স্বপ্নীল
৫৪,৫৫
ধূসর ভাবতেই পারেনি সোহার সাথে তার আবার দেখা হবে।মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে! কি নিষ্পাপ লাগছে।আল্লাহ তায়ালা যেন সব মায়া এই মুখটা ঢেলে দিয়েছে।তার মায়াবতী তার সামনে শুয়ে আছে বিশ্বাস হচ্ছে না।ঠোঁটের কোনো হাসি ফুটে উঠে।
বসা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় ধূসর।বারান্দা যে য়ে সোহার দিকে তাকায়।সোহাকে কেন এভাবে উন্মাদের মত হাঁটছিল আর কান্না করছিল।কি হয়েছে সোহার? এখানে আসার পর থেকে রুম থেকে বের হচ্ছে না।সারাদিন শুধু কান্না করে।ঘুমালে শুধু কান্না বন্ধ হয়।কিছু জিজ্ঞেস করলে কিছু বলে না।চুপচাপ থাকে।একদিকে সোহাকে পেয়ে ধূসর খুশি হয়।আবার অন্যদিকে খুব চিন্তা হচ্ছে সোহার এই পরিবর্তনে।কেমন হাসি খুশি মেয়েটা এখন সারাদিন মুখ মলিন করে বসে থাকে।হাসে না!
সোহার এই মলিন মুখটা দেখলে ধূসরের খুব কষ্ট হয়।ভালো লাগে না সোহাকে এভাবে দেখতে।কত রকম কথা বলে সে তারপর একবার ও হাসাতে পারেনি।মেয়েটা প্রান যেন অন্যকোথাও।এখানে যেন দেহটা পড়ে আছে শুধু।
স্বপ্ন কিছুই ভালো লাগছে না।কিসের শাস্তি দিচ্ছে সে নীলকে? অন্যায় সে নিজেই করেছে।নীলের কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।কল করে নীলকে।প্রথমবার ধরেনি দ্বিতীয় বার ফোন বাজতে নীল কল ধরল।কোনো কথা বলল না।স্বপ্ন বলল,
-” হ্যালো!”
শব্দহীন ভাবে কেঁদে চলছে নীল।এতদিন পর স্বপ্নর ফোন পেয়েছে। অন্তরে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।এভাবে নীলকে নিরব দেখে স্বপ্ন আবার বলল,
-” হ্যালো।”
নীল চোখের পানি মুচে! গলা পরিষ্কার করে বলল,
-” হ্যালো!”
স্বপ্নের বুকের ভিতরে ছেৎ করে উঠল।এমন শুনাচ্ছে কেন নীলের কণ্ঠে।নীল কী কান্না করছিল।
-” কেমন আছো? ”
-” ভালো!
আবার দুজন নিরব হয়ে গেল।স্বপ্ন বলল,
-” আমায় জিজ্ঞেস করবে না। কেমন আছি আমি! ”
-” ভালো আছেন বলেই তো এতদিন পর আমায় খোঁজ নিচ্ছেন।”
স্বপ্ন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
-” আমায় ক্ষমা করো!”
নীল না জানান ভান করে বলল,
-” কেন? ”
-” সেদিনের ব্যবহারে জন্য।”
-” ওহ!”
আবার দুজন নিরব হয়ে যায়।স্বপ্ন যেন কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছে না।সব কথা যেন হারিয়ে গেল।নীল বলল,
-” কথা বলছেন না যে।”
-” তুমি আমার শর্ত পূরণ করেছো কিন্তু আমি তোমার সুর ওয়ালার সাথে দেখা করাতে পারিনি।তার জন্য ভেরি ভেরি স্যরি।”
নীল কোনো কথা বলল না।সুর ওয়ালা করে এদিন সে লাফিয়ে ছিল। আর এখন সুর ওয়ালা কথা শুনলে কোনো ফিল হয় না।যেন খুব স্বাভাবিক কিছু।স্বপ্ন আজ নীলের মধ্যে উত্তেজনা নেই দেখে বলল,
-” আমি তোমাকে মিথ্যে বলছি।তোমার সুর ওয়ালাকে আমি চিনি না।”
-” সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।”
-” তুমি কিভাবে জানতে?”
-” কিছু কথা অজানা থাকাই ভালো।”
স্বপ্ন ধূসরদের বাসায় এসে সোহাকে দেখে বিষ্মিত! সোহা ধূসরে বাসায় কী করে এলো।স্বপ্ন ধূসরের হাত টেনে ফিসফিস করে বলল,
-” এই মেয়ে এখানে কি করে? ”
-” আমার রুমে চল।সব খুলে বলছি।”
স্বপ্ন সোহার সাথে কুশল বিনিময় করে ধূসরের রুমে যায়।স্বপ্ন জিজ্ঞাসাচুক ভাবে তাকাতেই ধূসর বলল,
-” কিছুদিন আগে মাকে নানুর বাড়িতে দিয়ে আসতেই সোহা আমার গাড়ির সামনে পড়ে।অজ্ঞান হয়ে যায়।তাই বাধ্য হয়ে আমার বাসায় নিয়ে আসি।”
-” ভালো কথা! তাহলে ও এখন তোর বাসায় কি করছে।”
স্বপ্নের কথা ধূসর খুব আশ্চর্য হয়।স্বপ্নকে ভালো করে পরখ করে। স্বপ্ন তা বুঝতে পড়ে বলে,
-” না মানে…!”
-” আরে! সোহা কোনো কথাই বলছে না।সারাদিন চুপচাপ থাকে আর কান্না করে।তারপর অনেক কষ্ট কথা বলাই। ওই দিন এত রাতে উন্মাদের মত ছুটছিল কেন? কোনো কিছু বলেনি।তারপর আমি তাকে বাসায় দিয়ে আসতে বলি।সে যাবে ন। মির্জাপুর। অন্যকোথাও চলে যাবে।একটা মেয়ে এই অচেনা শহরে একা কোথায় যাবে। তাই বাধ্য হয়ে আমার বাসায় রেখে দি।”
স্বপ্ন ধূসরের কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
-” ভালো করেছিস।”
এটা বলে স্বপ্ন সমুদ্রকে ফোন করে।কিছুদিন আগেই স্বপ্ন জানতে পারে সোহার আর তামিমের ব্যাপারটা।সমুদ্র বলছে তাকে।এখানে সোহাকে দেখতে পাবে কল্পনার বাহিরে ছিল।দেখা হয়ে ভালোই হয়েছে।অন্তত তামিমকে আর কষ্ট পেতে হবে না। সমুদ্রকে সবটা বলে।সমুদ্র সঙ্গে সঙ্গে তামিমকে ফোন করে জানায়। ধূসরের মাথা দিয়ে কিছু ঢুকছে না। সে প্রশ্ন করল স্বপ্নকে,
-” কাকে খুঁজে পেয়েছিস।আর কাকে বলছি তা জানাতে।”
-” কালকে জানতে পারবি।আর শোন সোহাকে কিছুতে যেতে দিবি না।কালকে অব্ধি আটকে রাখবি।”
এটা বলে স্বপ্ন চলে যায়। সোহা যেতে চাইলে। ধূসরে তাকা যেতে দেয় না।জোর করে রেখে দেয়।ফোন পাওয়ার সাথে সাথে তামিম ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেয়।দুপুর দুইটায় তারা তিনজন মিলে ধূসরে বাসায় আসে।তামিম দেখে ধূসর অবাক হয়।তামিম সবার আগে বাসায় ঢূকে পড়ে।ড্রয়িং রুমে দাঁড়িয়ে চারদিকে চোখ বুলায়। সোহাকে দেখার জন্য।দেখতে না পেয়ে।সোহা সোহা বলে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে।সোহা হাটুতে মাথা মুড়ে কান্না করতে থাকে।হঠাৎ করে তার কানে আসে সেই চিরচেনা কণ্ঠ।চট করে উঠে দাঁড়ায়।এই কন্ঠে তার তামিমের।কিন্তু এখানে কি করে তামিমের কন্ঠ শুনবে।সে ভুল শুনে তো।আবার তামিম ডাকে।এবার সোহা বের হয়ে আসে।তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তামিম।দৌড়িয়ে যে এ ঝাপটে ধরে।হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে।সমুদ্র আর স্বপ্ন মুখে হাসি ফুটে উঠলে ধূসরে মুখে উঠেনি।বুকের ভিতরে আশার আলোটা কিছুটা জেগে উঠেছিল সোহাকে পেয়ে।কিন্তু দৃশ্য দেখে নিভে গেল।বুকের ভিতর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল।কাচ ভাঙা শব্দ হয় মন ভাঙার শব্দ হয় না। আজ আবার তার মনটা ভেঙে গেল।চোখ কোনে বিন্দু বিন্দু পানি জমা হয়ে এসেছিল।সবার অলোকে মুচে ফেলে।কিন্তু সোহার চোখে সেটা এড়ানি।
-“এভাবে কেন চলে এলে! অপেক্ষা করতে পারলে না আমার জন্য।”
সোহা কোনো কথা বলেনি।দোষটা তারই।সেদিন সবার এত এত খারাপ কথা শুনেছে। ইচ্ছা করেছিল মরে যেতে।কিন্তু পারেনি যে তার অনাগত সন্তান আর তামিমের ভালোবাসা টানে।ভুল করেছে সেদিন সোহা।অপেক্ষা না করে।তাই তো এই কয়দিন বিরহে দিন কাটাতে হচ্ছিল।
# চলবে
কাউছার স্বর্ণা
লেখার আগ্রহ কমে গেছে।আপনাদের কাছে বোধহয় ভালো লাগছে না গল্পটা।ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন।
স্বপ্নীল
৫৫
সোহাকে নিয়ে মির্জা বাড়িতে তামিমের সাথে সমুদ্র,স্বপ্ন আসে।তাঁরা এখন মির্জা বাড়ির চৌকাঠে দাঁড়িয়ে আছে।সোহাগী কিছুতেই সোহাকে ছেলের বউ হিসেবে মেনে নিবে না।তিনি বার বার বলেন,
-” একটা কাজের মেয়ে নাকি আমার ছেলের বউ হবে।কি যোগ্যতা আছে সোহার।তামিমের বউ হওয়ার।”
সোহাগী কথায় সোহা মাথা নিচু করেই ছিল।কোনো কথা বলেনি।সে জান তো এরকম একটা পরিস্থিতি তৈরী হবে।এই ভয়ে তামিমের ভালোবাসা গ্রহন করেনি।শেষ পর্যন্ত তামিমের ভালোবাসার কাছে হার মানতে হয়েছে তাকে।
সোহার অপমান কিছুতেই তামিমে সহ্য হচ্ছিল না।তামিম বলল,
-” তুমি কিন্তু বার বার সোহাকে অপমান করছো।”
-” এই ছোটলোকদের মান অপমান আছে নাকি। থাকলে এমন কাজ করত না।”
আমেনা এককোণে দাঁড়িয়ে মুখের মধ্যে কাপড় দিয়ে কান্না করছে।তামিমের মেজাজ চটে যায়।তামিম বলল,
-” মা তুমি কি চুপ করবে নাকি আমরা চলে যাবে।”
সোহাগী অবাক হয়ে বলল,
-” আমরা মানে! ”
-” তুমি যদি সোহাকে মেনে না নেও।তাহলে আমরা চলে যাবো।”
-” তুই কেন যাবি? যেতে হলে এই নির্লজ্জ মেয়েটা যাবে।” সোহার দিকে আঙুল তুলে বলল সোহাগী।ছেলের কথায় সোহাগী অবাক হয়! সে আবার বলল,
-” একটা কাজের মেয়ের জন্য তুই এ বাড়ি ছেড়ে।আমাকে ছেড়ে চলে যাবি।”
-” তুমি বাধ্য করেছো মা!”
সোহাগী সোহার কাছে যেয়ে বলল,
-” এই মেয়ে যাদু করে তোকে বশে নিয়েছে।এই মেয়ে কি যাদু করেছিস আমার ছেলেকে!”
সোহা কিছু বলতে নিলেই সোহাগী রাগ করে সোহাকে ধাক্কা দেয়।সোহার ভাগ্য ভালো বলেই সোফায় যেয়ে পড়েছে সে।উপস্থিত সবাই সোহাগীরর কাজে হতবাক হয়।তামিমে দ্রুত যে এ সোহাকে তুলে ধরে দাঁড়ায় করায়।
-” তোর কোথাও লাগে নি তো।”
-” নাহ! আমি ঠিক আছি।”
তামিম মায়ের কাছে এসে মেজাজ গরম করে বলল,
-” সোহাকে কেন তুমি ধাক্কা দিলে।তুমি কি জানো না।সোহা এখন একা নয়।তার সাথে আমার সন্তান আছে।”
সোহাগী বাহবা দিয়ে বলল,
-” সোহা যেমন তোর সন্তান গর্ভে ধারণ করেছে।তেমনি আমি তোকে দশমাস দশদিন গর্ভে ধারণ করেছি।তোর কাছে যেমন তোর স্ত্রী সন্তান প্রিয়।তেমনি আমার কাছে আমার সন্তান প্রিয়।আমার সন্তানে সাথে খারাপ কিছু হোক সেটা আমি কিছুতে মেনে নিতে পারব না।”
এভাবেই মা ছেলের মধ্যে তর্ক হতে থাকে।সমুদ্র এতক্ষণ দাঁড়িয়ে সব দেখছিল।এখন আর চুপ থাকতে পারছে না।জল অনেক দূর গড়িয়ে যাচ্ছে।এসব কিছু এখানেই থামাতে হবে।সমুদ্র আদেশেরসুরে বলল,
-” তামিম তুই সোহাকে নিয়ে উপরে যায়।”
তামিম কথা বলতে নিলে সমুদ্র বলল,
-” যেটা বলছিস সেটা কর।”
তামিম আর কথা বাড়ায় নি।সোহাকে নিয়ে উপরে চলে যায়।সমুদ্র স্বপ্নকে উপরে যেতে বলে।ছোটমাকে নিয়ে সমুদ্র তার ঘরে যায়।খাটের উপরে ছোট মাকে বসায়।ফ্লোরে বসে সে।ছোট মায়ের চোখের জল মুচে দিয়ে বলল,
-” তুমি যেমন তামিমকে ছাড়া থাকতে পারবে না।তামিম তেমন সোহাকে ছাড়া থাকতে পারবে না।”
-” আমার চেয়ে ওই মেয়ে তামিমের কাছে বড় হয়ে গেল।”
-” এসব কি বলছ তুমি ছোট মা।তোমার স্থান তামিমের কাছে সবার উপরে।তোমার চেয়ে তামিমের কাছে অন্য কিছু কোনোদিন বড় হবে না।”
-” তাহলে কেন আমার কথার অবাধ্য হয়ে ওই মেয়ের সাথে থাকতে চায়।”
-” ধরে নাও তামিম তোমার কথা রেখেছে।সোহাকে ছেড়ে দিয়েছে।সোহাকে ছাড়া কি তামিম ভালো থাকবে।থাকবে না! গুমড়ে গুমরে মরে যাবে।নিজেকে তিল তিল করে শেষ করে দিবে।এই কয়দিন তামিম যা করেছে তার চেয়ে দ্বিগুন পাগলামো করবে। তুমি মেনে নিতে পারবে তামিমের এভাবে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া।বলো ছোট মা! তুমি পারবে!”
সোহাগী চুপ।সমুদ্র ভুল কিছু বলেনি।সোহা চলে যাওয়ার পর থেকে সারাদিন রুমে বন্ধ করে থাকত।সিগারেট ছাড়া কিছুই খেত না।দাদুর বারণ ও শুনেনি। এই কয়দিনে ছেলের কী বিবস্ত্র চেহারায় না বানিয়েছে।চোখের নিচে কালশিটে পড়ে গেছে।ছেলের এই কয়দিন এভাবে দেখে তার নিজের ও নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
ছোট মাকে চুপ থাকতে দেখে সমুদ্র বলল,
-” জানি পারবে না।তাহলে কেন তামিমের থেকে সোহাকে আলাদা করতে চাচ্ছো।তামিম যদি সোহাকে নিয়ে সুখে থাকতে চায়।তাহলে কেন তাদের সুখে বাধ্য দিচ্ছো।তুমি চাইবে না তামিম অসুখী থাকুক।”
★★★
খাওয়া দাওয়ার পর সমুদ্র আর স্বপ্ন চাঁদে বসে আলাপ করছিল।তখনই সমুদ্র ফোন আসে।স্কীনে রোদ নামটা ভেসে উঠে।স্বপ্ন বলল,
-” তোর লায়লীকে বলে আসিস নি।এখন হয়তো তোর খোঁজে পাগল হয়ে ফোন দিচ্ছে।”
স্বপ্নের কথায় সমুদ্র মুচকি হাসে।ফোন নিয়ে উঠে দাঁড়ায়।ফোন ধরেই।রোদ কর্কশ কন্ঠে বলল,
-” তুই কোথায়?রাত বারোটা বাজে এখন বাসায় আসছিস না কেন? ”
-” তুমি তো খুব বেয়াদব মেয়ে।স্বামীকে তুই -তোকারি করছো।”
রোদ এবার কমল কন্ঠে বলল,
-” কখন আসবেন! অনেক রাত হয়েছে?”
-” আজকে আর বাসায় যাবো না?”
-” বুঝেছি। এনার সাথে আজকে থাকবেন।”
-” স্টুপিড গার্ল।সব সময় বাজে কথা।আমি গ্রামের বাড়িতে আছি।”
-” কি? আপনি ঢাকায় নেই।গ্রামে যখন গেছেন।আমায় নিয়ে গেলে কি হত।আমি এখন কি করে একা থাকব।”
-” তুমি তো চাইতে। তোমার থেকে দূরে থাকতে।”
-” তাই বুঝি এত দূরে।”
-” কই এত দূরে।”
-” আপনার কাছে তো অল্পই মনে হবে।”
-” খেয়েছো।”
-” নাহ! আমি ভেবেছি আপনার সাথে খাবো।”
-” স্যরি।একটা কাজে আসতে হয়েছে।তোমাকে জানাতে পারিনি।এখন যে এ তুমি খেয়ে নাও।”
-” কালকে কী বাড়ি আসবেন? ”
-” নাহ!”
সমুদ্র ‘ নাহ’ শুনে রোদ কেঁদে দেয়।সে বলল,
-” আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারব না।কালকেই চলে আসবেন।”
-” রোদ-বৃষ্টি! আমি কাজে এসেছি।কাজ সেরে গেলে চলে আসব।”
-” আপনি কালকে না আসলে।আমি চলে আসব।”
-” এভাবে কান্নাকাটি করা কি আছে।আমি চলে আসব।”
-” আপনি খুব খারাপ।সব সময় আমার সাথে এমন করেন।আমায় কষ্ট দিতে আপনার ভালো লাগে।”
সমুদ্র কথা বলতে বলতে রুমে চলে আসে।রোদ যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুমায় নি।তখন পর্যন্ত কথা বলেছে।সমুদ্র বিড়বিড় করে বলল,
-” কাছে থাকতে বলে দূরে যেতে।এখন যখন দূরে আছে।তখন বলছে কাছে আসতে।পাগলী! ”
আজ আকাশে চাঁদ নেই।আছে শুধু হাজারো তারা।তারায় তারায় ভরে আছে পুরো আকাশে।যেন তারাদের মেলায় বসেছে।তারাদের দিকে তাকিয়ে নীলের কথা ভাবছে স্বপ্ন।এ বাড়িতে আসার পর।ড্রয়িংয়ে শুধু একবার নীলকে দেখেছে।আগের থেকে অনেক শুকিয়ে গেছে।চোখ মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।আগের মত চঞ্চলতা নেই।তখন দেখা হওয়ার পর আর একবার ও দেখা হয়নি।আজকে সবার সাথে খেতে ও আসেনি।
তখনই স্বপ্ন’র পিছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরে।এই তো তার নীলের স্পর্শ।তার মানে নীল তাকে ঝাপটে ধরে আছে।ভাবতেই ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠে।হাত ধরে নীলকে সামনে এনে দাঁড়া করা।নীল নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।শব্দহীন ভাবে কাঁদছে।স্বপ্ন চিবুক ধরে মুখ তুলে।নীলের চোখে পানি দেখে বুকের ভিতরে ছেৎ করে উঠে।বুকে ভিতরে হাহাকার করতে থাকে।তার নীল কাঁদছে।স্বপ্ন ঝাপটে ধরে।বুকের ভিতরে মিশিয়ে ধরে। নীল স্বপ্নের শার্ট খাপচে ধরে কান্না করতে করতে বলল,
-” আই লাই ইউ! আমি ভালোবাসি আপনাকে।”
এই শব্দটায় শুনতে চেয়েছে নীলের মুখ থেকে।অবশেষে নীল তাকে ভালোবেসে বলেছে।পেরেছে সে।সুর ওয়ালা বাদেই নীলের মনে জায়গা করে নিতে পারে।
কাউছার স্বর্ণা।
গঠনমূলক মন্তব্য চাই।ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন