Gangstar In Love Part-18+19

0
3415

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 18

❤️❤️
..
..
..
..
..
১ঘন্টা পর আইরাতকে সম্পূর্ণ বধূবেশে সাজানো হলো। দুধে আলতা গায়ের রংে লাল টুকটুকে লেহেংগা যেন ফুটে উঠেছে। পুরো পুতুলের মতো লাগছে আইরাতকে। যেন কোন হুর পরি কেও হার মানাবে। মেয়েরাও আইরাতের সৌন্দর্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

১ম মেয়ে;; ম্যাম, আপনাকে কি পরিমাণ যে সুন্দর লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
২য় মেয়ে;; স্যার আজকে আপনার থেকে চোখ ই ফেরাতে পারবেন না।

কিন্তু আইরাত এই সব কথায় কোন খেয়াল নেই। সে মূর্তির ন্যায় বসে আছে,, যেন তার মাঝে কোন অনূভুতি নেই। পাথর হয়ে গেছে সে। এ যেন নিজের বিরুদ্ধে করা এক যুদ্ধ। কিন্তু আইরাত অসহায় তার করার কিছুই নেই। ভাগ্যের লিখন না চাইলেও মেনে নিতে হবে।








অন্যদিকে….

আব্রাহাম রেডি হচ্ছে। লাল-সাদা কারুকাজ করা শেরওয়ানি তে আব্রাহাম কে মারাত্মক সুদর্শন লাগছে। জিম করা বডি তে শেরওয়ানি দারুন মানিয়েছে। কারো ঘায়েল হওয়ার জন্য আব্রাহাম কে এক নজর দেখাই যথেষ্ট। আব্রাহাম বোতাম লাগাচ্ছিল সেই সময় অয়ন ঘরে প্রবেশ করলো।

অয়ন;; এইটা কি আমার দাভাই?!
আব্রাহাম;; Any doubt?
অয়ন;; না মানে like seriously এটা তুই দাভাই
আব্রাহাম;; না, তোর ভাবির জামাই আমি
অয়ন;; ভাই, আমি বুঝাতে পারবো না তোকে কি পরিমাণ Handsome দেখাচ্ছে। বিয়ে তে তো সব মেয়ে তোকে দেখবে
আব্রাহাম;; আহা, আমি already অন্য কারো নামে বুক হয়ে গিয়েছি তো তাকিয়ে থেকেও লাভ নেই।
অয়ন;; হুমম হুমম তা তো বুঝলাম। এখন কি তোর হলো
আব্রাহাম;; হ্যাঁ হ্যাঁ হয়েছে। আচ্ছা বাপি কোথায় দেখছি না যে
আবির আহমেদ;; এই তো আমি এখানে। (ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে)
অয়ন;; বাপি দেখো তো তোমার ছেলে কে চিনতে পারো কিনা
আবির আহমেদ;; না চিনার কি আছে। আমার ছেলেকে কবে না সুন্দর দেখা গেছে বল। He is always Mr. Perfect…..
আব্রাহাম;; Thanks বাপি।
আবির আহমেদ;; নে তোরা এবার নিচে চল সবাই তো অপেক্ষা করছে।
অয়ন;; হুমম চলো।

আবির আহমেদ-অয়ন-আব্রাহাম সবাই নিচে নেমে এলো। অনেক জাকজমক ভাবে আব্রাহাম দের বাড়ি টা সাজানো হয়েছে। অসাধারণ সুন্দর লাগছে। যেন কোন রাজবাড়ী। তারা নিচে নেমে এলে সবাই আব্রাহামের সাথে কথা বলছে এবং অভিনন্দন যানাচ্ছে। আব্রাহাম সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলছে। কিন্তু হঠাৎ করে কোথা থেকে এক মেয়ে দৌড়ে এসে আব্রাহামকে জড়িয়ে ধরতে চাইলে আব্রাহাম আগেই একটু সরে দাড়ায়।

সনিয়া(মেয়েটি);; Hay আব্রাহাম জান কেমন আছো। আজকে তোমাকে দেখে আর এক দফা চমক খেলাম। কেন যে বার বার তোমার প্রেমে পরি।
আব্রাহাম;; Sorry সনি এখন প্রেমে পরেও লাভ নেই বিকজ আমি অন্য কারো নামে লেখা
সনিয়া;; হ্যাঁ তা তো বুঝতেই পারছি। তোমার সাথে কতোদিন পর দেখা কিন্তু দেখ না আমার কি ফাটা কপাল দেখা তো হলো বাট তোমার বিয়ের দিন।
অয়ন;; তোকে আসতেই কে যেন বলেছিলো,, চিপকু একটা (ফিসফিস করে)
সনিয়া;; অয়ন, তুমি কি কিছু বললে
অয়ন;; আরে কয় না না আমি কি বলব (মুখে জোড় পূর্বক হাসি টেনে)
সনিয়া;; তো আব্রাহাম তোমার বউ কোথায় না মানে একটু দেখতাম আর কি। যেখানে সব মেয়ে আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরীর প্রেমে হাবুডুবু খায় আর আব্রাহাম পাত্তা পর্যন্ত দেয় না,, সেখানে এমন কোন মেয়ে আসলো যে আব্রাহাম কে পাগল বানিয়ে দিলো একটু তো দেখতে হয় তাই না (ব্যাংগ করে)
আব্রাহাম;; আরে একটু কেন পুরোপুরি দেখো। আর কথা রইলো আমার আইরাতের তাহলে সে সবার থেকে একদম আলাদা। ওর মাঝে যা আছে তা আর কারো মাঝেই নেই। আর কেউ ওর জুতোর যোগ্য ও হবে না।

আব্রাহামের কথায় অয়ন হেসে দিলো। সনিয়া রাগে ফুসছে।

ঠিক তখনই মেয়েরা আইরাত কে উপর থেকে নিচে নিয়ে আসলো। আইরাতকে সিড়ি দিয়ে নামানো হচ্ছে। আব্রাহাম পিছনে তাকালো। তাকিয়ে যেন সে ৪৪০ভোল্ট এর ঝটকা খেলো। চোখ সরানোর নাম ই নেই আব্রাহামের। Heartbeat যেন কয়েক সেকেন্ডের জন্য মিস গেলো। অপলহীন ভাবে তাকিয়ে রয়েছে আব্রাহাম। যেন তার উপর কোন জাদু করা হয়েছে।

আব্রাহাম;; এতো সুন্দর লাগছে কেন। আমি তো পাগল হয়ে যাবো। এই এক মেয়ের প্রেমে যে আর কতো শত বার পরতে হবে আমাকে। (মনে মনে)

আব্রাহাম কে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন আব্রাহামকে হালকা ধাক্কা দিলো। ধাক্কা খেয়ে আব্রাহামের হুস ফিরে আসলো।

অয়ন;; দাভাই এখন তো একটু দেখা অফ কর। নইতো ভাবিকে তোর ই নজর লেগে যাবে।
আব্রাহাম;; (অয়নের পেটে গুতো মেরে) আজকাল খুব বেশি বকিস তুই। আর আমার বউ হয় আমার নজর লাগবে না তো কার লাগবে।

এদিকে সনিয়া ও হা করে তাকিয়ে আছে। সে ভাবতেও পারে নি যে সত্যি আব্রাহামের হবুবউ এতোটা সুন্দরী হবে।

সনিয়া;; আব্রাহাম আমার ধানণা ভুল। সত্যি তোমার বউ কোন পরির থেকে কম না।
আব্রাহাম;; I know that better then you…
সনিয়া আর কিছু বলল না।

আইরাত কে নিচে নিয়ে এলে আবির আহমেদ তার দিকে এগিয়ে যায়।

আবির আহমেদ;; আমার মামনি টার ওপর যেন কারো নজর না লাগে (মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)
আইরাত জোড় করে মুখে হালকা হাসি নিয়ে এলো।
অয়ন;; ওহহ আমার পেয়ারি ভাবি,, আমার ভাইকে কি আজ মেরে ফেলার প্লেনিং করেছ।

আইরাত কিছু না বলে মাথা নিচু করে ফেলল।
আবির আহমেদ;; তুই থামবি। যা সবাইকে বসতে বল।
অয়ন;; যাচ্ছি বাপি

আইরাতকে আব্রাহামের পাশে বসিয়ে দেওয়া হয়। দুইজনকে পাশাপাশি একসাথে বসিয়ে দিয়ে আবির আহমেদ তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

আবির আহমেদ;; তোদের দুইজনকে একসাথে অনেক সুন্দর মানায়। যাকে বলে একে অন্যের জন্য তৈরি। আল্লাহ তোদের দুজনকে সবসময় সুখি রাখুক।
আব্রাহাম;; Love you বাপি
আবির আহমেদ;; Love you too বাবা।

আবির আহমেদ তাদের থেকে দূরে সরে আসলেন। এইবার আব্রাহাম আইরাতের দিকে ভালোভাবে তাকালো। আব্রাহাম কে যেন আজ তার চোখ পকল ফেলতে মানা করছে। মনের ভিতর কেমন হাতুড়ি পিটাতে শুরু করেছে তার। আব্রাহাম বাকা হাসলো। কিন্তু এতোকিছুর মাঝে আইরাত পুতুলের মতো বসে আছে। সে কোনকিছুই অনুভব করতে পারছে না। সে যেন এক কাঠের পুতুল হয়ে গেছে যার যেভাবে ইচ্ছে সে সেভাবে চালাচ্ছে। আব্রাহাম আইরাতের কানের কাছে গিয়ে হালকা করে বলে উঠলো

আব্রাহাম;; তোমাকে আমি নিষেধ করেছি না জানপাখি এভাব আমার সামনে আসবে না নিজের ওপর কোন কোট্রোল থাকে না। আমি সত্যি আর পারছি না মন চাইছে এখনই তোমাকে নিজের করে পেতে।

আইরাতের চোখ দিয়ে টুপ করে পানি গড়িয়ে গেলো যা আব্রাহামের চোখ এড়ায়নি

আব্রাহাম;; বেবি তোমাকে না মানা করেছি যে আমাদের বিয়ের দিন তোমার চোখে যেন আমি কোন পানি না দেখি তাহলে এসব কি হুমম!

আইরাত অসহায়ের মতো আব্রাহামের দিকে তাকালো। আব্রাহাম আর কিছু না বলেই আইরাতের চোখে পানি আলতো করে মুছে দিলো।

আইরাত;; আমি আর সহ্য করতে পারছি না। এসব এখন আমার সহ্যসীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। তাহলে কি শেষ রক্ষা আমার আর হবে না। তুলে দিবো নিজেকে স্বামী নামক এই মানুষ টার কাছে। কিন্তু ওনাকে আমার মনে স্বামীর জায়গা আমি কখনোই দিতে পারবো না। উনি আমার দর্বলতার সূযোগ নিয়েছেন। আমাকে Blackmail করে নিজের করে নিচ্ছেন তিনি। আমি করবো না বিয়ে। আল্লাহ সাহায্য করো আমায়। (মনে মনে)

অয়ন;; আরে কি হলো,, কাজি কে ডাকো।
আবির আহমেদ;; হ্যাঁ হ্যাঁ উনি আসছেন।

আইরাত এবার মাথা তুলে তাকালো। তার বুকের ভিতর যেন ঢাক–ঢোল সব একসাথে পিটাচ্ছে। যতো সময় যাচ্ছে তার ভয় যেন তত তাকে গ্রাস করে নিচ্ছে। তাহলে যা সে চায় না তাই কি তার সাথে হতে যাচ্ছে।

কাজি কে ডাকা হলো,, কাজি এসে আব্রাহাম আইরাতের সামনে বসলেন।
কাজি আব্রাহাম-আইরাতকে দেখেই “মাশাআল্লাহ” বলেলেন। কাজি তাদের সামনে কাবিননামা রাখলেন। আব্রাহামকে বলা হলো কবুল বলার জন্য,, আব্রাহাম এক সেকেন্ড দেরি না করে কবুল বলে ফেলল এবং কাবিননামাতে সই ও করে দিলো। এবার আইরাতের পালা। কাজিসাহেব আইরাতকে বললেন কবুল বলে সই করার জন্য। কিন্তু আইরাতের কান দিয়ে যেন কারো কোন কথা যাচ্ছে না। সে এক ধ্যানে কাবিননামার দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাতের সামনে শুধু আব্রাহামের সেই হিংস্র চেহারা বার বার আসছে। বড় কথা যাকে ভালোবাসে না তার সাথে সে একই ছাদের নিচে কিভাবে থাকবে,, কি করে কাটাবে সে তার পুরোটা জীবন। আইরাতের মনে আব্রাহাম কে নিয়ে যদি কোন অনুভূতি থেকে থাকে তা হচ্ছে শুধু ঘৃণার শুধুই ঘৃণার।
কাজি আবার ও আইরাতকে কাবিননামা তে সই করতে বললে আইরাত এবার একেবারে বসা থেকে উঠে পরে। সবাই অবাক চোখে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম কিছুটা সন্দেহ এর চোখে আইরাতের দিকে তাকালো। আইরাত এবার চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে হাতে কাবিননামা নিয়ে একটানে ছিড়ে ফেলে। সবাই আইরাতের এমন কান্ডে অবাকের শেষ পর্যায়।
আইরাত ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করে উঠলো। আব্রাহাম রাগে দাত কটমট করেছে। চোখ মূহুর্তের মধ্যেই রক্তবর্ণ ধারণ করেছে তার।

আর কাউকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আব্রাহাম উঠে আইরাতের হাত ধরে টেনে অন্য এক রুমে নিয়ে গেলো। আইরাত হাত ছাড়ানোর অনেক চেষ্টা করছে আর কান্না করছে কিন্তু এসব এর কিছুই আব্রাহাম তোয়াক্কা না করে আইরাত কে রুমে টেনে নিয়ে গিয়ে সোজরে দরজা লাগিয়ে দিলো।

ঠাসসসস করে আব্রাহাম আইরাতের গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলো। আইরাত সোজা গিয়ে নিচে পরলো। থাপ্পর টা এতোই জোরে লেগেছে যে আইরাত গালে হাত দিয়ে এবার জোরে শব্দ করে কান্না করে দিল। আব্রাহাম আইরাতের চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলল। আব্রাহাম আইরাতের মুখের কাছে মুখ নিয়ে বলল

আব্রাহাম;; না করেছিলাম,, না করেছিলাম না আমি তোকে যে বিয়েতে সবার সামনে যেন কোনপ্রকার কোন তামাশা না করতে। শুনিস নি তুই শুনিস নি। কেন এমন করলি বল। তুই কি ভেবেছিস যে তুই এই সব করে আমার থেকে পার পেয়ে যাবি, না কখনোই তা হবে না। তুই আমার হবি না, কিন্তু আমি তোকে জোর করে নিজের বানিয়ে নিবো। তুই আমার,, তা তুই চাইলেও আর না চাইলেও। তোকে যে কোন মূল্যে আমার হতে হবে বুঝতে পেরেছিস তুই (জোরে চিল্লিয়ে)

আইরাত;; আহহহ, প্লিপ্লিজ ছাড়ুন আআমায়। আমার খুখুব লালালাগছে। প্লিজ ছাড়ুন আমাকে
আব্রাহাম;; তা আর হচ্ছে না Baby girl….
দেখো তো এটা কে চিনো কিনা

আব্রাহাম আইরাতের সামনে ফোন ধরলো ,, তারপর একটা ভিডিও অন করলো। আইরাত কান্না করতে করতে চোখ নাক মুখ সব ফুলিয়ে ফেলেছে। ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে অন্ধকার এক রুমে চেয়ারের সাথে কাউকে শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে। আইরাত ভিডিও এর দিকে তাকালো। হঠাৎ করেই সেই অন্ধকার রুমে হাল্কা আবছা আলো এলো। ভিডিও তে একটা ছোট বচ্চা কে এবং একজন মহিলাকে বেধে রাখা হয়েছে। কিন্তু মুখ পরিস্কার করে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু দুম করে ওপর থেকে আলো এসে বাচ্চাটির এবং সেই মহিলার মুখে পরলো। সাথে সাথে আইরাত চিল্লিয়ে উঠলো….

আইরাত;; আয়ুশশশশশশশশ,, আম্মুউউউউউউউ
আব্রাহাম;; হ্যাঁ ঠিক ধরেছো আমার শালাবাবু এবং আমার শাশুড়ি মা
আইরাত;; আয়ুশ আর আম্মু এএএএই অবস্থায় এখানে কেন, কিভাবে এলো এখানে?
আব্রাহাম;; কিভাবে আর আনবে আমি তুলে এনেছি
আইরাত;; কিকিকিন্তু কেন,,ওরা কি ক্ষতি করেছে আপনার
আব্রাহাম;; ক্ষতি তো করেনি। কিন্তু তোমার জন্যই ওদেরকে তুলে আনা হয়েছে।

আইরাত রাগি+কান্নারত চোখে আব্রাহামের দিকে তাকালো।

আব্রাহাম;; দেখো Baby girl,, তোমার ভাই-আম্মু মানে আমার ও ভাই-মা,, তাই আমি চাইলেও ওদের কোন ক্ষতি করতে পারবো না। কিন্তু তুমি যদি আমাকে বাধ্য করো তাহলে আমি অনেক কিছুই করতে পারি। তাই চুপচাপ বিয়ে টা করে নাও নইতো তোমার প্রানপ্রিয় ভাই আর মা পরের দিনের ভোরের আলো দেখতে পারবে না,, বুঝতে পেরেছো জানপাখি।

আইরাতের দুনিয়া অন্ধকার হয়ে এলো। সে যা শুনলো তা কি ঠিক। এখন আইরাত যে একদম পাথর হয়ে গেলো। আইরাত তার সামনে আর কোন পথই যে খুজে পাচ্ছে না। আইরাতের হাত পা সব কাপছে থর থর করে।

আইরাত;; আআআপনি আপনি পশুর থেকেও নিকৃষ্ট। মানুষ কতোটা নিচে নামতে পারে তা আপনাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। আপনি আমাকে পেতে পারেন জোর করে কিন্তু আমার ভালোবাসা আর আমার মনে জায়গা করে নিতে আপনি কখনোই পারবেন না, কখনোই না। I hate you i just hate you সবথেকে বেশি ঘৃণা করি আমি আপনাকে।

আব্রাহাম;; সমস্যা নেই তোমার এই ঘৃণা কে আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে আগলে নিব। এবার বাইরে গিয়ে চুপচাপ কোন রঙ ঢং না করে বিয়ে করে নাও আমাকে নইতো…………….

এই বলে বাকা হাসি দিয়ে আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে বাইরে নিয়ে এলো।
বাইরে এসে দেখে সবাই কানাঘুসা শুরু করে দিয়েছে। তা দেখে আব্রাহাম বলে উঠলো

আব্রাহাম;; Silence everyone,,,
সবাই চুপ হয়ে গেলো।
আব্রাহাম;; আসলে আমার একমাত্র বউ আইরাতের একটা রোগ রয়েছে। আর তা হলো কাগজ ছেড়া। মানে যখন ওর রাগ উঠে যায় তখন তার সামনে কি কাগজ রয়েছে আদৌ তা গুরুত্বপূর্ণ কিনা তা সে খেয়াল করে না শুধু ছিড়ে ফেলে।

আইরাত যেন আব্রাহামের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো। মানে কি বলছে ও। শেষে কিনা আব্রাহাম সকলের সামনে তাকে পাগলের উপাধি দিলো।

আব্রাহাম;; এতো অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আমার বউ যেমন ই হোক আমার। একটা কাবিননামা ছিড়েছে আরো হাজারটা কাবিননামা আনবো আমি। বাপি, কাবিননামার ব্যবস্থা করো তাড়াতাড়ি

আবির আহমেদের কেমন যেন সবকিছু ঘোলাটে লাগলো। কিন্তু তবুও তিনি হেসে বললেন…

আবির আহমেদ;; হ্যাঁ আনছি

কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবার এক কাবিননামা আনা হলো। আব্রাহাম তিনবার কবুল বলে সই করে দিলো।
কাজিসাহেব আইরাত কে কবুল বলতে বলল,, কিন্তু তখন আবির আহমেদ আইরাতের কাছে গেলেন এবং আইরাতের মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিয়ে আইরাত কে জিগ্যেস করল…

আবির আহমেদ;; আইরাত মা আমার
আইরাত মাথা তুলে তার বাপির দিকে তাকালো
আবির আহমেদ;; মামনি, তুই এই বিয়ে তে রাজি তো? মানে তুই খুশি আছিসতো। আজ তোর বাবা এখানে থাকলে তোকে হয়তো এই একই প্রশ্ন করতো। আমি তো তোর বাবাই তাই আমি ই জিগ্যেস করলাম। মামনি তুই এই বিয়েতে খুশি তো?!

আইরাতের চোখের পানি যেন আর কোন বাধ মানছে না। আইরাতের চিল্লিয়ে তার বাপি কে বলতে ইচ্ছে করছে যে “না বাপি না রাজি নই,, এই বিয়ে তে খুশি নই আমি। নিজের ওপর জোর করে, নিজের বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে এই বিয়ে তে হ্যাঁ বলতে হয়েছে। নিজের পরিবারের ভয়েতে তাকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছে আজ”। কিন্তু না আইরাত তা পারবে না এক অজানা শিকলে আটকা পরে গেছে আইরাত।

আইরাত অগচোরে তার বাপির কাছ থেকে চোখের পানি মুছে ফেলল। এবং মুখে কৃত্রিম হাসি হেসে আইরাত তার বাপি কে বলল……

আইরাত;; না বাপি আমি এই বিয়ে তে অনেক খুশি,, রাজি আমি এই বিয়েতে। আমি আমার মতে এই বিয়ে করছি। অনেক খুশি আমি।

আব্রাহাম আইরাতের কথা শুনে বাকা হাসি হাসলো।এক প্রশান্তির হাসি হাসলো আব্রাহাম।

আবির আহমেদ মুচকি হেসে আইরাতের কপালে চুমু একেঁ দিয়ে সরে দাড়ালেন।

এরপর আইরাত ইসলাম এবং আইনের বিধান অনুযায়ী তিনবার কবুল বলে কাবিননামাতে সই করে সম্পূর্ণ রুপে আব্রাহামের হয়ে গেলো।
..
..
..
..
..
..
..
..
🤎🤎চলবে~~~~~

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#Part__ 19

🤎🦋
..
..
..
..
..
এরপর আইরাত ইসলাম এবং আইনের বিধান অনুযায়ী তিনবার কবুল বলে কাবিননামাতে সই করে সম্পূর্ণরুপে আব্রাহামের হয়ে গেলো।

আব্রাহামের খুশির যেন আজ সীমা নেই। আইরাতকে সে আজ তার আপন করে পেয়েছে। নিজের অধাংগীনি। আইরাতের ওপর এখন তার, কেবল তারই অধিকার। আইরাত আর তার কাছ থেকে কোথাও পালাতে পারবে না। কিন্তু একদিকে যেমন আব্রাহামের খুশির কোন কুল কিনারা নেই অন্যদিকে ঠিক তেমনই আইরাতের কষ্টের কোন সীমা নেই। সে এতোদিন বলির পাঠা ছিলো কিন্তু আজ সে কুরবানিও হয়ে গেছে। ভীষণভাবে বাবা-মার কথা মনে পরছে আইরাতের। ভয়ে যেন তার অন্তর আত্না এখনো কাপছে। আব্রাহাম তার আম্মু আর ভাই এর কোন ক্ষতি করে দিল না তো। ওদের কিছু হয়ে গেলে আইরাত নিজেকে শেষ করে দিবে। এইসব ভাবনাতেই মগ্ন রয়েছে আইরাত। ঠিক সেই সময়ই কাজিসাহেব বলে উঠলেন…

কাজি;; আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। আজ থেকে আপনারা স্বামী-স্ত্রী। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের জুটিকে সর্বদা খুশি রাখুক।

আব্রাহাম আইরাত এসে তাদের বাপি আবির আহমেদ কে সালাম করলো। আবির আহমেদ আইরাত কে জড়িয়ে ধরলেন। আইরাত এবার আর নিজেকে আটকাতে পারলো না কান্না করে দিলো।

আবির আহমেদ;; কাদিস না মা। আজ থেকে তোর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো।

আইরাত তার বাপি কে ছেড়ে দিয়ে দাড়ালো। তারপর ধীরে ধীরে বিয়ের কার্য শেষ হলো। সবাই একে একে চলে যেতে লাগলো। বাসায় থেকে গেলো শুধু আব্রাহামের কিছু বন্ধু বান্ধব। মেয়েরা এসে আইরাত কে নিয়ে গেলো। আইরাতকে অন্য একটা রুমে বসিয়ে দিয়ে তারা চলে গেলো বাসর ঘর সাজাতে। সবাই ছাদে বসে আছে কিন্তু আব্রাহাম তার ফোনে আইরাতের ছবি দেখছে।

অয়ন;; দাভাই বিয়ে তো করেই নিয়েছিস। এখন আর ভাবির ছবি দেখে কি করছিস বল তো।
আব্রাহাম;; আমার জানপাখি কে হাজার যনম দেখলেও আমার মন ভরবে না।

ঠিক তখন ছাদে আবির আহমেদ এলো। তাকে দেখে কিছু টা গম্ভীর লাগছে। আবির আহমেদ বলে উঠলেন…

আবির আহমেদ;; আব্রাহাম..
আব্রাহাম;; আরে বাপি এসো এসো।
আবির আহমেদ;; আব্রাহাম আমি তোমার সাথে কিছু জরুরি কথা বলতে চাই। আমার রুমে এসো।
আব্রাহাম;; ঠিক আছে বাপি

আব্রাহাম তার বাপির দিকে কিছুটা অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। কেননা তিনি কখনোই আব্রাহাম কে তার নাম ধরে ডাকেন না,, যখন কিছু সিরিয়াস বিষয় থাকে একমাত্র তখনই তিনি আব্রাহাম কে তার নাম ধরে ডাকেন।

আব্রাহাম সেখান থেকে উঠে এসে তার বাপির ঘরে চলে গেলো। আব্রাহাম গিয়ে দেখলো তার বাপি দাঁড়িয়ে রয়েছে।

আব্রাহাম;; বাপি কিছু বলবে
আবির আহমেদ;; হ্যাঁ বলবো।
আব্রাহাম;; হুমম বলো
আবির আহমেদ;; আমি এতো দিন তোমাকে কিছু বলিনি,, ভেবেছিলাম তুমি হয়তো সময় বুঝে একদিন ঠিক ই আমাকে বলবে কিন্তু তুমি তা বলো নি। আর আজকে আমি না বলে আর থাকতে পারলাম না।
আব্রাহাম;; বাপি তুমি কি বলতে চাচ্ছো?
আবির আহমেদ;; তুমি কেন আমার কাছ থেকে সত্যি টা লুকালে আব্রাহাম?
আব্রাহাম;; কোন সত্যি বাপি!
আবির আহমেদ;; আইরাতের সত্যি।
আব্রাহাম;; বাপি
আবির আহমেদ;; আইরাত যে কন এতিমখানাতে বড়ো হয় নি তা আমি জানি। ইভেন এটাও জানি যে আইরাতের আসল পরিচয় কি

আবির আহমেদ এর কথা শুনে আব্রাহাম বেশ অবাক হলো

আব্রাহাম;; বাপি তুমি।
আবির আহমেদ;; নুজাইফা বিনতে আইরাত আর কারো না বরং আমার ই ছোট ভাই এর মেয়ে তাই তো
আব্রাহাম;;…………………….
আবির আহমেদ;; তুমি যখন আইরাত কে প্রথম এই বাড়িতে নিয়ে আসো আমি সেইদিন ই আইরাত কে চিনে ফেলি। আইরাত কে আমি ছোট বেলা থেকে দেখেছি আব্রাহাম আমার মামনি কে আমি কখনোই চিনতে ভুল করবো না। কিন্তু আরো একটু সিওর হওয়ার জন্য আমি যখন আইরাত কে জিগ্যেস করি যে তোমার বাবা-মা আছে কি তখন আইরাত হ্যাঁ বলে। আইরাত বলে তার বাবার নাম আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী এবং মার নাম আতিয়া আহমেদ চৌধুরী । বেস আমার সন্দেহ দূর হয়েছে। তুমি কেন আমায় আগে বলোনি?

আব্রাহাম;; বাপি তেমন না আমি তোমাকে সব কিছু বলে বুঝাতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার কিছুটা সময় এর
প্রোয়জন ছিলো।
আবির আহমেদ;; আব্রাহাম আমি কিছু বুঝতে পারছি না, তুমি কেন আইরাত কে বিয়ে করলে। তার ওপর আইরাতের বাড়ির কাউকে খবর না দিয়েই।
আব্রাহাম;; বাপি ভালোবাসি আমি আইরাত কে। বাচতে পারবো না ওকে ছাড়া, ও কার মেয়ে কি করে তাতে আমার বিন্দু পরিমাণ কিছু যায় আসে না আমি আইরাত কে ভালোবাসি আর ওকে আমার সারাজীবন এর জন্য চাই বেস আমি আর কিছু জানি না। আর তোমার কি মনে হয় আইরাতের বাড়ির কাউকে খবর দিলে ওরা আইরাত কে আমার কাছে বিয়ে দিতো তাতে আমার যতই নাম-খ্যাতি, অঢেল সম্পত্তি থাকুক না কেন। আমি জানি আইরাতের বাবা আমাদের জানে মারতে চেয়েছে আমি তার প্রতিশোধ ও নিব বলেছিলাম। কিন্তু বাপি বিশ্বাস করো আমি প্রতিশোধের তাড়নায় আইরাত কে বিয়ে করি নি। আমি ভালোবাসি ওকে,, i need her……

আবির আহমেদ আব্রাহামের দিকে এগিয়ে এলেন এবং তার গালে হাত রেখে বলতে লাগলেন……..

আবির আহমেদ;; আব্রাহাম, আমি আমার ছেলের ওপর সব থেকে বেশি বিশ্বাস করি। এবং আমি জানি যে আমার ছেলে কখনো কোন ভুল কাজ করতেই পারে না। আইরাত আমার পুত্রবধূ না, আমার মেয়ে।
আব্রাহাম;; অনেক বেশি ভালোবাসি বাপি ওকে আমি। কবে যে এতো করে ভালোবেসে ফেললাম আমি আইরাত কে জানি না। কিন্তু আমি এইটুকু জানি যে ওকে না পেলে আমি মরেই যাবো। (তার বাপি কে জড়িয়ে ধরে)
আবির আহমেদ;; হাহাহা পাগল ছেলে আমার,, নে এবার তো ঘরে যা মেয়েটা তোর জন্য অপেক্ষা করছে হয়তো।

আইরাত কে মেয়েরা বাসর ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রেখে এলো।

আইরাত বিছানার ওপর পুতুলের মতো করে বসে আছে। তার মাথায় শুধু মাত্র তার আম্মু আর ভাই এর কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। নিরবে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে। আব্রাহাম তার বাপির ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। সে তার ঘরে ঢুকতে যাবে সাথে সাথে অয়ন এবং আব্রাহামের কিছু বন্ধু তার পথ আগলে দাঁড়ালো।

অয়ন;; আ আ দাড়া দাভাই দাড়া, এতো তাড়া কিসের?
আব্রাহাম;; কি হচ্ছে এসব
অয়ন;; না মানে কিছু তো হয় নি
আব্রাহাম;; তাহলে রাস্তা থেকে সরে দাড়া, ভিতরে যেতে দে আমায়
অয়ন;; আরে ভাই দাড়া, আগে আমাদের পাওনা টা তো দিয়ে যা
আব্রাহাম;; পাওনা মানে কিসের পাওনা?
অয়ন;; ভিতরে বউ এর কাছে যাওয়ার আগে আমাদের পাওনা দিয়ে যা ৩০ হাজার, তারপর বউ এর কাছে যা
আব্রাহাম;; কিইইই, এখন নিজের বউ এর কাছে যাওয়ার আগে তোদের টাকা দিতে হবে,।
অয়ন;; আজ্ঞে হ্যাঁ
আব্রাহাম;; কি আজব
অয়ন;; কোন আজব টাজব না টাকা দাও টাকা দাও
আব্রাহাম;; বাপি তুমি কিছু বলছো না ওদের
আবির আহমেদ;; আমার বলার কিছুই নেই,, তোর ভাই যে কি পরিমান তেড়া তা তুই জানিস সো বলেও লাভ নেই
অয়ন;; দেখলি ভাই, বাপি ও বলছে দিয়ে দিতে দে দে এখন তাড়াতাড়ি টাকা বের কর আর বউ এর কাছে যা
আব্রাহাম;; আজ আর তোকে কিছু বললাম না, পরে দেখে নিবো
অয়ন;; 😁😁

আব্রাহাম বিরক্তি নিয়ে অয়ন এবং তার বন্ধু দের ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দিলো।
অবশেষে আব্রাহাম তার ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলো। ঘরে কারো আসার আওয়াজ পেয়ে আইরাত আরো গুটিসুটি মেরে বসলো। আজ ঘরটা একদম আব্রাহামের মনের মতো করে সাজানো হয়েছে। ডার্ক রেড রোজ এবং বেলীফুলের সুগন্ধে মাতোয়ারা হয়ে রয়েছে পুরো ঘর। ঘরের মধ্যে একহাত লম্বা ঘোমটা টেনে বসে রয়েছে আইরাত। আব্রাহামের মন যেন জুড়িয়ে যাচ্ছে আইরাত কে দেখে। আব্রাহাম আইরাতের সামনে বসে পড়লো। আইরাতের ঘোমটা সরিয়ে দিলো। আইরাতের চেহারা দেখে আব্রাহামের বুকের ভিতরে কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠলো। কান্না করতে করতে নাজেহাল অবস্থা করে ফেলেছে নিজের। আব্রাহাম আলতো করে ফু দিয়ে আইরাতের সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিলো। আইরাত কেপে উঠলো। আব্রাহাম খেয়াল করলো আইরাতের ঠোঁটজোড়া কাপছে। আব্রাহামের কেমন নেশা হতে লাগলো। সে ক্রমাগত আইরাতের ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। আইরাত সহ্য করতে না পেরে আব্রাহাম কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে বিছানার নিচে নেমে পড়লো। আইরাতের এমন কান্ডে আব্রাহাম রাগ করতে চেয়েও পেলো না। কেননা আব্রাহাম বুঝতে পারছে যে আইরাতের ওপর দিয়ে যা গিয়েছে তা সত্যিই কষ্টদায়ক। আব্রাহাম উঠে দাঁড়িয়ে গেলো।

আব্রাহাম;; আইর….
আইরাত;; একদম না, একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না আপনি। আপনি একজন খুনি, কিডনেপার আপনি। অনেক সহ্য কিরেছি আমি কিন্তু আর না। বাধ্য হয়েছি আপনাকে বিয়ে করতে কিন্তু তাতে যদি আপনি ভেবে থাকেন যে আপনাকে আমি মেনে নিয়েছি তাহলে আপনি ভুল।
আব্রাহাম;; জানপাখি তুমি আমাকে ভুল বুঝ না আমি…
আইরাত;; আপনি, আপনি আমার মা ভাইকে আটকে রেখেছেন
আব্রাহাম;; না বেবি তারা এখন আর আটক নেই। তাদেরকে সাবধানে আমার লোকেরা বাসায় দিয়ে এসেছে। They ar now totally safe & sound
আইরাত;; কিন্তু আপনি কি করেছেন, আপনি আমাকে Blackmail করেছেন। আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়েছেন আপনি।
আব্রাহাম;; না জানপাখি, ভালোবাসি আমি তোমায় (এই কথা বলে আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো)
আইরাত;; Stop right there…. (এই বলে আইরাত তার পাশে থাকা কাচের বোতল নিয়ে টেবিলের ওপর বারি দিল। তাতে অর্ধেক বোতল ভেংে গেলো)
একদম কাছে এগোবেন না আমার নয়তো,, নয়তো আমি উলটা পালটা কিছু একটা করে ফেলবো বলে দিচ্ছি (ভাংা কাচের বোতল আব্রাহামের দিকে তাক করে)
আব্রাহাম;; আআআইরাত Baby girl প্লিপ্লিজ প্লিজ কাচের বোতলটা হাত থেকে ফেলে দাও, লেগে যাবে তোমার হাতে। ব্যাথা পাবে তুমি। হাত থেকে রেখে দাও বেবি (ভয় পেয়ে)
আইরাত;; না, রাখবো না আমি। আপনি আর একবিন্দু ও আমার কাছে আসবেন না নয়তো আমি নিজেকে শেষ করে দিবো বলে দিচ্ছি
আব্রাহাম; নননা না আইরাত প্লিজ এমন করো না, তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না জানপাখি। প্লিজ ফেলে দাও ওটা।

আইরাত এখনও সেই কাচের বোতল আব্রাহামের দিকে তাক করে রেখেছে। আব্রাহাম শুধু ভয় পাচ্ছে যে আইরাত পাগলামি তে নিজের যেন কোন ক্ষতি করে না বসে। আব্রাহামের ভয় এই একটাই। কিন্তু হঠাৎ করে আব্রাহাম আইরাতের ভাই এর কথা তুললো

আব্রাহাম;; আচ্ছা ঠিক আছে যাও আমি যাবো না তোমার কাছে। কিন্তু আমাকে একটা কথা বলো তো জানপাখি।
আইরাত;;……………………………….
আব্রাহাম;; আয়ুশ মানে তোমার ভাই কোন স্কুলে যেন পরে
আইরাত;;……………………………….
আব্রাহাম;; আরে বলো বলো।
আইরাত;; আইডিয়াল স্কুল & কলেজ। কিন্তু কেন
আব্রাহাম;; কিন্তু আমি যখন আজকে ওকে আনতে গিয়েছিলাম তখন তো ও এক অন্য স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল
আইরাত;; অন্য স্কুল মানে। আয়ুশ অন্য স্কুলের সামনে কি করছিলো
আব্রাহাম;; তা তো তোমার ভাই ই যানে

আইরাত কিছুটা চিন্তিত হয়ে অন্যমনস্ক হয়ে গেলো এবং হাতে থাকা কাচের বোতল টাও হাল্কা হয়ে গেলো। আব্রাহাম তা খেয়াল করে এক ঝটকায় আইরাতকে পেছন থেকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আইরাতের হাত থেকে খুব সাবধানে কাচের বোতল টা কেড়ে নিলো আব্রাহাম এবং দূরে ছুড়ে ফেলে দিলো। আইরাতকে বিছানার ওপর এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।

আব্রাহাম;; খুব বেশি সাহস হয়ে গিয়েছে তাই না। এখন যদি কোন ভাবে হাতের ভিতর কাচ লেগে যেত তাহলে কষ্ট টা কার হতো শুনি। Listen baby girl একটা কথা তুমি তোমার মাথায় ভালোভাবে ঢুকিয়ে নাও যে আমি আব্রাহাম বেচে থাকতে তুমি এই যনমে আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না। তুমি আমার নামে লেখা আর এখন তো তোমার ওপর আমার পুরো অধিকার ও আছে। আর জানপাখি আজ আমাদের বাসর রাত,, আমি কোন ভাবেই এই রাত টাকে নষ্ট করতে চাই না।

আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর আইরাত শুধু পিছিয়ে যাচ্ছে। আব্রাহাম আইরাতের আরো কাছে এসে পরলে আইরাত বিছানার ওপর দাঁড়িয়ে পরে।

আইরাত;; একবার বললে শুনতে পান না আপনি। আমি না করেছি আপনাকে আমার কাছে একদম আসবেন না৷ ছুবেন না আমায় আপনি। বিয়ে করেছেন ঠিক আছে কিন্তু আমার ওপর বউ এর অধিকার কখনোই ফেলাতে আসবেন না আপনি,, কখনোই না।
আব্রাহাম;; দেখো জনপাখি আজ আমাদের বাসর রাত। আর আমি এতো টাও ভালো না যে তুমি আমাকে কাছে আসতে না করলে আর আমি আসবো না। নিজের অধিকার টা আমি খুব ভালো করেই আদায় করতে নিতে জানি। Come on baby girl,, কাছে আসো অযথা আমার মুডের বারো টা বাজিয়ো না তো।

আইরাত;; নাহ,, আসবো না। আপনি আমার শরীর পেতে পারেন কিন্তু ভালোবাসা কখনোই পাবেন না। (আরো কিছুটা দূরে গিয়ে)

এবার আব্রাহামের রাগ উঠে গেলো। অনেক চেষ্টা করেছে সে রাগ না করার, নিজের রাগকে সামলে নেয়ার কিন্তু এখন তার ধৈর্য ভেংে গেছে। আব্রাহাম আইরাতের কাছে গিয়ে আচকমা আইরাতের হাত ধরে টান দেয়,, আইরাত সোজা একদম আব্রাহামের বুকে এসে পরে। আইরাত অনেক ছুটাছুটি করছে আব্রাহামের কাছ থেকে দূরে সরার কিন্তু পারছে না।

আব্রাহাম;; Baby girl এখন তোমার শরীর পেলেই হবে। আর এতো ছটফট করো না তো এনার্জি নষ্ট হবে তখন রোমেন্স করবে কিভাবে হুমমম?!

আইরাত ফাটা চোখে আব্রাহামের দিকে তাকালো। আব্রাহাম আর এক মূহুর্ত দেরি না করে আইরাতের ঠোঁট জোড়া আকড়ে নিলো। পাগলের মতো করে চুমু দিতে লাগলো। আইরাত তার দুহাত দিয়ে আব্রাহামের বুকে ধাক্কাচ্ছে সরানোর জন্য কিন্তু আব্রাহামের সাথে সে পেরে উঠবে না। আব্রাহাম আইরাত এর গলায় মুখ ডুবালো। আইরাতের শরীর যেন হীম হয়ে আসতে লাগলো। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না তার। এক আলাদা অনূভুতি কাজ করছে নিজের মাঝে। কিন্তু তবুও আইরাত ছাড়া পাওয়ার জন্য প্রানপ্রনে চেষ্টা করছে। আব্রাহাম আইরাতের সব গহনা খুলে ফেলল। এক টানে লেহেংার পিছনের ফিতা খুলে দিলো। আইরাত পারছে না এসব সহ্য করতে,, নোনাজলের ধারা বয়ে যেতে লাগলো চোখ দিয়ে। কিন্তু আব্রাহামের আজ অন্য কোথাও হুশ-খেয়াল নেই। সে আজ আইরাতে মগ্ন। আইরাতের নেশাতে আবধ্য সে। এই নেশা যেন কেটে ওঠার নয়। আব্রাহাম তার কাজ চালিয়েই যাচ্ছে,, পিছপা হলো না সে তার কাজ থেকে।

এক সময় আইরাত ঘুমিয়ে গেলো। আব্রাহাম ও তার পাশে সুয়ে পড়লো। আইরাত ঘুমে কাতর। আব্রাহাম মায়াভরা চোখে ঘুমন্ত আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে।

আব্রাহাম;; Sorry baby really very sorry… আমি তোমার অমতে তোমাকে নিজের করে নিতে চাইনি কিন্তু কি করবো বল তোমাকে হারানোর ভয়ে সব সময় ভীত থাকি আমি। এই ভয় সবসময় পিছু করে বেড়ায় আমাকে। তুমি যদি আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাও। কেন জানি না মাথায় এই চিন্তা টা বার বার আসে। আমি চাইনা, আমি চাইনা তোমাকে হারাতে জানপাখি তাই তোমাকে নিজের করে নিলাম। এখন তোমাকে হারানোর চিন্তা অনেক টাই কমে গেছে আমার। ভালোবাসি জান ভালোবাসি অনেক বেশি। আইরাতের কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে আব্রাহাম উঠে করিডরে চলে এলো। ঘরে আর আসেনি সে কাল রাতে।বাকি রাত টুকু সে সেখানেই কাটিয়ে দিলো।















পরেরদিন সকালে🌄🌅,,,,,,,,,,,

আইরাতের ধীরে ধীরে চোখ খুলে এলো, নড়েচড়ে উঠলো সে। পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ ই নেই। আইরাত নিজের দিকে তাকালো সাথে সাথে তার কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেলো। রাগে-লজ্জায় আইরাতের মাথা কাটা যাচ্ছে। আইরাত উঠে বসতে চাইলো কিন্তু পারলো না। ব্যাথায় কুকড়ে উঠলো সে। কান্না আসছে আইরাতের খুব। তবুও খুব কষ্টে আইরাত উঠে গিয়ে নিজেকে কোন রকমে ঢেকে নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো। ওয়াসরুমে গিয়ে সাওয়ার ছেড়ে দিয়ে অঝোড়ে কাদতে লাগলো সে। আব্রাহাম দেখল সকাল হয়ে গেছে। আইরাতের কথা মাথায় আসতেই সে দ্রুত তার ঘরে চলে গেলো। ঘরে গিয়ে আব্রাহাম দেখল বিছানা খালি কেউ নেই। আব্রাহাম বিছানার দিকে এগিয়ে গেলো। আইরাত কে খুজতে লাগলো। ঠিক সেই সময় ওয়াসরুম থেকে কান্নার শব্দ ভেসে এলো। আব্রাহাম গিয়ে দেখলো দরজা লাগানো না ভালোভাবে,, তাই আব্রাহাম দরজা খুলে ভিতরে চলে গেলো। আব্রাহাম ভিতরে গিয়ে দেখলো আইরাত সাওয়ার ছেড়ে দিয়ে তার নিচে বসে ঢুকরে কান্না করছে। আব্রাহামের খুব মায়া হতে লাগলো দেখে। আব্রাহাম আর না দাঁড়িয়ে থেকে আইরাতের কাছে চলে গেলো। আইরাত আব্রাহাম কে দেখে অবাক হয়ে গেলো। আব্রাহাম আইরাতকে কোলে করে নিচ থেকে তুলে নিল। কিছুক্ষন পর আইরাত কে ফ্লোরে দাঁড় করিয়ে দিলো আব্রাহাম। আইরাত পরে যেতে নিলে আব্রাহাম আইরাতের কোমড় ঝাপটে ধরে। আইরাত না চাওয়া সর্তেও আব্রাহামের কাধে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আইরাত এমনিতেই দুধ এর মতো ফর্সা তার মধ্যে ওপর থেকে ঠান্ডা পানি অনেকক্ষন যাবত গায়ে পরার কারণে শরীর আরো সাদা হয়ে গেছে। আব্রাহামের সাদা শার্ট ভিজে শরীরের সাথে লেগে গেছে। গায়ের সিরা সিরা সুস্পষ্ট ভাবে ফুটে ওঠেছে।ফিট বডিতে তে ভিজা সাদা শার্ট যেন অপরুপ মানিয়েছে। কেউ ই কোন কথা বলছে না। আব্রাহাম আইরাতের কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত দিয়ে তার কোমড় জড়িয়ে ধরে সাওয়ার এর নিচে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আব্রাহামের চোখ হঠাৎ গিয়ে ঠেকলো আইরাতের গলাতে। সাদা গায়ে দুটো কালো তিল যেন ফুটে ওঠেছে। আব্রাহাম নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না। আব্রাহাম আইরাতকে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে মুখ ডুবালো তার গলাতে। আইরাত সিওরে উঠলো। আব্রাহাম বলে উঠলো….

আব্রাহাম;; আজ থেকে, এখন থেকেই অভ্যাস করে নাও জান। প্রতিদিন এভাবেই ফ্রেশ হতে হবে তোমাকে। আমাকে ছাড়া ফ্রেশ হওয়া একদম যাবে না বুঝেলে। হলেও আবার তুলে এনে জোড় করে করাবো।

এভাবেই দুজন একসাথে বেশকিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এলো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
🍂🧡চলবে~~~~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে