In Depths of Love Part-04

0
1819

#In_Depths_of_Love
Ramisa Ishrat
|| পর্ব-০৪ ||
_________________________________________

–‘মিতু! মিতুর ছবি কেন এখানে? মিতুর সাথে রোমানের কি সম্পর্ক? উফফ! আবার কি নতুন কাহিনী এটা? কিচ্ছু বুঝতে পারছি না আমি। আম্মুও বলছে না রোমান মানা করেছে বলে। রোমানও কিছু বলছে না। এখন সব সত্যিটা জানার একটাই উপায়! সে-টা হলো মিতু। হ্যাঁ, মিতুই পারে একমাত্র আমাকে সব খুলে বলতে।’

রিমি ডায়েরিটা ঠিক আগের জায়গায় রেখে ফোনটা হাতে নিল। তার মায়ের নাম্বার বের করে ডায়াল করল। কিছুক্ষন রিংটোন-টা বাজতেই ওপাশ রেখে ফোনটা রিসিভ হলো।

–‘ আসসালামু আলাইকুম আম্মুজান!’

–‘ ওয়ালাইকুম আসসালাম আমার সোনাপাখি। মায়ের কথা তাহলে মনে পড়েছে এত দিনে? আমি তো ভেবেছিলাম ভুলেই গেছেন আপনি!’ (কিছুটা অভিমানী সুরে)

–‘কিহ যা তা বলছো আম্মু? মেয়ে কি কখনো তার মা-কে ভুলতে পারে?’

–‘নাহ! কিন্তু তুই নিজেই ভেবে দেখ কতদিন বাদে কল করলি? মায়ের কথা মনে পরলে নিশ্চয় ফোন করতি।’

–‘আচ্ছা সর‍্যি, আম্মু! ভুল হয়ে গেছে তোমার এই সোনাপাখির। এরপর প্রতিদিন তোমায় ফোন করে গল্প জুড়ে দিব। এখন হ্যাপি?’

–‘হুম, এই না হলে আমার মেয়ে। তা বল, কেমন আছিস?’

–‘আমি আছি ভালো। তুমি কেমন আছো? আর বাবা কেমন আছে?’

–‘আমিও ভালো আছি আর তোর বাবাও।’

–‘আম্মু একটা কথা জানার ছিল!’

–‘হ্যাঁ, বল।’

–‘মিতু এখন বর্তমানে কোথায় আছে? না মানে, পড়াশোনার জন্য তো বিদেশে চলে গিয়েছিল! রিধি আপুর বিয়ের কিছুদিন আগেই তো চলে গেল। চলে যাওয়ার পর পরই তো আপুর বিয়েটা হয়ে গেল। কয়দিন পরে আমারও। থাকতে পারল না কারো বিয়েতে। অনেক মিস করছি ওকে। দেশে কি খালামনিদের কাছে আসছে?’

–‘না, আসেনি। কিন্তু তোর খালার কাছে শুনেছিলাম দু-এক দিনের ভিতর না-কি দেশে আসতে পারে।’

–‘ওহ আচ্ছা! ও আসলে আমাকে খবর দিও আম্মু। ওর সাথে অনেক আড্ডা বাদ আছে।’

–‘অবশ্যই!’

–‘আম্মু, তাহলে এখন ফোন রাখছি। কাজ করতে হবে। নিজের খেয়াল রেখো।’

–‘তুইও নিজের খেয়াল রাখিস।’

–‘হ্যাঁ!’ বলে ফোনটা রেখে দিল রিমি।

–’কিছু তো একটা আছে মিতু আর রোমানের মধ্যে। তারা হয়ত দু’জন দু’জনকে অনেক ভালো করে চিনে। নাহলে মিতুর এতগুলো ছবি রোমানের ডায়েরিতে!না চিনলে এতগুলো ছবি থাকত না। আবার তিথী, তিথী নাম তো বাসার লোকজন আর ওর ক্লজ ফ্রেন্ডরা ছাড়া কেও জানে না। এই সমস্ত কিছুর সমাধান আমাকে বের করতেই হবে।’
__________________________🍁🍁

–‘হেই! আর ইউ ব্লাইন্ড? চোখে দেখেন না না-কি?’

–‘আই’ম রিয়েলি রিয়েলি সর‍্যি! আমি আসলে তাড়াহুড়োয় ছিলাম। খেয়াল করতে পারি নি আপনাকে। সর‍্যি!’

–‘ইট’স ওকে।’ বলে মিতু উঠলে নিলে রোমান তার হাত তার দিকে বাড়িয়ে দেয় উঠার জন্য। মিতুও রোমানের হাতটা ধরে উপরে উঠে পরে। আর হেল্প করার জন্য তাকে বলে,
–‘ধন্যবাদ আপনাকে।’

–‘ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম!’

–‘বাই দা ওয়ে, আপনি কোথাও যাচ্ছিলেন তাই না?’

–‘হ্যাঁ, আসলে আমি এই ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছি। তো ক্লাসরুম খুঁজছিলাম। এমনিতে লেট হয়ে গেছে, তাই তাড়াহুড়োয় থাকায় আপনাকে খেয়াল করি নি।’

–‘কোন ইয়ার? ফাস্ট ইয়ার না-কি?’

–‘জ্বী! ফাস্ট ইয়ারের সাইন্স বিভাগে।’

–‘ওহ, দেট’স গ্রেট! আমিও সেম। তাহলে চলো একজন সাথে রুম খুঁজি।’

–‘আচ্ছা চলুন।’

–‘উমহুহ! চলুন নয়, চলো। আমরা সেম ইয়ারে না? তাহলে তুমি করে বলা যেতেই পারে।’

–‘হুম, চলো।’

দু’জনে একসাথে রুম খুঁজতে লাগল। ফাস্ট ইয়ারের ক্লাসরুম খুঁজে পেলে দু’জনে ভিতরে ঢুকল। নিজেদের জন্য সিট খুঁজে নিয়ে বসে পড়ল।

এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব আরো গভীর হতে থাকে। একদিন মিতু ভার্সিটির মাঠে রোমানকে দেখা করতে বললে রোমান ঠিক সময়মত চলে আসে। মিতুও চলে আসলে দু’জন একসাথে কফি খেতে যায়। কফি খাওয়ার এক পর্যায়ে মিতু বলে উঠে,
–‘রোমান তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।’

–‘হুম, তা বলো।’

–‘আমরা তো বন্ধু! তো তুমি কি আমার আরো ভালো বন্ধু মানে বেস্ট ফ্রেন্ড হবে?’

–‘বেস্ট ফ্রেন্ড?’

–‘হবে না বুঝি? তোমার নিশ্চয় বেস্ট ফ্রেন্ড আছে তাই না? ইট’স ওকে। ফ্রেন্ড হয়েই থাকব তাহলে।’

–‘দূর পাগলী! কেন হবো না? আর তাছাড়া আমারও কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড নেই।’

–‘তাইলে আজ থেকে আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড।’

–‘ডান!’

–‘হুম! আমরা যখন এখন বেস্ট ফ্রেন্ড, তাহলে আমরা কেও একে অপরের থেকে কিছু লুকাবো না কখনো। সব কিছু শেয়ার করব। ঠিক আছে? আর এখন থেকে তুই করে বলব আমি আর তুইও আমায় তুই-ই বলবি।’

–‘ঠিক আছে।’

–‘আচ্ছা, শোন না! আমার না আরেকটা নাম আছে। সে-টা শুধু বাড়ির সবাই জানে আর সবাই ও নামেই ডাকে। তুই তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তাই এখন থেকে তুই আমায় ও নামেই ডাকবি। ও-টা আমার ফেভারিট নেম। আমার দাদুর দেওয়া।’

–‘ওয়াও! সো নাইস। তো ওই নামটা কি?’

–‘তিথী!’

–‘অনেক কিউট নেম তো।’

–‘ধন্যবাদ।’

–‘ইউ আর ওয়েলকাম ম্যাডাম!’ রোমানের বলা এই কথা শুনে দু’জনেই হাসতে শুরু করে।

____________________________🍁🍁

অফিসে বসে অতীতের চিন্তায় মগ্ন ছিল সে। কারো শব্দে তার ভাবনার মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে।

–‘স্যার, আসতে পারি?’

–‘ওহ, মিলন! ভিতরে আসো।’

–‘স্যার, আপনি যে বাকি ফাইলগুলো চেয়েছিলেন? সেগুলো নিয়ে এসেছি।’

–‘টেবিলের উপর রেখে তোমার কাজে যাও।’

মিলন ফাইলগুলো রেখে তার কাজে চলে গেল। এদিকে রোমান বিরবির করে বলতে লাগল,
–’কত ভালো ছিল সে দিনগুলো! যখন আমরা কত মজা করতাম, কত আড্ডা দিতাম। কিন্তু কেন? কেন তিথী? কেন আমার সাথে এরকমটা করলি? এমনটা না করলেও পারতি তুই!’

চলবে……☘️☘️

~বি.দ্র: রিচেক দেওয়া হয় নি। ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে