হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২ পর্ব-১০
জেট ছুটতে শুরু করলো রানওয়ে বরাবর। রাফি চোখ বন্ধ করতেই পরিবারের সবার চেহারা ভেসে ওঠে। নাহ, তাদের কাছে ফিরে যেতেই হবে রাফিকে।
প্রিপারেশন দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো বেশ লম্বা সফর হতে চলেছে, রাফিও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে লাগলো। দেশে ফিরে কোথায় যাবে কি করবে, নিজের করা ভুলগুলো শুধরাতে ত হবে। জেটটি অটোপাইলট মোড দিয়ে মেইন পাইলট কেবিনে এলো রাফির সাথে কথা বলতে, কোন সমস্যা হচ্ছে কি না বা কিছু লাগবে কি না। কেবিন ক্রু কে দেখিয়ে দিলো যেন সব ধরনের প্রয়োজনে তাকে ডাকতে পারে।
রাফি ফোনটা অন করতে করতে শুধু একটা জিনিস ই জানতে চাইলো,
রাফি – গন্তব্য কোথায় আমাদের?
পাইলট – এই বিমান আপনাকে পিরামিডের দেশ পর্যন্ত পৌছে দেবে, তার আগে একটা দেশ থেকে একজন এসিস্টেন্ট উঠবেন যিনি আপনাকে আপনার চুড়ান্ত গন্তব্যে নিয়ে যাবেন।
রাফি মনে মনে ভাবে শালা পাইলট ও জানে না আমি কই যাচ্ছি, এটা কেমন কথা। অবশ্য পাইলটেরও দোষ নয়। সে তার চুড়ান্ত গন্তব্যের কথা তো বলেছে রাফিকে। রাফিই জানে না রাফির গন্তব্য।
ভাবনায় নজর ঘোরাতে ঘোরাতে চোখ যায় ব্যাগটির দিকে যেটা বাংকার থেকে নিয়ে এসেছিলো রাফি। এতক্ষণ ধরে বহন করার পরও রাফি জানেই না যে ব্যাগে কি আছে। আগে হয়তো দেখার এখতিয়ার ছিলো না কারন ব্যাগটি একপ্রকার চুরি করে আনা হয়েছিলো বাংকার থেকে, না বলে নেয়া আর চুরি করা একই কথা।
রাফি সিট থেকে উঠে ব্যাগটা নিয়ে আবার নিজের সিটে বসলো। একটু ঘেঁটেঘুটে দেখা দরকার। মাঝারী আকারের চামড়ার ব্যাগ, দেখতেও বেশ দামি লাগছে। রাফি উপরের থেকে চেন খোলা শুরু করলো, কার্ডটা রেখে দিয়েছে ব্যবসায়ী, উপরের অন্যন্য পকেটগুলোতে তেমন কিছু না পেয়ে ভেতরের বড় পকেট খুললো রাফি, বিস্মিত হলো না সে, হার্ডড্রাইভটা রয়েছে ব্যাগে, আর সাথে দড়ি দিয়ে বাধা ছোট্ট একটা কাপড়ের পুঁটলি। রাফির কৌতুহল বাড়ে। পুঁটলিটা খুললে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়, ৬/৭ টুকরা সাদা পাথর। রাফির ধারনা নেই খুব তবে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় এমন সাদা পাথর আসলে কি হতে পারে তা আন্দাজ করতে পারে রাফি। আনকাট ডায়মন্ড !!! এমন সাইজের এক একটা আনকাট ডায়মন্ডের দাম অনেক টাকা। রাফি এতকিছু ভাবতে ভাবতে ফোন আসে। আননোন সোর্স মানেই মাফিয়া গার্ল।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
– যাত্রা শুরু হলো?
রাফি – বিমানে আছি, যাচ্ছি কোথায়?
– বিমানটি আর ৬ ঘন্টা পর একটা এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করবে, তোমাকে নামতে হবে না বরং আমার একজন এসিস্টেন্ট তোমার বিমানসংঙ্গী হবে।
রাফি – এসিস্টেন্ট? যাক এটলিষ্ট কথা বলার মত কাউকে পাওয়া যাবে।
– এতটাও ফ্রেন্ডলি নয় সে, তোমাকে তোমার গন্তব্যে পৌছে দেয়াটাই ওর মিশন।
রাফি – কিন্তু আমার গন্তব্য কোথায়? দেশে ফিরছি তো আমি?
– এখনই নয়। দেশে ফিরতে হলে তোমাকে নিজেকে আগে নির্দোষ প্রমানিত করতে হবে। তা না হলে তোমার জন্য দেশে আসা আর মারা যাওয়া সমান কথা।
রাফি – (চিন্তিত) আমাকে আমার পরিবারের সাথে কথা বলতে হবে। কোন ব্যবস্থা হলো কি?
– ব্যবস্থা হচ্ছে। তোমার সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা নাগাদ তোমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলতে পারবে।
রাফিকে খুশি হওয়া উচিত তবে পরিবেশ পরিস্থিতি রাফিকে ঠিক খুশি করতে পারে না। জানালা দিয়ে বাইরে দেখলো রাফি। নিজেকে আকাশের বুকে উড়তে দেখেও কেমন যেন বন্দি মনে হতে লাগলো।
রাফি – (ভাবতে ভাবতে) হমম, আচ্ছা তোমাকে তো একটা কথা বলা হয় নি। ব্যবসায়ী তো উপহার পাঠিয়েছেন তারই বাংকার থেকে নেয়া ব্যাগটা আর হার্ডড্রাইভটা।
– আচ্ছা, শুধুই হার্ডড্রাইভ?
রাফি – (কৌতূহল) কেন, আরো কিছু থাকার কথা ছিল নাকি!
– হ্যাঁ, একটা ছোট্ট কাপড়ের পুঁটলি থাকার কথা।
রাফি – হ্যাঁ, আছে। পুঁটলিটা ব্যাগের ভেতরেই আছে। তবে পুঁটলির ভেতরে যা আছে তা তো আমার প্রাপ্য নয়।
– প্রাপ্য তবে পরোক্ষভাবে। মনে আছে আমাকে ট্রেস করার জন্য আমার করা কাজগুলো খুঁজে বের করছিলে?
রাফি তার মেমরী ঝাকিয়ে ফিরে যায় অতীতের কথায় যখন রাফি আর NSA এর চার সদস্য মিলে মাফিয়া গার্লকে ট্রেস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলো। যেখান থেকে যতটুকু ইনফরমেশন যোগাড় করা সম্ভব সেখান থেকেই ইনফরমেশন টেনে বের করেছিলো রাফির টিম।
রাফি – খুব ভালোভাবেই মনে আছে। কতভাবেই যে খোঁজ করেছি তোমাকে আমরা ৫ জন মিলে।
– জানি, যাইহোক আফ্রিকাতে হীরার বদলে অস্ত্রের একটা বড় চালান ধরা পড়ার খবর তো পেয়েছিলে এই খোঁজাখুঁজির ভেতর?
রাফির মনে পড়ে মাফিয়া গার্লকে খোঁজার সময় এমন একটা রিপোর্ট এসেছিলো যেখানে চরমপন্থিদের সাথে হীরার বিনিময়ে অস্ত্র বেচাকেনা করা এক বিশাল গ্যাংকে হাতেনাতে ধরেছিলো আফ্রিকান সেই দেশের পুলিশ, প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ প্রধান বলেছিলো আননোন সোর্স থেকে ফোন দিয়ে এই চালান রিলেটেড কিছু নির্দেশনা এবং ডিটেলস দেয় যার মাধ্্মে পুলিশ অনেক সহজে চরমপন্থীদের ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের এক বিশাল চালান জব্দ করে।
রাফি – হ্যাঁ, মনে পরছে! কিন্তু তার সাথে এই কাপড়ের পুঁটলির সম্পর্ক কি!
– যে অস্ত্র চোরাকারবারিরা ধরা পড়েছিলো তারা অনেক বড় মাপের চোরাকারবারি ছিলো এবং তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকতো সবসময়। ওই অপারেশনে চোরাকারবারিগুলো ধরা পরার পর এই অস্ত্র ব্যবসায়ী সুযোগ পায় তার ব্যবসা কয়েকগুনে বাড়িয়ে দেয়ার। সেদিনের সেই ঘটনার কারনে আজ সে বিশাম বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী।
রাফি – তাহলে সে আমার ফ্যান হতে যাবে কেন? তার তো তোমার ফ্যান হওয়া উচিৎ। কারন কাজটা তো তুমি করেছিলে।
– আমি তো তোমার এসিস্টেন্ট, সারা সাইবার দুনিয়া তো জানে মাফিয়া বয়ের নাম, আর মাফিয়া গার্ল তো একটা ছায়া মাত্র।
রাফি – তারমানে তুমি আমার এসিস্টেন্ট হয়ে ওই চোরাকারবারিদের ধরিয়ে দেয়ার ফলে এই অস্ত্র ব্যবসায়ী বড় করে ব্যবসা করার সুযোগ পেয়ে যায় আর সেইজন্য এই উপঢৌকন!
– ব্যপারটা অমনও না, এই উপঢৌকনের মাধ্যমে সে আনুগত্য প্রকাশ করেছে শুধু। এতো মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। সে এখন তোমার হাতের পুতুল। চাইলেই নাচাতে পারবে, তাই অতটা ভাবনাচিন্তা ঝেড়ে ফেলো।
রাফি – (কৌতুহল) আসলে তুমি কি চাইছো সেটা বলো তো? তোমার আসল উদ্দেশ্য কি? কেন এভাবে আমাকে এভাবে সাহায্য করছো?
– সাহায্য করবো না আর?
রাফি – তুমি খুব ভালো করেই জানো যে আমার প্রশ্নের মানে এটা ছিলো না।
#লেখা_sharix_dhrubo
– পৃথিবীর পাওয়ার ব্যালান্সলেস হয়ে গেছে, পানিকে শান্ত দেখে আগুন এখন দাপট দেখাচ্ছে। কিন্তু আগুনকে অবশ্যই পানিকে ভয় করা উচিৎ, আর সেটাই আমার উদ্দেশ্য।
রাফি – কিছুটা বুঝলাম আর কিছুটা একেবারে মাথার উপর দিয়ে গেলো। যা ই বোঝাও না কেন সেখানে আমার ভূমিকা কি!
– তোমার যোগ্যতা এবং ক্ষমতাকে আজ পর্যন্ত ঠিকমত কাজে লাগাও নি তুমি। তোমার ফুল প্রোটেনশিয়ালিটি দিয়ে তুমি অনেককিছুই করতে পারো যা দুনিয়ার মানুষের চিন্তার বাইরে।
রাফি – আমি একটা স্বাভাবিক জীবন চাই শুধু, আমার পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো থাকতে চাই।
– জীবনটা একটা কয়েনের মত, এপিঠ আর ওপিঠ। তুমি যতই কয়েনের একপিঠ নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করো না কেন, না তুমি কয়েনের অপরপিঠকে অস্বীকার করতে পারবে আর না পারবে আলাদা করতে। কয়েনের অপরপিঠটাকেও যে নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। এখন এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে। এখন রাখছি। আমার এসিস্টেন্ট না আসা পর্যন্ত বিমান থেকে নামবে না। আর হ্যাঁ, আমার এসিস্টেন্ট তোমার পূর্বপরিচিত তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
রাফির কপালে এখন আর ভাজ পড়ে না। ভাজ পড়তে পড়তে এমন বলিরেখা তৈরী হয়েছে যে দেখলেই মনে হয় কপাল কুচকে আছে।
রাফি – আমার পরিচিত? কে সে? কিভাবে পরিচিত!
– সবই জানতে পারবে যখন সে তোমার সাথে জয়েন করবে। এখন রাখছি, I’ll be in touch.
রাফি ফোনটা রেখে দেয়, বিমানে করার মত তেমন কোন কাজই খুজে পায় না রাফি। তাই বিমানবালাকে ডেকে জানতে চায় কোন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ডিভাইস আছে কি না বিমানে।
বিমানবালা রাফির সামনের ডেস্ক থেকে একটা ল্যাপটপ বের করে দেয়। রাফি ল্যাপটপটি ওপেন করে সাধারণ আপডেট নিতে থাকে দেশের।
রাফির অনুপস্থিতিতে কারেন্সি চুরির কেসটাতে এক নাটকীয় মোড় এনেছেন ডাইরেক্টর স্যার।
প্রেস ব্রিফিং এ সবাইকে জানিয়েছেন যে রাফির সাহায্যেই কারেন্সিটা চুরি হয়েছে এবং যখন জড়িতদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হিস্যা দাবি করে রাফি তখন অন্যরা বেঁকে বসায় রাফি সবাইকে ফাঁসিয়ে দিয়ে পুরো টাকাটা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
রাফি ভাবতে থাকে এটা কিভাবে সম্ভব। সে তো তার ফাইনাল রিপোর্ট সাবমিট করে দিয়েছিলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবং তার হস্তক্ষেপেই এখন অপরাধীরা জেলে, তাহলে টাকাগুলো নিয়ে আমি উধাও হলাম কিভাবে, টাকাগুলো কি আবারও আনট্রেসেবল হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন একাউন্টে ঘুরে বেরাচ্ছে। যদি এমনটাই হয় তাহলে তো অপরাধীরা বেকসুর ছাড়া পেয়ে যাবে আর দোষ রাফির কাঁধেই পড়বে।
একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল কেটে বের হতে না হতেই আরো একশোটা জাল এসে পেঁচিয়ে ধরে রাফিকে। কি দোষ ছিলো আমার! ১০ সদস্যের টাস্কফোর্সই বা কি করেছে এই কেসের ইনভেষ্টিগেশন নিয়ে!
রাফির মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে এসব, কেন রাফির সাথে বার বার এমনটি হচ্ছে। ভাবতে ভাবতেই মনে পড়ে মাফিয়া গার্লের কথাটা, কয়েনের এপিঠ ওপিঠ। রাফি কয়েনের এপিঠ নিয়েই বেশী ব্যস্ত ছিল সবসময় কিন্তু কয়েনের ওপিঠ নিয়েই তো সবসময় কাজ করেছে সে। কোডিং, হ্যাকিং, এগুলো তো বেশীরভাগই কয়েনের ওপিঠে সংগঠিত হয়। অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যি যে রাফির পরিস্থিতির জন্য রাফি নিজেই দায়ী। নিজেকে নিজে সিকিউর না করে অনেক বড় ভূল করেছে সে।
আরো একটু ঘাটাঘাটি করতে চাইলো রাফি, নিজের ব্যপারে। বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ছাপিয়েছে যার সারাংশ হলো রাফিউল ইসলাম নামের একজন NSA অফিসার, প্রাক্তন NSA ডাইরেক্টর মরহুম ব্রিগেডিয়ার ইজাজ মামুনের মদদে কয়েকজন লোভী আর ক্ষমতাশালী কর্মকর্তাদের নিয়ে এই বিশাল অংকের কারেন্সি চুরি করে এখন পুরো কারেন্সি সহ বর্তমানে পলাতক রয়েছে এবং কয়েকজন নিরপরাধ জননেতা ও কর্মকর্তা এই কেসের মিথ্যা অপবাদ নিয়ে জেল খাটছে।
রাফি ল্যাপটপের লীডটা নামিয়ে রাখে। মাথাটা চিনচিন করছে রাফির।
#লেখা_sharix_dhrubo
একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলো রাফি, ঘুমিয়েও পড়লো কিছুক্ষণের ভেতর।
হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙ্গে যায় রাফির। চোখ খুলে দেখতে পায় সীটবেল্ট বাঁধা, ল্যাপটপটাও আর টেবিলের উপর নেই। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলো বিমান দাড়িয়ে আছে। চোখ ঘোরাতে ঘোরাতে পাশের সোফাতে কাউকে বসে থাকতে দেখে রাফি, বেশ টিপটপ পরিপাটি একটা মেয়ে পায়ের উপর পা তুলে দুলাতে দুলাতে মোবাইল চাপছে, দেখলেই বোঝা যাচ্ছে চুইংগাম চিবচ্ছে আচ্ছামত কিন্তু মাথা নীচু করে মোবাইল চাপছে বলে মুখের সামনে চুল চলে এসেছে তাই চেহারাটাও ঠিকমত দেখতে পাচ্ছে না রাফি।
ঘাড় নীচু করে চেহারাটা দেখার চেষ্টা করলো রাফি কিন্তু চেহারাটা দেখতে পাচ্ছে না রাফি। সীটবেল্টের কারনে বেশী নীচু হয়ে দেখতে পাচ্ছে না ভেবে সীটবেল্টটা খুলে ফেলে রাফি। হয়তো সীটবেল্টের আওয়াজ পেয়ে পায়ের দুলুনী বন্ধ হয়ে যায়, চুইংগাম চাবানোটাও মন্থর হয়ে যায়।
“রাফি সাহেব, অনেকদিন পর দেখা হলো, ভালো আছেন নাকি এখনো কলেজের ডোনারগুলোকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন?”
রাফির কৌতুহল বেড়ে যায়, চেনা চেনা কন্ঠ আবার কলেজের ডোনার খোঁজার কথা বলছে! কে সে?
রাফি – (কৌতূহল) রুহী!!
“বাহ, যতটা হতবুদ্ধ ভেবেছিলাম ততটাও হতবুদ্ধ নন আপনি। বেশ তীক্ষ্ণ কান আপনার।”
মাথা তোলে মেয়েটা, চোখে একটা সানগ্লাস দেওয়া। যেমনটি ক্যাম্পাসে দেখেছিলো তেমনটি একদমই লাগছে না আর রুহী নামের মেয়েটিকে। নিজেকে এমনভাবে কভারআপ করেছে যে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না যে সে লোকাল কেউ নয়।
#লেখা_sharix_dhrubo
রাফি – রুহী আপনি! আপনি এখানে কি করছেন!
রুহী – কি আর করবো! এক পথভোলা ক্রিমিনালকে পথ দেখাতে এসেছি। উপরের হুকুম।
রাফি – কিন্তু আপনাকে এখানে এভাবে দেখবো কখনো ভাবি নি। আপনার উপরমহল বলেছিলো যে এসিস্টেন্ট নাকি আমার পরিচিত হবে, কিন্তু সেটা যে আপনি হবেন তা বুঝতে পারি নি।
রুহী – মানুষ তার জীবনে অনেককিছুই ভাবতে পারে না কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি মানুষকে শুধু ভাবাতেই না, অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সামনেও ফেলে দেয়। হয়তো সেটা আমার থেকে আপনি সেটা বেশী ভালো জানেন।
রাফি – হম, তাহলে আপনি নিয়ে যাবেন আমাকে দেশে?
রুহী – দেশে! আপনাকে তো দেশে নিয়ে যাওয়ার কোন মিশন দেয়া হয় নি।
রাফি – তাহলে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে! কোথায় যাচ্ছি আমরা?
রুহী – পৃথিবীর বৃহত্তম দেশে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে আপনাকে। আমরা ওইদিকেই যাচ্ছি।
রাফি – মানে! ওখানে কেন যাচ্ছি আমরা?
রুহী – আপনার সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে।
ইন্টারকমে সিগন্যাল দেয় বিমান এখনই এয়ারপোর্ট ত্যাগ করবে। রুহী সোফা ছেড়ে এসে রাফির সামনের চেয়ারে বসে পড়ে। সীটবেল্টটা বেঁধে নেয় আর রাফিকেও ইশারা করে সীটবেল্ট বেঁধে নিতে। রাফি সীটবেল্ট বেঁধে নিয়ে জানালার দিকে তাকায়। বিমানটি রানওয়ের দিকে যাচ্ছে আর রাফিও এগিয়ে যাচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।