#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১৫
নিরবের বাবার দেওয়া ফাইলটা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।
উনি একটা ফটো অ্যালবাম দিয়েছে,তাতে আরুশের মতো পুরো দেখতে একটা ছেলের ছেলেবেলা থেকে সমস্ত ছবি।
নিরবের বাবা- এবার বিশ্বাস হলো আপনাদের।
আরুশের বাবা- এটা কীভাবে সম্ভব,আরুশের মতো পুরো দেখতে একটা মানুষ কীভাবে হয়।
নিরবের বাবা- সেটা আমি জানিনা তবে নিরব আমার ছেলে আর সব প্রমান আমি দিয়েছি।নিরব বাড়ি চল।
নিরব- চলো।
নিরবরা চলে যায়,তরী কাঁদতে কাঁদতে ওখানেই বসে পড়ে,আরু ওকে গিয়ে সামলায়। সকলের মনের ক্ষতটা আবার তাজা হয়ে উঠেছে।সবাই কাঁদছে।
পরেরদিন…..
তরী নিরবকে ফোন করে …
তরী- হ্যালো।
নিরব- হুম বলো।
তরী- আপনি কিছু মনে করবেন না কালকের ঘটনার জন্য সরি।
নিরব- আমি বুঝতে পারছি তুমি কেন এমন করেছিলে এতে আমি কিছু মনে করিনি।
তরী- ধন্যবাদ।
নিরব- কি করছো।
তরী- এই অফিসে যাচ্ছি।
নিরব- অফিস শেষ করে আমার সাথে দেখা করতে পারবে।
তরী- ওকে।
ওদিকে….
কালকে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার জন্য আর্দ্রের উঠতে আজ দেরি হয়ে যায়।
আর্দ্র- রিতা তাড়াতাড়ি দাও অফিস যাবো তো।
রিতা- একটু ওয়েট করুন আমি দিচ্ছি
রিতা আর্দ্রের দরকারি সমস্ত কিছু এনে দেই।
বিকালে……
তরী- কী ব্যাপার
নিরব- তোমার সাথে কথা ছিল।
তরী- কী কথা।
নিরব- আমার আর আরুশের মাঝে এত মিল আমার বিশ্বাস হচ্ছে না,এটা কিভাবে হয়।
তরী- আমিও বুঝতে পারছি না।
নিরব- তরী আমার মনে হচ্ছে এর ভেতর কিছু একটা গন্ডগোল আছে।
তরী- সে তো আছেই।
নিরব- একটা কথা বলবো কিছু মনে করবে না তো
তরী- কী কথা
নিরব- আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তরী নিরবের কথা শুনে রেগে যায়।
তরী- আপনি যদি নিরব হন তাহলে আপনার স্ত্রী চাঁদনী।
নিরব- আরে কি বলছো তুমি, চাঁদনী আমার ফুফাতো বোন আর কিছু নেয় আমাদের মাঝে।
তরী- আপনার কোনো পুরাতন স্মৃতি মনে আছে, তোমার ছেলেবেলা, পড়াশোনা কিছু।।
নিরব- না আমি কিছুতেই এসব মনে করতে পারি না।
তরী- ওহ।আজ তাহলে আমি আসি।
নিরব- ওকে।আমি তোমাকে দিয়ে আসি।
তরী- না তার দরকার নেই।
নিরব- প্লিজ
তরী- ওকে।
তরী নিরবের বাইকের পিছনে বসে যাচ্ছে।
নিরব- আচ্ছা তরী আমি যদি নিরব না হয়ে আরুশ হয় তাহলে কী তুমি আমাকে ভালোবাসবে।
তরী নিরবের এমন কথা শুনে অবাক হয়ে গেল।নিরব কি বলছে এসব।
তরীকে নিরব বললো- কী হলো বলো
তরী- আরুশকে আমি ভালোবাসি আর সারাজীবন ভালবাসবো কিন্তু আরুশ রূপি অন্য কোনো মানুষকে নয়।
নিরব বুঝতে পারলো তরী কখনোই তাকে মেনে নেবে না যদি সত্যি সে আরুশ হয়।
নিরব তরী কে ওর বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
তরী বাড়িতে আসতেই ওর মা বলে- কে দিয়ে গেলো তোমাকে
তরী- কেন।
মা- কেন তুমি নিরবের সাথে মেলামেশা করেছো তুমি জানো না নিরবের সাথে থাকলে তুমি আরো কস্ট পাবে।
তরী- মা এটা হবে না কারন আমি নিরবের কাছে গেলে শান্তি পায় যেমনটা আরুশের কাছে গেলে হতো।
মা- তরী তুমি আরো জড়িয়ে পড়ছো আরুশের সাথে এটা কিন্তু ঠিক নয় আরুশ তোমার অতীত আর অতীত কে ভুলে যাওয়ায় ভালো। অতীত আঁকড়ে ধরে থাকলে তুমি জীবনে আগাতে পারবে না।
তরী- কেন মা আমি পারিনি।
মা- সেই পারা আর এই পারা এক নয় তুমি মেয়ে তোমাকে বিয়ে করতে হবে সংসার করতে হবে।
তরী- মা আমার সংসার যে ভেঙ্গে গেছে। শুরু হবার আগে সবটা শেষ হয়ে গেছে।
মা- আবার নতুন করে শুরু কর।
তরী- সেটা সম্ভব না।আমার জীবনের প্রথম ওহ শেষ ভালোবাসা আরুশ সেটা আমি কাউকে দিতে পারবো না।
মা- কিন্তু আরুশ যে আর নেয়।
তরী- কে বলেছে নেয় আরুশ আমার মাঝে বেঁচে আছে আর থাকবে।
তরী কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমে চলে যায়।আর তরী র মা মেয়ের কস্টে চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না।
রাত্রি বেলা…….
রিতা- এই আপনি সোফায় ঘুমুতে যাচ্ছেন কেন,এখানে এসে ঘুমান
আর্দ্র-না তুমি থাকো
রিতা- আসুন না।
আর্দ্র- না।
রিতা আর্দ্রের সামনে গিয়ে ওর হাতের বালিশটা নিয়ে নেয়।
আর্দ্র-বালিশ দাও।
রিতা- না।
ওরা বালিশ কাড়াকাড়ি করতে করতে ধুম পটাস….
রিতার উপর আর্দ্র গিয়ে পড়ে। আর্দ্র রিতার চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যায়।
রিতা- ওমাগো আমার কোমর গেলো।
আর্দ্র তাড়াতাড়ি উঠে বসে।
রিতা- কোমর টা গেলো
আর্দ্র- মলম দেবে চলো
রিতা- না দেবো না।
আর্দ্র-হুম।
আর্দ্র রিতা কে কোলে তুলে নিলো।রিতা লাফালাফি করতে থাকে নামার জন্য। আর্দ্র রিতাকে বিছানায় নামিয়ে দিয়ে ওর কোমড়ে জোর করে মলম লাগিয়ে দেয়।রিতা কেঁপে উঠলো ওর ভালোবাসার মানুষের স্পর্শে।
আর্দ্র মলম লাগিয়ে চলে যেতে গেলে রিতা আটকায় আর্দ্র বাধ্য ছেলের মতো রিতার পাশে শুয়ে পড়লো।রিতা এটা দেখে মৃদু হাসে।
ওদিকে…
তরী- আমাকে চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না আমাকে অনেক কিছু খুঁজে বের করতে হবে।
পরের দিন…..
তরী চৌধুরী বাড়িতে যায়…
আরুশের মা-কীরে তরী মা তুই এতো সকালে
তরী- আন্টি তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
মা- কি কথা
তরী- বলছি একটা মানুষের সাথে একটা মানুষের মিল কীভাবে থাকতে পারে।
মা- মারে সেটাই আমি বুঝতে পারছি না 😥।
তরী- আন্টি আমাকে বলো তো আরুশ কোন হসপিটালে হয়ে ছিলো
মা- ………… কিন্তু কেন
তরী- দরকার আছে।তোমার শরীর এখন কেমন
মা- ভালো আছি তুই
তরী- আমি তো খুব ভালো
মা- আমি জানি আমাকে আর বলতে হবে না।
তরী- হুম, আন্টি আর্দ্রদা আছে।
মা- হুম রুমে আছে।
তরী আর্দ্রের রুমে যায়….
আর্দ্র- আরে তরী তুই।
তরী- তোমার সাথে কথা আছে
আর্দ্র-কী বল
তরী- আরুশ কাকে কিসের জন্য জেলে দিয়েছিলো।
আর্দ্র- তুই জানলি কি করে
তরী- প্লিজ বলো।
আর্দ্র– ওকে শোন তাহলে….
আমরা তখন ভার্সিটি স্টুডেন্ট আমি আরুশ,আর তরুণ খুব ভালো বন্ধু। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু হঠাৎ তরুণের চালচলন, কথাবার্তায় পরিবর্তন বুঝতে পারলাম।ওহ সবসময় যেন ভয়ে ভয়ে থাকতো, আমাদের এভয়েড করে চলছে কিছু জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যাচ্ছে।
আরুশ- কীরে তরুণ তোকে এরকম লাগছে কেন কী হয়েছে
তরুণ- না কিছু না।
আরুশ- কিছু তো একটা হয়েছে বল আমাদের
আর্দ্র-হ্যা তরুণ বল।
তরুণ- বলছি তো কিছু হয়নি কেন তোরা এমন করছিস।
তরুন রেগে ওখান থেকে চলে যায় আমি আর আরুশ কিছু বুঝতে পারছিলাম না।তরুন এমন ব্যবহারের কারন আমাদের মাথায় আসছিলো না।তরুন যথেস্ট ভালো পরিবারের ছেলে ছিল ওর বাবা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন যদিও কোনোদিন তরুন আমাদের বলেন নি ওদের ব্যবসাটা কিসের।
কয়েকদিন কেটে যায় তবু ও তরুনের ব্যবহারের কারন আমরা বুঝতে পারি নি। তরুন ক্লাসকরতো না ভালো করে।আমরা অনেক জিজ্ঞাসা করার পর ওহ কিছু বলে নি।
এদিকে আরুশ বিজনেসের অনেক কাজে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে।অফিসের কাজের জন্যই একদিন ওকে….. যেতে হয়।সেখানে যাবার পথে রাস্তা একটা মেয়ে ওর থেকে লিফট চাই।
মেয়ে- স্যার প্লিজ আমাকে হেল্প করুন
আরুশ- কী হয়েছে
মেয়ে- আমাকে কয়েকজন গুন্ডা কিডন্যাপ করেছিলো তারপর আমাকে একটা ঘরে বন্ধ করে রাখে সেখানে আরো অনেক মেয়ে ছিলো আমি জানতে পারি আমাদের সকলকে পাচার করবে ওরা,আমি কোনোরকমে ওখান থেকে পালিয়ে এসেছি।
আরুশ মেয়েটা সাহায্য করবে বলে কথা দেয়,মেয়েটাকে বাড়ি দিয়ে এসে পুলিশের সাহায্য নিয়ে আরুশ ওদের প্রান বাচায়।আর এটা জানতে পারা যায় ওর পেছনে কে আছে।
তরী- কে
আর্দ্র- তন্ময় হাসান,আমাদের তরুণের বাবা
তরী- কী??
আর্দ্র- হুম,আমরা জানতাম না এসব পুলিশ নিজেদের তদন্তের দ্বারা খুঁজে বের করে ওনাকে তখন আমরা জানতে পারি এসব। তরুণের মা ছিলো না,ওর বাবা আর ওহ। তরুণের বাবাকে পুলিশ জেলে নিয়ে যায়।
তরী- তারপর
আর্দ্র- প্রথমে উনি ছাড়া পেয়ে যান সঠিক প্রমাণ না থাকার কারণে,তারপর আরুশ ওনার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমান জোগাড় করে ওনার বিরুদ্ধে আবার কেস করেন আর ওনার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
তরী- ওহ।আর তরুণ
আর্দ্র- আমি আর আরুশ ঠিক করি তরুনের কাছে যাব ওর বাবা এরকম কাজ করেছে তরুন নিশ্চয় কস্ট পাচ্ছে খুব। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল আমরা যখন ওর বাড়িতে যায় দেখি যে…..
#চলবে…
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১৬
আমরা যখন সেখানে যায় তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে, তরুন….
তরী- কি?
আর্দ্র- তরুন নিজেকে শেষ করে দিয়েছে ওহ সুইসাইড করেছে।আরুশ বা আমি দুজনের কেউই তরুন মৃত্যুটা মেনে নিতে পারেনি ওহ কেন এইটা করেছিলো এর কারন আমাদের আজও অজানা।
তরী- ওহ আচ্ছা তরুন যখন সুইসাইড করে ওনার বাবা কি তখন জেলে ছিলেন।
আর্দ্র- হুম তার আগের দিন ওনাকে পুলিশ গ্রেফতার করেন আর তরুনের মৃত্যুর পাঁচ দিন পর ওনার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
তরী- তরুনের লাশের পাশ থেকে কি কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছিলো।
আর্দ্র- না কোনো সুইসাইড নোট ছিলো না।
তরী- ওহ তরুনদের বাড়ি কোথায় ছিলো।
আর্দ্র- তুই এসব জেনে কি করবি,
তরী- দরকার আছে তুমি বলো।
আর্দ্র- ……………..
তরী- ওকে ,আমি তাহলে আজকে আসছি।
আর্দ্র- ওকে
তরী চৌধুরী বাড়ি থেকে বেরিয়ে ড্রাইভার কে বললো – আঙ্কেল
– বলো মামণি
– আপনি চলে যান আমি গাড়ি ড্রাইভ করে চলে যাবো।
– ঠিকাচ্ছে।
ড্রাইভার তরী কে গাড়ির চাবি দিয়ে চলে যায়,তরী গাড়িতে বসে অফিসের ম্যানেজারকে ফোন করে- হ্যালো স্যার।
ম্যানেজার- হুম তরী বলো।
তরী- বলছিলাম যে আজ আমি অফিসে যেতে পারবো না আপনি একটু ওদিকটা সামলে নিন।
ম্যানেজার- ঠিকাচ্ছে তা তোমার শরীর খারাপ নাকি।
তরী- না সেরকম কিছু না একটা কাজ আছে তাই।
ম্যানেজার- ওহ।
তরী ম্যানেজারের ফোন কেটে তরুনদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
তরুনদের বাড়ি…..
তরী দেখে বাড়িটা একদম শান্ত হয়ে আছে, বাড়িটাতে এখন কেউ থাকে না। আশেপাশে বেশ কয়েকটা বাড়ি আছে।তরী ঠিক করলো তরুনদের বাড়ির পাশের বাড়িটাই যাবে।
তরী নিজের প্ল্যান মতো পাশের বাড়ির দরজায় নক করল।একটা মেয়ে দরজা খুললো…
মেয়ে- কাকে চাই।
তরী- বাড়িতে কি কেউ আছেন
মেয়ে- হুম আছে
তরী- আমি কি ওনাদের সাথে একবার দেখা করতে পারি।
মেয়ে – আচ্ছা আসুন।
মেয়েটা ওকে বসিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে যায় ।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটা ফিরে আসে সাথে একজন মধ্যবয়সী মহিলা।
মহিলা- আপনি কে??
তরী- আমি তরীতা আপনি আমাকে চিনবেন না।আমি একটা দরকারে আপনার এখানে এসেছি।
মহিলা- কি দরকার
তরী- আমি আপনাদের পাশের বাড়ির সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।
মহিলা- মানে কোন বাড়ি
তরী- হাসান ভিলা সম্পর্কে
মহিলা- আপনি কে আর অত বছর পর হাসান ভিলা সম্পর্কে জানতে এসেছেন কেন।
তরী- প্লিজ আমাকে সবটা বলুন আপনারা যা তা জানেন প্লিজ।
মহিলা- আপনার কি সম্পর্ক ওই বাড়ি সম্পর্কে
তরী- অনেক কিছু, আপনি প্লিজ বলুন
মহিলা- ওকে বলছি, তুমি যাও এখান থেকে
আগের মেয়েটা ওই মহিলার কথা শুনে ওখান থেকে চলে যায় উনি বলতে চালু করেন-
তরুনদের বাড়িতে ওর বাবা আর ও ছাড়া কেউ ছিলো না,ওর মা একজন খুব ভালো মেয়ে ছিল আমাকে খুব ভালোবাসতো আমাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব সম্পর্কে গড়ে উঠেছিলো কিন্তু তরুনের বাবা এটা যেন ঠিক পছন্দ করতেন না। আমি ব্যাপার টা বুঝতে পেরে ওদের বাড়িতে যাতায়ত কমিয়ে দেয়। আমি আমার বাপের বাড়ি ছিলাম হঠাৎ একদিন শুনি তরুনের মা মারা গেছেন আমি তাড়াতাড়ি করে চলে আসি আমার কেন জানি মনে হয়েছিলো তরুনের মায়ের মৃত্যুটা স্বাভাবিক নয়।
তরী- মানে
মহিলা- আমার মনে হচ্ছিল কিন্তু আমি ঠিক বলতে পারবো না।
তরী- কি বলুন
মহিলা- ওকে কেউ খুন করেছে।
তরী চমকে উঠলো এমন কথা শুনে।
তরী- আপনার এরকম মনে হবার কারন ??
মহিলা-কারন অনেক কিছু ছিলো আমি ওনার শরীরে অনেক দাগ দেখেছি মূলত দেখে মনে হচ্ছিল ওনার সাথে কেউ জোর করে কিছু খারাপ করার চেস্টা করেছিলো।
তরী- ওহ, আচ্ছা ওনার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিলো বলে সবাই জানে।
মহিলা- সবাইকে তরুনের বাবা বলেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
তরী- ওহ
মহিলা- হুম, ওর মায়ের মৃত্যুর পর তরুন অনেকটা চুপচাপ হয়ে পড়ে,তারপর আবার আসতে আসতে স্বাভাবিক হয়ে পড়ে । তরুণের মায়ের অনেক বছর পড় আমরা জানতে পারি তরুনের বাবা একজন ক্রিমিনাল।এটা সহ্য করতে না পেরে তরুন সুইসাইড করে।
তরী- এটা আপনার মনে হয় তরুন সত্যি সুইসাইড করেছিলো।
মহিলা- মানে
তরী- আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তরুনের মৃত্যুটাও ওর মায়ের মতোই রহস্যজনক।ওনাদের মারা যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়।
মহিলা- এটা হতে পারে। কারন তরুন খুব শক্ত প্রকৃতির ছিলো ওর মতো ছেলে সুইসাইড করেছে এটা মেনে নিতে আমাদের ওহ খুব কস্ট হয়েছিলো।
তরী- আচ্ছা তরুনের কোনো আত্মীয় স্বজন কে আপনি চেনেন
মহিলা- না তেমন কাউকে তো আমি চিনি না আর না কাউকে ওদের বাড়িতে কখনো কাউকে আসতে যেতে দেখেছি। তবে
তরী- কি
মহিলা- তরুনের একজনের সাথে সম্পর্ক ছিলো
তরী- কে
মহিলা- নাম তো ঠিক মনে নেয় তবে ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসতো।
তরী- ওহ আর কিছু জানেন আপনি।
মহিলা- না।
তরী- এটা আমার নম্বর……….যদি আপনার কিছু মনে পড়ে তাহলে আমাকে প্লিজ ফোন করে বলবেন।
মহিলা- ঠিকাচ্ছে।
তরী- তাহলে আজ আসি প্রয়োজন পড়লে আবার আসবো।
মহিলা- ওকে।
তরী মহিলাটাকে বিদায় দিয়ে বাইরে এসে তরুনদের বাড়ির সামনে যায়
তরী- একবার ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখলে হয়, কিন্তু আমি এটা অন্যায় , কারোর বাড়িতে চোরের মত যাওয়া কি ঠিক হবে।( চিন্তিত কন্ঠে)
তরী গাড়ি চালাতে লাগলো কিন্তু ওর মন আনমনা হয়ে আছে হঠাৎ ওর গাড়ির সামনে একটা গাড়ি চলে আসে আর ধাক্কা লেগে যায়।
তরী- এই যা।
তরী তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে আসে,ওপর গাড়ির ব্যক্তিটিও গাড়ি থেকে নেমে তার গাড়ির কি ক্ষতি হয়েছে সেটা দেখতে থাকে।
তরী- সরি আমি আসলে বুঝতে পারিনি।
তরীর কন্ঠ শুনে ব্যক্তিটা মাথা তুলে তাকাতেই তরী আর সে দুজনেই চমকে উঠলো
দুজন একসাথে- তুই
দুজন একসাথে বলে উঠে হেসে ফেললো দুজন।
তরী- সোহাগ কেমন আছিস,কোথায় ছিলি এতদিন।
সোহাগ- আরে আস্তে আমি বলছি সবটা
তরী- বল।
সোহাগ- আগে তোর খবর কি বল বিয়ে করে নিয়েছিস,আরুশ কেমন আছে।
তরীর মুখটা কালো ছায়ায় ঢেকে যায়। সোহাগ তরীর মন খারাপ এর কারন টা বুঝতে পারেনা।
সোহাগ- কি রে কি হয়েছে।
তরী- অনেক কথা, এখানেই বলবো নাকি চল কোথাও গিয়ে বসা যাক।
সোহাগ- ওকে।
তরী আর সোহাগ একটা কফিশপে যায়।
সোহাগ- বল এবার
তরী- আরুশ আর নেয়।
সোহাগ- মানে( অবাক হয়ে)
তরী- আরুশ মারা গেছে।
সোহাগ চমকে উঠলো এমন কথা শুনে।
সোহাগ- কিভাবে,কবে??
তরী সোহাগকে সবটা বললো তরী কাঁদছে সোহাগ তরী কে কি বলে সান্তনা দেবে ওহ জানে সবটা শুনে ওহ নিজেই এতটাই শক হয়েছে যে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
সোহাগ তরীর ছোটো বেলার বন্ধু তরীকে ওহ ভালো করে চেনে তরী যে আরুশকে ঠিক কতটা ভালোবাসে সেটা সোহাগের থেকে ভালো করে কেউ জানে না।
তরী নিজের চোখের পানি মুছে,একটা হাসি দিয়ে সোহাগকে বললো- এবার তোর কথা বল।
সোহাগ- আমি আর কি বাবাকে কাজের জন্য অন্য জায়গায় যেতে হলো তাই আমরাও চলে গেলাম।
তরী- আমাকে একবার জানালি না আর না কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখলি।
সোহাগ- সরি রে আমি এরকম করতে চাইনি হঠাৎ করে সবটা হয়ে যায় আর তোর নম্বরটা হারিয়ে গিয়েছিলো তাই।
তরী- থাক আর বাহানা দেখিয়ে লাভ নেই,বল এখন কি করছিস।
সোহাগ – কি আর করবো ওই………
তরী সোহাগের কথা শুনে হাতে চাঁদ পাবার মতো আনন্দ পেলো।
#চলবে….