#সুখ_একটি_প্রজাপতি (২১)
অভিনবর শ্বাসের গতি বেড়ে যাচ্ছে। পরিশ্রান্ত ও ব্যথাহত দেহ নিয়ে তবু উঠে বসার চেষ্টা করল সে। রজনী এগিয়ে এল। সাহায্য করল বসতে। ছেলেটার শরীরে ভীষণ জ্বর। ব্যথার কারণেই জ্বরটা এসেছে। এক গ্লাস পানি দিল মেয়েটি। চোখ দুটো জলে ভেজা। অভিনব পানির গ্লাস হাতে নিয়ে বলল, “প্লিজ কেঁদো না। আমার নিজেকে অপরাধী লাগছে।”
রজনী কথা বলতে পারছে না। মেয়েটির খুব কষ্ট হচ্ছে। সে আলগোছে বেরিয়ে এল। বুকের ভেতরে জ্বলছে খুব। দানেশ বাইরে দাঁড়িয়ে। ফোন করছে কাউকে।
“কি হলো,পেয়েছ কাউকে?”
“নেটওয়ার্ক কাজ করছে না।”
“ভাইয়ার শরীরে ভীষণ জ্বর।”
“দেখি কি করা যায়। তুমি একটু খেয়াল রাখ।”
কথাটা বলেই বেরিয়ে গেল দানেশ। রজনী পুনরায় অভিনবর কাছে এল। ছেলেটার পায়ে ভীষণ চোট লেগেছে। চলতে পারছে না এখন। পাহাড়ি এলাকায় চিকিৎসার ও সু ব্যবস্থা নেই। এদিকে ওর ফোন কোথাও একটা হারিয়ে গেছে। দানেশ বার বার চেষ্টা করছে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার। কিন্তু নেটওয়ার্ক খুবই বাজে। রজনী অভিনবকে দেখে পুনরায় ভেঙে পড়ল। ব্যথা নিয়েই চলার চেষ্টা করল অভিনব। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পুনরায় বসে পড়ল। কতবার চেষ্টা করেছে হিসেব নেই। চোটটা খুব বেশিই লেগেছে।
দুপুরের দিকে দানেশ এল। ঘামে ভেজা শার্ট। রজনী ছুটে এসে বলল, “কাউকে পেলে?”
“এক বন্ধুকে পেয়েছি, তবে সমস্যা হচ্ছে ও দেশে নেই।”
“তাহলে এখন কি করবে?”
“ইহানের পায়ের চিকিৎসা করা জরুরি। ভাবছি মাহিনের সাথে যোগাযোগ করব। এই সময়ে ওকেই ভরসা করতে পারি।”
“তাহলে তাই কর। ভাইয়ার যন্ত্রণা আমার সহ্য হচ্ছে না।”
রজনীর কান্নাভেজা মুখে হাত বুলিয়ে দিল দানেশ। মেয়েটি আবেগী ভীষণ। মাহিন খাবার রেখে পুনরায় বেরিয়ে গেল। কিছুদূরে গিয়ে নেট পেল। মাহিন কল রিসিভ করতেই দানেশ অনুনয় করে বলল, “দোহাই লাগি ভাই। তুই ছাড়া এখন কেউ সাহায্য করতে পারবে না। প্লিজ হেল্প কর আমায়।”
ওপাশ থেকে মাহিন হ্যালো হ্যালো করে কল কেটে দিল। দানেশের মন খারাপ হলো। মাহিনও বুঝি মুখ ফিরিয়ে নিল! ছেলেটা মন খারাপ করে বসে ছিল। কিছুক্ষণ পর একটা আননোন নাম্বার থেকে কল এল। দানেশ ভয় পেয়ে কলটা কেটে দিল। তারপরই ম্যাসেজটা এল।
“আমি মাহিন, কল রিসিভ কর।”
আবার কল আসতেই রিসিভ করল দানেশ। মাহিন ফিসফিস করে বলল, “কি ব্যাপার কোথায় আছিস তুই!”
“সব বলব। তার আগে কথা দে হেল্প করবি।”
“এতটাই অবিশ্বাস করছিস!”
“ভাই প্লিজ হেল্প কর। আমি একা সামলাতে পারছি না।”
“আছিস কোথায়?”
দানেশ লোকেশন দিল। সন্ধ্যার পূর্বেই এসে পড়ল মাহিন। দানেশের মুখ দেখে অবাক হলো। কদিনেই কেমন নেতিয়ে পড়েছে।
“একি অবস্থা তোর।”
“আমার কথা ছাড়। ডাক্তার এনেছিস?”
“ডাক্তার আনি নি। আগে বিষয়টা খুলে বল। সব না শুনে তো অ্যাকশন নিতে পারছি না।”
“তার আগে ভেতরে আয়।”
ঘরে গিয়ে অভিনবকে দেখে দ্বিগুণ বিস্মিত হলো মাহিন। সঙ্গে সঙ্গে অভিনবর কপালে স্পর্শ করে বলল, “একি অবস্থা!”
“ওর গায়ে ভীষণ জ্বর উঠেছে।”
“কিন্তু এমনটা হলো কি করে?”
তখনি রজনীকে চোখে পড়ল। মাহিনের ভ্রু কুচকে এসেছে। মেয়েটিকে এক দেখাতেই চিনে ফেলল সে। দানেশ হতাশ কণ্ঠে বলল, “রজনীকে আমি বিয়ে করেছি।”
হলুদের দিন মাঝ রাত অবধি অভিনবর নিকটই ছিল ঝিল। সময়টা খুব দ্রুত পেরিয়ে গেছে। ছেলেটার ইচ্ছে করছিল মেয়েটিকে নিয়ে আরেকটু সময় কাটাতে। কিন্তু চাইলেই তো সব হয় না। ঝিলকে নিয়ে ফিরতে হলো। মেয়েটিকে গেটের কাছে ছেড়ে দিয়ে পুনরায় হাঁটতে লাগল সে। এভাবে আর কতদিন আলাদা থাকতে হবে ওর জানা নেই। এই ঝামেলা ভালো লাগছে না। দুটো পরিবারের ক্ষোভের কারণে দুটি হৃদয় একে অপরের থেকে এত দূরে। একটা বৈধ সম্পর্ক পরিপূর্ণতা পাচ্ছে না। এসব ভাবতে ভাবতেই আঁধার পেরিয়ে চলছিল সে। ঠিক সে সময়টায় একটা সত্য ধরা দেয় অভিনবর নিকট। ফিস ফিস কণ্ঠটা বলছে, “তুমি ভেবে বলছ তো? আমি চাই না এটা নিয়ে পরে আপসোস হোক তোমার।”
ওপাশে থাকা ব্যক্তিটি কি বলেছে অভিনব জানে না। কিন্তু দানেশ বলল, “আমি তোমায় ভালোবাসি। তোমার আগে অন্য কিছু নয়। এই সত্যের বাহিরে আর কিছু নেই। তুমি বের হয়ে এসো। আমি অপেক্ষা করছি।”
দানেশ কল রাখতেই অভিনবর মুখোমুখি হতে হয়। অভিনব এক আকাশসম বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে। ছেলেটাকে শুরুতেই চিনতে পারে নি দানেশ। তাই ভরকে গিয়েছে।
“তুই এখানে!”
কণ্ঠটা শুনে দানেশের প্রাণ ফিরে। ও নিজেও অভিনবকে এখানে আশা করে নি। তবে মির্জা বাড়ির মেয়ের সাথে অভিনবর কিছু একটা রয়েছে এটা জানা ছিল। তাই সে চুপ করে রইল। অভিনব দ্বিগুণ জোর দিয়ে বলল, “কে আসবে দানেশ?”
“ভাই হেল্প কর প্লিজ। তুই প্লিজ বাঁচা আমায়।”
“আমি বুঝতে পারছি না।”
“চৌধুরী বাড়ির মেয়ে, রজনীর সাথে আমার দীর্ঘদিনের প্রণয়। পারিবারিক ঝামেলার কারণে সম্পর্কটা সম্ভব না। তাই এসেছি ওকে নিয়ে পালাব বলে।”
তখন অভিনবর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। মস্তিষ্ক খালি হয়ে যায়। ওদের সম্পর্কটা যেখানে টানাপোড়েনে সেখানে আরেকটা সম্পর্ক অসম্ভব! তৎক্ষণাৎ জবাব দিতে পারে নি ছেলেটা। দানেশ ওর হাত ধরে অনুনয় করে। ভীষণ ভালোবাসে রজনীকে। অভিনব সেটা বুঝতে পারে। তাছাড়া ভালোবাসার যে কি যন্ত্রণা তা ওর থেকে ভালো কে জানবে?
ছেলেটা দানেশকে সঙ্গ দেয়। ওদিকে গ্রামের ছেলেপেলের জন্য বের হতে পারছে না রজনী। তাছাড়া শিকদার বাড়ির সবাইকে মোটামুটি চেনে এই গ্রামের মানুষ। সেহেতু মাহিন গেলে ঝামেলা হওয়ার চান্স রয়েছে। তাই অভিনব বাড়িতে প্রবেশ করে। সাবধানে বের করে নিয়ে আসে রজনীকে।
এর পরের ঘটনাটা খুবই বেদনার। সে রাতেই বন্ধুদের সাহায্যে রজনী আর দানেশের বিয়ে হয়ে যায়। ওদের সেলফোন ফেলে দিতে হয়। ওরা আগেই প্ল্যান করেছিল দু এক বছর সবার থেকে আলাদা থাকবে। এর জন্য বেস্ট মনে হয় পাহাড়ি অঞ্চল। শেষ রাতে ওরা রওনা হয়। কিন্তু কে জানত সেখানেও আরেক বিপত্তি অপেক্ষা করছে। কিছু লোক রজনীর উপর হামলা চালায়। আর সেখান থেকেই উদ্ধার করার সময় অভিনবর পায়ে আ ঘা তটা লাগে। সেই পরিস্থিতিটা অনেক কিছুই বদলে দিল। পুরো ঘটনা শুনে মাহিন বিস্মিত হয়ে পড়ল। ওর মাথায় হাত। দানেশ স্বভাবে শান্ত তাই বলে এমন এক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে একবার ভাববে না? এই সম্পর্কটা কখনোই মানবে না দু পরিবার। সে হতাশার শ্বাস ফেলল। দানেশ মাহিনের বাহুতে হাত রেখেছে। চোখে মুখে আতঙ্ক।
“হেল্প কর ভাই।”
“তাই বলে চৌধুরী বাড়ির মেয়ে?”
“এটাই তদের সমস্যা। চৌধুরী বাড়ির মেয়ে বলে কি ও মানুষ না?”
বিরক্তিতে ভরে উঠল মাহিনের মুখ। ও এখন কিছু বলতে চাইছে না। আগে অভিনবর চিকিৎসা প্রয়োজন। ছেলেটা ব্যথায় ভুগছে। এত সময় অভিনব চুপ ছিল। এই মুহূর্তে ঝিলের মুখটা ভাসছে। মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। ওর নিজের ফোনটাও সাথে নেই। কে জানে কোথায় পড়ে গিয়েছে। অভিনব মাহিনের সাহায্যে উঠে বসল। মাহিনের ভীষণ খারাপ লাগছে।
“ডাক্তার নিয়ে আসব নাকি শহরে ফিরে যাবি?”
“আগে তোর ফোনটা দে।”
“ফোন, ফোন দিয়ে কি হবে?”
“দে প্লিজ।”
মাহিন ফোন এগিয়ে দিল। খুব সহজেই পেয়ে গেল তরুণের নাম্বারটা। কিন্তু নেটওয়ার্কের প্রবলেম। ছেলেটার চোখের ভাষা পড়তে পারল মাহিন। ওর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াল। বাইরে আসতেই নেটওয়ার্ক পেল। তরুণ কল রিসিভ করেছে।
“আমি অভিনব বলছি।”
“হ্যাঁ অভিনব বল।”
“তুই একটা হেল্প কর। মৌনতাকে কোনো ভাবে ঝিলের কাছে পাঠা। আর আমি যা যা বলছি সেসব বলতে বল।”
অভিনব অল্প কথায় সবটা শেয়ার করল। মাহিন ভ্রু কুচকে তাকিয়ে।
“ঝিল, মির্জা বাড়ির মেয়ে?”
“হুম।”
“মাই গড! ঝিলের মামাতো বোনই তো রজনী?”
“হ্যাঁ।”
“তোরা ভাই কি শুরু করেছিস! পৃথিবীতে আর মেয়ে নেই?”
অভিনব হাসল। পায়ের পাতা মাটিতে রাখতেই পুরো শরীর শিরশির করে উঠল। যন্ত্রণায় টনক ধরে গেছে।
“এসব বুঝবি না তুই।”
“বোঝার দরকার ও নেই। এখন বল কি করব তোকে নিয়ে?”
“গাড়ি আছে না সাথে?”
“হুম।”
“তাহলে শহরে যাব। পরে দেখা যাবে দানেশের বিষয়টা।”
তখনি রওনা হয় ওরা। একটা নিদারুণ যন্ত্রণায় কাঁপছে শরীর। অভিনবর হৃদয়ে কেমন ব্যথা হচ্ছে। বার বার ভাসছে ঝিলের মুখ। মেয়েটি ঠিক আছে তো?
চলবে….
#সুখ_একটি_প্রজাপতি (২২)
“আপনি আমায় ভুল বুঝলেন প্রজাপতি? এত সহজে ছেড়ে গেলেন! আপনি ভুলে গেলেন আপনার জায়গাটা। এত বছর অপেক্ষা করেছেন অথচ এই সামান্য কয়টা দিনেই অধৈর্য হয়ে পড়লেন! এভাবে ছেড়ে গেলেন আমায়।”
শব্দ গুলো উচ্চারণ করার সময় অভিনবর দু চোখ লাল হয়ে উঠেছে। ঝিল ভাষাহীন পাথর বনে গেছে। মেয়েটি নিজ ভুলে পু ড় ছে কেবল। অশ্রুসজল হয়ে উঠেছে অক্ষিযুগল। এত এত কষ্ট হচ্ছে যে ওর হৃদয় খানা বুক চিরে বের হতে চাচ্ছে। মেয়েটির এমন দশা দেখে কিছুটা দমে গেল অভিনব। কাছে এসে বলল, “কেমন করে এই ভুল করলেন ঝিল?”
ভাঙা গলায় উত্তর করল মেয়েটি। “আমার কথাটা শুনেন আপনি। বিশ্বাস করেন তখন আমি এতটাই বিধ্বস্ত ছিলাম যে বুঝতে পারি নি কেমন করে ভুলটা করে বসলাম।”
উত্তরের বিপরীতে অভিনব তাচ্ছিল্য করল। ছেলেটি আর এক মুহূর্তে দাঁড়াল না। চলে গেল ত্রস্থ পায়ে। পেছন থেকে পাগলের মতো ডেকে চলেছে মেয়েটি।
“অভিনব,অভিনব,অভিনব শুনেন আমার কথাটা। অভিনব শুনেন প্লিজ। শুনে যান একবার।”
মেয়েটির চিৎকারে ছুটে এল মৌনতা। রীতিমতো কাঁপছে ঝিলের শরীর। বিধ্বস্ত হয়ে উঠেছে মুখখানি। শুকিয়ে গেছে কোমল দুটি ঠোঁট। রুগ্ন দেখাচ্ছে ওকে। মৌনতা সমানতালে পিঠে হাত বুলাচ্ছে। বার বার বলছে, “শান্ত হ ঝিলি। শান্ত হ বাবু। কি হয়েছে তোর?”
“মৌন, অভিনব অভিনব চলে যাচ্ছে। ওনাকে আমি ভুল বুঝলাম। কেন ভুল বুঝলাম ওনাকে। আমি এখন কি করব। কি করব আমি।”
অস্থিরতার কারণে ঝিলের শরীর থেকে নোনা জল নেমে এসেছে। মৌনতা পুনরায় মেয়েটির মাথাটা চেপে ধরল। ধীরে ধীরে পিঠ চাপরে বলল, “কিচ্ছু হয় নি। অভিনব ভাইয়া কোথাও যায় নি। তুই শান্ত হ।”
“আমি স্পষ্ট দেখেছি মৌন। তুই প্লিজ যেতে দে আমায়। ওনি চলে যাচ্ছেন।”
“শান্ত হ ঝিলি। স্বপ্ন দেখেছিস তুই।”
“স্বপ্ন!”
“হু। দুপুরে অল্প একটু খেয়ে ঘুম দিলি। এখন তো প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।”
“সত্যিই স্বপ্ন ছিল?”
“হ্যাঁ রে। তুই নিজেকে শান্ত কর।”
মৌনতার কথা গুলো আরেকটু গভীরে নিয়ে গেল মেয়েটিকে। ওর দুটি চোখ এখনো বিচলিত। চারপাশে চোখ বুলিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে মৌনতা মিথ্যে বলছে কি না। ধীরে ধীরে সমস্ত বিষয় বুঝতে পারল সে। মৌনতা পানি এনে দিল। সেটা পান করার পর কিছুটা শান্ত হলো ঝিল।
“সকালে বলেছিলাম, মানুষটা বোধহয় আমায় ঠকাচ্ছে। আসলেই আমি ভুল মৌন।”
“শুধু শুধু সেসব ভেবে এখন কষ্ট পাওয়ার কোনো মানেই নেই ঝিলি। তুই ভরসা রাখ। নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে।”
“তাই যেন হয় রে মৌন। কিন্তু অভিনব এখন কোথায় আছে। কেমন আছে বল তো।”
“সেটা তো আল্লাহ তায়ালাই বলতে পারবেন।”
সৃষ্টিকর্তার নাম নেওয়ার ফলে ঝিলের মাথায় এল নামাজের কথাটা। মেয়েটি অজু করে এসে নামাজে বসল। মোনাজাতের সময় চোখ ভরে উঠল। অভিনবর সুস্থতার দোয়া করল।
মাইলের পর মাইল চলছে গাড়ি। অভিনব সিটে হেলান দিয়ে বসা। চোখ বন্ধ কপালে রেখেছে হাত। হাল্কা করে মালিশ করে যাচ্ছে। শরীরে ভীষণ জ্বর। গোলাপি রঙা ঠোঁট কেমন ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করেছে। মুখ শুকিয়ে গেছে। মাহিন বার বার তাকাচ্ছে। ছেলেটির অবস্থা দেখে ওর মন খারাপ হলো। বরাবরই অভিনবর প্রতি মায়া বেশি ওদের। কেন যেন এই ছেলেটিকে ভীষণ ভালোবাসতে চায় সকলে। মাহিন একটুখানি জলে গলা ভিজিয়ে নিল।
“ইহান।”
“হু?”
“মির্জা বাড়ির মেয়েকে ছাড়া যায় না?”
“ছাড়তে পারব না মাহিন। আমার মন মস্তিষ্ক পাগল হয়ে যাবে।”
“যদি কখনো এমন পরিস্থিতি আসে, মির্জা বাড়ির মেয়ে অথবা আমাদের বেছে নিতে হয় তখন কি করবি?”
“জানি না কি করব। তবে এতটুকু বলতে পারি ঝিলকে ছাড়া সম্ভব নয়।”
মাহিনের ভেতরটা কেমন করে উঠল। ওর দু চোখে পুনরায় হতাশা নেমে এসেছে। একটা ভয়াবহ ঘটনা উদয় হওয়ার কল্পনায় ছেলেটি অসুস্থ বোধ করছে।
নতুন ফোনে সিম কার্ডটা লোড করেই ঝিলকে কল করল অভিনব। তরুণ জানিয়েছে মৌনতা ফোন রিসিভ করে নি। তাই ঝিলকে কিছুই জানানো যায় নি। অভিনব ভেবেছিল শুরুতেই মেয়েটি অভিযোগ করে বসবে। কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে ঝিল কিছুই বলল না। শুধু একবার বলল, “আমায় কখনো ছাড়বেন না তো অভিনব?”
কি যন্ত্রণা! মেয়েটি এসব বলছে কেন? সে কি করে বোঝাবে হৃদয়ের সবটুকু জুড়ে যে একটিই নাম। ঝিল এবার কেঁদে ফেলল। ওর এই কান্নার শব্দ ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে।
“আপনি ভয় পেয়েছিলেন প্রজাপতি?”
“খুব।”
“একটা কথা বলছি। সবসময় মনে রাখবেন।”
“হুম।”
“আপনার অভিনব আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। প্রয়োজনে পৃথিবী ছেড়ে দিবে কিন্তু আপনাকে নয়। আপনি যে আমার সবত্র জুড়ে। হৃদয় যে ভীষণ ব্যকুল ঝিল। বলেন তো আপনাকে কি করে বোঝাই ভেতরের অবস্থা।”
ঝিলের কান্না থেমেছে। মেয়েটি হাতের তালুতে চোখ মুছে নিয়ে বলল, “মনে থাকবে আমার। কিন্তু আমার অপেক্ষার শেষটা যেন বিষণ্ণ না হয়।”
“হবে না। কথা দিচ্ছি আপনাকে।”
অনেক্ষণ কথা হলো ওদের। অভিনব বেশ কষ্টে চেপে যাচ্ছে অসুস্থতা। বারংবার শরীর শিরশির করে যাচ্ছিল।
রোহনের কাছে মিথ্যে বলতে খারাপই লেগেছে মৌনতার। ছেলেটি বোধহয় বুঝেছিল। তাই পুনরায় মৌনতার সাথে কথা বলে নি। এমনকি ওদের দেখাও হলো না আর। এসব নিয়ে মৌনতার বেশ খারাপ লাগছিল। তখুনি নজরে এল ফোনটা। ভুলে ফেলে এসেছিল। ভাগ্যিস মা পেয়েছিলেন। নতুবা ফোনটা আর পাওয়া যেত না। ফোনের লক স্ক্রিনে তরুণের মিস কল দেখে ভ্রু কুচকে গিয়েছে ওর। তখুনি কল করল সে।
“কি হয়েছে?”
“কি হবে। আপনিই তো কল করেছিলেন আমায়।”
“তো এগার ঘন্টা পর কল ব্যাক করবে!”
“শুনেন আমার কাছে ফোন ছিল না।”
“ও আচ্ছা ফোন বুঝি বয়ফ্রেন্ডের কাছে ছিল।”
“এসব বাজে কথা বললে মে রে আপনার নাক ফা টি য়ে দিব।”
“ওরে আমার ফাইটার। মেয়ে মানুষ আবার নাক ফা টা বে।”
“আপনি তো আস্ত এক ঝগড়াটে।”
“উফ তুমি বুঝি ভদ্র নাদান বাচ্চা!”
“তো?”
“ধুর, তোমার সাথে ঝগড়া করার মুড নেই আমার।”
“তো কল কেন করেছিলেন।”
“ও হ্যালো তুমি আমায় কল করেছ।”
“প্রথমে তো আপনিই করেছন।”
তরুণের সাথে ওর ঝগড়া চলল আরও কিছু সময়। তারপর সে জানাল অভিনবর কথাটা। পুরো ঘটনা শুনে মৌনতার চোখ কপালে। সে কল রাখতেই নজরে এল রোহন। চোখ দুটি ইষৎ লাল। মৌনতার বাহু চেপে ধরেছে। ভয়ে মেয়েটি প্রায় কেঁদে ফেলল।
“হাউ ডেয়ার ইউ লাই টু মি?”
ব্যথায় চোখ দিয়ে পানি বের হয় এসেছে। মৌনতার গলার স্বর কেমন নেতিয়ে পড়ল।
“রোহন ব্যথা পাচ্ছি আমি।”
“এমনটা কেন করলে তুমি? কেন সত্যটা চেপে গেলে।”
“আমি ব্যথা পাচ্ছি রোহন।”
“আনসার মি।”
“আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই মিথ্যে বলেছি।”
রোহন এবার আরও বেশি রেগে গেল। মৌনতার বাহু ছেড়ে দিয়েছে। যন্ত্রণা হচ্ছে মেয়েটির। এর থেকে বেশি যন্ত্রণা হচ্ছে মনের ভেতরে। অশান্ত হয়ে উঠেছে হৃদয় মাঝার। রোহনের দুটি চোখে জ্বলছে আগুন। মৌনতার এমন আচারণ ওকে পুনরায় কষ্ট দিল।
চলবে…
#সুখ_একটি_প্রজাপতি (২৩)
অভিনবর শারীরিক অসুস্থতার খবরটা জানত না ঝিল। মেয়েটি অনেক দিন পর একটু ঘুমিয়েছে। কিন্তু একটা খারাপ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেল। পুনরায় চেষ্টা করেও লাভ হলো না। লাইট জ্বালিয়ে দেখল পাশে মৌনতা নেই। বারান্দায় আলো জ্বলছে। ধীরে উঠে পড়ল মেয়েটি। বারান্দার কাছে আসতেই কথাটা কানে এল।
“অভিনব ভাইয়ার এখন কি খবর? শরীরে ব্যথা রয়েছে।”
তখুনি বুঝতে পারল না ঝিল। অভিনবর নামটা কানে এসে শব্দ করছে। মৌনতা আরও কিছু শব্দ ব্যক্ত করতেই ঝিলের শরীর জেগে উঠল। প্রতিটা লোমকূপ জানান দিচ্ছে ব্যগ্রতা। মৌনতা পেছন ঘুরতেই ঝিলকে দেখতে পেল। যা বোঝার বুঝে নিয়েছে সে। ঝিলের অবসাদগ্রস্ত মুখখানায় বিন্দু ঘাম জমেছে। চিন্তিত মুখমন্ডলে উষ্ণতার অভাব। লাল হয়ে উঠেছে মুখশ্রী।
“ঝিলি শোন আমার কথা।”
মেয়েটির পা পিছিয়ে এসেছে। মৌনতা আরও কয়েকবার ডাকল কিন্তু লাভ হলো না। বেডের উপর বসে পড়ল সে। শরীর যেন বোধ শক্তি হারিয়েছে। মৌনতা তরুণের কলটা রেখে ঝিলের পাশে বসল।
“চিন্তা করিস না। ভাইয়া ঠিক হয়ে যাবে।”
অনেকক্ষণ মেঝেতে তাকিয়ে রইল মেয়েটি। তারপর আচানাক বলল, “কি হয়েছে মৌন? উনি ঠিক আছেন তো? আমায় কেন কিছু বলেন নি। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রে। মস্তিষ্কে ভীষণ যন্ত্রণা করছে। কেন বললেন না তিনি। বল না মৌন। কি হয়েছে উনার।”
“এমন করিস না ঝিলি। ভাইয়া ঠিক আছে। জাস্ট একটু অসুস্থ।”
“লুকাচ্ছিস কেন। আমি ঠিক আছি তো। প্লিজ তুই সবটা বল আমায়।”
“বলছি,তুই আগে শান্ত হ।”
শক্ত হয়ে বসে রইল ঝিল। মৌনতা পুরো ঘটনাটা বলার পর ঝিলের মাঝে বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। খানিক বাদে কান্নায় ভেঙে পড়ল মেয়েটি। ওর ভেতরে আগুনের তপ্ত শিখা গুলো দাউ দাউ করে জ্বলছে।
সকালের মিষ্টি রোদে বসে গান শুনছিল মৌনতা। সারাটা রাত ঘুম হয় নি। ঝিলকে সামলাতে সামলাতে ভোর হয়ে এল। তারপর আর ঘুমাতেও ইচ্ছে করল না। এখন সে বসেছে মিষ্টি রোদ মাখতে। রোহন অভ্যাসগত কারণেই ছাদে এসেছে পুশ আপ দিতে। তখনি মৌনতাকে দেখতে পেল। মেয়েটির স্নিগ্ধতা ওর অন্তরে ফুল হয়ে ঝরছে। একটা সময় গাঢ় হয় চাহনি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ওর শুভ্রতা পরখ করে। এই মুহূর্তে মেয়েটির প্রতি কোনো রাগ অভিমান কাজ করছে না। বরং ভালো লাগায় ভরে উঠেছে সময়টা।
“এত ভোরে এখানে কি করছো?”
চোখ খুলে রোহনকে দেখতে পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে মৌনতা। ওর পাশে এসে বসল রোহন। মেয়েটি আরেকটু গুটিয়ে বসেছে।
“কালকের জন্য স্যরি।”
“স্যরি বলার কিছু নেই। আমার প্রাপ্য যা তাই পেয়েছি।”
“বিদ্রুপ করলে?”
“যা সত্য তাই বলেছি।”
“আমি সত্যিই দুঃখিত।”
“বুঝতে পেরেছি।”
উঠে যাচ্ছিল মৌনতা। রোহন খপ করে ধরে ফেলল হাত।
“আমি কথা বলছি।”
“কিন্তু আমার শুনতে ইচ্ছে করছে না।”
“কেন? কেউ আছে যে অন্য পুরুষ মানুষের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছে।”
“থাকা না থাকা বিষয় না। আমি এই মুহূর্তে আপনার সাথে কথা বলতে আগ্রহী নই।”
“রাগাবে না।”
“আপনি রেগে গেলে সেটা আপনার সমস্যা। আমি কি করতে পারি!”
“খুব বেশি বলছো তুমি।”
মৌনতা এবার উত্তর দিল না। ওর গলা ধরে এসেছে। চোখের কোণ ভেসেছে নোনা জলে।
“স্যরি। আমি শুধু জানতে চাই ঝিলের সাথে অভিনবর কি সম্পর্ক।”
“কাল তো শুনেছেনই।”
“তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই। প্লিজ ওদের বিষয়টা জানাও।”
“ওরা একে অপরকে ভালোবাসে। যেন তেন ভালোবাসা নয় যে একটুখানি ঝড় হলেই সরে যাবে। ওদের ভালোবাসাটা সুন্দর ও মজবুত।”
কথাগুলো যে রোহনকে আঘাত করার জন্যই যেসব বুঝতে অসুবিধা হলো না। একটা ভাঙা আর্তনাদ বুকের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করেছে। মেয়েটি ওকে ভেঙেচুরে শেষ করে দিল!
.
ঝিল শুনেছে তরুণের বাসায় আছে অভিনব। এই সুযোগটা মিস করতে চায় নি মেয়েটি। সে চলে এসেছে মৌনতাকে নিয়ে। বাগানে তরুণের ভাই তুহিনের সাথে দেখা। ছেলেটি একটুও অবাক হয় নি। গত কয়েক মাসে ঝিল আর অভিনবর সম্পর্কের গভীরতা মনে মনে মেপে নিয়েছে সে। ওদের নিয়ে বাসায় প্রবেশ করল। বসতে বলে স্ত্রীকে বলল নাস্তা দিতে। ঝিলের অস্থিরতা দেখে মৌনতা বলল,
“ভাইয়া যদি কিছু না মনে করেন অভিনব ভাইয়া কোন রুমে আছেন?”
তুহিন ইষৎ হেসে রুম দেখিয়ে দিল। ঝিল শব্দহীন চলে গেল। বিছানায় শুয়ে আছে অভিনব। শরীরে চাদর টানা। অসুস্থ থাকাতে প্রায় সারাদিনই শুয়ে বসে থাকতে হয়। সে এখন ঘুমিয়ে। ঝিল নিজেকে সামলাতে পারল না। ছুটে গিয়ে অভিনবকে জড়িয়ে ধরল। ওর স্পর্শে ছেলেটির ঘুম ছুটে গিয়েছে। শরীরে চাপ লাগাতে হাল্কা ব্যথাও হচ্ছে। ওর চুল থেকে আসা সুবাসটা একদম মাতাল করে তুলেছে। যত্ন নিয়ে হাত বুলায় অভিনব।
“জানতাম আপনি এমন পাগলামি করে বসবেন প্রজাপতি।”
“আপনি কেন জানালেন না আমায়।”
“জানালে রক্ষে থাকত? এই যে এখনি কেমন পাগলামো করছেন।”
“আপনি খুব খারাপ অভিনব। খুব খারাপ।”
ঠোঁট প্রসারিত করে হাসল অভিনব। ঝিলের কানের কাছে কিছু চুল গুছিয়ে বলল,”জানি তো আমি খুব খারাপ।”
“খারাপ ই তো।”
“একদম ঠিক। বউ কাছে আসলে আমি দূরে সরিয়ে দিই। ভালোবাসার বদলে দুঃখ ছড়াই। রাগ তো হবেই।”
“আপনি আবার এসব বলছেন।”
“খুব মিস করেছি প্রজাপতি।”
“শরীরে খুব ব্যথা?”
“ছিল তবে এখন নেই। আপনাকে দেখে ভালো লাগছে ঝিল। বুকে মাথা রাখবেন প্লিজ।”
ছেলেটার বুকে প্রশান্তি নেমে এল। বাইরে থেকে এ দৃশ্য দেখে হাসল তরুণ। তার বিদেশী বন্ধু বুঝি বদ্ধ পাগল।
প্রায় দুটো ঘন্টা অভিনবর কাছে ছিল ঝিল। এই সময়টুকুতে অভিনবর যত্নের শেষ ছিল না। ছেলেটার শরীর মুছিয়ে দেওয়া। মাথায় পানি দেওয়া, নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দেওয়া কত কিছুই না করেছে। অথচ জীবনে সে হাত গলিয়ে পানি এনে পান করে নি। মেয়েরা এমনি হয়। ভালোবাসার মানুষ গুলোর জন্য নিজের সবটা উজাড় করে দেয়। ওরা নিখুঁতভাবে ভালোবাসতে জানে।
দুদিন পর ঝিলের সাথে দেখা করতে এল আয়ুষ। ছেলেটার বলিষ্ঠ দেহে কেমন ভাঙন ধরেছে। চিন্তার রেখা ফুটেছে মুখমন্ডলে। তার বোন যে এমন কাজ করতে পারে কোনো কালেই মাথায় আসে নি। আয়ুষের অবস্থা দেখে খুব খারাপ লাগল ঝিলের। ওর ইচ্ছে করল সবটা বলে দিতে। কিন্তু এটা করলে রজনী আপুর সাথে খুব অন্যায় হবে। এত ঝামেলার মাঝেও আয়ুষ একটা উপহার এনেছে। ঝিলের জন্য লাল রঙের একটি শাড়ি এনেছে সে। আসার পথে নাকি পছন্দ হলো। বিষয়টা বলতেই ঝিলের মন খারাপ হয়। রজনীর সাথে আয়ুষের সম্পর্কটা গভীর ছিল না। ভাই বোন কেউ ই একে আপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে জানত না। অথচ হৃদয়ে অনেকখানি ভালোবাসা জমে আছে। ঝিল ভরসা দিতে আয়ুষের কাঁধে হাত রাখল।
“রজনী আপুর কথা ভাবো?”
“হুম।”
“আপু নিশ্চয়ই ভালো আছে।”
“ভালো আছে কি না জানি না। তবে ভালো থাকার জন্যেই তো পরিবার ফেলে পালিয়েছে।”
“হয়ত আপুর কাছে সেটাই সুখ।”
“এই সুখ একটু বেশি স্বার্থপরতার পরিচয় হয়ে গেল না রে?”
আয়ুষের দিকে তাকানোর সাহস পেল না ঝিল। অন্যদিক ফিরে ভাবতে লাগল বিষয়টা।
“মানুষ খুব খারাপ প্রাণী। যে পরিবারটা এত গুলো দিন আদর ভালোবাসা দিয়ে বড় করল তাদের ফেলে যেতে একটুখানি বুক কাঁপল না?”
গলা শুকিয়ে এসেছে ঝিলের। আয়ুষ আবার বলল, “পরিবারের ভালোবাসা ছিন্ন করে দিন দুনির ভালোবাসা যারা আপন করে নেয় তারা আদৌ কি জানে ভালোবাসার মুগ্ধতা।”
কেন যেন মেয়েটির এবার কান্না পেল। আয়ুষ এভাবে কেন বলছে। পরিবারের ভালোবাসার বাইরেও তো কিছু ভালোবাসা থাকে। তাছাড়া শুরুতেই তো পরিবার ছাড়তে চায় না কেউ। উপায় না পেয়েই তো এ সিদ্ধান্ত নেয়।
“জানিস ঝিল, পরিবার ফেলে যারা অন্য মানুষের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দেয় তারা কখনো ভালোবাসাই বোঝে না। জীবনে সব কিছু পেয়েছে এমন কোনো মানুষ নেই। তাছাড়া কে বলেছে জীবনটা সুন্দর হওয়ার জন্য সব পেতে হবে। কিছু সময় ত্যাগেও প্রশান্তি আসে।”
চলবে…
কলমে~ফাতেমা তুজ নৌশি