#রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্টঃ৩৫
#রুবাইদা_হৃদি
পশ্চিমের মৃদু হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে৷ চুল গুলো হাওয়ার তালে দোল খাচ্ছে৷ চোখেমুখে আছড়ে পড়া চুল গুলো কেও একজন যত্ন করে গুজে না দিয়ে থেমে থেমে এলোমেলো করে দিচ্ছে৷ পেছন থেকে জড়িয়ে রাখা হাত দুটো ইচ্ছা করেই যে পেটের মাঝে স্লাইড করছে সেটা খুব করে বুঝতে পারছি৷ বিরক্তি তে আছড়ে পড়লেও সামলে নিচ্ছি৷ সব কিছু বাদ দিয়ে, চব্বিশ ঘন্টার বেড়াজালে খুব করে ফেঁসে গিয়েছি৷ হাতের স্পর্শ গাঢ় হতেই আমি কেঁপে উঠলাম৷ তার হাতের উপর হাত রাখতেই সে ঘাড়ে ঠোঁট ছোয়ায়৷ অফিসের রুমে দাঁড়িয়ে কাজ ফেলে সে রোম্যান্সে ব্যাস্ত৷ আমি তার হাতে চিমটি দিতেই সে আরো আঁকড়ে ধরলেন৷ ফিসফিস করে বললেন,
–‘ সবে মাত্র দশ ঘন্টা হয়েছে বউ৷ ‘
–‘ তো..! ‘
আমি কাঁপা ভাবে বলতেই উনি আমাকে সামনে ঘুরিয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে বললেন,
–‘ তো..! মিসেস চব্বিশ ঘন্টা আশেপাশে থাকতে চেয়েছে৷ এর মানে সে আমার কাছে..!’
আমি তার ঠোঁটের উপর হাত দিয়ে আটকিয়ে দিলাম৷ লোকটা বড্ড বেহায়া৷ আশেপাশে থাকার মানে এইসব৷ উফফফ..! হাতের মাঝে আবার৷ আমি চোখ বড় বড় করে তাকালাম৷ হাত সরিয়ে নিতেই উনি হাসলেন৷ তার হাসিতে দুষ্টুমি ভরা৷ আমি নিজেই এবার সেদিনের মতো কাজ করে লজ্জায় দাঁড়িয়ে রইলাম৷ সে এখনো ফ্রিজড৷ আমি তার হাতের বাঁধন আলগা পেতেই উনার চেয়ারে বসে পড়লাম৷ উনি এখনো ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে৷ আমি কলম আর ফাইল নিয়ে তার মতো করে বললাম,
–‘ হেই মিস্টার কাব্য.. কাজ ফেলে কি করছেন ওইখানে৷ কাম হেয়ার ইউ ইডিয়ট৷ ‘
উনি ভ্রুকুটি করে তাকালেন৷ আমি ফাইল দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম৷ তার চোখে চোখ মেলাতে পারবো না৷ উচ্ছ্বাস আবেগ ঠিকরে পড়বে যে৷ উনি বোধহয় হাসছেন৷ আমি ফাইল সরিয়ে ফেলতেই সামনে উনাকে পেলাম না৷ পেছনে থেকে নিশ্বাসের শব্দের উৎস পেতেই আমি উঠে যেতে নিলাম৷ সে চেয়ারে বসে একটানে আমেকে কোলে বসিয়ে নিলেন৷ তারপর, ফাইল টেবিলে রেখে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন৷ আমি ঘোর কাটাতে পারছি না৷ হলো কি? সে গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন৷ আমি উঠে যেতে নিলেই উঠতে না দিয়ে আটকে ফেললেন৷ বললেন,
–‘ তোর কথার নড়চড় হতে তো আমি দিবো না৷ একদম না৷ ‘
–‘ ছাড়ুন আমার অস্বস্তি হচ্ছে৷ ‘
উনি কাজ রেখে আমাকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে সামনে ঝুকে দাঁড়ালেন৷ আমি ভয় পেয়ে পিছিয়ে না গিয়ে চেয়ারে একদম লেগে গেলাম৷ উনি গালে স্লাইড করে বললেন,
–‘ প্রত্যেক টা মূহুর্ত একেকটা মূহুর্তের সাক্ষী৷ শূন্যতা নামক কিছু তোর আশেপাশে আসতেই পারবে না৷ আমি আছি,থাকবো৷ সব সময়৷ সেটা যেভাবেই হোক৷ ‘
আমি চোখ খুলে তার গভীর দৃষ্টির দিকে তাকালাম৷ বললাম,
–‘ জানেন,আপনার শূন্যতা নয় হারিয়ে ফেলার ভয় পাই আমি৷ কেন পাই? বলতে পারবেন? ‘
–‘ রৌদ্দুরে যেমন বৃষ্টি হয় মাঝে মাঝে, তেমন তোর মনের ভয়ের কারণ বৃষ্টির মতো৷ রৌদ্দুর আর বৃষ্টির খেলায় মিশে যাবে৷ না থাকার ভয় প্রেমের বৃষ্টি নিয়ে নামবে৷ হারিয়ে গেলে,সেই বৃষ্টির ফোঁটায় খুজে বেড়াবি৷ পেয়ে যাবি,আমি তোকে ছুঁয়ে দিবো৷ গ্রহণ করে নিবি মাঝে মাঝের সেই বৃষ্টির ফোঁটা৷ ‘
আমি উনার বুকের সাথে মিশে গেলাম৷ চাই না কোনো বৃষ্টির ফোঁটা আমার যে শুধুই তাকে চাই৷
____________
শীতের আমেজ পড়ছে৷ কুয়াশায় ঢেকে যাওয়া কাঁচের ফাঁক দিয়ে হালকা কিরণ রুমে ঢোকার জন্য কতশত বাহানা করছে৷ রৌদ্রতপ্ত হয়েও তাদের যাওয়ার জায়গা নেই৷ মিইয়ে যাওয়া লজ্জায় রাঙা নতুন বধূর মতো গাছের পাতা ঝড়ে পড়েছে বহুকাল আগেই৷ সাদা আস্তরণে ঢেকে থাকা একফালি সবুজ কুচি দেখা মিলছে পাতাবিহীন গাছে৷ ঠান্ডায় কেঁপে উঠা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে শরীরের শিরায় শিরায়৷ অলস চোখ না খোলার বাহানা নিয়ে যুদ্ধে মেতে উঠছে৷ পাশে থাকা মানুষটার শরীরের উষ্ণ পরশ ঠান্ডার মাঝে অলসতা যেন আরো বাড়িয়ে দিলো৷ ঘুমু ঘুমু চোখে তার সাথে একদম মিশে গেলাম৷ সে দুইহাতে আরেকটু জড়িয়ে নিলেন৷ তাপমাত্রা হঠাৎ করেই নভেম্বরে মাঝে এসে মাইনাস হয়ে গেছে৷ ঠান্ডা জমে যাওয়ার অবস্থা৷ দিন যাওয়ার সাথে ঠান্ডা বেড়ে চলেছে সেই সাথে ভালোবাসার উষ্ণতা৷ চব্বিশ ঘন্টার তিন ঘন্টা তাকে ছাড়া থাকতে হয়৷ আর সেই সময় আমার ভার্সিটির ক্লাস৷ জীবন থেকে সেই তিন ঘন্টা তাকে বিহীন চলে যাচ্ছে ভেবেই শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো৷ ঘুমের মাঝে হুট করেই শয়াতানি বুদ্ধি মাথা চারা দিয়ে উঠলো৷ অবিশ্রান্ত ভাবে তার বাঁধন থেকে ছুটে টি শার্টের ভেতর দিয়ে ঢুকে গেলাম৷ আমার ঠান্ডা হাতের স্পর্শে তার ঘুম ছুটে গেছে৷ উনি কঁপাল কুঁচকে আমাকে তাও জড়িয়ে আবার ঘুমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেন৷ আমি নিজের হাত দুটো বের করে ঠান্ডা করে নিলাম৷ তারপর উনার পিঠের উপর স্লাইড করতেই হুড়মুড় করে চোখ খুলে ধমকে উঠেন আমায়৷ হঠাৎ করেই মন খারাপেরা হানা দিলো৷ আমি গুটিশুটি ভাবে সরে আসতে গেলেই উনি সরে আসতে দিলেন না৷ ওইভাবে জড়িয়ে রাখলেন৷ আমি মন খারাপ করে বললাম,
–‘ ক্লাস আছে৷ আমি উঠবো৷ ‘
–‘ আজ সানডে৷ ‘ উনি স্লো ভয়েসে বললেন৷ ধমকের সুর কানে বাজছে৷ তাই আবারও উঠতে চাইলাম৷ উনি জেদি৷ আমার চেয়ে বেশি৷ দিবেন না মানে না৷ আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিয়ে বললেন,
–‘ ঠান্ডাময় সকালে উষ্ণতায় ঘেরা পরশ দিয়ে পালিয়ে যাওয়া তো ঘোর অন্যায়৷ ‘
আমি অভিমান করে বললাম,
–‘ অন্যায় টন্যায় জানি না৷ বকেছেন আমায় সেই খেয়াল আছে? ‘
–‘ বকেছি বুঝি? ‘
–‘ মনে করুন৷ ‘
–‘ মহারাণী রাগ করেছে? ‘
আমি নিজের ঠান্ডা হাত তার গালে ছুইয়ে দিয়ে খিলখিল করে হেসে বললাম,
–‘ রাগ নেই৷ ‘
উনি ভ্রুকুচকে ফেললেন৷ ঠান্ডা হাতের ছোঁয়াতে উনার শরীরে জারকাটা দিয়ে উঠলো৷ আমি হেসে চলেছি৷ অবিরাম৷ উনি নিজেও হেসে ফেললেন৷
রৌদ্রউজ্জ্বল দিনের শেষভাগ ছাপিয়ে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বরফের আভাস পেলাম৷ ডিভানে আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেই হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করলো৷ তার সাথে বৃষ্টির ফোঁটার মতো তুষার৷ আমি একলাফ দিয়ে উঠলাম৷ জীবনের প্রথম৷ বর্ষার সময় বর্ষা দুপুরে আকাশ ভেদ করে যেমন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিরা মেতে উঠে ঠিক তেমন টা৷ দৌড়ে সামনের ইয়ার্ডে গেলাম৷ উত্তাল ভাবে তুষার পড়ছে৷ উনি অফিসে৷ এখনো ফেরেন নি৷ আমি আবার রুমে গিয়ে জিনিয়া কে ফোন দিলাম৷ পাগল প্রায় অবস্থা৷ স্নো গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়ছে আমাকে৷ আমি দু হাতে তাদের বরণ করে নিচ্ছি৷ ঠান্ডা লাগলেও সেটা পাত্তা দিচ্ছি না৷ জিনিয়া ফোন ধরতেই ওকে ভিডিও কলে সব টা দেখালাম৷ ও পারলে এখুনি চলে আসবে৷ আমি হাসছি৷ প্রাণ খোলা হাসি৷ কিছু মূহুর্তে সামনের পুলের পানি জমে বরফে পরিণত হলো৷ গাড়ির আওয়াজ পেতেই আমি দৌড়ে পার্কিং এরিয়া তে যাই৷ উনি গাড়ি থেকে নামতেই আমি উৎফুল্ল ভাবে উনাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো আবদার করে বললাম,
–‘ স্নো..ইশ! কতো সুন্দর৷ চলুন আমরা হাটি৷ এতো সুন্দর আমি আগে দেখি নি৷ ‘
–‘ সোয়েটার কই তোর? ‘
উনার গম্ভীর আওয়াজে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সোয়েটারের ” স ” ও নেই৷ হঠাৎ করেই ঠান্ডা লাগতে শুরু করলো৷ আমি কেঁপে উঠলাম৷ সাথে তার গম্ভীর দৃষ্টি৷ স্নোফলের মতো ধমক ঝড়বে ভেবেই তার সাথেই জড়িয়ে গেলাম৷ ঠান্ডায় কেঁপে কেঁপে উঠছি৷ উনি ক্লান্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে উন্মনা ভাবে বললেন,
–‘ কবে বড় হবি তুই?’
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
–‘ ব..বড় ত তো হয়েই গেছি৷ কয়েকদিন পর চানকু মানকু আসবে৷ আর আপনি এখনো কবে বড় হবো ভাবছেন৷ ‘
–‘ চানকু মানকু৷ হোয়াট দ্যা হেল৷ কি ধরণের ভাষা এইগুলা৷ ‘
আমি নিজের কেঁপে ওঠা ঠোঁট জোড়া দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে তার সাথে আরো মিশে গিয়ে বললাম,
–‘ আমি রাতের আঁধারে স্নো এর উপর হাটবো৷ এইটা আমার অনেক দিনের ইচ্ছা৷ ‘
–‘ টেনে এক থাপ্পর মারবো ফাজিল৷ কি ধরণের ইচ্ছা এইগুলা?
–‘ আ আ আ..! ‘ ঠান্ডার শিহরণের জন্য জমে যাওয়ার অবস্থা৷ মুখ দিয়ে একটা শব্দ বের করে আটকে গেলাম৷ উনি নিজের জ্যাকেট খুলে আমায় পড়িয়ে দিলেন৷ তারপর একটানে কোলে উঠিয়ে বাসার দিকে পাঁ বাড়ালেন৷ কিছু একটা বিরবির করছেন উনি৷ আমি শুধু বলছি,
–‘ আমি স্নো এর উপর হাটবো৷ আপনি কথা শুনেন না৷ আমার কথার গুরুত্ব দেন না৷ ‘
উনি আমার হাত তার হাতের মধ্যে নিয়ে ঘষছেন৷ ঠান্ডায় জমে গিয়েছে৷ বোধ পাচ্ছি না একদম৷ ছোট ছোট চোখ করে উনার রাগী মুখের দিকে তাকিয়ে আছি৷ প্রচুর রেগে গিয়েছেন৷ আমি হাত ছাড়িয়ে উনার গলা জড়িয়ে ধরলাম৷ আবারো কেঁপে ওঠা ঠোঁট দিয়ে উনার গালে পরশ দিয়ে বললাম,
–‘ ভালোবাসা ময় সর্যি৷ আর হবে না এমন৷ ‘
উনি গম্ভীর ভাবেই আমাকে টেনে নিলেন৷ বাইরে বর্ষার দুপুরের মতো তুষারের আনাগোনা৷ আর উত্তাল পরশের ছুটোছুটির ভীরের ভালোবাসার পরশ৷
_____________________
ক্লাসের হলরুম টু ক্যান্টিন৷ একবার দৌড়ে ক্যান্টিনের সামনে জমে থাকা বরফের উপর লাফাচ্ছি তো আরেকবার ক্লাসের সামনে জমে থাকা বরফের স্তূপের উপর৷ রাতিব আর জেন হাসিতে ফেটে পড়ছে৷ তাদের মতে, আমার করা কাজগুলো নিছক পাগলামী৷ ভাগ্যিস মিস্টার. কাব্য তার ভার্সিটি তে৷ আমার কথা ভুল প্রমাণ হলো কারো হাতের টানে৷ আমি ভয়ে সিটিয়ে গেলাম৷ শুকনো ঢোক গিলে রাতিবের দিকে তাকালাম৷ ও হাত দিয়ে ইশারা করলো, ‘ তুমি ফিনিশড৷ ‘
রাগী চোখে ভাষা নিমিষেই চুপসে গেলাম৷ আমাকে টেনে নিয়ে গেলেন গাড়ির কাছে৷ তারপর ছুড়ে মারলেন একপ্রকার৷ ভয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না৷
রোজ ভিউ..! অপূর্ব সৌন্দর্যের একটা ছোট কটেজ৷ বার্লিনের মেইন শহরের কিছুটা দূরে অবস্থিত ব্ল্যাক ফরেস্ট৷ সেখানের খোলামেলা জায়গায় পাহাড়ের ঢালুর নিচে ছোট একটা কটেজ এইটা৷ সামনেই পাহাড়ের নিচে সমুদ্রের পানির আভাস দেখা যাচ্ছে৷ কটেজের সামনে লাল কার্পেট বিছানো৷ আর তার পাশেই বরফের উপর ছোট ছোট লাইটের ভীর৷ সন্ধ্যে না নামলেও সূর্যের দেখা না পাওয়ার জন্য হালকা আঁধার নেমেছে৷ কটেজের বাইরের এরিয়া পুরো বরফ আর লাইট দিয়ে ঘেরা৷ উনি আমার হাত ধরে সামনে নিয়ে গেলেন৷ ছোট বাগানের মতো অংশে হাজার লাল গোলাপ আর বরফে ঢাকা রোজ ভিউয়ের নেমপ্লেট৷
–‘ তোমার নামের বসন্ত নামুক আমার বুকের
মাঝে৷ ‘
আমি অবাক চোখে তাকালাম৷ উনি মুচকি হেসে বললেন,
–‘ বসন্তের সময় জায়গাটা নিজের সৌন্দর্য ফুঁটিয়ে তুলে৷ যদিও এই সময়ে বরফের স্তূপে ঢেকে সাদা তুলোর ন্যায় সৌন্দর্য সৃষ্টি করে৷ তোর বরফে ঢাকা রোজ ভিউ আর আমার বসন্তের ছোঁয়ার রোজ ভিউ কোনটা বেশি সৌন্দর্য প্রকাশ করে সেটা দেখার বাকি৷’
আমি উনার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম,
–‘ সেটা বসন্ত আসলে দেখা যাবে৷ কিন্তু হঠাৎ এখানে? ‘
–‘ সারপ্রাইজ৷ ‘ উনার বলা কথার সাথে আবারো গুড়ি গুড়ি বরফ পড়ে আমাদের স্বাগতম জানালো৷ আমি খুশিতে আবারো পাগল প্রায় অবস্থা৷ বার্লিনের প্রত্যকটা দিন এতো সুন্দর হবে আমি ভাবতেই পারি নি৷ সাধারণ একটা দিন অসাধারণ হয়ে উঠেছে৷ রাতের হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বাইরে বসে তার গলার গান আরো বিমোহিত করে তুলেছে৷ অচেনা এই শহরের বরফ ঢাকা রোজ ভিউয়ে তে বাংগা গানের স্বাদ হঠাৎ করেই নিজে থেকে তার কাছে যাওয়ার আভাসে টানলো৷
_____________
তার বুকের মাঝে প্রশান্তির ছায়া আছে৷ সকাল নেমেছে অনেক আগেই৷ আমি উঠে ব্ল্যাক কফি করে তার কোলে বসে পড়লাম৷ উনি আমাকে পেছনে থেকে জড়িয়ে কফি খাচ্ছেন৷ আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি সন্ধিহান গলায় বললেন,
–‘ কি হয়েছে? ‘
–‘ একটা সিরিয়াস কথা৷ ‘
আমি উনার সামনে ঘুরে তার হাত আমার পেটের উপর নিয়ে বললাম,
–‘ আমার বেবি চাই৷ ‘
আমার কথা শুনে কেশে উঠলেন উনি৷ কফি সাইডে রেখে সিরিয়াস ভাবে বললেন,
–‘ আজগুবি কথা কে ঢুকিয়েছে তোর কানে৷ কবিতা আপু? ‘
–‘ উহু,,আমি নিজেই৷ ‘
উনি আবার কফি খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন৷ আমি চুপ করে আছি৷ নীরবতা ঠেলে উনি বললেন,
–‘ দেখা যাবে৷ তবে কিছুটা সময় পরে৷
তার কথায় লজ্জায় পড়ে গেলাম৷ সত্যি মেনে নিলেন এতো সহজে?কেমন সন্দেহ হচ্ছে৷ এতো সহজে কেন মেনে নিয়েছিলেন সেই সন্দেহ বাস্তবতায় রুপ নিলো বাসায় ফেরার পর৷ সব তো ঠিক ছিলো৷ এইভাবে কি ছিন্নভিন্ন না হলে হতো না? সুখের মূহুর্তের পর সবচেয়ে কষ্টের মূহুর্ত তো বাসায় ফেরার পর থেকে শুরু হয়েছিলো….!
চলবে…!