#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৩
#জান্নাতুল_বিথী
“আমি বাড়ি যাবো!!!!”
“তো আমি কি করবো।…???”
“আপনি কি করবেন মানে। আমাকে যেখান থেকে এনেছেন সেখানে গিয়ে দিয়ে আসুন। ”
কথাটা বলার সাথে সাথে অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।আমি ও উনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি। আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে উনি বলেন..
“তোমার বাবা মা এখন আর তোমাকে সহ্য করতে পারবে না। গিয়ে লাভ নেই। আর তাছাড়া যে বাবা মা নিজের মেয়ের উপর ভরসা করতে পারে না সামান্য এতো টুকুতেই বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলে সেই বাবার কাছে ফিরে যেতে চাইছো তুমি।…???”(অয়ন)
“হ্যা চাইছি তার কারন তারপর ও উনারা আমার বাবা মা। আর এই সব কিছুই আপনার জন্য হয়েছে। কেনো এমন করছেন আপনি।বুঝি না কি এমন ক্ষতি করেছি আমি আপনার।আমি তো আপনাকে চিনিও না।তাহলে কেনো এমন করলেন আমার সাথে।…???”
“কেনো মেডাম আমার বউ হতে বুঝি ইচ্ছে করে না। আমি কি তোমার উটবি হাজবেন্ট এর চাইতেো খারাপ দেখতে।….???(অয়ন)
কথাটা শুনে আমি অয়নের দিকে ভালো করে তাকাই।একদম ফর্সা,মুখে খোচা খোচা দাড়ি,ব্ল্যাক টি-শার্ট, চুল গুলো স্পাইক করা হাতে ব্যান্ডের ঘড়ি আর মুখে হালকা হাসি যার মধ্যে কোনো কৃত্বিমতা নেই। এক কথায় যে কোনো মেয়ে এক দেখায় তার প্রেমে পড়ে যাবে।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন আমার মুখের সামনে তুড়ি বাড়িয়ে বলে।..
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো প্রেমে পড়ে যাবে তো।”
উনার কথা শুনে আমি ভেংচি কাটি।আমাকে ভেংচি কাটতে দেখে অয়ন হাসতে থাকে।
“দেখো কি সুন্দর সবাই তোমাকে আমার বউ বলছে তাহলে মেনে নাও না গো।..”(চোখ মেরে)
অয়নের এই কথাটা শুনে আমার কিছুক্ষণ আগের কথা মনে পড়ে যায়। যখন ওই মহিলাটা বলেছিলো আমি কি অয়নের বউ নাকি। তখন সাথে সাথে অয়নের বাবা বলেছিলো।..
“হ্যা ও আমার পুত্র বধু।কেনো অয়নের পাশে কি দিয়া কে মানায় নাই…??”(অয়নের বাবা)
“অনেক সুন্দর মানিয়েছে দুজন কে। এমন লক্ষী মেয়ে হাজারে একটা।অনেক ভালো লাগলো।”
আমি তো হা করে তাকিয়ে ছিলাম।বলে কি উনারা। ইয়া আল্লাহ। তারপর অয়ন নিজের রুমে চলে আসে। আমিও রুমে এসে কিছুক্ষণ পায়চারি করে চাদে চলে যাই। গিয়ে দেখি অয়ন ছাদে বসে কফি খাচ্ছে।
বর্তমানে…..
“আমার বয়েই গেছে। দেখেন আমার ভার্সিটি যেতে হবে।আর তাই বাড়ি যাবো।”(আমি)
“তোমার যদি এখন বিয়ে হয়ে যেতো তাহলে কি তুমি ভার্সিটিতে যেতে পারতে।..????”(অয়ন)
“কিন্তু এখন তো আমার বিয়ে হয় নাই। বিয়ে হলে ভেবে দেখতাম।!!!”(আমি)
“তুমি এই বাড়িতে ততোদিন থাকবে যতোদিন আমি চাইবো।..”(অয়ন)
“কেনো এমন করেন আমার সাথে কি করেছি আমি আপনার।যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমা চাচ্ছি তারপর ও এমন করবেন না প্লিজজ???”(আমি)
“আমি এতো কথা শুনতে চাই নাই। বেশি কথা আমি একদম আমি পছন্দ করি না।”
“আজব তো আমি আমাকে কেনো আনলো এখানে বা যদি বলি বাড়ি দিয়ে আসতে এই ধরনের কথা বললে ইগনোর করে কেনো এই লোকটা..??(মনে মনে)
কথাটা বলেই অয়ন আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।আমার এই মুহূর্তে এতো রাগল
লাগে যে ইচ্ছে করছে এই ছেলেটার ঘাড় মটকে দেই। এই ছেলে নাকি সিবিআই অফিসার তাহলে মেয়েদের সম্মান করতে জানে না…??আচ্ছা এই ছেলেটা তো একজন সিবিআই অফিসার তাহলে কি আমাকে এখানে আনার পেছনে তার কোনো কারন আছে।..?? আন্টি যে বললো আমার ভালোর জন্যই আমাকে এখানে এনেছে তাহলে কি তাই সত্যি…?? উফ কিছুই ভাবতে পারছি না।মাথাটা প্রচুর ব্যাথা করছে।
________________
“সিমি আমি একটা ফোন করবো তোমার ফোনটা একটু দিবে।…???”(আমি)
আমার কথা শুনে সিমি আমার দিকে ইনোসেন্ট ফেস করে বলে।…
“আপু দিতে তো কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু ভাইয়া যদি আমাকে বকা দেয় তাহলে কি হবে। ভাইয়া তোমাকে মোবাইল দিতে নিষেধ করছে??”(সিমি)
“আরে ধুর কিছু বলবে না তুমি দাও।…”(আমি)
“আপু প্লিজজজজজ।..”
“আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে এটা বলো যে তোমার ভাইয়া কি ঘরে আছে।….???”
“হু কেনো…???”
“কাজ আছে।কোন দিকে রুম…???”
“ডানদিকে গিয়ে ২ য় রুম টা।কেনো কি করবে বলো না আপু।”
আমি কিছু না বলেই বের হয়ে যাই।আর সোজা গিয়ে উনার রুমের সামনে দাড়াই।যতোই সাহস নিয়ে আসি না কেনো এখন অনেক ভয় লাগছে। এই ছেলেটা নাকি অনেক রাগী। কিছু বললে যদি আমাকে লকাফে ডুকিয়ে দেয় তাহলে কি হবে।..???”দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি এসব ভাবছি। অতঃপর সিদ্বান্ত নেই রুমেই যাবো না।যেই ভাবা সেই কাজ।আমি ফিরে আসবো তখনই..
” চোরের মতো ওইখানে দাড়িয়ে কি দেখছো।চাইলে ভেতরে আসতে পারেো।…”(অয়ন)
হঠাৎ এই কথায় আমি চমকে উঠে। দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখি দরজা ভেড়ানো।তাহলে আমাকে দেখলো কিভাবে।…?এসব ভেবেই ভেতরে যাই আমি। গিয়ে দেখি অয়ন ল্যাপটপে কাজ করছে।
“আচ্ছা আমি আসছি সেটা আপনাকে কে বললো।…???”(আমি)
“এখানে আমি আর তুমি ছাড়া কাউকে দেখছি না। তাহলে কে বলবে।…(গম্ভীর কন্ঠে)
অয়নের কথা শুনে আমি চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছি।
“কোনো দরকার।..???”(অয়ন)
“আসলে ইয়ে মানে।…(কাপা কন্ঠে)
“আসলে ইয়ে মানে এর কোনো মানে হয় না.যা বলবে সোজা বলো।”
“তোর মাথা বলবো ইডিয়েটা ছেলে।(মনে মনে)
“আসলে আমি একটা ফোন করবো।”
কথাটা বলার সাথে সাথে অয়ন নিজের ফোন বের করে বলে।…
“নাম্বার বলো।…”(অয়ন)
উনার কথা শুনে তো আমি অবাকের চরম সীমায়। আমি কখনোই ভাবি নাই যে অয়ন এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ফোন দিতে দিয়ে দিবে।যাই হোক এতো কিছু ভেবে আমার কাজ কি।….???
“01823*****2।(বাকী গুলো নিজ দায়িত্বে দিয়ে ফোন করবেন।-লেখিকা😁)
অয়ন ফোন করে লাইড স্পিকারে দিয়ে আমার হাতে দেয়।এবারে আমি তার চাল বুঝতে পেরেছি।বেটা বজ্জাত আমি কি বসে বসে প্রম করবো নাকি তোর ফোন দিয়ে।আমার বয়েই গেছে।
“আসসালামুআলাইকুম।কে গো আপুনি…??”(মিলি)
“বান্ধুবি আমি দিয়া।….”
“ওই হারামি তুই আমাকে একদম ফোন করবি না।কেমন বেষ্ট ফ্রেন্ড আমি তোর যে তুই আমাকে একটা বারও এই কথাটা বলতে পারলি না।..???”
“মিলি প্লিজজ বিশ্বাস কর আমি এসবের…….
এতোটুকু বলার পর অয়ন আমার দিকে কটমট চোখে তাকায়।যার মানে এসব যেনো না বলি।
“আসলে হয়েছে কি সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি হলো যে তোকে বলার সময়ই পাই নাই।”(আমি)
“ওহহহ তাই বুঝি।..??হ্যা অবশ্যই সময় না থাকারই কথা। আমার জিজু তো অয়দনেক হ্যান্ডসাম। তো উনাকে সময় দিতে দিতেই তো আপনার সময় পুরিয়ে যায়।আমাদের আর কি ভাবে সময় দিবেন।???”
“কুত্তি চুপ করবি তুই।..???এটা বল যে বাড়ির কি অবস্থা।….??? ”
চলবে…….