথি- আপনার কফি

চুহেস- তুমি কেনো আনলে? নিহার কে তো আনতে বলেছিলাম

গাইথি- বলে ছিলেন, কিন্তু উনি কি যেন একটা কাজে আটকা পড়েছে তাই আমি নিয়ে এলাম,কেনো আমি কি নিয়ে আসতে পারি না?

চুহেস কোন কথা বল্লো না,কি বা বলবে সত্যি ও ছেয়েছে বাবুই তার জন্য কফি করে নিয়ে আসুক,

গাইথি ভাবছে এখন ও আগের সেই চাহনি,ভ্রু কুঁচকে তাকানো, এই তাকানো দেখে ছোট বেলায় কত ভয় পেতাম, এখন ভয়ের বদলে প্রেমে পড়লাম,

এ ভাবে দুজনে কিছুক্ষন ভাবনায় ডুবে থেকে নিরাবতা ভাংলো গাইথি
– কিছু বলছেন না যে

চুহেস- কি বলবো

গাইথি- সেটা ও কি আমি বলে দিবো

চুহেস- তোমরা যাচ্ছো কখন

চুহেসের মুখে কথা টা শুনে গাইথির হাসি খুশি মুখ টা মলিন হয়ে গেলো,তা হলে কি, চুহেস চায় আমরা এখানে না থাকি,তবু গাইথি নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– আমরা যাচ্ছি না

চুহেস গাইথির কথা শুনে এক্সাইটেড হয়ে বল্লো
– সত্যি, সত্যি তোমরা যাচ্ছো না এখানে থাকবে

চুহেসের এই এক্সাইডমেন্ট দেখে গাইথি মনে মনে অনেক খুশি, তার পর বল্লো
– আমরা এখানে থাকছি না তবে ঢাকা থেকে ও যাচ্ছি না, ভাইয়া কে বলেছি ফ্ল্যাট খুঁজতে, ভালো ফ্ল্যা ফেলে চলে যাবো এখন থেকে

গাইথির কথা শুনে চুহেসের খুশি টা উবে গেলো
কিছুক্ষন আনমনা হয়ে গেলো তার পর নিজেকে সামলে নিলো,এই ভেবে যে কত দূরেই বা আর যাচ্ছে,চোখের সামনে না থাকুক,এক শহরে তো থাকবো,

তার পর গাইথি কে উদ্দেশ্য করে বল্লো
– হঠ্যাৎ শহরে থাকার ইচ্ছে হলো কেনো

গাইথি- মিশমির জন্য মিশমি ভাইয়া কে ছেড়ে কিছুতেই যাবে না তাই, এই সিদ্ধান্ত

চুহেস- কেন তোমার থাকতে ইচ্ছে করে না?

গাইথি এই প্রশ্নের উত্তর দিলো না,কথা গুরিয়ে বল্লো
– কফি কেমন হয়েছে? এই প্রথম নিজ হাতে কিছু একটা করলাম, তা ও আপনার জন্য

চুহেস কফির মগে চুমুক দিতে দিতে বল্লো
– ভালো, কিন্ত মনে মনে বল্লো,(আহ মনে হচ্ছে না নতুন হাতের তৈরী,মনে হচ্ছে ফাকা হাতের কফি) তার পর বল্লো কেনো বাড়িতে সব কাজ কে করে

গাইথি- কে আবার ভাবি করে আমার কাজ মিশমি কে সামলানো

চুহেস- ওহ আগে আগে বুঝি বাচ্ছা সামলানোর ট্রেনিং নিচ্ছো,ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি তার

গাইথি লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে গুরে দাঁড়িয়ে বল্লো
– আপনি বুঝি গিটার বাজাতে পারেন

চুহেস- না, তেমন পাকা হাত না আমার,কাজ না থাকলে রোজ বিকেলে ছাদে উঠে,বেসুরে সুর তুলি

গাইথি- বেসুরে কেনো
চুহেস- আমার যে নিজের কোন সুর নেই

গাইথি কিছু বল্লো না,ছাদের উপর গোলাপ বাগানের দিকে ছেয়ে আছে।
আর কিছু বলার ইচ্ছে হলো না

তার পর বল্লো
– আপনি এ ভাবে রেলিং ধরে কতোক্ষন থাকবেন,

চুহেস- রাত দশটা,তার পর রুমে যাবো

গাইথি- ডিনার কখন করেন

চুহেস- রাত দশটার পরে
গাইথি কি যেন ভাবলো তার পর বল্লো ঠিক আছে আমি তা হলে যাই,
গাইথি চলে গেলো চুহেস আবার ভাবনার জগতে ডুবে গেলো, যদি এ ভাবে ই আমার বাবুই কে খাচায় ভরে রাখতে পারতাম,দিন শেষে ক্লান্ত শরির নিয়ে গল্প করে ক্লান্তি দূর করার একজন সংগি হতো, তার পর চুহেস গিটারে সুর তুলে আনমনা হয়ে গেয়ে উঠলো “”একটু শিতল ছায়া তুমি ক্লান্ত পথের শেষে হাত বাড়িয়ে ডাকো আমায় ঘুম পাড়ানির দেশে””

গাইথি নিচে এসেই কিচেনে ডুকলো,তার আগে নিহারের সাথে দু মিনিট কথা বল্লো,এই চুহেস কি পছন্দ করে এই নিয়ে

নিহার একটু অবাক হলো গাইথির কথা শুনে পরোক্ষনে ঠোটের কোনে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো,

গাইথি কিচেনে গিয়ে,রান্না শুরু করলো তা ও আবার রেসিপি দেখে,মনে খুব ভয়, রান্না যদি ঠিক ঠাক না হয় তা হলে মান সম্মান কিচ্ছু থাকবে না,,
তা ও রান্না টা খুব কঠিন,গাইথি মনে মনে বল্লো কঠিন হলে আমার প্রব্লেম নেই, ঝাল বিপ বিরিয়ানি, খেয়েছি অনেক কিন্তু রান্না করেছি এই প্রথম,চুহেসের পছন্দের খাবার এটা মনে মনে কথা বলতে বলতে গাইথি রান্না শেষ করলো,

টেবিলে খাবার সাজিয়ে গাইথি সবাইকে ডাকলো,চুহেস ছাড়া বাকি সবাই খেতে এসেছে
ঐশী- জীবনে প্রথম বার গাইথির রান্না খাবো আজ, আমার তো তর সইছে না এই বলে খেতে বসে গেলো

গাইথি নিহার কে বল্লো আপনার স্যার আসবে না
নিহার-স্যার তো এতো তাড়া তাড়ি খায় না,স্যারের খাবার টা পরে রুমে দিয়ে আসলে ই হবে, সবাই খাওয়া শুরু করলো

আদনান – কিরে তুই যে এতো ভালো রান্না পারিস,আগে জানতাম না তো

ঐশী- জানবে কি করে আগে কি এই বাসায় এসেছি নাকি, কথা টা বলে মুখ টিপে হাসলো ঐশী

নিহার- ঠিক বলেছেন, মেয়েদের এই একটা অসিম ক্ষমতা,ভালো রান্না করে খাইয়ে অনেক প্রশংসা কুড়িয়ে নিতে পারে কিন্তু ছেলেরা তা পারে না

গল্পের মাঝে সবার খাওয়া শেষ হলো
গাইথি চুহেসের জন্য টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখলো,ইচ্ছে করে ই খাবার টা রুমে দেয়নি

রাত এগারো টার পরে চুহেস নিহার কে ডেকে বল্লো
– নিহার আজ কি খাবার রান্না হয়নি নাকি আমার রুমে এখন ও খাবার এলো না যে

গাইথি ডাইনিং রুম থেকে বল্লো,খাবার তো দু ঘন্টা আগে হয়েছে,আপনি আসলে খেতে পারবেন

চুহেস- আমি রাতের খাবার রুমে বসে খাই, সো বুয়া খালা কে দিয়ে খাবার টা রুমে পাঠিয়ে দাও,

গাইথি উঠে গেলো ডাইনিং রুম থেকে
গিয়ে চুহেস কে বল্লো
– এই যে কি সমস্যা আপনার,সে কখন থেকে খাবার নিয়ে বসে আছি,এখন বলছেন খাবার রুমে দিতে,নতুন বর নাকি আপনি, ওখানে গিয়ে সবার সাথে খেতে লজ্জা করছে

চুহেস- বাহ দু দিন হয়নি এসেছো এর মধ্যে এতো সাহস হয়ে গেলো তোমার,আমার বাড়ি আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে খাবো তাতে কার কি

গাইথি চুহেসের কথা শুনে কান্না করে দিলো,ওহ তাই তো আসলে আমি ভুলে গিয়েছিলাম,এটা আপনার বাড়ি আমার এখানে কথা বলার কোন অধিকার নেই
গাইথি চোখ মুছে সেখান থেকে দূত পা ফেলে নিজের রুমে চলে আসে

to be continue

অবেলায় ভালোবাসা  পর্ব-১০

0
অবেলায় ভালোবাসা  পর্ব-১০
অবেলায় ভালোবাসা  পর্ব-১০

অবেলায় ভালোবাসা  পর্ব-১০

লেখা –সুলতানা ইতি

সাইমুম আদনানের এই ব্যাবহারে, একটু অবাক হলো তার পর আর কিছু না বলে বেরিয়ে এলো

নিহার ড্রাইভ করছে,চুহেস পিছনের সিটে আনমনা হয়ে বসে আছে,নিহার লুকিং গ্লাসে চুহেসের মুখ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে,,আর নিজে ই নিজেকে বলছে
– স্যার যে কেমন মানুষ, সেটা বুঝা বড় ধায়, তুলে নিয়ে এলাম গাইথি কে,এই রকম একটা সুযোগ নিজের ইচ্ছে তে হাত ছাড়া করলো,আবার এখন মন খারাপ করে বসে আছে

চুহেস ভাবছে,এতোক্ষনে মনে হয় সাইমুম এসে পড়েছে আমার দেয়া চিরকুট টা পড়ে হয় তো আবার বিয়ের জন্য রাজি হয়েছে হবার ই কথা

গাইথির মতো মেয়ে তো আর দ্বিতীয় টা পাবে না ওদের ভালোবাসার কাছে,আমার এই অবেলায় ভালোবাসার কোন দাম নেই,
সব দিক থেকে ই আমি গাইথির অযোগ্য, আমি না হয় এই জন্য অবহেলিত হয়ে থাকলাম, সব ভালোবাসা তো আর পূর্ণতা পায় না,
জীবনে অনেক বেলা হওয়ার আগে ই ভালোবাসার মানুষ কে খুঁজে নিতে হয়,আমি তা নিতে পারিনি এটা আমার ব্যার্থতা,,

গাড়ি এসে চুহেসের বাসার সামনে থামলো, চুহেসের যেন সে দিকে কোন খেয়াল নেই

নিহার- স্যার,এসে পড়েছি,,
চুহেসের কথায় ভাবনার জগত থেকে ফিরে আসে
তার পর গাড়ি থেকে নেমে পড়ে,
*
এদিকে গাইথি সেই যে রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করেছে আর বের হবার নাম নেই,আদনান আর ঐশী এসে অনেক বার ডেকেছে তবু ও দরজা খোলেনি,
বালিশে মুখ গুঁজে অনেক্ষন কাদলো, ছোট বেলার কিছু স্মৃতি যেন ওকে শান্ত হতে ই দিচ্ছে না,

গাইথি বার বার বলছে,আমি কেমন করে সব কথা ভুলে যেতে পারলাম,কেনো আমার এতো দিন সব কথা মনে পাড়েনি,,
এবার আহমদ মেহেরা এসে মেয়েকে ডাকতে শুরু করলো

গাইথি- উফফ এরা আমাকে আমার মতো করে থাকতে দিবে না দেখছি,
উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলো, আহমদ মেহেরা, আদনান, ঐশী,সবাই গাইথি রুমে যায়

আহমদ মেহেরা চুপ করে আছে মেয়ে কে বলার মতো কোন কথা ই যেন তার কাছে নেই

আদনান বোন কে বল্লো
– এমন করছিস কেনো গাইথি,তুই আমার ছোট বোন, অনেক আদর দিয়ে তোকে বড় করেছি,তুই এমন মন মরা হয়ে থাকলে আমাদের ভালো লাগে বল

গাইথি- আমি ঠিক আছি ভাইয়া

আদনান – কেমন ঠিক আছিস সেটা তো দেখতে ই পাচ্ছি,খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ করে দিলি, কেন এমন করছিস বোন, বল আমায়

গাইথি ভাইয়ের কথা শুনে কেঁদে উঠলো,কাঁদতে কাঁদতে ভাই কে বল্লো
– ভাইয়া আমরা কেমন করে চুহেসের কথা ভুলে যেতে পারলাম বলো,ও কি আমাদের কেউ ছিলো না

আদনা বোন কে শান্তনা দিয়ে বল্লো
– ভুল টা আমাদের ই অনেক অন্যায় করেছি আমরা ওর সাথে,

তার পর একটু স্বাভাবিক হয়ে বল্লো,আমি তোর ভাবি,আর বাবা মিলে একটা প্লান করেছি

গাইথি চোখের পানি মুছে,জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে

আদনান – আমরা সবাই মিলে চুহেসের বাসায় যাবো, আমাদের অন্যায় স্বিকার করে ওর সাথে সম্পর্ক টা স্বাভাবিক করতে চাইবো,ও তো আমাদের ভাই তাই না

গাইথি- হালকা হেসে ফেল্লো,তার পর বল্লো,হুম ভাইয়া,ও তোমার ভাই হয় তো

ঐশী দুষ্টুমির হাসি দিয়ে বল্লো
– কেন তোর বুঝি অন্য কিছু হয়

ঐশীর কথা শুনে গাইথির লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলো, মুখে কিছু বলতে যেয়ে ও যেন বলতে পারছে না,এই রকম লজ্জা সংকোচ তো আগে লাগে নি,
যখন ভাবি সাইমুম কে নিয়ে এই রকম কথা বলতো,তা হলে আজ কেনো লাগছে

গাইথির এই অবস্থা দেখে কেউ আর কোন কথা বল্লো না,সবাই গাথির রুম থেকে বেরিয়ে গেলো,
গাইথি আবার বালিশে মুখ গুজলো,উহ হু, এবার আর কাঁদছে না,লজ্জায় মুখ গুজলো
*
চুহেস অফিসে যাওয়ার জন্য রেডী হচ্ছে, অফিসে অনেক কাজ পড়ে আছে
তাই তড়িঘড়ি করে অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়লো

চুহেস অফিসে গিয়ে নিজের ক্যাবেনি গিয়ে একগাদা ফাইলে ডুবে গেলো

নিহার কে পাঠিয়েছে এম এ কম্পানিদের সাথে একটা ডিল করতে,

এমন সময় অফিস টেলিফোন বেজে উঠে
চুহেস ফোন ধরে বল্লো,ইয়াহ মিস,ইভানোভা বলুন

ইভানোভা- স্যার আপনার বাসা থেকে একজন আয়া ফোন করেছে,বলছে আর্জেন্ট কথা আছে

চুহেস -ওকে লাইন দাও

চুহেস বাসায় কথা বলা শেষ করে অল্পক্ষণ কিছু ভাবলো, তার নিহার কে কল দিয়ে বলে,নিহার তুমি কি জানতে আজ বাসায় গেস্ট আসবে

নিহার- না তো স্যার,কেনো কেউ এসেছে নাকি

চুহেস- হুম,আয়া ফোন করেছে বাসা থেকে
ঠিক আছে তুমি ওদিকের কাজ সেরে চলে এসো
আমি দেখছি এদিক টা, চুহেস কল কেটে দিয়ে,, রিভলভিং চেয়ারে সোজা হয়ে বসলো,,,
রাবেয়া খালা তার ছেলের কাছে যাওয়ার পর আমি নতুন বাড়িতে উঠি,কেউ তো নেই যে আমার নতুন বাড়ির ঠিকানা জানবে,
আর সেখানে আসবে কোন খবর না দিয়ে,,
রাবেয়া খালা ছাড়া তো এই শহরে আমার এমন কেউ নেই যে আমার খোঁজে আসবে

সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে চুহেস ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে এলো,,রিসেপশনে ইভানোভা কে বল্লো
– মিস নোভা,নিহার আসলে বলবেন আমি বাসায় ফিরে গেছি,

ইভানোভা একটু অবাক হলো এই প্রথম অফিস ছুটি হওয়ার আগে বাসায় যেতে দেখে চুহেস কে
মুখে কিছু না বলে,মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো চুহেসের কথায়

চুহেস গাড়িতে এসে বসলো, ঢাকা শহরের ঐতিহাসিক জ্যামের কারনে আধ ঘন্টার পথ পার হতে দেড় ঘন্টা লাগলো,

বাসার গেটে গাড়ি পার্কিং করে বাসার বিতরে গেলো,
প্রথমে ড্রইং রুম, ড্রইং রুমে চোখ পড়তে ই ভুত দেখার মতো চমকে উঠে চুহেস,
আহমদ মেহেরা, আদনান,ঐশী,গাইথি,

গাইথির দিকে চোখ পড়তেই চুহেসের বুকের ধুকফুকানি বেড়ে গেলো,গাইথি কে দেখলে এই অনুভুতি টা হয়,এই অনুভুতির কোন কারন আজ ও চুহেস বুঝতে পারলো না,

গাইথি ফুলহাতার একটা সাদা গাউন পরেছে,এতেই তার লাবন্যতা যেন আর ও বেড়ে গেছে, অপলক ছেয়ে আছে চুহেস গাইথির দিকে

এমন সময় গাইথির ও চোখ পড়ে যায় দরজায় দাঁড়ানো চুহেসের উপর,এই প্রথম চার চোখের মিলন হলো,

গাইথি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নেয়,
চুহেস নিজেকে সামলে নিয়ে বিতরে প্রবেশ করতে করতে বল্লো
-আরেহ মিঃ আদনান আপনারা

এতোক্ষনে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে চুহেস
আদনান হেসে উত্তর দিলো
– চলে এলাম দেখতে

চুহেস- কি দেখতে এলেন আমাকে নাকি,আমার আজকের এই সাকসেস টা কে

চুহেসের কথায় বিব্রত বোধ করলো আদনান, তবু ও নিজেকে সামলে নিলো

চুহেস- যাই হোক অনেক দূর থেকে এসেছেন আপনারা আগে রেষ্ট নেন, তার পর কথা হবে,এই বলে চুহেস বাড়ির একজন আয়া ডেকে বল্লো
– তাহের গেস্ট রুমে নিয়ে যাও এনাদের কে

এবার আহমদ মেহেরা কথা বল্লো
– আমরা এখানে থাকতে আসিনি আমি কিছু কথা বলেই চলে যাবো

চুহেস তাহের কে ওয়াডার দিয়ে চলে যাচ্ছিলো,আহমদ মেহেরার কথা শুনে থমকে দাড়ালো,আহমদ মেহেরার দিকে তাকিয়ে বল্লো
– এখন ও বুঝি আপনার কিছু কথা রয়ে গেছে,কিন্তু আমার মনে হয় আপনার কোন কথা ই নেই

আহমদ মেহেরা- অনেক টাকা কামিয়েছো তুমি,নাম জোশ খ্যাতি ও অনেক করেছো,কিন্তু এসবের মাঝে বড়দের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলা টা ভুলে গেছো

চুহেস- ওহ তা হলে আপনি যা করেছেন আমার সাথে, তার পরে ও আমার কাছে থেকে সম্মান পাওয়া আশা করেন

আহমদ মেহেরা আর কোন কথা বলতে পারলো না

আদনান বল্লো
– চুহেস ভাই আমার,যা হয়েছে সব ভুলে গিয়ে কি আমরা নতুন করে এক হতে পারি না

চুহেস- আমি কি করে সব ভুলে যাবো মিঃ আদনান,আমার সাথে যা হয়েছে,তা আপনার সাথে হলে আপনি কি ভুলে যেতে পারতেন

আহমদ মেহেরা এবার নরম স্বরে বল্লো,
– বাবা আমি সত্যি তোর উপর অনেক অন্যায় করেছি, আমার অন্যায়ের কি কোন ভাবে ক্ষমা হয় না

চুহেস- আমার কারো প্রতি কোন রাগ নেই কিন্তু, আমি আমার অতিত কে ভুলে যেতে পারবো না, আশা করি আপনি এমন করে আমাকে অনুরোধ করবেন না,
আপনারা এসেছেন ভালো কথা,খেয়ে দেয়ে রেস্ট করুন

কথা শেষ করে চুহেস তার রুমে চলে যায়
গাইথি মনে মনে খুব কষ্ট পেয়েছে এতো দূর থেকে যার জন্য ছুটে এসেছি,সে একটি কথা ও বল্লো না আমার সাথে

গাইথি কে এমন বিমূঢ় অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
ঐশী ফিস ফিস করে গাইথি কে বলে,
– আহ হা ননদিনী এতো অল্পতে ভেংগে পড়লে চলবে কি করে,,চুহেসের মনে বরফ জমেছে সেটা গলানোর দায়িত্ব যে তোমার

গাইথি বিব্রত বোধ করলো ভাবির কথা শুনে,, তাহের ডাইনিং রুমে খাবার রেডী করে ওদের ডাকতে এলো,

নিহার অফিসের সব ঝামেলা চুকিয়ে বিকাল পাঁচটা তে বাসায় ফিরে,
গেস্ট রুমের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলো বিশেষ কেউ এসেছে,নইলে এতোক্ষনে চলে যেত,নিহার ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে চুহেসের রুমের দরজায় নক করে

চুহেস- বিতরে এসো নিহার
নিহার গিয়ে চুহেসের মুখোমুখি একটা সোপায় বসে

নিহার – স্যার প্রথমে একটা ব্যাড নিউজ,এম এ কম্পানি আমাদের সাথে ডিল টা করতে রাজি হয়নি,অনেক বুঝিয়ে ও কাজ হয়নি,

আর গুড নিউজ হলো ফ্রান্স যে শাখাটা করতে ছেয়ে ছিলেন সেটা ফাইনাল হয়েছে এখন সেটা উদ্বোধন করতে কখন যাবেন,সেখান কার কাজে নিউজিত কর্ম কর্তারা,আপনাকে না দেখে ফ্যাক্টরি চালু করতে চাইছে না, তাদের একটা ই দাবি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বস কে হাজির থাকতে হবে

চুহেস- হুম দ্বিতীয় খবর টা শুধু গুড নিউজ ই নয় আমার জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া তবে সেখানে আমি যেতে পারবো না,

আমার হয়ে উদ্বোধন করবে রাবেয়া খালা,উনি তো ফ্রান্সে উনার ছেলের কাছে ই আছে,সো আমি চাই উনাকে দিয়ে কাজ টা শুরু হোক, উনি না থাকলে আমি যে কোথায় ভেসে যেতাম

নিহার- স্যার, আরেক টা কথা, রাবেয়া খালা অসুস্থ উনি চায় আপনি নিজে ফ্রান্সে যান আর উনার সাথে দেখা করুন, মিঃ চিকি গতকাল ফ্যাক্স করেছে আমাকে, আপনি অনেক ব্যাস্ত থাকেন তাই আপনাকে সরাসরি বলতে চায়নি তারা

চুহেস- তা হলে আমাকে যেতেই হবে, কখন যেতে হবে

নিহার- নেক্সট মানতে গেলে ভালো হয়,এক সাথে দুটো কাজ হয়ে যেত

চুহেস- ঠিক আছে তাই হবে,, যাও তুমি রেস্ট নাও
নিহার- আরেক টা কথা স্যার

চুহেস ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বল্লো,এবার তুমি এটা জিজ্ঞাস করোনা আজকের গেস্ট রা কারা,কারন তুমি এদের ভালো করে জানো,

নিহার- স্যারর দরজায় এসে কখনো কথা বলতে হয়না নক করলে ই আপনি বুঝে যান,প্রশ্ন করার ধরন দেখলে আপনি বুঝতে পারেন কি বলতে চাই,
এটা কি করে সম্ভব হয়

চুহেস- এটা কমনসেন্স নিহার,

নিহার- হবে হয়তো

বলে নিহার গেস্ট রুমের দিকে এগুলো,কোন রুমে নক করবে এটা ভাবছে সে

পিছন থেকে চুহেস বল্লো
বাম দিকের রুমে যাও বুঝতে পারবে

নিহার চুহেসের কথা শুনে পিছনে তাকিয়ে বল্লো, স্যার আপনি কি করে বুঝলেন যে আমি এটা ই ভাবছি

চুহেস- কিছু না এমনি চলো আমি ও যাবো তোমার সাথে,
চুহেস আর নিহার আহমদ মেহেরা রুমে গেলো,গিয়ে দেখলো সবাই আহমদ মেহেরার রুমে

নিহার সবাইকে দেখে অবাক হলো ভাবলো
এরা এখানে কেনো এসেছে, স্যারের সাথে গাইথি ম্যাডামের বিয়ের কথা বলতে এসেছে কি? কি জানি হবে হয় তো

চুহেস তাদের দিকে তাকিয়ে বুঝলো,এরা হয়তো নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলো

চুহেস- স্যরি আমরা মনে হয় ভুল সময় এসেছি

আদনান- আরেহ না না,বিতরে এসো আমরা এমনি কথা বলছিলাম তেমন কিছু নয়

চুহেস আর নিহার গিয়ে বসলো,
চুহেস- আপনাদের কোন অসুবিধা হয়নি তো

আহমদ মেহেরা- না বাবা কোন অসুবিধা নেই,তবে আমরা আজ সন্ধায় রওনা হবো, গ্রামের উদ্দেশ্যে

চুহেস কিছু বল্লো না শুধু বল্লো আপনাদের ইচ্ছে এই বলে সে উঠে গেলো

নিহার বসে আছে,
নিহার- আমার মনে হয় আপনাদের কয়দিন এখানে থাকা দরকার

ঐশী- কেনো

নিহার- চুহেস স্যারের সাথে আপনাদের যে বন্ধন টা ছিলো সেখানে মরিচা ধরেছে, এবার সে বন্ধনে সান দিয়ে ধারালো করা উচিত

আদনান – কিন্তু কি করে, চুহেস তো আমাদের কোন সুযোগ দিচ্ছে না

to be continue

বেহুলা মন

0
behola mon
behola mon

বেহুলা মন

Written by Avantika Anha

মনের বিষন্নতা যখন গ্রাস করে অশ্রু ও সাথে টলমল,

গহীন থেকে দেখছে আমায় ঐ সে মেঘের দল।

বিলাস বহুল লোকের ভিড়ে কেন দেখে গহীন থেকে,

সব যখন ব্যস্ত হয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে একটু ডাকে।

মৃত স্বপ্ন জাগিয়ে তুলতে বৃষ্টি এসে প্রেরণা জোগায়।

প্রশ্ন যখন ভরপুর আড়ালে তখন লুকিয়ে যায়,

যখন খুঁজি আমি নিজে করে লুকোচুরি আমার সাথে।

অশ্রুর সাথে আকাশ কাঁদে মনের আকাশ বৃষ্টি হয়ে নামে নিরব যখন আমি রই।

কেন সে আবার ডাকে,

সব ভুলে যখন ঘুমিয়ে যাই সে যে নিরবতা ভেঙ্গে ডেকে যায় ।

আমি কি তাদের খেলার সাথী? নাকি বিষন্নতার সাথী?

প্রশ্ন যখন করতে যাই কেন সে পালিয়ে যায়?

কোন সমুদ্দুরে আছে লুকিয়ে যাতনা গুলো ছিনিয়ে নিয়ে,

বেহুলা মন করে জালাতন শুদু তোমারি পরশ নিতে। .

গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(অন্তিম পর্ব)

1

গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(অন্তিম পর্ব)

রচনায়- অনামিকা ইসলাম ‘অন্তরা’

বাস্টটপে গাড়ি থামিয়ে উন্মাদের ন্যায় শুভ্র এদিকওদিক ছুটতে থাকে। খুঁজতে থাকে প্রাণের নীলিমা’কে। টিভিতে প্রচার করা দূর্ঘটনা স্থলে হাজির হয়। রক্তাক্ত স্থানে’র চারিপাশে দৌঁড়াতে থাকে। আহত কিংবা নিহত মানুষের কোন চিহ্ন’ই নেই সেখানে। সবাই যে যার মতো কাজে ব্যস্ত। রক্তাক্ত স্থানটিকে আরো একবার ফিরে যায় শুভ্র। ফিরে আসার সময় কুড়িয়ে পায় একটা পায়ের নূপুর। মনে পড়ে শুভ্র’র, এ নূপুর নীলিমা’র পায়ে দেখেছে সেদিন ক্যাম্পাসে। মাথা’য় দু’হাত রেখে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে তীব্র আর্তনাদে সে স্থানে বসে পড়ে শুভ্র। ঠিক তখনি পাশ থেকে গাড়ির হর্ণ বেজে উঠে। মাথা উঁচু করে রাস্তার মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের দিকে তাকিয়ে ‘থ’ হয়ে যায় শুভ্র। বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। বাসে জানালা’র যে পাশের সিটে বসে নীলিমা চিপস খাওয়া’য় ব্যস্ত, শুভ্র ছুটে যায় সেখানে। দৌঁড়ে উঠে বাসে। নীলিমা’র কিছু বুঝে উঠা’র আগেই টানতে টানতে ওকে বাস থেকে নামিয়ে আনে। হাত ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে নীলিমা’র। ‘কি করছেন! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? ছাড়ুন! ছাড়ুন বলছি। নইলে…’ হাত ছেড়ে দেয় শুভ্র। দু’হাত দিয়ে নীলিমা’র দু’গাল স্পর্শ করে। ‘নইলে কি?’ প্রতিউত্তরে চুপ করে থাকে নীলিমা। ‘কি হলো? কথা বলছো না কেন? নইলে কি?’ কথা বলছিল শুভ্র। তখন’ই ওর ফোনটা বেজে উঠে। — হ্যাঁলো, — ভাইয়া আমি শাকিলা। নীলিমা নাকি বাসায় নেই! পেয়েছেন ওরে? — হ্যাঁ, কথা বলো ওর সাথে। নাও তোমার বান্ধবী! কথা বলো। (লাউডস্পিকার বাড়িয়ে দিয়ে।) — আসসালামু আলাইকুম। শাকিলা কেমন আছিস?(নীলিমা) — ওয়ালাইকুম আসসালাম। এই কি বলছি শুন! ভাইয়া’কে আমি আর আপু সবটা বলে দিয়েছি! — মামামানে? কোকোকোন ভাইয়া? — কোন ভাই আবার! তোর স্বপ্নদেখার রাজকুমার, তোর শুভ্র ভাই! — (আড়চোখে নীলিমা একবার দেখে নেয় শুভ্রকে। তারপর ঢোক গিলে।) — তোর আর্থ সামাজিক অবস্থা, তুই ওনাকে কতটা ভালোবাসিস, সব, সবটা বলে দিয়েছি! আর ক্যাম্পাসে তুই কালকে ভুল করে যে ডায়েরীটা ফেলে গিয়েছিস সেটাও ভাইয়া’কে দিয়ে দিয়েছি। ডায়েরী’টাও ভাইয়া’র পড়া শেষ। তাই বলি কি মনের কথা ভেতরে না চেপে রেখে বলে দে ভাইয়া’কে। বলে দে ভালোবাসা’র কথা। দেখবি, ভেতরটা অনেকটা হালকা লাগবে। আচ্ছা, দে! এখন ভাইয়া’র কাছে দে… — হ্যাঁ, শাকিলা বলো…(নীলিমা’র হাত থেকে ফোনটা নিয়ে গিয়ে।) — ভাইয়া! আমি জানি আপনি নীলিমা’কেই ভালোবাসেন। আপু বলেছে, ক্যাম্পাসে প্রথম দিন নীলিমাকে দেখেই নাকি আপনি পাগল হয়ে গেছিলেন। ধীরে ধীরে একটু একটু করে ভালোবেসে ফেলেছিলেন ওকে। বলতেও চেয়েছিলেন ভালোবাসা’র কথা। কিন্তু নীলিমা’র বয়ফ্রেন্ড আছে এটা শুনে পিছিয়ে যান। একবুক হতাশা নিয়ে দুরে সরে যান। — পরে কথা বলি। রাখছি এখন। — আচ্ছা, আল্লাহ হাফেজ। ফোনটা পকেটে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যায় শুভ্র। নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে নীলিমা। কাছে যায় শুভ্র। স্পর্শ করে নীলিমা’র দু’গাল। আঙ্গুল দিয়ে মুছে দেয় চোখের জল। মুখটা উপরের দিকে তুলে নরম গলায় প্রশ্ন করে, ‘এত ভালোবাসো বলো নি কেন?’ জবাবে কিচ্ছু বলেনি নীলিমা! পূর্বের ন্যায় নিচের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে কাঁদছে আর চোখের জল ফেলছে। যেতে যেতে অনেকটা কাছে চলে যায় শুভ্র। বুকে জড়িয়ে নেয় নীলিমা’কে। কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে, তুমি কি আমার বউ হবে? কান্না থেমে যায়। হাসি ফুটে উঠে নীলিমা’র মুখে। চোখে জল, মুখে হাসি নিয়েই জবাব দেয়, আমি তো শুধু তোমার বউ না। তোমার সন্তানের মা’ও হতে চাই…

 

গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(১১)

0
গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(১১)
গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(১১)

 

গল্পটা নিশ্চুপ বালিকার(১১)

রচনায়- অনামিকা ইসলাম ‘অন্তরা’

দু’দিন পর অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে। রিংটনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় শুভ্র’র। ঘুম জড়ানো চোখে শুভ্র ফোন রিসিভ করে কানে ধরে। অতঃপর ঘুম জড়ানো কন্ঠে’ই প্রশ্ন করে, কে? ফোনের ওপাশ থেকে একটা নারী কন্ঠ ভেসে আসে। ‘শুভ্র ভাইয়া বলছেন?’ — জ্বী, বলছি! আপনি কে? — আমি শাকিলা! নীলিমা’র সবচেয়ে কাছের বান্ধবী। আপনাকে একটু দরকার ছিল আমার। একটু আসবেন? গলির মোড়ে? — খুব কি বেশী দরকার! — হ্যাঁ, ভাইয়া খুব বড় একটা বিপদে পড়েছি। আপনার সাহায্য প্রয়োজন আমার। — ওকে, আপনি ওখানেই থাকেন। আমি আসছি। — ওকে, আমি অপেক্ষায় আছি। চটজলদি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে শুভ্র চলে গলি’র মোড়ের দিকে। গলি থেকে বেশ ক্ষাণিকটা দুরে গাড়ি থামায় শুভ্র। বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে। দুর থেকে দেখা যাচ্ছে একটি মেয়ে এদিকেই আসছে। হতে পারে এই মেয়েটাই নীলিমা’র ফ্রেন্ড। এই ভেবে সম্মুখ দিকে এগিয়ে যায় শুভ্র নিজেও। মিনিট দুয়েকের ভেতর মুখোমুখি দাঁড়ায় দু’জন দু’জনের। — আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া! — ওয়ালাইকুম আসসালাম। — (নিশ্চুপ) — আপনি’ই শাকিলা? — জ্বী, ভাইয়া! আমি’ই নীলিমা’র বান্ধবী শাকিলা। — বলুন আমি আপনার জন্য কি হেল্প করতে পারি? — ভাইয়া প্লিজ আপনি নীলিমা’কে আটকান। না হলে ও চলে যাবে। — মানে? কোথায় যাবে ও? — ওর গ্রামের বাড়ি চলে যাবে। আর আসবে না। ভাইয়া প্লিজ আপনি কিছু একটা করুন। — আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কি হয়েছে? কি বলতেছ তুমি এসব? কোথায় যাবে ও? ” আমি বলছি….” পিছন থেকে তাসনিয়া’র জবাব। — তাসনিয়া তুই? শ্বশুর বাড়ি থেকে কখন এলি? রুবেল কেমন আছে? — গতকালকে সন্ধ্যায় এসেছি। আর সবাই ভালো আছে।(তাসনিয়া) — আচ্ছা, ওনাকে তুই চিনিস? — ও’কে? আপন বোনকে কেউ কি না চিনে পারে? — বোন? আপন??? — হ্যাঁ, ও আমার আপন বোন… — কিন্তু তোর বোনের নাম তো নু… — নুহা! ডাকনাম নুহা আর খাতা কলমে শাকিলা…. — তো বোন এসব কি বলতেছে? আমায় একটু বুঝিয়ে বলবি? — এখনো বুঝাপোড়া করবি? ঐদিকে যে তোর নিশ্চুপ বালিকা অভিমানে চুপটি করে তোর থেকে দুরে, বহুদুরে সরে যাচ্ছে সেটা কি তুই বুঝতে পারছিস না? — মানে কার কথা বলছিস তুই?! — নীলিমা! তোকে ভিষণ ভালোবাসে। আমার কথা নয় এটা। কথা বলছে ডায়েরী’র লেখাগুলো।(নুহা! সেদিন নীলিমা’র ফেলে যাওয়া ডায়েরীটা দে তো তোর ভাইয়া’র হাতে) শাকিলা(নুহা) শুভ্র’র দিকে ডায়েরীটা এগিয়ে দেয়। কিৎকর্তব্যবিমূঢ় শুভ্র সেখানে দাঁড়িয়ে পড়া শুরু করে ডায়েরী। প্রথম কয়েক পাতা শুভ্র’র মুখ যতটা না খুশিতে উজ্জ্বল হয়েছিল, সেই মুখটাই তার থেকে দ্বিগুন কালো যায় শেষের কয়েক পৃষ্টা পড়ে। ডায়েরী’টা বন্ধ করে শাকিলা’র দিকে ফিরে তাকায় শুভ্র। মুখ দিয়ে কোন কথা’য় বের হচ্ছে না ওর। মলিন হাসি হেসে শাকিলা’র জবাব, ওর অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। ওর বাবার বাজে নেশা আছে। বাজে নেশা বলতে শুধু মধ্যপান আর জোয়ায় আসক্ত নয়। ওর বাবা বহু নারীতে আসক্ত। এজন্য ওর বাবাকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ওর মা নেই। শুধু বাবা আর একটা ছোট বোন আছে। ও দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী হলেও ওর বিয়ের জন্য কোন পয়গাম আসে না। আসলেও দুর থেকেই চলে যায় ওর বাবা’র খারাপ রেকর্ডের কথা শুনে। জন্ম থেকে ও এরকম নিশ্চুপ স্বভাবের ছিল না। ও ছিল ভিষণ হাসিখুশী আর প্রাণচঞ্চল একটা মেয়ে। একটু সুখের আশায় ও ভালোবেসে ছিল একজনকে। সেই ছেলেটাও ওকে ধোঁকা দেয়। ভিষণ রকম ধোঁকা। তারপর থেকেই ও এরকম হয়ে গেছে। তবে মন থেকে ভালোবাসা নামক বস্তুটি হারিয়ে যায়নি। তাইতো ও আবারো প্রেমে পড়ে। ভালোবেসে ফেলে আপনাকে। কিন্তু দেখুন না- আর্থ সামাজিক অবস্থার কথা ভেবে, পেয়েও হারানোর ভয়ে ও পারেনি মনের না বলা কথাটি আপনাকে জানাতে। পারেনি বলতে, ভালোবাসি… সবশুনে হতাশ দৃষ্টিতে শুভ্র তাকায় তাসনিয়া’র দিকে। দাঁতে দাঁত চেপে রাগান্বিত স্বরে তাসনিয়া’র জবাব, ‘ ওরে গাধা! আর কতো? এখনো সময় নষ্ট করবি? তোর নিশ্চুপ বালিকা যে তোকে ভুল বুঝে চলে যাচ্ছে। আটকা ওকে। যা…’ কোন কথা না বলে ডায়েরী হাতে দ্রুত গাড়ি’র দিকে এগিয়ে যায় শুভ্র। দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে বাসায় পৌঁছে। নীলিমা, নীলিমা ডাকতে ডাকতে দৌঁড়ে উপরে উঠে। নীলিমা’র রুমে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। — মা তুমি? নীলিমা কোথায়? — বাবা এসেছো? দেখো না মেয়েটাও বের হলো টিভিতেও নিউজ দিলো। কোন জায়গা’য় নাকি বাস এক্সিডেন্ট হয়ে দু’জন মারা গেছে। — কখন বের হয়েছে? — তুমি বের হওয়ার একটু পরেই। — Oh god! — তোমার হাতে ঐটা কি? ডায়েরীটা মায়ের পাশে সোফায় ছুড়ে দিয়ে শুভ্র গাড়ি নিয়ে দ্রুত ছুটে চলে বাসস্টপের দিকে….