Love At 1St Sight Season 3 Part – 17

0
6611

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 17

writer-Jubaida Sobti

রাহুল স্নেহার ঘাড়ের কাছেই মাথা নুয়ে বসে আছে,

রাহুল : স্নেহা! তুমি এতো..খুশবো কেনো?..

স্নেহা : কিসব বলছেন পাপ..পাগল..হয়েছেন… নাকি?

রাহুল : [ স্নেহার হাত মুখের কাছে এনে…ধীরে ধীরে স্মেল নিতে লাগলো…] মনে হয় পাগল হয়েই যাচ্ছি!

[ স্নেহার হার্টবিট বেড়েই চলছে…জোড়ে জোড়ে শাস নিতে লাগলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ স্নেহার কানের কাছে মুখ এনে ] একটা কথা বলবো স্নেহা?…

[ স্নেহা কিছু বললো না চোখ বটে চুপ করেই রইলো আর জোড়ে জোড়ে শাস নিতে লাগলো, ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] You looking so….hot! without ওড়না! [ বলতেই স্নেহা চোখ খুলে তাড়াতাড়ি কম্বল কাছে টেনে নেই ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা পাশফিরে তার ওড়না খুজতে লাগলো,

রাহুল : Hey! কিছু খুজছো নাকি স্নেহা?…

স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তার মাথায় স্নেহার ওড়নাটা পেছিয়ে বাধতে লাগলো,

স্নেহা : কিহ হচ্ছে?..[ রাগান্বিত ভাবে ] আপনি…আমার? উফফ! দেন এটা রিটার্ন করেন…

রাহুল : আচ্ছা কেমন লাগছে বলোতো আমায়?…

স্নেহা : একদম কুয়া ঘাটের মাঝির মতো লাগছে,

রাহুল : তাই?..ওকে নট বেড!

[ বলতেই স্নেহা রাহুলের মাথা থেকে ওড়নাটা টান দিয়ে খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে, রাহুল হেসে তাড়াতাড়ি মাথা সরিয়ে নেই… স্নেহা হালকাএকটু উঠে বসে….রাহুলের মাথা থেকে ওড়না ছুটিয়ে নেওয়ার নির্গম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, টানাটানিতে ওড়না মাথা থেকে ছুটে এলে ও…রাহুলের হাতেই এখনো বন্ধি আছে ওড়নাটি,

স্নেহা রাহুলের হাত থেকে ওড়না ছিনিয়ে নেওয়ার ট্রাই করলে এতে রাহুল ও পিছে হেটে নেই..স্নেহা কাছে আসলে রাহুল তার হাত দূরে নিতে থাকে…এভাবে Continue চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে স্নেহা খেয়াল করলো সে রাহুলের কাধে হাত দিয়ে তার অনেকটা কাছে চলে এসেছে…

স্নেহা থেমে গিয়ে রাহুলের দিক তাকালো..রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা..তাড়াতাড়ি সরে যাচ্ছিলো… অমনিই রাহুল স্নেহাকে টান দিয়ে কাছে টেনে নেই…ব্যালেন্স হারিয়ে দুজনেই খাটে শুয়ে পড়ে…

স্নেহা রাহুলের বুকের উপর ,রাহুলের মুখের উপর স্নেহার চুল সব এসে পড়েছে…

রাহুল : [ তার মুখ থেকে অল্প একটু চুল সরিয়ে ] বাহ! স্নেহা তুমিতো আমার চেয়ে ফার্ষ্ট বেড়িয়েছো…আমি জাষ্ট টান দিলাম… আর তুমি তো এক্কেবারে নিয়ে শুয়ে পড়লে!

স্নেহা উঠে বসার ট্রাই করলে…রাহুল তাকে আরো শক্ত করে বুকে চেপে ধরে রাখে…

স্নেহা : আজিব! ছাড়েন আমাকে…

রাহুল : কেনো ভালোই তো লাগছে!

স্নেহা : দেখেন আপনি কিন্তু বেশী করছেন ছাড়েন [ বলেই ছুটাছুটির চেষ্টা ]

রাহুল : অতোটাও ভারী না স্নেহা তুমি! [ বলেই হাসতে লাগলো ] উমম! মিনিমাম দু-তিন ঘন্টা এভাবে শুয়ে থাকতে পারবো,

স্নেহা জোড় করে ছুটাছুটি করে চুল আর কাপড় ঠিক করে উঠে বসে, রাহুল হাসতে থাকে, স্নেহা নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়,

স্নেহা : [ মনে মনে ] ইয়া! আল্লাহ এইবার বুঝছি! পা ঠিক না থাকলে মানুষ কতোটা অচল! [ হঠাৎ দেখে মাথার উপর ওড়নাটা এসে পড়লো ফিরে তাকালে দেখে রাহুলই পড়িয়ে দিলো,]

রাহুল : এইবার বউ বউ লাগছে, [ with tedi smile ]

[ স্নেহার ও আর কি দেরী করার একটানে ওড়নাটা মাথা থেকে সরিয়ে গায়ে মুড়িয়ে নিলো… রাহুল তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতে লাগলো… ]

কিছুক্ষণ পরে,

স্নেহা কোণা চোখে ফিরে তাকালে, দেখে এখনো তাকিয়ে আছে তেডি স্মাইল দিয়ে,

স্নেহা : [ মনে মনে ] কি আজিব! এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো!

ধীরে ধীরে…স্নেহা উঠে খাট থেকে পা নামিয়ে বসে…রাহুল চেয়ে আছে…স্নেহা উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে…

পাশের টেবিল ধরে কোনোভাবে দাঁড়ালো, আবার কিছুক্ষণ পরপর রাহুলের দিক ও তাকাচ্ছে…রাহুল কিছু বলছে ও না করছে ও না…জাষ্ট তেডি স্মাইল দিয়ে চেয়ে আছে….

স্নেহা দেওয়াল ধরে কিছুদূর হেটে যাওয়ার পর দেখে হঠাৎ রাহুল এগিয়ে এসে…তার সামনে দাঁড়ালো…

স্নেহা : কি হলো…? আপনার জালায় আমি অন্যরুমে যাচ্ছি…আর আপনি…আবার

[ রাহুল স্নেহাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে তার কাধের দুপাশ হাত দিয়ে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : কিক..কি করছেনটা কি আপনি…দেখেন..আমার রাগ তুলবেন না…আপনার এসব [ বলতেই রাহুল স্নেহার গলাই স্লাইড করতে লাগলো… স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে…ফেলে ]

রাহুল : আমার এসব?.. বলো থেমে গেলে কেনো [ with tedi smile ]

স্নেহা কিছু না বলে রাহুলের হাত সরিয়ে সামনে এক-কদম পা বাড়ালো,পেছন থেকে রাহুল এগিয়ে এসে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো,

স্নেহা : [ রাগান্বিতভাবে চেঁচিয়ে ] আরেহ! আপনি আবারো…

রাহুল : তুমি হাটতে পারছোনা তাই কোলে নিলাম!

স্নেহা : বলেছি আমি?..উফ নামান [ বলেই ছুটাছুটি করছে ]

[ রাহুল স্নেহাকে এনে আবারো খাটে বসিয়ে দিলো ]

স্নেহা : আপনার প্রবলেমটা কি আমি কিছুই বুঝছিনা…আপনি কেনই বা এসেছেন…?

রাহুল : [ স্নেহার পাশে বসে ] ওকে রিলেক্স! আমি ডিষ্টার্ব করবো না…তোমাকে কোথাও যেতে হবে না এইখানেই বসে থাকো!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি…আসলে উফফ! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : কিছু বললে?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে আবার দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু রাহুল হাত চেপে ধরে রাখায় দাঁড়াতে পারলো না ]

স্নেহা : হাত ছাড়েন!

রাহুল : [ স্নেহার হাত তুলে তার মাথায় ধরিয়ে দিয়ে ] লুক স্নেহা! আমি মাথায় ব্যথা পেয়েছিলাম ঐদিন! একটু আদর করে দাও না…

স্নেহা রাহুলের কপালের দিকটা তাকালো…এখনো ক্ষত হয়ে আছে জায়গাটি!

স্নেহা : আপনি ব্যান্ডেজ খুললেন কেনো?..

রাহুল : আমাকে দেখতে অড! লাগছে তাই!

স্নেহা : আরে এটা কোনো…[ বলেই থেমে গেলো স্নেহা, নেহার বলা কথাগুলো কানে বেজে উঠলো স্নেহার, ]

রাহুল : [ স্নেহার মুখের সামনে হাত নাড়িয়ে ] স্নেহা! কই হারিয়ে গেলে…

স্নেহা : নাহ কিছুনা [ বলেই হাত নামিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ][ মনেমনে ] ব্যথা পেয়েছে তাতে আমার কি?..হুহ! আবার ব্যান্ডেজ ও খুলে রেখেছে…যদি ইনফেকশন হয়ে যায়!

রাহুল চেয়ে দেখে..বুঝতে পারলো.. স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে,ধীরে ধীরে রাহুল তার মাথাটা স্নেহার কোলে রেখে…শুয়ে গেলো…

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকাতেই চোখের পানি রাহুলের মুখের উপর গিয়ে পড়লো,

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] কেনো এসেছে পানি স্নেহা?..

স্নেহা : আ..আমার চোখে কিছু ঢুকেছে নিশ্চয় তাই!

রাহুল : আমাকে কষ্টে দেখতে পারছোনা স্নেহা তাই না..? তাহলে কেনো করছো এমন?…

স্নেহা : কি বলছেন আপনি আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা..আর আপ..আপনি এইখানে কেনো শুলেন?

রাহুল : [ একটু হেসে ] দু-দিন ধরে ঘুমোইনি ট্রাই করেছি..কিন্তু ঘুম আসছেই না…So এখন গুডগার্লের মতো.. আমাকে একটু ঘুম পাড়িয়ে দাও [ বলেই স্নেহার হাতটা রাহুল তার চুলের উপর রেখে…চোখ বন্ধ করে রাখে ]

স্নেহা : আমি ঘুম পাড়াবো আপনাকে?..আপনার মাথা ঠিকাছে?..

রাহুল : না ঠিক নেই! দেখছো না ব্যথা পেয়েছি!

স্নেহা : আপনি আসলেই একটা…

রাহুল : বলো?..[ with tedi smile ] আমি আসলে একটা?…

স্নেহা বিড়বিড় করে কি যেন বলে অন্যপাশ ফিরে গেলো! রাহুল চোখ বন্ধ করে শুয়েই আছে!

কিছুক্ষণ পর স্নেহা ধীরে ধীরে রাহুলের দিক তাকালো…চেয়ে আছে রাহুলের দিক…কপালের উপর ছোট ছোট চুল গুলো উড়ছিলো রাহুলের..

স্নেহার ইচ্ছে হচ্ছিলো সেগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে..

রাহুল : কি চেয়ে আছো?..

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

রাহুল : অবাক হওয়ার কি আছে?..তুমি কি ভেবেছো? আমার চোখ বন্ধ তাই কিছু দেখছিনা?..

[স্নেহা কিছু বললো না চুপ করেই রইলো!]

রাহুল : [ হেসে স্নেহার নাকটা একটু চেপে দিয়ে ] তোমার নিশাস আমার মুখের উপরই পড়ছিলো!

স্নেহা : আপ..আপনি এইবার যান প্লিজ!

রাহুল : No way!

[ বলেই পাশফিরে শুয়ে স্নেহার কোমোড়ের দিকটা ঝড়িয়ে ধরলো… স্নেহা শকড হয়ে থমকে গেলো ]

[ রাহুল ধীরে ধীরে তার চোখ খুললো ]

স্নেহা : আরেহ! আপনি…উঠুন…প্লিজ! নাহলে আমি এখন

রাহুল : নাহলে তুমি এখন?… কি?….চিৎকার করবা?..দৌড় দিবা?..হেটে অন্যরুম যাবা?..হুম?..কোনোটায় কাজে আসবে না স্নেহা!

স্নেহা চুপ হয়ে রইলো!

রাহুল ধীরে ধীরে তার আংগুল দিয়ে…স্নেহার স্কার্ট এর টি-শার্টটি হালকা একটু উঠালো….স্নেহার পেট আর নাভি দেখা যাচ্ছিলো!

রাহুলের গরম নিশাস লাগছিলো স্নেহার পেটে…স্নেহার গা শিউরে উঠছে… তাড়াতাড়ি স্নেহা হাত দিয়ে টি-শার্টটি নামিয়ে দিলো!

রাহুল একটু তেডি স্মাইল দিয়ে…আবারো স্নেহার টি-শার্টটা আংগুলদিয়ে পেটের দিক উঠিয়ে নিলো… এইবার স্নেহা নামিয়ে দেওয়ার আগেই রাহুল তার নাক লাগিয়ে দিলো স্নেহার পেটে…ধীরে ধীরে ঠোট বসিয়ে একটি চুমু খেলো! চোখ বন্ধ করে ফেললো রাহুল!

স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে রাহুলের চুলগুলো শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে ফেললো…এবং রাহুলের মাথা সরাতে অপ্রাণ চেষ্টা!

রাহুল : [ তার মনভরে স্মেল নিতে লাগলো… এই যেন অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে…জীবনে পাওয়া সব সুখের মুহূর্তের মধ্যে এ যেন শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত তার…ধীরেধীরে চোখ খুলে স্নেহার পেটের দিক তাকালে দেখে…স্নেহা বার বার শিউরে উঠছে…আর জোড়ে নিশাস নিচ্ছে…কি দারুণ লাগছে দেখতে… ] [ মনে মনে ] কন্ট্রোল রাহুল কন্ট্রোল! [ বলেই হুট করে উঠে বসে পড়লো! ]

[ রাহুল নিচের দিক তাকিয়ে আছে ব্লাশিং হতে লাগলো… স্নেহার দিক একটু তাকিয়ে দেখলে, দেখে স্নেহা তার চুল ঠিক করছে…কিছুক্ষণ ওড়না ঠিক করছে…লজ্জায় পারছে না…যেন মাটি কুড়ে ঐদিকটায় ঢুকে যেতে.. স্নেহার এমন অবস্থা দেখে…রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

অনেক্ষণ হলো দুজনেই দু-পাশ ফিরে সাইলেন্ট হয়ে বসে আছে,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : [ চোখ রাংগিয়ে ] স্টপ স্টপ! ওকে?..

রাহুল : হুম! ওকে!

স্নেহা : কিছু বলবেন না…আর দূরত্ব বজায় রাখুন!

রাহুল : হুম! ওকে!

After few minutes,

রাহুল : আচ্ছা শোনো তুমি…তোমার পায়ের এক্সারসাইজ করিও তাহলে দু-তিনদিনেই হাটতে পারবে

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আবার?…

রাহুল : ওকে ওকে! রিলেক্স..

হঠাৎ, বেল বেজে উঠলো,

রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে…

জারিফা : [ চোখ মেরে ] হ্যালো! জিজাজি! কেমন চলছে দিনকাল?..

[ জারিফার কথা শুনে রাহুল হেসে দিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে সব ঠিকাছে তো?..স্নেহা আমাকে মেসেজ করেছে যাতে তাড়াতাড়ি আসি! তাই আমরা…চলে এলাম! [ বলেই সবাই ভেতরে ঢুকতে লাগলো ]

রাহুল : [ মনে মনে ] অউ! তো বসে বসে ওপাশ ফিরে এতোক্ষণ এসব করছিলো!

[ হঠাৎ রাহুলের ফোনটা বেজে উঠলো ]

রাহুল : হ্যা! আসিফ বল?

আসিফ : ইয়ার! রাহুল কই গেলি হঠাৎ করে?..

রাহুল : ইয়াহ! ডোন্ট ওয়ারি আসছি আমি! [ বলেই ফোন রেখে দিলো, এবং ভেতরে এগিয়ে গিয়ে জারিফার মাথায় টোকা মেরে ] শোনো ওর পায়ের এক্সারসাইজ করে দিবা তাতে ও তাড়াতাড়ি হাটতে পারবে!

জারিফা : ওমা তাই নাকি?..

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] জি মেম তাই! আহ! আচ্ছা যাও এর বদলে তোমাকে ফিস্ দিয়ে দিবো…

জারিফা : [ হেসে রাহুলকে চিমটি দিয়ে ] আচ্ছা আচ্ছা তাই নাকি…

রাহুল : আআও! ওকে গাইস্ আমি আসি তাহলে! বাই!

মার্জান : আরে এসেছেন যখন আমাদের সাথে লাঞ্চ করে যান!

রাহুল : থেংক্স বাট! নেক্সট টাইম ওকে!

জারিফা : শিয়র?…

রাহুল : ইয়াহ!

জারিফা : ওকে থেংক্স!

রাহুল : স্নেহা!

[ স্নেহা আড়চোখে তাকালো ]

রাহুল : [ চোখ মেরে? ] বাই!

[ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় বাকিরা হাসতে থাকে ]

রাহুল চলে গেলে,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আমার তো মনে হচ্ছে তোরা আমার ফ্রেন্ডস কম ওর বেশী!

শায়লা : আরে কেনো কি হলো?…

স্নেহা : ওকে বাসার চাবি কে দিয়েছে?..

মার্জান আর শায়লা একসাথে জারিফার দিক তাকালো!

জারিফা : তোরা আমারদিক কেনো এভাবে চেয়ে আছিস! আমি দিয়েছি নাকি?… আরে মার্জান তুইই তো চোখ মেরে বলেছিলি যে আমি জানতাম রাহুল আবার ডাকদিবে!

মার্জান : হ্যা! সেটা বলেছিলাম..কিন্তু আমি কি বলেছিলাম চাবি দিয়ে দে!

জারিফা : আহারে! তাই?..তাহলে অন্তত নিষেধ তো করতে পারতি!

মার্জান : আহ! বেচারার চেহেরা দেখে মায়া লাগছিলো… তাই?

আর দেখিসনি…এখন যেতে স্নেহার সাথে মিট করে ওকে কতো হ্যাপি হ্যাপি লাগছিলো!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আসলেই তো!…

স্নেহা দুটো বালিশ নিয়ে একটা জারিফা আর একটা মার্জানকে ছুড়ে মারলো!
[ শায়লা হাসতে থাকে ]

জারিফা : ওকে ওকে! সরি! স্নেহা..এমনিতেও ও আমাদের হবু দুলাভাই তাই না…তাই একটু হেল্প করেছিলাম…

সাথে সাথে স্নেহা আরেকটি বালিশ নিয়ে ছুড়ে মারে জারিফাকে,

স্নেহা : তোরা বুঝছিস না কেনো?..যেমনটা তোরা ভাবছিস তেমনটা কখনোই সম্ভব না…আমি চাইলেও রাহুলকে…[ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] তুই চাইলেই সব হবে ডোন্ট ওয়ারি! আর ঐ পেত্নীটার চিন্তা আমার উপর ছেড়ে দে! ওকে তো আমি এইবার…

স্নেহা : হয়েছে! যা তোরা এইবার ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নে….
_________________________________

সন্ধ্যায়,স্নেহা জানালার ধারে পা গুটিয়ে বসে আছে…হঠাৎ জারিফা এসে স্নেহার পা…তুলে নিয়ে মাঝতে লাগলো…

স্নেহা : আরেহ! কি করছিস!

জারিফা : [ চোখ মেরে ] আপনার উম উম! ওনার অর্ডার আপনাকে যাতে পায়ের এক্সারসাইজ করেদি! তাতে আপনি তাড়াতাড়ি হাটতে পারবেন!

স্নেহা : ওর অর্ডার কেনো মানবো! [ বলেই পা টেনে নিয়ে নেই ]

শায়লা : আরে স্নেহা ঠিকই তো বললো! এক্সারসাইজ না করলে তাড়াতাড়ি হাটতে পারবিনা!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] হ্যা! করবো কিন্তু ওর অর্ডারে না…আমি আমার ইচ্ছেতেই করবো!

জারিফা : [ স্নেহার পা টেনে নিয়ে ] ওকে মেরি জান! তোর ইচ্ছেতেই হবে! [ বলেই আবার পা মেঝে দিতে লাগলো ] ইয়ার স্নেহা…তোর পা গুলো কি সফট্ [ চোখ মেরে ] রাহুল দেখলে তো!?

স্নেহা : [ পা বটে নিয়ে ] হয়েছে তোর মাঝা লাগবে না! যাহ এইখান থেকে!

জারিফা : ওকে ওকে! সরি সরি! [ বলেই আবার মেঝে দিতে লাগলো ]

পরদিন সকালে,

স্নেহা বসে আছে,বাকিরা রেডি হচ্ছে ভার্সেটি যাওয়ার জন্য!

স্নেহা : কোথায় যাচ্ছিস তোরা?..

মার্জান : আরে জিজ্ঞেস করার কি আছে? কোথায় আর? ভার্সেটি!

স্নেহা : আরে আমাকে একা রেখে?..

মার্জান : কিন্তু তুইতো বলেছিলি যে তোরা ভার্সেটি যা, তুই একা থাকতে পারবি…

স্নেহা : হ্যা বলেছিলাম…কিন্ত এখন….

জারিফা : আরে টেনশন কিসের রাহুল আছে না?..?

স্নেহা : তুই চুপ কর! শোন আমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কারো ভার্সেটি যাওয়া লাগবে না!

[ সবাই বুঝতে পেরে হেসে উঠে ]

মার্জান : ওকেই!

বিকেলে,

স্নেহা বসে বই পড়ছিলো, হঠাৎ কানের কাছে গাড়ীর হর্ন বাজছে…একনাগাড়ে,

মার্জান : আরে কে এইভাবে হর্ণ বাজাচ্ছে কমোনসেন্স বলতে কিছু নেই নাকি?..

জারিফা : [ উঠে বারান্দায় এগিয়ে গিয়ে ] আরে রাহুল! [ হাত নাড়িয়ে ] হাইই!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা কোথায়?..

[ রাহুলের কন্ঠ শুনে স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো ]

জারিফা : ভেতরেই আছে!

রাহুল : ওকে বলো বারান্দায় আসতে,

জারিফা : [ দৌড়ে ভেতরে এগিয়ে এসে ] স্নেহা রাহুল এসেছে তোকে বারান্দায় ডাকছে!

[স্নেহা মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আবার বই পড়াই ব্যস্ত হয়ে পড়ে,]

জারিফা : আরেহ! বেচারা দাঁড়িয়ে আছে!

স্নেহা : থাকুক! তাতে আমার কি! [ বলেই আবার বই পড়তে লাগলো ]

জারিফা মুড অফ করে বারন্দায় এগিয়ে গিয়ে মাথা নাড়ালো!

রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা না করে দিয়েছে….এইবার রাহুল আবারো হর্ণ বাজাতে লাগলো!

মার্জান : ইয়ার স্নেহা! মেরি জান…একবার গিয়ে দেখা দিয়ে আয় কেনো ডাকছে…নাহলে আমার তো মনে হচ্ছে একটু পর হর্নের সাউন্ডে পুরো বিল্ডিংটাই ফুটে যাবে!

[স্নেহা কারো কথায় কোনো পাত্তা না দিয়ে বই পড়তে ব্যস্ত!]

জারিফা : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] ইয়ার! স্নেহা! সবার কান চলে যাচ্ছে…রাস্তায় ভীর জমে গেছে! কিছু ভেজাল সৃষ্টি হওয়ার আগে প্লিজ কি বলতে চাই একবার দেখা দিয়ে আয়!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে বই রেখে ] কি আজিব! আমি হেটে…ওর জন্য আবার বারান্দায়…উফ!

জারিফা : আর কোনো ওয়ে নেই ?

[ স্নেহা কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকে…রাহুল হর্ণ বাজানো থামাচ্ছেই না, তাই ধীরে ধীরে দেওয়াল ধরে…হেটে স্নেহা বারান্দায় এগিয়ে যায়…জারিফা ও পেছন পেছন গেলো এইবার হর্ণ বাজানো থামলো, ব্লু-শার্ট, ব্লাক জিন্স, চোখে ব্লাক সানগ্লাস, আর স্নেহাকে দেখার সাথে সাথেই একটা তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…মার্জান আর শায়লা ও এগিয়ে আসে…]

রাহুল : [ সানগ্লাসটা চোখ থেকে খুলে চেঁচিয়ে ] থেংক্স স্নেহা! [ বলেই আবার সানগ্লাসটা পড়ে গাড়ীতে উঠে শা করে চলে গেলো ]

স্নেহা হতবাগ হয়ে চেয়ে আছে…বাকিরা কিটকিটিয়ে হাসতে আছে…

স্নেহা : জাষ্ট এইজন্যে?..আজিব মানুষ! [ জোড়ে একটি শাস ফেলে বাকিদের দিক তাকায়…তারা হাসি থামিয়ে চুপ হয়ে যায়,স্নেহা আর কিছু না বলে ভেতরে চলে গেলো ]

পরদিন বিকেলে,

স্নেহা বসে মাথা আছড়াতে লাগলো, হঠাৎ, আবারো সেইম গাড়ীর হর্ণ, স্নেহা অবাক হয়ে বারান্দার দিক ফিরে তাকালো,

মার্জান : [ হেসে ] অহ মাই গড! রাহুল এগেইন!

স্নেহা নাক ফুলিয়ে জোড়ে জোড়ে মাথা আছড়াতে লাগলো,

জারিফা : [ বারান্দায় এগিয়ে গিয়ে আবার দৌড়ে ভেতর রুমে এগিয়ে এসে ] হেইইই স্নেহা! ইয়ার দারোয়ান ও বেড়িয়েছে…এইবার পাক্কা আমাদের বাড়ী ছাড়তে হবে!

[ স্নেহা বারান্দায় এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালে..]

দাড়োয়ান : [ রাগান্বিত ভাবে ফুফিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠে ] এসব কি হচ্ছে?..

স্নেহা ভয়ে চুপ করে রইলো,

দাড়োয়ান : দেখতে তো সিধাসাধাই মনে হয়,

রাহুল দাড়োয়ানের মাথায় একটা বাড়ি দিলে দাড়োয়ান রাহুলের দিক তাকালো,রাহুল তার ঘাড়ে হাত রেখে স্নেহার দিক আংগুল দেখিয়ে কি কি যেন বলছিলো, কিন্তু উপর থেকে স্নেহা কিছুই শুনতে পারছিলো না!

জারিফা,মার্জান,শায়লা তিনজনই এগিয়ে আসে,

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আরে স্নেহা! রাহুল দাড়োয়ানকে কি বলছে?..

স্নেহা : Don’t know!

একটুপর, দাড়োয়ান স্নেহার দিক তাকিয়ে একটা মুচকি হেসে চলে যায়,

জারিফা : অহ মাই গড! এই দাড়োয়ানের কি হলো বলতো?..উনি এইভাবে মুচকি হাসি মারলো কেনো!

স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল স্নেহাকে চোখ টিপ মেরে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে উঠে চলে যায়!

৬দিন হয়ে গেলো,প্রতিদিন বিকেলে রাহুল গাড়ী নিয়ে এসে হর্ণ বাজিয়ে স্নেহাকে একপলক চেয়ে যাওয়াটাও কন্টিনিউ চলছিলো!

স্নেহা এখন দেওয়াল ধরা ছাড়াই হাটতে পারে তবে ততোটাও ফার্ষ্ট না…

স্নেহা : এক, দুই, তিন,চার,…[ পা বাড়াতে বাড়াতে,]

মার্জান : বাহ!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়ার! আমি হাটতে পারছি এখন দেখলি তো!

মার্জান : হ্যা! দেখলাম…তাহলে আজ সবাই ভার্সেটি যাচ্ছি!

স্নেহা : ইয়েস্

[ সবাই তৈরী হয়ে নিলো,]

জারিফা : ওয়াও স্নেহা…হঠাৎ করে উইদাউট ব্যান্ডেজ! তোকে না আজ দারুণ লাগছে!

স্নেহা : আজ মনে হয় ঘুম একটু বেশী গিয়েছিস! তাই একটু বেশীইই বকছিস!

জারিফা : যাক! বাবা কারো তারিফ করলেও দোষ!

[ স্নেহা এগিয়ে গিয়ে জারিফাকে পেছন থেকে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে ]

মার্জান : [ পাশের রুম থেকে চেঁচিয়ে ] জারিফা,স্নেহা! তোরা কি আসবি?…আরে বাবা বাস্ ছুটে যাবে তো!

স্নেহা আর জারিফা তাড়াতাড়ি এগিয়ে যায়,
__________________________

ভার্সেটি পৌছালো সবাই একই সাথেই কথা বলে বলে হাটছে…হঠাৎ পেছন থেকে কেউ ইচ্ছে করেই স্নেহার গায়ের সাথে ধাক্ষা খেয়ে পাশে এসে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে পাশফিরে তাকিয়ে ] আপনি? [ with shocking expression ]

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে