Love At 1st Sight Season 3 Part – 49

0
6100

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 49

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : না..নাহ! ওকে! আ..আমি তো মজা করছিলাম! আপনার কিক..কিছু করতে হবে না [ বলেই জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে সোজা তাকিয়ে রইলো, হাসতে লাগলো রাহুল ]

আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখছে স্নেহা, সচরাচর সবাইকেই দেখা যাচ্ছে..কিন্তু যারা পাশে থাকবে বলেছে তারাই উদাও!…গেলো কই এই তিনোটা?..

হঠাৎ রাহুলের ফ্রেন্ড শ্রেয়া এগিয়ে এলো,

রাহুল : হেই বেবী! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

শ্রেয়া : [ রাহুলকে সরিয়ে ] সর! তুই তোর সাথে কোনো কথা নেই! [ বলেই স্নেহাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : আরেহ!

শ্রেয়া : ইউ লুক! গরজিয়াস্ স্নেহা!

স্নেহা : থেংক ইউ!

রাহুল : হুমম! মাশাল্লাহ বল! নাহলে আমার সুন্দর বউটার নজর লেগে যাবে!

শ্রেয়া : তাইই?

রাহুল : হুমম.. আচ্ছা আর আমাকে কেমন লাগছে ?

শ্রেয়া : হুমম! নট বেড! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : এবার সত্যিই মার খাবি কিন্তু!

শ্রেয়া : রিভেঞ্জ ছিলো! হুহ!

রাহুল : দেখলা স্নেহা! জেল্যাস করে আমাকে! [ চুল ঠিক করে ] তুমি প্রাউড ফিল করো, রাহুলকে তুমিই পেয়েছো..

শ্রেয়া : লিসেন্ট স্নেহা! তুমি জানো না, ওরা অলোয়েজই আমাকে নট বেড বলে কমেন্ট করে, কখনোই বলেনি যে দোস্ত তোকে না আজ অনেক সুন্দর লাগছে, দারুণ লাগছে, প্রিটি লাগছে!

– আর আমার থেকে জিজ্ঞেস করলে আমি কি বলি, হ্যা? অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে, ডেসিং লাগছে!

রাহুল : আরে তোকে লাগলেই তো বলবো!

স্নেহা : আরে আপনি মিথ্যে বলছেন কেনো? [ শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] সত্যিই তোমাকে অনেক…

রাহুল : ক্ষেত লাগছে! হিহি! এটাই বলতে ছিলো স্নেহা! তাই না!

স্নেহা : [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] মোটেও না..

শ্রেয়া : লিভ ইট স্নেহা! ওদের কাজই অলোয়েজ আমার পিছে লেগে থাকা, [ স্নেহা হাসতে থাকে ]

শ্রেয়া : বাই দ্যা ওয়ে কনগ্রেটস্ বোথ অফ ইউ! খুব শিঘ্রই, ম্যারেড লাইফে পা দিতে যাচ্ছো! হুম হুম…

– আর তুই! এখন থেকেই তো স্নেহাকে পেয়ে আমাদের ভুলে গেছিস! বিয়ের পর দেখলে বলবি, হু আর ইউ? আই নো ইউ? হ্যা?

রাহুল : আরে কি করবো বল! স্নেহা এমন একটা জিনিষ যাকে দেখলেই আমার নেশা ধরে যায়..আশেপাশের খবরাখবর থাকেনা..[ বলেই স্নেহার মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে রাখলো, স্নেহা লজ্জায় সরিয়ে দিলো রাহুলকে ]

শ্রেয়া : হুমম! লাভ বার্ডস্ তাই না!

রাহুল : আচ্ছা এইদিকে আয় ছবি তোল, [ বলেই কাছে টেনে নিলো ] আর তোকে কেমনি ভুলবো বল? তোকে ভুললে জ্বালাবো কাকে?

শ্রেয়া : এক মিনিট! তোর পাশে অনেক তুলেছি, এবার স্নেহার পাশে তুলবো! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে পোজ দিতে লাগলো ]

রাহুল : হুমম! ধীরেধীরে এভাবেই বঞ্চিত হবো আমি! [ হাসতে লাগলো স্নেহা আর শ্রেয়া ]

___________এইদিকে পার্কিংএ____________

রিদোয়ান : [ ফিসফিসিয়ে ] ইউ নো জারিফা!তোমার পেট দেখা যাচ্ছে আজ! তাই এত্তো হট লাগছে..

জারিফা : [ কোমোড়ের ওড়না টেনে ] আপনার চোখগুলো না আজকাল বেশীই উড়ছে..

রিদোয়ান : [ হেসে ] তাই? দেখাই তো যাচ্ছিলো আর আমি বললেই দোষ?

জারিফা : হ্যা! দোষ.. আপনি দেখবেন কেনো?

রিদোয়ান : [ ধীরেধীরে ওড়না সরিয়ে জারিফার কোমোড়ে স্লাইড করে হাত রেখে ] দেখালে তো দেখবোই…

জারিফা : দেদ…দেখেন..ওড়না সরেগিয়েছিলো হয়তো…

রিদোয়ান : [ একটানে কাছে এগিয়ে নিয়ে ] হ্যা! তারপর…

জারিফা : তাত..তাই খেয়াল.. [ বলতেই দেখে রিদোয়ান চোখ বন্ধেই নিমিষেই জারিফার ঠোটের দিক তার ঠোট বাড়াচ্ছে, আশেপাশে আড়চোখে তাকিয়ে হুট করেই ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে দিলো রিদোয়ানকে ]

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?

জারিফা : পাগল নাকি আপনি? কেউ চলে আসলে…

রিদোয়ান : সব সময়ের বাহানা [ বলেই আবার কাছে আসতে চাইলো, তখনিই জারিফা মুচকি হেসে ঘাগড়া হাতে ধরে দৌড়ে চলে গেলো ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে জারিফা! ওয়েট…

______________ অন্যদিকে _______________

মার্জান : একটা ছবি ও ঠিক করে তুলতে পারিসনি তুই…আমার কি সুন্দর সুন্দর পোজ সব নষ্ট করে দিলি…

শায়লা : আরে এতো আফসোস করছিস কেনো? আবার তুলে দিবো নাহয়!

মার্জান : ওহো! দরকার নেই! আর তুই কেমন ছবি তুলে দিবি তা আমার জানা হয়ে গেছে.. [ বলতেই হঠাৎ ধাক্ষা খেলো কারো সাথে, নিচের দিক তাকাতেই দেখে রাশু ]

– আরে রাশু এইভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিস, আস্তে হাট, মানুষ পড়ে যাবে তোর ধাক্ষায় ?

রাশু : আরে আমি ঠিকই হাটছি, তুমিই তো চোখ নামিয়ে মোবাইল দেখে দেখে হাটছো!

মার্জান : আচ্ছা বাদ দে! এতো লেইট করলি কেনো আসতে? মামার বাড়ীতে কি মধুর হাড়ী ছিলো যে আমাদের বাসায় আসিস নি থাকতে!

রাশু : আরে সামনে এক্সাম বাবা আনলেই তো আসবো, খালি বলে পড় পড় পড়! আমাকে তো বললোই না কেউ এসব বিয়েশাদী হয়ে যাচ্ছে, নাহয় আমি পালিয়েই চলে আসতাম!

– আর স্নেহাকে তো আমি দেখেই নিবো!

মার্জান : কি বললি স্নেহা? ডিরেক্ট নাম ধরে?

রাশু : আরে ও জানে রাগ উঠলে আমি ওকে স্নেহা বলেই ডাকি!

মার্জান : হুমমম! ঠিক বলেছিস! একটা মাত্র ভাই.. আর ও তোকে একটু জানালোই না বিয়ে করছে!

শায়লা : বাই দ্যা ওয়ে রাশু! দেখা করেছিস স্নেহার সাথে!

রাশু : নাহ! ঐ দিকটা আইস্ক্রীম দিচ্ছে, আগে আইস্ক্রীম খেয়েনি বাকি সব পড়ে [ বলেই দৌড়ে চলে গেলো ]

শায়লা : আরে কথা তো শোন… [ মার্জান আর শায়লা হাসতে লাগলো, হঠাৎ স্টেজের দিক চোখ পড়তেই ]

শায়লা : ওহো! ঐদিকটা দেখ! কি দারুণ জুটি লাগছে! মাশাল্লাহ.. [ বলতেই মার্জান হেসে হাত নাড়ালো, রাহুল ও হেসে হাত নাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, এগিয়ে গেলো দু-জনই ]

মার্জান : আমার তো মনে হয়েছে আজ, স্নেহা তার শশুড়বাড়ির সবাইকে পেয়ে আমাদের ভুলেই গেছে..

আসিফ : ভুলে যাওয়ায় উচিৎ! তাই না স্নেহা! এখন তো এদের সাথেই থাকবা.. আলতু-ফালতু মানুষদের মনে রেখে আর কি হবে!

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] কি বললেন? আলতু-ফালতু?

শায়লা : শিসসস! মার্জান আস্তে! সবাই দেখছে!

মার্জান : আপনাকে তো পরে দেখে নিবো!

আসিফ : আই নো আমাকে দেখার জন্য সবাই পাগল, সো্ তুমি আবার লিষ্ট থেকে বাদ যাবে কেনো?

মার্জান : ওওও…তাই বুঝি!

আসিফ : ইয়েএএসস! তাইই…

মার্জান : ইডিয়ট!

রাহুল : [ হেসে ] আবারো শুরু হয়ে গেছে টম এন্ড জেরীর?

শায়লা : আচ্ছা! কে টম কে জেরী?

মার্জান : তুই চুপ কর! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে বসে ] স্নেহা! কেমন লাগছে সব হুম হুম?

রাহুল : ফাইনালি তোমাদের পাওয়া গেছে.. এতোক্ষণ তো তোমাদের চিন্তায় চিন্তায় স্নেহা বুড়ি হয়ে যাচ্ছিলো!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে চিমটি মেরে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] কোথায় ছিলি তোরা? আর জারিফা কোথায় ?

মার্জান : কি জানি কোথায়! রিদোয়ানের সাথেই যেতে দেখেছি..হবে কোথাও!

শায়লা : ঐ যে আসছে দুজনই!

রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] কি অবস্থা সবার [ বলেই রাহুলের পাশে গিয়ে বসলো ]

রাহুল : আমাদের অবস্থা তো সবাই দেখছেই কিন্তু তোরা কোথায় ছিলি,

রিদোয়ান : দোস্ত! গিয়েছিলাম একটু প্রেম করতে কিন্তু সেটাও ব্যার্থ!

আসিফ : [ রিদোয়ানে কাধে হাত রেখে ] উফফ! সো সে্ড! মন খারাপ করিস না,দোস্ত! প্রেমসেম অনেক করতে পারবি, এখন ছবির জন্য পোজ দে!

রিদোয়ান : [ আসিফের পেটে ঘুষি মেরে ] তুই তো সেটাই বলবি!

[ সবাই পোজ দিয়ে দিয়ে ছবি উঠাতে ব্যস্ত, হঠাৎ মার্জান স্নেহার ভাইকে দেখে হাত নেড়ে ইশারা করলো আসতে, রাশু ও দৌড়ে এগিয়ে এলো ]

মার্জান : কি মিষ্টার আইস্ক্রীম খাওয়া হয়েছে?

রাশু : হুমম! দারুণ ছিলো! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে কোমোড়ে হাত রেখে ] এই স্নেহা! আমাকে বললে না যে বিয়ে করছো? [ রাহুল আর তার ফ্রেন্ডসরা সবাই অবাক হয়ে তাকালো ]

স্নেহা : বব..বলেছিলাম তো বাবাকে তোর কথা! বাবা বললো তোর নাকি অনেক পড়া আছে তাই মামাদের সাথেই আসবি আজ…

রাশু : হ্যা? বাবা বললো তাই না? বাবা কোনদিন বলে না পড়ার কথা…? শোনো এসব বাবা-টাবা আমি বুঝিনা,

– বাবাকে তুমি বলবা আজ আমাকে মামার বাড়ি না পাঠাতে,সব প্রোগ্রাম কমপ্লিট করে যাবো বলে দিলাম! কিভাবে হবে এসব আমি বুঝিনা, সব দায়িত্ব তোমার!

রিদোয়ান : বাহ! ইন্ট্রেষ্টিং…তো!

রাহুল : [ রাশুকে কাছে টেনে নিয়ে ] আরে এইতো দেখি আমার মতো,

জারিফা : হবেই তো! জিজু আপনার শালা বলে কথা!…

মার্জান : আরে রাশু একটা কথা বল..ঐ যে তোর আপুর জন্য ঐদিন একটা ছেলে দেখলো না ঐটা সুন্দর নাকি এটা..হুমম?

রাশু : [ রাহুলের দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে ] উমমম..একটাও না..

মার্জান : আয়হায়! নিজের চেহেরাটা দেখেছিস একবার আয়নায়..

রাশু : আমারটা ছাড়ো আগে তোমারটা দেখো…

আসিফ : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাশুর পাশে এসে হাটু গেরে বসে ] ভাই! সাইজে ছোট হলে কি হবে জবাবটা মাইন্ডব্লোয়িং দিলি, এবার শুধু বল তোর কি চাই… [ মার্জান আর কিছু বললো না রাগ চাপা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে, বুঝতে পারলো আসিফ, মাথায় কিছু না কিছু পাকাচ্ছে ]

রাশু : আরে বলো না তিনোটাই পেচি সারাক্ষণ পেকপেক করতে থাকে!

রিদোয়ান : বাট এরা তো চারজন!

রাশু : আমার আপু ছাড়া!

শায়লা : ওও..এতোক্ষণ স্নেহা! এখন আবার আপু!

জারিফা : আচ্ছা আমরা আংকেলকে লাগিয়ে দি বলে আমরা পেচি! আর তোর আপু বাচিয়ে নেই বলে ভালো!

– এখন থেকে আরো বেশী করে লাগাবো, কাল বিয়েতে আসবি তুই বিদায়ের মাত্র পাচ মিনিট আগে, দেখেনিস!

রাহুল : আরে না! তোমরা আমার একমাত্র পিচ্চি শালাটাকে এমন কেনো করছো বলো তো?

– কাল ও সবার আগে আসবে তাই না..?

রাশু : [ রাহুলের গালে একটি কিস করে ] ইয়েসস! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এই স্নেহা আরেকটু যাও তো.. [ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে আরেকটু সাইড হয়ে বসলো ]

রাশু : [ স্নেহা আর রাহুলের মধ্যে বসে ] এইইই! ক্যামেরা মেন! ফটো তুলুন!

জারিফা : আরে বাপরে! আসছে একদম নবাব! কিভাবে অর্ডার করে দেখো! [ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল আর স্নেহাও রাশুকে মধ্যে নিয়ে কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ছবি তুলে নেই ]

রাশু : আচ্ছা আমার কাজ শেষ এখন ঘুরে আসি! [ জারিফার দিক মাথা এগিয়ে ] শুনো কোনো ছেলে ডিষ্টার্ব করলে আমায় বলবা!

জারিফা : জ্বী জ্বী বড় ভাই আপনাকেই বলবো! [ চলে গেলো রাশু ]

রাহুল : [ হেসে ] সিরিয়াসলি?

জারিফা : আসলে গ্রামে, স্নেহার এক কাজিনের বিয়ে ছিলো! ঐখানে একটা ছেলে আমাদের ডিস্টার্ব করছিলো, তখন, ও মার্জান, আর আমি মিলেই ছেলেটাকে উল্লু বানিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলাম!

– আর কাউকে উল্লু বানাতে ও ওর অনেক মজা লাগে! [ সবাই হেসে উঠলো ]

মার্জান : এক্সকিউজ মি! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : কোথায় যাচ্ছিস?

মার্জান : ঐদিকটাই আছি!

শায়লা : আরে দাড়া আমিও আসছি [ বলেই দুজনে নেমে চলে যাচ্ছে আসিফ মার্জানকে চোখ টিপ মেরে তাকিয়ে আছে, মার্জান ও মুখ ভেংগিয়ে নেমে গেলো ]

জারিফা : আচ্ছা! আমি ও আসি! এবার…

রিদোয়ান : হ্যা আমার সাথে!

জারিফা : মোটেও না! [ বলেই দৌড়ে নেমে গেলো,রিদোয়ান ও হেসে পিছু পিছু নেমে পড়লো ]
________________ এইদিকে_______________

মার্জান : নিজেকে কি মনে করে এই ইডিয়ট! সবসময় আমার ইনসাল্ট করে!

শায়লা : তুই ও তো কোনো দিক থেকে ওর ইনসাল্ট করার পিছু ছারিস না,

মার্জান : তুই চুপ কর! তুই আছিসই ওর পক্ষে! ঘুষ খোর কোথাকার!

শায়লা : যাক বাবা ঘুষ খেলাম কবে! জাষ্ট অফারই তো করলো! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করলো মার্জান এদিকওদিক উকি দিচ্ছে ]

শায়লা : আবার কাকে খুজছিস?

মার্জান : একমিনিট তুই এইদিকে দাড়া,আমি একটু আসছি, [ বলেই দৌড়ে গেলো রাশুর দিক, শায়লা তাকিয়ে আছে দূর থেকে, কি কি যেনো বুঝিয়ে দিচ্ছে রাশুকে, হঠাৎ পাশে আসিফ এসে দাড়ালো ]

শায়লা : আরে আপনি! ভালোই হয়েছে এসেছেন! শুনেন আপনি ওকে বারবার রাগান কেনো বলেন তো? রাগালে কি পটাতে পারবেন! অনেক ডেঞ্জার ও..অতো সহজে পটছে না!

আসিফ : আচ্ছা? তাহলে আমিও দেখি কতো ডেঞ্জার হতে পারে!

– এখন কই গেছে ও?

শায়লা : ঐ যে! আসছে! [ এগিয়ে এলো মার্জান আসিফকে দেখে দাত সব বের করে একটি হাসি দিলো ]

আসিফ : [ মুচকি হেসে অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] নাইস্ তিথ!

মার্জান : চিকচিক করছে তাই না?

আসিফ : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুমম!

মার্জান : ছায় দিয়ে মাজি তো তাই! [ শায়লা মুখ লুকিয়ে হেসে উঠলো ]

আসিফ : ওহ! তাই নাকি!

মার্জান : হ্যাঁ! একদম! আপনিও ট্রাই করে দেখতে পারেন!

– বাই দ্যা ওয়ে, ফলো করছেন নাকি আমাকে?

আসিফ : লল! তোমাকে ফলো করবো? [ হেসে ] পিচ্চিটাই তো বলে গেলো আয়নায় আগে নিজের চেহেরা দেখতে!

– আমি তো শায়লার সাথে কথা বলতে এসেছি! ও কি গানে ডান্স করবে ঐটাই আস্ক করছি! তোমার দ্বারা তো ডান্স ইম্পসিবল! তাই জিজ্ঞেস করাটাও বেকার!

মার্জান : আচ্ছা! নিজে একদম কি ডান্স পেরে তরিয়ে ফেলেন ভালো জানি হুহু!

আসিফ : তোমার থেকে তো অন্তত বেটার জানি!

মার্জান : আচ্ছা? করে দেখান দেখি?

আসিফ : [ মার্জানের কাছে মুখ এনে ] চ্যালেঞ্জ করছো?

মার্জান : [ একটু পিছিয়ে গিয়ে ] ই..ইয়েস! চ্যালেঞ্জ করলাম!

আসিফ : ওকে! সে্ইম গানেই, দুজন পার্ফমেন্স করবো তারপর পাবলিক যার ডান্সে বেশি ভোট করবে সে উইনার!

– আর লুজার এর কি করতে হবে জানো তো?

মার্জান : জানার দরকার নেই! লুজার কে হবে তা চেহেরায় ভেসে উঠছে!

শায়লা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আচ্ছা আপনারা কোন গানে ডান্স করবেন?

আসিফ : ওউ! শাট-আপ! আমি এতোটাও কঠোর নয়! যাও তোমার ফ্রেন্ড এর জন্য সহজ করে দিলাম! [ অবাক হয়ে তাকালো মার্জান ]

আসিফ : রিসেন্টলি তুমি তোমার ফেইসবুকে লিসেনিং সং স্ট্যাটাস দিয়ে তোমার ফেভারিট হিরোর একটা সং শেয়ার করেছো!

শায়লা : রিতিক রোশন?

আসিফ : ইয়াহ! [ মার্জানের কাছে এসে ] মুজসে্ দোস্তি কারোগি! [ অবাক হয়ে তাকালো মার্জান ]

– [ হেসে ] এই ফ্লিমের!

মার্জান : কখনোই না! এই গানে তো ইম্পসিবল!

আসিফ : জানতাম তুমি ভয় পাবা!

মার্জান : আজিব ভয় কেনো পাবো? আমিতো..

শায়লা : আরে মার্জান! গানে কি এসে যায়! বাদ দে না! তখন ভাববে তুই ডারপোক!

আসিফ : সো্ ডান?

শায়লা : হ্যা! হ্যা! ডান ডান!

মার্জান : এক সেকেন্ড! আপনার সাথে তো আমার ফেইসবুকে এড নেই! তাহলে আপনি কিভাবে জানলেন আমি কি শেয়ার করেছি না করেছি?

আসিফ : ওহ! শাট-আপ! আমার এতোটাও শক পড়েনি তোমার আইডি চেক করার!

– ঐটা তো ব্যাস! ঐদিন রাহুল তার মোবাইল আমার হাতে রেখে গিয়েছিলো তখন ওর মোবাইল এ ফেইসবুক দেখতে গিয়ে তোমারটাও চোখে পড়ে,

মার্জান : আপনার কাছে আর কি আশা করা যায়! অন্যজনের ফেইসবুক ঘাটাঘাটি করা ছাড়া!

আসিফ : এক্সকিউজ মি! রাহুল ইজ মাই ফ্রেন্ড! ওর কিছুই আমার কাছ থেকে হাইড থাকে না সো্ ফেইসবুক তো জাষ্ট সিম্পল ম্যাটার!

– আর আমরা ছেলেরা তোমাদের মেয়েদের মতো এতো কিপ্টে না, তোমরা তো ফেইসবুক নিয়েও কিপটামি করো!

মার্জান : কি বললেন?..মেয়েরা কিপটা?

শায়লা : উফফ গাইস্! আবারো শুরু ঝগড়া? এবার তো ডান্স শুরু করেন! পাবলিক কমে গেলে ভোট ও কমে আসবে মাইন্ড ইট!

আসিফ : ইয়াহ! আই থিংক আমাদের এখন শুরু করা উচিৎ!

– উমমম! ও হ্যা! ফাষ্ট লিরিক্স তো মেয়ের সো্ গো… [ মার্জান নাক ফুলিয়ে এগিয়ে গেলো ডান্স ফ্লোরে, আসিফ আর শায়লা ও হেসে হেসে পেছন পেছন এগিয়ে গেলো ]

শায়লা : বাহ! বাহ! বাহ! গানটাও বরাবর দিলেন! কিন্তু আপনি যদি না জিতেন?

আসিফ : ডোন্ট ওয়ারি না জিতলেও ভোট ওর চেয়ে আমার বেশি আসবে বুঝেছো! যে বক্সে ভোট নিবো ওখানে আমি আগে থেকেই আমার নাম দিয়ে অর্ধেক এক্সট্রা কাগজে ভরে রেখেছি!

শায়লা : আরে ওয়াহ! কি বুদ্ধি আপনার!

হঠাৎ, পেছন থেকে,

জারিফা : [ এগিয়ে এসে ] বাহহহ! ডান্স শুরু? ইয়েএএএ! এবার তো আমিও ডান্স করবো!

শায়লা : আরে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে! [ চোখ মেরে ] ঐ যে!

জারিফা : [ আসিফের কাধে হাত রেখে ] ওহহহ! বুঝেছি এবার! লাইন মারা হচ্ছে বুঝি! হ্যা হ্যা!

[ মার্জান ঠিকঠাক হয়ে দাঁড়িয়ে হাত নেরে ইশারা করলো মিউজিক ছাড়ছে না কেনো ]

জারিফা : মিউজিক মিউজিক!

শায়লা : আরে মিউজিক ছাড়তে বলছে! তাড়াতাড়ি! আপনিও থাকেন ঐদিকটা ওর পর সাথে সাথে আপনার ও তো যেতে হবে তাই না! [ আসিফ হেসে এগিয়ে গিয়ে মোবাইল স্পিকারে কানেক্ট করে গান ছাড়লো ]

সবাই তালি দিয়ে চিৎকার করতে লাগলো, ঐদিক থেকে স্নেহা আর রাহুল ও এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে রইলো..রিদোয়ান ও এগিয়ে এলো..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] ইয়েএএএ…মার্জান মার্জান মার্জান!

_________মার্জান

♪♪ আজেকি লাডকে আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ কিতনে লাল্লু হোয়াট টু ডু ♪♪

জারিফা : আরে ইয়ার! শায়লা আমার ও তো ডান্স করতে মন চাইছে..

♪♪আজেকি লাডকে আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ কিতনে লাল্লু হোয়াট টু ডু ♪♪
♪♪ কই মুঝে পুছে হাউ আর ইউ ♪♪
♪♪ কই মুঝে বলে হাউ ডু ইউ ডু ♪♪
♪♪ কাভি্ কয়ি মুঝসে্ না কাহে ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪

_________আসিফ

♪♪ আজেকি লাডকি আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ নাখড়ে ওয়ালি সুনলে তু ♪♪

রাহুল : ওহ মাই গড! স্নেহা! সব মজা তো এরাই করছে, আর আমাদের কখন থেকে দরবেশ বাবার মতো বসিয়ে রেখেছে!

স্নেহা : [ হেসে এক্সাইটেড হয়ে ] শাট-আপ রাহুল! ঐ দিকে দেখুন!

♪♪ আজেকি লাডকি আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ নাখড়ে ওয়ালি সুনলে তু ♪♪
♪♪ না মে পুছু হাউ আর ইউ ♪♪
♪♪ না মে বলু হাউ ডু ইউ ডু ♪♪
♪♪ আভি্ ইয়েহি মে কেহেতা হু ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪

[ সবাই তালি দিচ্ছে, হাসি পাচ্ছিলো মার্জানের, তাও আসিফকে মুখ ভেংগিয়ে দৌড়ে চলে এলো জারিফা আর শায়লার দিক ]

জারিফা : [ মার্জানকে জড়িয়ে ধরে ] ওহ! মাই ডার্লিং আই লাভ ইউউউউ [ বলতেই রিদোয়ান এসে হাত ধরে জারিফাকে টেনে নিয়ে চলে গেলো ডান্স ফ্লোরে, হাসতে লাগলো বাকিরা ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] মিউজিক! [ জারিফা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, এতোক্ষণ তো ডান্সের জন্য লাফাচ্ছিলো তবে হঠাৎ লজ্জা কেনো লাগছে ]

♪♪ বান্নো কি সে্হেলি রেশামকি ডোরি ♪♪
♪♪ চুপ চুপকে শারমায়ে দেখে চরি চরি ♪♪

[ জারিফাকে ঘুরিয়ে নিয়ে ]

♪♪ বান্নো কি সে্হেলি রেশামকি ডোরি ♪♪
♪♪ চুপ চুপকে শারমায়ে দেখে চরি চরি ♪♪
♪♪ ইয়ে মানে ইয়া না মানে ♪♪
♪♪ মে তো ইস্ পে মারগায়া ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকি হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকি হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪

______ জারিফা

♪♪ বাবুল কি গালিয়া না ছাডকে জানা ♪♪
♪♪ পাগাল দিওয়ানা ইস্ কো সামজানা ♪♪

[ রাহুল এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে উঠলো ]

♪♪ বাবুল কি গালিয়া না ছাডকে জানা ♪♪
♪♪ পাগাল দিওয়ানা ইস্ কো সা্মজানা ♪♪
♪♪ দেখো জি দেখো ইয়ে তো মেরা ♪♪
♪♪ পিছে পারগায়া ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকা হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকা হাহ আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪

[ কোলে তুলে নিলো রিদোয়ান জারিফাকে সবাই তালি দিয়ে উঠলো, জারিফা লজ্জায় হেসে মুখে হাত দিয়ে ঢেকে রাখলো ]
_______________এইদিকে________________

স্নেহা খুশিতে তালি দিয়ে কখন যে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে রাখলো খেয়ালই নেই! রাহুল বুঝতে পেরে হেসে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক…

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে