সন্ধ্যা আকাশের সুখ তারা পর্ব-১৪

0
120

সন্ধ্যা_আকাশের_সুখ_তারা
“নওশিন আদ্রিতা”
পর্ব সংখ্যা—১৪

৩৩.
নিরা বিছানাই হাত পা গুটিয়ে বিলায়ের ছানার ন্যায় শুয়ে আছে।রুমের লাইট বন্ধ করে দেওয়া থাকলেও জানালার পর্দা টেনে দিতে ভুলে গেছে ব্যালকনি থেকে আসা আলোতে পুরো ঘড় আলোকিত হয়ে আছে।সে আলোতেই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে রুদ্র নিরাকে।
রুদ্র নিরার পাশে যেয়ে তার নাকে ছোট ডায়মন্ডের একটা নাকফুল পড়িয়ে দিলো সাথে হাতে ডায়মন্ডের দুই জোড়া চিকন চুরি গলায় সিম্পল এক পেন্ডেন্ট। অনেক শখ করে রুদ্র এই সেট টা কিনেছিলো লন্ডনে যেয়ে এক প্রজেক্টের কাজে।আলতো করে নিরার কপালে চুমু দিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। খাবারের প্লেট টা ওইখানেই টি টেবিলে রেখে দিলো ঢেকে।যদি খিদার তারণাই রাতে নিরা জেগে উঠে তাহলে তাকে যেনো খাবার খুজতে না হয়।সেও ফ্রেশ হয়ে নিরাকে দেখতে দেখতে ঘুমে চোখ বুজে নিলো।

৩৪.
অভ্র রুমে ঢুকতে নিলেই কাজিনরা তাকে আটকে ন্যায়।অভ্রর চাচাতো বোন কমরে হাত দিয়ে বলে উঠে
—কি মশাই বউ চায়।
—তো কি তোর জামাই চাইবো।(চোখ ছোট ছোট করে)
—নাহ আবার চাইতেও পারো আমরা তো আর জানিনা তোমার(কথাটা সম্পূর্ণ্য না করেই হেসে দিলো সবাই)।
—হেহে দারুন জোক্স ছিলো এবার আমাকে যেতে দে সর।
—না না তা হবেনা আমাদের পাওয়না দেও (হাত বারিয়ে দিয়ে)
—আমার জানা মতে আমি কোন কালে তোদের জামাই বা বয়ফ্রেন্ডদের থেকে টাকা ধার নেই নাই তোদের থেকে নেওয়ার তো প্রশ্নই আসেনা নিজেরাই এক একটা ফকিন্নি আবার আমাকে কি দিবি সেখানে পাওনা আসে কই থেকে(চোখ ছোট ছোট করে)
—ইহ এতো কষ্ট করে তোমার খাট সাজালাম বউ সাজালাম আমাদের একটা হক আছে না।
—ওহ তাইনাকি আমি বলেছিলাম আমার খাট সাজা আমার বউ সাজা। এইযে বউ এর মুখে এক গাদা আটা ময়দা মেখেছিস ওইটা খায়ে আমার পেট খারাপ হলে হস্পিটাল বিল গুলা তোরা দিবি না তাইনা (ঠোঁট দিয়ে ভেংচি কেটে)
—মুখে লাগাম দে আর টাকা খোসা আমরা কিছু জানিনা নাহলে তোর আজকে আর বউ এর কাছে যাইতে হবেনা থাক এখানেই সারারাত।

কি আর করবে অভ্র বউ কে বউয়ের সাজে দেখার থেকেই পুরুষালী মনটা বাধা মানতে নারাজ। একে হলুদে শাড়ি পড়েই অভ্রর মাথায় আগুন জ্বালায় দিসে রুহানী আজ আবার লাল লেহেঙ্গাই নিজেকে সাজায়ে অভ্রর সমস্ত ধৈর্য বাধ ভেংগে ফেলেছে। আর কোন সুযোগ না দেখে পকেট থেকে পাচশ টাকার বান্ডেল ধরায় দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে।

সমস্ত রুমে লাইটিং করা ফেরি লাইট দিয়ে সাথে ফুলে ফুলে ভরানো। বিছানার মাঝখানে ইয়া লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে রুহানী অভ্র কপাল কুচকাই রুহানীকে কেমন চিকন চিকন লাগছে কই বিয়ের সময় কলে নিতে যায়ে ওজন ত ঠিক ই ছিলো তাহলে কয় ঘন্টাই চিকন হয়ে গেলো কি করে। আবার এত লম্বা ঘোমটাই বা টানা কেন যে হাত অব্দি ঢাকে গেছে।

অভ্র বেশি কিছু না ভেবেই রুহানীর পাশে এসে বসে
—কি ব্যাপার মিসেস রুহানী তালুকদার এতো লজ্জা কেমনে পাইলেন আপনি হ্যা। লজ্জার ও তো লজ্জা লাগবে দেখি ঘোমটা খুলেন এবার। (রুহানীর ঘোমটাই হাত দিতে গেলেই রুহানী মুখ ঘুরায় নেই)
—কি হলো এটা এমন চিঙড়ি মাছের মতো নড়ো কেন দেখি ঘোমটা খুলো নাহলে খুলতে দেও।

অভ্র আবার রুহানীর কাছে আসতে নিলেই রুহানী উঠে যায় আর অভ্র মুখের বলে বিছানাই পড়ে যায়।অভ্র তো এবার রেগে আগুন অভ্র আবার রুহানীকে ধরতে যাবে তার আগেই তার চোখ পড়ে আয়নায় চোখ পড়ে কাবাডের পাশেই রুহানী শাড়ি পড়ে দাঁড়ায় থেকে মিটি মিটি হাসছে। অভ্র এবার লেহেঙ্গা পড়া মেয়েটার দিকে তাকালো এবার অভ্র মাথাতেও দুষ্টু বুদ্ধি আসলো সুন্দর করে মেয়েটার দিকে আগাতে থাকলো মেয়েটাও পিছাতে লাগলো পিছাতে পিছাতে কাবার্ডের সাথে লেগে গেলো রুহানীও এবার ভয়ে চোখমুখ খিচে দাঁড়ায় রইলো ভয়ে অভ্রর দুই হাতের মাঝে আটকে পড়ে গেলো মেয়েটা অভ্র একহাত দিয়ে মেয়েটার ঘোমটা খুলে অন্যহাত দিয়ে রুহানীকে ধরে নিজের বুকে নিয়ে আসে। দুইজনেই এবার ভয়ে চিৎকার করে উঠে।

অভ্র সাথে সাথে ধমক দিতেই দুইজন চুপ মেয়েটার দিকে তাকায়ে চোখ ছোট ছোট করে নেই অভ্র কারণ মেয়েটা আর কেউনা অভ্রর খালাতো বোন রিমিসা।

—ছোট হয়ে বড় ভাইয়ের রুমে কি হ্যা এক থাপ্পড়ে সব দাত ফেলে দিবো বে*দ্দপ বের হো ফারদার আমার রুমের আশেপাশে যেনো না দেখি।

—কিন্তু স্যার এক থাপ্পড়ে ৩২ দাত পড়বেনা তো পড়লে একটা কি দুইটা পড়বে।

রুহানীর কথায় চোখ গরম করে তাকাতেই রুহানী ঘাপটি মারে পরে রইলো অভ্র বুকে। এদিকে রিমিসাকে যেতে না দেখে পুনরায় চোখ গরম করে তাকাতেই রিমিসা দৌড় মারলো।

—এইসব কোন ধারণের বেয়াদবী আমি জানি এই শয়তানী বুদ্ধি তোমার যদি আমি ভুল ভবিষ্যতে তুমি ভাবে ওকে ছুয়ে দিতাম তাহলে।

—তাহলে আমি থামাই দিতাম আমি তো এখানেই ছিলাম আমি কি জানি আপনি আমাকে চিনবেন না।

—আমি চিনিনাই তাইনা দিবো থাপ্পড়।

রুহানী কিছু না বলে আরও গভীর ভাবে জড়ায় ধরলো। অভ্র শরীর থেকে আসা ঘ্রাণ যেনো রুহানীকে পাগল করে দিচ্ছে একে সকালের অভ্রর বেসামাল ছোয়াতে সদ্য যৌবনে পা দেওয়া রুহানীর মন টাকেও বেসামাল করে দিয়েছে।

অভ্র রুহানীকে নিজের সাথে করেই দরজা অব্দি এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে রুহানীকে দরজার সাথে আটকে ধরে। রুহানীকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে রুহানীর থুতনি ধরে উপরের দিকে তুলে রুহানীর কম্পীত ঠোট জোড়া দখল করে নেয়। হাত অবাধ্য বিচরন চালাতে থাকে রুহানীর কমড় পিঠ জুড়ে। অভ্র বেসামাল ছোয়া যেনো রুহানীকে পাগল প্রায় করে তুলছে। এক পর্যায়ে রুহানীর ঠোঁটে ছেড়ে গলায় চুমু আর কামড়ে ভরায় দিতে শুরু করলো রুহানী আর না পেরে সে নিজেও অভ্রর ঘাড়ে দাত বসায় দেয় এতে অভ্র থামা বাদ দিয়ে রুহানীকে কলে তুলে বিছানাই নিয়ে ফেলে দেয় রুহানীর উপর আধশোয়া হয়ে রুহানীর কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে উঠে

—আই ওয়ান্ট ইউ রুহ আই ওয়ান্ট ইউ বেডলি জানপাখি।

অভ্রর নেশালো কন্ঠে রুহানীর গলা শুকায়ে কাঠ হয়ে আসলো চোখ বন্ধ করে অভ্রর পাঞ্জাবী খিচে ধরে। অভ্র তা নিরব সম্মতি মেনে নিয়ে রুহানীকে নিয়ে ভেসে যায় এক আলাদা সুখের সন্ধ্যানে।

৩৫.
রাত ২টা বাজে অদ্ভুত আওয়াজে ঘুম ভেংগে যায় রুদ্রর চোখ টিপটিপ করে খুলে বুঝার চেষ্টা করে রুদ্র আওয়াজ টা কিসের। রুদ্র পাশে তাকায়ে দেখে নিরা নেই ধরফড়িয়ে উঠে বসে রুদ্র উঠতেই তার চোখ যায় সোফার দিক সোফায় দুই পা গুটিয়ে কোলে প্লেট নিয়ে বসে আরামে পোলাও খাচ্ছে নিরা।দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুদার তাড়ণাতেই ঘুম ভেংগে গেছে।

রুদ্র উঠে নিরার পাশে বসে পড়লো।নিরা সেটা দেখলো অভিমান হলেও কিছু বললো না তার কথা মতে যে ভালোবাসবে সে নিজ থেকে বাসবে কাউকে বলার প্রয়োজন নেই তার সামনের মানুষ টা অভিমান হয়েছে সেটা ভাংগাতে হবে।

—আমিও সকালে থেকে কিছু খাইনি আমাকেও খাইয়ে দেও

নিরা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে দেখে পাশে আরও একটা প্লেট নিরা আর কিছু না বলেই খাওয়াতে শুরু করে দিলো। কিন্তু একবারের জন্যও রুদ্রর চোখের দিকে তাকাচ্ছে না। এদিকে রুদ্র নিরাকে অবাক করে দিয়ে নিরার ঠোটের পাশে লেগে থাকা পোলাও এর দানা নিজের মুখ দিয়ে খেয়ে নিতেই নিরা শকড হয়ে বসে থাকে সোফা উপরে পাথরের ন্যায়।।

চলবে??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে