#LOVE❤
part:13+14
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
আবেগ এই প্রথম আমার গায়ে হাত তোলে।আবেগ এর চোখ মুখ পুরো লাল ছিল।ও কাঁদছিল
-বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগগগ
-তোর ঐ নোংরা মুখে আমার নাম নিবি না।আমি কটা দিন ছিলাম না আর তাই তুই ছিহহহ
-আবেগ আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবো আমি তোর।কি শোনার বাকি রেখেছিস তুই।সব তো আমাদের কে দেখিয়ে ই দিলি।লজ্জা করলো না তোর ।কেনো করলি এমন
-আবেগ তুমি,,,,
রিদি তা কে বলতে না দিয়ে ই আশফি বলা শুরু করলো
-দেখ আবেগ তোর কষ্ট হলেও এটাই সত্যি যে তোর বৌভাতের দিন রিদি ভাবি কে আমার পছন্দ হয়। তারপর তোদের বাড়ি তে আসা যাওয়া করতে করতে রিদিতা ভাবি কে একদিন বলেই দি মনের কথা ।উনিও সাথে সাথে সায় দিলেন।তুই যখন বাড়ি থাকিস না আংকেল আন্টি থাকে না এমন সময় আমি আসতাম ।এরকম ই একদিন এ আমি এসে দেখি রিদিতা ভাবি খুব সেজে গুঁজে বসে আছে সেদিনই উনি নিজেই আমাকে ওনার কথা আছে,,,,,
-আশফি ভাইইইই ।চুপ করো।কি সব নোংরা কথা বলছো তুমি
-আশফি না তুই চুপ করবি।নোংরা কথা শুনতে পারছিস না নোংরা কাজ করার আগে তোর বাধেনি ।আশফি বল
-তারপর থেকে এভাবেই আমরা ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলি।আমার মাঝে মনে হচ্ছিল তোকে ঠকাচ্ছি।আমি তাই রিদি ভাবি কে জিজ্ঞেস করি যে উনি কেন এমন করছে।সেদিন উনি বলে তোর সম্পত্তির জন্য ।আর আমার কাছে তোর থেকে বেশি টাকা তাই,,,,
-আশফি ভাই আপনি কি সব বলছেন
এর মধ্যে আবেগ আমাকে আবার থাপ্পড় মারে
-চুপপ একদম চুপপ।কোন কথা বলবি না তুই।তোর মতো একটা নষ্ট মেয়ে কে ভালোবেসে ঘর বেধেছিলাম ।কেন রে তোকে কি কম ভালোবেসেছি আমি তুই এভাবে আমাকে জ্যান্ত খুন করলি।কি কমতি রেখেছিলাম আমি তোর
-আবেগ তোদের ঝামেলা তোরা মেটা আমি গেলাম
আশফি এটা বলে চলে যায় ।আমি আবেগের পায়ে পড়ি
-আবেগ একদিন এর জন্য হলেও যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তো সেই ভালোবাসার ওপর ভরসা রেখে একটা বার আমার কথা শোন।তোমার কি মনে হয় তোমার রিদি এটা করতে পারে।আবেগ কথা বলো
-আমার মনে হয় না।বিশ্বাস কর আমার এখনো মনে হয় না।কিন্তু আমি যে নিজের চোখে দেখেছি।এবার বল চোখের দেখা ভুল।কি হলো উওর দে
-আবেগ আমি তো তোমার জন্য ই সেজেছিলাম আবেগ।বিশ্বাস করো আমি জানিই না যে আশফি আসবে
-ও তাই এজন্য তুই দরজা র কাছে লিখেছিলি যে,তোমার অপেক্ষায় ।আর আমি আসবো এটা শুধু মা জানে।তুই জানবি কি করে
-আবেগ মা ই তো আমাকে,,,,,
আবেগ এর মা আমার কথা থামিয়ে দেয় ।আবেগ এর বাবা অনেক আগেই ওখান থেকে চলে যান।এটা সত্যি যে উনি আমাকে নিজের মেয়ে র মতো ভালোবাসতেন
-আবেগ এই মেয়ে র কথা আর শুনিস না।একের পর এক মিথ্যা কথা বলছে
-আবেগ আমি কিছু মিথ্যে বলিনি।আবেগ আমি প্রেগ,,,,,,
আমার কথাটা আবেগের মা শেষ করতে না দিয়ে ই আমার চুল ধরে আমাকে টেনে বের করে নিয়ে আসে ঘরের বাইরে
-কোন কথা বলবি না তুই।বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগ একটি বার আমার কথা শোন।তুমি কি সত্যি ই চাও আমি চলে যাই।আবেগ আমি তোমার কথা শুনতে চাই আবেগ আবেগগগ
সেদিন আবেগ যেই কথা গুলো বলে তা আজো আমার কানে বাজে
-শুনতে চাস তো তুই।শোন তাহলে।তোর মতো নোংরা মেয়ে কে আমি আমার বাড়ি তে এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারছি না।আজ থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোকে শুধু ঘৃনা করবো আমি।শুনেছিস । I hate u I hate u I hate u রিদিতা ।তুই আমার জীবনের একটা অভিশাপ।আমার রিদয় টাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিলি তুই।আমার জীবন টা শেষ করে দিলি।তোকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না। বেরিয়ে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস সেখানে গিয়ে মর।মরে যা তুই।আল্লাহ্ যেন তোর মরা মুখ আমাকে দেখায়
-আবেগগগ
-হ্যাঁ হ্যাঁ তাই।তোর মরা মুখ দেখতে চাই আমি শুনেছিস।বেরো এখান থেকে
বলেই আবেগ ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয় ।আবেগ এর কথাতে আমার পৃথিবী ওখানেই থমকে যায় ।আমার মৃত্যু কামনা করেছে আবেগ।এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে।শাশুড়ি র থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিজেই চলে যাই সদর দরজার কাছে
-যা যা নষ্ট আ মেয়ে
-আপনাকে মা বলে ডেকেছিলাম ।আমি ও আজ এখন হবু মা।আমার গর্ভ এ আবেগের সন্তান বেড়ে উঠছে।এসব জেনেও আপনি এইভাবে আমাকে ফাসালেন ।জানিনা কি লাভ হলো আপনার ।আমিও আর ফিরতে চাই না।যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাব।কিন্তু একটা কথা আল্লাহ্ মানুষকে সব কর্ম এর ফল দেয়।আজ আপনি যেটা করেছেন সেটার ফল যেন আল্লাহ্ আপনাকে দেখিয়ে দেয়
বলেই আমি পা রাখি দরজা র বাইরে।আমার শাশুড়ি যেন একটা হাফ ছেড়ে দরজা লাগালেন।মেইন গেট দিয়ে বেরোনোর সময় একবার পেছন ফিরে দেখে নিই সব।আমার সাজানো সংসার ।আমাদের ঘরের দিকে তাকাতেই দেখি আবেগ বেলকনিত দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে ।আমি বুঝেছিলাম যে আবেগ আজ অনেক কষ্ট পেয়েছে।ও আমাকে অনেক ভালোবাসে সেটা আমি জানি।কিন্তু ওর ভালোবাসা টা নিছক মিথ্যা মনে হলো আমার কাছে।যে মানুষটা বিশ্বাস করতে জানেনা তার কাছে ভালোবাসার কোন মূল্য নেই
আবেগ আমাকে দেখে বেলকনির দরজা লাগিয়ে ভেতরে চলে যায় ।সেদিন ভেজা চোখে আবেগের যাওয়া দেখে বুঝেছিলাম আবেগ এর জীবনের কোন দরজা আমার জন্য খোলা নেই।
বোরখা ছাড়া কখনো চলি না ।তারপর আবার সাজগোজ।শাড়ি র আঁচলটা ভালো করে গা ঢেকে গেট দিয়ে বেরোবো এমন সময় দারোয়ান চাচা আমাকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াতে বলেন।বাড়ির পেছন দিকে
দারোয়ান চাচা বুড়ো মানুষ।উনি আমাকে খুব ভালো জানতেন।ওনার কথা মতো আমি বাড়ির পেছনে গিয়ে দাঁড়াই ।একটু পর চাচা আসেন
-চাচা ডেকেছিলেন
-মা আমার একটা মেয়ে ছিল তোমার মতো।কিন্তু শশুর বাড়ি তে থেকেই ওর স্বামী ওকে মেরে ফেলে।পয়সা না থাকলে গরিব এর কি আর বিচার হয়।আমি সব জেনেও আজ চুপ মা
-কি জানেন আপনি
-তোমার চাচী অসুস্থ ।তোমার চাচীকে মালকিন কোথায় আটকে রেখেছে।বলেছে আমি যদি বড় বাবুকে কিছু বলি তাহলে তাকে মেরে দেবে।তোমার শাশুড়ি আর ঐ নোভা নামের মেয়ে টাই তোমার এই সর্বনাশ করেছে
-চাচা আমি এখন কি করবো
হঠাত্ বাড়ি র পেছনে একটা গাড়ি এসে থামে
-মা এদিকে এসে লুকিয়ে পরো
-কেনো চাচা
-এসো আগে
আমি দারোয়ান চাচা লুকিয়ে পরি।দেখি গাড়ি থেকে নোভা নামছে।আর একটু পর আমার শাশুড়ি পেছনে র দরজা দিয়ে বেরোলো
-মা,,,,
-নোভা।আনন্দ কর।তোর আপদ বিদায় হয়ে ছে
-হ্যাঁ মা।এবার আমার আর আবেগের মাঝে কেউ থাকবে না
-আশফি র কি করবি
-ওহ মা।ওর ব্যবস্থা করা হয় এ গেছে
সেদিন আমি আর দারোয়ান চাচা ওদের সব কথা শুনতে পাই।বুঝতে বাকি থাকে না কেনো নোভা আমাকে ঐদিন এরকম কথা বলেছিল।ওদের কথা চলতেই থাকে।ওরা কথা বলতে বলতে গাড়ি তে গিয়ে বসে কোথায় চলে যায় ।সেদিন এটাও বুঝি যে আবেগ আমার শাশুড়ি র সন্তান নয়।নোভা তার সন্তান
দারোয়ান চাচা আমাকে একটা চাদর দেয়
-মা এই চাদর টা গায়ে জরিয়ে নেও।আর এই টাকাটা রাখো।আমার কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু নেই
-চাচা আপনি
-মা তোমাকে মেয়ে র মতোন দেখি।এই ক বছর ধরে এই বাড়ি তে এমন অনেক অবৈধ ঘটনা ঘটেছে।যেটা কেউ জানেনা।আমি জেনেও কিছু বলতে পারিনা।আমার হাত পা বাঁধা।মা তুমি যাও
-চাচা একটা কাজ করবেন
-কি বলো
-বাড়ির পেছনের দরজা তো খোলা।বিকেল এ রান্না ঘরে আমার ফোন ফেলে আসি।ওটা একটু এনে দেবেন
-তুমি দাঁড়াও দেখছি
চাচা গিয়ে অনেকখন পর ফোনটা নিয়ে আসে
-এই নাও
-ধন্যবাদ চাচা
-তোমার কাছে আমার মোবাইল নাম্বার আছে
-হ্যাঁ
-কোন দরকার পরলে আমাকে বোলো মা।আমি চেষ্টা করবো।তোমার সংসার বাঁচানোর সাধ্যি আমার নেই।কিন্তু অন্য দিক থেকে তোমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো
দারোয়ান চাচাকে ধন্যবাদ জানিয়ে অটো নিয়ে বাড়ি তে চাই।বাবা র কাছে
বাড়িতে যেয়ে বেল বাজাতেই বাবা মা দুজনেই এসে দরজা খোলে।তাদের চোখমুখ লাল হয়ে থাকে।পরে তাদের কথা শুনে বুঝতে পারি যে আমার শাশুড়ি তাদের ফোন দিয়ে সব বলেছেন
-তোর কোন জায়গা নেই এই বাড়ি তে
-বাবা আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবে তোর।বেরো এখান থেকে
-মা আমি এতো রাতে কোথায় যাব।একটু ঠাঁই দেও আমাকে
-আজ থেকে আমার একটাই মেয়ে নিশিতা।আর কোন মেয়ে নেই আমার ।থাকলে সে মরে গেছে
-মাহহহ
-বেরো এখান থেকে।জাহান্নমে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস মর
-মাহহহ
-আর ভুলেও যেন কখনো তোকে এখানে না দেখি।আমাদের মুখে চুনকালি মাখিয়েছিস ।নিশিতা র সাথে ও যদি কোন যোগাযোগ করিস তো তোকে আমি ছারব না।বেরো এখান থেকে
মা চলে যায়
-বাবা
-খবর দার আমাকে ঐ নামে ডাকবি না তুই
-চিন্তা করোনা।আমি চলেই যাচ্ছি ।আমার কিছু কাপড় ছিলো তো বাড়িতে ওগুলো একটু দেবে।ওগুলো একটু দেও।আমি চলেই যাব
বাবা ঘরে গিয়ে আমার কিছু জামা আর একটা ব্যাগ ছুরে দিয়ে যায়
-বেরো।তোর কোন জিনিস এমনিতেই রাখতাম না আর।পারলে না হয় গলায় দড়ি দিয়ে মর
-বাবা
বাবাও চলে যায় দরজা লাগিয়ে ।আমি কাপড়গুলো একটু গুছিয়ে ব্যাগে নিয়ে বেরিয়ে পরি অজানা উদ্দেশ্য ।নিজের মা বাবা যে এরকম করবে কখনো ভাবি নি
চলবে———
#LOVE❤
part:14
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
ঐদিন দারোয়ান চাচা আমার জন্য যতটুকু করেছিল নিজের মা বাবা ও তা করেনি
আমি বুঝতে পারছিলাম না কোথায় যাব।নিশিতা আপুর কাছে গেলে আপু দুলাভাই কখনো ফেরাতো না।কিন্তু মা যে নিষেধ করেছিল।আমি শুধু রাতে নিরজন রাস্তা দিয়ে হাটছি ।ছোট বেলা থেকেই অন্ধকার এ ভয় পাই।কিন্তু ঐদিন আল্লাহ্ আমার ভয় সব জেনো দূর করে দিয়েছিল।কারণ আমার জীবনটা তে সব অন্ধকার গ্রাস করেছিল।অন্ধকার এ রাস্তায় লোকজন চলাচল করছে।আমি কোথায় যাব কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
আমি সোজা হেঁটেই চলেছি এদিকে হঠাত্ দেখি দু একজন লোক আমার পিছু নিচ্ছে।বুঝতে পারলাম যে রাস্তায় একা মেয়ে পেয়ে শকুনরা ওদের লালসা মেটানোর ধান্দা করছে।আমি দৌড় শুরু করলাম ।কোনদিকে যাচ্ছি কিছু বুঝতে পারছিলাম না।ঐ লোক গুলো ও পেছন নিচ্ছে।রাত তখন হয়তো বারোটার বেশি বেজে গেছে।এদিকে এই শরীর নিয়ে আর কত দৌড়াবো।বাচ্চা টা গর্ভ এ আসার পর থেকে এমনিতেই মাথা ঘুরায় বমি পায়।দুপুর এ একটু খেয়ে ছিলাম কিন্তু সেটা ও পরে বমি হয়ে যায় ।রাতেও খিদে পেয়েছিল।ভেবেছিলাম আবেগ এর সাথে একসাথে খাব।কিন্তু তা যে হবে না এটা ভাবতে পারিনি।শরীরটা ও দুর্বল লাগছে।আর দৌড়াতে ও পারছিলাম না।এদিকে খিদে ও পেয়েছে
বিপদে পরলে দোআ ইউনুস পরতে হয় এটা ছোট থেকে জানতাম ।আমি ওটা মনে মনে পরছি আল্লাহ্ কে ডাকছি আর দৌড়াচ্ছি ।এদিকে এই অবস্থায় দৌড়ালে বাচ্চা টার ও ক্ষতি হবে।কিছু ভেবে পারছিলাম না কি করবো।কিন্তু আল্লাহ্ আমাকে সত্যি পথ দেখিয়ে ছিলেন।কিছুদূর দেখি একটা মসজিদ।তাতে একটা বাতি জ্বলছে।পেছনে একবার তাকিয়ে দেখি ঐ লোকগুলো হয়তো অন্ধকার এ আমাকে দেখতে পাচ্ছে না।দৌড়ে গিয়ে মসজিদ এর বারান্দায় লুকিয়ে পরি।মসজিদের দরজাতে তালা দেওয়া ছিল ভেতরে যেতে পারিনি।একটু পর দেখি লোক গুলো মসজিদের কাছে চলে এসেছে।আমি প্রানপনে আল্লাহ্ কে ডেকে যাচ্ছি অন্তত আমার ইজ্জত টা যেন থাকে।একটু পর দেখি লোকগুলো এদিক ওদিক খুঁজে চলে গেল।ওরা হয়তো ভাবতে পারেনি আমি এখানে থাকবো।আশেপাশে প্রতিবেশী ছিল।কিন্তু তাদের কাছে যাই নি।কারণ নিজের মা বাবা যেখানে জায়গা দেয়নি সেখানে আমি অন্য কারোর বাড়ি কি সাহায্য পাব।
কাউকে ফোন করবো সেই উপায় ও নেই।ফোনে র চার্জ ও শেষের দিকে।তাই ফোনটা বন্ধ করে দি।কারণ যখন দরকার হবে তখন না হয় কাজে লাগাবো ।খিদে আর সহ্য হচ্ছিল না।এদিকে দৌড়ে ছী বলে পেটে একটু ব্যথা ও শুরু হলো।আমি আল্লাহ্ কে শুধু বলছিলাম আমার বাচ্চা টা যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে।বারান্দায় শুয়ে পরি।হঠাত্ পাশে কিছুর আওয়াজ পাই।উঠে দেখি একটা কুকুর মসজিদের পাশের ডাসবিনে কি নিয়ে খাচ্ছে ।আমার এতো ই খিদে পেয়েছিল তাই দেখতে গেছিলাম কুকুর টা কি খাচ্ছে।গিয়ে দেখি একটি প্যাকেট এ কিছু জিলাপি ছরিয়ে আছে।কুকুরটি তাই কুঁড়ি এ খাচ্ছে।বুঝতে পারলাম মসজিদে হয়তো মিলাদ ছিল।আমি ঐ কুকুর টাকে তাড়িয়ে দেই।সেখানে কিছু জিলাপি অবশিষ্ট ছিল না পেরে তাই উঠিয়ে নিই ।মসজিদের বাইরের টিউবওয়েল থেকে ওগুলো ধুয়ে খেয়ে নিই সাথে পানি খাই।খেয়ে বারান্দা তে শুয়ে পরি।খিদে মেটেনি।তাতে কি যা ও কিছু পেট এ পরেছে ।অপেক্ষায় থাকি সকালের
পরের দিন ভোর বেলা কারোর ডাকে ঘুম ভাঙে।দেখি একজন মুরুব্বি হুজুর ।উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমি ওখানে কি করছি।আমি ওনাকে সব বলে দেই।উনি আমাকে মসজিদের ভেতরে পর্দার আড়ালে বসতে বলেন।
-মা মসজিদে মেয়ে দের আসা বারন ।কিন্তু তুমি বিপদগ্রস্ত ।তুমি এখানে থাক।নামাজ শেষ হলে আমি তোমাকে নিয়ে যাব
নামাজ শেষ হলে হুজুর আমাকে ওনার বাড়ি তে নিয়ে যায়।ওনার স্ত্রী কে সব বলে।পরে ওনারাই আমাকে সাহায্য করেন।হুজুর এর স্ত্রী আমাকে ফ্রেশ করিয়ে খাবার দেন।তারপর জিজ্ঞাসা করেন আমার এমন কেউ আছে কি না যার কাছে আমি যেতে পারি।তার পর আমার মনে পরে দিলরুবা আন্টি তোর মায়ের কথা।মা এর একমাত্র বোন দিলরুবা আন্টি ।কিন্তু মা আন্টি বিধবা হওয়ার পর থেকে কোন যোগাযোগ রাখেনি আন্টির সাথে ।কেন সে টা আমরা জানতাম না।কিন্তু আমি আর নিশিতা আপু মাঝে মাঝে চুরি করে আন্টি র সাথে যোগাযোগ করতাম।তারপর ফোন থেকে আন্টি র নাম্বার এ কল দিয়ে আন্টি কে সব বলি।আন্টি বলে যে তোকে নিয়ে তোর দাদা বাড়ি সিলেট এ আছে।আন্টি ঐ হুজুর কে বলে তার কাছে আমাকে রাখতে।
এরপর দুদিন কাটে আন্টি ঐ হুজুর দের বাড়ি থেকে আমাকে সিলেট নিয়ে আসে।সেদিন আন্টি র মুখে শুনি মা কেন আন্টি র সাথে যোগাযোগ করে না।-কারণ আংকেল মারা যাওয়ার আগে মা আন্টি র কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নেয়।কিন্তু আন্টি আংকেল মারা যাওয়ার পর ঐ টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকার করে।সেদিন নিজের মায়ের প্রতি যা সম্মান ছিল তা ও শেষ হয়ে যায় ।
লোকে বলে মা আর খালা নাকি একি।তাই আন্টি আমাকে ফেলে দেননি।আন্টিকে বলে আমি তোর সাথে সিলেট এ তোদের গ্রাম থেকে দূরে আসি চাকরির জন্য ।আন্টি অনেক নিষেধ করে কিন্তু কি করবো বল আন্টি বিধবা মানুষ আর তুই একা সংসার চালাস তার মাঝে আমি।এজন্য বলি অন্তত তিন চার মাস চাকরি করি তাতে যা পাই অন্তত ডেলিভারির সময় আমার বাচ্চার কাজে লাগবে।তারপর তোর সাথে এখানে আসা।তোর রিকোআরমেন্ট এ চাকরি।
এভাবে ই শুরু হলো আমার জীবন সংগ্রাম ।মানুষ ভালোবেসে সব ছাড়ে।আসলেই তাই।আবেগ কে ভালোবেসে যা পেয়েছি তার থেকে ছেড়ে ছি বেশি ।আবেগ এর জন্য নিজের পরিবার নিজের স্বজন নিজের শহর সব ছেড়ে ছি আমি সব
এই হলো আবেগ আর রিদিতা র গল্প ।শুনলিতো
দিশার চোখে পানি চলে এলো।ও রিদিতা কে জরিয়ে কান্না শুরু করলো
-দুনিয়া টা এমন কেনরে রিদি।বলতে পারিস।আমি মা র কাছ এ এতো কিছু শুনিনি ।আজ জানলাম সব।কতটা ভালবাসলে মানুষ এতো ত্যাগ করতে পারে।আচ্ছা রিদি আবেগ তোর সব কেড়ে নিয়েছে।কিন্তু তুই তো পারিস নিজের জীবনটা শুরু করতে।আর ওর এই বাচ্চা কেই বা কেনো তুই,,,,,
-কারণ আমি মা।মা রা যে ফেলতে পারেনা।জানি সব মা এক নয়।তবুও ।অনেকবার আত্মহত্যার কথা ভেবেছি ।কিন্তু না তা যে মহাপাপ ।আর আমার বাচ্চাটার তো কোন দোষ নেই।আমি সংগ্রাম করবো।আমার শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে জীবনের শেষ পর্যন্ত শুধু আমার সন্তানের জন্য
-আসলেই রিদি।এতোদিন শুনেছি।আজ প্রমাণ পেলাম একজন মা তার সন্তান এর জন্য কতো কিছু করতে পারে।নে চল এবার খাবি
-চল
পরের দিন অফিসে
চলবে——