সুখ সন্ধানী পর্ব-১২

0
463

#সুখ_সন্ধানী
পর্ব-১২
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
★★★

রাফি বিব্রত মুখে বাসায় প্রবেশ করে।নোহার চুপসানো মুখ দেখে রাফির হাত কাঁপছে।মেয়েটা সেই ছোটবেলা থেকেই তার জন্য পাগল।বেহায়ার মতো বারবার তার সামনে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করেছে,নিজের দুর্বলতা দেখিয়ে দিয়েছে কিন্তু রাফি ভুল করেও এক পা এগিয়ে যায়নি।আজকে জিনিয়া ছুটির সময় বসের সামনে ফট করে বলে ফেলল,আজকে রাফির বাসায় আসবে।বসের সামনে বিধায় আর মানা করতে পারল না।অগ্যতা তাকে আনতেই হলো।রাফির চিন্তায় ঘাম ছুটে যায় যে নোহা এটা দেখলে কি প্রতিক্রিয়া দেবে কিভাবে ব্যাপারটা নেবে।হলোও তাই আজকে নোহা’ই দরজা খুলল,জিনিয়াকে দেখেই কেমন ব্যাথাতুর চোখে তার দিকে তাকাল যেন চোখ দিয়েই বলছে “এটা হয় না রাফি”।
কিন্তু নোহার ভাবনাচিন্তা দূর করে জিনিয়া একহাত দিয়ে রাফির হাত আঁকড়ে ধরল।মাখমাখ হয়ে বলল,
—“এখানেই দাড়িয়ে থাকবে?চল বাসার ভেতরে যাই।”
রাফি নোহাকে আরেকবার অবাক করে দিয়ে ভেতরে পা বাড়ায়।
নোহা একবার রাফির দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার আঁকড়ে ধরা হাতের দিকে।কই নোহা ধরলে তো ঝাড়ি মেরে ফেলে দেয় এই মেয়েটাকে প্রশয় দিচ্ছে কেন?এটা কি রাফির গালফ্রেন্ড?কিন্তু শিহাব ভাইয়া যে বলল রাফির গালফ্রেন্ড নেই।মিথ্যা বলেছিল!নোহার চোখ উপচে পানি আসতে নিলে নিজেকে সামলে দরজা আটকিয়ে তাদের কাছে যায়।গিয়ে দেখে অসভ্য নিলজ্জ মেয়েটা রাফির সাথে গা ঘেষে বসে আছে।সারা সোফা খালি রেখে এত কাছে বসেছে কেন?প্রিয় পুরুষের এতো কাছে কি অন্য কাউকে সহ্য করা যায়!এতো সহয অন্য কাউকে এমন করতে দেখা!নোহা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।রাফি নোহার দিকে তাকিয়ে বলল,
—“বাসায় কেউ নেই?কাউকে দেখছি না।”

নোহা অতি কষ্টে কথা বলে,
—“রাসেল ভাই আসছে তাই সবাই খালার বাসায়।”
তখনি জিনিয়া অভ্যাসমতো গলগল হয়ে বলল,
—“অহ নো।রাফি তাহলে কি কারো সাথে পরিচয় হবে না?”

নোহার বুকে যেন সামুদ্রিক কাকড়া খামচে ধরেছে।গালফ্রেন্ডকে বাসায় পরিচয় করাতে এনেছে।
রাফি নোহাকে দেখিয়ে বলল,
—“আমার কাজিন নোহা।আর নোহা আমার বসের মেয়ে জিনিয়া।”

জিনিয়া বলল,
—“হাই নোহা।তুমি দাঁড়িয়ে কেন বস।”
নোহা কিছু না বলে ধপ করে সোফায় বসল।
জিনিয়া রাফির দিকে তাকিয়ে বলল,
—“আমি শুধু তোমার বসের মেয়ে আর কিছু না?”

রাফি জিনিয়ার প্রশ্নে বিব্রত হলো।বিরস মুখে বলল,
—“হ্যাঁ কলিগ।”

জিনিয়া আহ্লাদী গলায় বলে,
—“যাহ দুষ্ট।”

রাফি এবার নোহার দিকে তাকাল।নোহা কঠিন চোখে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।রাফিকে তাকাতে দেখে গম্ভীর গলায় বলল,
—“চা না কফি?”
রাফি গম্ভীর গলায় বলল,”কফি দে।”

জিনিয়া উশখুশ করে বলল,
—“রাফি ফ্রেস হলে ভালো লাগত।”

রাফি উঠে বলল,
—“হ্যাঁ ফ্রেস হওয়া দরকার।”

জিনিয়া সুযোগটা যাস্ট লুফে নিল।রাফির কাধে মাথা রেখে বলল,
—“তাই ভালো!চল রাফি রুমে চল।”

রাফি জিনিয়াকে সরাতে সরাতে নোহার দিকে তাকিয়ে দেখল,অবিশ্বাস চোখে তাকিয়েছে।যেন নোহার বিশ্বাস হচ্ছে না।রাফি চোখ কুচকে বলল,
—“রুমে মানে!তুমি কি আমার রুমে যাবে নাকি?তুমি নোহার রুমে যাও।”

জিনিয়া নাছোড়বান্দা সুরে গদগদ হয়ে বলল,
—“না না রাফি এই বাচ্চা আপুটার রুমে গিয়ে কি দেখব!তারচেয়ে বরং তোমার রুমেই চল।কত দিনের শখ তোমার রুম দেখব চল চল।”

জিনিয়া রাফিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে এক প্রকার ঠেলে রুমে নিয়ে গেল।
নোহা আর সহ্য করতে না পেরে হাত দিয়ে মুখ চেপে কেঁদে দিল।আজকে সব পানির মতো পরিষ্কার।কেন এতো অবহেলা,এত অপমান,এত তুচ্ছতাচ্ছিল্য সব এই রাক্ষসনীর জন্য।আবার বলে কি না ছোট আপুর রুমে কি দেখবে?আরে অসভ্য মেয়ে তুই তো আমার জান নিয়েই কাড়াকাড়ি লাগলি তুই আর কি দেখার বাকি রাখলি!নোহা চোখের পানি মুছে কিচেনে যায়। রাফিকে এর জবাব তো অবশ্যই দিতে হবে।
রাফি জিনিয়াকে বসতে বলে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।দেয়ালে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে শান্ত করে।জিনিয়া আজকে বড্ড বাড়াবাড়ি করে ফেলছে।নোহাটা কিভাবে তাকাচ্ছিল।
নোহা কফি বানিয়ে রাফির দরজার সামনে আসে।দরজা ভেজানো দেখে ভেতরে ডুকে।জিনিয়াকে উদেশ্য করে বলে,আপনাদের কফি..এটুকু বলে আর বলতে পারে না জিনিয়ার হাতে সেদিনের সেই গিফট বক্সটা।নিশি মূহুর্তেই পুরো দুনিয়া ঘুরে গেল।এতক্ষন যাও মনকে বুঝ দিচ্ছিল এখন সেটাও নড়বড়ে হয়ে গেল।রাফি তখনি ওয়াশরুম থেকে বের হয়।নোহাকে পাথরের মতো জিনিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাফি ভালো করে খেয়াল করে দেখে জিনিয়ার হাতে গিফট বক্সটা।অহ শিট।রাফি কিছু বলার আগেই নোহা রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রাফি তেড়ে আসে জিনিয়ার দিকে,
—“তুমি এটা কেন বের করেছ?আর পারসোনাল আলমারিতে হাত দেয়ার আগে অনুমতি লাগে।এটুকু কমনসেন্স নেই নাকি?”

—“আরে রাফি তুমি আলমারি খুলেই গেছিলা আর কিউরিসিটি থেকেই খুলেছিলাম এটা দেখে ধরলাম।”

রাফি বুঝল ভুলটা তারই।তারই বুঝা উচিত ছিল জিনিয়া এমনই লাফায় বেশি।আলমারি খুলে যাওয়া একদম উচিত হয় নি।দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে।জিনিয়াকে ওয়াশরুমে যেতে বলে রাফি রুম থেকে বেরিয়ে আসে।কিচেনে গিয়ে দেখল নোহা পাথরের মতো দাঁড়িয়ে কফির কাপে কফি ঢালছে।আজকে নোহা খুব বড় সত্যর সম্মুখীন হলো।রাফিকে নিয়ে মনের প্রতি কোনায় কোনায় স্বপ্ন আঁকা ছিল।কিন্তু রাফি যে আরেক’জনের স্বপ্নে মত্ত বুঝতেই পারেনি।সেদিন শিহাব ভাই বলার পরে বিশ্বাস করেছিল রাফির এমন কেউ নেই এমনি শাড়ি কিনেছিল কিন্তু আজকে নিজের চোখে যা দেখল তা তো আর অবিশ্বাস করা যায় না।বুকে ক্রমাগত হাতুরি পেটার মতো শব্দ হচ্ছে।চোখ দিয়ে নিরবে পানি পড়ছে।নোহা বারবার চোখের পানি মুছতে দেখে রাফি বুঝল কাঁদছে।কাছে গিয়ে কাধে হাত দিয়ে তার দিকে ফিরাল,কাঁদার কারনে নাকের ডগা আগুন লাল হয়ে আছে।টলমল আঁখি,ফোলা ঠোঁট নিয়ে রাফির দিকে তাকিয়ে নোহার মনে হলো এই মানুষটা এমন কিছু করতে পারে না!কিন্তু যা দেখল তা কি ভুল?জিনিয়ার হাতে দিয়েছে তার মানে তার জন্যই।রাফি নোহাকে দেখে বুঝে নিল তার মনের অবস্থা।
—“আমি জিনিয়াকে গিফটা দেইনি।ও নিজেই আলমারি থেকে নিয়েছে।”

নোহা চোখে আবার পানি এল।মাথা নিচু করে বলল,
—“আজকে থেকে আপনি মুক্ত।যান উনার কাছে যান।”

নোহার কথাটা শুনে রাফির বুকের পাখিটা ভালোবাসার তৃষ্ণায় ছটফটিয়ে উঠে।রাফি কাতর গলায় বলল,
—“সত্যি আমি দেই নি।এটা ওর জন্য কিনিনি।”

নোহা কিছু বলার আগেই জিনিয়া এল।এসে বলল,
—“রাফি বাবা ফোন দিয়েছে আমার যেতে হবে।”

রাফি ভদ্রতা করে বলল,
—“কফিটা খেয়ে যাও।”

জিনিয়া হাসিমুখে মেনে নিল।
জিনিয়া সোফায় গিয়ে আরাম করে বসল।নোহা কফির কাপ সেন্টার টেবিলে রাখার সময় জিনিয়ার বুকে চোখ পড়ে।বড় নেকের টপস পড়ায় বুকে তিলটা দৃশ্যমান।নোহার খুব অবাক লাগছে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলানোর পরেও রাফি কিভাবে বলে সে দেয় নি!না দিলে চিরকুটে লেখা তিলের অস্তিত্ব জিনিয়ার বুকে কিভাবে এলো?নোহার চোখ থেকে টুপ করে এক ফোটা পানি পরে।চুপ করে পাশের সোফায় বসে।
জিনিয়া আর রাফি চুপচাপ কফি খাচ্ছে।খাওয়ার এক পর্যায়ে জিনিয়া হাত বাড়িয়ে বলল,
—“রাফি!দেখি!”
এটা বলে রাফির ঠোঁটে লেগে থাকা পানিটা মুছে দিয়ে নিচের ঠোঁট হালকা টেনে দিল।জিনিয়ার কাজে রাফি হতবম্ভ হয়ে গেল।এটা কি করল?আজকে এমন উদ্ভট কাজ করছে কেন?নোহা আর কিছু না বলে রুমে গিয়ে দরজা আটকালো।কিছুক্ষণ পর জিনিয়া চলে গেলে রাফি নোহার দরজায় কষাঘাত করল,কিন্তু ভেতর থেকে কোন শ্ব্দ পাওয়া গেল না।চুপচাপ নিজের রুমে ফিরে এল।সবটা অন্যরকম হতে পারত।চাচ্চুর কাছে ফোন দিয়ে জানতে পারে তারা সবাই এয়ারপোর্টে আছে কিছু আবহাওয়া জনিত সমস্যার কারনে রাসেলের ফ্লাইট ভোর তিনটা বাজে আসবে।নোহার কথা জিজ্ঞেস করাতে রাফি বলল,”দরজা আটকে ঘুমিয়ে পড়েছে।”
তিনি জানালেন “রাফি থাকলে তিনি নোহাকে নিয়ে চিন্তা করে না।”
ফোন রাখার পরে রাফি দীর্ঘশ্বাস ফেলে।এই চিন্তা না করার সম্পর্কটাই রাফিকে শেষ করে দিচ্ছে।
রাফি কয়েকবার নোহার দরজায় আঘাত করে এসেছে নোহার কোন সারাশব্দ নেই।

রাত বারোটা রাফি ওয়ারড্রব এর উপরে ল্যাপটপ রেখে অফিসের ফাইল মেইল করছে।দরজা খুলার শব্দ পেয়ে ঘাড় বাকিয়ে দরজার দিকে তাকায়।নোহা দাঁড়িয়ে আছে।ভেজা চুল থেকে পানি টপটপ করে ঝরে পড়ে জানান দিচ্ছে এই রাতের বেলায় গোসল করেছে,অতিরিক্ত ভিজার ফলে চোখ লাল হয়ে গেছে।কেঁদে চেহারার যা তা অবস্থা বানিয়ে এখন দাঁড়িয়ে আছে।নোহাকে দেখে মনে হচ্ছে ভিজে শরীর খুব খারাপ করে ফেলেছে।রাফি কিছু বলার আগেই নোহা দৌড়ে এসে রাফিকে জড়িয়ে ধরে।কাতর গলায় বলে,
—“আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না রাফি।প্লিজ আমাকে দূরে ঠেলে দিও না।”

রাফি সরে দাঁড়ায়।নোহার গায়ের ভেজা স্পর্শ রাফি নিতে পারে না।রুম থেকে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।
নোহাকে উপেক্ষা করে চলে যাওয়াতে নোহার রাগ সপ্তম আকাশ ছুঁয়ে দিল।রাগে রাফির পিছন পিছন গিয়ে কলার টেনে ধরল,
—“এ্যাই এদিকে দেখ।আমি সুন্দরী না!তাহলে ওই মেয়ের প্রেমে কিভাবে পড়লে?”

রাফি আদ্র গলায় বলে,
—“আমি প্রেমে পড়িনি।”

নোহা চিৎকার করে বলল,
—“আবার মিথ্যা বল!গিফটটা ওই মেয়েটার জন্যই এনেছিলে।আজকে দিয়েছ।”

রাফি মাথা নেড়ে বলল,
—“ওটা জিনিয়ার জন্য আনা নয়।”

নোহা কেঁদে দিল,
—“তুমি মিথ্যা বল কেন রাফি?চিরকুটে যা লেখা ছিল সব মিলে গেছে।জিনিয়ার বুকে তিলও আছে তুমি এতসব জেনে বুঝে আমাকে কেন মিথ্যা বলছ।”

রাফি অবাক হয়ে গেল জিনিয়ার বুকে তিল আছে শুনে।সে কখনো জিনিয়ার দিকে ওইরকম কোন দৃষ্টিতে দেখে নি।যে কোথায় তিল আছে দেখবে।কাকতালীয়ভাবে কিভাবে হয়তবা মিলে গেছে।
রাফি কিছু বলতে পারল না নোহা তার ঘাড়ে দুহাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে আছে।রাফি লম্বা হওয়াতে ঠিকমতো ব্যালেন্স করতে পারছেনা।কেমন হেলেদুলে যাচ্ছে রাফি একহাত দিয়ে নোহার কোমড়ে ধরে।
নোহা ঠোঁট উল্টে বলল,
—“ও রাফি!আমিতো মরে যাব।”

রাফির কলিজায় ছুরির আঘাত লাগে।নোহাকে কাছে টেনে কপালে কপাল ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বলল, —“কিচ্ছু হবে না।”

নোহা কি ভেবে কেঁদে দিল,
—“হবে তো।তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসলে আমি সইতে পারব না।পারব বলো?”

রাফি বাধ্য ছেলের মতো মাথা নেড়ে বলল, “না”।

নোহা মূহুর্তের মধ্যে পাগলের মতো রাফিকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল।উচ্চ গলায় চিৎকার করে বলল,
—“আমি হাত ধরলে তো দূরে সরিয়ে দাও,জড়িয়ে ধরতে দাও না,ওই মেয়েকে দিলা কেন?কেন দিবা তুমি?ও কেন তোমার হাত ধরে কাধে মাথা রাখে।”
নোহা থেমে এগিয়ে এল রাফির বুকে হাত রেখে বলল,
—“ওরে বলে দিবে এই সবটা রাফি নোহার।শুধু নোহার।”
রাফির খুব কান্না পাচ্ছে।নোহা কেমন পাগলের মতো করছে।
কিভাবে রাফি বলবে নোহাকে সে খুব ভালোবাসে।
নোহা রাফির কাছে এল,লাল চোখ দিয়ে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
—“নোহা তোমার ঠোঁটে হাত দিল কেন?”
রাফি কোন কথা বলল না।
হঠাৎ করে নোহা পায়ের পাতায় ভর দিয়ে রাফির গলা আঁকড়ে ধরে পুরুষালি ঠোঁটদুটো কাঁমড়ে ধরে।নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে কাঁমড়ে ধরে।রাফি চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে।এক হাত দিয়ে বারান্দার গ্রিল ধরে নিজের ভারসাম্য রক্ষা করে আরেকহাত দিয়ে নোহার কোমড় আঁকড়ে ধরে।
নোহার জিভে রক্তের নোনতা স্বাধ পেয়ে ঠোঁট সরিয়ে নেয়।রাফির নিচের ঠোঁট বাজেভাবে কেটে ফেলেছে।দাতের দাগ স্পষ্ট।রাফি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে।রাফির ঠোঁটে রক্ত দেখে নোহা কেঁদে দিল,কেঁদে বলল,”জিনিয়া কেন ঠোঁটে ধরবে?
ও কি জানে না রাফির সব নোহার।এই ঠোঁট তার খুব প্রিয়।”

রাফি নিরুত্তর।নোহা রাফির চোখের দিকে তাকিয়ে দেখল চোখে পানি টলমল করছে।নোহা কি খুব ব্যাথা দিয়ে ফেলেছে রাফিকে?
রাফির ঠোঁট হালকা কাঁপছে।নোহা এবার ঠোঁটে ছোট চুমু খেল।তারপর রাফির দিকে তাকিয়ে তার।কোন প্রতিক্রিয়া না পেয়ে আবারো সিগারেটে পোড়া ঠোঁটের মাঝে নিজের নরম গোলাপি ঠোঁট ডুবিয়ে দিল।আলতো করে পরশ দিতে থাকল রাফিকে।
নোহার নরম ঠোঁটের ভালোবাসায় রাফির সারা দেহ কেঁপে ওঠে।নোহা ফিসফিস করে বলল,”রাফি!খুব ব্যাথা পেয়েছ?”প্রিয়তমা যদি এমন পাগলামি করে,তাহলে কি আর নিজেকে সামলে রাখা যায়?যায় না তো!রাফি ও নিজেকে সামলাতে পারল না,নোহার আদরে সারা দিয়ে ফেলল।দু’হাত দিয়ে নোহার কোমড় আঁকড়ে ধরে নরম ঠোঁট দুটোতে ছোট একটা চুমু খায়।নোহার থেকে আর কোন সারা না পেয়ে রাফি তার ভেজা চোখ দুটো খুলে নোহার দিকে তাকায়,সেন্সলেস হয়ে গেছে।নোহাকে কোলে নিয়ে বারান্দায় রাখা চেয়ারেই বসে পড়ে।পরম আবেশে বুকে মিশিয়ে নেয়।ঠোঁট খুব জ্বলছে,জ্বলুক।আজকে নোহা প্রথম তাকে তুমি করে বলেছে তাও আধা হুশ ছিল।রাফি নোহার কপালে আলতো করে চুমু দেয় বিরবির করে বলল,”আমার সুখ পাখিটা।আমার অতল সুখ সন্ধানী।”

–চলবে–

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে