লুকোচুড়ি ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩৫

0
1645

লুকোচুড়ি ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩৫
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি

— মামুনি কি হয়েছে তোমার পরে গেলে কিভাবে তুমি? কোথায় লেগেছে তোমার বলো আমাকে আর এখন তুমি বাগানে কি করছো। ওইখানে না থেকে এখানে কেন এসেছো বলো।

মিষ্টি ওর মামুনির পাশে বসে একের পর এক কথা বলেই চলেছে। ওর মাথায় আসছে না এখন ওর আর রাজের এনগেজমেন্ট হলো তখন মামুনি ওদের কাছে না থেকে এখানে কি করছে। আর পড়লো কি করে?

–আম্মু আর ইউ ওকে। তুমি ঠিক আছো।

–হ্যা আমি ঠিক আছি তোরা চিন্তা করিস না। হঠাৎ এমন ভাবে হাত ছাড়িয়ে চলে গেল যে নিজেকে সামলাতে না পেরে পরে গেছি। মিষ্টি মা আমাকে ধরে উঠা আমি উঠতে পারছি না।

–কি বললে মামুনি হাত ছাড়িয়ে গেছ মানে কে গেছে বুঝলাম না। কে ছিলো তোমার সাথে আর এভাবে তোমায় ফেলে দিলো।

রেহেনা বেগম তালে তালে বলে ভয়ে ভয়ে রাজের দিকে তাকায় রাজ যদি জানে মারিয়ার জন্য এতো কিছু তাহলে তো ও কি করে বসবে ঠিক নেয় আর আজকে ছেলেটার জীবনের স্পেশাল দিনের মধ্যে একটা এইসব বলে নষ্ট করতে চায় না।

–না কেউ না কি বলতে বলেছি আমি একাই পরে গেছি।

— একাই তুমি কেবল না বললে কেউ হাত……

–[ রেহেনা বেগম কথার মাঝে আটকে দেয়] দূর কি বলতে কি বলেছি আসলে পরে গিয়ে অনেক ব্যাথা পেয়েছি তো এই দেখ উঠতে পারছি না আমাকে ধরে রুমে নিয়ে চল তো কথা বাদ দিয়ে।

রাজের দিকে মিষ্টি তাকায় রাজ এতোক্ষন আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকলেও এখন পেছনে তাকিয়ে কাউকে খুজছে। মুখে রাগ স্পষ্ট এদিক ওদিকে তাকাতাকি করছে। মামুনির সামনে কিছু জিগ্গেস ও করতে পারছি না। মামুনিকে উঠাতে গেলাম একা উঠানো কষ্ট হচ্ছে তাও একাই চেষ্টা করছি হঠাৎ রাজ আমাদের দিকে ফিরে রেগে তাকায় আমার দিকে। রাগের কারণে বুঝছি না আমি আমাকে রাগ দেখাচ্ছে কেন?

রাজ এসে মামুনিকে ধরে তুলল তারপর দুজনে ধরে রুমে এনে মামুনিকে শুইয়ে দিলাম। মামুনি নাকি বেশি ব্যাথা পায় নি বলল তাই আর ডাক্তার ডাকা হলো না আইস ব্যাগ এনে মাজায় দেওয়া হলো আমার মা এসে মামুনির পাশে বসে সেবা করতে লাগলো। নিচে সবাই খাওয়া দাওয়া করেন চলে যাবে আর কিছু হবে না আন্টির এই অবস্থায়। রাজকে খুজছি কাকে যেন খুজলো দেখলাম এখন আবার কই গেল।

–মিনা তোর ভাইয়াকে দেখেছিস।

–হ্যা আপু ভাইয়া তো বাগানের দিকে গেল কেন কি হয়েছে?

–কিছু না এমনি।

বলেই মিষ্টি বাগানের দিকে যেতে লাগলো কিন্তু মাঝ পথে আটকে গেল আন্কেল পেছনে থেকে ডাকছে।

–জি আন্কেল কিছু বলবেন?

–এদিকে এসো আমার বন্ধুদের সাথে তোমার আলাপ করিয়ে দেয়।

মিষ্টি আর কি করবে রাজের কাছে যাওয়ার থেকে এখানে থাকা বেশি ইম্পটেন্ট। মিষ্টি তার পাশে গিয়ে দাড়ালো আর পরিচয় করাতে লাগলো আমার ছেলের বউ ইত্যাদি বলে।

এদিকে রাজ ওখানেই যেতেই মারিয়াকে দেখেছে। তাই ওর বুঝতে বাকি নেই যে এই কাজটা কে করেছে মা অশান্তি চায় না তাই লুকিয়ে গেছে। রাজ মারিয়াকে আটকে দিয়েছে একজনের সাহায্যে আর সে হলো দাড়োয়ান কাকা আম্মুকে রুমে দিয়ে এসেই আবার এখানে এসেছে আজকে আর ওকে ছাড়বে না একেতে বিয়ে ভালোবাসা এসব নিয়ে মিথ্যে বলেছিল এখন আবার আম্মুর ক্ষতি করার টাই করেছে। রাগে ওর কপালের রগ ফুলে উঠছে। মারিয়ার সামনে যেতে মারিয়া কান্না শুরু করে দেয়।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
–রাজ বিলিভ ইট আমি ইচ্ছে করে আন্টি কে ফেলি নি। আসলে তখন তোদের এনগেজমেন্ট হচ্ছিলো আমি কি ভাবে আটকাবো ভেবে পাচ্ছি লাম না তার উপর আন্টি আমায় আটকে ধরে তাই তারাহুরা করে হাত ছাড়িয়ে যেতে নেয় আর এসব ঘটে। এতে আমার কোন দোষ নেয় রাজ আন্টি নিজে নিজের জন্য দোষ আমাকে না আটকালে আমি এমন করতাম না। তুই তো জানিস আমি তোকে কতোটা ভালোবাসা সি তোর জন্য আমি কি কি করতে পারি। তুই প্লিজ ওই মেয়েকে ছেড়ে আমার কাছে ফিরে আয় রাজ। তোকে ছাড়া বাচবো না আমি।

মারিয়া কথাগুলো বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পরে।

–স্টপ দিজ। নেকা কান্না বন্ধ কর এসব আমার দেখতে ইচ্ছে হয় না তুই আমাকে ভালোবাসি মানলাম কিন্তু তুই এটাও জানিস আমি তোকে ভালোবাসি না সব জেনে শুনে তুই আমার পরিবারের সবাইকে মিথ্যে বলেছিলি কেন?

–তোকে পাবার জন্য। তোকে আমি হারাতে পারবো না তাই।

–জোর করে ভালবাসা হয়না সেটা কি তুই জানিস না।

–আমি কিছু জানতে চাইনা আমি শুধু তোকে চাই এতে জোর করতে হলে আমি করবো। তুই আমাকে বিয়ে করবি বল।

বলেই মারিয়া রাজের হাত আকড়ে ধরে। রাজ সঙ্গে সঙ্গে হাত ছাড়িয়ে নেয়।

–এতো কিছু করেছিলি তাও কিছু বলিনি আম্মুর জন্য। আর আজকে আম্মুকেই কষ্ট দিলি তুই।

–আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি।

–তুই ইচ্ছে করেই করেছিস।

–না ইচ্ছে করে করিনি।

–তোকে পরিষ্কার কিছু কথা বলি আমি শুধুমাত্র মিষ্টি কেই ভালোবাসি আর ওকেই বিয়ে করবো। সারাজীবন ওর সাথেই কাটাবো মাঝে তুই কোথায় ও নেই। তুই আমার জাস্ট একটা ফ্রেন্ড এর থেকে বেশি কিছু না। কথাগুলো মাথায় ভালো করে ঢুকিয়ে নে। আম্মু তোর জন্য কষ্ট পাচ্ছে তোর জায়গার অন্য কেউ থাকলে কি করতাম জানি না। তোকে ভালো ফ্রেন্ড মনে করি তাই কিছু বলছি না নেক্মট এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকবি।

— আমি কিছু করবো না শুধু আমাকে মেনে নে।

–এটা অসম্ভব।

–যা বাসায় যা বন্ধ বলে পার পেলি সেটা মাথায় রাখিস। আবার কিছু করলে ছারা পাবি না।

রাজকথা গুলো বলেই ভেতরে চলে গেল।

মিষ্টি এদিক টা পরিচয় পর্ব শেষ হতেই তারাতারি বাইরে যেতে লাগলো দরজায় বাইরে পা রাখতেই রাজকে এদিকে আসতে দেখলো।

–কোথায় যাও?

মিষ্টি রাজকে দেখেই দাড়িয়ে পরে রাজ এসেই প্রশ্ন ছুড়ে।

–কি হলো কোথায় যাচ্ছিলে?

–না মানে আসলে,

মিষ্টি কি বলবে বুঝতে পারছে না ও যে রাজের পিছু নিতে চাইছিলো বললে রাজ বকে দিবে তাই কি বলা যায় ভাবছে।

মিষ্টির ভাবনায় মাঝেই রাজ মিষ্টি হাত ধরে ভিতরে ঢুকে এলো।

–আপনি কি কাউকে খুজেছিলেন তখন।

–কখন

স্বাভাবিক ভাবেই বলল রাজ।

–মামুনি যখন ব্যাথা পেয়েছে।

এটা শুনার সাথে সাথে রাজ নড়েচড়ে বসলো। মিষ্টি কে জানতে দিতে চায় না মারিয়া এতো কিছু করেছে।

–না তো।

— না আমার যে মনে হলো কাউকে খুজছেন।

–ধ্যাত কাকে খুজবো আমি। আর যাকে সব সময় খুজতাম এখন সে তো আমার কাছেই আছে আর কাকে খুজবো বলেই রাজ মিষ্টি কে কাছে টেনে নেয়।

মিষ্টি নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করতে থাকে।

–ছারুন আপনি কিছু লুকিয়ে করছেন না তো আর হঠাৎ সবাই এনগেজমেন্টের আয়োজন করলো আর আপনি সিউর ছিলেন কিভাবে বলেন।

–আরে আমি কিছু বলিনি সত্যি শুধু আম্মু বলেছিলো কাউকে ভালোবাসি কি না আর আমি তো মিথ্যে বলিনা তাই বলে দিয়েছি। আর সব আববু আর আম্মু করেছে।

–হঠাও কাউকে ভালোবাসেন কিনা তাদের মাথায় এলো কেন?

–ছেলে বড় হয়েছে বিয়ে করাবে বলে। তুমি এতো কিছু জানতে চাইছো কেন খুশি হও নি এসবে।

রাজের কথায় অভিমান দেখতে পেল মিষ্টি তাই আর কিছু জিগ্গেস করলোনা।
আর কিছু বললো ও না শুধু রাজকে জরিয়ে ধরে বুকে মুখ গুজে রইলো।

বিয়েয ডেট ও ফাইনাল করে ফেলেছে মিষ্টির মার সাথে কথা বলে খুব তারাতারি কাজ শেষ করতে চাই দুই পরিবার ই।

চলবে❤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে