Love At 1St Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 21
writer-Jubaida Sobti♥
স্নেহা চোখ খুলে খেয়াল করলো গাড়ীর দরজা অর্ধেক খুলেছে…
স্নেহা : [ ভয়ে মনে মনে ] রাহুল গাড়ী থেকে নামছে কেনো?…ও কি আমাকে দেখেছে নাকি?..
_________________________________
এইদিকে, রাহুল ব্লাশিং হয়ে গাড়ী থেকে নামতেই ছিলো হঠাৎ আবার মনে পড়ে গেলো সে তো স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো যদি একবার reason বলে তাহলে আর ওর চেহেরা কখনো স্নেহাকে দেখাবে না…
রাগে ধুম করে জোড়ে গাড়ীর দরজাটা আবার লাগিয়ে দিলো,
[ স্নেহা বুকে হাত দিয়ে একটি বড় শাস ফেললো…]
আর রাহুল রাগ কন্ট্রোলের জন্য জোড়ে জোড়ে গাড়ী স্টার্ট দিতে লাগলো,
স্নেহা : [ কান চেপে ধরে ] ইশ! কি বাজে শব্দ!
[ একটু পর রাহুল গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো, তা দেখে স্নেহা ধীরেধীরে গাছের কিনারা থেকে বেড়িয়ে আসে…এবং চেয়ে আছে রাহুলের গাড়ীর দিক,চলে যাচ্ছে রাহুল…হ্যা চলে গেছে রাহুল!… মুখটা গোমড়া করে, ব্যাগটা কাধ থেকে নামিয়ে হাতে ঝুলিয়ে..নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটছে…আর ভাবছে, নেহা সত্যি বলছে নাকি রাহুল সত্যি বলছে…এইভাবে ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পৌছালো..]
স্নেহা : তোরা কবে এলি?..
মার্জান : আরে তুই? এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে?..
জারিফা : [ দৌড়ে এক্সাইটেড হয়ে এগিয়ে এসে ] হেইইই স্নেহা! বলেছিস?..
স্নেহা আপসে্ড হয়ে ভেতরে ঢুকে ব্যাগটা টেবিলের উপর ছুড়ে মেরে খাটে বসে পড়লো….
জারিফা : [ পাশে এসে বসে ] কি হলো স্নেহা! কিছু বলছিস না কেনো?..
স্নেহা : গিয়েছিলাম! কিন্তু!
জারিফা : [ বিরক্তি হয়ে ] আবার কিন্তু কি?..
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] সাহস হচ্ছিলো না আমার রাহুলের সামনে যেতে, মাথায় অনেক কিছু ঘুরছে…তুই এখন যা প্লিজ! আমায় একা থাকতে দে!
জারিফা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! কি বলে এই মেয়ে…আমি আরো কি কি ভেবেফেলেছি!
– ধুর আবার সব মাটি!
স্নেহা : তুই আবার মন খারাপ করছিস কেনো তোর না আজ বার্থডে?..
জারিফা : মন ভালো থাকতে দিচ্ছিসই বা কই?..[ চেঁচিয়ে ] গিয়েছিলি ওকে বলতে বললি না কেনো?..
[ স্নেহা চুপ হয়ে থাকে! ]
মার্জান : আচ্ছা সমস্যা নেই! আজ আমরা সবাই তো রাহুলের বাসায়ই যাচ্ছি তাই না স্নেহা! [ চোখ মেরে ] …ওখানে সাহস করে বলে দিবি! ওকে?.
স্নেহা : আ..আম..আমি যাচ্ছিনা ওর বাসায়! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]
মার্জান : তাই?..আচ্ছা তাহলে ঠিকাছে!
স্নেহা : [ মনে মনে ] আরে! এ কি?..যাবো না বলেছি তাই আমাকে একটু জোড় ও করলো না… [ জারিফা আর মার্জানের দিক একবার চেয়ে নাক ফুলিয়ে উঠে অন্যরুম চলে যায় স্নেহা ]
জারিফা : আরে মার্জান এর হলোটা কি বলতো?.. রাহুল যখন নিজ থেকে ওকে আই লাভ ইউ বলেছে তখন ও রিপ্লাই করেনি! আবার রাহুলকে ছাড়া থাকতেও পারছে না! রাহুলকে কিছু বলতেও পারছে না…এখন আবার বলছে আজ পার্টিতে যাবে না…[ চেঁচিয়ে ] Why?..
মার্জান : [ হেসে হেসে খাটে বসে ] আরে Don’t worry! যাবে যাবে…স্নেহা রাহুল থেকে দূরে থাকতে পারবে না!
জারিফা : নাজানি কি হচ্ছে এসব! উফফ [ বলেই জোড়ে একটি শাস ফেলে ]
_________________________________
সন্ধায়,
জারিফা আর মার্জান রেডি হচ্ছে পার্টিতে যাওয়ার জন্য!
স্নেহা : [ ধীরেধীরে তাদের দিক এগিয়ে এসে ] কোথায় যাচ্ছিস তোরা?..
মার্জান : কয়বার জিজ্ঞেস করবি বলতো?..
স্নেহা : ওহ ওকেই! আব…আস আসলে..তোকে আজ সুন্দর লাগছে…
মার্জান : থেংক ইউউ!
জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আর আমাকে?..
স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] তোকেও..লাগছে..সুস..সুন্দর অনেক!
মার্জান : [ কোণা চোখে তাকিয়ে ] ইউ ওকে স্নেহা!
স্নেহা : ইয়ে..ইয়েস! আই এম অলরাইট! [ বলেই মুখ গোমড়া করে বারান্দায় চলে গেলো ]
জারিফা আর মার্জান মুখ চেপে হেসে উঠে, এবং কিছুক্ষণ পর দেখে…
স্নেহা : [ আবার এগিয়ে এসে ] জারিফা! তুই আমাকে ছাড়া বার্থডে সেলেব্রেট করবি?…
জারিফা : আরে আমার গ্রিন কালার ইয়ার রিংটা দেখেছিস?…[ বলেই খুজতে লাগলো ]
স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] তোর কানেই আছে!
জারিফা : অউউ! থেংক ইউ স্নেহা!
স্নেহা : আচ্ছা তোরা না গেলে কি হয়?..আমরা এইখানেই সেলেব্রেট করি!
মার্জান : আরে রাহুল এতো ভালোবেসে আমাদের জন্য পার্টি আরেঞ্জ করেছে! দেখ না গেলে খারাপ দেখায় না…?
জারিফা : আর তুকে তো বলেছে আসতে..তুই তো রেগে বললি আমি ওর বাসায় যাচ্ছিনা…
স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] হ্যা! বলেছি..একবারই তো বলেছি…তাই বলে…
[ মার্জান আর জারিফা হেসে স্নেহার দিক এসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ]
জারিফা : [ স্নেহার কানে কানে ] ইউ মিসিং রাহুল…হ্যা না?..হুম? হুম?..[ বলেই চোখ টিপ মারে ]
[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে গাল বেয়ে চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো! ]
মার্জান : [ চোখ মুছে দিয়ে ] আচ্ছা হয়েছে অনেক..আর কাঁদতে হবে না! চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে…
স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে ] সত…সত্যি যাবো?..
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আবার?..
স্নেহা : আচ্ছা ওকে! [ বলেই রেডি হতে চলে গেলো ]
_________________________________
রাহুলের বাসার গেইটের সামনে এসে,
মার্জান : দেখ স্নেহা! এতো ভাবছিস কেনো এসেই তো পড়েছিস…এখন আবার বলছিস যাবি না?..
স্নেহা : জানিনা! আমার কেমন যেন লাগছে ওর সামনে যেতে!
জারিফা রেগে আড়চোখে তাকিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরে…নিয়ে ঢুকে যায়,
স্নেহা : জারিফা কি করছিস আমার কথা শোন প্লিজ!
রিদোয়ান : হেইই গাইস্ কামঅন! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] থেংক্স ফর কামিং!
জারিফা : [ মনে মনে ব্লাশিং হয়ে ] আহ..বাকিদের দেখছিনা?..
রিদোয়ান : রুফটপে আছে! কাম!
[ সবাই মিলে রুফটপে এগিয়ে গেলো জারিফা স্নেহার হাত ধরে টেনে টেনে নিয়ে আসে স্নেহা অনেকটাই নার্ভাস্ ফিল করছে…]
মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াও! ইয়ার ওয়ান্ডারফুল ডেকোরেট!
আসিফ : ডান বাই মি! [ বলেই চোখ টিপ মারলো…]
মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে নাক ফুলিয়ে ] ইউ…? [ বলতেই আসিফ জারিফার দিক এগিয়ে এসে হ্যান্ডশেক করে ]
আসিফ : হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার! হেভ আ গ্রেট ডে!
জারিফা : থেংক ইউ!
আসিফ : হ্যালো স্নেহা!
স্নেহা : [ একটু হেসে ]..হাই!
শ্রেয়া : [ এগিয়ে এসে জারিফাকে ঝড়িয়ে ] হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার! ওহো! ওয়াও ইউ লুকিং বিউটিফুল… [ বলেই রিদোয়ানের দিক তাকালো রিদোয়ান ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]
হঠাৎ, পেছন থেকে,
রাহুল : [ একটু স্লো ভয়েসে্ ] হাই গাইস্!
[ স্নেহার বুকটা কেপে উঠলো রাহুলের ভয়েস শুনে! স্নেহা ধীরেধীরে পেছন ফিরে তাকালো…রাহুল স্নেহাকে দেখে শকড হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো!… স্নেহা স্কাই কালারের একটি সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চুল গুলো ছেড়ে রেখেছে…চশমা পড়েনি আজ..তাই কাজল কালো চোখ গুলো ও দেখা যাচ্ছে… মুখটা কেমন যেনো শুকিয়ে আছে…তাও দেখতে অপরুপ লাগছে স্নেহাকে…তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেললো রাহুল! ]
জারিফা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে ] হেইই! রাহুল!
রাহুল : [ জারিফাকে হাগ করে ] হ্যাপি বার্থডে… [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] আধি ঘার ওয়ালি!
জারিফা : থেংক ইউউ! [ রাহুলের কানে ফিসফিসিয়ে ] জিজাজি!
[ রাহুল মনে মনে হেসে উঠে,]
রিদোয়ান : ওকে! কাম গাইস্ এঞ্জয় দ্যা পার্টি!
[ বলেই জারিফার দিক হাত বাড়ালো… জারিফা একটু লজ্জা পাচ্ছিলো তাও হাত দিয়ে দিলো, মার্জান দূর থেকে জারিফাকে চোখ টিপ মারলো,]
_________________________
মার্জান : [ স্নেহার হাত ধরে ] চল স্নেহা!
[ সামনে এগিয়ে যেতেই স্নেহা অবাক হয়ে যায়…এতো বড় কেক..মানে এতো সুন্দর কেক সে এর আগে কখনো দেখেনি! ]
হঠাৎ, পেছন ফিরতেই রাহুলের সাথে চোখাচোখি হয়ে পড়ে, মানে রাহুল স্নেহার দিক চেয়েই ছিলো! স্নেহা তাকাতেই রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো…
আসিফ : [ রাহুলের হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছিস?..
রাহুল : কোথ..কোথাওনা…
হঠাৎ..জারিফা দৌড়ে এগিয়ে এসে রাহুল আর স্নেহা দুজনকে দু-হাতে ধরে কেক এর পাশে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো…
জারিফা : কি হলো দুজন এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?…আরে আমি কেক কাটবো আর তোমরা পাশে না থাকলে হয়?…[ বলেই বাকীদের ইশারা করে কাছে এসে দাড়াতে বলে… ]
সবাই হেসে উঠে পাশে এসে দাঁড়ালো… স্নেহা অনেকটা নার্ভাস ফিল করছে…সে রাহুলের কাছাকাছিই আছে অথচ রাহুলকে কিছু বলতে পারছে না…
রাহুল : [ মনে মনে ] এইখানে দাঁড়ালে স্নেহা থেকে দূরে থাকা সম্ভব না…আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ! [ বলেই রিদোয়ানকে জারিফার পাশে দাড়করিয়ে দিয়ে রাহুল সরে দাঁড়ায় ]
আর এইদিকে মার্জান আসিফের দিক এমনভাবে তাকিয়ে যাচ্ছে যেন তাকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে…আর আসিফ তা দেখে শুধু হেসেই যাচ্ছে….
_________________________________
কেক কাটা শেষ হলো…সবাইকে খাইয়ে…জারিফা এক টুকরো হাতে নিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গেলো!
জারিফা : [ কেক খাইয়ে দিয়ে ] থেংক্স রাহুল!
রাহুল : No need! থেংক্স ডিয়ার! it’s my pleasure!
হঠাৎ পেছন থেকে,
রিদোয়ান : আফসোস্ যদি আমাকে ও কেউ একটা থেংক্স দিতো আরকি!
[ রাহুল হেসে উঠে ]
জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে কেনো থেংক্স দিবো?..হুম?
রিদোয়ান : আরে আমি তোমাকে প্রমিস্ করে আনিয়েছি পার্টিতে!
জারিফা : এটার জন্য থেংক্স বলে আমি আমার সময় বরবাদ করতে চাইনা..[ বলেই মনে মনে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]
রিদোয়ান : [ জারিফার সামনে এসে ] ওকে সো্ মিস্ জারিফা! কি জন্যে থেংক্স দিলে আপনার সময় বরবাদ হবে না শুনি?..
জারিফা : দেখেন! রাহুল পার্টি আরেঞ্জ করেছে! হলোনা এটা সারপ্রাইজ গিফট?..
[ রাহুল হাসতে লাগলো তাদের কান্ড দেখে ]
রিদোয়ান : [ একটু ভেবে ] হ্যা হলো!
জারিফা : সো্ আপনিও ট্রাই করেন! থেংক্স পেয়ে যাবেন! [ বলেই জারিফা চলে যাচ্ছিলো ]
রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সো্ তোমার সারপ্রাইজ গিফট চাই?…[ চোখ মেরে ]
জারিফা : [ হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আরে! কিক..কি করছেন…
[ রিদোয়ান আর কোনো জবাব না দিয়ে জারিফাকে টেনে নিয়ে রুফটপের মাঝে এনে দাড় করালো…সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিক ]
_____________________________
স্নেহা এদিকওদিক তাকিয়ে খুঁজছে রাহুলকে… হঠাৎ দেখে রাহুল এক কোণায় দাঁড়িয়ে স্মোক করছে…আর জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখে দেখে হাসছে…
স্নেহা : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] চেহেরা দেখাবে না বলেছে তাই ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে…কি আজিব! [ বিরক্তি হয়ে ] নাকি ঐ নেহাকে ভাবছে কি জানি! ধুর! [ বলেই জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখতে লাগলো ]
[ রিদোয়ান পকেট থেকে একটি ফিংগার রিং বের করে পায়ের হাটু ভেঙে মাটিতে আধবসা হয়ে বসে,
জারিফা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে… মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়লো তার!… সপ্ন নাকি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছে না…]
রিদোয়ান : [ রিংটি জারিফার দিক বাড়িয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে ] জারিফা! i don’t know any loving poetry! তাই আমি আমার নিজ ভাষায় বলছি, জারিফা! তোমাকে দেখে আমার এমন কেনো ফিল হয় আমি জানিনা!..
জানিনা তোমার ও এমন ফিল হয় কিনা! তবে এটা জানি আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি!
মার্জান : [ স্নেহার কানে ] দেখলি তো লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের না বলে প্রেম করেছে এই দুনোটা! [ স্নেহা একটু হেসে উঠে ]
রিদোয়ান : আই লাভ ইউ জারিফা! ডো ইউ লাভ মি?..
[ বলেই মাথা তুলে জারিফার দিক তাকালো, জারিফার চোখে পানি টলমল করছে…পলক নড়তেই পানি গড়িয়ে পড়বে…হ্যা পড়েই গেলো পানি..]
রিদোয়ান : [ মুখ গোমড়া করে ] ট্রাষ্ট মি জারিফা! ভালোবাসা কি ভালোবাসার ফিলিংস্ কেমন এটা আমি তোমার সাথে দেখা হওয়ার পরে বুঝতে পেরেছিলাম! আই রিয়েলি লাভ ইউ!
জারিফা : [ কাদো কন্ঠে ] যদি বলি…. না?….
রিদোয়ান : তাহলে ভাববো! একটা দূসপ্ন ছিলো!
[ জারিফা চোখ মুছে একটা হাসি দিয়ে, পাশফিরে তাকালো…]
শ্রেয়া : [ হেসে হেসে চেঁচিয়ে ] No জারিফা! No…রিজেক্ট রিজেক্ট! [ রিদোয়ান আর জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]
আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] আরে জারিফা! ছেলের অভাব পড়লো নাকি…এতো ভাবছো কেনো?…মন যখন না বলছে…তাহলে না বলে দাও!
[ বাকিরা হেসে উঠে, জারিফা রাহুলের দিক তাকালো… রাহুল একটু হেসে হাত দিয়ে ইশারা করে অল দ্যা বেষ্ট জানালো….]
জারিফা ধীরেধীরে রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো…
[ সবাই এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে তালি দিয়ে উঠলো ]
[ খুশিতে স্নেহার চোখ বেয়ে কখন পানি গড়িয়ে পড়ছে..ঠেরই পাইনি! তাড়াতাড়ি চোখ মুছে আবার তালি দিতে লাগলো ]
[ রিদোয়ান জারিফাকে রিং পড়িয়ে ব্লাশিং হয়ে দাঁড়িয়ে যায়…জারিফা লজ্জায় লাল হয়ে হাতের রিংগের দিক তাকিয়ে আছে…ধীরেধীরে রিদোয়ান জারিফার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলে…জারিফা হেসে লজ্জায় রিদোয়ানের বুকের মাঝে মাথা লুকিয়ে রাখলো…রিদোয়ান ও হেসে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো জারিফাকে… ]
[সবাই আরো এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো….]
[ স্নেহা একটু হেসে পাশফিরতেই দেখে রাহুল চলে যাচ্ছে…মুখটা গোমড়া করে ফেললো স্নেহা…]
শ্রেয়া : [ চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল তুইই কোথায় যাচ্ছিস?..
রাহুল : [ নাকফুলিয়ে আড়চোখে শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] জাষ্ট ঐদিকটাই….
শ্রেয়া : [ চোখ মেরে ] তাই!
জারিফা : জাষ্ট ঐদিকটাই মানে?..পার্টি এইখানে চলছে…আর আপনি ঐদিকটাই গিয়ে কি করবেন…
রাহুল : [ একটু হেসে টেবিল থেকে একটি শেম্পিং এর বোতোল নিয়ে জারিফা আর রিদোয়ানের দিক এগিয়ে তাদের মাঝে দাঁড়ালো ] ওকে গাইস্ আজকের পার্টি সেলেব্রেট হবে আমাদের নিউ কাপল এর জন্য! সো্ [ রিদোয়ানের পেটে ঘুষি মেরে ] Congratulations রিদ! [ জারিফাকে চোখ মেরে ] এন্ড জা~~রিফা [ বলতেই জারিফা লজ্জায় অন্যদিক ফিরে যায় ]
রাহুল গ্লাসে সবার জন্য শেম্পিং ঢেলে চিরস্ করে সেলেব্রেট করলো…
[ স্নেহা একপলকে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…রাহুল ও তাকাতেই চোখে চোখ পড়লো…দুজনেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়, ]
কিছুক্ষণ পর,
স্নেহা বাকিদের দিক তাকিয়ে দেখে সবাই গ্লাস করেই অল্প অল্প খাচ্ছে…আর রাহুল পুরো এক বোতোল হাতে নিয়েই অন্যপাশ চলে গিয়ে গডগড করে গিলে খাচ্ছে…
জারিফা স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা মুখ গোমড়া করে আছে…আর রাহুল ওপাশ গিয়ে একা দাঁড়িয়ে শেম্পিং খাচ্ছে…জারিফা রাহুলের দিক এগুতে গেলে
রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছো?..
জারিফা : এক সেকেন্ড আসছি!
[ বলেই রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে রাহুলকে হাত ধরে টেনে সবার সামনে এনে দাড় করাই ]
জারিফা : শুধু Congratulation দিয়ে কাজ হবে না মিষ্টার! আমাদের আজ একটা ফাটাফাটি সং শোনাতে হবে! [ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মারলো ]
রাহুল : [ একটু হেসে ] সরি! জারিফা! বাট্ আমি…গান ছেড়ে দিয়েছি…
[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,চোখে পানি টলমল করতে লাগলো স্নেহার…]
রিদোয়ান : ওহো! রাহুল এটা কোনো কথা হলো?..আমার স্পেশাল ডে…একটা স্পেশাল গানতো হওয়া জরুরি তাই না… [ চেঁচিয়ে ] কি বলো গাইস্?…
আসিফ : ইয়াহ! রাহুল He is right!
[ রাহুল কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলো কারণ রাহুলের চোখ ভিজে আসছিলো,]
জারিফা : [ দৌড়ে রাহুলের সামনে এসে পথ আটকিয়ে ] আমি একটা ডায়লগ বলি ওকে…? দল ছেড়েছি! কাজ ভুলিনি বস্ [ বলেই রাহুলকে একটা চোখ টিপ মারলো ] তেমনি আপনি গান ছেড়েছেন, গান তো আর ভুলেননি! হুম? হুম?…
রাহুল : Shut-up জারিফা [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো ]
জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] Never! and no excuse ok?..[ বলেই রাহুলকে আবার টেনে এনে দাড় করাই ]
শ্রেয়া : এ…এক সেকেন্ড আমি আনছি গিটার [ বলেই শ্রেয়া দৌড়ে রাহুলের রুমে গিয়ে গিটারটা নিয়ে এনে রাহুলকে ধরিয়ে দেই ]
রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে গিটারটা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো, হঠাৎ আবার দাঁড়িয়ে গিয়ে কি মনে করে ফুফিয়ে এসে গিটারটা হাতে নিয়ে একটি চেয়ারে বসে পড়লো…চোখ পানিতে ভরে আছে….নাক মুখ লাল হয়ে আছে রাহুলের, বাজাতে লাগলো গিটার? সবাই এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক!
[ মার্জান স্নেহাকে একটু ধাক্ষিয়ে চোখ টিপ মাড়লো…স্নেহা নিস্তব্ধ হয়ে মাথা নিচু করে আছে…রাহুলের বাজানো গিটারের Softed tone কানে ভেসে আসছে…কান পেতে রইলো স্নেহা…. ]
রাহুল : ♪♪ তু আতি্ হে সি্নে মে্
~~যাব্ যাব্ সা্সে্ ভারতিহু্
তে্রে্ দি্ল কি্ গালি্ওসে্
মে্ হার রোয্ গুজা্রতা্ হু্
হাওয়া কে্ যে্ইসে্ চালতা্ হে্ তু্
মে রে্ত যে্ইসে্ উডতা্ হু
কন্ তুঝে্ ইউ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু
ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও~~~ ওও্ হা~~~আআ~~আআ~~~আ
[ চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে…কিন্তু তাও মুখে হাসি নিয়ে গান করে যাচ্ছে রাহুল! সবাই কোণা চোখে একবার স্নেহার দিক আরেকবার রাহুলের দিক তাকাচ্ছিলো বারবার, স্নেহা তা বুঝতে পেরে চোখের জল আটকিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে ছটফট করতে লাগলো…]
রাহুল : ♪♪ তু জো্ মুঝে্ আ্ মি্লা্
সা্পনে্ হুয়ে্ সা্রপি্রে
♪♪ হাতো্মে্ আতি্ নেহি্
উডতে্হে্ লামহে্ মে্রে্
মেরি্ হাসি্ তুঝ্সে্ মেরি্ খুশি্ তুঝ্সে্
তুঝে্ খাবা্র কি্য়া বেকা্দা্র
জিস্ দিন্ তুঝ্কো্ না্ দে্খু
পাগা্ল পাগা্ল পি্রতি্ হু
কন্ তুজে্ ইউ্ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু…
ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও্~~ হা্~~~আ্ ~~~আআ্ ~~~আ্
[ গান শেষ করে হঠাৎ, গিটারের তারটা জোড়ে টান মারলো রাহুল…
স্নেহা ভয়ে কেপে উঠলো…সবাই শকড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক… চোখটা লাল হয়ে জলসে যাচ্ছে… গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে রাহুলের ]
[ হঠাৎ, স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে চোখে মুছে দৌড়ে রুফটপ থেকে নেমে চলে যায়, বাকিরা অবাক হয়ে স্নেহার চলে যাওয়া চেয়ে রইলো…রাহুল মাথা নিচু করে হাত মুঠি বেধে বসে আছে…]
_________________________________
স্নেহা : [ নিচে নেমে ফুফিয়ে কেঁদে কেঁদে হাটছে আর মনে মনে ভাবছে ] আমি রাহুলকে কিছু বলতে পারছিনা কেনো? রাহুল আমাকে কতো ভালোবেসেছে..আর আমি কিনা বুদ্ধু একটা…ওকে বারবার ফিরিয়ে দিলাম…আবার ও ঐ নেহার কথা নিয়ে মাথার মধ্যে খিচুরি পাকাচ্ছিলাম…কিক কিন্ত আমার মন বলছিলো.. রাহুল আমাকে সব সত্যি বলেছে…এবং তাই প্রমান হলো…রাহুল গান ছেড়ে দিয়েছে…তারপরে ও গান গাইলো! [ চোখ বটে পানি ফেলে ] রাহুল জানে না আমি কেমন?.. হ্যা আমি না করে দিয়েছি… তাই বলে আমাকে আর চেহেরায় দেখাবেনা..? আমারদিক তাকাতেই চোখ সরিয়ে ফেলছে বারবার…কেনো? গিটারের তারটাও আমার উপর রেগে ছিড়েছে আমি জানি… যদি রাহুল…[ ফুফিয়ে কেঁদে ] আরেকবার.. আমার কাছে এসে বলতো…
হঠাৎ, পেছন থেকে কাদো কন্ঠে, স্নেহা বলে আওয়াজ এলো…
স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো, শকড হয়ে ফিরে তাকালো, চোখের পানি আটকানো আর যাচ্ছেই না স্নেহার… আর মনে মনে ভাবছে…রাহুল কি এখন ও মনে মনে যা বলছিলো তা শুনতে পেয়েছিলো?…
রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আই কান্ট স্নেহা! কিন্তু ট্রাই করেছি! [ মাথা নিচু করে ] আম আমি… তোমার থেকে দূরে থাকার ট্রাই করেছিলাম স্নেহা কিন্তু…
স্নেহা : [ চোখ মুছে চেঁচিয়ে ] কেউ বলেছে ট্রাই করতে?
রাহুল : [ কাদো কাদো ভাবে ] তুমিই তো বলেছিলে আমি কারো ভালোবাসা ডিসার্ব করিনা…
স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে কেঁদে ] হ্যা বলেছিলাম! কারণ তখন তো আমি ভেবেছিলাম আপনি নেহাকে… [ বলেই কেঁদে উঠে ]
[ রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে দেই, স্নেহাও চোখ মুছে হেসে উঠে ]
স্নেহা : [ কাঁদো কন্ঠে ] আপনাকে কাঁদলে একটু ও সুইট্ করে না…
রাহুল : [ অন্যপাশ ফিরে কান্না কন্ট্রোল করে আবার স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাহলে কিসে সুইট্ করে বলে দাও!
স্নেহা : [ কাঁদছে আর হাসছে..] আপনার তেডি স্মাইল! [ বলতেই রাহুল হেসে উঠে, স্নেহা ও একসাথে হেসে উঠে,
হঠাৎ, আবার মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক চেয়ে থাকে…]
রাহুল : [ কিছুক্ষণ স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে যেন লাগছে স্নেহা তার চোখ দিয়েই রাহুলকে প্রশ্ন করছে! চোখ ভিজে আসতেই রাহুল বলে উঠে ] আ..আই.. আই লাভ ইউ স্নেহা!
[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চেয়ে আছে আর চোখ থেকে পানি ফেলছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… স্নেহা হেসে চোখ মুছে দৌড়ে এসে রাহুলকে ঝড়িয়ে ধরে… রাহুল ও স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো…]
রাহুল : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] এতো হালকা করে ধরে নাকি কেউ? আরেকটু শক্ত করে ধরো না…
[ স্নেহা হেসে আরো শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো রাহুলকে!
আবার ও রাহুলের জ্যাকেট থেকে সেই স্মেল ভেসে আসছে স্নেহার নাকে…মন ভরে যাচ্ছে স্নেহার এই স্মেলে ]
[ আর রাহুল মুখের উপর চলে আসা স্নেহার চুল এবং কাধের স্মেল নিচ্ছে…আর শাস ফেলছে, যেন লাগছে আবার কতোটা বছর পর এই স্মেলের রাস্তা খুজে পেয়েছে! ]
রাহুল : স্নেহা আমার মনে এমন লাগছিলো যেন তুমি আমাকে ডাকছিলে!
স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] হ্যা! ডেকেছিলাম!
[ রাহুল স্নেহার কানের দিক একটি চুমু খেয়ে আবার শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে স্নেহাকে, শীতল ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে…স্নেহা আর রাহুল নির্বাধায় দুজন দুজনকে ঝড়িয়ে ধরে আছে ]
চলবে. …….