লুকোচুড়ি_ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩৬
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
মিষ্টির খুশি আর ধরছে না রুমে বসে আছে ড্রেস ও চেন্জ করে নি। পা দুলিয়ে দুলিয়ে গান করছে আবার একটু পর পর হাত উঠিয়ে আংটির উপর কিস করছে। মনে আনন্দ লেগেছে আজ মিষ্টির এতো দিন দুষ্চিন্তায় থেকেছে সব সময় বাই ইনি চান্জ যদি সবাই বিয়ের ব্যাপার টা জেনে যায়। কি বলবে মানবে নাকি মুখ ফিরিয়ে নিবে সেই চিন্তায় মিষ্টি দু চোখের পাতা এক করতে পারে নি। রাজের সাথে শেয়ার ও করতে পারে নি রাজকে নিজের দুষ্চিন্তার কথা বললে আমাকে বকে দিতো আর বলতো,,
এতো চিন্তা কেন করছো এসব বিষয়ে কেউ জানবে না আমরা না চাইলে। এটা গোপন থাকবে অযথা এসব ভেবে রাতের ঘুম হারাম করো না।
আমি যখন আবার বলতাম,,, বিয়ে কথা না হয় গোপন থাকবে, কিন্তু আমাদের বিয়ে কথা বলবেন কিভাবে? তারা যদি মানতে রাজি না হয় আপনার সাথে আমাকে।
তখন রাজ আমাকে আসস্ত করেছিল,, ওইসব নিয়ে তুমি মাথা গামিয়ু না আমি সব ম্যানেজ করে নেব। তোমার তো এক সর্ত আমি যাতে বিয়েটা গোপন রাখি ওইটা না বলেই বিয়েতে সবাইকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দিয়ে নিষ্চিন্তে থাকো মাই ডিয়ার ওয়াইফ।
রাতে কথা গুলো বলেছিলাম রাজের এ কথায় কিছু টা শান্তি পেয়েছিলাম যার জন্য আমার চিন্তা ও কমে গেছিলো। চিন্তা হলে ও কম হতে থাকে আগের থেকে বাসার গিয়ে আমি ওতোটা চিন্তা ই করিনি শুধু রাজকে মিস করেছি। ওই দিন হঠাৎ বাসায় রাজের উপস্থিতি আমাকে সত্যি অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে দিয়েছিল।
আর যখন জানতে পারলাম এনগেজমেন্ট আমি তো আর ও শক খেয়েছিলাম। সাথে অবিশ্বাস্য ও মনে হয়েছে ভেবেছি রাজ বেশিই ভাবছে এষব হবেঈ না অন্য কিছু হবে হয়তো। কিন্তু আবার সারপ্রাইজ হলাম সত্যি আমাদের এনগজমেন্ট পরিবারের সবার মতে ভাবতেই শরীরের প্রতিটি লোম খাড়া হয়ে গেছিলো। চোখ দিয়ে পানি পরছিল রাজ যা দেখে ব্যস্ত হয়ে পরে কেন? আসলে এটা কষ্টের না অতি আনন্দের যা আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না সব আমার কাছে সপ্ন মনে হয়েছে। যেন ঘুম ভাঙলেই এই সুন্দর সপ্ন টা শেষ হয়ে যাবে। রাজ যেদিন আমার বিয়ে করে সেদিন ও আমি খুশি হতে পারিনি। কারণ ভয় ছিলো সবার জন্য আনন্দ টা আমি নিরবে একা পেয়েছিলাম। কাউকে বলতে পারিনি সবাইকে ঠকিয়েছি এটা মনে হয়েছে বারবার।
কিন্তু আজ আমি সম্পূর্ণ সুখি। রাজ যখন সবার সামনে আমার অনামিকা আঙুলে আংটি টা পরিয়ে দিয়েছে তখন থেকেই অদ্ভুত প্রশান্তি পাচ্ছি। আন্কেল আই মিনরাজেয বাবা হাসি মুখে সবাইকে আমার আর রাজের কথা বলছিল নিচে আম্মু মিনার মুখে হাসি শুধু তখন মামুনিকেই দেখিনি আর সবাই কতো খুশি ছিলো যা আমার আনন্দের মাএা বারিয়ে দিচ্ছে।রাজ যে ভাবেই হোক সবাইকে মানাতে পেরেছে ভাবতেই রাজকে একটা চুমু দিতে ইচ্ছে করছে।
কথা টা নিজের মনে ভেবেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল মিষ্টি। দু হাতে মুখ ঢেকে বসে রইল হঠাৎ কেউ ঘারে হাত রাখতেই লজ্জা আর পেল ও সিউর এটা নিশ্চয়ই রাজ রাজ এসেছে। চোখ না খুলে ওইভাবে বসে আছে হঠাৎ হাত টা নাই কেউ টান মেরে আমার মুখে থেকে হাত সরিয়ে নিলো আমার হাত ধরার সময় কেমন অন্য কারো হাতে মতো লাগছিল। সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকাতেই অট্রো হাসিতে ফেটে পরে মিনা রাগী মুখ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কি অসভ্য এভাবে কেউ হাত সরায়।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুনl5
–এই তুই এখানে কি করিস আর এভাবে কিউ হাতে টান দেয় ব্যাথা করে দিলি।
–তা রে আপু তুই কি ভাবছিলি রে যে এতো লজ্জা যে মুখ ডেকে ছিলি। আর আমি ওইভাবে হাত সরিয়েছি কারণ আছে?
–কি কারণ?
–তুই আমাকে ভাইয়া ভেবেছিলি তাই না রে আপু।
— সাথে সাথ মিষ্টি বড় বড় চোখ করে মিনার দিকে তাকালো। ও বুঝলো কি ভাবে আমি কি বুঝেছি আমি যে রাজকে ভেবেছি এটা ও বুঝল কেমনে।
–এভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই আমি কিভাবে বুঝেছি তা তোকে বলতাম না।
–বল না কি করে বুঝলি?
–তোর লজ্জা,, বলুম না বলছিনা। যাই আমি ঘুমাতে জাআ নিতে আসছি তোর রুমে তো তখন ব্যাগ রেখেছিলাম।
–যাই মানে কোথায় যাবি।
–ঘুমাতে,,,
–ঘুমাতে এখানে শুবি না।
–না আম্মুর সাথি শুবো তার নাকি ভালো লাগছে না তাই।
–কেন কি হয়েছে আমাকি বলিস নি কেন চল আমি ও তোদের সাথে ঘুমাবো।
–না না তোর যাওয়ার দরকার নাই।
–মানে আমার যাওয়ার দরকার নাই কেন? কি বলতে চাইছিস মা অসুস্থ আমি যাবনা এক থাপ্পড় দিব কিন্তু।
–দূর এই জন্যই কারো ভালো করতে নেই। আম্মুর কিছু হয় নি।
–এই না বললি আম্মু অসুস্থ আবার এখন বলছিস কিছু হয়নি তুই কি পাগলী হলি কি সব বলছিস একেক সময় একেক কথা।
–আম্মুর কিছু হয়নি। ভাইয়া আমাকে ওই রুমে শুতে বলেছে।
মিষ্টি ভাইয়া শুনতেই শক খেলো রাজ মিনা কে মানা করেছে কেন? নিজে আসবে বলে অসভ্য লোক একটা মিনা কিনা কি ভাবছে কে জানে মিনাকে আর কিছু বলথে পারলো না মিনা জামা নিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে।
বারোটা বাজে মিষ্টি জেগেই আছে। ঘুম আসছে না কোন ভাবেই সেই কখন থেকে রাজের অপেক্ষা করছে কিন্তু রাজের পাত্তা নেই এখন ও আসে নি। সব সময় বিরক্ত লাগতো রাজ আসতো বলে কিন্তু আজ মিস করছে রাজকে। আসবে বলেছে মিনাকে তাহলে আসছে না কেন। রাজই আমার বদ অভাস তৈরি করেছে প্রতিদিন রাজির বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে ঘুমাতে এখন আমার ভালো লাগছে না।
খাট থেকে উঠে বসলো মিষ্টি একবার কি যাবে রাজ কি করছে দেখতে যেই ভাবা সেই কাজ।
দরজা খুলে বাইরে বের হয় দু কদম এগুতেই দেখতে পায় কেউ উপরে থেকে নিচে নামছে ভালো করে দেখে এটা আন্কেল আই মিন রাজের বাবা মিষ্টি দৌড় দেয় উল্টো ঘুরে রুমে চলে আসে আর একটুর জন্য যদি আন্কেলের সামনে পরে যেতাম তাহলে কি বিচ্ছিরি কাণ্ড না হতো। বুকে হাত দিয়ে জোর জোর শ্বাস টেনে নেয়। খাটে শুয়ে পরে রাজকে বিয়ের ব্যাপারে অনেক কিছু বলতে চাইছিলাম আমার আনন্দের কথা । কিন্তু সে তো আসলোই না। চোখ বন্ধ করে ছিলো কখন ঘুমিয়ে গেছে খেয়াল নেই।
চারটার দিকে জাগানা পাই কারো শক্ত হাতে জরিয়ে আছি আমি তাকিয়ে দেখি রাজ আমাকে জরিতি ধরে ঘুমিয়ে আছে। উনি এখানে কখন এলো আমি তো অপেক্ষা করছিলাম অনেক ক্ষণ যেত ও চেয়েছিলাম কিন্তু আন্কেল কে দেখে আর সাহস করিনি। তার রুমে এসে শুয়ে ছিলাম কখন ঘুমিয়েছি মনে নেই আমি ঘুমানোর পরই এসেছে তাহলে আমাকে ডাকলো না না ডেকেই ঘুমিয়ে ছে। মিষ্টি রাজকে ডেকে জাগানা করলো,,
–কি হয়েছে ডাকছো কেন ঘুমাতে দিবে না নাকি আমি কিন্তু খুব টায়ার্ড একটু ঢ়মাতে দাও জান নরো না।
–আপনি কখন এলেন আমি তো অনেক ক্ষণ জেগে ছিলাম তখন তো আসেন নি।
–একটু বিজি ছিলাম তাই লেটহয়েছে আসতে তুমি তখন ঘুমে ছিলে।
–আমাকে ডাকলেন না কেন?
–এতো প্রশ্ন কেন করছো? ঘুমাও না সকাল হয়ে এলো তো।
— হোক আগে বলে নেন।
–ওফ মিষ্টি আমি কি বলবো?
–বিয়েটা কবে ঠিক হলো। সবাই ত বলছিলি এই সপ্তাহেই।
— হুম আমি না করে দিছি।
–মানে কি না করছেন?[ অবাক হয়ে ]
–বিয়ে
–বিয়েতে না করে দিছেন। তার মানে আপনি আমাকে বিয়ে করতে চান না তাই তো একা তো তখন জোর করে করলেন এখন সবাই দিতে চাইছে আপনি মানা করলেন কেন খরলেন বলেন এখন আবার সেটা বলছেন আমাকে জরিয়ে ধরে।
বলেই মিষ্টি রাজকে ধাক্কায় দিয়ে সরিয়ে দিলো কষ্টে ওর বুক ফেটে যাচ্ছে রাজ বিয়েথে না করতে পারলো কিন করলো এমন আবার আমাকে জরিতে ধরে আছে। রাজ আচমকা ধাক্কা খাওয়ায় ঘুমের রেশ কেটে গেল মিষ্টি কি বলছে ভালো করে শনে নিজেই ভিমরি খেয়ে পরলো এসব কখনো বলেছে। ঘুমের ঘোরে যে রাজ কি বলেছে কিসের উওর এ কিছু মনে নেই।
–কি হয়েছে জান এমন করছো কেন?
–একদম আমার কাছে আসবেন না আর কে আপনার জান এসব বলতে না করেছি আর বলবেন না। আমাকে বিয়ে করবেননা এটা কেন বলেছেন বলেন।
–হুয়াট কি বলছো জান বিয়ে করবো না কে বলেছে। বিয়ে তো করেই ফেলেছি আর আববু আম্মু ও রাজি সো নাসকেন করবো তুমি কি পাগল হলে এই ভাঝরাতে কি সব বলছো।
–কি আমি আমি পাগল? আপনি এই মাএ বলেছে বিয়েতে না করেছেন আর আমি কিছু বললেই পাগল হয়ে যাই তাই না।
রাজ মিষ্টির দিকে এসে মিষ্টি কে জরিয়ে ধরতে চায় মিষ্টি সরে বসে রাজ বুঝতে পারে ঘুমে কিছু গন্ডগোল করেছে তাই জোর করে মিষ্টি কে জরিয়ে ধরে মিষ্টি ছুটার চেষ্টা করে কিন্তু পারেনা।
–জান তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না একটু ও। আমি তোমকে বিয়ে করবো না এটা বলি নি ঘুমে হয়তো গন্ডগোল হয়েছে তোমার বুঝতে বা আমার বলাতে। তোমাকে কতোটা ভালোবাসি কতোটা চাই সেটা তো এতোদিনে একটু হলেও বুঝেছো তাই না এখন যদি এসব বলো আমার খারাপ লাগে শুনতে। তোমাকে ঠকাবো আমি এটা বলতে পারলে তুমি তোমাকে ঠকানো মানে নিজেকে ঠকানো। তুমি আর আমি আলাদা নাকি যেদিন তোমায় ভালোবাসেছি সেদিন থেকেই তোমাকে নিজের ভাবি। আর আজ তুমি আমার স্ত্রী সবাই হয়তো জানে না তুমি তো জানো তাও এইটা ভাবলে কি যে তোমাকে সবার আড়ালে বিয়ে করেছৈ সবাইকি মানিয়ে রাজি করিয়েছে সে তোমাকে ঠকাবে।
–সরি কিন্তু আপনি যে বললেন বিয়েতে না করছেন??
–ওইটা বুজতে ভুল হয়েছি না কেছ ঠিকই কিন্তু বিয়েতে না। এখন যাতে বিয়ের আরেন্জমেন্ট না করে। কারণে তোমার এক্মাম এসে গেছে এইসবের মাঝে পড়ায় একদম মন দিচ্ছো না তুমি আমি চাইনা এসবের জন্য তুমি নিজের প।ড়ার ক্ষতি করো। এক্মামের পর বিয়ের অনুষ্ঠান হবে এটাই বলেছি না করিনি।
-মিষ্টি রাজের বুকে থেকে মাথা উঠিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কতো ভাবে আমাকে নিয়ে আর আমি কিনা ভুল বুঝি আসলেই বিয়ে নিয়ে ভাবতে ভাবতে পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে আমার এক্মাম আমি ই ভুলে গেছিলাম।
–সরি,,,
–ইটস ওকি জান এভাবে বললে আমার কষ্ট হয়।
–আর হবে না এমন।
ইনোসেন্ট মুখ করে মিষ্টি সরি বলল রাজকে খুব খারাপ লাগছে নিজের কাছে এভাবে রিয়াক্ট করার জন্য। রাজের মনটা ভার লাগছে ভালো লাগছে না সব সময় কষ্ট দেয় মিষ্টি কি ভেবে যেন আবার মাথা উচু করলো রাজ ওকে ছেড়ে শুয়ে পরে মিষ্টি ও খাটে শুয়ে পরে পাশে কিন্তু রাজের জন্য খারাপ লাগছে হঠাৎ রাজের গালে চুমু দিয়ে বসে। রাজ শুয়েই চুখ বন্ধ ছিলো হঠাৎ গালে নরম স্পর্শ পেয়ে চোখ মেলে।
চলবে❤