♥ Love At 1st Sight ♥ Season 3 Part – 1

1
13636

 Love At 1st Sight 
~~~Season 3~~~

Part – 1

writer-Jubaida Sobti

বারান্দার রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা… সন্ধে নেমে সূর্য ডুবে যাচ্ছে, আকাশটা লালছে রঙ ধরেছে, দক্ষিণা বাতাস বয়ে আসছে কাছে…গায়ে মোড়ানো সাদা ওড়নাটা ও উড়ছে, চুল গুলো ও আর থেমে নয়..
চোখের জলে চশমার গ্লাসটা ঝাপসা হয়ে এসেছে, দু-ফুটো জল গড়িয়ে পড়লো চোখ বেয়ে,

হঠাৎ পেছন থেকে টুকটাক শব্দ ভেসে এলো রুমে কেউ ঢুকেছে,

মা : স্নেহা!

স্নেহা : [তাড়াতাড়ি চোখ মুছে চশমাটা পড়ে নিলো ঠিক করে ] হ্যা মা বলো!

মা : এখনো প্যাকিং করিসনি আমাদের রাতের মধ্যেই বেরিয়ে যেতে হবে,তুই জানিস না!

স্নেহা : হ্যা করছি!

মা : [স্নেহার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেই] দেখ স্নেহা! আমি জানি তুই শহরের একটা ভালো ভার্সেটিতে পড়তে চাস! কিন্তু এই জন্য তো অনেক টাকার ও দরকার তাই না! তোর বাবার চাকরীর টাকায় সংসারটা কোনোভাবে চলতো,এখন আর চাকরীটাও নেই! তুই ডান্স ক্লাস নিয়ে যা টাকা পাস ঐ গুলাতে তোর আর রাশুর পড়ার খরচ,

স্নেহা : কিন্তু মা! আমার রেজাল্ট কলেজে ফার্স্ট এসেছে, এই কাগজে দেখো ৫০% স্কলারশিপ দিয়ে ও ভর্তি নিচ্ছে,

মা : স্নেহা! তোকে তো আমি বুঝিয়েছি!
দেখ! আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে যে শহরের বাড়ী ভাড়া দিয়ে থাকার সামর্থ্য টাও হারিয়ে ফেলেছি!

এবার আর কথা না বাড়িয়ে গ্রামে চল! ঐখানের বাচ্চাদের ছোটখাটো টিউশন দিয়ে…

স্নেহা : ব্যাস মা!? আমি পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট এনেছি ছোটখাটো টিউশন দেওয়ার জন্য নয়!

[ মা স্নেহার দিক কিছুক্ষণ চেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ]

কি আর করার সবার সপ্ন কি আর পূরণ হয়! নিশ্চয় এর চেয়ে ভালো কিছু রেখেছে আল্লাহ এই ভেবে স্নেহা ব্যাগ গুছিয়ে ড্রইং রুমে আসে,

বাবা সোফায় বসে আছে, চাকরীটা যাওয়ার পর থেকে খুব চিন্তিতো ও দেখাচ্ছে,কিছু বলবে বাবাকে সেই সাহস ও নেই!
জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে নিলো, বাবার সামনে এগিয়ে দেই গ্লাসটি!

বাবা : আরে স্নেহা! এদিকে বয় তোর সাথে কথা ছিলো! [ বাবার পাশে বসলো স্নেহা ] ব্যাগ গুছিয়েছিস তো?

স্নেহা : জি! বাবা..

বাবা : এই নে ধর এটা [একটা প্যাকেট এগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : এটা কি?

বাবা : খুলে দেখ!

স্নেহা : [প্যাকেট খুলতেই দেখে নতুন চশমার ফ্রেম ] বাবা! কি দরকার ছিলো বলোতো এসবের? এমনিতেই অনেক খরচ…

বাবা : চার বছর ধরে এই একই চশ্মা পরে যাচ্ছিস! তাই ভাবলাম যাওয়ার আগে এটা তুকে কিনে দেবো!
আরে হা করে কি দেখছিস! পর..আমাকে পরে দেখা!

স্নেহা বক্স খুলে চশমাটা পরে নিলো!

বাবা : মাশাল্লাহ!

স্নেহা : বাবা!

বাবা : হ্যাঁ বল?

স্নেহা : না কিছুনা!

[ স্নেহা উঠে রুমে চলে আসে ঘাবড়াতে থাকে কিভাবে বলবে বাবাকে সেই সাহস হচ্ছে না ]

মোবাইলটা বেজে উঠলো! ফোন হাতে নিয়ে দেখে! মার্জান,[ স্নেহার ফ্রেন্ড ]

স্নেহা : হ্যালো!

মার্জান : থ্যাংক গড! স্নেহা তুই ফোন ধরেছিস! কখন থেকে ফোন দিচ্ছিলাম! আচ্ছা বাদ দে এসব! এবার বল..তোর বাবা রাজি হয়েছে তো! তুই কখন আসছিস!

স্নেহা : আজ রাতেই বাড়ী যাচ্ছি! বাবাকে কিছু বলিনি!

মার্জান : কিহ! পাগল নাকি তুই?…বাড়ী যাচ্ছি মানে? দেখ স্নেহা আমরা আসছি আংকেল কে আমরা বুঝিয়ে বলছি!

স্নেহা : না.. না তুরা আসিস না! বাবা এমনিতেই অনেক টেনশনে! তার উপর হঠাৎ করেই বাবার চাকরী চলে গেছে! হাতে টাকা পয়সাও নেই! এই সময় বাবাকে পড়ার কথা বললে…

মার্জান : তুই পালিয়ে চলে আয়! আমরা সবাই মিলে তোর জন্য টাকার ব্যবস্থা করবো!

স্নেহা : না বাবারে! এসব পারবো না আমি!

মার্জান : ওহ! সরি! তোর দারা তো পালানোটা ও সম্ভব হবে না! তখন চিন্তায় বসবি বাবা কি ভাববে, মা কি ভাববে! কিন্তু দেখ স্নেহা এতো কিছু ভাবলে কি চলবে? তোর ও তো একটা লাইফ আছে তাই না?

হঠাৎ পেছন থেকে!

বাবা : স্নেহা!

স্নেহা : [ শকড্ হয়ে পেছনে ফিরে তাকায় ] বা..বা তুমি? [ফোন কেটে দিয়ে] কিছু লাগবে? বাবা!

বাবা : না না! কিছু লাগবে না! কার সাথে কথা বলছিস?

স্নেহা : মার্জান ছিলো বাবা!

বাবা : ওহ! আমার রুমে একটু আয়! কথা ছিলো!

স্নেহা : হ্যা বাবা! আসছি! [ তার বাবার পিছু পিছু রুমে গেলো ]

বাবা : [ একটি ব্যাগ খুলে কিছু টাকা বের করে! স্নেহার দিকে এগিয়ে আসে ] বাবা হয়ে তোর জন্য কখনো কিছু করতে পারিনি! ছোট ছোট জিনিষেই তুই খুশি হয়ে যাস! মুখ ফুটে ও কখনো কিছু চাসনি! এই টাকা গুলো তোর বিয়ের জন্যই জমিয়ে রেখেছিলাম! কিন্তু এখন ভেবে দেখলাম এগুলো তোর বিয়ের জন্য না! পড়ার জন্য প্রয়োজন!

স্নেহা : কিন্তু বাবা!?

বাবা : চিন্তা করিস না আমি জানি তুই যা করবি সব ভেবে চিন্তে করবি! তবে শহরে একা রেখে যেতে একটা ভয় কাজ করছিলো…
পরে ভেবে দেখলাম,তুই পারবি সব মানিয়ে নিতে!

স্নেহার চোখের জল আটকিয়ে রাখতে পারলো না! আর বাবার সামনে।

রাত ১১টা বেজে ৩০ মিনিট,

স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে! স্নেহা তার পরিবারকে বিদায় দেওয়ার জন্য!

স্নেহার মা : স্নেহা খেয়াল রাখিস! শোন রাতে কেউ বাড়ী থেকে বের হবিনা! খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করিস!

রাশু : আপু! ঐ যে ভিডিও কল দিও! প্রতিদিন বুঝেছো! তাহলে আর বোঝা যাবে না! তুমি গ্রামে আমরা শহরে! ওহ সরি! আমরা গ্রামে তুমি শহরে,হাহাহা

স্নেহা : [হেসে] ঠিকাছে! বাই, ভালো থাকিস।

বাবা : ভালো থাকিস! স্নেহা আর নিজের খেয়াল রাখিস!

স্নেহা : ঠিকাছে বাবা! তুমিও ভালো থেকো…ঠিক মতো ঔষধ নিও কিন্তু!

বাবা : ঠিকাছে! আর তোর ফ্রেন্ডসরা কই? তুকে নিতে আসবে না?

স্নেহা : হ্যা বাবা! আসছে ওরা ফোন দিয়েছে রাস্তায় আছে!

ট্রেন ছুটছে, স্নেহা চেয়ে আছে,….জীবনের প্রথম ধাপ পাড়ি দিয়ে স্নেহার ২য় ধাপ শুরু…না জানি কি অপেক্ষা করছে স্নেহার ২য় ধাপে…

মোবাইলে টাইম দেখলে ১টা বেজে ১০ মিনিট হয়ে গেলো, এখনো নিতে আসলো না স্নেহাকে!

স্নেহা : হ্যালো মার্জান! কোথায় তোরা?..আমি একা কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি! আশেপাশে অনেকটা খালি খালি ও হয়ে গেছে!আমার খুব ভয় করছে…

মার্জান : সরি স্নেহা আসলে না যে টেক্সিটা নিয়ে আসছিলাম ঐটা অর্ধেকে খারাপ হয়ে যায় তাই আরেকটা নিতে হলো…আর বেশিক্ষণ লাগবে না ব্যাস চলেই এলাম!

স্নেহা : ঠিকাছে আয়!

রাত বাড়ছে তো শীত বাড়ছে! চশমার গ্লাস ও ঝাপসা হয়ে আসছে কুয়াশায় তাই ব্যাগ খুলে সুইটার টা পড়ে নিলো স্নেহা! আশেপাশে সব অপরিচিত মানুষ ভয় ভয় লাগছে অনেক…কারণ একা কখনো কোথাও যাওয়া হয়নি!…
লোকাল ট্রেন এসে থেমেছে সামান্য যাত্রী ছিলো…তারা নামছে, ৫মিনিট পরেই ট্রেনটা আবার চলে যাবে…

পাশ ফিরতেই স্নেহা দূর থেকে মার্জান এবং তার বাকি ফ্রেন্ডসদের দেখতে পাই! মন থেকে ভয়টাও চলে গেলো তাদের দেখে।অনেকদিন পরেই দেখা তাদের সাথে…
খুশিতে বসা থেকে উঠে…সোজা তাদের দিক দৌড়াতে লাগলো…

হঠাৎ সজোরে এক ধাক্কা লেগে কারো সাথে পড়েই যাচ্ছিলো স্নেহা!.. কিন্তু পড়লো না! হাতের মুঠোই হাত চেপে ধরে ফেললো কেউ…

ভয়ে স্নেহা চোখ বটে ফেলে…

– আর ইউ ওকে?

স্নেহা চোখ খুলে যা দেখতে পাই…
সামনের কিছু চুল খাড়া কিছু চুল কপালে বসানো…মুখে খোচা খোচা দাড়ি…কালো জ্যাকেট পড়া, পেছনে কালো গিটার ব্যাগ… সবথেকে আশ্চর্য বিষয় হলো এতো রাতে কালো সানগ্লাস পড়ে আছে…

হঠাৎ স্নেহার ধরে রাখা হাতটি টান দেই এবং স্নেহা তার বুকের কাছে এসে পড়ে!

– Opps! সরি! আসলে জিম করে আসছি তো তাই হাত ব্যাথা করছে! So বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারলাম না!

স্নেহা ঘাবড়ে গিয়ে এক ধাক্ষায় তাকে সরিয়ে…কিছুক্ষণ চেয়ে নেই….কে এই ছেলে পা পিছাতে পিছাতে…আবার ও দৌড় দেই!

পেছন থেকে চেঁচিয়ে আওয়াজ আসে~~

[ ও হ্যালো একটা থেংকস্ ও দিলানা ]

মার্জান : হেই স্নেহা! [ বলেই শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে রাখে স্নেহাকে] কি ব্যাপার বলতো! ঠিকাছিস তো?

স্নেহা : হ্যা ঠিকাছি!

জারিফা : [ ঝড়িয়ে ধরে ]কেমনি ঠিক থাকবে..আমার জান! কত্তোদিন পরে দেখা…

শায়লা : আরে স্নেহা তোর ব্যাগ কোথায়?…

স্নেহা : আরে হ্যা আমিতো ব্যাগ ঐদিকে ফেলে এসেছি! এক-মিনিট দাড়া আমি এক্ষুনি আনছি!

স্নেহা দৌড়ে যাচ্ছিলো ব্যাগ আনতে হঠাৎ সামনে চোখ যেতেই দেখে ঐ কালো জ্যাকেট ওয়ালা…

স্নেহা : [ মনে মনে ] আরে বাপরে! এইতো এখনো আছে!?

মার্জান : স্নেহা কি হলো দাঁড়িয়ে পড়লি যে! তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়! তখন কেউ চুরি করে ফেলবে!

স্নেহা : হ্যা! হ্যা!

মার্জান : কি হ্যা হ্যা! করে তাকিয়ে আছিস! কি হয়েছে তোর ঠিকাছিস তো?…

জারিফা : [স্নেহার কাধে হাত রেখে] বল স্নেহা? কি হয়েছে! হেই! এক সেকেন্ড কোনো হিরো টিরোর সাথে টপকে যাসনি তো?..যেমনকি বুকটা ধুপধুপ ধুপধুপ করছে?

স্নেহা : আরে! না না..তেমন কিছু না!

জারিফা : Obviously না হওয়ারই কথা… চোখে যে পাওয়ারি চশমা লাগিয়েছিস আন্টি ছাড়া কিছু ভাববেই না তোকে….হাহাহা

মার্জান : এই নটাংকি! দুই মিনিটের জন্য তোর মুখটা বন্ধ রাখবি…

জারিফা : ওকেই!

মার্জান : স্নেহা তুই দাড়া আমি ব্যাগটা নিয়ে আনছি!
[ ব্যাগ নিয়ে এসে…] চল এইবার!

স্নেহার ফ্রেন্ডসরা মিলে একটি ফ্লাট ভাড়া করেই থাকে!… এতে আছে একটি বড় ব্যাড রুম, একটি ড্রইং রুম,একটি কিচেন…আর সাথে আছে একটি বাথরুম যেটা নিয়ে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন লড়াই হতে থাকে কে আগে ফ্রেশ হতে যাবে!

পরদিন সকালে,

কম্বল থেকে মাথা তুলে উঠে বসে স্নেহা! টেবিল থেকে চশমাটা নিয়ে পড়ে নিলো, ড্রয়ার খুলে খাতা বের করে লিখতে লাগলো আর হিসাব করতে লাগলো …

পেছন থেকে,

জারিফা : [ঘুম চোখে] ওহ! ব্রিলিয়ান্ট! এতো সকাল সকাল পড়তে বসে গেলি!… আহ! আল্লহ যদি আমাকে ও একটু পড়ার জন্য মন দিতো!

[স্নেহা জারিফার দিকে একটু তাকিয়ে মুচকি হেসে আবার লিখতে থাকে]

মার্জান : [ মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে ] স্নেহা! জানেমান! প্লিজ! তোর পড়া হলে ব্রেকফাস্টটা একটু বানিয়ে দিস!

শায়লা : [ ঘুম চোখে ] ইউ! চিটার মার্জান!.. আজকে তোর পালা ছিলো ব্রেকফাস্ট বানানোর!

মার্জান : চুপচাপ! ঘুম যা..আমি তোকে বলেছি নাকি? স্নেহাকে বলেছি..

শায়লা : কিন্তু এটা তো চিটিং!

স্নেহা : উফ গার্লস! তোরা ঘুমের ভেতর ও ঝগড়া করবি?…আজ থেকে ব্রেকফাস্ট প্রতিদিনই আমি বানাবো.. হ্যাপি?…

জারিফা : হাউ সুইট! স্নেহা বেবি! তুমি এত্তো কিউট কেনো!

শায়লা : ইয়া আল্লাহ! সবাই যেন স্নেহার মতো একটা দোস্ত পায়! আমিন..

মার্জান : [ উঠে বসে ] মোটেও না! স্নেহা আমার ফ্রেন্ড! আমার ফ্রেন্ড মানে..আনোখি! যেমন হীরার টুকরা! কমন কেনো হবে! হে আল্লাহ নট আমিন ওকে! তুমি দোয়াটা কবুল করোনা!

শায়লা আর জারিফা উঠে মার্জান এর পাশে এসে বসে…

মার্জান : [ অবাক হয়ে ]তোদের আবার কি হলো!

শায়লা : তুই তো এখন বললি! আমার ফ্রেন্ড মানে আনোখি যেমন হীরার টুকরা! ভাবতে গেলে আমরা ও তোর ফ্রেন্ড…মানে আমরা ও আনোখি….হিহিহি?[ জারিফা আর শায়লা দুজনই শক্ত করে মার্জানকে ঝড়িয়ে ধরে ]

জারিফা : অই চাশমিশ তুই আবার দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?…Come on join us! [ স্নেহা ও হেসে জয়েন করলো ]

স্নেহা : ওকে! আমি ফ্রেশ হয়ে নাশতা বানাচ্ছি তোরা ও কিছুক্ষণ পরে উঠে ফ্রেশ হয়ে নে….

স্নেহা কিচেনে গিয়ে নাশতা বানাচ্ছে আর তাদের চেঁচামেচি শুনছে কে আগে ওয়াশরুমে যাবে! মনেমনে ভাবতে লাগলো আর হাসতে লাগলো মেয়েগুলো দিন দিন বড় হচ্ছে নাকি ছোট হচ্ছে!

[~~~জারিফা, সেই ক্লাস ফাইভ থেকে আজ পর্যন্ত হ্যান্ডসাম ছেলেদের উপরই ক্রাশ খেয়ে আসছে…ক্রাশ খাওয়াটা যেন ওর একটা নেশা একটু চঞ্চল সবদিক থেকে…একটু বললে ভুল হবে! অনেকটাই চঞ্চল তবে…মনটা অনেক সরল,

শায়লা, সাদাসিধে অনেকটা.. কষ্ট করেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে! প্রেমে ব্যর্থ হয়েছে দু বছর আগে, রায়হান নামের একটি ছেলের সাথে…মাঝে মাঝে ওর কথা মনে পড়লে এখনো লুকিয়ে কাধে তবে তা কাউকে বুঝতে দেই না!

মার্জান, স্কুল লাইফে সবার আগে তার সাথেই বন্ধুত্ব হয়! একদম Straight forward Girl, স্কুল/কলেজে কোনো ছেলেই স্নেহার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারতো.. না..এক ট্রেডে তাদের চৌদ্দ গুষ্ঠির নাম ভুলিয়ে দিতো…. প্রেম ভালোবাসা এসবে ওর সুতার পরিমাণ ও ইন্ট্রেষ্ট নেই..~~~]

স্নেহা : [টেবিলে নাশতা দিয়ে!] গার্লস নাশতা রেডি!

জারিফা : ওয়াও কি খুশবো! স্নেহা অনেকদিন পর তোর হাতের খাবার খাচ্ছি! লাষ্ট কবে খেয়েছিলাম যেন?…

শায়লা : স্নেহার বাসায়!

জারিফা : ইয়াহ!

মার্জান : মেয়ে যেমন মিষ্টি তার হাতের রান্না ও তেমন মিষ্টি হবে…ওকে! এর আগে ও অনেক তারিফ করেছিস ওর খাবারের… এবার চুপচাপ খা আর আমাকে ও খেতে দে! না হয় ভার্সেটিতে লেইট হয়ে যাবো!

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! আজকে স্নেহার ফাষ্ট ডে.. So কিছু তো স্পেশাল হতে হবে তাই না!

শায়লা : হ্যা একটা ছাগল কিনে! জবাই করে মিস্কিন খাইয়ে দে…হাহা

মার্জান : ক্যারেক্ট ?

জারিফা : যা হওয়ার হবে আমিতো আজ ক্লাস করবো না!

শায়লা : কেনো?…

জারিফা : কেনো আবার কি?…স্নেহা ফর্ম জমা দিবে আজ শুধু! যদি ও ক্লাস করে কাল থেকে করতে পারবে! তো আমরা সবাই ক্লাস করলে স্নেহা একা বসে থাকবে নাকি?…তোরা ক্লাস করবি আর আমি স্নেহাকে পুরো ভার্সেটি ঘুরে দেখাবো..

মার্জান : [খেতে খেতে] আমরা জানি তোর ধান্ধা কি.. পুরো ভার্সেটি ঘুরা মানে সুন্দর সুন্দর ছেলে দেখা…

স্নেহা : সাইলেন্ট গার্লস! আবার ঝগড়া শুরু করে দিস না! খাওয়া হলে সবাই তৈরী হয়ে নে! ওকে…. [ স্নেহা উঠে যায় ]

সবশেষে ভার্সেটির উদ্দেশ্যে রওনা হলো!
গেইট দিয়ে ঢুকতেই স্নেহা অন্যরকম অনুভব করছে! অনেক সপ্ন দেখেছিলো এই ভার্সেটিতে পড়বে! আজ সেই সপ্ন পূরণ হতে চলছে [ দীর্ঘশা্স ফেলে মনে মনে] থেংক্স বাবা!

শায়লা : স্নেহা সাইড দে! পেছনে গাড়ী আসছে!

মার্জান : আসছে… বাড়ে বাপকি বিঘড়ি হুই ওলাদ!? এমন ভাবে গাড়ী নিয়ে এন্ট্রি করবে যেন পুরো ভার্সেটি তার বাপের রাজত্ব ?

জারিফা : বাই দ্যা! ওয়ে ওর বাপের রাজত্বই কিন্তু চলে এইখানে… তাই না…?

মার্জান : তুই চুপ কর! ছেলে দেখলেই…তারিফ ছাড়া থাকা যায় না তোর!

জারিফা : সব ছেলে না! রাহুলের মতো হলে একটু তারিফ করি আরকি!

মার্জান : এই যে সুন্দর দিয়ে কি হবে! যার চরিত্র ঠিক নেই! সারাদিনই দেখি মেয়েদের সাথে ইয়াক!

জারিফা : সো্ হট ইয়ার?

শায়লা : বাট! আমার খুব ঠান্ডা লাগছে! এবার ভেতরে যাওয়া যাক! ম্যাম!

জারিফা : Sure! নো প্রবলেম!

সবাই হেসে উঠে জারিফার কান্ড দেখে!

মার্জান : এই স্নেহা ফর্ম নিয়েছিস তো!

স্নেহা : হ্যা নিয়েছি!

মার্জান : তারপর ও একবার চেক করে দেখ!

স্নেহা ব্যাগ খুলে ফর্মের কাগজটা বের করতেই…বাতসে কাগজটা উড়ে যায়!
স্নেহা ও দৌড়ে কাগজ নিতে যাবে অই সময় কাগজের উপর গাড়ির চাকা এসে পড়ে!

স্নেহা কপাল কুচকে দাঁড়িয়ে যায়!

গাড়ীর গ্লাস নামতে থাকলো! আবারো সেই খাড়া – বসা চুল…চোখে কালো সানগ্লাস, ঠোটের কোণে হাসি ফুটে আছে!
দরজা খুলে বেরিয়ে এলো!

– হেইই ইউ! ?

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] হ্যালো এক্সকিউজমি! মিষ্টার রা—হুল? স্যার আপনার গাড়ীটা একটু পেছনে দেন! ওর এডমিটফর্ম আপনার চাকার নিচে পড়ে আছে!

রাহুল : ওহ শিট! ওয়েট ওয়েট! [ রাহুল তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে গাড়ি ব্যাক দেই!

[ স্নেহা দৌড়ে গিয়ে কাগজটা তুলে নেই! চোখে পানি টলমল করছে কাগজের অবস্থা দেখে]

মার্জান : ওহ গড! রাব্বিশ! খাডুসটা সব শেষ করে দিয়েছে! কাগজে তো দাগ পড়ে গেছে! এখন কি হবে?… আরে তুই কাঁদছিস কেনো…ম্যানেজ হয়ে যাবে! ওকে ডোন্ট ওয়ারী!

[ রাহুল গাড়ী থেকে নেমে এসে ]

রাহুল : Alright guys?

মার্জান : সব নষ্ট করে আবার অলরাইট কিনা জিজ্ঞেস করাটা ঠিক এমনি! পেট পুরিয়ে খাইয়ে পেটের মধ্যে লাত্তি মারা! এনিওয়ে চল স্নেহা! কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়ে যাবে!

মার্জান স্নেহাকে নিয়ে চলে যায়! রাহুল তাকিয়ে আছে!?

পেছন থেকে,

আসিফ : [ রাহুলের বেষ্ট ফ্রেন্ড! ] কিরে দোস্ত কি দেখছিস!

রাহুল : স্নেহা!?

আসিফ : নতুন নাকি! দোস্ত দেখতে কেমন!?

রাহুল : বিউটিফুল ?

আসিফ : ওওওহ!?

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! আমি তুকে কেনো বলছি বলতো!

আসিফ : আমাকে না বলে কাকে বলবি নটি বয়…হাহা আচ্ছা শোন গিটার এনেছিস তো? আরো অনেক হট হট হলের মধ্যে অপেক্ষা করছে! কিন্তু ?

রাহুল : কেন্সেল দোস্ত! আজ হবে না… আমার! দেখতে হবে মেয়েটা কোন ইয়ার এর! [ রাহুল চলে যাচ্ছিলো ]

আসিফ : [রাহুলকে টেনে ধরে ] আরে ওটা বের করতে দু মিনিট লাগবে না! নাম জানিস তো ব্যাস! হয়ে যাবে! চলতো [ রাহুলকে টেনে নিয়ে চলে যায় আসিফ ]

হলে ঢুকতেই সবাই চেঁচিয়ে উঠে,

আসিফ : Guys! our star is here… ?r u ready?

রাহুল : Shut up! I m not star ok?..

আসিফ : জোকস্ টা ভালো ছিলো? তাই প্রতিদিন হলে এতো ভীর জমে!

রাহুল : হাহা! ওকে শুরু করা যাক…

আসিফ : Sure!

রাহুল গিটার হাতে নিয়ে চেয়ারে বসলো!

আসিফ : [রাহুলের কানের কাছে] কি ব্যাপার বলতো তুই আজ ব্লাশিং কেনো হচ্ছিস?..কারো প্রেমে ট্রেমে পড়িসনি তো? Obviously রাহুল যেদিন প্রেমে পড়বে ঐদিন হয়তো দিনে অনেক তারা দেখা যাবে…

রাহুল : [ নিচের দিক তাকিয়ে একটু মুচকি হাসলো! ] হয়তো দেখা গেছে!…

আসিফ : রিয়েলি বস্ ?

রাহুল : ফার্স্ট ? স্টেশনে দেখেছি! মনে আছে…গতকাল রাতে অই যে লোকাল ট্রেন! আমি আসতে চাচ্ছিলাম না তুই?

আসিফ : হুম হুম! আমি জোড় করে আনিয়েছি! ইউ নো হোয়াট লোকাল ট্রেন নন্ এসি্ থাকে… নন্ এসিতে আমাদের রাহুলের এলার্জি…. তারপর ও বন্ধুর খাতিরে আসা…এবং সেই খাতিরে মনের মানুষ পেয়ে যাওয়া!? এম আই রাইট!

রাহুল : You know! আমার সাথে যে দু-বারই দেখা হয়েছে দুনোবারই সে দৌড়াচ্ছিল! আর আমি হ্যা করে দেখেছিলাম!…She is Amazing ইয়ার?

আসিফ : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] লেডিস! এন্ড জেন্টলম্যান! Today’s song is very special because… [একটু কনফিউজড হয়ে] because something special ইয়ার! ?

আসিফের কান্ড দেখে রাহুল হাসতে থাকে!

আসিফ : দোস্ত শুরু কর?

রাহুল : [?? গিটার বাজাতে বাজাতে তার চোখ বন্ধ করলো কেউ একজন দৌড়ে আসছে রাহুল হ্যা করে চেয়ে আছে ভাবতে লাগলো ]

?কিসি্ খুবসুরাত্ পারী্ যেসি্ হোগী ♪

~মুঝে কিয়া্ পাতা্ দিলরুবা কেসি্ হোগী♪

সো্চতা্ হু তুঝে্ ♪

চাহতা্ হু তুঝে ♪

দিল্ মেরা্ ♪

কেহরাহা্ ♪

সারে্ ফা্সলে্ মিটা্না্ ♪

ওহ্ ওহ্ জানে জা~না্

ঢুনডে্ তুঝে দিওয়ানা্

সা্পনোমে রোজে্ আ~য়ে্

আহ্ জিন্দেগী্মে আনা্ সানাম্ ???

….

চলবে….

1 মন্তব্য

Leave a Reply to Sultana উত্তর বাতিল

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে