#হৃদয়_সায়রে_প্রণয়ের_ছন্দ|২৩|
#শার্লিন_হাসান
পরের দিন সকালে প্রায় দশটার দিকে ঘুম ভাঙে পাটওয়ারী বাড়ীর রাজকন্যাদের। সবাই ফ্রেশ হয়ে একসাথেই নাস্তা করতে বসে। তুষি আসে পিঠার প্লেট নিয়ে। টেবিলের উপর প্লেটটা রাখতে,রাখতে বলে,
“সাফা,রাফা,মেহের,শশী রেডি হয়ে হয়ে মাহী সহ গিয়ে ঢালা গুলো দিয়ে আসবে।”
“কিসের ঢালা কাম্মা?”
ব্রেডে জেল মাখতে,মাখতে বলে সেরিন। প্রতিত্তোরে তুষি বলে,
“বিয়ের ঢালা। ছেলেদের বাড়ী দিয়ে আসবে।”
“বিয়েটা কার?”
তখন সিহান পাটওয়ারী এসে বলেন,
“সেরিন ব্রেকফাস্ট করে রুমে যাও আমি আসছি। কিছু কথা আছে।”
সেরিনের আর কফিতে চুমুক দেওয়া হলো না। খাওয়া ভেতরে যাচ্ছে না তার। এভাবে হুটহাট! কার সাথে না কার সাথে। সেরিনের মনে হচ্ছে তার ঢাকা থেকে আসাটাই ভুল হয়েছে। কোনরকম খেয়ে উঠে রুমে চলে যায় সেরিন। সেরিন রুমে প্রবেশ করার পেছন দিয়ে সিহান পাটওয়ারী আসেন। তার দরজায় নক করেন।
কান্না করার সময় কারোর ডিস্টার্ব সেরিনের পছন্দ না। তবে দরজা তো খোলতেই হবে। মনে হচ্ছে কান্নাটা এই অসময়ে না আসলেই হতো। মনে,মনে শুভ্রকে বকছে তো সাথে নিজেকেও। তার উপর যে ডিস্টার্ব করছে তার উপর ও বিরক্ত আসলো। সেরিনের মনে হচ্ছে তাকে কেউ শান্তি দিবে না। চোখ মুছে দরজা খুলে দেয় সেরিন। তখন সিহান পাটওয়ারী ভেতরে প্রবেশ করেন। সোফায় বসতে,বসতে বলেন,
“আগামী কালকে তোমার বিয়ে। তবে পরিকল্পনা আরো একসপ্তাহ আগে থেকেই। ডেট ও ফিক্সড তোমাকে জানানো বাকী ছিলো আরকী। একটু পর তোমার যদি কোন শপিং বাদ থাকে তাহলে কুমিল্লায় যাবে। রেডি হয়ে নিও। সন্ধ্যায় হলুদ/মেহেদী করা হবে।”
সিহান পাটওয়ারীর কথায় সেরিনের জন্য চোখে বৃষ্টি ঝড়ছে। সে বিয়ে করবে না। আর কাকে করবে? বলা নেই কওয়া নেই। সেরিন নিজেকে যথাসাধ্য শক্ত রেখে বলে,
“হঠাত বিয়ে? আর কার সাথে না কার সাথে হচ্ছে। আমি এভাবে বিয়ে করতে পারবো না বাবা।”
“আমরা সবাই ছেলে দেখে রেখেছি। আর আমার উপর বিশ্বাস রাখো।”
“কিন্তু….!”
“আমি জানি আমার মেয়ের পছন্দ অপছন্দ। সো সেভাবেই সব হবে।”
“বাবা।”
“ভরসা রাখো।”
সিহান পাটওয়ারী বেড়িয়ে যান।
মাহী বাজার থেকে কয়েক ব্যাগ ফুল কিনে আনে। তাছাড়া আগামী কালকে চৌধুরী পরিবারকে সুন্দর ভাবে ওয়েলকাম করার জন্যও কিছু ডেইজি ফ্লাওয়ার,কিছু ভিন্ন কালারের রোজ আনে। সেগুলো ভিন্ন,ভিন্ন ভাবে প্যাক করা। যাতে দু’টো ডেইজি ফুল আর একটা গোলাপ ফুল সবার হাতে,হাতে যায়।
সাফা,রাফা, মেহের তারা হাল্কা খাবার খেয়ে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শশী আর মেহের যায় গার্ডেনে। হোয়াইট কালারের দেওয়ালের সামনে ছোট,ছোট ঘাস সেখানে জায়গা স্থির করে মেহেদীর আর হলুদের জন্য ডেকোরেশন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তুষি পিঠা ঢালায় নিয়ে সেটা সাজায়। দু’টো ঢালায় পিঠা নেওয়া হতে রাফা সেটা প্যাক করে নেয়।
অতঃপর তারা তিনজন রেডি হয়ে নেয়। শশী আর্থকে মেসেজ দিয়ে জানায় তারা আসবে।
সাফা সেরিনের রুমে যেতে দেখে সে কান্না করে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলছে। সাফা তাকে বলে,
“বোকা মেয়ে এতো কান্না করছো কেন?”
‘এই আমার বিয়েটা কোন জায়েদ খানের সাথে দিচ্ছে?”
“আরে জিজু জায়েদ খান না তোমার পছন্দের হিরোর মতো।”
“আমি তাকে দেখতে চাই।”
“আমার কাছে তো পিক নেই। তবে ওনাদের পরিবার চৌধুরী পরিবার।”
“ইয়া আল্লাহ কোন চৌধুরী এসে জানি কপালে জুটে।”
সাফা যেতে সেরিন শুভ্রকে মেসেঞ্জারে কল লাগায়। কয়েকবার রিং হতে রিসিভ হয়। সেরিন নিজের কান্না আটকে রাখতে না পেরে কেঁদেই দেয়। শুভ্র সেরিনের কান্নার আওয়াজ শুনে নিস্তব্ধ হয়ে যায়। সেরিনের কান্না শেষ হতে বলে,
“আব্বু আমাকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আপনি কিছু করুন না।”
“আমি একটু ব্যস্ত আছি।”
“তোর বা’লের ব্যস্ততা পকেটে ঢুকা। তুই আসবি কীনা বল? না আসলে আমি নিজে চলে আসছি তোর বাড়ীতে।”
“আল্লাহ কী বলে এই মেয়ে? এই কথায়,কথায় বা’ল কী হ্যাঁ?”
শুভ্র কিছুটা ধমকে বলে। সেরিন চুপসে গিয়ে বলে,
“আর বলবো না।”
“দেখো আমি আসতাম। কিন্তু তুমি যা গা’লি দেও তোমায় বিয়ে করলে আমার বাচ্চারাও এমন গা’লি দিবে। আর শুভ্রর বাচ্চা শুভ্রর মতো ভদ্র হওয়া চাই। সেজন্য বাবুর আম্মু তুমি না ভদ্র-সভ্য কোন মেয়েই হবে।”
” আর গালি দেবো না। আমি ভালো হয়ে যাবো। তাহলে বাবুরাও আর গা’লি দিবে না।”
“তোমাকে বিশ্বাস নেই। পান থেকে চুন খসলে তুমি গা’লি দেও। আমি তোমার টিচার সবাই আমাকে ভয় পায় অথচ তুমি একমাত্র মেয়ে যে কীনা আমায় ভয় তো দূরে থাক তুই তোকারী করো।”
“আর করবো না।”
“সবসময়ই তুমি আর করবো না,বলবো না বলো। পরে ঠিকই যেই সেই।”
“আপনি আমায় বেশী মাথায় তুলে ফেলেছেন।”
“তোলা লাগে নাকী? তুমি যেই মেয়ে নিজেই মাথায় উঠে যাও।”
“এই সত্যি আমি চলে আসবো কিন্তু।”
“এসেও লাভ নেই সোনা। আমি আমার বিয়ের শপিংয়ের জন্য বেড়িয়েছি পরিবারের সাথে। তুমি সুন্দর ভাবে বিয়েটা করে নেও। একবারে লক্ষী মেয়ের মতো। একদম কান্না কাটি করবে না। আর বিয়েতে কী গিফ্ট লাগবে বলো? আমি তোমায় সেই গিফ্টটই দেবো। তবুও আমার জন্য কেঁদো না।”
“কিছু চাই না আমার। আমার আপনাকে চাই।”
“আমি তো আরেকজনের জন্য ফিক্সড। বললাম না আম্মু ওইদিন রিং পড়িয়ে আকদ অর্ধেক সেরে নিয়েছে।”
“বাবু হলে কিন্তু কোলে নিতে দেবো না।”
নাক টেনে কথাটা বলে সেরিন। শুভ্রর হাসি পাচ্ছে। এই মেয়ের মাথা থেকে এখনো বাবুর ভূত নামেনি। শুভ্র হাসি থামিয়ে কঠোর গলায় বলে,
“তোমার বাবু আমি কোলে নিতে যাবো ও না। আচ্ছা বলো তো আমার বউকে কী গিফ্ট দেওয়া যায়?”
“জানি না।”
“তাহলে কাঁদুনি কাঁদতে থাকো। আল্লাহ হাফেজ।”
শুভ্র কল কেটে দিতে সেরিন মেসেজ দেয়। মেসেজ ডেলিভারিড হলোও সীন হয়নি। শুভ্র সেরিনকে রেস্ট্রিকশনে ফেলে রেখেছে। সেরিন আর উপায় দেখছে না। শুভ্রর উপর রাগ হলেও সে নিজেকে শক্ত করে নেয়। বিয়েটা হাসিখুশি ভাবেই করবে সে। দরকার হলে হাসি না আসলেও জোর করে হাসি আনবে। সেইসব হলুদের ভিডিও আপ দিয়ে শুভ্রকেও দেখাবে বিয়েতে সে কতটা খুশি ছিলো। ফোন রেখে ফ্রেশ হয়ে শশীদের কাছে যায় সেরিন। তারা প্রায় রেডি। মাহী এসে ঢালা গুলো গাড়ীতে নিয়ে যায়। সেরিন শশীকে চুপিচুপি বলে,
“প্লিজ আমার বরের একটা পিক তুলে আনিস।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
তারা তিনজন মাহী সহ বেড়িয়ে পড়ে। শুভ্রদের বাড়ী থেকে সেরিনদের বাড়ীর ব্যবধান মাত্র ত্রিশ টাকার ভাড়া। ওতোটাও কাছে না আবার দূরেও না। মাহী গাড়ী ড্রাইভ করছে। তার পাশে সাফা বসা। পেছনে রাফা আর শশী। তারা ফোন নিয়ে ব্যস্ত।
চৌধুরী বাড়ীর গেট দিয়ে গাড়ী প্রবেশ করে। তখন আর্থ আসে। মাহীর সাথে হ্যান্ডশেক করে। আর্থ তার শালিকা সাফা,রাফার সাথে হায় হ্যালো দেয়। অতঃপর সার্ভেন্ট দিয়ে ঢালা ভেতরে পাঠানো হয়। শশী মেহেদীর ঢালা যেটা ফুল দিয়ে সাজানো। সেটা নেয়। রাফা চকলেটের ঢালা। আর সাফা ফুলভর্তি ঢালাটা নেয়।
ভেতরে যেতে তাঁদেরকে ওয়েলকাম ড্রিংস দেওয়া হয়। সেই সাথে কিছু ফ্লাওয়ার্স। হালকা নাস্তা করে। শুভ্র আর আয়মান চৌধুরী কুমিল্লায় গেছে। তাই দেখা হয়নি তাদের। একটু আধটু দুষ্টুমি করে শশী আর্থর সাথে বাইরে আসে। আর্থর আইফোন দিয়ে তাঁদের বাড়ীর বাগান বিলাসের সাথে কিছু পিকচার তুলে নেয়। ঢালার সাথে তোলা পিক বাগান বিলাসের পিক আপ দিয়ে দেয়। সে জানে সেরিন দেখলেও বাড়ীটা চিনতে পারবে না। কারণ কখনো আসেনি এই বাড়ীতে।
চৌধুরী বাড়ী থেকে তারা সবাই আসার পেছন দিয়ে সেরিনের জন্য ঢালা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। অধরা এসেছে সকালে তার মেঝো আম্মুদের সাথে। আদ্রিতা আর অধরা গাড়ীতে বসে। ড্রাইভার তাঁদের পাটওয়ারী বাড়ীতে দিয়ে আসবে।
শুভ্ররা গতকাল সেরিনের আর পাটওয়ারী বাড়ীর সদস্যদের জন্য শপিং করলেও আজকে চৌধুরী ফ্যামিলির জন্য। তড়িঘড়ি ঢালা প্যাক করা যদিও হয়ে গেছে। সুলতানা খানম, আর্থ, আদ্রিতা, আয়মান চৌধুরী মিলে করেছে। জান্নাতুল ফেরদৌস এসবের আশেপাশে ও ঘেঁষেননি। আর্থর মতে বেচারির আংটি খোয়া গেছে সেই শোক করছে।
পাটওয়ারী বাড়ীতে আসতে তাদের তিনজনকে ওয়েলকাম ড্রিং দেওয়া হয়। সুন্দর ভাবেই আপ্পায়ন করা হয়। সেরিনের রুমে নিয়ে ঢালা গুলো রাখা হয়। বাকীরা কাজে ব্যস্ত হলেও সেরিন মন খারাপ করে নেই। সে ঢালার ভিডু নিয়ে ডে দিচ্ছে। শুভ্র সীন করার আশায় প্রহর গুনছে সে। সেরিন কতটা হ্যাপি সেটা দেখানো ট্রাই করছে। কিন্তু শুভ্র যেই ব্যস্ত মানব সীন করে কীনা সন্দেহ।
সেরিনের কিছু কেনাকাটা ছিলো। তবে বিয়েটা যেহেতু ঘরোয়া ভাবে হচ্ছে বেশী দরকার নেই। এবারের মতো সাজ কমপ্লিট হয়ে যাবে।
মাহী, তাঁদের লিভিং রুমের এক পাশটায় কিনে আনা; বিভিন্ন কালারের পাতলা পর্দা দিয়ে, সাজানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাড়ী জুড়ে ফুলের সুভাসের আনাগোনা। সেরিনের রুমেও কিছু ফ্লাওয়ার্স রাখা হয়। তবে বেশীর ভাগ রজনীগন্ধা আর গোলাপ।
সাফা, রাফা সেরিনের জন্য ফুলের গহনা বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। গাদা ফুলের সাথে সাদা ফুল দিয়ে। ইয়াররিং আর টিকলি বানায়। আর ওদের জন্য খোঁপায় দেওয়ার জন্য মালা। অল্প সময়ের মধ্যেই সেটা কমপ্লিট হয়ে যায়।
প্রায় তিনটার দিকে শাওয়ার নিয়ে বাগানের কাছে আসে শশী আর মেহের। মাহীকে বলে বাজার থেকে আনা হলুদ পাতলা ওরনা গুলো টানিয়ে দেওয়া হয়। দুই পাশে হলুদের লম্বা, লম্বা মালা গুলো জুলিয়ে দেওয়া হয়। একবার সিম্পল ডেকোরেশন। তবে থিমের সাথে মিল রেখে ছোট্ট, ছোট্ট ভাজের ভেতর হলুদ গোলাপ রাখা হয়। তাঁদের হলুদ শেষ হলে এগুলো সব ভেতরে নিয়ে যাওয়া হবে।
পাঁচ জন মিলে হাত লাগায় সেজন্য ঘন্টার মধ্যে তাঁদের ডেকোরেশনের কাজ কমপ্লিট হয়ে যায়। সেরিন অলরেডি সাজতে বসে গেছে।
তাঁদের কারোরই বেশীক্ষণ সময় লাগেনি। একজন আরেক জনকে হেল্প করায় তাড়াতাড়ি সাজা,রেডি হওয়া কমপ্লিট হয়ে গেছে।
তুষি,সাইয়ারা,সাহিনূর পাটওয়ারী তারা ফল,পিঠা হাল্কা কিছু সেখানে রাখে। যেহেতু তারা তারাই ওতো বেশী কিছু রাখার প্রয়োজন মনে করেনি।
পড়ন্ত বিকেলে সবাই মিলে বসে। প্রথমে ফটোশুট করে নেয় সবাই। কিছু ভিডিও! সেরিন দাঁড়িয়ে নাচে। তাঁদের সুন্দর মূহুর্তের ভিডিও ক্যাপচার করে নেয়। সিহান পাটওয়ারী, কিরণ পাটওয়ারী তারাও আছে। অক্ষর সন্ধ্যায় আসবে জানায়। কেউই বেশী মাথায় নেয়নি ব্যপারটা। তারা তাঁদের মতো ব্যস্ত। মাগরিবের আগে তারা অনুষ্ঠান শেষ করে নেয়। রাতে মেহেদী দিতে বসবে ওতো প্যারা নেই।
শুভ্র কুমিল্লা থেকে ফিরে দুপুরের দিকে। সন্ধ্যায় তারা ও ছোটোখাটো কিছু করবে। সেজন্য কেক,ফুল আনে। বিকেলের দিকে বিশাল ড্রয়িং রুমের একটা কোণ আর্থ,আদ্রিতা,অধরা মিলে ডেকোরেশন করে নেয়। শুভ্র বসে,বসে সেরিনের দেওয়া ডে গুলো দেখছে। গতকাল রাতের কেকের ডে থেকে শুরু করে ঢালার,এমনকি হলুদের পিক,ভিডিও আপলোড দেওয়া শেষ। শুভ্র ডে দেখে আইডি স্টক করে। হলুদের পিক গুলো খুটিয়ে,খুটিয়ে দেখে। মেয়েটাকে মাশাল্লাহ ভীষণ সুন্দর লাগছে। শুভ্র দেখেই ‘মাশাল্লাহ’ বলে। বিশেষ করে কমেন্টস গুলো পড়ে। বেশীরভাগ সৌন্দর্যের প্রশংসা করলেও অনেকের মন ভেঙে গেছে। শুভ্র সেসব কমেন্টস গুলো চেক দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। সোজা মেসেন্জারের ঢুকে মেসেজ চেক দেয়। সেরিন বেশী মেসেজ দেয়নি। তবে কমও দেয়নি। বেশীরভাগ তুই তোকারী করে দেওয়া মেসেজ। একটা মেসেজ বেশী হাসি পায় সেটা হলো, “এখন এমন ভাব দেখিয়ে ইগনোর করেন। যখন সত্যি অন্য কারোর হয়ে যাবো তখন নদীতে ঝাপ দিলে, ফ্লোরে শুয়ে গড়াগড়ি খেলে, দেওয়ালে মাথা ঠুকলেও কোন কাজ হবে না। ( ভদ্র মেয়ে দেখে গালিটা অপশনাল রাখলাম)।”
#চলবে
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। হ্যাপি রিডিং 🖤)
#হৃদয়_সায়রে_প্রণয়ের_ছন্দ|২৪|
#শার্লিন_হাসান
💞(বিয়ে স্পেশাল)💞
“এখন এমন ভাব দেখিয়ে ইগনোর করেন। যখন সত্যি অন্য কারোর হয়ে যাবো তখন নদীতে ঝাপ দিলে, ফ্লোরে শুয়ে গড়াগড়ি খেলে, দেওয়ালে মাথা ঠুকলেও কোন কাজ হবে না। ( ভদ্র মেয়ে দেখে গালিটা অপশনাল রাখলাম)।”
শুভ্র মুচকি হেসে অফলাইনে চলে আসে। এদিকটা সামলানোর কাজে ব্যস্ত সবাই। শুভ্রর এতো ব্যস্ততার ভীড়ে ভুলেই গেছে তার মায়ের ক’বর টা যিয়ারত করা হয়নি। শুভ্র তার মায়ের চেহারাটা মনে করে। বেলকনিতে আসে শুভ্র। তার মায়ের ক’বরটা দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। মনে,মনে শুধায়, “আম্মু তোমার শুভ্র নতুন জীবনের সূচনা হতে যাচ্ছে। ওপার থেকে দেখছো তো সব? জানো তো মেয়েটা ভীষণ চঞ্চল। তার কাজকর্মে একদম আমার মন খারাপ হতে দিবে না। হ্যাঁ আম্মু তোমার শুভ্রকে মেয়েটা ভালোবাসে। পাগলামী করে। ইশশ তুমি থাকলে দেখতে কীভাবে তোমায় ও মাতিয়ে রাখতো। ভীষণ আদুরে মেয়েটা। বকা দিলে চুপসে গিয়ে স্বীকারোক্তি দেয়, ‘আর করবো না,বলবো না।’ মাফ করলে সেই আগের মতোই। মেয়েটার চঞ্চলতা সবসময় তার চোখে,মুখে ব্যক্তিত্বে লেগে থাকুক। এই চঞ্চলতায় কখনো গম্ভীরতায় রুপান্তরিত না হোক।”
আদ্রিতার ডাকে শুভ্র রুমে যায়। শুভ্রকে বলা হয়েছে রেডি হতো। একটু কেক কাটবে,পিকচার নিবে ব্যাস!
সেরিন শশীকে জিজ্ঞেস করছে তার বরের পিক তুলে আনেনি কেনো? শশী সুন্দর ভাবে বলে দিয়েছে বর শপিং করার জন্য কুমিল্লা গেছে। সেরিনের খটকা লাগে। কারণ তখন শুভ্র ও কুমিল্লায় গেছে শপিং করতে। তাও তার বিয়ের জন্য! আবার শুভ্রদের ও চৌধুরী পরিবার। দু’টো জিনিস মিল পেলেও বাকী কিছুই তো পাচ্ছে না। সেরিন জানে সে চালাক কিন্তু আজকাল চালাকি কাজে লাগছে না। এই তো চালাকী করে বলতো সে সিঙ্গেল, প্রেম ভালোবাসা,বফ এসব তার ভাগ্যে নেই। কিন্তু সেই একজনের প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে একবারে তলিয়ে গেছে। শশীকেও বুঝতে দেয়নি সে যে শুভ্রর উপর ফিদা বা তাঁদের কথা হতো। তার মতে ভালোবাসা গোপনে সুন্দর। ভীষণ গোপনে। তবে চিঠি দেওয়ার ব্যপারটা অনেক ভেবে চিন্তে মাথায় আনে। এমনকি তার ফ্রেন্ড নিশাতকেও জানতে দেয়নি। সে যেদিন কলেজে পা রাখে সেদিন শুভ্রর এট্টিটিউড, রুলস,ব্যক্তিত্ব নিয়ে শুনেছে। কয়েকদিন যেতে সে উপলব্ধি করেছে। এই সেই শুভ্র যে চার তলায় বসে এক চিৎকার দিবে পুরো ক্যাম্পাস কাঁপানোর মতো। সে যা বলে তাই!পিটিতে দাঁড়িয়ে তার দেওয়া ভাষণ গুলো প্রথমে শোনলেও পরে বিরক্তি চলে আসে। কিন্তু এটা নিয়ে সিনিয়ররাও বিরক্ত। রোদের মধ্যে বসিয়ে ভাষণ দেওয়া। অনেক ভেবেচিন্তে সেরিন সিদ্ধান্ত নেয় চিঠি আদানপ্রদান করবে। প্রথম চিঠিটা লিখে ধরা খেলেও ঘাবড়ে যায়নি সেরিন। কারণ সেদিন স্বীকারোক্তি দিলে শুভ্র তাকে থা’প্পড় দিয়ে কালা বানিয়ে দিতো এটা শিওর। তাই তো দ্বিতীয় চিঠিটা একটু গড়মিল করে শুভ্রর সন্দেহে গড়মিল করে দেয়। নিজের ভাবনায় নিজে হাসে। কী লাভ হলো এতোকিছু করে? সেই তো পরিবারের পছন্দে কাকে না কাকে বিয়ে করতে হচ্ছে। তবে সেরিনের সন্দেহ হয় এটা শুভ্র হয়ত বা!
সন্ধ্যায় অক্ষর আসে। সেরিনের সাথে টুকটাক কথা বলে। বিয়েটা হুট করে হলেও সেরিন খুশি। অক্ষর আর তেমন কিছুই বলেনি।
সন্ধ্যা পেরিয়ে যায় মাহী,অক্ষর,রাফা মিলে ভেতরে মেহেদীতে বসার জন্য জায়গা ঠিক করে। ছোট্ট করে ফুল দিয়ে ডেকোরেশন করে। টাইলসের উপর বিছানার মতো করে নেয়। কুশন, ভাজের মধ্যে গোলাপ, বিভিন্ন রকমের ফুল, ঢালা ভর্তি মেহেদী,ফুল,কেক এসব দিয়ে সাজানো হয়।
সেরিন অফ হোয়াইট কালারের গাউন পড়েছে। বাকীরা গাঢ় (Moss) কালারের কুর্তি পড়েছে। সেরিনের আম্মু,কাকীমা আর ফুফি তারা গ্রীন কালারের শাড়ী। ছেলেরা মেরুন কালারের পাঞ্জাবি।
সেরিন নিশাতকে ভিডিও কল দেয়। আসার পর তাঁদের দেখা হয়নি তবে মাহীর থেকে জেনেছে নিশাত কুমিল্লায় নেই। সে ঢাকায় গিয়েছে আর এখন আসা পসিবল না। তবে যখন বিয়েতে বড় করে অনুষ্ঠান হবে তখন থাকবে। নিশাত সেরিনের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে। প্রায় নয়টা বেজে যায় তাঁদের মেহেদীতে বসতে,বসতে। প্রথমে পিক,ভিডিও করে তারপর কেক কাটে। এভাবে অনেক্ক্ষণ আড্ডা দিয়ে এগারোটার দিকে মেহেদী দিতে বসে তারা। শশী,রাফা,সাফা,মেহের তারা সবাই সুন্দর ব্রাইডাল মেহেদী দিয়ে দিতে পারে। শশী আর মেহের সেরিনকে মেহেদী দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রাফা আর সাফা দু’জনে তুষি আর সাইয়ারাকে দিয়ে দেয় মেহেদী।
মাহী সাইডে এসে ভিডিও কল করে শুভ্রকে। তারাও ছোটখাটো ভাবে অনুষ্ঠান করেছে। যদিও শুভ্র মেহেদী পড়বে না। তার বোনেরা আর মায়েরা পড়বে। সে কেক টেক কেটে সোফায় বসে আছে। আর্থ সহ মাহীর সাথে কথা বলছে। একপর্যায়ে আর্থ বলে,
“ভাবীকে দেখাও তো। আমার ভাই লজ্জায় বলতে পারছে না। যতই হোক স্টুডেন্ট বলে কথা।”
“তোর আমাকে নিয়ে বাড়িয়ে এক লাইন না বললে হয়না? কিসের স্টুডেন্ট হ্যাঁ? ও আমার কলেজে পড়াশোনা করে না। এখন ও আমার উডবি। আর ওকে আমি দেখেছি। যেই মেয়ে খাবার খেতে লেট হতে পারে বাট ফেসবুকে পিক আপ দিতে লেট হবে না।”
শুভ্রর কথায় মাহী শুধায়,
“তোহ দিবে না? আগামীতে আমার বোন সেলিব্রিটি হবে।”
মাহী ব্যাক ক্যামেরা দিয়ে সেরিনকে দেখায়। তাঁদের মেহেদী পড়ার কিছু ভিডিও নিয়ে শুভ্রকে দেয়। এছাড়া সেরিনের মেহেদী নাইটে তোলা পিকচার সবই এখন শুভ্রর কাছে আছে।
আর্থ শশীকে দেখছে। মেয়েটা সেজেছে। পিক দিয়েছে আর্থকে। আজকাল বোনের বিয়ের ব্যস্ততার জন্য আর্থকে চিনে না শশী। এই নিয়ে কিঞ্চিৎ অভিমান জমেছে। তবে এখন প্রকাশ করবে না সে। একটু ব্যস্ততা কমুক তারপর।
আদ্রিতা,অধরা, সুলতানা খানম এবং মিরা তারা মেহেদী লাগাচ্ছে। আর্থ ও তাঁদের পাশে বসে আছে। শুভ্র উপরে সোফায় বসা। আয়মান চৌধুরী ও আছে। জান্নাতুল ফেরদৌস রাতের খাবার নিয়ে তদারকি করছেন। সেদিনের মতো তিনি খাবার সাইড করে ঢেকে রাখেন।
হাতের কাজ শেষ করে তিনি নিজেও মেহেদী লাগানোর জন্য বসে পড়েন। আর্থ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,
“ছক্কা তো তুমি মারছো ভাই। তোমার বিয়ে হওয়ার আশঙ্কা নেই। বিয়ে করবা না। শেষ! আকদ আগে আমার হলো আর বিয়েটা তুমি করে নিচ্ছো।”
“ছোটরা পরের ধাপে। আগে তোর বিয়েটা হলে মানুষ নিশ্চয়ই বলতো তোর তর সয় না। চৌধুরী বাড়ীর ছেলেরা একটু রয়ে-সয়ে বিয়ে করে বুঝলি।”
” হুম বুঝেছি। সেজন্য তোমারও উচিত ছিলো একটা বছর পর ভাবী যখন মাধ্যমিক পাশ করতো তখন বিয়েটা করার।”
শুভ্র আশেপাশে তাকিয়ে মাথা চুলকায়। আর্থ মানেই তার সন্মান শেষ। আরফিন চৌধুরী, আরাফ চৌধুরী, আয়মান চৌধুরী, আর্থ,শুভ্র তারা রাতের ডিনার করে নেয়। বাকীরা পরে খাবে তাঁদের মেহেদী লাগানো শেষ হলে।
সিহান পাটওয়ারী নিজে ভাত মাখিয়ে সেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছেন। তার বড্ড আদরের মেয়ে। আগামী কালকে নতুন অধ্যায় শুরু করবে। শশী সেরিন দু’জনই বেশী আদরের। মাহিকে নিয়ে তাঁদের ওতো মাথা ব্যথা নেই তাঁদের পরিবারে মেয়েদের প্রায়োরিটি আগে।
বাবার হাতে আরাম করেই ভাত খাচ্ছে সেরিন। বড্ড মন খারাপ তার। এখন যেমন বিয়ে হলে কেমন পরপর লাগবে। যতই আগলে রাখুক তখন নতুন পরিচয় হয়ে যাবে। ছোট বেলা থেকে যেই ঠিকানায় বেড়ে উঠা, যেই বাড়ীটাকে নিজের বাড়ী বলে দাবি করতো সেটা এখন থেকে ‘বাবার বাড়ী’ বলে সম্মোধন করা হবে। আর বরের বাড়ীকে ‘শ্বশুর বাড়ী’। নিজের চেনাজানা রুমটাকে নিজের বলে দাবি করতেও ইতস্তবোধ হবে। আসলে মেয়েদের নিজেস্ব কোন বাড়ী হয়না। তবে তাদের ছাড়া বাড়ী পরিপূর্ণ ও হয়না। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। যতই আদরের রাজকন্যা হোক একদিন বিদায় নিয়ে পরের ঘরে যেতেই হবে।
বাবা মেয়ের কান্ড দেখছে বাকীরা। শশী খাবারের প্লেট এনে সিহান পাটওয়ারীকে ধরিয়ে দিয়ে বলে,
“বড় বাবা সেরিনের খাওয়া শেষ এখন আমায় খাইয়ে দাও।”
“হ্যাঁ অবশ্যই।”
সিহান পাটওয়ারী শশীকেও খাইয়ে দেন। তাদের আড্ডা খুনসুটিতে সময় কাটলেও বাকীরা একটু ব্যস্ত আগামী কালকের জন্য। সেরিন বসে,বসে আফসোস করছে ইশশ যদি তার বরের নাম্বার থাকতো তো আড্ডা দিতে পারতো।
***********
পরের দিন শুভ্র শুভ্র কালারের পাঞ্জাবি পড়ে,মাথায় টুপি দিয়ে রেডি হয়ে নেয়। নামাজ আদায় করে তার আম্মুর কব’র যিয়ারত করে নেয়। নির্দিষ্ট সময় তারা বেড়িয়ে পড়ে পাটওয়ারী বাড়ীর উদ্দেশ্য।
লিভিং রুমের এক কোণে সাদা বেলীফুলের মালা সাথে গোলাপ ফুল দিয়ে পর্দার মতো টানানো হয়। দুই পাশে দু’টো সোফা রাখা হয়। ফুলগুলো অনেকটা ঘন করে লাগানো হয় যাতে এই পাশ থেকে ওই পাশের ব্যক্তিকে তেমন একটা বোঝা না যায়।
সেরিনকে রেডি করানো হয়। বেবি পিংক কালারের কাতান শাড়ীতে সাজানো হয়। চুলগুলো খোঁপা করে তাতে গাজরা,গোলাপ ফুল লাগানো হয়। সিম্পলের মধ্যে একটা ডায়মন্ডের নেকলেস,টিকলি,কানে দুল। মেকআপ নাই বললে চলে। মেহেদী রাঙা হাতের মুঠো ভর্তি চুড়ি। দোপাট্টা বেঁধে দেওয়ায় হয়। সেরিন নিজের রুমেই পিকচার তুলে নেয়। আয়নায় নিজেকে দেখে। আজকে এতো সিম্পল লুকে তাকে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু বেশীই সুন্দর লাগছে।
সেরিনকে রুমে বসিয়ে দিয়ে তার বোনেরা যায় মেইন দরজার সামনে। চৌধুরী পরিবার চলে এসেছে। সবাইকে ওয়েলকাম করা হচ্ছে তাদের হাতে ফুলের ছোট্টো তোড়া দিয়ে। তবে শুভ্রর জন্য বড় ফুলের তোড়া রাখা হয়। সবাই ভেতরে যেতে সবার লাস্টে শুভ্রর প্রবেশ সাথে আছে আর্থ, আদ্রিতা,অধরা। তার শালিকা মহল তাকে চেপে ধরেছে টাকার জন্য। শুভ্রও খোঁচাখুঁচি করে না। যা চেয়েছে তাই দিয়ে দিয়েছে। তবে সামনে আরো বেশী দিতে হবে এটা সে জানে। শুভ্রকে ভেতরে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দেওয়া হয়। ওপর পাশে কনে বসবে আর হাতের ডান সাইডের সোফায় কাজী সাথে ছেলের বাবা বসবে।
সবাইকে কোল্ড ড্রিং দেওয়া হয়। শশী,মেহের তারা গিয়ে সেরিনকে নিয়ে আসে। সেরিন মাথা নিচু করেই আসে। সোফায় বসানো হলে তার পাশে শশী আর রাফা বসে। শুভ্র সামনে টানানো পর্দার ফাঁক দিয়ে সেরিনের অবয়ব দেখার চেষ্টা করছে। তখন আবার আর্থ তার পিঠে চাপড় মারে। শুভ্র নড়েও না চড়েও না একবারে ভদ্র ছেলে। কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করে। বিয়ে পড়ানোর সময় পিতা আরফিন চৌধুরী শুভ এবং মাতা তেহেজিব তটিনীর একমাত্র ছেলে আরজিন চৌধুরী শুভ্র’ সেরিনের বুঝতে বাকী নেই শুভ্র সাহেবের সাথেই সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছে। তবে বেশী এক্সপ্রেশন দিতে না পারলেও মনে,মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দিয়েছে সেই সাথে শুকরিয়া আদায় করেছে সেরিন। কাজীর কবুল বলা তার মুখে লেগে থাকতে,থাকতে সেরিন তিনবার কবুল পড়ে নেয়। শুভ্র বুঝে না মেয়েটার ধৈর্য কম নাকী তাড়া বেশী? তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হতে সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠে। অতঃপর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দু’টো সোফা সামনে আনা হয়। ফুলের পর্দাটা আর্থ আর শশী দুইজনে সরিয়ে নেয়। শুভ্র সেরিনের ইয়া বড় দোপাট্টা সরিয়ে তার মুখখানা দেখে। মাশাল্লাহ বলতে ভুলেনি শুভ্র। সেরিনও পলক ফেলে শুভ্রকে দেখে মুচকি হাসে। সেরিনের বিশ্বাস হচ্ছে না মানুষটা তার! তাদের দেখাদেখি শেষ হতে শুভ্রকে সেরিনের বসে থাকা সোফায় বসানো হয়। আয়না দু’জনের হাতে দেওয়া হয়। তখন শশী সেরিনকে বলে,
“বনু আয়নায় কী দেখছো?”
“সুন্দর একটা পরী পাশে তার জ্বীনকে নিয়ে বসে আছে।”
বাকীরা সেরিনের কথায় হেঁসে দেয়। শুভ্র নিজেও হাসে। তার নামটাও না! আরজিন মানে জিন শব্দটার সংমিশ্রণ। তখন আর্থ বলে,
“ভাবী এবার সিরিয়াস ভাবে বলো তো? ”
সেরিন মুচকি হেঁসে বলে,
“কঠোর ব্যক্তিত্বের সুন্দর মনের মানুষটা।”
তখন শুভ্রকে মেহের বলে,
‘জিজু তুমি কী দেখো আয়নায়?”
তখন শুভ্র মুচকি হেসে আয়নায় সেরিনের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আকাশ থেকে নেমে আসা চঞ্চল পরীটা আমার অর্ধাঙ্গিনী।”
#চলবে